প্রিন্ট ভিউ

ইপিজেড শ্রমিক সংঘ ও শিল্প সম্পর্ক আইন, ২০০৪

( ২০০৪ সনের ২৩ নং আইন )

এই অাইনটি ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্র্পক আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪৩ নং আইন) দ্বারা রহিত করা হইয়াছে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব ও কল্যাণ কমিটি

শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব ও কল্যাণ কমিটি
৫৷ (১) এই আইন প্রবর্তিত হইবার পর নির্বাহী চেয়ারম্যান বা এতদুদ্দেশ্যে তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কোন অঞ্চলে শিল্প ইউনিটের মালিক ও শ্রমিকগণকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব ও কল্যাণ কমিটি অতঃপর কমিটি বলিয়া অভিহিত নামে একটি কমিটি নিশ্চিত করিতে বলিবেন৷
 
 
(২) পৃথক নিগমিতকরণ সনদসহ (certificate of incorporation) কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিত কোন মালিক কোন অঞ্চলে কার্যরত থাকিলে উক্ত অঞ্চলে উহার অধীনে একটি কমিটি থাকিবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিত কোন মালিকের অধীনে কোন অঞ্চলে দুই বা ততোধিক শিল্প ইউনিট থাকিলে উহারা এই ধারা উদ্দেশ্যপূরণকল্পে একটি শিল্প ইউনিট হিসাবে গণ্য হইবে৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, একজন আহ্বায়কসহ অনধিক ১৫ (পনের) এবং অন্যুন ৫ (পাঁচ) জন সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হইবে৷
 
 
 
 
(৪) ভোট প্রদানের যোগ্য শ্রমিকদের সংখ্যা ৫০০ (পাঁচশত)-এর অধিক হইলে, কমিটির সদস্য-সংখ্যা ৫ (পাঁচ) জনের উপর প্রতি ১০০ (একশত) জনে ১ (এক) জন অনুপাতে বর্ধিত হইবে; তবে উক্ত সদস্য-সংখ্যা পূর্ব উল্লিখিত ১৫ (পনের) জনের অধিক হইবে না৷
 
 
 
 
(৫) কোন শিল্প ইউনিটে নিয়োগপ্রাপ্ত কেবল যোগ্য শ্রমিকদের সমন্বয়ে উক্ত শিল্প ইউনিটের কমিটি গঠিত হইবে৷
 
 
 
 
(৬) গোপন ব্যালটের মাধ্যমে যোগ্য শ্রমিকদের মধ্য হইতে কমিটির সদস্যগণ নির্বাচিত হইবেন, এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত সদস্যগণের মধ্য হইতে কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হইবেন৷
 
 
 
 
(৭) এই অধ্যায়ের অধীন নির্বাচনের পদ্ধতি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে৷
 
 
 
 
(৮) কমিটির কার্যালয় স্থাপনের জন্য শিল্প অঞ্চলের অভ্যন্তরে মালিক প্রয়োজনীয় স্থানের ব্যবস্থা করিবে৷
যোগ্য শ্রমিকের বিশেষ সংজ্ঞা
৬৷ এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “যোগ্য শ্রমিক” অর্থে-
 
 
 
 
(ক) এই আইন প্রবর্তিত হইবার পূর্বে বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন শুরু করিয়াছে এমন একটি শিল্প ইউনিটের কমিটির সদস্য নির্বাচন করিবার যোগ্যতার ক্ষেত্রে চাকুরীতে নিয়োজিত হইবার প্রথম দিন হইতেই একজন শ্রমিককে বুঝাইবে;
 
 
 
 
(খ) এই আইন প্রবর্তিত হইবার পূর্বে বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন শুরু করিয়াছে এমন একটি শিল্প ইউনিটের কমিটির সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্যতার ক্ষেত্রে, নিয়োগ স্থায়ী হইবার পর অন্তত: ৯ (নয়) মাস হইয়াছে এমন একজন শ্রমিককে বুঝাইবে;
 
 
 
 
(গ) এই আইন প্রবর্তিত হইবার পরে বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন শুরু করিয়াছে এমন একটি শিল্প ইউনিটের কমিটির সদস্য নির্বাচন করিবার যোগ্যতার ক্ষেত্রে, নিয়োগ স্থায়ী হইবার পর অন্তত: ৩ (তিন) মাস হইয়াছে এমন একজন শ্রমিককে বুঝাইবে; এবং
 
 
(ঘ) এই আইন প্রবর্তিত হইবার পরে বাণিজ্যিকভাবে উত্পাদন শুরু করিয়াছে এমন একটি শিল্প ইউনিটের কমিটির সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্যতার ক্ষেত্রে, নিয়োগ স্থায়ী হইবার পর অন্ততঃ ৩ (তিন) মাস হইয়াছে এমন একজন শ্রমিককে বুঝাইব৷
শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব ও কল্যাণ কমিটির নিবন্ধন ও মর্যাদা
৭৷ (১) কোন অঞ্চলের কোন শিল্প ইউনিটের গঠিত কোন কমিটি নাম সহকারে কর্তৃপক্ষের নিকট নিবন্ধিত হইবে৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নিবন্ধিত কমিটি একটি নিগমবন্ধ সংস্থা (Body Corporate) হিসাবে গণ্য হইবে, যাহার স্থায়ী ধারাবাহিকতাসহ একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে, এবং নিবন্ধিত নামে ইহা চুক্তি করিতে ও এই আইনের আওতায় সীমিত কার্যাবলী সম্পাদন করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহা মামলা করিতে পারিবে ও ইহার বিরুদ্ধেও মামলা করা যাইবে৷
কমিটির অধিকার ও কার্যাবলী
৮৷ (১) মালিকের সহিত চাকুরীর শর্তাদি এবং উত্পাদনশীলতা ও প্রবৃদ্ধি হইতে প্রাপ্য পারিশ্রমিক বা পাওনা এবং শ্রমিকদের শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে আলাপ-আলোচনার অধিকার কমিটির থাকিবে৷ চাকুরীর শর্তাদি এবং উত্পাদনশীলতা ও প্রবৃদ্ধি হইতে প্রাপ্য পারিশ্রমিক বা পাওনা এবং শ্রমিকদের শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে আলাপ-আলোচনার উদ্দেশ্যে তথ্য প্রাপ্তির জন্য কমিটি কর্তৃক পেশকৃত কোন যুক্তিসংগত অনুরোধ মালিক অস্বীকার করিবে না৷
 
 
 
 
(২) কোন অঞ্চলে কোন শিল্প ইউনিটে কমিটি বিদ্যমান থাকাকালে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত বেতন ও আর্থিক সুবিধাদি কার্যকর থাকিবে এবং উপ-ধারা (১) অনুযায়ী কোন সুযোগ-সুবিধা ইহার অতিরিক্ত হইবে৷
 
 
 
 
(৩) নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও কমিটির মধ্যে উপ-ধারা (১) এর অধীন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সম্পাদিত লিখিত চুক্তির আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকিবে এবং ইহা আদালতের মাধ্যমে বলবত্যোগ্য হইবে৷
 
 
 
 
(৪) কমিটির কার্যাবলী হইবে শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন, বিরোধ-নিবারণ ও নিষ্পত্তিতে প্রয়াস গ্রহণ এবং মালিক ও শ্রমিকদের মাঝে সুসম্পর্ক নিশ্চিত ও অক্ষুণ্ন রাখিবার ব্যবস্থা গ্রহণে উত্সাহ প্রদান করা, এবং বিশেষভাবে-
 
 
 
 
(ক) মালিক ও শ্রমিকগণের মাঝে পারস্পরিক সমঝোতা বজায় রাখিবার উদ্দেশ্যে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালানো;
 
 
 
 
(খ) কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তার শর্তাদি এবং চাকুরীর নিশ্চয়তা ও কর্মের সন্তুষ্টির উন্নয়ন করা;
 
 
 
 
(গ) শিল্প ইউনিটের মধ্যে কারিগরি প্রশিক্ষণের উত্সাহ প্রদান করা;
 
 
 
 
(ঘ) শিল্প ইউনিটের উত্তম ও সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মের পরিবেশ সৃষ্টি করিতে সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা; এবং
 
 
(ঙ) উত্তম শ্রম-ব্যবস্থাপনা গড়িয়া তুলিবার উদ্দেশ্যে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করা৷
 
 
 
 
(৫) কর্তৃপক্ষ প্রবিধির মাধ্যমে উক্ত কমিটির অন্যান্য কার্যাবলী ও ভূমিকা সংক্রান্ত বিস্তারিত বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
কমিটির সভা
৯৷ (১) শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব ও কল্যাণ কমিটি ৮ ধারার অধীন কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে আলোচনা ও মত বিনিময়ের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করিতে প্রতি দুই মাসে অন্ততঃ একবার সভায় মিলিত হইবে৷
 
 
 
 
(২) কমিটির প্রতিটি সভার কার্যবিবরণী সভা অনুষ্ঠিত হইবার ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং মীমাংসাকারী-এর নিকট পেশ করিতে হইবে৷
বিধি ও কার্যবিধি নির্ধারণে কমিটির স্বাধীনতা
১০৷ (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, এই ধারার অধীন গঠিত কমিটি ইহার অভ্যন্তরীণ নীতিমালা, বিধি ও কার্যপদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবে৷
 
 
 
 
(২) কমিটি কর্তৃক উপ-ধারা (১) এর অধীন গৃহীত নীতিমালা, বিধি ও কার্যপদ্ধতি এই আইন, বিধিমালা এবং এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধানমালার কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হইবে না৷
কমিটির মেয়াদ ও অবসায়ন
১১৷ (১) যে কোন শিল্প ইউনিটের জন্য গঠিত কমিটি ৩১ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ইচ্ছানুযায়ী কমিটি ৩১ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখের পরেও কার্য চালাইয়া যাইতে পারিবে৷
 
 
 
 
(৩) কোন শিল্প ইউনিটে শ্রমিক সংঘ গঠিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির অবসায়ন হইবে৷
কমিটির নির্বাচিত কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
১২৷ (১) কমিটির আহ্বায়ক বা যে কোন সদস্যকে নির্বাহী চেয়ারম্যানের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে এক অঞ্চল হইতে অন্য অঞ্চলে একই অঞ্চলের এক শিল্প ইউনিট হইতে অন্য শিল্প ইউনিটে বদলি করা যাইবে না৷
 
 
 
 
(২) কমিটির আহ্বায়ক বা কোন সদস্যকে নির্বাহী চেয়ারম্যানের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে চাকুরী হইতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্য কোনভাবে কর্মচ্যুত করা যাইবে না৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান সত্ত্বেও, আহ্বায়ক বা কোন সদস্যকে এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধির অধীন নিষিদ্ধ অন্যায় আচরণের অভিযোগের ভিত্তিতে চাকুরী হইতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে বা তাহার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করিতে মালিক বারিত বলিয়া গণ্য হইবে না৷
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন মালিকের যে কোন কার্যের বৈধতার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত প্রদানে নির্বাহী চেয়ারম্যানের কর্তৃত্ব থাকিবে, এবং তিনি মালিকের গৃহীত কোন ব্যবস্থা বহাল রাখিতে বা বাতিল করিতে, এবং কোন কর্মকর্তাকে স্ব-পদে পুনবর্হাল এবং তাহার অপরিশোধিত মজুরী ও সুবিধাদি পরিশোধের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন৷

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs