প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

( ২০০৬ সনের ৪২ নং আইন )

অষ্টাদশ অধ্যায়

শিক্ষাধীনতা

অধ্যায়ের প্রয়োগ
২৭৪৷ এই অধ্যায় এমন কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে যাহা দুই বত্সরের অধিককাল যাবত্ চালু আছে, যাহাতে সাধারণতঃ অন্যুন পঞ্চাশ জন শ্রমিক নিযুক্ত আছেন 1[***]৷
বিশেষ সংজ্ঞা
২৭৫৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই অধ্যায়ে-
 
 
2[(ক) ‘‘যোগ্য কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ প্রধান পরিদর্শক অথবা তদ্‌কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;]
 
 
(খ) “শিক্ষাধীন” অর্থ শিক্ষাধীনতা পদ্ধতির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী কোন ব্যক্তি;
 
 
(গ) “শিক্ষাধীনতা” অর্থ এমন কোন প্রশিক্ষণ পদ্ধতি যাহাতে কোন মালিক কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করিয়া তাহাকে কোন শিক্ষাধীনতাযোগ্য পেশায় বা বৃত্তিতে প্রণালীবদ্ধভাবে পূর্বনির্ধারিত কোন মেয়াদের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে বা দেওয়ার ব্যবস্থা করিতে রাজি হন এবং উক্ত মেয়াদকালে উক্ত শিক্ষাধীন ব্যক্তি মালিকের অধীনে চাকুরী করিতে বাধ্য থাকেন; এবং
 
 
(ঘ) “শিক্ষাধীনতাযোগ্য পেশা” অর্থ কোন প্রতিষ্ঠানের এমন কোন পেশা বা বৃত্তি যাহা যোগ্য কর্তৃপক্ষ, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে শিক্ষাধীনতাযোগ্য পেশা বলিয়া ঘোষণা করে৷
ত্রিপক্ষীয় উপদেষ্টা কমিটি
২৭৬৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায়, শিক্ষাধীনতা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার এবং যোগ্য কর্তৃপক্ষকে উপদেশ প্রদানের উদ্দেশ্যে ত্রিপক্ষীয় উপদেষ্টা কমিটি গঠন করিতে পারিবে৷
মালিকের বাধ্যবাধকতা
২৭৭৷ এই অধ্যায় এবং বিধির বিধান সাপেক্ষে, কোন মালিক-
 
 
(ক) তাহার প্রতিষ্ঠানে এই অধ্যায় এবং বিধির বিধানগুলি যথাযথভাবে মানিয়া চলা নিশ্চিত করিবেন;
 
 
(খ) বিধি অনুযায়ী তাহার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাধীনতা কর্মসূচী চালু করিবেন; এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহা যোগ্য কর্তৃপক্ষের সহিত রেজিস্ট্রি করিবেন;
 
 
(গ) তাহার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাধীনতাযোগ্য পেশা বা বৃত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে গড়ে অন্যুন এক-চতুর্থাংশ ব্যক্তিকে, অথবা যোগ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিখিতভাবে অন্য কোন অনুপাত নির্ধারণ করিলে সেই অনুপাতে, শিক্ষাধীন হিসাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করিবেন 3[এবং শিক্ষাধীন হিসাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের অগ্রাধিকার প্রদান করিবেন];
 
 
(ঘ) তাহার প্রতিষ্ঠানে যদি এই আইন বলবত্ হইবার পূর্ব হইতে শিক্ষাধীনতা কর্মসূচী চালু হইয়া থাকে তাহা হইলে উহাকে এই অধ্যায় এবং বিধির বিধানের সহিত সুসামঞ্জস্য করিয়া সংশোধন করিবেন, এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ সংশোধিত কর্মসূচী যোগ্য কর্তৃপক্ষের সহিত রেজিস্ট্রি করিবেন;
 
 
(ঙ) মোট স্বাভাবিক কর্ম সময়ের অন্তত বিশ শতাংশ সময় শিক্ষাধীন শ্রমিক যাহাতে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক শিক্ষা পান ইহা নিশ্চিত করিবেন;
 
 
(চ) সম্পূর্র্র্ণ নিজ খরচে শিক্ষাধীনতা কর্মসূচী প্রণয়ন ও চালু করিবেন; এবং
 
 
(ছ) যোগ্য কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে এমন কোন ব্যক্তিকে শিক্ষাধীন হিসাবে নিযুক্ত করিবেন না যিনি অন্য কোন মালিকের অধীন শিক্ষাধীন ছিলেন এবং তিনি তাহা পরিত্যাগ করিয়া আসিয়াছেন অথবা শৃঙ্খলা ভংগের কারণে মালিক কর্তৃক কর্মচ্যুত হইয়াছেন৷
আয়কর, ইত্যাদি হইতে মুক্তি
২৭৮৷ (১) আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪, (১৯৮৪ সনের ৩৬ নং অধ্যাদেশ) এ ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যায় এবং বিধির বিধান মোতাবেক পরিচালিত কোন শিক্ষাধীনতা কর্মসূচীর জন্য মালিক কর্তৃক ব্যয়িত কোন অর্থের জন্য তাহাকে আয়-কর প্রদান করিতে হইবে না৷
 
 
(২) আমদানী ও রপ্তানী (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৫০ (১৯৫০ সনের ৩৯ নং আইন) অথবা কোন বিধি বা আদেশে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যায়ের অধীন শিক্ষাধীনতা কর্মসূচী পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কোন জিনিসপত্র আমদানীর জন্য সরকার আদেশ দ্বারা মালিককে লাইসেন্স প্রদানের বিধান করিতে পারিবে৷
মালিককে উপদেশ ও নির্দেশনা প্রদান
২৭৯৷ যোগ্য কর্তৃপক্ষ, এই অধ্যায় এবং বিধির বিধান মোতাবেক কোন প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত কোন শিক্ষাধীনতা কর্মসূচী সম্পর্কে, মালিককে সম্ভব সর্বপ্রকার কারিগরী উপদেশ ও নির্দেশনা দিবে৷
শিক্ষাধীন শ্রমিকের বাধ্যবাধকতা
২৮০৷ (১) এই অধ্যায় এবং বিধির বিধান সাপেক্ষে কোন শিক্ষাধীন শ্রমিক-
 
 
(ক) তাহার পেশা বা বৃত্তি বিবেক-বুদ্ধিসহকারে ও অধ্যবসায়ের সহিত শিখিবেন এবং শিক্ষাধীনতার মেয়াদ শেষ হইবার পর নিজেকে একজন দক্ষ শ্রমিক হিসাবে যোগ্য করিবার চেষ্টা করিবেন;
 
 
(খ) মালিক কর্তৃক প্রণীত কর্মসূচী অনুযায়ী ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ ও তাত্ত্বিক শিক্ষা প্রদানকালে হাজির থাকিবেন;
 
 
(গ) শিক্ষাধীনতা সম্পর্কে মালিক অথবা তাহার প্রতিনিধি কর্তৃক প্রদত্ত সকল আইনানুগ আদেশ মানিয়া চলিবেন এবং শিক্ষাধীনতা চুক্তির অধীন তাহার সকল দায়-দায়িত্ব পালন করিবেন;
 
 
(ঘ) তাহার প্রশিক্ষণের উন্নতি যাচাই করিবার জন্য সময় সময় গৃহীত কোন পরীক্ষা দিতে তিনি বাধ্য থাকিবেন;
 
 
(ঙ) তাহার সমশ্রেণীর শ্রমিকগণের ট্রেড ইউনিয়ন ব্যতীত অন্য কোন ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হইবেন না;
 
 
(চ) তাহার শিক্ষাধীনতা সম্পর্কে মালিকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকিলে এবং মালিকের নিকট হইতে ইহার কোন প্রতিকার না পাইলে, তিনি প্রতিকারের জন্য যোগ্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং এই সম্বন্ধে যোগ্য কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মানিয়া চলিবেন; এবং
 
 
(ছ) যোগ্য কর্তৃপক্ষের লিখিত পূর্ব অনুমোদন ব্যতিরেকে, তাহার শিক্ষাধীনতাকাল সমাপ্ত হওয়ার পর তিনি শিক্ষাধীনতা ছাড়িয়া যাইবেন না৷
 
 
(২) যদি কোন শিক্ষাধীন শ্রমিক তাহার শিক্ষাধীনতা চুক্তির শর্ত পালনে ব্যর্থ হন অথবা যদি শিক্ষাধীনতাকালের কোন সময়ে স্বেচ্ছায় শিক্ষাধীনতা ছাড়িয়া যান অথবা তাহার প্রশিক্ষণের উন্নতি সম্পর্কে অব্যাহত বিরূপ রিপোর্ট পাওয়া যায় অথবা অবাধ্যতা, বিধি লঙ্ঘন, কাজে অনুপস্থিতি, কর্তব্যে অবহেলা করেন, তাহা হইলে তিনি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার পিতা বা অভিভাবক বা জামিনদার এককভাবে অথবা যৌথভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং শিক্ষাধীনতা কাজে তাহার জন্য ব্যয়িত অর্থ মালিককে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবেন৷
প্রবেশ, পরিদর্শন, ইত্যাদির ক্ষমতা
২৮১৷ যোগ্য কর্তৃপক্ষ-
 
 
(ক) প্রয়োজনীয় সহকারীসহ, কোন প্রতিষ্ঠানে বা উহার অংশ বিশেষে যে কোন যুক্তি সংগত সময়ে প্রবেশ করিতে, পরিদর্শন করিতে ও পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবে;
 
 
(খ) উক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শিক্ষাধীন শ্রমিককে পরীক্ষা করিতে, অথবা এই অধ্যায় মোতাবেক রক্ষিত কোন রেজিস্টার, নথি বা দলিল-দস্তাবেজ পেশ করার নির্দেশ দিতে, এবং এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিবেচিত হইলে, কোন ব্যক্তির নিকট হইতে বক্তব্য বা বিবৃতি গ্রহণ করিতে পারিবে;
 
 
(গ) উক্ত প্রতিষ্ঠানে এই অধ্যায় এবং বিধির বিধান যথাযথভাবে পালিত হইতেছে কি না-ইহা দেখিবার জন্য প্রয়োজনীয় তদন্ত বা পরীক্ষা পরিচালনা করিতে পারিবে; এবং
 
 
(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন ক্ষমতাও প্রয়োগ করিতে পারিবে৷
ক্ষমতা অর্পণ
২৮২৷ এতদ্‌উদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি সাপেক্ষে, যোগ্য কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা ইহার সকল অথবা যে কোন ক্ষমতা তাহার অধঃস্তন যে কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে৷

  • 1
    ‘‘এবং যাহাতে শিক্ষাধীনতাযোগ্য পেশায় বা বৃত্তিতে অন্যূন পাঁচ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছেন’’ শব্দগুলি বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩০ নং আইন) এর ৭৩ ধারাবলে বিলুপ্ত।
  • 2
    দফা (ক) বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩০ নং আইন) এর ৭৪ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 3
    ‘‘এবং শিক্ষাধীন হিসাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের অগ্রাধিকার প্রদান করিবেন’’ শব্দগুলি ‘‘শিক্ষাধীন হিসাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করিবেন’’ শব্দগুলির পর বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩০ নং আইন) এর ৭৫ ধারাবলে সংযোজিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs