প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০

( ২০১০ সনের ৩১ নং আইন )

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প ও সেবা খাতের পরিচালনা, উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল ঘোষণা এবং পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকায় অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকল্পে প্রণীত আইন ।
যেহেতু, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প ও পর্যটন সেবা খাতের পরিচালনা, উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল ঘোষণা এবং পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকায় অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা এবং এতদুদ্দেশ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
 
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) 'পর্যটন' অর্থে মানুষের স্বাভাবিক বসবাসের স্থান হইতে অন্য কোন স্থানে উপার্জনমূলক কর্মসংস্থান ব্যতীত বিনোদনসহ অন্য যে কোন উদ্দেশ্যে গমন করিয়া অনধিক ০১ (এক) বৎসর অবস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকান্ডকে বুঝাইবে;
 
(২) 'পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা' অর্থ ধারা ৪ এর অধীন ঘোষিত পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা;
 
(৩) 'বিধি' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(৪) 'বিশেষ পর্যটন অঞ্চল' অর্থ ধারা ৫ এর অধীন ঘোষিত বিশেষ পর্যটন অঞ্চল;
 
(৫) 'ব্যক্তি' অর্থে আইনগত স্বত্বাবিশিষ্ট ব্যক্তি, অংশীদারী কারবার, সমিতি, কোম্পানী, কর্পোরেশন, সমবায় সমিতি, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা
৪। (১) পর্যটন শিল্প রহিয়াছে অথবা পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা রহিয়াছে এমন কোন এলাকাকে চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত এলাকাকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করিতে পারিবে।
 
 
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, বিধি দ্বারা, পর্যটন সংরক্ষিত এলাকায় যে কোন ধরণের কার্যক্রমে বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।
বিশেষ পর্যটন অঞ্চল
৫। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পর্যটন সংরক্ষিত এলাকায় বিশেষ পর্যটন অঞ্চল ঘোষণা করিতে পারিবে।
 
 
(২) সরকার নিজ উদ্যোগে অথবা বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা ব্যক্তি বিশেষের মাধ্যমে বিশেষ পর্যটন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করিতে পারিবে।
পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, বিকাশ ও বিনিয়োগ, ইত্যাদি
৬। (১) পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থার সহিত সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
 
 
(২) সরকার, বিধি দ্বারা, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা এবং বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বিনোদন ও সেবামূলক সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ আইনানুগ বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা এবং বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ ও উন্নয়নকল্পে দেশি বা বিদেশি উদ্যোগে, দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগে, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে অথবা সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে সরকার বিনোয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।
অপরাধ ও দণ্ড
৭। (১) কোন ব্যক্তি এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধির কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা আমলযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(২) পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা অথবা বিশেষ পর্যটন অঞ্চল হইতে কোন স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয় জড়িত থাকিলে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দন্ডের অতিরিক্ত উক্তরূপ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ব্যয়িত অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট হইতে আদায় করা যাইবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৯। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
১০। (১) বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল অধ্যাদেশ, ২০১০ (২০১০ সনের ২ নং অধ্যাদেশ) এতদ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও রহিত অধ্যাদেশের অধীন কৃত সকল কাজ-কর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীনে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs