প্রিন্ট ভিউ

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০

( ২০১০ সনের ৩৫ নং আইন )

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ রহিতক্রমে কতিপয় সংশোধনীসহ উহা পুনঃ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু দেশে মানসম্মত শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেসরকারী পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং উহার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এতদ্‌বিষয়ে বিদ্যমান আইন অপর্যাপ্ত বলিয়া উহা রহিতক্রমে একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১)‘‘অনুষদ’’ অর্থ কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদ বা স্কুল অব স্টাডিজ;
 
 
(২)‘‘একাডেমিক কাউন্সিল’’ অর্থ কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল;
 
 
(৩)‘‘এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল’’ অর্থ ধারা ৩৮ এর অধীন গঠিত এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল;
 
 
(৪)‘‘ক্যাম্পাস’’ অর্থ কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাস;
 
 
(৫)‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ এই আইন বা বিধি দ্বারা অথবা, ক্ষেত্রমত, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত;
 
 
(৬)“প্রতিষ্ঠাতা” অর্থ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকারী কোন জনকল্যানকামী ব্যক্তি, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি,ব্যক্তি-গোষ্ঠী দাতব্য ট্রাস্ট ও প্রতিষ্ঠান;
 
 
(৭)‘‘বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়’’ অর্থ এই আইনের অধীন স্থাপিত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়;
 
 
(৮)‘‘বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’’ অর্থ কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ;
 
 
(৯)‘‘স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়’’ অর্থ আপাতত: বলবৎ কোন আইন দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন বিশ্ববিদ্যালয়, এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বলিয়া ঘোষিত অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১০)‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(১১)‘‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন’’ বা ‘‘কমিশন’’ অর্থ University Grants Commission of Bangladesh Order, 1973 (P. O. No. 10 of 1973) দ্বারা গঠিত University Grants Commission of Bangladesh;
 
(১২) ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি’’ অর্থ ধারা ৩৭ এর অধীন প্রণীত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি;
 
 
(১৩) ‘‘যথাযথ কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ স্থানভেদে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ;
 
 
(১৪) ‘‘সনদপত্র’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত সনদপত্র;
 
 
(১৫) ‘‘সংরক্ষিত তহবিল’’ অর্থ ধারা ৬ এর দফা (৯) এ উল্লিখিত সংরক্ষিত তহবিল;
 
 
(১৬) ‘‘সাধারণ তহবিল’’ অর্থ ধারা ৪৪ এর অধীন সৃষ্ট সাধারণ তহবিল;
 
 
(১৭) ‘‘সাময়িক অনুমতিপত্র’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত সাময়িক অনুমতিপত্র;
 
 
(১৮) ‘‘সিন্ডিকেট’’ অর্থ কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনা
৩। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যে কোন স্থানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাইবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন সরকারের নিকট হইতে সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, সনদপত্র গ্রহণ ব্যতীত, বাংলাদেশের কোন স্থানে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বা পরিচালনা করা যাইবে না, বা বাংলাদেশে কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালনা বা কোন ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট প্রদান করা যাইবে না।
 
 
(৩) এই আইনের আধীনে অনুমোদনপ্রাপ্ত নয় এমন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা বাংলাদেশে কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা ক্যাম্পাস, স্টাডি সেন্টার বা টিউটোরিয়াল সেন্টার ইত্যাদিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিবার উদ্দেশ্যে কোনরূপ ব্রোশিয়ার, প্রসপেকটাস, লিফলেট ইত্যাদি প্রকাশ ও প্রচার করা যাইবে না। ইহা ছাড়াও প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়ও কোন ধরণের বিজ্ঞাপন প্রকাশ ও প্রচার করা যাইবে না।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দেশের পরিবেশ, নিরাপত্তা, জনস্বার্থ বা অন্য কোন বিষয় বিবেচনাক্রমে, যদি সরকার কোন স্থানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা উহার ক্যাম্পাস স্থাপন করা যাইবে না মর্মে ঘোষণা প্রদান করে, তাহা হইলে এইরুপ কোন স্থানে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা উহার ক্যাম্পাস স্থাপন করা যাইবে না।
 
 
(৫) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এইরূপ কোন নামে স্থাপন করা যাইবে না, যে নামে এই আইন বা অন্য কোন আইনের অধীন কোন স্বীকৃত বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিপূর্বে স্থাপিত হইয়া উক্ত নামে বহাল আছে, বা যে নামে পূর্বে কোন স্বীকৃত বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বহাল ছিল কিন্তু বর্তমানে উক্ত নামে কোন বিশ্ববিদ্যালয় বহাল নাই বা উক্ত নামের সহিত প্রস্তাবিত নামের সাদৃশ্য থাকে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন বিদ্যমান বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং এই আইনের অধীন যে সকল শর্ত প্রতিপালনক্রমে একটি নূতন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করিতে হয় সে সকল শর্ত পূরণক্রমে, উহার সাদৃশ্যপূর্ণ নামে আরেকটি পৃথক ও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
(৬) এই আইনের অধীন স্থাপিত প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ধারাবাহিকতা এবং একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং উহার নিজস্ব নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার অধিকার থাকিবে এবং উক্ত নামে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে মামলা দায়ের বা পরিচালনা করা যাইবে।
 
 
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সকলের জন্য উন্মুক্ত
৪। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, জন্মস্থান বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর যোগ্য শিক্ষার্থীর ভর্তি, জ্ঞানার্জন এবং সাফল্যের সহিত ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্স সমাপনান্তে সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জন্য উন্মুক্ত থাকিবে।
সাময়িক অনুমতিপত্রের জন্য আবেদন
৫। ধারা ৬ এর শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে, কোন প্রতিষ্ঠাতা এই আইনের অধীন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনা করিবার উদ্দেশ্যে সাময়িক অনুমতিপত্রের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করিতে পারিবে।
সাময়িক অনুমতির শর্তাবলী
৬। এই আইনের অধীন সাময়িক অনুমতিপত্রের জন্য নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী পূরণ করিতে হইবে, যথা:-
 
 
 
 
(১) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে অনধিক ২১(একুশ) কিন্তু অন্যূন ৯(নয়) সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন করিতে হইবে;
 
 
(২) পাঠদানের নিমিত্ত প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রেণীকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, মিলনায়তন, সেমিনার কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষার্থীদের পৃথক কমন রুম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষের জন্য পর্যাপ্ত স্থান ও অবকাঠামো থাকিতে হইবে;
 
 
(৩) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যূন ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট নিজস্ব বা ভাড়াকৃত ভবন থাকিতে হইবে;
 
 
(৪) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৩ (তিন) টি অনুষদ এবং উক্ত অনুষদের অধীন অন্যূন ৬ (ছয়)টি বিভাগ থাকিতে হইবে;
 
 
(৫) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে, যাহা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক পূর্বে অনুমোদিত হইতে হইবে;
 
 
(৬) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার প্রত্যেক বিভাগ, প্রোগ্রাম ও কোর্স এর জন্য কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক পূর্ণকালীন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করিতে হইবে;
 
 
(৭) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিতব্য শিক্ষক অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকিলে তাহাদের মূল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ছাড়পত্র কমিশনে জমা দিতে হইবে;
 
 
(৮) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিবিড় পাঠক্রম (Curriculum) এবং প্রতিটি বিষয় (Subject) ও কোর্স প্রণয়নসহ প্রত্যেক বিষয়ে মোট আসন সংখ্যা উল্লেখ করিয়া কমিশনের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে;
 
(৯) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সংরক্ষিত তহবিল (Reserve Fund) হিসাবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য অন্যূন ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য অন্যূন ৩ (তিন) কোটি টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ১.৫ (এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) কোটি টাকা যে কোন তফসিলী ব্যাংকে জমা থাকিতে হইবে; এবং
 
 
(১০) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হইতে পারে এমন কোন কার্যকলাপে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করিবে না বা সন্ত্রাসী বা জঙ্গি তৎপরতা বা এই জাতীয় কোন কার্যকলাপে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোনভাবেই কোন পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করিবে না।
 
 
সাময়িক অনুমতি প্রদান
৭। (১) ধারা ৫ এর অধীন কোন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর সরকার আবেদনকারীর নিকট হইতে বিষয়টি সম্পর্কে উহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত তথ্য চাহিতে পারিবে এবং আবেদনটি বিবেচনার পর যদি সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী ধারা ৬ এর শর্তাবলী পূরণ করিয়াছেন, তাহা হইলে সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে, আবেদনকারীর অনুকূলে অস্থায়ীভাবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য সাময়িক অনুমতি প্রদান করিবে।
 
 
(২) সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ হইবে উহা প্রদানের পরবর্তী ৭ (সাত) বৎসর।
 
 
(৩) ধারা ৫ এর অধীন কোন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর যদি সরকার এই মর্মে নিশ্চিত হয় যে, আবেদনকারী ধারা ৬ এর কোন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হইয়াছেন অথবা কোন নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য দেশে আর অধিক সংখ্যক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নাই, তাহা হইলে সরকার, আবেদনকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া, লিখিত আদেশ দ্বারা, আবেদনটি নামঞ্জুর করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত কোন নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর সরকার ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে উহাতে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং এতদ্‌বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
সনদপত্রের জন্য আবেদন দাখিল ও সনদপত্র গ্রহণ
৮। প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে, ধারা ৭ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন সাময়িক অনুমতি লাভের পর, উক্ত ধারার উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত মেয়াদের মধ্যে, অথবা ধারা ১১ এর অধীন সাময়িক অনুমতিপত্র নবায়ন করা হইলে উক্ত ধারার উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত মেয়াদের মধ্যে, ধারা ৯ এ উল্লিখিত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে সরকারের নিকট আবেদন দাখিলক্রমে সনদপত্র গ্রহণ করিতে হইবে।
সনদপত্রের শর্তাবলী
৯। ধারা ৭ এর অধীন সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে এই আইনের অধীন সনদপত্রের জন্য নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী পূরণ করিতে হইবে, যথা:-
 
 
(১) ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে, প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে অন্যূন ১ (এক) একর পরিমাণ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য অন্যূন ২ (দুই) একর পরিমাণ নিষ্কন্টক, অখন্ড ও দায়মুক্ত জমি থাকিতে হইবে;
 
 
(২) দফা (১) এ উল্লিখিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্যাম্পাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনাদির প্ল্যান অনুমোদন করাইয়া, সাময়িক অনুমতিপত্রে প্রদত্ত মেয়াদের মধ্যে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করিতে হইবে;
 
 
(৩) প্রস্তাবিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট কোনভাবে দায়বদ্ধ বা হস্তান্তর করা যাইবে না;
 
 
(৪) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শতকরা ছয় তন্মধ্যে শতকরা তিন ভাগ আসন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং শতকরা তিন ভাগ আসন প্রত্যন্ত অনুন্নত অঞ্চলের মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য সংরক্ষণপূর্বক এই সকল শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি অন্যান্য ফি ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে এবং প্রতি শিক্ষা বৎসরের অধ্যয়নরত এইরূপ শিক্ষার্থীর তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে দাখিল করিতে হইবে;
 
 
(৫) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা, শিক্ষা অর্জন ও জীবনের নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করিতে হইবে;
 
 
(৬) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেটের ব্যয় খাতে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত একটি অংশ গবেষণার জন্য বরাদ্দপূর্বক উহা ব্যয় করিতে হইবে; এবং
 
 
(৭) সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য আবেদনের পূর্বে এই আইনের অধীন প্রযোজ্য সকল শর্তাদি প্রতিপালন করিতে হইবে।
 
 
সনদপত্র প্রদান
১০। ধারা ৮ এর অধীন কোন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর সরকার আবেদনকারীর নিকট হইতে বিষয়টি সম্পর্কে উহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত তথ্য চাহিতে পারিবে, এবং আবেদনটি বিবেচনার পর যদি সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী ধারা ৯ এর শর্তাবলী পূরণ করিয়াছেন, তাহা হইলে সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে, আবেদনকারীর অনুকূলে স্থায়ীভাবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একটি সনদপত্র প্রদান করিবে।
সাময়িক অনুমতি নবায়ন
১১। (১) ধারা ৭ এর অধীন সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে, ধারা ৯ এ উল্লিখিত শর্তাবলী পূরণে সক্ষম না হইলে, উক্ত সাময়িক অনুমতিপত্র নবায়নের জন্য উহার মেয়াদ উত্তীর্ণের পূর্বে সরকারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার, প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে সাময়িক অনুমতি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য নবায়ন করিতে পারিবে।
 
 
সনদপত্রের শর্তপূরণে ব্যর্থতার ফলাফল
১২। (১) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করিতে ব্যর্থ হইলে, অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯ এর কোন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হইলে, উক্ত সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ করিতে হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হইলে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার চলমান প্রোগ্রাম বা কোর্সের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
অনুমোদিত ক্যাম্পাস
১৩। (১) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার নিমিত্ত প্রদত্ত সাময়িক অনুমতিপত্রে বা, ক্ষেত্রমত, সনদপত্রে সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাস যে শহর বা স্থানে স্থাপিত ও পরিচালিত হইবে উহার সুনির্দিষ্ট উল্লেখ থাকিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন উল্লিখিত শহর বা স্থানে সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাস সীমিত রাখিতে হইবে এবং অন্য কোন স্থানে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রম পরিচালনা বা কোন ক্যাম্পাস বা শাখা স্থাপন ও পরিচালনা করা যাইবে না।
 
 
(৩) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের নিকট উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুমোদিত ক্যাম্পাসের শহর বা স্থানে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নূতন অনুষদ, বিভাগ বা ইন্সটিটিউট চালু করিবার আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির অনূর্ধ্ব ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে কমিশন, প্রয়োজনীয় পরিদর্শন সম্পন্ন করিয়া, উক্ত বিষয়ে উহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কমিশন নির্ধারিত সময়ে সিদ্ধান্ত প্রদান না করিলে অথবা এইরূপ প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সংক্ষুব্ধ হইলে, উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের নিকট আপীল করা যাইবে এবং এতদ্বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
১৪। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্নবর্ণিত কর্তৃপক্ষ থাকিবে, যথা:-
 
 
(ক) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ;
 
 
(খ) সিন্ডিকেট;
 
 
(গ) একাডেমিক কাউন্সিল;
 
 
(ঘ) অনুষদ;
 
 
(ঙ) ইনস্টিটিউট;
 
 
(চ) পাঠক্রম কমিটি;
 
 
(ছ) অর্থ কমিটি;
 
 
(জ) শিক্ষক নিয়োগ কমিটি; এবং
 
 
(ঝ) শৃংখলা কমিটি।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ ছাড়াও কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে ও দক্ষতার সহিত সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, চ্যান্সেলরের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রয়োজনীয় অন্য যে কোন কর্তৃপক্ষ গঠন করা যাইবে।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজ
১৫। প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থাকিবে এবং উক্ত বোর্ডের সদস্যগণের মধ্য হইতে একজন সদস্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি নির্বাচিত হইবেন।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর ক্ষমতা ও দায়িত্ব
১৬। এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিম্নরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে, যথা:-
 
 
 
 
(১) সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সীলমোহর নির্ধারণ এবং উহার হেফাজতের ব্যবস্থা ও ব্যবহার পদ্ধতি নিরূপণ;
 
 
(২) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন;
 
 
(৩) সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রণীত বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরীবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি অনুমোদনপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে প্রেরণ;
 
 
(৪) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(৫) সিন্ডিকেটের সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধির বিধান এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃষ্টি, সৃষ্ট পদের দায়িত্ব-কর্তব্য, চাকুরীর শর্তাবলী ও বেতনক্রম, শিক্ষার্থী ফি নির্ধারণ এবং নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন;
 
 
(৬) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক হিসাব-নিকাশ নিরীক্ষার ব্যবস্থাকরণ, অনুমোদন ও পরিবীক্ষণ;
 
 
(৭) সিন্ডিকেট কর্তৃক সুপারিশকৃত বাজেট অনুমোদন;
 
 
(৮) সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক, এলামনাই এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের সহিত বৎসরে অন্ততঃ একবার মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং সভায় প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;
 
 
(৯) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ট্রেজারার নিয়োগের জন্য, যথাক্রমে, ধারা ৩১, ৩২ এবং ৩৩ এর বিধান সাপেক্ষে চ্যান্সেলর সমীপে প্রস্তাব পেশ; এবং
 
 
(১০) সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রণীত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন ও চ্যান্সেলর এর নিকট উহা প্রেরণ।
সিন্ডিকেট
১৭। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সিন্ডিকেট থাকিবে এবং নিম্নবর্ণিত সদস্যগণ সমন্বয়ে সিন্ডিকেট গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) ভাইস-চ্যান্সেলর, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(গ) ট্রেজারার;
 
 
(ঘ) ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত একাডেমিক কাউন্সিলের ১ (এক) জন সদস্য, ১ (এক) জন ডীন ও ১ (এক) জন বিভাগীয় প্রধান;
 
 
(ঙ) সরকার কর্তৃক মনোনীত ১(এক) জন শিক্ষাবিদ বা শিক্ষানুরাগী;
 
 
(চ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত উহার ৩ (তিন) জন সদস্য;
 
 
(ছ) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক মনোনীত এইরূপ ১ (এক) জন প্রতিনিধি, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হইবেন এবং কমিশনে কর্মরত নহেন; এবং
 
 
(জ) রেজিস্ট্রার, যিনি ইহার সচিবও হইবেন।
 
 
(২) সিন্ডিকেটের মনোনীত সদস্যগণ তাঁহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ কোন সদস্যের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত উক্ত সদস্য তাঁহার পদে বহাল থাকিবেন।
সিন্ডিকেটের ক্ষমতা ও দায়িত্ব
১৮। এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সিন্ডিকেট নিম্নরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে, যথা:-
 
 
(১) সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যাবলী, প্রশাসনিক কার্যাবলী ও সাধারণ ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা;
 
 
(২) অর্থ কমিটি কর্তৃক প্রণীত বার্ষিক বাজেট পর্যালোচনা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর অনুমোদনের জন্য সুপারিশ চূড়ান্তকরণ;
 
 
(৩) বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃষ্টি, সৃষ্ট পদের দায়িত্ব-কর্তব্য, চাকুরীর শর্তাবলী ও বেতনক্রম, শিক্ষার্থী ফি নির্ধারণ এবং নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর নিকট প্রেরণ;
 
 
(৪) একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও উহার ফলাফল অনুমোদন;
 
 
(৫) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সকল পরীক্ষার সনদপত্র ও সনদপত্রের নিরাপত্তা প্রতীকের তদারকীকরণ ও হেফাজতকরণ;
 
 
(৬) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের শৃংখলা নিশ্চিতকরণ এবং শৃংখলা বিরোধী আচরণের প্রতিকার ও শাস্তির জন্য শৃংখলা কমিটির সুপারিশ বা প্রস্তাবাবলী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান;
 
 
(৭) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ে যৌন হয়রানি বা যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে শৃংখলা কমিটির সুপারিশ বা প্রস্তাবাবলী পরীক্ষা-নীরিক্ষা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান;
 
 
(৮) একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত প্রদান;
 
 
(৯) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবন্ধীকরণ, পরীক্ষার ফলাফল, হিসাব ও গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য রেকর্ড পত্রাদি যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(১০) বিশ্ববিদ্যালয়ের-সংবিধি প্রণয়নপূর্বক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর অনুমোদনের জন্য পেশ; এবং
 
 
(১১) বার্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়নপূর্বক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর মাধ্যমে চ্যান্সেলর, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে প্রেরণ।
একাডেমিক কাউন্সিল
১৯। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক কাউন্সিল থাকিবে এবং নিম্নবর্ণিত সদস্যগণ সমন্বয়ে একাডেমিক কাউন্সিল গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) ভাইস-চ্যান্সেলর, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(গ) সকল ডীন;
 
 
(ঘ) সকল বিভাগীয় বা ইনস্টিটিউট প্রধান;
 
 
(ঙ) প্রত্যেক বিভাগ হইতে জ্যেষ্ঠতা ও অনুক্রমণের ভিত্তিতে মনোনীত একজন অধ্যাপক;
 
 
(চ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত ০৩ (তিন) জন শিক্ষানুরাগী ;
 
 
(ছ) সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন শিক্ষাবিদ; এবং
 
 
(জ) রেজিস্ট্রার, যিনি ইহার সচিবও হইবেন।
 
 
(২) একাডেমিক কাউন্সিলের মনোনীত সদস্যগণ তাঁহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ কোন সদস্যের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত উক্ত সদস্য তাঁহার পদে বহাল থাকিবেন।
একাডেমিক কাউন্সিলের ক্ষমতা ও দায়িত্ব
২০।(১) একাডেমিক কাউন্সিল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক প্রধান কর্তৃপক্ষ হইবে।
 
 
(২) একাডেমিক কাউন্সিল-
 
 
(ক) সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষাদান, শিক্ষা এবং পরীক্ষার মান উন্নয়ন ও বজায় রাখিবার বিষয়ে দায়ী থাকিবে এবং এই সকল বিষয়ের উপর উহার নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা থাকিবে;
 
 
(খ) সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে, এই আইন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সংশ্লিষ্ট নীতিমালা এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধির বিধান অনুসারে পাঠ্যসূচি ও পাঠক্রম প্রণয়ন ও গবেষণার বিষয় নির্ধারণ করিবে;
 
 
(গ) বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি দ্বারা অর্পিত অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে এবং শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সিন্ডিকেটকে পরামর্শ প্রদান করিবে।
অনুষদ
২১। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যূন ৩ (তিন) বা ততোধিক শিক্ষা অনুষদ বা স্কুল অব স্টাডিজ থাকিবে।
 
 
(২) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক অনুষদে ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক অনুষদের শিক্ষকগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন ডীন অনুষদের প্রধান হিসাবে থাকিবেন এবং তিনি একাডেমিক কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি দ্বারা নির্দিষ্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা পরিচালনার দায়িত্বে থাকিবেন।
 
 
বিভাগ
২২। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সংশ্লিষ্ট অনুষদের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগ এই আইন, বিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি দ্বারা নির্দিষ্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা পরিচালনার দায়িত্বে থাকিবে।
 
 
 
 
(২) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগে ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক শিক্ষকদের মধ্য হইতে মনোনীত একজন বিভাগীয় প্রধান থাকিবেন এবং তিনি সংশ্লিষ্ট ডীনের মাধ্যমে ভাইস-চ্যান্সেলরের নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ তত্ত্বাবধানে থাকিয়া উক্ত বিভাগ সম্পর্কিত বিষয়ে এই আইন, বিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি ও কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত সিলেবাস ও কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন।
 
 
ইনস্টিটিউট
২৩।(১) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অনুমোদনক্রমে, কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এক বা একাধিক ইন্সটিটিউট স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থাপিত প্রত্যেক ইনস্টিটিউটের জন্য একজন পরিচালক থাকিবেন, এবং তিনি ভাইস-চ্যান্সেলরের নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ তত্ত্বাবধানে থাকিয়া ইনস্টিটিউট সম্পর্কিত বিষয়ে এই আইন, বিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি ও কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন।
 
 
পাঠক্রম কমিটি
২৪। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগের একটি পাঠক্রম কমিটি থাকিবে।
 
 
(২) পাঠক্রম কমিটিতে বিভাগীয় সকল শিক্ষক ও অন্য কোন স্বীকৃত বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ২ (দুই) জন বিশেষজ্ঞ সদস্য থাকিবেন এবং বিভাগীয় প্রধান পাঠক্রম কমিটির সভাপতি হইবেন।
 
 
(৩) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিষয় ও কোর্স বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে এবং লিখিত অনুমোদনপত্র জারী হইবার পূর্বে সংশ্লিষ্ট বিষয় ও কোর্সে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাইবে না।
 
 
(৪) কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কোন বিষয় বা কোর্সের উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন আনয়ন করিতে চাহিলে, পাঠ্যক্রম কমিটি তদ্‌বিষয়ে কমিশনের নিকট, উহার যুক্তিসহ, আবেদন করিবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন আবেদন প্রাপ্তির ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে কমিশন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
 
 
(৬) কমিশন উপ-ধারা (৫) এর অধীন নির্ধারিত সময়ে সিদ্ধান্ত প্রদান না করিলে, অথবা উহার প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সংক্ষুব্ধ হইলে, উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের নিকট আপীল করা যাইবে এবং এতদ্‌বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
অর্থ কমিটি
২৫। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অর্থ কমিটি থাকিবে এবং উক্ত কমিটির মনোনীত সদস্যদের মেয়াদ হইবে ৩ (তিন) বৎসর।
 
 
(২) নিম্নবর্ণিত সদস্যগণ সমন্বয়ে অর্থ কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত উহার ৩ (তিন) জন সদস্য, যাহার মধ্যে একজন সভাপতি হইবেন;
 
 
(খ) ভাইস-চ্যান্সেলর,;
 
 
(গ) ট্রেজারার;
 
 
(ঘ) ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন বিভাগীয় প্রধান;
 
 
(ঙ) সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ২ (দুই) জন প্রতিনিধি; এবং
 
 
(চ) পরিচালক (অর্থ), যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
অর্থ কমিটির ক্ষমতা ও দায়িত্ব।
২৬। (১) অর্থ কমিটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন করিবে এবং অনুমোদনের জন্য উহা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর নিকট প্রেরণ করিবে।
 
 
(২) অর্থ কমিটি সকল আর্থিক বিষয়ে সিন্ডিকেট ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করিবে।
 
শিক্ষক নিয়োগ কমিটি
২৭। শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে একটি শিক্ষক নিয়োগ কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(১) ভাইস-চ্যান্সেলর, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(২) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(৩) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত ৩ (তিন) জন শিক্ষানুরাগী;
 
 
(৪) সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২ (দুই) জন বিশেষজ্ঞ;
 
 
(৫) সংশ্লিষ্ট ডীন; এবং
 
 
(৬) সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় বা ইনস্টিটিউট প্রধান, যিনি অধ্যাপক পদ-মর্যাদার নীচে নহেন।
শৃংখলা কমিটি
২৮। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে একটি শৃংখলা কমিটি থাকিবে, যথা:-
 
 
(ক) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন সদস্য যিনি ইহার সভাপতি হইবেন;
 
 
(খ) ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(গ) সকল অনুষদের ডীনগণ;
 
 
(ঘ) সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন বিভাগীয় প্রধান;
 
 
(ঙ) রেজিস্ট্রার;
 
 
(চ) প্রক্টর, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
(২) শৃংখলা কমিটির কার্য-পরিধি সিন্ডিকেট কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) শৃংখলা কমিটি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের শৃংখলা নিশ্চিত করিবে।
 
 
(৪) শৃংখলা কমিটি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও যৌন নিপীড়নসহ সকল পর্যায়ের শৃঙ্খলা বিরোধী আচরণের প্রতিকার ও শাস্তির লক্ষ্যে এতদ্সংক্রান্ত অভিযোগ দাখিল, তদন্ত ও শুনানীর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও তদনুযায়ী দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সুপারিশ সম্বলিত প্রস্তাব সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের জন্য পেশ করিবে।
 
 
(৫) শৃংখলা কমিটির কোন সদস্যের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপিত হইলে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ অনতিবিলম্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করিবে, যাহাদের মধ্যে দুইজন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর সদস্য, দুইজন সিন্ডিকেট সদস্য এবং একজন আইনজ্ঞ থাকিবেন।
 
 
(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ শৃংখলা কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা
২৯। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নবর্ণিত পূর্ণকালীন কর্মকর্তা থাকিবেন, যথা :-
 
 
(ক) ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(খ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(গ) ট্রেজারার;
 
 
(ঘ) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক;
 
 
(ঙ) ডীন বা ডাইরেক্টর;
 
 
(চ) রেজিস্ট্রার;
 
 
(ছ) প্রক্টর;
 
 
(জ) বিভাগীয় প্রধান;
 
 
(ঝ) উপদেষ্টা (ছাত্র কল্যাণ);
 
 
(ঞ) পরিচালক (অর্থ);
 
 
(ট) জনসংযোগ কর্মকর্তা; এবং
 
 
(ঘ) লাইব্রেরিয়ান।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কর্মকর্তাগণ ছাড়াও কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাবলী দক্ষতার সহিত সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় অন্য কোন কর্মকর্তা নিয়োগ করা যাইবে।
 
 
চ্যান্সেলর
৩০। (১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর থাকিবেন।
 
 
(২) চ্যান্সেলর বা তাঁহার মনোনীত কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ডিগ্রি ও সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৩) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের প্রতিটি প্রস্তাবে চ্যান্সেলরের সম্মতি থাকিতে হইবে।
 
 
(৪) চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে, প্রতি বৎসর, অথবা তিনি আদেশ দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন সেরূপ সময়ের ব্যবধানে, একাডেমিক ডিগ্রি প্রদানের জন্য সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৫) শিক্ষা মন্ত্রণালয় চ্যান্সেলর এর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবে।
 
 
ভাইস-চ্যান্সেলর
৩১। (১) চ্যান্সেলর কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক প্রস্তাবিত কোন ব্যক্তিকে ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিযুক্ত করিবেন।
 
 
(২) ভাইস-চ্যান্সেলর উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী ও একাডেমিক কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি সিন্ডিকেট ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের জন্য প্রথম শ্রেণী বা সমমানের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা পি,এইচ,ডি ডিগ্রি এবং কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যূন ১০ (দশ) বৎসরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ গবেষণা বা প্রশাসনিক কাজে মোট ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা থাকিতে হইবে।
 
 
(৪) ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত কোন ব্যক্তি অন্য কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকিলে উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রস্তাবের সহিত উক্ত ব্যক্তির মূল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেশ করিতে হইবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের প্রস্তাবের সহিত প্রস্তাবিত ব্যক্তির লিখিত সম্মতিপত্র পেশ করিতে হইবে।
 
 
(৬) এই ধারার অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোন ভাইস-চ্যান্সেলর কোন কারণে তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অস্থায়ীভাবে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর এর দায়িত্ব পালন করিবেন, তবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর এর পদ শূণ্য থাকিলে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ভাইস-চ্যান্সেলর এর দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
(৭) ভাইস-চ্যান্সেলর পদাধিকারবলে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সদস্য হইবেন।
 
 
(৮) ভাইস-চ্যান্সেলর তাহার কাজের জন্য সিন্ডিকেট ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের নিকট দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৯) চ্যান্সেলর, সুষ্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য কোন কারণে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সুপারিশক্রমে, ভাইস-চ্যান্সেলরকে অপসারণ করিতে পারিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ভাইস-চ্যান্সেলরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
 
 
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর
৩২। (১) চ্যান্সেলর, কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক প্রস্তাবিত ব্যক্তিকে ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত করিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের জন্য প্রথম শ্রেণী বা সমমানের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা পিএইচ,ডি ডিগ্রি এবং কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যূন ১০ (দশ) বৎসরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ গবেষণা বা প্রশাসনিক কাজে মোট ১৫ (পনের) বৎসরের অভিজ্ঞতা থাকিতে হইবে।
 
 
(৩) প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত কোন ব্যক্তি অন্য কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকিলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রস্তাবের সহিত উক্ত ব্যক্তির মূল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেশ করিতে হইবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগের প্রস্তাবের সহিত প্রস্তাবিত ব্যক্তির লিখিত সম্মতিপত্র পেশ করিতে হইবে।
 
 
(৫) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত এবং ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
(৬) চ্যান্সেলর, সুস্পষ্ট কোন কারণে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সুপারিশক্রমে, কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলরকে অপসারণ করিতে পারিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
ট্রেজারার
৩৩। (১) চ্যান্সেলর, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সুপারিশক্রমে এবং উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, কোন ব্যক্তিকে ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার নিযুক্ত করিবেন।
 
 
(২) ট্রেজারার পদে নিয়োগের জন্য ন্যূনপক্ষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ অন্যূন ১৫ (পনের) বৎসরের অধ্যাপনা, প্রশাসনিক বা আর্থিক ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা থাকিতে হইবে।
 
 
(৩) ট্রেজারার বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করিবেন এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও শৃংখলা এবং হিসাবের জন্য দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৪) ট্রেজারারকে অপসারণ করিবার মত কোন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটিলে, সিন্ডিকেটের সুপারিশের ভিত্তিতে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সুস্পষ্টভাবে কারণ উল্লেখ করিয়া অপসারণের প্রস্তাব চ্যান্সেলরের নিকট প্রেরণ করিবে এবং চ্যান্সেলর উক্ত প্রস্তাব বিবেচনান্তে সংশ্লিষ্ট ট্রেজারারকে অপসারণ করিতে পারিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ট্রেজারারকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
 
 
রেজিস্ট্রার, লাইব্রেরিয়ান ও অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগ
৩৪। (১) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, লাইব্রেরিয়ান ও অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য নিম্নবর্ণিত সদস্যগণ সমন্বয়ে একটি নিয়োগ কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) ভাইস-চ্যান্সেলর, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর;
 
 
(গ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত উহার দুইজন প্রতিনিধি;
 
 
(ঘ) সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত সিন্ডিকেটের এইরূপ দুইজন প্রতিনিধি যাহারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য নহেন; এবং
 
 
(ঙ) ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বহিঃস্থ অধ্যাপক।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত নিয়োগ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে, সিন্ডিকেট কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, লাইব্রেরিয়ান ও অন্যান্য কর্মকর্তা নিযুক্ত হইবে।
শিক্ষা কার্যক্রম, ইত্যাদি
৩৫। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত পরিকল্পনা বা শিক্ষাক্রম সম্পর্কিত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের লিখিত অনুমোদন গ্রহণ করিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রোগ্রাম বা কোর্স চালু করিবার ক্ষেত্রে, যদি অন্য কোন আইনের অধীন প্রণীত কোন বিধি-বিধানে অন্য কোন সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ বাধ্যতামূলক হয়, তাহা হইলে উক্ত সংস্থার অনুমোদনও গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অনুমোদনের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে হইবে।
 
 
(৩) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ বা প্রোগ্রামের খন্ডকালীন শিক্ষক-সংখ্যা সংশ্লিষ্ট কোর্সের পূর্ণকালীন শিক্ষক-সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বেশী হইবে না, তবে শিক্ষক ব্যতীত পেশাভিত্তিক অন্যান্য অঙ্গন হইতে আগত রিসোর্স পার্সনগণ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন না।
 
 
(৪) কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হইলে উক্ত ব্যক্তির মূল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ছাড়পত্র গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(৫) কমিশন এই ধারার অধীন আবেদন ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে নিস্পত্তি করিবে।
 
 
(৬) কমিশন এই ধারার অধীন কোন আবেদন অনুমোদন করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে অনুরূপ অস্বীকৃতি জ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের নিকট আপীল করা যাইবে এবং উক্ত বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৭) কোন কারণে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলে কিংবা উহার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখিবার স্বার্থে, চ্যান্সেলর কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে, প্রয়োজনীয় আদেশ ও নির্দেশ দিতে পারিবেন এবং এতদ্বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণ
৩৬। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অভ্যন্তরীণ গুণগতমান নিশ্চিতকরণ সেল বা ইউনিট থাকিবে এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কে একটি বিবরণী থাকিতে হইবে।
বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি
৩৭। সিন্ডিকেট, এই আইন, বিধি এবং সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক প্রণীত আদেশ ও নীতিমালার আলোকে, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা, প্রশাসনিক, আর্থিক ও অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদন সম্পর্কিত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধি প্রণয়নপূর্বক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ও সরকারের মাধ্যমে চ্যান্সেলরের অনুমোদন গ্রহণ করিবে।
এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল
৩৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার একটি জাতীয়, স্বতন্ত্র ও স্বাধীন এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (Accreditation Council) গঠন করিবে।
 
 
(২) এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার উপর অর্পিত দায়িত্বাবলী সম্পাদন করিবে।
 
 
বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের কোর্স পরিচালনা বা ক্যাম্পাস স্থাপন
৩৯। (১) কোন বিদেশী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান, কর্তৃক সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ না করিয়া বাংলাদেশে কোন স্থানে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের নামে ক্যাম্পাস স্থাপন করা যাইবে না কিংবা কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানের অধীনে বাংলাদেশ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রী, ডিপ্লোমা বা সাটির্ফিকেট কোর্স পরিচালনা করা কিংবা কোন ডিগ্রী, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট প্রদান করা যাইবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের নামে ক্যাম্পাস স্থাপন অথবা কোন প্রোগ্রাম বা কোর্স অনুমোদন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সরকার প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন
৪০। (১) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নাম রেজিস্ট্রেশনপূর্বক একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করিতে হইবে।
 
 
(২) বিশ্ববিদ্যালয়-সংবিধির বিধান সাপেক্ষে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংশ্লিষ্ট কোর্স সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র ও মার্কশিটে উল্লেখ করিতে হইবে এবং এতদ্সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করিতে হইবে।
 
অর্থায়নের উৎস
৪১। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের উৎস হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
 
(১) কোন জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তিগোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিঃশর্তভাবে প্রদত্ত দান;
 
 
(২) কোন জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তিগোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট, প্রতিষ্ঠান বা সরকার হইতে প্রাপ্ত ঋণ;
 
 
(৩) কোন জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তিগোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
 
(৪) শিক্ষার্থী ফি;
 
 
(৫) বিভিন্ন খাতে সৃষ্ট সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়;
 
 
(৬) সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য উৎস”
 
শিক্ষার্থী ফি
৪২। প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করিবার নিমিত্ত শিক্ষার্থীদের জন্য দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার মানদন্ডে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি শিক্ষার্থী ফি কাঠামো প্রস্ত্তত করিয়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে অবহিত করিবে। কমিশন অবহিত হওয়ার পর প্রয়োজনে পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবে।
বেতন কাঠামো ও চাকুরী প্রবিধানমালা
৪৩। প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উহার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য উপযুক্ত বেতন কাঠামো ও চাকুরী প্রবিধানমালা প্রস্ত্তত করিয়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অনুমোদন গ্রহণ করিবে।
সাধারণ তহবিল
৪৪। (১) সংরক্ষিত তহবিল ছাড়াও, প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাধারণ তহবিল থাকিবে এবং প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত সাধারণ তহবিলে শিক্ষার্থীদের নিকট হইতে সংগৃহীত বেতন, ফি ও অন্যান্য উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা করিয়া উহা হইতে ব্যয় করিবে।
 
 
(২) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা এবং ট্রেজারার এর যৌথ স্বাক্ষরে সাধারণ তহবিল পরিচালিত হইবে।
 
 
(৩) সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে অবহিতক্রমে সাধারণ তহবিলের অর্থ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কর্তৃক নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।
 
 
(৪) প্রত্যেক আর্থিক বৎসরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূর্ববর্তী আর্থিক বৎসরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং সংরক্ষিত তহবিল ও সাধারণ তহবিলের হিসাব কমিশন ও সরকাররের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
 
 
(৫) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা উহার পক্ষে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, চ্যান্সেলরের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, দেশের বাহিরের কোন উৎস হইতে কোন তহবিল সংগ্রহ করিতে পারিবে না এবং অনুরূপ কোন তহবিল সংগ্রহ করিতে হইলে সরকারের মাধ্যমে চ্যান্সেলরের নিকট এতদ্সংক্রান্ত অনুমোদন গ্রহণের আবেদন দাখিল করিতে হইবে।
 
 
(৬) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বা উহার পক্ষে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, চ্যান্সেলরের অনুমোদন ব্যতীত, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল বা উহার কোন অংশ বাংলাদেশের বাহিরে প্রেরণ করিতে পারিবে না।
 
 
(৭) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না।
 
 
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
৪৫। (১) প্রত্যেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেক আর্থিক বৎসরে উহার আয় ও ব্যয়ের হিসাব কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত হিসাব প্রত্যেক আর্থিক বৎসরে বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত বহিঃনিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানসমূহের (সিএ ফার্ম) মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একটি ফার্ম দ্বারা নিরীক্ষা করাইতে হইবে এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন পরবর্তী আর্থিক বৎসরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কমিশনে প্রেরণ করিতে হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে প্রাপ্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ও কমিশন সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, এবং উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
পরিদর্শন, ইত্যাদি
৪৬। (১) সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, প্রয়োজনে, এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতা প্রদত্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, যে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনকৃত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকার বা কমিশন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, এবং উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
(৩) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিকট হইতে প্রাপ্ত কোন অভিযোগের ভিত্তিতে, অথবা উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনকৃত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনাগত বা অন্য কোন ত্রুটি বা গাফিলতির কারণে কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন বিপন্ন বা ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে বা কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে তাঁহার ন্যায্য পাওনা হইতে বঞ্চিত করা হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হইলে, উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, কমিশনের নির্দেশক্রমে, উক্ত শিক্ষার্থী বা, ক্ষেত্রমত, শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নিমিত্ত, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারের পূর্বানুমতিক্রমে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করিতে পারিবে।
 
 
(৫) সরকার বা কমিশন, উহার চাহিদা অনুযায়ী, যে কোন সময় যে কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট যে কোন প্রতিবেদন, বিবরণ বা তথ্য চাহিতে পারিবে এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত চাহিত প্রতিবেদন, বিবরণ বা তথ্য যথাসময়ে সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সরকার ও কমিশন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও শৃংখলা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিধান
৪৭। (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে সাময়িক অনুমতিপ্রাপ্ত কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে সনদ গ্রহণপূর্বক স্থায়ী না হইয়া থাকিলে, এই আইন কার্যকর হইবার পর, উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, ধারা ৯ এর শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে, সনদপত্র গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(২) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সনদপত্র গ্রহণ না করিলে উক্ত সময়সীমার পর সরকার উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতিপত্র বাতিল করতঃ উহা বন্ধ ঘোষণা করিবে।
 
 
তদন্ত ও সনদপত্র বাতিল
৪৮। (১) কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিচালনার ক্ষেত্রে অথবা উহার একাডেমিক বা আর্থিক ব্যবস্থাপনায় কোন অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হইলে, অথবা ধারা ৩, ৬, ৯, ১২, ১৩, ৩৫, ৩৯, ৪৪, ৪৫ বা ৪৬ এর বিধান বা এই আইনের অন্য কোন বিধান লংঘিত হইয়াছে বলিয়া প্রতীয়মান হইলে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, স্ব-প্রণোদিত হইয়া অথবা কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে, উক্ত বিষয়ে তদন্ত করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে তদন্তের ক্ষেত্রে, কমিশন উক্তরূপ আবেদন প্রাপ্তির পর অনধিক ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করিয়া সরকারের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন সম্পাদিত তদন্তে উল্লিখিত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে সরকার, সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত আছেন অথবা ছিলেন এইরূপ একজন বিচারপতি কর্তৃক, উক্ত অভিযোগের পুনঃতদন্ত করাইবে এবং উক্ত তদন্তে অভিযোগটি সত্য বলিয়া প্রমাণিত হইলে, সরকার উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র বাতিলের আদেশ প্রদান করিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, যুক্তিসংগত শুনানীর সুযোগ প্রদান না করিয়া এই ধারার অধীন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র বাতিল করা যাইবে না।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, উক্ত আদেশ জারীর তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের নিকট আপীল করিতে পারিবে এবং এই বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র বাতিল করা হইলে, কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন বিপন্ন বা ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে বা কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হইলে, উক্ত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, কমিশনের নির্দেশক্রমে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বা, ক্ষেত্রমত, শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।
 
 
(৬) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নিমিত্ত, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারের পূর্বানুমতিক্রমে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করিতে পারিবে।
 
অপরাধ, আমলযোগ্যতা ও দন্ড
৪৯। (১) কোন ব্যক্তি ধারা ৩(২),৩(৩),৬(৯), ৬(১০), ১২, ১৩(২), ৩৫(১), ৩৯, ৪৪(৫),৪৪(৬), ও ৪৪(৭),৪৫(২), ৪৬(২), ৪৬(৩), ৪৬(৬) বা ৪৭ এর বিধান লংঘন করিলে উক্ত লংঘন এই আইনের অধীন একটি অপরাধ হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদন্ড অথবা ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ দণ্ড অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(২) সরকার বা সরকারের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৫০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
অস্পষ্টতা দূরীকরণ
৫১। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৫২। এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, প্রয়োজনবোধে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনুদিত একটি প্রমাণীকৃত পাঠ প্রকাশ করিতে পারিবে, যাহা এই আইনের প্রমাণীকৃত ইংরেজি পাঠ (Authentic English Text) নামে অভিহিত হইবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের মূল বাংলা পাঠ ও উক্ত ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে মূল বাংলা পাঠটি প্রাধান্য পাইবে।
 
 
রহিতকরণ ও হেফাজত
৫৩। (১) এই আইন বলবৎ হইবার সংগে সংগে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ৩৪ নং আইন), অতঃপর রহিত আইন বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।
 
 
(২) রহিত আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রহিত আইনের অধীন স্থাপিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে এই আইনের অধীন আবশ্যক সকল শর্তাবলী যথাযথভাবে অনুসরণ ও প্রতিপালন করিতে হইবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs