প্রিন্ট ভিউ
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) ‘‘ইজারাগ্রহীতা’’ অর্থ এই আইনের অধীন জেলা প্রশাসক হইতে বালুমহাল ইজারা গ্রহণকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান;
(২) ‘‘ইজারামূল্য’’ অর্থ এই আইনের অধীন ইজারাগ্রহীতা কর্তৃক বালু বা মাটি উত্তোলনের বিনিময়ে সরকারকে প্রদত্ত অর্থ;
(৩) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ধারা ৬ এ বর্ণিত বালুমহাল ইজারা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ;
(৪) ‘‘খনিজ বালু’’ অর্থ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ ভারী খনিজ পদার্থ (heavy mineral) (যেমন Zircon, Rutile, Illmenite, Monazite, ইত্যাদি) সমৃদ্ধ বালু;
1[(৪ক) “জেলা প্রশাসক” অর্থ জেলা প্রশাসক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক;]
(৫) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);
(৬) ‘‘বালু’’ অর্থ খনিজ বালু ও সিলিকা বালু ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রকার বালু;
2[(৭) “বালুমহাল” অর্থ পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখিয়া আহরণযোগ্য বা উত্তোলনযোগ্য বালু বা মাটি সংরক্ষিত রহিয়াছে এইরূপ কোনো সরকারি মালিকানাধীন উন্মুক্ত স্থান, চা বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ যাহা এই আইনের অধীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক বালুমহাল হিসাবে ঘোষিত;]
(৮) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(৯) ‘‘বিভাগীয় কমিশনার’’ অর্থ বিভাগীয় কমিশনার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত অন্য কোন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার;
(১০) ‘‘মাটি’’ অর্থ মটলড্ ক্লে, শেল বা ক্লে এবং চায়না ক্লে (Fire clay or White clay) ব্যতীত অন্যান্য মাটি বা বালু মিশ্রিত মাটি;
(১১) ‘‘রাজস্ব অফিসার’’ অর্থ State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (E. B. Act XXVIII of 1951) এর section 2(24) এ এ সংজ্ঞায়িত Revenue officer;
(১২) ‘‘সিলিকা বালু’’ অর্থ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ সিলিকন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ বালু।
3[৪। বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো সরকারি মালিকানাধীন উন্মুক্ত স্থান, চা বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ হইতে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না, যদি-
(ক) উহা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১ নং আইন) এর অধীন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসাবে ঘোষিত হয়;
(খ) উহা সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হয় অথবা আবাসিক এলাকা হইতে সর্বনিম্ন ১ (এক) কিলোমিটার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সীমানার মধ্যে হয়;
(গ) বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙ্গনের শিকার হয়;
(ঘ) ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো স্থানে স্থাপিত কোনো গ্যাস-লাইন, বিদ্যুৎ-লাইন, পয়ঃনিষ্কাশন-লাইন বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ লাইন বা তদ্সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকে;
(ঙ) উহা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক চিহ্নিত বা নির্ধারিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন, সেচ, খরা প্রতিরোধের লক্ষ্যে নির্মিত জলাধার, ব্যারেজ, বাঁধ বা নদী ভাঙ্গন রোধকল্পে নির্মিত পরিকাঠামো বা অবকাঠামো সংলগ্ন এলাকা হয়;
(চ) চা বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হইবার সম্ভাবনা থাকে;
(ছ) নদীর ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য, মৎস্য, জলজ ও স্থলজ প্রাণি, ফসলি জমি বা উদ্ভিদ বিনষ্ট হয় বা হইবার আশংকা থাকে;
(জ) বালু বা মাটি উত্তোলনের কারণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক নির্ধারিত নৌ-পথের নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা নৌ-চ্যানেল বন্ধ হইবার সম্ভাবনা থাকে; এবং
(ঝ) উহা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত এলাকা বা সীমানা বা বিধি-নিষেধের আওতাভুক্ত হয়। ]
4[৭। (১) সরকারি কার্যক্রম বা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বালু বা মাটি উত্তোলন ও ব্যবহার করিবার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন হইবে।
(২) সরকারি কার্যক্রম বা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে বালু বা মাটি উত্তোলন, পরিবহণ, বিক্রয় ও সরবরাহের অনুমোদনের ক্ষেত্রে বালু ভরাট বাবদ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বা প্রকল্পের নির্ধারিত অর্থ সরকারের অনুকূলে জমা প্রদান করিতে হইবে এবং উন্নয়ন প্রকল্পে উক্তরূপ কাজে কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকিলে সংশ্লিষ্ট জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি উত্তোলিত বালু বা মাটির পরিমাণ ও রেট নির্ধারণ করিবে।
(৩) কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নদী, নদী বন্দর, সমুদ্র বন্দর, খাল, বিল, ইত্যাদি স্থান হইতে বালু বা মাটি উত্তোলনের প্রয়োজন হইলে বা নদী খনন প্রকল্প গৃহীত হইলে উক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো সরকারি কার্যক্রম বা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পূর্বেই এতদসংক্রান্ত এলাকা বালুমহাল হিসাবে ইজারা বহির্ভূত রাখিবার সম্ভাব্য সময় এবং উহার সুনির্দিষ্ট বিবরণ সম্পর্কে ভূমি মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করিবে।
৭ক। কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না, যদি-
(ক) উহা উর্বর কৃষি জমি হয়;
(খ) বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয়;
(গ) কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি বিনষ্ট হয়;
(ঘ) পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হয়; বা
(ঙ) ড্রেজারের মাধ্যমে বা অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাহাতে উক্ত জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি তাহার বসত বাড়ি নির্মাণ বা স্বীয় প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতিক্রমে নিজ মালিকানাধীন ভূমি হইতে সীমিত পরিসরে বালু বা মাটি উত্তোলন করিতে পারিবেন।
৭খ। এই আইনের অন্য কোনো ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন,-
(ক)ইজারা গ্রহীতা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উত্তোলিত বালু বা মাটি কোনোক্রমেই সর্বসাধারণের ব্যবহার্য রাস্তা বা রাস্তা সংলগ্ন স্থান, খেলার মাঠ, পার্ক বা উন্মুক্ত স্থানে স্তুপ আকারে রাখিয়া স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করিতে পারিবেন না;
(খ) ইজারা গ্রহীতা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উত্তোলিত বালু বা মাটি সংশ্লিষ্ট মালিক বা আইনানুগ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত স্থানীয় জনগণের জায়গা জমিতে বা সরকারের জায়গা জমিতে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের মাঠ, আঙ্গিনা বা জায়গা জমিতে স্তূপ আকারে রাখিতে পারিবেন না।]
৯। (১) বালুমহাল চিহ্নিত ও ঘোষণাকরণের ক্ষেত্রে, উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, জেলা প্রশাসককে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে-
(ক) সংশ্লিষ্ট এলাকার রাজস্ব অফিসার কর্তৃক পরিদর্শন করাইয়া ট্রেসম্যাপ ও তফসিলসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন গ্রহণ করিবেন;
5[(খ) নৌ-বন্দর সীমার বাহিরে নির্ধারিত নৌ-পথ যেই স্থানে বালু বা মাটি রহিয়াছে সেই স্থানে বিআইডব্লিউটিএ এর মাধ্যমে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনাপূর্বক স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন গ্রহণ করিবেন, তবে যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক উক্ত জরিপ পরিচালনা করা সম্ভব না হইলে, পানি উন্নয়ন বোর্ড বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থা কর্তৃক জরিপ সম্পন্ন করা যাইবে;]
(গ) দফা (ক) ও (খ) এর অধীন গৃহীত প্রতিবেদনের আলোকে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট এতদ্সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রেরণ করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর অধীন প্রস্তাব প্রেরণের পূর্বে জেলা প্রশাসক পরিবেশ, পাহাড় ধ্বস, ভূমি ধ্বস অথবা নদী বা খালের পানির স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন, সরকারি স্থাপনার (যথাঃ ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তাঘাট, ফেরিঘাট, হাটবাজার, চা-বাগান, নদীর বাঁধ, ইত্যাদি) এবং আবাসিক এলাকার কোনো ক্ষতি হইবে কিনা সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত গ্রহণ করিবেন।
6[৩) কোনো বালুমহালে উত্তোলনযোগ্য বালু বা মাটি না থাকিলে, বা বালু বা মাটি উত্তোলন করিবার ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট বা সরকারি বা বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত অথবা জনস্বাস্থ্য বা জনস্বার্থ বিঘ্নিত হইবার আশংকা থাকিলে অথবা উত্তোলিত বালু পরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি রাস্তা না থাকিলে বা এইরূপ বালু পরিবহণের কারণে বিদ্যমান সরকারি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ইজারাগ্রহীতা স্বীয় উদ্যোগে বা স্বীয় অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট রাস্তা মেরামত বা রাস্তা না থাকিলে তৈরি করিতে সম্মত না হইলে, জেলা প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনারের নিকট উক্ত বালুমহাল বিলুপ্ত ঘোষণা করিবার প্রস্তাব প্রেরণ করিতে পারিবেন।]
(৪) এই ধারার অধীন বালুমহাল চিহ্নিত ও ঘোষণাকরণ কিংবা বিলুপ্তি ঘোষণা সম্পর্কিত জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রেরিত প্রস্তাব বিভাগীয় কমিশনার পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক বা, ক্ষেত্রমত, সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক, অনুমোদন করিতে পারিবেন, বা সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ পুনঃপ্রস্তাব প্রেরণের নিমিত্ত ফেরত প্রদান করিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদন লাভ করিলে জেলা প্রশাসক 7[জনস্বার্থে] নির্ধারিত পদ্ধতিতে বালুমহাল ঘোষণা বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্তিক্রমে উহা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করিবেন।
(৬) এই ধারার অধীন কোন বালুমহাল ঘোষণা বা বিলুপ্ত করা হইলে জেলা প্রশাসক অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে উহা অবহিত করিবেন।
(৭) এই ধারার অধীন বালুমহাল ঘোষণা বা বিলুপ্তির আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সরকারের নিকট আপত্তি উপস্থাপনপূর্বক দরখাস্ত দাখিল করিতে পারিবেন এবং এই ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৮) এই আইন বলবৎ হইবার পূর্বে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ঘোষিত বালুমহাল এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন চিহ্নিত, ঘোষিত ও প্রকাশিত হইয়াছে।
১০। (১) সকল বালুমহাল, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করিতে হইবে।
(২) এই আইনের অধীন ইজারা প্রদান সংক্রান্ত সকল বিষয়ে জেলা প্রশাসককে সহায়তা করিবার জন্য প্রতিটি জেলায় জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে একটি কমিটি থাকিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন গঠিত জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন ও কার্যপদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন উম্মুক্ত দরপত্রে জেলা প্রশাসনের নিকট এই আইনের অধীন তালিকাভুক্ত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য কেহ অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না 8[:]
9[তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ১৪ এর উপধারা (১) এর অধীন কালো তালিকাভুক্ত ইজারাগ্রহীতা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত দরপত্রে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে না।]
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন তালিকাভুক্তির শর্তাদি, মেয়াদ ও পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৬) কোন বালুমহাল ইজারার প্রস্তাব অনুমোদিত হইবার পর, জেলা প্রশাসক ইজারা প্রদত্ত বালুমহালের সুনির্দিষ্ট বর্ণনাসহ ইজারার শর্তসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখপূর্বক বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে, ইজারা চুক্তি সম্পাদন করিবেন।
10[(৭) ইজারা মূল্যের সম্পূর্ণ অর্থ এবং ইজারা মূল্যের উপর সরকার নির্ধারিত আয়কর ও মূল্য সংযোজন করসহ সকল সরকারি দাবি আদায় সম্পাদন করিবার পর সংশ্লিষ্ট ইজারাগ্রহীতাকে বালুমহালের দখল হস্তান্তর করিতে হইবে।]
11[(৮) বালুমহাল ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) ইজারাগ্রহীতার নিকট হইতে ইজারা মূল্যের অতিরিক্ত জামানত হিসাবে সংগ্রহ এবং শর্ত ভঙ্গের কারণে উহা সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণ;
(খ) অনলাইন পদ্ধতিতে ইজারা কার্যক্রম সম্পাদনকরণ;
(গ) সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সরকারি কার্যক্রম বা উন্নয়ন প্রকল্পে উত্তোলিত বালু দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিক্রয়করণ;
(ঘ) বালুমহালের সীমানা চৌহদ্দি ও বালুর পরিমাণ নির্ণয় এবং ইজারা বিজ্ঞপ্তি ও চুক্তিতে উহা উল্লেখকরণ;
(ঙ) ইজারাগ্রহীতা কর্তৃক বালু উত্তোলনের পরিমাণ মনিটরিং করিবার নিমিত্ত স্যাটেলাইট ডাটা ক্রয়পূর্বক বালুর পরিমাণ নির্ধারণ বা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন বা ৬ (ছয়) মাস অন্তর সরকার অনুমোদিত জরিপ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিজিটাল জরিপ করিবার ব্যবস্থাকরণ;
(চ) বালুমহালের ইজারায় পূর্ববর্তী ও পরবর্তী হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ ও ইজারা মেয়াদের মধ্যে ডিজিটাল জরিপ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা বাবদ প্রয়োজনীয় সরকারি ব্যয় এবং উত্তোলনযোগ্য বালুর সম্ভাব্য বাজার মূল্য বিবেচনায় বালুমহাল ঘোষণার যৌক্তিকতা নিরূপণকরণ;
(ছ) বালুমহালের সরকারি ইজারা মূল্য নির্ধারণ ও উহা ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখকরণ; এবং
(জ) অবৈধ বা অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হইলে বা ঘর-বাড়ি, স্থাপনা, গাছ বা ফসল বিনষ্ট হইলে বা পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সাধিত হইলে, অনুরূপ ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় এবং ইজারাগ্রহীতার জামানত হইতে ক্ষতিপূরণ আদায় পদ্ধতি নির্ধারণের ব্যবস্থাকরণ।]
12[১১। কোনো বালুমহাল ইজারা প্রদান করা সম্ভব না হইলে, উক্ত ইজারা বহির্ভূত বালুমহাল হইতে সরকারি রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, খাস আদায়ের মাধ্যমে বালু বা মাটি উত্তোলন, পরিবহণ, বিক্রয় ও সরবরাহ করা যাইবে।]
13[১৩। বালুমহাল ইজারা প্রদানের মেয়াদ হইবে ১ (এক) বৎসর (প্রতি বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ হইতে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত)।]
১৪। 14[(১) ইজারাগ্রহীতা ইজারা মূল্য এবং ইজারা মূল্যের উপর সরকার নির্ধারিত আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর যথাসময়ে সরকারের নির্দিষ্ট খাতে জমা প্রদান না করিলে, অথবা ইজারা চুক্তিপত্রের কোনো শর্ত ভঙ্গ করিলে, জেলা প্রশাসক বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত ইজারাগ্রহীতাকে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করিয়া সংশ্লিষ্ট ইজারা চুক্তি বাতিল করিতে পারিবেন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত, মেয়াদ ও পদ্ধতিতে কালো তালিকাভুক্ত করিবেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন কোনো ইজারা চুক্তি বাতিল হইলে সংশ্লিষ্ট ইজারাগ্রহীতার জামানত সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে এবং উক্ত জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া সত্ত্বেও বালুমহালের দখল বুঝিয়া পাইয়াছে এইরূপ ইজারাগ্রহীতার ক্ষেত্রে জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ইজারা চুক্তি বাতিলের পূর্বে ইজারাগ্রহীতা কর্তৃক যেই পরিমাণ বালু উত্তোলন করা হইয়াছে সেই পরিমাণ বালুর জন্য হারাহারি ইজারা মূল্য কর্তনপূর্বক অবশিষ্ট ইজারা মূল্য ইজারাগ্রহীতাকে ফেরত প্রদানের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট সুপরিশ প্রদান করিতে পারিবে।]
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইজারা গ্রহীতা বা সংশ্লিষ্ট সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের ৭(সাত) কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।
(৪) বিভাগীয় কমিশনার উপ-ধারা (৩) এর অধীন আপিল প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ২০(বিশ) কর্মদিবসের মধ্যে, প্রয়োজনীয় শুনানী গ্রহণক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আপিল নিষ্পত্তি করিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর আপীল নিষ্পত্তিতে বিভাগীয় কমিশনারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
১৫। (১) 15[এই আইনের ধারা ৪ ও ৫ এ বর্ণিত] বালু বা মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ সংক্রান্ত বিধানসহ অন্য কোন বিধান কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অমান্য করিলে বা এই আইন বা অন্য কোন বিধান লংঘন করিয়া অথবা বালু বা মাটি উত্তোলনের জন্য বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করিলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (এক্সিকিউটিভ বডি) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনূর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদন্ড বা সর্বনিম্ন ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা হইতে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন 16[এবং উক্ত অপরাধে ব্যবহৃত ড্রেজার, বালু বা মাটিবাহী যানবাহন বা সংশ্লিষ্ট সামগ্রী সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে]।
(২) এই আইনের অধীন অপরাধ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভ্রাম্যমান আদালত বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার হইবে।
(৩) Code of Criminal Procedure, 1898 এ নির্ধারিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অর্থদন্ড আরোপ সম্পর্কিত সীমাবদ্ধতা এই আইনের অধীন নির্ধারিত অর্থদন্ড আরোপে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সীমিত করিবে না।
(৪) এই আইনের অধীন অপরাধ জামিনযোগ্য (Bailable), আমলযোগ্য (Cognizable) ও আপোষযোগ্য (Compoundable) হইবে।
(৫) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত রায় বা আদেশ দ্বারা কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি উক্ত দন্ডাদেশ প্রদানের ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে আঞ্চলিক অধিক্ষেত্রের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে স্থানীয় অধিক্ষেত্রের দায়রা জজের আদালতে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।