প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ১৯ নং আইন )

পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন বাতিল ও

সংহতকরণপূর্বক নতুন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
 

যেহেতু পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন বাতিল ও সংহতকরণপূর্বক নতুন আইন প্রণয়ণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 

সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ নামে অভিহিত হইবে।
 
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।
 
* এস, আর, ও নং ৪২-আইন/২০১৩, তারিখ: ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ইং দ্বারা ৩০ শে মাঘ, ১৪১৯ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
 
(৩) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রয়োগ হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
 
(১) ‘‘অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি (authorization holder) ’’ অর্থ কোন ব্যক্তি যাহাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত প্রবিধান দ্বারা সুনির্দিষ্ট কার্যাদি সম্পাদনের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমতি প্রদান করা হইয়াছে;
 
 
(২) ‘‘অনুমোদিতমাত্রা’’ অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত স্বীকৃত মাত্রা;
 
 
(৩) ‘‘অন্তর্ঘাত (sabotage) ’’ অর্থ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন নিউক্লীয় স্থাপনা বা নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থের বিরুদ্ধে, অথবা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বা ব্যবহৃত জ্বালানির (spent fuel) ব্যবস্থাপনা বা পরিবহন কাজের বিরুদ্ধে পরিচালিত কোন কাজ যাহার দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেজস্ক্রিয় পদার্থ নির্গত হওয়ার মাধ্যমে জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে অথবা পরিবেশ বিপন্ন হইতে পারে;
 
 
(৪) ‘‘আমদানি’’ ও ‘‘রপ্তানি’’ অর্থ Imports and Exports (Control) Act, 1950 (Act No. XXXIX of 1950) এর section 2(c) এ সংজ্ঞায়িত ”import” ও ”export” ;
 
 
(৫) ‘‘আয়নায়নকারী বিকিরণ (ionizing radiation) ’’ অর্থ এমন বিকিরণ যাহা কোন পদার্থে সঞ্চারণকালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উক্ত পদার্থে আয়ন-জোড় উৎপন্ন করিতে সক্ষম;
 
 
(৬) ‘‘উপদেষ্টা পরিষদ’’ অর্থ এই আইনের ধারা ১৬ এর অধীন গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ;
 
 
(৭) ‘‘উৎস পদার্থ (source material) ’’ অর্থ-
 
 
(ক) প্রকৃতিতে প্রাপ্ত আইসোটোপের মিশ্রণ রহিয়াছে এইরূপ ইউরেনিয়াম; বা
 
 
(খ) নিঃশেষিত (depleted) ইউরেনিয়াম; বা
 
 
(গ) থোরিয়াম; বা
 
 
(ঘ) ধাতু, ধাতব সংকর, রাসায়নিক যৌগ বা গাঢ় দ্রবণ আকারে উপ-দফা (ক), (খ) ও (গ) এ উল্লিখিত যে কোন একটি পদার্থ; বা
 
 
(ঙ) অন্য কোন পদার্থ যাহাতে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত গাঢ়ত্ব এবং পরিমাণ অপেক্ষা অধিক গাঢ়ত্ব বা পরিমাণে উপ-দফা (ক), (খ) ও (গ) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক পদার্থ বিদ্যমান রহিয়াছে;
 
 
(৮) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ;
 
 
(৯) ‘‘কমিশন’’ অর্থ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আদেশ, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সনের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১৫) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন;
 
 
(১০) ‘‘কর্মকাণ্ড’’ অর্থ মানব কর্তৃক সম্পাদিত কোন কার্য যাহার ফলে বিকিরণ সম্পাত সৃষ্টিকারী অতিরিক্ত উৎস বা বিভিন্নভাবে সম্পাত ঘটিবার পথ তৈরী হয়, অথবা অতিরিক্ত জনগণ বিকিরণ সম্পাতের আওতাভুক্ত হয় কিংবা বিদ্যমান উৎস হইতে সম্পাত ঘটিবার পথসমূহের নেটওয়ার্ক এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যে, জনগণ কর্তৃক প্রাপ্ত সম্পাতের পরিমান বা সম্পাতপ্রাপ্ত জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় বা পাইবার সম্ভাবনা দেখা দেয়;
 
 
(১১) ‘‘কর্মচারী’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী;
 
 
(১২) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থ কোন কোম্পানী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা ব্যক্তিসংঘ;
 
 
(১৩) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
 
(১৪) ‘‘তেজস্ক্রিয়তা (radioactivity) ’’ অর্থ ভাঙ্গন অথবা বিভিন্ন নিউক্লীয় কণা বিচ্ছুরণের মাধ্যমে কোন অস্থিতিশীল নিউক্লিয়াস ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়া;
 
 
(১৫) ‘‘তেজস্ক্রিয় পদার্থ (radioactive material) ’’ অর্থ অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অধিক মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা বিদ্যমান রহিয়াছে এমন পদার্থ;
 
 
(১৬) ‘‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য (radioactive waste) ’’ অর্থ এমন কোন পদার্থ, উহার ভৌত অবস্থা যাহাই হউক না কেন, বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বা হস্তক্ষেপ হইতে অবশিষ্টাংশ এবং যাহার পরবর্তী ব্যবহার পূর্বজ্ঞাত নয় এবং-
 
 
(ক) যাহা তেজস্ক্রিয় পদার্থ অথবা উহা দ্বারা দূষিত এবং যাহার সক্রিয়তা বা সক্রিয়তার গাঢ়ত্ব নিয়ন্ত্রণমূলক চাহিদায় ছাড়করণের মাত্রার চাইতে অধিক; এবং
 
 
(খ) যাহার বিকিরণ সম্পাত প্রযোজ্য প্রবিধানসমূহের আওতা বহির্ভূত নয়;
 
 
(১৭) ‘‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’’ অর্থ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হ্যান্ডলিং, পরিবহন, প্রি-ট্রিটমেন্ট, ট্রিটমেন্ট, কণ্ডিশনিং, স্টোরেজ এবং ডিসপোজাল সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কর্মকাণ্ড;
 
 
(১৮) ‘‘নিউক্লীয় ঘটনা (nuclear incident) ’’ অর্থ নিউক্লীয় ক্ষতিসাধন করে এমন উৎস হইতে সৃষ্ট কোন ঘটনা বা একই উৎস হইতে পর্যায়ক্রমে সৃষ্ট একাধিক ঘটনা অথবা নিবৃত্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন সত্ত্বেও ক্ষতিসাধনের ভয়াবহতা ও আসন্ন হুমকি প্রদান করে এমন কোন ঘটনা;
 
 
(১৯) ‘‘নিউক্লীয় জ্বালানি (nuclear fuel) ’’ অর্থ স্বঃঅব্যাহত নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনে সক্ষম পদার্থ;
 
 
(২০) ‘‘নিউক্লীয় দুর্ঘটনা (nuclear accident) ’’ অর্থ এমন একটি দুর্ঘটনা যাহাতে নিউক্লীয় শৃংঙ্খল বিভাজন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা ভাঙ্গিয়া পড়া, ক্রিটিক্যালিটি এবং ইরেডিয়েটেড নিউক্লীয় পদার্থের তাপ অপসারণ ব্যবস্থা ভাঙ্গিয়া পড়া অথবা নিউক্লীয় জ্বালানিসহ কোন নিউক্লীয় পদার্থের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়ার ফলে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়াইয়া পড়া অথবা উক্তরূপ যেকোন দুর্ঘটনার দুর্ঘটনাস্থলে কর্মরত কর্মী বা জনগণ কর্তৃক সম্ভাব্য বিপজ্জনক মাত্রার বিকিরণ সম্পাত প্রাপ্তির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়;
 
 
(২১) ‘‘নিউক্লীয় নিরাপত্তা (nuclear safety) ’’ অর্থ নিউক্লীয় স্থাপনা যথাযথ চালনার অবস্থা অর্জন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ বা দুর্ঘটনার ফলাফল উপশম করিবার মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকি হইতে কর্মী, জীবন ও পরিবেশের সুরক্ষা বিধান;
 
 
(২২) ‘‘নিউক্লীয় পদার্থ (nuclear material) ’’ অর্থ ৮০% এর অধিক আইসোটোপিক কনসেন্ট্রেশনযুক্ত প্লুটোনিয়াম-২৩৮ ব্যতীত প্লুটোনিয়াম; ইউরেনিয়াম-২৩৩; ২৩৫ বা ২৩৩ আইসোটোপ দ্বারা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম; আকরিক বা আকরিকের অবশেষ রূপ ব্যতীত প্রকৃতিতে সৃষ্ট আইসোটোপের মিশ্রণ বিদ্যমান রহিয়াছে এইরূপ ইউরেনিয়াম অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরূপিত অন্য কোন পদার্থ;
 
 
(২৩) ‘‘নিউক্লীয় ক্ষতি (nuclear damage) ’’ অর্থ-
 
 
(ক) জীবনহানি বা শারীরিক জখম বা মানসিক ক্ষতি;
 
 
(খ) সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতি;
 
 
(গ) উপ-দফা (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত ক্ষয়-ক্ষতি হইতে উদ্ভূত আর্থিক ক্ষতি, যতদূর সম্ভব, যা উক্ত উপ-দফাসমূহে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই, যদি উক্ত ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষিতে দাবীদার ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়;
 
 
(ঘ) ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ পূর্বের অবস্থায় ফেরত আনিবার পদক্ষেপের ব্যয়, যদি উক্ত বিপর্যয় তেমন উল্লেখযোগ্য না হয়, এবং প্রকৃতপক্ষে যদি উক্তরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, বা গ্রহণ করিবার সম্ভাবনা থাকে, এবং যতদূর সম্ভব, যাহা উক্ত উপ-দফা (খ) এ অন্তর্ভুক্ত হয় নাই;
 
 
(ঙ) পরিবেশ ব্যবহার বা উপভোগ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ হইতে উদ্ভূত আয়ের ক্ষতি, যাহা উক্ত পরিবেশের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ফলে সৃষ্ট, এবং যতদূর সম্ভব যাহা উক্ত উপ-দফা (খ) এ অন্তর্ভুক্ত হয় নাই;
 
 
(চ) নিউক্লীয় ঘটনা সংঘটিত হইবার পর কোন ব্যক্তি কর্তৃক উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ) ও (ঙ) বা (ছ) এ বর্ণিত ক্ষতি প্রতিরোধ বা মাত্রা হ্রাসের জন্য, যে রাষ্ট্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছিল সেই রাষ্ট্রের আইনানুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, যে কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যয় এবং উক্তরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পুনরায় সৃষ্ট ক্ষয়-ক্ষতি;
 
 
(ছ) পরিবেশ বিপর্যয় ব্যতীত অন্য কোনভাবে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি, যদি উক্ত ক্ষতি উপযুক্ত আদালতের দেওয়ানী দায় সম্পর্কিত সাধারণ আইন দ্বারা অনুমোদিত হয়;
 
 
উপরি-উক্ত উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ), (ঙ) এবং (ছ) এর ক্ষেত্রে, উক্ত ক্ষয়-ক্ষতি নিউক্লীয় ক্ষতির আওতায় পড়িবে যদি উহা কোন নিউক্লীয় স্থাপনার অভ্যন্তরের কোন বিকিরণ উৎস হইতে বা কোন নিউক্লীয় স্থাপনাস্থ নিউক্লীয় জ্বালানী বা তেজস্ক্রিয় উৎপাদ বা বর্জ্য হইতে বা নিউক্লীয় স্থাপনা হইতে আগত, উদ্ভূত বা প্রেরিত নিউক্লীয় পদার্থ হইতে নির্গত আয়নায়নকারী বিকিরণ হইতে উদ্ভূত বা সৃষ্ট হয়, উহা এইরূপ পদার্থের তেজস্ক্রিয় ধর্ম হইতেই উদ্ভূত হউক অথবা উক্ত পদার্থের বিষাক্ত, বিস্ফোরক বা অন্যান্য ক্ষতিকর ধর্মের সহিত তেজস্ক্রিয় ধর্মের সম্মিলনেই উদ্ভূত হউক;
 
 
ব্যাখ্যা।- (অ) ‘‘তেজস্ক্রিয় উৎপাদ বা বর্জ্য (radioactive products or waste) ’’ বলিতে নিউক্লীয় জ্বালানির উৎপাদন বা ব্যবহারকালে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা অন্য কোন পদার্থকে বুঝাইবে, যাহা বিকিরণ সম্পাতের দ্বারা তেজস্ক্রিয় করা হইয়াছে, তবে বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসা, কৃষি, বাণিজ্য অথবা শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারোপযোগী এমন রেডিওআইসোটোপ যা প্রস্ত্ততকরণের শেষ স্তরে পৌঁছাইয়াছে, ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবেনা;
 
 
(আ) ‘‘প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা (preventive measures) ’’ বলিতে নিউক্লীয় ঘটনা সংঘটিত হইবার পর যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ) ও (ঙ) বা (ছ) এ বর্ণিত ক্ষতি প্রতিরোধ বা মাত্রা হ্রাসের জন্য, যে কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণকে বুঝাইবে;
 
 
(২৪) ‘‘নিউক্লীয় রিঅ্যাক্টর (nuclear reactor) ’’ অর্থ এমন কোন কাঠামো যাহাতে নিউক্লীয় জ্বালানীএইরূপে বিন্যস্ত থাকে যে, নিউট্রনের কোন অতিরিক্ত উৎস ব্যতিরেকে উহাতে স্ব-অব্যাহত নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিভাজন প্রক্রিয়া ঘটিতে পারে;
 
 
(২৫) ‘‘নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল জরুরী অবস্থা (nuclear or radiological emergency) অর্থ এইরূপ কোন জরুরী অবস্থা যাহাতে নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিক্রিয়া অথবা শৃঙ্খল বিক্রিয়ার উৎপন্ন দ্রব্যের ক্ষয় হইতে সৃষ্ট শক্তি বা বিকিরণ সম্পাত (radiation exposure) হইতে বিপদ ঘটিয়াছে বা বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়াছে;
 
 
(২৬) ‘‘নিউক্লীয় শক্তি (nuclear energy) ’’ অর্থ বিভিন্ন ধরনের নিউক্লীয় মিথস্ক্রিয়া ও প্রক্রিয়া যেমন- বিভাজন (fission) , একীভবন (fusion) , ইত্যাদির কারণে পরমাণুর নিউক্লিয়াস হইতে বিমুক্ত সকল প্রকার শক্তি;
 
 
(২৭) ‘‘সিকিউরিটি (security) ’’ অর্থ নিউক্লীয় পদার্থ, অন্য কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থের অথবা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় সংঘটিতব্য চুরি, অন্তর্ঘাত, অনধিকার প্রবেশ, অবৈধ হস্তান্তর অথবা অন্য কোন বিদ্বেষপূর্ণ কার্য প্রতিরোধ ও চিহ্নিতকরণ এবং তৎবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(২৮) ‘‘নিউক্লীয় স্থাপনা (nuclear installation) ’’ অর্থ কোন নিউক্লীয় জ্বালানী নির্মাণ কেন্দ্র, নিউক্লীয় রিঅ্যাক্টর (সাব-ক্রিটিক্যাল ও ক্রিটিক্যাল এ্যাসেম্বলিসহ), গবেষণা রিঅ্যাক্টর, নিউক্লীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ব্যবহৃত জ্বালানি গুদামজাতকরণ স্থাপনা, সমৃদ্ধকরণ কারখানা বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনা অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরূপিত অন্য কোন স্থাপনা;
 
 
(২৯) ‘‘নিরাপত্তা (safety) ’’ অর্থ বিকিরণ ঝুঁকি হইতে মানুষ ও পরিবেশকে রক্ষা করা এবং নিউক্লীয় নিরাপত্তা, বিকিরণ নিরাপত্তা, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন নিরাপত্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে বিকিরণ বহির্ভূত নিরাপত্তার বিষয়গুলি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
 
(৩০) ‘‘নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি (specified equipment) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত যন্ত্রপাতি;
 
 
(৩১) ‘‘নির্দিষ্টকৃত অনিউক্লীয় পদার্থ (specified non-nuclear material) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অনিউক্লীয় পদার্থ;
 
 
(৩২) ‘‘পরমাণু শক্তি (atomic energy) ’’ অর্থ পরমাণু (atom) হইতে পারমাণবিক (atomic) ও নিউক্লীয় (nuclear) মিথস্ক্রিয়া ও প্রক্রিয়াসমূহের ফলে সকল ধরনের বিমুক্ত শক্তি;
 
 
(৩৩) ‘‘প্রাকৃতিক উৎস’’ অর্থ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট আয়নায়নকারী মহাজাগতিক ও জাগতিক বিকিরণের উৎস;
 
 
(৩৪) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(৩৫) ‘‘বিকিরণ (radiation) ’’ অর্থ পদার্থ বা স্থানের মধ্য দিয়া শক্তির এমন বিচ্ছুরণ বা সঞ্চারণ যাহা উক্ত পদার্থ বা স্থানে তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ বা প্রভাব সৃষ্টি করিতে পারে;
 
 
(৩৬) ‘‘বিকিরণ উৎপাদনকারী যন্ত্রপাতি’’ অর্থ কোন উৎপাদিত পণ্য বা যন্ত্রপাতি, অথবা উক্তরূপ পণ্য বা যন্ত্রপাতির অংশবিশেষ, অথবা চালনা করিবার সময় আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎপাদন বা নির্গত করিতে পারে এইরূপ কোন মেশিন বা সিস্টেম;
 
 
(৩৭) ‘‘বিকিরণ সুরক্ষা (radiation protection) ’’ অর্থ আয়নায়নকারী বিকিরণের প্রভাব হইতে জীবন এবং পরিবেশের সুরক্ষা;
 
 
(৩৮) ‘‘বিকিরণ সুরক্ষা কর্মকর্তা (radiation protection officer) ’’ অর্থ কোন বিশেষ কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট বিকিরণ নিরাপত্তা বিষয়ে উপযুক্ত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কোন ব্যক্তি যিনি অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর কর্তৃক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানে বর্ণিত শর্তাবলী পালন করা হইতেছে কিনা তাহা তত্ত্বাবধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হইয়াছেন;
 
 
(৩৯) ‘‘বিকিরণ উৎস (radiation source) ’’ অর্থ কোন নির্দিষ্ট স্থাপনায় অথবা স্থানে আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎপাদনকারী বা উৎপাদনে সক্ষম এইরূপ কোন পদার্থ বা যন্ত্রপাতি;
 
 
(৪০) ‘‘বিদেশী অপারেটর বা অপারেটর (overseas operator or operator) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিদেশী অপারেটর বা অপারেটর হিসাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা সংস্থা বা কোম্পানী;
 
 
(৪১) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(৪২) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থ স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন কোন ব্যক্তি, অংশীদারী প্রতিষ্ঠান, সমিতি, কোম্পানী, কর্পোরেশন, সমবায় সমিতি এবং বিধিবদ্ধ সংস্থা;
 
 
(৪৩) ‘‘ব্যবহৃত জ্বালানি (spent fuel) ’’ অর্থ এইরূপ কোন নিউক্লীয় জ্বালানি যাহা কোন রিঅ্যাক্টর কোরে ইরেডিয়েটেড হইবার পর উক্ত কোর হইতে স্থায়ীভাবে অপসারিত হইয়াছে এবং যাহা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ না করা পর্যন্ত কোন নিউক্লীয় প্ল্যান্টে ব্যবহার করা হইবে না;
 
 
(৪৪) ‘‘ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা’’ অর্থ ব্যবহৃত জ্বালানি নিউক্লীয় স্থাপনার অভ্যন্তরে স্থানান্তর বা স্টোরেজ সম্পর্কিত সকল ধরনের কার্যক্রম, তবে সাইটের বাহিরে পরিবহন সংক্রান্ত কোন কার্য ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
(৪৫) ‘‘ভৌত সুরক্ষা (physical protection) ’’ অর্থ নিউক্লীয় পদার্থ, নিউক্লীয় স্থাপনা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ অননুমোদিতভাবে পরিবর্তন বা হস্তক্ষেপ, বা অননুমোদিতভাবে অপসারণ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা ও সময়মত উক্তরূপ কার্যাদি চিহ্নিত করা এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত নিউক্লীয় পদার্থ উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে গৃহীত সকল প্রকার কারিগরি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, উপায় ও পদ্ধতি;
 
 
(৪৬) ‘‘সদস্য’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের কোন সদস্য এবং চেয়ারম্যানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
 
 
(৪৭) ‘‘স্থাপনা (facility) ’’ অর্থ নিউক্লীয় স্থাপনা, ইরেডিয়েশন স্থাপনা, ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম আকরিকসহ সকল তেজস্ক্রিয় আকরিক এর খনন ও প্রক্রিয়াকরণ স্থাপনা, তেজস্ক্রিয়-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থাপনা এবং অন্যান্য স্থান যেখানে তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, ব্যবহার, হ্যাণ্ডলিং, গুদামজাত বা ডিসপোজ (dispose) করা হয় অথবা যেখানে এমন বিকিরণ উৎপাদক (radiation generator) স্থাপন করা হইয়াছে যাহার জন্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক হয়।
 
 
 
 
 
 
 
 
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
 
 
কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৪।(১) এই আইন কার্যকর হইবার পর, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধান সাপেক্ষে ইহার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার বা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজের নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
 
কর্তৃপক্ষের কার্যালয়
৫। (১) কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত হইবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে উহার এক বা একাধিক শাখা কার্যালয়, গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
কর্তৃপক্ষের গঠন
৬। (১) একজন চেয়ারম্যান ও চার জন সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে।
 
 
(২) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহারা কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন।
 
 
(৩) চেয়্যারম্যান কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(৪) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের বেতন, ভাতা, পদমর্যাদা, জ্যেষ্ঠতা ও চাকুরীর অন্যান্য শর্তাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৫) চেয়্যারম্যান ও সদস্যগণ এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত বা অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ এবং কার্যাবলী সম্পাদন করিবেন।
 
 
(৬) কেবল কোন সদস্য পদে শূন্যতা বা কর্তৃপক্ষ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কর্তৃপক্ষের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবেনা বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবেনা।
 
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ
৭। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, নিয়োগের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন এবং সরকার, প্রয়োজন মনে করিলে, চেয়ারম্যান বা যেকোন সদস্যকে পুনঃনিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
৮। 1[(১) পরমাণু শক্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ নিযুক্ত হইবেন;
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন বিষয়ে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে একজন সদস্য নিয়োগ করা যাইবে।]
 
 
(২) এমন কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নিয়োগ পাইবার যোগ্য হইবেন না, যিনি-
 
 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক নহেন; বা
 
 
(খ) কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপী হিসাবে উক্ত ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক বা আদালত কর্তৃক ঘোষিত হইয়াছেন; বা
 
 
(গ) আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দেউলিয়াত্বের দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করেন নাই; বা
 
 
(ঘ) নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ সংঘটনের দায়ে আদালত কর্তৃক ২ (দুই) বৎসর বা তদূর্ধ্ব মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছেন, এবং উক্ত দণ্ড হইতে মুক্তিলাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর সময় অতিক্রান্ত হয় নাই; বা
 
 
(ঙ) মালিক, শেয়ার হোল্ডার, পরিচালক, কর্মকর্তা, অংশীদার বা পরামর্শক হিসাবে বা অন্যবিধ কারণে ধারা ১১ এ উল্লিখিত কর্মকাণ্ড সম্পৃক্ত বিষয়ের সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট।
 
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ ও দায়িত্ব পালনে অসমর্থতা
৯। (১) চেয়ারম্যান বা যে কোন সদস্য তাহার চাকুরীর নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যেকোন সময়, এক মাসের নোটিশ প্রদানপূর্বক, সরকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, সরকার চেয়ারম্যান বা যে কোন সদস্যকে তাহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-
 
 
(ক) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন বা দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানান; বা
 
 
(খ) নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধের জন্য কোন আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্থ হন; বা
 
 
(গ) এমন কোন কাজ করেন যাহা কর্তৃপক্ষের বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত কারণে চেয়ারম্যান অথবা কোন সদস্য তাহার পদে বহাল থাকার অযোগ্য বলিয়া মনে করিলে, সরকার, এতদ্‌সংক্রান্ত প্রচলিত বিধি বিধান অনুসরণপূর্বক, উক্ত কারণের যথার্থতা যাচাই করিবার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং উক্ত তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বা উক্ত সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান শূন্য পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠতম সদস্য চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
কর্তৃপক্ষের সভা
১০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ ইহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) সভার আলোচ্যসূচী, তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হইবে এবং চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, কর্তৃপক্ষের সচিব এইরূপ সভা আহবান করিবেন।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তৎকর্তৃক মনোনীত অন্য কোন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) চেয়ারম্যানসহ অন্যূন তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে, তবে মূলতবী সভার ক্ষেত্রে কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
 
(৫) উপস্থিত কর্তৃপক্ষের সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট থাকিবে।
 
 
(৬) চেয়ারম্যান, সদস্যগণের সহিত আলোচনাপূর্বক, প্রয়োজনবোধে, সংশ্লিষ্ট যেকোন প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিশেষজ্ঞগণ বা প্রতিনিধিবৃন্দকে কর্তৃপক্ষের সভায় পরামর্শ প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবেন, তবে উক্ত আমন্ত্রিত ব্যক্তিগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।
 
 
কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী
১১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করিবে, যথাঃ-
 
 
(১) এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধিমালা বা প্রবিধানমালার বিধানাবলী অনুযায়ী পরমাণু শক্তির নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ব্যবহার প্রতিপালিত হইতেছে কিনা ইহা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(২) প্রয়োজনীয় মানদণ্ড, সংবিধি (code) এবং নির্দেশাবলী প্রণয়ন ও প্রয়োগ;
 
 
(৩) ধারা ১৮ এ উল্লিখিত সকল কার্যাবলীর জন্য অনুমোদন অর্থাৎ লাইসেন্স, সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন, পারমিট, ইত্যাদি প্রদান, সংশোধন, স্থগিত অথবা বাতিলকরণ;
 
 
(৪) ধারা ১৮ এ উল্লিখিত সকল কার্যাবলীর জন্য কর্মকাণ্ড ভেদে নিউক্লীয় নিরাপত্তা, বিকিরণ সুরক্ষা, সিকিউরিটি, সেফগার্ড, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং ভৌত সুরক্ষা (physical protection) সম্পর্কিত বিধানাবলী যথার্থভাবে প্রতিপালিত হইতেছে ইহা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(৫) নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যাবলীর পুন:নিরীক্ষণ এবং মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;
 
 
(৬) পরিদর্শন পরিচালনার উদ্দেশ্যে কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
 
 
(৭) পুনঃনিরীক্ষণ ও মূল্যায়ন, পরিদর্শন এবং লাইসেন্স প্রদান;
 
 
(৮) বলবৎযোগ্য কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে গাইডলাইন প্রণয়ন এবং এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের বিধানাবলী প্রতিপালিত না হইলে উহার বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ এবং উহা অব্যাহত রাখা;
 
 
(৯) প্রবর্জন (exclusion) সংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ করা ;
 
 
(১০) কোন স্থাপনা বা নিউক্লীয় স্থাপনার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার (regulatory control) হইতে অব্যাহতি সংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ ও প্রদান করা;
 
 
(১১) অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থনৈতিক বিষয়াদিসহ উহার বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করা;
 
 
(১২) মাটি, পানি ও বায়ুতে এবং মানুষ ও জীবজন্তুর আহার্য অথবা অন্যবিধভাবে ব্যবহারকালে যে কোন বস্ত্তুর উপর তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা নির্ধারণ;
 
 
(১৩) স্থাপনাসমূহ এবং তৎসংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের সহিত সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে আগ্রহী পক্ষগণের সহিত সেমিনার, ওয়ার্কশপ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টমিডিয়া এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য এবং পরামর্শের জন্য জনগণের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ;
 
 
(১৪) সিকিউরিটির প্রস্ত্ততি বাস্তবায়নের জন্য ডিজাইন বেসিস থ্রেট (design basis threat) এর সংজ্ঞার্থ নির্ণয়ে অংশগ্রহণ;
 
 
(১৫) বিকিরণ উৎসের জন্য একটি জাতীয় নিবন্ধন বহি প্রস্ত্তত , সংরক্ষণ ও নিয়মিত হালনাগাদকরণ;
 
 
(১৬) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন কর্মকাণ্ড বা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য অনুমোদিত ব্যক্তিদের একটি জাতীয় নিবন্ধন বহি প্রস্ত্তত , সংরক্ষণ ও নিয়মিত হালনাগাদকরণ;
 
 
(১৭) সেফগার্ড চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সংগঠক এবং সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন;
 
 
(১৮) নিউক্লীয় ও তেজস্ক্রিয় পদার্থের সেফগার্ড ব্যবস্থা ও ভৌত সুরক্ষা, অবৈধ পাচার সহ নিউক্লীয় নিরাপত্তা, বিকিরণ সুরক্ষা ও রেডিওলজিক্যাল জরুরী ব্যবস্থা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি, এগ্রিমেন্ট, প্রটোকল ও কনভেনশন (যাহাতে বাংলাদেশ চুক্তিভুক্ত পক্ষ) বাস্তবায়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(১৯) নিউক্লীয় পদার্থের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং হিসাবের জন্য একটি স্থায়ী পদ্ধতি প্রণয়ন ও পরিচালনা;
 
 
(২০) রেগুলেটরি বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা;
 
 
(২১) স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ, সিকিউরিটি এবং বিপজ্জনক পণ্য পরিবহনে দক্ষতাসম্পন্ন বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সহিত যোগাযোগ এবং সমন্বয় সাধন;
 
 
(২২) জাতীয় নিউক্লীয় ও রেডিওলজিক্যাল জরুরী পরিকল্পনা প্রণয়নে এবং তদ্‌সম্পর্কিত সকল কার্যক্রমে সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন;
 
 
(২৩) বিকিরণজনিত ঘটনার ক্ষেত্রে একটি কার্যকর রিপোর্টিং পদ্ধতি অনুমোদন এবং নিউক্লীয় ও রেডিওলজিক্যাল জরুরী অবস্থায় জরুরী প্রস্ত্ততি এবং সুরক্ষামূলক কার্যক্রমের পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখা হইয়াছে মর্মে নিশ্চিতকরণ;
 
 
(২৪) নিউক্লীয় ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং স্থাপনার ভৌত সুরক্ষার জন্য যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে নিশ্চিতকরণ;
 
 
(২৫) নিউক্লীয় ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং উহাদের সংশ্লিষ্ট স্থাপনার অননুমোদিত বা বিদ্বেষপূর্ণ কর্ম সনাক্তকরণ, নিবারণ, ও সাড়া প্রদানসহ এইরূপ পদার্থ বা স্থাপনার সিকিউরিটির জন্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাকরণ;
 
 
(২৬) নিউক্লীয় স্থাপনা, বিকিরণ উৎপাদক, নিউক্লীয় পদার্থ, নিউক্লীয় উপাদান বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ, সংশ্লিষ্ট বিষয় অনিরাপদ বা সম্ভাব্য অনিরাপদ অবস্থায় সনাক্ত করা হইলে তদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংশোধনমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছে মর্মে নিশ্চিতকরণ;
 
 
(২৭) নিউক্লীয় ক্ষতির দায় ও পরিধি নির্ধারণ এবং তৎসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(২৮) নিউক্লীয় নিরাপত্তা এবং বিকিরণ সুরক্ষা বিষয়ে যে কোন বিদেশী নিউক্লীয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা অথবা এজেন্সীর সহিত যোগাযোগ ও সহযোগিতা;
 
 
(২৯) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
(৩০) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্রহণ এবং পরিচালনা;
 
 
(৩১) অন্যান্য দেশের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহিত নিয়ন্ত্রণমূলক তথ্য বিনিময় এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণ;
 
 
(৩২) প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রকাশ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা, জনগণ এবং মিডিয়ার সহিত যোগাযোগ;
 
 
(৩৩) নিউক্লীয় নিরাপত্তা এবং বিকিরণ সুরক্ষা সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(৩৪) ফি ও চার্জ সম্পর্কিত তফসিল প্রণয়ন;
 
 
(৩৫) উহার দায়িত্বাধীন বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রণয়ন এবং আদেশ জারি করা এবং উহা বাস্তবায়ন;
 
 
(৩৬) বিধি বা প্রবিধান বা সরকার কর্তৃক, সময়ে সময়ে কর্তৃপক্ষকে প্রদত্ত অন্য যে কোন নির্ধারিত অথবা অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদন।
 
 
 
অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব
১২। (১) কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করিবার জন্য সরকার একজন সার্বক্ষণিক অর্থ উপদেষ্টা ও একজন সচিব নিয়োগ করিবে।
 
 
(২) অর্থ উপদেষ্টা ও সচিবের বেতন, ভাতা, পদমর্যাদা, জ্যেষ্ঠতা ও চাকুরীর অন্যান্য শর্তাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১৩। (১) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
ক্ষমতা অর্পণ
১৪। কর্তৃপক্ষ, লিখিত আদেশ দ্বারা উক্ত আদেশে উল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে উহার সকল বা যে কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে পেশাদারী যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা রহিয়াছে এমন যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
 
 
কর্তৃপক্ষের তহবিল
১৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত বার্ষিক অনুদান;
 
 
(খ) এই আইনের অধীন আদায়কৃত ফি ও চার্জ;
 
 
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোন ব্যক্তি, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থার নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান; এবং
 
 
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষের তহবিল কর্তৃপক্ষের নামে কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে, তবে প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত আদেশ দ্বারা উক্ত তহবিল পরিচালিত হইবে।
 
 
ব্যাখ্যাঃ ‘‘তফসিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article-2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
 
 
(৩) কর্তৃপক্ষ উক্ত তহবিল হইতে উহার প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করিবে এবং উদ্বৃত্ত অর্থ (যদি থাকে) সরকারি কোষাগারে জমা হইবে।
 
 
উপদেষ্টা পরিষদ
১৬। (১) এই আইনের অধীন নিউক্লীয় নিরাপত্তা ও বিকিরণ সুরক্ষা সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক (regulatory) বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষ আদেশ দ্বারা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করিতে পারিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান - সভাপতি;
 
 
(খ) ভৌত বিজ্ঞানের যে কোন শাখায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী এবং নিউক্লীয় নিরাপত্তা - সদস্য;
 
 
ও বিকিরণ সুরক্ষার ক্ষেত্রে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রহিয়াছে
 
 
এমন একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী
 
 
(গ) ভৌত বিজ্ঞানের যে কোন শাখায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী এবং নিউক্লীয় বিজ্ঞান ও - সদস্য;
 
 
প্রযুক্তি বিষয়ে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রহিয়াছে এমন একজন
 
 
প্রখ্যাত বিজ্ঞানী
 
 
(ঘ) প্রকৌশল বিদ্যার যে কোন শাখায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী এবং নিউক্লীয় বিজ্ঞান - সদস্য;
 
 
ও প্রযুক্তি বিষয়ে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রহিয়াছে এমন একজন
 
 
প্রখ্যাত বিজ্ঞানী
 
 
(ঙ) পরমাণু চিকিৎসা, রেডিওলজি ও ইমেজিং বা রেডিওথেরাপিতে স্নাতকোত্তর - সদস্য;
 
 
ডিগ্রীধারী এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রহিয়াছে
 
 
এমন একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক
 
 
(চ) ভূ-পদার্থ, ভূ-প্রকৌশল বা ভূ-তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে - সদস্য;
 
 
অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রহিয়াছে এমন একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী
 
 
(ছ) কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের - সদস্য;
 
 
অভিজ্ঞতা রহিয়াছে একজন প্রখ্যাত পরমাণু কৃষি বিজ্ঞানী
 
 
(জ) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ঝ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ঞ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ট) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ঠ) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ড) বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য;
 
 
(ঢ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা - সদস্য।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজন মনে করিলে, সময় সময়, আদেশ দ্বারা উপদেষ্টা পরিষদের পরিধি বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
 
 
(৩) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত উপদেষ্টা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত আদেশে উপদেষ্টা পরিষদের মেয়াদ, দায়িত্ব, কার্যপরিধি এবং অন্যান্য শর্তাবলী নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।
 
 
(৪) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৫) উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতির অনুমোদনক্রমে, সভার আলোচ্যসূচী তারিখ, সময় এবং স্থান নির্ধারিত হইবে।
 
 
 
 
বিশেষজ্ঞ কমিটি
১৭। কর্তৃপক্ষ, সময় সময়, আদেশ দ্বারা ইহার কার্যে সহায়তাদানের জন্য এক বা একাধিক সদস্য অথবা উহার যে কোন কর্মকর্তা অথবা এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং উক্ত আদেশে কমিটির দায়িত্ব, মেয়াদ, সম্মানি, কার্যপরিধি এবং অন্যান্য শর্তাবলীও নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।
কতিপয় কার্যের উপর বিধি-নিষেধ
১৮।(১) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোন অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর কোন নিউক্লীয় স্থাপনা বা বিকিরণ স্থাপনার স্থান নির্ধারণ, নকশা প্রণয়ন, নির্মাণ, কমিশনিং, পরিচালনা ও ডিকমিশনিং, তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বন্ধ এবং সংশ্লিষ্ট স্থানকে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বিধান সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোন অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করিতে পারিবেনা, যথাঃ-
 
 
(ক) আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎপাদনকারী যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, উৎপাদন, অর্জন, আমদানি, রপ্তানি, ধারণ, ব্যবহার, মেরামত-রক্ষণাবেক্ষণ, বিপণন, হস্তান্তর, স্থানান্তর, গুদামজাতকরণ, বর্জন এবং এতদ্‌সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(খ) তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং/বা উৎস পদার্থসমূহ সংগ্রহ, উৎপাদন, অর্জন, আমদানি, রপ্তানি, ধারণ, ব্যবহার, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন, হস্তান্তর, স্থানান্তর, গুদামজাতকরণ, বর্জন বা নিষ্পত্তিকরণ এবং এতদ্‌সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(গ) নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ এবং/বা উৎস পদার্থসমূহ সংগ্রহ, উৎপাদন, অর্জন, আমদানি, রপ্তানি, ধারণ, ব্যবহার, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন, হস্তান্তর, স্থানান্তর, গুদামজাতকরণ, বর্জন বা নিষ্পত্তিকরণ এবং এতদ্‌সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(ঘ) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও ব্যবহৃত জ্বালানি সংগ্রহ, উৎপাদন, অর্জন, আমদানি, রপ্তানি, ধারণ, ব্যবহার, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন, হস্তান্তর, স্থানান্তর, গুদামজাতকরণ, ব্যবস্থাপনা, বর্জন বা নিষ্পত্তিকরণ এতদ্‌সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
 
 
(ঙ) তেজস্ক্রিয় আকরিক (ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম আকরিক) অনুসন্ধান, মাইনিং (mining) ও মিলিং (milling) কার্য এবং বিকিরণ সম্পাত ঘটিতে পারে এইরূপ অন্যান্য মাইনিং ও প্রক্রিয়াকরণ সহ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত প্রাকৃতিক উৎসজনিত সম্পাত সম্পৃক্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা;
 
 
(চ) নিউক্লীয় শক্তিচালিত যানবাহন, জাহাজ বা উড়োজাহাজ এবং নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং তেজস্ক্রিয়-বর্জ্য ও ব্যবহৃত জ্বালানি বহনকারী কোন যানবাহন, জাহাজ অথবা উড়োজাহাজ বাংলাদেশে আগমন, বহির্গমন বা ট্রানজিট গ্রহণ;
 
 
(ছ) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত ভোগ্য-পণ্য (consumer products) উৎপাদন, সংযোজন (assemble) , আমদানি, রপ্তানি, বিপণন এবং ব্যবহার;
 
 
(জ) আয়নায়নকারী বিকিরণ দ্বারা কোন খাদ্য সামগ্রী প্রক্রিয়াজাতকরণ অথবা অনুরূপভাবে অনুমোদিত মাত্রার অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়-দুষ্ট কোন খাদ্য-দ্রব্য বা পাণীয় আহরণ, ধারণ, উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি বা বিপণন;
 
 
(ঝ) বিকিরণ সুরক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য যেকোন কার্য পরিচালনা; এবং
 
 
(ঞ) নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা ।
 
 
(৩) উপরি-উক্ত উপ-ধারাসমূহে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্ট সময় উল্লেখপূর্বক, যে কোন ব্যক্তিকে এই ধারার যে কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
নিউক্লীয়, বিকিরণ ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনার অনুমোদনের ধাপ
১৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থান নির্ধারণের (siting) জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘স্থান নির্ধারণ (siting) ’ বলিতে কোন বিশেষ নিউক্লীয় স্থাপনা অথবা আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎসের স্থাপনার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান (site) নির্বাচন করা এবং যথাযথ মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট ডিজাইন বেইস (design base) নিরূপণ এবং নকশা প্রণয়নকে বুঝাইবে।
 
 
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ, বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নকশা প্রণয়নের (design) জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘নকশা প্রণয়ন (design) ’ বলিতে নিউক্লীয় স্থাপনা ও এর অংশসমূহের ধারণার পূর্ণতা প্রদান (developing concept) , বিস্তারিত পরিকল্পনা, সহায়ক ক্যালকুলেশন এবং স্পেসিফিকেশন (specification) এর প্রক্রিয়া ও ফলাফলকে বুঝাইবে।
 
 
(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্মাণের (construction) জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘নির্মাণ (construction) ’ বলিতে নিউক্লীয় ও বিকিরণ স্থাপনার অংশসমূহ প্রস্ত্তত ও সন্নিবেশকরণ সম্পর্কিত কার্যক্রম, সিভিল ওয়ার্কস সম্পন্নকরণ, যন্ত্রপাতি ও অংশসমূহ স্থাপন (installation) এবং সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাদি সম্পন্নকরণকে বুঝাইবে।
 
 
(৪) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ, বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থাপনের (installation) জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘স্থাপন (installation) ’ বলিতে তেজস্ক্রিয় ও বিকিরণ সংশ্লিষ্ট স্থাপনার স্থাপনকে বুঝাইবে।
 
 
(৫) এই আইনের উদ্দেশ্য পুরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয় বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কমিশনিং (commissioning) এর জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘কমিশনিং (commissioning) ’ বলিতে একটি প্রক্রিয়া যাহার মাধ্যমে নির্মাণ কার্য সমাপনান্তে কোন স্থাপনার ব্যবস্থাদি ও অংশসমূহ এবং কর্মকাণ্ডসমূহ সচল করা এবং সেইগুলি নকশা এবং প্রার্থিত কার্যসম্পাদন মাপকাঠি অনুযায়ী হইয়াছে কিনা তাহা যাচাইকরণকে বুঝাইবে।
 
 
(৬) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালনার (operation) অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘পরিচালনা (operation) ’ বলিতে যে উদ্দেশ্যে নিউক্লীয় ও বিকিরণ স্থাপনা র্নিমিত হইয়াছে উহা অর্জনে সকল প্রকার কর্মকাণ্ড সম্পাদন এবং উক্ত নিউক্লীয় ও বিকিরণ স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ, রিফুয়েলিং (refueling) , সক্রিয় চালনাকালীন পরিদর্শন (in-service inspection) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডসমূহকে বুঝাইবে।
 
 
(৭) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডিকমিশনিং (decommissioning) এর জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘ডিকমিশনিং (decommissioning) ’ বলিতে কোন স্থাপনা হইতে কতিপয় বা সকল প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ-অপসারণ বা তুলিয়া নেওয়ার জন্য গৃহীত সকল প্রকার প্রশাসনিক ও কারিগরি কার্যক্রমকে বুঝাইবে, তবে কোন গুদাম বা তেজস্ক্রীয় উপাদানের খনন কার্য ও প্রক্রিয়াকরণ কার্যের অবশিষ্ট অংশের ডিসপোজাল (disposal) করিবার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কতিপয় নিউক্লীয় স্থাপনা যাহা বন্ধ করা হইয়াছে অথচ ডিকমিশনিং করা হয় নাই উহা ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না।
 
 
(৮) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বন্ধের জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বন্ধ’ বলিতে সক্রিয় জীবন কাল শেষে কোন রেপজিটরীতে গৃহীত প্রশাসনিক ও কারিগরী ব্যবস্থাদি ও সংশ্লিষ্ট কাঠামোসমূহের সকল কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ ও সমাপ্তকরণকে বুঝাইবে।
 
 
(৯) এই আইনের উদ্দেশ্য পুরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন স্থানকে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হইতে অব্যাহতি প্রদানের জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং এই উপ-ধারায় ‘কোন স্থানকে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হইতে অব্যাহতি প্রদান’ বলিতে কোন স্থাপনা হইতে কতিপয় বা সকল প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ-অপসারণ বা তুলিয়া নেওয়ার জন্য গৃহীত সকল প্রকার প্রশাসনিক ও কারিগরি কার্যক্রম সম্পাদনের পর উক্ত স্থানটি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ হইতে অব্যাহতি প্রদানকে বুঝাইবে।
 
 
(১০) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সময় সময়, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এতদ্‌সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধাপের জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(১১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয়, বিকিরণ বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বা এতদ্‌সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড অনুমোদনের নিমিত্ত উপ-ধারা (১) হইতে (৯) এ বর্ণিত ধাপসমূহের যে কোন একটি অথবা একাধিক ধাপের জন্য অথবা পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ধাপের জন্য অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(১২) উপরি-উক্ত উপ-ধারাসমূহে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন একটি নির্দিষ্ট ধাপের জন্য প্রদত্ত অনুমোদনের ফলে কোন ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী কোন এক বা একাধিক ধাপের জন্য অনুমোদন প্রাপ্তির অধিকার লাভ করিবেন না।
 
 
অবহিতকরণপত্র
২০। (১) কোন ব্যক্তি ধারা ১৮ এ বর্ণিত কার্যাবলী পরিচালনা করিতে চাহিলে তিনি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নিকট এতদ্‌সংক্রান্ত একটি অবহিতকরণপত্র দাখিল করিবেন।
 
 
(২) খনিজ পদার্থ অনুসন্ধান বা মাইনিং (mining) বা উভয় কার্য পরিচালনাকালে কোন ব্যক্তি কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থ, নিউক্লীয় পদার্থ অথবা নির্ধারিত পদার্থের সন্ধান পাইলে, আবিষ্কার করিলে অথবা মালিকানা অর্জন করিলে, তিনি অবিলম্বে এইরূপ ঘটনা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে লিখিত প্রতিবেদন প্রদান করিবেন এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দেশিত হইয়া খনি সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ সকল নির্দেশনা পালন করিবেন।
অনুমোদন প্রদান প্রক্রিয়া
২১। (১) কোন ব্যক্তি, ধারা ১৮ এ উল্লিখিত কার্যাবলীর অনুমোদন লাভের জন্য, এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান অনুসারে প্রয়োজনীয় দলিলাদি ও নির্ধারিত ফিসহ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদনপত্র দাখিল করিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনপত্র বিবেচনার জন্য কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, আবেদনকারীকে অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) কর্তৃপক্ষ, অনুমোদনের ক্ষেত্রে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সুরক্ষা মানদণ্ড অনুসারে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সম্পর্কিত যে কোন শর্তাবলী আরোপ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) কর্তৃপক্ষ, অনুমোদনের সহিত সংযুক্ত হইতে পারে এইরূপ বিষয় এবং শর্তাবলী নির্দিষ্ট করিয়া দিতে পারিবে এবং তদতিরিক্ত বীমা, আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অথবা মানুষ এবং পরিবেশের সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের শর্তও নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।
 
 
(৫) আবেদন বিবেচনার পর, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, নির্ধারিত সময়ের জন্য কর্তৃপক্ষ অনুমোদন প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত অনুমোদন হস্তান্তর করা যাইবে না।
 
 
(৬) অনুমোদনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইলে, অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার নবায়ন এবং মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
নিউক্লীয় স্থাপনার ডিকমিশনিং তহবিল
২২। (১) সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিউক্লীয় স্থাপনার ডিকমিশনিং এর সহিত সম্পর্কিত আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে একটি ডিকমিশনিং তহবিল গঠন করিতে পারিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-
 
 
(ক) বিভিন্ন স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর বা অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি হইতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে আদায়কৃত অর্থ;
 
 
(খ) সংশ্লিষ্ট অর্থ বৎসরের জাতীয় বাজেট হইতে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ;
 
 
(গ) ডিকমিশনিং তহবিল হইতে উদ্ভূত মুনাফা;
 
 
(ঘ) অনুদান বা দান; এবং
 
 
(ঙ) ডিকমিশনিং তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত ডিকমিশনিং তহবিল কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে।
 
 
ব্যাখ্যাঃ ‘‘তফসিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article-2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তির দায়-দায়িত্ব
২৩। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি অনুমোদনের মেয়াদকালীন নিম্নবর্ণিত দায়-দায়িত্ব পালন করিবেন, যথাঃ-
 
 
(ক) নিউক্লীয় স্থাপনা বা বিকিরণ স্থাপনার স্থান নির্ধারণ হইতে শুরু করিয়া ডিকমিশনিং পর্যন্ত সকল পর্যায়ে নিউক্লীয় নিরাপত্তা, বিকিরণ সুরক্ষা, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, ভৌতসুরক্ষা, যাচাইপূর্বক জরুরী প্রস্ত্ততিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিতকরণ,
 
 
(খ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুনঃনিরীক্ষিত বা অনুমোদিত দলিল প্রতিপালন করা, তবে, এই আইন বা ইহার অধীন প্রণীত প্রবিধানের বিধানাবলীর আলোকে অনুমোদিত দলিলাদি কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনের ভিত্তিতে ব্যত্যয় করা যাইতে পারে;
 
 
(গ) নিউক্লীয় স্থাপনার জন্য ডিকমিশনিং তহবিল গঠন;
 
 
(ঘ) প্রয়োজন অনুসারে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠন এবং বিশেষ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন;
 
 
(ঙ) স্থান নির্ধারণ হইতে শুরু করিয়া ডিকমিশনিং পর্যন্ত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনাসহ নিউক্লীয় স্থাপনার সকল পর্যায়ে বা নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্থানান্তরের সময় যে কোন ধরনের ঘটনা এবং দুর্ঘটনা নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ তৎসঙ্গে সংঘটিত হইলে পরবর্তী অবস্থার/বিষয়ের উপশমকরণ বা বিলোপ সাধন;
 
 
(চ) নিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও ব্যবহৃত জ্বালানি সম্পর্কিত একটি তালিকা প্রণয়ন এবং রেকর্ড সংরক্ষণ;
 
 
(ছ) সেফগার্ড চুক্তি এবং এডিশনাল প্রটোকল অনুসারে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) এর নিকট প্রতিবেদন প্রেরণের উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট তৎকর্তৃক নির্ধারিত সময়ে ও ফরমে তথ্যাদি দাখিলকরণ;
 
 
(জ) স্থাপনা এলাকায় প্রাথমিক জরুরী পরিকল্পনা এবং স্থাপনা বহিঃস্থ এলাকার জরুরী পরিকল্পনা ও জরুরী পরিবহন নির্দেশাবলীর জন্য সোর্স দলিল প্রণয়ন;
 
 
(ঝ) ঘটনা ও দুর্ঘটনা নিবারণ অথবা পরিণতির প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কিত গৃহীত পদক্ষেপসমূহ অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণ;
 
 
(ঞ) যে সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করিয়া অনুমোদন প্রদান করা হয় এবং যে সকল বিষয় কোন অনুমোদনের ক্ষেত্রে সংশোধন বা বাতিলের কারণ হইতে পারে বলিয়া প্রতীয়মান হয়, সে সকল বিষয়ের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিতকরণ;
 
 
(ট) নিউক্লীয় পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্ষতি বা চুরির ঘটনা সনাক্ত করা অথবা এইরূপ সন্দেহ করা, অথবা নিউক্লীয় পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ, পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্রপাতি বা নিউক্লীয় পদার্থের অবস্থান বা প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের সিলমোহরের কোন ক্ষতি সম্পর্কে অবগত হইলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণ;
 
 
(ঠ) পরিবেশে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বা সোর্স নির্গমন বা বর্জনের কারণে সংঘটিত পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বা প্রশমনের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(ড) পর্যাপ্ত তহবিলসহ মানব সম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম প্রণয়ন এবং পরিচালনা;
 
 
(ঢ) নিউক্লীয় নিরাপত্তা এবং বিকিরণ সুরক্ষার জন্য জিজ্ঞাসু ও শিক্ষার্থীসুলভ আচরণকে উৎসাহিত করা এবং পরিতৃপ্তিকে নিরুৎসাহিত করিবার উদ্দেশ্যে সুরক্ষা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(ণ) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন।
 
 
নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, এতদ্‌সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃত্ব
২৪। কর্তৃপক্ষ, এই আইনের অধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার স্বার্থে এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাকল্পে তৎকর্তৃক নির্ধারিত নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, এতদ্‌সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি আমদানি, রপ্তানি, পুনঃরপ্তানি, ট্রানজিট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট নিয়ন্ত্রণের নিমিত্তে অনুমোদন প্রক্রিয়াসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
আমদানি এবং রপ্তানির জন্য অনুমোদন
২৫। কর্তৃপক্ষ, এই আইনের অধীন নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, এতদ্‌সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রবিধান প্রণয়ন করিবে যাহাতে নিম্নবর্ণিত যে কোন বিষয় বা বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) পুনঃনিরীক্ষণ ও আবেদন সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তফসিলসহ অনুমোদনের উদ্দেশ্যে আবেদন করিবার পদ্ধতি;
 
 
(খ) অনুমোদন আবশ্যক এমন পদার্থ, যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তির তালিকা;
 
 
(গ) প্রযুক্তি উন্নয়ন বা তৎসংশ্লিষ্ট অবস্থার পরিবর্তন বিবেচনার জন্য নিয়ন্ত্রিত বিষয়াদির পর্যায়ক্রমিক পুনঃনিরীক্ষণ বা হালনাগাদ তালিকা প্রণয়ন সম্পর্কিত বিধান;
 
 
(ঘ) আবেদন মূল্যায়ন এবং অনুমোদন প্রদানের মানদণ্ড;
 
 
(ঙ) প্রান্তিক ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণ;
 
 
(চ) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, রপ্তানি পণ্য চালানের (shipment) পূর্বে অবহিতকরণ;
 
 
(ছ) অনুমোদনের জন্য ফি বা চার্জের তফসিল প্রণয়ন;
 
 
(জ) রপ্তানির অনুমোদনের জন্য প্রয়োজন নেই এমন কোন পদার্থ বা পণ্য ট্রান্সশিপমেন্ট করিবার বিধান;
 
 
(ঝ) অনুমোদিত কার্যাবলী সম্পর্কিত রেকর্ড সংরক্ষণ চাহিদা নির্ধারণ।
 
 
আমদানি অনুমোদনের শর্তাবলী
২৬। এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সনাক্তকৃত নিয়ন্ত্রণ যোগ্য নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, এতদ্‌সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি আমদানির ক্ষেত্রে অনুমোদন লাভের জন্য নিম্নরূপ শর্তাবলী প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-
 
 
(ক) আমদানিযোগ্য পদার্থ, যন্ত্রপাতি অথবা প্রযুক্তি কোনভাবে বাংলাদেশের অন্য কোন আইন বা বিধি-বিধান দ্বারা নিষিদ্ধ নহে;
 
 
(খ) লাইসেন্স আবশ্যক এইরূপ আমদানিকৃত পদার্থ, যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তির গ্রহীতা যথাযথ অনুমোদন লাভ করিয়াছেন, যাহা বাংলাদেশে প্রযোজ্য আইন বা বিধি-বিধানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ;
 
 
(গ) আমদানিকৃত পদার্থ, যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তির প্রান্তিক ব্যবহারকারীর উক্ত পদার্থ, সামগ্রী বা প্রযুক্তির নিরাপদ ও নিরুদ্বিগ্নভাবে ব্যবহারের জন্য সুস্পষ্ট কারিগরি এবং প্রশাসনিক সামর্থ্য ও সম্পদ রহিয়াছে।
 
 
রপ্তানি অনুমোদনের শর্তাবলী
২৭। এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সনাক্তকৃত নিয়ন্ত্রণ যোগ্য নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, এতদ্‌সম্পর্কিত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে অনুমোদন লাভের জন্য নিম্নরূপ শর্তাবলী প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-
 
 
(ক) হস্তান্তরিত পদার্থ এবং তথ্য কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হইবে এই মর্মে গ্রহণকারী রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত অবশ্যপালনীয় অঙ্গীকারনামা;
 
 
(খ) হস্তান্তরিত বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) সেফগার্ড ব্যবস্থার প্রযোজ্যতা;
 
 
(গ) গ্রহণকারী রাষ্ট্র কর্তৃক উহার সকল নিউক্লীয় পদার্থ এবং নিউক্লীয় স্থাপনা সম্পর্কিত বিষয়াদি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সেফগার্ড ব্যবস্থার অধীনস্তকরণ;
 
 
(ঘ) পূর্বে হস্তান্তরিত পদার্থ এবং প্রযুক্তি অন্য কোন তৃতীয় রাষ্ট্রের নিকট বাংলাদেশের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে হস্তান্তরকরণ;
 
 
(ঙ) ভৌত সুরক্ষার স্তর যাহা রপ্তানিকৃত পদার্থের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে তা নিউক্লীয় পদার্থের ভৌত সুরক্ষা সম্পর্কিত কনভেনশনে উল্লিখিত বিধানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া;
 
 
(চ) হস্তান্তরযোগ্য নিউক্লীয় পদার্থ, যন্ত্রপাতি, তথ্যের প্রান্তিক ব্যবহার এবং প্রান্তিক ব্যবহারকারী সম্পর্কে আবেদনকারী কর্তৃক তথ্য প্রদান যা উক্ত পদার্থ, বিষয় বা তথ্যের বৈধ ব্যবহার হইতেছে কিনা ইহা নিশ্চিতকরণ।
 
অনুমোদন স্থগিত এবং বাতিলকরণ
২৮। (১) কর্তৃপক্ষ, এই আইনের অধীন প্রদত্ত যে কোন অনুমোদন প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, অনুমোদন সংক্রান্ত শর্তাবলী ভঙ্গ করা হইয়াছে মর্মে ধারা ৫১ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন প্রতিবেদন প্রাপ্ত হইলে-
 
 
(ক) উহার বিবেচনায় উপযুক্ত ক্ষেত্রে অনুমোদনের শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে; বা
 
 
(খ) জীবন, স্বাস্থ্য, সম্পদ অথবা পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুমোদনের অধীন কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে; বা
 
 
(গ) উক্ত অনুমোদন স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত ব্যবস্থার অতিরিক্ত হিসাবে এই আইনের ধারা ৫৩ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
 
 
 
 
(৪) এই ধারার অধীন কোন অনুমোদন স্থগিতকরণ বা বাতিলকরণ আদেশের বিরুদ্ধে যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, উক্তরূপ আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনা করিবার জন্য আবেদন করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, উক্তরূপ আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের নিকট আপীল করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ আপীলের ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
 
 
(৬) এই ধারার অধীন দায়েরকৃত আপীল দায়ের করিবার তারিখ হইতে ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
 
 
 
 
তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটি
২৯। (১) তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটি নিশ্চিত করিবার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি দায়ী থাকিবে এবং অনুমোদিত কার্যক্রমের পরিধির মধ্যে পর্যাপ্ত তহবিল এবং মানব সম্পদের বিষয় নিশ্চিত করিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটির যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে এবং এই সংক্রান্ত শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
 
 
নিউক্লীয় নিরাপত্তা
৩০। (১) কর্তৃপক্ষ অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক নিউক্লীয় পদার্থের নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটির যথাযথ প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে এবং এই সংক্রান্ত শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) নিউক্লীয় নিরাপত্তার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি দায়ী থাকিবে এবং অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় নিরাপত্তাসহ তৎসংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কৌশল এবং কারিগরি সহায়তা কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল এবং মানব সম্পদের বিষয় নিশ্চিত করিবেন।
 
 
(৩) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনা পরিচালনা এবং ডিকমিশনিংকালে, নিউক্লীয় নিরাপত্তা পুনঃনিরীক্ষণের ক্ষেত্রে যুগোপযোগী কৌশল বিবেচনা করিয়া নিউক্লীয় নিরাপত্তার নিয়মিত, বোধগম্য এবং কৌশলগত মূল্যায়ন এবং কোন ত্রুটি সনাক্ত হইলে উহা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৪) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনার কার্যক্রম, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং নির্ধারিত যন্ত্রপাতি পরীক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে পরিচালনা পদ্ধতি প্রণয়ন করিবেন এবং এইরূপ পদ্ধতি অবশ্যই অনুমোদনের শর্তাবলী অনুসারে হইতে হইবে এবং নিউক্লীয় স্থাপনার বর্তমান অবস্থা অনুসারে অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি উপরি-উক্ত পদ্ধতি হালনাগাদ এবং উৎকর্ষ সাধন করিবেন।
 
 
(৫) কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনার পরিবর্ধন সাধন করিতে পারিবেন এবং তৎবিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
 
 
(৬) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনার পরিবর্তন সাধন সংক্রান্ত রেকর্ডসমূহ আলাদাভাবে সংরক্ষণ করিবেন।
 
 
(৭) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক নির্দিষ্ট বিরতিতে পর্যায়ক্রমিক নিরাপত্তা পুনঃনিরীক্ষণ (periodic safety review) সম্পর্কিত কার্য সম্পাদনের বিষয়টি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে ।
 
 
(৮) নিউক্লীয় স্থাপনার স্থান নির্ধারণ, নক্‌শা, নির্মাণ, কমিশনিং, পরিচালনা, ডিকমিশনিং এবং রিপজিটরী বন্ধকরণে নিউক্লীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অপরিহার্য বিষয়াবলী এবং শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতিকে নিরাপত্তা শ্রেণীতে বিভক্তিকরণের শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৯) এই আইন এবং তথ্য প্রদান ও প্রকাশ সংক্রান্ত প্রচলিত আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোন ব্যক্তি নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপত্তা, ভৌত সুরক্ষা, বিকিরণ সুরক্ষা, সেফগার্ড, সিকিউরিটি, ইত্যাদি সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রদান করিতে পারিবেনা।
 
 
বিকিরণ সুরক্ষা
৩১। বিকিরণ সুরক্ষার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি দায়ী থাকিবেন এবং নিউক্লীয় স্থাপনা, বিকিরণ স্থাপনা, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও অন্যান্য স্থাপনার বিকিরণ সুরক্ষা সংক্রান্ত শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
 
 
মান নিশ্চিতকরণ
৩২। (১) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় ও বিকিরণ স্থাপনার মান নিশ্চিতকরণার্থে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, পদ্ধতি এবং সম্পদ সংস্থানের জন্য দায়ী থাকিবেন।
 
 
(২) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনা, শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতি, নিউক্লীয় শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উহাদের নিরাপত্তামূলক শ্রেণীতে বিভক্তকরণসহ যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং রক্ষণাবেক্ষণের বিষয় নির্ধারণ এবং মান নিশ্চিতকরণের জন্য দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৩) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তির মানসম্মত পরিচালনা সংক্রান্ত দলিল, নিউক্লীয় স্থাপনার মান সংক্রান্ত চাহিদা, শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা শ্রেণীতে বিভক্তকরণ এবং শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতির মান সংক্রান্ত চাহিদা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়া বাধ্যতামূলক হইবে।
 
 
(৪) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তির মানসম্মত পরিচালনা সংক্রান্ত দলিল, নিউক্লীয় স্থাপনা বিকিরণ স্থাপনার মান সংক্রান্ত চাহিদাবলী, শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতির মান সংক্রান্ত চাহিদাবলী এবং উহাদের অনুমোদনের বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
নিউক্লীয় ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং স্থাপনাদির ভৌত সুরক্ষা (Physical protection)
৩৩। (১) নিউক্লীয় পদার্থের ভৌত সুরক্ষা সম্পর্কিত কনভেনশনের শর্ত অনুযায়ী নিউক্লীয় পদার্থ এবং নিউক্লীয় স্থাপনার ভৌত সুরক্ষা নিশ্চিত করিতে হইবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্থান নির্ধারণ, নকশা, নির্মাণ, কমিশনিং, পরিচালনা ও ডিকমিশনিং এবং নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, পরিবহণ, ব্যবহার ও গুদামজাতকালে তৎসংশ্লিষ্ট নিউক্লীয় স্থাপনা, নিউক্লীয় পদার্থ এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থের ভৌত সুরক্ষা নিশ্চিত করিবেন।
 
 
(৩) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যিনি, নিউক্লীয় স্থাপনা কমিশনিং, পরিচালনা ও ডিকমিশনিং করেন অথবা নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, পরিবহন, ব্যবহার এবং মজুত করেন, তিনি একটি ভৌত সুরক্ষা পরিকল্পনা প্রস্ত্তত এবং উহা প্রয়োগ এবং ভৌত সুরক্ষা বিষয়ে অভ্যন্তরীণ বিধি প্রণয়ন এবং নির্দেশনা প্রদান ও ভৌত সুরক্ষার জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করিবেন।
 
 
(৪) যে সকল নিউক্লীয় স্থাপনা বা অন্য স্থাপনা যেখানে নিউক্লীয় পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার বা মজুত করা হয় এইরূপ স্থাপনার ভৌত-সুরক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রিত প্রবেশাধিকার এলাকা প্রতিষ্ঠা করা যাইবে।
 
 
(৫) অনুমতি গ্রহণ করিয়া কোন ব্যক্তি নিউক্লীয় পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার বা মজুদ করা হয় এইরূপ সুরক্ষিত কোন নিউক্লীয় স্থাপনায় বা অন্য স্থাপনায় উপস্থিত থাকিলে, তিনি অনুমোদন প্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ভৌত সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
(৬) নিউক্লীয় স্থাপনার শ্রেণীবিন্যাস বা নিউক্লীয় পদার্থের শ্রেণীবদ্ধকরণসহ উহাদের ভৌত সুরক্ষা বিধানের জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
নিউক্লীয় পদার্থের সেফগার্ড এবং আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ
৩৪। (১) কর্তৃপক্ষ নিউক্লীয় অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মধ্যে সম্পাদিত সেফগার্ড ব্যবস্থার প্রয়োগ সংক্রান্ত চুক্তি, যাহা নিউক্লীয় অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং তদতিরিক্ত প্রটোকল হইতে উদ্ভূত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সংগঠক এবং সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ সেফগার্ড এবং নিউক্লীয় অস্ত্রের বিস্তাররোধ সংক্রান্ত চুক্তি এবং আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত অতিরিক্ত প্রটোকলসমূহ বাস্তবায়নে স্বীয় সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করিবে, যথাঃ
 
 
(ক) বাংলাদেশের সকল সংস্থা এবং অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, সেফগার্ড ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে যথাসাধ্য সহায়তা প্রদান করিবে, তন্মধ্যে নিম্নোক্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত হইবেঃ
 
 
(অ) সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তি এবং তদতিরিক্ত প্রটোকল অনুসারে যাচিত তথ্য দ্রুততার সহিত সরবরাহ করা;
 
 
(আ) সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তি এবং তদতিরিক্ত প্রটোকল অনুসারে যাচিত স্থাপনাসমূহ এবং অন্যান্য স্থাপনায় প্রবেশের অধিকার প্রদান করা;
 
 
(ই) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকগণকে তাহাদের করণীয় কার্যাবলী সম্পাদনের সহযোগিতা প্রদান করা; এবং
 
 
(ঈ) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকগণের অনুরোধের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা;
 
 
(খ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথভাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার নিযুক্ত পরিদর্শকগণের, সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তির আওতাধীন কোন স্থাপনা বা স্থানে সেফগার্ড চুক্তির মাধ্যমে অনুমোদিত যাচাইকরণ কার্যক্রমের জন্য প্রবেশাধিকার থাকিবে;
 
 
(গ) সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তির আওতাধীন কার্যসম্পাদনরত যে কোন ব্যক্তি, সেফগার্ড চুক্তি হইতে উদ্ভূত যে অঙ্গীকার পূরণে বাংলাদেশ সম্মত উহা প্রতিপালনের জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার যথাযথভাবে নিযুক্ত পরিদর্শকগণকে উহার বিবেচনায় অপরিহার্য বা যথোচিত যে কোন ব্যবস্থাদি গ্রহণের অধিকার প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন;
 
 
(ঘ) দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী সংস্থা, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকগণকে তাহাদের উপর অর্পিত সেফগার্ড সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে, বাংলাদেশ হইতে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দ্রুততার সহিত ভ্রমণের সুবিধার্থে ভিসাসহ প্রয়োজনীয় যে কোন অনুমতিপত্র ইস্যু ত্বরান্বিত করিবে।
 
 
নিউক্লীয় পদার্থের রাষ্ট্রীয় হিসাব ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
৩৫। কর্তৃপক্ষ, প্রবিধান দ্বারা, সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তি অনুসারে, নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থাদি প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে সেফগার্ড সংক্রান্ত ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) নিউক্লীয় পদার্থের পরিমাপ পদ্ধতি;
 
 
(খ) পরিমাপের সঠিকতা মূল্যায়ন পদ্ধতি;
 
 
(গ) পরিমাপ-পার্থক্য পুনঃনিরীক্ষণের কার্যপ্রণালী;
 
 
(ঘ) ফিজিক্যাল ইনভেনটরি (physical inventory) ও ক্ষয়ের পরিমাণ নির্ধারণের কার্যপ্রণালী;
 
 
(ঙ) অপরিমাপকৃত ইনভেনটরির মূল্যায়ন পদ্ধতি;
 
 
(চ) নিউক্লীয় পদার্থের ইনভেনটরির এবং নিঃসরণ চিহ্নিতকরণের জন্য রেকর্ড ও রিপোর্ট করিবার পদ্ধতি;
 
 
(ছ) জবাবদিহিতার কার্যপ্রণালী এবং ব্যবস্থা সঠিকভাবে প্রতিপালিত হইয়াছে কিনা তৎমর্মে নিশ্চয়তা প্রদানের পদ্ধতি;
 
 
(জ) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে রিপোর্ট করিবার পদ্ধতি।
 
 
 
নিউক্লীয় পদার্থ হিসাব ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য
৩৬। কোন সেফগার্ড সংক্রান্ত চুক্তি উদ্ভূত অঙ্গীকার পূরণে বাংলাদেশ সম্মত হইলে কার্যসম্পাদনরত কোন ব্যক্তি উক্ত সেফগার্ড চুক্তির আওতায় চুক্তির বিধানাবলী প্রতিপালনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত দাখিল করিবে।
অবৈধ পাচার
৩৭। কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সহিত সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
তেজস্ক্রিয় বর্জ্য এবং ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবস্থাপনা
৩৮। (১) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য উৎপাদন হইতে শুরু করিয়া তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থাপনায় স্থানান্তরের পূর্ব পর্যন্ত তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা এবং সিকিউরিটির জন্য মূল উৎপাদনকারী দায়ী থাকিবেন।
 
 
(২) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য অনুমোদিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিম্নবর্ণিত বিষয় নিশ্চিত করিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) স্থাপনার সক্রিয় জীবনকালে এবং ডিকমিশনিং-এর সময় সুরক্ষা এবং সিকিউরিটির জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী এবং পর্যাপ্ত অর্থ-সম্পদের প্রাপ্যতা;
 
 
(খ) অর্থ সংক্রান্ত এইরূপ বিধান থাকা যাহা ডিসপোজাল স্থাপনা বন্ধ করিবার পরও কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সময়কালে যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবীক্ষণ ব্যবস্থাকে সক্ষম রাখিবে।
 
 
(৩) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিম্নরূপে হইবেঃ
 
 
(ক) সাবক্রিটিক্যালিটি অক্ষুণ্ণ রাখা;
 
 
(খ) অবশিষ্ট তাপ (residual heat) অপসারণ নিশ্চিতকরণ;
 
 
(গ) বিকিরণ কর্মী, জনসাধারণ এবং পরিবেশের উপর আয়নায়নকারী বিকিরণের প্রভাব হ্রাসকরণ;
 
 
(ঘ) নিউক্লীয় নিরাপত্তার উপর প্রভাব সৃষ্টিকারী গুণাগুণ, যেমন- বিষাক্ততা, দাহ্যতা, বিস্ফোরণমুখীতা ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ গুণাগুণ বিবেচনায় আনা।
 
 
(৪) ব্যবহৃত জ্বালানীর ব্যবস্থাপনা এবং উহার সিকিউরিটির দায়-দায়িত্ব চুক্তি অনুসারে উহার গ্রহণকারী এজেন্সীর নিকট সরবরাহ না করা অবধি অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা ব্যবহৃত জ্বালানী সৃষ্টিকারী উদ্ভাবকের উপর বর্তাইবে এবং অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা উদ্ভাবক নিউক্লীয় স্থাপনার সক্রিয় জীবনকালে এবং ডিকমিশনিং এর সময় ব্যবহৃত জ্বালানী এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী এবং পর্যাপ্ত অর্থ-সম্পদের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করিবে।
 
 
(৫) স্টোরেজ ও ডিসপোজাল বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন ও বিভিন্ন শ্রেণীতে শ্রেণীভূক্তকরণসহ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত চাহিদার বিস্তারিত বিবরণ এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের আমদানি, তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দলিলাদির বিষয়বস্ত্ত ও পরিধি, তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত হিসাব রক্ষণ বিষয়ক চাহিদার বিস্তারিত বিবরণ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন
৩৯। তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন সংশ্লিষ্ট চাহিদার বিস্তারিত বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
জরুরী প্রস্ত্ততি, পরিকল্পনা এবং প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা
৪০। (১) জন-স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও সম্পত্তির উপর সম্ভাব্য নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল দুর্ঘটনা বা ঘটনার প্রভাব বা ক্ষতি কার্যকরভাবে মোকাবেলা করিবার লক্ষ্যে প্রত্যেক অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের জরুরী প্রস্ত্ততি, পরিকল্পনা এবং প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সক্ষমতা থাকিতে হইবে।
 
 
(২) জরুরী পরিকল্পনা বলিতে নিউক্লীয় স্থাপনা বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনায় বা তেজস্ক্রিয় উৎস সম্পৃক্ত কোন ঘটনা এবং দুর্ঘটনা সনাক্তকরণ এবং আয়ত্ত্বকরণের জন্য এবং নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনা পরিচালনাকালে, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বা ব্যবহৃত জ্বালানির ব্যবস্থাপনাকালে এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহনকালে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় উপাদানের নিঃসরণের (release) পরিণতি সনাক্ত ও উপশমকরণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং কার্যপ্রণালীর সমষ্টিকে বুঝাইবে।
 
 
(৩) জরুরী হিসাবে চিহ্নিত পরিকল্পনাগুলো হইবে নিম্নরূপঃ
 
 
(ক) নির্মাণকালে স্থাপনা এলাকার প্রাথমিক জরুরী পরিকল্পনা (Preliminary on-site emergency plan) , যাহাতে নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনা অথবা কতিপয় নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনার স্থাপনা এলাকায় গৃহীতব্য সময়োচিত পদক্ষেপসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
 
 
(খ) একই অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত এক বা একাধিক নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনার স্থাপনা এলাকার জরুরী পরিকল্পনা (on-site emergency plan) , যাহাতে গৃহীতব্য সময়োচিত পদক্ষেপসমূহ এবং স্থাপনা বহিঃস্থ এলাকার জরুরী পরিকল্পনার সহিত সংযুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
 
 
(গ) স্থাপনা বহিঃস্থ এলাকার জরুরী পরিকল্পনা (off-site emergency plan) , যাহাতে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় উপাদান নিঃসরণের সময় জরুরী পরিকল্পনা অঞ্চলের (emergency planning zone) মধ্যে অবস্থিত জনসাধারণের সুরক্ষার জন্য গৃহীতব্য পদক্ষেপসমূহ এবং স্থাপনা এলাকার জরুরী পরিকল্পনার সহিত সংযুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
 
 
(ঘ) জরুরী পরিবহন নির্দেশাবলী, যাহাতে নিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বা ব্যবহৃত জ্বালানির স্থানান্তরকালে ঘটনা বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে গৃহীতব্য ব্যবস্থাদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
 
 
(ঙ) কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট অনুমোদন প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসাবে আবেদনের ভিত্তিতে প্রত্যেক নিউক্লীয় স্থাপনার জন্য সম্পূর্ণ অঞ্চল সীমানা (exclusion area boundary) এবং জরুরী পরিকল্পনা অঞ্চলের (emergency planning zone) আয়তন অনুমোদন করিবে।
 
 
(৪) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনায় কিংবা তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্থানান্তরকালে ঘটনা বা দুর্ঘটনা নিরোধক পদক্ষেপ গ্রহণ, ঘটনা বা দুর্ঘটনা সংঘটিত হইলে পরিণতি উপশমকরণ বা দুরীভূত করিবার জন্য ব্যবস্থাদি গ্রহণ এবং এতদ্‌সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং কার্যপ্রণালী সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করিবার বিষয়ে দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৫) জরুরী পরিকল্পনার বিষয়বস্ত্তর বিস্তারিত বিবরণ, উহা উপস্থাপন ও অনুমোদন, পদক্ষেপ গ্রহণ, কার্যপ্রণালী প্রণয়ন ও কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণ তৎসহ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (criteria) অনুসারে ঘটনার তীব্রতার মাত্রা নির্ধারণ, কর্তৃপক্ষ ও জনগণকে অবহিতকরণের বিস্তারিত বিবরণ, দরখাস্ত দাখিলের সময়সীমাসহ সম্পূর্ণ অঞ্চল সীমানা এবং জরুরী পরিকল্পনা অঞ্চলের আয়তন অনুমোদনের লক্ষ্যে দরখাস্তের সহিত সংযুক্ত সোর্স দলিলাদির (source document) উপাদানের বিস্তারিত বিবরণ, পরিবীক্ষণ পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণ, প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও জরুরী পরিকল্পনার হালনাগাদকরণ সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ, নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনায় এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্থানান্তরের সময় ঘটনা বা দুর্ঘটনার প্রদানযোগ্য উপাত্ত ও সময়-পরিক্রমার বিস্তারিত বিবরণ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
 
 
 
 
জরুরী প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা
৪১। (১) কোন প্রাপ্ত তথ্য বা অনুসন্ধানের ফলাফলের ভিত্তিতে যদি কর্তৃপক্ষের নিকট ইহা প্রতীয়মান হয় যে, কোন এলাকার বিকিরণ মাত্রা উক্ত এলাকার জনসাধারণ, জীব-জন্তু, সম্পদ বা পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বা ঝুঁকির সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত এলাকার জনসাধারণ ও পরিবেশের উপর সম্ভাব্য ঝুঁকি লাঘবের জন্য উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করিবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অবহিত করিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, জরুরী প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নিকট হইতে সহায়তা লাভ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজন মনে করিলে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এবং গণমাধ্যমে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে নির্দেশনা জারি করিতে পারিবেঃ
 
 
(ক) বিকিরণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অবস্থান;
 
 
(খ) উক্ত এলাকা হইতে ব্যক্তি, জীব-জন্তু বা সম্পদ অপসারণ; অথবা
 
 
(গ) উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ দ্বারা দূষণপ্রাপ্ত জীব-জন্তু ও সম্পদের ধ্বংসসাধন।
 
 
(৪) সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার উপ-ধারা (৩) এর অধীন জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং কোন ব্যক্তি উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা প্রতিপালনে ব্যর্থ হইলে অথবা অবহেলা করিলে, প্রয়োজনবোধে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তিসঙ্গত বলপ্রয়োগ করিতে পারিবেন।
 
 
(৫) কর্তৃপক্ষ অন্যরূপ নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার এর অনুমতি ব্যতীত উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত স্থানে প্রবেশ করিতে পারিবেন না এবং যদি কোন ব্যক্তি উক্তরূপ অনুমতি ব্যতীত, উক্ত স্থানে প্রবেশ করে বা প্রবেশের চেষ্টা করে, তাহা হইলে প্রয়োজনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার এর নিয়ন্ত্রণাধীনে বল প্রয়োগ করিয়া তাহাকে উক্ত স্থান হইতে অপসারণ করা যাইবে এবং প্রয়োজনে দোষী ব্যক্তিকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট সোপর্দ করা বা তাহাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(৬) এই ধারার অধীন গৃহীত ব্যবস্থার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কোন ব্যক্তি, কর্তৃপক্ষ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার অথবা সরকার বা কর্তৃপক্ষের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ দাবি করিবার অধিকারী হইবেন না।
 
 
নিউক্লীয় ও রেডিওলজিক্যাল জরুরী পরিকল্পনা
৪২। কর্তৃপক্ষ জাতীয় নিউক্লীয় ও রেডিওলজিক্যাল জরুরী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জরুরী অবস্থা উপশমকল্পে গৃহীত সকল কার্যক্রমে সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবে।
অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের দায়
৪৩। (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, যেখানেই ক্ষতি সংঘটিত হউক না কেন, নিউক্লীয় স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর কেবল নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দায়ী হইবে, তবে সেইক্ষেত্রে ইহা প্রমাণিত হইতে হইবে যে, উক্ত ক্ষতি অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর কর্তৃক পরিচালিত নিউক্লীয় স্থাপনায় কোন নিউক্লীয় ঘটনার ফলে সংঘটিত হইয়াছে।
 
 
(২) কোন নিউক্লীয় পদার্থ চুরি হইলে, হারাইলে, ভারমুক্ত করা হইলে (jettisoned) বা পরিত্যাগ করা হইলে, উক্ত নিউক্লীয় পদার্থ ধারণের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত সর্বশেষ অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের উপর উহা দ্বারা সৃষ্ট নিউক্লীয় ক্ষতির দায় বর্তাইবে।
 
 
(৩) যেখানে নিউক্লীয় ক্ষতি সংঘটিত হইবে, সেখানে নিউক্লীয় ক্ষতির দায় প্রয়োগ হইবে।
 
 
পরিবহনের সময় দায়
৪৪। (১) নিউক্লীয় পদার্থ পরিবহনের ক্ষেত্রে, প্রেরণকারী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দায়ী হইবে, যতক্ষণ না গ্রহণকারী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর সংশ্লিষ্ট পদার্থ নিজের দায়িত্বে গ্রহণ করে, যদি না গ্রহণ ও প্রেরণকারী অপারেটর পরিবহনের কোন পর্যায়ে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে দায়-দায়িত্ব পরিবর্তন করে অথবা উক্ত পদার্থ বহনকারীর অনুরোধে তাহার উপর উক্ত দায় দায়িত্ব অপর্ণ করে এবং শেষোক্ত ক্ষেত্রে, উক্ত বহনকারী এই আইন অনুসারে অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর হিসাবে গণ্য হইবে।
 
 
(২) যেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে কোন ব্যক্তির নিকট নিউক্লীয় পদার্থ প্রেরণ করা হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত নিউক্লীয় পদার্থ বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে যেই যানবাহনে করিয়া আনা হইয়াছে উহা হইতে খালাস করিবার পূর্ব পর্যন্ত প্রেরণকারী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর উক্ত নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দায়ী থাকিবে।
 
 
(৩) যেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে কোন ব্যক্তির নিকট হইতে নিউক্লীয় পদার্থ প্রেরণ করা হয়, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশ হইতে যে পরিবহনের মাধ্যমে নিউক্লীয় পদার্থ বহন করা হইবে উহাতে নিউক্লীয় পদার্থ বোঝাই (লোড) করিবার পর গ্রহণকারী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর উক্ত নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দায়ী হইবে।
 
দায়-দায়িত্বের পরিমাণ
৪৫। প্রতিটি নিউক্লীয় ঘটনার বিষয়ে দায় এর সর্বোচ্চ পরিমাণ হইবে বাংলাদেশী টাকায় তিন শত মিলিয়ন স্পেশাল ড্রয়িং রাইট (SDR) এর সমতূল্য বা সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন দ্বারা দায় এর সুনির্দিষ্ট পরিমাণ এবং প্রতিটি একক নিউক্লীয় ঘটনার জন্য একজন অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের দায় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
আর্থিক নিরাপত্তা
৪৬। (১) নিউক্লীয় ক্ষতির দায় মিটাইবার জন্য নিউক্লীয় স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের বীমা থাকিতে হইবে ও উহা চলমান রাখিতে হইবে, অথবা অন্যান্য আর্থিক নিরাপত্তা থাকিতে হইবে।
 
 
(২) নিউক্লীয় স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরকে উপ-ধারা (১) এর অধীন আর্থিক নিরাপত্তার শর্তাবলী অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিতে হইবে।
 
 
(৩) নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এর অধীন ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণের জন্য অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের বীমা বা আর্থিক নিরাপত্তা এইরূপ দাবি মিটাইবার জন্য অপর্যাপ্ত বলিয়া গণ্য হইলে, বাংলাদেশ সরকার দাবির জন্য পাওনা নিশ্চিত করিবে, উক্তরূপ যে কোন ক্ষেত্রে, দাবী পরিশোধের জন্য ধারা ৪৫ এ ধার্যকৃত পরিমাণের অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হইবে না।
 
 
ক্ষতিপূরণের অধিকারের তামাদি
৪৭। (১) এই আইনের অধীন নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য নিম্নরূপ সময়ের মধ্যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা না হইলে, উক্ত ক্ষতিপূরণের অধিকার তামাদি হইবে-
 
 
(ক) জীবনহানি বা ব্যক্তিগত ক্ষতির ক্ষেত্রে, নিউক্লীয় ঘটনার তারিখ হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর;
 
 
(খ) অন্য কোন নিউক্লীয় ক্ষতির ক্ষেত্রে, নিউক্লীয় ঘটনার তারিখ হইতে ২৫ (পঁচিশ) বৎসর।
 
 
(২) যেদিন হইতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতি এবং উক্ত ক্ষতির জন্য দায়ী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর সম্পর্কে অবহিত হইয়াছেন বা যুক্তিসঙ্গত কারণে অবহিত হওয়া উচিত উহার ১০ (দশ) বৎসরের মধ্যে উত্থাপিত না হইলে এই আইনের অধীন নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের অধিকার তামাদি হইবে, যদি উপ-ধারা (১) এ প্রতিষ্ঠিত সময়সীমা অবসান না হয়।
 
 
(৩) উপযুক্ত আদালতের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকিলে, নিউক্লীয় ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দাবিকারী এবং এই ধারা অনুসারে প্রযোজ্য সময়কালের মধ্যে ক্ষতিপূরণের দাবি উত্থাপনকারী যে কোন ব্যক্তি, আদালত কর্তৃক বিচার চূড়ান্ত হইবার পূর্বে, এমনকি উক্ত ক্ষয়-ক্ষতির জন্য দাবী উত্থাপনের সময় অতিক্রান্ত হইলেও, বর্ধিত ক্ষতি বিবেচনা করিবার জন্য দাবী সংশোধন করিতে পারিবেন।
 
 
ক্ষতিপূরণ
৪৮।(১) ক্ষতিপূরণের প্রকৃতি, ধরন, পরিমাণ এবং ন্যায়সঙ্গত বণ্টন এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) ধারা ৪৫ এ সর্বোচ্চ দায়-দায়িত্বের যেই পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া দেওয়া হইয়াছে উহা হইতে দাবীর পরিমাণ অধিক হইলে বা হইবে বলিয়া মনে হইলে, নিউক্লীয় ঘটনার দ্বারা সংগঠিত নিউক্লীয় ক্ষতির ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে কোন জীবনহানি বা ব্যক্তিগত ক্ষতির জন্য প্রথমে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে এবং উক্ত দাবীসমূহ মিটাইবার পর অন্যান্য ক্ষতি বা বিনষ্টের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।
 
 
(৩) নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দেওয়ানী আদালত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে যে সুবিধা এবং খরচ প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিবে তাহা ধারা ৪৫ এ নির্ধারিত অন্যূন দায়-দায়িত্বের অতিরিক্ত হইবে।
 
 
এখতিয়ার
৪৯। (১) এই আইন অনুসারে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানা অথবা একক অর্থনৈতিক অঞ্চলের (Exclusive Economic Zone) মধ্যে সংঘটিত নিউক্লীয় ঘটনার মাধ্যমে সৃষ্ট নিউক্লীয় ক্ষতির ক্ষতিপূরণের দাবীর মামলা কেবল এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে এবং উহা এই আইনের বিধান অনুযায়ী আদালতে উত্থাপন করিতে হইবে।
 
 
(২) এই আইন অনুসারে নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী যে কোন ব্যক্তি, দায়ী অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর বা বীমাকারীর বিরুদ্ধে বা ধারা ৪৬ অনুসারে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদানকারী অন্য যে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন।
 
 
দায়-দায়িত্বের ব্যতিক্রম
৫০। (১) নিউক্লীয় স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর নিউক্লীয় ক্ষতির জন্য দায়ী হইবে না যদি প্রতিপন্ন হয় যে ইহা সরাসরি নিম্নবর্ণিত কারণে হইয়াছেঃ
 
 
(ক) ব্যতিক্রমধর্মী গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগ;
 
 
(খ) প্রত্যক্ষ সশস্ত্র যুদ্ধ, শত্রুতা, গৃহযুদ্ধ বা গণ-অভ্যুত্থান।
 
 
(২) নিউক্লীয় স্থাপনার অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর যদি ইহা প্রমাণ করিতে পারে যে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সরাসরি অবহেলা অথবা ক্ষতি করিবার উদ্দেশ্যে উক্ত ব্যক্তির কোন কার্য বা নিষ্ক্রিয়তার জন্য সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতি সাধিত হইয়াছে, তাহা হইলে এইরূপ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান হইতে অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে দায়মুক্ত হইতে পারিবে।
 
 
(৩) এই আইনের কোন কিছুই নিউক্লীয় ক্ষয়-ক্ষতির জন্য কোন ব্যক্তিগত দায়কে প্রভাবিত করিবে না, যেই ক্ষয়-ক্ষতির জন্য, উপ-ধারা (২) এর কারণে, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর দায়ী নহেন, এবং যাহা ক্ষতি করিবার অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির কার্য বা বিচ্যুতি দ্বারা সংঘটিত হইয়াছে।
 
 
পরির্দশন
৫১। (১) এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান অনুসারে নিয়ন্ত্রণমূলক পরিদর্শন পরিচালনার উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার অভ্যন্তরে অবস্থিত অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অনুমোদনের জন্য আবেদনকারী অথবা অননুমোদিত বা অঘোষিত যে কোন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা অথবা কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণমূলক পরিদর্শনের আওতায় আসিবে।
 
 
(৩) বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলী, কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে তাহার ঘোষিত বা অঘোষিত পরিদর্শন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করিবেন এবং বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলীগণ-
 
 
(ক) এই আইন এবং ইহার অধীন প্রণীত প্রবিধানের বিধানাবলী যথাযথভাবে পালিত হইতেছে কিনা উহা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে যে কোন স্থান বা যানবাহনে প্রবেশ করিতে পারিবেন এবং পরিদর্শন ও অনুসন্ধান কার্য চালাইতে পারিবেন;
 
 
(খ) নিউক্লীয় নিরাপত্তা অবস্থা, তেজস্ক্রিয়তার সীমা এবং আনায়নকারী বিকিরণ মাত্রা সম্পর্কিত শর্তাবলী পালিত হইতেছে কিনা উহা যাচাইকরণ, সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র, যন্ত্রপাতি বা পদার্থ বা উহাদের বিশ্লেষণের জন্য নমুনা সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট হইতে প্রয়োজনীয় তথ্য তলব করিতে পারিবেন;
 
 
(গ) বিকিরণ উৎস অথবা ক্ষেত্রমত, নিউক্লীয় বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ বা মজুদকরণের সহিত সম্পর্কিত নকশা, চিত্র, পরিবর্তিত গঠন (layout) , কাঠামো যা নিউক্লীয় নিরাপত্তা ও বিকিরণ সুরক্ষা সম্পৃক্ত, ভৌত সুরক্ষা, রেকর্ড, স্মারক, প্রতিবেদন বা দলিলাদি পরীক্ষা করিতে পারিবেন;
 
 
(ঘ) এই আইন এবং ইহার অধীন প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী জনসাধারণের স্বাস্থ্য, সম্পত্তি ও পরিবেশের নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন;
 
 
(ঙ) বিকিরণ উৎপাদক বা বিকিরণ উৎস বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের ক্ষতিসাধন ব্যতীত, এই আইন এবং ইহার অধীন প্রণীত প্রবিধান অনুসারে যেখানে কোন বিকিরণ উৎপাদক বা বিকিরণ উৎস বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার, মজুত, পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ করা হইয়া থাকে উক্ত স্থান তালাবদ্ধ এবং সিলগালা করিতে পারিবেন;
 
 
(চ) নিউক্লীয় ক্ষতি হইতে পারে বলিয়া মনে করিলে নিউক্লীয় স্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে বন্ধ করিতে পারিবেন;
 
 
(ছ) এই আইনের অধীন সিকিউরিটি শর্তসমূহ পূরণসহ সেফগার্ড সংক্রান্ত কার্যক্রম অনুসরণ হইতেছে কিনা উহা পরীক্ষা করিবেন।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন পরিদর্শন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করিয়া বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলীগণ কর্তৃপক্ষের নিকট একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
 
 
 
 
ব্যবস্থা গ্রহণ
৫২। (১) যদি কোন অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি-
 
 
(ক) এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের কোন বিধান অথবা অনুমোদনের শর্তাবলী কার্যক্ষেত্রে লংঘন করে; এবং
 
 
(খ) ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রদান করিয়া অনুমোদন লাভ করে,
 
 
-তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে তাহার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অনুমোদন স্থগিত বা বাতিল করা হইবে না তৎমর্মে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে কারণ দর্শাইবার জন্য নোটিশ জারি করা হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১)এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে লংঘনের প্রকৃতি এবং সংশোধন বা প্রতিকারমূলক কার্যক্রমের নির্দিষ্ট বর্ণনা থাকিবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য মান অনুযায়ী, অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি উপরি-উক্ত পদক্ষেপসমূহ তাহার নিজ দায়িত্বে পালন করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
(৩) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে উল্লিখিত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হইলে, কর্তৃপক্ষ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, যে কোন নিউক্লীয় বা বিকিরণ স্থাপনা তালাবদ্ধ এবং সিলগালা করিতে অথবা পরিচালনা বন্ধ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে উল্লিখিত কার্যক্রম ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে, কর্তৃপক্ষ কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা অন্য কোন সরকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবে।
 
 
 
 
অপরাধ ও দণ্ড
৫৩। (১) এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত প্রবিধানের অধীন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ না করিয়া কোন ব্যক্তি ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এবং উপ-ধারা (২) এর দফা (গ), (ঘ), (ঙ), (চ) ও (ঞ) এ উল্লিখিত কার্যাবলী পরিচালনা করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর হইতে অনধিক ৭ (সাত) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ২ (দুই) বৎসর হইতে অনধিক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(২) কোন ব্যক্তি এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত প্রবিধানের অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এবং উপ-ধারা (২) এর দফা (গ), (ঘ), (ঙ), (চ) ও (ঞ) এ উল্লিখিত কোন কার্য কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোনরূপ পরিবর্তন বা পরিবর্ধন সাধন অথবা অনুমোদনের শর্তাবলী লংঘন বা প্রতিপালন করিতে ব্যর্থ হইলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস হইতে অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ০১ (এক) বৎসর হইতে অনধিক ০৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৩) এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত প্রবিধানের অধীন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ না করিয়া কোন ব্যক্তি ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক), (খ), (ছ), (জ) ও (ঝ) এ উল্লিখিত কার্যাবলী পরিচালনা করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস হইতে অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ০১ (এক) বৎসর হইতে অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৪) কোন ব্যক্তি এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত প্রবিধানের অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক), (খ), (ছ), (জ) ও (ঝ) এ উল্লিখিত কোন কার্য কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোনরূপ পরিবর্তন বা পরিবর্ধন সাধন অথবা অনুমোদনের শর্তাবলী লংঘন বা প্রতিপালন করিতে ব্যর্থ হইলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৩ (তিন) মাস হইতে অনধিক ২ (দুই) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৩ (তিন) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১৫ (পনের) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস হইতে অনধিক ৪ (চার) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৬ (ছয়) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৫) কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নিউক্লীয় স্থাপনা বা তৎসম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে হামলা বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর হইতে অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ১০ (দশ) বৎসর হইতে অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৬) কোন ব্যক্তি নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি, নির্দিষ্টকৃত অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা এতদ্‌সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি অবৈধ পাচার করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর হইতে অনধিক ৭ (সাত) সৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৭ (সাত) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১২ (বার) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর হইতে অনধিক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১৫ (পনের) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৭) কোন ব্যক্তি নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি, নির্দিষ্টকৃত অনিউক্লীয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা এতদ্‌সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি চুরি করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর হইতে অনধিক ৬ (ছয়) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৭ (সাত) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর হইতে অনধিক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১৫ (পনের) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ২২ (বাইশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৮) কোন ব্যক্তি নিউক্লীয় স্থাপনা বা তৎসম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে গুপ্তচরবৃত্তি করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর হইতে অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৭ (সাত) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৯ (নয়) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর হইতে অনধিক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১৫ (পনের) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(৯) কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগকালে কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তির কার্যে বিলম্ব ঘটাইলে বা অসহযোগিতা, তথ্য গোপন, ভুল তথ্য প্রদান বা বাধা প্রদান করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর হইতে অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৩ (তিন) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ২ (দুই) বৎসর হইতে অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ৬ (ছয়) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(১০) কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতীত, এই আইনের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করিয়া প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রদান বা প্রকাশ করিলে, উহা একটি অপরাধ হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ৬ (ছয়) মাস হইতে অনধিক ১ (এক) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা পযন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর হইতে অনধিক ২ (দুই) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অন্যূন ২ (দুই) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৬ (ছয়) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(১১) আদালত এই ধারার অধীন জরিমানা বাবদ আদায়কৃত অর্থ বা উহার অংশবিশেষ ধারা ৪৫ ও ৬০ এর অধীন ক্ষতিপূরণ হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবে।
 
 
 
 
বিচার
৫৪। (১) ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ (১৮৯৮ সনের ৫ নং আইন) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫) ব্যতীত অন্যান্য উপ-ধারার অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ, ক্ষেত্রমত, প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
 
 
(২) এই আইনের ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫) এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে।
 
 
অপরাধ সম্পর্কিত তথ্য
৫৫। (১) যে কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে থানা বা কর্তৃপক্ষের যে কোন কার্যালয়কে অবহিত করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ সম্পর্কে যদি থানাকে কোন তথ্য প্রদান করা হয়, তাহা হইলে উক্ত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উহা কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
 
অপরাধের জামিনযোগ্যতা এবং আমলযোগ্যতা
৫৬। (১) ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৭) ও (৮) এ উল্লিখিত অপরাধ ব্যতীত এই আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধ জামিনযোগ্য এবং অ-আমলযোগ্য হইবে।
 
 
(২) ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৭) ও (৮) এ উল্লিখিত অপরাধ অ-জামিনযোগ্য এবং আমলযোগ্য হইবে।
 
 
 
 
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ
৫৭। (১) কোন আদালত, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদনপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ব্যতীত, এই আইন বা ইহার অধীন প্রণীত প্রবিধানের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন লিখিত অভিযোগ সরাসরি, বা সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে, আদালতে দায়ের করা যাইবে।
 
 
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৫৮। কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এইরূপ প্রত্যেক প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত লংঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
 
 
 
 
আপীল
৫৯। (১) যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫) ব্যতীত অন্যান্য উপ-ধারার অধীন কোন প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত রায় ও আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত রায় ও আদেশ প্রদানের ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে এখতিয়ার সম্পন্ন দায়রা আদালতে আপীল করিতে পারিবেন।
 
 
(২) যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের ধারা ৫৩ এর উপ-ধারা (৫) এর অধীন দায়রা আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় ও আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত রায় ও আদেশ প্রদানের ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করিতে পারিবেন।
 
 
দেওয়ানী প্রতিকার
৬০। (১) যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫৩ এর অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধমূলক কার্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হন, এবং উক্ত ক্ষতি অর্থের দ্বারা নিরূপণ করা সম্ভব হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উপযুক্ত দেওয়ানী আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা করিতে পারিবেন।
 
 
(২) যদি উক্ত মামলায় ক্ষতিপূরণের দাবী প্রমাণিত হয়, তাহা হইলে আদালত, দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮ (১৯০৮ সনের ৫ নং আইন) এর বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, অনুসরণপূর্বক, ঘটনা এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করিয়া, যেইরূপ ন্যায়সংগত ও উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ দাবীকৃত মোট অর্থ বা উহার অংশবিশেষ প্রদানের ডিক্রী প্রদান করিবেন।
 
 
ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
৬১। কর্তৃপক্ষ এই আইনের অধীন ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের নিমিত্ত, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রয়োজনীয় ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং প্রযোজ্য শর্তাবলীর অধীন উক্ত ঋণ পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবে।
বকেয়া আদায়
৬২। কর্তৃপক্ষ Public Demands Recovery Act, 1913 (Bengal Act III of 1913) এর অধীন সরকারি পাওনা হিসাবে উহার সকল বকেয়া ফি, চার্জ, জরিমানা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফি আদায় করিতে পারিবে।
বার্ষিক বাজেট বিবরণী
৬৩। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পেশকৃত বাজেট বিবরণীতে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অনুদান আবশ্যক তাহাসহ কর্তৃপক্ষের ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করিতে হইবে।
 
 
(৩) সরকার, কর্তৃপক্ষের সহিত পরামর্শক্রমে, উপ-ধারা (১) এর অধীন পেশকৃত বাজেট সংশোধন বা পরিবর্তন করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ সংশোধিত বা পরিবর্তিত বাজেট অনুমোদিত বাজেট হিসাবে গণ্য হইবে।
 
 
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
৬৪। (১) কর্তৃপক্ষ তৎকর্তৃক প্রাপ্ত ও ব্যয়িত সকল অর্থের যথাযথ হিসাব প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করিবে এবং উক্ত হিসাবে উহার আর্থিক পরিস্থিতির সঠিক এবং যথাযথ প্রতিফলন থাকিতে হইবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (অতঃপর মহা-হিসাব নিরীক্ষক হিসাবে অভিহিত) প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে, মহা-হিসাব নিরীক্ষক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, নথি, নগদ অর্থ ও ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা করিতে পারিবেন।
 
 
প্রতিবেদন
৬৫। প্রতি অর্থ বৎসর সমাপ্তির ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী অর্থ বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলী সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, উহা জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবে।
জাতীয়, আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং বিদেশী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদির সহিত চুক্তি ও সহযোগিতা
৬৬। (১) সরকারের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষ ইহার কার্যাবলী সুচারু ও ফলপ্রসূভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নিউক্লীয় নিরাপত্তা এবং বিকিরণ সুরক্ষা বিষয়ে যে কোন নিউক্লীয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বা জাতীয়, আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং বিদেশী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সীর সহিত সহযোগিতা চুক্তিতে আবদ্ধ হইতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যাবলী সম্পাদন এবং ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে, কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে যে কোন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ও সহায়তা চাহিতে পারিবে।
 
 
 
 
গবেষণাগার এবং অন্যান্য কারিগরি সেবা
৬৭। এই আইনের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, কর্তৃপক্ষ-
 
 
(ক) নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য একটি কেন্দ্রীয় গবেষণাগার স্থাপন ও প্রয়োজনবোধে, এক বা একাধিক আঞ্চলিক গবেষণাগার এবং কারিগরী সহায়ক প্রতিষ্ঠান (Technical Support Organization) প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে;
 
 
(খ) বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলী এবং সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিকিরণ সুরক্ষা কর্মকর্তা এবং প্রয়োজনে নিউক্লীয় বা বিকিরণ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করিতে পারিবে;
 
 
(গ) উহার নিজস্ব অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত না হত্তয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের নিকট হইতে প্রয়োজনীয় সেবা চাহিতে পারিবে;
 
 
(ঘ) বাংলাদেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাসহ বিদেশী যে কোন গবেষণাগারের কিংবা এইরূপ অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণাগারের যে সকল কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় নির্ভরযোগ্য মনে হইবে সেই সকল প্রতিষ্ঠানসমূহের নিকট সেবা চাহিতে পারিবে এবং একই ধরনের জাতীয় বা বিদেশী ইনস্টিটিউট বা গবেষণাগারের সহিত যেকোনো বিষয়ে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে;
 
 
(ঙ) এক বা একাধিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বৈজ্ঞানিক দলিল ও তথ্য বিনিময় কেন্দ্র এবং নিউক্লীয় নিরাপত্তা ও বিকিরণ সুরক্ষা বিষয় সম্পর্কিত পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে।
 
 
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৬৮। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৬৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া, উক্ত প্রবিধানে নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করা যাইবে, যথাঃ-
 
 
(১) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তির যোগ্যতা, দায়িত্ব, কার্যাবলী, ইত্যাদি সংক্রান্ত;
 
 
(২) তেজস্ক্রিয় পদার্থসহ অন্য কোন পরিমাপযোগ্য পদার্থের জন্য অনুমোদিত মাত্রা নির্ধারণ;
 
 
(৩) অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের নিয়োগ, যোগ্যতা, দায়িত্ব, কার্যাবলী, ইত্যাদি সংক্রান্ত;
 
 
(৪) কোন পদার্থের গাঢ়ত্ব এবং পরিমাণ নির্ধারণ;
 
 
(৫) কোন পদার্থের বিকিরণ সম্পাত সংক্রান্ত;
 
 
(৬) নিউক্লীয় ঘটনা (nuclear incident) নির্ধারণ;
 
 
(৭) নিউক্লীয় দুর্ঘটনা (nuclear accident) নির্ধারণ;
 
 
(৮) চেয়্যারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা এবং কার্যাবলী নির্ধারণ;
 
 
(৯) কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী নির্ধারণ;
 
 
(১০) কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, চাকুরির শর্তাবলী, ইত্যাদি;
 
 
(১১) কর্তৃপক্ষের তহবিল পরিচালনা;
 
 
(১২) নিউক্লীয় বা বিকিরণ স্থাপনার স্থান নির্ধারণ, নকশা প্রণয়ন, নির্মাণ, স্থাপন, কমিশনিং, পরিচালনা ও ডিকমিশনিং, তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের ডিসপোজাল স্থাপনা বন্ধ এবং উক্ত স্থানকে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হইতে অব্যাহতি প্রদান সংক্রান্ত;
 
 
(১৩) অবহিতকরণপত্র সংক্রান্ত;
 
 
(১৪) ধারা ১৮ এ উল্লিখিত কার্যাবলীর অনুমোদন প্রদান প্রক্রিয়া;
 
 
(১৫) নিউক্লীয় এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ আমদানি ও রপ্তানি সংক্রান্ত;
 
 
(১৬) এই আইনের অধীন প্রদত্ত অনুমোদন স্থগিত এবং বাতিলকরণ;
 
 
(১৭) তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটি সংক্রান্ত শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
(১৮) নিউক্লীয় পদার্থের নিরাপত্তা ও সিকিউরিটি সংক্রান্ত শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
(১৯) নিউক্লীয় স্থাপনার সাইটিং, নক্‌শা, নির্মাণ, কমিশনিং, পরিচালনা, ডিকমিশনিং এবং রিপজিটরী বন্ধকরণে নিউক্লীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অপরিহার্য বিষয়াবলী এবং শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতিকে নিরাপত্তা শ্রেণীতে বিভক্তিকরণের শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
(২০) নিউক্লীয় স্থাপনা, বিকিরণ স্থাপনা, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ও অন্যান্য স্থাপনার বিকিরণ সুরক্ষা সংক্রান্ত শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
(২১) অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তির মানসম্মত পরিচালনা সংক্রান্ত দলিল, নিউক্লীয় স্থাপনা ও বিকিরণ স্থাপনার মান সংক্রান্ত চাহিদাবলী, শ্রেণীবদ্ধ যন্ত্রপাতির মান সংক্রান্ত চাহিদাবলী এবং উহাদের অনুমোদন সংক্রান্ত;
 
 
(২২) নিউক্লীয় স্থাপনার শ্রেণীবিন্যাস বা নিউক্লীয় পদার্থের শ্রেণীবদ্ধকরণ এবং উহাদের ভৌত সুরক্ষা বিধানের জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদাবলী নির্ধারণ;
 
 
(২৩) নিউক্লীয় পদার্থের পরিমাপ পদ্ধতি, পরিমাপের সঠিকতা মূল্যায়ন পদ্ধতি, পরিমাপ পার্থক্য পুনঃনিরীক্ষণের কার্যপ্রণালী, ফিজিক্যাল ইনভেনটরি (physical inventory) ও ক্ষয়ের পরিমান নির্ধারণের কার্যপ্রণালী, অপরিমাপকৃত ইনভেনটরির মূল্যায়ন পদ্ধতি, নিউক্লীয় পদার্থের ইনভেনটরির এবং নিঃসরণ চিহ্নিতকরণের জন্য রেকর্ড ও রিপোর্ট-পদ্ধতি, জবাবদিহিতার কার্যপ্রণালী এবং ব্যবস্থা সঠিকভাবে প্রতিপালিত হইয়াছে কিনা তৎমর্মে নিশ্চয়তা প্রদানের পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে রিপোর্ট করিবার পদ্ধতি;
 
 
(২৪) ব্যবহৃত জ্বালানি বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন, আমদানি, বিভিন্ন শ্রেণীতে শ্রেণীভূক্তকরণ;
 
 
(২৫) তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন;
 
 
(২৬) জরুরী পরিকল্পনার বিষয়বস্ত্তর বিবরণ, উহা উপস্থাপন ও অনুমোদন, পদক্ষেপ গ্রহণ, কার্যপ্রণালী প্রণয়ন ও কার্যক্রমের বিবরণ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে ঘটনার তীব্রতার মাত্রা নির্ধারণ, কর্তৃপক্ষ ও জনগণকে অবহিতকরণের বিবরণ, জরুরী পরিকল্পনা অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ, সময়সীমা, পরিবীক্ষণ পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও জরুরী পরিকল্পনার হালনাগাদকরণ সংক্রান্ত বিবরণ, নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল স্থাপনায় এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ স্থানান্তরের সময় ঘটনা বা দুর্ঘটনার প্রদানযোগ্য উপাত্ত ও সময়-পরিক্রমার বিবরণ, ইত্যাদি সংক্রান্ত;
 
 
(২৭) একক নিউক্লীয় ঘটনার জন্য অপারেটর বা বিদেশী অপারেটরের দায় নির্ধারণ;
 
 
(২৮) নিউক্লীয় ক্ষতির ক্ষতিপূরণের প্রকৃতি, ধরন, পরিমাণ এবং ন্যায়সঙ্গত বণ্টন;
 
 
(২৯) পরির্দশন ও বলবৎকরণ সংক্রান্ত;
 
 
(৩০) কর্তৃপক্ষের হিসাব সংরক্ষণ ও নিরীক্ষা;
 
 
(৩১) এই আইনের অধীন প্রবিধান দ্বারা নির্ধারণযোগ্য অন্যান্য বিষয়।
 
 
ইংরেজীতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৭০। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর, সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 
 
রহিতকরণ ও হেফাজত
৭১। (১) পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২১ নং আইন), অতঃপর রহিত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্‌দ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও, রহিত আইনের অধীন কৃত কার্য, অর্জিত অধিকার, গৃহীত বাধ্যবাধকতা, আইনগত কার্যক্রম এইরূপে অব্যাহত থাকিবে যেন উক্ত আইন রহিত হয় নাই।
 
 
(৩) এই আইনের অধীন নতুন প্রবিধান প্রণীত না হত্তয়া পর্যন্ত রহিত আইনের অধীন প্রণীত বিধি প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ এইরূপে অব্যাহত থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রণীত হইয়াছে এবং পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এ উল্লিখিত ‘‘কমিশন’’, ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ হিসাবে গণ্য হইবে।
 
 
(৪) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে কমিশনের অধীন সৃষ্ট পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ (এনএসআরসিডি) বিলুপ্ত হইবে এবং উক্তরূপ বিলুপ্ত হওয়া সত্ত্বেও,
 
 
(ক) বিলুপ্ত বিভাগ এবং উক্ত বিভাগের সহিত সংশ্লিষ্ট কমিশনের সকল পরিসম্পদ, অধিকার, কর্তৃত্ব ও সুযোগ-সুবিধা, এবং সকল স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ অর্থ ও ব্যাংকস্থিতি, সংরক্ষিত তহবিল, বিনিয়োগ এবং উক্ত সম্পত্তিতে বা সম্পত্তি হইতে উদ্ভূত স্বার্থ ও অধিকার এবং বিলুপ্ত কমিশনের ঋণ ও দায়, গৃহীত সকল বাধ্যবাধকতা কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উহার নিকট ন্যস্ত বা অর্পিত হইবে;
 
 
(খ) পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগে কর্মরত কমিশনের সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর কমিশনে থাকিবার বা কর্তৃপক্ষে প্রেষণে যোগদান করিবার বিষয়ে অপশন থাকিবে এবং কমিশন হইতে যাহারা প্রেষণে কর্তৃপক্ষে যোগদান করিবে তাহাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক) চাকুরী প্রবিধান অনুসারে চাকুরীর সকল বিধান, জ্যেষ্ঠতা, ধারাবাহিকতা এবং অন্যান্য সকল সুবিধাদি বলবৎ থাকিবে;
 
 
(গ) উপ-ধারা (খ) অনুযায়ী প্রেষণে যোগদানকৃত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণের মধ্যে যাহারা কর্তৃপক্ষে যোগদানের ৫ (পাঁচ) বৎসরের মধ্যে কমিশনে প্রত্যাগমন না করেন তাহারা কমিশনের জ্যেষ্ঠতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখিয়া এই আইন প্রবর্তনের তারিখ হইতে কর্তৃপক্ষের নিয়মিত কর্মকর্তা এবং কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং এই ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত চাকুরী প্রবিধানমালা তাহাদের জন্য প্রযোজ্য হইবে; এবং
 
 
(ঘ) বিলুপ্ত বিভাগ এবং উক্ত বিভাগের সহিত সংশ্লিষ্ট কমিশন কর্তৃক উদ্ভূত সকল ঋণ ও দায়, গৃহীত সকল বাধ্যবাধকতা, সম্পাদিত সকল চুক্তি, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উদ্ভূত, গৃহীত এবং সম্পাদিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
 
 
 
 

  • 1
    উপ-ধারা (১) বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ১১ নং আইন) এর ২ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs