প্রিন্ট ভিউ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ৩৪ নং আইন )

দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা এবং সকল ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাঠামো গড়িয়া তুলিবার নিমিত্ত বিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব সহনীয় পর্যায়ে আনিয়া সার্বিক দুর্যোগ লাঘব করা, দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন কর্মসূচি অধিকতর দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা, দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্টীর জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদান করা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করাসহ দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাঠামো গড়িয়া তুলিবার নিমিত্ত বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
সংজ্ঞা
 
২।বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) ‘‘অধিদপ্তর’’ অর্থ ধারা ৭ এ উল্লিখিত ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর’;
 
(২) ‘‘আপদ (Hazard) ’’ অর্থ এমন কোন অস্বাভাবিক ঘটনা যাহা প্রাকৃতিক নিয়মে, কারিগরি ত্রুটির কারণে অথবা মানুষের দ্বারা সৃষ্ট হইয়া থাকে এবং ফলস্বরূপ বিপর্যয় সংঘটনের মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপদ ও হুমকির মধ্যে নিপতিত করে এবং জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহের ভয়াবহ ও অপূরণীয় ক্ষতিসহ দুঃখ দুর্দশার সৃষ্টি করে;
 
(৩) ‘‘কমিটি’’ অর্থে ধারা ১৪, ১৭ এবং ১৮ এর অধীন গঠিত, ক্ষেত্রমত, গ্রুপ, কমিটি, বোর্ড, প্লাটফরম বা টাস্কফোর্স অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৪) ‘‘কাউন্সিল’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন গঠিত 'জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল';
 
(৫) ‘‘জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) ’’ অর্থ প্রাকৃতিক নিয়মে সূর্যকিরণের শোষণ-বিকিরণ প্রক্রিয়ায় ভূ-পৃষ্ঠের কোন স্থানে দীর্ঘসময়ের বায়ুমন্ডলের ভৌত উপাদানসমূহের পরিবর্তনের ফলে অথবা মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর্মকাণ্ডের দ্বারা উপরি-উক্ত প্রাকৃতিক নিয়মের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কারণে বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন;
 
(৬) ‘‘জলযান’’ অর্থ যন্ত্রচালিত বা মানবচালিত জাহাজ, নৌকা, টাগ-বোট, ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোট, মাছ ধরার নৌকা এবং যাত্রী বা পণ্য পরিবহণ বা অন্য কোন কাজে ব্যবহৃত পানিতে চলাচল করে এইরূপ কোন যানবাহন;
 
(৭) ‘‘ঝুঁকি (Risk) ’’ অর্থ আপদ, বিপদাপন্নতার উপাদান এবং পরিবেশের আন্তঃক্রিয়া বা সম্মিলন ও সক্ষমতার ফলে উদ্ভূত সম্ভাব্য ক্ষতিকর অবস্থা;
 
(৮) "তফসিল" অর্থ এই আইনের তফসিল;
 
(৯) ‘‘ত্রাণ’’ অর্থ সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন দুর্যোগ মোকাবিলায় জনসাধারণকে প্রদেয় বা প্রদত্ত খাদ্য, কম্বল ও শীত বস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য বস্ত্র, আশ্রয়, ঔষধ, নবজাতক ও শিশুদের জন্য অপরিহার্য দ্রব্যাদি, বিশুদ্ধ পানীয় জল, অর্থ, জ্বালানী, বীজ, কৃষি উপকরণ, গবাদি-পশু, মৎস্য পোনা, ঢেউটিন বা গৃহ-নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্য যে কোন প্রকার সহায়তা;
 
(১০) ‘‘দুর্গত এলাকা’’ অর্থ ধারা ২২ এর অধীন ঘোষিত দুর্গত এলাকা;
 
(১১) ‘‘দুর্যোগ (Disaster) ’’ অর্থ প্রকৃতি বা মনুষ্যসৃষ্ট অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট নিম্নবর্ণিত যে কোন ঘটনা, যাহার ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা আক্রান্ত এলাকার গবাদি পশু, পাখি ও মৎস্যসহ জনগোষ্ঠীর জীবন, জীবিকা, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, সম্পদ, সম্পত্তি ও পরিবেশের এইরূপ ক্ষতিসাধন করে অথবা এইরূপ মাত্রায় ভোগান্তির সৃষ্টি করে, যাহা মোকাবেলায় ঐ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সম্পদ, সামর্থ্য ও সক্ষমতা যথেষ্ট নয় এবং যাহা মোকাবেলার জন্য ত্রাণ এবং বাহিরের যে কোন প্রকারের সহায়তা প্রয়োজন হয়, যথা:-
 
(অ) ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, অস্বাভাবিক জোয়ার, ভূমিকম্প, সুনামি, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, নদীভাঙ্গন, উপকূল ভাঙ্গন, খরা, মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক দূষণ, ভবনধস, ভূমিধস, পাহাড়ধস, পাহাড়ী ঢল, শিলাবৃষ্টি, তাপদাহ, শৈত্যপ্রবাহ, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা, ইত্যাদি;
 
(আ‌) বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড, জলযান ডুবি, বড় ধরনের ট্রেন ও সড়ক দূর্ঘটনা, রাসায়নিক ও পারমাণবিক তেজষ্ক্রিয়তা, জ্বালানী তেল বা গ্যাস নিঃসরণ অথবা গণবিধ্বংসী কোন ঘটনা;
 
(ই) মহামারী সৃষ্টিকারী ব্যাধি, যেমন প্যান্ডেমিক ইনফ্লু্‌য়েঞ্জা, বার্ডফ্লু, এনথ্রাক্স, ডায়রিয়া, কলেরা, ইত্যাদি;
 
(ঈ) ক্ষতিকর অণুজীব, বিষাক্ত পদার্থ এবং প্রাণসক্রিয় বস্তুর সংক্রমণসহ জৈব উদ্ভূত বা জৈবিক সংক্রামক দ্বারা সংক্রমণ;
 
(উ) অত্যাবশ্যকীয় সেবা বা দুর্যোগ প্রতিরোধ অবকাঠামোর অকার্যকারিতা বা ক্ষতিসাধন; এবং
 
(ঊ) ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টিকারী কোন অস্বাভাবিক ঘটনা এবং দৈব দুর্বিপাক;
 
(১২) ‘‘দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী’’ অর্থ খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কর্তৃক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রণীত Standing Orders on Disaster (SOD) বা দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী;
 
(১৩) ‘‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’’ অর্থ দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস এবং দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি সাড়াদানের নিমিত্ত পদ্ধতিগত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও কার্যক্রম, যাহার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ বা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়, যথাঃ-
 
(অ) দুর্যোগের বিপদাপন্নতা, পরিধি, মাত্রা ও সময় নির্ণয়;
 
(আ) ব্যবস্থাপনাসহ সকল প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ, সমন্বয় সাধন ও বাস্তবায়ন;
 
(ই) আগাম সতর্কতা, হুঁসিয়ারি, বিপদ বা মহাবিপদ সংকেত প্রদান ও প্রচারের ব্যবস্থা এবং জান-মাল নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর;
 
(ঈ) দুর্যোগ পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব ও চাহিদা নিরূপণ, মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের অধীন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন এবং অত্যাবশ্যকীয় সেবা, পুনরুদ্ধার ও উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ; এবং
 
(উ) আনুষঙ্গিক অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা;
 
(১৪) ‘‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’’ অর্থ ধারা ২০ এর অধীন প্রণীত, ক্ষেত্রমত, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বা স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা;
 
(১৫) ‘‘পুনর্বাসন’’ অর্থ-
 
(অ) দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পূর্বাবস্থায় বা অধিকতর ভাল অবস্থায় ফিরাইয়া আনা;
 
(আ) ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মানসিক, অর্থনৈতিক ও ভৌত কল্যাণ সাধনসহ তাহাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আক্রান্ত এলাকায় স্বাভাবিক জীবন, জীবিকা ও কর্মপরিবেশ ফিরাইয়া আনা;
 
(ই) ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরাইয়া আনিবার লক্ষ্যে, প্রয়োজনে, অন্যত্র স্থানান্তর করা;
 
(ঈ) ক্ষতিগ্রস্ত গবাদি পশু, মৎস্য, ইত্যাদির সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট খামার পূর্বাবস্থায় ফিরাইয়া আনা;
 
(উ) পুকুর, নদী-নালা, খাল, বিল, জলাধারে মৃত মানুষ, গবাদি পশু, মৎস্য, ইত্যাদি অপসারণের ত্বড়িৎ ব্যবস্থা করা এবং উহাদের বিষাক্ত পানি শোধনের ব্যবস্থা করাসহ মানুষ ও জীব-জন্তুর জন্য বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা;
 
(ঊ) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিষাক্ততা অপসারণের লক্ষ্যে বিষাক্ত জীবাণু ও ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারের ব্যবস্থাসহ উহা হইতে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
 
(১৬) ‘‘প্রস্তুতি’’ অর্থ সম্ভাব্য আপদের প্রভাব মোকাবিলায় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঝুঁকি পরিস্থিতি সম্পর্কে তাহাদের জ্ঞান ও ধারণার উন্নয়ন ঘটাইতে এবং সম্ভাব্য দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি হ্রাস, দুর্যোগ পরবর্তী অনুসন্ধান, উদ্ধার ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গৃহীত পদক্ষেপ;
 
(১৭) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(১৮) ‘‘বিপদাপন্নতা (Vulnerability) ’’ অর্থ কোন জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত বিদ্যমান এমন অবস্থা যাহা প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট আপদের প্রভাবে বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সাথে জনগোষ্ঠীর খাপ খাওয়াইয়া লইবার প্রত্যাশিত ক্ষমতাকে ভঙ্গুর, দুর্বল, অদক্ষ ও সীমাবদ্ধ করে;
 
(১৯) “ব্যক্তি” অর্থে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, কোন কোম্পানী, সমিতি ও সংস্থাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২০) “সশস্ত্র বাহিনী” অর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী;
 
(২১) ‘‘সাড়াদান’’ অর্থ আসন্ন দুর্যোগকালে, দুর্যোগকালীন সময়ে এবং দুর্যোগের অব্যবহিত পরে জীবন ও সম্পদ রক্ষায়, ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠির মৌলিক চাহিদা মিটাইতে বা অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদানে গৃহীত কার্যক্রম; এবং
 
(২২) ‘‘সেবা’’ অর্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য গঠিত কোন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় আশ্রয়, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পরিধেয় বস্ত্র, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, টেলিযোগাযোগ, পয়ঃনিষ্কাশন, জ্বালানি ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সেবা, অগ্নি নির্বাপন, নিরাপত্তা, অনুসন্ধান, উদ্ধার তৎপরতা এবং পুলিশ কর্তৃক প্রদেয় সেবাসহ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য সেবা।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল
৪। (১) এই আইনের উদ্দ্যেশ্য পূরণকল্পে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ব্যক্তিবর্গকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা প্রণয়নে এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদানের নিমিত্ত জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল থাকিবে।
 
 
(২) কাউন্সিল নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(১) প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(২) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৩) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৪) স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৫) যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৬) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৭) খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৮) পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(৯) নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(১০) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(১১) মন্ত্রিপরিষদ সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন;
 
 
(১২) সেনা বাহিনী প্রধান;
 
 
(১৩) নৌ বাহিনী প্রধান;
 
 
(১৪) বিমান বাহিনী প্রধান;
 
 
(১৫) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব;
 
 
(১৬) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার;
 
 
(১৭) অর্থ বিভাগের সচিব;
 
 
(১৮) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(১৯) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব;
 
 
(২০) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২১) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২২) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২৩) মহাপুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ;
 
 
(২৪) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২৫) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২৬) সড়ক বিভাগের সচিব;
 
 
(২৭) রেলপথ বিভাগের সচিব;
 
 
(২৮) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(২৯) নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৩০) তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৩১) সেতু বিভাগের সচিব;
 
 
(৩২) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের সচিব;
 
 
(৩৩) খাদ্য বিভাগের সচিব;
 
 
(৩৪) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৩৫) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৩৬) মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৩৭) মহাপরিচালক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ;
 
 
(৩৮) মহাপরিচালক, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব);
 
 
(৩৯) মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তর;
 
 
(৪০) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড;
 
 
(৪১) জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি;
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে কোন মন্ত্রী না থাকিলে, ক্ষেত্রমত, উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, যদি থাকেন, কাউন্সিলের সদস্য হইবেন।
 
 
(৪) কাউন্সিল, প্রয়োজনে, অন্য যে কোন ব্যক্তিকে কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।
 
 
(৫) সরকার প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
 
 
কাউন্সিল এর সভা
৫। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কাউন্সিল উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কাউন্সিলের সভা সভাপতি কর্তৃক নিধারিত স্থানে ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৩) প্রতিবৎসর কাউন্সিলের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৪) সভাপতি কাউন্সিলের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৫) সভাপতির অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত কোন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।
 
 
(৬) অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কাউন্সিলের সভার কোরাম হইবে।
 
 
(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৮) শুধু কোন সদস্যপদে শুন্যতা বা কাউন্সিল গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কাউন্সিলের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন আদালতে বা অন্য কোথাও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
কাউন্সিলের দায়িত্ব ও কার্যাবলী
৬। (১) কাউন্সিলের দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-
 
 
(‌ক) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা সংক্রান্ত কৌশলগত দিক-নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(খ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আইন, নীতিমালা ও পরিকল্পনার বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(গ) বিদ্যমান দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও জরুরি সাড়াদান কার্যক্রম পদ্ধতি পর্যালোচনা এবং মূল্যায়নপূর্বক উহার সংশোধন, পরিমার্জন বা পরিবর্তনের জন্য কৌশ‌লগত দিক-নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(ঘ) দুর্যোগ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম মূল্যায়ন এবং এতদ্‌বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কমিটি ও ব্যক্তিবর্গকে কৌশলগত পরামর্শ প্রদান;
 
 
(ঙ) দুর্যোগ পরবর্তী সাড়াদান ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এবং উহার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া উন্নয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কমিটি ও ব্যক্তিবর্গকে কৌশলগত নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(চ) দুর্যোগ মোকাবেলা বা পুনর্বাসন বিষয়ে গৃহীত সরকারি প্রকল্প বা কর্মসূচীর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা;
 
 
(ছ) দুর্যোগ সংক্রান্ত সকল বিষয়, কার্যাদি, নির্দেশনা, কর্মসূচী, আইন, বিধি, নীতিমালা, ইত্যাদি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার, কর্মশালা, ইত্যাদি আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ব্যক্তিবর্গকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা পরামর্শ প্রদান; এবং
 
 
(জ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
 
 
(২) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ, কাউন্সিলের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে, কাউন্সিলের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবে এবং কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবে।
 
 
অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা
 
৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে 'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর' নামে একটি অধিদপ্তর থাকিবে।
 
(২) এই আইন কার্যকর হইবার সংগে সংগে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের অধীনস্ত বিদ্যমান ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর, উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হইবে।
অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়, ইত্যাদি
৮। (১) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত হইবে।
 
 
(২) সরকার, প্রয়োজনবোধে, ঢাকার বাহিরে যে কোন স্থানে অধিদপ্তরের অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কার্যাবলী
৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-
 
 
(ক) দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব সহনীয় পর্যায়ে আনিয়া সার্বিক দুর্যোগ লাঘব করা;
 
 
(খ) দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্টীর জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা, পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন কর্মসূচি দক্ষতার সহিত পরিচালনা করা;
 
 
(গ) দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও জরুরি সাড়াদান কার্যক্রমের সহিত সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের কার্যক্রমগুলিকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা;
 
 
(ঘ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা সুপারিশ, ইত্যাদি বাস্তবায়ন করা;
 
 
(ঙ) জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা;
 
 
(চ) সকল ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যে সমীচীন ও প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা ।
 
 
মহাপরিচালক
১০। (১) অধিদপ্তরের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন, যিনি অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
 
 
(৩) মহাপরিচালক-
 
 
(ক) অধিদপ্তরের সকল প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যাদি পরিচালনা করিবেন;
 
 
(খ) অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের কার্যাবলী তদারকি এবং তাহাদের দিক-নির্দেশনা প্রদান করিবেন;
 
 
(গ) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে এবং, সময় সময়, সরকার ও কাউন্সিল কর্তৃক নির্দেশিত কার্যাবলী, যদি থাকে, সম্পাদন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবেন;
 
 
(ঘ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক তদ্‌বরাবরে প্রেরিত পত্র, ফ্যাক্স, ই-মেইল, ইত্যাদির ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন; এবং
 
 
(ঙ) তদ্‌কর্তৃক সমীচীন ও প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত সকল কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে বা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে মহাপরিচালক তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক নির্দেশিত কোন কর্মকর্তা অস্থায়ীভাবে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১১। অধিদপ্তরের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরির শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা
১২। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উপর গবেষণা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে সরকার, প্রয়োজনে, একটি ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউটের কার্যাবলী ও পরিচালনা পদ্ধতিসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
জাতীয় দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন গঠন
১৩। (১) দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকর জরুরি সাড়া প্রদানের উদ্দেশ্যে সরকার জনগোষ্ঠীভিত্তিক একটি কর্মসূচি প্রণয়ন ও উহার অধীন জাতীয় দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন গঠন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের দায়িত্ব, প্রশিক্ষণ, পোশাক, সুবিধাদি, কার্যাবলী ও পরিচালনা পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে অনুরূপ উদ্দেশ্যে কোন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন গঠন করা হইলে উহা এই আইনের অধীন গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করিবে।
 
 
জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ
১৪। (১) ব্যাপক আকারের দুর্যোগের সময় সাড়াদান কার্যক্রম সুসংগঠিত ও কার্যকরভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(১) খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(২) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী,;
 
 
(৩) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার;
 
 
(৪) অর্থ বিভাগের সচিব;
 
 
(৫) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৬) তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৭) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৮) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(৯) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(১০) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(১১) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব;
 
 
(১২) বাস্তবায়ন,পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব;
 
 
(১৩) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
(২) জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ, প্রয়োজনে, যে কোন ব্যক্তিকে উক্ত গ্রপ এর সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।
 
 
(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ এর সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
 
 
(৪) সাড়াদান কার্যক্রম সুসংগঠিত ও কার্যকরভাবে পরিচালনা ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ উহার সভায় যে কোন ব্যক্তি বা সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা সংস্থা তদনুযায়ী উক্ত সভায় উপস্থিত থাকিতে এবং জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপকে সহায়তা করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপের সভা
১৫। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ, উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) সমন্বয় গ্রুপের সভাপতির সভাপতিত্বে, তদ্‌কর্তৃক নিধারিত স্থান ও সময়ে, উহার সকল সভা অনুষ্ঠিত হইবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সভাপতির অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত কোন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।
 
 
(৩) প্রয়োজন অনুসারে যে কোন তারিখ ও সময়ে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ উহার সভায় মিলিত হইতে পারিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোরাম গঠনের জন্য অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।
 
 
(৪) উপস্থিতে সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ট ভোটে সমন্বয় গ্রুপের সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৫) শুধু কোন সদস্যপদে শুন্যতা বা গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে সমন্বয় গ্রুপের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন আদালত বা অন্য কোথাও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
(৬) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।
 
 
জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপের দায়িত্ব ও কার্যাবলী
১৬। জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রপের দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
 
(১) দুর্যোগ অবস্থা মূল্যায়ন এবং দুর্যোগ সাড়াদান ও দ্রুত পুনরুদ্ধার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সচল করা;
 
 
(২) দুর্যোগে সাড়াদানের জন্য সম্পদ প্রেরণ নিশ্চিত করা;
 
 
(৩) সতর্ক সংকেতসমূহের যথাযথ প্রচার নিশ্চিত করা;
 
 
(৪) সাড়াদান ও দ্রুত পুনরুদ্ধার কার্যক্রম সমন্বয় করা;
 
 
৫) দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম তদারকি করা;
 
 
(৬) দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় করা;
 
 
(৭) টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় দ্রুত অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি ও দ্রব্যাদি প্রেরণ নিশ্চিত করা;
 
 
(৮) ত্রাণ সামগ্রী, তহবিল ও যানবাহন বিষয়ক অগ্রাধিকার নিরূপণ ও নির্দেশনা প্রদান করা;
 
 
(৯) দুর্যোগকালীন এলাকায় অতিরিক্ত জনবল ও সম্পদ প্রেরণ করা এবং যোগাযোগ ও সুবিধাদি প্রদানের সুনির্দিষ্ট দায়িত্বসহ সশস্ত্র বাহিনী প্রেরণের বিষয় সমন্বয় করা;
 
 
(১০) দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থায় তথ্য প্রবাহ সচল রাখা;
 
 
(১১) কাউন্সিল এর সিদ্ধান্ত বাসত্মবায়ন করা এবং কাউন্সিলকে দুর্যোগ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করা;
 
 
(১২) বহু সংগঠনভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (Multi-agency Disaster incident Management System) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্দেশিকা প্রণয়ন ও হালনাগাদ করা;
 
 
(১৩) দুর্যোগের প্রস্ত্ততি ও ঝুঁকিহ্রাস পদক্ষেপের বিষয়ে সুপারিশ করা;
 
 
(১৪) সম্পদ, সেবা, জরুরি আশ্রয়স্থল হিসাবে চিহ্নিত ভবন, যানবাহন বা অন্যান্য সুবিধাদি হুকুমদখল বা রিক্যুইজিশন এর বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা;
 
 
(১৫) মারাত্নক ধরনের দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় বা মারাত্নক ধরনের দুর্যোগ ঘটিতে পারে এইরূপ অবস্থার অবনতির প্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণে সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ;
 
 
(১৬) দুর্যোগকালীন বা দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বা সম্পদের যোগান, সরবরাহ বা ব্যবহার নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট হইতে একসংগে এক বা একাধিক বৎসরের জন্য দুর্যোগ-পূর্ব সময়ে আগাম ক্রয়ের বিষয়ে সম্মতি গ্রহণের নিমিত্ত সুপারিশ করা।
 
জাতীয় পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, ইত্যাদি
১৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে জাতীয় পর্যায়ে নিম্নবর্ণিত কমিটি, বোর্ড ও প্লাটফরম থাকিবে, যথা:-
 
 
(ক) আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি;
 
 
(খ) জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটি;
 
 
(গ) ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির পলিসি কমিটি;
 
 
(ঘ) ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ড;
 
 
(ঙ) ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতাবৃদ্ধি কমিটি;
 
 
(চ) ন্যাশনাল প্লাটফর্ম ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন;
 
 
(ছ) দুর্যোগ সতর্ক বার্তা দ্রুত প্রচার, কৌশল নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কমিটি;
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উলিস্নখিত কমিটি, বোর্ড বা প্লাটফরম এর গঠন এবং দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কমিটি, বোর্ড বা প্লাটফরম ছাড়াও সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা এক বা একাধিক কমিটি, বোর্ড, প্লাটফরম, গ্রুপ বা টাস্কফোর্স গঠন করিতে এবং উহাদের কার্যাবলী নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (২) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত, একই উদ্দেশ্যে দূর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর অধীন গঠিত কমিটি, বোর্ড, প্লাটফরম, গ্রুপ বা টাস্কফোর্স, যদি থাকে, এই আইনের অধীন গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত আদেশাবলীতে বর্ণিত দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পাদন করিতে পারিবে।
 
 
স্থানীয় পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও গ্রুপ
১৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে স্থানীয় পর্যায়ে নিম্নবর্ণিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি বা, ক্ষেত্রমত, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হইবে,যথা:
 
 
(ক) সিটি কর্পোরেশন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি;
 
 
(খ) জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি;
 
 
(গ) উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি;
 
 
(ঘ) পৌরসভা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি;
 
 
(ঙ) ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি; এবং
 
 
(চ) প্রয়োজনে, দুর্যোগকালীন জেলা বা উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি।
 
 
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে স্থানীয় পর্যায়ে নিম্নবর্ণিত দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) সিটি কর্পোরেশন দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ;
 
 
(খ) জেলা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ;
 
 
(গ) উপজেলা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ;
 
 
(ঘ) পৌরসভা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লিখিত কমিটি ও গ্রুপের গঠন এবং উহাদের দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লিখিত কমিটি ও গ্রুপ ছাড়াও, সরকার প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, স্থানীয় পর্যায়ে এক বা একাধিক কমিটি বা গ্রুপ গঠন করিতে এবং উহাদের দায়িত্ব ও কার্যাবলী নির্ধারণ করিতে পরিবে।
 
 
(৫) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৪) এর উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত, একই উদ্দেশ্যে দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর অধীন গঠিত কমিটি বা গ্রুপ, যদি থাকে, এই আইনের অধীন গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত আদেশাবলীতে বর্ণিত দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পাদন করিবে।
 
 
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কর্মকাঠামোর সহিত সঙ্গতি রাখিয়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, ভৌগোলিক অঞ্চল, আপদ ও সেক্টর বিবেচনায় লইয়া জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে ।
জাতীয় ও স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন
২০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহ স্ব স্ব এলাকা ও স্থানীয় আপদভিত্তিক স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত উপ-ধারার অধীন, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, একই উদ্দেশ্যে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত National Plan for Disaster Management 2010-2015 , এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, বহাল থাকিবে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থার দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য
২১। সরকার, আদেশ দ্বারা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করিতে পারিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীতে বর্ণিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য একইরূপে এমনভাবে চলমান ও অব্যাহত থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীনেই নির্ধারিত হইয়াছে।
 
 
[ব্যাখ্যাঃ এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “সম্পদ” বলিতে যে কোন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দক্ষতার সহিত পরিচালনার জন্য বা ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা কার্যকরভাবে নির্বাহের জন্য প্রদেয় বা ব্যবহারযোগ্য, অন্যান্যের মধ্যে, ত্রাণ সামগ্রী, জনবল, যানবাহন, জলযান, যন্ত্রপাতি, ভূমি ও স্থাপনা অথবা অনুসন্ধান, উদ্ধার, ধ্বংসাবশেষ ও আবর্জনা অপসারণের কাজে ব্যবহারযোগ্য সরঞ্জাম, আকাশযান এবং চিকিৎসা ও নির্মাণ যন্ত্রপাতিসহ আশ্রয়, বাসস্থান এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক দ্রব্য, উপকরণ, সেবা ও কারিগরি দক্ষতাকে বুঝাইবে।]
 
দুর্গত এলাকা ঘোষণা
২২। (১) রাষ্ট্রপতি, স্বীয় বিবেচনায় বা ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৩) এর অধীন সুপারিশ প্রাপ্তির পর, যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, দেশের কোন অঞ্চলে দুর্যোগের কোন ঘটনা ঘটিয়াছে যাহা মোকাবেলায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং অধিকতর ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় রোধে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করা জরুরি ও আবশ্যক, তাহা হইলে সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবেন।
 
 
(২) কোন অঞ্চলে সংঘটিত মারাত্মক ধরণের কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণসহ উক্ত দুর্যোগের অধিকতর ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় রোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি ও আবশ্যক হইলে স্থানীয় পর্যায়ের কোন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, গ্রুপ বা সংস্থা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের নিকট সুপারিশ পেশ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন সুপারিশ প্রাপ্ত হইলে জেলা প্রশাসক অনতিবিলম্বে বিষয়টির যথার্থতা যাচাইপূর্বক উহার মতামতসহ সংশ্লিষ্ট সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং সরকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপের সুপারিশ গ্রহণ করতঃ বিবেচ্য অঞ্চলকে দুর্গত এলকা ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) এই ধারার অধীন দুর্গত এলাকা ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হইলে উহার মেয়াদ অনধিক ২ (দুই) মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে যদি না উক্ত মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পূর্বেই রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উহা হ্রাস, বৃদ্ধি বা প্রত্যাহার করা হয়।
 
 
দুর্গত এলাকা সংক্রান্ত বিশেষ করণীয় কার্যাবলী
২৩। (১) ধারা ২২ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হইলে সরকার, প্রয়োজনে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর, সরকারি ও আধা-সরকারি সংস্থা এবং এই আইনের অধীন গঠিত কমিটিসমূহকে জরুরি ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত বিশেষ করণীয় কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) দুর্যোগ অবস্থা মোকাবেলায় দুর্গত এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি মজুদে থাকা সম্পদের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(খ) প্রয়োজনে অতিরিক্ত সম্পদের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ;
 
 
(গ) জননিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতকরণ;
 
 
(ঘ) জান-মাল ও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং
 
 
(ঙ) স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা অনুযায়ী সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্দেশপ্রাপ্ত হইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তরসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী উহা পালনে বাধ্য থাকিবে।
 
 
দুর্গত এলাকা সংক্রান্ত বিশেষ করণীয়সমূহ বাস্তবায়নে ক্ষমতার্পণ
২৪। সরকার কোন দুর্গত এলাকায় ধারা ২৩ এ উল্লিখিত বিশেষ করণীয় কার্যাবলী বাস্তবায়ন এবং সরেজমিনে তদারকির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে বা, তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে, ফ্যাক্স, ই-মেইল, টেলিফোন বা মোবাইল ফোন বা অন্য যে কোন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রদান করিতে পারিবে।
দুর্গত এলাকা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে সম্পৃক্তকরণ
২৫। (১) সরকার প্রয়োজনে, দুর্গত এলাকা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কর্মকান্ডে যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) সরকার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে, যে কোন স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারিভাবে পরিচালিত এবং বেসরকারি সাহায্য সংস্থার (Non Government Organization) অধীনে পরিচালিত হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসাজনিত সুবিধাদি গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উক্ত হাসপাতাল, ক্লিনিক বা কেন্দ্রে চাকুরীরত সকল চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মী দুর্যোগকালীন সময়ে সরকার বা স্থানীয় কমিটির চাহিদামতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক ব্যয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত হইবে।
 
 
হুকুমদখল
২৬। (১) জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ এর নির্দেশনার আলোকে জেলা প্রশাসক যে কোন কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তির নিকট হইতে সম্পদ, সেবা, জরুরি আশ্রয়স্থল হিসাবে চিহ্নিত ভবন, যানবাহন বা অন্যান্য সুবিধাদি হুকুমদখল বা রিক্যুইজিশন করিতে পারিবে ।
 
 
(২) উপ-ধারা-(১) এর অধীন কোন হুকুমদখল বা রিক্যুইজিশন এর আদেশ প্রদান করা হইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তি উহা মান্য করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
(৩) সরকার, উপ-ধারা-(১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, হুকুমদখল বা রিক্যুইজিশনের পদ্ধতিসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
 
 
দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদাপন্ন ব্যক্তিকে সহায়তা
২৭। (১) সরকার, বিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে, দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বা বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত পুনর্বাসনের জন্য বা ঝুকি হ্রাসের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে অতিদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী বিশেষতঃ বয়োবৃদ্ধ, মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা ও ঝুঁকিহ্রাসকে অগ্রাধিকার প্রদান করিতে হইবে।
 
 
(২) দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি সাড়া প্রদান বা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী বা ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত বা বিপদাপন্ন হইলে, তাহাদের উপযুক্ত পুনর্বাসন বা ঝুকিঁ হ্রাসের জন্য সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
[ব্যাখ্যাঃ এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী অর্থে আর্থ-সামাজিক ও নানাবিধ সুবিধা হইতে বঞ্চিত জনগোষ্ঠী, উপ-জাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত হইবে]
 
 
দুর্যোগ পরিস্থিতির তথ্য সম্পর্কে করণীয়
২৮। জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের কোন কমিটির সভাপতি বা কোন সদস্য যদি স্বয়ং বা কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কর্তৃক অবহিত হইয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন এলাকায় দুর্যোগ পরিস্থিতি আসন্ন, তাহা হইলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে অবহিত করিবেন ।
 
 
অনিয়ম, গাফিলতি বা অব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অভিযোগ, আপীল, ইত্যাদি
২৯। দুর্যোগ আক্রান্ত কোন ব্যক্তি, পরিবার বা জনগোষ্ঠীর নিকট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কোন অনিয়ম, গাফিলাতি বা অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হইলে তিনি বা তাহারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের কোন কমিটির নিকট অভিযোগ উত্থাপন করিতে পারিবেন এবং উক্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট আবেদন প্রাপ্তির অনধিক ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে প্রয়োজনে তদন্তপূর্বক, সংশ্লিষ্ট অভিযোগ নিষ্পত্তি করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন কমিটির কোন সিদ্ধান্ত দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি, জাতীয় পর্যায়ের কোন কমিটির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে, সরকারের নিকট এবং স্থানীয় পর্যায়ের কমিটির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসকের নিকট আপীল করিতে পারিবেন এবং উক্ত ক্ষেত্রে সরকার বা, ক্ষেত্রেমত, বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
জরুরি সাড়া প্রদান কার্যক্রমে সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ
৩০। (১) মারাত্নক ধরনের দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় অথবা মারাত্নক ধরনের দুর্যোগ ঘটিবার আশংকার প্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণের আবশ্যকতা দেখা দিলে উক্ত ক্ষেত্রে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ পেশ করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ এর নিকট হইতে কোন সুপারিশ প্রাপ্ত হইলে সরকার সে মোতাবেক দুর্যোগপূর্ব বা দুর্যোগকালীন জরুরি সাড়াদান কার্যক্রমে বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, স্থানীয় পর্যায়ে মারাত্নক ধরনের দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় অথবা মারাত্নক ধরনের দুর্যোগ ঘটিবার আশঙ্কা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ কার্যকরভাবে মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণের আবশ্যকতা দেখা দিলে, জেলা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট সুপারিশ পেশ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন জেলা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ এর নিকট হইতে কোন সুপারিশপ্রাপ্ত হইলে জেলা প্রশাসক তদ্‌ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতা চাহিয়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নিকট চাহিদাপত্র প্রেরণ করিতে পারিবে;
 
 
তবে শর্ত থাকে যে জেলা প্রশাসক, জরুরী প্রয়োজেনে, স্থানীয় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃপক্ষের নিকট সরাসরি সহযোগিতা চাহিতে পারিবেন এবং উক্ত ক্ষেত্রে যথাশীঘ্র সম্ভব বিষয়টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে লিখিতভাবে, ফ্যাক্স বা ই-মেইল মারফতে অবহিত করিবেন।
 
 
(৫) এই ধারার অধীন কোন নির্দেশনা বা, ক্ষেত্রমত, চাহিদাপত্র প্রাপ্ত হইলে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ বা ক্ষেত্রমত, স্থানীয় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকারভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করিবে।
 
 
জরুরি সাড়াদান কার্যক্রমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশগ্রহণ
৩১। যদি দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা এবং দুর্যোগ ঘটিতে পারে এমন অবস্থার অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতার প্রয়োজন অনুভূত হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক সরাসরি স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাহিতে পারিবেন এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনুরূপ সহযোগিতা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
 
 
[ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী’’ বলিতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)সহ বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্টগার্ড, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি) সহ অনুরূপ আধা-সামরিক ও অসামরিক বাহিনীকে বুঝাইবে । ]
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল, ত্রাণভাণ্ডার গঠন
 
৩২। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’ এবং ‘জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’ নামে দুইটি পৃথক তহবিল গঠন করিবে।
 
(২) নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ হইতে প্রাপ্ত অর্থ উক্ত তহবিলে জমা হইবে, যথা:-
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(খ) সরকারের অনুমোদনক্রমে কোন বিদেশী সরকার, সংস্থা বা কোন আন্তজার্তিক সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(গ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(ঘ) স্থানীয় পর্যায়ের কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত দান;
 
(ঙ) অন্য কোন বৈধ উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ। ‌
 
(৩) জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল এবং জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিলে জমাকৃত অর্থ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন রাষ্ট্রায়ত্ত তফসিলী ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
 
(৪) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে 'জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল' পরিচালিত হইবে এবং উক্ত বিভাগের সচিব ও যুগ্ম সচিব (ত্রাণ) এর যৌথ স্বাক্ষরে উহার ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হইবে।
 
(৫) জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির তত্ত্বাবধানে ‘জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’ পরিচালিত হইবে এবং জেলা প্রশাসক ও জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে উহার ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হইবে।
 
(৬) ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’ এবং ‘জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’ এর পরিচালনার পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবেঃ
 
তবে শর্ত থাকে যে, এতদুদ্দেশ্যে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি আর্থিক বিধি-বিধানের আলোকে উক্ত তহবিলসমূহ পরিচালনা ও উহাদের অর্থ ব্যয় করা যাইবে।
 
(৭) দুর্যোগকালে বা দুর্যোগের অব্যবহিত পরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ সরাসরি বৈদেশিক ত্রাণ বা অন্যান্য সহায়তা গ্রহণ করিতে পারিবে
 
তবে শর্ত থাকে যে, বিষয়টি, প্রয়োজন অনুযায়ী, পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়কে অবহিত করিতে হইবে।
 
(৮) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, উপ-ধারা (১) এর অধীন তহবিল গঠন ছাড়াও কেন্দ্রীয় ত্রাণ ভাণ্ডার ও জেলা ত্রাণ ভাণ্ডার স্থাপন ও পরিচালনা করিতে পারিবে।
 
(৯) উপ-ধারা (৮) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত উপ-ধারার অধীন কেন্দ্রীয় ত্রাণ ভাণ্ডার স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত, বিদ্যমান কেন্দ্রীয় ত্রাণ ভাণ্ডার এবং উহার জেলা পর্যায়ের গুদামসমূহের পরিচালনা অধিদপ্তর কর্তৃক এমনভাবে অব্যাহত রাখা যাইবে যেন উহা এই আইনের অধীন স্থাপিত ও পরিচালিত হইতেছে।
দুর্যোগ সাড়াদানের লক্ষ্যে জরুরি ক্রয়
৩৩। (১) দুর্যোগকালীন বা দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বা সম্পদের যোগান, সরবরাহ বা ব্যবহার নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে একসংগে এক বা একাধিক বৎসরের জন্য আগাম ক্রয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ উক্ত বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট হইতে সম্মতি গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের নিকট সুপারিশ করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী, এক বা একাধিক বৎসরের জন্য আগাম ক্রয়ের বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করিতে পারিবেন।
 
 
গণমাধ্যম ও সম্প্রচার কেন্দ্রের প্রতি নির্দেশনা
৩৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, যে কোন রেডিও বা বেতার, টেলিভিশন, স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, মুদ্রণ মাধ্যম, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক বা ইলেকট্রনিক বা কেব্‌ল নেটওয়ার্ক অথবা এইরূপ তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর সম্প্রচার মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তিকে আসন্ন দুর্যোগাবস্থা, দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট আগাম সতর্ক সংকেত বা দুর্যোগ প্রস্তুতি বিষয়ক বা জনসচেতনতামূলক তথ্য, চিত্র বা সংবাদ ইত্যাদি প্রচার, প্রকাশ ও প্রদর্শনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তি উক্তরূপ নির্দেশনা মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি করণীয়
৩৫। (১) তফসিলে উল্লিখিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি করণীয় সংক্রান্ত নির্দেশাবলী সংশ্লিষ্ট সকলকে মানিয়া চলিতে হইবে এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উহাতে উল্লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবেঃ
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নির্দেশাবলী সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিবার লক্ষ্যে সরকারকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিতে হইবে।
 
 
 
 
(২) তফসিলে উল্লিখিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি করণীয় সংক্রান্ত নির্দেশাবলী যাহাতে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, স্থাপনার মালিক বা কর্তৃপক্ষ মানিয়া চলে তদ্‌লক্ষ্যে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্বুদ্ধকরণসহ প্রচারণামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং সংশ্লিষ্ট সকলে যাহাতে উক্ত নির্দেশাবলী বাস্তবায়ন করে এবং মানিয়া চলে তাহা নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করিবার লক্ষ্যে সংস্থা ও স্থাপনায় প্রবেশ ও তল্লাশি করিতে পারিবে।
 
 
দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান বা বাধা প্রদানের প্রচেষ্টার দন্ড
৩৬। (১) কোন ব্যক্তি যদি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনরত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে আঘাত, ভীতি প্রদর্শন, অপমান, অপদস্ত করেন বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজে বাধা প্রদান করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
 
 
(২) কোন ব্যক্তি যদি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনরত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে আঘাত, ভীতি প্রদর্শন, অপমান, অপদস্ত করার বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজে বাধা প্রদান করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
নির্দেশাবলী অমান্য করা বা পালনে ব্যর্থতার দণ্ড
৩৭। কোন ব্যক্তি যদি সরকার, জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ বা জেলা দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশাবলী ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে পালন না করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপসারণের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মিথ্যা, অসত্য বা ভিত্তিহীন দাবি উত্থাপনের দণ্ড
৩৮। কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যদি এই আইনের অধীন পরিচালিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম হইতে সহায়তা বা সুবিধা প্রাপ্তির নিমিত্ত মিথ্যা, অসত্য বা ভিত্তিহীন দাবি উত্থাপন করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপসারণের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সম্পদের অপব্যবহার বা নিজ স্বার্থে ব্যবহারের দণ্ড
৩৯। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহৃতব্য সম্পদের ব্যবস্থাপনা বা নিয়ন্ত্রণে রাখিবার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি উক্ত সম্পদের অপব্যবহার করেন বা নিজ স্বার্থে ব্যবহার করেন অথবা অপব্যবহার বা নিজ স্বার্থে ব্যবহার করিবার জন্য অন্যকে প্ররোচনা দেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপসারণের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
দুর্গত এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির দণ্ড
৪০। দুর্গত এলাকায় যদি কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করেন বা বৃদ্ধির কারণ সৃষ্টি করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
লবণাক্ততা বা প্লাবন সৃষ্টি করা বা চলমান পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা বা বাধেঁর ক্ষতিসাধন, ইত্যাদির দণ্ড
৪১। কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য বা অবহেলায় কোন এলাকায় লবণাক্ততা বা প্লাবন সৃষ্টি করেন অথবা স্লুইচ গেটের চলমান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করেন বা ক্ষতি সাধন করেন অথবা পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন অথবা বাধেঁর ক্ষতি করিয়া বা বাঁধ কাটিয়া দুর্যোগ অবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে জানমালের ক্ষতি করেন বা অনুরূপ কার্য সংঘটনে প্রচেষ্টা করেন বা সহায়তা করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কিন্তু অন্যূন ১ (এক) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
গণমাধ্যম বা সম্প্রচার কেন্দ্র কর্তৃক ধারা ৩৪ এর আদেশ অমান্য করিবার দণ্ড
৪২। কোন ব্যক্তি যদি ধারা ৩৪ এর অধীন প্রদত্ত আদেশ অমান্য করেন বা অমান্য করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশাবলী অমান্যের দণ্ড
৪৩। কোন ব্যক্তি যদি তফসিলে উল্লিখিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশাবলী, ধারা ৩৫ এর সহিত পঠিতব্য, অমান্য করেন বা উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা
৪৪। (১) কোন সরকারি কর্মচারী এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির অধীন কোন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইলে বা কোন বিধান লংঘন করিলে অনুরূপ ব্যর্থতা বা লংঘনের জন্য তিনি দায়ী হইবেন, যদি না প্রমাণ করিতে পারেন যে, অনুরূপ ব্যর্থতা বা, ক্ষেত্রমত, লঙ্ঘন তাহার অজ্ঞাতসারে ঘটিয়াছে বা উক্ত ব্যর্থতা বা লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়া অকৃতকার্য হইয়াছেন ।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন ব্যর্থতা বা লংঘনের অভিযোগে কোন সরকারি কর্মচারী দায়ী হইলে তিনি সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অপরাধে অভিযুক্ত হইবেন এবং উক্ত কারণে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ
৪৫। জেলা প্রশাসক বা তাহার পক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি কর্তৃক লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন মামলা বিচারার্থে আমলে গ্রহণ করিবে না।
অপরাধের অ-আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা এবং অ-আপোষযোগ্যতা
৪৬। এই আইনের অধীন সকল অপরাধ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য এবং অ-আপোষযোগ্য হইবে।
Act V of 1898 এর প্রয়োগ
৪৭। এই আইনের অধীন কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার এবং আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন এর প্রয়োগ
৪৮। এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৪৩ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) অনুসারে বিচার্য হইবে।
মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত দাবি
৪৯। (১) কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃত বা অবহেলাক্রমে যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন কার্য দ্বারা পরিবেশের এইরূপ বিপর্যয় ঘটান যাহা কোন দুর্যোগের কারণ সৃষ্টি করে এবং ফলশ্রুতিতে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জান, মাল, সম্পদ, স্থাপনা বা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি সাধিত হয়, তাহা হইলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবে।
 
 
(২) এই ধারার অধীন ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা পরিচালনায় Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করা হইলে আদালত সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনা করিয়া প্রকৃত ক্ষতির সমপরিমাণ বা আদালতের বিবেচনায় উপযুক্ত অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসাবে পরিশোধের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
ক্যামেরায় গৃহীত ছবি, রেকর্ডকৃত কথাবার্তা ইত্যাদির সাক্ষ্য মূল্য
৫০। Evidence Act, 1872 (Act No.I of 1872) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সহিত জড়িত কোন ব্যক্তি বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোন সদস্য বা অন্য কোন ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ বা ক্ষতি সংঘটন বা সংঘটনের প্রস্তুতি গ্রহণ বা উহা সংঘটনে সহায়তা সংক্রান্ত কোন ঘটনার ভিডিও বা স্থিরচিত্র ধারণ বা গ্রহণ করিলে বা কোন কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা টেপ রেকর্ড বা ডিস্কে ধারণ করিলে উক্ত ভিডিও, স্থিরচিত্র, টেপ বা ডিস্ক উক্ত অপরাধ বা ক্ষতি সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারের সময় সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে।
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৫১। কোন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে বা কোন বিধান লঙ্ঘিত হইলে উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘনের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের এমন প্রত্যেক পরিচালক, অংশীদার, নির্বাহী, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ বা লংঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ বা লংঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়া অকৃতকার্য হইয়াছেন।
 
 
[ব্যাখ্যাঃ এই ধারায়-
 
 
(ক) “কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান” বলিতে কোন কোম্পানী, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থাকে বুঝাইবে; এবং
 
 
(খ) “পরিচালক” অর্থে অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।]
 
 
পুরস্কার, সম্মাননা ও ভাতা প্রদান, ইত্যাদি
৫২। (১) সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কোন ব্যক্তি বা সংস্থাকে বিশেষ পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ ও আগাম সতর্কতা জারীর কার্যক্রম হইতে শুরু করিয়া দুর্যোগ পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনায় সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্বপালনকারী কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বিশেষ ভাতা প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লিখিত পুরস্কার, সম্মাননা ও ভাতা প্রদানের পদ্ধতি ও পরিমাণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তি প্রণয়নের ক্ষমতা
৫৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত বিনিময়, বিশ্লেষণ ও গবেষণা এবং ভূ-উপগ্রহ ব্যবহারসহ দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ কার্য পরিচালনার জন্য কোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সহযোগিতা গ্রহণ ও উহাদিগকে সহযোগিতা প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার যে কোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সহিত প্রয়োজনীয় সমঝোতা স্মারক, চুক্তি, কনভেনশন, ট্রিটি বা অন্য যে কোন আইনগত দলিল সম্পাদন করিতে পারিবে।
 
 
সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ
৫৪। এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে, অবহেলা ব্যতিরেকে, কৃত কোন কার্যের জন্য বা কোন কার্য সম্পাদন করিবার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকার বা কোন সরকারি কর্মচারী বা এই আইনের অধীন গঠিত কোন কাউন্সিল, কমিটি বা গ্রুপ বা প্লাটফরমের কোন সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে না।
দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর প্রয়োগ, ইত্যাদি
৫৫। এই আইনের অধীন বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক প্রকাশিত দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, প্রযোজ্য হইবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন কাউন্সিল, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ, কমিটি, প্লাটফরম, গ্রুপ বা টাস্কফোর্স, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, গঠিত না হওয়া পর্যন্ত, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর অধীন গঠিত কাউন্সিল, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন, জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় গ্রুপ, কমিটি, প্লটফরম, গ্রুপ বা টাস্কফোর্স, যদি থাকে, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এমনভাবে কার্যকর থাকিবে যেন উহারা এই আইনের অধীনই গঠিত হইয়াছে।
 
 
জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা
৫৬। এই আইনের কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন জটিলতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত বিধানের স্পষ্টিকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
আইনের কার্যকর বাস্তবায়নে সরকারের দায়িত্ব
৫৭। সরকার এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং এতদ্‌বিষয়ে, প্রয়োজনে, নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা
৫৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৫৯। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে ।
 
 
(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 
 
ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো এর বিলোপ, রূপান্তর, হেফাজত, ইত্যাদি
৬০। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সংগে সংগে তদানীন্তন ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের ০৯/০১/১৯৮৩ ও ২৯/০১/১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখের, যখাক্রমে, RRD-Sec-Admin-I/67/82/35 ও Sec-Admin-II/5/84-30 সংখ্যক নির্বাহী আদেশ রহিত হইবে এবং উক্ত আদেশ দ্বারা গঠিত ও পুনঃগঠিত বিদ্যমান ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর, অতঃপর বিলুপ্ত অধিদপ্তর বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে।
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত ও বিলুপ্ত হইবার সংগে সংগে বিলুপ্ত অধিদপ্তর, ধারা ৭ এর বিধান অনুসারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে রুপান্তরিত হইবে এবং উক্ত বিলুপ্ত অধিদপ্তরের-
 
 
 
 
(ক) সকল সম্পদ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, প্রকল্প এবং অন্য সকল প্রকার দাবি ও অধিকার অধিদপ্তরে হস্তান্তরিত হইবে এবং অধিদপ্তর উহার স্বত্বাধিকারী হইবে;
 
 
 
 
(খ) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত সকল মামলা-মোকদ্দমা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা-মোকদ্দমা বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
 
 
(গ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি যথাক্রমে অধিদপ্তরের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, পক্ষে বা সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
 
 
(ঘ) সকল রেকর্ড, নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-উপাত্ত অধিদপ্তরে স্থানান্তরিত হইবে এবং অধিদপ্তর উক্ত স্থানান্তরিত রেকর্ড, নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-উপাত্ত সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী সংরক্ষণ করিবে;
 
 
 
 
(ঙ) অধীন প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয়ের, যে নামে ও স্থানেই প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত হউক না কেন, কার্যক্রম এই আইনের অধীন অধিদপ্তরের অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, এমনভাবে কার্যকর ও অব্যাহত থাকিবে যেন উহারা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত হইয়াছে;
 
 
 
 
(চ) প্রণীত ও জারিকৃত সকল আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা বা ইনস্ট্রুমেন্ট, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, একই বিষয় ও উদ্দেশ্যে অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত ও জারি না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, পূর্বের ন্যায় এমনভাবে চলমান, অব্যাহত ও কার্যকর থাকিবে যেন উহারা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত ও জারি হইয়াছে;
 
 
 
 
(ছ) গৃহীত কার্যক্রম, প্রদত্ত সিদ্ধান্ত, প্রশিক্ষণ বা অন্য কোন কর্মসূচি চলমান, অনিষ্পন্ন বা অবাস্তবায়িত থাকিলে উহা অধিদপ্তরের অধীনে এমনভাবে নিষ্পন্ন বা বাস্তবায়ন করা যাইবে যেন উক্ত কার্যক্রম, সিদ্ধান্ত, প্রশিক্ষণ বা কর্মসূচি অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে;
 
 
 
 
(জ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ যে নিয়ম ও শর্তে বিলুপ্ত অধিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন, পরিবর্তিত বা পুনরাদেশ প্রদান না করা পর্যন্ত, সেই একই নিয়ম ও শর্তে অধিদপ্তরে বদলী হইয়া, অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীনে উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে কর্মরত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে বেতন, ভাতা ও সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন; এবং
 
 
 
 
(ঝ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য প্রযোজ্য বিদ্যমান চাকুরি বিধিমালা, নিয়োগ বিধিমালা বা অন্য কোন লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট, পরিবর্তিত বা পুনরাদেশ প্রদান না করা পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, সেই একই নিয়ম ও শর্তে এমনভাবে অধিদপ্তরে বদলীকৃত বিলুপ্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের ক্ষেত্রে বলবৎ থাকিবে যেন উক্ত চাকুরি বিধিমালা, নিয়োগ বিধিমালা বা লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট এই আইনের অধীন প্রণীত হইয়াছে।
 
 
(৩) এই আইন কার্যকর হইবার সংগে সংগে তদানীন্তন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ৮-৫-১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখের ত্রাম/প্রশাসন-১/২৭/১৩/২৬০(৬৫) সংখ্যক অফিস স্মারক রহিত হইবে এবং উক্ত স্মারক দ্বারা গঠিত দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো, অতঃপর ব্যুরো বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে ।
 
 
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন রহিত ও বিলুপ্ত হইবার সংগে সংগে বিলুপ্ত ব্যুরোর-
 
 
 
 
 
 
(ক) সকল সম্পদ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, প্রকল্প এবং অন্য সকল প্রকার দাবী ও অধিকার অধিদপ্তরে হস্তান্তরিত হইবে এবং অধিদপ্তর উহার স্বত্বাধিকারী হইবে;
 
 
 
 
(খ) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত সকল মামলা-মোকদ্দমা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা-মোকদ্দমা বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
 
 
(গ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি যথাক্রমে অধিদপ্তরের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, পক্ষে বা সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
 
 
(ঘ) সকল রেকর্ড, নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-উপাত্ত অধিদপ্তরে স্থানান্তরিত হইবে এবং অধিদপ্তর উক্ত স্থানান্তরিত রেকর্ড, নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ ও তথ্য-উপাত্ত সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী সংরক্ষণ করিবে;
 
 
 
 
(ঙ) অধীন প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয়ের, যে নামে ও স্থানেই প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত হউক না কেন, কার্যক্রম এই আইনের অধীন অধিদপ্তরের অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, এমনভাবে কার্যকর ও অব্যাহত থাকিবে যেন উহারা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত বা স্থাপিত হইয়াছে;
 
 
 
 
(চ) প্রণীত ও জারিকৃত সকল আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা বা ইনস্ট্রুমেন্ট, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, একই বিষয় ও উদ্দেশ্যে অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত ও জারি না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, পূর্বের ন্যায় এমনভাবে চলমান, অব্যাহত ও কার্যকর থাকিবে যেন উহারা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত ও জারী হইয়াছে;
 
 
 
 
(ছ) গৃহীত কার্যক্রম, প্রদত্ত সিদ্ধান্ত, প্রশিক্ষণ বা অন্য কোন কর্মসূচি চলমান, অনিষ্পন্ন বা অবাস্তবায়িত থাকিলে উহা অধিদপ্তরের অধীনে এমনভাবে নিষ্পন্ন বা বাস্তবায়ন করা যাইবে যেন উক্ত কার্যক্রম, সিদ্ধান্ত, প্রশিক্ষণ বা কর্মসূচি অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে;
 
 
 
 
(জ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ যে নিয়ম ও শর্তে বিলুপ্ত ব্যুরোতে কর্মরত ছিলেন, পরিবর্তিত বা পুনরাদেশ প্রদান না করা পর্যন্ত, সেই একই নিয়ম ও শর্তে অধিদপ্তরে বদলী হইয়া, অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীনে উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে কর্মরত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে বেতন, ভাতা ও সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন; এবং
 
 
 
 
(ঝ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য প্রযোজ্য বিদ্যমান চাকুরি বিধিমালা, নিয়োগ বিধিমালা বা অন্য কোন লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট, পরিবর্তিত বা পুনরাদেশ প্রদান না করা পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, সেই একই নিয়ম ও শর্তে এমনভাবে অধিদপ্তরে বদলীকৃত বিলুপ্ত ব্যুরোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের ক্ষেত্রে বলবৎ থাকিবে যেন উক্ত চাকুরি বিধিমালা, নিয়োগ বিধিমালা বা লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট এই আইনের অধীন প্রণীত হইয়াছে।
 
 
 
 
(৫) অধিদপ্তর উপ-ধারা (১) এর অধীন বিলুপ্ত অধিদপ্তর এবং উপ-ধারা (৩) এর অধীন বিলুপ্ত ব্যুরো হইতে বদলীকৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য, যথাশীঘ্র সম্ভব, নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনায় লইয়া পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণপূর্বক, সমন্বিত জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রস্তুত করিবে এবং উক্ত তালিকা সংরক্ষণ করিবে, যথাঃ-
 
 
 
 
(ক) সংশ্লিষ্ট পদে যোগদানের তারিখ হইতে জ্যেষ্ঠতা গণনা করিতে হইবে;
 
 
 
 
(খ) একই সময়ে একধিক কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগপ্রাপ্ত হইলে, সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটি বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মেধা তালিকা অনুসারে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করিতে হইবে;
 
 
 
 
(গ) পদোন্নতির ক্ষেত্রে পদোন্নতির আদেশ জারীর তারিখ হইতে অথবা উক্ত আদেশে যে তারিখ উল্লেখ থাকিবে সেই তারিখ হইতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর জ্যেষ্ঠতা গণনা করিতে হইবে;
 
 
 
 
(ঘ) একই সময়ে একাধিক কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পদোন্নতি প্রদান করা হইলে, যে পদ হইতে পদোন্নতি প্রদান করা হইয়াছে, সেই পদে তাহাদের পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদত্ত পদে পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করিতে হইবে;
 
 
 
 
(ঙ) একই তারিখে যোগদানকারী সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত এবং পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর মধ্যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জ্যেষ্ঠতা প্রদান করিতে হইবে;
 
 
 
 
(চ) উপরি-উক্ত দফাসমূহে উল্লিখিতভাবে জ্যেষ্ঠতা গণনার ক্ষেত্রে একই তারিখের একাধিক কর্মকর্তা বা কর্মচারী বিবেচনাধীন থাকিলে, তাহাদের মধ্যে জন্ম তারিখ অনুযায়ী যিনি জ্যেষ্ঠ থাকিবেন, তাহাকে জ্যেষ্ঠতা প্রদান করিতে হইবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs