প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ১৩ নং আইন )

বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশনকে একীভূত করিয়া বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বিদ্যমান বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশনকে একীভূত করিয়া বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠাকল্পে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১) “পরিচালনা পর্ষদ” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ;
 
 
(২) “পরিচালক” অর্থ বোর্ডের পরিচালক;
 
 
(৩) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(৪) “ফিলেচার কাঁচা রেশম” অর্থ যন্ত্রচালিত বা বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রের সাহায্যে রেশমগুটি হইতে প্রস্তুত কাঁচা রেশম তন্তু;
 
 
(৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(৬) “বোর্ড” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড;
 
 
(৭) “ভাইস চেয়ারম্যান” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের ভাইস-চেয়ারম্যান;
 
 
(৮) “মহাপরিচালক” অর্থ ধারা ১০ এর অধীন নিযুক্ত বোর্ডের মহাপরিচালক;
 
 
(৯) “চেয়ারম্যান” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান;
 
 
(১০) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
(১১) “সদস্য” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য;
 
 
(১২) “সেস” অর্থ ধারা ১২ এর অধীন আরোপিত কর বা উপ-কর;
 
 
(১৩) “স্পান সিল্ক” অর্থ রিলিং এর অনুপযোগী রেশমগুটি, এন্ডিগুটি, রেশমের টুকরা অথবা উচ্ছিষ্ট রেশম হইতে চরকায় প্রস্তুতকৃত সুতা।
 
 
বোর্ড গঠন
৩। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকার এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড নামে একটি বোর্ড গঠন করিবে।
 
 
(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং বোর্ড ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
 
প্রধান কার্যালয়, ইত্যাদি
৪। (১) বোর্ডের প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে থাকিবে।
 
 
(২) বোর্ড, প্রয়োজনবোধে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, দেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন
৫। বোর্ডের সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং বোর্ড যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে পরিচালনা পর্ষদও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে।
পরিচালনা পর্ষদ
৬। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ডের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে, যথা:-
 
 
(ক) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(খ) জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত একজন সংসদ সদস্য, যিনি উহার জ্যেষ্ঠ ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(গ) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, যিনি উহার ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(ঘ) রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার;
 
 
(ঙ) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(চ) অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ছ) কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(জ) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ঝ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন;
 
 
(ঞ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত প্রাণীবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ হইতে যথাক্রমে একজন করিয়া মোট দুইজন অধ্যাপক যাহার মধ্যে একজন মহিলা হইবেন;
 
 
(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত রেশম পোকা পালনকারী, রেশম সুতা উৎপাদনকারী ও রেশম পণ্যের ব্যবসায়ীগণের মধ্য হইতে সর্বমোট তিনজন প্রতিনিধি যাহার মধ্যে অন্যূন একজন মহিলা প্রতিনিধি থাকিবেন, তবে কোন গ্রুপ হইতে একাধিক সদস্য মনোনয়ন দেওয়া যাইবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঞ) ও (ট) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ নিয়োগ অথবা, ক্ষেত্রমত, মনোনয়নের তারিখ হইতে তিন বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার যে কোন সময় কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাহার সদস্য পদ বাতিল করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মনোনীত কোন সদস্য চেয়ারম্যান এর নিকট লিখিত স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান কর্তৃক গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত কোন পদত্যাগ কার্যকর হইবে না।
 
 
সদস্যগণের অযোগ্যতা ও অপসারণ
৭। (১) কোন ব্যক্তি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন না বা সদস্য থাকিতে পারিবেন না, যদি তিনি-
 
 
(ক) কোন সময় সরকারি চাকুরীর জন্য অযোগ্য বা সরকারি চাকুরী হইতে বরখাস্ত হন;
 
 
(খ) নৈতিক স্খলন জনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;
 
 
(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(ঘ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন; অথবা
 
 
(ঙ) পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি ব্যতিত কোন সদস্য যদি পর পর তিনটি সভায় যোগদানে বিরত থাকেন:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, পদাধিকারবলে নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
 
 
(২) ধারা-৬ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা পর্ষদের যে কোন মনোনীত সদস্যকে লিখিত আদেশের মাধ্যমে যে কোন সময় অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-
 
 
(ক) এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন বা সরকারের বিবেচনায় দায়িত্ব সম্পাদনে অক্ষম হন; বা
 
 
(খ) সরকারের বিবেচনায় সদস্য হিসাবে তাহার পদের অপব্যবহার করেন; বা
 
 
(গ) পরিচালনা পর্ষদের লিখিত অনুমতি ব্যতিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজে বা কোন অংশীদারের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে বোর্ডের পক্ষে সম্পাদিত কোন চুক্তি বা চাকুরী সংক্রান্ত বিষয়ে কোন শেয়ার বা স্বার্থ অর্জন করেন বা অধিকারে রাখেন।
 
 
পরিচালনা পর্ষদের সভা
৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, পরিচালনা পর্ষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদের সভা উহার চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৩) প্রতি তিন মাসে পরিচালনা পর্ষদের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, তবে জরুরী প্রয়োজনে স্বল্পতম সময়ের নোটিশে সভা আহবান করা যাইবে।
 
 
(৪) পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোরাম গঠনের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবী সভার ক্ষেত্রে কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
 
(৫) চেয়ারম্যান বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠ ভাইস-চেয়ারম্যান এবং তাহাদের উভয়ের অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৬) পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে প্রদত্ত ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৭) শুধুমাত্র কোন সদস্য পদের শূন্যতা বা পরিচালনা পর্ষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা পর্ষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন আদালতে বা অন্য কোথাও কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
বোর্ডের কার্যাবলী
৯। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের কার্যাবলী নিম্নরূপ হইবে, যথা:-
 
 
(ক) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন;
 
 
(খ) রেশম বিষয়ক বৈজ্ঞানিক, কারিগরি ও আর্থিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, সহায়তা এবং উৎসাহ প্রদান;
 
 
(গ) গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলসমূহ পাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ ও উহার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ এবং বর্তমানে সংরক্ষিত ও ভবিষ্যতে সংগৃহিতব্য সকল প্রকার রেশম পোকার জাত সংরক্ষণ নিশ্চিতকরণ;
 
 
(ঘ) তুঁত, ভেরেন্ডা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উদ্ভিদের উন্নতজাতের চাষাবাদের পদ্ধতি উদ্ভাবন;
 
 
(ঙ) উন্নতজাতের সুস্থ পলুপোকার ডিম পালন, উদ্ভাবন ও বিতরণ;
 
 
(চ) রেশম গুটি হইতে সুতা আহরণ এবং কাঁচা রেশমের মান উন্নত ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা; প্রয়োজনে সকল কাঁচা রেশম যথাযথভাবে যন্ত্রপাতি সজ্জিত স্বয়ংসম্পূর্ণ সিল্ক কন্ডিশনিং হাউস এর মাধ্যমে পরীক্ষা ও গ্রেডিং করার পর বাজারজাতকরণের বাধ্যবাধকতার ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ছ) চরকা রিলিং ও ফিলেচারে নিয়োজিত ব্যক্তিদিগকে কারিগরি পরামর্শ প্রদান;
 
 
(জ) কাঁচা রেশম ও রেশম পণ্যের মান উন্নয়ন;
 
 
(ঝ) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের উপর বিভিন্ন উপাত্ত সংগ্রহ ও গ্রন্থনা;
 
 
(ঞ) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের সহিত সংশ্লিষ্টদের ঋণদানের সুবিধাদি সৃষ্টি;
 
 
(ট) ন্যায্যমূল্যে রেশম শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ রং, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, খুচরা যন্ত্রাংশ ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি সিল্ক রিলার, উইভার ও প্রিন্টারদেরকে সরবরাহের ব্যবস্থা;
 
 
(ঠ) দেশে-বিদেশে রেশম ও রেশম সামগ্রী জনপ্রিয় ও বাজারজাতকরণের জন্য প্রচারের ব্যবস্থা;
 
 
(ড) রেশম সামগ্রী রপ্তানী করিবার জন্য রেশম সামগ্রীর মানোন্নয়নের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি এবং সিল্ক রিলার, রিয়ারার, স্পীনার, উইভার এবং প্রিন্টারদেরকে প্রশিক্ষণদানের সুবিধা সৃজন;
 
 
(ঢ) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সাধারণ সুবিধার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন, পরিচালনা ও বাস্তবায়ন;
 
 
(ণ) কাঁচা রেশম, স্পান সিল্ক ও রেশম পণ্য উৎপাদনের জন্য মিল স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ত) সেস (cess) আদায়;
 
 
(থ) উপরি-উক্ত কার্যাদি সম্পাদনের ক্ষেত্রে যেইরূপ প্রয়োজনীয় বা সুবিধাজনক হয় সেইরূপ আনুষঙ্গিক বা সহায়ক সকল বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং
 
 
(দ) সরকার কর্তৃক আরোপিত রেশম উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন দায়িত্ব পালন।
 
 
বোর্ডের মহাপরিচালক
১০। (১) বোর্ডের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন, যিনি সরকারের যুগ্ম-সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট শর্তে নিযুক্ত হইবেন।
 
 
(২) মহাপরিচালক বোর্ডের একজন সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি প্রধান নির্বাহী হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
(৩) মহাপরিচালক পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক, সময় সময় তাহার উপর অর্পিত দায়িত্বসহ নির্ধারিত কার্যাবলী সম্পাদন করিবেন।
 
 
(৪) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে, কিংবা অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত, কিংবা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার, মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে তদবিবেচনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
বোর্ডের তহবিল, ইত্যাদি
১১। (১) বোর্ডের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ ও অনুদান;
 
 
(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোন বিদেশী সরকার, সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
 
(গ) বোর্ডের সম্পত্তি বিনিয়োগ হইতে আহরিত আয়;
 
 
(ঘ) এই আইনবলে সংগৃহীত সেস; এবং
 
 
(ঙ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(২) বোর্ডের তহবিল হইতে বোর্ডের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
 
 
(৩) পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত কোন তফসিলি ব্যাংকে তহবিলের অর্থ জমা রাখা যাইবে।
 
 
(৪) তহবিলের অর্থ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।
 
 
(৫) মহাপরিচালক এবং প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে তহবিলের হিসাব পরিচালিত হইবে।
 
 
সেস (Cess) আরোপ
১২। (১) বোর্ড, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ইহার কার্যকরতা আরম্ভের তারিখ হইতে সকল ফিলেচারের কাঁচা রেশম ও চরকায় তৈরী পাকানো রেশম সুতার উপর বিভিন্ন সময়ে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে, সেস (Cess) আরোপ ও আদায় করিবে।
 
 
(২) রিলারগণ নোটিশ প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে বোর্ডের চাহিদা মোতাবেক ফিলেচারে উৎপাদিত কাঁচা রেশম ও চরকায় উৎপাদিত পাকানো রেশম সুতার উপর আরোপিত সেস (Cess) বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন আরোপিত সেস ভূমি রাজস্বের বকেয়ার ন্যায় আদায়যোগ্য হইবে।
 
 
(৪) এই ধারার অধীন পরিশোধযোগ্য সেস হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-
 
 
(ক) সেস নির্ধারণের সময় উল্লেখ করিয়া বোর্ড প্রজ্ঞাপন জারি করিবে, এবং
 
 
(খ) সেস প্রদানে বাধ্য প্রত্যেক ব্যক্তি প্রবিধানে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উৎপাদিত কাঁচা রেশম অথবা চরকায় উৎপাদিত পাকানো রেশম সুতা হইতে আহরিত মোট সিল্কের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক বোর্ডের নিকট একটি রিটার্ন দাখিল করিবেন।
 
 
(৫) কোন সেস প্রদানকারী উপ-ধারা (৪) এর দফা (খ) তে বর্ণিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোর্ডের নিকট রিটার্ন দাখিল করিতে ব্যর্থ হইলে বা, বোর্ডের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যদি দাখিলকৃত রিটার্ন ত্রুটিযুক্ত বা ত্রুটিপূর্ণ তাহা হইলে বোর্ড প্রবিধান অনুযায়ী যেইভাবে যত টাকা সেস প্রদানযোগ্য মনে করিবে তত টাকা সেস ধার্য করিতে পারিবে।
 
 
(৬) এই ধারার অধীন সেস নির্ধারণের প্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ কোন সেস প্রদানকারী উপ-ধারা (২) অনযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির তিন মাসের মধ্যে উক্তরূপে নির্ধারিত সেস বাতিল বা সংশোধনের জন্য পরিচালনা পর্ষদের নিকট আবেদন করিতে পারিবে এবং পরিচালনা পর্ষদ, বোর্ড ও সেস প্রদানকারীর শুনানী গ্রহণপূর্বক, যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ আদেশ জারী করিবে এবং উহা চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৭) আহরিত সেস হইতে সেস আদায়ের খরচ বাদ দিয়া, যদি থাকে, অবশিষ্ট অর্থ বোর্ডের তহবিলে জমা হইবে।
 
 
 
 
বাজেট
১৩। বোর্ড প্রতিবৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট এবং রাজস্ব বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ করিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৪। (১) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে বোর্ড অর্থ ব্যয়ের যথাযথ হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং বোর্ডের যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও বোর্ড কর্তৃক প্রত্যেক বৎসরে একবার The Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O.No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা বোর্ডের হিসাব পরীক্ষিত ও নিরীক্ষিত হইবে।
 
 
(৫) প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুমোদিত হইতে হইবে।
 
 
বার্ষিক প্রতিবেদন
১৫। (১) বোর্ড প্রতি অর্থ বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৩১ শে জানুয়ারী এর মধ্যে সরকারের নিকট দাখিল করিবে।
 
 
(২) সরকার প্রয়োজনমত বোর্ডের নিকট হইতে যে কোন সময় উহার যে কোন বিষয়ের উপর বিবরণী, রিটার্ন ও প্রতিবেদন আহবান করিতে পারিবে এবং বোর্ড উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
১৬। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী বোর্ড উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাঁহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধানমালা দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ক্ষমতা অর্পণ
১৭। (১) পরিচালনা পর্ষদ, এই আইন বা ইহার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানে নির্ধারিত শর্তাধীনে, মহাপরিচালক বা কোন পরিচালক বা কোন কর্মকর্তাকে ইহার যে কোন ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবেন।
 
 
(২) মহাপরিচালক এই আইন বা ইহার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান অনুযায়ী তাহার উপর অর্পিত, উপ-ধারা (১) এর অধীন মহাপরিচালককে প্রদত্ত ক্ষমতা ব্যতীত, যে কোন ক্ষমতা বোর্ডের যে কোন পরিচালক বা কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবেন।
 
 
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বোর্ড সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধানমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
২০। (১) বাংলাদেশ রেশম বোর্ড অধ্যাদেশ, ১৯৭৭ (১৯৭৭ সালের ৬২ নং অধ্যাদেশ) এবং বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আইন ২০০৩ (২০০৩ সনের ২৫ নং আইন) এতদ্‌দ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) কোম্পানী আইন-১৯৯৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশনকে বোর্ডে একীভূত করিবার লক্ষ্যে উক্ত ফাউন্ডেশনের সংঘ স্মারকের ৮১ নং আর্টিক্যাল অনুযায়ী বিলুপ্ত বা গুটানোর (Winding up) সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(৩) বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট এবং বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশন, অতঃপর বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠান বলিয়া উল্লিখিত, এর সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব সুবিধাদি, তহবিল, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ এবং ঐ সকল সম্পত্তিতে বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অধিকার ও স্বার্থ এবং ইহার সহিত সংশ্লিষ্ট সকল হিসাবের বহি, রেজিষ্টার, রেকর্ডস এবং অন্যান্য দলিলাদি বোর্ডে স্থানান্তরিত ও ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৪) বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকারের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা বোর্ডের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে।
 
 
(৫) বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর চাকুরী, কোন চুক্তি, দলিল বা চাকুরীর শর্তাবলীতে যাহা কিছু থাকুক না কেন, বোর্ডে ন্যস্ত হইবে এবং তাহারা পূর্বে প্রযোজ্য চাকুরীর শর্তে, যদি না ঐ সময়ের চাকুরীর শর্তাবলীর কোন পরিবর্তন করা হইয়া থাকে, যাহা তাহাদের অসুবিধা সৃষ্টি করিতে পারে, বোর্ডের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৬) বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বা উহাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা বা আইনী ব্যবস্থা বোর্ডের পক্ষে বা বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা বা আইনী ব্যবস্থা বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs