প্রিন্ট ভিউ

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ২৯ নং আইন )

নদীর অবৈধ দখল, পানি ও পরিবেশ দূষণ, শিল্প কারখানা কর্তৃক সৃষ্ট নদী দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নৌ-পরিবহনযোগ্য হিসাবে গড়িয়া তোলাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজনে একটি কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু নদীর অবৈধ দখল, পরিবেশ দূষণ, শিল্প কারখানা কর্তৃক সৃষ্ট নদী দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নৌ-পরিবহনযোগ্য হিসাবে গড়িয়া তোলাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজনে একটি কমিশন গঠন করা সমীচীন ও প্রয়োজন;

 
 

সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন প্রণয়ন করা হইলঃ-

 
 

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে—
 
 
(ক) ‘‘কমিশন’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন;
 
 
(খ) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সদস্যও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
 
 
(গ) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(ঘ) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং
 
 
(ঙ) ‘‘সদস্য’’ অর্থ কমিশনের সদস্য এবং চেয়ারম্যানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।
 
 

দ্বিতীয় অধ্যায়

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন প্রতিষ্ঠা

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন প্রতিষ্ঠা
৩। (১) এই আইন বলবৎ হইবার পর, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নামে একটি কমিশন প্রতিষ্ঠিত হইবে।
 
 
(২) কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
 
কমিশনের কার্যালয়
৪। কমিশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হইবে এবং কমিশন প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
কমিশন গঠন
৫। (১) চেয়ারম্যান ও অন্যূন একজন মহিলা সদস্যসহ অনধিক ০৫ (পাঁচ) জন সদস্য সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হইবে ;
 
 
(২) কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের নিয়োগের শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে;
 
 
(৩) কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদের জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে ২ (দুই) মেয়াদের অধিক নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না;
 
 
(৪) কমিশনের চেয়ারম্যান ও একজন সদস্য সার্বক্ষণিক হইবেন এবং অন্যান্য সদস্যগণ অবৈতনিক হইবেন।
 
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের যোগ্যতা, ইত্যাদি
৬। (১) জনপ্রশাসন, আইন, মানবাধিকার, নদী ব্যবস্থাপনা, নদী প্রকৌশল, নদী জরিপ বা পরিবেশ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখিয়াছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্য হইতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিযুক্ত হইবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কমিশনের সদস্যগণের মধ্যে-
 
 
(ক) দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন নদী বিশেষজ্ঞ বা পানি বিশেষজ্ঞ;
 
 
(খ) দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ;
 
 
(গ) একজন নদী প্রকৌশলী বা নদী জরিপ বিশেষজ্ঞ বা নদী ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ; এবং
 
 
(ঘ) একজন মানবাধিকার কর্মী বা একজন পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মী বা একজন আইনজ্ঞ থাকিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত সদস্যগণের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অন্যূন ১২ (বার) বৎসরের অভিজ্ঞতা থাকিতে হইবে।
 
 
প্রধান নির্বাহী
৭। (১) চেয়ারম্যান কমিশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(২) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান তাহার পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সার্বক্ষণিক সদস্য চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের অযোগ্যতা, অপসারণ ও পদত্যাগ
৮। (১) কোন ব্যক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন না বা চেয়ারম্যান বা সদস্য থাকিতে পারিবেন না যদি—
 
 
(ক) তিনি আদালত কর্তৃক দেউলিয়া বা অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন;
 
 
(খ) তিনি, চেয়ারম্যান ও সার্বক্ষনিক সদস্যের ক্ষেত্রে, পারিশ্রমিকের বিনিময়ে স্বীয় দায়িত্ব বহির্ভূত অন্য কোন পদে নিয়োজিত হন;
 
 
(গ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন; বা
 
 
(ঘ) তিনি নদী বা কমিশনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন পেশা বা ব্যবসার সাথে প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত হন।
 
 
(২) সরকার যুক্তিসঙ্গত মনে করিলে, কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, কমিশনের চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে;
 
 
(৩) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
 
 
সদস্যপদে শূন্যতার কারণে কার্য বা কার্যধারা অবৈধ না হওয়া
৯। শুধুমাত্র কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা কমিশন গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কমিশনের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা আপত্তিও উত্থাপন করা যাইবে না।
সদস্যগণের বেতন, ভাতা, ইত্যাদি
১০। (১) চেয়ারম্যান ও সার্বক্ষণিক সদস্যের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) অবৈতনিক সদস্যগণ, কমিশনের সভায় যোগদানসহ অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হারে সম্মানী ও ভাতা পাইবেন।
 
 
কমিশনের সভা
১১। (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কমিশন সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
 
 
(২) চেয়ারম্যান, কমিশনের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে সার্বক্ষণিক সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৩) সভাপতি এবং অন্যূন ২ (দুই) জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিশনের সভার কোরাম হইবে।
 
 
(৪) প্রতি ০৩ (তিন) মাসে কমিশনের অন্যূন একটি সভা করিতে হইবে।
 
 
(৫) কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যেক সদস্যের একটি ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে।
 
 

তৃতীয় অধ্যায়

কমিশনের কার্যাবলি

কমিশনের কার্যাবলি
১২। কমিশন নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন কার্যাবলি সম্পাদন করিবে, যথাঃ—
 
 
(ক) নদীর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কার্যাবলির মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে সরকারকে সুপারিশ করা;
 
 
(খ) নদী অবৈধ দখলমুক্ত এবং পুনঃদখল রোধ করার বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(গ) নদী এবং নদীর তীরে স্থাপিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ঘ) নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখার বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ঙ) বিলুপ্ত বা মৃত প্রায় নদী খননের বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(চ) নদী সংক্রান্ত তথ্য ভান্ডার উন্নয়নকরণে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ছ) নদী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের নিকট যে কোন সুপারিশ করা;
 
 
(জ) নদীর পরিবেশগত ভারসাম্য ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ঝ) নদী রক্ষাকল্পে স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ঞ) নদী রক্ষার্থে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা;
 
 
(ট) নিয়মিত পরিদর্শন এবং নদী রক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিবীক্ষণক্রমে সুপারিশ প্রদান করা;
 
 
(ঠ) নদী রক্ষা সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান বিভিন্ন আইন ও নীতিমালার ব্যবহারিক প্রয়োগ পর্যালোচনাক্রমে ও প্রয়োজনবোধে উক্ত আইন ও নীতিমালা সংশোধনের জন্য সরকারকে সুপারিশ করা; এবং
 
 
(ড) দেশের খাল, জলাশয় এবং সমুদ্র-উপকূল দখল ও দূষণমুক্ত রাখিবার বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ করা ।
 
কমিশনের কার্যাবলির বার্ষিক প্রতিবেদন
১৩। (১) প্রতি বৎসরের ১ মার্চ এর মধ্যে কমিশন উহার পূর্ববর্তী বৎসরের কার্যাবলি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কমিশনের পরামর্শ অনুসারে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে না পারিলে সেই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করিবার কারণ, কমিশন যতদূর অবগত ততদূর, লিপিবদ্ধ করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর সরকার উহা জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবে।
 
 

চতুর্থ অধ্যায়

কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইত্যাদি

কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১৪। (ক) কমিশনের একজন সচিব থাকিবে;
 
 
(খ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগাঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, কমিশন উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে;
 
 
(গ) সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে; এবং
 
 
(ঘ) সরকার, কমিশনের অনুরোধক্রমে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
তহবিল
১৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তহবিল নামে কমিশনের একটি তহবিল থাকিবে এবং তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
 
(খ) সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, যে কোন বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অনুদান; এবং
 
 
(গ) কমিশন কর্তৃক ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের সুদ।
 
 
(২) তহবিলের অর্থ কমিশনের নামে কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং উক্ত ব্যাংক হইতে অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) তহবিল হইতে কমিশনের চেয়ারম্যান, সার্বক্ষণিক সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও চাকুরীর শর্তাবলী অনুসারে প্রদেয় অর্থ প্রদান করা হইবে এবং কমিশনের প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা।— ‘‘তফসিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর Article 2(J) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৬। (১) কমিশন যথাযথভাবে হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কমিশনের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কমিশনের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কমিশনের সকল রেকর্ড, দলিল দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কমিশনের কোন সদস্য বা যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত কোন Chartered Accountant ফার্ম দ্বারা কমিশনের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কমিশন Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে।
জনসেবক
১৭। কমিশনের চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section-21 এ যে অর্থে জনসেবক (public servant) কথাটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক (public servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।
ক্ষমতা অর্পণ
১৮। কমিশন লিখিত আদেশ দ্বারা, আদেশ নির্ধারিত শর্তাধীনে, এ আইনের অধীন উহার সকল ক্ষমতা কমিশনের কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তিকে অর্পণ করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজীতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
২১। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs