প্রিন্ট ভিউ

বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ৪৮ নং আইন )

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, নিরাপদ ও ন্যায়সঙ্গত অভিবাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন, সকল অভিবাসী কর্মী ও তাহাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করিবার এবং বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত International Convention on the Protection of the Rights of All Migrant Workers and Members of Their Families, 1990 এবং শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক অন্যান্য সনদের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ করিবার উদ্দেশ্যে Emigration Ordinance, 1982 রহিতপূর্বক একটি নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, নিরাপদ ও ন্যায়সঙ্গত অভিবাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন, সকল অভিবাসী কর্মী ও তাহাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করিবার এবং বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত International Convention on the Protection of the Rights of All Migrant Workers and Members of Their Families, 1990 এবং শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক অন্যান্য সনদের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ করিবার উদ্দেশ্যে Emigration Ordinance, 1982 (Ordinance No. XXIX of 1982) রহিতপূর্বক একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
 

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে—

 
 

(১) ‘‘অভিবাসন’’ অর্থ বাংলাদেশের বাহিরে যে কোন দেশে কোন কাজ বা পেশায় নিযুক্ত হইবার উদ্দেশ্যে কোন নাগরিকের বাংলাদেশ হইতে বহির্গমন;

 
 

(২) ‘‘অভিবাসী’’ অর্থ বাংলাদেশের কোন নাগরিক যিনি কোন কাজ বা পেশায় নিযুক্ত হইবার উদ্দেশ্যে বিদেশে গমন করিয়াছেন এবং কোন বিদেশী রাষ্ট্রে অবস্থান করিতেছেন;

 
 

(৩) ‘‘অভিবাসী কর্মী’’ বা ‘‘কর্মী’’ অর্থ বাংলাদেশের কোন নাগরিক যিনি অন্য কোন রাষ্ট্রে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে—

 
 

(ক) কর্মের উদ্দেশ্যে যাইবার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করিয়াছেন বা গমন করিতেছেন;

 
 

(খ) কোন কর্মে নিযুক্ত রহিয়াছেন; অথবা

 
 

(গ) কোন কর্মে নিযুক্ত থাকিবার পর বা নিযুক্ত না হইয়া বাংলাদেশে ফেরত আসিয়াছেন;

 

(৪) ‘‘চাহিদা পত্র’’ অর্থ বিদেশী অথবা বাংলাদেশী নিয়োগকারী কর্তৃক বাংলাদেশী কোন নাগরিকের বিদেশে কোন প্রকল্প, প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তির অধীন কাজের উদ্দেশ্যে নিয়োগের কোন প্রস্তাব বা চাহিদা, যাহা নিয়োগকারী দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভিসা দ্বারা বা অন্য কোনভাবে অনুমোদিত ;

 
 

(৫) ‘‘নাগরিক’’ অর্থ Citizenship Act, 1951 (Act No. II of 1951) এবং Bangladesh Citizenship (Temporary Provisions) Order, 1972 (P.O. No. 149 of 1972) অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন নাগরিক;

 
 

(৬) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;

 
 

(৭) ‘‘নির্ভরশীল’’ অর্থ অভিবাসীর স্ত্রী/স্বামী এবং মাতা, পিতা, ক্ষেত্রমত, সন্তান, ভাই, বোন বা যাহারা উক্ত ব্যক্তির উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল;

 
 

(৮) ‘‘নিয়োগকারী’’ অর্থ বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশি বা বাংলাদেশী নিয়োগকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান;

 
 
 

(৯) ‘‘প্রতারণা’’ অর্থ ঘটনা বা আইন সম্পর্কে ইচ্ছাকৃত বা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কথা, কাজ, আচরণ, লিখিত চুক্তি বা দলিল দ্বারা অন্যকে প্রতারিত বা প্রলুব্ধ বা ভুলপথে পরিচালিত করা, এবং প্রতারণাকারী ব্যক্তি বা অন্য কোন ব্যক্তির অভিপ্রায়কে কেন্দ্র করিয়া সংঘটিত প্রবঞ্চনা এবং Contract Act, 1872 (Act No. IX of 1872) এর section 17 এ ””fraud”” অভিব্যক্তি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে ইহাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(১০) ‘‘বহির্গমন’’ অর্থ কোন বাংলাদেশী নাগরিকের দেশের বাহিরে গমন;

 
 

(১১) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

 
 

(১২) ‘‘ব্যুরো’’ অর্থ Ministry of Health Population Control and Labour এর স্মারক No. VIII/E-4/76/296, Dated 3-4-1976 দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো;

 
 

(১৩) ‘‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান’’ অর্থ বাংলাদেশের বাহিরে কোন নাগরিকের কর্মসংস্থান;

 
 

(১৪) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থ কোন ব্যক্তি, কোম্পানী, সমিতি, অংশীদারী কারবার, সংবিধিবদ্ধ বা অন্যবিধ সংস্থা বা উহাদের প্রতিনিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(১৫) ‘‘রিক্রুটমেন্ট’’ অর্থ বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে কোন বিদেশী বা বাংলাদেশী নিয়োগকারী কর্তৃক, মৌখিক বা লিখিতভাবে, কর্মী বাছাইয়ের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা প্রচার, পত্র যোগাযোগ এবং অন্য কোন পদ্ধতিতে চুক্তি স্বাক্ষর করিয়া নিয়োগপত্র প্রদান;

 
 

(১৬) ‘‘রিক্রুটিং এজেন্ট’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি;

 
 
 

(১৭) ‘‘লাইসেন্স’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন রিক্রুটিং এজেন্টকে প্রদত্ত লাইসেন্স 1[;]

 

2[(১৮) “সাব-এজেন্ট” বা “প্রতিনিধি” অর্থ ধারা ১৪ক এর অধীন নিবন্ধিত কোন ব্যক্তি যিনি কোন রিক্রুটিং এজেন্টের সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য উক্ত এজেন্টের চাহিদা অনুযায়ী অভিবাসী কর্মী সংগ্রহ করেন।]

দ্বিতীয় অধ্যায়

অভিবাসী কর্মী প্রেরণ, অভিবাসন, ইত্যাদি

অভিবাসী কর্মী প্রেরণের কর্তৃত্ব
৩। (১) বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ হইতে কর্মী নির্বাচন ও বিদেশে প্রেরণ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ সরকার বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত থাকিবে।
 
 
(২) ব্যুরো, সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোন সংস্থা বা কোম্পানী এবং রিক্রুটিং এজেন্ট এই আইনের অধীন রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে।
 
 
অভিবাসন
৪। (১) এই আইনের বিধান অনুসরণ ব্যতিরেকে কোন নাগরিক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে অভিবাসন করিবেন না অথবা অন্য কোন ব্যক্তিকে অভিবাসন করাইবেন না।
 
 
(২) কোন নাগরিকের অভিবাসনের ক্ষেত্রে ধারা ২০ এর অধীন প্রদত্ত ছাড়পত্রসহ নিম্নরূপ দলিল ও কাগজপত্র থাকিতে হইবে, যথা:—
 
 
(ক) কোন দেশের সহিত সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা, কর্তৃপক্ষ বা কোন রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মে নিয়োগের উদ্দেশ্যে নির্বাচিত হইবার প্রমাণপত্র এবং ভিসা; অথবা
 
 
(খ) বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পক্ষে নিয়োগপত্র অথবা নিয়োগকারী দেশের কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কার্যানুমতিপত্র বা অনাপত্তিপত্র এবং ভিসা।
 
 
কতিপয় ব্যক্তির বহির্গমনের ক্ষেত্রে এই আইনের অপ্রযোজ্যতা
৫। এই আইন নিম্নবর্ণিত ব্যক্তির বহির্গমনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যথা:—
 
 
(ক) প্রজাতন্ত্রের কর্ম বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের চাকুরীতে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি, যিনি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে, কর্তব্যপালন, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে অথবা কোন বিদেশী সরকার বা আন্তর্জাতিক বা বহুজাতিক সংস্থার চাকুরীর জন্য বিদেশে গমনকারী;
 
 
(খ) ছাত্র, প্রশিক্ষণার্থী অথবা পর্যটক;
 
 
(গ) কোন বিদেশী সরকার বা আন্তর্জাতিক বা বহুজাতিক সংস্থার চাকুরীর উদ্দেশ্যে স্ব-উদ্যোগে গমনকারী;
 
 
(ঘ) বিদেশে চিকিৎসা, ধর্মীয়, ব্যবসা বা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গমনকারী;
 
 
(ঙ) বৈদেশিক কর্মে নিয়োজিত বা বিদেশে বসবাসরত কোন বাংলাদেশী নাগরিকের উপর নির্ভরশীল কোন ব্যক্তি; অথবা
 
 
(চ) শিক্ষার উদ্দেশ্যে গমনকারী শিক্ষা সমাপনান্তে কোন কর্মে নিয়োজিত হইলে;
 
 
(ছ) এই আইনের উদ্দেশ্যের সহিত সাংঘর্ষিক নয় এইরূপ কোন উদ্দেশ্যে গমনকারী।
 
 
 
 
সমতা নীতির প্রয়োগ
৬। এই আইনের অধীন বৈদেশিক কর্ম সংস্থানের উদ্দেশ্যে কর্মী নির্বাচন বা কর্মী প্রেরণ, অভিবাসী কর্মীর দেশে প্রত্যাগমন এবং এই আইনের অধীন কোন সেবা প্রদান বা কার্য নির্বাহ করিবার ক্ষেত্রে সমতা নীতি অনুসরণ করিতে হইবে, এবং ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ, জন্ম স্থান, ভাষা, বয়স, নৃ-গোষ্ঠী, গোত্র-পরিচয়, রাজনৈতিক মতাদর্শ, পারিবারিক, বৈবাহিক, সামাজিক পরিচয়, আঞ্চলিকতা অথবা অন্য কোন কারণে কোন প্রকার বৈষম্য করা যাইবে না।
 
বহির্গমনের স্থান
৭। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্দিষ্টকৃত বন্দর বা স্থান হইতে বহির্গমন করিতে হইবে।
অভিবাসন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা
৮। (১) সরকার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন দেশে বাংলাদেশী নাগরিকের অভিবাসন রাষ্ট্র বা জনস্বার্থের পরিপন্থী হইবে অথবা তাহাদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হইতে পারে, তাহা হইলে সরকার, আদেশ দ্বারা, উক্ত দেশে অভিবাসনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিতে পারিবে।
 
 
(২) সরকার, জনস্বার্থে বা মানবসম্পদ রক্ষার্থে, কোন নাগরিক বা কোন শ্রেণীর নাগরিকের অভিবাসনের উপর সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিতে পারিবে।

তৃতীয় অধ্যায়

রিক্রুটিং এজেন্ট, লাইসেন্স, ইত্যাদি

লাইসেন্স
৯। (১) এই আইনের অধীন ইস্যুকৃত লাইসেন্স ব্যতীত কোন ব্যক্তি রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম করিতে পারিবে না।
 
 
(২) রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম করিতে আগ্রহী ব্যক্তিকে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রসহ লাইসেন্সের জন্য সরকারের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে এবং ফিসহ আবেদন করিতে হইবে, যথা:—
 
 
(ক) ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত অনুলিপি;
 
 
(খ) ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) সহ আয়কর প্রদানের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত অনুলিপি;
 
 
(গ) আর্থিক স্বচ্ছলতার সপক্ষে ব্যাংক হিসাব বিবরণী;
 
 
(ঘ) পুলিশ প্রত্যয়নপত্র;
 
 
(ঙ) কোম্পানী হইলে, মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন, আর্টিকেলস্ অব এসোসিয়েশন এবং সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশনের সত্যায়িত অনুলিপি;
 
 
(চ) কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অর্থের অধিক অর্থ গ্রহণ করিবে না মর্মে হলফনামা; এবং
 
 
(ছ) কর্মী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে মিথ্যা প্রলোভন বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করা হইবে না মর্মে অঙ্গিকারনামা ।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাবলি পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় তদন্তপূর্বক সরকার সন্তুষ্ট হইলে, নির্ধারিত জামানত গ্রহণ ও শর্ত সাপেক্ষে, রিক্রুটিং এজেন্ট হিসাবে উক্ত ব্যক্তির অনুকূলে লাইসেন্স মঞ্জুর অথবা আবেদন নামঞ্জুর করিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোন আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে আবেদনকারী, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে সরকারের নিকট উহা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
(৫) লাইসেন্স ফি, জামানত এবং ধারা ১১ এর অধীন প্রদেয় নবায়ন ফি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা
১০। (১) কোন ব্যক্তি লাইসেন্স পাইবার যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেন না, যদি তিনি—
 
 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;
 
 
(খ) অপ্রাপ্ত বয়স্ক হন;
 
 
(গ) সুস্থ্য মস্তিষ্কের অধিকারী না হন;
 
 
(ঘ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং উক্ত দেউলিয়াত্বের অবসান না হয়;
 
 
(ঙ) মানব পাচার, অর্থ পাচার, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ অথবা অন্য কোন গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত হন;
 
 
(চ) নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দণ্ডিত হইয়া থাকেন এবং দণ্ড ভোগের পর ২ (দুই) বৎসর সময় অতিবাহিত না হইয়া থাকে।
 
 
(২) কোন সংস্থা, কোম্পানী, অংশীদারী কারবার বা আইনগত সত্ত্বার অনুকূলে লাইসেন্স মঞ্জুর করা যাইবে, যদি—
 
 
(ক) সংস্থা বা কোম্পানীর ক্ষেত্রে, উক্ত কোম্পানী বা সংস্থার অন্যূন শতকরা ষাট ভাগ শেয়ার; এবং
 
 
(খ) অংশীদারী কারবার বা অন্য কোন আইনগত সত্ত্বার ক্ষেত্রে, উক্ত অংশীদারী কারবার বা সত্ত্বার মূলধন বা মালিকানার শতকরা ষাট ভাগের মালিকানা;
 
 
বাংলাদেশী নাগরিকের হইয়া থাকে বা বাংলাদেশী নাগরিক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
 
 
লাইসেন্সের মেয়াদ ও নবায়ন
১১। ধারা ৯ এর অধীন প্রদত্ত রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্সের মেয়াদ হইবে লাইসেন্স ইস্যুর তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর এবং উহা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি প্রদান সাপেক্ষে, তিন বৎসর অন্তর অন্তর নবায়নযোগ্য হইবে।
লাইসেন্স স্থগিতকরণ ও বাতিল

১২। (১) সরকার নিম্নবর্ণিত কোন কারণে উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া কোন রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে, যথা:—

 
 

(ক) মিথ্যা তথ্য অথবা প্রতারণার মাধ্যমে লাইসেন্স গ্রহণ করিলে;

 
 

(খ) লাইসেন্সের কোন শর্ত ভঙ্গ করিলে বা যথা সময়ে লাইসেন্স নবায়ন না করিলে;

 
 

(গ) এই আইন, বিধি বা রিক্রুটিং এজেন্টসমূহের জন্য নির্ধারিত আচরণবিধির কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে;

 
 

(ঘ) লাইসেন্স প্রদানের পর লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোন ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত হইলে;

 
 

(ঙ) বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো উদ্দেশ্যে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বা নির্বাচন করিলে; অথবা

 
 

(চ) কোম্পানী, সংস্থা, অংশীদারী কারবার বা আইনগত সত্ত্বার ক্ষেত্রে, উহার অবসায়ন হইলে।

 

3[(১ক) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত উপ-ধারার দফা (ঘ) ও (চ) তে বর্ণিত কারণ ব্যতীত অন্যান্য কারণে সরকার, উপযুক্ত তদন্ত ও শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া, সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টকে অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা জরিমানা করিতে পারিবে।

(১খ) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনাপূর্বক, উপ-ধারা (১) এর অধীন তদন্ত ও শুনানি ব্যতিরেকে কিংবা তাহা চলাকালীন যে কোন লাইসেন্সের কার্যক্রম স্থগিত করিতে পারিবে।]

 
 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত করা হইলে উক্ত রিক্রুটিং এজেন্ট রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম করিতে পারিবে না।

 
 

(৩) কোন লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হইলে, স্থগিত বা বাতিল আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে রিক্রুটিং এজেন্ট সরকারের নিকট পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবে এবং সরকার উক্তরুপ আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করিবে এবং এইক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

 
 

(৪) এই ধারার অধীন কোন রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল করা হইলে উক্ত রিক্রুটিং এজেন্টের সহিত লেনদেনে জড়িত হইয়াছে এমন ব্যক্তিদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করিবার লক্ষ্যে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

লাইসেন্স প্রত্যাহার
১৩। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, জনস্বার্থে, গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন লাইসেন্স প্রত্যাহার করিতে পারিবে।
শাখা অফিস
১৪। কোন রিক্রুটিং এজেন্ট, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, এক বা একাধিক শাখা অফিস পরিচালনা করিতে পারিবে।
সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি নিয়োগ, ইত্যাদি

4[১৪ক।  কোন রিক্রুটিং এজেন্ট, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিবন্ধিত কোন ব্যক্তিকে সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে পারিবে এবং সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধির দায়িত্ব ও কর্তব্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।]

রিক্রুটিং এজেন্টের দায়িত্ব
১৫। রিক্রুটিং এজেন্টের দায়িত্ব হইবে নিম্নরূপ,যথা:—
 
 
(ক) অভিবাসী কর্মীর স্বার্থ রক্ষা;
 
 
(খ) অভিবাসী কর্মীকে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ধারা ১৯ এর অধীন নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন এবং বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করা;
 
 
(গ) কর্মসংস্থান চুক্তি অনুযায়ী কর্মে নিয়োগ এবং বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান এবং কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সে উদ্দেশ্যে নিয়োগকারীর সহিত যোগাযোগ রক্ষা করা; এবং
 
 
(ঘ) সরকার কর্তৃক সময় সময়, নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন।
রিক্রুটিং এজেন্টের শ্রেণীবিভাগ
১৬। (১) সরকার নির্ধারিত পদ্ধতিতে রিক্রুটিং এজেন্টের শ্রেণীবিন্যাস করিতে পারিবে।
 
 
(২) রিক্রুটিং এজেন্টের জন্য নির্ধারিত শর্তসমূহ যথাযথ মূল্যয়নপূর্বক শ্রেণীবিন্যাস করিতে হইবে।
 
 
(৩) এই ধারার অধীন রিক্রুটিং এজেন্টের শ্রেণীবিন্যাস করিবার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়সমূহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
লাইসেন্স হস্তান্তর ও ঠিকানা পরিবর্তন, ইত্যাদি
১৭। (১) কোন রিক্রুটিং এজেন্ট তাহার লাইসেন্স অন্য কোন ব্যক্তির নিকট কোন ভাবে হস্তান্তর করিতে পারিবে না।
 
 
(২) কোন রিক্রুটিং এজেন্টের মৃত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স তাহার উত্তরাধিকারীর উপর বর্তাইবে না, তবে তাহার উত্তরাধিকারী নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিলে তাহার আবেদন সরকার, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করিবে এবং এইরূপ লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পূর্বের লাইসেন্সের নম্বর অপরিবর্তিত রাখা যাইবে।
 
 
(৩) রিক্রুটিং এজেন্ট কোন কোম্পানী, সংস্থা, অংশীদারী কারবার বা আইনগত সত্ত্বা হইলে উহার কোন অংশীদার বা, ক্ষেত্রমত, সদস্য তাহার অংশ বা শেয়ার সরকারের অনুমোদন ব্যতীত হস্তান্তর করিতে পারিবে না।
 
 
(৪) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোন রিক্রুটিং এজেন্ট ব্যবসায়িক ঠিকানা বা অনুমোদিত শাখা অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করিতে পারিবে না।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন রিক্রুটিং এজেন্ট ব্যবসায়িক ঠিকানা বা অনুমোদিত শাখা অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করিলে পরিবর্তিত ঠিকানা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করিতে হইবে এবং উহার অনুলিপি ব্যুরো এবং সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
 
 
জামানত বাজেয়াপ্তকরণ, ইত্যাদি
১৮। (১) ধারা ১২ এর অধীন কোন লাইসেন্স বাতিল করা হইলে সরকার সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্ট কর্তৃক জমাকৃত জামানতের সম্পূর্ণ অর্থ বা উহার অংশবিশেষ জরিমানা হিসাবে বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বাজেয়াপ্তকৃত জামানতের অর্থ হইতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ বা রিক্রুটিং এজেন্ট কর্তৃক প্রেরিত কর্মীকে বিদেশ হইতে প্রত্যাবর্তন করাইবার খরচ বহন করা যাইবে।
 
 
(৩) ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান বা তাহাকে বিদেশ হইতে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাজেয়াপ্তকৃত জামানতের অর্থ অপর্যাপ্ত হইলে সরকার সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টকে উপযুক্ত পরিমাণে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবে।
 
 
(৪) কোন রিক্রুটিং এজেন্ট উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্দেশিত অর্থ প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে সরকার উক্ত অর্থ তাহার নিকট হইতে Public Demands Recovery Act, 1913 (Bengal Act No. III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী আদায় করিতে পারিবে।
 
 
(৫) লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর রিক্রুটিং এজেন্ট লাইসেন্স সমর্পন করিলে অথবা তাহার মৃত্যু হইলে, সরকার, রিক্রুটিং এজেন্ট বা তাহার উত্তরাধিকারীকে জামানতের অর্থ ফেরত প্রদান করিবে।

চতুর্থ অধ্যায়

অভিবাসী কর্মীর নিবন্ধন, বহির্গমন ছাড়পত্র, ইত্যাদি

অভিবাসী কর্মীর নিবন্ধন ও স্বার্থ সংরক্ষণ
১৯। (১) এই আইনের অধীন অভিবাসন করিতে আগ্রহী ব্যক্তি বা অভিবাসী সকল কর্মীকে, স্ব স্ব পেশা উল্লেখপূর্বক, ব্যুরোর নিকট হইতে নিবন্ধিত হইতে হইবে এবং ব্যুরো নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করিবে এবং, প্রয়োজনে, উক্ত তথ্যাদি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে।
 
 
(২) কোন অভিবাসী উপ-ধারা (১) এর অধীন নিবন্ধিত না হইলে, যে কোন সময়, তিনি যে পেশায় নিয়োজিত রহিয়াছেন উহা উল্লেখপূর্বক, বাংলাদেশে বা যে দেশে অবস্থান করিতেছেন সেই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসে নিবন্ধন করিতে পারিবেন।
 
 
(৩) ব্যুরো, সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোন সংস্থা বা কোম্পানী এবং রিক্রুটিং এজেন্ট উপ-ধারা (১) এর অধীন পেশাভিত্তিক নিবন্ধিত কর্মীর তালিকা হইতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য, উন্মুক্তভাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে, কর্মী নির্বাচন করিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ নিবন্ধিত কর্মী পাওয়া না গেলে সরকার বা তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কর্মী নির্বাচন করা যাইবে এবং এইক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে কর্মী নির্বাচনের পূর্বে কর্মীদের নিকট হইতে কোন অর্থ গ্রহণ করা হইবে না মর্মে ঘোষণা থাকিতে হইবে।
 
 
(৪) ব্যুরো বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োজিত কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করিবে এবং এতদ্সংক্রান্ত দায়িত্ব, কার্যাবলি এবং তদারকির পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
বহির্গমন ছাড়পত্র
২০। অভিবাসনের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নকরণ সাপেক্ষে, ব্যুরো, ধারা ১৯ এর অধীন নিবন্ধিত প্রত্যেক ব্যক্তির পাসপোর্টে নিবন্ধিত নম্বর সম্বলিত সীল এবং উক্ত কর্মীর আঙ্গুলের ছাপ, বায়োমেট্রিক তথ্যসহ অভিবাসন সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় তথ্য সম্বলিত ইলেক্ট্রনিক কার্ডে বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদান করিবে।
অভিবাসন ব্যয়
২১। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে অভিবাসনের জন্য সরকার, আদেশ দ্বারা, অভিবাসন ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করিতে পারিবে।

পঞ্চম অধ্যায়

কর্মসংস্থান চুক্তি

কর্মসংস্থান চুক্তি
২২। (১) রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচিত কর্মী এবং তাহার নিয়োগকারীর মধ্যে একটি কর্মসংস্থান চুক্তি সম্পাদন করিবে, যাহাতে অভিবাসী কর্মীর বেতন, আবাসন সুবিধা, কাজের মেয়াদ, মৃত্যু বা জখম-জনিত কারণে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ, বিদেশে গমন এবং বিদেশ হইতে ফেরত আসিবার খরচ, ইত্যাদির উল্লেখ থাকিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তির ক্ষেত্রে, রিক্রুটিং এজেন্ট বৈদেশিক নিয়োগকারীর প্রতিনিধি হিসাবে গণ্য হইবেন এবং চুক্তি সংক্রান্ত দায়-দায়িত্বের জন্য উক্ত রিক্রুটিং এজেন্ট এবং নিয়োগকারী যৌথ ও পৃথকভাবে দায়ী থাকিবেন।
 
 
(৩) রিক্রুটিং এজেন্ট উপ-ধারা (১) এর অধীন সম্পাদিত চুক্তির অনুলিপি ব্যুরো এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসে প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৪) ব্যুরো অথবা সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোন সংস্থা বা কোম্পানী কর্তৃক বিদেশে কর্মী প্রেরণ করিবার ক্ষেত্রে ব্যুরো বা সংস্থা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোন সংস্থা বা কোম্পানী সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী এবং কর্মীর সহিত কর্মসংস্থান চুক্তি সম্পাদনের ব্যবস্থা করিবে এবং চুক্তির অনুলিপি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসে প্রেরণ করিবে।
 

ষষ্ঠ অধ্যায়

শ্রম কল্যাণ উইং এবং অভিবাসন বিষয়ক চুক্তি

শ্রম কল্যাণ উইং
২৩। বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও অভিবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দ্যেশে কোন দেশে শ্রম কল্যাণ উইং প্রতিষ্ঠা করিবার প্রয়োজন রহিয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইলে, সরকার সেই দেশে বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসে শ্রম কল্যাণ উইং প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং উহা এই আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করিবে।
শ্রম কল্যাণ উইং এর দায়িত্ব
২৪। (১) শ্রম কল্যাণ উইং এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট দেশে কর্মরত বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীদের কর্মস্থল পরিদর্শন করিবেন এবং, প্রয়োজনে, নিয়োগকর্তার সহিত সাক্ষাৎ করিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নিয়মিত পরিদর্শনপূর্বক প্রতি বৎসরের ডিসেম্বর মাসে সংশ্লিষ্ট দেশে কর্মরত বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ সরকারের নিকট একটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রস্ত্ততকৃত প্রতিবেদনে নিম্নবর্ণিত তথ্যের উল্লেখ থাকিবে, যথা:—
 
 
(ক) অভিবাসী কর্মীদের তালিকা এবং কোন্ কর্মে নিয়োজিত রহিয়াছেন, কর্ম পরিবেশ, সুবিধা ও সমস্যাবলী;
 
 
(খ) অভিবাসী কর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত মামলার তালিকা ও বিবরণ, যদি থাকে, এবং আটককৃত বা কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কর্মী সম্পর্কে তথ্য;
 
 
(গ) যে সকল অভিবাসী কর্মীর মৃত্যু হইয়াছে তাহাদের নামের তালিকা, মৃত্যুর কারণ ও দাফন সংক্রান্ত তথ্য, এবং নিয়োগকর্তার নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ পাইয়াছে কি না বা পাইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে কিনা;
 
 
(ঘ) বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাস কর্তৃক প্রদত্ত সেবা, পরামর্শ, আইনী সহায়তা বা তাহাদের সমস্যার সমাধান করিবার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ;
 
 
(ঙ) সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশী কর্মীর প্রয়োজনীয়তার একটি সমীক্ষাগত ধারণা এবং উক্ত দেশের বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীর অধিকার বিষয়ক বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বাস্তবায়ন সংক্রান্ত ব্যবস্থা;
 
 
(চ) পাসপোর্ট, ভিসা, কনস্যুলার সেবা সংক্রান্ত সুবিধাদি; এবং
 
 
(ছ) সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত অন্যান্য বিষয়।
 
অভিবাসন বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি
২৫। (১) সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশী নাগরিকের অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধি, শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অভিবাসী কর্মীর প্রত্যাবাসন বা দেশের অভ্যন্তরে পুনর্বাসন এবং অভিবাসী কর্মীসহ যে কোন অভিবাসী এবং তাহাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ ও অধিকার নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দেশের সহিত সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি, অন্যান্য নীতিসহ, নিম্নবর্ণিত নীতির ভিত্তিতে গৃহীত হইবে, যথা:—
 
 
(ক) দেশের অভ্যন্তরে বা বিদেশে সকল অভিবাসী কর্মীর অধিকার, নিরাপত্তা ও মানব মর্যাদা রক্ষা;
 
 
(খ) সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীর শ্রম অধিকার ও অন্যান্য মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিতকরণ; এবং
 
 
(গ) সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মীর তথ্যের অধিকার এবং অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে প্রতিকার পাইবার অধিকার নিশ্চিতকরণ।
 

সপ্তম অধ্যায়

5[অভিবাসী কর্মীর অধিকার ও দায়-দায়িত্ব]

তথ্যের অধিকার
২৬। কোন অভিবাসী কর্মীর বিদেশে যাইবার পূর্বে অভিবাসন প্রক্রিয়া এবং কর্মসংস্থান চুক্তি বা বিদেশে কর্মের পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হইবার এবং বিভিন্ন আইনগত অধিকার সম্পর্কে জানিবার অধিকার থাকিবে।
আইনগত সহায়তা
২৭। অভিবাসী কর্মী এবং অভিবাসনের নামে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের যুক্তিসঙ্গত আইনগত সহায়তা পাইবার অধিকার থাকিবে।
দেওয়ানী মামলা দায়েরের অধিকার

২৮। এই আইনের অধীন কোন অপরাধের জন্য ফৌজদারী মামলা দায়েরের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, কোন অভিবাসী কর্মী 6[বা অন্য কোন ব্যক্তি,] এই আইনের কোন বিধান বা কর্মসংস্থান চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হইলে, ক্ষতিপূরণের জন্য দেওয়ানী মামলা দায়ের করিতে পারিবে।

 
দেশে ফিরিয়া আসিবার অধিকার
২৯। (১) কোন অভিবাসী কর্মীর, বিশেষত বিদেশে আটককৃত কিংবা আটকেপড়া বা বিপদগ্রস্ত কর্মীর দেশে ফিরিয়া আসিবার এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাসের নিকট হইতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাইবার অধিকার থাকিবে।
 
 
(২) কোন অভিবাসী কর্মীকে দেশে ফেরত আনিবার জন্য কোন অর্থ ব্যয় হইয়া থাকিলে, উক্ত ব্যয়িত অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট হইতে আদায় করা যাইবে।
 
 
(৩) কোন রিক্রুটিং এজেন্টের অবহেলা বা বেআইনি কার্যক্রমের কারণে কোন অভিবাসী কর্মী বিপদগ্রস্ত হইয়া থাকিলে সরকার সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টকে উক্ত অভিবাসী কর্মীকে দেশে ফিরাইয়া আনিবার খরচ বহন করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্দেশিত অর্থ প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে সরকার সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টের নিকট হইতে Public Demand Recovery Act, 1913 (Bengal Act No. III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী আদায় করিতে পারিবে।
 
 
আর্থিক ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি

7[৩০।  (১) অভিবাসী কর্মী এবং তাহাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ ও উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে সরকার, প্রয়োজনে, তাহাদের জন্য ব্যাংক ঋণ, কর রেয়াত, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৃত্তি, দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও সনদায়ন, পুনঃএকত্রীকরণ (reintegration) কার্যক্রম, ইত্যাদি প্রবর্তন এবং সহজলভ্য করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(২) সরকার, অভিবাসন প্রক্রিয়ার সকল স্তরে এবং বৈদেশিক কর্মস্থলে নারী অভিবাসী কর্মীদের সম্মান, মর্যাদা, অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করিবার জন্য বিশেষ আর্থিক ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মসূচিসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।]

অভিবাসী কর্মীর দায়-দায়িত্ব

8[৩০ক। (১) প্রত্যেক অভিবাসী কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও বৈধ পন্থা অবলম্বন করিবেন এবং বিদেশে অবস্থানকালে আইন বহির্ভূত কোন কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।

(২) এই আইনের অধীন অভিবাসন বা বৈদেশিক কর্ম সংক্রান্ত নথিপত্র তৈরি বা অনুরূপ উদ্দেশ্যে কোন তথ্যের প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট অভিবাসী কর্মী উক্ত তথ্য প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।]

অষ্টম অধ্যায়

অপরাধ, দণ্ড ও বিচার

অবৈধভাবে বিদেশে কর্মী প্রেরণ, অর্থ গ্রহণ, ইত্যাদির দণ্ড
৩১। কোন ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট—
 
 
(ক) এই আইন বা বিধির বিধান লঙ্ঘন করিয়া অপর কোন ব্যক্তিকে কর্মের উদ্দেশ্যে বিদেশে প্রেরণ বা প্রেরণে সহায়তা করিলে বা চুক্তি করিলে;
 
 
(খ) কোন ব্যক্তিকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করিয়া কোন অর্থ বা মূল্যবান দ্রব্য গ্রহণ করিলে বা গ্রহণ করিবার চেষ্টা করিলে;
 
 
(গ) কোন অভিবাসী কর্মীর পাসপোর্ট, ভিসা বা অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র বৈধ কারণ ব্যতীত আটকাইয়া রাখিলে;
 
 
(ঘ) প্রতারণামূলকভাবে অধিক বেতন-ভাতা ও সুযোগ সুবিধার মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করিয়া কোন ব্যক্তিকে অভিবাসন করাইলে বা অভিবাসনের নিমিত্ত চুক্তিবদ্ধ হইতে প্রলুব্ধ করিলে অথবা অন্য কোনভাবে প্রতারণা করিলে;
 
 
 
 
উহা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড এবং অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অননুমোদিত বিজ্ঞাপন প্রকাশের দণ্ড
৩২। (১) কোন ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট সরকার বা বুর‌্যোর পূর্বানুমোদন ব্যতীত বৈদেশিক কর্মে নিয়োগের উদ্দেশ্যে বা অভিবাসন বিষয়ক কোন বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা প্রচার করিলে উহা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড এবং অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্পর্কিত চাহিদাপত্র, ভিসা বা কার্যানুমতিপত্র সংগ্রহে অবৈধ পন্থা গ্রহণ বা ক্রয়-বিক্রয়ের দণ্ড

৩৩। কোন ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট কর্তৃক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে নিয়োগকারী বা বিদেশ হইতে চাহিদাপত্র, ভিসা বা কার্যানুমতিপত্র সংগ্রহে অবৈধ পন্থা গ্রহণ করিলে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উহা ক্রয়-বিক্রয় করিলে উহা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি 9[অন্যূন ২ (দুই) বৎসর এবং অনধিক ৭ (সাত) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড] এবং অন্যূন ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

লাইসেন্স বাতিল বা প্রত্যাহারের পর রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রমের দণ্ড।

10[৩৩ক।  ধারা ১২ বা ১৩ এর অধীন কোন রিক্রুটিং এজেন্টের যথাক্রমে, লাইসেন্স বাতিল বা প্রত্যাহার করা হইলে উক্ত রিক্রুটিং এজেন্ট রিক্রুটমেন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অন্যূন ১ (এক) বৎসর ও অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড এবং অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা ও অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।]

বহির্গমন স্থান ব্যতীত অন্য স্থান দিয়া বহির্গমনের ব্যবস্থাকরণের দণ্ড
৩৪। কোন ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট অন্য কোন ব্যক্তিকে বহির্গমনের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থান দিয়া বাংলাদেশ হইতে বহির্গমনের ব্যবস্থা করিলে বা সহায়তা করিলে উহা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ধারা ১৪ বা ১৪ক এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া শাখা অফিস পরিচালনা ও সাব-এজেন্ট নিয়োপের দণ্ড

11[৩৫। (১) কোন রিক্রুটিং এজেন্ট ধারা ১৪ বা ১৪ক এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া যথাক্রমে, কোন শাখা অফিস পরিচালনা করিলে কিংবা কাউকে সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত রিক্রুটিং এজেন্ট ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ১ (এক) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি ধারা ১৪ক এর অধীন নিবন্ধন গ্রহণ না করিয়া কোন রিক্রুটিং এজেন্টের সাব-এজেন্টরূপে কাজ করিলে অথবা নিজেকে সেই মর্মে উপস্থাপন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা এবং অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।]

অন্যান্য অপরাধের দন্ড

12[৩৫ক। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের এইরূপ কোন বিধান লঙ্ঘন করেন, যেক্ষেত্রে এই আইনে সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডের বিধান উল্লেখ নাই, তাহা হইলে উক্ত ক্ষেত্রে তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।]

অপরাধ সংঘটনের সহায়তা, প্ররোচনা, ইত্যাদির দণ্ড
৩৬। কোন ব্যক্তি বা রিক্রুটিং এজেন্ট এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা বা প্ররোচনা প্রদান করিলে এবং উক্ত সহায়তা বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হইলে, উক্ত সহায়তাকারী বা প্ররোচনাকারী তাহার সহায়তা বা প্ররোচনা দ্বারা সংঘটিত অপরাধের জন্য নির্দিষ্টকৃত দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩৭। কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিযাছে উক্ত কোম্পানীর এইরূপ পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
ব্যাখ্যা ।— এই ধারার উদ্দেশ্য পুরণকল্পে—
 
 
(ক) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থে নিগমিত বা নিবন্ধিত হউক বা না হউক, যে কোন কোম্পানী, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থা অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
 
 
(খ) ‘‘পরিচালক’’ অর্থে অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য অন্তর্ভুক্ত হইবে।
 
 
বিচার
৩৮। (১) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
 
 
(২) মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ হইতে ৪ (চার) মাসের মধ্যে এই আইনের অধীন বিচার কার্য সমাপ্ত করিতে হইবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সময়ের মধ্যে কোন মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে উহার কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত সময়সীমা অনধিক ২ (দুই) মাস বৃদ্ধি করিতে পারিবেন এবং সেইক্ষেত্রে তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অথবা ক্ষেত্রমত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রেরণ করিবেন।
অপরাধের আমলযোগ্যতা, আপসযোগ্যতা, ইত্যাদি

13[৩৯। ধারা ৩১, ৩৩ ও ৩৪ এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য ও অ-আপসযোগ্য এবং 14[ ধারা ৩২, ৩৩ক, ৩৫ ও ৩৫ক] এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আপসযোগ্য হইবে।]

মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর প্রয়োগ

15[৪০।  আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের 16[ধারা ৩২, ৩৩ক, ৩৫ ও ৩৫ক] এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য হইবে।]

সরকারের নিকট অভিযোগ উত্থাপন
৪১। (১) এই আইনের অধীন মামলা দায়েরের অধিকারকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, কোন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সরকারের নিকট রিক্রুটিং এজেন্টসহ যে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারনা, অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ অথবা কর্মসংস্থান চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগসহ সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন অভিযোগ উত্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অভিযোগ প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে সরকার বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তি তদন্ত সমাপ্ত করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন পরিচালিত তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হইলে, তদন্ত শেষ হইবার তারিখ হইতে অনধিক ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সরকার বা তদ্‌কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তি, আদেশ দ্বারা সরাসরি বা সালিসের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন সালিসের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তির পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

নবম অধ্যায়

বিবিধ

তল্লাশি
৪২। অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ বা অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার্থে সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কোন স্থান বা বিদেশগামী বা বাংলাদেশ অভিমুখী যে কোন বাহন তল্লাশি করিতে পারিবেন।
অবৈধভাবে গৃহীত অর্থ উদ্ধার
 
৪৩। (১) এই আইনের বিধান লঘন করিয়া কোন অর্থ গ্রহণ করা হইলে সরকার, প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে, এবং লিখিত আদেশ দ্বারা, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট হইতে উক্ত অর্থ উদ্ধার বা, প্রয়োজনে, ক্ষতিপূরণের মামলা দায়েরপূর্বক আদায় করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন উদ্ধারকৃত বা আদায়কৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদান করিতে পারিবে।
ক্ষমতার্পণ এবং প্রতিনিধি নিয়োগ
৪৪। সরকার অভিবাসী কর্মীসহ যে কোন অভিবাসীর অধিকার রক্ষা এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করিবার উদ্দেশ্যে এই আইনে বর্ণিত কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব প্রজ্ঞাপন দ্বারা বা চুক্তির মাধ্যমে কোন কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে, এবং প্রয়োজনে, কোন রাষ্ট্রে প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে পারিবে।
অসুবিধা দূরীকরণে সরকারের ক্ষমতা
৪৫। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
অন্যান্য আইনের পরিপূরক গণ্য হওয়া
৪৬। এই আইনের বিধানাবলী পাসপোর্ট, ইমিগ্রেশন, বৈদেশিক সম্পর্ক, বৈদেশিক মুদ্রা-বিনিময়, বিদেশী নাগরিকের নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রাপাচার, মানবপাচার এবং তথ্য অধিকার বিষয়ক অন্যান্য প্রচলিত আইনের পরিপূরক হইবে এবং তাহাদের ব্যত্যয়ে ব্যবহৃত হইবে না।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার, প্রয়োজনে, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ ও সম্পাদন সম্পর্কে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৪৮। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) ইংরেজি পাঠ এবং মূল বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 
রহিতকরণ ও হেফাজত
৪৯। (১) Emigration Ordinance 1982 (Ordinance No. XXIX of 1982), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর অধীন কৃত কোন কার্য বা গৃহীত ব্যবস্থা বা প্রণীত কোন বিধি বা জারীকৃত কোন আদেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে, এবং এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত বা জারীকৃত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৩) এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে কোন আদালতে উক্ত Ordinance এর অধীন কোন মামলা বা কার্যধারা বিচারাধীন থাকিলে উহা উক্ত আদালত কর্তৃক এমনভাবে শুনানী ও নিষ্পত্তি হইবে, যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs