প্রিন্ট ভিউ

নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ৫২ নং আইন )

নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষায় একটি ট্রাস্ট স্থাপনের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষার নিমিত্ত একটি ট্রাস্ট স্থাপন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
 

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। ।বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১) ‘‘অভিভাবক’’ অর্থ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা বা পিতা বা তদ্‌কর্তৃক নিয়োজিত কোনো অভিভাবক;
 
 
(২) ‘‘উপদেষ্টা পরিষদ’’ অর্থ ধারা ১১ এর অধীন গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ;
 
 
(৩) ‘‘চেয়ারপারসন’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারপারসন;
 
 
(৪) ‘‘জেলা কমিটি’’ অর্থ ধারা ২০ এর অধীন গঠিত জেলা কমিটি;
 
 
(৫) ‘‘ট্রাস্ট’’ অর্থ ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থাপিত নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট;
 
 
(৬) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ট্রাস্টের তহবিল;
 
 
(৭) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
(৮) ‘‘নিবন্ধিত সংগঠন’’ অর্থ ধারা ২১ এর অধীন নিবন্ধিত কোনো সংগঠন;
 
 
(৯) ‘‘নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবক’’ অর্থ ধারা ২৩ এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো অভিভাবক;
 
 
(১০) ‘‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি’’ অর্থ ধারা ৩ এ উল্লিখিত যে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতাসম্পন্ন ব্যক্তি;
 
 
(১১) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(১২) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ১৩ এর অধীন গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড;
 
 
(১৩) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(১৪) ‘‘বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ এমন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মূলধারার শিক্ষার পরিবর্তে বিশেষ ধরনের শিক্ষা প্রদান করা হয়;
 
 
(১৫) ‘‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক’’ অর্থ ধারা ৩০ এর অধীন নিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক;
 
 
(১৬) ‘‘সদস্য’’ অর্থ চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারপারসনসহ বোর্ডের কোনো সদস্য।

দ্বিতীয় অধ্যায়

নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতা

নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতার ধরন
৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত এবং ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্ততা ও প্রতিকূলতার ভিন্নতা বিবেচনায়, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতার ধরনসমূহ হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
 
(ক) অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস্ (autism or autism spectrum disorders);
 
(খ) ডাউন সিনড্রোম (down syndrome);
(গ) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা(intellectual disability); এবং
 
(ঘ) সেরিব্রাল পালসি (cerebral palsy)।
অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস
৪। যাহাদের মধ্যে নিম্নবর্ণিত দফাসমূহে উল্লিখিত লক্ষণসমূহের মধ্যে দফা (ক), (খ) ও (গ) এর উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে এবং দফা (ঘ), (ঙ), (চ), (ছ), (জ), (ঝ), (ঞ) ও (ট) তে উল্লিখিত লক্ষণসমূহের মধ্যে এক বা একাধিক লক্ষণ পরিলক্ষিত হইবে, তাহারা অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস্ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলিয়া বিবেচিত হইবেন, যথা :-
 
 
(ক) মৌখিক বা অমৌখিক যোগাযোগে সীমাবন্ধতা;
 
 
(খ) সামাজিক ও পারস্পরিক আচার-আচরণ, ভাববিনিময় ও কল্পনাযুক্ত কাজ-কর্মের সীমাবদ্ধতা;
 
 
(গ) একই ধরনের বা সীমাবদ্ধ কিছু কাজ বা আচরণের পুনরাবৃত্তি;
 
 
(ঘ) শ্রবণ, দর্শন, গন্ধ, স্বাদ, স্পর্শ, ব্যথা, ভারসাম্য ও চলনে অন্যদের তুলনায় বেশি বা কম সংবেদনশীলতা;
 
 
(ঙ) বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধিতা বা খিচুনী;
 
 
(চ) এক বা একাধিক নির্দিষ্ট বিষয়ে অসাধারণ দক্ষতা এবং একই ব্যক্তির মধ্যে বিকাশের অসমতা;
 
 
(ছ) অন্যের সহিত সরাসরি চোখে চোখ (eye contact) না রাখা বা কম রাখা;
 
 
(জ) অতিরিক্ত চঞ্চলতা, উত্তেজনা বা অসঙ্গতিপূর্ণ হাসি-কান্না;
 
 
(ঝ) অস্বাভাবিক শারীরিক অঙ্গভঙ্গি;
 
 
(ঞ) একই রুটিনে চলার প্রচন্ড প্রবণতা; এবং
 
 
(ট) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো বৈশিষ্ট্য।
 
 
[ ব্যাখ্যা ।-অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস্ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের এইরূপ একটি জটিল প্রতিবন্ধকতা যাহা শিশুর জন্মের এক বৎসর ছয়মাস হইতে তিন বৎসরের মধ্যে প্রকাশ পায়। এই ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাধারণত শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা বা ত্রুটি থাকে না এবং তাহাদের চেহারা ও অবয়ব অন্যান্য সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতই হইয়া থাকে। ইহারা পরিবেশের সহিত যথাযথভাবে যোগাযোগ করিতে পারে না, যেমন-ভাষার ব্যবহার রপ্ত করিতে না পারা, নিজের ভিতর গুটাইয়া থাকা, ইত্যাদি। তবে, অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার চালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এই ধরনের ব্যক্তিরা বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করিয়া থাকে। ]
ডাউন সিনড্রোম
৫। কোনো ব্যক্তির মধ্যে এইরূপ কোনো বংশানুগতিক (genetic) সমস্যা, যাহা ২১ তম ক্রমোসোম জোড়ায় একটি অতিরিক্ত ক্রমোসোমের উপস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, এবং মৃদু হইতে গুরুতর মাত্রার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা, দুর্বল পেশীক্ষমতা, খর্বাকৃতি ও মঙ্গোলয়ড মুখাকৃতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হইলে, তিনি ডাউন সিনড্রোমসম্পন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলিয়া বিবেচিত হইবেন।
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা

৬। নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কোনো ব্যক্তি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ব্যক্তি বলিয়া বিবেচিত হইবেন, যথা :-

 
 

(ক) বয়স উপযোগী কার্যকলাপে তাৎপর্যপূর্ণ সীমাবদ্ধতা;

 
 

(খ) বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকলাপে সীমাবদ্ধতা, যেমন-কার্যকারণ বিশ্লেষণ, শিক্ষণ বা সমস্যা সমাধান;

 
 

(গ) দৈনন্দিন কাজের দক্ষতায় সীমাবদ্ধতা, যেমন- যোগাযোগ, নিজের যত্ন লওয়া, সামাজিক দক্ষতা, নিজেকে পরিচালনা করা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, লেখাপড়া, ইত্যাদি; বা

 
 

(ঘ) বুদ্ধাঙ্ক স্বাভাবিক মাত্রা অপেক্ষা কম।

 
 
সেরিব্রাল পালসি
৭। (১) অপরিণত মস্তিস্কে কোনো আঘাত বা রোগের আক্রমণের কারণে যদি কোনো ব্যক্তির,-
 
 
(ক) সাধারণ চলাফেরা ও দেহভঙ্গিতে অস্বাভাবিকতা, যাহা দৈনন্দিন কার্যক্রমকে সীমাবদ্ধ করে;
 
 
(খ) মস্তিস্কের ক্ষতিগ্রস্ততার পরিমাণ পরবর্তীতে হ্রাস বা বৃদ্ধি না হয়; এবং
 
 
(গ) উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়,
 
 
তাহা হইলে তিনি সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলিয়া বিবেচিত হইবেন।
 
 
(২) সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধিতার বৈশিষ্ট্যসমূহ হইবে নিম্নরূপ, যথা:
 
 
(ক) পেশী খুব শক্ত বা শিথিল থাকা;
 
 
(খ) হাত বা পায়ের সাধারণ নড়াচড়ায় অসামঞ্জস্যতা বা সীমাবদ্ধতা;
 
 
(গ) স্বাভাবিক চলাফেরায় ভারসাম্যহীনতা বা ভারসাম্য কম থাকা;
 
 
(ঘ) দৃষ্টি, শ্রবণ, বুদ্ধিগত বা সর্বক্ষেত্রে কম বা বেশী মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ততা;
 
 
(ঙ) আচরণগত সীমাবদ্ধতা;
 
 
(চ) যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা; বা
 
 
(ছ) এক হাত বা দুই হাত অথবা এক পা বা দুই পা অথবা এক পাশের হাত ও পা বা উভয় পাশের হাত ও পা আক্রান্ত হওয়া।
 

তৃতীয় অধ্যায়

ট্রাস্ট স্থাপন, উদ্দেশ্য, ইত্যাদি

ট্রাস্ট স্থাপন
৮। (১) এই আইন বলবৎ হইবার পর, সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের বিধান অনুযায়ী নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট নামে একটি ট্রাস্ট স্থাপন করিবে।
 
 
(২) ট্রাস্ট একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহার নামে উহার পক্ষে বা বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
ট্রাস্টের কার্যালয়
৯। ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় থাকিবে ঢাকায় এবং বোর্ড, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১০। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হইবে, সমাজের অংশ হিসাবে মর্যাদার সহিত বসবাস করিবার উপযোগী করিয়া তুলিবার লক্ষ্যে, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে,-
 
 
(ক) যথাসম্ভব শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করা;
 
 
(খ) উপযোগী শিক্ষা ও কারিগরী জ্ঞানের ব্যবস্থা করা; এবং
 
 
(গ) সামাজিকভাবে ক্ষমতায়ন করা।
 
উপদেষ্টা পরিষদ
১১। (১) ট্রাস্টের একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকিবে যাহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী বা, ক্ষেত্রমত, প্রতিমন্ত্রী, যিনি উহার সহ-সভাপতিও হইবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী একই সঙ্গে উক্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকিলে, উক্ত ক্ষেত্রে প্রতিমন্ত্রী সদস্য হইবেন;
 
 
(গ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঘ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঙ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ছ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(জ) শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঝ) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঞ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ট) তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঠ) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ড) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঢ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী; এবং
 
 
 
(ণ) সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
(২) উপদেষ্টা পরিষদ, প্রয়োজনবোধে, সময় সময়, বোর্ডকে প্রয়োজনীয় দিক্-নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করিবে।
 
 
(৩) উপদেষ্টা পরিষদের সভার কার্যপদ্ধতি এবং দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
প্রশাসন ও পরিচালনা
১২। ট্রাস্টের প্রশাসন ও পরিচালনা একটি ট্রাস্টি বোর্ডের ওপর ন্যস্ত থাকিবে এবং ট্রাস্ট যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে, উক্ত বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
১৩। (১) ট্রাস্টি বোর্ড নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক মনোনীত, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন, একজন ব্যক্তি, যিনি উহার চেয়ারপারসনও হইবেন;
 
 
(খ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, যিনি উহার ভাইস চেয়ারপারসনও হইবেন;
 
 
(গ) মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর;
 
 
(ঘ) মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;
 
 
(ঙ) যুগ্মসচিব (উন্নয়ন), সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়;
 
 
(চ) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ছ) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(জ) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ঝ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ঞ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ট) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ঠ) খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ড) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ঢ) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ণ) স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(ত) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
 
 
(থ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;
 
 
(দ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা তাহার মাতা, পিতা, অভিভাবক বা নিবন্ধিত সংগঠনের প্রতিনিধিগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ৭ (সাত) জন প্রতিনিধি;
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ৭ (সাত) জন প্রতিনিধির মধ্যে অন্যূন ৪ (চার) জন প্রতিনিধি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা, পিতা বা অভিভাবকগণের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন;
 
 
(ধ) সরকার কর্তৃক মনোনীত জনহিতৈষীমূলক কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তিগণের বা প্রতিষ্ঠানের২ (দুই) জন প্রতিনিধি;
 
 
(ন) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পদাধিকারবলে, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক), (থ), (দ) ও (ধ) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
 
 
(৩) শুধু সদস্যপদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
(৪) সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বোর্ডের সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
চেয়ারপারসন এবং সদস্যবৃন্দের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
১৪। (১) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং বিস্তৃত বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তি চেয়ারপারসন হিসাবে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন।
 
 
(২) কোনো ব্যক্তি চেয়ারপারসন বা সদস্য হিসাবে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-
 
 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;
 
 
(খ) কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপী হন;
 
 
(গ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দেউলিয়াত্বের দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করেন; এবং
 
 
(ঘ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধের দায়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
 
পদত্যাগ, অপসারণ বা দায়িত্ব পালনে অসমর্থতা
১৫। (১) চেয়ারপারসন বা মনোনীত কোনো সদস্য কমপক্ষে ৩ (তিন) মাস পূর্বে নোটিশ প্রদান করিয়া, সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে, স্বীয় পদ হইতে পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং সরকার কর্তৃক পদত্যাগপত্র গৃহীত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পদটি শূন্য হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, চেয়ারপারসন বা মনোনীত কোনো সদস্যকে তাহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-
 
 
(ক) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(খ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;
 
 
 
(গ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতস্থ ঘোষিত হন;
 
 
(ঘ) কর্মসম্পাদনের ক্ষেত্রে শারীরিক বা মানসিকভাবে অসমর্থ হন; অথবা
 
 
(ঙ) দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা বিশ্বাসভঙ্গ করেন কিংবা বেআইনীভাবে কোনো আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার সুবিধা গ্রহণ করেন।
 
চেয়ারপারসন পদে সাময়িক শূন্যতা পূরণ
১৬। চেয়ারপারসন এর পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারপারসন তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, নবনিযুক্ত চেয়ারপারসন উক্ত শূন্য পদে যোগদান না করা পর্যন্ত অথবা চেয়ারপারসন পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, বোর্ডের ভাইস চেয়ারপারসন সাময়িকভাবে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করিবেন।
ট্রাস্টের কার্যাবলী
১৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ট্রাস্টের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
 
(ক) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্তকরণ ও উক্তরূপ প্রতিবন্ধিতার মাত্রা নিরূপণের উদ্যোগ গ্রহণ;
 
 
(খ) নিজ পরিবারের সহিত নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বসবাস নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
 
 
(গ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা তাহার পরিবারের সংকটকালে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য নিবন্ধিত সংগঠনকে সহায়তা প্রদান;
 
 
(ঘ) পারিবারিক সুবিধাবঞ্চিত নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের সহায়তা প্রদান এবং, ক্ষেত্রমত, তাহার জীবনব্যাপী যত্নপরিচর্যা ও অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে তাহার পরিবার বা অভিভাবককে সম্ভাব্য সকল ধরনের সহায়তা প্রদান;
 
 
(ঙ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা-পিতা বা অভিভাবকের মৃত্যুতে তাহার জীবনব্যাপী যত্নপরিচর্যা ও অধিকার সুরক্ষা এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(চ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাহার পরিবারকে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
 
 
(ছ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা এবং সমাজে অন্যদের সহিত সমতার ভিত্তিতে তাহার পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করিবার নিমিত্ত সহায়তা প্রদান;
 
 
(জ) সার্বিকভাবে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাহার পরিবারের কল্যাণ সাধন;
 
 
 
(ঝ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণমূলক কার্যক্রমে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং সমাজের বিত্তশালীদের সম্পৃক্তকরণ;
 
 
(ঞ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মেধা ও প্রতিভা বিকাশের জন্য তাহাদের উপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বা স্থাপনে ব্যক্তি ও সংস্থাকে উৎসাহ প্রদান এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নির্বাচনের মানদণ্ড নির্ধারণ ও পাঠক্রম প্রণয়ন;
 
 
(ট) প্রতিবন্ধিতার ধরন ও মাত্রার আলোকে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একীভূত শিক্ষা কিংবা বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এতদুদ্দেশ্যে বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বা স্থাপনে ব্যক্তি বা সংস্থাকে উৎসাহ প্রদান;
 
 
(ঠ) গুরুতর যে সকল নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব হইবে না, তাহাদের জন্য বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বা স্থাপনে ব্যক্তি বা সংস্থাকে উৎসাহ প্রদান;
 
 
(ড) প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন, বুলেটিন, জার্নাল, সাময়িকী ও বই-পুস্তক প্রকাশ;
 
 
(ঢ) দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য চিকিৎসা সেবা ও সহায়ক উপকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ণ) দেশের হাসপাতালসমূহে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসার নিমিত্ত একটি পৃথক ইউনিট বা ওয়ার্ড নির্দিষ্টকরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ;
 
 
(ত) দুঃস্থ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিতকল্পে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
 
(থ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিল্পীসত্তা ও সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকাশের ব্যবস্থা এবং উক্তরূপ প্রতিভার তথ্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের উদ্দেশ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(দ) ক্রীড়া ও শরীরচর্চা বিষয়ক কর্মকাণ্ডে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
 
(ধ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিতপূর্বক তাহাদের উপযোগী কর্মক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ ও কর্মে সম্পৃক্তকরণ;
 
 
(ন) উত্তরাধিকারপ্রাপ্তি এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিসহ সকল প্রকার সম্পত্তি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কর্তৃক ভোগ-দখল নিশ্চিত করিবার নিমিত্ত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
 
(প) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আবাসিক হোস্টেল বা আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন;
 
 
(ফ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা-পিতা বা অভিভাবকের মৃত্যুতে অভিভাবক ও ট্রাস্টি মনোনয়নের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন;
 
 
(ব) তহবিল হইতে দুঃস্থ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন;
 
 
(ভ) সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত দিক্-নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক অন্য যে কোনো কার্য সম্পাদন।
 
বোর্ডের সভা
১৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) সভার আলোচ্যসূচি, তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারপারসন কর্তৃক নির্ধারিত হইবে এবং চেয়ারপারসনের অনুমোদনক্রমে বোর্ডের সদস্য-সচিব এইরূপ সভা আহবান করিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি ৪ (চার) মাসে বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৩) চেয়ারপারসন বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে বোর্ডের ভাইস চেয়ারপারসন সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৪) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
 
(৫) সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী চেয়ারপারসন বা, ক্ষেত্রমত, ভাইস চেয়ারপারসনের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৬) চেয়ারপারসন, সদস্যগণের সহিত আলোচনাক্রমে, প্রয়োজনে, সভার আলোচ্যসূচির সহিত সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ যে কোনো ব্যক্তিকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবেন, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে না।
 
বোর্ডের দায়িত্ব
১৯। ধারা ১২ এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, বোর্ড, অন্যান্যের মধ্যে, নিম্নরূপ দায়িত্বও পালন করিবে, যথা:-
 
 
(ক) ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ;
 
 
(খ) ট্রাস্টের তহবিলের জন্য অর্থ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিয়োগ;
 
 
(গ) ট্রাস্টের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অর্থায়ন;
 
 
(ঘ) ট্রাস্টের সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও হেফাজতকরণ;
 
 
(ঙ) সরকারি উৎস ছাড়াও অন্যান্য উৎস হইতে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, বিভিন্ন সংস্থার সহিত যোগাযোগ, অর্থপ্রাপ্তির উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
 
(চ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অভিভাবকত্ব অনুমোদন এবং তদ্‌লক্ষ্যে জেলা কমিটি গঠন, নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি;
 
 
(ছ) ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের নিমিত্ত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম গ্রহণ;
 
 
(জ) ট্রাস্টের উদ্দেশ্যকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষসহ যে কোনো সরকারি-বেসরকারি, দেশী-বিদেশী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বা সংগঠনের সহিত চুক্তি সম্পাদন ও সমন্বিত কর্মসূচি পরিচালনা;
 
 
(ঝ) ট্রাস্টের তহবিল বৃদ্ধির নিমিত্ত বিনিয়োগ এবং আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা; এবং
 
 
(ঞ) উপরি-উক্ত দায়িত্ব সম্পাদনের প্রয়োজনে আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ।
 
জেলা ও অন্যান্য কমিটি
২০। (১) বোর্ড, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, প্রত্যেক জেলায় নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করিবে, যথা :-
 
 
(ক) জেলা প্রশাসক, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি;
 
 
(গ) জেলার সিভিল সার্জন;
 
 
(ঘ) জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা;
 
 
(ঙ) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা;
 
 
(চ) জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা;
 
 
(ছ) প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা;
 
 
(জ) জেলা আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সাধারণ সম্পাদক;
 
 
(ঝ) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী বা তাহাদের মাতা, পিতা বা অভিভাবকগণের মধ্য হইতে ২(দুই) জন প্রতিনিধি;
 
 
(ঞ) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট জেলার একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নিবন্ধিত সংগঠনের একজন প্রতিনিধি; এবং
 
 
(ট) জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
(২) জেলা কমিটির সভার কার্যপদ্ধতি এবং দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ড, ট্রাস্টের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন ও পরিচালনায় সহায়তার জন্য, দায়িত্ব ও কার্যাবলী নির্ধারণপূর্বক, এক বা একাধিক অন্যান্য কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
 

চতুর্থ অধ্যায়

সংগঠন প্রতিষ্ঠা, নিবন্ধন, অভিভাবক নিয়োগ, ইত্যাদি

সংগঠন, নিবন্ধন, ইত্যাদি
২১। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে উক্তরূপ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন বা তাহাদের অভিভাবকদের সংগঠন গঠন করা যাইবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের অধীন নিবন্ধিত না হইলে, উক্ত সংগঠন এই আইনের অধীন কোনো সুবিধা লাভের যোগ্য হইবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত সংগঠনকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ফরম পূরণ ও ফি প্রদান সাপেক্ষে, নিবন্ধনের জন্য বোর্ডের নিকট আবেদন করিতে হইবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে কোনো সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিলে উহাকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহাতে উল্লিখিত পদ্ধতিতে ফরম পূরণ ও ফি প্রদান সাপেক্ষে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিতে হইবে।
 
 
(৩) বোর্ড, উহার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে, নিবন্ধনের যে কোনো আবেদন মঞ্জুর করিতে পারিবে, অথবা, কারণ লিপিবদ্ধপূর্বক, প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংগঠন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবে।
 
 
(৫) আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান, নিবন্ধন এবং আপিল নিষ্পত্তিসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
নিবন্ধিত সংগঠন বরাবরে সহায়তা প্রদান, ইত্যাদি
২২। (১) কোনো নিবন্ধিত সংগঠন উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আর্থিক সহায়তা যাচনা করিয়া বোর্ডের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।
 
 
(২) বোর্ড, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রাক-অর্থ সহায়তা অবস্থা যাচাইপূর্বক যাচিত আর্থিক সহায়তা মঞ্জুর করিতে পারিবে।
 
 
(৩) নিম্নরূপ কোনো কর্মসূচির জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন করা যাইবে, যথা:
 
 
(ক) সমাজে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য সম্মানজনক বসবাসের পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি;
 
 
(খ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যবৃন্দকে কাউন্সেলিং ও প্রশিক্ষণ প্রদান :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কাউন্সেলিং ও প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে মহিলা, শিশু, ৬৫ বৎসর বা তদূর্ধ্ব বৎসর বয়সী বয়স্ক বা গুরুতর নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার প্রদান করিতে হইবে;
 
 
(গ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য অবকাশকালীন যত্ন, ফস্টার ফ্যামিলি কেয়ার বা দিবাযত্ন সেবা প্রদান এবং উৎসাহিতকরণ;
 
 
(ঘ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য আবাসিক হোস্টেল বা আবাসিক আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা; এবং
 
 
(ঙ) নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তাহাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্বনির্ভর দল গঠন।
 
 
(৪) বোর্ড, সময় সময়, আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত নিবন্ধিত সংগঠনের কর্মকাণ্ড পরিবীক্ষণ, তদারকি ও মূল্যায়ন করিতে পারিবে।
 
 
(৫) বোর্ড যে কোনো নিবন্ধিত সংগঠনের নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, প্রকাশনা বা কর্মসূচি পরিদর্শনের লক্ষ্যে উক্ত নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ বা প্রকাশনা বোর্ডের নিকট উপস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত সংগঠন তদনুযায়ী সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ বা প্রকাশনা বোর্ডের নিকট উপস্থাপন করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
(৬) নিবন্ধিত সংগঠনকে, প্রতি বৎসর, বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানসহ উহার বার্ষিক আয়- ব্যয়ের হিসাব বিবরণী প্রকাশ করিতে হইবে, যাহার কপি বোর্ডের নিকট দাখিল করিতে হইবে।
 
 
অভিভাবকত্বের জন্য আবেদন, অভিভাবক নিয়োগ, ইত্যাদি
২৩। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যে কোনো প্রতিবন্ধীবান্ধব ব্যক্তি বা নিবন্ধিত সংগঠন, এই ধারার বিধান সাপেক্ষে, অভিভাবক হিসাবে যে কোনো নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দায়িত্ব গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কোনো প্রতিবন্ধীবান্ধব ব্যক্তি বা নিবন্ধিত সংগঠন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অভিভাবকত্ব গ্রহণে আগ্রহী হইলে তাহাকে জেলা কমিটি বরাবরে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আবেদন করিতে হইবে :
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা, পিতা বা অভিভাবকের লিখিত সম্মতি ব্যতীত কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হইবে না।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর জেলা কমিটি সংশ্লিষ্ট অভিভাবকত্ব নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা, দায়িত্ব গ্রহণের যথার্থতা, সামর্থ্য ও উদ্দেশ্য যথাযথভাবে বিবেচনা করিবে।
 
 
(৪) জেলা কমিটি, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অভিভাবকত্বের জন্য দাখিলকৃত আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইপূর্বক সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের দায়িত্ব সুনির্দিষ্টকরতঃ বোর্ডের অনুমোদনের জন্য বোর্ড বরাবর উহার সুপারিশ পেশ করিবে।
 
 
(৫) বোর্ড, উপ-ধারা (৪) এর অধীন সুপারিশ প্রাপ্তির পর বিষয়টি যাচাই-বাছাইপূর্বক উহা অনুমোদন করিতে পারিবে।
 
 
(৬) বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে, জেলা কমিটি, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, চুক্তিনামা সম্পাদনপূর্বক অভিভাবক নিয়োগ করিবে :
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যত্নপরিচর্যা, সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ এবং লালনপালনের জন্য দায়-দায়িত্বের বিষয় চুক্তিনামা দ্বারা নির্ধারিত করিতে হইবে।
 
 
(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন অভিভাবক নিয়োগের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবক নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দায়-দেনার, যদি থাকে, প্রতিবেদনসহ সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিসংখ্যান বোর্ড এবং জেলা কমিটির নিকট দাখিল করিবেন।
 
 
(৮) নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবক প্রত্যেক অর্থ-বৎসর শেষ হইবার অনধিক ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সম্পত্তির আয়-ব্যয় এবং উদ্বৃত্তপত্রসহ তাহার অধীন ন্যস্ত সকল সম্পদ ও সম্পত্তির হিসাব বিবরণী বোর্ডের এবং, ক্ষেত্রমত, জেলা কমিটির নিকটি দাখিল করিবেন।
সাক্ষাৎকার, পরিদর্শন, ইত্যাদি
২৪। ধারা ২৩ এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে রহিয়াছেন এমন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা-পিতা, অভিভাবক, নিবন্ধিত সংগঠন বা বোর্ডের কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সহিত সাক্ষাৎ এবং তাহার সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করিতে পারিবেন।
নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবককে অব্যাহতি, ইত্যাদি
২৫। (১) ধারা ২৪ এর অধীন পরিদর্শনকালে নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবক কর্তৃক নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতি অবহেলা, নির্যাতন, সম্পত্তি আত্মসাৎ, অপব্যবহার বা অপব্যয় সংক্রান্ত কোনো ধরনের আচরণ বা কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হইলে পরিদর্শনকারী ব্যক্তি উক্ত নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবককে অব্যাহতি প্রদানের নিমিত্ত জেলা কমিটি বরাবর অভিযোগ উত্থাপন করিতে পারিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অভিযোগ প্রাপ্ত হইলে জেলা কমিটি, নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুসন্ধান এবং, প্রয়োজনে, শুনানী গ্রহণ করিয়া বিষয়টির সত্যতা যাচাই করিবে।
 
 
(৩) নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবককে অব্যাহতি প্রদানের কোনো সঙ্গত কারণ থাকিলে জেলা কমিটি, বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া নিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবককে অব্যাহতি প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ধারা ২৩ এর বিধান অনুসরণপূর্বক নূতন অভিভাবক নিয়োগ করিতে পারিবে অথবা নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যত্নপরিচর্যা ও সুরক্ষার নিমিত্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে অন্য যে কোনো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) অনুসারে অব্যাহতিপ্রাপ্ত অভিভাবক জেলা কমিটির মাধ্যমে নবনিয়োগপ্রাপ্ত অভিভাবকের নিকট বা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সংস্থা, সংগঠন বা ব্যক্তির নিকট তদকর্তৃক গৃহীত ও ব্যয়িত অর্থের হিসাবসহ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমুদয় সম্পত্তি ও দায়-দেনার হিসাব হস্তান্তর করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
(৫) এই ধারার অধীন অব্যাহতিপ্রাপ্ত অভিভাবক নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতি অবহেলা, অযত্ন বা নির্যাতন করিলে অথবা তাহার সম্পত্তি আত্মসাৎ, অপব্যবহার বা অপব্যয় করিলে অথবা উপ-ধারা (৪) এর অধীন হিসাব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হইলে বা অপারগতা প্রকাশ করিলে উক্তরূপ কর্মকাণ্ড, ব্যর্থতা বা অপরাগতার জন্য তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।

পঞ্চম অধ্যায়

ট্রাস্টের তহবিল, ইত্যাদি

ট্রাস্টের তহবিল
২৬। (১) ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকিবে যাহা নিম্নরূপ দুইটি অংশে বিভক্ত থাকিবে, যথা :-
 
 
(ক) স্থায়ী তহবিল; এবং
 
 
(খ) চলতি তহবিল।
 
 
(২) এই আইনের অধীন ট্রাস্ট স্থাপনের পর সরকার, যতশীঘ্র সম্ভব, ট্রাস্টের উদ্দেশ্য
 
 
বাস্তবায়নকল্পে উহার অনুকূলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ অনুদান হিসাবে প্রদান করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর অধীন গঠিত স্থায়ী তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকার বা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত এককালীন দান বা অনুদান; এবং
 
 
(খ) উক্তরূপে জমাকৃত অর্থ হইতে প্রাপ্ত লভ্যাংশ।
 
 
(৪) স্থায়ী তহবিলের অর্থ কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসাবে জমা রাখিতে হইবে এবং ট্রাস্টের কোনো দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে উক্ত তহবিলের অর্থ ব্যয় করা যাইবে না :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ডের পূর্বানুমোদনক্রমে, স্থায়ী আমানতের লভ্যাংশ হইতে সর্বোচ্চ শতকরা ৫০ ভাগ অর্থ দরিদ্র, মেধাবী নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি বা উপবৃত্তি এবং দু:স্থ নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চিকিৎসায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ব্যয় করা যাইবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন চলতি তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বরাদ্দ;
 
 
(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত দান বা অনুদান;
 
 
(গ) আর্থিক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তা;
 
 
(ঘ) সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে লটারি পরিচালনার মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ;
 
 
(ঙ) সমাজের বিত্তবান, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীসহ যে কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
 
(চ) সরকারের অনুমোদনক্রমে বিদেশী কোনো সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তি বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত দান বা অনুদান; এবং
 
 
(ছ) সরকারের অনুমোদনক্রমে অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(৬) ট্রাস্টের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে কোনো নির্দিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কল্যাণে যে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ট্রাস্টের অনুকূলে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দান করিতে পারিবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, দানপত্রে নির্দিষ্ট কোনো নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম উল্লেখ থাকিলে, তাহার জীবনযাত্রার মান এবং অন্য যে সকল কারণ উল্লেখপূর্বক সম্পত্তি দান করা হইবে, সেই সকল বিষয়সমূহ বোর্ড কর্তৃক নিশ্চিত হইতে হইবে :
 
 
আরও শর্ত থাকে যে, উক্ত দানকৃত সম্পত্তি হইতে সংশ্লিষ্ট নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রয়োজন মিটাইবার পর উদ্বৃত্ত অর্থ, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অন্যান্য কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাইবে।
 
 
(৭) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত চলতি তহবিলের অর্থ কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং উক্তরূপ অর্থ হইতে ট্রাস্টের দৈনন্দিন ব্যয়সহ অন্যান্য কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।
 
 
(৮) তহবিলের ব্যাংক হিসাব বোর্ড কর্তৃক, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, পরিচালিত হইবে।
 
 
(৯) তহবিলের অর্থ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত যে কোনো খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।
বাজেট
২৭। ট্রাস্ট প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, পরবর্তী অর্থ-বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে ট্রাস্টের কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
২৮। (১) ট্রাস্ট যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্ত্তত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ট্রাস্টের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) Article 2(1)(b)-তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট দ্বারা ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ট্রাস্ট এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউন্টেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।
 
 
(৫) উপ-ধারা (২) বা (৩) এর বিধান অনুসারে হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব নিরীক্ষক কিংবা তদ্‌কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা, ক্ষেত্রমত, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ট্রাস্টের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং যে কোনো সদস্য এবং ট্রাস্টের কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

ষষ্ঠ অধ্যায়

কর্মকর্তা-কর্মচারী

ট্রাস্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারী
২৯। ট্রাস্ট উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
৩০। (১) ট্রাস্টের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকিবেন।
 
 
(২) সরকারের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণের মধ্য হইতে, সরকার কর্তৃক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত হইবেন।
 
 
(৩) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ট্রাস্টের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি-
 
 
(ক) বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন ;
 
 
(খ) বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন; এবং
 
 
(গ) ট্রাস্টের প্রশাসন পরিচালনা করিবেন।

সপ্তম অধ্যায়

বিবিধ

প্রতিবেদন
৩১। (১) প্রতি অর্থ বৎসরে ট্রাস্ট কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন ট্রাস্ট পরবর্তী বৎসরের ৩০ শে জুনের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করিবে।
 
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে যে কোনো সময়, ট্রাস্ট এর নিকট হইতে যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং ট্রাস্ট সরকারের নিকট উহা সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
ক্ষমতা অর্পণ
৩২। বোর্ড উহার যে কোন ক্ষমতা চেয়ারপারসন, ভাইস চেয়ারপারসন বা অন্য কোনো সদস্য, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা অন্য কোন কর্মকর্তার নিকট অর্পণ করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৩। সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৪। বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
অস্পষ্টতা দূরীকরণ
৩৫। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩৬।এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, প্রয়োজনবোধে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs