প্রিন্ট ভিউ

1[ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ৫৪ নং আইন )

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন ও সুরক্ষা সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন ও সুরক্ষা এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 
 
 

সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

 

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে বিদ্যমান সংরক্ষণযোগ্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের ক্ষেত্রে
 
 
এই আইন একইভাবে প্রযোজ্য হইবে, যেইভাবে ইহা কার্যকর হইবার পরবর্তী সংরক্ষণযোগ্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
 
 
(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
 
(১) ‘‘অনুমোদিত ব্যবহারকারী’’ অর্থ এই আইনের অধীন নিবন্ধনকৃত কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী, এবং কোন ব্যক্তিবর্গ বা উৎপাদনকারীগণের সমন্বয়ে গঠিত কোন সমিতি বা সংগঠন বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যাহারা নিবন্ধনবহিতে বর্ণিত ভৌগোলিক এলাকায় কোন পণ্য লইয়া কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং যাহার নাম কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের ব্যবহারকারী হিসাবে নিবন্ধন বহিতে লিপিবদ্ধ রহিয়াছে;
 
 
(২) ‘‘উপযুক্ত জেলা আদালত’’ অর্থ কোন জেলা আদালত যাহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে মামলা দায়েরকারী এক বা একাধিক ব্যক্তি প্রকৃতপেক্ষে এবং সাধারণত বসবাস করেন অথবা ব্যবসা পরিচালনা করেন অথবা ব্যক্তিগত লাভজনক কোন কার্যে নিযুক্ত রহিয়াছেন;
 
 
(৩) ‘‘উৎপাদনকারী’’ অর্থ কোন ব্যক্তি যিনি, বিক্রয় বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে,-
 
 
(অ) কোন কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করেন;
 
 
(আ) প্রকৃতিজাত পণ্য আহরণ করেন;
 
 
(ই) হস্তশিল্পজাত বা শিল্পজাত পণ্য প্রস্ত্তত করেন; এবং
 
 
(ঈ) যিনি পূর্বে উল্লিখিত পণ্যের উৎপাদন, আহরণ, তৈরীকরণ বা প্রস্তুতকরণ সম্পর্কিত কারবার বা ব্যবসা করেন;
 
 
(৪) ‘‘জেনেরিক নাম বা নির্দেশক’’ অর্থ কোন পণ্যের ভৌগোলিক পরিচয় নির্দেশক নাম যাহা পণ্যটি প্রথমে যেখানে উৎপাদিত, আহরিত বা প্রস্ত্তত হইত সেই স্থান অথবা অঞ্চলের সহিত সম্পর্কযুক্ত এবং ঐ জাতীয় পণ্যের সাধারণ নামে পরিণত হইয়াছে এবং উক্ত পণ্যের উপাধি হিসাবে বা উহার প্রকার, প্রকৃতি, ধরন বা অন্যান্য গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্যের পরিচায়ক হিসাবে ব্যবহৃত হইতেছে;
 
 
(৫) ‘‘ট্রাইব্যুনাল’’ অর্থ রেজিস্ট্রার বা ক্ষেত্রমত, তদ্‌কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা যাহার নিকট কোন কার্যধারা নিষ্পন্নাধীন রহিয়াছে;
 
 
(৬) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
(৭) ‘‘নিবন্ধনবহি’’ অর্থ এই আইনের ধারা ১৭ এ উল্লিখিত নিবন্ধনবহি;
 
 
(৮) ‘‘পণ্য’’ অর্থ কৃষিজাত বা প্রকৃতিজাত কোন দ্রব্য অথবা হস্তশিল্পজাত বা শিল্প কারখানাজাত কোন দ্রব্য, এবং খাদ্য সামগ্রীও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
 
 
(৯) ‘‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য’’ অর্থ ভৌগোলিক নির্দেশক সম্পন্ন এইরূপ কৃষিজাত বা প্রকৃতিজাত অথবা প্রস্ত্ততকৃত পণ্য, যাহার দ্বারা উক্ত পণ্য কোন বিশেষ দেশে বা ভূখন্ডে বা উক্ত দেশ বা ভূখন্ডের কোন বিশেষ অঞ্চল বা এলাকায় জাত বা প্রস্ত্ততকৃত বুঝায়, যেইক্ষেত্রে উক্ত পণ্যের বিশেষ গুণাগুণ, সুনাম বা অনন্য বৈশিষ্ট্যসমূহ আবশ্যিকভাবে উহার ভৌগোলিক উৎপত্তিস্থলের উপর প্রযুক্ত; এবং পণ্যটি যদি প্রস্ত্ততকৃত পণ্য হয়, তাহা হইলে যাহার দ্বারা উহার প্রস্ত্ততকরণ কার্যাবলীর মধ্যে উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ বা প্রস্ত্ততকরণ কার্যের কোন একটি কার্য অনুরূপ ভূখন্ড, অঞ্চল বা এলাকায় সম্পন্ন হওয়াকে বুঝাইবে;
 
 
(১০) ‘‘প্যারিস কনভেনশন’’ অর্থ সময়ে সময়ে সংশোধিত আকারে শিল্প সম্পদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০ মার্চ, ১৮৮৩ তারিখে গৃহীত প্যারিস কনভেনশন, যাহাতে বাংলাদেশ ৩ মার্চ, ১৯৯১ তারিখে পক্ষভুক্ত হইয়াছে;
 
 
(১১) ‘‘প্রতারণামূলকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক’’ অর্থ এইরূপ কোন ভৌগোলিক নির্দেশক, যাহা অপর কোন পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশকের সহিত সাদৃশ্যপূর্ণ যাহার ফলে প্রতারণা বা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হইতে পারে;
 
 
(১২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(১৩) ‘‘মোড়ক’’ অর্থ কোন কেস, বাক্স, ধারক, কাভার, ফোল্ডার, রিসেপ্ট্যাকেল, ভেসেল, ক্যাসকেট, বোতল, র‌্যাপার লেবেল, ব্যান্ড, টিকেট, রীল, ফ্রেম, ক্যাপসুল, ক্যাপ, ছিপি, স্টপার এবং কর্ক;
 
 
(১৪) ‘‘রেজিস্ট্রার’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৫ এর অধীন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন এবং উহার সহিত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার;
 
 
(১৫) ‘‘শ্রেণী’’ অর্থ ওয়ার্ল্ড ইন্টলেকচুয়্যাল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (WIPO) কর্তৃক ঘোষিত আন্তর্জাতিক শ্রেণী;
 
 
(১৬) ‘‘সমনামীয় ভৌগোলিক নির্দেশক’’ অর্থ সেই সকল পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক যাহাদের সাদৃশ্যপূর্ণ নাম রহিয়াছে;
 
 
(১৭) ‘‘সরকার’’ অর্থ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তদ্‌সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট

ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট
৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের আওতাধীন একটি ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট থাকিবে, যেখানে এই আইনের অধীন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য সংশ্লিস্ট সকল কার্য সম্পাদিত হইবে।
 
 
(২) ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিটের একটি দাপ্তরিক সীলমোহর থাকিবে, যাহার মার্জিনে ‘‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য’’ শব্দাবলী উৎকীর্ণ থাকিবে এবং উক্ত সীলমোহরের ছাপ বিচারিকভাবে গ্রাহ্য এবং সাক্ষ্য হিসাবে গৃহীত হইবে।
ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট এর জনবল
৫। (১) পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে নিযুক্ত রেজিস্ট্রার পদাধিকারবলে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের রেজিস্ট্রার হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন এবং ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিটের কার্যাবলী তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন।
 
 
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিটের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য হইতে নিয়োগ করিতে পারিবেন এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

তৃতীয় অধ্যায়

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের সুরক্ষা

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের সুরক্ষা
৬। (১) কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য এবং উহার সুনির্দিষ্ট ভূখন্ড, অঞ্চল বা ক্ষেত্রমত, এলাকা সম্পর্কিত কোন ভৌগোলিক নির্দেশক, এই আইনের অধীন নিবন্ধিত হউক বা না হউক, অপর এইরূপ কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের বিপরীতে সুরক্ষা পাইবে, যাহা আক্ষরিক অর্থে পণ্যটি উৎপত্তির ভূখন্ড, অঞ্চল বা এলাকা হিসাবে সঠিক হওয়া সত্ত্বেও, জনসাধারণকে মিথ্যাভাবে এমন ধারণা প্রদান করে যে, পণ্যটি অপর কোন দেশ, ভূখন্ড, অঞ্চল বা এলাকায় উৎপন্ন হইয়াছে।
 
 
(২) রেজিস্ট্রার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে উহার আন্তর্জাতিক শ্রেণী অনুযায়ী শ্রেণীবিন্যাস করিবেন।
 
 
(৩) পণ্যের শ্রেণী অথবা উহার উৎপাদনকারী দেশ, ভূখন্ড, অঞ্চল, এলাকা বা জনপদ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উদ্ভূত হইলে, রেজিস্ট্রার কর্তৃক উহা নিষ্পত্তি হইবে এবং এইক্ষেত্রে তাহার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৪) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের একটি তালিকা সংরক্ষণ করিবে।
সমনামীয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন ও সুরক্ষা
৭। (১) এই আইনের অধীন সমনামীয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন করা যাইবে।
 
 
(২) একই শ্রেণীভুক্ত সমনামীয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে, অনুরূপ প্রত্যেক পণ্য উৎপাদনকারীকে প্রতিটি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের জন্য ন্যায়সংগত মূল্যায়ন ও সুরক্ষা প্রদান করিতে হইবে।
কতিপয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা
৮। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধিত হইবে না, যদি-
 
 
(ক) উহা এই আইনে প্রদত্ত সংজ্ঞার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়; বা
 
 
(খ) উহার ব্যবহার দ্বারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি বা প্রতারণার আশঙ্কা থাকে; বা
 
 
(গ) উহার ব্যবহার বাংলাদেশে প্রচলিত কোন আইনের পরিপন্থী হয়; বা
 
 
(ঘ) উহা জনশৃঙ্খলা বা নৈতিকতার পরিপন্থী হয়; বা
 
 
(ঙ) উহা এমন কোন বিষয় সমন্বয়ে গঠিত হয় বা উহাতে এমন কোন বিষয় থাকে, যাহাতে বাংলাদেশের কোন নাগরিকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগিবার আশঙ্কা থাকে; বা
 
 
(চ) উহা অন্য কোনভাবে আদালতের সুরক্ষালাভের অধিকার খর্ব করে বা করিতে
 
 
পারে; বা
 
 
(ছ) উহা জেনেরিক নাম বা পরিচয় হিসাবে স্থিরীকৃত হয়, অথবা উহা উৎস দেশে সংরক্ষিত না হয়, বা সংরক্ষণের অধিকার হারায়, বা অপ্রচলিত হইয়া পড়ে; বা
 
 
(জ) পণ্যের উৎসস্থল হিসাবে আক্ষরিক অর্থে ভূখণ্ড, অঞ্চল বা এলাকার উল্লেখ সঠিক হইলেও, মিথ্যাভাবে প্রতীয়মান হয় যে, পণ্যটির উৎস স্থল অন্য কোন ভূখণ্ড, অঞ্চল বা এলাকা।

চতুর্থ অধ্যায়

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন

ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের আবেদন
৯। ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য উৎপাদনকারী ব্যক্তিবর্গের বা তাহাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী প্রচলিত আইনের অধীন গঠিত বা নিবন্ধিত কোন সমিতি, সংগঠন, সরকারি সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে নির্ধারিত ফিস প্রদানপূর্বক রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত আবেদন করিতে পারিবে।
অনুমোদিত ব্যবহারকারী হিসাবে নিবন্ধন
১০। ধারা ৯ এর বিধান সাপেক্ষে, কোন ব্যক্তি অথবা ব্যক্তি শ্রেণী যিনি বা যাহারা এই আইনের অধীন নিবন্ধিত কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের উৎপাদনকারী, আহরণকারী, প্রস্ত্ততকারী বা প্রক্রিয়াজাতকারী হিসাবে দাবি করেন, তিনি বা তাহারা অনুরূপ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী হিসাবে নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে পারিবেন।
আবেদন প্রত্যাখ্যান
১১। যদি রেজিস্ট্রারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, কোন নিবন্ধনের আবেদন ভুলক্রমে কিংবা ভিন্ন নামে ও শিরোনামে গ্রহণ করা হইয়াছে, অথবা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন করা সমীচীন হইবে না, তাহা হইলে তিনি আবেদনকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন।
আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রচার
১২।ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের আবেদন পরীক্ষার পর রেজিস্ট্রার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনটি সকল শর্ত পূরণ করিয়াছে, তাহা হইলে তিনি নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদনটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করিবেন।
নিবন্ধনের বিরোধীতা
১৩। (১) সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ, ধারা ১২ এর অধীন নিবন্ধনের জন্য আবেদন সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ হইতে দুই মাসের মধ্যে, রেজিস্ট্রার বরাবর ভৌগোলিক নিদের্শক পণ্য নিবন্ধনের বিরোধীতা করিয়া নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময় সীমা অতিক্রান্ত হইবার পর সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে, রেজিস্ট্রার বরাবর বিরোধীতার বিষয়ে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন নিবন্ধনের বিরোধীতা করিয়া প্রদত্ত নোটিশে উক্তরূপ বিরোধীতার কারণ হিসাবে ইহা উল্লেখ করিতে হইবে যে, আবেদনকারী কর্তৃক নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে উপস্থাপিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য -
 
 
(ক) এই আইনের অধীন ‘‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য’’ অভিব্যক্তির সংজ্ঞায়িত অর্থের আওতায় পড়ে না;
 
 
(খ) জনশৃঙ্খলা বা নৈতিকতার পরিপন্থী;
 
 
(গ) জনসাধারণের বিশ্বাস বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগিবার আশঙ্কা রহিয়াছে;
 
 
(ঘ) উৎস দেশে সংরক্ষিত নয় বা সংরক্ষণের অধিকার হারাইয়াছে; বা
 
 
(ঙ) উৎস দেশে অপ্রচলিত হইয়া পড়িয়াছে।
আবেদনকারী কর্তৃক পাল্টা-বিবৃতি ও জবাব
১৪। (১) রেজিস্ট্রার, বিরোধীতার নোটিশের একটি কপি আবেদনকারীর উপর জারি করিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নোটিশ প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে আবেদনকারী রেজিস্ট্রার বরাবর উহার জবাব বা নিবন্ধনের জন্য তাহার আবেদনের সমর্থনে যুক্তি উপস্থাপনপূর্বক নির্ধারিত পদ্ধতিতে একটি পাল্টা-বিবৃতি প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৩) আবেদনকারী পাল্টা বিবৃতি প্রেরণ করিলে, রেজিস্ট্রার উহার একটি কপি বিরোধীতার নোটিশ প্রদানকারী ব্যক্তির উপর জারী করিবেন।
 
 
(৪) বিরোধিতাকারী বা আবেদনকারী কোন সাক্ষ্য প্রমাণের উপর নির্ভর করিলে, রেজিস্ট্রার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও সময়ের মধ্যে উহা তাহার নিকট দাখিল করিবেন, এবং পক্ষগণ ইচ্ছা প্রকাশ করিলে, রেজিস্ট্রার তাহাদেরকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিবেন।
 
 
(৫) রেজিস্ট্রার পক্ষগণকে শুনানীর পর সাক্ষ্য প্রমাণ সাপেক্ষে ও মামলার যথার্থতা (Merit) বিবেচনাক্রমে নিবন্ধনের আবেদন মঞ্জুর বা নাকচ করিবেন।
 
 
(৬) আবেদনকারী উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত সময় সীমার মধ্যে বা রেজিস্ট্রার কর্তৃক বর্ধিত অতিরিক্ত অনধিক এক মাস সময়ের মধ্যে বিরোধীতার জবাব প্রদানে ব্যর্থ হইলে, তিনি নিবন্ধনের আবেদন পরিত্যাগ করিয়াছেন মর্মে গণ্য হইবে।
ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন
১৫। (১) যেইক্ষেত্রে ধারা ১৩ এর অধীন কোন আপত্তি না থাকে, অথবা রেজিস্ট্রার এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের জন্য আবেদনে প্রয়োজনীয় সকল শর্ত পূরণ করা হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার আবেদনে উল্লিখিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন করিবেন।
 
 
(২) ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে উহার নিবন্ধন কার্যকর হইবে।
 
 
(৩) রেজিস্ট্রার যথাযথ সীলমোহর প্রদানপূর্বক নির্ধারিত ফরমে আবেদনকারীকে নিবন্ধনের একটি সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
নিবন্ধনের মেয়াদ, নবায়ন, ইত্যাদি
১৬। (১) এই আইনের অধিন বাতিল বা অন্যভাবে অবৈধ না হওয়া পর্যন্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন বৈধ থাকিবে।
 
 
(২) নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী নিবন্ধনের মেয়াদ হইবে
 
 
৫ (পাঁচ) বৎসর।
 
 
(৩) রেজিস্ট্রার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত অনুমোদিত ব্যবহারকারী কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত ফি প্রদান করিলে, মূল নিবন্ধনের মেয়াদ সমাপ্ত হইবার তারিখ হইতে অথবা নিবন্ধনের শেষ নবায়নের মেয়াদের তারিখ হইতে পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসরের জন্য নিবন্ধন নবায়ন করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) অনুমোদিত ব্যবহারকারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন নবায়ন করিতে ব্যর্থ হইলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত জরিমানা প্রদান সাপেক্ষে, নিবন্ধন নবায়ন করা যাইবে।
ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনবহি
১৭। রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ‘‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনবহি’’ নামে একটি নিবন্ধনবহি থাকিবে, যাহাতে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন সংক্রান্ত সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং এইরূপ তথ্য দাপ্তরিক তথ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে।
নিবন্ধনসূত্রে প্রাপ্ত অধিকার
১৮। (১) এই আইনের অন্যান্য নিধানাবলী সাপেক্ষে, কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধিত হইলে, উহার অনুমোদিত ব্যবহারকারী নিম্নবর্ণিত অধিকার লাভ করিবে, যথা :-
 
 
(ক) এই আইনে বর্ণিত পদ্ধতিতে ভৌগোলিক নির্দেশক লঙ্ঘনের জন্য প্রতিকার পাইবার অধিকার; এবং
 
 
(খ) যে পণ্য সম্পর্কে ভৌগোলিক নির্দেশক নিবন্ধিত হইয়াছে, সেই পণ্য সম্পর্কে উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করিবার অধিকার।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন প্রদত্ত ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহারের অধিকার নির্ধারিত শর্ত ও বাধ্যবাধকতা সাপেক্ষে, হইবে।
স্বত্বনিয়োগ, হস্তান্তর, ইত্যাদি নিষিদ্ধ
১৯। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য সম্পর্কিত কোন অধিকার স্বত্বনিয়োগ, হস্তান্তর, লাইসেন্সিং, জামানত বা বন্ধক প্রদান করা যাইবে না, বা অনুরূপ কোন বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হওয়া যাইবে না।
 
 
(২) কোন নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী মৃত্যুবরণ করিলে, উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অধিকার তাহার বৈধ উত্তরাধিকারীর উপর বর্তাইবে।
 
 
(৩) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন, বিলুপ্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদিত ব্যবহারকারীর নিবন্ধন বাতিল হইবে।
কনভেনশনভুক্ত রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান
২০। প্যারিস কনভেনশন বা ওয়ার্ল্ড ইন্টলেকচুয়্যাল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (WIPO) এর সদস্যভুক্ত কোন রাষ্ট্র ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধন এবং সংরক্ষণে উহার নাগরিকদের জন্য যেই রকম সুবিধা প্রদান করে, সেই রকম সুবিধা বাংলাদেশের কোন নাগরিককে প্রদান করিলে, উক্তরূপ রাষ্ট্রের সহিত সম্পাদিত চুক্তি, কনভেনশন বা সমঝোতা বাস্তবায়নের লেক্ষ্য সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্তরূপ রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রসমূহকে কনভেনশন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

পঞ্চম অধ্যায়

ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

ট্রেডমার্ককে পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক হিসাবে নিবন্ধনে বিধি-নিষেধ
২১। (১) ট্রেডমার্ক আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ১৯ নং আইন) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রেজিস্ট্রার, স্বতঃপ্রণোদিত হইয়া অথবা সংক্ষুব্ধ বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোন পক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে, কোন ট্রেডমার্কের নিবন্ধন প্রত্যাখ্যান বা বাতিল করিতে পারিবেন, যদি-
 
 
(ক) ট্রেডমার্কটি এইরূপ কোন পণ্য বা সেবার ভৌগোলিক নির্দেশক সংবলিত বা সমন্বয়ে গঠিত হয়, যাহা উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক যেই দেশের ভূখণ্ড বা উক্ত ভূখণ্ডের যেই অঞ্চল বা এলাকার জন্য ব্যবহৃত হয়, সেই দেশ বা উহার সেই ভূখণ্ড, অঞ্চল বা এলাকায় উৎপন্ন না হয়; এবং
 
 
(খ) এইরূপ পণ্য বা সেবার ট্রেডমার্কে ভৌগোলিক নির্দেশক এইরূপভাবে ব্যবহার করা হয়, যাহাতে উক্ত পণ্য বা সেবার প্রকৃত উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে জনগণের বিভ্রান্ত হইবার বা ভুল বুঝিবার অবকাশ থাকে।
 
 
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পণ্যের নাম উল্লেখপূর্বক কতিপয় পণ্যকে অধিকতর সুরক্ষা প্রদান করিতে পারিবে।
কতিপয় ট্রেডমার্ক সংরক্ষণ
২২। (১) যেইক্ষেত্রে-
 
 
(ক) এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে; বা
 
 
(খ) এই আইনের অধীন কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের আবেদন দাখিলের পূর্বে;
 
 
উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক সম্বলিত বা উহার সমন্বয়ে গঠিত কোন ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়, অথবা ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে নিবন্ধিত হয়, অথবা যেইক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসে ব্যবহারের মাধ্যমে অনুরূপ ট্রেডমার্কের উপর অধিকার অর্জিত হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত ট্রেডমার্ক ও উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক অভিন্ন বা একই রকম এই অজুহাতে ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ কোন আইনের অধীন উক্ত ট্রেডমার্কের নিবন্ধনযোগ্যতা বা বৈধতা অথবা উহা ব্যবহারের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করিবে না।
 
 
(২) এই আইনের কোন কিছুই কোন ব্যক্তিকে কোন পণ্যের ব্যবসা পরিচালনাকালে সেই ব্যক্তির নাম অথবা তাহার ব্যবসায়িক পূর্বসূরীর নাম ব্যবহারের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করিবে না,
 
 
যদি না উক্ত নাম এইরূপভাবে ব্যবহৃত হয় যাহাতে জনগণের বিভ্রান্ত হইবার বা ভুল বুঝিবার অবকাশ থাকে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

নিবন্ধন বাতিল

নিবন্ধন বাতিল বা সংশোধন
২৩। (১) স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোন কারণে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন বাতিল বা সংশোধনের জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে পারিবেন, যথা :-
 
 
(ক) এই আইনের অধীন পণ্যটির ভৌগোলিক নির্দেশক সংরক্ষণের জন্য যোগ্য নহে;
 
 
(খ) নিবন্ধনে উল্লিখিত ভৌগোলিক এলাকার সহিত সংশিস্নষ্ট ভৌগোলিক নির্দেশকের মিল নাই; অথবা
 
 
(গ) পণ্যটির সহিত যে ভৌগোলিক নির্দেশক প্রযুক্ত হইবে অথবা ভৌগোলিক নির্দেশকটি পণ্যের যে গুণাগুণ, সুনাম বা বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে তাহা প্রকৃতপক্ষে অনুপস্থিত বা সন্তোষজনক নহে।
 
 
(২) উপ-ধরা (১) এর অধীন কোন আবেদন করা হইলে রেজিস্ট্রার উক্ত আবেদনের সহিত স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে নোটিশ প্রদান করিবেন।
 
 
(৩) রেজিস্ট্রার স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া নিবন্ধন সংশোধন বা বাতিল করিতে পারিবেন।
 
নিবন্ধনবহি সংশোধন
২৪। অনুমোদিত ব্যবহারকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনবহি সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করিতে পারিবেন।

সপ্তম অধ্যায়

রেজিস্ট্রারের ক্ষমতা

রেজিস্ট্রারের ক্ষমতা
২৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রেজিস্ট্রারের নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা থাকিবে, যথা :-
 
 
(ক) কোন আবেদন গ্রহণ, বাতিল বা পরিমার্জন এবং যুক্তিসংগত কারণে নিজ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা;
 
 
(খ) সাক্ষী হাজিরার নোটিশ প্রদান, শপথ পরিচালনা, সাক্ষী পরীক্ষা ও সাক্ষীকে পরীক্ষার জন্য কমিশন ইস্যু;
 
 
(গ) পক্ষগণকে কোন দলিল উদ্ধার এবং উপস্থাপনের নির্দেশ প্রদান;
 
 
(ঘ) কোন পক্ষকে অনধিক ৫০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা খরচ পরিশোধের আদেশ প্রদান;
 
 
(ঙ) কোন সরকারি পাওনা আদায়ের জন্য Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর অধীন একজন সার্টিফিকেট অফিসারের ক্ষমতা প্রয়োগ; এবং
 
 
(চ) উভয়পক্ষকে যথাযথ শুনানীর সুযোগ প্রদান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ।
 
 
(২) এই আইনের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে, রেজিস্ট্রার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনাল হিসাবে গণ্য হইবেন।
রেজিস্ট্রারের নিকট সাক্ষ্য
২৬। এই আইনের অধীন কোন কার্যধারায়, রেজিস্ট্রারের নিকট হলফনামাসহ সাক্ষ্য প্রদান করিতে হইবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, রেজিস্ট্রার, উপযুক্ত মনে করিলে, হলফনামাসহ সাক্ষ্য গ্রহণের অতিরিক্ত বা পরিবর্তে, মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন।
 

অষ্টম অধ্যায়

আপীল

আপীল
২৭। (১) এই আইনের অধীন রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ বা সিদ্ধামত্ম দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি অনুরূপ আদেশ বা সিদ্ধান্ত অবহিত হইবার তারিখ হইতে দুই মাসের মধ্যে সরকারের নিকট উহার বিরম্নদ্ধে আপীল দায়ের করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ বা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(২) নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে, নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক সরকারের নিকট আপীল দায়ের করিতে হইবে এবং যে আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করা হইবে, আপীল আবেদনের সহিত উহার একটি কপি সংযুক্ত করিতে হইবে।
 

নবম অধ্যায়

অপরাধ ও বিচার

নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক লঙ্ঘন
২৮। (১) কোন নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক লঙ্ঘিত হইবে, যদি অনুমোদিত ব্যবহারকারী না হওয়া সত্ত্বেও, কোন ব্যক্তি-
 
 
(ক) কোন পণ্যের নামে বা উপস্থাপনে উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক এইরূপভাবে ব্যবহার করেন, যাহাতে এমন ইঙ্গিত বা ধারণা প্রকাশ পায় যে, পণ্যটি উহার প্রকৃত উৎপত্তি স্থল হইতে ভিন্ন ভৌগোলিক এলাকায় উৎপন্ন হইয়াছে এবং উহার ফলে জনসাধারণ পণ্যটির ভৌগোলিক উৎসস্থল সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়; বা
 
 
(খ) কোন ভৌগোলিক নির্দেশক এইরূপভাবে ব্যবহার করেন যে, উহা অন্যায় প্রতিযোগীতার (unfair competition) সৃষ্টি করে এবং কোন নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক হিসাবে চালানো হয় (passing off); বা
 
 
(গ) পণ্যটিতে এইরূপ কোন ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করেন, যাহা আক্ষরিক অর্থে পণ্যটির উৎপত্তির ভূখণ্ড, অঞ্চল বা এলাকা হিসাবে সঠিক, তবে জনসাধারণকে মিথ্যাভাবে এইরূপ ধারণা প্রদান করে যে, পণ্যটির উৎপত্তি সেই ভূখণ্ড, অঞ্চল, বা এলাকায়, যাহার সহিত নিবন্ধিত কোন ভৌগোলিক নির্দেশকটি সংশ্লিষ্ট; বা
 
 
(ঘ) কোন পণ্যের উৎপত্তি ভৌগোলিক নির্দেশক দ্বারা নির্দেশিত স্থানে না হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত পণ্যে উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করেন, অথবা সঠিক উৎপত্তিস্থল উল্লেখ করিয়া পণ্যটিতে অন্য ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করেন, অথবা প্রকৃত উৎপত্তিস্থলের নামের অনুবাদ করিয়া অপর ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করেন, অথবা ভৌগোলিক নির্দেশকের সহিত ‘‘মত’’, ‘‘ধরনের’’, ‘‘অনুকরণে’’ বা অনুরূপ ভাবপ্রকাশক শব্দ ব্যবহার করেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘অন্যায় প্রতিযোগীতা (unfair competition)’ বলিতে এমন প্রতিযোগীতামূলক কার্যকে বুঝাইবে যাহা শিল্প বা বাণিজ্য ক্ষেত্রে সৎ আচরণের পরিপন্থী, এবং নিম্নবর্ণিত কার্য অন্যায় প্রতিযোগীতামূলক কার্য বলিয়া গণ্য হইবে, যথা :-
 
 
(ক) এমন কোন প্রকৃতির কার্য যাহা কোন প্রতিযোগীর কোন প্রতিষ্ঠান, পণ্য, শিল্প বা বাণিজ্যিক কার্যাবলী সম্পর্কে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করিতে পারে;
 
 
(খ) ব্যবসা পরিচালনাকালে এমন ধরনের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা, যাহা কোন প্রতিযোগীর কোন প্রতিষ্ঠান, পণ্য, শিল্প বা বাণিজ্যিক কার্যাবলীর সুনাম ক্ষুণ্ণ করিতে পারে; এবং
 
 
(গ) ব্যবসা পরিচালনাকালে কোন ভৌগোলিক নির্দেশকের ব্যবহার, যাহা কোন পণ্যের পরিমাণ, প্রকৃতি, প্রস্ত্তত প্রক্রিয়া, বৈশিষ্ট, সাযুজ্যতা ইত্যাদি বিষয়ে সর্বসাধারণকে বিভ্রান্ত করিতে পারে।
 
 
(৩) এই ধরায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধিত হইলে, তাহা যদি উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারী ব্যতীত, অপর কোন ব্যক্তি কর্তৃক আইনগতভাবে অর্জিত হয়, তাহা হইলে এইরূপ ব্যবহারকারী কর্তৃক উক্ত পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ বা প্যাকেটজাতকরণসহ পরবর্তী ব্যবসায়িক লেনদেন, বাজারজাতকরণের পর পণ্যের মান ক্ষতিগ্রস্ত হইবার ক্ষেত্র ব্যতীত, উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক এর লঙ্ঘন বলিয়া গণ্য হইবে না।
 
 
(৪) কোন আগ্রহী ব্যক্তি অথবা আগ্রহী উৎপাদক বা ভোক্তা গ্রুপ কোন ভৌগোলিক নির্দেশক লঙ্ঘন প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত জেলা আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন, যদি পণ্যের নামকরণ বা উপস্থাপনায় এইরূপ পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়, যাহাতে এইরূপ ইঙ্গিত বা ধারণা প্রকাশ পায় যে, বিবেচ্য পণ্যটি উহার প্রকৃত উৎপত্তিস্থল হইতে ভিন্ন কোন ভৌগোলিক এলাকায় উৎপন্ন হইয়াছে এবং উহা এমনভাবে করা হইয়াছে যে, পণ্যটির ভৌগোলিক উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে জনসাধারণ বিভ্রান্ত হইতে পারে।
 
 
(৫) এই ধারার অধীন মামলায় আদালত নিষেধাজ্ঞা জারীসহ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং উপযুক্ত মনে করিলে, অপর যে কোন দেওয়ানী প্রতিকার প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৬) কোন ব্যক্তি অনিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক লঙ্ঘন প্রতিরোধের জন্য অথবা উহা লঙ্ঘনজনিত ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য কোন মামলা দায়ের করিতে পারিবেন না।
 
 
(৭) এই আইনের কোন কিছুই, কোন পণ্যকে অন্যের পণ্য হিসাবে চালাইবার (passing off) কারণে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার অথবা উহার প্রতিকার লাভের অধিকার ক্ষুণ্ণ করিবে না।
ভৌগোলিক নির্দেশক মিথ্যা প্রতিপন্ন বা মিথ্যাভাবে ব্যবহার ও দণ্ড
২৯। (১) কোন ব্যক্তি ভৌগোলিক নির্দেশক মিথ্যা প্রতিপন্ন বা মিথ্যাভাবে ব্যবহার করিলে, তাহার উক্তরূপ কার্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাহার বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ (দুই) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(২) কোন ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক ভৌগোলিক নির্দেশক মিথ্যা প্রতিপন্ন বা মিথ্যাভাবে ব্যবহার করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যদি উক্ত ব্যক্তি বা সংস্থা
 
 
(ক) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে, কোন পণ্যকে নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বলিয়া দাবী করে; বা
 
 
(খ) প্রতারণামূলকভাবে নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের সাদৃশ্য পণ্য তৈরী করে; বা
 
 
(গ) কোন পণ্যের নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক সম্পর্কে এমন ঘোষণা প্রদান করে যে, উহা নিবন্ধিত নহে; বা
 
 
(ঘ) এইরূপ প্রচার করে যে, কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের নিবন্ধন উহা ব্যবহারের নিরঙ্কুশ অধিকার প্রদান করিয়াছে, অথচ বস্ত্ততপক্ষে উক্ত নিবন্ধন এইরূপ কোন অধিকার প্রদান করে নাই।
 
 
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশে কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের ক্ষেত্রে ‘‘নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক’’ শব্দগুলি অথবা, ব্যক্ত বা অব্যক্তভাবে, নিবন্ধন সম্পর্কিত অনুরূপ অন্য কোন অভিব্যক্তি, প্রতীক বা চিহ্নের ব্যবহার করা হইলে, উহা নিবন্ধন বহিতে বর্ণিত নিবন্ধনের উল্লেখ বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না -
 
 
(ক) উক্ত শব্দ বা অন্য কোন অভিব্যক্তি, প্রতীক বা চিহ্ন অক্ষর হিসাবে চিত্রিত অপর শব্দাবলীর প্রত্যক্ষ সংযোগে ব্যবহৃত হয়, অন্তত ততটুকু বড় আকারে, যে আকারে উক্ত শব্দ, অভিব্যক্তি, প্রতীক বা চিহ্ন চিত্রিত হইয়াছে, এবং বাংলাদেশের বাহিরের কোন দেশের কোন ভৌগোলিক নির্দেশক হিসাবে নিবন্ধনের উল্লেখ, উক্ত দেশের প্রচলিত আইনে উক্ত নিবন্ধন কার্যকর রহিয়াছে মর্মে ধারণা প্রদান করে; অথবা
 
 
 
 
(খ) উক্ত অভিব্যক্তি, প্রতীক বা চিহ্ন উহাকে সহজাতভাবেই দফা (ক) এ বর্ণিত নিবন্ধনের রেফারেন্স হিসাবে প্রকাশ করে; অথবা
 
 
(গ) শব্দটি অন্য কোন দেশের আইনের অধীন নিবন্ধিত কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যে ব্যবহৃত হয় এবং উহা কেবল উক্ত দেশে ব্যবহারের জন্য রপ্তানি হইবে, এইরূপ কোন পণ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
 
প্রতারণামূলকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার ও দণ্ড
৩০। (১) কোন ব্যক্তি প্রতারণামূলকভাবে কোন পণ্যে বা পণ্যের মোড়কে সাদৃশ্যপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করিলে, তাহার উক্তরূপ কার্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাহার বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ (দুই) লক্ষ, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
 
(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত কার্যাবলী প্রতারণামূলকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার বলিয়া গণ্য হইবে, যথা :-
 
 
(ক) কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারীর প্রকৃত পণ্য ব্যতীত অন্য কোন পণ্য মোড়কবদ্ধ করিবার বা উহাতে ভরিবার বা উহা দ্বারা জড়াইবার উদ্দেশ্যে উক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুরূপ বা প্রতারণামূলকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক সম্বলিত কোন মোড়ক ব্যবহার করা; বা
 
 
(খ) বিকৃত বা পরিবর্তন অথবা মুছিয়া ফেলিবার মাধ্যমে কোন প্রকৃত ভৌগোলিক নির্দেশক মিথ্যা প্রতিপন্ন করা; বা
 
 
(গ) কোন পণ্য যে দেশে বা স্থানে তৈরি বা উৎপন্ন হইয়াছে, তাহার প্রকৃত পরিচয় অথবা প্রস্ত্ততকারীর বা যাহার জন্য পণ্যগুলি তৈরি হইয়াছে তাহার প্রকৃত নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করা আবশ্যক জানিয়াও কোন পণ্যে অনুরূপ দেশের, প্রস্ত্ততকারীর বা স্থানের মিথ্যা পরিচয়, নাম অথবা ঠিকানা ব্যবহার করা।
 
মিথ্যা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য উৎপাদন, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ও বিক্রয়ের দণ্ড
৩১। যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান-
 
 
(ক) মিথ্যাভাবে কোন পণ্যে ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করে, অথবা উক্ত পণ্য উৎপাদন, পরিবহন, গুদামজাত বা বাজারে বিক্রয় করে; বা
 
 
(খ) কোন ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য মিথ্যা প্রতিপন্ন করিবার উদ্দেশ্যে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করিবার কার্যে ব্যবহারের জন্য কোন ডাইস, ব্লক, মেশিন, প্লেট বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি তৈরি বা বিক্রয় করে বা দখলে রাখে; বা
 
 
(গ) ভৌগোলিক নির্দেশকযুক্ত পণ্য বা পণ্যটির প্রস্ত্তত বা উৎপাদনকারী দেশ বা স্থানের নির্দেশক, প্রস্ত্ততকারী বা যাহার জন্য পণ্যটি প্রস্ত্তত করা হইয়াছে তাহার নাম এবং ঠিকানা অথবা কোন নির্দেশক ব্যতীত কোন পণ্য বা সামগ্রী বিক্রয় করেন অথবা বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন করেন অথবা ভাড়া করেন বা বিক্রয়ের জন্য দখলে রাখেন;
 
 
তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উক্তরূপ কার্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, উক্ত ব্যক্তি বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ (দুই) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
নবায়ন না করিয়া বাজারজাতকরণের দণ্ড
৩২। নিবন্ধনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পরও কোন অনুমোদিত ব্যবহারকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যদি নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যটির নবায়ন না করিয়া উক্ত পণ্যের উৎপাদন, গুদামজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, পরিবহন অথবা বিক্রয় করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উক্তরূপ কার্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা রুজু করা যাইবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, উক্ত ব্যক্তি বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ২ (দুই) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
নিবন্ধনের শর্তাবলী ভঙ্গ করিবার দণ্ড
৩৩। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যদি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য নিবন্ধনের কোন শর্ত ভঙ্গ করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা রম্নজু করা যাইবে এবং আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইলে, উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল হইবে এবং এইরূপ অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
নিবন্ধনবহির এন্ট্রি জালকরণের দণ্ড
৩৪। যদি কোন ব্যক্তি নিবন্ধন বহিতে কোন মিথ্যা এন্ট্রি করেন বা করান অথবা মিথ্যাভাবে এমন কোন লিখিত কাগজ তৈরি করেন বা করান, যাহা নিবন্ধনবহির কোন এন্ট্রির অনুলিপি বলিয়া মনে হয়, অথবা অনুরূপ এন্ট্রি বা লিখিত কাগজ মিথ্যা বলিয়া জানা সত্ত্বেও সাক্ষ্য গ্রহণকালে উহা পেশ বা দাখিল করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব দুই (২) বৎসর, তবে অন্যূন ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
দ্বিতীয় বা পরবর্তী অপরাধের ক্ষেত্রে দণ্ড
৩৫। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন একই অপরাধ দ্বিতীয় বা পরবর্তীতে সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বৎসর, তবে সর্বনিম্ন ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৪ (চার) লক্ষ টাকা, তবে সর্বনিম্ন ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
পণ্য বাজেয়াপ্তকরণ
৩৬। (১) এই আইনের অধীন জব্দকৃত মালামাল দখলে রাখিবার বা ব্যবহার করিবার বৈধ্যতা প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হইলে, সংশ্লিষ্ট আদালত উক্ত মালামাল সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবে।
 
 
(২) যেইক্ষেত্রে কোন সাজা প্রদানের আদেশের সহিত বাজেয়াপ্তকরণের আদেশ প্রদান করা হয় এবং উক্ত সাজা প্রদানের আদেশটি আপীলযোগ্য হয়, সেইক্ষেত্রে বাজেয়াপ্তকরণের আদেশও আপীলযোগ্য হইবে।
 
 
(৩) কোন পণ্যসামগ্রী বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করা হইলে এবং বাজেয়াপ্তকরণ আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপীলযোগ্য মামলায় উক্ত বাজেয়াপ্তকরণ আদেশ প্রদানকারী আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে যে আদালতে আপীল দায়ের করা যাইবে, সেই আদালতে বাজেয়াপ্তকরণ আদেশের বিরুদ্ধেও আপীল করা যাইবে।
 
 
(৪) সাজা প্রদানের আদেশের সহিত বাজেয়াপ্তকরণ আদেশ প্রদান করা হইলে, সাজা প্রদানকারী আদালত, উহার স্বীয় বিবেচনায়, বাজেয়াপ্তকৃত কোন দ্রব্য বিনষ্ট করিবার বা অন্যভাবে নিষ্পত্তি করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩৭। এই আইনের অধীন কোন অপরাধ কোন কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংঘটিত হইয়া থাকিলে, উক্তরূপ অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ প্রত্যেক মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
ব্যাখ্যা। - এই ধারায়-
 
 
(ক) ‘কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান’ বলিতে কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
 
 
(খ) ‘পরিচালক’ বলিতে কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক, এর সদস্যকেও বুঝাইবে।
 
অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ
৩৮। (১) কোন আদালত এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না, যদি না-
 
 
(ক) রেজিস্ট্রার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়; অথবা
 
 
(খ) অপরাধ সংঘটনের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত অপরাধের প্রতিকার প্রত্যাশী বা সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি উক্ত অপরাধের বিষয়ে রেজিস্ট্রার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে নোটিশ প্রদান করিয়া থাকেন।
 
 
(২) এই আইনের অধীন বিচারাধীন কোন মামলা বিচারের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ (১৮৯৮ সনের ৫নং আইন) প্রযোজ্য হইবে।
 
 
(৩) উপ-পরিদর্শক বা সমপদমর্যাদার নিম্নের কোন পুলিশ কর্মকর্তা এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধ তদন্ত করিতে পারিবেন না।
 
 
(৪) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে এবং সকল অপরাধ জামিনযোগ্য হইবে।
 
বাংলাদেশের বাহিরে সংঘটিত অপরাধে প্ররোচনার দণ্ড
৩৯। যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশে অবস্থান করিয়া বাংলাদেশের বাহিরে সংঘটিত এইরূপ কোন কার্যে এইরূপ প্ররোচনা প্রদান করেন যে, উক্ত কার্য বাংলাদেশে সংঘটিত হইলে, এই আইনের অধীন একটি অপরাধ বলিয়া গণ্য হইত, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের যে স্থানে পাওয়া যাইবে, সেই স্থানে উক্তরূপ প্ররোচনা প্রদানের অভিযোগে বিচার করা যাইবে এবং তিনি স্বয়ং উক্ত অপরাধ সংঘটন করিলে, যেইরূপ দণ্ডপ্রাপ্ত হইতেন, তাহাকে সেইরূপ দণ্ড প্রদান করা যাইবে।

দশম অধ্যায়

বিবিধ

পরিচয়যুক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বিক্রয় পরোক্ষ নিশ্চয়তাযুক্ত বলিয়া গণ্য হইবে
৪০। বিক্রয়যোগ্য পণ্যের উপর অথবা কোন পণ্য বিক্রয়ের চুক্তির ক্ষেত্রে, ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করা হইলে, ব্যবহৃত ভৌগোলিক নির্দেশকটি প্রকৃত ভৌগোলিক নির্দেশক এবং অসত্যরূপে ব্যবহার করা হয় নাই মর্মে বিক্রেতা নিশ্চয়তা প্রদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না বিক্রেতা বা তাহার প্রতিনিধি কর্তৃক লিখিত ও স্বাক্ষরিত আকারে ভিন্নমত প্রকাশ করা হয় এবং তাহা পণ্যটি বিক্রয়কালে বা চুক্তি সম্পাদনকালে প্রদান করা হয় এবং ক্রেতা কর্তৃক গৃহীত হয়।
কতিপয় কার্যধারায় অনুমোদিত ব্যবহারকারীকে পক্ষভুক্ত করা
৪১। (১) এই আইনের অধীন প্রতিটি আইনগত কার্যধারায়, অনুরূপ কার্যধারার সহিত সম্পৃক্ত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের অনুমোদিত ব্যবহারকারীকে পক্ষভুক্ত করিতে হইবে।
 
 
(২) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১) এর অধীন পক্ষভুক্ত কোন অনুমোদিত ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে কোন খরচ প্রদানের আদেশ দেওয়া যাইবে না, যদি না তিনি উক্ত কার্যধারায় হাজিরা দেন এবং অংশগ্রহণ করেন।
 
ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের মূল উৎপাদনস্থল, ইত্যাদি প্রদর্শন
৪২। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে যে, প্রজ্ঞাপনে নির্ধারিত তারিখ হইতে, যাহা তিন মাসের কম হইবে না, প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত পণ্যসমূহে,-
 
 
(ক) যাহা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের বাহিরে প্রস্ত্ততকৃত ও উৎপাদিত এবং বাংলাদেশে আমদানিকৃত, অথবা
 
 
 
 
(খ) যাহা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যেই প্রস্ত্ততকৃত বা উৎপাদিত,
 
 
উহার প্রস্ত্তত বা উৎপাদনকারী দেশ বা স্থানের ভৌগোলিক নির্দেশক ব্যবহার করিতে হইবে এবং প্রস্ত্ততকারী বা যাহার জন্য পণ্যটি প্রস্ত্তত করা হইয়াছে তাহার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করিতে হইবে।
 
ব্যবসায়িক প্রথা, ইত্যাদি বিবেচনা
৪৩। ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য সংশ্লিষ্ট মামলায়, আদালত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য সম্পর্কিত প্রথা এবং অন্যান্য ব্যক্তি কর্তৃক বৈধভাবে ব্যবহৃত কোন প্রাসঙ্গিক ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য সম্পর্কিত প্রথাকে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করিবে।
ফি ও সারচার্জ
৪৪। এই আইনের অধীন আবেদন ও নিবন্ধনসহ অন্যান্য বিষয়ে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ফি ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৪৬। এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 

  • 1
    এ আইনের সকল স্থানে “মহাপরিচালক” শব্দটি “রেজিস্ট্রার" শব্দটির পরিবর্তে বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ২২ নং আইন) এর ৩৭ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs