সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ
১। (১) এই আইন
মেট্রোরেল আইন, ২০১৫ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইন-
(ক) প্রথম পর্যায়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী জেলায় অবিলম্বে কার্যকর হইবে; এবং
(খ) দ্বিতীয় পর্যায়ে দফা (ক) তে উল্লিখিত জেলা ব্যতীত অন্যান্য জেলায় সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে, কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) ‘‘আপীল কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ২৪ এর অধীন গঠিত আপীল কর্তৃপক্ষ;
(২) ‘‘কমিশনার’’ অর্থ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
(৩) ‘কর্তৃপক্ষ’ অর্থ
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৮নং আইন) এর ধারা ৪ এর অধীন গঠিত ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ;
(৪) ‘জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্য’ অর্থ মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করার লক্ষ্যে, কোন কাজ বা ব্যবস্থা গ্রহণক্রমে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্য;
(৫) ‘জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ড’ অর্থ মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করার লক্ষ্যে, জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ড বা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আইন ও বিধি বহির্ভূতভাবে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কর্মকাণ্ড;
(৬) ‘জরুরী সেবা প্রদানকারী সংস্থা’ অর্থ স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, অপটিক্যাল ফাইবার, টেলিফোন লাইন এবং পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ সেবা প্রদানকারী সংস্থা;
(৭) ‘‘ডেপুটি কমিশনার’’ অর্থ Acquisition and Requisition Immovable Property Ordinance, 1982 (Ord. II of 1982) এর section 2(b) তে সংজ্ঞায়িত Deputy Commissioner;
(৮) ‘‘নির্বাহী পরিচালক’’ অর্থ
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৮নং আইন) এর ধারা ১২ এর অধীন নিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক;
(৯) ‘‘পরিদর্শক’’ অর্থ ধারা ২১ এর অধীন নিযুক্ত পরিদর্শক;
(১০) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(১১) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ
Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);
(১২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(১৩) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে যে কোন ব্যক্তি এবং কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী অংশীদারী কারবার ফার্ম বা অন্য যে কোন দেশী বা বিদেশী সংস্থাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৪) ‘‘ভূমি অধিগ্রহণ আইন’’ অর্থ
Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ord. II of 1982);
(১৫) ‘‘মেট্রোরেল’’ অর্থ শহরভিত্তিক রেল ব্যবস্থা যেখানে ভূতল, সমতল বা উহার উপরিভাগে রেল ট্র্যাক সম্বলিত নিরংকুশ পথাধিকার থাকিবে, এবং উক্ত পথাধিকারের ভূতল, সমতল ও উপরিভাগে অবস্থিত সকল স্থাপনা, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও এতদ্সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদিও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৬) ‘‘মেট্রোরেল এলাকা’’ অর্থ মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত ভূমি ও স্থাপনা এবং উভয়ের ভূতলে, সমতলে ও উপরিভাগে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় এলাকা;
(১৭) ‘‘লাইসেন্স’’ অর্থ মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য এই আইনের অধীন ইস্যুকৃত লাইসেন্স;
(১৮) ‘‘লাইসেন্সী’’ অর্থ মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য এই আইনের অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
ভূমি অধিগ্রহণ, ইত্যাদি
ভূমি অধিগ্রহণ
৪। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ বা এতদ্সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যে ভূমি অধিগ্রহণের আবশ্যক হইলে, উহা, জনস্বার্থে, প্রয়োজনীয় বলিয়া গণ্য হইবে, এবং কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি অধিগ্রহণ আইনের বিধান অনুযায়ী উক্ত ভূমি অধিগ্রহণ করা যাইবে।
বিশেষ বিধান
৫। (১) মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ বা এতদ্সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণ হইতে পারে এইরূপ ভূমির উপর জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন ঘর-বাড়ি বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনার জন্য বা একই উদ্দেশ্যে কোন ঘর-বাড়ি বা স্থাপনার বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইলে উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য কোন ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হইবেন না।
(২) ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ধারা ৮ এর অধীন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণকালে ডেপুটি কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ বা এতদ্সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণের সম্ভাবনা ছিল এইরূপ কোন ভূমির উপর নির্মিত বা নির্মাণাধীন কোন ঘর-বাড়ি বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনা জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হইয়াছে বা নির্মাণাধীন আছে বা কোন ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা বা ভূমির শ্রেণী পরিবর্তনকে উক্ত ধারার অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বিবেচনা করিবেন না এবং এইরূপ ক্ষতিপূরণের দাবী, যদি থাকে, প্রত্যাখ্যান করিবেন।
(৩) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এর অধীন ক্ষতিপূরণের দাবী প্রত্যাখ্যানের কারণে সংক্ষুব্দ হইলে, প্রত্যাখ্যান আদেশ জারীর ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের দাবীতে কমিশনারের নিকট উক্ত প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করিতে পারিবেন।
(৪) কমিশনার, উপ-ধারা (৩) এর অধীন আপীল আবেদন প্রাপ্তির ৫(পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে আপীলের বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করিবেন এবং উক্তরূপ তদন্ত সমাপ্তির পর আপীলকারীকে শুনানীর সুযোগ প্রদানপূর্বক অনধিক ৫(পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে আপীলের উপর তাহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত কমিশনারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(৬) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত সিদ্ধান্ত দ্বারা যদি আপীল নামঞ্জুর করা হয়, তাহা হইলে উক্তরূপ সিদ্ধান্ত প্রদানের পর উহা জারীর ২৪ (চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে আপীলকারী সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা নিজ খরচে সরাইয়া নিবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উক্ত ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা সরাইয়া নেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করিবেন এবং উক্তরূপ বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করিবেন।
(৭) উপ-ধারা (২) এর অধীন ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দাবী প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্দ ব্যক্তি যদি উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল দায়ের না করেন, তাহা হইলে উক্ত সময়ের পরবর্তী ২৪(চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা সরাইয়া নিবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উপ-ধারা (৬) এ উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
(৮) এই আইনের অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে অর্থ প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলর এর কার্যালয়ে ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক পূর্বঘোষিত সময়সূচী অনুযায়ী প্রকাশ্যে পরিশোধ করিতে হইবে।
(৯) মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ বা এতদ্সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে কাটিয়া বা অন্য কোন উপায়ে উক্ত ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হইলে, উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য উক্ত ভূমির কোন ক্ষতি হইলে ডেপুটি কমিশনার সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকের নিকট হইতে উক্ত ক্ষতির জন্য যথাযথ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আদায় করিতে পারিবেন।
(১০) ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ধারা ৩ এর অধীন নোটিশ জারীর পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক অধিগ্রহণাধীন ভূমির যে ভিডিও চিত্র গ্রহণ ও সংরক্ষণ করা হইয়াছে, উক্ত ভিডিও চিত্র, এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন গৃহীত সংরক্ষিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে উক্ত ভূমির ক্ষতিপূরণ নির্ধারণপূর্বক উহা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।
(১১) এই অধ্যায়ের অধীন, প্রদত্ত কোন আদেশ বা গৃহীত কোন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন আদালত কোন মামলা বা দরখাস্ত গ্রহণ করিবে না, বা গৃহীত বা গৃহীতব্য কোন কার্যক্রম সম্পর্কে কোন আদালত কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
ধারা ৫ এর বিধানাবলীর প্রাধান্য
৬। ভূমি অধিগ্রহণ আইন, তদ্ধীন প্রণীত বিধি বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা বিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনভাবে ভূমি ব্যবহারের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ধারা ৫ এর বিশেষ বিধান কার্যকর থাকিবে।
তৃতীয় অধ্যায়
লাইসেন্স, ইত্যাদি
মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা
৭। কোন ব্যক্তি লাইসেন্স ব্যতীত মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন বা পরিচালনা করিবেন না বা মেট্রোরেল সেবা প্রদান করিবেন না বা তদুদ্দেশ্যে কোন যন্ত্রপাতি স্থাপন ও পরিচালনা করিবেন না।
লাইসেন্সের জন্য আবেদন, লাইসেন্স নবায়ন, ইত্যাদি
৮। এই আইনের অধীন লাইসেন্সের জন্য আবেদন, লাইসেন্স নবায়ন, লাইসেন্স সংরক্ষণ ও প্রদর্শন, লাইসেন্স স্থগিতকরণ ও বাতিলসহ এতদ্সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
লাইসেন্স ইস্যুকরণ, ইত্যাদি
৯। ধারা ১১ এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি, মেয়াদ ও শর্তে এবং ফিস প্রদান সাপেক্ষে সরকার লাইসেন্স ইস্যু করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কর্তৃক বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় বা নিয়ন্ত্রণাধীন পরিচালিত মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা বা উহার কোন স্থাপনা নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য লাইসেন্সের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফিস এর প্রয়োজন হইবে না।
লাইসেন্স হস্তান্তর
১০। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, কোন লাইসেন্স সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, হস্তান্তরযোগ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন উক্তরূপ হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রাপ্ত লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে লাইসেন্সীর দায়-দায়িত্ব, লাইসেন্সের মেয়াদ, শর্ত ও পদ্ধতি এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
বাছাই কমিটি
১১। (১) এই আইনের অধীন লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার, নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কর্মকর্তাগণের মধ্য হইতে অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে, একটি বাছাই কমিটি গঠন করিবে।
(২) বাছাই কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশ বিবেচনাক্রমে সরকার লাইসেন্স ইস্যুকরণসহ লাইসেন্স নবায়ন, স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ
১২। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা যাইবে।
চতুর্থ অধ্যায়
প্রবেশাধিকার, ইত্যাদি
প্রবেশাধিকার
১৩। মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য কোন কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য লাইসেন্সী বা তাহার লিখিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা তাহার প্রতিনিধি বা কর্মচারী যে কোন সময় বিধি দ্বারা নির্ধারিত বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে, মেট্রোরেল এলাকার পার্শ্ববর্তী ভূমি ও স্থাপনার ভূতল, সমতল ও উপরিভাগে এবং স্থাপনায় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামসহ প্রবেশ করিতে পারিবেন।
পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে নাগরিক সুবিধাদি বন্ধকরণ, ইত্যাদিতে বিধি -নিষেধ
১৪। লাইসেন্সী মেট্রোরেল এলাকার যে কোন স্থানে মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা বা উহার কোন স্থাপনা নির্মাণসহ অন্য কোন কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্যে জরুরী সেবা প্রদানকারী সংস্থার পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে নাগরিক সুবিধাদি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ, অপসারণ বা স্থানান্তর করিতে পারিবেন না।
কারিগরি মান অনুসরণ, ইত্যাদি
১৫।(১) লাইসেন্সীকে মেট্রোরেলের অবকাঠামোগত সুবিধাদি ও রোলিং স্টক স্থাপন, পরিচালনা, উহার রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাসহ সকল কারিগরি বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(২) মেট্রোরেল নির্মাণ ও রোলিং স্টক স্থাপন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং সুবিধাদি, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময় সময় জারিকৃত কারিগরি মান সম্পর্কিত নির্দেশনা অনুযায়ী হইতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত মানের ক্ষেত্রে কোনরূপ পরিবর্তনের প্রয়োজন হইলে তদ্বিষয়ে লাইসেন্সী কর্তৃক কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।
কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল
১৬। (১) মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে লাইসেন্সী বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়ে কর্তৃপক্ষের নিকট এতদসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ সময় সময় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে কোন নির্দেশনা জারিকৃত হইলে লাইসেন্সী উহা পরিপালন করিতে বাধ্য থাকিবে।
ষষ্ঠ অধ্যায়
ভাড়া, ইত্যাদি
ভাড়া নির্ধারণ
১৭। কর্তৃপক্ষ সময় সময় সরকারের নির্দেশনা গ্রহণক্রমে, মেট্রোরেল সেবা বাবদ যাত্রী কর্তৃক প্রদেয় ভাড়ার হার নির্ধারণ করিবে।
ভাড়া নির্ধারণ কমিটি
১৮। (১) সরকার ধারা ১৭ এর অধীন মেট্রোরেল সেবা বাবদ যাত্রী কর্তৃক প্রদেয় ভাড়ার হার নির্ধারণের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ কমিটি নামে ৭ (সাত) সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করিবে।
(২) মেট্রোরেল পরিচালনার ব্যয় এবং জনসাধারণের আর্থিক সামর্থ বিবেচনাপূর্বক ভাড়া নির্ধারণ কমিটি কর্তৃপক্ষের নিকট সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়ার হার সুপারিশ করিবে।
(৩) ভাড়া নির্ধারণ কমিটির সদস্যগণের যোগ্যতা ও ভাড়া নির্ধারণ পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ভাড়া সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ
১৯। (১) যাত্রী পরিবহন ভাড়া সংক্রান্ত তথ্য কর্তৃপক্ষ উহার ওয়েব সাইটে এবং বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(২) লাইসেন্সী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত, যাত্রী পরিবহন ভাড়ার তালিকা মেট্রোরেল স্টেশন এবং মেট্রোরেল কোচের অভ্যন্তরে সহজে দৃশ্যমান হয় এইরূপ স্থানে প্রদর্শন ও সংরক্ষণে ব্যবস্থা করিবেন।
(৩) লাইসেন্সী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া কোন যাত্রীর নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবেন না।
আসন সংরক্ষণ
২০। মেট্রোরেলের প্রতিটি কোচে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক আসন সংরক্ষিত থাকিবে।
সপ্তম অধ্যায়
পরিদর্শক ও আপীল কর্তৃপক্ষ, ইত্যাদি
পরিদর্শক নিয়োগ
২১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা উহার যে কোন কর্মকর্তাকে পরিদর্শক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করিতে পারিবে।
পরিদর্শকের ক্ষমতা
২২। (১) এই আইনের বিধানাবলী বাস্তবায়নের প্রয়োজনে, পরিদর্শক মেট্রোরেলের লাইসেন্সের মেয়াদ, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের গুণগতমান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও যাত্রী সেবার মান পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মেট্রোরেল এলাকার যে কোন স্থানে প্রবেশ করিতে পারিবেন।
(২) পরিদর্শনকালে একজন পরিদর্শক লাইসেন্সীর কোন রেজিস্টার, নথিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, রিপোর্ট-রিটার্ন ও অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনা করিয়া ছায়ালিপি সংগ্রহ এবং প্রয়োজনে লাইসেন্সীকে জিজ্ঞাসাবাদও করিতে পারিবেন।
(৩) পরিদর্শক প্রতিটি পরিদর্শন শেষে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ কর্তৃপক্ষের নিকট একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
(৪) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্ত সুপারিশ পর্যালোচনাপূর্বক লাইসেন্সীর বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
পরিদর্শককে সহায়তা প্রদান
২৩। পরিদর্শক এই আইনের বিধানাবলী বাস্তবায়নের প্রয়োজনে মেট্রোরেল এলাকার কোন স্থানে প্রবেশ করিলে তাহাকে লাইসেন্সী বা উক্ত স্থানে তদ্কর্তৃক নিয়োজিত যে কোন ব্যক্তি পরিদর্শকের অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহসহ অন্যবিধ যুক্তিসংগত সহায়তা প্রদান করিবেন, যাহাতে পরিদর্শক যথাযথভাবে তাহার দায়িত্ব পালন করিতে পারেন।
আপীল, আপীল কর্তৃপক্ষ গঠন, ইত্যাদি
২৪। (১) লাইসেন্সী এই আইনের ধারা ২২ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত আদেশে সংক্ষুব্ধ হইলে, উক্ত আদেশ প্রদানের ৭(সাত) দিনের মধ্যে, আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করিতে পারিবে।
(২) সরকার, এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ৫(পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি আপীল কর্তৃপক্ষ গঠন করিবে।
(৩) আপীল কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আপীল প্রাপ্ত হইলে উক্ত আপীল প্রাপ্তির ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।
(৪) আপীল দায়ের ও নিষ্পত্তির পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
অষ্টম অধ্যায়
দুর্ঘটনাজনিত কারণে ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ, বীমা, ইত্যাদি
ক্ষতিপূরণ প্রদান
২৫। মেট্রোরেল পরিচালনাকালে উহা হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে যদি কোন ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হন বা আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া মারা যান তাহলে লাইসেন্সী তাহাকে বা, ক্ষেত্রমত, তাহার পরিবারকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও পরিমাণে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকিবেন।
আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা, ইত্যাদি
২৬। (১) মেট্রোরেল পরিচালনাকালে উহা হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে যদি কোন ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে লাইসেন্সী তাহার প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করণার্থ নিকটস্থ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা করিবেন।
(২) যে ক্ষেত্রে লাইসেন্সী আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে উপ-ধারা (১) এর অধীন চিকিৎসা সেবা প্রদান না করেন সে ক্ষেত্রে তিনি নিজ উদ্যোগে চিকিৎসা গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং তৎসম্পর্কিত খরচ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও পরিমাণে লাইসেন্সী তাহাকে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবেন।
মারাত্মক দুর্ঘটনার রিপোর্ট
২৭। লাইসেন্সী মেট্রোরেল পরিচালনাকালে উহা হইতে উদ্ভূত মারাত্মক দুর্ঘটনা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরী সেবা প্রদানকারী সংস্থাকে অবহিত করিবেন এবং উক্তরূপ দুর্ঘটনা সম্পর্কিত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবেন।
মেট্রোরেল ও যাত্রীর বাধ্যতামূলক বীমাকরণ
২৮। (১) মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রত্যেক লাইসেন্সীকে, বাধ্যতামূলকভাবে মেট্রোরেল ও উহাতে যাতায়াতকারী সকল যাত্রীর ও তৃতীয় পক্ষের বীমা করিতে হইবে।
(২) কোন দুর্ঘটনা সংগঠিত হইলে লাইসেন্সী নিজ উদ্যোগে ও দায়িত্বে ক্ষতিপূরণের দাবী উত্থাপনের ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিকট হইতে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়পূর্বক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার পরিবারকে প্রদান করিবে।
মেট্রোরেলের দুর্ঘটনায় তৃতীয় পক্ষের ক্ষতিপূরণ
২৯। মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার কারণে মেট্রোরেল ও উহার যাত্রী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি বা স্থাপনা ও সম্পদের ক্ষতি হইলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা স্থাপনা ও সম্পদের মালিক কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দাবী উত্থাপিত হইলে লাইসেন্সী উক্ত ব্যক্তি বা স্থাপনা ও সম্পদের মালিককে দাবী উত্থাপনের ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ আদায়পূর্বক প্রদান করিবেন।
লাইসেন্স ব্যতীত মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন বা পরিচালনার দণ্ড
৩০। কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স ব্যতীত মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন বা পরিচালনা বা মেট্রোরেল সেবা প্রদান করেন বা তদুদ্দেশ্যে কোন যন্ত্রপাতি স্থাপন বা পরিচালনা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অনুমোদন ব্যতিরেকে লাইসেন্স হস্তান্তরের দণ্ড
৩১। কোন ব্যক্তি যদি সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে লাইসেন্স হস্তান্তর করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
প্রবেশাধিকারে বাধা প্রদানের দণ্ড
৩২। কোন ব্যক্তি যদি মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য কোন কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য লাইসেন্সী বা তাহার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিনিধি বা কর্মচারীকে মেট্রোরেল এলাকার পার্শ্ববর্তী ভূমি ও স্থাপনার ভূতল, সমতল ও উপরিভাবে এবং স্থাপনায় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামসহ প্রবেশে বেআইনীভাবে বাধা প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য কোন কর্মকাণ্ড সম্পাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির দণ্ড
৩৩। কোন ব্যক্তি যদি আইনানুগ কারণ ব্যতীত মেট্রোরেল নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্য কোন কর্মকাণ্ড সম্পাদনে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদান করেন বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের সংরক্ষিত স্থানে অনুপ্রবেশের দণ্ড
৩৪। কোন ব্যক্তি যদি অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের সংরক্ষিত স্থানে অনুপ্রবেশ করেন বা উক্ত স্থানে প্রবেশের পর উহা ত্যাগ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা তাহার অধীনস্থ ব্যক্তির অনুরোধের পরও সেখানে অবস্থান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
মেট্রোরেল ও উহার যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার দণ্ড
৩৫। কোন ব্যক্তি যদি মেট্রোরেল ও উহার যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা বিঘ্নিত হইবার সম্ভাবনা থাকে এইরূপ কোন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের টিকেট বা পাস বিক্রয় বা টিকেট বা পাস বিকৃত বা জাল করার দণ্ড
৩৬। কোন ব্যক্তি যদি অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের টিকেট বা পাস বিক্রয় করেন বা টিকেট বা পাস বিকৃত বা জাল করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদণ্ড বা ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
কর্মচারী কর্তৃক মেট্রোরেল বা উহার যন্ত্রপাতি অপব্যবহারের দণ্ড
৩৭। লাইসেন্সীর কোন কর্মচারী যদি মেট্রোরেল ও উহার যন্ত্রপাতি এইরূপে ব্যবহার করেন যাহাতে উহার বা উহার কোন যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা হইবার সম্ভাবনা থাকে এবং তাহার দায়িত্ব পালনকালে এইরূপে মেট্রোরেল ও উহার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন যাহার ক্ষমতা লাইসেন্সী তাহাকে প্রদান করেন নাই, তাহা হইলে উক্ত কর্মচারীর উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
পরিদর্শককে দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান বা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পদানের দণ্ড
৩৮। কোন ব্যক্তি যদি পরিদর্শককে, তাহার দায়িত্ব পালনে, বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বীমা না করার দণ্ড
৩৯। কোন লাইসেন্সী যদি মেট্রোরেল ও উহার যাত্রীর এবং তৃতীয় পক্ষের বীমা না করেন তাহা হইলে উক্ত কর্মকাণ্ড হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) বৎসর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ (দশ) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
টিকেট বা বৈধ পাস ব্যতিরেকে মেট্রোরেলে ভ্রমণ, ইত্যাদির দণ্ড
৪০। কোন ব্যক্তি যদি, টিকেট বা বৈধ পাস ব্যতিরেকে বা অনুমোদিত দূরত্বের অধিক মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন বা ভাড়া এড়ানোর উদ্দেশ্যে অন্য কোন কৌশল অবলম্বন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কর্মকাণ্ড হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি মেট্রোরেলের যাতায়াতের ভাড়ার ১০ (দশ) গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত অর্থদণ্ড অনাদায়ের ক্ষেত্রে অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড দণ্ডনীয় হইবেন।
কারিগরি মান অনুসরণ না করার দণ্ড
৪১। কোন লাইসেন্সী যদি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারীকৃত কারিগরি মান সম্পর্কে নির্দেশনা অনুসরণ ব্যতিরেকে মেট্রোরেল নির্মাণ ও রোলিং স্টক স্থাপন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সম্পাদন করেন, তাহা হইলে তাহার উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০(পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
লাইসেন্সী কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের দণ্ড
৪২। কোন লাইসেন্সী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে লাইসেন্সীর এইরূপ প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তজ্জন্য এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে দণ্ডনীয় হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের দণ্ড
৪৩। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন বা উক্ত অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দেন বা ষড়যন্ত্র করেন এবং উক্ত ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে সংশ্লিষ্ট অপরাধটি সংঘটিত হয়, তাহা হইলে উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অপরাধ পুনঃসংঘটনের দণ্ড
৪৪। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনে উল্লিখিত কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইয়া দণ্ড ভোগ করিবার পর পুনরায় একই অপরাধ করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যে দণ্ড রহিয়াছে উহার দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ
৪৫। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বা তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা পরিদর্শক কর্তৃক লিখিত প্রতিবেদন ব্যতীত কোন আদালত এই আইন বা বিধির অধীন কোন মামলা বিচারার্থ গ্রহণ করিবেনা।
ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ
৪৬। এই আইনের বিধানাবলীর সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই আইন বা বিধির অধীন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।
মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার
৪৭। এ আইনের অন্যান্য ধারায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের ধারা ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৭, ৩৮ ও ৪০ এর অধীন অপরাধসমূহ
মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত করিয়া বিচার করা যাইবে।
ক্ষমতা অর্পণ
৪৮। সরকার, এই আইনের অধীন যে কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট শর্তে, নির্বাহী পরিচালক বা উহার বা কর্তৃপক্ষের যে কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৫০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত সংগতিপূর্ণ প্রবিধানমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৫১। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
(২) এই আইন ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এই আইন প্রাধান্য পাইবে।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs