প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫

( ২০১৫ সনের ১৮ নং আইন )

বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও তাহাদের জীবন-মান উন্নয়নের স্বার্থে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং এতদুদ্দেশ্যে বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোর অনুকূলে ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিতকল্পে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি অংশগ্রহণ এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতঃ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব সৃষ্টির আইনিকাঠামো প্রদান ও একটি আস্থাশীল কর্তৃপক্ষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও তাহাদের জীবনমান- উন্নয়নের স্বার্থে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং এতদুদ্দেশ্যে বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোর অনুকূলে ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিতকল্পে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি অংশগ্রহণ এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতঃ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব সৃষ্টির আইনিকাঠামো প্রদান ও একটি আস্থাশীল কর্তৃপক্ষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন, ২০১৫ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

 
 

(১) ‘‘অবকাঠামো’’ অর্থ রাষ্ট্রীয় খাতের এমন কোন নূতন বা বিদ্যমান ভৌত বা অ-ভৌত পরিকাঠামো বা অবকাঠামো যাহার দ্বারা গণপণ্য বা গণসেবা বা উভয়ই সৃষ্টি হয় বা করা হয়;

 
 

(২)‘‘অংশীদারিত্ব চুক্তি’’ বা ‘‘পিপিপি চুক্তি’’ অর্থ এই আইনের ধারা ২৩ এর অধীন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ এবং প্রকল্প কোম্পানির মধ্যে স্বাক্ষরিত কোন চুক্তি;

 
 

(৩)‘‘গণপণ্য’’ অর্থ এমন কোন পণ্য যাহা সর্বসাধারণের জন্য রাষ্ট্রীয় খাতের অবকাঠামো হইতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উৎপাদিত বা উৎসারিত বা সৃষ্টি হয় বা করা হয়;

 
 

(৪) ‘‘গণসেবা’’ অর্থ এমন কোন সেবা যাহা সর্বসাধারণের জন্য রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো হইতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উৎপাদিত বা উৎসারিত বা সৃষ্টি হয় বা করা হয়;

 
 

(৫) ‘‘চেয়ারপারসন’’ অর্থ বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন;

 
 

(৬) ‘‘চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ’’অর্থ-

 
 

(ক) কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা তদধীন কোন দপ্তর বা অধিদপ্তর বা পরিদপ্তর, বা কর্পোরেশন বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, স্থানীয় সরকার, বা অনুরূপ কোন সংস্থা; বা

 
 

(খ) পিপিপি কর্তৃপক্ষ, যেক্ষেত্রে পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ হইতে শুরু করিয়া চুক্তি স্বাক্ষর পর্যন্ত কার্যক্রম সম্পাদনের দায়িত্ব পিপিপি কর্তৃপক্ষের উপর অর্পিত হয়;

 
 

(৭) ‘‘তহবিল’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৩৭ এ উল্লিখিত পিপিপি কর্তৃপক্ষের তহবিল;

 
 

(৮)‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ প্রবিধান বা আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

 
 

(৯) ‘‘নেগোসিয়েশন (negotiation)”” অর্থ ধারা ২১ এ বর্ণিত নেগোসিয়েশন;

 
 

(১০) ‘‘পিপিপি কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ‘‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ’’;

 
 

(১১) ‘‘পিপিপি প্রকল্প’’ অর্থ রাষ্ট্রীয় খাতের এমন কোন প্রকল্প যাহা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত;

 
 

(১২) ‘‘প্রকল্প’’ অর্থ এমন কোন কর্মকাণ্ড বা কর্মসূচি বা উভয়ের সমষ্টি যাহার মাধ্যমে নিম্নরূপ পরিকল্পনা বা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়, যথা:-

 
 

(ক) নূতন কোন অবকাঠামো নির্মাণ বা পরিচালনা বা উভয় করিবার পরিকল্পনা;

 
 

(খ) বিদ্যমান কোন অবকাঠামো বিনির্মাণ করিবার পরিকল্পনা;

 
 

(গ) দফা (ক) ও (খ) এ বর্ণিত উভয় কর্মকাণ্ড করিবার পরিকল্পনা; বা

 
 

(ঘ) কোন অবকাঠামোর সুবিধার সহিত সংযুক্ত নহে এমন সকল পণ্য বা সেবা সরবরাহ;

 
 

(১৩)‘‘প্রকল্প কোম্পানি’’ অর্থ ধারা ২২ এর অধীন গঠিত কোন কোম্পানি, এবং উক্ত অর্থে বেসরকারি অংশীদারও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(১৪) ‘‘প্রণোদনা’’ অর্থ পিপিপি প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করিবার জন্য সরকার, সময় সময়, প্রদত্ত বা ঘোষিত কোন সাধারণ বা বিশেষ সুবিধা বা ভর্তুকি, এবং উক্ত অর্থে আর্থিক ও নীতিগত সুবিধাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(১৫) ‘‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা’’ অর্থ পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা;

 
 

(১৬) ‘‘প্রবিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত কোন প্রবিধি;

 
 

(১৭) ‘‘বাস্তবায়ন’’ অর্থ পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণ;

 
 

‘(১৮) ‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

 
 

(১৯) ‘‘বিনির্মাণ’’ অর্থ বিদ্যমান অবকাঠামোর পুনঃনির্মাণ, পুনর্বাসন, আধুনিকায়ন, সংস্কার, সম্প্রসারণ, বর্ধিতকরণ, পরির্বতন, বা পরিচালনও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(২০) ‘‘বিনিয়োগ’’ অর্থ অংশীদারিত্ব চুক্তির অধীন পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেসরকারি অংশীদার কর্তৃক অর্থায়ন;

 
 

(২১) ‘‘বেসরকারি অংশীদার’’ অর্থ চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত পিপিপি চুক্তির অপর পক্ষ; এবং উক্ত অর্থে প্রকল্প কোম্পানি বা উহার ইকুইটি সরবরাহকারী (equity provider) অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 
 

(২২) ‘‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি বা যে কোন দেশি বা বিদেশি কোম্পানি, সমিতি, আইনগত স্বত্বা, ব্যক্তিসমষ্টি, কনসোশিয়াম (কনসোর্টিয়াম), ফাউন্ডেশন বা ট্রাস্ট;

 
 

(২৩) ‘‘বোর্ড অব গভর্নরস’’ অর্থ পিপিপি কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরস;

 
 

(২৪) ‘‘ভাইস-চেয়ারপারসন’’ অর্থ বোর্ড অব গভর্নরস এর ভাইস-চেয়ারপারসন;

 
 

(২৫) ‘‘মন্ত্রিসভা কমিটি’’ অর্থ Rules of Business, 1996 এর rule 18 এর অধীন গঠিত Cabinet Committee on Economic Affairs;

 
 

(২৬) ‘‘সদস্য’’ অর্থ বোর্ড অব গভর্নরস এর কোন সদস্য; এবং

 
 

(২৭) ‘‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব’’ বা ‘‘অংশীদারিত্ব’’ বা ‘‘পিপিপি’’ অর্থ চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ এবং কোন বেসরকারি অংশীদারের মধ্যে পিপিপি চুক্তিয় ব্যবস্থা যাহার অধীন উক্ত বেসরকারি অংশীদার-

 
 

(ক) সরকারি কোন কার্য সম্পাদনের বা চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষে কোন সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি/দায়িত্ব গ্রহণ করে;

 
 

(খ) সরকারি কার্য সম্পাদন বা চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষে কোন সেবা প্রদানের বিনিময়ে-

 
 

(অ) সরকারি তহবিল হইতে কার্য বা সেবার মূল্য;

 
 

(আ) ব্যবহারকারী বা সেবাগ্রহণকারীর নিকট হইতে তৎকর্তৃক (বেসরকারি অংশীদার) আদায়কৃত মাশুল/লেভি বা ফি; বা

 
 

(ই) উক্ত কার্য বা সেবার মূল্য, মাশুল বা ফি গ্রহণের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে মুনাফা লাভ করে; এবং

 
 

(গ) উক্ত পিপিপি চুক্তিয় ব্যবস্থার শর্তানুসারে কার্য সম্পাদন বা চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষে কোন সেবা প্রদানের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি গ্রহণ করে।

আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা

পাবলিক পাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা

৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হইবে। যাহা পিপিপি কর্তৃপক্ষ নামে অভিহিত হইবে।

 
 

(২) পিপিপি কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

 
 

(৩) আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ, ও কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ 1[***] হইবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্যালয়, ইত্যাদি
৫। (১) পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
 
 
(২) পিপিপি কর্তৃপক্ষ, উহার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে বা বিদেশে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
 
 
পরিচালনা ও প্রশাসন
৬। পিপিপি কর্তৃপক্ষের সার্বিক পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ড অব গভর্নরস এর উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং উহার সকল ক্ষমতা ও কার্যাবলী বোর্ড অব গভর্নরস প্রয়োগ ও সম্পাদন করিতে পারিবে।
বোর্ড অব গভর্নরস
৭। (১) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পিপিপি কর্তৃপক্ষের একটি বোর্ড অব গভর্নরস থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারপারসনও হইবেন;
 
 
(খ) মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, যিনি উহার ভাইস-চেয়ারপারসনও হইবেন;
 
 
(গ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত একজন মন্ত্রী                       সদস্য;
 
(ঘ) প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী                    সদস্য;
 
(ঙ) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও চেয়ারম্যান, পিপিপি কর্তৃপক্ষ       সদস্য-সচিব।
(২) পিপিপি কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন এর পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নহেন এমন কোন মন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ যে কোন ব্যক্তিকে বোর্ডের সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
বোর্ড অব গভর্নরস এর সভা, ইত্যাদি

৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড অব গভর্নরস উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 
 

2[(২) বোর্ড অব গভর্নরসের সভা চেয়ারপারসন বা চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারপারসন কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে এবং বৎসরে অন্যূন দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে; তবে প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় চেয়ারপারসনের অনুমোদন সাপেক্ষে পিপিপি সংশ্লিষ্ট যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে।]

 
 

(৩) চেয়ারপারসন বোর্ড অব গভর্নরস এর সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে বা সম্মতিতে ভাইস-চেয়ারপারসন উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিবেন ।

 
 

(৪) বোর্ড অব গভর্নরস এর কোন কার্য বা কার্যধারা কেবল উক্ত বোর্ড অব গভর্নরস এর কোন সদস্য পদে শূন্যতা বা বোর্ড অব গভর্নরস গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে অবৈধ হইবে না এবং তদসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

 
 

(৫) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বোর্ড অব গভর্নরস এর প্রত্যেক সভায়, বোর্ড অব গভর্নরসকে পিপিপি সংশ্লিষ্ট বিষয় সহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার জন্য সভায় উপস্থিত থাকিবেন।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি

৯।(১) পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

 
 

3[(ক) পিপিপি সম্পর্কিত নীতিমালা, প্রবিধি, নির্দেশনা, গাইডলাইন ও কার্যপ্রণালী প্রণয়ন, অনুমোদন ও সরকারি গেজেট প্রকাশ;

(খ) পিপিপি প্রকল্পে সরকারি আর্থিক অংশগ্রহণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান;]

 
 

(গ) চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান;

 
 

(ঘ) পিপিপি প্রকল্প বাসত্মবায়নের সীমাবদ্ধতা বা জটিলতা নিরসন;

 
 

(ঙ) পিপিপি প্রকল্প বিষয়ে মতামত প্রদান;

 
 

(চ) কারিগরি ও উৎকৃষ্ট সদাচার (best practices), প্রাক-যোগ্যতা ও দরপত্র দলিল প্রণয়ন;

 
 

(ছ) অংশীদারিত্ব চুক্তির নমুনা উদ্ভাবন ও নিরীক্ষা (vetting) গ্রহণ;

 
 

(জ) পিপিপি প্রকল্প বিষয়ে সম্মতি;

 
 

(ঝ) বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্ধারণ;

 
 

(ঞ) পিপিপি প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত দরদাতা অনুমোদন;

 
 

(ট) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পিপিপি চুক্তির সমাপ্তি অনুমোদন ;

 
 

(ঠ) পিপিপি চুক্তির নমুনা অনুমোদন;

 
 

(ড) পিপিপি প্রকল্প কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান;

 
 

(ঢ) পিপিপি কর্তৃপক্ষের অধীনে ন্যস্ত প্রকল্পের, সময় সময়, পিপিপি চুক্তি সম্পাদন ও স্বাক্ষর;

 
 

(ণ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাংগঠনিক কাঠামো নির্ধারণ ও অনুমোদন;

 
 

(ত) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পৃথক বেতনকাঠামো অনুমোদন প্রদান;

 
 

(থ) পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞ বা উভয়ের কার্যপরিধি ও নিয়োগের পদ্ধতি নির্ধারণ ও নিয়োগ এবং ফি নির্ধারণ;

 
 

(দ) পিপিপি বিষয়ে দেশ বিদেশে শিক্ষামূলক সফর, প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ইত্যাদি আয়োজন ও অনুমোদন;

 
 

(ধ) পিপিপি সংক্রান্ত বিধি-বিধান ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ;

 
 

(ন) পিপিপি কর্মসূচি পর্যালোচনা ও পরিবীক্ষণ;

 
 

(প) পিপিপি প্রকল্পের অগ্রগতি তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন;

 
 

(প) বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা ও পরিবীক্ষণ;

 
 

(ব) পিপিপি প্রকল্পের জন্য পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞ বা উভয়ের জন্য প্যানেল প্রস্তুত করা এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত প্যানেল হইতে পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞ বা উভয় নির্বাচন প্রক্রিয়াকরণ; এবং

 
 

(ভ) পিপিপি সংশ্লিষ্ট যে কোন কার্য সম্পাদন।

 
 

(২) সরকার কর্তৃক অর্পিত পিপিপি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ।

 
 
চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

১০। (১) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব পদাধিকার বলে পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হইবেন।

 
 

(২) পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব হইবে-

 
 

(ক) বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন এর সহিত আলোচনাক্রমে ধারা ৮(২) এর বিধান অনুযায়ী সভা আহবানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

 
 

(খ) বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন এর সহিত পরামর্শক্রমে, বোর্ড অব গভর্নরস এর বৈঠকের আলোচ্যসূচী নির্ধারণ করা; এবং

 
 

(গ) বোর্ড অব গভর্নরস এর সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করা।

 

4[(২ক) পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের সকল কর্মকাণ্ডের জন্য সরাসরি বোর্ড অব গভর্নরসের নিকট দায়ী থাকিবেন।]

 
 

(৩) পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বোর্ড অব গভর্নরস এর সভায় যোগদানসহ অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হারে সম্মানী ও ভাতা পাইবেন।

 
 

5[(৪) পিপিপি কর্তৃপক্ষের একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকিবে—

(ক) যিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন; এবং

(খ) যাহার চাকরির শর্তাদি, পদমর্যাদা এবং অন্যান্য বিষয়াদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।]

 
 

(৫) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিপিপি কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং এই আইনের দ্বারা নির্ধারিত পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা, বোর্ড অব গভর্নরস এর অনুমোদনক্রমে, তাহার কর্তৃক প্রযুক্ত হইবে।

 
 

(৬) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন, জরুরি বৈঠক আহবান ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনে বোর্ড অব গভর্নরস এর চেয়ারপারসন, ভাইস-চেয়ারপারসন ও কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ব্রিফিং করিতে পারিবেন।

 
 

6[(৭) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিপিপি কর্তৃপক্ষের সকল কর্মকাণ্ডের জন্য চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বোর্ড অব গভর্নরসের নিকট দায়ী থাকিবেন।]

 
 

(৮) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহার দায়িত্ব পালনে অসর্ম হইলে, উক্ত শূন্য পদে নব নিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত, অথবা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি/কর্মকর্তা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারূপে দায়িত্ব পালন করিবেন।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী

১১। পিপিপি কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে 7[সরকার] কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের মতামত ও সহায়তা গ্রহণ
১২। চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত বিষয়ে পিপিপি কর্তৃপক্ষের মতামত ও সহায়তা গ্রহণ করিবে, যথা:-
 
 
(ক) নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা কমিটিতে উত্থাপনীয় পিপিপি প্রকল্প প্রস্তাব;
 
 
(খ) পিপিপি সংক্রান্ত দরপত্র দলিল অনুমোদন;
 
 
(গ) নেগোসিয়েশন কার্যক্রম;
 
 
(ঘ) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উত্থাপনীয় অংশীদারিত্ব চুক্তি;
 
 
(ঙ) সম্পাদনের পর অংশীদারিত্ব চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব; এবং
 
 
(চ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অন্য কোন বিষয় বা প্রস্তাব।
 
 

তৃতীয় অধ্যায়

পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদন

পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ
১৩। (১) চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, পিপিপি কর্তৃপক্ষ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর যে কোন প্রকল্প অথবা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর বাইরে যে কোন প্রকল্প চিহ্নিতক্রমে উহা পিপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য পিপিপি প্রকল্প গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
(২) বোর্ড অব গভর্নরস, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর যে কোন প্রকল্প অথবা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর বাইরের যে কোন প্রকল্পকে পিপিপির ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিতে পারিবে।
পিপিপি প্রকল্প অনুমোদন

১৪। পিপিপি প্রকল্পের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক সম্পাদিত হইবে।

জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প
১৫।(১) দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করিবার বা জনসাধারণের বড় ধরনের কোন দূর্ভোগ দ্রুত নিরসনের প্রয়োজনে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে, যেকোন প্রকল্পকে জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প ঘোষণা করিতে পারিবে।
 
 
(২) এই আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে, জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প অনুমোদন, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন, নেগোসিয়েশন, ইত্যাদির জন্য আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি বা সাব-কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন গঠিত কমিটির কর্মপরিধি, কার্য পদ্ধতি ও সভা অনুষ্ঠানসহ জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প অনুমোদন, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন, নেগোসিয়েশন, ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
পিপিপি প্রকল্পে সরকারি আর্থিক অংশগ্রহণ
১৬। সরকার পিপিপি প্রকল্পের নিম্নবর্ণিত কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অর্থ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) কারিগরি সহায়তার বিপরীতে অর্থায়ন(Technical Assistance Financing);
 
(খ) আর্থিক সামর্থ্য ঘাটতির বিপরীতে অর্থায়ন (Viability Gap Financing);
(গ) প্রকল্প কোম্পানিতে ইকুইটি ক্রয় বা ঋণের বিপরীতে অর্থায়ন (Financing against Equity and Loan);
(ঘ) পিপিপি প্রকল্পের সহিত সংযুক্ত কম্পোন্যান্ট বাস্তায়নের বিপরীতে অর্থায়ন Financing against Linked Component);
(ঙ) পিপিপি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অর্থায়ন।
 
প্রণোদনা প্রদানে সরকারের ক্ষমতা
১৭। পিপিপি প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করিবার জন্য সরকার, বোর্ড অব গভর্নরস এর সুপারিশের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, প্রণোদনা ঘোষণা করিতে পারিবে।
চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি
১৮। (১) এই আইন ও তদ্ধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধিমালার বিধানাবলি সাপেক্ষে, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বীয় খাতের যে কোন অবকাঠামো নির্মাণ বা বিদ্যমান অবকাঠামো বিনির্মাণের জন্য বেসরকারি অংশীদারের সহিত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে।
 
 
(২) পিপিপি প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতকল্পে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) প্রকল্পের অগ্রগতি ও কার্যক্রম বিষয়ে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময় অন্তর, পিপিপি কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পিপিপি কর্তৃপক্ষ যে কোন সময় চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের নিকট যে কোন প্রতিবেদন বা তথ্য-উপাত্ত যাচনা করিতে পারিবে এবং চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

চতুর্থ অধ্যায়

বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন

বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া
১৯। (১) নীতিগত অনুমোদন ব্যতীত, কোন চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ পিপিপি প্রকল্পের জন্য বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া গ্রহণ করিবে না।
 
 
(২) চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক অনুমোদিত প্রবিধি অনুযায়ী বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন করিতে পারিবে।
 
 
অযাচিত প্রস্তাব (Unsolicited Proposal)
২০। (১) যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক অনুমোদিত গাইড লাইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় খাতের কোন অবকাঠামো নির্মাণ বা বিদ্যমান অবকাঠামো বিনির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব সম্বলিত যে কোন প্রকারের পিপিপি প্রকল্প প্রস্তাব চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ, বা ক্ষেত্রমত, পিপিপি কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিতে পারিবে।
 
 
(২) বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক অনুমোদিত গাইডলাইন দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অযাচিত প্রস্তাব (Unsolicited Proposal) মূল্যায়ন করিতে হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা:
এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘অযাচিত প্রস্তাব (Unsolicited Proposal)”” অর্থ কোন বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্ব-উদ্যোগে দাখিলকৃত কোন লিখিত প্রস্তাব, যাহা সরকারের কোন আনুষ্ঠানিক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে প্রদত্ত নয়।
নেগোসিয়েশন
২১। অংশীদারিত্ব চুক্তির যে সকল শর্ত নেগোসিয়েশনের জন্য উন্মুক্ত নহে সেই সকল শর্ত ব্যতীত কেবল নেগোসিয়েশনযোগ্য শর্তাবলির বিষয়ে নেগোসিয়েশন করা যাইবে।
প্রকল্প কোম্পানি গঠন
২২। (১) বেসরকারি অংশীদার চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হইবার পর, পিপিপি চুক্তি সম্পাদনের পূর্বে বা পরে, কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের বিধান অনুযায়ী শেয়ার দ্বারা সীমিতদায় কোম্পানি গঠন করিবে।
 
 
(২) পিপিপি চুক্তিতে স্বাক্ষর করিবার পর, বেসরকারি অংশীদারে সকল দায়-দায়িত্ব ও অধিকার প্রকল্প কোম্পানির উপর অর্পিত হইবে।
 
 
(৩) প্রকল্প কোম্পানির সংঘস্মারক, সংঘবিধি ও উপ-আইন বা উহার নিয়ন্ত্রক দলিলে কোন তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন করিবার প্রয়োজন হইলে, বেসরকারি অংশীদারকে উক্তরূপ পরিবর্তন সাধনের পূর্বে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
পিপিপি চুক্তি সম্পাদন

২৩। 8[১] চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত বেসরকারি অংশীদারের সহিত সম্মত শর্তের উপর ভিত্তি করিয়া চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ পিপিপি চুক্তি সম্পাদন করিবে।

 

9[(২) পিপিপি চুক্তি স্বাক্ষরের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করিবে।]

পঞ্চম অধ্যায়

দুর্নীতিমূলক অপরাধ ও স্বার্থের সংঘাত

দুর্নীতিমূলক অপরাধের মামলা
২৪। (১) বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া ও পিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নের সহিত জড়িত কোন ব্যক্তি যদি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, উক্ত প্রক্রিয়া পরিচালনা বা উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কোন দুর্নীতিমূলক কার্য, প্রতারণামূলক কার্য, চক্রান্তমূলক কার্য বা জবরদস্তিমূলক কার্যে লিপ্ত হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি দুর্নীতি বা ক্ষেত্রমত, অসদাচরণ বা উভয়ের জন্য দায়ী হইবেন এবং তাহার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে দুর্নীতির মামলাসহ আচরণ ও শৃংখলা সংক্রান্ত চাকরি বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দুর্নীতিমূলক কার্য, প্রতারণামূলককার্য, চক্রান্তমূলক কার্য বা জবরদস্তিমূলক কার্যের সহিত কোন প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ী বা সাময়িকভাবে অগ্রহণযোগ্য ঘোষণাসহ, ক্ষেত্রমত, উহার প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র বা পিপিপি চুক্তি বাতিল করিতে হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘দুর্নীতিমূলক কার্য’’, ‘‘প্রতারণামূলক কার্য’’, ‘‘জবরদস্তিমূলক কার্য’’ ও ‘‘চক্রান্তমূলক কার্য’’ অভিব্যক্তিসমূহ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীন প্রণীত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ১২৭ এ সংজ্ঞায়িত অর্থে ব্যবহৃত হইবে।
স্বার্থের সংঘাত
২৫। বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দরপত্র মূল্যায়নের সহিত জড়িত কোন ব্যক্তির নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন প্রকল্প বা সংযুক্ত প্রকল্পের সহিত জড়িত কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সহিত তাহার, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, স্বার্থের সংঘাত রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্তরূপ প্রতীয়মান হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত প্রক্রিয়া হইতে নিজেকে প্রত্যাহার করিয়া লইবেন; এবং যদি তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে প্রত্যাহার না করেন, তাহা হইলে উহা ধারা ২৪ এ সংজ্ঞায়িত অর্থে ‘চক্রান্তমূলক কার্য’ বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘স্বার্থের সংঘাত’’ বলিতে কোন ব্যক্তি বা তাহার স্ত্রী বা স্বামী বা পুত্র বা কন্যার, কোন প্রকল্প বা সংযুক্ত প্রকল্প বা কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার সহিত এমন কোন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আর্থিক বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক বা স্বার্থকে বুঝাইবে, যাহার দ্বারা উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দরপত্র মূল্যায়নে প্রদেয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হইতে পারে বা হইবার সম্ভাবনা থাকে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

অংশীদারিত্ব চুক্তির শর্তাবলি

অংশীদারিত্ব চুক্তির শর্তাবলি

২৬। (১) এই আইন, তদ্‌ধীন প্রণীত প্রবিধিমালা ও সম্মত শর্তাবলি সাপেক্ষে, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ অংশীদারিত্ব চুক্তি প্রণয়ন করিবে।

 
 

(২) চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচিত বেসরকারি অংশীদারের আইনগত সম্পর্ক, ঝুঁকির বন্টন ও উহাদের অধিকার ও দায়-দায়িত্ব অংশীদারিত্ব চুক্তির শর্তাবলি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 
 

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর পরিধিকে সীমিত না করিয়া, পিপিপি চুক্তিতে নিম্ন-বর্ণিত যে কোন বা সকল বিষয়াদি সংক্রান্ত বিধান থাকিতে পারিবে, যথা:-

 
 

(ক) প্রকল্পের ধরন;

 
 

(খ) পিপিপি চুক্তির মেয়াদ;

 
 

(গ) 10[গণপণ্য] ও গণসেবা;

 
 

(ঘ) কারিগরি নমূনা ও প্রতিপালন মানদন্ড;

 
 

(ঙ) পরিবেশগত ও নিরাপত্তা চাহিদা;

 
 

(চ) বাস্তবায়ন নির্দেশক এবং সমাপ্তির তারিখ;

 
 

(ছ) লেভী আদায়ের মাধ্যমে ব্যয় পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা ও উহা সমন্বয়ের কৌশল;

 
 

(জ) নির্মাণ কার্য ও পরিচালনা অঙ্গীকারনামা;

 
 

(ঝ) বীমা;

 
 

(ঞ) স্বীকৃতি পরীক্ষা (Acceptance test) ও পদ্ধতি;

 
 

(ট) পিপিপি চুক্তির পক্ষসমূহের অধিকার ও দায়িত্ব, ঝুঁকি বন্টন;

 
 

(ঠ) সরকারি আর্থিক অংশগ্রহণের ধরন ও পরিমাণ;

 
 

(ড) পিপিপি চুক্তি সমাপ্তিতে সম্পদ হস্তান্তর (যদি থাকে);

 
 

(ঢ) হস্তান্তর পরবর্তী নির্ভরপত্র এবং পদ্ধতি;

 
 

(ণ) প্রতিবেদন দাখিল;

 
 

(ক) চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান কৌশল;

 
 

(থ) সম্পদের মালিকানা;

 
 

(দ) প্রাকৃতিক বিপর্যয়কালীন তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ;

 
 

(ধ) নিয়ন্ত্রণকারী আইন (Governing Law);

 

(ন) সালিশী ব্যবস্থা;

 
 

(প) প্রকল্প এলাকার উপর অধিকার; এবং

 
 

(ফ) নিরাপত্তা স্বার্থ।

 
 

(৪) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা আইনের মর্যাদাসম্পন্ন দলিলে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অংশীদারিত্ব চুক্তি পক্ষগণের সম্মত ভাষায় প্রণয়ন করা যাইবে।

নিয়ন্ত্রণকারী আইন (Governing Law)
২৭। অংশীদারিত্ব চুক্তিতে ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন হইবে অংশীদারিত্ব চুক্তির নিয়ন্ত্রণকারী আইন (Governing Law) ।
প্রবেশাধিকার
২৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত বেসরকারি অংশীদার বা প্রকল্প কোম্পানি বা উহার কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিম্নবর্ণিত যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) প্রকল্প এলাকার যে কোন ভূমিতে প্রবেশ, উহাতে অবস্থিত কোন বস্তু পরিদর্শন এবং তৎসংশ্লিষ্ট যে কোন রেকর্ডপত্র বা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, যাচনা ও পর্যালোচনা করা; এবং
 
 
(খ) প্রকল্প এলাকা ও তদস্থিত ভূমিতে অনুসন্ধান, নমুনা সংগ্রহ, জরিপ, নির্মাণ ও খননসহ প্রয়োজনীয় যে কোন কার্য সম্পাদন করা।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রবেশাধিকার প্রয়োগ করিবার ক্ষেত্রে জমির মালিক বা দখলদারকে অন্যূন ৫ (পাঁচ) কার্য দিবসের নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কৃত কোন কার্যের জন্য কোন ভূমির কোনরূপ ক্ষতি সাধিত হইলে, প্রকল্প কোম্পানিকে উহার জন্য, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে, ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।
লেভি নির্ধারণ, আরোপ ও সমন্বয়
২৯। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা আইনের মর্যাদাসম্পন্ন দলিলে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, গণপণ্য বা গণসেবা সরবরাহ করিবার বিনিময়ে অংশীদারিত্ব চুক্তি অনুযায়ী লেভি আরোপ করিবার অধিকার বেসরকারি অংশিদার বা প্রকল্প কোম্পানির থাকিবে।
 
 
(২) পিপিপি চুক্তিতে লেভি নির্ধারণের এবং সমন্বয়ের পদ্ধতি ও সূত্র বিধৃত থাকিতে হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘লেভি’’ অর্থ গণপণ্য বা গণসেবা সরবরাহ করিবার বিনিময়ে অংশীদারিত্ব চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প কোম্পানি কর্তৃক প্রাপ্য অর্থ; এবং ট্যারিফ, টোল, ফি, বা চার্জও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
বিরোধ নিষ্পত্তি
৩০। (১) পিপিপি চুক্তির বিধান প্রয়োগ বা ব্যাখা বা উভয়ের ক্ষেত্রে কোন বিরোধ উদ্ভূত হইলে, পক্ষগণ কর্তৃক পিপিপি চুক্তির অধীন সম্মত নিম্নবর্ণিত উপায়ে উহা নিষ্পত্তি করিবে, যথা:-
 
 
(ক) চুক্তির পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে; বা
 
 
(খ) দফা (ক) এর অধীন বিরোধ মিমাংসা না হওয়ার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে; বা
 
 
(গ) দফা (খ) এর অধীন বিরোধ মিমাংসা না হওয়ার ক্ষেত্রে পিপিপি পক্ষগণের সালিস (Arbitration) এর মাধ্যমে।
 
(২) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা আইনের মর্যাদাসম্পন্ন দলিলে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পিপিপি চুক্তির দ্বারা জাতীয় বা আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান গ্রহণ করা যাইবে এবং সালিশি ব্যবস্থা ঢাকায় হইবে; তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সম্মতির ভিত্তিতে অন্য কোন দেশেও হইতে পারিবে।
 
 
(৩) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন বা আইনের মর্যাদাসম্পন্ন দলিলে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পিপিপি চুক্তির বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিরোধ উপ-ধারা (১) এর অধীন নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ না করিয়া কোন পক্ষ জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করিতে পারিবে না।
 
 
(৪) এই ধারার অধীনে সালিশি ব্যবস্থার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
 
 
সামাজিক বিচার্য বিষয়
৩১। অংশীদারিত্ব চুক্তিতে এমন কোন শর্তের সন্নিবেশ করা যাইবে না যাহা শ্রমিকদের মজুরির মান ও সাধারণ জনগণের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ হয়।

সপ্তম অধ্যায়

বিবিধ

অভিযোগ, পুনরীক্ষণ ও আপত্তির পদ্ধতি
৩২। (১) কোন ব্যক্তি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দরপত্রদাতা বা নির্বাচিত দরপত্রদাতা যদি চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ বা উহার কোন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ বা সিদ্ধান্ত দ্বারা সংক্ষুব্ধ হন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা দরপত্রদাতা বা নির্বাচিত দরপত্রদাতা, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, উক্ত আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তার নিকট, সংশ্লিষ্ট আদেশ বা সিদ্ধান্ত পুনরীক্ষণের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত পুনরীক্ষণের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হইলে কিংবা পুনরীক্ষণের আবেদন প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা কোন সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা দরপত্রদাতা বা নির্বাচিত দরপত্রদাতা, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তার নিকট আপত্তি দায়ের করিতে পারিবেন।
 
 
(৩) আপিল কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, আপত্তি নিষ্পত্তি করিবে, এবং উহার আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৪) এই ধারার অধীন সুযোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তি কোনো আদালতে দেওয়ানী প্রতিকারের জন্য মামলা দায়ের করিতে পারিবে না।
গণপণ্য ও গণসেবা ব্যবহারকারীর অভিযোগ নিষ্পত্তি
৩৩। অংশীদারিত্ব চুক্তির মেয়াদকালে যে কোন সময়, প্রকল্প কোম্পানি কর্তৃক গণপণ্য সরবরাহ বা গণসেবা প্রদান করিবার ক্ষেত্রে উহার ব্যবহারকারীগণের দাবি বা অভিযোগসমূহ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে, প্রয়োজনীয় পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ প্রকল্প কোম্পানিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
গোপনীয়তা
৩৪। (১) এই আইন বা তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ২০ নং আইন) এ ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ বা পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র প্রক্রিয়া ও নেগোসিয়েশন প্রক্রিয়া ও অনুমোদন সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র, তথ্য, দলিল-দস্তাবেজের গোপনীয়তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে রক্ষা করা হইবে।
 
 
(২) আদালতের আদেশ বা পক্ষগণের সম্মতি ব্যতিরেকে, কোন বাণিজ্যিক বা আর্থিক তথ্য তৃতীয় কোন পক্ষের নিকট প্রকাশ করা যাইবে না।
মূল্য, বকেয়া এবং ফি আদায়
৩৫।কোন ব্যক্তি বা প্রকল্প কোম্পানির নিকট কোন পাওনা, যেমন:- মূল্য, বকেয়া, ফি, জরিমানা বা ক্ষতির অর্থ অনাদায়ী থাকিলে চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষ উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (No. III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী সরকারি দাবি হিসাবে আদায় করিতে পারিবে।
অসুবিধা 11[দূরীকরণার্থে সরকারের] ক্ষমতা

৩৬। এই আইন বা তদধীন প্রণীত প্রবিধিমালার কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা সৃষ্টি হইলে, 12[সরকার], এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা জারী করিতে পারিবে।

তহবিল, ইত্যাদি

৩৭।(১) পিপিপি কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:-

 

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

(গ) অভ্যন্তরীণ উৎস হইতে গৃহীত ঋণ;

 

(ঘ) বিদেশি সরকার, সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান ও ঋণ;

 

13[(ঙ) কোনো প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত সার্ভিস চার্জ, প্রকল্প উন্নয়ন ফি ও নির্ধারিত সাকসেস ফি; এবং]

 

(চ) অন্য কোন বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

 

(২) তহবিলের অর্থ বোর্ড অব গভর্নরস এর অনুমোদনক্রমে কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে

 

হইবে।

 

(৩) বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে।

 

(৪) এই আইনের অধীন সম্পাদিত কোন কার্য সংক্রান্ত ব্যয়সহ অন্যান্য সকল দায় উক্ত তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে।

 

ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘তফসিলি ব্যাংক’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর Article 2(J) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank ।

ঋণ গ্রহণ ও বিনিয়োগ
৩৮।(১) পিপিপি কর্তৃপক্ষ, উহার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য, বোর্ড অব গভর্নরস এর সুপারিশক্রমে এবং সরকারের অনুমোদনক্রমে, দেশী-বিদেশী উৎস হইতে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং প্রযোজ্য শর্তাবলীর অধীন উক্ত ঋণ পরিশোধের জন্য পিপিপি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবে।
 
 
(২) তহবিলের অর্থ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে এবং বোর্ড অব গভর্নরস এর অনুমোদনক্রমে বিনিয়োগ করা যাইবে।
বার্ষিক বাজেট বিবরণী
৩৯। পিপিপি কর্তৃপক্ষ প্রতিবৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে পিপিপি কর্তৃপক্ষের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
৪০। (১) পিপিপি কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) প্রত্যেক অর্থ বৎসর শেষ হইবার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিপিপি কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা রিপোর্ট বোর্ড অব গভর্নরস এর সভায় উপস্থাপন করিবেন।
 
 
(৩) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া উল্লিখিত প্রতি বৎসর পিপিপি কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি অনুলিপি সরকার ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কর্তৃপক্ষের যে কোন সদস্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবংপিপিপি কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

14[***]

ক্ষমতা অর্পণ
৪২। (১) বোর্ড অব গভর্নরস, বিশেষ বা সাধারণ আদেশ দ্বারা, নির্ধারিত শর্তাধীনে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কোন সদস্য বা যে কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তাকে উহার যে কোন ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একইভাবে তাহার উপর অর্পিত, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রদত্ত ক্ষমতা ব্যতীত, যে কোন ক্ষমতা যে কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবেন।
 
বার্ষিক প্রতিবেদন, ইত্যাদি
৪৩। পিপিপি কর্তৃপক্ষ, প্রতি অর্থ বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলীর বিবরণ সম্বলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৩১ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিকট এবং উহার অপর একটি কপি জাতীয় সংসদে দাখিল করিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৪৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 
 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিধি প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত, 15[পিপিপি কর্তৃপক্ষ], প্রয়োজনে, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ ও সম্পাদন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

 
প্রবিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৪৫। 16[(১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন এবং তদধীন প্রণীত কোনো বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।]

 
 

(২) বিশেষ করিয়া এবং উপরিউক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতা ক্ষুণ্ণ না করিয়া নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে উক্তরূপ প্রবিধি প্রণয়ন করা যাইবে:

 
 

(ক) বোর্ড অব গভর্নরস এর সভা, ইত্যাদির কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ;

 
 

(খ) পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এর সম্মানী ও ভাতা নির্ধারণ;

 
 

17[***]

 
 

(ঘ) পিপিপি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের চাকুরির শর্তাবলী নির্ধারণ;

 
 

(ঙ) বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্ধারণ;

 
 

(চ) প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নির্ধারণ;

 
 

(ছ) অভিযোগ, পুনরীক্ষণ ও আপত্তি পদ্ধতি নির্ধারণ;

 
 

(জ) কর্তৃপক্ষের তহবিল পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ;

 
 

(জ) ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত বিষয় নির্ধারণ।

পিপিপি নীতিমালা প্রণয়নে পিপিপি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা
৪৬। এই আইন সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার পর, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বিষয়ে জাতীয় পিপিপি নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
বিদ্যমান নীতিমালা রহিতকরণ ও হেফাজত।-
৪৭। (১) এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিদ্যমান Policy and Strategy for Public Private Partnership (PPP), 2010, অতঃপর রহিত নীতিমালা বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও,-
 
 
(ক) রহিত নীতিমালার অধীন কোন অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদিত হইয়া থাকিলে উক্ত চুক্তিতে উল্লিখিত মেয়াদকাল পর্যন্ত উহা বলবৎ থাকিবে;
 
 
(খ) রহিত নীতিমালার অধীন কৃত সকল কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
 
 
(গ) রহিত নীতিমালার অধীন গৃহীত কোন কার্যধারা অনিষ্পন্ন থকিলো উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উক্ত নীতিমালা রহিত হয় নাই।
 
বিদ্যমান পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অফিসের পরিসম্পদ, ইত্যাদির হেফাজত
৪৮। এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, বিদ্যমান পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অফিসের-
 
 
(ক) সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ পিপিপি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে;
 
 
(খ) সকল ঋণ, দায়-দায়িত্ব, উন্নয়ন প্রকল্প, যদি থাকে, পিপিপি কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায়-দায়িত্ব এবং প্রকল্প বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(গ) সকল অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, বিনিয়োগ, তহবিল ও স্বার্থ পিপিপি কর্তৃপক্ষের অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, বিনিয়োগ, তহবিল ও স্বার্থ বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
 
 
(ঘ) সকল চুক্তি, দলিল ও অনুমোদন পিপিপি কর্তৃপক্ষের চুক্তি, দলিল ও অনুমোদন বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
 
 
(ঙ) সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে চাকরির সকল অধিকার ও সুবিধাসহ পিপিপি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিবেচিত হইবেন এবং তাহাদের চাকরির শর্তাবলি এই আইনের বিধানাবলী অনুযায়ী নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত একই শর্তে পিপিপি কর্তৃপক্ষের চাকরিতে নিয়োজিত থাকিবেন।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৪৯। (১) এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানমালা সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার পর, পিপিপি কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত যে কোনো বিধি বা প্রবিধানমালার ইংরেজিতে অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
 
 
(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs