প্রিন্ট ভিউ

পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১৬

( ২০১৬ সনের ৬ নং আইন )

পায়রা বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু পায়রা বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১।(১) এই আইন পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১৬ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে―
 
 
(১) ‘‘কমিশনার’’ অর্থ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার;
 
 
(২) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৫৩ নং আইন) এর ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ;
 
 
(৩) ‘‘জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্য’’ অর্থ পায়রা বন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করার লক্ষ্যে, কোন কাজ বা ব্যবস্থা গ্রহণক্রমে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্য;
 
 
(৪) ‘‘ডেপুটি কমিশনার’’ অর্থ Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No.II of 1982) এর section 2(b) এ সংজ্ঞায়িত Deputy Commissioner;
 
(৫) ‘‘প্রকল্প’’ অর্থ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৫৩ নং আইন) এর অধীন পায়রা বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে গৃহীত পায়রা বন্দর প্রকল্প;
 
 
(৬) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে যে কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা দেশি বা বিদেশি সংস্থাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৭) ‘‘ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশ’’ অর্থ Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No.II of 1982)।
আইনের প্রাধান্য
৩। ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশ, তদধীন প্রণীত বিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা বিধিতে বিপরীত যাহা কিছুই থাকুক না কেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধান প্রাধান্য পাইবে।
প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ
৪। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোন ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হইলে, উহা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলিয়া গণ্য হইবে এবং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী উক্ত ভূমি, ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী অধিগ্রহণ করা যাইবে।
বিশেষ বিধান
৫। (১) প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ প্রদানের পর অধিগ্রহণাধীন ভূমির উপর জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে কোন ঘর-বাড়ি বা স্থাপনার বা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হইলে উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য কোন ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হইবে না।
 
 
(২) ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের ধারা ৮ এর অধীন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণকালে ডেপুটি কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির উপর নির্মিত বা নির্মাণাধীন কোন ঘর-বাড়ি বা অন্য কোন প্রকার স্থাপনা জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হইয়াছে বা নির্মাণাধীন রহিয়াছে বা একই উদ্দেশ্যে কোন ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা বা ভূমির শ্রেণির পরিবর্তন করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্তরূপ ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা বা পরিবর্তনকে উক্ত ধারা ৮ এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বিবেচনা করিবেন না এবং এইরূপ ক্ষতিপূরণের দাবি যদি থাকে, প্রত্যাখ্যান করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন দাবি প্রত্যাখ্যানের কারণে সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তি, প্রত্যাখ্যান আদেশ জারি হইবার ৭(সাত) দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কমিশনারের নিকট উক্ত প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।
 
 
(৪) কমিশনার, উপ-ধারা (৩) এর অধীন আপিল আবেদন প্রাপ্তির ৫(পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে আপিলের বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করিবেন এবং অতঃপর আপিলকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক অনধিক ৫ (পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে আপিলের বিষয়ে যথোপযুক্ত আদেশ প্রদান করিবেন।
 
 
(৫) এই আইনের অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশী সংস্থার নিকট হইতে অর্থ প্রাপ্তির ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা ওয়ার্ড কমিশনার বা কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রকাশ্যে পরিশোধ করিতে হইবে।
 
 
(৬) ভূমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশের ধারা ৩ এর অধীন নোটিশ জারির সময় সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক অধিগ্রহণাধীন ভূমির যে ভিডিও চিত্র গ্রহণ ও সংরক্ষণ করা হইয়াছে, উক্ত ভিডিও চিত্র এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এই আইনের অধীন গৃহীত ও সংরক্ষিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত ভিডিও চিত্রের ভিত্তিতে উক্ত ভূমির ক্ষতিপূরণ নির্ধারণপূর্বক উক্ত ক্ষতিপূরণ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(৭) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত কমিশনারের আদেশ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চূড়ান্ত হইবে।
 
 
(৮) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত আদেশে যদি আপিল নামঞ্জুর করা হয়, তাহা হইলে উক্তরূপ নামঞ্জুর আদেশ জারির ২৪(চবিবশ) ঘন্টার মধ্যে আপিলকারী সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা নিজ খরচ ও দায়িত্বে অপসারণ করিবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উক্ত ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা প্রকাশ্যে নিলাম বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করিবেন।
 
 
(৯) উপ-ধারা (২) এর অধীন ডেপুটি কমিশনার কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে যদি দাবিদার উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল দায়ের না করেন, তাহা হইলে উক্ত সময়ের পরবর্তী ২৪ (চবিবশ) ঘন্টার মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট ঘর-বাড়ি বা স্থাপনা অপসারণ করিবেন, অন্যথায় ডেপুটি কমিশনার উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
 
 
(১০) প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিগ্রহণাধীন কোন ভূমির মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে কাটিয়া বা অন্য কোন উপায়ে উক্ত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হইলে, উক্তরূপ পরিবর্তনের জন্য ভূমির কোন ক্ষতি হইলে সরকার সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকের নিকট হইতে উক্ত ক্ষতি বাবদ যথাযথ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করিতে পারিবে।
 
 
(১১) এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা গৃহীত কোন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন আদালত কোন মামলা বা দরখাস্ত গ্রহণ করিবে না এবং এই ধারার অধীন বা এই ধারা হইতে প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে গৃহীত বা গৃহীতব্য কোন কার্যক্রম সম্পর্কে কোন আদালত কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs