প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬

( ২০১৬ সনের ৩৬ নং আইন )

বেসরকারি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহদান, শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও সহায়তা প্রদান এবং সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও উহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রশাসনিক সমন্বয় সাধন ও উন্নততর সেবা প্রদানের নিমিত্ত বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারিকরণ কমিশন একীভূতকরণকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু বেসরকারি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহদান, শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও সহায়তা প্রদান এবং সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও উহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রশাসনিক সমন্বয় সাধন ও উন্নততর সেবা প্রদানের নিমিত্ত বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারিকরণ কমিশন একীভূতকরণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।
 
*এস, আর, ও নং ২৬৬-আইন/২০১৬, তারিখ: ২৩ আগস্ট, ২০১৬ ইং দ্বারা ১৭ ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে―
 
 
(১) ‘‘অনুমোদনপত্র’’ অর্থ বেসরকারি খাতে কোন শিল্প স্থাপনের বিষয়ে ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত অনুমোদনপত্র;
 
 
(২) ‘‘অনুমোদিত শিল্প’’ অর্থ ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন বেসরকারি খাতে অনুমোদিত কোন শিল্প;
 
 
(৩) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ;
 
 
(৪) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান;
 
 
(৫) ‘‘নির্বাহী চেয়ারম্যান’’ অর্থ নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান;
 
 
(৬) ‘‘নির্বাহী পরিষদ’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন গঠিত নির্বাহী পরিষদ;
 
 
(৭) ‘‘নির্বাহী সদস্য’’ অর্থ নির্বাহী পরিষদের সদস্য;
 
 
(৮) ‘‘নীতিমালা’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত নীতিমালা;
 
 
(৯) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(১০) বিধি অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(১১) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে বাংলাদেশের কোন নাগরিক, বিদেশি কোন নাগরিক, সংঘ, সমিতি, অংশীদারি কারবার এবং কোম্পানিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১২) ‘‘বেসরকারি খাত’’ অর্থ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কিংবা সরকারের জন্য সংরক্ষিত হিসাবে ঘোষিত নহে এইরূপ কোন শিল্প বা বাণিজ্যিক খাত;
 
 
(১৩) ‘‘সদস্য’’ অর্থ গভর্নিং বোর্ডের কোন সদস্য;
 
 
(১৪) ‘‘সচিব’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের সচিব; এবং
 
 
(১৫) ‘‘সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ-
 
 
(ক) কোন শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যাহা সরকারের মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন অথবা তদ্‌কর্তৃক স্থাপিত, প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত বা গঠিত কোন কর্পোরেশন, ট্রাস্ট, বোর্ড, কোম্পানি; অথবা
 
 
(খ) অন্য যে কোন প্রকারের প্রতিষ্ঠান যাহা সরকার হস্তান্তর করিবার অধিকারী; এবং
 
 
(গ) দফা (ক) এ উল্লিখিত শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং দফা (খ) এ উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে সরকারের বা উক্তরূপ প্রতিষ্ঠানের কোন অংশ, স্বত্ব, স্বার্থ বা পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার অধিকারসহ অন্য যে কোন অধিকারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ [Bangladesh Investment Development Authority (BIDA)] নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হইবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
কর্তৃপক্ষের কার্যালয়
৫। কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, যে কোন স্থানে ইহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
গভর্নিং বোর্ড
৬। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গভর্নিং বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(খ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী , যিনি ইহার ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(গ) শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঘ) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঙ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(চ) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ছ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(জ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঝ) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঞ) নির্বাহী চেয়ারম্যান;
 
 
(ট) গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক;
 
 
(ঠ) সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়;
 
 
(ড) সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ;
 
 
(ঢ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন;
 
 
(ণ) সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ; এবং
 
 
(ত) সরকার কর্তৃক মনোনীত বিশেষায়িত চেম্বারের ২ (দুই) জন প্রতিনিধি, যাহার মধ্যে ১ (এক) জন মহিলা থাকিবেন।
 
 
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান গভর্নিং বোর্ডের সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
(৩) গভর্নিং বোর্ড প্রয়োজনবোধে কোন ব্যক্তিকে সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।
 
 
(৪) গভর্নিং বোর্ড উহার সভায় কোন আলোচ্য বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখিতে সক্ষম এইরূপ যে কোন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
 
 
(৫) গভর্নিং বোর্ডের কোন সদস্য পদের শূন্যতা এবং বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে বোর্ডের কোন কার্যধারা অবৈধ হইবেনা এবং তদ্‌সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
গভর্নিং বোর্ডের সভা
৭। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, গভর্নিং বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
 
 
(২) গভর্নিং বোর্ডের সকল সভা, চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, উহার সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান গভর্নিং বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে গভর্নিং বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান এবং তাঁহাদের উভয়ের অনুপস্থতিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত কোন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৪) গভর্নিং বোর্ডের সভার কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।
 
 
(৫) গভর্নিং বোর্ডের সভায় উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে।
 
 
(৬) গভর্নিং বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার জন্য বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত কোন ব্যক্তি সভায় তাঁহার মতামত ব্যক্ত করিতে পারিবেন; তবে তাঁহার ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে না।
কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি
৮। কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি হইবে নিমরূপ, যথা:-
 
 
(১) বেসরকারি খাতে দ্রুত শিল্পায়নের উদ্দেশ্যে দেশি ও বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগে সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান;
 
 
(২) বেসরকারি খাতের শিল্পে পুঁজি বিনিয়োগ সংক্রান্ত সরকারের নীতি বাস্তবায়ন;
 
 
(৩) বেসরকারি খাতের শিল্প বিনিয়োগ-তফসিল প্রণয়ন এবং উক্ত খাতের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ;
 
 
(৪) বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপনের জন্য এলাকা-তফসিল প্রণয়ন এবং উক্ত এলাকার জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ;
 
 
(৫) বেসরকারি খাতে দেশি ও বিদেশি পুঁজি সংবলিত শিল্প প্রকল্প অনুমোদন ও নিবন্ধীকরণ;
 
 
(৬) বেসরকারি খাতে শিল্প বিনিয়োগের খাত ও সুযোগসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং দেশে ও বিদেশে উহার বহুল প্রচারের ব্যবস্থা;
 
 
(৭) বেসরকারি খাতে শিল্প বিনিয়োগ উন্নয়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কৌশল উদ্ভাবন ও উহার বাস্তবায়ন;
 
 
(৮) বেসরকারি খাতে শিল্পের অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টিকরণ;
 
 
(৯) বেসরকারি খাতের শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও কর্মচারী নিয়োগের শর্তাবলি নির্ধারণ;
 
 
(১০) বেসরকারি খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও পর্যায়ক্রমিক স্থানীয় উৎপাদনের নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;
 
 
(১১) বেসরকারি খাতে শিল্প-বিনিয়োগ-পুঁজি গঠনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(১২) সকল প্রকার শিল্প-উপাত্ত সংগ্রহ, সংকলন, বিশ্লেষণ, বিতরণ এবং তদুদ্দেশ্যে তথ্যভান্ডার (data bank) স্থাপন;
 
 
(১৩) সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ইহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য-
 
 
(ক) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে চিহ্নিতকরণ এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(খ) দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদান এবং ইহার আংশিক বা সম্পূর্ণ শেয়ার হস্তান্তর;
 
 
(গ) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং এতদ্‌সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ;
 
 
(ঘ) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদান এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত নীতিমালা অধিকতর ফলপ্রসূ ও কার্যকর করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা পরিচালনা করিয়া সরকারকে পরামর্শ প্রদান;
 
 
(ঙ) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদান সম্পর্কিত নীতিমালা বাস্তবায়নের সাফল্য মূল্যায়নপূর্বক প্রাপ্ত ফলাফল সম্পর্কে সরকারকে নিয়মিতভাবে অবহিতকরণ;
 
 
(চ) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হইলে উহা দূরীকরণের জন্য যে কোন আইনগত বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ছ) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদান সহজতর করিবার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পরামর্শ প্রদান।
 
 
(১৪) হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানকৃত সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন, পরিবীক্ষণ ও পর্যালোচনাপূর্বক সরকারকে নিয়মিতভাবে অবহিতকরণ;
 
 
(১৫) বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা, উপযোগিতা ও সুফল সম্পর্কে গবেষণা পরিচালনা ও তদ্‌সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিতকরণ; এবং
 
 
(১৬) সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত অন্যান্য কার্যক্রম।
নির্বাহী পরিষদ গঠন ও উহার কার্যাবলি
৯। (১) কর্তৃপক্ষের একটি নির্বাহী পরিষদ থাকিবে, যাহা একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও অনধিক ৬ (ছয়) জন নির্বাহী সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
 
 
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা, চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন।
 
 
(৪) নির্বাহী সদস্যগণ সরকারের অতিরিক্ত সচিব বা তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের মধ্য হইতে প্রেষণে নিযুক্ত হইবেন।
 
 
(৫) নির্বাহী পরিষদ-
 
 
(ক) কর্তৃপক্ষকে উহার কার্যাবলি সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করিবে;
 
 
(খ) গভর্নিং বোর্ডের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবে এবং জবাবদিহি করিবে; এবং
 
 
(গ) গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।
 
 
(৬) নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, ক্ষেত্রমত, শূন্য পদে নিযুক্ত নতুন নির্বাহী চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা নির্বাহী চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাহী পরিষদের জ্যেষ্ঠতম সদস্য নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
নির্বাহী পরিষদের সভা
১০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, নির্বাহী পরিষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
 
 
(২) নির্বাহী পরিষদের সকল সভা নির্বাহী চেয়ারম্যানের নির্দেশে সচিব কর্তৃক আহূত হইবে।
 
 
(৩) নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাহী পরিষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে নির্বাহী পরিষদের জ্যেষ্ঠতম সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৪) নির্বাহী পরিষদের সভার কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।
 
 
(৫) নির্বাহী পরিষদের সভায় উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে।
 
 
(৬) নির্বাহী পরিষদ উহার সভায় কোন আলোচ্য বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখিতে সক্ষম এইরূপ যে কোন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে, তবে তাঁহার ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে না।
সচিব
১১। (১) কর্তৃপক্ষের একজন সচিব থাকিবেন, যিনি সরকারের অতিরিক্ত সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণের মধ্য হইতে প্রেষণে নিযুক্ত হইবেন।
 
 
(২) সচিব-
 
 
(ক) নির্বাহী চেয়ারম্যানের অনুমতি সাপেক্ষে নির্বাহী পরিষদের সভা আহবান করিয়া নোটিশ জারি করিবেন;
 
 
(খ) নির্বাহী পরিষদের সভার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণ করিবেন;
 
 
(গ) কর্তৃপক্ষের হিসাব সংরক্ষণ, হিসাব বিবরণী প্রণয়ন ও হিসাব নিরীক্ষার ব্যবস্থা করিবেন;
 
 
(ঘ) কর্তৃপক্ষের বাজেট প্রণয়ন করিয়া অনুমোদনের জন্য পেশ করিবেন; এবং
 
 
(ঙ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক অর্পিত বা নির্দিষ্টকৃত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন।
কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মকর্তা, কর্মচারী ইত্যাদি
১২। (১) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
কমিটি
১৩। (১) কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদানের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
 
 
(২) কমিটির সদস্য সংখ্যা এবং উহার দায়িত্ব ও কার্যপদ্ধতি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
নিবন্ধীকরণ ও অনুমতি গ্রহণ
১৪। (১) আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার আওতাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বেসরকারি খাতে স্থাপিত সকল অনিবন্ধিত শিল্পকে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হইতে হইবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করিতে পারিবে।
 
 
(২) বিদেশে নিবন্ধিত বেসরকারি বাণিজ্যিক কোম্পানির বাংলাদেশ শাখা, লিয়াজোঁ ও রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস স্থাপনের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(৩) এই ধারার অধীন নিবন্ধিত বা অনুমতিপ্রাপ্ত যে কোন শিল্প উহার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রচলিত আইনে নির্ধারিত সকল সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হইবে।
বেসরকারি খাতে শিল্প প্রকল্প অনুমোদন, ইত্যাদি
১৫। (১) আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার আওতাধীন শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপনে ইচ্ছুক প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাঁহার প্রস্তাবিত শিল্প প্রকল্পের জন্য অনুমোদন চাহিয়া কর্তৃপক্ষের নিকট তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১)-এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন বিবেচনার সুবিধার্থে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং প্রস্তাবিত শিল্প প্রকল্প-সম্পর্কিত কোন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১)-এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন অনুমোদনযোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইলে কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি অনুমোদন করিবে এবং আবেদনকারীকে একটি অনুমোদনপত্র প্রদান করিবে এবং উক্ত অনুমোদনপত্রে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এবং উহাতে উৎপাদন শুরু করিবার সময়সীমা নির্ধারণ করিয়া দিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩)-এর অধীন কোন শিল্প প্রকল্প অনুমোদনকালে কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে, বিশেষ করিয়া, নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে, প্রাসঙ্গিকতা সাপেক্ষে, উহার সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের নিকট উহা প্রেরণ করিবে, যথা:-
 
 
(ক) বৈদেশিক ঋণ, সরবরাহকারী ঋণ (Supplier’s Credit) ও বিলম্বিত ঋণ এর পরিমাণ ও শর্তাবলি;
 
 
(খ) আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার আওতাধীন শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সরকার বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন শিল্প এলাকায় জমি বরাদ্দ;
 
 
(গ) বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানির সংযোগ প্রদানের সময়সীমা;
 
 
(ঘ) পয়ঃপ্রণালীর সংযোগ প্রদানের সময়সীমা;
 
 
(ঙ) সকল প্রকার টেলিযোগাযোগ স্থাপনের সময়সীমা;
 
 
(চ) আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের ক্ষেত্রে শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ছাড়করণের সময়সীমা;
 
 
(ছ) পরিবেশ দূষণ সম্পর্কিত ছাড়পত্র প্রদানের সময়সীমা; এবং
 
 
(জ) শিল্প স্থাপন ত্বরান্বিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যেক সিদ্ধান্ত সরকারি বা আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত প্রদানে ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং তদনুযায়ী উহা বাস্তবায়িত হইবে।
 
 
(৬) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের নিকট কোন সিদ্ধান্ত প্রেরণ করিলে উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ উক্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
 
 
(৭) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৬) এর অধীন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে যদি ব্যর্থ হয় বা অপারগ হয় তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পর্যালোচনাপূর্বক উক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকিবে।
 
 
(৮) কোন ব্যক্তি, কর্তৃপক্ষের পূ্র্বানুমতি ব্যতিরেকে, উপ-ধারা (৪) - এর অধীন প্রদত্ত কোন সুযোগ-সুবিধা সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রকল্প ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিতে পারিবেন না অথবা অনুমোদিত শিল্পের ধরন পরিবর্তন অথবা মালিকানার পরিবর্তন করিতে পারিবেন না।
 
 
(৯) অনুমোদিত শিল্প প্রকল্প কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত কোন কোম্পানি হইলে উহার মূলধন ইস্যুকরণ (issue of capital) ও শেয়ার বিক্রয় সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ সরকারের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব সম্পাদন করিতে পারিবে।
 
 
(১০) কোন শিল্প প্রকল্প উহার অনুমোদনপত্রে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এবং উৎপাদন শুরু করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধার সম্মুখীন হইলে উহা দূরীকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ সহায়তা প্রদান করিবে।
 
 
(১১) অনুমোদিত শিল্প প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সময় সময় প্রকল্প-উদ্যোক্তার নিকট হইতে প্রয়োজনীয় তথ্য তলব করিতে পারিবে।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস
১৬। (১) অনুমোদিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সেবা প্রদান দ্রুত নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস কেন্দ্র থাকিবে।
 
 
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিতকরণ কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করিবে।
 
 
(৩) ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিতকরণ কমিটি প্রয়োজন অনুসারে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিবে।
আমদানি স্বত্ব নির্ধারণ
১৭। (১) অনুমোদিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল ও মোড়ক-উপকরণ আমদানির জন্য আমদানি স্বত্বের প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কর্তৃপক্ষের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে আবেদন করিতে হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন বিবেচনার পর কর্তৃপক্ষ যে আমদানি স্বত্ব নির্ধারণ করিবে সেই স্বত্ব অনুযায়ী যাহাতে উক্ত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল ও মোড়ক-উপকরণ আমদানি করা যায় তজ্জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র প্রদান করিবে।
রয়্যালটি ও ফি
১৮। অনুমোদিত শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোন রয়্যালটি বা কারিগরি জ্ঞান বা কারিগরি সহায়তা ফি, ফ্রান্সাইজ ফি প্রদেয় হইলে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানকে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত রয়্যালটি বা ফি নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত রয়্যালটি বা ফি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদেয় হইবে।
অনুমোদন বাতিল
১৯। কোন অনুমোদিত শিল্প এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে বা অনুমোদনপত্রের কোন শর্ত ভঙ্গ করিলে কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার অনুমোদন বাতিল করিতে পারিবে।
পরিদর্শন, অনুসন্ধান, তদন্ত, শিল্প সংস্কার ইত্যাদি
২০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কর্তৃপক্ষ বা তদ্‌কর্তৃক নিযুক্ত কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান -
 
 
(ক) অনুমেদিত শিল্প প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিদর্শন করিতে পারিবে এবং উক্ত পরিদর্শনের রিপোর্ট কর্তৃপক্ষ বা সরকারের নিকট পেশ করিতে পারিবে; এবং
 
 
(খ) যে কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করিয়া উহা পরিদর্শন করিতে বা উহাতে কোন অনুসন্ধান বা তদন্ত পরিচালনা করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ প্রবেশ, পরির্দশন, অনুসন্ধান বা তদন্তের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন পরিদর্শন, অনুসন্ধান, তদন্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বা অন্যবিধ উপায়ে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করিয়া কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিতে জনস্বার্থে কোন সংস্কার আনয়ন প্রয়োজন মনে করিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটিকে যথাযথ নির্দেশ দিতে পারিবে।
শিল্প এলাকা ঘোষণা বা বিদ্যমান শিল্প এলাকা বা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন
২১। সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহাতে উল্লিখিত এক বা একাধিক এলাকাকে শিল্প এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে অথবা বিদ্যমান শিল্প এলাকা বা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করিতে পারিবে।
শিল্প এলাকার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ
২২। (১) ধারা ২১-এর অধীন ঘোষিত শিল্প এলাকায় অবস্থিত কোন ভূমি অনুমোদিত কোন শিল্প প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন হইলে উহা জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং তদুদ্দেশ্যে উহা Acquisition and Requisition of Immovable Property Ordinance, 1982 (Ordinance No. II of 1982) এর বিধান মোতাবেক অধিগ্রহণ করা যাইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অধিগ্রহণকৃত ভূমি যে উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা হইয়াছে সেই উদ্দেশ্য ব্যতীত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাইবে না।
 
 
(৩) সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবহারের অতিরিক্ত ভূমিতে উক্তরূপ শিল্প এলাকা স্থাপনের ক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হইবে না, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শিল্পায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মতামত গ্রহণপূর্বক চিহ্নিত করা হইবে এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ উহা বরাদ্দ প্রদান করিবে।
সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ইহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের প্রক্রিয়া
২৩। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন ও সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ইহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করিবে।
 
 
(২) সরকার বরাদ্দযোগ্য সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে সামগ্রিকভাবে উক্ত শিল্প বা প্রতিষ্ঠান বা উহার অংশবিশেষ, মেশিনারি বা অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনার তালিকা করিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত তালিকার সহিত সংশ্লিষ্ট সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও উহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত, উহার আনুমানিক মূল্য ও উহার সম্পদ ও দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট বর্ণনা সংযুক্ত থাকিবে।
 
 
(৪) নীতিমালার অধীন কর্তৃপক্ষ অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দযোগ্য সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট করিবে এবং সরকার কর্তৃক উপ-ধারা (২) এর অধীন তালিকাভুক্ত কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও উহার অব্যবহৃত মেশিনারী, জমি বা স্থাপনা এবং উপ-ধারা (৩) এর অধীন উহার আনুমানিক মূল্য উহার সম্পদ দায়-দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হইলে কর্তৃপক্ষ উহার হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
(৫) দেশি-বিদেশি আগ্রহী বিনিয়োগকারীগণ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উক্তরূপ সরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য বরাদ্দ গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং অব্যবহৃত জমি লীজ গ্রহণ করিতে পারিবেন।
 
 
(৬) কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সংঘবিধি এবং কোম্পানি আইনের বিধান মোতাবেক হস্তান্তর করা হইবে।
 
 
(৭) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হস্তান্তর মূল্য, গ্রহীতা কর্তৃক পরিশোধিতব্য দীর্ঘমেয়াদী ঋণসহ (যদি থাকে), অনধিক ১০০ (একশত) কোটি টাকা হইলে ইহার হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত করিতে পারিবে এবং হস্তান্তর মূল্য ১০০ (একশত) কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হইলে, হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(৮) কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট শেয়ার সরাসরি দরপত্রের মাধ্যমে বা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে হস্তান্তর করা যাইবে।
 
 
(৯) কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য হস্তান্তর বা বরাদ্দ প্রদান সংক্রান্ত চুক্তি প্রণয়নকালে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকগণ যাহাতে তাঁহাদের প্রাপ্য ন্যায্য পাওনা হইতে বঞ্চিত না হন সরকার সেই বিষয়ে প্রচলিত আইন ও এতদ্‌বিষয়ে অন্যান্য নীতি অনুসরণ করিয়া প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিবে।
হস্তান্তর বা বরাদ্দ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র
২৪। (১) কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং উহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ অথবা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহিত জড়িত এই জাতীয় অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিকট হস্তান্তর অথবা দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে গৃহীত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাইলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হস্তান্তরগ্রহীতা বা বরাদ্দগ্রহীতার সহিত প্রয়োজনীয় চুক্তিপত্র সম্পাদন করিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিপত্র কার্যকর করিবার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বা কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন গৃহীত পদক্ষেপ বা কার্যক্রম সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ বা কার্যক্রম বলিয়া গণ্য হইবে।
অর্জিত অর্থ
২৫। (১) কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ইহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ অথবা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর বা দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ কোন তফসিলি ব্যাংকে কর্তৃপক্ষের একটি পৃথক হিসাবে জমা হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অর্জিত অর্থ হইতে সংশ্লিষ্ট শিল্প বা প্রতিষ্ঠানের পূর্বের দায়-দেনা প্রচলিত আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হইবে এবং অবশিষ্ট অর্থ প্রজাতন্ত্রের সংযুক্ত তহবিলে জমা করিতে হইবে।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ব্যর্থতার কারণে হস্তান্তর প্রত্যর্পণ
২৬। কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে দখলসহ উহার সকল ইউটিলিটি বিল পরিশোধ সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের অনুকূলে প্রত্যর্পণ করিবে এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের সম্পদের কোন ক্ষয়-ক্ষতি হইলে বিধি অনুযায়ী সরকার উহা সমন্বয়পূর্বক চুক্তির শর্তানুসারে হস্তান্তরগ্রহীতাকে উহার মূল্য পরিশোধ করিবে।
চুক্তিপত্রের কোন শর্ত ভঙ্গ করিবার কারণে দখল গ্রহণ
২৭। কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের হস্তান্তর বা বরাদ্দ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রের কোন শর্ত লঙ্ঘিত হইলে উক্ত চুক্তিপত্র অনুসারে সরকার বা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির দখল গ্রহণ করিতে এবং প্রয়োজনবোধে উক্ত চুক্তিপত্র এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিল বাতিলসহ আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
ক্ষমতা অর্পণ
২৮। গভর্নিং বোর্ড লিখিত আদেশ দ্বারা, উহার যে কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব, নির্বাহী চেয়ারম্যান, নির্বাহী সদস্য, সচিব বা কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
কর্তৃপক্ষের তহবিল
২৯। (১) কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং যাহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত অর্থ; এবং
 
 
(খ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অন্য যে কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষের নামে তদ্‌কর্তৃক অনুমোদিত কোন তফসিলি ব্যাংকে উক্ত তহবিলের অর্থ জমা রাখা হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে।
 
 
ব্যাখ্যাঃ এই আইনে ‘‘তফসিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article 2 এর clause (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
 
 
(৩) তহবিল হইতে কর্তৃপক্ষের সমুদয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
বাজেট
৩০। কর্তৃপক্ষ প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ-বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে, তবে কর্তৃপক্ষ এর পৌনঃপুনিক ব্যয় নির্বাহে ক্রমান্বয়ে নিজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
৩১। (১) কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া উল্লিখিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টাড একাউন্টেন্ট দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউন্টেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপে নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।
 
 
(৪) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়াগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান, নির্বাহী সদস্য, সচিব অথবা কর্তৃপক্ষের যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
প্রতিবেদন
৩২। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে উক্ত বৎসরে তদ্‌কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
 
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে উহার যে কোন বিষয়ের উপরে প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
৩৫। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগ বোর্ড আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সালের ১৭ নম্বর আইন) এবং বেসরকারিকরণ আইন, ২০০০ (২০০০ সালের ২৫ নম্বর আইন) রহিত হইয়া যাইবে এবং উক্ত রহিতকৃত দুইটি আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত যথাক্রমে, বিনিয়োগ বোর্ড এবং বেসরকারিকরণ কমিশন বিলুপ্ত হইয়া যাইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১)-এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত রহিতকৃত আইনের অধীন কৃত কোন কাজ বা গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত, প্রণীত বিধি, প্রবিধান বা নীতিমালা, ইস্যুকৃত কোন আদেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোন অনুমোদনপত্র বা নোটিশ, নিবন্ধিত কোন শিল্প, সম্পাদিত হস্তান্তর দলিল বা চুক্তিপত্র, আহবানকৃত কোন দরপত্র বা চলমান কোন কাজ এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত, ইস্যুকৃত, প্রদত্ত, নিবন্ধিত, সম্পাদিত, আহবানকৃত বা চলমান বলিয়া গণ্য হইবে:
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বেসরকারিকরণ আইন, ২০০০ (২০০০ সালের ২৫ নম্বর আইন) এর অধীন বেসরকারিকরণের জন্য নির্দিষ্টকৃত কোন সরকারি শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং উহার অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা বেসরকারিকরণের পরিবর্তে অধিকতর উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ অথবা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর বা দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বরাদ্দ প্রদান করা যাইবে।
 
 
(৩) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্ত বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারিকরণ কমিশনের-
 
 
(ক) স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি এবং উক্ত সম্পত্তিতে বা উহা হইতে উদ্ভূত অন্য সকল অধিকার ও স্বার্থ, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, বিনিয়োগ, সকল হিসাব বহি, রেকর্ড এবং অন্যান্য দলিল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরিত এবং উহার উপর ন্যস্ত হইবে;
 
 
(খ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(গ) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুযায়ী উহা নিষ্পত্তি হইবে; এবং
 
 
(ঘ) সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে নিয়োজিত থাকিবেন এবং এইক্ষেত্রে কোন বিরোধ দেখা দিলে সরকার প্রচলিত বিধান অনুসারে উহা নিষ্পত্তি করিবে, তবে সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদিত হইবার পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থায় তাঁহারা কর্তৃপক্ষে নিযুক্ত থাকিবেন এবং সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদিত হইবার পর কাঠামো অনুসারে তাহাদের নিয়োগ বা পদায়ন হইবে এবং নূতন প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কাঠামোর সঙ্গে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী সঙ্গতিপূর্ণ না হইলে তাহার নিষ্পত্তি সরকারের উদ্বৃত্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী সংক্রান্ত বিধানের আওতায় করা হইবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs