প্রিন্ট ভিউ

চা আইন, ২০১৬

( ২০১৬ সনের ৩৮ নং আইন )

Tea Ordinance, 1977 রহিতক্রমে উহা পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ৩ক এবং ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং ১০৪৪-১০৪৫/২০০৯ এ সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (পঞ্চম সংশোধন) আইন, ১৯৭৯ (১৯৭৯ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং
 
 
 
 
যেহেতু ২০১৩ সনের ৬ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং
 
 
 
 
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
 
 
 
 
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Tea Ordinance, 1977 (Ordinance No. XXXVIII of 1977) এর বিষয়বস্তু বিবেচনাপূর্বক রহিতক্রমে উহা পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন চা আইন, ২০১৬ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১) ‘‘আমদানি বা রপ্তানি’’ অর্থ Imports and Exports (Control) Act, 1950 (Act No. XXXIX of 1950) এর section 2(c) তে সংজ্ঞায়িত import or export;
 
(২) ‘‘উপ-কর’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন আদায়কৃত উপ-কর;
 
 
(৩) ‘‘কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৩ এর অধীন বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক গঠিত কোন কমিটি;
 
 
(৪) ‘‘কর্মচারী’’ অর্থ বোর্ডের কর্মচারী, এবং যে কোন কর্মকর্তাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৫) ‘‘চা’’ অর্থ চা বর্জ্য ব্যতীত ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস বা ক্যামেলিয়া থিয়া গাছের পাতা অথবা বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোন গাছের পাতা ও তৎসংলগ্ন কচি কাণ্ড হইতে প্রস্তুত চা নামে পরিচিত পণ্য, এবং সবুজ চা-ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৬) ‘‘চা বীজ’’ অর্থে ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস বা ক্যামেলিয়া থিয়া অথবা বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোন গাছের বংশ বিস্তারের জন্য ব্যবহৃত হয় এমন বীজ, কাটিং, শিকড়, কুঁড়ি, জীবন্ত অংশ অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৭) ‘‘চা বর্জ্য’’ অর্থ চা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উপজাত হিসাবে প্রাপ্ত চায়ের ময়লা, ফেঁসো, আঁশ বা উহার যে কোন অবশিষ্টাংশ, যাহা চায়ের মত দেখায় কিন্তু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কালো চা এর ক্ষেত্রে আইএসও-৩৭২০, বিডিএসএস-৮০৮ এবং সবুজ চা এর ক্ষেত্রে বিডিএস আইএসও-১১২৮৭: ২০১২ অনুযায়ী চা এর গুণগত মানসম্পন্ন নয়;
 
 
(৮) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;
 
 
(৯) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(১০) ‘‘ফৌজদারি কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);
 
 
(১১) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ চা বোর্ড;
 
 
(১২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(১৩) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে কোন পাইকারি বা খুচরা বিক্রেতা বা এজেন্ট বা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বা অংশীদারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১৪) ‘‘বাগান’’ অর্থ ক্ষুদ্রায়তন বাগান ব্যতীত অন্য কোন চা বাগান বা উহার অংশবিশেষ;
 
 
(১৫) ‘‘মালিক’’ অর্থ কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের মালিক বা ইজারা গ্রহীতা, এবং মালিক বা ইজারা গ্রহীতা কর্তৃক নিয়োজিত এজেন্টও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১৬) ‘‘কাস্টমস কর্মকর্তা’’ অর্থ-
 
 
(ক) চা রপ্তানির ক্ষেত্রে, Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969), এর section 3 এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোন কাস্টমস কর্মকর্তা; এবং
 
 
(খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে, এই আইনের অধীন কাস্টমস কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;
 
 
(১৭) ‘‘সদস্য’’ অর্থ বোর্ডের সদস্য;
 
 
(১৮) ‘‘সচিব’’ অর্থ বোর্ডের সচিব; এবং
 
 
(১৯) “ক্ষুদ্রায়তন বাগান’’ অর্থ বাগান ব্যতীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত আয়তনের ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন চা বাগান।
বোর্ড প্রতিষ্ঠা
৩। (১) Tea Ordinance, 1977 (Ordinance No. XXXVIII of 1977) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ চা বোর্ড (Bangladesh Tea Board) এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
 
 
(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
বোর্ড গঠন, ইত্যাদি
৪। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) একজন চেয়ারম্যান;
 
 
(খ) ২ (দুই) জন সার্বক্ষণিক সদস্য;
 
 
(গ) চা বাগান রহিয়াছে এমন কোন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, পদাধিকারবলে;
 
 
(ঘ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চা বোর্ড সংশ্লিষ্ট যুগ্ম-সচিব, পদাধিকারবলে;
 
 
(ঙ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের চা বাগান সংশ্লিষ্ট যুগ্ম-সচিব, পদাধিকারবলে;
 
 
(চ) প্রধান বন সংরক্ষক, পদাধিকারবলে;
 
 
(ছ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশীয় চা সংসদ, পদাধিকারবলে;
 
 
(জ) চেয়ারম্যান, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, পদাধিকারবলে;
 
 
(ঝ) চা ব্রোকারদের মধ্য হইতে ১ (এক) জন সদস্য; এবং
 
 
(ঞ) চা উৎপাদনকারীদের মধ্য হইতে ২ (দুই) জন সদস্য।
 
 
(২) চেয়ারম্যান এবং উপ-ধারা (১) এর দফা (খ), (ঝ) ও (ঞ) তে উল্লিখিত সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং নিয়োগের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাধীনে স্বপদে বহাল থাকিবেন এবং পুনরায় নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান এবং উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) তে উল্লিখিত সদস্যগণ বোর্ডের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন।
 
 
(৪) চেয়ারম্যান বা পদাধিকারবলে নিযুক্ত সদস্যগণ ব্যতীত অন্য যে কোন সদস্য যে কোন সময় সরকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে পদত্যাগ করিতে পারিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কর্তৃক উক্ত পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত উহা কার্যকর হইবে না।
 
 
(৫) সরকার, যে কোন সময়, কোন প্রকার কারণ না দর্শাইয়া লিখিত আদেশের মাধ্যমে পদাধিকারবলে নিযুক্ত সদস্যগণ ব্যতীত চেয়ারম্যান ও যে কোন দস্যের নিয়োগ বাতিল করিতে পারিবে।
 
 
(৬) বোর্ডের কোন কার্য বা কার্যধারা কেবল বোর্ডের কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
বোর্ডের সভা
৫। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৪) চেয়ারম্যান ও অন্যূন ৪ (চার) জন সদস্যের উপস্থিতিতে বোর্ডের সভার কোরাম গঠিত হইবে।
 
 
(৫) বোর্ডে উপস্থাপিত যে কোন বিষয়ে সভায় উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে।
 
 
(৬) বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৭) বোর্ডের সিদ্ধান্তসমূহ অনতিবিলম্বে সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
প্রধান নির্বাহী
৬। চেয়ারম্যান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং বোর্ডের কার্যাবলীর দক্ষ ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য দায়ী থাকিবেন।
বোর্ডের কার্যাবলী
৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ডের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
 
(ক) চা শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(খ) চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(গ) চায়ের আমদানি পরিবীক্ষণ, রপ্তানি ও বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা;
 
 
(ঘ) বিভিন্ন প্রকার চায়ের গুণগতমান নির্ধারণ এবং চায়ের গুণগতমান উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ঙ) চা আস্বাদনের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(চ) চায়ের উৎপাদনকারী, প্রস্তুতকারক বা ব্যবসায়ী অথবা চা ও চা শিল্পের সহিত সংশ্লিষ্ট অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হইতে তথ্যাদি সংগ্রহ;
 
 
(ছ) চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি ও গুণগতমান উন্নয়নের জন্য চা চাষাবাদ ও চা শিল্প সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা করা এবং প্রদর্শনী খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;
 
 
(জ) চায়ের জন্য ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ দমনে সহায়তা;
 
 
(ঝ) ক্ষুদ্রায়তন বাগানের চা উৎপাদনকারীদের মধ্যে সমবায়ী কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
 
 
(ঞ) চা চাষাবাদ ও বাগান ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণ এবং বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ট) চা এবং অন্যান্য অর্থকরী ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ এবং প্রদর্শনী খামার ও উৎপাদন কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
 
 
(ঠ) চায়ের উৎপাদনকারী, প্রস্তুতকারক বা ব্যবসায়ী অথবা চা ও চা শিল্পের সহিত সংশ্লিষ্ট অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হইতে তথ্যাদি সংগ্রহ;
 
 
(ড) বাগান ও কারখানা নিবন্ধীকরণ এবং বাগান মালিক, চা প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক, ব্লেন্ডার, বিডার, ব্রোকার, চা বর্জ্য বিক্রেতা এবং পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাগণকে লাইসেন্স প্রদান;
 
 
(ঢ) সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী যে কোন ব্যবসার দায়িত্বভার গ্রহণ করা অথবা যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অর্জন, গ্রহণ বা পরিচালনা;
 
 
(ণ) নূতন বাগান প্রতিষ্ঠা করাসহ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিত্যক্ত বাগান গ্রহণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সাধারণভাবে বিদ্যমান বাগানগুলিকে উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
 
 
(ত) বাগানের চা চাষ বহির্ভূত অতিরিক্ত জমির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(থ) বাগানের শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থাদি গ্রহণ; এবং
 
 
(দ) বাংলাদেশের চা শিল্পের উন্নয়নের স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্দেশিত অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ।
 
বোর্ডের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ
৮। (১) বোর্ডের উপর সরকারের সাধারণ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ থাকিবে, এবং বোর্ড উহার কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত সাধারণ বা বিশেষ নির্দেশনাবলী দ্বারা পরিচালিত হইবে।
 
 
(২) সরকার, উপযুক্ত মনে করিলে, বোর্ডের যে কোন কার্য বাতিল, স্থগিত বা সংশোধন করিতে পারিবে, এবং বোর্ডের রেকর্ডপত্র সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তার পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকিবে।
 

তৃতীয় অধ্যায়

বোর্ডের ক্ষমতা

চা উপ-কর আরোপ
৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মালিকদের নিকট হইতে বাংলাদেশে উৎপাদিত সকল চায়ের বিক্রয় মূল্যের উপর সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত উপ-কর আরোপ ও আদায় করিতে পারিবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নির্দিষ্টকৃত উপ-করের হার ১০% (শতকরা দশ ভাগ) এর অধিক হইবে না।
 
 
উপ-কর বাবদ প্রাপ্ত অর্থের ব্যবহার
১০। (১) উপ-কর বাবদ আদায়কৃত অর্থ বোর্ডের হিসাবে জমা করা হইবে।
 
 
(২) বোর্ড কর্তৃক নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে উক্ত অর্থ ব্যয় করা যাইবে, যথা:-
 
 
(ক) বোর্ডের কার্যক্রম সম্পাদনের ব্যয় নির্বাহ;
 
 
(খ) চা সম্পর্কিত কোন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদা প্রদান; এবং
 
 
(গ) কর্মচারীদের কল্যাণার্থে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে গঠিত ও পরিচালিত প্রদেয় ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা ও আনুতোষিক প্রদান।
 
 
(৩) বোর্ড, এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধির বিধান সাপেক্ষে, উপ-ধারা (১) এর ক্ষমতার আওতায় যে কোন উদ্দেশ্যে জামানত হিসাবে উহার তহবিল বা অন্য কোন সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
সরকার কর্তৃক বোর্ডকে অনুদান ও ঋণ প্রদান
১১। (১) সরকার বোর্ডকে ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য অনুদান অথবা ঋণ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) সরকার, তদ্‌কর্তৃক আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে, বোর্ডকে বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগান বা চা কারখানার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান অথবা কোম্পানিকে রেয়াতি হারে ঋণ প্রদান এবং উহার বাগানসমূহের সম্পদের বিপরীতে ব্যাংক হইতে ঋণ গ্রহণ করিবার ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।
হিসাবরক্ষণ, নিরীক্ষা ও বার্ষিক প্রতিবেদন
১২। (১) বোর্ড, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে উহার নিয়মিত আয় ও ব্যয়ের হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত ও প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া অভিহিত, প্রতি বৎসর বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি কপি বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
 
(৩) বোর্ড প্রতি অর্থ বৎসরের শেষে, যথাশীঘ্র সম্ভব, নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ উহার কার্যাবলীর বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।
কমিটি গঠন
১৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, আদেশ দ্বারা, উহার কাজের সহায়তার জন্য প্রয়োজনবোধে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ কমিটির সদস্য সংখ্যা, দায়িত্ব, কার্যধারা ও মেয়াদ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
বাগান বিক্রয় বা হস্তান্তর করার ক্ষমতা
১৪। বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, তদ্‌কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বা পুনর্বাসিত বাগান যে কোন বাংলাদেশি নাগরিক, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নিকট বিক্রয় বা হস্তান্তর করিতে পারিবে।
কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১৫। (১) বোর্ড উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) সচিবসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
বাগান মালিকদেরকে চা আবাদের নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা, ইত্যাদি
১৬। (১) বোর্ড, সাধারণ অথবা বিশেষ আদেশ দ্বারা, কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের মালিককে, সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চা উৎপাদনের জন্য, উক্ত বাগানে প্রতি বৎসর উক্ত আদেশে উল্লিখিত ন্যূনতম পরিমাণ এলাকায় চা আবাদ বা পুনরাবাদসহ কিভাবে উক্ত চা আবাদ বা পুনরাবাদ করিতে হইবে সেই ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত নির্দেশনায় কত বৎসর পর্যন্ত চা গাছ রাখা যাইবে, কিভাবে চা আবাদ বা পুনরাবাদ করিতে হইবে অথবা কী পরিমাণ শূন্যস্থান রাখা যাইবে সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা থাকিবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ড, দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে প্রয়োজন মনে করিলে, সাধারণ অথবা বিশেষ আদেশ দ্বারা, কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের মালিককে উক্ত বাগানে প্রতি বৎসর উক্ত আদেশে উল্লিখিত ন্যূনতম পরিমাণ এলাকায় ছায়াগাছ রোপণ করিবার অথবা বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরীক্ষাপূর্বক চা চাষের জন্য অনুপযোগী জমিতে অন্যান্য ফসল চাষ করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(৪) কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের মালিক বা বাগান সংশ্লিষ্ট কোন কোম্পানির পরিচালক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা উপ-ধারা (১), (২) অথবা (৩) এর অধীন যে নির্দেশনা প্রদান করা হইয়াছে উহা প্রতিপালন না করা পর্যন্ত প্রতি বৎসর প্রতি একর বাবদ ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা হারে প্রশাসনিক জরিমানা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত হারে মোট প্রশাসনিক জরিমানার পরিমাণ সচিব কর্তৃক নির্ধারণ করা হইবে এবং উপ-ধারা (১), (২) ও (৩) এর অধীন নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ বাগান মালিককে বা উক্ত কোম্পানির পরিচালক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে কেন নির্ধারিত প্রশাসনিক জরিমানা পরিশোধের আদেশ দেওয়া হইবে না ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহার কারণ ব্যাখ্যা করিবার জন্য প্রশাসিনক জরিমানার পরিমাণ উল্লেখপূর্বক সচিব সংশ্লিষ্ট বাগান মালিককে বা উক্ত কোম্পানির পরিচালক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে নোটিশ প্রদান করিবেন।
 
 
(৬) প্রশাসনিক জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণের বিষয়ে কোন আপত্তি থাকিলে নোটিশ জারির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের বরাবরে আপিল করা যাইবে এবং উক্তরূপ আপিলের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৭) আপিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে সচিব কর্তৃক প্রশাসনিক জরিমানার পরিমাণ পুনঃনির্ধারিত হইবে এবং উহা পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে পরিশোধ করিতে সংশ্লিষ্ট বাগান মালিক বা উক্ত কোম্পানির পরিচালক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বাধ্য থাকিবে।
 
 
(৮) এই ধারার বিধান অনুসারে প্রশাসনিক জরিমানার অর্থ পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে, উক্ত প্রশাসনিক জরিমানার অর্থ সরকারি পাওনা বা বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসাবে Public Demands Recovery Act, 1913 এর বিধান অনুযায়ী আদায় করা হইবে।
জমির অবৈধ ব্যবহার রোধ করিবার ক্ষমতা
১৭। আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ড এই আইনের উদ্দেশ্যের পরিপন্থি কোন কাজে বাগানের জমি ব্যবহার না করিবার আদেশ জারি করিতে পারিবে।
রপ্তানি বরাদ্দ
১৮। (১) বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রতি বৎসর ১ জানুয়ারি হইতে ৩১ ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে চায়ের রপ্তানি বরাদ্দ নির্দিষ্ট করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্দিষ্টকৃত রপ্তানি বরাদ্দ নিলামের মাধ্যমে ক্রয়কৃত চা হইতে বোর্ড কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত পদ্ধতিতে রপ্তানি করা যাইবে।
 
 
চা রপ্তানি
১৯। (১) চা রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিকারককে ধারা ২১ এর বিধান অনুযায়ী বোর্ড হইতে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।
 
 
(২) বোর্ড, বিশেষ অবস্থায়, কোন ক্রেতাকে নিলামে ক্রয়কৃত চায়ের পরিবর্তে নিলাম বহির্ভূত অন্য কোনভাবে ক্রয়কৃত চা রপ্তানির অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
চা নিলাম
২০। (১) কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানে উৎপাদিত বিক্রয়যোগ্য চা হইতে বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের মালিক কর্তৃক সরাসরি বিক্রয়কৃত চা ও সরাসরি রপ্তানিকৃত চা ব্যতীত সকল চা এতদুদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের জন্য বোর্ড নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) বোর্ড কোন বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানে প্রতি বৎসর উৎপাদিত চা হইতে কি পরিমাণ চা মালিক সরাসরি বিক্রয় করিতে পারিবে উহা নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।
 
 
(৩) বোর্ডের পূর্বানুমতি গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন মালিক বাগান বা ক্ষুদ্রায়তন বাগানে উৎপাদিত চা সরাসরি বিক্রয় বা রপ্তানি করিতে পারিবে না।
চা ও চা বীজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ
২১। (১) বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও শর্তে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত লাইসেন্স ব্যতীত কোন চা ও চা বীজ রপ্তানি করা যাইবে না।
 
 
(২) এই ধারার শর্তাদি ভঙ্গ করা হইলে উহা Customs Act, 1969 (Act IV of 1969) এর section 156 এর item no. 8 এর অধীন অপরাধ হিসাবে দণ্ডযোগ্য হইবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে উক্ত Act এর secton 157 এর বিধান এবং Chapter XVIII এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
চা আমদানি
২২। (১) চা আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারককে প্রত্যেক কনসাইনমেন্ট এর জন্য জাহাজিকরণের পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তথ্যাদি সরবরাহপূর্বক বোর্ড হইতে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।
 
(২) আমদানিকারককে আমদানিকৃত চায়ের চালান কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক খালাসের পর ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে রপ্তানিকারক দেশের নাম, চায়ের গ্রেড, পরিমাণ, আমদানি মূল্য ও ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্যাদি বোর্ডে প্রেরণ করিতে হইবে।
 
চুক্তি নিবন্ধীকরণ
২৩। বোর্ড, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, রপ্তানির উদ্দেশ্যে চা বিক্রয়ের জন্য এইরূপ প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পাদিত কোন চুক্তি বা যে কোন শ্রেণির চুক্তি উক্ত আদেশে উল্লিখিত পদ্ধতিতে নিবন্ধীকরণের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
পরিবহণ, গুদামজাতকরণ বা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণের ক্ষমতা
২৪। বোর্ড, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও শর্ত প্রতিপালন ব্যতীত কোন চা অথবা বিশেষভাবে চিহ্নিত কোন চা পরিবহণ, গুদামজাতকরণ, ক্রয়, বিক্রয় বা অন্য কোনভাবে নিষ্পত্তি না করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
নিবন্ধীকৃত কারখানা ব্যতিরেকে চা প্রস্তুত নিষিদ্ধকরণ
২৫। (১) কোন ব্যক্তি নিবন্ধীকৃত চা কারখানা ব্যতীত চা প্রস্তুত করিতে পারিবে না।
 
 
(২) কোন ব্যক্তি নিবন্ধীকৃত কারখানায় চা প্রস্তুত ব্যতীত অন্য কোন স্থানে চা রাখিতে, গুদামজাত করিতে, ক্রয়, বিক্রয় বা ক্রয়ের জন্য সম্মত হইতে বা বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব করিতে পারিবে না।
 
এই আইনের কতিপয় বিধান প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা
২৬। এই আইনের ধারা ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ এর বিধানের কোন কিছুই নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যদি-
 
 
(ক) কাস্টমস কর্মকর্তার সন্তুষ্টিক্রমে বাংলাদেশের বাহিরের কোন দেশ হইতে বাংলাদেশে চা আমদানি করা হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হয়;
 
 
(খ) যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে কোন জলযানের নাবিক ও যাত্রীর সংখ্যা এবং যাত্রা পথের দূরত্ব বিবেচনাক্রমে যে পরিমাণ চা কাস্টমস কর্মকর্তার নিকট যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ বলিয়া বিবেচিত হয়; অথবা
 
 
(গ) ডাকযোগে অথবা বিমানযোগে অনধিক দশ কেজি ওজনের চা এর প্যাকেটে নমুনা হিসাবে রপ্তানি করা হয়।
 
তথ্য তলবের ক্ষমতা, ইত্যাদি
২৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, আদেশ দ্বারা, সংশ্লিষ্ট মালিক, ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে উক্ত আদেশে তাহাদের চা চাষ, উৎপাদন, চা প্রস্তুত, ক্রয়, বিক্রয়, আমদানি, রপ্তানি বা অন্যান্য ব্যবসা সংক্রান্ত হিসাব সংরক্ষণ এবং অনুরূপ বিবরণী বা অন্য কোন তথ্যাবলী বোর্ড অথবা বোর্ডের অধীনস্থ কোন কর্মকর্তার নিকট বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরবরাহ করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) বোর্ড কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোন ব্যক্তি অথবা চেয়ারম্যান কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত বোর্ডের কোন সদস্য বা বোর্ডের কোন কর্মকর্তা যুক্তিসংগত সময়ে যে কোন বাগানে অথবা চা বা চা বর্জ্য প্রস্তুত, গুদামজাত, বা বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন করা হয় এইরূপ যে কোন স্থানে বা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিতে এবং উক্তরূপ স্থানে রক্ষিত কোন বহি, রেজিস্টার, রেকর্ড বা অন্য কোন কাগজপত্র তাহার পরিদর্শনের জন্য তলব করিতে পারিবেন এবং চা চাষ, উৎপাদন, প্রস্তুতকরণ, গুদামজাতকরণ, অথবা চা বা চা বর্জ্য বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য চাহিতে পারিবেন।
 

চতুর্থ অধ্যায়

অপরাধ ও দণ্ড

মিথ্যা বিবৃতি প্রদান
২৮। যদি কোন ব্যক্তি,-
 
 
(ক) এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা কোন বিবরণী প্রদান বা তথ্যাদি সরবরাহ করিয়া থাকেন, যাহা বাস্তবে মিথ্যা বা মিথ্যা বলিয়া তিনি জানিতেন, বা মিথ্যা অথবা সত্য নয় বলিয়া তিনি জানিতেন বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসত কারণ রহিয়াছে, অথবা
 
 
(খ) কোন বহি, হিসাব রেকর্ড, ঘোষণা, বিবরণী অথবা অন্য কোন দলিলাদি, যাহা উক্ত আদেশ দ্বারা তিনি সংরক্ষণ বা প্রদান করিতে বাধ্য উহাতে এইরূপ কোন বিবৃতি প্রদান করেন, অথবা
 
 
(গ) বহি, হিসাব অথবা অন্য কোন রেকর্ড দুই সেট করিয়া সংরক্ষণ করেন, যাহার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয়াদি অভিন্ন নয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কর্মকাণ্ড হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি ধারা ২৯ এ বর্ণিত দণ্ডে দন্ডিত হইবেন।
দণ্ড
২৯। যদি কোন ব্যক্তি-
 
 
(ক) ধারা ১৬ ও ২১ ব্যতীত এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করেন, বা
 
 
(খ) এই আইনের অধীন জারীকৃত কোন আদেশ বা নির্দেশ প্রতিপালন করিতে ব্যর্থ হন, বা
 
 
(গ) বোর্ডের কোন কর্মকর্তাকে কর্তব্য সম্পাদনে বাধা প্রদান করেন বা উক্ত কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র প্রদর্শন না করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কাজ হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কিন্তু অন্যূন ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা ক্ষুদ্রায়তন বাগানের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা কিন্তু অন্যূন ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা এবং বাগানের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা কিন্তু অন্যূন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডিত হইবে।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ ও বিচার
৩০। (১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ড বা বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির নিকট হইতে লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন মামলা বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।
 
 
(২) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
অপরাধের আমলযোগ্যতা
৩১। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) হইবে।
মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার
৩২। এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ, যেক্ষেত্রে যতটুকু প্রযোজ্য, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত করিয়া বিচার করা যাইবে।
অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা
৩৩। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তির উপর ধারা ২৯ এর অধীন অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।
কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩৪। (১) কোন কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত ব্যক্তিস্বত্বা (Body Corporate) হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে ফৌজদারী মামলায় উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে কেবল অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।
 
 
ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-
 
 
(ক) ‘‘কোম্পানি’’ অর্থে যে কোন সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ হউক বা না হউক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থা বা এজেন্টও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
 
 
(খ) ‘‘পরিচালক’’ অর্থে উহার কোনো অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এর সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।

পঞ্চম অধ্যায়

বিবিধ

অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা
৩৫। সরকার, আদেশ দ্বারা, যে কোন ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিবর্গকে অনুরূপ আদেশে উল্লিখিত মেয়াদে ও শর্তে এই আইনের সকল অথবা যে কোন বিধান পালন হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৭। এই আইন এবং বিধির সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩৮। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
৩৯। (১) Tea Ordinance, 1977 (Ordinance No. XXXVIII of 1977), অতঃপর রহিত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত Ordinance এর অধীন-
 
 
(ক) কৃত কোন কাজ-কর্ম গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা সূচিত কোন কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(খ) Bangladesh Tea Board, অতঃপর উক্ত Board বলিয়া উল্লিখিত, কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন মামলা, গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা সূচিত কোন কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে;
 
 
(গ) উক্ত Board কর্তৃক সম্পাদিত কোন চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে;
 
 
(ঘ) উক্ত Board এর সকল প্রকার ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে বোর্ডের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে;
 
 
(ঙ) কোন চুক্তি বা চাকরির শর্তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে উক্ত Board এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, তাহারা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে বোর্ডের চাকরিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন; এবং
 
 
(চ) উক্ত Board এর সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, ফি, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, তহবিল, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও সিকিউরিটিসহ সকল হিসাব এবং এতদসংশ্লিষ্ট সকল হিসাব বই, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্রসহ অন্যান্য সকল দলিল-দস্তাবেজ এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডের নিকট হস্তান্তরিত হইবে এবং বোর্ড উহার অধিকারী হইবে।
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত Ordinance এর অধীন প্রণীত কোন বিধি, প্রবিধান বা উপ-আইন, জারীকৃত কোন প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোন আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, প্রণীত সকল পরিকল্পনা বা কার্যক্রম এবং অনুমোদিত সকল হিসাব বিবরণী ও বার্ষিক প্রতিবেদন উক্তরূপ রহিতের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে, এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারীকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs