প্রিন্ট ভিউ

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭

( ২০১৭ সনের ৩ নং আইন )

Civil Aviation Authority Ordinance, 1985 রহিতপূর্বক সময়োপযোগী করে নূতনভাবে প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং

 
 
 
 

যেহেতু ২০১৩ সনের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং

 
 
 
 

যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং

 
 
 
 

যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Civil Aviation Authority Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXXVIII of 1985) রহিতপূর্বক সময়োপযোগী করে নূতনভাবে প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 
 
 

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

 

প্রথম অধ্যায়

সাধারণ বিধানাবলি

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ
১। (১) এই আইন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
(৩) এই আইন প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যবহারের জন্য স্থাপিত কোনো বিমানবন্দর, বিমানঘাঁটি, বিমানঅঙ্গন বা উহাদের সহিত সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এবং বিষয়াদির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১) ‘‘আইসিএও’’ অর্থ শিকাগো কনভেনশনের অধীন প্রতিষ্ঠিত International Civil Aviation Organization;
 
 
(২) ‘‘এয়ার নেভিগেশন অর্ডার’’ বা ‘‘এএনও’’ অর্থ এই আইনের অধীন এ্যারোনটিক্যাল ও নন-এ্যারোনটিক্যাল বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জারীকৃত আদেশ;
 
 
(৩) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ;
 
 
(৪) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
 
(৫) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১৮ এর অধীন গঠিত কর্তৃপক্ষের তহবিল;
 
 
(৬) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(৭) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(৮) ‘‘বিমান’’ অর্থ যে কোনো যন্ত্র, যাহা বাতাসের প্রতিঘাত, ভূ-পৃষ্ঠের বিপরীতে নহে, দ্বারা বায়ুমন্ডলে ভর করিয়া ভাসিতে পারে, যাহাতে বদ্ধ বা মুক্ত বেলুন, এয়ার শিপ, ঘুড়ি, ড্রোন, গ্লাইডার, এবং উড্ডয়নরত যন্ত্র অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৯) ‘‘বিমানঘাঁটি’’ অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বিমান অবতরণা বা আগমন, উড্ডয়ন বা প্রস্থান এবং ভূমিতে চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সুনির্দিষ্ট কোনো স্থল বা জলভাগ এবং কোনো ইমারত, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১০) ‘‘বিমান পরিবহন সেবা’’ অর্থ আকাশপথে যাত্রী, পণ্য, ডাক ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোনো সেবা;
 
 
(১১) ‘‘বিশেষ পরিদর্শক’’ অর্থ পরিদর্শন কাজে বিশেষভাবে পারদর্শী এমন পরিদর্শক;
 
 
(১২) ‘‘বিমানবন্দর’’ অর্থ কোনো বিমানঘাঁটি, যেখানে বেসামরিক বিমান চলাচলের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন করা হইয়াছে;
 
 
(১৩) ‘‘বেসামরিক বিমান’’ অর্থ রাষ্ট্রীয় বিমান ব্যতীত অন্য কোনো বিমান;
 
 
(১৪) ‘‘বেসামরিক বিমান চলাচল’’ অর্থ সাধারণ বা বাণিজ্যিক বিমান চলাচল অথবা এরিয়াল কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে কোনো বেসামরিক বিমান পরিচালনা;
 
 
(১৫) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন গঠিত বোর্ড;
 
 
(১৬) ‘‘শিকাগো কনভেনশন’’ অর্থ ১৯৪৪ সালে আমেরিকার শিকাগোয় সম্পাদিত Convention on International Civil Aviation;
 
 
(১৭) ‘‘সদস্য’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের সদস্য।
 

দ্বিতীয় অধ্যায়

কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি

কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, Civil Aviation Authority Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXXVIII of 1985) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (Civil Aviation Authority) এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি
৪। কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
 
(ক) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, বাংলাদেশের সকল বেসামরিক বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটিসহ উহাদের পারিপার্শ্বিক আকাশসীমার ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা, নির্মাণ, পরিচালনা ও মেরামত এবং বাংলাদেশের আকাশসীমায় চলাচলযোগ্য সকল আকাশপথ নিয়ন্ত্রণ;
 
 
(খ) নিম্নবর্ণিত বিষয়ে পরিকল্পনা বা কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন-
 
 
(অ) এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং এয়ার নেভিগেশন সেবা;
 
 
(আ) দেশের বেসামরিক বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটিতে এ্যারোনটিক্যাল যোগাযোগ সেবা প্রদান;
 
 
(ই) নন-এ্যারোনটিক্যাল এবং অন্যান্য এ্যারোনটিক্যাল সম্পর্কিত সেবা;
 
 
(ঈ) ফ্লাইট পরিদর্শন এবং সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত তদারকি;
 
 
(উ) অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম সেবা প্রদান;
 
 
(ঊ) বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটিতে বিমান বিধ্বস্ত, বিমানে অগ্নিকান্ড ও উদ্ধার কার্যক্রমে সেবা প্রদান;
 
 
(ঋ) বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা;
 
 
(এ) বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা;
 
 
(ঐ) বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটির সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা;
 
 
(ও) ব্যক্তি মালিকানাধীন বিমানবন্দর ও বিমানঘাঁটি অথবা হেলিপোর্টের দক্ষ পরিচালনা;
 
 
(ঔ) বিমান চলাচল চুক্তি;
 
 
(গ) নিরাপদ, কার্যকর, পর্যাপ্ত, সাশ্রয়ী ও যথাযথ সমন্বিত বেসামরিক বিমান চলাচল সেবার উন্নতি ও অবকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের অনুমোদনের জন্য, সময় সময়, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন;
 
 
(ঘ) কোনো পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য সরকারের স্থানীয় কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার পরামর্শ ও সহায়তা যাচনা এবং গ্রহণ;
 
 
(ঙ) প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদন, তদন্ত, পরিচালনা এবং আদেশ জারি;
 
 
(চ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, শিকাগো কনভেনশনের পক্ষভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের সহিত বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন;
 
 
(ছ) জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে ও ব্যবহারের পক্ষে সর্বোচ্চ সুবিধাজনক পন্থায় এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান, এএনও, আদেশ, নির্দেশনা, সার্কুলার, ইত্যাদি প্রকাশ;
 
 
(জ) পর্যবেক্ষণ, জরিপ, পরীক্ষা বা কারিগরি গবেষণা করা বা করানো এবং তদ্‌কর্তৃক অনুরোধের প্রেক্ষিতে কোনো সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত উক্তরূপ পর্যবেক্ষণ, জরিপ, পরীক্ষা বা কারিগরি গবেষণার ব্যয় বহন;
 
 
(ঝ) সরকারের অনুমোদিত যে কোনো পূর্ত কাজের উদ্যোগ গ্রহণ, ব্যয় বহন, পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞের সেবা ক্রয় এবং উহার ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন, স্থাপনা, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ক্রয়;
 
 
(ঞ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশনা সাপেক্ষে, উহার উপর অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন;
 
 
(ট) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় অন্য যে কোনো কার্য সম্পাদন।
 
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্য
৫। (১) কর্তৃপক্ষের একজন চেয়ারম্যান ও ছয়জন সদস্য থাকিবে।
 
 
(২) চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন এবং তাহারা সরকার কর্তৃক নিযুক্তকৃত হইবেন এবং তাহাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৪) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনো সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবে।
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যপদে নিয়োগ প্রাপ্তির যোগ্যতা, অপসারণ ও পদত্যাগ
৬। (১) কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন না বা চেয়ারম্যান বা সদস্য থাকিতে পারিবেন না, যদি তিনি
 
 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;
 
 
(খ) সরকারি চাকরি হইতে চাকরিচ্যূত হন;
 
 
(গ) নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;
 
 
(ঘ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(ঙ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(চ) কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ খেলাপি হিসাবে ঘোষিত হন;
 
 
(ছ) বিমান চলাচল ব্যবস্থাপনা বা অনুরূপ কারিগরি বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন না হন; বা
 
 
(জ) কোনো এ্যারোনটিক্যাল এন্টারপ্রাইজ বা বিমান চলাচল সংক্রান্ত এন্টারপ্রাইজের কোনো স্টক বা বন্ডের মালিক হন অথবা উহার সহিত আর্থিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা কোনো ব্যবসা, বৃত্তিমূলক কাজ বা নিয়োগের সহিত সম্পৃক্ত থাকেন।
 
 
(২) সরকার, যে কোনো সময়, চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-
 
 
(ক) এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন বা সরকারের বিবেচনায় অক্ষম হন; অথবা
 
 
(খ) সরকারের বিবেচনায়, তাহার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্য তাহার মেয়াদ পূর্ণ হইবার পূর্বে সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
 
চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের দায়-দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা
৭। (১) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ নিম্নরূপ দায়িত্ব পালনের জন্য দায়ী থাকিবেন, যথা :-
 
 
(ক) কর্তৃপক্ষের সকল কার্যক্রম সূচারুরূপে সম্পন্ন করিবার উদ্দেশ্যে এই আইনের অধীন অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ;
 
 
(খ) কর্তৃপক্ষের দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ পরিচালনার নিমিত্ত সকল দায়িত্ব পালন; এবং
 
 
(গ) কর্তৃপক্ষের সকল কর্মচারী ও কার্যক্রমের উপর নিয়ন্ত্রণ।
 
 
(২) চেয়ারম্যান বা সদস্য উহার অর্পিত দায়িত্ব পালন এবং ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নিকট দায়ী থাকিবেন।
 

তৃতীয় অধ্যায়

কর্তৃপক্ষের প্রশাসন

সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন
৮। কর্তৃপক্ষের সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
বোর্ড গঠন
৯। (১) চেয়ারম্যান ও নিম্নবর্ণিত নয়জন সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) চেয়ারম্যান, পদাধিকারবলে যিনি বোর্ডের সভাপতিও হইবেন;
 
 
(খ) ছয়জন সদস্য, পদাধিকারবলে;
 
 
(গ) কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী, পদাধিকারবলে;
 
 
(ঘ) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
 
(ঙ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বিমান চলাচল কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন প্রতিনিধি।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর অধীন মনোনীত সদস্য তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন:
 
 
তবে শর্থ থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময়, কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে, উক্তরূপ মনোনীত সদস্যকে সদস্য পদ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত সদস্যও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
 
বোর্ডের সভা
১০। (১) বোর্ডের সভার তারিখ, সময় ও স্থান বোর্ডের সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) বোর্ডের সভাপতি সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত কর্তৃপক্ষের কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৩) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য বোর্ডের সভাপতিসহ উহার মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
 
(৪) বোর্ডের সভায় সভাপতিসহ উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে প্রদত্ত ভোটের সমতার ক্ষেত্রে, সভার সভাপতির একটি নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
 
 
(৫) শুধুমাত্র কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ক্রুটি থাবাকির কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
১১। (১) কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী এবং, সময় সময়, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সাধারণ ও বিশেষ নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
বিশেষজ্ঞ, উপদেষ্টা, ইত্যাদি, নিয়োগ
১২। কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিশেষজ্ঞ, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বিশেষ পরিদর্শক, আইনজীবী ও এজেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
অন্যান্য সংস্থার সহিত সহযোগিতা
১৩। কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাহিরের কোনো এজেন্সি বা সংস্থার সহযোগিতা গ্রহণ এবং উহাকে সহযোগিতা প্রদান করিতে পারিবে।
ভূমি ও সম্পত্তি অধিগ্রহণ
১৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের কোনো ভূমি ও সম্পত্তি আবশ্যক হইলে উহা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলিয়া গণ্য হইবে এবং এইরূপ ভূমি ও সম্পত্তি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও বিধানাবলি অনুসরণপূর্বক কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন অনুযায়ী, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অধিগ্রহণ বা হুকুম দখল করা যাইবে।
তথ্য বিনিময়
১৫। চেয়ারম্যান, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে, কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থার সহিত বেসামরিক বিমান চলাচল সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করিতে পারিবে।
ক্ষমতার্পণ ও দায়িত্বভার
১৬। কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনে, লিখিতভাবে সাধারণ বা বিশেষ কোনো আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে বর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে, যদি থাকে, এই আইনের অধীন উহার কোনো ক্ষমতা চেয়ারম্যান, কোনো সদস্য বা কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
সরকারি ফি বা কর এবং সেবা ফি আরোপ ও আদায়ের ক্ষমতা
১৭। (১) সরকার বিমান চলাচল বিষয়ে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সরকারি ফি বা কর আরোপ ও আদায় করিতে পারিবে।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নিম্নবর্ণিত ফি, চার্জ, রয়্যালটি, প্রিমিয়াম ও ভাড়া আরোপ ও আদায় করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) বিমান পথ ব্যবহার ও এ্যারোনটিক্যাল চার্জ;
 
 
(খ) বিমান পথে ভ্রমণের জন্য যাত্রী কর্তৃক প্রদত্ত সেবা ফি;
 
 
(গ) কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন বিমানসহ কোনো সম্পত্তি ব্যবহারের জন্য ফি, চার্জ, রয়্যালটি, প্রিমিয়াম ও ভাড়া;
 
 
(ঘ) বিমান অবতরণ, বিমান রাখা এবং বিমান রাখিবার জন্য গৃহায়ন বাবদ চার্জ;
 
 
(ঙ) নিরাপত্তা এবং আনুষঙ্গিক চার্জ;
 
 
(চ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সনদ, লাইসেন্স, ক্ষমতা বা অনুমোদন প্রদান, হস্তান্তর, নবায়ন এবং পরিদর্শন, অডিট, ওভারসাইট, পরীক্ষা গ্রহণ এবং টেস্ট কার্যক্রম বিষয়ের উপর ফি ও চার্জ; এবং
 
 
(ছ) বেসামরিক বিমান চলাচল সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো চার্জ।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত সকল ফি, চার্জ, রয়্যালটি, প্রিমিয়াম ও ভাড়া সংক্রান্ত তফসিল প্রকাশ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, জরুরি ও জাতীয় প্রয়োজনে আরোপযোগ্য বিমানের চার্জ ও ফি মওকুফ করিতে পারিবে।
 
 
(৫) এই আইনের অধীন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট কর্তৃপক্ষের কোনো পাওনা অর্থ অনাদায়ী থাকিলে উহা সরকারি দাবি হিসাবে Public Demands Recovery Act, 1913 (Ben Act No. III of 1913) এর বিধান অনুসারে আদায়যোগ্য হইবে।
কর্তৃপক্ষের তহবিল
১৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে ‘‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তহবিল’’ নামে একটি তহবিল, থাকিবে, যাহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
 
(খ) সরকারের নিকট হইতে গৃহীত ঋণ;
 
 
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত বন্ড হইতে বিক্রয় প্রাপ্ত আয়;
 
 
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ঋণ;
 
 
(ঙ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিদেশ হইতে প্রাপ্ত সহায়তা ও ঋণ;
 
 
(চ) ধারা ১৭ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন অর্জিত অর্থ; এবং
 
 
(ছ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
 
(২) তহবিলের অর্থ এক বা একাধিক তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখা যাইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল পরিচালিত হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা: ‘‘ তফসিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. NO. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
 
 
(৩) চেয়ারম্যান এবং বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মচারীর যৌথ স্বাক্ষরে তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে।
 
 
৪। তহবিল হইতে কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক এবং চুক্তিভিত্তিক সকল কর্মচারীর বেতন, ভাতা ও তাহাদের চাকরির শর্তাবলি অনুসারে প্রদেয় অর্থ প্রদান করা যাইবে এবং কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।
 
 
(৫) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো খাতে তহবিল বা উহার অংশ বিশেষ বিনিয়োগ করা যাইবে।
 
বাজেট
১৯। কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থ-বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত তারিখের মধ্যে উক্ত বৎসরের জন্য প্রাক্কলিত আয় ও ব্যয়ের বিবরণী এবং উক্ত অর্থ-বৎসরের জন্য সরকারের নিকট হইতে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক একটি বাজেট অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে।
হিসাব ও নিরীক্ষা
২০। (১) কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে উহার হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং লাভ-ক্ষতির হিসাব ও স্থিতিপত্রসহ বার্ষিক হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবে এবং এইরূপ হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময়ে সময়ে, প্রদত্ত সাধারণ নির্দেশনা পালন করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অত:পর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া উল্লিখিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) এ সংজ্ঞায়িত কোনো Chartered accountant” দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক "chartered accountant” নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ নিয়োগকৃত "chartered accountant” সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত হারে পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।
 
 
(৫) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত chartered accountant কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্তৃপক্ষের যে কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
প্রবেশাধিকার
২১। (১) চেয়ারম্যান বা এতদুদ্দেশ্যে তদ্‌কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, সহায়তাকারী অথবা শ্রমিকসহ বা ব্যতীত, কোনো ভূমিতে বা ভূমির মধ্যে পরিদর্শন, জরিপ, অনুসন্ধান বা পিলার উঠাইবার, বোরিং বা খনন করিবার বা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অন্য কোনো কার্য করিবার জন্য প্রবেশ করিতে পারিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ ভূমির মালিক বা দখলকারীকে উক্তরূপ প্রবেশের অভিপ্রায় অবহিতক্রমে অন্যূন ৩(তিন) দিন পূর্বে নোটিশ প্রদান ব্যতীত এইরূপ প্রবেশ করা যাইবে না :
 
 
আরো শর্ত থাকে যে, কোনো বিমান দুর্ঘটনা বা অনুরূপ কেনো জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে এইরূপ নোটিশ প্রদান করিতে হইবে না।
 
 
(২) কর্তৃপক্ষ, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রবেশের ফলে কোনো ক্ষতি হইলে, নির্দিষ্টকৃত হারে ও পদ্ধতিতে উহার ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।
 
 
এয়ার স্পেস নিয়ন্ত্রণ
২২। (১) চেয়ারম্যান এএনও এবং প্রবিধান দ্বারা বিমান চলাচলযোগ্য আকাশসীমা, বিমানের নিরাপত্তা ও উক্ত আকাশসীমার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করিবার জন্য, বোর্ডের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, যেইরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ শর্ত ও বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে, ব্যবহারের জন্য অর্পণ করিতে পারিবেন।
 
 
(২) এই ধারার অধীন কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব কেবল এইরূপ আকাশসীমার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাইবে, যাহার এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব, কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি বা অন্য কোনো ব্যবস্থাধীনে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রকে প্রদান করা হয় নাই।
 
অনুসন্ধান
২৩। সরকার, যে কোনো সময়, কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সম্পর্কিত কোনো অভিযোগ স্বয়ং বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার মাধ্যমে অনুসন্ধান করিতে পারিবে।
কমিটি, ইত্যাদি
২৪। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন এবং উহার কার্যপরিধি ও কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
২৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা, ইত্যাদির উদ্যোগে বা অর্থায়নে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
২৬। এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো স্থানীয় সংস্থা অথবা বিদেশি সংস্থা বা এজেন্সি কর্তৃক প্রণীত বা উদ্যোগে পরিচালিত বেসমারিক বিমান পরিবহন কার্যক্রম সম্পর্কিত কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে অথবা কর্তৃপক্ষ ও উক্তরূপ সংস্থা বা এজেন্সি যেইরূপ সম্মত হয়, সেইরূপ শর্তে উক্ত পরিকল্পনার কারিগরি তত্ত্বাবধান এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করিতে পারিবে।
বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল, ইত্যাদি
২৭। (১) কর্তৃপক্ষ, প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পর ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে, উক্ত বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে।
 
 
(২) সরকার, যে কোনো সময়, কর্তৃপক্ষের নিকট উহার যে কোনো বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন ও বিবৃতি বা ব্যাখ্যা তলব করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
 

চতুর্থ অধ্যায়

বিবিধ

কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর কতিপয় বিধানের অপ্রযোজ্যতা
২৮। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) এর ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ অধ্যায়ের বিধানাবলি কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
বিনিয়োগের উপর চার্জ ধার্যকরণ
২৯। সরকার, তদ্‌কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত হারে, উহার বিনিয়োগের উপর বার্ষিক চার্জ ধার্য করিতে পারিবে।
বিধি পণয়নের ক্ষমতা
৩০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ণ করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৩১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ নহে এইরূপ প্রয়োজনীয় বা সমীচীন বলিয়া বিবেচিত সকল বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
এএনও প্রণয়নের ক্ষমতা
৩২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, চেয়ারম্যান, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, শিকাগো কনভেনশনের পরিশিষ্ট ও তদ্সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট এবং উহার নিকট প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত অন্যান্য আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি অনুসারে সময় উপযোগী এএনও প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
রহিতকরণ ও হেফাজত
৩৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, Civil Aviation Authority Ordinance, 1985 (Ordinance No. XXXVIII of 1985), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন―
 
 
(ক) গঠিত Board, এই আইনের অধীন বোর্ড গঠিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে, বিলুপ্ত হইবে;
 
 
(খ) কৃত কোনো কার্য বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(গ) সম্পাদিত কোনো চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে;
 
 
(ঘ) প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান, জারীকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, প্রণীত সকল পরিকল্পনা বা কার্যক্রম এবং অনুমোদিত সকল বাজেট, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার অধীন প্রণীত, জারীকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন উক্ত Ordinance রহিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে, উক্ত Ordinance
 
 
এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Civil Aviation Authority এর-
 
 
(ক) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা বা গৃহীত কার্যধারা বা সূচিত যে কোনো কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই;
 
 
(খ) সকল ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে;
 
 
(গ) সকল কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, তাহারা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে কর্তৃপক্ষের চাকরিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন; এবং
 
 
(ঘ) সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, তহবিল, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও সিকিউরিটিসহ তহবিল এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট সকল বই, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্রসহ অন্যান্য সকল দলিল-দস্তাবেজ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরিত হইবে এবং কর্তৃপক্ষ উহার অধিকারী হইবে।
 
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩৪। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs