প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন আইন, ২০১৭

( ২০১৭ সনের ১০ নং আইন )

Bangladesh Shipping Corporation Order, 1972 রহিতপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া উহা পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু Bangladesh Shipping Corporation Order, 1972 (President’s Order No. 10 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠানটির কর্মের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে উহা রহিতপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া আইন পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 
 
 

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল : -

 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন আইন, ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(১) ‘কর্পোরেশন’ অর্থ এই আইনের ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি);
 
 
(২) ‘চেয়ারম্যান’ অর্থ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান;
 
 
(৩) ‘নির্বাহী পরিচালক’ অর্থ কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক;
 
 
(৪) ‘পরিচালক’ অর্থ পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক;
 
 
(৫) ‘পরিচালনা পর্ষদ’ অর্থ এই আইনের ধারা ৬ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ;
 
 
(৬) ‘প্রবিধান’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(৭) ‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক’ অর্থ কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক; এবং
 
 
(৮) ‘বিধি’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি।
 
কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা
৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে Bangladesh Shipping Corporation Order, 1972 (President’s Order No. 10 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
 
 
(২) কর্পোরেশন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে, এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার এবং চুক্তি সম্পাদন করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
কর্পোরেশনের কার্যাবলি
৪। (১) কর্পোরেশনের কার্যাবলি হইবে আন্তর্জাতিক নৌপথে নিরাপদ ও দক্ষ নৌবাণিজ্য সেবা প্রদান এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা, বাণিজ্যিক বা ব্যবসায়িক লেনদেন বৃদ্ধি করা এবং ইহা ব্যতীত সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুসারে কোনো প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিসমূহ এই সংস্থায় অর্পণ করা হইলে তাহা গ্রহণ ও পরিচালনা করা।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধানের প্রযোজ্যতার ক্ষেত্রে কোনোরূপ ব্যত্যয় না ঘটাইয়া কর্পোরেশন বিশেষভাবে নিম্নরূপ ক্ষমতা সংরক্ষণ করিবে, যথা:-
 
 
(ক) জাহাজ অথবা নৌযান অর্জন করা, ভাড়া করা, ভাড়া দেওয়া, দখলে রাখা বা হস্তান্তর করা;
 
 
(খ) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অথবা বাহিরে কর্পোরেশনের কার্যপরিধির অন্তর্ভুক্ত ব্যবসায়িক লেনদেনসহ যে কোনো কার্যে নিয়োজিত হওয়া বা কার্যক্রমের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা অথবা এইরূপ প্রতিষ্ঠানের সহিত সংযুক্ত হওয়া;
 
 
(গ) জাহাজ, নৌযান ও অনুরূপ অন্যান্য যান মেরামত, নির্মাণ, পুনঃসচল বা সংযোজন করা;
 
 
(ঘ) জাহাজ, নৌযান ও অনুরূপ অন্যান্য যানের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ উপযোজন এবং যন্ত্রাদি সংযোজন, তৈরি, এবং পুনঃসচলের জন্য মেরামতের কার্য করা;
 
 
(ঙ) শিপিং সংশ্লিষ্ট বা ইহার সহযোগী কার্যক্ষেত্রে সম্ভাব্য নিয়োগপ্রার্থী অথবা নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের জন্য নির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণের নিমিত্ত কোনো প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা স্থাপনের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
 
 
(চ) যে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও দখলে রাখা বা হস্তান্তর করাঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকারের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করা যাইবে না;
 
 
(ছ) জাহাজ বা নৌযান মেরামতের জন্য নিজস্ব ওয়ার্কশপ পরিচালনা করা এবং ওয়ার্কশপের মাধ্যমে নিজস্ব জাহাজ এবং প্রয়োজনে দেশি অন্য কোনো জাহাজ বা বিদেশি জাহাজ মেরামত করা;
 
 
(জ) নিজস্ব বা যৌথ উদ্যোগ অথবা অন্য কোনো ব্যবস্থাপনায় জাহাজ, জলযান অথবা নৌযান অর্জন এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট যে কোনো ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করা;
 
 
(ঝ) দেশের ও বিদেশের বন্দরসমূহে শিপিং এজেন্ট নিয়োগ করা;
 
 
(ঞ) কর্পোরেশনের বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য দেশে ও বিদেশে ব্যাংক হিসাব খোলা এবং পরিচালনা করা;
 
 
(ট) (ক) হইতে (ঞ) পর্যন্ত দফাসমূহে বর্ণিত কার্যাবলির সহিত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্য সম্পাদন করা; এবং
 
 
(ঠ) সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা অর্পিত অন্য যে কোনো কার্য সম্পাদন করা।
 
প্রধান কার্যালয়
৫। (১) কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে থাকিবে।
 
 
(২) কর্পোরেশন, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের অন্য কোনো স্থানে এবং বিদেশে আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
 
পরিচালনা পর্ষদ
৬। (১) কর্পোরেশনের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে।
 
 
(২) কর্পোরেশনের পরিচালনা পর্ষদ অনধিক ১৩ (তেরো) জন সদস্য সমন্বয়ে নিম্নরূপভাবে গঠিত হইবে, যথা : -
 
 
(ক) মন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(খ) সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পদাধিকারবলে;
 
 
(গ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন অন্যূন যুগ্মসচিব;
 
 
(ঘ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত একজন অন্যূন যুগ্মসচিব;
 
 
(ঙ) কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পদাধিকারবলে;
 
 
(চ) কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক (অর্থ), পদাধিকারবলে;
 
 
(ছ) কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি), পদাধিকারবলে;
 
 
(জ) কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্যিক), পদাধিকারবলে;
 
 
(ঝ) উপ-ধারা (৪) এর অধীন শেয়ারহোল্ডারগণের পক্ষ হইতে নির্বাচিত পরিচালক অথবা পরিচালকবৃন্দ; এবং
 
 
(ঞ) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক প্রণীত বিধান অনুযায়ী সরকার কর্তৃক মনোনীত অন্যূন একজন স্বতন্ত্র (Independent) পরিচালক।
 
 
(৩) কর্পোরেশনের সচিব পরিচালনা পর্ষদের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
(৪) কর্পোরেশনের শেয়ার জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করা হইলে শেয়ারহোল্ডারগণ নিম্নরূপ শর্তে পরিচালক নির্বাচন করিতে পারিবেন : -
 
 
জনসাধারণের শেয়ার মোট পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ -
 
 
(ক) ২০% এর ঊর্ধ্বে কিন্তু ৩৪% এর নিম্নে হইলে ১ (এক) জন পরিচালক; এবং
 
 
(খ) ৩৪% এর ঊর্ধ্বে হইলে ২ (দুই) জন পরিচালক।
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন নির্বাচিত পরিচালকগণ কর্পোরেশনের শেয়ার প্রবিধান এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক জারীকৃত বিধানাবলি অনুসারে নির্বাচিত হইবেন।
 
 
(৬) শেয়ারহোল্ডারগণের মধ্য হইতে পরিচালক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডাগণের বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর বিধি অনুসারে প্রয়োজনীয় পরিমাণ শেয়ার থাকিতে হইবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কর্তৃক মনোনীত বা নিয়োগকৃত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, সদস্যবৃন্দ, কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালকগণের ক্ষেত্রে উল্লিখিত বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
 
 
(৭) উপ-ধারা (২) এর দফা (ঝ) ও দফা (ঞ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ নির্বাচিত বা মনোনীত হইবার তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসরের জন্য দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
পরিচালনা পর্ষদের কার্যাবলি
৭। (১) কর্পোরেশনের কার্যাবলি ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের দিক-নির্দেশনা পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা অনুসারে কর্পোরেশন ইহার কার্যাবলি সম্পাদন করিবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদ জনস্বার্থ বিবেচনাপূর্বক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দিক-নির্দেশনা প্রদান করিবে।
 
 
(৩) পরিচালনা পর্ষদ উহার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত ও জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত নীতিমালার নির্দেশনা মানিয়া চলিবে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং নির্বাহী পরিচালকবৃন্দ
৮। (১) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাধীনে কর্পোরেশনের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ন্যূনতম ৩ (তিন) জন ও অনূর্ধ্ব ৭ (সাত) জন নির্বাহী পরিচালক থাকিবে।
 
 
(২) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(৩) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালকগণ কর্পোরেশনের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন এবং পরিচালনা পর্ষদ, সময় সময়, তাঁহাদের যেইরূপ নির্দেশনা প্রদান করিবে সেইরূপ কার্যাবলি সম্পাদন এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিবেন অথবা পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।
 
নির্বাচিত পরিচালকগণের অযোগ্যতা
৯। কোনো ব্যক্তি নির্বাচিত পরিচালক পদের জন্য উপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হইবেন না অথবা উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন না, যদি তিনি -
 
 
(ক) বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক না হন;
 
 
(খ) দেউলিয়া ঘোষিত হন বা ইতিপূর্বে কোনো সময়ে দেউলিয়া ঘোষিত হইয়া থাকেন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করেন;
 
 
(গ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক উম্মাদ বা অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(ঘ) নৈতিক স্খলনজনিত অথবা ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া ন্যূনতম ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন;
 
 
(ঙ) পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক মঞ্জুরকৃত ছুটি ব্যতিরেকে একাদিক্রমে পরিচালনা পর্ষদের তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন; এবং
 
 
(চ) ন্যূনতম শেয়ারের মালিক না হন।
পরিচালক পদের শূন্যতা
১০। (১) কোনো কারণে নির্বাচিত পরিচালক ব্যতীত অন্যান্য পরিচালকের পদ শূন্য হইলে, উক্ত শূন্য পদে সরকার নূতন পরিচালক মনোনয়ন করিবে এবং নির্বাচিত পরিচালকের পদ শূন্য হইলে শেয়ারহোল্ডারগণ নির্বাচনের মাধ্যমে উক্ত পদ পূরণ করিবে।
 
 
(২) কর্পোরেশনের কোনো মনোনীত বা নির্বাচিত পরিচালক অনুমতি ব্যতিরেকে একাদিক্রমে পরিচালনা পর্ষদের তিনটি সভায় যোগদানে অসমর্থ হইলে উক্ত পদটি শূন্য বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত শূন্য পদের দায়িত্ব পালনের জন্য উপ-ধারা (১) এর বিধানমতে সরকার বা, ক্ষেত্রমত, শেয়ারহোল্ডারগণ নূতন পরিচালক মনোনয়ন বা, ক্ষেত্রমত, নির্বাচন করিবেন।
পরিচালনা পর্ষদের সভা
১১। (১) পরিচালনা পর্ষদের সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদের সভার কোরাম গঠনের জন্য চেয়ারম্যানসহ ন্যূনতম ৫(পাঁচ) জন সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
 
(৩) প্রতিটি সভায় চেয়ারম্যানসহ প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট থাকিবে।
 
 
(৪) যদি কোনো কারণে চেয়ারম্যান কোনো সভায় সভাপতিত্ব করিতে অসর্ম হন, তবে এতদুদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত একজন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৫) সদস্যপদের কোনো শূন্যতা অথবা পরিচালনা পর্ষদ গঠনের ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা পর্ষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
নির্বাহী কমিটি
১২। (১) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং নির্বাহী পরিচালকগণের সমন্বয়ে একটি নির্বাহী কমিটি থাকিবে।
 
 
(২) নির্বাহী কমিটি কর্পোরেশনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্বে থাকিবে এবং পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করিবে।
 
 
(৩) কর্পোরেশনের সচিব নির্বাহী কমিটির সভায় সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।
কমিটি
১৩। পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অর্পিত কার্যাবলি সম্পাদন অথবা সম্পাদনে সহায়তা করিবার জন্য, পরিচালনা পর্ষদ, প্রয়োজনে, সময় সময়, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক বা কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
উপদেষ্টা, পরামর্শক ও জাহাজী কর্মকর্তা নিয়োগ
১৪। কর্পোরেশন উহার কার্যাবলি দক্ষতার সহিত সম্পাদনের লক্ষ্যে, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে, প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে উপদেষ্টা, পরামর্শক ও জাহাজী কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবে।
কর্মবণ্টন
১৫। কর্পোরেশনের দৈনন্দিন কার্যাবলি দক্ষতার সহিত সম্পাদনের লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিম্নরূপ কর্মকর্তাগণের বা কমিটির মধ্যে বণ্টন করিতে পারিবে, যথা : -
 
 
(ক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক অথবা কোনো নির্বাহী পরিচালক;
 
 
(খ) ধারা ১৩ এর অধীন গঠনকৃত যে কোনো কমিটি; অথবা
 
 
(গ) কর্পোরেশনের যে কোনো কর্মচারী।
ক্ষমতা অর্পন
১৬। (১) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামলা পরিচালনার জন্য কর্পোরেশনের কর্মচারীগণকে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবেন।
 
 
(২) কর্পোরেশনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে এবং ইহার জাহাজবহর সমুদ্রপথে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়িক লেনদেন সহজতর করিবার লক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদ, প্রয়োজনে, এই আইনের অধীন এতদুদ্দেশ্যে শর্তসাপেক্ষে বা প্রবিধানের বিধান সাপেক্ষে, যদি থাকে, উহার ক্ষমতা ও দায়িত্ব ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অর্পণ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) কর্পোরেশনের ব্যবসায়িক লেনদেন সহজতর করিবার উদ্দেশ্যে কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে বা বিধি অনুযায়ী, যদি থাকে, প্রয়োজনে তাঁহার দৈনন্দিন দপ্তর পরিচালনা সংক্রান্ত ক্ষমতা ও দায়িত্ব কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক এবং অন্যান্য কর্মচারীর উপর অর্পণ করিতে পারিবেন।
কর্পোরেশনের কর্মচারী নিয়োগ
১৭। কর্পোরেশন উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধানমালা দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
শেয়ার মূলধন
১৮। (১) কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ হইবে অন্যূন ১০০০ (এক হাজার) কোটি টাকা যাহা প্রতিটি ১০ (দশ) টাকা অভিহিত মূল্যের ১০০ (একশত) কোটি সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত হইবে।
 
 
(২) বার্ষিক সাধারণ সভা বা বিশেষ সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধি করা যাইবে।
 
 
(৩) কর্পোরেশনের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ হইবে ন্যূনতম ৩৫০ (তিনশত পঞ্চাশ) কোটি টাকা যাহা ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) কোটি সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত হইবে।
 
 
(৪) বার্ষিক সাধারণ সভা বা বিশেষ সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে কর্পোরেশনের পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করা যাইবে।
 
 
(৫) কর্পোরেশনের পরিশোধিত মূলধনের শেয়ারের মধ্যে ন্যূনতম ৫১% শেয়ার সরকারের মালিকানাধীন থাকিবে এবং অবশিষ্ট শেয়ার পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জনসাধারণের নিকট বিক্রয়ের জন্য নির্ধারণ করা যাইবে।
 
 
(৬) কর্পোরেশনের অনুমোদিত এবং পরিশোধিত মূলধনের প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আদেশ-নির্দেশনা অনুসারে নির্ধারণ করিতে হইবে।
 
কতিপয় শেয়ার সিকিউরিটিজ হিসাবে গণ্য হওয়া
১৯। কর্পোরেশনের শেয়ারসমূহ Trusts Act, 1882 (Act No, II of 1882) এর অধীন বিধৃত সিকিউরিটিজের অন্তর্ভুক্ত এবং Securities Act, 1920 (Act No. X of 1920) এবং বীমা আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ১৩নং আইন) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অনুমোদিত সিকিউরিটিজ বলিয়া গণ্য হইবে, এবং উহা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনা অনুসারে পরিচালিত হইবে।
বার্ষিক সাধারণ সভা ও বিশেষ সাধারণ সভা এবং শেয়ারহোল্ডারগণের অধিকার
২০। (১) কর্পোরেশনের শেয়ারহোল্ডারগণের বার্ষিক সাধারণ সভা পরবর্তী অর্থ বৎসরের হিসাব সমাপ্তির পূর্বে কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে অথবা প্রধান কার্যালয়ের নিকটবর্তী কোনো সুবিধাজনক স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচালকগণের আবেদনের প্রেক্ষিতে যে কোনো সময় শেয়ারহোল্ডারগণের বিশেষ সাধারণ সভা আহবান করা যাইবে।
 
 
(৩) বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত শেয়ারহোল্ডারগণ কর্পোরেশনের বার্ষিক হিসাব, উহার কর্মকাণ্ডের উপর পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং বার্ষিক স্থিতিপত্র ও হিসাবের উপর নিরীক্ষকের প্রতিবেদনের ব্যাপারে আলোচনা এবং পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক উপস্থাপিত সুপারিশমালা অনুমোদন করিবার অধিকারী হইবেন।
তহবিল গঠন ও শেয়ারের লভ্যাংশ প্রদান
২১। (১) কর্পোরেশন উহার আয় হইতে একটি সাধারণ সংরক্ষিত তহবিল গঠন করিবে এবং পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত অন্যান্য বিশেষ তহবিল গঠন করিতে পারিবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত সুদ, আয়কর, সন্দেহজনক ও কুঋণসমূহ, সম্পদের অবচয়, বিদ্যমান তহবিল এবং অন্যান্য বিষয়ের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথাযথ সংস্থান রাখিয়া কর্পোরেশন এক বৎসরে অর্জিত মুনাফা হইতে লভ্যাংশ (Dividend) ঘোষণা করিতে পারিবে।
 
 
(৩) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে।
ব্যয় নির্বাহ
২২। (১) কর্পোরেশনের জন্য জাহাজ, জলযান, নৌযান অর্জন, দেশি ও বিদেশি জাহাজ ভাড়া করা, কর্পোরেশনের উন্নয়ন, সমুদ্র পথে জাহাজ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় এবং কর্পোরেশনের সকল প্রকার প্রশাসনিক, সংস্থাপন তথা কর্মচারী ও জাহাজি কর্মকর্তা-নাবিকদের বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক যাবতীয় ব্যয় ও বাণিজ্যিক ব্যয় উহার আয় বা পরিশোধিত মূলধন হইতে নির্বাহ করা যাইবে।
 
 
(২) কর্পোরেশনের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি-বিধান ও নির্দেশনা অনুসরণ করিতে হইবে।
জাহাজ ক্রয়-বিক্রয়, ইত্যাদি
২৩। (১) কর্পোরেশনের জাহাজ বা অন্য কোনো নৌযান অর্জন বা ক্রয়সহ অন্যান্য সকল ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪নং আইন) এবং, ক্ষেত্রমত, আন্তর্জাতিক বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করিতে হইবে।
 
 
(২) পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদনক্রমে, কর্পোরেশন এতদ্‌সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুসরণক্রমে জাহাজ বিক্রয় করিতে পারিবে।
ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা, ইত্যাদি
২৪। (১) কর্পোরেশন, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, দেশে অথবা বিদেশে বাংলাদেশি অথবা বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কোন বিশেষ ব্যয় মিটাইবার জন্য অথবা কোন ঋণ পরিশোধ করিবার জন্য ঋণ গৃহীত হইলে উহার কোন অংশ অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
২৫। (১) কর্পোরেশন যথাযথভাবে উহার হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া উল্লিখিত, প্রতি বৎসর কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কর্পোরেশনের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1) (b) এ সংজ্ঞায়িত ২(দুই) জন চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে এবং যাহাদের সম্মানী পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্পোরেশন প্রদান করিবে।
 
 
(৪) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন সরকার, বিশেষ পরিস্থিতিতে, দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা ফার্ম দ্বারা কর্পোরেশনের নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করিতে পারিবে।
 
 
(৫) কর্পোরেশনের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউনটেন্ট বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত দেশীয় বা আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা ফার্ম কর্পোরেশনের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, পরিচালক বা কর্পোরেশনের যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
 
(৬) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউনটেন্ট বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত দেশীয় বা আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা ফার্ম কর্পোরেশনের নিরীক্ষা সম্পন্ন করিয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি সরকার, কর্পোরেশনের নিকট পেশ করিবে।
বার্ষিক প্রতিবেদন
২৬। কর্পোরেশন প্রতি অর্থ বৎসরের হিসাব ও কর্মকাণ্ডের উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী অর্থ বৎসর সমাপ্তির পূর্বে সরকারের নিকট পেশ করিবে।
কর্পোরেশনের অবসায়ন
২৭। কোম্পানি অবসায়ন সম্পর্কিত কোম্পানি আইনের কোনো বিধান কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না এবং সরকারের নির্দেশিত পন্থা ও আদেশ ব্যতীত, কর্পোরেশনের অবসায়ন করা যাইবে না।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৯। পরিচালনা পর্ষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, এই আইন ও বিধির সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
কর্পোরেশনের পাওনা আদায়
৩০। (১) এই আইনের অধীন দেশীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট কর্পোরেশনের কোন পাওনা অনাদায়ী থাকিলে উহা সরকারি পাওনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর বিধান সাপেক্ষে, আদায় করিতে পারিবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন বিদেশি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট কর্পোরেশনের কোন পাওনা অনাদায়ী থাকিলে উহা সংশ্লিষ্ট চুক্তি অনুযায়ী, যদি থাকে, বা প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইনের বিধি-বিধান সাপেক্ষে, আদায় করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
৩১। (১) Bangladesh Shipping Corporation Order, 1972 (President’s Order No. 10 of 1972), অতঃপর উক্ত Order বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত Order এর অধীন -
 
 
(ক) কৃত কোন কাজ-কর্ম, গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা সূচিত কোন কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(খ) প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশন কর্তৃক অর্জিত সকল সম্পদ, জাহাজ, জলযান, নৌযান, ভূমি বা জমি, ভবনসমূহ, মটরযানসমূহ বা যানসমূহ, ওয়ার্কশপ, অধিকার, প্রাপ্ত সুবিধাদি, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং সুবিধা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ অর্থ এবং ব্যাংকে জমা অর্থ ও তহবিল, ফি, অনুমোদিত মূলধন, সকল হিসাব, শেয়ার মূলধন, শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ, বাংলাদেশ সরকারের ইক্যুইটি, অর্থের বিনিয়োগ, সকল হিসাববহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং এতদ্‌সংক্রান্ত অন্য সকল দলিল-দস্তাবেজ, ইত্যাদি এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের নিকট ন্যস্ত ও স্থানান্তরিত হইবে এবং কর্পোরেশন উহার অধিকারী হইবে;
 
 
(গ) প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের বিভিন্ন সংস্থা, শিপিং এজেন্ট ও চার্টারারগণের নিকট প্রাপ্য পাওনাদি এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের পাওনা বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(ঘ) প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের যে ঋণ, দায় ও দায়িত্ব, আইনগত বাধ্যবাধকতা ছিল এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত যে সকল চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট সম্পাদিত হইয়াছিল উহা কর্পোরেশনের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব, আইনগত বাধ্যবাধকতা এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(ঙ) প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশন কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন মামলা, গৃহীত কোন ব্যবস্থা বা সূচিত আইনগত কোন কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে;
 
 
(চ) নিয়োগকৃত সকল কর্মচারীর চাকরি, নিয়োগকৃত উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও আইনবিদ, পরামর্শক, নিরীক্ষক, দেশে ও বিদেশে শিপিং এজেন্ট এবং ব্রোকার, ইত্যাদি যাঁহারা যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত রহিয়াছেন, তাঁহারা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনে পূর্বের ন্যায় ও শর্তাবলিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন;
 
 
(ছ) গঠিত ও রক্ষিত সকল ভবিষ্য, আনুতোষিক ও পেনশন তহবিল এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তরিত, রক্ষিত এবং পরিচালিত হইবে; এবং
 
 
(জ) গঠিত পরিচালনা পর্ষদ এবং পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তসমূহ, অনুমোদন ও সুপারিশ, প্রণীত প্রবিধানসমূহ, জারীকৃত প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত আদেশ বা নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, গৃহীত সকল পরিকল্পনা বা কার্যক্রম, অনুমোদিত সকল বাজেট, হিসাব বিবরণী ও বার্ষিক প্রতিবেদন এবং কৃত সকল কর্ম উক্ত রহিতকরণের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে এবং এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হইলে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারীকৃত, মঞ্জুরিকৃত, প্রদত্ত, আরোপিত, অনুমোদিত এবং কৃত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা এই আইনের অধীন সংশোধিত বা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
 
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩২। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর, সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs