প্রিন্ট ভিউ

বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭

( ২০১৭ সনের ১৮ নং আইন )

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত কনভেনশন বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যুগোপযোগী বিধান করিবার লক্ষ্যে Civil Aviation Ordinance, 1960 রহিতক্রমে একটি নূতন আইন প্রনয়ণকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত কনভেনশন বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যুগোপযোগী বিধান করিবার লক্ষ্যে Civil Aviation Ordinance, 1960 (Ordinance No. XXXII of 1960) রহিতক্রমে, একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 
 
 

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

 

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে।
 
(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সকল বেসামরিক বিমানঘাঁটি ও বিমানবন্দর, হেলিপোর্ট, বাংলাদেশের সকল নাগরিক, বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন বিমানে আরোহণকৃত ব্যক্তি, উহা যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিমানে আরোহণকৃত ব্যক্তির উপর প্রযোজ্য হইবে:
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের কোন কিছুই-
 
(ক) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিমান, রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত কোন বিমান, প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যবহারের জন্য স্থাপিত বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটি এবং উক্তরুপ বিমান, বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটি পরিচালনাসহ এতদ্‌সংশ্লিষ্ট কোন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যদি না সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সংশোধনসহ বা সংশোধন ব্যতীত, উক্তরূপ কোন বিমান, বিমানবন্দর, বিমানঘাঁটি বা ব্যক্তির ক্ষেত্রে উহা প্রযোজ্য করে; এবং
 
(খ) Lighthouse Act, 1927 (Act No. XVII of 1927) প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোন বাতিঘরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না অথবা উক্ত আইনের অধীন কোন কর্তৃপক্ষের অধিকার বা ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ণ বা প্রভাবিত করিবে না।
 
(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) ‘‘অপারেটর’’ অর্থ বেসামরিক বিমান পরিচালনার সহিত সম্পৃক্ত কোন ব্যক্তি;
 
(২) ‘‘অবতরণ এলাকা’’ অর্থ বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দরের যে অংশে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে;
 
(৩) ‘‘আইসিএও’’ অর্থ International Civil Aviation Organization;
 
(৪)‘‘আকাশসীমা লঙ্ঘন’’ অর্থ বিমানের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রয়োজন ব্যতীত, যথাযথ অনুমতি অথবা চেয়ারম্যানের অনুমোদন ব্যতিরেকে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় কোন বিমানের ইচ্ছাকৃত প্রবেশ;
 
(৫) ‘‘আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি’’ বা ‘‘এ্যাপলায়েন্স’’ অর্থ প্যারাসুট ও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি এবং অন্য কোন কৌশল বা বিমান উড্ডয়নের সময় উহার সহিত স্থাপিত বা সংযুক্ত কৌশলসহ বিমানের নেভিগেশন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, এ্যাপারেটাস, পার্টস, এ্যাপারটেন্যান্স বা একসেসরিজ, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এবং বিমান, বিমানের ইঞ্জিন বা প্রপেলার ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
(৬) ‘‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন’’ অর্থ দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে ভাড়া বা পারিতোষিকের বিনিময়ে বিমানে যাত্রী, পণ্য বা ডাক পরিবহন;
 
(৭) ‘‘এরিয়াল কার্য’’ অর্থ কৃষি, নির্মাণ কাজ, চিত্রগ্রহণ, জরিপ, পর্যবেক্ষণ ও টহল, তল্লাশি ও উদ্ধার বা এরিয়াল বিজ্ঞাপন, ইত্যাদি সম্পর্কিত কোন বিশেষ কাজের ক্ষেত্রে বিমানের ব্যবহার;
 
(৮) ‘‘এয়ারম্যান’’ অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যিনি-
 
(ক) কোন বিমান চালনায় প্রধান ব্যক্তি, পাইলট, বিমান প্রকৌশলী বা মেকানিক, বা ক্রু সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন অথবা বিমান গন্তব্যে চলাকালীন অবস্থায় উহার অবস্থান নির্ণয়ের দায়িত্ব পালন করেন;
 
(খ) কোন বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার বা সরঞ্জামাদি পরিদর্শন, রক্ষণাবেক্ষণ, ওভারহোলিং বা মেরামতের দায়িত্ব পালন করেন; বা
 
(গ) ফ্লাইট অপারেশন অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন;
 
(৯) ‘‘এয়ার অপারেটর’’ অর্থ এমন কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যাহা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বা নিজের মাধ্যমে বা লীজ গ্রহণ করিয়া বা অন্য কোন ব্যবস্থাধীনে বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন ও পরিচালনার সহিত সম্পৃক্ত;
 
(১০) ‘‘এয়ার নেভিগেশন অর্ডার’’ বা ‘‘এএনও’’ অর্থ এই আইনের অধীন এ্যারোনটিক্যাল ও নন-এ্যারোনটিক্যাল বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জারীকৃত আদেশ:
 
(১১) ‘‘এয়ার নেভিগেশন সুবিধা’’ অর্থ এয়ার নেভিগেশনের জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য ডিজাইনকৃত কোন সুবিধাসহ বিমানবন্দর, অবতরণ এলাকা, লাইট অথবা আবহাওয়ার তথ্য সম্প্রচার, সিগন্যাল, বেতার নির্দেশনা সন্ধান বা বেতার ও অন্যান্য তড়িৎ-চৌম্বকীয় যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত কোন এ্যাপারেটাস বা যন্ত্রপাতি, এবং আকাশে কোন বিমান বা ফ্লাইটের অবতরণ ও উড্ডয়নের নির্দেশনা প্রদান বা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত অন্য কোন কাঠামো বা কৌশলও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১২) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ৩নং আইন) এর ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ;
 
(১৩) ‘‘ক্রু সদস্য’’ অর্থ কোন অপারেটর কর্তৃক ফ্লাইটের সময় বা বিমান উড্ডয়নকালে বিমানের কোন দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি;
 
(১৪) ‘‘খুচরা যন্ত্রাংশ’’ বা ‘‘যন্ত্রাংশ’’ অর্থ বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার ও এ্যাপলায়েন্স এর কোন অংশ, যাহা কোন বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলারে বা এ্যাপলায়েন্সে স্থাপন বা ব্যবহারের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, কিন্তু উহাদের মধ্যে স্থাপন বা সংযুক্ত করা হয় নাই;
 
(১৫) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
(১৬) ‘‘জেনারেল এভিয়েশন’’ বা ‘‘সাধারণ এভিয়েশন’’ অর্থ বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন বা এরিয়াল কার্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে সাধারণ বিমান পরিচালনা;
 
(১৭) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ এএনও দ্বারা নির্ধারিত;
 
(১৮) ‘‘নেভিগেশনযোগ্য বা বিমান চলাচলযোগ্য আকাশসীমা’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত সর্বনিম্ন ফ্লাইট উচ্চতার ঊর্ধ্বের (altitude) আকাশসীমা, এবং বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা আবশ্যক এইরূপ আকাশসীমাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১৯) ‘‘প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বেআইনি আচরণ’’ অর্থ বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে এইরূপ কোন কার্য এবং নিম্নবর্ণিত কার্যসমূহও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা: -
 
(ক) বেআইনিভাবে বিমানের কর্তৃত্ব গ্রহণ;
 
(খ) বিমানের ক্ষতিসাধন;
 
(গ) বিমানঘাঁটিতে অথবা বিমানের অভ্যন্তরে কাউকে জিম্মি করা;
 
(ঘ) বিমানের অভ্যন্তরে, কোন বিমানবন্দরে অথবা এ্যারোনটিক্যাল স্থাপনায় বলপ্রয়োগপূর্বক অনধিকার প্রবেশ;
 
(ঙ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে বিমানের অভ্যন্তরে অথবা বিমানবন্দরে অস্ত্র অথবা বিপজ্জনক যন্ত্র বা পদার্থ ব্যবহার;
 
(চ) জীবননাশ, মারাত্মক শারীরিক আঘাত, সম্পদ বা পরিবেশের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে কোন বিমান ব্যবহার;
 
(ছ) উড্ডয়নরত অথবা ভূমিতে অবস্থানরত বিমান, যাত্রী ও ক্রু পরিসেবার সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা বিমানবন্দর বা বেসামরিক বিমান চলাচলের যে কোন স্থাপনায় অবস্থানরত জনসাধারণের নিরপত্তা বিপন্ন করিবার উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য প্রদান;
 
(২০) ‘‘প্রপেলার’’ অর্থে প্রপেলারের খুচরা যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক ও সহায়ক সরঞ্জামও ইহা অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২১) ‘‘বিদেশি এয়ার অপারেটর’’ অর্থ এমন কোন এয়ার অপারেটর যিনি কোন রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য কোন রাষ্ট্রের আকাশ সীমায় বিমান পরিচালনার জন্য এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত হইয়াছেন;
 
(২২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(২৩) ‘‘বিপজ্জনক পণ্য’’ অর্থ এমন কোন দ্রব্য বা বস্তু যাহা স্বাস্থ্য, সম্পত্তি বা পরিবেশের ক্ষতি করিতে পারে বা উহাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করিতে পারে এবং যাহা আইসিএও এর টেকনিক্যাল নির্দেশনায় বিপজ্জনক পণ্যের তালিকার অন্তর্ভুক্ত বা শ্রেণিভুক্ত;
 
(২৪) ‘‘বিমান’’ অর্থে কোন যন্ত্র যাহা বাতাসের প্রতিঘাত, ভূ-পৃষ্ঠের বিপরীতে নহে, দ্বারা বায়ুমণ্ডলে ভর করিয়া ভাসিতে পারে, এবং বদ্ধ বা মুক্ত বেলুন, এয়ার শিপ, ঘুড়ি, ড্রোন, গ্লাইডার এবং উড্ডয়নরত যন্ত্রও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৫) ‘‘বিমান ইঞ্জিন’’ অর্থ এইরূপ কোন ইঞ্জিন যাহা বিমান চালনার জন্য বা বিমান চালনার অভিপ্রায়ে ব্যবহৃত হয়, এবং প্রপেলার ব্যতীত বিমানের সকল খুচরা যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক ও সহায়ক সরঞ্জামও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৬) ‘‘বিমানঘাঁটি’’ অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বিমান অবতরণ বা আগমন, উড্ডয়ন বা প্রস্থান এবং ভূমিতে চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সুনির্দিষ্ট কোন স্থল বা জলভাগ এবং কোন ইমারত, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৭) ‘‘বিমান ছিনতাই’’ অর্থ বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে বা যে কোন ধরনের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে কোন বিমান আটক, নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ বা উহার উদ্যোগ গ্রহণ করা;
 
(২৮) ‘‘বিমান পরিবহন সেবা’’ অর্থ আকাশপথে যাত্রী, পণ্য, ডাক ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোন সেবা;
 
(২৯) ‘‘বিমানবন্দর’’ অর্থ এমন কোন বিমানঘাঁটি, যেখানে বেসামরিক বিমান চলাচলের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন করা হইয়াছে;
 
(৩০) ‘‘বিমানের নেভিগেশন’’ অর্থে বিমানের পাইলটিং বা চালনা কার্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩১) ‘‘বেসামরিক বিমান’’ অর্থ রাষ্ট্রীয় বিমান ব্যতীত অন্য কোন বিমান;
 
(৩২) ‘‘বেসামরিক বিমান চলাচল’’ অর্থ সাধারণ বা বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন অথবা এরিয়াল কার্যের উদ্দেশ্যে কোন বেসামরিক বিমান পরিচালনা;
 
(৩৩) ‘‘বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন’’ অর্থ বিমান কর্তৃক ভাড়া বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যাত্রী, পণ্য বা ডাক পরিবহনসহ অন্যান্য কার্যক্রম;
 
(৩৪) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে কোন ফার্ম, অংশীদারি কারবার, কর্পোরেশন, কোম্পানি, সমিতি, সংঘ, জয়েন্ট-স্টক কোম্পানি, সংস্থা ও ট্রাস্টি এবং উহাদের প্রতিনিধিও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩৫) ‘‘রাষ্ট্রীয় বিমান’’ অর্থ শৃঙ্খলা বাহিনী, কাস্টমস এবং বাংলাদেশ সরকারের জন্য ব্যবহৃত বিমান;
 
(৩৬) ‘‘শিকাগো কনভেনশন’’ অর্থ Convention on International Civil Aviation, 1944;
 
(৩৭) ‘‘শিকাগো কনভেনশনের পরিশিষ্ট’’ অর্থ আইসিএও কর্তৃক ইস্যুকৃত বেসামরিক বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মানদণ্ড ও সুপারিশ সংবলিত দলিল;
 
(৩৮) ‘‘সার্টিফিকেট’’, ‘‘লাইসেন্স’’ বা ‘‘পারমিট’’ অর্থ এই আইনের অধীন চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট;
 
(৩৯) ‘‘সেবা প্রদানকারী সংস্থা’’ অর্থ বিমান চলাচলের পরিসেবা প্রদানকারী যে কোন প্রতিষ্ঠান;
 
(৪০) ‘‘স্ক্রিনিং’’ অর্থ এইরূপ কোন যন্ত্র বা যন্ত্রের ন্যায় কোন বস্তুর ব্যবহার, যাহা কোন অস্ত্র, বিস্ফোরক বা যন্ত্রপাতি, বস্তু বা সামগ্রী শনাক্ত বা সন্ধান করিতে পারে; এবং
 
(৪১) ‘‘হেলিপোর্ট’’ অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোন হেলিকপ্টার অবতরণ, উড্ডয়ন ও ভূ-পৃষ্ঠে চলাচল করিবার জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নিমিত্ত বিমানঘাঁটি বা কোন কাঠামোর উপর নির্ধারিত এলাকা।

দ্বিতীয় অধ্যায়

সার্টিফিকেট, লাইসেন্স, পারমিট, ইত্যাদি

বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটির লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট
৩। (১) লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেট ব্যতীত কোন বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটি পরিচালনা করা যাইবে না।
 
(২) কোন বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটির লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটি নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছে তাহা হইলে তিনি উহার অনুকূলে লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
বেসামরিক বিমান নিবন্ধন
৪। (১) এই আইনের অধীন কোন বেসামরিক বিমান নিবন্ধিত না হইলে বাংলাদেশে উহা পরিচালনা করা যাইবে না।
 
(২) কোন বেসামরিক বিমান নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, নির্ধারিত শর্ত পূরণ করা হইয়াছে তাহা হইলে তিনি উক্ত বিমান নিবন্ধন করিবেন এবং নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
 
(৪) কোন বেসামরিক বিমান এই আইনের অধীন নিবন্ধিত হইলে উহা বাংলাদেশী বিমান হিসাবে স্বীকৃত হইবে।
 
(৫) কোন বিদেশি রাষ্ট্রের আইনের অধীন নিবন্ধিত বিমানের ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
এয়ারম্যান লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট
৫। (১) লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেট ব্যতীত কোন ব্যক্তি এয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন না।
 
(২) এয়ারম্যান লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনকারী নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছেন তাহা হইলে তিনি আবেদনকারীর বরাবর এয়ারম্যান লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
 
(৪) কোন বিদেশি নাগরিক এয়ারম্যান লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিলে চেয়ারম্যান যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ বিধি-নিষেধ আরোপপূর্বক উক্ত বিদেশি নাগরিক বরাবর এয়ারম্যান লাইসেন্স এবং, ক্ষেত্রমত, সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট
৬। (১) এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট ব্যতীত বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন বেসামরিক বিমান পরিচালনা করা যাইবে না।
 
(২) এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট বিমান নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছে তাহা হইলে তিনি উহার অনুকূলে এয়ারওর্দিনেস সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট
৭। (১) এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট ব্যতীত কোন ব্যক্তি বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন করিতে পারিবেন না।
 
(২) এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তপূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আবেদনকারী নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছেন তাহা হইলে তিনি অবেদনকারীর বরাবর তাহার অনুকূলে এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার সার্টিফিকেট
৮। (১)সার্টিফিকেট ব্যতীত বেসমারিক বিমান পরিচালনা সংক্রান্ত কোন প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা পরিচালনা করা যাইবে না।
 
(২) বেসামরিক বিমান পরিচালনা সংক্রান্ত কোন প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার সার্টিফিকেটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছে তাহা হইলে তিনি উহার অনুকূলে সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন।
 
(৪) চেয়ারম্যান নির্ধারিত পদ্ধতিতে বেসামরিক বিমান পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ সংস্থা এবং বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থাসমূহের রেটিং এর ব্যবস্থা করিবেন।
বিদেশি এয়ার অপারেটর কর্তৃক বাণিজ্যিক বিমান পরিবহনের জন্য পারমিট
৯। (১) পারমিট ব্যতীত কোন বিদেশি এয়ার অপারেটর বাংলাদেশে কোন বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন সেবা প্রদান করিতে পারিবে না:
 
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশে কোন বিদেশি এয়ার অপারেটর কর্তৃক সিডিউল ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সহিত বিমান চলাচল চুক্তি থাকিতে হইবে।
 
(২) বিদেশি এয়ার অপারেটরকে পারমিটের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট বিদেশি এয়ার অপারেটর নির্ধারিত শর্ত পূরণ করিয়াছে তাহা হইলে তিনি উহার অনুকূলে পারমিট ইস্যু করিবেন।
 
(৪) কোন বিদেশি এয়ার অপারেটর বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন সেবা প্রদান করিতে ইচ্ছুক হইলে উক্ত এয়ার অপারেটরকে বাংলাদেশী নাগরিকের শতভাগ মালিকানাধীন ও বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন সংস্থাকে একক বিক্রয় প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করিতে হইবে।
 
(৫) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন বিদেশি এয়ার অপারেটর এবং উহার বিক্রয় প্রতিনিধির মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে, উক্ত বিরোধ চলাকালীন উক্ত বিদেশি এয়ার অপারেটরের বিমান পরিবহন সেবা বন্ধ করা যাইবে না এবং, প্রয়োজনে, উক্ত বিদেশি এয়ার অপারেটর, উপ-ধারা (৪) এর বিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে, সাময়িকভাবে নূতন বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে পারিবে।
লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিটের জন্য আবেদন এবং উহা প্রদানের পদ্ধতি
১০। এই আইনের অধীন লাইসেন্স, সার্টিফিকেট, নিবন্ধন সার্টিফিকেট, পারমিটের আবেদন ও প্রদানের পদ্ধতি, শর্ত, ফি এবং উহাদের মেয়াদ ও নবায়ন সম্পর্কিত বিষয় শিকাগো কনভেনশনের সংশ্লিষ্ট পরিশিষ্ট এবং প্রযোজ্য আন্তর্জাতিক রীতি অনুসারে এএনও দ্বারা নির্ধারিত হইবে :
 
তবে শর্ত থাকে যে, ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিট স্থগিত, বাতিল, ইত্যাদি
১১। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোন লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারী এই আইন, বিধি বা এএনও-এর কোন বিধান অথবা লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিটের কোন শর্ত ভঙ্গ করিলে চেয়ারম্যান-
 
(ক) সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স, সার্টিফিকেট, নিবন্ধন সার্টিফিকেট বা পারমিট স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল করিতে পারিবেন অথবা সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারীর উপর নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবেন; এবং
 
(খ) অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা ধারা ২৪ এর অধীন মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।
 
(২) সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারীকে কারণ দর্শানো ও যুক্তিসঙ্গত শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিট স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল অথবা সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারীর উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাইবে না :
 
তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিটের কোন শর্ত ভঙ্গ এইরূপ প্রকৃতির হয় যাহাতে বিমানে আরোহণকৃত অথবা ভূমিতে অবস্থানরত কোন ব্যক্তির জীবননাশের সমূহ সম্ভাবনা রহিয়াছে তাহা হইলে, তিনি কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে কোন লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিট স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল অথবা সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারীর উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবেন।
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা কোন লাইসেন্সি, সার্টিফিকেটধারী বা পারমিটধারী সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি, আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, চেয়ারম্যানের নিকট বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত কোন সিদ্ধান্তে কোন লাইসেন্সি, সার্টিফিটেকধারী বা পারমিটধারী সংক্ষুব্ধ হইলে আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং এইক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
(৫) কোন লাইসেন্সি, সার্টিফিটেকধারী বা পারমিটধারী উপ-ধার (১) এর অধীন আরোপিত জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করিলে উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act III of 1913) এর বিধান অনুযায়ী সরকারি দাবি হিসাবে আদায় করা যাইবে।
 
(৬) এই ধারার অধীন আদায়কৃত জরিমানার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হইবে।
শিকাগো কনভেনশনভুক্ত রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিটের গ্রহণযোগ্যতা
১২। শিকাগো কনভেনশনভুক্ত রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স, সার্টিফিকেট বা পারমিট চেয়ারম্যান নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক গ্রহণ করিতে পারিবেন :
 
তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রকে শিকাগো কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা পালনকারী হইতে হইবে।

তৃতীয় অধ্যায়

সুরক্ষা ও নিরাপত্তা

চেয়ারম্যানের সাধারণ ক্ষমতা
 
১৩। (১) এই আইনের বিধানাবলি কার্যকর এবং বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে, চেয়ারম্যান তাহার উপর অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব সম্পাদন করিতে পারিবেন।
 
(২) স্ব-উদ্যোগে অথবা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে যদি চেয়ারম্যানের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি কারণ উল্লেখপূর্বক উপযুক্ত আদেশ বা নির্দেশনা জারি করিতে পারিবেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার জন্য এএনও, আদেশ, ইত্যাদি জারি
১৪। (১) চেয়ারম্যান, শিকাগো কনভেনশনের পরিশিষ্ট এবং প্রযোজ্য আন্তর্জাতিক রীতি অনুসারে, বেসামরিক বিমান পরিবহনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার জন্য এএনও, আদেশ এবং নির্দেশনা জারি ও সংশোধন করিতে পারিবেন।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, এএনওতে নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাইবে, যথা:-
 
(ক) বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার লক্ষে মানদণ্ড নির্ধারণ;
 
(খ) বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে পরিদর্শন ও তদারকির পদ্ধতি এবং তজ্জন্য প্রদেয় সুবিধা নির্ধারণ;
 
(গ) বিমানঘাঁটি এবং অবতরণ এলাকাসহ উহার চতুষ্পার্শ্বের এলাকা ও বিমান পরিবহন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ;
 
(ঘ) প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বেআইনি আচরণ নিয়ন্ত্রণকল্পে অস্ত্র, বিষ্ফোরক বা অন্য যে কোন যন্ত্র অনুসন্ধান করিবার জন্য বিমানবন্দরের যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি ও তাহাদের মালামাল তল্লাশি করাসহ কুরিয়ার ও এক্সপ্রেস পার্সেলসহ সকল প্রকার ডাক স্ক্রিনিং সংক্রান্ত বিধান;
 
(ঙ) বিমান ছিনতাই, বিমান দস্যুতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হইতে সুরক্ষা প্রদানের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় বিধান;
 
(চ) অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমান পরিবহনে যাত্রী ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এয়ার অপারেটর এবং উহাদের এজেন্ট ও কর্মচারী কর্তৃক কোন ব্যক্তিকে তল্লাশি করিবার ক্ষেত্রে আচরণ বিধি নির্ধারণ;
 
(ছ) লগবহি ইস্যু ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিধান;
 
(জ) বাংলাদেশের উপর দিয়া বা বাংলাদেশের একস্থান হইতে অন্য স্থানে বিমান চলাচলের শর্ত নির্ধারণ;
 
(ঝ) বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটির বাধা দূরীকরণ সংক্রান্ত বিধান;
 
(ঞ) এয়ার ট্রাফিক সংক্রান্ত নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বিধান, যথা:-
 
(অ) আকাশের ও বিমানবন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ;
 
(আ) বিমানের ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ;
 
(ই) এয়ার নেভিগেশন সুবিধা এবং বিমানের নেভিগেশন, সুরক্ষা ও সনাক্তকরণ;
 
(ঈ) সংশ্লিষ্ট ভূ-পৃষ্ঠে ব্যক্তি ও সম্পত্তির সুরক্ষা; এবং
 
(উ) বিমান চলাচলযোগ্য আকাশসীমার কার্যকর ব্যবহারসহ ফ্লাইটের নিরাপদ উচ্চতা সংক্রান্ত নিয়মাবলি এবং বিমানের সহিত বিমান, স্থলযান, জলযান বা অন্য কোন বস্তু এবং বাতাসবাহিত কোন বস্তুর সংঘর্ষ প্রতিরোধের নিয়মাবলি; এবং
 
(ট) নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন বিষয়।
আকাশ পথে বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন
১৫। চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমানের মাধ্যমে বিপজ্জনক পণ্যের নিরাপদ পরিবহনের ক্ষেত্রে শিকাগো কনভেনশনে উল্লিখিত বিপজ্জনক পণ্য সংক্রান্ত পরিশিষ্ট ও আইসিএও এর টেকনিক্যাল নির্দেশাবলির প্রতিপালন নিশ্চিত করিবেন।
সুরক্ষা তদারকি সংক্রান্ত চুক্তি
১৬। চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা তদারকির বিষয়ে শিকাগো কনভেনশনের Article 83 bis অনুসরণপূর্বক অন্য কোন রাষ্ট্রের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবেঃ
 
তবে শর্ত থাকে যে, সুরক্ষা তদারকি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনে ব্যর্থ রাষ্ট্রের সহিত এইরূপ চুক্তি করা যাইবে না।

চতুর্থ অধ্যায়

পরিদর্শন ও আটক

পরিদর্শন, ইত্যাদি
১৭। (১) চেয়ারম্যান বা তদ্‌কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন পরিদর্শক নিম্নবর্ণিত কোন বিষয়ে পরিদর্শন এবং দলিল ও রেকর্ডপত্র পরীক্ষা করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ পরিদর্শন ও পরীক্ষাকালে এতদ্‌সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন, যথা:-
 
(ক) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোন এয়ার অপারেটর কর্তৃক পরিচালিত কোন বেসামরিক বিমান উড্ডয়নযোগ্য কিনা;
 
(খ) কোন অপারেটর ও সেবা প্রদানকারী সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত-সুবিধা, উহার সুযোগ স্থাপনা এবং কার্যক্রম এই আইন, বিধি, এএনও এবং শিকাগো কনভেনশনের প্রযোজ্য পরিশিষ্ট অনুসারে পরিচালিত হইতেছে কিনা;
 
(গ) বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন বেসামরিক বিমানের পরিচালনা এই আইন, বিধি, এএনও এবং শিকাগো কনভেনশনের প্রযোজ্য পরিশিষ্ট অনুসারে পরিচালিত হইতেছে কিনা;
 
(ঘ) বাংলাদেশে অবস্থানরত কোন বিদেশি বিমানের পরিচালনা এই আইন, বিধি, এএনও এবং শিকাগো কনভেনশনের প্রযোজ্য পরিশিষ্ট অনুসারে পরিচালিত হইতেছে কিনা; এবং
 
(ঙ) কোন অপারেটর কর্তৃক ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য অভিপ্রেত কোন বিমান, বিমানের ইঞ্জিন, প্রপেলার বা এ্যাপলায়েন্স নিরাপদভাবে ব্যবহারের উপযোগী কিনা অথবা উহা নিরাপদ অবস্থায় সংরক্ষণ করা হইতেছে কিনা।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শন এবং দলিল ও রেকর্ডপত্র পরীক্ষাকালে কোন ব্যক্তি বাধা সৃষ্টি করিতে পারিবে না।
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শন বা পরীক্ষান্তে যদি চেয়ারম্যান বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিদর্শকের নিকট প্রতীয়মান হয় যে -
 
(ক) কোন অপারেটর বা সেবা প্রদানকারী সংস্থা এই আইন, বিধি, এএনও বা শিকাগো কনভেনশনের প্রযোজ্য পরিশিষ্ট অনুসারে পরিচালিত হইতেছে না, তাহা হইলে তিনি উক্ত অপারেটর বা সেবা প্রদানকারী সংস্থাকে প্রযোজ্য বিধি-বিধান অনুযায়ী ন্যূনতম মান বজায় রাখিয়া কার্যক্রম পরিচালানার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন; অথবা
 
(খ) বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে কোন অপারেটর কর্তৃক ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য অভিপ্রেত কোন বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার বা এ্যাপলায়েন্স নিরাপদভাবে ব্যবহারের উপযোগী নয় অথবা নিরাপদ অবস্থায় সংরক্ষণ করা হইতেছে না, তাহা হইলে তিনি উক্ত বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার এবং এ্যাপলায়েন্সের ব্যবহার বন্ধ করিবার নির্দেশ প্রদান করিবেন :
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার এবং এ্যাপলায়েন্স মেরামতযোগ্য হইলে প্রয়োজনীয় মেরামত করিবার পর চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে উহা পুনরায় ব্যবহার করা যাইবে।
ফ্লাইট প্রতিরোধ ও বিমান আটক
১৮। (১) চেয়ারম্যান নিম্নবর্ণিত কোন কারণে কোন এয়ার অপারেটর বা এয়ারম্যানকে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাইবে না মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন, যথা :-
 
(ক) বিমান উড্ডয়নে সক্ষম না হইলে;
 
(খ) ফ্লাইটের জন্য এয়ারম্যান শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম না হইলে; অথবা
 
(গ) সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য বিমানে মারাত্মক ঝুঁকি সনাক্ত করা হইলে।
 
(২) চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত কোন কারণে কোন বিমান আটক করিতে পারিবে, যথা : -
 
(ক) উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষমান ফ্লাইটের প্রকৃতি বিবেচনা করিয়া যদি প্রতীয়মান হয় যে, উহা আরোহণকৃত যাত্রী বা ভূপৃষ্ঠে কোন ব্যক্তি বা সম্পত্তির জন্য বিপজ্জনক; অথবা
 
(খ) এই আইন, বিধি বা এএনও প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে উক্তরূপ আটক আবশ্যক।

পঞ্চম অধ্যায়

বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত, ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার

বিমান দুর্ঘটনা ও মারাত্মক ঘটনার তদন্ত
১৯। (১) সরকার নিম্নবর্ণিত কোন বিমানের দুর্ঘটনা ও মারাত্মক ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে শিকাগো কনভেনশনের পরিশিষ্ট-১৩ (Annex-13) অনুসরণপূর্বক একটি কমিটি গঠন করিতে পারিবে, যথা :-
 
(ক) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাংলাদেশের উপর দিয়া চলাচলরত কোন বিমান;
 
(খ) বাংলাদেশের বাহিরে যে কোন স্থানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত বা বাংলাদেশী অপারেটর কর্তৃক পরিচালিত অথবা বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা ডিজাইনকৃত কোন বিমান।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার
 
২০। সাগরের জলরাশি, সাগর সৈকত বা বেলাভূমিতে পতিত বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের ক্ষেত্রে Bangladesh Merchant Shipping Ordinance, 1983 (Ordinance No. XXVI of 1983) সহ প্রচলিত আইনের বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় অভিযোজন সহকারে, প্রযোজ্য হইবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যুদ্ধাবস্থা ও জরুরি অবস্থায় সরকারের বিশেষ ক্ষমতা

জন স্বাস্থ্য সুরক্ষা
২১। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দরে আগত বা অবস্থিত অথবা বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দর হইতে পরিত্যাগকারী কোন বিমানের মাধ্যমে সৃষ্ট বা ছড়ানো সম্ভাব্য সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধের জন্য জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার উদ্দেশ্যে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
জন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জরুরি ব্যবস্থা
 
২২। (১) ধারা ২১ এর বিধান সত্ত্বেও, সরকার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, বাংলাদেশ বা ইহার কোন অংশে কোন মারাত্মক মহামারী রোগের প্রাদুর্ভাবের হুমকি রহিয়াছে এবং বিমানের মাধ্যমে উক্ত রোগে আক্রান্ত হইবার বা সংক্রমিত অথবা ছড়াইয়া পড়িবার আশঙ্কা রহিয়াছে তাহা হইলে সরকার, জন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যে কোন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্দেশ্যে যে কোন আদেশ, নির্দেশ বা পরিপত্র জারি করিতে পারিবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন জারীকৃত আদেশ, নির্দেশ বা পরিপত্র প্রকাশের তারিখ হইতে উহা ৩ (তিন) মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে :
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, উক্ত সময় অনধিক ৩(তিন) মাসের জন্য বর্ধিত করিতে পারিবে।
যুদ্ধ বা জরুরি অবস্থায় সরকারের বিশেষ ক্ষমতা
২৩। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যুদ্ধ বা জরুরি অবস্থা অথবা জন-নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে নিম্নবর্ণিত যে কোন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
 
(ক) এই আইন, বিধি বা এএনও এর অধীন প্রদত্ত যে কোন সার্টিফিকেট, নিবন্ধন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্ত ও সময়সীমা সাপেক্ষে, বাতিল বা স্থগিত;
 
(খ) বাংলাদেশে বা উহার উপর দিয়া কোন বিমান চলাচল, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে, নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ;
 
(গ) কোন বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দর, বিমান প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থার কোন কাজ বা ব্যবহার, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে, নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ; অথবা
 
(ঘ) কোন বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দর, বিমান প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা অথবা বিমান পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, প্লান্ট, উপকরণ বা সামগ্রীসহ বিমান প্রস্তুত বা মেরামত করিবার বা রাখিবার স্থান, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, সরকারের অনুকূলে হস্তান্তরের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের নিকট অর্পণের নির্দেশ প্রদান।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর অধীন আদেশের ফলে কোন বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর, বিমান প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে উহাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন ক্ষতিগ্রস্ত বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর, বিমান প্রশিক্ষণ সংস্থা বা বিমান রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা কর্তৃপক্ষের সহিত পারষ্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য হইবেন।
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন পারষ্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা সম্ভব না হইলে, সরকার, এতদুদ্দেশ্যে, সুপ্রীম কোর্টের বিচারক হিসাবে নিয়োগ লাভের যোগ্য কোন ব্যক্তিকে সালিসকারী হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং প্রয়োজনে, সালিসকারীকে সহায়তার জন্য ক্ষতির প্রকৃতি বিবেচনা করিয়া এতদ্‌বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন প্রদান করিতে পারিবে।
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন সরকার কর্তৃক কোন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে মনোনয়ন প্রদান করা হইলে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তাহার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করিবার জন্য একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন প্রদান করিতে পারিবে।
 
(৬) সালিসের পদ্ধতি এবং সালিসকারী ও বিশেষজ্ঞের সম্মানী সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
 
(৭) সালীসকারী কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করা যাইবে।
 
(৮) এই ধারার অধীন সালিসের ক্ষেত্রে প্রচলিত অন্য কোন আইনের কোন বিধান প্রযোজ্য হইবে

সপ্তম অধ্যায়

অপরাধ ও দণ্ড

আইন, বিধি, এএনও, ইত্যাদির বিধান লঙ্ঘণ করিবার দণ্ড
২৪। যদি কোন ব্যক্তি এই আইন, তদধীন প্রণীত বিধি বা এএনও এর কোন বিধান অথবা এই আইনের অধীন ইস্যুকৃত কোন সার্টিফিকেট, নিবন্ধন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিটের কোন শর্ত লঙ্ঘন করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট জাল করিবার দণ্ড
২৫। যদি কোন ব্যক্তি কোন সার্টিফিকেট, নিবন্ধন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট জাল বা পরিবর্তন করেন বা করিবার চেষ্টা করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বিমানের নেভিগেশনে হস্তক্ষেপ করিবার দণ্ড
২৬। যদি কোন ব্যক্তি―
 
(ক) বিমানের নেভিগেশনের সঠিক আলো অথবা সংকেতের কার্যক্রম বা পরিচালনায় হস্তক্ষেপ, অপসারণ বা ধ্বংস করেন বা ধ্বংস করিবার চেষ্টা করেন;
 
(খ) বিমানের নেভিগেশনে এমন কোন আলো, সংকেত বা যোগাযোগ ব্যবহার করেন যাহা বিমানের নেভিগেশনের জন্য এই আইন, বিধি বা এএনও দ্বারা নির্দিষ্টকৃত আলো বা সংকেতের অনুরূপ বা সদৃশ বলিয়া মনে হয়; অথবা
 
(গ) চেয়ারম্যান কর্তৃক সতর্কতা বা নোটিশ প্রাপ্তির পরও বিমানের নেভিগেশনের জন্য এই আইন, বিধি বা এএনও দ্বারা নির্দিষ্টকৃত আলো বা সংকেতের অনুরূপ বা সাদৃশ্যপূর্ণ আলো বা সংকেত ব্যবহার অব্যহত রাখেন;
 
তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
 
এয়ার অপারেটর কর্তৃক রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ না করিবার, মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল, ইত্যাদির জন্য দণ্ড
২৭। যদি কোন এয়ার অপারেটর ইচ্ছাকৃতভাবে―
 
(ক) এই আইন, বিধি বা এএনও এর অধীন আবশ্যকীয় কোন প্রতিবেদন প্রদান করিতে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন অথবা মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন;
 
(খ) চেয়ারম্যান কর্তৃক অনুমোদিত বা নির্ধারিত পদ্ধতিতে হিসাব, রেকর্ডপত্র বা স্মারক যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিতে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন; অথবা
 
(গ) কোন প্রতিবেদন, হিসাব রেকর্ডপত্র বা স্মারক জাল বা পরিবর্তন করেন;
 
তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত এয়ার অপারেটর অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
রেকর্ডপত্র উপস্থাপন না করিবার বা তথ্য প্রদান অস্বীকার করিবার দণ্ড
২৮। যদি কোন ব্যক্তি এই আইন, বিধি বা এএনও এর অধীন আবশ্যকীয় কোন বিষয় বা তদন্তের স্বার্থে তাহার হেফাজতে রাখা কোন রেকর্ডপত্র বা দলিল উপস্থাপন করিতে অথবা উক্তরূপ রেকর্ডপত্র বা দলিলের বিষয়ে তথ্য প্রদান করিতে অস্বীকার করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করিবার দণ্ড
২৯। যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা বেপরোয়াভাবে এইরূপ কোন কার্য করেন যাহাতে নির্বিঘ্নভাবে বিমান পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি হয় এবং উহা দ্বারা কোন মানুষের জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হয় তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫(পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানের যন্ত্রাংশ, ইত্যাদি সরাইয়া ফেলিবার দণ্ড
৩০। যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে দুর্ঘটনা কবলিত কোন বেসামরিক বিমানের কোন যন্ত্রাংশ বা উক্ত বিমানের ভিতর বা বাহির হইতে কোন সম্পত্তি বা মালামাল সরাইয়া ফেলেন বা গোপন করেন বা প্রদান করিতে অস্বীকার করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৭(সাত) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপসারিত যন্ত্রাংশের মূল্যের দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বিমানে বিপজ্জনক পণ্য পরিবহন করিবার দণ্ড
৩১। যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নির্ধারিত শর্ত প্রতিপালন ব্যতীত বিমানে বিপজ্জনক কোন পণ্য পরিবহন করেন বা করিবার চেষ্টা করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করিবার দণ্ড
৩২। কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৭(সাত) বৎসর এবং অন্যূন ৩ (তিন) বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
বিপজ্জনক পদ্ধতিতে বিমান চালনার দণ্ড
৩৩। যদি কোন বিমানের পাইলট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কোন বিমান ভূমি বা পানিতে অবস্থানকারী কোন ব্যক্তি বা সম্পত্তির জন্য বিপজ্জনক পদ্ধতিতে চালনা করেন এবং যদি তিনি প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হন যে, বিমানের উক্তরূপ পরিচালনা তাহার প্রত্যক্ষ ত্রুটি বা ব্যর্থতার কারণে সংঘটিত হয় নাই, তাহা হইলে তিনি অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
অপরাধ সংশ্লিষ্ট বিমান, বস্তু, ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত
৩৪। এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত বিমান, বস্তু বা, ক্ষেত্রমত, উপকরণ সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
অপরাধ সংঘটনে সহায়তার দণ্ড
৩৫। যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন বা উক্ত অপরাধ সংঘটনে ষড়যন্ত্র করেন বা প্ররোচনা দেন এবং উক্ত ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হয়, তাহা হইলে উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
কতিপয় ক্ষেত্রে মামলা দায়েরে প্রতিবন্ধকতা
৩৬। আবহাওয়া এবং অন্য কোন পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় বিমান চলাচলের জন্য যে উচ্চতা যৌক্তিক সেইরূপ উচ্চতার উপর দিয়া কোন বিমান চলাচলকে অথবা উক্ত বিমান সংক্রান্ত সাধারণ ঘটনাকে অনধিকার প্রবেশ বা উপদ্রপ হিসাবে চিহ্নিত করিয়া কোন মামলা দায়ের করা যাইবে না।
Code of Criminial Procedure এর প্রয়োগ
৩৭। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) প্রযোজ্য হইবে।
কোম্পানি বা সংস্থা কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩৮। (১) কোন কোম্পানি বা সংস্থা কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানি বা সংস্থার এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি বা সংস্থা আইনগত সত্ত্বা হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানি বা সংস্থাকে পৃথকভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।
 
ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘কোম্পানি’’ বা ‘‘সংস্থা’’ অর্থে নিগমিত বা নিবন্ধিত হউক বা না হউক এইরূপ যে কোন কোম্পানি বা সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন এবং সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিকানাধীন কোন কোম্পানি বা সংস্থাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

অষ্টম অধ্যায়

বিবিধ

জাতীয় রেকর্ডিং সিস্টেম
৩৯। (১) বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোন বেসামরিক বিমান এবং উহাতে ব্যবহৃতব্য কোন বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার, এ্যাপলায়েন্স বা খুচরা যন্ত্রাংশের স্বত্ব বা স্বার্থ নির্ধারণকারী দলিলপত্রের তথ্য সংরক্ষণের জন্য একটি জাতীয় রেকর্ডিং সিস্টেম থাকিবে এবং কোন দলিল উক্ত সিস্টেমে রেকর্ডভুক্ত না হইলে উহা বৈধ হইবে না।
 
(২) কোন্ কোন্ দলিল জাতীয় রেকর্ডিং সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত হইবে উহা এবং অন্তর্ভুক্তকরণের পদ্ধতি এএনও দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ক্ষমতা অর্পণ
৪০। (১) চেয়ারম্যান, প্রয়োজনে, তাহার কোন ক্ষমতা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষের কোন সদস্য, কর্মকর্তা, পরিদর্শক বা ইউনিটকে অর্পণ করিবেন।
 
(২) চেয়ারম্যান, প্রয়োজনে, তাহার কোন ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তিকে অর্পণ করিতে পারিবেন:
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ ক্ষমতা এমন কোন কাজের জন্য কোন ব্যক্তিকে অর্পণ করা যাইবে না যাহাতে উক্ত ব্যক্তির স্বার্থ রহিয়াছে।
অপারেটর, সেবা প্রদানকারী সংস্থার দায়িত্ব
৪১। এই আইন, বিধি, এএনও, নির্দেশনা এবং আদেশ অনুসরণক্রমে প্রত্যেক অপারেটর, সেবা প্রদানকারী সংস্থা উহাদের কার্যক্রম পরিচালনা করিবে এবং বেসামরিক বিমান চলাচলে ব্যবহৃত সকল অবকাঠামো ও ইকুইপমেন্ট নিয়মিত পরিদর্শন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত করিবে বা করাইবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
শিকাগো কনভেনশনের মানদণ্ডের সহিত বৈসাদৃশ্যপূর্ণ এএনও সম্পর্কে আইসিএও-কে অবহিতকরণ
৪২। এই আইনের অধীন কোন এএনও জারির ক্ষেত্রে শিকাগো কনভেনশনের সংশ্লিষ্ট পরিশিষ্টের মানদণ্ড সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করা সম্ভব না হইলে চেয়ারম্যান, উক্তরূপ বৈসাদৃশ্য সম্পর্কে, আইসিএও কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আইসিএও-কে অবহিত করিবেন।
পেটেন্টের ব্যবহার
৪৩। বাংলাদেশে নেভিগেশনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে নিবন্ধিত নয় এইরূপ কোন বিদেশি বিমানে কোন উদ্ভাবন (invention) ব্যবহারের ক্ষেত্রে, প্রয়োজনীয় অভিযোজন সহকারে, Patents And Designs Act, 1911 (Act No. ΙΙ of 1911) এর section 42 এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
অব্যাহতি, ইত্যাদি
৪৪। (১) সরকার, জনস্বার্থে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে, যে কোন বিমান বা বিমান শ্রেণি এবং যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণিকে এই আইন বা বিধি সকল বা যে কোন বিধান হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
 
(২) চেয়ারম্যান, জনস্বার্থে, প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন বিমান বা বিমান শ্রেণি এবং যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণিকে এএনও-তে বর্ণিত শর্তাবলি প্রতিপালন হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবেন।
 
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা :-
 
(ক) Convention on International Civil Aviation, 1944, Convention on International Recognition of Rights in Aircraft, 1948, Convention on Damage Caused by Foreign Aircraft to Third Parties on the Surface, 1952 এবং বেসামরিক বিমান চলাচল সম্পর্কিত বিষয়ে বাংলাদেশ ও অন্য কোন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক, চুক্তি, কনভেনশন বা এতদ্‌সংক্রান্ত কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক গৃহীত কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সংক্রান্ত;
 
(খ) বিমান পরিবহন সেবা ও বাণিজ্যিক ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ;
 
(গ) বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা হেলিপোর্টের নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহারের শর্তাবলি নির্ধারণ;
 
(ঘ) বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা হেলিপোর্ট অথবা উহার সন্নিকটে অবস্থানকারী ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণ;
 
(ঙ) বিমান চিহ্নিতকরণ, বিমানের নকশা প্রণয়নকারী ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ;
 
(চ) বিমান ভাড়া, চার্টার, ইজারা বা বন্ধক, কোন বিমান বা বিমান শ্রেণি তৈরী, বিক্রয় এবং আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ;
 
(ছ) বিমানে যাত্রী, পণ্য, ডাক ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহন ও বিমানের টিকেট বিক্রয় এবং জেনারেল এভিয়েশন, এরিয়াল কার্য ও শিল্পের কাজে বিমানের ব্যবহার নির্ধারণ;
 
(জ) বাংলাদেশে প্রবেশে বা বাংলাদেশ হইতে প্রস্থানে বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দর নির্ধারণ;
 
(ঝ) আকাশসীমা লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং কোন নির্দিষ্ট এলাকার উপর দিয়া বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ;
 
(ঞ) বিমানপথের সংকেত, বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা হেলিপোর্টের লাইট এবং বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা বিমানপথের নিকটবর্তী এলাকায় লাইট সরবরাহ, তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ;
 
(ট) বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা হেলিপোর্টের অবতরণ এলাকার সন্নিকটে বাঁধা দূরীকরণার্থে মানদণ্ড নির্ধারণ এবং উহাদের সন্নিকটে অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ লাইট, রেডিও, বৈদ্যুতিক উপকরণ এবং ধোঁয়া উৎপাদনকারী বস্তু অপসারণ;
 
(ঠ) বাঁধা সীমাবদ্ধকারী তলের (Obstructions Limitation Surfaces) উপর, নিচ বা বাহিরে নূতন কোন অবকাঠামো নির্মাণে ভূমি ব্যবহারকারী কর্তৃক যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণের পদ্ধতি এবং উক্তরূপ ভূমি ব্যবহারকারী ও কর্তপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত বিধি-বিধান;
 
(ড) বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর বা হেলিপোর্ট বা বিমানপথের নিকটবর্তী এলাকার উপর অবস্থিত ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক বা দখলকারী কর্তৃক উক্ত সম্পত্তির উপর লাইট স্থাপন ও সংরক্ষণ এবং উক্তরূপে স্থাপন ও সংরক্ষণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদেয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ এবং এতদুদ্দেশ্যে স্থাপিত ও সংরক্ষিত সম্পত্তিতে প্রবেশাধিকারসহ উহার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ;
 
(ঢ) বিমান বা উহাতে আরোহণকৃত ব্যক্তি কর্তৃক সংকেত প্রদান অথবা উক্ত বিমান বা ব্যক্তির নিকট সংকেত প্রেরণ বা যোগাযোগ স্থাপন এবং উহা নিয়ন্ত্রণ;
 
(ণ) বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী যুদ্ধাস্ত্র অথবা যুদ্ধোপকরণ অথবা অন্য কোন নির্দিষ্ট আগ্নেয়াস্ত্র, বস্তু বা উপকরণ বিমানে পরিবহন নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ;
 
(ত) আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ;
 
(থ) আকাশপথে বেসামরিক বিমান চালনা সংক্রান্ত পতাকা বা ব্যানার ব্যবহারের নিয়মাবলী;
 
(দ) বিমান হইতে নিসৃত কার্বণ হ্রাসকরণ বিষয়ে কর্মপরিকল্পা প্রণয়ন;
 
(ধ) বেসামরিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, বিমান দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তি এবং তাহার পরিবারকে সহায়তা প্রদান;
 
(ন) বেসামরিক বিমান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী বেআইনি আচরণের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রদান; এবং
 
(প) বিমানের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্যা বিধান।
বিধির কার্যকারিতা
 
৪৬। এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ হইতে ২১ (একুশ) দিন পর কার্যকর হইবে:
 
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ২১, ২২ ও ২৩ এর অধীন প্রণীত বিধির ক্ষেত্রে উক্ত বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
এএনও প্রণয়নের ক্ষমতা
 
৪৭। অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে চেয়ারম্যান, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন ও বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, ইংরেজীতেও এএনও প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
 
৪৮। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে Civil Aviation Ordinance, 1960 (Ordinance No. XXXII of 1960) রহিত হইবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর অধীন
 
(ক) কৃত কোন কাজ বা গৃহীত কোন ব্যবস্থা, প্রণীত কোন বিধি, জারীকৃত কোন এএনও, আদেশ, নির্দেশনা বা সার্কুলার, ইস্যুকৃত কোন নোটিশ, প্রদত্ত কোন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট অথবা সম্পাদিত চুক্তি বা দলিল এই আইনের অধীনকৃত, গৃহীত, প্রণীত, জারীকৃত, ইস্যুকৃত, প্রদত্ত অথবা সম্পাদিত বলিয়া গণ্য হইবে;
 
(খ) চলমান বা নিষ্পন্নাধীন কোন কার্যক্রম এই আইনের অধীন, যতদূর সম্ভব, নিষ্পত্তি করিতে হইবে; এবং
 
(গ) দায়েরকৃত কোন মামলা বা কার্যধারা কোন আদালতে চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
 
৪৯। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs