প্রিন্ট ভিউ

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৩৩ নং আইন )

সাংবাদিকতা বিষয়ে পেশাগত প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা ও ডিগ্রি কোর্স পরিচালনা, গবেষণা ও প্রকাশনা, সম্মাননা প্রদান এবং সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং যুগোপযোগী করিবার লক্ষ্যে একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু সাংবাদিকতা বিষয়ে পেশাগত প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা ও ডিগ্রি কোর্স পরিচালনা, গবেষণা ও প্রকাশনা, সম্মাননা প্রদান এবং সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং যুগোপযোগী করিবার লক্ষ্যে একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু, এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
(১) ‘‘ইনস্টিটিউট’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৩ এর অধীন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি);
 
(২) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;
 
(৩) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
(৪) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৭ এর অধীন গঠিত পরিচালনা বোর্ড;
 
(৫) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(৬) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক;
 
(৭) ‘‘সদস্য’’ অর্থ বোর্ডের সদস্য; এবং
 
(৮) ‘‘সাংবাদিক’’ অর্থ এমন কোনো ব্যক্তি যিনি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া বা বার্তা সংস্থার কাজে একজন সার্বক্ষণিক সাংবাদিক হিসাবে নিয়োজিত আছেন অথবা উক্ত মিডিয়া বা সংস্থার সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, উপ-সম্পাদক, সহকারী সম্পাদক, ফিচার লেখক, রিপোর্টার, সংবাদদাতা, কপি রাইটার, কার্টুনিস্ট, সংবাদ চিত্রগ্রাহক এবং সম্পাদনা সহকারী, এবং সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত কোনো পদধারীগণও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।
ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি
৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) নামে একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হইবে।
 
(২) ইনস্টিটিউট একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও সাধারণ সীলমোহর থাকিবে, এবং এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান সাপেক্ষে, ইনস্টিটিউটের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে, এবং ইহা নিজ নাম ব্যবহারে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
(৩) ইনস্টিটিউট কর্তৃক অনুমোদিত গ্রাফিকস ডিজাইন বা প্রতীক সমন্বয়ে, ইনস্টিটিউটের একটি লোগো থাকিবে।
ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয় ও শাখা
৪। ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং ইনস্টিটিউট, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শাখা স্থাপন করিতে পারিবে।
ইনস্টিটিউটের পরিচালনা ও প্রশাসন
৫। ইনস্টিটিউট পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং ইনস্টিটিউট যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে, বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ এবং কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে।
ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব ও কার্যাবলি
৬। ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
(১) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগে কর্মরত জনসংযোগ কর্মকর্তা বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে কর্মরত সাংবাদিক, তথ্য ও গণমাধ্যমকর্মী বা উন্নয়ন ও যোগাযোগকর্মী এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কর্মকালীন প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সুবিধা প্রদান;
 
(২) সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণকে সার্টিফিকেট প্রদান;
 
(৩) সাংবাদিকতা বিষয়ে সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা ও অন্য কোনো ডিগ্রি কোর্স পরিচালনা এবং সনদ প্রদান;
 
(৪) প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা ও ডিগ্রি কোর্স পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কোর্স ডিজাইন, কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়ন করা;
 
(৫) প্রশিক্ষণ বা কোর্স পরিচালনা, গবেষণা ও প্রকাশনা এবং সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা গড়িয়া তোলাসহ প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
 
(৬) সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান;
 
(৭) আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গঠিত তথ্যায়ন ভিত্তিক ইউনিটসহ ইন্টার‍্যাকটিভ ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মিউজিয়াম, ডিজিটাল আর্কাইভ, লাইব্রেরি, ও পাঠাগার স্থাপন এবং গণমাধ্যম রেফারেন্স ও তথ্যকেন্দ্র গড়িয়া তোলা;
 
(৮) সংবাদপত্র, বার্তা সংস্থা, রেডিও, টেলিভিশন, তথ্যকেন্দ্র এবং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের উপদেশক ও পরামর্শক সেবা প্রদান;
 
(৯) গণমাধ্যম সম্পর্কিত সাংবাদিকতা বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার কিংবা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুকূলে মতামত বা পরামর্শ প্রদান করা;
 
(১০) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাংবাদিকতা, গণযোগাযোগ ও গণমাধ্যম সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং তদ্‌সম্পর্কিত তথ্য, উপাত্ত এবং প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশ;
 
(১১) ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রদত্ত সার্ভিস ও পরিচালিত যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য বোর্ড কর্তৃক ধার্যকৃত ও অনুমোদিত হারে ‘‘ফি’’ গ্রহণ করা;
 
(১২) ইনস্টিটিউটের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা;
 
(১৩) ইনস্টিটিউটের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয় সম্পর্কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও সম্মেলনের আয়োজন ও পরিচালনা করা; এবং
 
(১৪) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, ইনস্টিটিউটের উপর অর্পিত অন্য যে কোনো দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পাদন।
পরিচালনা বোর্ড
৭। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালনা বোর্ড গঠিত হইবে, যথা :-
 
(ক) বিশিষ্ট সাংবাদিক বা শিক্ষাবিদ বা জনসংযোগে দক্ষ ব্যক্তিবর্গের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন ব্যক্তি, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
(খ) তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(গ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ঘ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ঙ) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(চ) প্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর;
 
(ছ) চেয়ারম্যান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়;
 
(জ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বহুল প্রচারিত জাতীয় সংবাদপত্রের দুইজন সম্পাদক;
 
(ঝ) সরকার কর্তৃক মনোনীত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সম্পাদক;
 
(ঞ) বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন কর্তৃক মনোনীত দুইজন সাংবাদিক;
 
(ট) বিশিষ্ট সাংবাদিক বা শিক্ষাবিদ বা জনসংযোগে দক্ষ ব্যক্তিবর্গের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত দুইজন ব্যক্তি; এবং
 
(ঠ) মহাপরিচালক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি), যিনি বোর্ডের সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক), (জ), (ঝ), (ঞ) ও (ট) তে উল্লিখিত মনোনীত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বৎসর মেয়াদের জন্য স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোনো সময়, কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে, উক্তরূপ মনোনীত কোনো সদস্যকে তাহার পদ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
 
(৩) কোনো মনোনীত সদস্য যে কোনো সময় সরকারের উদ্দেশ্যে স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
 
(৪) বোর্ডের কোনো মনোনীত সদস্য যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে তাহার সদস্যপদ বাতিল হইবে।
 
(৫) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা তাহার অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার বোর্ডের কোনো সদস্যকে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ প্রদান করিতে পারিবে।
বোর্ডের সভা
৮। (১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
 
(২) চেয়ারম্যান, বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে তদকর্তৃক মনোনীত বোর্ডের কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
(৩) প্রতি তিন মাসে বোর্ডের অন্যূন একটি সভা করিতে হইবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
(৪) বোর্ডের সদস্য-সচিব চেয়ারম্যান এর পূর্বানুমোদনক্রমে সভা আহবান করিবেন।
 
(৫) বোর্ডের অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
 
(৬) বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারীর দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে।
 
(৭) কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে আদালতে কোনো প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।
 
(৮) প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হইবার অনধিক ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট উহার অনুলিপি প্রেরণ করিতে হইবে।
 
(৯) বোর্ড উহার সভার নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষ অবদান রাখিতে সক্ষম এইরূপ কোনো ব্যক্তি, কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণের পরামর্শ বা সহযোগিতা গ্রহণ করিতে পারিবে।
মহাপরিচালক
৯। (১) ইনস্টিটিউটের একজন মহাপরিচালক থাকিবে।
 
(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকরির শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
 
(৩) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে কিংবা তাহার অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্যপদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা মহাপরিচালক স্বীয় দায়িত্বে পুনরায় যোগদান না করা পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
(৪) ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সার্বক্ষণিকভাবে নিযুক্ত মুখ্য নির্বাহী হইবেন, এবং তিনি-
 
(ক) এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধান অনুসারে ইনস্টিটিউটের দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পাদন ও তত্ত্বাবধান করিবেন;
 
(খ) তিনি বোর্ডের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং
 
(গ) বোর্ডের নির্দেশ মোতাবেক ইনস্টিটিউটের অন্যান্য কার্য সম্পাদন করিবেন।
কমিটি গঠন
১০। বোর্ড, এই আইনের অধীন কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ বা কোনো কার্য সম্পাদনের ব্যাপারে উহাকে সহায়তা করিবার উদ্দেশ্যে, উহার কোনো সদস্য বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সমন্বয়ে, এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
কর্মচারী নিয়োগ
১১। ইনস্টিটিউট উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
একাডেমিক কার্যক্রম
১২। ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে, বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, ইনস্টিটিউট কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হইতে পারিবে।
একাডেমিক কমিটি
১৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, একাডেমিক শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়াবলি তদারকি এবং ইনস্টিটিউটকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করিবার জন্য ইনস্টিটিউটের একটি একাডেমিক কমিটি থাকিবে।
 
(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত একাডেমিক কমিটি গঠন ও উহার কার্যাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ইনস্টিটিউটের তহবিল
১৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) তহবিল নামে ইনস্টিটিউটের একটি তহবিল থাকিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:-
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো বিদেশি সরকার বা আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত ঋণ;
 
(ঙ) বোর্ডের অনুমোদনক্রমে ইনস্টিটিউটের অস্থাবর সম্পত্তি ও সেবা বিক্রয়লব্ধ অর্থ;
 
(চ) ইনস্টিটিউটের নিজস্ব উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়, ফি বা অনুরূপ অর্থ; এবং
 
(ছ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
(৩) ইনস্টিটিউটের তহবিল কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহা পরিচালনা করিতে হইবে।
 
ব্যাখ্যা : ‘তপশিলি ব্যাংক’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P. O. No. 127 of 1972) এর Article 2 (i) তে সংজ্ঞায়িত ‘Scheduled Bank’।
 
(৪) ইনস্টিটিউটের তহবিল হইতে ইনস্টিটিউটের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
বাজেট
১৫। ইনস্টিটিউট প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়সহ পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে ইনস্টিটিউটের কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহারও উল্লেখ থাকিবে।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৬। (১) ইনস্টিটিউট যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর ইনস্টিটিউটের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক অনুলিপি সরকার ও ইনস্টিটিউটের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
(৩) উপ-ধারা (২) অনুযায়ী হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি ইনস্টিটিউটের সকল রেকর্ড, দলিল দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য, মহাপরিচালক বা ইনস্টিটিউটের যে কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P. O. No. 2 of 1973)-এর Article 2 (1) (b)-তে সংজ্ঞায়িত ‘Chartered Accountant’ দ্বারা ইনস্টিটিউটের হিসাব নিরীক্ষা করাইতে হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ইনস্টিটিউট এক বা একাধিক ‘Chartered Accountant’ নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
(৫) প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্তির ৩ (তিন) মাসের মধ্যে উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রস্তুতকৃত নিরীক্ষা প্রতিবেদন বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
প্রতিবেদন
১৭। (১) প্রতি অর্থ বৎসর শেষ হইবার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ইনস্টিটিউট উক্ত বৎসরে তদ্‌কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলির বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে।
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে, ইনস্টিটিউটের নিকট হইতে যে কোনো সময় উহার যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন বা বিবরণী আহবান করিতে পারিবে এবং ইনস্টিটিউট উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাপ্ত প্রতিবেদন বা বিবরণীর উপর সরকার কোনো চাহিদা বা পরামর্শ প্রদান করিলে ইনস্টিটিউট তদনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
ক্ষমতা অর্পণ
১৮। বোর্ড উহার যে কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব, তদকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, লিখিতভাবে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, চেয়ারম্যান, সদস্য বা মহাপরিচালককে অর্পণ করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ইনস্টিটিউট, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
২১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে 18 August, 1976 খ্রিস্টাব্দ তারিখে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত Resolution No. Inf/4E-29/76(part)/ 13300, অতঃপর উক্ত Resolution বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত Resolution এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Press Institute of Bangladesh এর-
 
(ক) সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ও ব্যাংকের জমা, মঞ্জুরি ও তহবিল এবং তদ্‌সংশ্লিষ্ট বা উদ্ভূত অন্য সকল প্রকার অধিকার ও স্বার্থ এবং সমস্ত হিসাব বই, রেজিস্টার, রেকর্ড এবং তদ্‌সস্পর্কিত অন্য সকল প্রকার দলিলাদি এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউট, অতঃপর ‘ইনস্টিটিউট’ বলিয়া উল্লিখিত এর নিকট হস্তান্তরিত হইবে এবং ইনস্টিটিউট উহার অধিকারী হইবে;
 
(খ) সকল অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুযোগ-সুবিধা, দায় ও দায়িত্ব, ঋণ ও দাবি এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি, যদি থাকে, যথাক্রমে ইনস্টিটিউটের অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুযোগ-সুবিধা, দায় ও দায়িত্ব, ঋণ ও দাবি এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
 
(গ) পক্ষে বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো মামলা বা সূচিত কোনো আইনগত কার্যধারা ইনস্টিটিউট কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা বা সূচিত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে;
 
(ঘ) সাংগঠনিক কাঠামোর আওতাভুক্ত সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউটের পদ বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
 
(ঙ) সকল কর্মকর্তা কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী তাহাদের চাকরির শর্তাবলি পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে ইনস্টিটিউটের চাকরিতে নিয়োজিত এবং ক্ষেত্রমত বহাল থাকিবেন।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
২২। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs