প্রিন্ট ভিউ

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৪৫ নং আইন )

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সামগ্রিক উন্নয়ন তরান্বিত করিবার লক্ষ্যে কর্মক্ষম জনগণের দক্ষতা উন্নয়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন, সংস্কার, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সমন্বয় প্রয়োজন; এবং
 
 
 
যেহেতু বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে সকল পর্যায়ে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে যুগোপযোগী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পদ্ধতি উদ্ভাবন, কারিকুলাম প্রণয়ন, প্রশিক্ষণের মান পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় সাধন করা প্রয়োজন; এবং
 
 
 
যেহেতু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদা বিবেচনা করিয়া কারিগরি ও বৃত্তিমূলক পেশাগত প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নপূর্বক শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন প্রয়োজন; এবং
 
 
 
যেহেতু উপরি-বর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণের লক্ষ্যে দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ;
 
(২) ‘‘কার্যনির্বাহী কমিটি’’ অর্থ ধারা ১১ এর অধীন গঠিত কার্যনির্বাহী কমিটি;
 
(৩) ‘‘গভর্নিং বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত গভর্নিং বোর্ড;
 
(৪) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১৯ এর অধীন গঠিত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তহবিল;
 
(৫) ‘‘দক্ষতা’’ অর্থে কোনো একটি নির্দিষ্ট কাজ করিবার জন্য অর্জিত জ্ঞান ও কৌশল বা শিল্প ও বৃত্তির আদর্শমান অনুযায়ী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মোতাবেক পণ্য ও সেবা উৎপাদনের সক্ষমতা ও সামর্থও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৬) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
 
(৭) ‘‘নির্বাহী চেয়ারম্যান’’ অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান;
 
(৮) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান; এবং
 
(৯) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি।
কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর, সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।
 
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিল মোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
কর্তৃপক্ষের কার্যালয়
৪। কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে ইহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
কর্তৃপক্ষ গঠন, ইত্যাদি
৫। (১) একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে।
 
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি
৬। (১) কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
(ক) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা;
 
(খ) দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্ম কৃতি নির্দেশক (Key Performance Indicator), অভিন্ন প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং উহাদের বাস্তবায়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম সমন্বয়, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করা;
 
(গ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদার পূর্বাভাস সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ এবং খাতভিত্তিক দক্ষতা তথ্য ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা করা;
 
(ঘ) এই আইনের পরিধিভুক্ত, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পেশার পূর্ব অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি (Recognition of Prior Learning) প্রদান করা;
 
(ঙ) দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল প্রকল্প ও কর্মসূচী পরিবীক্ষণ ও সমন্বয় সাধন করা;
 
(চ) প্রশিক্ষণের মান উন্নয়ন, সনদায়ন ও পারস্পরিক স্বীকৃতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
 
(ছ) শিল্প দক্ষতা পরিষদ গঠন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা;
 
(জ) শিল্প সংযুক্তিকরণ (Industry Linkage) শক্তিশালী করা;
 
(ঝ) দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বীয় বিবেচনায় কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা; এবং
 
(ঞ) সরকার বা গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক নির্দেশিত অন্য কোনো দায়িত্ব পালন করা।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করিতে হইবে।
 
(৩) কর্তৃপক্ষ বিশেষায়িত পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সহায়তা প্রদান করিবে।
নির্বাহী চেয়ারম্যানের এর ক্ষমতা ও দায়িত্ব
৭। (১) নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান-
 
(ক) কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন;
 
(খ) গভর্নিং বোর্ড ও কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত, নির্দেশনা ও পরামর্শ বাস্তবায়ন করিবেন;
 
(গ) কর্তৃপক্ষের হিসাব সংরক্ষণ, হিসাব বিবরণী প্রণয়ন ও হিসাব নিরীক্ষার ব্যবস্থা করিবেন; এবং
 
(ঘ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কাজ সম্পাদন করিবেন।
গভর্নিং বোর্ড
৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করিয়া নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি গভর্নিং বোর্ড থাকিবে, যথা:-
 
(ক) মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, যিনি ইহার ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
(খ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীগণ, পদাধিকারবলে;
 
(গ) মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ;
 
(ঘ) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়;
 
(ঙ) মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়;
 
(চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয় এর সচিব;
 
(ছ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ;
 
(জ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ;
 
(ঝ) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর একজন প্রতিনিধি;
 
(ঞ) শিল্প দক্ষতা পরিষদ হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ১(এক) জন প্রতিনিধি;
 
(ট) মানবসম্পদ ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখিয়াছেন সরকার কর্তৃক মনোনীত এইরূপ ১(এক) জন প্রতিনিধি;
 
(ঠ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সদস্য সচিবও হইবেন।
 
(২) গভর্নিং বোর্ড, প্রয়োজনে, যে কোনো ব্যক্তিকে গভর্নিং বোর্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে বা সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
গভর্নিং বোর্ডের কার্যাবলি
৯। গভর্নিং বোর্ডের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
(ক) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত নীতি ও কৌশলপত্র অনুমোদন;
 
(খ) জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন;
 
(গ) কর্তৃপক্ষ এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সামগ্রিক কর্মকান্ড পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান; এবং
 
(ঘ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
গভর্নিং বোর্ডের সভা
১০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, গভর্নিং বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
(২) গভর্নিং বোর্ড বৎসরে অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠান করিবে।
 
(৩) নির্বাহী চেয়ারম্যান, গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যানের সহিত পরামর্শক্রমে, গভর্নিং বোর্ডের সভা আহবান করিবেন এবং এইরূপ সভা গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।
 
(৪) গভর্নিং বোর্ডের সকল সভায় উহার চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে, ভাইস চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করিবেন।
 
(৫) গভর্নিং বোর্ড উহার সভায় কোন আলোচ্য বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখিতে সক্ষম এইরূপ কোন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ করিতে পারিবে।
কার্যনির্বাহী কমিটি
১১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি কার্যনির্বাহী কমিটি থাকিবে, যথা:-
 
(ক) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
 
(খ) সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়;
 
(গ) মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর;
 
(ঘ) মহাপরিচালক, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো;
 
(ঙ) মহাপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর;
 
(চ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র;
 
(ছ) মহাপরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর;
 
(জ) মহাপরিচালক, সমাজ সেবা অধিদপ্তর;
 
(ঝ) মহাপরিচালক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর;
 
(ঞ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড;
 
(ট) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল (এনএইচআরডিএফ);
 
(ঠ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন একজন যুগ্মসচিব;
 
(ড) শিল্প দক্ষতা পরিষদ হইতে নির্বাচিত ২ (দুই) জন প্রতিনিধি;
 
(ঢ) বাংলাদেশ এমপ্লায়ার্স ফেডারেশন কর্তৃক মনোনীত উহার একজন প্রতিনিধি;
 
(ণ) ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন কর্তৃক মনোনীত উহার একজন প্রতিনিধি;
 
(ত) নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সদস্য সচিবও হইবেন।
 
(২) সরকার, আদেশ দ্বারা, কার্যনির্বাহী কমিটির বেসরকারি সদস্যদের মধ্য হইতে একজনকে সহ-সভাপতি নির্ধারণ করিবে।
 
(৩) কার্যনির্বাহী কমিটি, প্রয়োজনে, যে কোনো ব্যক্তিকে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে বা সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব
১২। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কার্যনির্বাহী কমিটির দায়িত্ব হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
(ক) কর্তৃপক্ষের উপর অর্পিত দায়িত্ব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা সংস্থার মধ্যে বিষয়ভিত্তিক বা সামগ্রিক সমন্বয় সাধন;
 
(খ) সংশ্লিষ্টতা অনুযায়ী প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নির্ধারণ;
 
(গ) কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো জটিলতার সম্মুখীন হইলে উহার সমন্বয় সাধন ও সমাধান নিশ্চিতকরণ;
 
(ঘ) মানব সম্পদ উন্নয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিলকে নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান।
 
(২) কার্যনির্বাহী কমিটি যে কোন সময় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সম্পাদিত বা সম্পদিতব্য যে কোনো কার্য সম্পর্কে প্রতিবেদন চাহিতে পারিবে।
 
(৩) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন যে কোনো কর্মসূচীর বিষয়ে সময় সময় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
কার্যনির্বাহী কমিটির সভা
১৩। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কার্যনির্বাহী কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান, কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির সম্মতিক্রমে, কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহবান করিবেন।
 
(৩) কার্যনির্বাহী কমিটি বৎসরে অন্যূন তিনটি সভা অনুষ্ঠান করিবে।
 
(৪) কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সভায় উহার সভাপতি সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে, সহ-সভাপতি সভাপতিত্ব করিবেন।
ফোরাম, কমিটি, ওয়ার্কিং গ্রুপ ও টাস্কফোর্স, ইত্যাদি গঠন
১৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, কার্যনির্বাহী কমিটি কোনো নির্দিষ্ট খাতের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করিয়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোরাম, কমিটি, টাস্কফোর্স, সাব-কমিটি, আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পরামর্শক কমিটি এবং ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করিতে পারিবে।
কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
১৫। (১) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার দয়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন
১৬। (১) দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান ও জাতীয় পর্যায়ে সনদ প্রদানে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হইতে হইবে।
 
(২) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর অধীন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে।
 
(৩) এই আইনের অধীন নিবন্ধিত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে তথ্য সংরক্ষণ করিবে।
নিবন্ধন বাতিল
১৭। কোনো দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে বা নিবন্ধন সনদের কোনো শর্ত ভঙ্গ করিলে কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবে।
পরিদর্শন, ইত্যাদি
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী দক্ষতা উন্নয়নে নিয়োজিত কোনো প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং এইরূপ পরিদর্শনের সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ল্যাবরেটরি, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, উপকরণ, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত বা সহায়তায় প্রাপ্ত আর্থিক অনুদান সংশ্লিষ্ট হিসাব সংক্রান্ত তথ্যসহ সংশ্লিষ্ট কোনো রেকর্ডপত্র পরীক্ষা করিতে পারিবে।
তহবিল
১৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে, যাহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-
 
(ক) সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
(খ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো উৎস হইতে গৃহীত ঋণ;
 
(গ) নিবন্ধন ফি হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
 
(ঘ) ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হইতে প্রাপ্ত সুদ; এবং
 
(ঙ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
(২) তহবিলের অর্থ কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে।
 
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2 এর clause (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
 
(৩) তহবিল হইতে কর্তৃপক্ষের সমুদয় ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।
বাজেট
২০। কর্তৃপক্ষ প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে, তবে কর্তৃপক্ষ এর পৌনঃপুনিক ব্যয় নির্বাহে ক্রমান্বয়ে নিজস্ব আয় বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
২১। (১) কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া উল্লিখিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবেন।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনেটন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।
 
(৪) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মচারীসহ কর্তৃপক্ষের যে কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
প্রতিবেদন
২২। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০(নববই) দিনের মধ্যে উক্ত বৎসরে তদ্‌কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে উহার যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
অসুবিধা দূরীকরণ
২৩। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, অস্পষ্টতা দূরীকরণার্থে যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পরিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন ও বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
২৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ তারিখের প্রজ্ঞাপন নং-শকম/অধিশাখা-৮/ জাঃদক্ষতা/২০০৮/বি-১ রহিত হইবে এবং উহার অধীন স্থাপিত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন পরিষদ, অতঃপর বিলুপ্ত পরিষদ বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিলুপ্ত হওয়া সত্ত্বেও বিলুপ্ত পরিষদ কর্তৃক কৃত কোনো কাজ বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, সিদ্ধান্ত, প্রণীত নীতিমালা, ইস্যুকৃত কোনো আদেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো অনুমোদন বা নোটিশ, সম্পাদিত দলিল বা চুক্তিপত্র বা চলমান কোনো কাজ এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত, ইস্যুকৃত, প্রদত্ত, সম্পাদিত বা চলমান বলিয়া গণ্য হইবে।
 
(৩) এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্ত পরিষদের-
 
(ক) স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি এবং উক্ত সম্পত্তিতে বা উহা হইতে উদ্ভূত অন্য সকল অধিকার ও স্বার্থ, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, বিনিয়োগ, সকল হিসাব বহি, রেকর্ড এবং অন্যান্য দলিল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরিত এবং উহার উপর ন্যস্ত হইবে;
 
(খ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
 
(গ) বিরুদ্ধে বা তদ্‌কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুযায়ী উহা নিস্পত্তি হইবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
২৭। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs