প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯

( ২০১৯ সনের ২ নং আইন )

ইপিজেডস্থ বা জোনস্থ শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, ইত্যাদি বিষয়ে বিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এবং শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন এবং ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক বিষয়ক বিদ্যমান আইন রহিতপূর্বক উহা পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

    যেহেতু ইপিজেডস্থ বা জোনস্থ শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, ইত্যাদি বিষয়ে বিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এবং শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন এবং ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক বিষয়ক বিদ্যমান আইন রহিতপূর্বক উহা পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

    সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ নামে অভিহিত হইবে।

 

(২) এই আইন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের অধীন সকল ইপিজেড বা জোনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও মালিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

 

(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২।   বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

 

(১)    ‘‘অবসর গ্রহণ’’ অর্থ ধারা ২৪ অনুযায়ী কোনো শ্রমিকের চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ;

 

(২)    ‘‘আংশিক অক্ষমতা’’ অর্থ যেক্ষেত্রে অক্ষমতা অস্থায়ী প্রকৃতির, এমন অক্ষমতা যাহা যে দুর্ঘটনার কারণে তাহার অক্ষমতা সৃষ্টি হইয়াছে তাহা ঘটিবার সময় তিনি যে কাজে নিয়োজিত ছিলেন তৎসম্পর্কে তাহার উপার্জন ক্ষমতা কমাইয়া দেয় এবং যেক্ষেত্রে অক্ষমতা স্থায়ী প্রকৃতির, এমন অক্ষমতা যাহা উক্ত সময়ে তিনি যে যে কাজ করিতে পারিতেন তাহার প্রত্যেকটি সম্পর্কে তাহার উপার্জন ক্ষমতা কমাইয়া দেয়:

 

তবে শর্ত থাকে যে, প্রথম তপশিলে উল্লিখিত প্রত্যেক জখম স্থায়ী আংশিক অক্ষমতা সৃষ্টি করে বলিয়া গণ্য হইবে;

 

(৩)   ‘‘ইপিজেড’’ বা ‘‘এলাকা’’ বা ‘‘রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা’’ বা জোন অর্থ কর্তৃপক্ষের অধীন প্রতিষ্ঠিত ও নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ইপিজেড বা এলাকা বা অর্থনৈতিক অঞ্চল বা অনুরূপ বিশেষায়িত অঞ্চল;

 

(৪)    ‘‘ইপিজেড শ্রম আদালত’’ অর্থ ধারা 133 এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইপিজেড শ্রম আদালত;

 

(৫)    ‘‘ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল’’ অর্থ ধারা 136 এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল;

 

(6)   ‘‘উৎপাদন প্রক্রিয়া’’ অর্থ কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো দ্রব্য বা পণ্য প্রস্ত্তত বা উৎপাদন বা সেবা প্রদান প্রক্রিয়া;

 

(7)   ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ Bangladesh Export Processing Zones Authority Act, 1980 (Act No. XXXVI of 1980) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Export Processing Zones Authority;

 

(8)   ‘‘কর্ম-ঘণ্টা’’ অর্থ আহার এবং বিশ্রামের জন্য বিরতি ব্যতীত যে সময়ে কোনো শ্রমিক কাজ করিবার জন্য মালিকের এখতিয়ারাধীন থাকেন;

 

(9)   ‘‘কাউন্সিলর’’ অর্থ ধারা 125 এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত কাউন্সিলর;  

 

(10‘‘কারখানা’’ অর্থ কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং উহার অন্তর্গত কোনো ওয়ার্কশপ, ভবন অথবা প্রাঙ্গ যেখানে কমপক্ষে ১০ (দশ) জন অথবা ততোধিক শ্রমিক কর্মরত থাকেন;

 

(11‘‘কোম্পানি’’ অর্থ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি, যাহার অধীন কোনো জোনে এক বা একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান রহিয়াছে;

 

(12)  ‘‘চাকরির অবসান’’ অর্থ কোনো শ্রমিক কর্তৃক তাহার চাকরির ছেদ বা অবসান অথবা মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে চাকরি হইতে বরখাস্ত, অবসান, ছাঁটাই ইত্যাদি;

 

(13) ‘‘ছাঁটাই’’ অর্থ অপ্রয়োজনীয়তার কারণে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকরির অবসান;

 

(14‘‘ডিসচার্জ’’ অর্থ শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে অথবা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিকের চাকরির অবসান;

 

(15)  ‘‘তপশিল’’ অর্থ এই আইনের কোনো তপশিল;

 

(16) ‘‘দিন’’ অর্থ ভোর ৬ (ছয়) ঘটিকা হইতে শুরু করিয়া পরবর্তী ২৪ (চবিবশ) ঘণ্টা সময়;

 

(17‘‘দেওয়ানী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908);

 

(18‘‘ধর্মঘট’’ অর্থ কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত একদল শ্রমিক কর্তৃক একত্রে কর্ম বন্ধকরণ বা কাজ করিতে অস্বীকৃতি অথবা উহাতে নিয়োজিত কোনো শ্রমিক সমষ্টি কর্তৃক ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ গ্রহণ করিতে বা কাজ চালাইয়া যাইতে অস্বীকৃতি;

 

(19)  ‘‘নির্বাহী চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান;

 

(20) ‘‘নির্বাহী পরিষদ’’ অর্থ কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উক্ত সমিতির বিষয়াদি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্য নির্বাহী পরিষদ;

 

(21নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক)”, “অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক),” “পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক),” “উপ-পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক),” “সহকারী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক)” অর্থ চতুর্দশ অধ্যায়ের অধীন জোনসমূহের শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক বিষয়ে কার্য সম্পাদন ও দায়িত্ব পালনের নিমিত্ত্ব কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা;

 

(22) “নির্ধারিত” অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত;

 

(23) ‘‘পঞ্জিকা মাস বা বৎসর’’ অর্থ গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা মাস বা বৎসর;

 

(24) ‘‘পালা (Shift)’’ অর্থ যেক্ষেত্রে একই প্রকারের কাজ দিনের বিভিন্ন সময়ে দুই বা ততোধিক শ্রমিক দ্বারা সম্পাদিত হয় সেই ক্ষেত্রে উক্তরূপ প্রত্যেক সময়;

 

(25) ‘‘পোষ্য’’ অর্থ কোনো মৃত শ্রমিকের-

 

(ক)   স্ত্রী/স্বামী, নাবালক সন্তান, অবিবাহিত কন্যা, অথবা বিধবা মাতা, এবং

 

(খ)   সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মৃত্যুর সময় তাহার আয়ের উপর সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নির্ভরশীল পিতা, বিধবা কন্যা, নাবালক ভ্রাতা, অবিবাহিত বা বিধবা ভগ্নি, বিধবা পুত্র বধু, মৃত পুত্রের নাবালক ছেলে, মৃত মেয়ের নাবালক সন্তান যদি তাহার পিতা জীবিত না থাকেন, অথবা মৃত শ্রমিকের মাতা বা পিতা জীবিত না থাকিলে তাহার দাদা ও দাদী;

 

(26) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

 

(27) ‘‘প্রসূতি কল্যাণ’’ অর্থ তৃতীয় অধ্যায়ের অধীন কোনো মহিলা শ্রমিককে তাহার প্রসূতি হইবার কারণে প্রদেয় মজুরিসহ ছুটি;

 

(28) ‘‘প্রাপ্ত বয়স্ক’’ অর্থ ১৮ (আঠারো) বৎসর পূর্ণ করিয়াছেন এমন কোনো ব্যক্তি;

 

(29) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);

 

(30) ‘‘বরখাস্ত’’ অর্থ অসদাচরণের কারণে মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে চাকরিচ্যূত করা;

 

(31) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো বিধি;

 

(32) ‘‘বেআইনী ধর্মঘট’’ বা ‘‘বেআইনী লক-আউট’’ অর্থ ধারা 145 এর অধীন বেআইনী ধর্মঘট বা বেআইনী লক-আউট;

 

(33) ‘‘ভবিষ্য তহবিল’’ অর্থ ধারা 164 এর অধীন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের জন্য গঠিত ভবিষ্য তহবিল;

 

(34) ‘‘মজুরি’’ অর্থ অর্থের মাধ্যমে বা টাকায় প্রকাশ করা হয় বা যায় এমন সকল পারিশ্রমিক যাহা চাকরির শর্তাবলি, প্রকাশ্য বা উহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন, পালন করা হইলে কোনো শ্রমিককে তাহার চাকরির জন্য বা কাজ করিবার জন্য প্রদেয় হয়, এবং উক্তরূপ প্রকৃতির অন্য কোনো অতিরিক্ত প্রদেয় পারিশ্রমিকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে নিম্নলিখিত অর্থ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা :--

 

(ক)   বাসস্থান সংস্থান, আলো, পানি, চিকিৎসা সুবিধা বা অন্য কোনো সুবিধা প্রদানের মূল্য অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে এইরূপ কোনো সেবার মূল্য,

 

(খ)   অবসর ভাতা তহবিল বা ভবিষ্য তহবিলে মালিক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো চাঁদা,

 

(গ)    কোনো ভ্রমণ ভাতা অথবা কোনো ভ্রমণ রেয়াতের মূল্য,

 

(ঘ)    কাজের প্রকৃতির কারণে কোনো বিশেষ খরচ বহন করিবার জন্য কোনো শ্রমিককে প্রদত্ত অর্থ;

 

 (35)    ‘‘মহাপরিদর্শক’’ অর্থ সরকারের নিযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সদস্য যিনি চতুর্দশ অধ্যায়ের অধীন জোনসমূহের শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন বিষয়ে কার্য সম্পাদন ও দায়িত্ব পালনের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন; এবং “অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, যুগ্ম মহাপরিদর্শক, উপ-মহাপরিদর্শক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিদর্শন কর্মকর্তা ও পরিদর্শক” অর্থ একই অধ্যায়ের অধীন কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা;

 

 (36)    ‘‘মালিক’’ অর্থ কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এইরূপ কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ যিনি বা যাহারা শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নিয়োগ করেন ; এবং নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন :

 

(ক)   উক্ত ব্যক্তির কোনো উত্তরাধিকারী, হস্তান্তরমূলে উত্তরাধিকারী বা আইনগত প্রতিনিধি,

 

(খ)   উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি;

 

 (37)    ‘‘মীমাংসা’’ অর্থ মীমাংসা কার্যক্রমের মাধ্যমে উপনীত কোনো মীমাংসা বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে উপনীত লিখিতভাবে সম্পাদিত ও স্বাক্ষরিত কোনো চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি;

 

(38) ‘‘মীমাংসাকারী’’ অর্থ ধারা 125 এর উপ-ধারা (১) এর অধীন মীমাংসাকারী হিসাবে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি;

 

(39) ‘‘যন্ত্রপাতি’’ অর্থ দ্রব্য বা পণ্য প্রস্ত্তত বা উৎপাদনে বা সেবা প্রদানে ব্যবহৃত সকল যন্ত্রপাতি ও প্রাইম মুভার, ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি এবং এমন অন্য কোনো যন্ত্রপাতি বা কলকব্জাকেও বুঝাইবে যাহার দ্বারা শক্তি উৎপাদন, হ্রাস-বৃদ্ধি বা প্রেরণ করা হয় অথবা প্রয়োগ করা হয়;

 

(40‘‘যানবাহন’’ অর্থ যান্ত্রিক শক্তি চালিত যানবাহন যাহা স্থল, নৌ ও আকাশ পথে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হয় বা ব্যবহারের যোগ্য, এবং কোনো ট্রলিযান ও আনুগমিক যানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 

 (41) ‘‘যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট’’ অর্থ কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি যাহা উক্ত প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর-কষাকষির উদ্দেশ্যে শ্রমিকগণের এজেন্ট;

 

(42) ‘‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক’’ অর্থ চিকিৎসক হিসাবে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৬১ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত ও রেজিস্টারভুক্ত কোনো চিকিৎসক;

 

(43) ‘‘রোয়েদাদ’’ অর্থ সালিকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত অথবা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো শিল্প বিরোধ অথবা উহার সহিত সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে প্রদত্ত সিদ্ধান্ত, এবং কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্তও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 

(44‘‘লক-আউট’’ অর্থ কোনো মালিক কর্তৃক কোনো কর্মস্থান অথবা উহার কোনো অংশ বন্ধ করিয়া দেওয়া অথবা উহাতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কাজ স্থগিত রাখা অথবা কোনো মালিক কর্তৃক চূড়ান্তভাবে বা শর্তসাপেক্ষে তাহার যে কোনো সংখ্যক শ্রমিককে চাকরিতে নিয়োজিত রাখিতে বা অস্বীকৃতি, যদি উক্তরূপ বন্ধকরণ, স্থগিতকরণ বা অস্বীকৃতি কোনো শিল্প বিরোধ সম্পর্কে হয় বা ঘটে অথবা উহা শ্রমিকগণকে চাকরির কতিপয় শর্ত মানিতে বাধ্য করিবার উদ্দেশ্যে করা হয়;

 

(45) ‘‘লে-অফ’’ অর্থ কয়লা, শক্তি বা কাঁচামালের স্বল্পতা, অথবা মাল জমিয়া থাকা অথবা যন্ত্রপাতি বা কল-কব্জা বিকল বা ভাঙ্গিয়া যাইবার কারণে কোনো শ্রমিককে কাজ দিতে মালিকের ব্যর্থতা, অস্বীকৃতি বা অক্ষমতা;

 

(46) ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’’ বা ‘‘প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ কোনো দ্রব্য বা পণ্য প্রস্ত্তত বা উৎপাদন বা সেবা প্রদান করিবার জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্ত জোনে স্থাপিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা;

 

(47) ‘‘শিল্প বিরোধ’’ অর্থ মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে উদ্ভূত কোনো বিরোধ বা মত পার্থক্য যাহা কোনো ব্যক্তির চাকরির নিয়োগ সংক্রান্ত বা নিয়োগের শর্তাবলি বা চাকরির শর্তাদির সহিত সম্পর্কিত;

 

(48) ‘‘শ্রমিক’’ অর্থ মালিকের সংজ্ঞায় পড়ে না প্রাপ্ত বয়স্ক এমন যে কোনো ব্যক্তি (শিক্ষানবি হিসাবে নিযুক্ত ব্যক্তিসহ) তাহার চাকরির শর্তাবলি প্রকাশ্য বা উহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন, যিনি, মজুরি বা পারিতোষিকের ভিত্তিতে কোনো জোনের কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি অথবা করণিক কার্য করিবার জন্য, সরাসরিভাবে বা যেভাবেই হউক না কেন, নিযুক্ত হইয়াছেন এইরূপ সকল শ্রেণির শ্রমিক; কিন্তু কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী অথবা প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি অথবা উহার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;

 

(49) ‘‘শ্রমিক কল্যাণ সমিতি’’ অর্থ এই আইনের নবম অধ্যায়ের অধীন শ্রমিক ও মালিকগণের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করিবার উদ্দেশ্যে শ্রমিকগণ কর্তৃক গঠিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি;

 

(50) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশনঅর্থ এই আইনের নবম অধ্যায়ের অধীন নিবন্ধনকৃত কোনো ইপিজেডের শ্রমিক কল্যাণ সমিতিসমূহের ফেডারেশন;

 

(51)  শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সম্পর্কে, “প্রতিনিধি ’’ অর্থ উক্ত সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো নির্বাচিত সদস্য;

 

(52) ‘‘সপ্তাহ’’ অর্থ ৭ (সাত) দিনের মেয়াদ যাহা কোনো শুক্রবার সকাল ৬ (ছয়) ঘটিকা হইতে অথবা সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত অন্য কোনো দিন হইতে শুরু হয়;

 

(53) ‘‘সম্পূর্ণ অক্ষমতা’’ অর্থ এমন অক্ষমতা, স্থায়ী প্রকৃতির হউক বা অস্থায়ী প্রকৃতির হউক, যাহা কোনো শ্রমিককে যে দুর্ঘটনার কারণে তাহার জখম হইয়াছে উহা ঘটিবার সময় তিনি যে যে কাজ করিতে সক্ষম ছিলেন উক্ত সকল কাজ হইতে তাহাকে অক্ষম করিয়া দেয় অথবা কর্মকালীন সময়ে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যাদির প্রতিক্রিয়া অথবা কাজের সাথে সম্পৃক্ত কোনো দূষণের ফলে স্বাস্থ্যহানির কারণে উক্ত শ্রমিক স্থায়ী বা অস্থায়ী প্রকৃতির কর্মক্ষমতা হারায় :

 

            তবে শর্ত থাকে যে, উভয় চোখের স্থায়ী সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি লোপ পাইলে স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতা ঘটিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে অথবা প্রথম তপশিলে বর্ণিত কোনো জখমসমূহের এইরূপ সংযোজন হইতেও স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতা ঘটিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে যেখানে উক্ত তপশিলে নির্ধারিত উক্ত জখমসমূহের জন্য উপার্জন ক্ষমতা লোপের মোট গড় হার শতকরা ১০০ (একশত) ভাগ হয়;

 

(54) ‘‘সালিশ’’ অর্থ দশম অধ্যায়ের অধীন কোনো সালিশ;

 

(55) ‘‘সালিশকারী’’ অর্থ ধারা 130 এর উদ্দেশ্যপূরণকল্পে নিযুক্ত ব্যক্তি।

আইনের প্রাধান্য

৩।  আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি

চাকরির শর্তাবলি

৪।  (১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকগণের নিয়োগ ও তৎসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হইবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত নিজস্ব চাকরি বিধি থাকিতে পারিবে, কিন্তু এই প্রকার কোনো বিধি কোনো শ্রমিকের জন্য এই আইনের কোনো বিধান হইতে কম অনুকূল হইতে পারিবে না।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর শর্তাংশে উল্লিখিত চাকরি বিধি অনুমোদনের জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের নিকট পেশ করিতে হইবে, এবং মহাপরিদর্শক উহা প্রাপ্তির ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অনুমোদন করিবেন অথবা কারণ উল্লেখপূর্বক অননুমোদন করিতে পারিবেন।

 

(৩) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের অনুমোদন ব্যতীত উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোনো চাকরি বিধি কার্যকর করা যাইবে না।

 

(৪) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের আদেশে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল প্রাপ্তির ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যান উহা নিষ্পত্তি করিবেন এবং এক্ষেত্রে নির্বাহী চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

শ্রমিকগণের শ্রেণি বিভাগ এবং শিক্ষানবিশিকাল

৫।  (১) কাজের ধরন ও প্রকৃতির ভিত্তিতে কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণকে নিম্নলিখিত শ্রেণিতে বিভক্ত করা যাইবে, যথা :-

 

(ক)   শিক্ষাধীন;

 

(খ)   সাময়িক;

 

(গ)    অস্থায়ী;

 

(ঘ)    শিক্ষানবিশ;ও

 

(ঙ)   স্থায়ী।

 

(২) কোনো শ্রমিককে শিক্ষাধীন শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে হয়; এবং প্রশিক্ষণকালে তাহাকে ভাতা প্রদান করা হয়।

 

(৩) কোনো শ্রমিককে সাময়িক শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে সাময়িক ধরনের কাজে সাময়িকভাবে তাহাকে নিয়োগ করা হয়।

 

(৪) কোনো শ্রমিককে অস্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ এমন কোনো কাজের জন্য হয় যাহা একান্তভাবে অস্থায়ী ধরনের এবং যাহা সীমিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হইবার সম্ভাবনা থাকে।

 

(৫) কোনো শ্রমিককে শিক্ষানবিশ শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো স্থায়ী পদে তাহাকে শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগ করা হয় এবং তাহার শিক্ষানবিশিকাল সমাপ্ত না হইয়া থাকে।

 

(৬) কোনো শ্রমিককে স্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো স্থায়ী পদে তাহাকে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করা হয় অথবা উপ-ধারা (৫) এর অধীন শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগ করা হয় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে তিনি তাহার শিক্ষানবিশিকাল সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত করিয়া থাকেন।

 

(৭) করণিক কাজে নিযুক্ত কোনো শ্রমিকের শিক্ষানবিশিকাল হইবে ৬ (ছয়) মাস এবং অন্যান্য শ্রমিকের জন্য এই সময় হইবে ৩ (তিন) মাস :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শ্রমিকের শিক্ষানবিশিকাল আরো ৩ (তিন) মাস বৃদ্ধি করা যাইবে যদি কোনো কারণে তিনি তাহার শিক্ষানবিশিকাল সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত না করেন।

নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র

6। কোনো মালিক নিয়োগপত্র প্রদান না করিয়া কোনো শ্রমিককে নিয়োগ করিতে পারিবেন না, এবং নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে ছবিসহ পরিচয়পত্র প্রদান করিতে হইবে।

সার্ভিস বহি, সার্ভিস বইয়ের ফরম, ইত্যাদি

৭।   প্রত্যেক মালিক তাহার নিজস্ব খরচে তৎকর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য একটি করিয়া সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা করিবেন এবং সার্ভিস বই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত মাপে, ফরমে ও পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হইবে।

শ্রমিক রেজিস্টার, টিকেট, কার্ড, ইত্যাদি

 ৮।  (১) মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিকের জন্য একটি শ্রমিক রেজিস্টার রাখিবেন এবং ইহা সকল কর্মসময়ে পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর-কাম-পরিদর্শক কর্তৃক পরিদর্শনের জন্য প্রস্ত্তত রাখিতে হইবে।

 

(২) কর্তৃপক্ষ শ্রমিক রেজিস্টারের ফরম, উহা রক্ষণাবেক্ষণের পন্থা, সংরক্ষণের মেয়াদ এবং পরিদর্শনের পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

(৩) মালিক প্রত্যেক শ্রমিককে ১ (এক) টি টিকেট বা কার্ড সরবরাহ করিবেন।

ছুটির পদ্ধতি

৯।   (১) কোনো শ্রমিক তাহার প্রাপ্য ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন এবং ছুটির প্রাপ্যতা ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসর অনুযায়ী হিসাব করা হইবে।

 

(২) কোনো শ্রমিক তাহার প্রাপ্য ছুটির অতিরিক্ত সরকার ঘোষিত কোনো সাধারণ বা বিশেষ ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন।

 

(৩) কর্তৃপক্ষ ছুটির পদ্ধতি ও এতৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি নির্ধারণ করিবে।

 

(৪) কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময়ে কোনো জোনের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা একইসঙ্গে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে অথবা সকল জোনের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করিতে পারিবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উল্লিখিত ছুটি সাধারণ কর্মদিবস হিসাবে গণ্য হইবে এবং মালিক কর্তৃক উক্ত ছুটির দিনের জন্য শ্রমিকগণকে তাহার প্রাপ্য মজুরি প্রদেয় হইবে।

অব্যয়িত ছুটি মজুরি প্রদান

১০।   যদি কোনো শ্রমিকের চাকরি ছাঁটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, বরখাস্ত, অবসর গ্রহণ, পদত্যাগ বা অন্য কোনো কারণে অবসান হয় এবং যদি তাহার কোনো বাৎসরিক ছুটি পাওনা থাকে, তাহা হইলে মালিক ঐ পাওনা ছুটির পরিবর্তে এই আইনের বিধান অনুযায়ী ছুটিকালীন উক্ত শ্রমিক যে মজুরি প্রাপ্য হইতেন তাহা প্রদান করিবেন।

কাজ বন্ধ রাখা

১১।  (১) অগ্নিকাণ্ড, মারাত্নক দৈব দুর্ঘটনা, মহামারি, ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা এর জন্য প্রয়োজন হইলে কোনো মালিক যে কোনো সময় তাহার প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা শাখাসমূহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন এবং যে কারণে উক্তরূপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হইবে তাহা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই বন্ধের আদেশ বহাল রাখিতে পারিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বন্ধের আদেশ প্রদানের পর অনতিবিলম্বে তাহা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে :

 

আরো শর্ত থাকে যে, কোনো আকস্মিক বিপত্তি, যন্ত্রপাতি বিকল, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ অথবা মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত অন্য কোনো কারণে প্রয়োজন হইলে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতিক্রমে, কোনো মালিক যে কোনো সময় তাহার প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা শাখাসমূহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন এবং যে কারণে উক্তরূপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হইবে তাহা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই বন্ধের আদেশ বহাল রাখিতে পারিবেন।

 

(২) যদি উক্তরূপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়, তাহা হইলে পরবর্তী কর্মসময় শুরু হইবার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে বা কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ সাঁটিয়া বা লটকাইয়া দিয়া উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে অবহিত করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হইবে এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে কাজ পুনরায় শুরু হইবার পূর্বে কোনো সময় তাহাদের কর্মস্থলে অবস্থান করিতে হইবে তৎসম্পর্কে নির্দেশ থাকিবে।

 

(৪) যদি উক্তরূপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যেই সংঘটিত হয়, তাহা হইলে মালিক উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত পন্থায় নোটিশ মারফত শ্রমিকগণকে যথাশীঘ্র সম্ভব তৎসম্পর্কে অবহিত করিবেন, এবং এই নোটিশে পরবর্তী কাজ কখন শুরু হইবে এবং শ্রমিকগণ কর্মস্থলে অবস্থান করিবেন কি না তৎসম্পর্কে নির্দেশ থাকিবে।

 

(৫) উক্তরূপ কাজ বন্ধের পর যে সকল শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হইবে, তাহাদের এই অবস্থানের সময় ১ (এক) ঘণ্টার কম হইলে তাহারা কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন, এবং এই অবস্থানের সময় ইহার অধিক হইলে তাহারা অবস্থানকালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরি পাইবেন।

 

(৬) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ (এক) কর্ম দিবসের চেয়ে বেশী না হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট কোনো শ্রমিক, উপ-ধারা (৫) এর ক্ষেত্র ব্যতীত, কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন।

 

(৭) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ (এক) কর্ম দিবসের অধিক হয় তাহা হইলে, সাময়িক শ্রমিক ব্যতীত, প্রত্যেক শ্রমিককে ১ (এক) দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য মজুরি প্রদান করা হইবে।

 

(৮) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ (তিন) কর্মদিবসের অধিক হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে ধারা ১৫ এর বিধান অনুযায়ী লে-অফ করা হইবে।

 

(৯) উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত লে-অফ কাজ বন্ধ হইবার প্রথম দিন হইতেই বলবৎ হইবে, এবং প্রথম ৩ (তিন) দিনের জন্য প্রদত্ত কোনো মজুরি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফকালীন ক্ষতিপূরণের সহিত সমন্বিত করা হইবে।

প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা

১২।  (১) কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বে-আইনী ধর্মঘটের কারণে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে, মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন, এবং এইরূপ বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকগণ কোনো মজুরি পাইবেন না।

 

(২) যদি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো শাখা বা বিভাগ বন্ধের কারণে প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো শাখা বা বিভাগ এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে উহা চালু রাখা সম্ভব নহে, তাহা হইলে উক্ত শাখা বা বিভাগও বন্ধ করিয়া দেওয়া যাইবে, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে ৩ (তিন) দিন পর্যন্ত লে-অফ এর ক্ষেত্রে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমপরিমাণ মজুরি প্রদান করিতে হইবে, তবে এই মেয়াদের অতিরিক্ত সময়ের জন্য তাহারা আর কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন।

 

(৩) উক্তরূপ বন্ধের বিষয়টি মালিক যথাশীঘ্র সম্ভব সংশ্লিষ্ট শাখা বা বিভাগের নোটিশ বোর্ডে বা প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ সাঁটিয়া বা লটকাইয়া দিয়া সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিবেন এবং কাজ পুনরায় শুরু হইবার বিষয়ও উক্তরূপে বিজ্ঞাপিত করিবেন।

কতিপয় ক্ষেত্রে ‘‘এক বৎসর’’, ‘‘ছয় মাস’’ এবং ‘‘মজুরি’’ গণনা

১৩।  (১) এই অধ্যায়ের প্রয়োজনে, কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী ১২ (বারো) পঞ্জিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ (দুইশত চল্লিশ) দিন বা ১২০ (একশত বিশ) দিন কাজ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনি যথাক্রমে ‘‘১ (এক) বৎসর’’ বা ‘‘৬ (ছয়) মাস’’ প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো শ্রমিকের বাস্তবে কাজ করিবার দিন গণনার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দিনগুলিও গণনায় আনা হইবে, যথা :-

 

(ক)   তাহার লে-অফের দিনগুলি;

 

(খ)   অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কারণে মজুরিসহ বা বিনা মজুরিতে ছুটির দিনগুলি;

 

(গ)    বৈধ ধর্মঘট অথবা অবৈধ লক-আউটের কারণে কর্মহীন দিনগুলি;

 

(ঘ)    মহিলা শ্রমিকগণের ক্ষেত্রে, অনধিক ১৬ (ষোলো) সপ্তাহ পর্যন্ত প্রসূতি ছুটি।

 

(৩) ধারা ১৮, ১৯, অথবা ২১ এর অধীন ক্ষতিপূরণ অথবা ধারা ২০, ২১, ২২ অথবা ২৩ এর অধীন মজুরি হিসাবের প্রয়োজনে ‘‘মজুরি’’ বলিতে কোনো শ্রমিকের ছাঁটাই, বরখাস্ত, অপসারণ, ডিসচার্জ, অবসর গ্রহণ বা চাকরির অবসানের অব্যবহিত পূর্বের ১২ (বারো) মাসে প্রদত্ত তাহার মূল মজুরি, এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এড-হক বা অন্তবর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর গড় বুঝাইবে।

ধারা ১১, ১৫, ১৬ এবং ১৭ প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ

১৪।  এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অন্তত ৫ (পাঁচ) জন শ্রমিক নিযুক্ত নাই বা পূর্ববর্তী ১২ (বারো) মাসে নিযুক্ত ছিলেন না, এইরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানে ধারা ১১, ১৫, ১৬ এবং ১৭ এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে না।

লে-অফকৃত শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণের অধিকার

১৫।  (১) যেক্ষেত্রে সাময়িক শ্রমিক নহেন এইরূপ কোনো শ্রমিককে, যাহার নাম কোনো প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত আছে এবং যিনি মালিকের অধীন অন্তত ১ (এক) বৎসর চাকরি সম্পূর্ণ করিয়াছেন, লে-অফ করা হয়, তাহা হইলে মালিক তাহাকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত তাহার লে-অফের সকল দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর অর্ধেক এবং তাহাকে লে-অফ করা না হইলে তিনি যে আবাসিক ভাতা পাইতেন, উহার সম্পূর্ণের সমান।

 

(৩) যে শ্রমিকের নাম কোনো প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত আছে, তিনি এই ধারার প্রয়োজনে সাময়িক বা অন্য শ্রমিক বলিয়া গণ্য হইবেন না যদি তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে

 
 
 ১ (এক) বছর চাকরি সম্পূর্ণ করিয়া থাকেন।

 

    (৪) মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি না থাকিলে, কোনো শ্রমিক এই ধারার অধীন কোনো পঞ্জিকা বৎসরে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ পাইবেন না।

 

(৫) উপ-ধারা (৪) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো পঞ্জিকা বৎসরে কোনো শ্রমিককে অবিচ্ছিন্নভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের অধিক সময়ের জন্য লে-অফ করা হয়, এবং উক্ত ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের পর লে-অফের সময় যদি আরোও ১৫ (পনেরো) দিন বা তদূর্ধ্ব হয়, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিককে, শ্রমিক এবং মালিকের মধ্যে ভিন্নরূপে কোনো চুক্তি না থাকিলে, পরবর্তী প্রত্যেক ১৫ (পনেরো) বা তদূর্ধ্ব দিনসমূহের লে-অফের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।

 

(৬) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর এক-চতুর্থাংশ এবং যদি আবাসিক ভাতা থাকে, উহার সম্পূর্ণের সমান।

 

(৭) কোনো ক্ষেত্রে যদি কোনো শ্রমিককে কোনো পঞ্জিকা বৎসরে উপরে উল্লিখিত প্রথম

 
 
৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন লে-অফের পর কোনো অবিচ্ছিন্ন ১৫ (পনেরো) দিন বা তদূর্ধ্ব সময়ের জন্য লে-অফ করিতে হয়, তাহা হইলে মালিক উক্ত শ্রমিককে লে-অফের পরিবর্তে ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

লে-অফকৃত শ্রমিকগণের মাস্টার রোল

১৬।   কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকগণকে লে-অফ করা সত্ত্বেও মালিককে তাহাদের জন্য মাস্টার রোল সংরক্ষণ করিতে হইবে, এবং স্বাভাবিক কর্মসময়ে লে-অফকৃত শ্রমিকগণের মধ্যে যাহারা কাজের জন্য হাজিরা দিবেন, তাহাদের নাম উহাতে লিপিবদ্ধ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।

কতিপয় ক্ষেত্রে লে-অফকৃত শ্রমিকগণ ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন না

১৭।  (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো লে-অফকৃত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না, যদি-

 

(ক)   তিনি একই প্রতিষ্ঠানে বা একই মালিকের অধীন একই শহরে বা গ্রামে অথবা

 
 
৮ (আট) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত ইপিজেডস্থ ভিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা বা পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নাই এইরূপ কোনো বিকল্প পদে একই মজুরিতে কাজ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন;

 

(খ)   তিনি মালিকের নির্দেশ সত্ত্বেও দিনে ১ (এক) বার প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কর্মসময়ের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জন্য হাজিরা না দেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর উদ্দেশ্যে যদি লে-অফকৃত কোনো শ্রমিক কোনো দিনে স্বাভাবিক কর্ম সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কোনো সময়ে কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং হাজিরার

 
 
২ (দুই) ঘণ্টার মধ্যে যদি তাহাকে কোনো কাজ দেওয়া না হয়, তাহা হইলে তিনি সেই দিনের জন্য এই ধারার অর্থ মোতাবেক লে-অফকৃত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিতরূপে যদি কোনো লে-অফকৃত শ্রমিক কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং তাহাকে কোনো দিনের কোনো পালায় উহা শুরু হইবার প্রাক্কালে কাজ দেওয়ার পরিবর্তে তাহাকে একই দিনে পালার দ্বিতীয়ার্ধে কাজে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তিনি তদনুযায়ী কাজের জন্য হাজিরা দেন, তাহা হইলে তিনি ঐ দিনের অর্ধেক কর্মসময়ের জন্য লে-অফ হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং অবশিষ্ট অর্ধেক কর্মসময়ে, তাহাকে কোনো কাজ দেওয়া হউক বা না হউক, তিনি চাকরিতে ছিলেন বলিয়া বিবেচিত হইবেন।

মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ

১৮। যদি কোনো শ্রমিক কোনো মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্নভাবে অন্তত ১ (এক) বৎসরের অধিককাল চাকরিরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোনো মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনীত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোনো পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক পূর্ণ বৎসর বা উহার ৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে

 
 
৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিবেন, এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিলে যে সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।

ছাঁটাই ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের পুনঃনিয়োগ

১৯।  (১) কোনো শ্রমিককে প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে এবং উক্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে।

 

(২) কোনো শ্রমিক যদি কোনো মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অন্যূন ১ (এক) বৎসর চাকরিতে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে-

 

(ক)   তাহার ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া ১ (এক) মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরি প্রদান করিতে হইবে; এবং

 

(খ)   তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকরির জন্য ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিতে হইবে।

 

(৩) যেক্ষেত্রে কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয় এবং ছাঁটাইয়ের ১ (এক) বৎসরের মধ্যে মালিক পুনরায় কোনো শ্রমিক নিয়োগ করিতে ইচ্ছুক হন সেই ক্ষেত্রে মালিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিয়া তাহাকে চাকরির জন্য আবেদন করিতে আহ্বান জানাইবেন, এবং এই আহ্বানে সাড়া দিয়া কোনো শ্রমিক পুনরায় চাকরি পাইবার জন্য আবেদন করিলে তাহাকে নিয়োগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে, এবং এ রকম একাধিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক প্রার্থী হইলে তাহাদের মধ্যে পূর্বের চাকরির জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে।

ডিসচার্জ

২০।   (১) কোনো শ্রমিককে, জোনের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক অথবা কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যায়িত, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে চাকরি হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে।

 

(২) ডিসচার্জকৃত কোনো শ্রমিক অন্যূন ১ (এক) বৎসর অবিচ্ছিন্ন চাকরি সম্পূর্ণ করিলে মালিককে তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মূল মজুরি প্রদান করিতে হইবে।

অসদাচরণ এবং দণ্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তি

২১।   (১) এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ এবং চাকরির অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যাহা কিছুই বলা হউক না কেন, কোনো শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরিতে চাকরি হইতে বরখাস্ত করা যাইবে, যদি তিনি-

 

(ক)   কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য দণ্ড প্রাপ্ত হন; অথবা

 

(খ)   প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।

 

(২) অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো শ্রমিককে তদন্তকালীন সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যাইবে, এবং যদি না বিষয়টি ইপিজেড শ্রম আদালতে বিচারাধীন থাকে, এই সাময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ৬০ (ষাট) দিনের অধিক হইবে না :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্তকালে মালিক তাহাকে তাহার গড় মজুরি, মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর অর্ধেক খোরাকী ভাতা হিসাবে প্রদান করিবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ হারে প্রদান করিবেন।

 

(৩) এই ধারার অধীন অন্যান্য অসদাচরণ ও তৎসংশ্লিষ্ট শাস্তি, শাস্তির আদেশ, তদন্তের পদ্ধতি, ইত্যাদি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বরখাস্ত, ইত্যাদি ব্যতীত অন্যভাবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকরির অবসান

২২।   (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোনো পন্থা ছাড়াও মালিক-

 

(ক)   কোনো স্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ১২০ (একশত বিশ) দিনের,

 

(খ)   অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) দিনের,

 

লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া শ্রমিকের চাকরির অবসান করিতে পারিবেন।

 

(২) যেক্ষেত্রে মালিক বিনা নোটিশে কোনো শ্রমিকের চাকরির অবসান করিতে চাহেন সেক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) এর অধীন, প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরি প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।

 

 (৩) যেক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোনো স্থায়ী শ্রমিকের চাকরির অবসান করা হয় সেই ক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে।

 

(৪) এই ধারার অধীন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ জোনের সার্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে, ১০ (দশ) বা ততোধিক শ্রমিকের একসাথে চাকরি অবসানের ক্ষেত্রে মালিককে জোনের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এর সাথে পরামর্শ করিতে হইবে।

শ্রমিক কর্তৃক চাকরির ইস্তফা

২৩।   (১) কোনো স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ৩০ (ত্রিশ) দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন।

 

(২) অস্থায়ী বা অন্য কোনো শ্রমিক ১৫ (পনেরো) দিনের লিখিত নোটিশ মালিকের নিকট প্রদান করিয়া চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন।

 

(৩) যেক্ষেত্রে শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে চাহেন সেক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরির সমপরিমাণ অর্থ মালিককে প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।

 

() যেক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকরি হইতে ইস্তফা দেন সেক্ষেত্রে, মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য-

 

()   যদি তিনি পাঁচ বৎসর বা তদূর্ধ্ব, কিন্তু দশ বৎসরের কম মেয়াদে অবিচ্ছিন্নভাবে মালিকের অধীন চাকরি করিয়া থাকেন তাহা হইলে, ১৫ (পনেরো) দিনের মজুরি;

 

()   যদি তিনি দশ বৎসর বা তদূর্ধ্ব সময় কিন্তু পঁচিশ বছরের কম সময় মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে চাকরি করিয়া থাকেন তাহা ইলে, ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি

 

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন ক্ষতিপূরণ এই আইনেরধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে

চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ

২৪।   (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই উল্লে­খ থাকুক না কেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোনো শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্ণ হইলে তিনি চাকরি হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শ্রমিক ২৫ (পঁচিশ) বছর চাকরি পূর্ণ করিবার পর, যেকোনো সময়, তাহার সম্ভাব্য অবসর গ্রহণের ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে, লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিতে পারিবেন।

 

(২) এই ধারার উদ্দেশ্যে বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লি­ষ্ট শ্রমিকের সার্ভিস বইয়ে লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখ উপযুক্ত প্রমাণ হিসাবে গণ্য হইবে।

 

(৩) এই ধারার অধীন কোনো স্থায়  শ্রমিক চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করিলে, মালিক, অবসর গ্রহণকারী শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে 45 (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মূল মজুরি প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে অথবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকরি বিধি অনুযায়ী অবসর গ্রহণকারী শ্রমিকের প্রাপ্ত পাওনাদি পরিশোধ করিতে হইবে।

ভবিষ্য তহবিল পরিশোধ

২৫।  যদি কোনো শ্রমিক কোনো ভবিষ্য তহবিলের সদস্য হন এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী তিনি মালিকের চাঁদাসহ উক্ত তহবিল হইতে কোনো সুবিধা প্রাপ্য হন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অবসর গ্রহণ, অপসারণ বা চাকরির অবসান হইবার বা মৃত্যুজনিত কারণে উক্ত সুবিধা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না।

শ্রমিকের মজুরিকাল ও মজুরি পরিশোধের মেয়াদ

২৬।  (১) কোনো শ্রমিকের মজুরিকাল ১ (এক) মাসের ঊর্ধ্বে হইবে না।

 

(২) কোনো শ্রমিকের যে মজুরিকাল সম্পর্কে তাহার মজুরি প্রদেয় হয় সেই কাল শেষ হইবার পরবর্তী ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে তাহার মজুরি পরিশোধ করিতে হইবে।

চাকরি সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্র

২৭।   সাময়িক শ্রমিক ব্যতীত, অন্য কোনো শ্রমিক তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর গ্রহণ বা চাকরির অবসানের সময় মালিকের নিকট হইতে চাকরি সম্পর্কিত একটি প্রত্যয়নপত্র পাইবার অধিকারী হইবেন।

অভিযোগ পদ্ধতি

২৮।  (১) লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ অথবা অন্য যে কোনো কারণে চাকরির অবসান হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকসহ যে কোনো শ্রমিকের, এই অধ্যায়ের অধীন কোনো বিষয় সম্পর্কে যদি কোনো অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তৎসম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হন তাহা হইলে তিনি, অভিযোগের কারণ অবহিত হইবার তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট প্রেরণ করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, যদি মালিক বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অভিযোগটি সরাসরি গ্রহণ করিয়া লিখিতভাবে প্রাপ্তিস্বীকার করেন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে না পাঠাইলেও চলিবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অভিযোগ তদন্ত, নিষ্পত্তি ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

তৃতীয় অধ্যায়

প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা

প্রসূতিকালীন মহিলা শ্রমিকের কর্মে নিয়োগ নিষিদ্ধ

২৯।   (১) কোনো মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানে কোনো মহিলা শ্রমিককে তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে কোনো কাজ করাইতে পারিবেন না।

 

(২) কোনো মহিলা শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে কোনো কাজ করিতে পারিবেন না।

 

(৩) কোনো মালিক কোনো মহিলা শ্রমিককে এমন কোনো কাজ করিবার জন্য নিয়োগ করিতে পারিবেন না যাহা দুষ্কর বা শ্রম-সাধ্য অথবা যাহার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াইয়া থাকিতে হয় অথবা যাহা তাহার জন্য স্বাস্থ্য হানিকর হইবার সম্ভাবনা থাকে, যদি তাহার এই বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে, অথবা যদি মহিলা শ্রমিক তাহাকে অবহিত করিয়া থাকেন যে, ১০ (দশ) সপ্তাহের মধ্যে তাহার সন্তান প্রসব করিবার সম্ভাবনা আছে অথবা পূর্ববর্তী ১০ (দশ) সপ্তাহের মধ্যে সন্তান প্রসব করিয়াছেন।

প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রাপ্তির অধিকার এবং প্রদানের দায়িত্ব

৩০।   (১) প্রত্যেক মহিলা শ্রমিক তাহার মালিকের নিকট হইতে তাহার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৮ (আট) সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহের জন্য প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইবেন, এবং তাহার মালিক তাহাকে এই সুবিধা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো মহিলা শ্রমিক উক্তরূপ সুবিধা পাইবেন না, যদি না তিনি তাহার মালিকের অধীন তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পূর্বে অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কাজ করিয়া থাকেন।

 

(২) কোনো মহিলা শ্রমিককে কল্যাণ সুবিধা প্রদেয় হইবে না, যদি তাহার সন্তান প্রসবের সময় তাহার ২ (দুই) বা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকে, তবে এক্ষেত্রে তিনি কোনো ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।

প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পরিশোধ সংক্রান্ত পদ্ধতি

৩১।   কোনো অন্তঃসত্ত্বা মহিলা শ্রমিক এই আইনের অধীন প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইলে তিনি মালিককে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রদান করিবেন এবং মালিক সংশ্লিষ্ট মহিলা শ্রমিককে ছুটিসহ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান করিবেন।

প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার পরিমাণ

৩২।  (১) এই আইনের অধীন যে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদেয় হইবে উহা উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত পন্থায় গণনা করিয়া দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক, যেক্ষেত্রে যাহা প্রযোজ্য, গড় মজুরি হারে সম্পূর্ণ নগদে প্রদান করিতে হইবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর প্রয়োজনে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক গড় মজুরি গণনার জন্য সংশ্লিষ্ট মহিলা শ্রমিক কর্তৃক এই অধ্যায়ের অধীন নোটিশ প্রদানের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৩ (তিন) মাসে তাহার প্রাপ্ত মোট মজুরিকে উক্ত সময়ে তাহার মোট প্রকৃত কাজের দিনগুলি দ্বারা ভাগ করিয়া যে হার নিরূপিত হইবে উহা তাহার দৈনিক মজুরি হিসাবে গণ্য হইবে।

মহিলা শ্রমিকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা প্রদান

৩৩।  (১) এই অধ্যায়ের অধীন প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী কোনো মহিলা শ্রমিক সন্তান প্রসবকালে অথবা উহার পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুবরণ করিলে মালিক প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি এবং ব্যক্তিকে উক্তরূপ সুবিধা প্রদান করিবেন।

 

(২) যদি উক্তরূপ কোনো মহিলা শ্রমিক প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হওয়ার সময় সীমার মধ্যে কিন্তু সন্তান প্রসবের পূর্বে মারা যান, তাহা হইলে মালিক উক্ত মহিলা শ্রমিকের মৃত্যুর তারিখসহ তৎপূর্ববর্তী সময়ের জন্য উক্তরূপ সুবিধা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন, তবে ইতিমধ্যে প্রদত্ত উক্তরূপ সুবিধা যদি প্রদেয় সুবিধা হইতে বেশী হয়, তাহা হইলেও উহা আর ফেরত লইতে পারিবেন না, এবং মহিলা শ্রমিক বা কর্মচারীর মৃত্যুর সময় পর্যন্ত যদি মালিকের নিকট এই বাবদ কিছু পাওনা থাকে, তাহা হইলে তিনি এই অধ্যায়ের অধীন মহিলা শ্রমিক বা কর্মচারীর কোনো মনোনীত ব্যক্তিকে, অথবা কোনো মনোনীত ব্যক্তি না থাকিলে তাহার আইনগত প্রতিনিধিকে উহা প্রদান করিতে হইবে।

কতিপয় ক্ষেত্রে মহিলা শ্রমিকের চাকরির অবসানে বাধা

৩৪।   যদি কোনো মহিলা শ্রমিকের সন্তান প্রসবের পূর্ববর্তী ৬ (ছয়) মাস এবং সন্তান প্রসবের পরবর্তী ৮ (আট) সপ্তাহ মেয়াদের মধ্যে তাহাকে চাকরি হইতে ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা অপসারণ করিবার জন্য অথবা তাহার চাকরি অন্যভাবে অবসানের জন্য মালিক কোনো নোটিশ বা আদেশ প্রদান করেন, এবং উক্তরূপ নোটিশ বা আদেশের যদি যথেষ্ট কোনো কারণ না থাকে তাহা হইলে, এই নোটিশ বা আদেশ প্রদান না করা হইলে এই অধ্যায়ের অধীন সংশ্লিষ্ট মহিলা শ্রমিক যে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইতেন, উহা হইতে তিনি বঞ্চিত হইবেন না।

চতুর্থ অধ্যায়

পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থা

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত সাধারণ বিধান

৩৫।  (১) প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের তাহার শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের জন্য মানসম্মত নিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং স্বাস্থ্যসম্মত ও স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ প্রদান ও উহার রক্ষণাবেক্ষণ করা দায়িত্ব ও কর্তব্য।

 

(২) প্রত্যেক মালিক, তাহার প্রতিষ্ঠানে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন-

 

                (ক)   মানুষের জীবন বা নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ কারখানা ভবন ও ভবনের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা, মেঝে, সিঁড়ি এবং যাতায়াত পথ এবং যন্ত্রপাতি বা প্ল্যান্ট বা কাজের সিস্টেম (working system) প্রদান ও রক্ষণাবেক্ষণ;

 

                (খ)   কোনো দ্রব্য, পদার্থ, ইত্যাদির ব্যবহার, সংরক্ষণ এবং বহনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির অনুপস্থিতি নিশ্চিত করা;

 

(গ)    কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও ক্ষেত্রমত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করা;

 

(ঘ)    বিনামূল্যে নিরাপত্তা উপকরণ, বিপজ্জনক যন্ত্রপাতি, বিষাক্ত কেমিক্যাল অথবা বিশেষ কোনো কাজে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য শ্রমিকদেরকে যথাযথ নিরাপত্তামূলক পোশাক ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি সরবরাহ;

 

(ঙ)   প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, কারখানা ভবনের প্রত্যেক তলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপযুক্ত অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ, এবং শ্রমিকগণকে এই সকল নিরাপত্তা উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা নোটিশের ব্যবস্থা;

 

(চ)    যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অথবা ভিন্ন অবস্থায় থাকিবার সময় যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা বিধান করা;

 

(ছ)    উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে উত্থিত গ্যাস, ধোঁয়া, বাষ্প বা ধূলা এমন প্রকৃতির বা এমন পরিমাণের হয় যে, উহা বিষ্ফোরিত বা প্রজ্জলিত হইবার সম্ভাবনা থাকে, সেই ক্ষেত্রে উক্তরূপ বিষ্ফোরণ বন্ধ করিবার জন্য সর্বপ্রকার ব্যবস্থা;

 

(জ)   প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে পুরুষ এবং মহিলা শ্রমিকগণের জন্য স্বতন্ত্র ও পর্যাপ্ত শৌচাগার ও প্রক্ষালন কক্ষের ব্যবস্থা এবং এইগুলি পরিষ্কার ও স্বাস্থ্য সম্মত রাখা;

 

(ঝ)   প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে, উহাতে কর্মরত সকল শ্রমিকের পান করিবার জন্য উহার কোনো সুবিধাজনক স্থানে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা ;

 

(ঞ)  সেইফটি রেকর্ড বুক সংরক্ষণ, সেইফটি কমিটি গঠন, কল্যাণ কর্মকর্তা নিয়োগ, ধৌতকরণ সুবিধা, ক্যান্টিন, শিশুকক্ষ, ইত্যাদি কল্যাণমূলক ব্যবস্থা;

 

(ট)    কর্ম পরিচালনায় নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির শারীরিক জখম, বিষাক্রান্ত বা ব্যাধিতে আক্রান্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

 

(৩) কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানে প্রবিধান দ্বারা স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ নির্ধারণ করিবে-

 

(ক)   উৎপাদন প্রক্রিয়ার কারণে সৃষ্ট কোনো বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা;

 

(খ)   পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বায়ু চলাচল ও তাপমাত্রা, ধূলা-বালি ও ধোঁয়া, কৃত্রিম আর্দ্রকরণ, অতিরিক্ত ভীড়, আলোর ব্যবস্থা, আবর্জনা বাক্স ও পিকদানী, ইত্যাদির ব্যবস্থা;

 

(গ)    যন্ত্রপাতি ঘিরিয়া রাখা, চলমান যন্ত্রপাতির উপরে বা নিকটে কাজ, স্ট্রাইকিং গিয়ার এবং শক্তি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করিবার পন্থা, ক্রেন এবং অন্যান্য উত্তোলন যন্ত্রপাতি, হয়েস্ট এবং লিফট, ঘূর্ণায়মান যন্ত্রপাতি, প্রেসার প্ল্যান্ট, অতিরিক্ত ওজন, বিপজ্জনক বিস্ফোরক বা দাহ্য গ্যাস, ধূলা, ধোঁয়া, ইত্যাদির বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং চোখের নিরাপত্তা;

 

(ঘ)    বিপজ্জনক চালনা, বিপজ্জনক ঘটনা, দুর্ঘটনা, ব্যাধি ইত্যাদি সম্পর্কে নোটিশের ব্যবস্থা;

 

(ঙ)   ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ নির্ণয় অথবা উহার স্থায়িত্ব পরীক্ষার ক্ষমতা, দুর্ঘটনা বা ব্যাধি সম্পর্কে তদন্তের নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা, নমুনা সংগ্রহের ক্ষমতা, কতিপয় বিপদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের ক্ষমতা, বিপজ্জনক ভবন এবং যন্ত্রপাতি সম্বন্ধে তথ্য প্রদান, কতিপয় কাজে মহিলা শ্রমিকগণের নিয়োগে বাধা নিষেধ;

 

(চ)    কারখানা ভবন ও অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কিত নিরাপত্তা।

বাধ্যতামূলক গ্রুপ বিমা চালুকরণ

৩৬।   (১) যে সকল প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) জন স্থায়ী শ্রমিক কর্মরত রহিয়াছেন, সেইখানে মালিক প্রচলিত বিমা আইন অনুযায়ী গ্রুপ বিমা চালু করিবেন।

 

(২) বিমা দাবির টাকা এই আইনের অধীন শ্রমিকের অন্যান্য প্রাপ্যের অতিরিক্ত হইবে:

 

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিমা দাবি আদায় মালিকের দায়িত্ব হইবে এবং মালিক উক্ত বিমা দাবি হইতে আদায়কৃত অর্থ পোষ্যদের সরাসরি প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন :

 

আরো শর্ত থাকে যে, অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী কোনো বিমা দাবি উত্থাপিত হইলে উহা অনূর্ধ্ব ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে বিমা কোম্পানি ও মালিক যৌথ উদ্যোগে নিষ্পত্তি করিবেন।

চিকিৎসা কেন্দ্র

৩৭।   (১) প্রত্যেক জোনে চিকিৎসা কেন্দ্র থাকিবে । 

 

(২) প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট জোনের চিকিৎসা কেন্দ্রের সদস্য হইবে এবং সদস্য কর্তৃক প্রদেয় চাঁদা এবং অন্যান্য বিষয়াদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।     

পঞ্চম অধ্যায়

কর্মঘণ্টা ও ছুটি

দৈনিক কর্মঘণ্টা

৩৮।  কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সাধারণত দৈনিক ৮ (আট) ঘন্টার অধিক সময় কাজ করিবেন না বা তাহাকে দিয়ে কাজ করানো যাইবে না:

 

তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৪০ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো প্রতিষ্ঠানে উক্তরূপ কোনো শ্রমিক দৈনিক ১০ (দশ) ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করিতে পারিবেন।

বিশ্রাম বা আহারের জন্য বিরতি

৩৯।   কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো শ্রমিক-

 

(ক)   দৈনিক ৬ (ছয়) ঘণ্টার অধিক কাজ করিতে বাধ্য থাকিবেন না, যদি না উক্ত দিনে তাহাকে বিশ্রাম বা আহারের জন্য ১ (এক) ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়;

 

(খ)   দৈনিক ৫ (পাঁচ) ঘণ্টার অধিক কাজ করিতে বাধ্য থাকিবেন না, যদি না উক্ত দিনে তাহাকে বিশ্রাম বা আহারের জন্য ৩০ (ত্রিশ) মিনিট বিরতি দেওয়া হয়; অথবা

 

(গ)    দৈনিক ৮ (আট) ঘণ্টার অধিক কাজ করিতে বাধ্য থাকিবেন না, যদি না উক্ত দিনে তাহাকে বিশ্রাম বা আহারের জন্য দফা (ক) এর অধীন একটি বিরতি অথবা দফা (খ) এর অধীন দুইটি বিরতি দেওয়া হয়।

সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা

৪০।  (১) কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সাধারণত সপ্তাহে
৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করিবেন না বা তাহাকে দিয়ে কাজ করানো যাইবে না।

(২) ধারা ৪৫ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে ৪৮ (আটচল্লিশ) ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো সপ্তাহে উক্তরূপ কোনো শ্রমিকের মোট কর্মসময় ৬০ (ষাট) ঘণ্টার অধিক হইবে না, এবং কোনো বৎসরে উহা গড়ে প্রতি সপ্তাহে ৫৬ (ছাপ্পান্ন) ঘণ্টার অধিক হইবে না:

আরো শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিশেষ শিল্পের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা শর্ত সাপেক্ষে, এই ধারার বিধান শিথিল করিতে অথবা উহা হইতে এককালীন সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস মেয়াদের জন্য অব্যাহতি দিতে পারিবে যদি কর্তৃপক্ষ এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, জনস্বার্থে বা অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে উক্ত শিথিল বা অব্যাহতি প্রয়োজন।

সাপ্তাহিক ছুটি

৪১। কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো শ্রমিক প্রতি সপ্তাহে ১ (এক) দিন ছুটি পাইবেন এবং এইরূপ কোনো ছুটির জন্য তাহার মজুরি হইতে কোনো কর্তন করা যাইবে না।

ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি

৪২।  যেক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানকে বা উহাতে কর্মরত শ্রমিকগণকে ধারা ৪১ এর বিধান হইতে অব্যাহতি প্রদান করিয়া জারিকৃত কোনো আদেশের ফলে অথবা এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধানের ফলে কোনো শ্রমিক উক্ত ধারার অধীন তাহার প্রাপ্য কোনো ছুটি হইতে বঞ্চিত হন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিককে অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী ৬ (ছয়) দিনের মধ্যে উক্তরূপ ছুটির দিনের সম সংখ্যক ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।

নৈশ-পালা

৪৩।  যেক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো শ্রমিকের কোনো পালার কাজ মধ্যরাত্রির পরেও সম্প্রসারিত হয়, সেই ক্ষেত্রে-

 

(ক)   ধারা ৪১ এর প্রয়োজনে উক্ত শ্রমিকের জন্য একটি পূর্ণ দিনের ছুটি বলিতে বুঝাইবে তাহার পালা শেষ হইবার সময় হইতে পরবর্তী অবিচ্ছিন্ন ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা; এবং

 

(খ)   তাহার জন্য পরবর্তী দিন বলিতে বুঝাইবে তাহার পালা শেষ করিবার পর পরবর্তী অবিচ্ছিন্ন ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা, এবং মধ্যরাত্রির পর তিনি যত ঘন্টা কাজ করিয়াছেন তাহা তাহার পূর্ববতী দিনের কাজের সময়ের সহিত গণনা করা হইবে।

যানবাহনে কর্ম-ঘণ্টার উপর বাধা

৪৪। এই আইনের অধীন অনুমোদিত সময়ের অতিরিক্ত কোনো সময় কোনো শ্রমিক কোনো যানবাহনে বা একাধিক যানবাহনে কাজ করিবেন না বা তাহাকে কাজ করিবার অনুমতি দেওয়া হইবে না।

অধিকাল কর্মের জন্য অতিরিক্ত ভাতা

৪৫।  যেক্ষেত্রে কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো দিন বা সপ্তাহে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, সেই ক্ষেত্রে তিনি অধিকাল কাজের জন্য তাহার মূল মজুরি ও মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর সাধারণ হারের দ্বিগুণ হারে ভাতা পাইবেন।

মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘণ্টা

৪৬।  কোনো মহিলা শ্রমিককে তাহার এবং সংশ্লিষ্ট জোনের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের বিনা অনুমতিতে কোনো প্রতিষ্ঠানে রাত ৮ (আট) ঘটিকা হইতে ভোর ৬ (ছয়) ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোনো কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।

দ্বৈত চাকরির উপর বাধা

৪৭।   অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের বিনা অনুমতিতে এবং তৎকর্তৃক আরোপিত শর্তের ব্যত্যয়ে, কোনো শ্রমিককে একই দিনে একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।

শ্রমিকের কাজের সময়ের নোটিশ

৪৮।   (১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে উহাতে কর্মরত শ্রমিকগণ কোন্ কোন্ সময় কাজ করিবেন ইহা পরিষ্কারভাবে লিখিয়া একটি নোটিশ দ্বারা প্রদর্শিত হইবে এবং প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত হইবে।

 

(২) শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণের কাজের সময় ও তৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়সমূহ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

নোটিশ এবং রেজিস্টারের সহিত কর্মঘণ্টার মিল থাকা

৪৯।   ধারা ৪৮ (১) এর অধীন নোটিশ এবং ধারা ৮ এর অধীন রক্ষিত রেজিস্টারে কোনো শ্রমিকের নামের বিপরীতে পূর্ব লিপিবদ্ধ বিবরণ ব্যতীত তিনি কোনো কাজ করিতে পারিবেন না বা তাহাকে কোনো কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।

নৈমিত্তিক ছুটি

৫০।  (১) প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে পূর্ণ মজুরিতে ১০ (দশ) দিনের নৈমিত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।

 

(২) উক্তরূপ ছুটি কোনো কারণে ভোগ না করিলে উহা জমা থাকিবে না এবং কোনো বৎসরের ছুটি পরবর্তী বৎসরে ভোগ করা যাইবে না।

পীঁড়া ছুটি

৫১।   (১) প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে পূর্ণ মজুরিতে ১৪ (চৌদ্দো) দিনের পীঁড়া ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।

 

(২) উক্তরূপ কোনো ছুটি মঞ্জুর করা হইবে না যদি না মালিক কর্তৃক নিযুক্ত ১ (এক) জন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক অথবা উক্তরূপ চিকিৎসকের অবর্তমানে অন্য কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক পরীক্ষান্তে এই মর্মে প্রত্যয়ন করেন যে, সংশ্লিষ্ট শ্রমিক পীঁড়িত এবং তাহার চিকিৎসা বা আরোগ্যের জন্য প্রত্যয়নপত্রে উল্লিখিত সময় ছুটি প্রয়োজন।

 

(৩) উক্তরূপ ছুটি জমা থাকিবে না এবং কোনো বৎসর ভোগ করা না হইলে পরবর্তী বৎসর উহা আর ভোগ করা যাইবে না।

অর্জিত ছুটি

৫২।   (১) কোনো প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে ১ (এক) বৎসর চাকরি সম্পূর্ণ করিয়াছেন এমন প্রত্যেক শ্রমিক পরবর্তী ১২ (বারো) মাস সময়ে তাহার পূর্ববর্তী ১২ (বারো) মাসের কাজের জন্য মজুরিসহ প্রতি ১৮ (আঠারো) দিন কাজের জন্য ১ (এক) দিন হারে অর্জিত ছুটি প্রাপ্য হইবেন।

 

(২) প্রত্যেক পঞ্জিকা বর্ষে কোনো শ্রমিক তাহার জমাকৃত অর্জিত ছুটির নগদায়ন করিতে পারিবেন এবং কর্তৃপক্ষ অর্জিত ছুটির নগদায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করিবেন।

উৎসব ছুটি

৫৩। (১) প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পূর্ণ মজুরিতে ১১ (এগারো) দিনের উৎসব ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।

 

 

 

(২) মালিক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত ছুটির দিন ও তারিখ স্থির করিবেন।

 

 

 

(৩) কোনো শ্রমিককে কোনো উৎসব ছুটির দিনে কাজ করিতে বলা যাইবে, তবে ইহার জন্য তাহাকে উক্ত দিনের অব্যবহিত ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ২ (দুই) দিনের মজুরিসহ ক্ষতিপূরণ ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।

 

 

 

(৪) মালিক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক তাহার প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত প্রত্যেক স্থায়ী শ্রমিককে প্রত্যেক পঞ্জিকা বৎসরে তাহাদের স্ব স্ব ধর্মীয় উৎসবের প্রাক্কালে ২ (দুই) মাসের মূল মজুরির সমপরিমাণ উৎসব বোনাস প্রদান করিতে হইবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

মজুরি, মজুরি পরিশোধ, ইত্যাদি

মজুরির বিশেষ সংজ্ঞা

৫৪।  বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই অধ্যায়ে ‘‘মজুরি’’ বলিতে ধারা ২ এর দফা (৩৪) এ সংজ্ঞায়িত মজুরিসহ নিম্নলিখিত পাওনাগুলিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   নিয়োগের শর্ত মোতাবেক প্রদেয় কোনো বোনাস অথবা অন্য কোনো অতিরিক্ত পারিশ্রমিক;

 

 

 

(খ)   ছুটি, বন্ধ অথবা অধিকাল কর্মের জন্য প্রদেয় কোনো পারিশ্রমিক;

 

 

 

(গ)    কোনো আদালতের আদেশ অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোনো রোয়েদাদ বা নিষ্পত্তির অধীন প্রদেয় কোনো পারিশ্রমিক;

 

 

 

(ঘ)    চাকরির অবসান, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, পদত্যাগ, অবসর গ্রহণ, বরখাস্ত অথবা অন্য যেভাবেই হউক না কেন, এর কারণে কোনো চুক্তি বা এই আইনের অধীন প্রদেয় কোনো অর্থ; এবং

 

 

 

(ঙ)   লে-অফ অথবা সাময়িক বরখাস্তের কারণে প্রদেয় কোনো অর্থ।

 

 

মজুরি পরিশোধের দায়িত্ব

৫৫।  প্রত্যেক মালিক তৎকর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক শ্রমিককে সকল মজুরি পরিশোধ করিবার জন্য দায়ী থাকিবেন:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা মালিক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অথবা উহার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তিও উক্তরূপ পরিশোধের জন্য দায়ী থাকিবেন।

মজুরি পরিশোধের সময়

৫৬।  অবসর গ্রহণ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা চাকরির অবসান, ইত্যাদি যে কোনো কারণে শ্রমিকের চাকরির অবসান ঘটিবার পরবর্তী ১৫ (পনেরো) কর্মদিবসের মধ্যে উক্ত শ্রমিকের সকল পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে।

মজুরি পরিশোধের পদ্ধতি

৫৭।  (১) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মালিক কর্তৃক শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করিতে হইবে।

 

 

 

(২) মালিককে শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এতদুদ্দেশ্যে সময় সময় জারিকৃত আদেশ বা সার্কুলার অনুসরণ করিতে হইবে।

মজুরি হইতে কর্তনযোগ্য বিষয়াদি

৫৮।  (১) এই আইন দ্বারা অনুমোদিত কর্তনের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোনো ক্ষেত্রে কোনো শ্রমিকের মূল মজুরি হইতে কিছুই কর্তন করা যাইবে না।

 

 

 

(২) কেবলমাত্র এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোনো শ্রমিকের মজুরি হইতে নিম্নলিখিত প্রকারের কর্তন করা যাইবে যথা :-

 

 

 

(ক)   ভবিষ্য তহবিলের জন্য চাঁদা কর্তন অথবা উহা হইতে প্রদত্ত অগ্রিম আদায়ের জন্য কর্তন;

 

 

 

(খ)   চেক-অফ পদ্ধতিতে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির জন্য চাঁদা কর্তন;

 

 

 

(গ)    কর্তব্য কাজে অননুমোদিত অনুপস্থিতির জন্য কর্তন।

 

 

 

(৩) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে কোনো শ্রমিকের উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত মজুরি কর্তন করা যাইবে।

মৃত বা নিখোঁজ শ্রমিকের অপরিশোধিত মজুরি পরিশোধ

৫৯।  (১) এই অধ্যায়ের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোনো শ্রমিককে মজুরি হিসাবে প্রদেয় সকল অর্থ তাহার মৃত্যুজনিত কারণে অথবা তাহার কোনো খোঁজ না পাইবার কারণে যদি পরিশোধ করা না যায়, তাহা হইলে-

 

 

 

(ক)   বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী এতদুদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তিকে প্রদান করা হইবে;

 

 

 

(খ)   উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তি না থাকিলে অথবা কোনো কারণে উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তিকে উহা প্রদান করা না গেলে ইপিজেড শ্রম আদালতে জমা দিতে হইবে, এবং উক্ত আদালত বিধি অনুযায়ী তৎসম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

 

 

 

(২) যেক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী কোনো শ্রমিককে মজুরি হিসাবে প্রদেয় সকল অর্থ মালিক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মনোনীত ব্যক্তিকে প্রদান করা হইয়াছে অথবা ইপিজেড শ্রম আদালতে জমা দেওয়া হইয়াছে সেক্ষেত্রে উক্ত মজুরি প্রদান সম্পর্কে মালিক তাহার দায়িত্ব হইতে মুক্ত হইবেন।

 

 

মজুরি হইতে কর্তন অথবা মজুরি বিলম্বে পরিশোধের কারণে উত্থাপিত দাবি

৬০।  (১) যেক্ষেত্রে এই আইনের বিধানের খেলাপের জন্য কোনো শ্রমিকের মজুরি হইতে কোনো কর্তন করা হয় অথবা কোনো শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করা না হয় অথবা তাহার মজুরি কিংবা প্রবিধানের আওতায় প্রদেয় ভবিষ্য তহবিলের প্রাপ্য পরিশোধে বিলম্ব ঘটে সেক্ষেত্রে তিনি, অথবা তাহার মৃত্যু হইলে তাহার কোনো উত্তরাধিকারী অথবা কোনো আইনসঙ্গত প্রতিনিধি কর্তৃক মজুরি ফেরত পাইবার জন্য অথবা বকেয়া বা বিলম্বিত মজুরি ও অন্যান্য পাওনা আদায়ের জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিতে পারিবেন।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দরখাস্ত পেশের সময়, স্থান ও ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত আদেশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

দাবি আদায়ের জন্য দরখাস্ত

৬১।  (১) মজুরি প্রাপ্ত হন নাই অথবা মজুরি কর্তিত হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকগণের পক্ষে অন্তর্ভুক্ত সকল অথবা একাধিক শ্রমিকের পক্ষে ধারা ৬০ এর অধীন মাত্র একটি দরখাস্ত দাখিল করা যাইবে, এবং এইরূপ ক্ষেত্রে ধারা ৬০ এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে।

 

 

 

(২) ইপিজেড শ্রম আদালত ধারা ৬০ এর অধীন দাখিলকৃত মজুরি প্রাপ্ত হন নাই এইরূপ শ্রমিক দলভুক্ত একাধিক শ্রমিক কর্তৃক দাখিলকৃত স্বতন্ত্র দরখাস্তসমূহকে একটি দরখাস্ত হিসাবে গণ্য করিতে পারিবে, এবং তদনুযায়ী উহা নিষ্পত্তি করিতে পারিবে এবং এই ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।

 

 

 

(৩) এই ধারার প্রয়োজনে ‘‘মজুরি প্রাপ্ত হন নাই এইরূপ শ্রমিক দল’’ এর অন্তর্ভুক্ত বলিয়া ঐ সকল শ্রমিককে বুঝাইবে যাহারা একই প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত আছেন, এবং যাহাদের অনাদায়ী মজুরি অথবা বিলম্বিত মজুরি একই মজুরিকালের জন্য হইয়া থাকে।

আপিল

৬২।  (১) ধারা ৬০ এর অধীন প্রদত্ত ইপিজেড শ্রম আদালতের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে উহা প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে।

 

 

 

    (২) আপিল সংক্রান্ত অন্যান্য বিধান বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

 

মালিক অথবা মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তির সম্পত্তির শর্তাধীন ক্রোক

৬৩।  (১) যেক্ষেত্রে যে কোনো সময়-

 

 

 

(ক)   ধারা ৬০ এর অধীন কোনো দরখাস্ত পেশ করিবার পর, ইপিজেড শ্রম আদালত; অথবা

 

 

 

(খ)   ধারা ৬২ এর অধীন কোনো শ্রমিক কর্তৃক আপিল পেশ করিবার পর, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল;

 

 

 

এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, মালিকের অথবা ধারা ৫৫ এর অধীন মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তির ধারা ৬০ বা ধারা ৬২ এর অধীন প্রদানের জন্য আদেশকৃত কোনো অর্থ পরিশোধ এড়াইবার সম্ভাবনা আছে, তাহা হইলে উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা, ক্ষেত্রমত, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল উক্ত মালিক বা ব্যক্তিকে শুনানির সুযোগ দান করিয়া উক্ত আদেশকৃত অর্থ পরিশোধের জন্য তাহার সম্পত্তি ক্রোক করিতে পারিবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, বিলম্বের কারণে উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল শুনানির সুযোগ দেওয়ার পূর্বেও উক্তরূপ ক্রোকের আদেশ দিতে পারিবে :

 

 

 

আরো শর্ত থাকে যে, উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় যে পরিমাণ সম্পত্তি আদেশকৃত অর্থ আদায়ের জন্য যথেষ্ট হইবে, সেই পরিমাণ সম্পত্তিই ক্রোক করা হইবে।

 

 

 

(২) বিচারের পূর্বে সম্পত্তি ক্রোক সম্পর্কীয় দেওয়ানী কার্যবিধি এর সকল বিধান উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্রোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

কতিপয় ক্ষেত্রে মালিকের নিকট হইতে অর্থ আদায়

৬৪।   যেক্ষেত্রে ধারা ৫৫ এর অধীন মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল তৎকর্তৃক আদেশকৃত কোনো অর্থ আদায় করিতে অক্ষম হয় সেই ক্ষেত্রে উক্ত আদালত উহা মালিকের নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবে।

সপ্তম অধ্যায়

ইপিজেড মজুরি বোর্ড

নিম্নতম মজুরি বোর্ড প্রতিষ্ঠা

৬৫।  (১) সরকার শ্রমিকগণের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ইপিজেড নিম্নতম মজুরি বোর্ড, অতঃপর এই অধ্যায়ে মজুরি বোর্ড বলিয়া উল্লিখিত, গঠন করিতে পারিবে, যথা:-

 

 

 

(ক)   নির্বাহী চেয়ারম্যান অথবা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন ব্যক্তি, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

 

 

 

(খ)   কর্তৃপক্ষের ১ (এক) জন সদস্য;

 

 

 

(গ)    প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১ (এক) জন প্রতিনিধি;

 

 

 

(ঘ)    অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ১ (এক) জন প্রতিনিধি;

 

 

 

(ঙ)   শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১ (এক) জন প্রতিনিধি;

 

 

 

(চ)    কর্তৃপক্ষের ২ (দুই) জন প্রতিনিধি;

 

 

 

(ছ)    মালিক পক্ষের ২ (দুই) জন প্রতিনিধি;

 

 

 

(জ)   শ্রমিক পক্ষের ২ (দুই) জন প্রতিনিধি।

 

 

 

 (২) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর দফা (ছ) ও (জ) এর অধীন যথাক্রমে, মালিকগণের এবং শ্রমিকগণের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যগণকে মনোনয়ন করিবে:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, যদি একাধিক প্রচেষ্টায় মালিক কিংবা শ্রমিক প্রতিনিধির মনোনয়ন না পাওয়া যায় তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ নিজ বিবেচনায়, যাহাকে উপযুক্ত মনে করিবে তাহাকেই মালিক বা শ্রমিক প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য হিসাবে মনোনীত করিতে পারিবে।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ড প্রয়োজনবোধে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

 

 

 

(৪) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, প্রয়োজনে, মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করিতে পারিবে।

নিম্নতম মজুরি হারের সুপারিশ

৬৬।   সরকার মজুরি বোর্ডকে শ্রমিকগণের নিম্নতম মজুরি হার, যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে, সুপারিশ করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে।

শ্রমিকগণের নিম্নতম মজুরি হার ঘোষণা করিবার ক্ষমতা

৬৭। (১) ধারা ৬৬ এর অধীন মজুরি বোর্ডের সুপারিশ সরকার কর্তৃক অনুমোদনের পর কর্তৃপক্ষ গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঘোষণা করিতে পারিবে যে, মজুরি বোর্ড কর্তৃক বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিকদের জন্য সুপারিশকৃত নিম্নতম মজুরির হার উক্তরূপ শ্রমিকগণের জন্য নিম্নতম মজুরি হার হইবে।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রজ্ঞাপনে যদি এতদসম্পর্কে কোনো তারিখ উল্লেখ না থাকে তাহা হইলে উহার অধীন ঘোষণাটি উহা প্রকাশিত হইবার তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।

 

 

 

(৩) এই ধারার অধীন ঘোষিত নিম্নতম মজুরি হার চূড়ান্ত হইবে এবং তৎসম্পর্কে কোনোভাবে কোনো আদালতে বা কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।

সুপারিশ প্রণয়নে বিবেচ্য বিষয়

৬৮।  কোনো সুপারিশ প্রণয়নকালে মজুরি বোর্ড জোন বহির্ভূত এলাকার শিল্প-কারখানার নিম্নতম মজুরি বা বেতন কাঠামো এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করিয়া দেখিবে।

নিম্নতম মজুরি হারের পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা

৬৯। ধারা ৬৮ বা অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক বিষয়ের কোনো পরিবর্তনের কারণে প্রয়োজন হইলে সরকার মজুরি বোর্ডকে উহার কোনো সুপারিশ পুনরায় পর্যালোচনা করিবার এবং ধারা ৬৭ এর অধীন ঘোষিত নিম্নতম মজুরি হারের কোনো সংশোধন বা পরিবর্তনের নির্দেশ দিতে পারিবে।

নিম্নতম মজুরি প্রত্যেক মালিকের উপর অবশ্য পালনীয়

৭০।  ধারা ৬৭ এর অধীন ঘোষিত মজুরি নিম্নতম হার সংশ্লিষ্ট সকল মালিকের উপর অবশ্য পালনীয় হইবে এবং প্রত্যেক শ্রমিক উক্তরূপ ঘোষিত বা প্রকাশিত মজুরির অন্যূন হারে মজুরি পাইতে অধিকারী হইবেন।

নিম্নতম মজুরি হারের কম হারে মজুরি প্রদান নিষিদ্ধ

৭১।  (১) কোনো মালিক কোনো শ্রমিককে এই অধ্যায়ের অধীন ঘোষিত বা প্রকাশিত নিম্নতম হারের কম হারে কোনো মজুরি প্রদান করিতে পারিবেন না।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো শ্রমিকের এই অধ্যায়ের অধীন ঘোষিত বা প্রকাশিত নিম্নতম হারের অধিক হারে মজুরি অথবা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা অব্যাহতভাবে পাইবার অধিকার ক্ষুণ্ণ করিবে না, যদি কোনো চুক্তি বা রোয়েদাদের অধীন বা অন্য কোনো কারণে তিনি উক্তরূপ অধিক হারে মজুরি পাইবার অথবা কোনো প্রথা অনুযায়ী উক্তরূপ সুযোগ-সুবিধা পাইবার অধিকারী হন।

 

 

 

(৩) কোনো মালিক নিম্নতম হারের কম হারে কোনো মজুরি প্রদান করিলে কর্তৃপক্ষ লিখিত আদেশ বা নির্দেশ দ্বারা উক্ত মালিক বা মালিকের পক্ষে মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ
৭২। কর্তৃপক্ষ, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, শ্রমিকগণের মজুরি নির্ধারণের পদ্ধতি এবং অন্যান্য সুবিধা স্থির করিতে পারিবে।

অষ্টম অধ্যায়

দুর্ঘটনাজনিত কারণে জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ

ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য মালিকের দায়িত্ব

৭৩।  (১) চাকরি চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে যদি কোনো শ্রমিক শরীরে জখমপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে মালিক তাহাকে এই অধ্যায়ের বিধান বা ক্ষেত্রমত, বিধি বা প্রবিধান অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবেন।

 

 

 

(২) কোনো মালিক উক্তরূপ ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকিবেন না, যদি-

 

 

 

(ক)   জখমের ফলে ৩ (তিন) দিনের অধিক সময় কোনো শ্রমিক সম্পূর্ণ বা আংশিক কর্মক্ষমতা না হারান;

 

 

 

(খ)   জখমের ফলে মারা যান নাই এইরূপ কোনো শ্রমিকের দুর্ঘটনায় জখমপ্রাপ্ত হইবার প্রত্যক্ষ কারণ ছিল-

 

 

 

(অ)   দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকের মদ্যপান বা মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে উহার প্রভাবাধীন থাকা;

 

 

 

(আ)  শ্রমিকগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার জন্য প্রণীত বিধি বা সুস্পষ্ট আদেশ শ্রমিক কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করা;

 

 

 

(ই)    শ্রমিকগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার জন্য ব্যবস্থা করা হইয়াছে ইহা জানা সত্ত্বেও শ্রমিক কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো আঘাত নিরোধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম বা অন্য কোনো কৌশল অপসারণ করা বা উপেক্ষা করা।

 

 

 

(৩) যদি-

 

 

 

(ক)   তৃতীয় তপশিলে ‘ক’ অংশে বর্ণিত কোনো চাকরিতে নিযুক্ত কোনো শ্রমিক উহাতে উক্তরূপ চাকরি সম্পর্কিত বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া উল্লিখিত কোনো ব্যাধিতে আক্রান্ত হন, অথবা

 

 

 

(খ)   কোনো শ্রমিক অবিচ্ছিন্নভাবে কোনো মালিকের অধীন অন্যূন ৬ (ছয়) মাস তৃতীয় তপশিলের ‘খ’ অংশে বর্ণিত কোনো চাকরিতে নিযুক্ত থাকাকালে উক্ত তপশিলে উক্তরূপ চাকরি সম্পর্কে বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া উল্লিখিত কোনো ব্যাধিতে আক্রান্ত হন,

 

 

 

তাহা হইলে উক্তরূপ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া এই ধারার অধীন কোনো দুর্ঘটনার ফলে জখম বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না মালিক ইহার বিপরীত কিছু প্রমাণ করেন, এবং দুর্ঘটনাটি চাকরি চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই উপ-ধারার প্রয়োজনে, কোনো চাকরিকাল অবিচ্ছিন্ন বলিয়া গণ্য হইবে যদি উহার সহিত অন্য কোনো মালিকের অধীন একই প্রকার কোনো চাকরি যুক্ত না থাকে।

 

 

 

(৪) কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা তৃতীয় তপশিলে উল্লিখিত চাকরির সহিত অন্য কোনো প্রকারের চাকরিও যোগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত চাকরি সম্পর্কিত বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি কি হইবে তাহাও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিবে, এবং তৎপর উপ-ধারা (৩) এর বিধান এইরূপভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন এই অধ্যায় দ্বারা উক্ত ব্যাধি উক্ত চাকরি সম্পর্কে বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া ঘোষিত হইয়াছে।

 

 

 

(৫) উপ-ধারা (৩) এবং (৪) এর ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে, কোনো ব্যাধি সম্পর্কে কোনো শ্রমিককে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না যদি না উক্ত ব্যাধি প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের চাকরি চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত কোনো দুর্ঘটনায় জখমের কারণে হয়।

 

 

 

(৬) এখানে উল্লিখিত কোনো কিছুই কোনো শ্রমিকের জখম সম্পর্কে কোনো ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকার প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া বুঝাইবে না যদি তিনি মালিকের অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে উক্ত জখমের ক্ষতিপূরণের জন্য দেওয়ানী আদালতে কোনো মোকদ্দমা দায়ের করিয়া থাকেন।

 

 

 

(৭) কোনো আদালতে উক্ত জখম সম্পর্কে শ্রমিক কর্তৃক কোনো ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা যাইবে না, যদি-

 

 

 

(ক)   তিনি ইপিজেড শ্রম আদালতে উক্ত জখমের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবী করিয়া দরখাস্ত পেশ করিয়া থাকেন; অথবা

 

 

 

(খ)   তাহার এবং তাহার মালিকের মধ্যে এই অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী উক্ত জখম সম্পর্কে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য কোনো চুক্তি হইয়া থাকে।

 

 

 

(৮) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে ‘‘শ্রমিক’’ বলিতে মালিক কর্তৃক চতুর্থ তপশিলে উল্লিখিত কোনো পদে সরাসরি নিযুক্ত ব্যক্তিকে বুঝাইবে, তাহার চাকরির চুক্তি লিখিত হউক বা অলিখিত হউক, স্পষ্ট হউক বা অস্পষ্ট হউক, এবং কোনো জখমপ্রাপ্ত শ্রমিকের উল্লেখের ক্ষেত্রে, তিনি মারা গেলে তাহার মনোনীত ব্যক্তিগণ বা তাহার উপর নির্ভরশীল পোষ্যগণ অথবা তাহাদের যে কোনো একজনও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।

 

 

 

(৯) জখমের ফলে মৃত কোনো শ্রমিক সম্পর্কে প্রদেয় কোনো ক্ষতিপূরণ এবং আইনগত অক্ষমতার অধীন কোনো ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদেয় থোক অর্থ ইপিজেড শ্রম আদালতে জমা দেওয়া ব্যতীত ভিন্ন কোনো পন্থায় পরিশোধ করা যাইবে না এবং ইপিজেড শ্রম আদালত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তৎসম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

 

 

 

(১০) উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত কোনো ক্ষতিপূরণ যদি মালিক সরাসরিভাবে পরিশোধ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উহা ক্ষতিপূরণ পরিশোধ বলিয়া গণ্য হইবে না, যদি না সংশ্লিষ্ট শ্রমিক তাহার চাকরিকালে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় জখমজনিত কারণে তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ গ্রহণের জন্য তাহার কোনো উত্তরাধিকারীকে মনোনীত করিয়া থাকেন, এবং সেই মনোনীত উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদত্ত হইয়া থাকে।

ক্ষতিপূরণের পরিমাণ

৭৪।  (১) এই অধ্যায়ের বিধান সাপেক্ষে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

 

 

 

(ক)   যেক্ষেত্রে জখমের ফলে মৃত্যু হয়, সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক পঞ্চম তপশিলের দ্বিতীয় কলামে যে অর্থ উল্লেখ করা হইয়াছে সেই অর্থ :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ তাহার চাকরির স্বাভাবিক ছাঁটাই, বরখাস্ত, অবসান, পদত্যাগজনিত ক্ষতিপূরণের অতিরিক্ত হইবে;

 

 

 

(খ)   যেক্ষেত্রে জখমের ফলে স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতা ঘটে সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক পঞ্চম তপশিলের তৃতীয় কলামে যে অর্থ উল্লেখ করা হইয়াছে সেই অর্থ;

 

 

 

(গ)    যেক্ষেত্রে জখমের ফলে স্থায়ী আংশিক অক্ষমতা ঘটে সেই ক্ষেত্রে জখমটি প্রথম তপশিলে বর্ণিত হইলে, স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতার ক্ষেত্রে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ এর ঐ শতকরা হার, যাহা উহাতে উল্লিখিত উক্ত জখমের কারণে উপার্জন ক্ষমতা হানির শতকরা হারের সমান এবং জখমটি প্রথম তপশিলে বর্ণিত না হইলে, স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতার ক্ষেত্রে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ এর ঐ শতকরা হার, যাহা উক্ত জখমের কারণে স্থায়ীভাবে উপার্জন ক্ষমতা হানির শতকরা হারের সমান হইবে; এবং

 

 

 

(ঘ)    যেক্ষেত্রে জখমের ফলে সম্পূর্ণ বা আংশিক অস্থায়ী অক্ষমতা ঘটে সেই ক্ষেত্রে মাসিক ক্ষতিপূরণ যাহা অক্ষমতার তারিখ হইতে ৪ (চার) দিন অপেক্ষাকাল অতিবাহিত হইবার পর যে মাসে প্রদেয় হইবে উহার পরবর্তী মাসের প্রথম দিনে প্রদেয় হইবে এবং তৎপর অক্ষমতার সময়কালে অথবা পঞ্চম তপশিলের চতুর্থ কলামে উল্লিখিত সময়ের জন্য, যাহা স্বল্প হইবে, মাসিক ভিত্তিতে প্রদেয় হইবে।

 

 

 

(২) যেক্ষেত্রে একই দুর্ঘটনার কারণে একাধিক জখম হয় সেই ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর অধীন তৎসম্পর্কে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ একত্রিত করা হইবে, কিন্তু কোনো ক্ষেত্রে ইহা এমনভাবে করা হইবে না যাহাতে ইহা জখমগুলি হইতে স্থায়ী সম্পূর্ণ অক্ষমতা ঘটিলে যে ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইত উহা হইতে বেশী হয়।

 

 

 

(৩) কোনো মাসিক ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবার তারিখের পূর্বে যদি অক্ষমতার অবসান হয় তাহা হইলে উক্ত মাস সম্পর্কে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের অর্থ উক্ত মাসের অক্ষমতা থাকাকালীন সময়ের আনুপাতিক হারে প্রদেয় হইবে।

মজুরি হিসাবের পদ্ধতি

৭৫। (১) এই অধ্যায়ের প্রয়োজনে, ‘‘মাসিক মজুরি ’’ বলিতে ১ (এক) মাসের কাজের জন্য প্রদেয় বলিয়া গণ্য মজুরির পরিমাণ বুঝাইবে, উহা মাসিক ভিত্তিতে প্রদেয় হউক অথবা অন্য সময়ের ভিত্তিতে প্রদেয় হউক।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন মজুরি নিম্নরূপভাবে হিসাব করা হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   যেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার অব্যবহিত পূর্বে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য কোনো মালিকের অধীন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক অবিচ্ছিন্নভাবে অন্যূন ১২ (বারো) মাস কর্মরত ছিলেন, সেই ক্ষেত্রে তাহার মাসিক মজুরি হইবে উক্ত মালিক কর্তৃক প্রদেয় তাহার পূর্ববর্তী ১২ (বারো) মাস এর মোট মজুরির এক-দ্বাদশাংশ;

 

 

 

(খ)   যেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক উক্তরূপ মালিকের অধীন দুর্ঘটনার অব্যবহিত পূর্বে অবিচ্ছিন্নভাবে ১ (এক) মাসের কম সময় কর্মরত ছিলেন সেই ক্ষেত্রে, তাহার মাসিক মজুরি হইবে দুর্ঘটনার অব্যবহিত পূর্ববর্তী ১২ (বারো) মাস সময়ে একই মালিকের অধীন তাহার মত অনুরূপ কাজে নিয়োজিত অন্য কোনো শ্রমিক, অথবা উক্তরূপ অন্য কোনো শ্রমিক না থাকিলে, একই জোনে অনুরূপ কাজে নিয়োজিত অন্য কোনো শ্রমিকের অর্জিত আয়ের মাসিক গড়ের সমান অর্থ;

 

 

 

(গ)    অন্যান্য ক্ষেত্রে, মাসিক মজুরি হইবে ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য মালিক হইতে দুর্ঘটনার অব্যবহিত পূর্বে অবিচ্ছিন্নভাবে কর্মরত থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক অর্জিত মোট মজুরিকে ৩০ (ত্রিশ) গুণ করিয়া উক্ত কর্মরত সময়ের মোট দিনগুলির দ্বারা উহাকে ভাগ করিলে যে ভাগফল পাওয়া যায় উহার সমপরিমাণ অর্থ।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোনো কর্মরত সময় অবিচ্ছিন্ন বলিয়া গণ্য হইবে যদি ১৪ (চৌদ্দো) দিনের অধিককাল কাজে অনুপস্থিতির কারণে ইহার ধারাবাহিকতা ভঙ্গ না হয়।

পুনর্বিবেচনা

৭৬।  এই অধ্যায়ের অধীন প্রদেয় কোনো মাসিক ক্ষতিপূরণ, উহা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে চুক্তির অধীন হউক অথবা ইপিজেড শ্রম আদালতের আদেশের অধীন হউক, ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক পুনর্বিবেচনা করা যাইবে, যদি-

 

 

 

(ক)   শ্রমিকের অবস্থার পরিবর্তন হইয়াছে এই মর্মে রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রসহ মালিক অথবা শ্রমিক কর্তৃক দরখাস্ত করা হয়; অথবা

 

 

 

(খ)   উক্তরূপ প্রত্যয়নপত্র ছাড়াও, প্রতারণার মাধ্যমে অথবা অবৈধ প্রভাব অথবা অন্যান্য অসংগত উপায়ের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হইয়াছে অথবা রেকর্ড হইতে সুস্পষ্ট দেখা যায় যে, উক্তরূপ নির্ধারণ ভুল এই মর্মে মালিক অথবা শ্রমিক কর্তৃক দরখাস্ত করা হয়।

এই আইনের অধীন আদায়যোগ্য অর্থ আদায়

৭৭।  (১) এই আইন সাপেক্ষে, ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক এই আইনের কোনো ধারার অধীন প্রদানের জন্য নির্দেশিত কোনো অর্থ অথবা এই আইনের কোনো বিধানের অধীন কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় কোনো অর্থ অথবা কোনো নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন বা কোনো মীমাংসাকারী বা সালিশকারী বা ইপিজেড শ্রম আদালতের বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্তের অধীন কোনো ব্যক্তি বা মালিক কর্তৃক প্রদেয় কোনো অর্থ উহা পাইবার অধিকারী কোনো ব্যক্তির দরখাস্তের ভিত্তিতে এবং তাহার ইচ্ছানুযায়ী ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক বা উহার নির্দেশে নিম্নরূপ যে কোনোভাবে আদায় করা যাইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   সরকারি দাবি হিসাবে;

 

 

 

(খ)   বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যে ব্যক্তি উক্ত অর্থ পরিশোধ করিতে বাধ্য তাহার অস্থাবর সম্পত্তি, ক্ষেত্রমত ক্রোক এবং বিক্রয় করিয়া;

 

 

 

(গ)    উক্ত প্রকারে সম্পূর্ণ অর্থ আদায় করা না গেলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত ব্যক্তির স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করিয়া এবং বিক্রয় করিয়া; অথবা

 

 

 

(ঘ)    কোনো দেওয়ানী আদালতের অর্থ সংক্রান্ত ডিক্রী হিসাবে।

 

 

 

(২) যেক্ষেত্রে কোনো নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন অথবা কোনো মীমাংসাকারী বা সালিশকারী বা ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের কোনো সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদের অধীন কোনো শ্রমিক কোনো মালিকের নিকট হইতে এমন কোনো সুবিধা পাইবার অধিকারী যাহা টাকায় হিসাব করা যায় সেই ক্ষেত্রে, বিধি সাপেক্ষে, উক্ত সুবিধা টাকায় হিসাব করিয়া উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী আদায় করা যাইবে।

 

 

 

(৩) এই ধারার অধীন অর্থ আদায়ের জন্য কোনো দরখাস্ত গ্রহণ করা হইবে না, যদি না উহা অর্থ প্রদেয় হইবার তারিখ হইতে ১ (এক) বৎসরের মধ্যে পেশ করা হয় :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সময়ের পরেও কোনো দরখাস্ত গ্রহণ করা যাইবে, যদি ইপিজেড শ্রম আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, দরখাস্তকারীর উক্ত সময়ের মধ্যে দরখাস্ত পেশ করিতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল :

 

 

 

আরো শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের পাওনা আদায়ের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাইবে।

ক্ষতিপূরণের হস্তান্তর, ক্রোক বা দায়বদ্ধকরণ নিষিদ্ধ

৭৮।  এই আইনের অধীন প্রদেয় কোনো থোক অথবা মাসিক ক্ষতিপূরণ কোনো ভাবে হস্তান্তর, ক্রোক অথবা দায়বদ্ধ করা যাইবে না, অথবা অন্য কোনো আইনের প্রয়োগ দ্বারা শ্রমিক ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করা যাইবে না; অথবা উহার সহিত অন্য কোনো দাবী সমন্বয় করা যাইবে না।

 

 

নোটিশ ও দাবি

৭৯।   কোনো ইপিজেড শ্রম আদালত ক্ষতিপূরণের কোনো দাবি বিবেচনায় আনিবে না, যদি না দুর্ঘটনা ঘটিবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তৎসম্পর্কে নোটিশ প্রদান করা হয় এবং যদি না দুর্ঘটনা ঘটিবার ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে অথবা মৃত্যুর ক্ষেত্রে উহার ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে দাবি উত্থাপন করা হয়।

মারাত্মক দুর্ঘটনা সম্পর্কে মালিকের নিকট হইতে বিবৃতি তলবের ক্ষমতা

৮০।  (১) যেক্ষেত্রে কোনো ইপিজেড শ্রম আদালত কোনো সূত্র হইতে এই খবর পায় যে, কোনো শ্রমিক তাহার চাকরি চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত কোনো দুর্ঘটনার কারণে মারা গিয়াছেন, সেই ক্ষেত্রে ইপিজেড শ্রম আদালত রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরিত নোটিশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মালিককে নোটিশ জারির৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে উহার নিকট একটি বিবৃতি পেশ করিবার জন্য নির্দেশ দিবে, যাহাতে শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ ও তৎসম্পর্কিত পরিস্থিতি এবং মালিকের মতে উক্ত মৃত্যুর কারণে তিনি কোনো ক্ষতিপূরণ জমা দিতে বাধ্য কিনা তৎসম্পর্কে বর্ণনা থাকিবে।

 

 

 

(২) যদি মালিক এই মত পোষণ করেন যে, তিনি ক্ষতিপূরণ জমা দিতে বাধ্য তাহা হইলে নোটিশ জারির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তিনি তাহা জমা দিবেন।

 

 

 

(৩) যদি মালিক এই মত পোষণ করেন যে, তিনি কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য নহেন তাহা হইলে তিনি তাহার বিবৃতিতে উহার কারণ উল্লেখ করিবেন।

 

 

 

(৪) যেক্ষেত্রে কোনো মালিক উপ-ধারা (৩) এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য নহেন মর্মে উল্লেখপূর্বক বিবৃতি দাখিল করেন সেই ক্ষেত্রে, ইপিজেড শ্রম আদালত, উহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় তদন্তের পর, মৃত শ্রমিকের যে কোনো পোষ্যকে জানাইতে পারিবে যে, তাহারা ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারেন, এবং প্রয়োজনীয় অন্য কোনো তথ্যও তাহাদিগকে দিতে পারিবে।

মারাত্মক দুর্ঘটনার রিপোর্ট

৮১।   যেক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ কোনো আইনের দ্বারা কোনো মালিকের বাড়ীঘর বা আঙ্গিনায় ঘটিত কোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যু সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়া প্রয়োজন সেই ক্ষেত্রে মালিক অথবা তাহার পক্ষে অন্য কেহ উক্তরূপ মৃত্যুর ৭ (সাত) দিনের মধ্যে মৃত্যুর কারণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বর্ণনা করিয়া কর্তৃপক্ষকে একটি রিপোর্ট প্রেরণ করিবেন এবং ইপিজেড শ্রম আদালতে উহার একটি কপি প্রেরণ করিবেন।

 

 

চিকিৎসা পরীক্ষা

৮২।  (১) যেক্ষেত্রে কোনো শ্রমিক কোনো দুর্ঘটনার নোটিশ প্রদান করেন, সেই ক্ষেত্রে মালিক নোটিশ প্রদানের ৩ (তিন) দিনের মধ্যে জোনের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক অথবা মালিকের খরচে কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দ্বারা শ্রমিককে পরীক্ষা করাইবেন এবং উক্ত শ্রমিক উক্তরূপ পরীক্ষার জন্য নিজেকে হাজির করিবেন :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের দুর্ঘটনা বা অসুস্থতা গুরুতর হইলে, শ্রমিক যেখানে অবস্থান করিতেছেন মালিক সেখানে তাহাকে পরীক্ষা করাইবার ব্যবস্থা করিবেন।

 

 

 

(২) এই অধ্যায়ের অধীন কোনো শ্রমিক মাসিক ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করিতে থাকিলে, যদি তিনি নির্দেশিত হন তাহা হইলে সময় সময় উক্তরূপ পরীক্ষার জন্য নিজেকে হাজির করিবেন।

 

 

 

(৩) শ্রমিকদের উপ-ধারা (১) এর অধীন পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং এতৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

মালিকের দেউলিয়াত্ব, বিমাকারীর দায়, ইত্যাদি

৮৩।  (১) যেক্ষেত্রে কোনো মালিক এই অধ্যায়ের অধীন শ্রমিকগণের প্রতি কোনো দায় সম্পর্কে কোনো বিমাকারীর সহিত চুক্তিবদ্ধ হন সেই ক্ষেত্রে মালিক-

 

 

 

(ক)   দেউলিয়া ঘোষিত হইলে; বা

 

 

 

(খ)   পাওনাদারের সহিত কোনো ব্যবস্থা সম্পর্কে স্কীম প্রণয়ন করিলে; বা

 

 

 

(গ)    তাহার কোম্পানি গুটাইয়া ফেলা শুরু করিলে;

 

 

 

উক্ত দায় সম্পর্কে বিমাকারীর বিরুদ্ধে মালিকের অধিকার, অন্য কোনো আইনে দেউলিয়াত্ব অথবা কোম্পানি গুটাইয়া ফেলা সম্পর্কে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, শ্রমিকের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিকগণের প্রতি মালিকের যে দায় উহা হইতে শ্রমিকের প্রতি বিমাকারীর দায় অধিক হইবে না।

 

 

 

(২) কোনো কোম্পানি পুনর্গঠিত হইবার জন্য অথবা অন্য কোনো কোম্পানির সহিত একত্রিত হইবার জন্য স্বেচ্ছায় গুটাইয়া ফেলিবার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে বিবরণী

৮৪। কর্তৃপক্ষ, লিখিত আদেশ দ্বারা, এই মর্মে নির্দেশ দিতে পারিবে যে শ্রমিক নিয়োগকারী প্রত্যেক ব্যক্তি অথবা উক্তরূপ ব্যক্তিগণের কোনো শ্রেণি, আদেশে উল্লিখিত কর্তৃপক্ষের নিকট, উহাতে উল্লিখিত সময়ে ও ফরমে একটি বিবরণী প্রেরণ করিবেন যাহাতে পূর্ববর্তী বৎসরে যে সমস্ত জখমের জন্য মালিক কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হইয়াছে উহার সংখ্যা, উক্তরূপ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দেশিত ক্ষতিপূরণ সম্বন্ধে অন্যান্য বিষয়, যদি থাকে, উল্লেখ থাকিবে।

দায়মুক্তি বা লাঘবের চুক্তি বাতিল

৮৫।   এই আইন বলবৎ হইবার পূর্বে বা পরে সম্পাদিত কোনো চুক্তি দ্বারা যদি কোনো শ্রমিক তাহার চাকরিকালে অথবা উহা হইতে উদ্ভূত কোনো ব্যক্তিগত জখমের জন্য মালিকের নিকট হইতে কোনো ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকার পরিত্যাগ করেন, তাহা হইলে উক্ত চুক্তি দ্বারা এই অধ্যায়ের অধীন কোনো ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দায় যতখানি অপসারিত অথবা হ্রাস করা হইবে ততখানি পর্যন্ত বাতিল হইবে।

কতিপয় প্রশ্ন ইপিজেড শ্রম আদালতে নিষ্পত্তির জন্য প্রেরণ

৮৬।   (১) এই অধ্যায়ের অধীন কোনো কার্যক্রমে কোনো শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দায় অথবা জখমপ্রাপ্ত ব্যক্তি শ্রমিক কিনা, অথবা ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ও মেয়াদ, অথবা কোনো অক্ষমতার প্রকৃতি বা পরিমাণ সম্পর্কে যদি কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, তাহা হইলে প্রশ্নটি, কোনো চুক্তির অবর্তমানে, ইপিজেড শ্রম আদালত নিষ্পত্তি করিবে।

 

 

 

(২) এই অধ্যায়ের অধীন যে প্রশ্ন নিষ্পত্তি করিবার এখতিয়ার ইপিজেড শ্রম আদালতকে দেওয়া আছে, সে সম্পর্কে অথবা এই অধ্যায়ের অধীন কোনো দায় বলবৎ করিবার ব্যাপারে কোনো দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার থাকিবে না।

কার্যধারার স্থান

৮৭।  যেক্ষেত্রে এই অধ্যায়ের অধীন কোনো বিষয় ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক বা ইপিজেড শ্রম আদালত সমীপে সম্পাদন হইবার কথা সেক্ষেত্রে উহা এই অধ্যায়ের এবং কোনো বিধির বিধান সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক বা ইপিজেড শ্রম আদালত সমীপে সম্পাদিত হইবে যাহার এলাকার মধ্যে যে দুর্ঘটনার ফলে জখম হইয়াছে বা উহা ঘটিয়াছে।

দরখাস্তের শর্ত

৮৮।  এই অধ্যায়ের অধীন কোনো ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক নিজে অথবা পোষ্য কর্তৃক ক্ষতিপূরণের দরখাস্ত ব্যতীত, কোনো বিষয় নিষ্পত্তির জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে দরখাস্ত করা যাইবে না যদি না উভয়পক্ষ উক্ত বিষয় সম্পর্কে উত্থিত কোনো প্রশ্ন চুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করিতে ব্যর্থ হন।

মারাত্মক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক অতিরিক্ত জমা তলব করিবার ক্ষমতা

৮৯।  (১) যেক্ষেত্রে জখমের ফলে মৃত কোনো শ্রমিক সম্পর্কে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনো অর্থ মালিক কর্তৃক জমা দেওয়া হইয়াছে এবং ইপিজেড শ্রম আদালতের মতে উক্ত অর্থ অপর্যাপ্ত, সেই ক্ষেত্রে উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত উহার যুক্তি উল্লেখপূর্বক লিখিত নোটিশ জারি করিয়া, উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, আরও অধিক অর্থ কেন জমা করা হইবে না তৎসম্পর্কে কারণ দর্শানোর জন্য মালিককে নির্দেশ দিতে পারিবে।

 

 

 

(২) যদি মালিক ইপিজেড শ্রম আদালতের সন্তোষমত কারণ প্রদর্শনে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট প্রদেয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া রোয়েদাদ দিতে পারিবে এবং মালিককে উক্ত পরিমাণের ঘাটতি অর্থ জমা দিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

আপিল

৯০।  (১) এই অধ্যায়ের অধীন প্রদত্ত ইপিজেড শ্রম আদালতের নিম্নবর্ণিত আদেশের বিরুদ্ধে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   ক্ষতিপূরণ হিসাবে থোক অর্থ রোয়েদাদের আদেশ, উহা মাসিক অর্থ পরিশোধ করিয়া হউক অথবা অন্যভাবে হউক, অথবা থোক অর্থ প্রদানের দাবি সম্পূর্ণ বা আংশিকনা-মঞ্জুরের আদেশ;

 

 

 

(খ)   অর্থ পরিশোধ করতঃ মাসিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের দায় হইতে মুক্ত হইবার আবেদন প্রত্যাখ্যানের আদেশ;

 

 

 

(গ)    কোনো মৃত শ্রমিকের পোষ্যগণের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্থ বণ্টনের ব্যবস্থা সম্বলিত আদেশ, অথবা উক্তরূপ পোষ্য বলিয়া দাবিদার কোনো ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ পাইবার দাবী না-মঞ্জুরের আদেশ;

 

 

 

(ঘ)    কোনো চুক্তির অধীন ক্ষতিপূরণের কোনো অর্থ দাবি মঞ্জুর বা না-মঞ্জুরের আদেশ;

 

 

 

(ঙ)   চুক্তির স্মারকলিপির নিবন্ধিকরণ প্রত্যাখ্যান, অথবা উহার নিবন্ধিকরণ অথবা উহার শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধিকরণের আদেশ; অথবা

 

 

 

(চ)    ক্ষতিপূরণ বণ্টন সংক্রান্ত প্রদত্ত কোনো আদেশ।

 

 

 

(২) পক্ষগণ কর্তৃক ইপিজেড শ্রম আদালতের সিদ্ধান্ত মানিয়া চলিতে সম্মত হইবার ক্ষেত্রে অথবা পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি কার্যকর করিবার জন্য ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলিবে না।

 

 

 

(৩) মালিক কর্তৃক উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর অধীন কোনো আপিল দায়ের করা যাইবে না যদি না আপিলের স্মারকলিপির সহিত ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র থাকে যে, আপিলকারী উক্ত আদালতে সংশ্লিষ্ট আদেশের অধীন প্রদেয় অর্থ জমা দিয়াছেন।

 

 

 

(৪) কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল চলিবে না যদি না আপিলে কোনো উল্লেখযোগ্য আইনগত প্রশ্ন জড়িত থাকে, এবং উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত কোনো আদেশ ব্যতীত অন্য কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল চলিবে না, যদি না আপিলে বিরোধীয় অর্থের পরিমাণ অন্যূন ১ (এক) হাজার টাকা হয়।

 

 

 

(৫) এই ধারার অধীন আপিলের জন্য তামাদির মেয়াদ হইবে ৬০ (ষাট) দিন।

আপিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে কতিপয় পরিশোধ স্থগিতকরণ

৯১। যেক্ষেত্রে কোনো মালিক ধারা ৯০ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এ উল্লিখিত আপিল দায়ের করেন, সেই ক্ষেত্রে ইপিজেড শ্রম আদালত, আপিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, উহার নিকট জমাকৃত কোনো অর্থ পরিশোধ স্থগিত রাখিতে পারিবে।

এই অধ্যায়ের অধীন বিধি প্রণয়ন

৯২। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-

 

 

 

(ক)   কোনো শ্রমিকের দ্বিতীয় তপশিলে উল্লিখিত ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হইবার বিষয়ে নোটিশ প্রদান, ব্যাধির কারণ এবং তদন্ত সম্পর্কিত বিষয়;

 

 

 

(খ)   চাকরি সম্পর্কিত বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি;

 

 

 

(গ)    ক্ষতিপূরণ বণ্টন;

 

 

 

(ঘ)    ক্ষতিপূরণ পরিশোধ পদ্ধতি;

 

 

 

(ঙ)   চুক্তি, চুক্তি নিবন্ধিকরণ, চুক্তি নিবন্ধন করিতে ব্যর্থতার ফলাফল;

 

 

 

(চ)    জখমের ফলে মৃত কোনো শ্রমিক সম্পর্কে প্রদেয় কোনো ক্ষতিপূরণ এবং আইনগত অক্ষমতার অধীন কোনো ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ বণ্টন ও এতৎসংক্রান্ত বিষয়াদি;

 

 

 

(ছ)    এই আইনের অধীন আদায়যোগ্য অর্থ আদায়;

 

 

 

(জ)   ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক মাসিক ক্ষতিপূরণ পুনর্বিবেচনা; এবং

 

 

 

(ঝ)   ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদত্ত কোনো অর্থ হস্তান্তর করা সম্পর্কে অন্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবস্থা কার্যকরণ পদ্ধতি।

নবম অধ্যায়

শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক

শ্রমিকের বিশেষ সংজ্ঞা

৯৩।  বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে এই অধ্যায়ে “শ্রমিক” অর্থ ধারা ২ এর দফা (৪৮) এ সংজ্ঞায়িত কোনো শ্রমিক, এবং এই অধ্যায়ের অধীন কোনো শিল্প বিরোধের প্রশ্নে এই আইন অনুসারে কার্যক্রম শুরু করিবার ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবে, যাহাকে শাস্তিমূলকভাবে বরখাস্ত, পদচ্যুত, ছাঁটাই অথবা লে-অফ করা হইয়াছে, অথবা উক্ত বিরোধের সূত্র ধরিয়া বা উক্ত বিরোধের কারণে অন্য কোনোভাবে চাকরি হইতে অপসারণ করা হইয়াছে, অথবা যাহার শাস্তিমূলক পদচ্যুতি, বরখাস্ত, লে-অফ অথবা অপসারণের কারণে উক্ত বিরোধের উৎপত্তি হইয়াছে, কিন্তু নিম্নলিখিত ব্যক্তি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা :-

 

 

 

(ক)   পাহারা ও টহলদারী (watch and ward) সদস্য, গাড়ি চালক, কনফিডেনসিয়াল সহকারী, সাইফার সহকারী, অনিয়মিত শ্রমিক এবং রন্ধনশালা বা খাদ্য প্রস্ত্ততকারী ঠিকাদার কর্তৃক নিয়োজিত শ্রমিক;

 

 

 

(খ)   করণিক কাজে নিয়োজিত শ্রমিক।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন

৯৪। (১) কোনো জোনে অবস্থিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণের, এই অধ্যায়ের বিধানাবলি সাপেক্ষে, শ্রম-সম্পর্ক বিষয়ে কার্যসম্পাদনের নিমিত্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন করিবার এবং গঠনতন্ত্র সাপেক্ষে শ্রমিক কল্যাণ সমিতিতে যোগদানের অধিকার থাকিবে।

 

 

 

 (২) যদি কোনো জোনে অবস্থিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকগণ কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন করিতে আগ্রহী হইয়া থাকেন, তাহা হইলে প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিকের পক্ষে একটি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন করিবার জন্য উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্থায়ী শ্রমিকগণের অন্যূন ২০% (বিশ শতাংশ) শ্রমিক নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক) এর নিকট নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর বা বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ সম্বলিত আবেদন করিবেন।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন স্থায়ী শ্রমিকগণ শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের উদ্দেশ্যে আবেদনপত্রের সাথে প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্র, আইডি কার্ড এবং এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি দাখিল করিবেন

 

 

 

() কোনো মালিক কোনো প্রকারেই কোনো শ্রমিকের প্রতি উপ-ধারা (২) এর অধীন দরখাস্তের পক্ষ হইবার জন্য কোনোরূপ বৈষম্যমূলক আচরণ করিবে না, এবং এইরূপ কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করিলে উহা ধারা ১১৫ এর অধীন মালিক কর্তৃক অন্যায় আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে।

 

 

 

(৫) যে প্রতিষ্ঠানের জন্য শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠিত হইবে উহাতে কর্মরত স্থায়ী মহিলা শ্রমিকদের মধ্য হইতে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদে ন্যূনতম ৩০% মহিলা সদস্য থাকিতে হইবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে মহিলা শ্রমিক না থাকিলে উক্তরূপ বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

 

 

 

() পৃথক নিগমিতকরণ সনদসহ (Certificate of Incorporation) কোম্পানি হিসাবে নিবন্ধিত কোনো মালিক কোনো জোনে কার্যরত থাকিলে উক্ত জোনে উক্ত কোম্পানির অধীন একটি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি থাকিবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোম্পানি হিসাবে নিবন্ধিত একই মালিকের অধীন কোনো জোনে ২ (দুই) বা ততোধিক শিল্প ইউনিট থাকিলে উহারা এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে গণ্য হইবে।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে ‘‘শিল্প ইউনিট’’ অর্থ কোনো জোনে স্থাপিত একই মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনার উদ্দেশ্যে ও সম্পর্কযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত কোনো শিল্প ইউনিট।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র

৯৬।  (১) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের কোনো বিধান এই আইনের কোনো বিধানের পরিপন্থি হইবে না।

 

 

 

(২) শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই আইনের অধীন নিবন্ধনের অধিকারী হইবে না, যদি না উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত হইয়া থাকে, যথা:-

 

 

 

(ক)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নাম ও ঠিকানা;

 

 

 

(খ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের উদ্দেশ্য;

 

 

 

(গ)    শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য হইবার যোগ্যতা ও পদ্ধতি;

 

 

 

(ঘ)    একটি সাধারণ পরিষদ, যাহার সদস্য হইবেন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য হিসাবে নিবন্ধিত সকল  স্থায়ী শ্রমিক;

 

 

 

(ঙ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধির সংখ্যা যাহা নির্ধারিত পন্থায় ০৫ (পাঁচ) জনের কম এবং ১৫ (পনেরো) জনের বেশী হইবে না;

 

 

 

(চ)    শ্রমিক কল্যাণ সমিতির তহবিলের উৎস এবং উক্ত তহবিল হইতে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রসমূহ;

 

 

 

(ছ)    যে সকল শর্তে একজন সদস্য শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো সুবিধাপ্রাপ্তির অধিকারী হইবেন অথবা যে সকল শর্তে একজন সদস্যের উপর কোনো জরিমানা বা বাজেয়াপ্তির আদেশ প্রদান করা হয়;

 

 

 

(জ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্যগণের তালিকা সংরক্ষণ এবং প্রতিনিধি কিংবা সমিতির সদস্যগণ কর্তৃক উক্ত তালিকা পরিদর্শনের জন্য রাখা সুবিধাদির বিবরণ;

 

 

 

(ঝ)   গঠনতন্ত্র সংশোধ, পরিবর্তন বা বাতিল হইবার পদ্ধতি;

 

 

 

(ঞ)  শ্রমিক কল্যাণ সমিতির তহবিলের নিরাপত্তা, হেফাজত, উহার বাৎসরিক নিরীক্ষা, নিরীক্ষার পদ্ধতি এবং প্রতিনিধি ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্যগণ কর্তৃক হিসাব বহিসমূহ পরিদর্শনের নিমিত্ত রাখা সুবিধাদি;

 

 

 

(ট)    শ্রমিক কল্যাণ সমিতি বাতিলকরণ সম্পর্কিত পদ্ধতি;

 

 

 

(ঠ)    নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনের পদ্ধতি;

 

 

 

(ড)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ পরিষদ হইতে পদত্যাগ ও সদস্যপদ বাতিল হইবার পদ্ধতি;

 

 

 

(ণ)    শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপনের পদ্ধতি; এবং

 

 

 

(ত)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের এবং সাধারণ সদস্যগণের সভা আহ্বান, যাহা নির্বাহী পরিষদের ক্ষেত্রে প্রতি ০৩ (তিন) মাসে অন্তত একবার এবং সাধারণ সদস্যগণের ক্ষেত্রে প্রতি বৎসরে অন্তত একবার হইতে হইবে।           

 

 

 

() নির্বাহী চেয়ারম্যানের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি জোন বহির্ভূত কোনো উৎস হইতে কোনো অর্থ সংগ্রহ বা গ্রহণ করিবে না।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নিবন্ধনের জন্য আবেদন

৯৫।  (১) ধারা ৯৪ অনুযায়ী শ্রমিকগণ শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করিলে উহার নিবন্ধিকরণের জন্য একজন আহ্বায়কের স্বাক্ষরে, নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ উল্লেখ করিয়া আবেদন করিবেন যথা:-

 

 

 

(ক)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নাম ও ঠিকানা;

 

 

 

(খ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের তারিখ;

 

 

 

(গ)    শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের পদবি, নাম, বয়স, ঠিকানা, পেশা ;

 

 

 

(ঘ)    চাঁদা প্রদানকারী সদস্যগণের পরিপূর্ণ বিবরণ;

 

 

 

(ঙ)   যে প্রতিষ্ঠানের সহিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সংশ্লিষ্ট উহার নাম এবং উহাতে নিযুক্ত বা কর্মরত শ্রমিকের মোট সংখ্যা।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্রের সহিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের তিনটি অনুলিপি প্রদান করিতে হইবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন

৯৭।  (১) নির্বাহী চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই আইনের অধীন সকল শর্ত প্রতিপালন করিয়াছে এবং গঠনতন্ত্র প্রণীত হইয়াছে তাহা হইলে তিনি ধারা ৯৫ এর অধীন আবেদনপত্র প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতিকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন প্রদান করিবেন।

 

 

 

(২) যদি নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আবেদনপত্রে প্রয়োজনীয় কোনো বিষয় বা বিষয়াদির অপূর্ণতা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি লিখিতভাবে তাহার আপত্তি উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতিকে আবেদন প্রাপ্তির ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে অবহিত করিবেন এবং অবহিত হইবার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি উক্ত আপত্তিসমূহের জবাব প্রদান করিবে।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন উত্থাপিত আপত্তিসমূহের জবাব নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট সন্তোষজনক প্রতীয়মান হইলে, তিনি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতিকে নিবন্ধন প্রদান করিবেন এবং জবাব সন্তোষজনক না হইলে আবেদন প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৪) নির্বাহী চেয়ারম্যান উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন না করিলে বা আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান করিলে, শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ইপিজেড শ্রম আদালতে আবেদন পেশ করিতে পারিবে; এবং ইপিজেড শ্রম আদালত নির্বাহী চেয়ারম্যানকে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নিবন্ধন এবং নিবন্ধন সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে অথবা আবেদন খারিজ করিতে পারিবে।

 

 

 

(৫) শ্রমিকগণের কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই অধ্যায়ের অধীন নিবন্ধিকরণের অধিকারী হইবে না, যদি যে প্রতিষ্ঠানে উহা গঠিত হইয়াছে, সে প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত 2০% স্থায়ী শ্রমিক উহার সদস্য না হয়:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, একই জোনে একই মালিকের অধীন একাধিক প্রতিষ্ঠান যদি একই শিল্প পরিচালনার উদ্দেশ্যে একে অপরের সহিত সংশ্লিষ্ট ও সম্পর্কযুক্ত হয়, তাহা হইলে উহারা যেখানেই স্থাপিত হউক না কেন এই উপ-ধারার উদ্দেশ্যে একটি প্রতিষ্ঠান বলিয়া গণ্য হইবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন সম্পর্কিত সনদ

৯৮।  ধারা ৯৭ এর অধীন কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নিবন্ধিত হইলে, নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্ধারিত ফরমে নিবন্ধন সনদ প্রদান করিবেন।

গঠনতন্ত্র এবং নির্বাহী পরিষদের কতিপয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নোটিশ প্রদান

৯৯। (১) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের প্রত্যেক সংশোধন, উহার প্রতিনিধির প্রত্যেক পরিবর্তন, এবং উহার নাম ও ঠিকানার পরিবর্তন উহাতে উক্তরূপ সংশোধন বা পরিবর্তনের ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অথবা হাতে হাতে নোটিশ প্রদান করিয়া কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিতে হইবে, এবং কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্তরূপ নোটিশ প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে উহার একটি কপি সংশ্লিষ্ট মালিককে, তাহার অবগতির জন্য প্রেরণ করিবে।

 

 

 

(২) কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্তরূপ কোনো সংশোধন বা পরিবর্তন রেজিস্ট্রি করিতে অস্বীকার করিতে পারিবেন যদি উহা এই আইনের কোনো বিধানের অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রের কোনো বিধানের খেলাপ করিয়া করা হয়।

 

 

 

(৩) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো সদস্যের সমিতির সাথে সংযুক্তি/বিযুক্তি সংগঠিত হওয়ার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরিত নোটিশ মারফত কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিতে হইবে।

 

 

 

(৪) যদি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি পরিবর্তনের ব্যাপারে কোনো বিরোধ থাকে, অথবা উপ-ধারা (২) এর অধীন কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যাখ্যান আদেশ দ্বারা কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সংক্ষুব্ধ হয়, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির যে কোনো সদস্য বা প্রতিনিধি ইপিজেড শ্রম আদালতে আপিল করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৫) ইপিজেড শ্রম আদালত উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোনো আপিল প্রাপ্তির ০৭ (সাত) দিনের মধ্যে উহার শুনানির পর, উপযুক্ত বিবেচনা করিলে উহার রায়ে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সংশোধন অথবা উহার প্রতিনিধির পরিবর্তন রেজিস্ট্রি করার জন্য কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে, অথবা কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সমিতির নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিতে পারিবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সংখ্যা সম্পর্কিত সীমাবদ্ধতা

১০০।  কোনো জোনে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে একের অধিক শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠন করা যাইবে না।

শিল্প ইউনিটের মালিকানা নির্ধারণ

১০১।  একই জোনে ২ (দুই) বা ততোধিক শিল্প ইউনিট একই মালিকের অধীন কিনা অথবা একই শিল্প পরিচালনার উদ্দেশ্যে উহারা পরস্পর সংশ্লিষ্ট ও সম্পর্কযুক্ত কিনা সেই প্রশ্নে কোনো সন্দেহ বা বিরোধ উদ্ভূত হইলে, তদ্বিষয়ে নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্যপদ এবং কর্মকাণ্ড

১০২।  (১) একজন শ্রমিক যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত থাকিবেন, তিনি কেবল সেই শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য হইবার অধিকারী হইবেন।

 

 

 

(২) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে।

 

 

 

(৩) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রত্যেক সদস্যের কাজ হইবে কর্মসময়ে নিজ দায়িত্ব পালন, প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিক এবং মালিক সকলেরই অঙ্গীভূত হওয়ার ভাব প্রোথিত ও প্রসার করা, প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকগণের অঙ্গীকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা, শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমঝোতা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালানো, শৃঙ্খলাবোধ উৎসাহিত করা, এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অপচয় রোধ করা ।

 

 

 

() ধারা ১১৩ এর অধীন শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন গঠনের অধিকার ব্যতীত, কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এলাকা বা এলাকা বহির্ভূত অন্য কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সহিত অধিভুক্ত হইতে কিংবা অন্য কোনো প্রকার সংস্রব রক্ষা করিতে পারিবে না।

নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন

১০৩। (১) ধারা ৯৭ অনুযায়ী কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নিবন্ধন পাইলে শ্রমিকগণ অন্যূন ৬০ (ষাট) দিন পূর্বে নোটিশ প্রদান করিয়া কর্তৃপক্ষকে নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনুরোধ করিবেন।

 

 

 

(২) শ্রমিকগণের আবেদন প্রাপ্তির পর, নির্ধারিত পন্থায় কোনো নির্বাচনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী শ্রমিকগণ কর্তৃক শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের সদস্যগণ নির্বাচিত হইবেন:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী শ্রমিকগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমিক ভোট প্রদান না করিলে নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অকার্যকর হইবে।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (২) এর শর্তে বর্ণিত কারণে নির্বাহী পরিষদের কোনো নির্বাচন অকার্যকর হইলে শ্রমিকগণ নির্ধারিত পন্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ০৬ (ছয়) মাস পরে পুনরায় নির্বাচন করিতে পারিবে।

 

 

 

(৪) কেবল স্থায়ী শ্রমিকগণ এই অধ্যায়ের অধীন সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদে নির্বাচিত হইবার এবং ভোট প্রদান করিবার অধিকারী হইবেন।       

নির্বাহী পরিষদের অনুমোদন

১০৪। নির্বাহী পরিষদ এই আইনের অধীন নির্বাচিত হইয়া থাকিলে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যান উহা অনুমোদন করিবেন।

নির্বাহী পরিষদের মেয়াদ

১০৫।   পূর্বেই নিবন্ধন বাতিল বা কোনো প্রকারে অবসায়ন না হইয়া থাকিলে, কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের মেয়াদ হইবে ধারা ১০৪ এর অধীন অনুমোদিত হইবার তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর।

পরবর্তীতে নির্বাচন অনুষ্ঠান

১০৬।   (১) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন উহার নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্ববর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

 

 

 

(২) নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বেই যদি কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদ ভাঙ্গিয়া যায়, তাহা হইলে অনুরূপ ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য হইবার অযোগ্যতা

১০৭।  কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্রে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো শ্রমিক কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য হইবার বা থাকিবার অধিকারী হইবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত বা এই আইন কিংবা অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন বা দণ্ডিত হইয়া মুক্তি পাইবার পর ২ (দুই) বৎসরকাল অতিবাহিত হইয়া না থাকে।

নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কর্তৃক রেজিস্টার, ইত্যাদি সংরক্ষণ

১০৮।   প্রতিটি নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ সংরক্ষণ করিবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   একটি রেজিস্টার, যাহাতে প্রত্যেক সদস্য কর্তৃক প্রদত্ত চাঁদার বিবরণ উল্লেখ থাকিবে;

 

 

 

(খ)   একটি হিসাব বহি, যাহাতে আয় ও ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ থাকিবে; এবং

 

 

 

(গ)    একটি কার্যবিবরণী বহি, যাহাতে সভার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ থাকিবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন বাতিল

১০৯।  (১) নির্বাহী চেয়ারম্যান নিম্নবর্ণিত যে কোনো কারণে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবেন, যথা :-

 

 

 

(ক)   কোনো কারণে উহার অবসান বা বিলুপ্তি হইয়া থাকিলে;

 

 

 

(খ)   প্রতারণা অথবা অসত্য তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নিবন্ধিত হইয়া থাকিলে;

 

 

 

(গ)    গঠনতন্ত্রের কোনো মৌলিক বিধান লঙ্ঘন করিলে;

 

 

 

(ঘ)    অন্যায় আচরণ করিলে;

 

 

 

(ঙ)   এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো বিধান গঠনতন্ত্রে সন্নিবেশ করিলে;

 

 

 

(চ)    এই আইনের অধীন আবশ্যকমতে বাৎসরিক প্রতিবেদন নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট পেশ করিতে ব্যর্থ হইলে;

 

 

 

(ছ)    নির্বাচিত হইবার অযোগ্য কোনো ব্যক্তিকে প্রতিনিধি পদে নির্বাচিত করিলে; অথবা

 

 

 

(জ)   এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের বিধান লঙ্ঘন করিলে।

নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল

১১০।  (১) ধারা ১০৯ এর অধীন কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন বাতিলের কারণে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সংক্ষুব্ধ হইলে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি নিবন্ধন বাতিলের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিয়া নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করিতে পারিবে এবং ইপিজেড শ্রম আদালত তর্কিত আদেশ বহাল রাখিতে, বাতিল বা সংশোধন করিতে পারিবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সংক্ষুব্ধ হইলে , অনুরূপ আদেশ প্রদত্ত হইবার ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করিতে পারিবে এবং এক্ষেত্রে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

নিবন্ধন ব্যতিরেকে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কর্তৃক কার্য সম্পাদন নিষিদ্ধ

১১১।  (১) অনিবন্ধিত, অথবা নিবন্ধন বাতিল করা হইয়াছে, এইরূপ কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতি হিসাবে কার্য করিতে পারিবে না।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির জন্য কোনোরূপ চাঁদা সংগ্রহ করা যাইবে না।

নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা

১১২। (১) প্রতিটি নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে, যাহার স্থায়ী ধারাবাহিকতাসহ একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং নিবন্ধিত নামে উহার চুক্তি সম্পাদন এবং সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উক্ত নামে উহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

 

 

 

(২) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মালিক শিল্প এলাকার অভ্যন্তরে স্থানের ব্যবস্থা করিবে।

 

 

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন

১১৩।  (১) কোনো এলাকায় গঠিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতিসমূহের ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) এর অধিক শ্রমিক কল্যাণ সমিতি সম্মত হইলে, উহারা উক্ত এলাকায় শ্রমিক কল্যাণ সমিতিসমূহের একটি  ফেডারেশন গঠন করিতে পারিবে।

 

 

 

(২) পূর্বেই বাতিল কিংবা অবসায়ন হইয়া না থাকিলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক অনুমোদিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী৪ (চার) বৎসরের জন্য বহাল থাকিবে।

 

 

 

(৩) কোনো এলাকায় গঠিত কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন অন্য কোনো এলাকার ফেডারেশন অথবা এলাকা বহির্ভূত অন্য কোনো ফেডারেশনের সহিত অধিভুক্ত হইতে কিংবা অন্য কোনো প্রকারের সংস্রব রক্ষা করিতে পারিবে না।

 

 

 

(৪) কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশনের গঠন, নির্বাচনের পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ করিবে।

মালিক সমিতি

১১৪।  (১) কোনো জোনে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের সংখ্যাগরিষ্ঠ মালিকগণ সম্মত হইলে, শ্রম-সম্পর্ক বিষয়ে মালিক প্রতিনিধি হিসাবে কার্যসম্পাদনের নিমিত্ত, তাহারা উক্ত জোনে মালিক সমিতি গঠন করিতে এবং উক্ত সমিতিতে যোগদান করিতে পারিবেন :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের একটি ভোট থাকিবে এবং সকল ভোটার মালিক সমিতির সদস্য হইবে।

 

 

 

(২) কোনো মালিক সমিতি জোন বহির্ভূত অন্য কোনো সমিতির সহিত অধিভুক্ত হইতে কিংবা অন্য কোনো প্রকারের সংস্রব রক্ষা করিতে পারিবে না।

 

 

 

(৩) কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা মালিক সমিতির গঠন, নির্বাচনের পদ্ধতি, নিবন্ধন, সমিতির নির্বাহী পরিষদের মেয়াদ এবং অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ করিবে।

মালিকের তরফে অন্যায় আচরণ

১১৫।  (১) কোনো মালিক বা মালিক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত বা মালিকের দায়িত্ব পালনকারী কোনো ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোনো কাজ করিলে উহা অন্যায় আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   চাকরি প্রদানের চুক্তিতে কোনো ব্যক্তির, যিনি উক্ত চুক্তির পক্ষ, কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতিতে যোগদানের বা কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্যপদ অব্যাহত রাখিবার অধিকার ক্ষুণ্ন করিয়া কোনো শর্ত আরোপ করা;

 

 

 

(খ)   কোনো শ্রমিক, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি পদে বহাল আছেন বা নাই, উহার ভিত্তিতে উক্ত ব্যক্তিকে চাকরিতে বহাল রাখিতে অস্বীকার করা;

 

 

 

 

 

(গ)    কোনো শ্রমিককে পদোন্নতি না দেওয়া, চাকরি হইতে বরখাস্ত, পদচ্যুত বা অপসারণ করা, অথবা বরখাস্ত, পদচ্যুত বা অপসারনের হুমকি প্রদর্শন করা, অথবা চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত করিবার হুমকি প্রদর্শন করা, এই কারণে যে উক্ত শ্রমিক-

 

 

 

(অ)  কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি হইয়াছেন বা হইবার ইচ্ছা পোষণ করিয়াছেন, অথবা সদস্য বা প্রতিনিধি হইবার জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে উৎসাহিত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন;

 

 

 

(আ)  কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির উন্নয়ন, গঠন বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কর্মতৎপরতা চালাইবার কাজে অংশগ্রহণ করিয়াছেন; অথবা

 

 

 

(ই)    এই আইনের অধীন কোনো অধিকার প্রয়োগ করিয়াছেন;

 

 

 

(ঘ)    কোনো ব্যক্তিকে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি না হইবার জন্য অথবা সদস্য বা প্রতিনিধি হইয়া থাকিলে সেই পদ ত্যাগ করিবার জন্য প্রলুব্ধ করা এবং উক্ত উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তিকে অতিরিক্ত সুযোগ প্রদান বা প্রদানে ব্যত্যয় করা;

 

 

 

(ঙ)   ভীতি-প্রদর্শন, বল প্রয়োগ, চাপ প্রয়োগ, হুমকি প্রদর্শন, কোনো স্থানে আটক করিয়া রাখা, দৈহিক ক্ষতি, পানি, বিদ্যুৎ বা টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বা অনুরূপ কোনো কৌশল অবলম্বনপূর্বক শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো প্রতিনিধিকে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করিতে বাধ্য করা;

 

 

 

(চ)    এই আইনের অধীনে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা, অথবা অন্য কোনোভাবে প্রভাব বিস্তার করা; অথবা

 

(ছ)    ধারা ১৩১ এর অধীন সংঘটিত ধর্মঘটের সময় অথবা বে-আইনী নহে এমন ধর্মঘট চলাকালীন কোনো নতুন শ্রমিক নিয়োগ করা:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাহী চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হইয়া গেলে যন্ত্রপাতির বা ইউনিটের গুরুতর ক্ষতি হইবে, তাহা হইলে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখায় সীমিত সংখ্যক শ্রমিককে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন।

 

 

 

(২) শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বসম্পন্ন পদে নিয়োগ বা পদোন্নতির কারণে কোনো ব্যক্তির শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধির পদ বাতিল হইবার কিংবা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি পদে তাহার অধিষ্ঠিত থাকিবার যোগ্যতা হারাইবার বিষয়ে মালিকের অধিকার উপ-ধারা (১) এর বিধান দ্বারা ক্ষুণ্ণ হইবে না।

শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির তরফে অন্যায় আচরণ

১১৬।   (১) মালিকের বিনা অনুমতিতে কোনো শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো সদস্য বা কোনো প্রতিনিধি তাহার কর্মসময়ে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থাকিবেন না; নিয়োজিত থাকিলে উহা শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধির অন্যায় আচরণ হইবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো যৌথ দর-কষাকষি এজেন্টের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের এই আইনের অধীন শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো কমিটি, আলাপ-আলোচনা, সালিশ, মধ্যস্থতা অথবা অন্য কোনো কর্মধারা সম্পাদনে নিয়োজিত থাকার ক্ষেত্রে এই উপ-ধারার কোনো কিছুই প্রযোজ্য হইবে না যদি মালিককে  তদ্সম্পর্কে যথাসময়ে অবহিত করা হয় ।

 

 

 

(২) কোনো শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এবং উক্ত শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির পক্ষে কর্মসম্পাদনকারী বা ভারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোনো কাজ করিলে উহা অন্যায় আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মসময়ে কোনো শ্রমিককে শ্রমিক কল্যাণ সমিতিতে যোগদানের জন্য বা যোগদান করা হইতে বিরত থাকিবার জন্য উৎসাহিত করা;

 

 

 

(খ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি হইবার জন্য, বা উহা হইতে বিরত থাকিবার জন্য অথবা সদস্য বা প্রতিনিধি পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার বা না থাকিবার জন্য কোনো ব্যক্তিকে ভীতি প্রদর্শন করা;

 

 

 

(গ)    কোনো ব্যক্তিকে কোনোরূপ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করিবার প্রলোভন দেখাইয়া, অথবা কোনোরূপ সুযোগ-সুবিধা আদায় করিয়া বা আদায় করিয়া দেওয়ার প্রলোভন দেখাইয়া, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সদস্য বা প্রতিনিধি পদে যোগদান করা হইতে বিরত থাকিবার অথবা সদস্য পদ ত্যাগ করিবার জন্য প্রলুব্ধ করা;

 

 

 

(ঘ)    ভীতি প্রদর্শন, বল প্রয়োগ, চাপ প্রয়োগ, হুমকি প্রদর্শন, কোনো স্থানে আটক করিয়া রাখা, দৈহিক ক্ষতিসাধন, টেলিফোন, পানি বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিয়া বা অনুরূপ অন্য কোনো কৌশল অবলম্বনপূর্বক কোনো মীমাংসা-স্মারকে স্বাক্ষরদানের জন্য মালিককে বাধ্য করা বা বাধ্য করিবার চেষ্টা করা; অথবা

 

 

 

(ঙ)   ভীতি প্রদর্শন, বল প্রয়োগ, চাপ প্রয়োগ, হুমকি প্রদর্শন, কোনো স্থানে আটক করিয়া রাখা, দৈহিক ক্ষতিসাধন, টেলিফোন, পানি বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিয়া বা অনুরূপ অন্য কোনো কৌশল অবলম্বনপূর্বক কোনো শ্রমিককে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির তহবিলে চাঁদা প্রদানের জন্য বা চাঁদা প্রদান করা হইতে বিরত রাখিবার জন্য বাধ্য করা বা বাধ্য করিবার চেষ্টা করা;

 

 

 

()    কোনো বেআইনী ধর্মঘট অথবা শ্লথ গতিতে কাজ শুরু করা বা চালু রাখা; অথবা উহাতে অংশগ্রহণের জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্ররোচিত করা;

 

 

 

 ()   কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো দাবি অথবা উহার কোনো লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো ঘেরাও, পরিবহন অথবা যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি অথবা কোনো সম্পত্তির ধ্বংস সাধন করা

 

 

 

(৩) কোনো শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই আইনের অধীন কোনো নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণে অবাঞ্ছিত প্রভাব বিস্তার, ভীতি প্রদর্শন, জালিয়াতি, অথবা নির্বাহী পরিষদ বা উহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির মারফত উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করিলে উহা শ্রমিক বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির জন্য অন্যায় আচরণ হইবে।

চুক্তির বলবৎযোগ্যতা

১১৭। (১) শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও মালিকের মধ্যে সম্পাদিত কোনো চুক্তি পক্ষগণের উপর বাধ্যকর হইবে এবং উহা ইপিজেড শ্রম আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য।

 

 

 

(২) এই ধারার অধীনে কোনো চুক্তি বলবৎকরণ বা চুক্তি ভঙ্গের কারণে ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কোনো মামলা কোনো দেওয়ানী আদালতে গ্রহণযোগ্য হইবে না।

হিসাব ও তথ্য দাখিল

১১৮।  প্রত্যেক শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত তারিখের মধ্যে, ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিগত বৎসরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষা করাইবে এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ উক্ত বৎসরে উহার সম্পদ ও দায়-দায়িত্বের সাধারণ বিবরণী নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট দাখিল করিবে।

যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট (Collective Bargaining Agent)

১১৯।  (১) কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট হইবে।

 

 

 

(২) মালিকের সহিত মজুরি, কর্মঘণ্টা এবং নিয়োগের অন্যান্য শর্তাদি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করিবার অধিকার যৌথ দর-কষাকষি এজেন্টের থাকিবে এবং আলাপ-আলোচনার উদ্দেশ্যে তথ্য প্রাপ্তির জন্য শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কর্তৃক পেশকৃত কোনো যুক্তিসংগত অনুরোধ মালিক অস্বীকার করিবে না।

 

 

 

(৩) কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কিত যৌথ দর-কষাকষি এজেন্টের উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত বিষয়ের অতিরিক্ত নিম্নবর্ণিত বিষয়েও অধিকার থাকিবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   শ্রমিকদের নিয়োগ ও নিয়োগের শর্ত সংক্রান্ত বিষয়ে মালিকের সহিত যৌথ

 
 
দর-কষাকষি করা;

 

 

 

(খ)   কোনো কার্যক্রমে সকল শ্রমিক বা কোনো একজন শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব করা; এবং

 

 

 

(গ)    এই আইনের বিধানাবলি অনুসারে ধর্মঘটের নোটিশ প্রদান ও ধর্মঘট ঘোষণা করা।

 

 

 

() যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি রহিয়াছে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কেবল প্রারম্ভিক মজুরি প্রযোজ্য হইবে, যাহা প্রবেশ পর্যায়ে, আইন অথবা প্রযোজ্য কোনো আইনগত আদেশ দ্বারা, তাহাদের জন্য নির্ধারণ করা হইয়াছে এবং অন্যান্য মজুরি সম্পর্কিত বিষয়াদি, যথামজুরি বৃদ্ধি, পদোন্নতি অথবা অন্যান্য বর্ধিত সুবিধাদি মালিক ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হইবে।

চাঁদা কর্তন

১২০।  (১) শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদ অনুরোধ করিলে, মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকগণের লিখিত সম্মতিক্রমে তাহাদের মজুরি হইতে মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ (টাকা) শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কর্তৃক পেশকৃত ডিমান্ড স্টেটমেন্ট অনুযায়ী কর্তন করিয়া শ্রমিক কল্যাণ সমিতি তহবিলে চাঁদা হিসাবে জমা করিবে।

 

 

 

(২) কোনো শ্রমিকের লিখিত সম্মতি ব্যতিরেকে তাহার মজুরি হইতে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো চাঁদা কর্তন করা যাইবে না।

 

 

 

(৩) কোনো মালিক উপ-ধারা (১) এর অধীন মজুরি হইতে টাকা কর্তন করিয়া থাকিলে উক্ত কর্তনের সমুদয় অর্থ পরবর্তী ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে যে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির পক্ষে উহা কর্তন করা হইয়াছে সেই শ্রমিক কল্যাণ সমিতির হিসাবে জমা করিবে।

 

 

 

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীনে শ্রমিকদের মজুরি হইতে চাঁদা কর্তন করা হইতেছে কি না তাহা যাচাই করিবার জন্য মালিক  নির্বাহী পরিষদকে পূর্ণ সুযোগ প্রদান করিবে।

 

 

 

(৫) নির্বাহী পরিষদ প্রত্যেক পঞ্জিকা বৎসরের শুরুতে পূর্ববর্তী বৎসরের আর্থিক বিবরণসহ চলতি বৎসরের আয়-ব্যয় সম্বলিত রাজস্ব বাজেট অনুমোদনের জন্য নির্বাহী চেয়ারম্যান অথবা তাহার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট জমা দিবে। একইসাথে উক্ত আর্থিক বিবরণীর হিসাব শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সকল সাধারণ সদস্যকে অবহিত করিবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধিদের চাকরি নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

১২১  (১) কোনো মালিক বা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান উহার শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো প্রতিনিধি হইবার কারণে কোনো শ্রমিকের সঙ্গে কোনোরূপ বৈষম্যমূলক আচরণ করিবে না।

 

 

 

(২) কোনো মালিক বা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান নিম্নরূপ কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে না-

 

 

 

(ক)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো প্রতিনিধিকে এক জোন হইতে অন্য জোনে অথবা এক শিল্প প্রতিষ্ঠান বা ইউনিট হইতে অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা ইউনিটে প্রতিনিধির সম্মতি ব্যতিরেকে বদলি;

 

 

 

(খ)   কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা অন্য কোনো প্রতিনিধিকে চাকরি হইতে বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্য কোনোভাবে কর্মচ্যুত :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো প্রতিনিধিকে এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন নিষিদ্ধ বা অন্যায় আচরণের অভিযোগের ভিত্তিতে চাকরি হইতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে বা তাহার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করিতে মালিক বারিত বলিয়া গণ্য হইবে না।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (২) এর দফা (ক) এর অধীন কোনো প্রতিনিধির সম্মতিক্রমে তাহার বদলি এবং দফা (খ) এ উল্লিখিত কোনো প্রতিনিধির বিরুদ্ধে কোনোরূপ কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্বাহী চেয়ারম্যানের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান, প্রয়োজনে, তদন্তের মাধ্যমে এতদ্সংক্রামত্ম সত্যতা নিরূপণ করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৪) উপ-ধারা (২) ও (৩) এর অধীন মালিকের যে কোনো কার্যের বৈধতার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত প্রদানে নির্বাহী চেয়ারম্যানের কর্তৃত্ব থাকিবে, এবং তিনি মালিকের সিদ্ধান্ত বহাল রাখিতে বা বাতিল করিতে এবং কোনো প্রতিনিধিকে স্ব-পদে পুনর্বহাল এবং তাহার অপরিশোধিত মজুরি ও সুবিধাদি পরিশোধের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

অংশগ্রহণকারী কমিটি

১২২।   (১)  কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদ গঠিত না হইলে বা বিলুপ্ত হইলে সে প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করা যাইবে :

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদ গঠনেরসঙ্গে সঙ্গে অংশগ্রহণকারী কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হইবে।

 

 

 

() মালিক শ্রমিকগণের প্রতিনিধি সমন্বয়ে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হইবে এবং হাতে মালিক ও শ্রমিকগণের প্রতিনিধির সংখ্যা সমহারে হইবে

 

 

 

(৩) অংশগ্রহণকারী কমিটিতে উভয়পক্ষে মোট সদস্য সংখ্যা ৬ (ছয়) জনের কম এবং১৬ (ষোলো) জনের অধিক হইবে না এবং অংশগ্রহণকারী কমিটির মেয়াদ কোনোক্রমেই ২ (দুই) বছরের অধিক হইবে না

 

 

 

() উক্ত কমিটির শ্রমিক প্রতিনিধিগণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত বা মনোনীত হইবেন

 

 

 

 () অংশগ্রহণকারী কমিটিতে শ্রমিক পক্ষের নির্বাচিত বা মনোনীত প্রতিনিধিদের কমিটির মেয়াদকালে তাহাদের সম্মতি ব্যতিরেকে মালিক বদলি করিবেন না

অংশগ্রহণকারী কমিটির কাজ

১২৩।  অংশগ্রহণকারী কমিটির কাজ হইবে প্রধানত প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিক এবং মালিক সকলেরই অঙ্গীভূত হওয়ার ভাব প্রোথিত ও প্রসার করা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রমিকগণের অঙ্গীকার ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা, এবং বিশেষ করিয়া-

 

 

 

(ক)   শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, সমঝোতা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালানো ;

 

 

 

(খ)   এই আইন প্রতিপালনে সহায়তা করা;

 

 

 

(গ)    শৃঙ্খলাবোধ উৎসাহিত করা, নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাস্থ্য রক্ষা এবং কাজের অবস্থার উন্নতি বিধান ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা;

 

 

 

(ঘ)    বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, শ্রমিক শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা;

 

 

 

(ঙ)   শ্রমিক এবং তাহাদের পরিবারবর্গের প্রয়োজনীয় কল্যাণমূলক ব্যবস্থাসমূহের উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; এবং

 

 

 

(চ)        উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি , উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং অপচয় রোধ করা এবং উৎপাদিত দ্রব্যের মান উন্নত করা।

দশম অধ্যায়

মীমাংসা এবং সালিশ

শিল্প বিরোধ সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা

১২৪।   (১) যে কোনো সময়, যদি, কোনো মালিক বা কোনো যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট দেখিতে পান যে, শ্রমিক এবং মালিকের মধ্যে শিল্প বিরোধ উদ্ভূত হইতে যাইতেছে, তাহা হইলে মালিক বা, ক্ষেত্রমত, যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট, উহার মতামত লিখিতভাবে অপর পক্ষকে অবহিত করিবে।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী অবহিত হইবার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে, উক্ত অবহিত পক্ষ, অপর পক্ষের প্রতিনিধিগণের সহিত আলোচনাক্রমে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় উপনীত হইবার লক্ষ্যে উদ্ভূত বিষয়ের উপর যৌথ দর-কষাকষির জন্য অপর পক্ষের প্রতিনিধিগণের সহিত একটি সভার আয়োজন করিবে।

 

 

 

(৩) উভয়পক্ষ আলোচিত বিষয়ের উপর মীমাংসায় উপনীত হইলে, একটি মীমাংসা-স্মারক লিখিত হইবে এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক উহা স্বাক্ষরিত হইবে এবং উহার একটি কপি নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং মীমাংসাকারীর নিকট প্রেরিত হইবে।

মীমাংসাকারী, সালিশকারী ও কাউন্সিলর নিয়োগ

১২৫।  (১) কর্তৃপক্ষ এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোনো জোন বা জোনসমূহের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মীমাংসাকারী ও সালিশকারী নিয়োগ করিবে এবং তাহাদের কার্যাবলি নির্ধারণ করিবে।

 

 

 

(২) কর্তৃপক্ষ এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কাউন্সিলর নিয়োগ করিবে।

 

 

 

(৩) কাউন্সিলর এর কার্যাবলি ও যে জোন বা জোনসমূহের জন্য তাহাদেরকে নিয়োগ করা হইবে উহা নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্ধারণ করিবেন।

ধর্মঘটের নোটিশের পূর্বে মীমাংসা, ইত্যাদি

১২৬।    পক্ষগণ ধারা ১২৪ এর অধীন আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে কোনো মীমাংসায় পৌঁছাইতে ব্যর্থ হইলে, যে কোনো পক্ষ নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং মীমাংসাকারীকে অবহিত করিতে পারিবে যে, আলাপ-আলোচনা ব্যর্থ হইয়াছে এবং লিখিতভাবে বিরোধটি মীমাংসা করিবার জন্য মীমাংসাকারীকে অনুরোধ করিতে পারিবে এবং মীমাংসাকারী অনুরূপ অনুরোধ প্রাপ্তির পর মীমাংসার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করিবেন।

ধর্মঘট অথবা লক-আউটের নোটিশ

১২৭।  (১) মীমাংসাকারী ধারা ১২৬ এর অধীন অনুরোধ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে বিরোধটি মীমাংসা করিতে ব্যর্থ হইলে, যৌথদর-কষাকষি এজেন্ট অথবা মালিক, উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, এবং এই আইনের বিধান অনুসারে, বিরোধের অপর পক্ষের প্রতি ধর্মঘট বা, ক্ষেত্রমত, লক-আউটের ৩০ (ত্রিশ) দিনের নোটিশ জারি করিতে পারিবে।

 

 

 

(২) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তবে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইয়া না থাকিলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত পদ্ধতিতে, অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় গোপন-ব্যালটের মাধ্যমে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সম্মতি প্রদান না করিলে, কোনো যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট ধর্মঘটের নোটিশ জারি করিবে না।

ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশ জারির পর মীমাংসা

১২৮।  (১) শিল্প বিরোধের কোনো পক্ষ ধারা ১২৭ এর অধীন ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশ জারি করিলে, উক্ত নোটিশ জারির একটি কপি মীমাংসাকারীকে প্রদান করিবেন এবং মীমাংসাকারী তখন ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশ সত্ত্বেও মীমাংসা কার্যক্রম গ্রহণ করিবেন, অথবা, বিরোধের মীমাংসা কার্যক্রম অব্যাহত রাখিবেন।

 

 

 

(২) বিরোধ মীমাংসা শুরুর পূর্বেই মীমাংসাকারী ধর্মঘটের নোটিশের বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হইলে এবং যদি নোটিশটি এই আইনের বিধান বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী না হয়, তাহা হইলে ধর্মঘটের নোটিশ এই আইনের বিধান অনুসারে প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না; এবং এইরূপ ক্ষেত্রে মীমাংসাকারী, তাহার স্বীয় বিবেচনায় মীমাংসা কার্যক্রম গ্রহণ না করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবেন।

মীমাংসাকারীর কার্যপদ্ধতি

১২৯।  (১) মীমাংসাকারী, যত দ্রুত সম্ভব, মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধের নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে বিরোধের পক্ষগণকে সভায় আহ্বান করিবেন।

 

 

 

(২) বিরোধের পক্ষগণ, ব্যক্তিগতভাবে অথবা তাহাদের মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে মীমাংসাকারীর নিকট উপস্থিত হইবেন, এবং পক্ষগণের উপর বাধ্যকর চুক্তিতে আবদ্ধ হইবার ও তাহাদের পক্ষে আলাপ-আলোচনা করিবার ক্ষমতা প্রতিনিধিগণকে প্রদান করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৩) মীমাংসাকারী, তাহার নিকট প্রেরিত কোনো বিরোধ সম্পর্কে যেইরূপ নির্ধারণ করা হইবে সেইরূপ কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন, এবং বিশেষত আপোষে বিরোধটির নিষ্পত্তির সম্ভাব্য লক্ষ্যে, দাবিতে যেইরূপ ছাড় প্রদান বা পরিমার্জন মীমাংসাকারীর অভিমতে প্রয়োজনীয় মনে হইবে, ঐরূপ ছাড় প্রদান বা পরিমার্জনের জন্য যে কোনো পক্ষকে তিনি পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৪) যদি মীমাংসার ফলে বিরোধ নিষ্পত্তি হয় তাহা হইলে, মীমাংসাকারী তৎসম্পর্কে নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করিবেন, এবং ইহার সহিত উভয় পক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত মীমাংসা-স্মারকের একটি কপিও নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করিবেন।

 

 

 

(৫) ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশের সময়সীমার মধ্যে মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব না হইলে, মীমাংসা কার্যক্রম, বিরোধের পক্ষগণ যেইরূপ সম্মত হইবেন সেইরূপ অধিকতর সময়ের জন্য, অব্যাহত রাখা যাইবে।

সালিশ

১৩০। (১) যদি মীমাংসা কার্যক্রম ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে মীমাংসাকারী উভয়পক্ষকে বিরোধটি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উহা কোনো সালিশকারীর নিকট প্রেরণ করিবার জন্য রাজি করাইতে চেষ্টা করিবেন এবং যদি পক্ষগণ বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য কোনো সালিশকারীর নিকট প্রেরণ করিতে রাজি হন, তাহা হইলে মীমাংসাকারী তাহাদের সকলের স্বীকৃত কোনো সালিশকারীর নিকট বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য যৌথ অনুরোধপত্র প্রেরণ করিবেন।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নির্বাহী চেয়ারম্যান সালিশকারীগণের একটি তালিকা প্রস্তুত করিবেন এবং অনুরূপ তালিকা সময় সময় সংশোধন করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৩) সালিশকারী উপ-ধারা (১) অনুযায়ী অনুরোধ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, অথবা পক্ষগণ কর্তৃক লিখিতভাবে স্বীকৃত কোনো বর্ধিত সময়ের মধ্যে তাহার রোয়েদাদ প্রদান করিবেন।

 

 

 

(৪) সালিশকারী তাহার রোয়েদাদ প্রদানের পর উহার কপি পক্ষগণকে এবং একটি কপি নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করিবেন।

 

 

 

(৫) সালিশকারী কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ চূড়ান্ত ও পক্ষগণের উপর বাধ্যকর হইবে, এবং ইহার বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাইবে না।

 

 

 

(৬) সালিশকারী কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের জন্য অথবা অনধিক ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত কোনো রোয়েদাদ বৈধ থাকিবে।

 

 

 

(৭) যদি পক্ষগণ বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য কোনো সালিশকারীর নিকট প্রেরণে রাজি না হন, তাহা হইলে মীমাংসাকারী, মীমাংসা কার্যক্রম সফল না হইবার ৩ (তিন) দিনের মধ্যে, উহা ব্যর্থ হইয়াছে এই মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র পক্ষগণকে প্রদান করিবেন।

ধর্মঘট এবং লক-আউট

১৩১।   (১) মীমাংসা কার্যক্রমের মাধ্যমে কোনো মীমাংসায় উপনীত হওয়া সম্ভব না হইলে এবং বিরোধে জড়িত পক্ষগণ ধারা ১৩০ এর অধীন বিরোধটি একজন সালিশকারীর নিকট প্রেরণ করিতে সম্মত না হইলে, ধারা ১২৭ এর অধীন নোটিশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর, অথবা বিরোধে জড়িত পক্ষগণের প্রতি মীমাংসাকারী কর্তৃক মীমাংসা কার্যপদ্ধতি ব্যর্থ হইয়াছে মর্মে সার্টিফিকেট ইস্যু করিবার পর, যাহা পরে হয়, শ্রমিকগণ ধর্মঘটে যাইতে পারিবে অথবা, ক্ষেত্রমত, মালিক লক-আউট ঘোষণা করিতে পারিবে।

 

 

 

(২) বিরোধে জড়িত পক্ষগণ, যে কোনো সময়, ধর্মঘট বা লক-আউট আরম্ভ হইবার পূর্বে বা পরে, বিরোধের বিচারের জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে যৌথ দরখাস্ত দায়ের করিতে পারিবে।

 

 

 

(৩) ধর্মঘট বা লক-আউট ৩০ (ত্রিশ) দিনের অধিক অব্যাহত থাকিলে, নির্বাহী চেয়ারম্যান, লিখিত আদেশ দ্বারা, ধর্মঘট বা লক-আউট নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৪) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী চেয়ারম্যান যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, উক্তরূপ ধর্মঘট বা লক-আউটের ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে অথবা উহা জনস্বার্থে বা জাতীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর, তাহা হইলে তিনি লিখিত আদেশ দ্বারা উক্তরূপ ধর্মঘট বা লক-আউটের মেয়াদ ১৫ (পনেরো) দিন পূর্তির পূর্বেই যে কোনো সময় ধর্মঘট বা লক-আউট নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন।

 

 

 

(৫) নির্বাহী চেয়ারম্যান কোনো ধর্মঘট বা লক-আউট নিষিদ্ধ করিলে, তিনি তৎক্ষণাৎ বিরোধটি ইপিজেড শ্রম আদালতে প্রেরণ করিবেন।

 

 

 

(৬) ইপিজেড শ্রম আদালত, বিরোধের উভয়পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া, যত দ্রুত সম্ভব, যেরূপ সমীচীন মনে করিবে সেইরূপ রোয়েদাদ প্রদান করিবে, কিন্তু রোয়েদাদ প্রদানের সময়সীমা, বিরোধটি ইহার নিকট প্রেরিত হইবার তারিখ হইতে ৪০ (চল্লিশ) দিনের বেশি হইবে না।

 

 

 

(৭) ইপিজেড শ্রম আদালত, বিরোধীয় যে কোনো বিষয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে পারিবে এবং রোয়েদাদ প্রদানে ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক বিলম্ব হইবার কারণে, তৎকর্তৃক প্রদত্ত কোনো রোয়েদাদের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না।

 

 

 

(৮) ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ, রোয়েদাদে বর্ণিত মেয়াদের জন্য বৈধ থাকিবে, তবে উহা কোনোক্রমেই ২ (দুই) বৎসরের অধিক সময়ের জন্য বৈধ থাকিবে না।

 

 

 

(৯) নতুন স্থাপিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন শুরু হইবার পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত ধর্মঘট কিংবা লক-আউট নিষিদ্ধ থাকিবে:

 

 

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ প্রতিষ্ঠানে উত্থিত কোনো বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সালিশ বাধ্যতামূলক হইবে।

একাদশ অধ্যায়

ইপিজেড শ্রম আদালত, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল, ইত্যাদি

ইপিজেড শ্রম আদালতের নিকট দরখাস্ত

১৩২।  কোনো যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট অথবা কোনো মালিক অথবা কোনো শ্রমিক এই আইন বা কোনো রোয়েদাদ বা কোনো নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন বা চুক্তি দ্বারা নিশ্চিত বা প্রদত্ত কোনো অধিকার প্রয়োগের জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিতে পারিবেন।

ইপিজেড শ্রম আদালত

১৩৩।  (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইপিজেড শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং একাধিক ইপিজেড শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠিত হইলে, সরকার উক্ত প্রজ্ঞাপনে প্রত্যেক ইপিজেড শ্রম আদালতের এখতিয়ারভুক্ত জোন বা জোনসমূহ নির্দিষ্ট করিয়া দিবে।

 

 

 

(২) সরকার কর্তৃক নিযুক্ত একজন চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যানকে পরামর্শদানের উদ্দেশ্যে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিযুক্ত একজন মালিক ও একজন শ্রমিকদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে ইপিজেড শ্রম আদালত গঠিত হইবে।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো অপরাধের বিচার অথবা ষষ্ঠ এবং অষ্টম অধ্যায়ের অধীন কোনো বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কেবল চেয়ারম্যান সমন্বয়ে ইপিজেড শ্রম আদালত গঠিত হইবে।

 

 

 

(৪) ইপিজেড শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান, সরকার কর্তৃক, কর্মরত জেলা জজ অথবা অতিরিক্ত জেলা জজগণের মধ্য হইতে নিযুক্ত হইবেন।

 

 

 

(৫) ইপিজেড শ্রম আদালতের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

 

 

 

(ক)   এই আইনের অধীন আনীত, পেশকৃত বা দায়েরকৃত শিল্প বিরোধ অথবা অন্য কোনো বিরোধ বা অন্য কোনো প্রশ্নের বিচার ও নিষ্পত্তি;

 

 

 

(খ)   নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রেরিত মীমাংসার শর্তাবলি কার্যকরণ বা লংঘন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের অনুসন্ধান, বিচার ও নিষ্পত্তি;

 

 

 

(গ)    এই আইনের অধীন কৃত অপরাধ, এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট অন্য যে কোনো আইনের অধীনে কৃত অপরাধের বিচার; এবং

 

 

 

(ঘ)    এই আইন অথবা অন্য কোনো আইনের অধীন দ্বারা প্রদত্ত বা প্রদেয় অন্য কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদন করা।

 

 

 

(৬) বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ইপিজেড শ্রম আদালতকে উক্ত আইনের অধীন কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগের বা কার্যসম্পাদনের এখতিয়ার প্রদান করিতে পারিবে, এবং উক্তরূপে এখতিয়ার প্রাপ্ত হইলে, ইপিজেড শ্রম আদালত উক্ত আইনের অধীন কর্তৃপক্ষের উক্তরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে। 

 

 

 

(৭) ইপিজেড শ্রম আদালতের একজন সদস্য আদালতের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকিলে অথবা উপস্থিত হইতে অসমর্থ হইলে, ইপিজেড শ্রম আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকিবে এবং উক্ত সদস্যের অনুপস্থিতিতে ইপিজেড শ্রম আদালত সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ প্রদান করিতে পারিবে; এবং কেবল একজন সদস্যের অনুপস্থিতির কারণে ইপিজেড শ্রম আদালতের কোনো কার্যক্রম, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ অবৈধ হইবে না, কিংবা এই বিষয়ে কোনোরূপ প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

ইপিজেড শ্রম আদালতের কার্যপদ্ধতি ও ক্ষমতা

১৩৪।  (১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, ইপিজেড শ্রম আদালত ফৌজদারী কার্যধারার ক্ষেত্রে, যতদূর সম্ভব, ফৌজদারী কার্যবিধিতে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতি অনুসরণ করিবে।

 

 

 

(২) এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের উদ্দেশ্যে ইপিজেড শ্রম আদালত ফৌজদারী কার্যবিধির অধীন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অনুরূপ ক্ষমতার অধিকারী হইবে এবং দণ্ড প্রদানের উদ্দেশ্যে উক্ত কার্যবিধির অধীন দায়রা আদালতের সমমর্যাদা সম্পন্ন গণ্য হইবে।

 

 

 

(৩) অপরাধ ব্যতীত এই আইনের অধীন অন্য কোনো বিষয়, প্রশ্ন বা শিল্প বিরোধের বিচার ও নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে ইপিজেড শ্রম আদালত দেওয়ানী আদালত হিসাবে গণ্য হইবে, এবং দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন দেওয়ানী আদালতের অনুরূপ ক্ষমতা থাকিবে।

 

 

 

(৪) কোনো শ্রমিককে কোনো মামলা দায়ের, দলিলপত্র প্রদর্শন বা রেকর্ড করিবার জন্য কিংবা ইপিজেড শ্রম আদালত হইতে কোনো দলিল সংগ্রহের জন্য কোনোরূপ কোর্ট ফি প্রদান করিতে হইবে না।

ইপিজেড শ্রম আদালতের রোয়েদাদ ও সিদ্ধান্ত

১৩৫।   (১) ইপিজেড শ্রম আদালতের রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে ও প্রকাশ্য আদালতে প্রদান করিতে হইবে, এবং উহার একটি অনুলিপি অবিলম্বে নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

 

 

 

(২) মামলা দায়েরের পর ইপিজেড শ্রম আদালত ২৫ (পঁচিশ) দিনের মধ্যে ইহার রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে, যদি না বিরোধে জড়িত পক্ষগণ লিখিতভাবে সময় বৃদ্ধির পক্ষে সম্মতি প্রদান করিয়া থাকে।

 

 

 

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো রোয়েদাদ দ্বারা সংক্ষুব্ধ পক্ষ উক্ত রোয়েদাদ প্রদত্ত হইবার ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করিতে পারিবে এবং এই আপিলের বিষয়ে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

 

 

 

(৪) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত রোয়েদাদ ব্যতীত, ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সকল সিদ্ধান্ত এবং ধারা ১৩৪ এর উপ-ধারা (২) এ প্রদত্ত দণ্ড চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত বিষয়ে কোনোরূপ প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল । - 

১৩৬।  (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করিবে এবং সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিয়োগকৃত একজন সদস্য সমন্বয়ে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে।

 

 

 

(২) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য এমন একজন ব্যক্তি হইবেন যিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক পদে বহাল আছেন অথবা ছিলেন, এবং উক্ত সদস্যের নিয়োগের শর্তাবলি সরকার যেইরূপ নির্ধারণ করিবে সেইরূপ হইবে।

 

 

 

(৩) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কোনো আপিল বিবেচনার পর ইপিজেড শ্রম আদালতের রোয়েদাদ বহাল রাখিতে, সংশোধন বা পরিবর্তন করিতে বা বাতিল করিতে পারিবে অথবা মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে ফেরত পাঠাইতে পারিবে; এবং অন্যত্র ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন প্রদত্ত ইপিজেড শ্রম আদালতের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।

 

 

 

(৪) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের করিবার ৪০ (চল্লিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।

 

 

 

(৫) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল বিধি দ্বারা নির্ধারিত কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করিবে।

 

 

 

(৬) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল উহার নিজের অথবা কোনো ইপিজেড শ্রম আদালত অবমাননার জন্য হাইকোর্ট বিভাগের ন্যায় দণ্ড প্রদান করিতে পারিবে।

 

 

 

(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ড কিংবা ১০ (দশ) হাজার টাকার ঊর্ধ্বের অর্থদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে দণ্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি আপিল বিভাগে, উক্ত বিভাগ কর্তৃক লিভ মঞ্জুর হওয়া সাপেক্ষে, আপিল করিতে পারিবে।

ইপিজেড শ্রম আদালত ও ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

১৩৭।   (১) ইপিজেড শ্রম আদালত ও ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন), অতঃপর এই ধারায় শ্রম আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর ধারা ২১৪ এর অধীন স্থাপিত শ্রম আদালত ও ধারা ২১৮ এর অধীন গঠিত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, যথাক্রমে ইপিজেড শ্রম আদালত এবং ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল হিসাবে গণ্য হইবে। 

 

 

 

(২) শ্রম আইনের অধীন একাধিক শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠিত থাকিলে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত আদালতসমূহের প্রত্যেক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত জোন বা জোনসমূহ নির্দিষ্ট করিয়া দিবে।

 

 

 

(৩) ইপিজেড শ্রম আদালত ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচার অথবা অপরাধ ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়, প্রশ্ন বা বিরোধের বিচার ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এই আইনের অধীন উহার ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করিবে।

নিষ্পত্তি বা রোয়েদাদ যাহাদের উপর বাধ্যকর

১৩৮।  (১) মীমাংসার মাধ্যমে উপনীত কোনো নিষ্পত্তি, সালিশের রোয়েদাদ, ধারা ১৩৫ এর অধীন ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ, অথবা ধারা ১৩৬ এর অধীন ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কোনো রায় বা সিদ্ধান্ত নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণের উপর বাধ্যকর হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   শিল্প-বিরোধে জড়িত সকল পক্ষ;

 

 

 

(খ)   শিল্প-বিরোধে জড়িত অন্যান্যরা, যাহাদের ইপিজেড শ্রম আদালত, শিল্প-বিরোধের সহিত জড়িত থাকিবার কারণে ইপিজেড শ্রম আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হইবার জন্য তলব করিয়াছে;

 

 

 

(গ)    যে প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিরোধ, সে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ হইলে তাহার উত্তরাধিকারী বা আইনগত ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ; এবং

 

 

 

(ঘ)    যেক্ষেত্রে বিরোধের এক পক্ষ যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট সেই ক্ষেত্রে বিরোধটি যে প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সে প্রতিষ্ঠানে বিরোধটি উত্থিত হইবার তারিখে নিয়োজিত ছিলেন অথবা পরে নিয়োজিত হইয়াছেন এইরূপ সকল শ্রমিক।

 

 

 

(২) আপোস মীমাংসার মাধ্যম ব্যতীত অন্য কোনো প্রকারে মালিক এবং শ্রমিক কল্যাণ সমিতির মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে কোনো মীমাংসা হইয়া থাকিলে, চুক্তিভুক্ত পক্ষদের সকলের উপর উহা বাধ্যকর হইবে।

মীমাংসা, রোয়েদাদ, ইত্যাদি কার্যকর হইবার তারিখ । -

১৩৯।   (১) মীমাংসা কার্যকর হইবে-

 

(ক)   বিরোধীয় পক্ষগণ সর্বসম্মতভাবে কোনো তারিখ তদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট করিয়া থাকিলে, ঐ তারিখ হইতে; এবং

 

 

 

(খ)   এইরূপ কোনো তারিখ নির্দিষ্ট করিতে সম্মত না হইলে, পক্ষদ্বয় যে তারিখে মীমাংসা-স্মারক স্বাক্ষর করিয়াছে, সেই তারিখ হইতে।

 

 

 

(২) পক্ষদ্বয় যতদিনের জন্য সম্মত হইবে, ততদিন তাহাদের উপর মীমাংসা বাধ্যকর থাকিবে, এবং এইরূপ কোনো মেয়াদ নির্ধারণে তাহারা সম্মত না হইলে মীমাংসা-স্মারক স্বাক্ষরের দিন হইতে ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত উহা বাধ্যকর থাকিবে।

 

 

 

(৩) ধারা ১৩৫ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত রোয়েদাদ, উহার বিরুদ্ধে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা না হইলে, রোয়েদাদে উল্লিখিত তারিখ হইতে নির্দিষ্ট মেয়াদে অনধিক ২ (দুই) বৎসর কার্যকর থাকিবে।

 

 

 

(৪) সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত, অথবা ক্ষেত্রমত, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল, রোয়েদাদের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দাবী, প্রতিটি ক্ষেত্রে কোনো তারিখে ও কী শর্তে কার্যকর হইবে, উহা উল্লেখ করিবে।

 

 

 

(৫) ধারা ১৩৬ এর অধীন আপিল আবেদনের উপর ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত, রোয়েদাদ প্রদানের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।

 

 

 

(৬) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো রোয়েদাদের কার্যকারিতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও, একপক্ষ অপর পক্ষের নিকট উহার সম্মতির কথা লিখিতভাবে অবগত করিবার তারিখ হইতে পরবর্তী ২ (দুই) মাস পর্যন্ত উক্ত সিদ্ধান্ত মানিয়া চলিতে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ বাধ্য থাকিবে।

কার্যক্রমের সূচনা ও সমাপ্তি

১৪০।  (১) ধারা ১২৭ এর অধীন মীমাংসাকারী যে তারিখে ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশ প্রাপ্ত হইবেন, সেই তারিখ হইতে মীমাংসা কার্যক্রম শুরু হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

 

(২) মীমাংসা কার্যক্রম সেই তারিখে সমাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে-

 

 

 

(ক)   মীমাংসায় উপনীত হইলে মীমাংসা-স্মারকে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ যে তারিখে স্বাক্ষর প্রদান করেন; এবং

 

 

 

(খ)   যেক্ষেত্রে কোনো মীমাংসায় উপনীত হওয়া সম্ভব হয় নাই, সেই ক্ষেত্রে-

 

 

 

(অ)   ধারা ১৩০ এর অধীন বিরোধটি কোনো সালিশকারীর নিকট প্রেরিত হইলে, উক্ত সালিশকারী যে তারিখে রোয়েদাদ প্রদান করেন, অথবা তাহা না হইলে,

 

 

 

(আ)  ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশের মেয়াদ যে তারিখে উত্তীর্ণ হয়।

 

 

 

(৩) ইপিজেড শ্রম আদালতে উত্থাপিত কার্যক্রম সেই তারিখে শুরু হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে-

 

(ক)   শিল্প বিরোধের ক্ষেত্রে ধারা ১৩১ অথবা ১৩২ এর অধীন কোনো আবেদন যে তারিখে পেশ করা হইয়াছে, এবং

 

 

 

(খ)   অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে তারিখে উহা ইপিজেড শ্রম আদালতে প্রেরিত হইয়াছে।

 

 

 

(৪) ইপিজেড শ্রম আদালতের রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত ধারা ১৩৫ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন যে তারিখে প্রদত্ত হইয়াছে, সেই তারিখে ইপিজেড শ্রম আদালতে মোকদ্দমার কার্যক্রম সমাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

কতিপয় বিষয়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ

১৪১।   (১) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি কিংবা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বা মালিক কর্তৃক পরিচালিত কোনো ব্যবসা বিষয়ে কোনো তদন্ত বা অনুসন্ধান পরিচালনার সময় নির্বাহী চেয়ারম্যান, মীমাংসাকারী, সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সংগৃহীত বা প্রাপ্ত কোনো তথ্য, যাহা ঐরূপ কর্তৃপক্ষের সম্মুখে সাক্ষ্য প্রদান ব্যতিরেকে অন্য কোনো উপায়ে পাওয়া সম্ভব নহে, এবং যাহা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা মালিক গোপন রাখিবার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে অনুরোধ করিয়াছে, উহা এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোনো প্রতিবেদন, রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্তে অন্তর্ভুক্ত হইবে না; এবং এইরূপ কোনো তথ্য, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা, ক্ষেত্রমত, কোম্পানি বা মালিক লিখিত সম্মতি প্রদান না করিলে, মোকদ্দমার কার্যক্রমে প্রকাশ করা যাইবে না।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার কোনো কিছুই দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (১৮৬০ সালের ৪৫ নং আইন) এর ধারা ১৯৩ এর অধীন কোনো মামলায় অনুরূপ কোনো তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।

শিল্প বিরোধ উত্থাপন

১৪২।  কোনো শিল্প বিরোধ উদ্ভব হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না যদি না ইহা এই অধ্যায়ের বিধান মোতাবেক কোনো মালিক অথবা যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট কর্তৃক উত্থাপিত হয়।

 

 

কার্যক্রম চলাকালীন ধর্মঘট বা লক-আউটের নোটিশ প্রদানের উপর নিষেধাজ্ঞা

১৪৩।  শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে মীমাংসা বা সালিশী কার্যক্রম চলাকালীন অথবা তৎসংক্রান্ত কোনো মামলা ইপিজেড শ্রম আদালতে অথবা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে কোনো আপিল শুনানিকালে, বিরোধে জড়িত কোনো পক্ষ অন্য পক্ষের উপরে ধর্মঘট বা লক-আউটের কোনো নোটিশ জারি করিতে পারিবেন না।

ইপিজেড শ্রম আদালত ও ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ধর্মঘট, ইত্যাদি নিষিদ্ধকরণের ক্ষমতা

১৪৪।  (১) কোনো শিল্প বিরোধ অনুসারে কোনো ধর্মঘট অথবা লক-আউট ইতিমধ্যে শুরু হইয়াছে, এবং ইপিজেড শ্রম আদালতে উক্ত শিল্প বিরোধকে কেন্দ্র করিয়া ধারা ১৩২ এর অধীন কোনো দরখাস্ত পেশ করিবার সময় অথবা ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক শুনানি চলাকালীন উক্ত ধর্মঘট বা লক-আউট অব্যাহত থাকিলে ইপিজেড শ্রম আদালত, লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত ধর্মঘট বা লক-আউট চালাইয়া যাওয়া নিষিদ্ধ করিতে পারিবে।

 

(২) শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে ধারা ১৩৬ এর অধীন ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে কোনো আপিল দায়ের করা হইলে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল, লিখিত আদেশ দ্বারা, আপিল দায়েরের তারিখে উক্ত শিল্প বিরোধ অনুসারে অব্যাহত আছে এইরূপ কোনো ধর্মঘট বা লক-আউট চালাইয়া যাওয়া নিষিদ্ধ করিতে পারিবে।

বেআইনী ধর্মঘট ও লক-আউট

১৪৫।  (১) ধর্মঘট বা লক-আউট বেআইনী হইবে, যদি-

 

 

 

(ক)   উহা বিরোধে জড়িত অপর পক্ষের উপর প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধর্মঘট বা লক-আউট এর নোটিশ জারি না করিয়া অথবা প্রদত্ত নোটিশে উল্লিখিত তারিখের পূর্বে বা পরে অথবা ধারা ১৪৩ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া ঘোষিত হয়, শুরু হয় অথবা অব্যাহত রাখা হয়; অথবা

 

(খ)   উহা ধারা ১৪২ এর বিধান ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতিতে, উদ্ভূত শিল্প-বিরোধকে কেন্দ্র করিয়া ঘোষিত হয়, শুরু হয় অথবা অব্যাহত রাখা হয়; অথবা

 

 

 

(গ)    উহা ধারা ১৪৪ এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ এর লঙ্ঘনে  অব্যাহত রাখা হয়; অথবা

 

 

 

(ঘ)    উহা কোনো মীমাংসা বা রোয়েদাদ দ্বারা সাব্যস্ত বিষয়ে উক্ত মীমাংসা বা রোয়েদাদ কার্যকর থাকাকালীন সময়ে ঘোষিত হয়, শুরু হয় বা অব্যাহত রাখা হয়।

 

 

 

(২) বেআইনী ধর্মঘটের ধারাবাহিকতায় ঘোষিত লক-আউট এবং বেআইনী লক-আউটের ধারাবাহিকতায় ধর্মঘট অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে না।

কার্যক্রম চলাকালে চাকরির শর্ত অপরিবর্তিত থাকা

১৪৬।  (১) শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো মীমাংসা কার্যধারা চলাকালে, অথবা সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত অথবা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নিকট কোনো কার্যধারা চলাকালে কোনো মালিক বিরোধে জড়িত কোনো শ্রমিকের, উক্ত কার্যধারা শুরু হইবার পূর্বে প্রযোজ্য চাকরির শর্তাবলি তাহার অসুবিধা হয় এমনভাবে পরিবর্তন করিতে পারিবেন না, অথবা মীমাংসাকারী, সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত অথবা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল, যখন যেখানে বা যাহার নিকটে উক্তরূপ কার্যধারা চলিতে থাকে, এর বিনা অনুমতিতে, উক্ত বিরোধ সম্পর্কিত নহে এমন অসদাচরণের জন্য ব্যতীত, উক্তরূপে শ্রমিককে চাকরি হইতে অপসারণ, বরখাস্ত বা অন্য কোনোভাবে শাস্তি প্রদান করিতে পারিবেন না অথবা তাহার চাকরির অবসান করিতে পারিবেন না।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কার্যধারা অব্যাহত থাকাকালে, কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো প্রতিনিধিকে, ইপিজেড শ্রম আদালতের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে, অপসারণ, বরখাস্ত অথবা অসদাচরণের জন্য অন্য কোনোভাবে শাস্তি প্রদান করা যাইবে না।

কতিপয় ব্যক্তির নিরাপত্তা বিধান

১৪৭।  কোনো ব্যক্তি কোনো বেআইনী ধর্মঘটে বা বেআইনী লক-আউটে অংশগ্রহণ করিতে, বা অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখিতে অস্বীকার করিলে, উক্ত অস্বীকৃতির কারণে তাহাকে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি হইতে বহিষ্কার করা যাইবে না, বা কোনো জরিমানা আরোপ বা দণ্ড প্রদান করা যাইবে না, বা এমন কোনো অধিকার বা সুবিধা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না, যাহা তিনি বা তাহার কোনো প্রতিনিধি উহা না হইলে ভোগ করিবার অধিকারী হইতেন, অথবা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির অন্যান্য সদস্যদের সহিত তুলনামূলকভাবে অধিকতর অসুবিধাজনক কোনো অবস্থা বা অক্ষমতার মধ্যে তাহাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিপতিত করা যাইবে না।

পক্ষদের প্রতিনিধিত্ব

১৪৮।   (১) কোনো শিল্প বিরোধে জড়িত কোনো শ্রমিক এই অধ্যায়ের অধীন কোনো কার্য ধারায় তাহার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো প্রতিনিধির দ্বারা তাহার প্রতিনিধিত্ব করাইতে পারিবেন, এবং উপ-ধারা (২) এবং (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, শিল্প বিরোধে জড়িত কোনো মালিক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি দ্বারা উক্ত কার্যধারায় তাহার প্রতিনিধিত্ব করাইতে পারিবেন।

 

 

 

(২) এই অধ্যায়ের অধীন কোনো মীমাংসা কার্যধারায় শিল্প বিরোধে জড়িত কোনো পক্ষ কোনো আইনজীবীর দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করাইতে পারিবে না।

 

 

 

(৩) শিল্প বিরোধে জড়িত কোনো পক্ষ সালিশকারীর সম্মুখে কোনো কার্যধারায়, ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের অনুমতিক্রমে, কোনো আইনজীবীর দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করাইতে পারিবে।

মীমাংসা এবং রোয়েদাদের ব্যাখ্যা

১৪৯।   (১) কোনো রোয়েদাদ কিংবা মীমাংসার কোনো বিষয়বস্ত্তর বিষয়ে কোনো অসুবিধা বা সন্দেহ উদ্ভূত হইলে, উহা এই আইনের অধীন গঠিত ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

 

 

 

(২) ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রেরিত কোনো বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে শুনানির সুযোগদান করিবার পর বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে এবং ইহার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং পক্ষদের উপর বাধ্যকর হইবে।

মীমাংসা বা রোয়েদাদ অনুযায়ী মালিকের নিকট হইতে পাওনা টাকা আদায়

১৫০।  (১) কোনো মীমাংসাকারী, সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের কোনো রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিকের নিকট হইতে পাওনা কোনো টাকা, উক্ত টাকার প্রাপক ব্যক্তির পক্ষে নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক আবেদন করা হইলে, বকেয়া ভূমি রাজস্ব বা সরকারি পাওনা আদায়ের অনুরূপ পদ্ধতিতে আদায়যোগ্য হইবে।

 

 

 

(২) মীমাংসাকারী, সালিশকারী, ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত অনুসারে মালিকের নিকট হইতে কোনো শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কোনো সুবিধা পাওনা হইলে এবং অনুরূপ পাওনা টাকা অংকে নিরূপণ করিয়া আদায় করিবার উপযোগী হইলে, উহা বিধি বা প্রবিধান সাপেক্ষে, অনুরূপভাবে টাকার অংকে নিরূপিত হইবে, এবং উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী আদায় করিয়া সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে

দ্বাদশ অধ্যায়

দণ্ড ও বিচার

অন্যায় আচরণের জন্য দণ্ড

১৫১।   (১) কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৫ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(২) কোনো শ্রমিক ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ২ (দুই) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(৩) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, অথবা শ্রমিক ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি, ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মীমাংসা ভঙ্গ করিবার জন্য দণ্ড

১৫২।  কোনো ব্যক্তি মীমাংসার কোনো শর্ত, রোয়েদাদ অথবা তাহার উপর বাধ্যকর কোনো সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করিলে, তিনি-

 

 

 

(ক)   প্রথমবার অনুরূপ অপরাধ করিবার জন্য ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

 

 

 

(খ)   পরবর্তীতে প্রতিটি অনুরূপ অপরাধের জন্য ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মীমাংসার শর্ত, রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করিবার দণ্ড

১৫৩।   কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন তাহার উপর বাধ্যকর মীমাংসার কোনো শর্ত, রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত ইচ্ছাকৃতভাবে বাস্তবায়ন না করিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

মিথ্যা বিবৃতি প্রদানের দণ্ড, ইত্যাদি

১৫৪।  কোনো ব্যক্তি এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন দাখিলকৃত কোনো আবেদনপত্রে বা অন্য কোনো দলিলপত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো বিবৃতি প্রদান করিয়া বা করাইয়া থাকেন, যাহা অসত্য বলিয়া তিনি জানেন অথবা বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে; অথবা এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন কোনো দলিল সংরক্ষণ বা পেশ করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি করিলে বা ব্যর্থ হইলে, সেক্ষেত্রে-

 

 

 

(ক)   মালিক হইলে সর্বোচ্চ (পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে (তিন) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

 

 

 

(খ)       শ্রমিক হইলে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে (তিন) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউটের জন্য দণ্ড

১৫৫।  (১) কোনো শ্রমিক কোনো বেআইনী ধর্মঘট আরম্ভ করিলে, অব্যাহত রাখিলে অথবা উহার সমর্থনে অন্য কোনোভাবে কোনো কার্য করিলে, তিনি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। 

 

 

 

(২) কোনো মালিক বেআইনীভাবে কোনো লক-আউট আরম্ভ করিলে, চালাইলে অথবা উহার সমর্থনে অন্য কোনোভাবে কোনো কার্য করিয়া থাকিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের পুনরাবৃত্তি করিবার ক্ষেত্রে প্রথম অপরাধের পর অনুরূপ অপরাধ অব্যাহত থাকাকালীন সময়ে প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ২ (দুই) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউট করিতে প্ররোচনা দানের দণ্ড

১৫৬।  কোনো ব্যক্তি বেআইনী ধর্মঘট বা বেআইনী লক-আউটে অংশগ্রহণ করিবার জন্য কোনো ব্যক্তিকে প্ররোচিত বা উত্তেজিত করিলে কিংবা উক্ত উদ্দেশ্যে অর্থ সরবরাহ করিলে অথবা অন্য কোনোভাবে সহায়তা করিলে, তিনি ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ধারা ১৪৬ এর বিধান লংঘন করিবার দণ্ড

১৫৭।   কোনো মালিক বা কোম্পানি ধারা ১৪৬ এর বিধান লংঘন করিলে তিনি ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ভবিষ্য তহবিল এবং শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের তসরুফ বা অর্থ আত্মসাতের দণ্ড

১৫৮।   (১) কোনো ব্যক্তি শ্রমিকগণের কোনো ভবিষ্য তহবিলের অর্থ আত্মসাত করিলে, তসরুফ করিলে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের কাজে ব্যয় করিলে, তিনি ১ (এক) বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

ব্যাখ্যা: কোনো মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকগণের ভবিষ্য তহবিলে তাহার প্রদেয় চাঁদা অথবা তৎকর্তৃক শ্রমিকগণের মজুরি হইতে কর্তীত উক্ত তহবিলের চাঁদা ০৩ (তিন) মাসের অধিক সময় পর্যন্ত নির্বাহী চেয়ারম্যানের সন্তোষমত কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিত, যথাসময়ে উক্ত তহবিলে জমা করিতে ব্যর্থ হইলে তিনি উক্ত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

 

(২) কোনো নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো প্রতিনিধি উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এর তহবিল তসরুফ বা আত্মসাৎ এর জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, এবং তদুপরি যে পরিমাণ অর্থ তসরুফ বা আত্মসাৎ হইয়াছে মর্মে ইপিজেড শ্রম আদালতের নিকট প্রমাণিত হয়, অন্যূন সেই পরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(৩) এই ধারার অধীন আরোপিত অর্থদণ্ড, যে পরিমাণ অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি আত্মসাত বা তসরুফ বা নিজ কাজে ব্যয় করিয়াছেন বলিয়া আদালত প্রমাণ পাইবে, সেই পরিমাণ হইতে পারিবে এবং অর্থদণ্ডের টাকা আদায় হইবার পর আদালত উহা সংশ্লিষ্ট তহবিলে প্রত্যর্পণ করিবে। 

অন্যান্য অপরাধের দণ্ড

১৫৯। (১) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের কোনো বিধান লংঘন করিবার, অথবা প্রতিপালন করিতে ব্যর্থ হইবার ক্ষেত্রে অনুরূপ লংঘন বা ব্যর্থতার জন্য এই আইনের অন্য কোনো বিধানে কোনো শাস্তির বিধান না থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(২) কোনো বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান ভঙ্গ বা লংঘনের জন্য অনধিক ১ (এক হাজার) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা অনধিক ৩ (তিন) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা যাইবে।

ধারা ১২৯ এর বিধান লংঘন করিবার দণ্ড

১৬০। কোনো ব্যক্তি, সন্তোষজনক কারণ ব্যতিরেকে, ধারা ১২৯ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান লংঘন করিয়া মীমাংসাকারীর নিকট হাজির না হইলে বা প্রতিনিধি প্রেরণ না করিলে, তিনি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, এবং অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

১৬১। কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এমন প্রত্যেক পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটিত করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ প্রতিরোধের জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই ধারায়-

 

 

 

(ক)   ‘‘কোম্পানি’’ বলিতে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি সংঘ এবং সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং

 

 

 

(খ)   বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘‘পরিচালক’’ বলিতে উহার কোনো অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যকেও বুঝাইবে।

অপরাধের বিচার

১৬২।  (১) এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় কোনো অপরাধ, এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত ইপিজেড শ্রম আদালত ব্যতীত অন্য কোনো আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে না।

 

 

 

(২) এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমল অযোগ্য (non-cognizable) এবং জামিনযোগ্য (bailable) হইবে।

অভিযুক্তি তামাদি

১৬৩ এই আইন বা তদধীন কোনো বিধি বা প্রবিধানে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ইহাদের অধীন কোনো অপরাধ কোনো শ্রম আদালত বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না যদি না তৎসম্পর্কে অভিযোগ সংঘটিত হইবার ০৬ (ছয়) মাসের মধ্যে তা পেশ করা হয়।

ত্রয়োদশ অধ্যায়

ভবিষ্য তহবিল

ভবিষ্য তহবিল গঠন

১৬৪।  (১) প্রতিটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক উহার শ্রমিকগণের জন্য একটি ভবিষ্য তহবিল গঠন করিবেন।

 

 

 

(২) ভবিষ্য তহবিলের গঠন, পরিচালনা ও অন্যান্য বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে

 

 

 

(৩) ভবিষ্য তহবিলের সদস্যদের বিদ্যমান কোনো আর্থিক বা প্রদত্ত অন্য কোনো সুবিধাদি মালিক কমাইতে পারিবে না।

ভবিষ্য তহবিল অক্রোকযোগ্য

১৬৫।   (১) কোনো শ্রমিকের ভবিষ্য তহবিলের হিসাবে যে অর্থ জমা থাকে সে অর্থ কোনো ভাবেই হস্তান্তর যোগ্য বা দায়বদ্ধ যোগ্য হইবে না এবং উক্ত শ্রমিক কোনো কর্জ বা দায় সম্পর্কে কোনো আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ডিক্রী বা রায়ের অধীন উহা ক্রোকযোগ্য হইবে না অথবা দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭ (১৯৯৭ সনের ১০ নং আইন) এর অধীন নিযুক্ত কোনো রিসিভার উক্তরূপ কোনো অর্থ দাবি করিবার অধিকারী হইবেন না।

 

 

 

(২) কোনো শ্রমিকের মৃত্যুর সময় তাহার ভবিষ্য তহবিলের হিসাবে যে অর্থ জমা থাকে সে অর্থ, অন্য কোনো আইনের অধীন অনুমোদিত কর্তন সাপেক্ষে, তাহার মনোনীত ব্যক্তির উপর ন্যস্ত হইবে, এবং তাহার মৃত্যুর পূর্বে তাহার বা তাহার মনোনীত ব্যক্তির কোনো কর্জ বা দায় হইতে ইহা মুক্ত থাকিবে।

অন্য কোনো কর্জের উপর চাঁদা প্রদান অগ্রাধিকার পাইবে

১৬৬।  এই অধ্যায়ের অধীন কোনো চাঁদা অনাদায়ী থাকিলে উহা যদি মালিকের দেউলিয়া সাব্যস্ত হইবার পূর্বে প্রদেয় হয় অথবা গুটাইয়া ফেলার আদেশাধীন কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে উহা যদি উক্ত আদেশের পূর্বে প্রদেয় হয় তাহা হইলে অনাদায়ী চাঁদা সংক্রান্ত দায় দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭ (১৯৯৭ সনের ১০ নং আইন) এর ধারা ৭৫ অথবা কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ধারা ২৩০ এর অধীন এইরূপ কর্জের অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যাহা উক্ত দেউলিয়া বা কোম্পানির সম্পত্তি বণ্টনের সময় অন্য সকল কর্জের উপর অগ্রাধিকার পাইবে।

চতুর্দশ অধ্যায়

প্রশাসন, পরিদর্শন ইত্যাদি

নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), ইত্যাদি

১৬৭।   (১) আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), উপ-পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), সহকারী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক) এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কর্মকর্তা জোনসমূহের শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক বিষয়ে কার্য সম্পাদন ও দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

 

 

() নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক) এর নিম্নরূপ ক্ষমতা ও দায়িত্ব থাকিবে:

 

 

 

()   অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), উপ-পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক), সহকারী পরিচালক (শ্রম ও শিল্প সম্পর্ক) ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা বা ব্যক্তির তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা;

 

 

 

()   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধান;

 

 

 

(গ)    কোনো শিল্প বিরোধে সালিশ হিসাবে দায়িত্ব পালন;

 

 

 

(ঘ)    অংশগ্রহণকারী কমিটির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান;

 

 

 

()   এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন;

 

 

 

(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উপ-ধারা (২) এর দফা () এর অধীন নিযুক্ত কর্মকর্তাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব এবং কর্মক্ষেত্র কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে এবং তাহাদের উপর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকিবে।

 

 

 

(৪) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বাস্তবায়ন এবং জোনসমূহে শ্রমিকগণের অধিকার এবং শিল্প সম্পর্কিত বিষয়াদি পরিচালনার ভার কর্তৃপক্ষের উপর অর্পিত থাকিবে।

প্রধান পরিদর্শক, ইত্যাদি

১৬৮।  (১) প্রধান পরিদর্শক ও অন্য পরিদর্শক নির্বাহী চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করিতে পারিবে।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্যে ‘‘প্রধান পরিদর্শক ও অন্য পরিদর্শক’’ অর্থ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর বিংশ অধ্যায়ের অধীন নিযুক্ত প্রধান পরিদর্শক ও অন্যান্য পরিদর্শক।

 

 

 

(২) অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

 

 

 

() পরিদর্শন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে নির্বাহী চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

মহাপরিদর্শক, পরিদর্শন, ক্ষমতা ইত্যাদি

১৬৯  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে মহাপরিদর্শক, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, যুগ্ম মহাপরিদর্শক, উপ-মহাপরিদর্শক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিদর্শন কর্মকর্তা এবং পরিদর্শক জোনসমূহের শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট কার্য সম্পাদন করিবেন।

 

 

 

(২) মহাপরিদর্শকের নিম্নরূপ ক্ষমতা ও দায়িত্ব থাকিবে:

 

 

 

(ক)   তাহার এখতিয়ারাধীন সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণ; 

 

 

 

(খ)   লিখিত সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, তাহার কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব কোনো অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার উপর অর্পণ;

 

 

 

(গ)    অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এবং পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তির তত্ত্বাবধান এবং নিয়ন্ত্রণ;

 

 

 

(ঘ)    কোনো শিল্প বিরোধে সালিশ হিসাবে দায়িত্ব পালন;

 

 

 

(ঙ)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন তত্ত্বাবধান;

 

 

 

(চ)    এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন, অপরাধ সংঘটন বা কোনো অন্যায় আচরণের জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে অভিযোগ পেশ;

 

 

 

(ছ)    এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন।

অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, পরিদর্শন, ক্ষমতা ইত্যাদি

১৭০  () অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের ক্ষমতা ও দায়িত্ব হইবে নিম্নরূপ :

 

 

 

(ক)   তাহার এখতিয়ারাধীন জোনের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণ; 

 

(খ)   প্রয়োজনীয় সহকারী বা সহযোগী সহকারে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান, কোনো স্থান, আংঙ্গিনা, যানবাহনে যেকোনো সময়ে প্রবেশ, পরিদর্শন এবং পরীক্ষা কার্য পরিচালনা;

 

 

 

()    এই আইন বা কোনো বিধি, প্রবিধান প্রয়োগ সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে ইহার অধীন দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে কোনো মালিকের নিকট হইতে কোনো রেকর্ড, রেজিস্টার, বা অন্য কোনো দলিল-দস্তাবেজ তলব করিতে এবং ইহা আটক করিতে পারিবেন;

 

 

 

(ঘ)    পরিদর্শন কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তির তত্ত্বাবধান এবং নিয়ন্ত্রণ;

 

 

 

(ঙ)   এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন, অপরাধ সংঘটন বা কোনো অন্যায় আচরণের জন্য মহাপরিদর্শকের নিকট অভিযোগ পেশ;

 

 

 

()    লিখিত সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, তাহার কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব কোনো কর্মকর্তা বা পরিদর্শকের উপর অর্পণ;

 

 

 

(ছ)    এই আইন এবং উহার অধীন প্রনীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন।

 

 

 

() প্রত্যেক মালিককে এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের উদ্দেশ্যে, সকল রেকর্ড, রেজিস্টার, এবং অন্য কোনো দলিল-দস্তাবেজ পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের নির্দেশ অনুযায়ী উপস্থাপন করিতে হইবে, এবং চাহিদা অনুযায়ী তৎসম্পর্কে অন্য কোনো তথ্যও সরবরাহ করিতে হইবে

 

 

 

(৩) মালিককে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান লে-অফের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবার পূর্বে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক অথবা তাঁহার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করিতে হইবে।

আপিল

১৭১  (১) এই অধ্যায়ের অধীন পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির কোনো আদেশ বা সিদ্ধান্তে সংক্ষুদ্ধ কোনো মালিক উক্ত আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদেশ বা সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিষয়ে নির্বাহী চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

পঞ্চদশ অধ্যায়

মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল, ইত্যাদি

মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল গঠন ও উদ্দেশ্য

১৭২।   ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য একটি মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থাকিবে।

 

 

 

(২) মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল এর উদ্দেশ্য হইবে :

 

 

 

(ক)   আপৎকালীন সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা, ইত্যাদি ব্যয় নির্বাহ;

 

 

 

(খ)   এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রশাসনিক, উন্নয়নমূলক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ।

মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিলের অর্থের উৎস, ইত্যাদি

১৭৩।   নিম্নবর্ণিত হারে ও পদ্ধতিতে মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিলের অর্থ আদায়যোগ্য হইবে, যথা :-

 

 

 

(ক) শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কার্যাদেশ (purchase order) এর বিপরীতে প্রাপ্ত নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ ;

 

 

 

(খ)   ক্রেতা বা কার্যাদেশ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অনুদান;

 

 

 

(গ)    সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

 

 

(ঘ)    দেশি-বিদেশি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুদান;

 

 

 

(ঙ)   শ্রমিক কর্তৃক প্রদত্ত নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ;

 

 

 

(চ)    তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা।

 

 

 

ব্যাখ্যা : এই ধারার উদ্দেশ্যে “ক্রেতা বা কার্যাদেশ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান” বলিতে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানকে বুঝাইবে।

মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, অর্থ ব্যয়, ইত্যাদি

১৭৪।  মালিক-ক্রেতা-শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, অর্থের ব্যবহার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

ষোড়শ অধ্যায়

বিবিধ

অপ্রাপ্ত-বয়স্ক শ্রমিক নিয়োগে বাধা-নিষেধ

১৭৫।  কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে অপ্রাপ্ত-বয়স্ক শ্রমিক নিয়োগ করা যাইবে না।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘অপ্রাপ্ত-বয়স্ক’’ অর্থ ১৮ (আঠারো) বৎসর বয়স পূর্ণ করেন নাই এমন কোনো ব্যক্তি।

জোরপূর্বক বা বল প্রয়োগে কর্মে নিয়োগে বাধা-নিষেধ

১৭৬।  কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মে জোরপূর্বক বা বল প্রয়োগে কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ করা যাইবে না। 

নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিপর্যয় বা ক্ষতির কারণে মালিক-শ্রমিকের সম্পর্ক

১৭৭।  কোনো আকষ্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মানুষের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিপর্যয় বা জরুরি প্রয়োজনে কোনো শিল্প স্থানান্তর বা কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ হইলে সেই ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক, কর্তৃপক্ষ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারণ করিতে পারিবে। 

শ্রমিক কল্যাণ সমিতি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশনের  কতিপয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ

১৭৮।  (১) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি উহার গঠনতন্ত্রে লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হিসাবে বর্ণিত হয় নাই এইরূপ কোনো কর্মকান্ডে জড়িত থাকিতে পারিবে না।

 

 

 

(২) কোনো জোনে গঠিত কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন,  প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন অথবা বেসরকারি সংস্থার সহিত কোনোরূপ সম্পর্ক স্থাপন বা রক্ষা করিতে পারিবে না।

 

 

 

(৩) কোনো মালিক কর্তৃক উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত নালিশের ভিত্তিতে তদন্ত অনুষ্ঠান করিয়া অনুরূপ অভিযোগ সত্য বলিয়া সিদ্ধান্তে উপনীত হইলে, নির্বাহী চেয়ারম্যান অবিলম্বে উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির বা, ক্ষেত্রমত, বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশনের নিবন্ধন বাতিল করিবেন, এবং অনুরূপ বাতিল হইবার পর উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রমিকগণ বা, ক্ষেত্রমত, শ্রমিক কল্যাণ সমিতিসমূহ পরবর্তী ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি বা, ক্ষেত্রমত, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন  গঠন করিতে পারিবে না।

 

 

 

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, কোনো মালিক, উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতির ফেডারেশন, ইপিজেড শ্রম আদালতে উহার বিরুদ্ধে আবেদন করিতে পারিবে, এবং ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে, এবং উক্ত বিষয়ে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত আদেশই চূড়ান্ত হইবে।

 

 

 

(৫) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রাজনৈতিক দল বলিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত রাজনৈতিক দলকে বুঝাইবে, এবং অনুরূপ রাজনৈতিক দলের সহিত অধিভুক্ত যে কোনো অংগ সংগঠনও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

তহবিল গঠন

১৭৯।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিনিয়োগকারীদের নিকট হইতে সংগৃহীত অনুদানের মাধ্যমে একটি তহবিল গঠিত হইবে।

 

 

 

(২) তহবিল হইতে, ইপিজেড শ্রম ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা এবং ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য বিচারকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ এবং মীমাংসাকারী, সালিসকারী, কাউন্সিলর ও পরিদর্শক এর বেতন, ভাতা ও চাকরির শর্তাবলি অনুসারে প্রদেয় অন্যান্য অর্থ প্রদান করা হইবে এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রশাসনিক এবং উন্নয়নমূলক ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।

 

 

 

(৩) অনুদান সংগ্রহ, তহবিল পরিচালনা ব্যবস্থাপনা, অর্থের ব্যবহার, ইত্যাদি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

নির্বাহী চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

১৮০।   নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব থাকিবে, যথা :-

 

 

 

(ক)   শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নিবন্ধন এবং তদুদ্দেশ্যে রেজিস্টার সংরক্ষণ;

 

 

 

(খ)   এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের বিধান লঙ্ঘন করিবার অথবা অন্যায় আচরণ করিবার অথবা কোনো অপরাধ সংঘটন করিবার কারণে কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি বা মালিকের বিরুদ্ধে এ আইনের অধীন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;

 

 

 

(গ)    কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির বৈধতা এবং যৌথ দর-কষাকষি এজেন্ট হিসাবে উহার কার্য করিবার ক্ষমতার প্রশ্ন নির্ধারণ করা; এবং

 

 

 

(ঘ)    পদাধিকারবলে এই আইনের অধীন নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান এবং তাঁহার ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন;

 

 

 

(ঙ)   কোনো শিল্প বিরোধে সালিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন;

 

 

 

(চ)    পরিদর্শন সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা;

 

 

 

(ছ)    তাহার এখতিয়ারাধীন জোনের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণ;এবং 

 

 

 

(জ)   বিধি বা প্রবিধান দ্বারা আরোপিত ক্ষমতা প্রয়োগ বা দায়িত্ব পালন।

নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক ক্ষমতা অর্পণ

১৮১।  কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, নির্বাহী চেয়ারম্যান এই আইনের অধীন তাহার কোনো ক্ষমতা তাহার অধঃস্তন কোনো কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবেন।

নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক সময় বর্ধিতকরণ

১৮২।   এই আইনের কোনো বিধানের অধীন করণীয় কোনো কাজ বা পালনীয় কোনো কর্তব্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে করা বা পালন করা সম্ভব না হইলে, নির্বাহী চেয়ারম্যান যুক্তিসঙ্গত কারণে উক্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

জনসেবক

১৮৩। নির্বাহী চেয়ারম্যান, মীমাংসাকারী, ইপিজেড শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য দণ্ডবিধি, ১৮৬০ (১৮৬০ সনের ৪৫ নং আইন) এর ২১ ধারার অধীন সরকারি কর্মচারী হিসাবে গণ্য হইবেন।

আইনের বিধান হইতে অব্যাহতি প্রদান

১৮৪।  সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোনো জোন বা জোনসমূহে স্থাপিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক বা মালিক-শ্রেণিকে অথবা কোনো প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠান শ্রেণিকে বা ইহার কোনো অংশবিশেষকে অথবা কোনো শ্রমিক বা শ্রমিক-শ্রেণিকে এই আইনের কোনো অধ্যায় বা ধারা অথবা যে কোনো বিধানের প্রয়োগ বা মানিয়া চলা হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

নকশা অনুমোদন এবং কারখানা ভবন নির্মাণ

১৮৫।  (১) কোনো কারখানা বা কোনো শ্রেণির কারখানা ভবন নির্মাণ, প্রতিষ্ঠা বা সম্প্রসারণের জন্য কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

 

 

 

            (২) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ বহাল রাখিতে, অথবা পরিবর্তন বা বাতিল করিতে পারিবে।

কতিপয় আদেশের বিরুদ্ধে আপিল

১৮৬। (১) যেক্ষেত্রে এই আইনের অধীন কোনো কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত কোনো লিখিত আদেশ কোনো মালিকের উপর জারি করা হয় সেই ক্ষেত্রে, উক্ত মালিক আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ইহার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন, এবং উক্ত আপিল কর্তৃপক্ষ, এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি বা প্রবিধান সাপেক্ষে, উক্ত আদেশ বহাল রাখিতে, অথবা পরিবর্তন বা বাতিল করিতে পারিবে।

 

 

 

(২) এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি বা প্রবিধান এবং আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত শর্ত বা নির্দেশিত কর্মসম্পাদন সাপেক্ষে, উক্ত আপিল কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত বিবেচনা করিলে, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত, যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হইয়াছে উহা স্থগিত রাখিতে পারিবে।

শ্রমিকগণের দায়িত্ব

১৮৭।  কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে-

 

 

 

(ক)   শ্রমিকগণের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করিবার জন্য গৃহীত কোনো ব্যবস্থার বা স্থাপিত কোনো যন্ত্রপাতি ইচ্ছাকৃতভাবে অপব্যবহার বা উহার ব্যবহারে হস্তক্ষেপ করিবেন না;

 

 

 

(খ)   ইচ্ছাকৃতভাবে বা যুক্তি সংগত কারণ ব্যতিরেকে এমন কোনো কিছু করিবেন না যাহাতে তাহার বা অন্য কোনো ব্যক্তির বিপদ হইতে পারে;

 

 

 

(গ)    শ্রমিকগণের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার জন্য স্থাপিত কোনো যন্ত্রপাতি বা ব্যবস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহারে গাফিলতি করিবেন না।

মালিকের দায়-দায়িত্ব

১৮৮।   কোনো মালিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই আইনের কোনো বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থতার ফলে যদি উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকগণ কোনো ইপিজেড অথবা জোন অথবা তৎসংলগ্ন এলাকায় কোনো উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর করে তাহা হইলে উহার দায়-দায়িত্ব উক্ত মালিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তাইবে এবং কর্তৃপক্ষ উক্ত মালিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

মহিলাদের প্রতি আচরণ

১৮৯।  কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে কোনো মহিলা নিযুক্ত থাকিলে, তিনি যে পদমর্যাদারই হউক না কেন, তাহার প্রতি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অন্য কেহ এমন কোনো আচরণ করিতে পারিবেন না যাহা অশ্লীল কিংবা অভদ্রজনোচিত বলিয়া গণ্য হইতে পারে, কিংবা যাহা উক্ত মহিলার শালীনতা ও সম্ভ্রমের পরিপন্থি।

নোটিশ জারি ও বিবরণী পেশ

১৯০।   কর্তৃপক্ষ প্রবিধান দ্বারা-

 

(ক)   এই আইনের অধীন কোনো আদেশ জারির পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে; এবং

 

(খ)   কোনো মালিককে, এই আইনের উদ্দেশ্যে নিয়মিত বা সময়ে সময়ে উহাতে উল্লিখিত বিবরণী দাখিলের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে।

শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাচনের পর্যবেক্ষণ, পদ্ধতি ইত্যাদি

১৯১  (১) কর্তৃপক্ষ, মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ এবং নিরপেক্ষ উৎস হইতে নির্বাচিত বা মনোনীত প্রতিনিধিগণ এই অধ্যায়ের অধীন অনুষ্ঠেয় কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতির কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুষ্ঠেয় কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

কতিপয় ক্ষেত্রে চাকরির বর্তমান শর্তাবলী সংরক্ষণ

১৯২।  এই আইন প্রবর্তনের সময় কোনো শ্রমিক যে মালিকের অধীন যে সকল অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিতেছিলেন সেই মালিকের অধীন যতদিন কর্মরত থাকিবেন ততদিন সেই সকল অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিবেন, যদি না তাহার উক্ত অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন প্রদত্ত অধিকার ও সুযোগ সুবিধা হইতে অধিকতর অনুকূল হয়।

আইন, বিধি এবং প্রবিধানের সার-সংক্ষেপ প্রদর্শন

১৯৩। (১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক উহার বা উহার কোনো কর্মস্থলে প্রধান প্রবেশ পথে অথবা উহার নিকটে কোনো প্রকাশ্য জায়গায় বা যাতায়াতগম্য স্থানে এই আইন এবং বিধি ও প্রবিধানের জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ বিধানসমূহের সার-সংক্ষেপ সম্বলিত একটি নোটিশ লটকাইয়া দিবেন।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদর্শিত সকল নোটিশ পরিষ্কার বা সুষ্ঠুভাবে পঠিতব্য অবস্থায় রাখিতে হইবে।

 

 

 

(৩) কর্তৃপক্ষ মালিককে তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা কল্যাণ সম্পর্কে কোনো বোর্ড অথবা কোনো নোটিশ বা পোস্টার লটকাইয়া দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন।

তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা

১৯৪।  এই আইন অথবা কোনো বিধি বা প্রবিধানের অধীন দায়িত্ব পালনরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষ উহার দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজন হইলে কোনো মালিককে তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোনো রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ বা তথ্য সরবরাহের জন্য অথবা অন্য কোনো কাজ সম্পাদনের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে, এবং উক্ত মালিককে উক্তরূপ নির্দেশ পালন করিতে হইবে।

আদেশ, নোটিশ, ব্যাখ্যা বা সার্কুলার জারির ক্ষমতা

১৯৫।   এই আইন বা তদধীন প্রণিত বিধানাবলি প্রতিপালনের জন্য কর্তৃপক্ষ আদেশ, ফরম, নোটিশ, ব্যাখ্যা বা সার্কুলার জারি এবং প্রকাশ করিতে পারিবে

নিয়োগ সম্পর্কে অনুমান

১৯৬।  যদি কোনো ব্যক্তিকে কোনো কারখানায় উহার কাজ চলাকালে, আহার বা বিশ্রামের জন্য বিরতির সময় ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে, অথবা উহার কোনো যন্ত্রপাতি চালু থাকাকালে পাওয়া যায় তাহা হইলে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত, তিনি উক্ত সময়ে কারখানায় নিযুক্ত ছিলেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

সমকাজের জন্য সম-মজুরি প্রদান

১৯৭। কোনো শ্রমিকের জন্য কোনো মজুরি নির্ধারণ বা নিম্নতম মজুরির হার স্থিরীকরণের ক্ষেত্রে, একই প্রকৃতির বা একই মান বা মূল্যের কাজের জন্য মহিলা এবং পুরুষ শ্রমিকগণের জন্য সমান মজুরির নীতি অনুসরণ করিতে হইবে; এবং এতৎসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে নারী-পুরুষ ভেদের কারণে কোনো বৈষম্য করা যাইবে না।

সাধারণ ক্ষেত্রে কোর্ট ফি

১৯৮।  এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, সরকার বিধি দ্বারা, এই আইনের অধীন কোনো দরখাস্ত, কার্যধারা বা আপিলের জন্য কোনো কোর্ট ফিস অথবা অন্য কোনো ফিস নির্ধারণ করিতে পারিবে।

কতিপয় প্রশ্ন, ইত্যাদি সম্বন্ধে বাধা-নিষেধ । - 

১৯৯।   এই আইনের অধীন কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অথবা বক্তব্য প্রদান করিতে বাধ্য করা যাইবে না যাহা তাহাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অপরাধের সহিত জড়িত করিতে পারে।

সরল বিশ্বাসে কৃত কাজ-কর্ম রক্ষণ

২০০ এই আইন ও এর অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান, প্রশাসনিক আদেশ বা নির্দেশনার অধীন সরল বিশ্বাসে সম্পাদিত বা সম্পাদনের জন্য অভিষ্ঠ কোনো কাজের জন্য কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা রুজু বা অন্য কোনো আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।

অন্য আদালতের এখতিয়ারের উপর বাধা-নিষেধ

২০১ এই আইনের অধীন ইপিজেড শ্রম আদালত এবং ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রহণযোগ্য বা বিচারযোগ্য কোনো মোকদ্দমা, অভিযোগ অথবা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারা অন্য কোনো আদালত গ্রহণ করিতে বা বিচার করিতে পারিবে না।

তপশিল সংশোধনের ক্ষমতা

২০২  সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

২০৩।   (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

২০৪। (১) Bangladesh Export Processing Zones Authority Act, 1980 (Act No. XXXVI of 1980) এর section 3A এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পর শ্রমিক নিয়োগ, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সম্পর্ক, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, মজুরি পরিশোধ, কার্যকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্রমিকের জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পরিদর্শন, ইত্যাদি সম্পর্কিত কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত কোনো বিষয়ে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে।

২০১০ সনের ৪৩নং আইন এর রহিতকরণ ও হেফাজত

২০৫।   (১)  ইপিজেড শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও শিল্প সম্পর্ক আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪৩নং আইন) এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

 

 

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও রহিত আইন এর অধীন কৃত কোনো কার্যক্রম অথবা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা এই আইনের অধীন এমনভাবে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিযা গণ্য হইবে যেন, ‍উক্ত কৃত কার্যক্রম অথবা গৃহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার সময় এই আইন বলবৎ ছিল।

রহিতকরণ ও হেফাজত

২০৬।   (১)  বাংলাদেশ  ইপিজেড শ্রম অধ্যাদেশ, ২০১৯ ( ২০১৯ সনের ১ নং অধ্যাদেশ) এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

 

 

 

(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত অধ্যাদেশের অধীন কৃত কোনো কাজ বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত বলিয়া গণ্য হইবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

২০৭।   (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

 

(২) ইংরেজি পাঠ এবং মূল বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs