প্রিন্ট ভিউ
Bangladesh Veterinary Practitioners Ordinance, 1982 রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হইয়াছে এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ এ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পাইয়াছে; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হইয়াছে; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে, Bangladesh Veterinary Practitioners Ordinance, 1982 (Ordinance No. XXX of 1982) রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজন;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন, ২০১৯ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কিছু না থাকিলে, এই আইনে -
(১) ‘‘কাউন্সিল’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল;
(২) ‘‘কার্যনির্বাহী কমিটি’’ অর্থ ধারা ১০ এর অধীন গঠিত কার্যনির্বাহী কমিটি;
(৩) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি বা, ক্ষেত্রমত, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
(৪) ‘‘নিবন্ধন বহি’’ অর্থ কাউন্সিল কর্তৃক সংরক্ষিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার এবং প্যারাভেটদের নিবন্ধন বহি;
(৫) ‘‘নিবন্ধিত প্যারাভেট’’ অর্থ কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত কোনো প্যারাভেট;
(৬) ‘‘নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার’’ অর্থ কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত কোনো ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার;
(৭) ‘‘পেশাগত অসদাচরণ’’ অর্থ এই আইন, বিধি, প্রবিধান বা পেশাগত বিষয়ে জারিকৃত কোনো নীতিমালা দ্বারা অর্পিত কোনো পেশাগত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা বা অবহেলা বা কাউন্সিল কর্তৃক প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত কোনো অসদাচরণ;
(৮) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(৯) ‘‘প্রাণি’’ অর্থ মানুষ ব্যতীত সকল প্রাণি;
(১০) ‘‘প্যারাভেট’’ অর্থ জীববিদ্যা বিষয়সহ বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণসহ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান হইতে অন্যূন ৩(তিন) বৎসর মেয়াদী ভেটেরিনারি কোর্সে উত্তীর্ণ কোনো ব্যক্তি;
(১১) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(১২) ‘‘ভেটেরিনারি’’ অর্থ ভেটেরিনারি শিক্ষা ও পেশায় দেশীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাণির উৎপাদন, স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা, ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়াবলি;
(১৩) ‘‘ভেটেরিনারিয়ান’’ অর্থ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান হইতে ভেটেরিনারি শিক্ষায় অন্যূন স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারী ব্যক্তি;
(১৪) ‘‘ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান’’ অর্থ কোনো আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান যাহা ভেটেরিনারি শিক্ষা পরিচালনা এবং এতদ্বিষয়ে ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা প্রশিক্ষণ প্রদান করিয়া থাকে;
(১৫) ‘‘ভেটেরিনারি প্র্যাকটিস’’ অর্থ প্রাণির চিকিৎসা, বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ, রোগ নির্ণয়, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও দমন, সম্প্রসারণ কার্যক্রম, প্রাণি ও প্রাণিজাত পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, সঙ্গ নিরোধ, গবেষণা, কৃত্রিম প্রজনন, গণস্বাস্থ্য, ভেটেরিনারি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান বা পরামর্শ প্রদান;
(১৬) ‘‘ভেটেরিনারি শিক্ষা’’ অর্থ প্রাণির উৎপাদন, স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ, চিকিৎসা, ব্যবস্থাপনা এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তপশিলে উল্লিখিত কোনো ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা প্রশিক্ষণ;
(১৭) ‘‘রেজিস্ট্রার’’ অর্থ কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার;
(১৮) ‘‘সদস্য’’ অর্থ কাউন্সিলের কোনো সদস্য;
(১৯) ‘‘সভাপতি’’ অর্থ কাউন্সিলের সভাপতি; এবং
(২০) ‘‘সহ-সভাপতি’’ অর্থ কাউন্সিলের সহ-সভাপতি।
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
৪। (১) Bangladesh Veterinary Practitioners Ordinance,1982 (Ordinance No. XXX of 1982) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Veterinary Council এই আইনের অধীন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল নামে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) কাউন্সিল একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা করা যাইবে।
৫। (১) কাউন্সিলের পরিচালনা ও প্রশাসন একটি কার্যনির্বাহী কমিটির উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং কার্যনির্বাহী কমিটি কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
(২) কার্যনির্বাহী কমিটি উহার ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে কাউন্সিলের নিকট দায়ী থাকিবে এবং কাউন্সিল কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশ ও আদেশ অনুসরণ করিবে।
৬। কাউন্সিল গঠন, ইত্যাদি ।- (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে কাউন্সিল গঠিত হইবে, যথা :-
(ক) মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর;
(খ) মহাপরিচালক, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর;
(গ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(ঘ) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত উক্ত অধিদপ্তরে কর্মরত ১ (এক) জন জ্যেষ্ঠ ভেটেরিনারিয়ান;
(ঙ) ডিন, ভেটেরিনারি বিজ্ঞান অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়;
(চ) ডিন, ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়;
(ছ) (ঙ) ও (চ) এ বর্ণিত বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত ভেটেরিনারি বিষয়ে পাঠদানকারী অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনদের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন নিবন্ধিত ভেটেরিনারিয়ান;
(জ) বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল;
(ঝ) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত ভেটেরিনারি বিষয়ে স্বীকৃত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিমাউন্ট ভেটেরিনারি এন্ড ফার্ম কোরের ১ (এক) জন সদস্য;
(ঞ) সভাপতি, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন;
(ট) ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার, তন্মধ্যে ১ (এক) জন মহিলা হইবেন;
(ঠ) বাংলাদেশের প্রত্যেক প্রশাসনিক বিভাগ হইতে নির্ধারিত উপায়ে নির্বাচিত ১ (এক) জন করিয়া নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার; এবং
(ড) রেজিস্ট্রার, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কাউন্সিলের সদস্যগণ তাহাদের মধ্য হইতে কাউন্সিলের ১ (এক) জন সভাপতি ও ১ (এক) জন সহ-সভাপতি নির্বাচন করিবেন।
(৩) কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।
(৪) কাউন্সিলের মেয়াদ হইবে ৪ (চার) বৎসর এবং উক্ত মেয়াদের জন্য কাউন্সিলের সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, পরবর্তী কাউন্সিল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত কাউন্সিল স্বীয় দায়িত্ব পালন করিবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে সরকার সভাপতি বা সহ-সভাপতিকে বা, ক্ষেত্রমত, উভয়কে তাহার বা তাহাদের পদ হইতে যে কোনো সময় জনস্বার্থে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ অব্যাহতি প্রদানের পূর্বে সভাপতি বা সহ-সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।
(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন সভাপতিকে অব্যাহতি প্রদান করা হইলে বা উপ-ধারা (৮) এর অধীন তাহার পদত্যাগপত্র গৃহীত হইলে সহ-সভাপতি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৭) সভাপতি ও সহ-সভাপতি উভয়কেই অব্যাহতি প্রদান করা হইলে বা উপ-ধারা (৮) এর অধীন তাহাদের পদ শূন্য হইলে কাউন্সিলের সদস্যগণ নিজেদের মধ্য হইতে ১ (এক) জন সভাপতি এবং ১ (এক) জন সহ-সভাপতি নির্বাচিত করিবেন যাহারা কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদকালীন সময়ে স্বীয় দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৮) সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং কাউন্সিলের যে কোনো সদস্য যে কোনো সময় সরকারের নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং সরকার কর্তৃক পদত্যাগপত্র গৃহীত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য হইবে।
(৯) উপ-ধারা (১) এর দফা (ট) এবং (ঠ) এর অধীন মনোনীত ও নির্বাচিত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়ন বা নির্বাচনের তারিখ হইতে পরবর্তী ৪ (চার) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, মনোনয়নকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোনো সময় উক্তরূপ মনোনীত বা নির্বাচিত কোনো সদস্যকে জনস্বার্থে সদস্য পদ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
(১০) উপ-ধারা (৮) বা (৯) এর অধীন কোনো সদস্য পদ শূন্য হইবার কারণে কাউন্সিলের সভায় কোরাম সংকট সৃষ্টি হইলে সরকার এই আইনের বিধান অনুসরণ করিয়া উক্ত শূন্য পদে সদস্য নিয়োগ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যগণ কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।
৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার এবং প্যারাভেটদের নিবন্ধন ও সনদ প্রদান এবং বাতিল, নিয়ন্ত্রণ এবং তাহাদের আইনগত অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা সংরক্ষণ;
(খ) ভেটেরিনারি শিক্ষা, পেশা ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং ক্ষেত্রমত এতদ্বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা;
(গ) ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের পেশাগত বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন, তদারকি, বাস্তবায়ন;
(ঘ) ভেটেরিনারি শিক্ষা কোর্সে ভর্তির নির্দেশিকা ও শর্তাদি নির্ধারণ;
(ঙ) ভেটেরিনারি শিক্ষার কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন, ডিগ্রির মান উন্নয়ন, ইন্টার্নশিপ নীতিমালা প্রণয়ন;
(চ) ভেটেরিনারি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বীকৃতি প্রদান;
(ছ) ভেটেরিনারি বিষয়ে বিদেশি কোনো ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান হইতে প্রদত্ত কোনো ডিগ্রি বা ডিপ্লোমার সমতা মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান;
(জ) ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিশেষায়িত জ্ঞানের সুযোগ সৃষ্টি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঝ) ভেটেরিনারিয়ানদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন;
(ঞ) ভেটেরিনারিয়ানদের নিবন্ধন ও সনদ ফি, নবায়ন ফি এবং এই আইনের অধীনে স্বীকৃত অন্য কোনো ফি নির্ধারণ করা;
(ট) অসদাচরণের জন্য কোনো ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার ও প্যারাভেটদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং
(ঠ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত আনুষিক কার্যাবলি সম্পাদন।
৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কাউন্সিল উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) প্রতি বৎসর কাউন্সিলের অন্যূন ২ (দুই) টি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৪) সভাপতি কাউন্সিলের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৫) কাউন্সিলের অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কাউন্সিলের সভার কোরাম গঠিত হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
(৬) সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে কাউন্সিলের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
(৭) শুধু কাউন্সিলের কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা কাউন্সিল গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কাউন্সিলের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত বাতিল হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৯। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে কাউন্সিলের একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হইবে, যথাঃ-
(ক) মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;
(খ) জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন সংসদ-সদস্য তন্মধ্যে ১(এক) জন মহিলা সংসদ-সদস্য হইবেন;
(গ) সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়;
(ঘ) নিবন্ধিত ভেটেরিনারিয়ানদের মধ্য হইতে, কাউন্সিলের সহিত পরামর্শ সাপেক্ষে, সরকার কর্তৃক মনোনীত ৪ (চার) জন সদস্য, যাহারা হইবেন-
(অ) বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের ১ (এক) জন প্রাক্তন সভাপতি;
(আ) বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বা প্রাক্তন ১ (এক) জন উপাচার্য বা ভেটেরিনারি অনুষদের ১ (এক) জন ডিন;
(ই) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক; এবং
(ঈ) বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশনের ১(এক) জন প্রাক্তন সভাপতি।
(২) কাউন্সিলের সদস্য-সচিব উপদেষ্টা কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবেন।
(৩) প্রতি বৎসর কমপক্ষে ১ (এক) বার উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৪) ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সার্বিক কার্যক্রম ও সেবার মান উন্নয়নের জন্য কাউন্সিল, সময় সময় উপদেষ্টা কমিটির নিকট হইতে পরামর্শ এবং দিক-নির্দেশনা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(৫) উপদেষ্টা কমিটির অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
(৬) উপদেষ্টা কমিটির মেয়াদ হইবে ৪ (চার) বৎসর এবং উক্ত মেয়াদে সদস্যগণ স্বীয় দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৭) উপদেষ্টা কমিটির যে কোনো সদস্য কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
১০। (১) কাউন্সিলের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি থাকিবে।
(২) কাউন্সিলের সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং কাউন্সিল কর্তৃক নির্বাচিত উহার ৩ (তিন) জন সদস্যসহ মোট ৫ (পাঁচ) জন সদস্য সমন্বয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হইবে।
(৩) কাউন্সিলের সভাপতি, সহ-সভাপতি, পদাধিকারবলে, কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং সহ-সভাপতি হইবেন।
(৪) কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক সম্পাদিত যাবতীয় কার্য কাউন্সিলের পরবর্তী সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করিতে হইবে।
১১। (১) কাউন্সিল উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ১ (এক) জন রেজিস্ট্রার নিয়োগ করিবে।
(২) রেজিস্ট্রার কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
(৩) রেজিস্ট্রারের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
১২। কাউন্সিল উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিল উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের সুবিধার্থে এক বা একাধিক কমিটি গঠন এবং এইরূপ কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে।
১৪। কোনো ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিলের স্বীকৃতি ব্যতিরেকে ভেটেরিনারি শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ, পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, কোর্স পরিচালনা, প্রশিক্ষণ প্রদান অথবা এতদ্সংক্রান্ত কোনো সনদ, ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা প্রদান করিতে পারিবে না।
১৫। (১) বাংলাদেশে অবস্থিত ভেটেরিনারি শিক্ষা বিষয়ক যোগ্যতার সনদ প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠানকে ভেটেরিনারি শিক্ষার স্বীকৃতির জন্য কাউন্সিলের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে কাউন্সিল, এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত মানদণ্ড ও নীতিমালার আলোকে, প্রার্থিত প্রতিষ্ঠান যোগ্য হইলে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ভেটেরিনারি শিক্ষার স্বীকৃতি প্রদান করিবে এবং অযোগ্য হইলে আবেদনপত্র নামঞ্জুর করিয়া ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি প্রদান করা হইলে কাউন্সিল উক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম, ডিগ্রির নাম এবং স্বীকৃতি প্রদানের তারিখ উল্লেখপূর্বক প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষের শুরুতে একটি তালিকা প্রকাশ করিবে।
(৪) বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত ভেটেরিনারি শিক্ষা বিষয়ে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিকে এই আইনের অধীনে উক্ত ডিগ্রি বা ডিপ্লোমার স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী বাংলাদেশের বাহিরে অর্জিত ডিগ্রি সংশ্লিষ্ট দেশের কাউন্সিল বা অনুরূপ সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত হইলে, আবেদনকারী, কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিবে এবং এইরূপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলে কাউন্সিল আবেদনকারীর ডিগ্রির স্বীকৃতি প্রদান করিবে।
১৬। (১) কাউন্সিলের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক-
(ক) প্রণীত পাঠ্যসূচি বা তদকর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষার মান নির্ধারিত মানদণ্ডের নিম্নে; অথবা
(খ) সরকার ও কাউন্সিল, কর্তৃক, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ বা নীতিমালা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হইতেছে না,
তাহা হইলে কাউন্সিল, প্রয়োজনীয় মন্তব্যসহ, তদকর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাখ্যা চাহিয়া নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ব্যাখ্যা প্রাপ্ত হইবার পর বা নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যাখ্যা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে, কাউন্সিল, প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার স্বীকৃতি প্রত্যাহার করিতে পারিবে।
১৭। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি ভেটেরিনারি প্র্যাকটিস করিতে বা নিজেকে ভেটেরিনারি চিকিৎসক বা ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বলিয়া পরিচয় প্রদান করিতে পারিবেন না।
১৮। (১) এই আইনের অধীন কাউন্সিল ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার ও প্যারাভেটদের নিবন্ধন প্রদানের পূর্বে, প্রয়োজনে, পেশাগত শিক্ষা ও দক্ষতার উপর নির্ধারিত পদ্ধতিতে একটি যাচাই পরীক্ষা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে।
১৯। (১) কোনো ব্যক্তিকে ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার হিসাবে নিবন্ধনের জন্য তপশিলের ক্রমিক নম্বর ১ ও ২ অথবা ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (৫) এর অধীন স্বীকৃত ডিগ্রিসহ ভেটেরিনারি বিষয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফি প্রদান সাপেক্ষে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর কাউন্সিল-
(ক) আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাবলি পরীক্ষা করিয়া নির্ধারিত মানদণ্ড ও নীতিমালার আলোকে এবং ধারা ১৮ এর অধীন যদি কোনো পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় তাহা হইলে উক্ত পরীক্ষায় কৃতকার্য হইলে ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার হিসাবে উক্ত ব্যক্তিকে নিবন্ধন করিবে; এবং
(খ) আবেদনকারী নিবন্ধনের অযোগ্য হইলে তাহাকে নিবন্ধন করিবে না এবং আবেদনটি নামঞ্জুরকরতঃ উহার কারণ উল্লেখক্রমে আবেদনকারীকে অবহিত করিবে।
(৩) কাউন্সিল উপ-ধারা (২) এর অধীন নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের নাম ও এতদসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য একটি নিবন্ধন বহিতে অন্তর্ভুক্ত করিবে এবং উহা প্রকাশ ও সংরক্ষণ করিবে।
(৪) নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার কর্তৃক প্রতি ৪ (চার) বৎসর অন্তর অন্তর নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাহার নিবন্ধন নবায়ন করিতে হইবে।
(৫) কোনো নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার ভেটেরিনারি বিষয়ে কোনো অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা বা সনদ অর্জন করিলে কাউন্সিল তাহার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিবন্ধন বহিতে তাহার নামের বিপরীতে উক্তরূপ যোগ্যতা অন্তর্ভুক্ত করিবে।
(৬) নিবন্ধন বহি Evidence Act, 1872 (Act No. I of 1872) এর অধীন সরকারি দলিল বলিয়া গণ্য হইবে।
২০। (১) কাউন্সিল, ধারা ১৯ এর অধীন নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার ও ধারা ২৫ এর অধীন নিবন্ধিত প্যারাভেটদের নির্ধারিত পদ্ধতিতে সনদ প্রদান করিবে।
(২) এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে Bangladesh Veterinary Practitioners Ordinance, 1982 এর অধীন নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের নিবন্ধন এই ধারার অধীন প্রদত্ত সনদ বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) বিধি, প্রবিধান, নীতিমালা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সিল সনদ প্রদানের বিষয়ে সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধমে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করিতে পারিবে।
২১। রেজিস্টার প্রতি বৎসর নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারের নাম, ঠিকানা, ভেটেরিনারি বিষয়ে স্বীকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও উক্তরূপ যোগ্যতা অর্জনের তারিখ উল্লেখ করিয়া সরকারি গেজেটে এবং কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করিবেন।
২২। নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারগণ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য নৈতিকতার সহিত পালন করিবে।
২৩। (১) শুধুমাত্র নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বে-সরকারি বা কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরিচালিত ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ঔষধ ও খাদ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা প্রাণি জবাইখানায় ভেটেরিনারি বিষয়ক কোনো পদে নিয়োগলাভের যোগ্য হইবেন।
(২) কোনো নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারগণ তাহাদের নামের সহিত ‘‘ডাক্তার’’ বা ‘‘ডাঃ’’ উপাধি ব্যবহার করিতে এবং তদকর্তৃক প্রদত্ত সেবার জন্য কাউন্সিল কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত ফি গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(৩) আপাততঃ বলবৎ কোনো আইনের অধীন ভেটেরিনারি স্বাস্থ্য সনদ বা ভেটেরিনারি বিষয়ক অন্য কোনো সনদ স্বাক্ষর বা সত্যায়নের প্রয়োজন হইলে, শুধুমাত্র নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার এইরূপ স্বাক্ষর বা সত্যায়ন করিতে পারিবেন।
২৪। (১) কোনো ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান হইতে প্রদত্ত ভেটেরিনারি শিক্ষা বিষয়ক যোগ্যতা অর্জনকারী প্যারাভেট তাহার প্রশিক্ষণ বা ডিপ্লোমা ব্যবহার করিতে চাহিলে উহা এই আইনের অধীন কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত হইতে হইবে।
(২) কোনো প্রতিষ্ঠানকে তাহার প্রশিক্ষণ বা ডিপ্লোমা শিক্ষার স্বীকৃতির জন্য কাউন্সিলের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর কাউন্সিল, এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত মানদণ্ড ও নীতিমালার আলোকে স্বীকৃতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি প্রদান করা হইলে, কাউন্সিল উক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম, ডিপ্লোমা বা প্রশিক্ষণের নাম উল্লেখপূর্বক প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষের শুরুতে একটি তালিকা প্রকাশ করিবে।
২৫। (১) কোনো ব্যক্তি প্যারাভেট হিসাবে নিবন্ধিত হইতে চাহিলে তাহাকে তপশিলের ক্রমিক নং ৩ এ উল্লিখিত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফি পরিশোধপূর্বক কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর কাউন্সিল, নির্ধারিত মানদণ্ড ও নীতিমালার আলোকে যোগ্য বিবেচনা করিলে, আবেদনকারীকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্যারাভেট হিসাবে নিবন্ধন সনদ প্রদান করিবে।
(৩) কাউন্সিল উপ-ধারা (২) এর অধীন নিবন্ধিত প্যারাভেটগণের নাম ও এতদসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য একটি নিবন্ধন বহিতে অন্তর্ভুক্ত করিবে এবং উহা প্রকাশ ও সংরক্ষণ করিবে।
(৪) নিবন্ধিত প্যারাভেট কর্তৃক প্রতি ৪ (চার) বৎসর অন্তর অন্তর নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাহার নিবন্ধন নবায়ন করিতে হইবে।
২৬। নিবন্ধিত ও সনদপ্রাপ্ত প্যারাভেটগণ নিবন্ধিত প্র্যাকটিশনারের তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় নিম্নবর্ণিত সেবা প্রদান করিতে পারিবে, যথা:―
(ক) প্রাণির কষ্ট লাঘব বা ব্যথা উপশমের জন্য প্রাথমিক সেবা (First aid) ;
(খ) টিকা প্রদান ;
(গ) কৃত্রিম প্রজনন করা ;
(ঘ) বার্ডিজ দ্বারা খোজাকরণ;
(ঙ) ড্রেসিং ;
(চ) কাউন্সিল কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত অন্যান্য সেবা ; এবং
(ছ) সরকার কর্তৃক সময় সময়, নির্ধারিত এতদসংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক যে কোনো সেবা।
২৭। কোনো প্যারাভেট নিজেকে ভেটেরিনারি ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিতে বা তাহার নামের পূর্বে ‘‘ডাক্তার’’ বা ‘‘ডাঃ’’ উপাধি ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
২৮। (১) নিবন্ধিত কোনো ভেটেরিনারিয়ান বা প্যারাভেটের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেলে কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেটকে তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শাইবার জন্য, সময় উল্লেখপূর্বক, তাহাকে নোটিশ প্রদান করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন উক্ত নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হইলে বা প্রাথমিকভাবে উক্ত অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হইলে কাউন্সিল উক্ত অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে গঠিত তদন্ত কমিটি আনীত অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করিবে এবং তদন্তের প্রয়োজনে অভিযোগকারীসহ যে কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে বা অভিযোগের সহিত সংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত হইবার বা কোনো দলিল বা তথ্য প্রেরণ করিবার জন্য নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হইলে তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেটের বিরুদ্ধে অভিযোগের ধরন বিবেচনা করিয়া তাহার নিবন্ধন ও সনদ বাতিল, স্থগিতকরণ, সতর্কীকরণ বা প্রশাসনিক জরিমানা আরোপের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাউন্সিলের নিকট সুপারিশ পেশ করিবে।
(৫) তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হইলে অভিযুক্ত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেটকে উক্ত অভিযোগ হইতে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশসহ কমিটি কাউন্সিলের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করিবে।
(৬) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তি কমিটিকে সহায়তা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন।
২৯। (১) ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রাপ্ত সুপারিশ অনুযায়ী কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেটকে সতর্কীকরণ বা নিদিষ্ট সময়ের জন্য প্র্যাকটিস হইতে বিরত রাখিতে বা সাময়িকভাবে তাহার নিবন্ধন ও সনদ বাতিল বা প্রয়োজনে প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(২) কাউন্সিল, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফি আদায় সাপেক্ষে, উপ-ধারা (১) এর অধীন বাতিলকৃত নিবন্ধন ও সনদ পুনর্বহাল করিতে পারিবে।
৩০। (১) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক প্রয়োজনে কোনো ভেটেরিনারি ক্লিনিক, সেবা কেন্দ্র, খাদ্য ও ঔষধ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি জবাইখানা, প্রজনন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি পুনর্বাসন কেন্দ্র বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টার পরিচালনা করিতে চাহিলে তাহাকে স্বীকৃতির জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
(২) কাউন্সিল উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদনপত্র বিবেচনা করিয়া, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নির্ধারিত পদ্ধতি ও মানদণ্ডে প্রার্থিত প্রতিষ্ঠান পরিচালনার স্বীকৃতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) কাউন্সিল উপ-ধারা (২) এর অধীন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের নাম, বিস্তারিত বিবরণ ও এতদ্সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য একটি নিবন্ধন বহিতে অন্তর্ভুক্ত করিবে এবং উহার তালিকা প্রকাশ ও সংরক্ষণ করিবে।
৩১। (১) কাউন্সিলের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো বেসরকারি ভেটেরিনারি ক্লিনিক, সেবা কেন্দ্র , খাদ্য ও ঔষধ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি জবাইখানা, প্রজনন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি পুনর্বাসন কেন্দ্র বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টার কর্তৃক-
(ক) প্রদত্ত সেবার মান কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত মানদণ্ডের নিম্নে ; অথবা
(খ) সরকার ও কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ বা নীতিমালা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হইতেছে না,
তাহা হইলে কাউন্সিল, তদকর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে, ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট নোটিশ প্রেরণ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রেরিত নোটিশের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ব্যাখ্যা প্রাপ্ত হইবার পর বা নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যাখ্যা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে, কাউন্সিল, প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃত প্রত্যাহার করিতে পারিবে।
৩২। (১) ধারা ১৫, ১৬, ১৯, ২৯ এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে আপিল দায়ের করিতে পারিবে।
(২) সরকার উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আপিল আবেদন নিষ্পত্তির জন্য একটি কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন উহা প্রাপ্তির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
৩৩। (১) কাউন্সিল কোনো ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে কোনো বিষয়ের পাঠ্যসূচি, পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ ও এতদ্সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্য তলব করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কাউন্সিলকে তলবকৃত তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
৩৪। কাউন্সিল কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কোনো ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান বা তদকর্তৃক গৃহীত পাঠ্যসূচি, পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ ও এতদ্সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং পরিদর্শন সম্পর্কিত প্রতিবেদন রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিল করিবেন।
৩৫। কোনো ব্যক্তি নিবন্ধন ও সনদ ব্যতীত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিস করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৩৬। (১) কোনো প্রতিষ্ঠান কাউন্সিলের স্বীকৃতি ব্যতিরেকে ভেটেরিনারি বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রমাণ করিতে পারেন যে, অপরাধটি তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং তাহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকিলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
৩৭। (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৩০ এর অধীন স্বীকৃতি গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো বেসরকারি ভেটেরিনারি ক্লিনিক, সেবা কেন্দ্র, খাদ্য ও ঔষধ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি জবাইখানা, প্রজনন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, প্রাণি পুনর্বাসন কেন্দ্র বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টার পরিচালনা করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রমাণ করিতে পারেন যে, অপরাধটি তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং তাহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের জন্য অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকিলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৩৮। (১) কোনো ব্যক্তি-
(ক) নিবন্ধিত না হইয়া নিজেকে ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেট বলিয়া পরিচয় প্রদান করিলে;
(খ) প্রতারণা করিয়া ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার হিসাবে নিবন্ধন করিলে বা নিবন্ধন করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে;
(গ) প্রতারণামূলকভাবে তাহার নাম, পদবির সহিত নিবন্ধিত প্র্যাকটিশনার মর্মে কোনো শব্দ, বর্ণ বা অভিব্যক্তি ব্যবহার করিলে;
(ঘ) মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিয়া ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার বা প্যারাভেট হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করিলে;
(ঙ) নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার না হইয়া তাহার নামের সহিত ডাক্তার বা ‘‘ডাঃ’’ উপাধি ব্যবহার করিলে; অথবা
(চ) প্যারাভেট হইয়া নিজেকে ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার হিসাবে পরিচয় দিলে বা তাহার নামের পূর্বে ডাক্তার বা ‘‘ডাঃ’’ উপাধি ব্যবহার করিলে, উহা এই আইনের অধীন একটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) উপ-ধারা ১ (এক) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তাকারী ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দণ্ডের সমদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৩৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল তহবিল নামে কাউন্সিলের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) এই আইনের অধীন প্রাপ্ত নিবন্ধন, সনদ এবং অন্যান্য ফি;
(গ) বিনিয়োগ ও সম্পত্তির আয়;
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো দেশি বা বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
(ঙ) কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; এবং
(চ) নিজস্ব আয় বা অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে তহবিলের অর্থ যে কোনো তপশলি ব্যাংকে কাউন্সিলের নামে জমা রাখিতে হইবে বা সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের লাভজনক ক্ষেত্রসমূহে বিনিয়োগ করা যাইবে।
(৩) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল ও বিনিয়োগকৃত অর্থ পরিচালনা করিতে হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সিল কর্তৃক নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তহবিল ও বিনিয়োগকৃত অর্থ পরিচালিত হইবে।
ব্যাখ্যা। -‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2 (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
(৪) তহবিল হইতে সরকারের নিয়ম-নীতি ও বিধি-বিধান অনুসরণক্রমে কাউন্সিলের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।
৪০। কাউন্সিল নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার কর্মচারী ও নিবন্ধিত ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনার, নিবন্ধিত প্যারাভেট এবং তাহাদের পরিবারের কল্যাণের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন এবং যৌথ বিমা পলিসি গ্রহণ করিতে পারিবে।
৪১। (১) কাউন্সিল নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, সনদ প্রদান, সনদ নবায়ন বা অন্য কোনো সেবার জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি আদায় করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত ফিসমূহ কাউন্সিল, সময় সময়, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সিল সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে আদেশ দ্বারা উপ-ধারা (১) এ নির্ধারিত ফি আদায় করিতে পারিবে।
৪২। এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে কাউন্সিল কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী বা ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ দায়ের ব্যতীত কোনো আদালত উক্ত অভিযোগ আমলে গ্রহণ করিবে না।
৪৩। এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (Non-Cognizable) ও জামিনযোগ্য (Bailable) হইবে।
৪৪। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তপশিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।
৪৫। (১) কাউন্সিল, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতি অর্থ বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় এবং উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহা উল্লেখ করিয়া একটি বাজেট সরকারের অনুমোদনের জন্য পেশ করিবে।
(২) উক্তরূপ বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছক ও পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে।
৪৬। (১) কাউন্সিল, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যথাযথ ভাবে উহার হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কাউন্সিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কাউন্সিল এর নিকট পেশ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা রিপোর্টে কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কাউন্সিল অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(৪) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে, মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কাউন্সিলের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কাউন্সিল কার্য নির্বাহী কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি বা কোনো সদস্য বা যে কোনো কর্মচারী বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
৪৭। (১) কাউন্সিল প্রতি বৎসর ৩০ জুনের মধ্যে পূর্ববর্তী ৩১ ডিসেম্বরে সমাপ্ত ১(এক) বৎসরের স্বীয় কার্যাবলির বিবরণ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
(২) সরকার, যে কোনো সময় কাউন্সিলের নিকট হইতে উহার যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং কাউন্সিল উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
৪৮। কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার এবং কর্মচারীগণ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এ সংজ্ঞায়িত অর্থে জনসেবক (Public servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।
৪৯। কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে।
৫০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো দেশী বা বিদেশী উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে।
৫১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৫২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৫৩। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার নির্বাহী আদেশ দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে উক্ত অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।
৫৪। (১) Bangladesh Veterinary Practitioners Ordinance, 1982 (Ordinance No. XXX of 1982), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর অধীন-
(ক) section 3 এর অধীন গঠিত কাউন্সিল এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে যেন উক্ত কাউন্সিল এই আইনের অধীন গঠিত হইয়াছে;
(খ) নিবন্ধিত সকল ভেটেরিনারি প্যাকটিশনার এই আইনের অধীন নিবন্ধিত বলিয়া গণ্য হইবে;
(গ) সম্পাদিত সকল কাজ বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঘ) গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন গৃহিত বা সূচিত হইয়াছে;
(ঙ) প্রণীত কোনো বিধি, প্রবিধান, জারিকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে এবং এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
(৩) উক্ত Ordinance রহিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত Ordinance এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Veterinary Council এর-
(ক) সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি, তহবিল, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, অন্য সকল দাবি ও অধিকার, সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ড এবং অন্যান্য দলিল ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল, অতঃপর উক্ত কাউন্সিল বলিয়া উল্লিখিত, এর সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, অর্থ, দাবি ও অধিকার, হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ড এবং দলিল হিসাবে গণ্য হইবে;
(খ) বিরুদ্ধে বা তদকর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা উক্ত কাউন্সিলের বিরুদ্ধে বা কাউন্সিল কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে;
(গ) সকল কর্মচারী উক্ত কাউন্সিলের কর্মচারী হিসাবে গণ্য হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, তাহারা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে কাউন্সিলের চাকরিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন;
(ঘ) রেজিস্ট্রার এই আইনের অধীন রেজিস্ট্রার হিসাবে নিয়োজিত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে তিনি যে শর্তাধীনে নিয়োজিত ও কর্মরত ছিলেন উহা সরকার কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে নিয়োজিত ও কর্মরত থাকিবেন।
৫৫। ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ।- (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।