প্রিন্ট ভিউ
সময়াবদ্ধ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং তাহাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত দেশ গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলে জমাকৃত উদ্বৃত্ত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহারের নিমিত্ত বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিল উহাদের নিজস্ব আইন, আইনের মর্যাদা সম্পন্ন দলিল ও বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত হইয়া থাকে; এবং
যেহেতু উক্তরূপ সংস্থাসমূহ নিজস্ব তহবিল হইতে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের পরও উহাদের তহবিলে বিপুল পরিমাণ অথ উদ্বৃত্ত থাকে; এবং
যেহেতু সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের লক্ষ্যে ব্যাপকভিত্তিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকার কর্তৃক গৃহীত ও গৃহীতব্য উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সময়াবদ্ধভাবে বাস্তবায়নের উপর উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জন করা নির্ভরশীল; এবং
যেহেতু উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থার প্রয়োজন; এবং
যেহেতু উপরি-বর্ণিত সংস্থাসমূহের তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থের মালিকানা প্রকৃতপক্ষে জনগণের এবং সেই কারণে উক্ত অর্থ জনগণের কল্যাণ সাধনে ব্যবহার করা সমীচীন; এবং
যেহেতু উক্তরূপ সংস্থাসমূহের তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করিবার লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল : -
১। (১) এই আইন স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০২০ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) ‘‘তপশিল’’ অর্থ এই আইনের তপশিল; এবং
(খ) ‘‘উদ্বৃত্ত অর্থ’’ অর্থ তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থার বাৎসরিক পরিচালনা ব্যয়, নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাৎসরিক ব্যয় এবং বাৎসরিক পরিচালন ব্যয়ের ২৫ (পঁচিশ) শতাংশের অতিরিক্ত অর্থ।
৩। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তপশিলভুক্ত সংস্থাসমূহের তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, তপশিলভুক্ত সংস্থাসমূহের তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা আইনের বিধান যদি এই আইনের বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহা হইলে সেই আইন বা আইনের বিধান যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি অকার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর বিধান সত্ত্বেও তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থা এই আইনের কোনো বিধানকে ব্যাহত করিবার উদ্দেশ্যে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিলে উহা অকার্যকর মর্মে গণ্য হইবে।
৪। (১) ধারা ৫ এর বিধান সাপেক্ষে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থা উহার পরিচালনা ব্যয় এবং নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাৎসরিক ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ নিজস্ব তহবিলে জমা রাখিতে পারিবে।
(২) তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থা আপৎকালীন ব্যয় নির্বাহের জন্য যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ অর্থ, যাহা বাৎসরিক পরিচালন ব্যয়ের সর্বোচ্চ ২৫ (পঁচিশ) শতাংশের সমপরিমাণ, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অর্থের অতিরিক্ত হিসাবে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করিতে পারিবে।
(৩) তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থার পেনশন ও ভবিষ্য তহবিল থাকিলে উহা পৃথকভাবে পরিচালনা করা যাইবে।
(৪) তপশিলভুক্ত সংস্থাসমূহে বাজেট বরাদ্দ হইতে প্রদত্ত অনুদান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রদান করা হইবে।
৫। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থা কর্তৃক-
(ক) এই আইন প্রবর্তনের পর ধারা ৪ এ উল্লিখিত অর্থের অতিরিক্ত অর্থ অবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করিতে হইবে; এবং
(খ) প্রতি অর্থবৎসর সমাপ্ত হইবার তিন মাসের মধ্যে ঐ অর্থবৎসরের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করিতে হইবে।
৬। তপশিলভুক্ত কোনো সংস্থা তহবিলে রক্ষিত অর্থ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান না করিলে, সরকার উক্ত সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
৭। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে।
৮। এই আইনের কোনো বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি, আদেশ ও নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।