প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২০

( ২০২০ সনের ১ নং আইন )

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ এর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইন) এর সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২০ নামে অভিহিত হইবে।

 

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইনের প্রস্তাবনার সংশোধন

২।  বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর প্রস্তাবনার পরিবর্তে নিম্নরূপ প্রস্তাবনা  প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

 

যেহেতু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তাঁহার সরকারের আমলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেন ট্রেড ডিভিশনের ২৮ জুলাই ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখের ADMN-E-২০/৭৩/৬৩৬ নং রেজুল্যুশনবলে একটি সম্পূর্ণ সরকারি দপ্তর হিসাবে ট্যারিফ কমিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে; এবং

যেহেতু বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন প্রতিষ্ঠাকল্পে একটি আইন প্রণয়ন করা সমীচীন প্রয়োজনীয়;”

১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইনের সংশোধন

৩।  উক্ত আইনের সর্বত্র উল্লিখিত ‘‘বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন’’ শব্দগুলির পরিবর্তে ‘‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন’’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।

১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইনের ধারা ৭ এর সংশোধন

৪।  উক্ত আইনের ধারা ৭ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৭ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

 

          “৭। কমিশনের কার্যাবলি।- (১) দেশিয় পণ্য ও সেবা রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে দেশিয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বিকাশে শিল্পপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে দক্ষতাবৃদ্ধি, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সুবিধা (comparative advantage) নিরূপণকল্পে নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কমিশন সরকারকে পরামর্শ প্রদান করিবে, যথা :-

 

        (ক) শুল্কনীতি পর্যালোচনাক্রমে শুল্কহার যৌক্তিকীকরণ;

 

        (খ) আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও বহু-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি;

                    (গ) এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং ও সেইফগার্ড সংক্রান্ত আইন ও বিধি অনুযায়ী দেশিয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ;

                  () ট্রানজিট ট্রান্সশিপমেন্ট ট্রেড, জিএসপি (Generalized System of Preference), রুলস অব অরিজিন (Rules of Origin) অন্যান্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য;

 

        () শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ শুল্কনীতি প্রণয়ন;

                   () বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে উদ্ভূত যে কোনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ;

                   () Protective Duties Act, 1950 (Act No. LXI of 1950) এর আলোকে সুনির্দিষ্ট মেয়াদে সংরক্ষণমূলক আমদানি শুল্ক (Protective Duties of Customs) আরোপ;

                    (জ) শিল্প সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণপূর্বক দেশিয় পণ্য ও সেবার রপ্তানি বৃদ্ধি;

                    (ঝ) আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য বা সেবাসমূহের হারমোনাইজড সিস্টেম কোড;

                    (ঞ) বৈদেশিক বাণিজ্য পরিবীক্ষণ; এবং

                    (ট) আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তারকারী নীতিমালা ও রীতিনীতি।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ প্রদান ছাড়াও কমিশন নিম্নোক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করিবে, যথা:-

 

(ক) এন্টি-সারকামভেনশন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা;

 

(খ) বাংলাদেশ হইতে রপ্তানিকৃত পণ্য ও বাণিজ্যের উপর অন্য দেশ কর্তৃক গৃহীত বাণিজ্য প্রতিবিধান সংক্রান্ত পদক্ষেপ (এন্টি ডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং, সেইফগার্ড মেজার্স ও এন্টি সারকামভেনশন) এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত দেশিয় রপ্তানিকারকগণকে সহায়তা প্রদান;

 

(গ) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারদর নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা;

 

(ঘ) বিশ্ব-বাণিজ্য সংস্থার আওতায় বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তিতে সরকারকে সহায়তা প্রদান;

 

(ঙ) বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহ, ডাটাবেজ সংরক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ এবং জনস্বার্থে উক্ত তথ্যসমূহ সরকার ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ;

 

(চ) অন্যান্য দেশের সহিত বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং এতদসংক্রান্ত চুক্তির ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন;

 

(ছ) সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থ বিবেচনার উদ্দশ্যে গণ শুনানির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ চিহ্নিতকরণ;

 

(জ) দেশিয় শিল্প ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অংশীজনদের দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ; এবং

 

(ঝ) দেশিয় শিল্প ও বাণিজ্যের স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা বা সমীক্ষা পরিচালনা।

 

    (৩) এই ধারার অধীন পেশকৃত সুপারিশ বাস্তবায়নের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থ বিবেচনা করিয়া কমিশন ক্ষতি লাঘবের জন্য, উহার মতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ সরকারের নিকট পেশ করিবে;

 

(৪) এই ধারার অধীন কমিশন কর্তৃক পেশকৃত সুপারিশকে সরকার স্বীকৃতি দিবে এবং যথাযথভাবে বিবেচনা করিবে।“

১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইনের ধারা ৮ এর সংশোধন

৫।  উক্ত আইনের ধারা ৮ এর বিদ্যমান বিধান উপ-ধারা (১) হিসাবে সংখ্যায়িত হইবে এবং উক্তরূপে সংখ্যায়িত উপ-ধারা (১) এর পর নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) সংযোজিত হইবে, যথাঃ-

 

“(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন তদন্তের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করিতে হইবে :

 

        তবে শর্ত থাকে যে, প্রাপ্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে প্রকাশ করা যাইবে।“

 

১৯৯২ সনের ৪৩ নং আইনের ধারা ১২ এর সংশোধন

৬।  উক্ত আইনের ধারা ১২ এর উপ-ধারা (১) এর পর নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) সংযোজিত হইবে, যথাঃ-

 

 “(২) গবেষণা বা সমীক্ষা কাজে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কমিশন, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরামর্শক ও গবেষণা সহায়তাকারী নিয়োগ করিতে পারিবে।“


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs