প্রিন্ট ভিউ

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০

( ২০২০ সনের ২৩ নং আইন )

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে অগ্রসরমান বিশ্বের সহিত সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, বিশেষ করিয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ জেলায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০ নামে অভিহিত হইবে।

 

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২।  বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

 

(১)    ‘‘অর্গানোগ্রাম’’ অর্থ আচার্য কর্তৃক অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম;

 

(২)    ‘‘অর্থ কমিটি’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটি;

 

(৩)    ‘‘অনুষদ’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ;

 

(৪)    ‘‘অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল;

 

(৫)    ‘‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’’ অর্থ বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ০৯ নং আইন) এর ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল;

 

(৬)    ‘‘ইনস্টিটিউট’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্বীকৃত, অনুমোদিত বা স্থাপিত কোনো ইনস্টিটিউট;

 

(৭)    ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ ধারা ১৭ তে উল্লিখিত কোনো কর্তৃপক্ষ;

 

(৮)    ‘‘কর্মচারী’’ অর্থ ধারা ৮ এ উল্লিখিত কোনো কর্মচারী;

 

(৯)    ‘‘ আচার্য’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য;

 

(১০)  ‘‘ট্রেজারার’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার;

 

(১১)   ‘‘ডিন’’ অর্থ অনুষদের ডিন;

 

(১২)  ‘‘পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি;

 

(১৩)  ‘‘পরিচালক’’ অর্থ কোনো ইনস্টিটিউটের পরিচালক;

 

(১৪)   ‘‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক;

 

(১৫)  ‘‘প্রক্টর’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর;

 

(১৬)  ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ ধারা ৪৩ এর অধীন প্রণীত প্রবিধান;

 

(১৭)   ‘‘প্রভোস্ট’’ অর্থ কোনো হলের প্রধান;

 

(১৮)  ‘‘উপউপাচার্য’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য;

 

(১৯)  ‘‘সিলেকশন কমিটি’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য গঠিত সিলেকশন কমিটি;

 

(২০)  ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় বিধি’’ অর্থ ধারা ৪২ এর অধীন প্রণীত বিধি;

 

(২১)  ‘‘বিভাগ’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগ;

 

(২২)  ‘‘বিভাগীয় চেয়ারম্যান’’ অর্থ কোনো বিভাগের প্রধান;

 

(২৩)  ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন স্থাপিত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়;

 

(২৪)  ‘‘বোর্ড অব গভর্নরস’’ অর্থ ইনস্টিটিউটের বোর্ড অব গভর্নরস;

 

(২৫)  ‘‘উপাচার্য’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য;

 

(২৬)  ‘‘মঞ্জুরি কমিশন’’ অর্থ University Grants Commission of Bangladesh Order, 1973 (President’s Order No. 10 of 1973) এর অধীন গঠিত University Grants Commission of Bangladesh;

 

(২৭)  ‘‘মঞ্জুরি কমিশন আদেশ’’ অর্থ University Grants Commission of Bangladesh Order, 1973 (President’s Order No. 10 of 1973);

 

(২৮)  ‘‘রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট’’ অর্থ এই আইনের বিধান অনুযায়ী রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট;

 

(২৯)  ‘‘রেজিস্ট্রার’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার;

 

(৩০)  ‘‘শিক্ষক’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক শিক্ষক হিসাবে স্বীকৃত অন্য কোনো ব্যক্তি; 

 

(৩১)  ‘‘শিক্ষার্থী’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে ভর্তিকৃত কোনো শিক্ষার্থী;

 

(৩২)  ‘‘সংবিধি’’ অর্থ ধারা ৪১ এর অধীন প্রণীত সংবিধি;

 

(৩৩)  ‘‘সংস্থা’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সংস্থা;

 

(৩৪)  ‘‘সিন্ডিকেট’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট; এবং

 

(৩৫)  ‘‘হল’’ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ছাত্রাবাস।

বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন

৩।  (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী সুনামগঞ্জ জেলার দেখার হাওড় পাড়ে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Sunamgonj Science and Technology University) নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবে।

 

(২) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, উপাচার্য, উপউপাচার্য, ট্রেজারার, সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যগণের সমন্বয়ে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠিত হইবে।

 

(৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধান সাপেক্ষে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর সকল প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা

৪।  এই আইন এবং মঞ্জুরি কমিশন আদেশের বিধান সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা থাকিবে, যথা :-

 

(ক)  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণা, জ্ঞানের উৎকর্য সাধন ও জ্ঞান বিতরণের ব্যবস্থা করা;

 

(খ)  কর্মদক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে, আধুনিক প্রযুক্তি, পেশা, বৃত্তি ও অর্থনৈতিক চাহিদার ভিত্তিতে উচ্চশিক্ষার নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাশাপাশি আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া অনলাইন দূরশিক্ষণ, ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষাদানের সমন্বয়ে শিল্প, বাণিজ্য সমাজ ও অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট সীমিত বা দীর্ঘমেয়াদী কোর্স প্রণয়ন ও পরিচালনা;

 

(গ)  বিভাগ এবং ইনস্টিটিউটে শিক্ষাদানের জন্য পাঠক্রম নির্ধারণ করা;

 

(ঘ)  বিভাগ, অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত পাঠক্রমে অধ্যয়ন সম্পূর্ণ করিয়াছেন এবং সংবিধির শর্তানুযায়ী গবেষণা কর্ম সম্পূর্ণ করিয়াছেন এমন ব্যক্তিগণের পরীক্ষা গ্রহণ করা এবং ডিগ্রি ও অন্যান্য অ্যাকাডেমিক সম্মান প্রদান করা;

 

(চ)   সংবিধিতে বিধৃত পদ্ধতিতে সম্মানসূচক ডিগ্রি বা অন্য কোনো সম্মান প্রদান করা;

 

(ছ)  অনুষদ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নহেন এমন ব্যক্তিগণকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রদানের উদ্দেশ্যে বক্তৃতামালা ও শিক্ষার ব্যবস্থা এবং সংবিধির শর্তানুযায়ী ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট প্রদান করা;

 

(জ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তৎকর্তৃক নির্ধারিত পন্থায় দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহিত শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও  যৌথ কর্মসূচি গ্রহণ করা;

 

(ঝ)  উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে এবং সরকার ও কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, বাজেট বরাদ্দ সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ও ইমেরিটাস অধ্যাপকের পদসহ  শিক্ষক, গবেষক, কর্মচারীর যে কোনো পদ সৃষ্টি করা এবং সেই সকল পদে নিয়োগ প্রদান করা;

 

(ঞ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য হল স্থাপন এবং উহার রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা;

 

(ট)   মেধার স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে এই আইন, সংবিধি, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ও প্রবিধান অনুযায়ী ফেলোশিপ, স্কলারশিপ, পুরস্কার ও পদক প্রবর্তন এবং বিতরণ করা;

 

(ঠ)   মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদনক্রমে শিক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার উন্নয়নের লক্ষ্যে অ্যাকাডেমিক মিউজিয়াম, পরীক্ষাগার, অনুষদ, বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রতিষ্ঠা বা, ক্ষেত্রমত, রক্ষণাবেক্ষণ, সম্প্রসারণ, একত্রীকরণ ও বিলোপ সাধন করা;

 

(ড)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও অ্যাকাডেমিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, পাঠক্রম সহায়ক কার্যক্রমের উন্নতি এবং তাহাদের স্বাস্থ্যের উৎকর্ষ সাধনের ব্যবস্থা করা;

 

(ঢ)   সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি দাবি ও আদায় করা;

 

(ণ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য, সরকারের অনুমতিক্রমে, দেশি ও বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে অনুদান ও বৃত্তি গ্রহণ করা;

 

(ত)  বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য, সরকারের অনুমোদনক্রমে, কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া, সম্পাদনকৃত চুক্তি বাস্তবায়ন করা, চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করা বা চুক্তি বাতিল করা;

 

(থ)  শিক্ষা ও গবেষণার উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য পুস্তক ও জার্নাল প্রকাশ করা এবং দেশে ও বিদেশে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহিত উক্ত বিষয়ে যোগাযোগ স্থাপন ও রক্ষা করা;

 

(দ)  উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্প কারখানার যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা;

 

(ধ)   শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাজ সম্পৃক্ততা (community engagement) কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজ সম্পর্কে বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধি করা;

 

(ন)  উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাকে বিশ্বমানে উন্নীত করিবার লক্ষ্যে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের শর্তাবলি প্রতিপালন এবং অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলসহ বিদেশের সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সহিত কার্যকর ও ফলপ্রসূ যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা;

 

(প)  উচ্চশিক্ষার গুণগত মান সুষমকরণ ও উন্নয়নকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ, ছাত্র ও শিক্ষকের সুষম আনুপাতিক হার সংরক্ষণ, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও ল্যাবরেটরির ব্যবস্থাকরণ, উপযুক্ত ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি ও উপকরণের ব্যবস্থা করা;

 

(ফ)  আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতির আধুনিকায়নের জন্য কাজ করা;

 

(ব)   বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অ্যাকাডেমিক দক্ষতা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;

 

(ভ)  উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মান সুষমকরণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ, সিম্পোজিয়াম সহ সমজাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা;

 

(ম)  জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, জন্মস্থান বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করিবার কাজে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র, মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বা শিক্ষা সাহায্য প্রদানের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা;

 

(য)  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটির সদস্যগণের সম্মানি নির্ধারণ ও সভা অনুষ্ঠানের জন্য সম্মানি প্রদান করা;

 

(র)   সরকারের অনুমোদনক্রমে ও মঞ্জুরি কমিশনের নির্ধারিত শর্তে, দেশি ও বিদেশি কোনো শিক্ষক বা গবেষক ও বিশেষজ্ঞকে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন বা অন্য কোনোভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাহাদের বেতন বা পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা; এবং

 

(ল)  বিশ্ববিদ্যালয়ের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন ও বাস্তবায়নকল্পে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদন করা।

সকলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত

৫।  (১) বিশ্ববিদ্যালয় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ, জন্মস্থান বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নির্বিশেষে সকল শ্রেণির যোগ্য শিক্ষার্থীর ভর্তি, জ্ঞানার্জন এবং সাফল্যের সহিত ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্স সমাপনের পর সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জন্য উন্মুক্ত থাকিবে।

 

(২) সরকারের অনুমোদনক্রমে সিন্ডিকেট কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিনণ কোর্স ও প্রোগ্রামে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাইবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান

৬।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্বীকৃত শিক্ষা ও গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় বা ইহার ইন্সটিটিউট কর্তৃক পরিচালিত হইবে এবং পরীক্ষাগার বা কর্মশিবিরের সকল বক্তৃতা ও কর্ম ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

 

(২) বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে শিক্ষকগণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন।

 

(৩) শিক্ষাদানের দায়িত্ব কোন্ কর্তৃপক্ষের উপর থাকিবে তাহা সংবিধি দ্বারা নির্ধারণ করা হইবে।

 

(৪)  শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা হইবে।

 

(৫) বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ও প্রবিধানে বিধৃত শর্তানুসারে অনুমোদিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হইবে।

 

মঞ্জুরি কমিশনের দায়িত্ব

৭। (১) মঞ্জুরি কমিশন এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও গুণগতমান নিশ্চিতকরণের বিষয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও ইহার ভবন, হল, গ্রন্থাগার, গবেষণার যন্ত্রপাতি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষা, শিক্ষাদান ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিদর্শন করাইতে পারিবে।

 

(২) মঞ্জুরি কমিশন উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, তৎকর্তৃক অনুষ্ঠিতব্য প্রত্যেক পরিদর্শন বা মূল্যায়নের অভিপ্রায় সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্বে অবহিত করিবে।

 

(৩) মঞ্জুরি কমিশন অনুরূপ পরিদর্শন বা মূল্যায়ন সম্পর্কে উহার অভিমত অবহিত করিয়া তৎসম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যকে নির্দেশনা প্রদান করিবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত নির্দেশনা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন মঞ্জুরি কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে।

 

(৪) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত রেজিস্টার ও নথিপত্র সংরক্ষণ করিবে এবং মঞ্জুরি কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য, পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদন মঞ্জুরি কমিশনের নিকট সরবরাহ করিবে।

 

(৫) প্রাপ্ত তথ্য, পরিসংখ্যান ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, মতামত বা নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত পরামর্শ, মতামত বা নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণপূর্বক মঞ্জুরি কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে।

 

(৬) মঞ্জুরি কমিশন শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নিরূপণ করিবে এবং উহার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করিবে।

 

(৭) মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ও অন্যান্য আর্থিক প্রয়োজন পরীক্ষা করিয়া সুপারিশসহ সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।

 

(৮) সরকার, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত কোনো প্রতিবেদন বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অথবা যৌক্তিক কোনো কারণে মঞ্জুরি কমিশনের নিকট আবশ্যক বলিয়া বিবেচিত হইলে যে কোনো সময় নোটিশ প্রদান করিয়া বা নোটিশ প্রদান ব্যতিরেকে মঞ্জুরি কমিশন উহার কোনো কর্মচারী কিংবা উহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা আকস্মিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো অনুষদ, বিভাগ, ইন্সটিটিউট ও সংস্থা পরিদর্শন ও তদন্ত করাইতে পারিবে।

 

(৯) মঞ্জুরি কমিশন বা উহার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (৮) এর অধীন পরিদর্শন ও তদন্তক্রমে মঞ্জুরি কমিশনের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবে এবং মঞ্জুরি কমিশন উহার কপি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে।

 

(১০) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৯) এর অধীন প্রাপ্ত তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মঞ্জুরি কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে।

 

(১১) মঞ্জুরি কমিশন উপ-ধারা (৮), (৯) ও (১০) অনুসারে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করিবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী

৮।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্নবর্ণিত কর্মচারী থাকিবে, যথা :-

 

(ক)  উপাচার্য;

 

(খ)  উপউপাচার্য;

 

(গ)  ট্রেজারার;

 

(ঘ)  ডিন;

 

(ঙ)  ইন্সটিটিউটের পরিচালক;

 

(চ)   রেজিস্ট্রার;

 

(ছ)  বিভাগীয় চেয়ারম্যান;

 

(জ)  গ্রন্থাগারিক;

 

(ঝ)  প্রভোস্ট;

 

(ঞ) প্রক্টর;

 

(ট)   পরিচালক (ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসিউরেন্স সেল)

 

(ঠ)   পরিচালক (গবেষণা সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর)

 

(ড)  পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা);

 

(ঢ)   পরিচালক (অর্থ ও হিসাব);

 

(ণ)   পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন);

 

(ত)  পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক;

 

(থ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী;

 

(দ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসক;

 

(ধ)   পরিচালক (শরীরচর্চা ও শিক্ষা); এবং

 

(ন)  সংবিধি দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসাবে ঘোষিত অন্যান্য কর্মচারী।

আচার্য

৯। (১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হইবেন এবং তিনি অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি ও সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করিবেন।

 

(২) আচার্য এই আইন ও সংবিধি দ্বারা অর্পিত ক্ষমতার অধিকারী হইবেন।

 

(৩) সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের প্রতিটি প্রস্তাবে আচার্যের অনুমোদন থাকিতে হইবে।

 

(৪) আচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো ঘটনার তদন্ত করাইতে পারিবেন এবং তদন্তের প্রতিবেদন আচার্যের নিকট হইতে সিন্ডিকেটে পাঠানো হইলে সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আচার্যের নিকট প্রেরণ করিবে।

 

(৫) আচার্যের নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হইবার মত অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করিতেছে, তাহা হইলে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখিবার স্বার্থে প্রয়োজনীয় আদেশ ও নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং অনুরূপ আদেশ ও নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হইবে এবং উপাচার্য অথবা উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে যিনি  উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করিবেন তিনি উক্ত আদেশ ও নির্দেশ কার্যকর করিবেন।

 

 

উপাচার্য নিয়োগ

১০।  (১) আচার্য, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ প্রদান করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে ২ (দুই) মেয়াদের অধিক সময়ের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, আচার্যের সন্তোষানুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর স্বপদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

 

(৩) মেয়াদ শেষ হইবার কারণে ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি শূন্য হইলে কিংবা ছুটি বা অন্য কোনো কারণে অনুপস্থিতির জন্য সাময়িকভাবে শূন্য হইলে কিংবা অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে উপাচার্য তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে বা অপারগতা প্রকাশ করিলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত উপাচার্য কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা উপাচার্যের পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, উপাচার্যের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকা সাপেক্ষে, উপউপাচার্যের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করিবেন, তবে উপউপাচার্যের পদ শূন্য থাকিলে ট্রেজারার এবং ট্রেজারারের অবর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম ডিন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

ব্যাখ্যা।- উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ডিন পদে নিয়োগের তারিখের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হইবে এবং নিয়োগের তারিখ একই হইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির সাকূল্য মেয়াদের দীর্ঘতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হইবে।

উপাচার্যের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

১১।  (১) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক প্রধান একাডেমিক নির্বাহী হইবেন।

 

(২) উপাচার্য তাহার দায়িত্ব পালনে আচার্যের নিকট দায়ী থাকিবেন।

 

(৩) উপাচার্য এই আইন, সংবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিধির বিধানাবলি বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

 

(৪) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো কর্তৃপক্ষের সভায় উপস্থিত থাকিতে এবং উহার কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে তিনি উহার সদস্য না হইলে উহাতে কোনো ভোট প্রদান করিতে পারিবেন না।

 

(৫)  উপাচার্য সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহবান করিবেন।

 

(৬) উপাচার্য সিন্ডিকেট, অর্থ কমিটি, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

(৭) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো অনুষদ, ইন্সটিটিউট বা বিভাগ পরিদর্শন করিতে ও প্রয়োজনীয় দিক্-নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবেন।

 

(৮) উপাচার্য তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় মনে করিলে তাহার যে কোনো ক্ষমতা ও দায়িত্ব, সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবেন।

 

(৯) উপাচার্য, সিন্ডিকেটের পূর্বানুমোদক্রমে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে এবং তাহাদের বিরুদ্ধে, সিন্ডিকেটের পূর্বানুমোদনক্রমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

 

(১০) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপর সাধারণ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

 

(১১) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়ী থাকিবেন।

 

(১২) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতির উদ্ভব হইলে এবং উপাচার্যের বিবেচনায় তৎসম্পর্কে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজনীয় বিবেচিত হইলে তিনি সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং যে কর্তৃপক্ষ সাধারণত বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার অধিকারপ্রাপ্ত সেই কর্তৃপক্ষকে, যথাশীঘ্র সম্ভব, তৎকর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করিবেন।

 

(১৩) উপাচার্য সিন্ডিকেট ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সহিত একমত না হইলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন স্থগিত রাখিয়া তাহার মতামতসহ সিদ্ধান্তটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পুনর্বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিবেন।

 

(১৪) উপ-ধারা (১৩) এর অধীন পুনর্বিবেচনার পরও যদি উক্ত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সহিত উপাচার্য একমত না হন, তাহা হইলে তিনি বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য সিন্ডিকেটের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং সিন্ডিকেটেও বিষয়টি নিষ্পত্তি করা সম্ভব না হইলে উহা আচার্যের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং উক্ত বিষয়ে আচার্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

(১৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত বাজেট বাস্তবায়নে উপাচার্য সার্বিক দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

(১৬) সংবিধি, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ও প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য ক্ষমতাও প্রয়োগ করিবেন।

উপউপাচার্য

১২।  (১) আচার্য, প্রয়োজন, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য উপযুক্ত কোনো অধ্যাপককে উপউপাচার্য পদে নিয়োগ প্রদান করিবেন।

 

(২)  আচার্যের সন্তোষানুযায়ী উপউপাচার্য স্বপদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

 

(৩) উপউপাচার্য সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত এবং উপাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

ট্রেজারার

১৩। (১) আচার্য, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, ৪ (চার) বৎসর মেয়াদের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন শিক্ষাবিদকে ট্রেজারার নিযুক্ত করিবেন।

 

(২) ছুটি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ট্রেজারারের পদ সাময়িকভাবে শূন্য হইলে উপাচার্য অবিলম্বে আচার্যকে তৎসম্পর্কে অবহিত করিবেন এবং আচার্য ট্রেজারারের কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য যেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

(৩) ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের সার্বিক তত্ত্বাবধান করিবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সংক্রান্ত নীতি সম্পর্কে উপাচার্য, সংশ্লিষ্ট কমিটি, ইন্সটিটিউট ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করিবেন।

 

(৪) ট্রেজারার, সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ও বিনিয়োগ তত্ত্বাবধান করিবেন এবং তিনি বার্ষিক বাজেট ও হিসাব বিবরণী পেশ করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ী থাকিবেন।

 

(৫) যে খাতের জন্য অর্থ মঞ্জুর বা বরাদ্দ করা হইয়াছে, সেই খাতেই যেন উহা ব্যয় হয় তাহা নিশ্চিত করিবার জন্য ট্রেজারার সিন্ডিকেটের নিকট দায়ী থাকিবেন।

 

(৬) ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অর্থ সংক্রান্ত সকল চুক্তিতে স্বাক্ষর করিবেন।

 

(৭) ট্রেজারার এই আইন ও সংবিধির বিধান দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।

অন্যান্য কর্মচারীর নিয়োগ, দায়িত্ব ও ক্ষমতা

১৪।  বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল কর্মচারীর নিয়োগ পদ্ধতি, দায়িত্ব ও ক্ষমতা সম্পর্কে এই আইনের কোথাও উল্লেখ নাই, সিন্ডিকেট সংবিধি দ্বারা, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, সেই সকল কর্মচারীর নিয়োগ পদ্ধতি, দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্ধারণ করিবে।

রেজিস্ট্রার

১৫।  বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন রেজিস্ট্রার থাকিবেন এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক কর্মচারী হইবেন এবং তিনি-

 

(ক)   সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সচিবের দায়িত্ব পালন করিবেন;

 

(খ)   উপাচার্য কর্তৃক তাহার হেফাজতে ন্যস্ত সকল গোপনীয় প্রতিবেদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রেকর্ডপত্র, দলিলপত্র ও সাধারণ সিলমোহর, ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণ করিবেন;

 

(গ)   সংবিধি অনুসারে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটদের একটি রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ করিবেন;

 

(ঘ)   সিন্ডিকেট কর্তৃক তাহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক হইবেন;

 

(ঙ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক চিঠিপত্র আদান-প্রদান করিবেন;

 

(চ)    অনুষদের ডিন এবং ইন্সটিটিউটের পরিচালকদের প্ল্যান, প্রোগাম ও সিডিউল সম্পর্কে সংযোগ রক্ষা করিবেন;

 

(ছ)   সংবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত এবং উপাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন; এবং

 

(জ)   অর্থ সংক্রান্ত চুক্তি ব্যতীত অন্যান্য সকল চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করিবেন।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক

১৬।  পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা পরিচালনার সহিত সম্পর্কিত সকল বিষয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকিবেন এবং সংবিধি, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত ও উপাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য সকল দায়িত্ব পালন করিবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ

১৭।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্নবর্ণিত কর্তৃপক্ষ থাকিবে, যথা :-

 

(ক)  সিন্ডিকেট;

 

(খ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল;

 

(গ)  বোর্ড অব গভর্নরস;

 

(ঘ)  অনুষদ;

 

(ঙ)  পাঠক্রম কমিটি;

 

(চ)  অর্থ কমিটি;

 

(ছ)  পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি;

 

(জ) সিলেকশন কমিটি;

 

(ঝ)  অভিযোগ প্রতিকার কমিটি; এবং

 

(ঞ) সংবিধি অনুযায়ী গঠিত অন্যান্য কর্তৃপক্ষ।

সিন্ডিকেট

১৮।  (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে সিন্ডিকেট গঠিত হইবে, যথা :-

 

(ক) উপাচার্য, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;

 

(খ)  উপউপাচার্য;

 

(গ)  জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন সংসদ-সদস্য;

 

(ঘ)  ট্রেজারার;

 

(ঙ)  আচার্য কর্তৃক মনোনীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অন্যূন একজন  শিক্ষাবিদসহ ৩ (তিন) জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ;

 

(চ)  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

 

(ছ)  অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

 

(জ) মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;

 

(ঝ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের মধ্য হইতে একজন প্রতিনিধি;

 

(ঞ) সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা শিল্প প্রতিষ্ঠানের সহিত সংশ্লিষ্ট পেশাদারি প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত ২ (দুই) জন প্রতিনিধি; এবং

 

(ট)  রেজিস্ট্রার, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

 

(২) সিন্ডিকেটের মনোনীত কোনো সদস্য তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, মেয়াদ সমাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

 

(৩) সিন্ডিকেটের কোনো সদস্য পদত্যাগ করিতে চাহিলে যে কোনো সময় সভাপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে সদস্য পদত্যাগ করিতে পারিবেন।

 

(৪) সিন্ডিকেটের কোনো সদস্য যে পদ বা প্রতিষ্ঠান হইতে মনোনীত হইয়াছিলেন তিনি যদি সেই পদ বা প্রতিষ্ঠানে না থাকেন, তাহা হইলে তিনি সিন্ডিকেটের সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।

সিন্ডিকেটের সভা

১৯।  (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, সিন্ডিকেট উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

(২) সিন্ডিকেটের সভা উপাচার্য কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি ২ (দুই) মাসে সিন্ডিকেটের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

 

(৩) উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে, যে কোনো সময় সিন্ডিকেটের বিশেষ সভা আহবান করিতে পারিবেন।

 

(৪) কোরাম গঠনের জন্য সভার সভাপতিসহ, মোট সদস্যের অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।

সিন্ডিকেটের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

২০।  এই আইন ও মঞ্জুরি কমিশন আদেশের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সিন্ডিকেট-

 

(ক)  বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহী কর্তৃপক্ষ হইবে এবং উপাচার্যের উপর অর্পিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কিত বিধান সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাবলি এবং সম্পত্তির উপর সিন্ডিকেটের সাধারণ ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা থাকিবে এবং এই আইন, সংবিধি, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ও প্রবিধানের বিধানসমূহ যথাযথভাবে পালিত হইতেছে কিনা সিন্ডিকেট উক্ত বিষয়ে লক্ষ্য রাখিবে;

 

(খ)  সংবিধি সংশোধন ও অনুমোদন করিবে;

 

(গ)  বার্ষিক প্রতিবেদন, বার্ষিক হিসাব ও বার্ষিক সম্ভাব্য ব্যয়ের প্রস্তাব বিবেচনাক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে;

 

(ঘ)  বার্ষিক বাজেট অধিবেশন আহবান এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ বাজেট অনুমোদন করিবে;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি অর্জন ও তহবিল সংগ্রহ এবং উহা সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করিবে;

 

(চ)   অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে অর্থ কমিটির পরামর্শ বিবেচনা করিবে;

 

(ছ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সিলমোহরের আকার নির্ধারণ এবং উহার হেফাজতের ব্যবস্থা ও ব্যবহার পদ্ধতি নিরূপণ করিবে;

 

(জ)  সংশ্লিষ্ট বৎসরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক চাহিদার পূর্ণ বিবরণ প্রতি বৎসর মঞ্জুরি কমিশনের নিকট পেশ করিবে এবং পূর্ববর্তী বৎসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উৎস তথা মঞ্জুরি কমিশন বহির্ভূত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ সম্পদের বিবরণ প্রদান করিবে;

 

(ঝ)  বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদত্ত যে কোনো তহবিল পরিচালনা করিবে;

 

(ঞ) এই আইন বা সংবিধিতে অন্য কোনো বিধান না থাকিলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ এবং তাহাদের দায়িত্ব ও চাকরির শর্তাবলি, সরকারের এতদ্‌সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসারে, নির্ধারণ করিবে;

 

(ট)   বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে উইল, দান এবং অন্য কোনোভাবে হস্তান্তরকৃত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি গ্রহণ করিবে;

 

(ঠ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠান এবং উহার ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা করিবে;

 

(ড)  এই আইন দ্বারা অর্পিত উপাচার্যের ক্ষমতাবলি সাপেক্ষে, এই আইন, সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারণ করিবে;

 

(ঢ)   ইনস্টিটিউট ও হল পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে অথবা পরিদর্শনের নির্দেশ প্রদান করিবে;

 

(ণ)   এই আইন ও সংবিধি সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি প্রণয়ন করিবে;

 

(ত)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সুপারিশক্রমে, সরকার ও মঞ্জুরি কমিশনের পূর্বানুমতি ও বাজেট বরাদ্দ থাকা সাপেক্ষে, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক ও অন্যান্য শিক্ষক এবং গবেষক ও কর্মচারীর পদ সৃজন, বিলোপ বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে;

 

(থ)  সংবিধি অনুসারে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী সরকার ও মঞ্জুরি কমিশনের পূর্বানুমোদনক্রমে, নূতন অনুষদ ও বিভাগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করিবে;

 

(দ)  সংবিধি অনুসারে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী কোনো অনুষদ, বিভাগ বা ইনস্টিটিউট বিলোপ করিতে বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে;

 

(ধ)   সংবিধি অনুসারে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী কোনো খ্যাতিমান গবেষক বা শিক্ষাবিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরূপে স্বীকৃতি প্রদান করিবে;

 

(ন)  প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে এবং উপাচার্যের সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে উহার ক্ষমতা কোনো নির্ধারিত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে অর্পণ করিতে পারিবে;

 

(প)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে নূতন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, প্রাগ্রসর শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন, আন্তঃবিভাগীয় ও আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক নূতন শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরম্ভ বা বন্ধ এবং পুরাতন কার্যক্রম বাতিল করিতে পারিবে;

 

(ফ)  উপাচার্য, উপউপাচার্য ও ট্রেজারার ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ, তাহাদের দায়িত্ব ও চাকরির শর্তাবলি নির্ধারণ এবং তাহাদের কোনো পদ স্থায়ীভাবে শূন্য হইলে এই আইন ও সংবিধি অনুযায়ী সেই পদ পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে;

 

(ব)   বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক অথবা খ্যাতিমান ব্যক্তিকে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে তাহার বিশেষ অবদানের জন্য মেধা ও মনীষার স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদান করিতে পারিবে;

 

(ভ)  সরকার ও মঞ্জুরি কমিশন হইতে প্রাপ্ত মঞ্জুরি ও নিজস্ব উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়ের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বিবেচনা ও অনুমোদন করিবে;

 

(ম)  সাধারণ বা বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রদত্ত সকল তহবিল পরিচালনা করিবে;

 

(য)  এই আইন ও সংবিধি দ্বারা ইহার উপর অর্পিত বা আরোপিত অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে; এবং

 

(র)   বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদন ও ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে, যাহা এই আইন বা সংবিধির অধীন অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে প্রদত্ত নহে।

অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল

২১।  (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল গঠিত হইবে, যথা :-

 

(ক)  উপাচার্য, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

 

(খ)  উপউপাচার্য;

 

(গ)  অনুষদসমূহের ডিন;

 

(ঘ)  বিভাগসমূহের চেয়ারম্যান;

 

(ঙ)  ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালক;

 

(চ)   উপাচার্য কর্তৃক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনধিক ৭ (সাত) জন অধ্যাপক, তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অধ্যাপক না থাকিলে উপাচার্য কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক অন্যান্য পর্যায়ের শিক্ষক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মনোনীত হইবেন;

 

(ছ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক;

 

(জ)  উপাচার্য কর্তৃক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপকগণের মধ্য হইতে একজন সহযোগী অধ্যাপক;

 

(ঝ)  উপাচার্য কর্তৃক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকগণের মধ্য হইতে একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষক;

 

 (ঞ) আচার্য কর্তৃক মনোনীত গবেষণা সংস্থা হইতে ২ (দুই) জন গবেষক এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞ ২ (দুই) জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ;

 

(ট)   পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক; এবং

 

(ঠ)   রেজিস্ট্রার, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

 

(২) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মনোনীত কোনো সদস্য তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, মেয়াদ সমাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

 

 (৩) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের কোনো সদস্য পদত্যাগ করিতে চাহিলে যে কোনো সময় চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে সদস্য পদত্যাগ করিতে পারিবেন।

 

(৪) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের কোনো সদস্য যে পদ বা প্রতিষ্ঠান হইতে মনোনীত হইয়াছিলেন তিনি যদি সেই পদ বা প্রতিষ্ঠানে না থাকেন, তাহা হইলে তিনি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।

অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

২২। (১) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ হইবে এবং এই আইন, সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় বিধির বিধান সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ, অ্যাকাডেমিক বর্ষসূচি ও তৎসম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, পরীক্ষার মান নির্ধারণ ও সংরক্ষণের জন্য দায়ী থাকিবে এবং উক্তরূপ বিষয়ের উপর উহার নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান ক্ষমতা থাকিবে।

 

(২) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, এই আইন, মঞ্জুরি কমিশন আদেশ, সংবিধি, উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে, শিক্ষাক্রম ও পাঠক্রম এবং শিক্ষাদান, গবেষণা ও পরীক্ষার সঠিক মান নির্ধারণের জন্য প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 

(৩) উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতার আওতায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের নিম্নরূপ ক্ষমতাও অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :-

 

(ক)  দেশের আর্থ সামাজিক ও আন্তর্জাতিক চাহিদার সহিত সংগতি রাখিয়া, সরকার ও মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদনক্রমে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স চালুর বিষয়ে সিন্ডিকেটের নিকট সুপারিশ করা;

 

(খ)  সার্বিকভাবে শিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্ত সকল বিষয়ে সিন্ডিকেটকে পরামর্শ দান করা;

 

(গ)  শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিধান প্রণয়নের জন্য সিন্ডিকেটের নিকট প্রস্তাব পেশ করা;

 

(ঘ)  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গবেষণায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণের নিকট হইতে গবেষণা প্রতিবেদন তলব করা এবং তৎসম্পর্কে সিন্ডিকেটের নিকট সুপারিশ করা;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও পাঠক্রম কমিটি গঠনের জন্য সিন্ডিকেটের নিকট প্রস্তাব পেশ করা;

 

(চ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ও গবেষণার মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করা;

 

(ছ)  সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ও অনুষদের সুপারিশক্রমে সকল পরীক্ষার প্রতিটি পত্রের পাঠ্যসূচি, পাঠক্রম, গঠন ও গবেষণার সীমারেখা নির্ধারণ করা :

 

তবে শর্ত থাকে যে,-

 

(অ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কেবল অনুষদের সুপারিশমালা গ্রহণ, পরিমার্জন, অগ্রাহ্য বা ফেরত প্রদান করিতে পারিবে এবং প্রয়োজনবোধে পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংশোধনের জন্য অনুষদের নিকট ফেরত পাঠাইতে পারিবে; এবং

 

(আ) অনুষদ কর্তৃক গৃহীত বিভাগীয় পাঠক্রম কমিটির কোনো সিদ্ধান্তের সহিত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল একমত না হইলে বিষয়টি সিন্ডিকেটের নিকট প্রেরণ করা হইবে এবং এই ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে;

 

(জ)  এম. ফিল বা পিএইচ. ডি. ডিগ্রির জন্য কোনো প্রার্থী গবেষণাপত্র দাখিল করিলে সংবিধি, যদি থাকে, অনুসারে তৎসম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদান করা;

 

(ঝ)  প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির সহিত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির সমতা বিধান করা;

 

(ঞ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণার ক্ষেত্রে নূতন কোনো উন্নয়ন প্রস্তাবের উপর সিন্ডিকেটকে পরামর্শ প্রদান করা;

 

(ট)   বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ব্যবহার সংক্রান্ত প্রবিধান প্রণয়ন এবং গ্রন্থাগার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

 

(ঠ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করা এবং ইহার নিকট প্রেরিত শিক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে সিন্ডিকেটকে পরামর্শ প্রদান করা;

 

(ড)  নূতন অনুষদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং নূতন বিষয় প্রবর্তনের জন্য প্রস্তাব সিন্ডিকেটের বিবেচনার জন্য পেশ করা;

 

(ঢ)   অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক ও অন্যান্য শিক্ষক বা গবেষকের পদ সৃষ্টি, বিলোপ বা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখিবার প্রস্তাব বিবেচনা করা এবং তৎসম্পর্কে সিন্ডিকেটের নিকট সুপারিশ করা;

 

(ণ)   ডিগ্রি, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট, বৃত্তি, ফেলোশিপ, স্কলারশিপ, স্টাইপেন্ড, পুরস্কার, পদকসহ এতদ্‌সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়ন এবং উপযুক্ত ব্যক্তিকে তাহা প্রদানের জন্য সিন্ডিকেটের নিকট সুপারিশ করা;

 

(ত)  শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণ বিষয়ে সিন্ডিকেটের নিকট প্রস্তাব পেশ করা এবং প্রশিক্ষণ ও ফেলোশিপ প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা;

 

(থ)  সংশ্লিষ্ট কমিটিসমূহের সুপারিশক্রমে কোর্স বা কারিকুলাম ও সিলেবাস নির্ধারণ, প্রত্যেক কোর্সের জন্য পরীক্ষক প্যানেল অনুমোদন, গবেষণা ডিগ্রির জন্য গবেষণার প্রতিটি বিষয়ের প্রস্তাব অনুমোদন এবং এইরূপ প্রত্যেক বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য পরীক্ষক নিয়োগ করা;

 

(দ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের গুণগত উৎকর্ষ বৃদ্ধি ও তাহা সংরক্ষণ করিবার লক্ষ্যে প্রবিধান প্রণয়ন এবং দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগসূত্র স্থাপন বা যৌথ কার্যক্রম গ্রহণ করিবার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা; এবং

 

(ধ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ, ভর্তির যোগ্যতা ও শর্তাবলি নির্ধারণ এবং এতদুদ্দেশ্যে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা।

 

(৪) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রদত্ত, শিক্ষা বিষয়ক অন্যান্য দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে।

অনুষদ

২৩। (১) বিশ্ববিদ্যালয়, এই আইন ও সংবিধির বিধান এবং বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সম্পর্কে নিশ্চিত হইয়া, মঞ্জুরি কমিশনের অনুমতি গ্রহণ সাপেক্ষে, এক বা একাধিক অনুষদ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে।

 

(২) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সাধারণ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে প্রত্যেক অনুষদ এই আইন ও সংবিধির বিধান দ্বারা নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা পরিচালনার দায়িত্বে থাকিবে।

 

(৩) অনুষদের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি বিশ্ববিদ্যালয় বিধি ও সংবিধির বিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৪) প্রত্যেক অনুষদের একজন করিয়া ডিন থাকিবেন এবং তিনি উপাচার্যের সাধারণ নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে থাকিয়া অনুষদ সম্পর্কিত বিশ্ববিদ্যালয় বিধি, সংবিধি ও প্রবিধানের বিধান অনুসারে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য দায়ী থাকিবেন।

 

(৫) উপাচার্য সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে প্রত্যেক অনুষদের জন্য উহার বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকদের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে, আবর্তনক্রমে, ২ (দুই) বৎসর মেয়াদের জন্য ডিন নিযুক্ত করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে,-

 

(ক)  কোনো ডিন একাদিক্রমে ২ (দুই) মেয়াদের জন্য নিযুক্ত হইতে পারিবেন না;

 

(খ)  কোনো বিভাগে অধ্যাপক না থাকিলে সেই বিভাগের জ্যেষ্ঠতম সহযোগী অধ্যাপক ডিন পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন এবং কোনো বিভাগের একজন শিক্ষক ডিনের দায়িত্ব পালন করিয়া থাকিলে সেই বিভাগের অবশিষ্ট শিক্ষকগণ পরবর্তী আবর্তনক্রমে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ডিন পদে নিযুক্তির সুযোগ প্রাপ্ত হইবেন; এবং

 

(গ)  একাধিক বিভাগে সমজ্যেষ্ঠ অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক থাকিলে, সেই ক্ষেত্রে তাহাদের মধ্যে ডিন পদের আবর্তনক্রম উপাচার্য কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

 

(৬) ছুটি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ডিনের পদ শূন্য হইলে উপাচার্য ডিন পদের দায়িত্ব পালনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

(৭) শিক্ষা সম্পর্কিত যে কোনো কমিটির যে কোনো সভায় ডিনগণ উপস্থিত থাকিতে এবং সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে তিনি উক্ত কমিটির সদস্য না হইলে তাহার ভোটাধিকার প্রয়োগ করিতে পারিবেন না।

ইন্সটিটিউট

২৪। (১) বিশ্ববিদ্যালয়, প্রয়োজনবোধে, আচার্যের অনুমোদন সাপেক্ষে, গবেষণা কার্য পরিচালনাসহ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার জন্য সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার অঙ্গীভূত বা অধিভুক্ত ইন্সটিটিউট হিসাবে এক বা একাধিক ইন্সটিটিউট স্থাপন করিতে পারিবে বা, ক্ষেত্রমত, উক্ত বিষয় সংশ্লিষ্ট কোনো ইন্সটিটিউটকে অধিভুক্ত করিতে পারিবে।

 

(২) প্রত্যেকটি ইন্সটিটিউট পরিচালনার জন্য একজন পরিচালকসহ পৃথক বোর্ড অব গভর্নরস থাকিবে, যাহা সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বিভাগ

২৫। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করা হয় এমন কোনো বিষয়ের সকল শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি বিভাগ গঠিত হইবে।

 

(২) শিক্ষকগণের নিয়োগ পদ্ধতি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৩) বিভাগীয় চেয়ারম্যান সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবেন।

পাঠক্রম কমিটি

২৬। অনুষদের প্রত্যেক বিভাগে সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পাঠক্রম কমিটি থাকিবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল

২৭। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-

 

(ক)  মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

(খ)  সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ অনুদান;

 

(গ)  প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

(ঘ)  শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রদত্ত বেতন, ফি, ইত্যাদি;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত ও পরিচালন উৎসারিত আয়;

 

(চ)   বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অন্যান্য বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ;

 

(ছ)  মঞ্জুরি কমিশন ও সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো বিদেশি সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান বা সাহায্য;

 

(জ)  স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

 

(ঝ)  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, গৃহীত ঋণ; এবং

 

(ঞ) বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা।

 

(২) তহবিলের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে তৎকর্তৃক অনুমোদিত কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং প্রবিধান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে।

 

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত কোনো ‘‘Scheduled Bank’’

 

(৩) তহবিল হইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।

 

(৪) তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত কোনো খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।

 

(৫) বিশ্ববিদ্যালয় দেশি ও বিদেশি কোনো সংস্থা, কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তি বা প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রদত্ত অনুদানের অর্থ দ্বারা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করিতে পারিবে এবং সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত ফান্ড পরিচালনা করিতে হইবে।

 

(৬) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ট্রাস্ট ফান্ড ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে অন্য কোনো তহবিল বা ফান্ড গঠন করিতে পারিবে এবং সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল বা ফান্ড পরিচালনা করিতে পারিবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যয় ও শিক্ষার্থীদের বেতনাদি

২৮।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের, মূলধন ব্যয় ব্যতিরেকে, নিরিখে শিক্ষার্থীদের নিকট হইতে বার্ষিক আদায়যোগ্য বেতন ও ফি নির্ধারিত হইবে।

 

(২) সেমিস্টার অনুযায়ী নির্ধারিত বেতন ও ফি সেমিস্টার শুরু হইবার পূর্বেই পরিশোধ করিতে হইবে।

 

(৩) সরকার বা অন্যান্য উৎস হইতে প্রাপ্ত অনুদান বা আয় হইতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেধা ও প্রয়োজনের নিরিখে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করিতে পারিবে।

 

(৪) বৃত্তি বা উপ-বৃত্তি শিক্ষা বৎসরওয়ারী প্রদান করা হইবে।

 

(৫) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি, অধ্যয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও শিক্ষা আহরণে পারদর্শিতার উপর বৃত্তি প্রদানের বিষয়টি নির্ভর করিবে।

অর্থ কমিটি

২৯। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অর্থ কমিটি থাকিবে এবং নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে অর্থ কমিটি গঠিত হইবে, যথা :-

 

(ক)  উপাচার্য, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;

 

(খ)  উপউপাচার্য;

 

(গ) ট্রেজারার;

 

(ঘ)  রেজিস্ট্রার;

 

(ঙ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত এই আইনের ৮ ধারায় উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ (দুই) জন কর্মচারী;

 

(চ)   সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত একজন সিন্ডিকেট সদস্য, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিয়োজিত নহেন;

 

(ছ)  মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

 

(জ)  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন পরিকল্পনাবিদ বা অর্থ বিশারদ;

 

(ঝ)  অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

 

(ঞ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; এবং

 

(ট)   পরিচালক (অর্থ ও হিসাব), যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

 

 (২) পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) সভাপতির অনুমোদনক্রমে, অর্থ কমিটির সভা আহবান করিবেন এবং সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

(৩) অর্থ কমিটির মনোনীত কোনো সদস্য তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, মেয়াদ সমাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

 

(৪) অর্থ কমিটির কোনো সদস্য পদত্যাগ করিতে চাহিলে যে কোনো সময় সভাপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে সদস্য পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

 

(৫) অর্থ কমিটির কোনো সদস্য যে পদ বা প্রতিষ্ঠান হইতে মনোনীত হইয়াছিলেন তিনি যদি সেই পদ বা প্রতিষ্ঠানে না থাকেন, তাহা হইলে তিনি অর্থ কমিটির সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।

 

অর্থ কমিটির ক্ষমতা ও দায়িত্ব

৩০।  অর্থ কমিটি-

 

(ক)  বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত কার্যাবলি তত্ত্বাবধান করিবে;

 

(খ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ, তহবিল, সম্পদ ও হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সিন্ডিকেটকে পরামর্শ প্রদান করিবে;

 

(গ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট বিবেচনা করিবে এবং এতদসম্পর্কে সিন্ডিকেটকে পরামর্শ প্রদান করিবে;

 

(ঘ)  সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত বা উপাচার্য বা সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবে; এবং

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পদ সৃজন, বিলোপ ও সাময়িকভাবে স্থগিত রাখিবার প্রস্তাব বিবেচনা করা ও তৎসম্পর্কে সিন্ডিকেটের নিকট সুপারিশ করা।

পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি

৩১। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-

 

(ক)  উপাচার্য, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;

 

(খ)  উপউপাচার্য;

 

(গ) ট্রেজারার;

 

(ঘ)  রেজিস্ট্রার;

 

(ঙ)  উপাচার্য কর্তৃক জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে মনোনীত একজন ডিন;

 

(চ)   সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত সিন্ডিকেটের একজন সদস্য, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিয়োজিত নহেন;

 

(ছ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিয়োজিত একজন অধ্যাপক;

 

(জ)  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী;

 

(ঝ)  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন স্থপতি বা পরিকল্পনাবিদ;

 

(ঞ) পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার একজন প্রতিনিধি;

 

(ট)   মঞ্জুরি কমিশনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের একজন পরিচালক;

 

(ঠ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী; এবং

 

(ড)  পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

 

(২) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির মনোনীত কোনো সদস্য তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, মেয়াদ সমাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাহার স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

 

(৩) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির কোনো সদস্য পদত্যাগ করিতে চাহিলে যে কোনো সময় সভাপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে সদস্য পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

 

(৪) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির কোনো সদস্য যে পদ বা প্রতিষ্ঠান হইতে মনোনীত হইয়াছিলেন তিনি যদি সেই পদ বা প্রতিষ্ঠানে না থাকেন, তাহা হইলে তিনি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন না। 

 

(৫) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ হইবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উহার জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মসূচির মূল্যায়ন করিবে।

 

(৬) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত অথবা উপাচার্য বা সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য কার্যাবলিও সম্পাদন করিবে।

সিলেকশন কমিটি

৩২। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশের জন্য পৃথক পৃথক সিলেকশন কমিটি থাকিবে।

 

(২)  সিলেকশন কমিটির গঠন ও কার্যাবলি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৩)  সিলেকশন কমিটির সুপারিশ সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।

 

(৪)  সিন্ডিকেট সিলেকশন কমিটির সুপারিশের সহিত একমত না হইলে বিষয়টি আচার্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত বিষয়ে তাহার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্তৃপক্ষ

৩৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ হিসাবে ঘোষিত অন্যান্য কর্তৃপক্ষের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

শৃঙ্খলা বোর্ড

৩৪। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শৃঙ্খলা বোর্ড থাকিবে।

 

(২)  শৃঙ্খলা বোর্ডের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৩) শৃঙ্খলা বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করিবে।

অভিযোগ কমিটি

৩৫।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অভিযোগ কমিটি থাকিবে।

 

(২) অভিযোগ কমিটির গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

হল

৩৬।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হলসমূহ বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত হইবে।

 

(২) হল প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরগণ বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিযুক্ত হইবেন।

 

(৩) হলে বসবাসের শর্তাবলি বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে ভর্তি

৩৭।  (১) এই আইন ও সংবিধির বিধান সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ও অন্যান্য পাঠক্রমে শিক্ষার্থী ভর্তি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত ভর্তি কমিটি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা পরিচালিত হইবে।

 

(২) কোনো শিক্ষার্থী বাংলাদেশে অনুমোদিত কোনো শিক্ষা বোর্ড বা সমমানের সংস্থার অধীন কোনো স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হইতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কিংবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হইয়া থাকিলে কিংবা বিদেশের অনুমোদিত ও স্বীকৃত কোনো শিক্ষা বোর্ড, সমমানের সংস্থা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হইয়া থাকিলে, যাহা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বোর্ড, সমমানের সংস্থা বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সমমান বলিয়া স্বীকৃত, এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য যোগ্যতা তাহার না থাকিলে উক্ত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সের কোনো পাঠক্রমে ভর্তির যোগ্য হইবে না।

 

(৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তির শর্তাবলি এই আইন ও সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৪) কোনো পাঠক্রমে ডিগ্রির জন্য ভর্তির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, এই আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত ডিগ্রিকে তৎকর্তৃক প্রদত্ত কোনো ডিগ্রির সমমানের বলিয়া স্বীকৃতি প্রদান করিতে পারিবে অথবা স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ব্যতীত অন্য কোনো পরীক্ষাকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সমমানের বলিয়া স্বীকৃতি প্রদান করিতে পারিবে।

 

(৫) ভর্তির সময় প্রদত্ত মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে কোনো শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হইলে এবং পরবর্তীতে উহা প্রমাণিত হইলে তাহার ভর্তি বাতিলযোগ্য হইবে।

 

(৬) নৈতিক স্খলনের দায়ে উপযুক্ত কোনো আদালত কর্তৃক কোনো শিক্ষার্থী দোষী সাব্যস্ত হইলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্য হইবেন না।

পরীক্ষা

৩৮। (১) উপাচার্যের সাধারণ নিয়ন্ত্রণাধীন থাকিয়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা পরিচালনার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

(২) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরীক্ষা কমিটি গঠন করিবে এবং উহাদের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

(৩) কোনো পরীক্ষার বিষয়ে কোনো পরীক্ষক কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে বা অপারগতা প্রকাশ করিলে উপাচার্যের নির্দেশে তাহার স্থলে অন্য একজন পরীক্ষককে নিয়োগ প্রদান করা যাইবে।

পরীক্ষা পদ্ধতি

৩৯।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ও নির্ধারিত সংখ্যক কোর্সে একক (ক্রেডিট আওয়ারস) পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা হইবে।

 

(২) সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি নির্ধারিত সংখ্যক সেমিস্টারে বিভাজিত হইবে এবং ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা বিশেষের জন্য নির্ধারিত সংখ্যক কোর্স সম্পন্ন করিয়া ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা লাভের জন্য সর্বোচ্চ সময় নির্ধারিত থাকিবে এবং প্রত্যেক পাঠক্রমের সফল সমাপ্তি এবং উহার উপর পরীক্ষা গ্রহণের পর পরীক্ষার্থীকে গ্রেড বা নম্বর প্রদান করা হইবে।

 

(৩) সকল সেমিস্টার পরীক্ষায় প্রাপ্ত গ্রেডের সমন্বয়ের ভিত্তিতে পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারণপূর্বক পরীক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হইবে।

 

(৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে প্রদত্ত প্রতিটি কোর্স, যাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ডিগ্রি প্রদানের জন্য নির্ধারিত পাঠ্যক্রমের অংশবিশেষ, পরীক্ষণের জন্য নিযুক্ত পরীক্ষকগণের মধ্যে অন্যূন একজন শিক্ষক থাকিবেন, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো চাকরিতে নিয়োজিত নহেন।

চাকরির শর্তাবলি

৪০।  (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত হইবেন এবং চুক্তিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের হেফাজতে তাহার কার্যালয়ে গচ্ছিত থাকিবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা কর্মচারীকে উহার একটি অনুলিপি প্রদান করা হইবে।

 

(২) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারী সর্বদা সততা ও ন্যায়পরায়ণতার সহিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিবেন এবং এইরূপ দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষ থাকিবেন।

 

(৩) নিয়োগের শর্তাবলিতে ভিন্নরূপ কিছু উল্লেখ না থাকিলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক শিক্ষক ও কর্মচারীরূপে গণ্য হইবেন।

 

(৪) বিশ্ববিদ্যালয় অথবা রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি ও স্বার্থের পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপের সহিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী নিজেকে জড়িত করিবেন না।

 

(৫) কোনো শিক্ষক ও কর্মচারীর রাজনৈতিক মতামত পোষণের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন না করিয়া তাহার চাকরির শর্তাবলি নির্ধারণ করিতে হইবে, তবে তিনি তাহার রাজনৈতিক মতামত প্রচার করিতে পারিবেন না বা তিনি নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সহিত জড়িত করিতে পারিবেন না।

 

(৬) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক বা কর্মচারী সংসদ সদস্য হিসাবে বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হইবার জন্য প্রার্থী হইতে চাহিলে তিনি তাহার মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি হইতে ইস্তফা প্রদান করিবেন।

 

(৭) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক বা কর্মচারীকে তাহার কর্তব্যে অবহেলা, অসদাচরণ, নৈতিক স্খলন, অদক্ষতা বা নাশকতার কারণে সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে চাকরি হইতে অপসারণ বা বরখাস্তকরণ বা বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান বা অন্য কোনো প্রকার শাস্তি প্রদান করা যাইবে:

 

তবে শর্ত থাকে যে, তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কোনো তদন্ত কমিটি কর্তৃক তদন্ত অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করিয়া চাকরি হইতে অপসারণ বা বরখাস্তকরণ বা বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান বা অন্য কোনো প্রকার শাস্তি প্রদান করা যাইবে না।

সংবিধি প্রণয়ন, ইত্যাদি

৪১। (১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, সংবিধি দ্বারা নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো বিষয় সম্পর্কে বিধান করা যাইবে, যথা :-

 

(ক)  উপাচার্যের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ;

 

(খ)  উপউপাচার্যের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ;

 

(গ)  ট্রেজারারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ;

 

(ঘ)  অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্ধারণ;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি নির্ধারণ;

 

(চ)   জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রখ্যাত ব্যক্তিদের সম্মানে চেয়ার (অধ্যাপক পদ) প্রবর্তন;

 

(ছ)  ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট বা সম্মানসূচক ডিগ্রি অথবা অন্য কোনো সম্মান প্রদান;

 

(জ)  শিক্ষাদানকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ;

 

(ঝ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীগণের পদবি, ক্ষমতা, কর্তব্য ও কর্মের শর্তাবলি নির্ধারণ;

 

(ঞ) হল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং উহাদের রক্ষণাবেক্ষণ;

 

(ট)   বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত পদ্ধতি নির্ধারণ;

 

(ঠ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের কল্যাণার্থে অবসরভাতা ও আনুতোষিক, গোষ্ঠী বীমা এবং কল্যাণ ও ভবিষ্য তহবিল গঠন;

 

(ড)  শিক্ষক ও গবেষকের পদ সৃষ্টি, বিলোপ বা সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ সংক্রান্ত বিধান নির্ধারণ;

 

(ঢ)   নূতন বিভাগ বা ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা, সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ, বিলোপ সাধন এবং শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির বিধান নির্ধারণ;

 

(ণ)   অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ;

 

(ত)  অনুষদের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলি নির্ধারণ;

 

(থ)  সিলেকশন কমিটির গঠন ও কার্যাবলি নির্ধারণ;

 

(দ)  ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও অন্যান্য পাঠক্রমে ভর্তি ও পরীক্ষা;

 

 ‌‌     (ধ) বিভিন্ন কমিটি গঠন;

 

      (ন) রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের রেজিস্টার সংরক্ষণ;

 

(প) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ উচ্চশিক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান অধিভুক্তকরণ; এবং

 

(ফ) এই আইনের অধীন সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে বা হইতে পারে এইরূপ অন্যান্য বিষয়।

     

(২) তপশিলে বর্ণিত সংবিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধি হইবে এবং সিন্ডিকেট, আচার্যের অনুমোদন সাপেক্ষে, সংবিধি প্রণয়ন, সংশোধন বা বাতিল করিতে পারিবে।

বিশ্ববিদ্যালয় বিধি প্রণয়ন, ইত্যাদি

৪২। (১) এই আইন ও সংবিধির বিধান সাপেক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো বিষয় সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করা যাইবে, যথা :-

 

(ক)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি ও তাহাদের তালিকাভুক্তি এবং স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও অন্যান্য পাঠক্রমে ভর্তি ও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিধান প্রণয়ন;

 

(খ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্সের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়ন;

 

(গ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং ডিগ্রি, সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা অর্জনের যোগ্যতার শর্তাবলি নির্ধারণ;

 

(ঘ)  শিক্ষাদান, টিউটোরিয়াল ক্লাস, গবেষণাগার ও কর্মশিবির পরিচালনার পদ্ধতি নিরূপণ;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থান ও হলের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার সংক্রান্ত শর্তাবলি এবং তাহাদের আচরণ ও শৃঙ্খলা সম্পর্কিত বিধি নির্ধারণ;

 

(চ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা, ডিগ্রি, সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমায় ভর্তির জন্য আদায়যোগ্য ফি নির্ধারণ;

 

(ছ)  শিক্ষাদান ও পরীক্ষা পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ;

 

(জ)  বিভিন্ন কমিটি গঠন;

 

(ঝ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংস্থা গঠন এবং উহাদের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ; এবং

 

(ঞ) এই আইন বা সংবিধির অধীন বিশ্ববিদ্যালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইতে পারে এইরূপ অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ।

 

(২) সিন্ডিকেট, মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশক্রমে ও সরকারের অনুমোদনক্রমে, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি প্রণয়ন করিবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয় বিধি প্রণয়ন করা যাইবে না, যথা :-

 

(ক)  শিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা;

 

(খ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন;

 

(গ)  অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষাসমূহের সমতাকরণ;

 

(ঘ)  পরীক্ষা পরিচালনা;

 

(ঙ)  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সকল ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেটের জন্য পাঠ্যসূচি প্রণয়ন ও পাঠক্রম নির্ধারণ;

 

(চ)   বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি ও তাহাদের তালিকাভুক্তকরণ; এবং

 

(ছ)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্সে ভর্তি, উহার বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং উহার ডিগ্রি, সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা অর্জনের যোগ্যতার শর্তাবলি নির্ধারণ।

প্রবিধান প্রণয়ন, ইত্যাদি

৪৩। (১) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থাসমূহ নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে এই আইন, সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয় বিধির সহিত সঙগতিপূর্ণভাবে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা :-

 

(ক)  উহাদের নিজ নিজ সভায় অনুসরণীয় কার্যবিধি প্রণয়ন এবং কোরাম গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ;

 

(খ)  এই আইন, সংবিধি বা বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারণযোগ্য সকল বিষয়ের উপর বিধান প্রণয়ন; এবং

 

(গ)  কেবল উক্ত কর্তৃপক্ষসমূহের সহিত সংশ্লিষ্ট, অথবা এই আইন, সংবিধি বা বিশ্ববিদ্যালয় বিধিতে বিধৃত হয় নাই এইরূপ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন।

 

(২) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা উহার সভার তারিখ এবং সভার বিবেচ্য বিষয় সম্পর্কে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান এবং সভার কার্যবিবরণীর রেকর্ড সংরক্ষণ সম্পর্কে প্রবিধান প্রণয়ন করিবে।

 

(৩) সিন্ডিকেট এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো প্রবিধান তৎকর্তৃক নির্ধারিত প্রকারে সংশোধন বা বাতিল করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত নির্দেশ পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ বাধ্য থাকিবে।

 

(৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত কোনো নির্দেশ দ্বারা অসন্তুষ্ট হইলে বিষয়টি সম্পর্কে চ্যান্সেলরের নিকট আপিল করিতে পারিবে এবং আপিলে আচার্য কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

বার্ষিক প্রতিবেদন

৪৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুসারে প্রস্তুত করিতে হইবে এবং পরবর্তী শিক্ষা বৎসর আরম্ভের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে বা তৎপূর্বে উহা মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকারের নিকট পেশ করিতে হইবে।

 

বার্ষিক হিসাব

৪৫। (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক হিসাব ও আর্থিক বিবরণী সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুসারে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিতে হইবে।

 

(২) উহা সরকার কর্তৃক মনোনীত অডিট টিম দ্বারা নিরীক্ষিত হইতে হইবে।

 

(৩) বার্ষিক হিসাব, নিরীক্ষা প্রতিবেদনের অনুলিপিসহ, মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকারের নিকট পেশ করিতে হইবে।

কর্তৃপক্ষের সদস্য হইবার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ

৪৬। কোনো ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটের কোনো পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার বা বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো ইনস্টিটিউটের কোনো কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো সংস্থার সদস্য হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-  

 

(ক)  অপ্রকৃতিস্থ বা অন্য কোনো অসুস্থতাজনিত কারণে তাহার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;

 

(খ)  দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

 

(গ)  নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হন; এবং

 

(ঘ)  সিন্ডিকেটের বিশেষ অনুমতি ব্যতিরেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত কোনো পরীক্ষার পাঠক্রম হিসাবে নির্ধারিত কোনো পুস্তক, তাহা স্ব-লিখিত হোক বা সম্পাদিত হোক, এর প্রকাশনা, সংগ্রহ বা সরবরাহকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হিসাবে বা অন্য কোনো প্রকারে আর্থিক স্বার্থে জড়িত থাকেন :

 

      তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারায় বর্ণিত বিষয়ে সংশয় বা বিরোধের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি এই ধারা অনুযায়ী অযোগ্য কিনা তাহা আচার্য সাব্যস্ত করিবেন এবং এই বিষয়ে তাহার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা গঠন সম্পর্কে বিরোধ

৪৭।  এই আইন, সংবিধি, বিশ্ববিদ্যালয় বিধি বা প্রবিধানে এতদ্‌সম্পর্কিত বিধানের অবর্তমানে, কোনো ব্যক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো সংস্থার সদস্য হইবার অধিকার সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে উহা সিন্ডিকেটের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং সিন্ডিকেট উহা নিষ্পত্তি করিতে না পারিলে আচার্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত বিষয়ে আচার্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

কমিটি গঠন

৪৮। এই আইন বা সংবিধি দ্বারা কোনো কর্তৃপক্ষকে কমিটি গঠনের ক্ষমতা প্রদান করা হইলে এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত মতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইয়া কোনো কমিটি গঠন করিলে উহার গঠনের আইনগত বৈধতা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

আকস্মিকভাবে শূন্য হওয়া পদ পূরণ

৪৯।  বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ বা ইনস্টিটিউট পদাধিকারবলে সদস্য নহেন এমন কোনো সদস্যের পদে আকস্মিক শূন্যতা সৃষ্টি হইলে যে ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ উক্ত সদস্যকে নিযুক্ত, নির্বাচিত বা মনোনীত করিয়াছিলেন সেই ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ, যথাশীঘ্র সম্ভব, উক্ত শূন্য পদ পূরণ করিবেন এবং যে ব্যক্তি এই প্রকার শূন্য পদে নিযুক্ত, নির্বাচিত বা মনোনীত হইবেন সেই ব্যক্তি যাহার স্থলাভিষিক্ত হইয়াছেন, তাহার অসমাপ্ত কার্যকালের জন্য উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সদস্য পদে বহাল থাকিবেন।

কার্যধারার বৈধতা, ইত্যাদি

৫০। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ, ইনস্টিটিউট বা কোনো সংস্থার কোনো কার্য ও কার্যধারা উহার কোনো পদের শূন্যতা বা উক্ত পদে নিযুক্তি, মনোনয়ন বা নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যর্থতা বা ত্রুটির কারণে অথবা কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়ে অন্য কোনো প্রকার ত্রুটির জন্য অবৈধ হইবে না কিংবা তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

বিতর্কিত বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্ত

৫১। এই আইন বা সংবিধিতে বিধৃত হয় নাই এইরূপ কোনো বিষয়ে বা চুক্তি সম্পর্কে বিতর্ক বা বিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সিন্ডিকেটের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং সিন্ডিকেট নিষ্পত্তি করিতে না পারিলে উহা নিষ্পত্তির জন্য আচার্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে আচার্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

অবসরভাতা ও ভবিষ্য তহবিল

৫২। সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তাবলি সাপেক্ষে এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় উহার শিক্ষক ও কর্মচারীদের কল্যাণার্থে দেশে প্রচলিত এতদ্‌সংক্রান্ত নিয়ম ও বিধির সহিত সংগতি রাখিয়া অবসরভাতা, গোষ্ঠী-বীমা, কল্যাণ তহবিল বা ভবিষ্য তহবিল গঠন এবং আনুতোষিক বা গ্র্যাচুইটি প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে।

সংবিধিবদ্ধ মঞ্জুরি

৫৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ হইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার নিরীখে মঞ্জুরি কমিশন যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করা যৌক্তিক বলিয়া বিবেচনা করিবে, সেই পরিমাণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ প্রদান করিবে।

অসুবিধা দূরীকরণ

৫৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে বা উহার কোনো কর্তৃপক্ষের প্রথম বৈঠকের বিষয়ে বা এই আইনের বিধানাবলি প্রথম কার্যকর করিবার বিষয়ে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসমূহ গঠিত হইবার পূর্বে যে কোনো সময়ে উক্ত অসুবিধা দূরীকরণের জন্য সমীচীন বা প্রয়োজনীয় বলিয়া আচার্যের নিকট প্রতীয়মান হইলে তিনি, আদেশ দ্বারা, এই আইন ও সংবিধির সহিত, যতদূর সম্ভব, সংগতি রক্ষা করিয়া যে কোনো পদে নিয়োগ প্রদান বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং এই প্রকার প্রত্যেকটি আদেশ এইরূপে কার্যকর হইবে যেন উক্ত নিয়োগ প্রদান ও ব্যবস্থা গ্রহণ এই আইনের বিধান অনুসারে কৃত হইয়াছে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ, ইত্যাদি

৫৫। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

 

(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs