প্রিন্ট ভিউ
Madrasah Education Ordinance, 1978 রহিতক্রমে সংশোধনসহ পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল এবং ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ৩ক, ১৮ ও ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হয় এবং সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপিল নং ১০৪৪-১০৪৫/২০০৯ ও সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে সামগ্রিকভাবে অননুমোদনপূর্বক (total disapproval of Martial law) উহাদের বৈধতা প্রদানকারী, যথাক্রমে, সংবিধান (পঞ্চম সংশোধন) আইন, ১৯৭৯ (১৯৭৯ সনের ১ নং আইন) এবং সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৬ ও ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী করিবার উদ্যোগ গৃহীত হয় এবং উহার ধারাবাহিকতায় Madrasah Education Ordinance, 1978 (Ordinance No. IX of 1978) এর অধীন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠিত হয়; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Madrasah Education Ordinance, 1978 (Ordinance No. IX of 1978) রহিতক্রমে উহার বিধানাবলি বিবেচনাক্রমে সময়ের চাহিদার প্রতিফলনে যুগোপযোগী করিয়া বাংলা ভাষ্যে একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০২০ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় অথবা প্রসংগের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) ‘‘অধ্যক্ষ’’ অর্থ আলিম, ফাযিল বা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ
(২) ‘‘আলিম মাদ্রাসা’’ অর্থ বোর্ডের অধিভুক্ত এবং আলিম মানের জন্য স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মাদ্রাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
(৩) ‘‘আলিম মান’’ অর্থ আলিম কোর্সের মাদ্রাসা শিক্ষা, যাহা উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট কোর্সের সমমান;
(৪) ‘‘ইবতেদায়ি মাদ্রাসা’’ অর্থ বোর্ডের অধিভুক্ত এবং ইবতেদায়ি মানের জন্য স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মাদ্রাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
(৫) ‘‘ইবতেদায়ি মান’’ অর্থ ইবতেদায়ি কোর্সের মাদ্রাসা শিক্ষা, যাহা পঞ্চম শ্রেণির সমমান;
(৬) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;
(৭) ‘‘তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারিনটেনডেন্ট’’ অর্থ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান;
(৮) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত তহবিল;
(৯) ‘‘দাখিল মাদ্রাসা’’ অর্থ বোর্ডের অধিভুক্ত এবং দাখিল মানের জন্য স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মাদ্রাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;
(১০) ‘‘দাখিল মান’’ অর্থ দাখিল কোর্সের মাদ্রাসা শিক্ষা, যাহা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট কোর্সের সমমান;
(১১) ‘‘পরিচালনা পর্ষদ’’ অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ;
(১২) ‘‘তপশিল’’ অর্থ এই আইনের তপশিল;
(১৩) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ ধারা ২৯ এর অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(১৪) ‘‘বিধি’’ অর্থ ধারা ২৮ এর অধীন প্রণীত বিধি;
(১৫) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড;
(১৬) ‘‘মাদ্রাসা’’ অর্থ ইসলামি শাস্ত্র শিক্ষা ও চর্চার জন্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং ইবতেদায়ি মাদ্রাসা, দাখিল মাদ্রাসা এবং আলিম মাদ্রাসাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৭) ‘‘মাদ্রাসা শিক্ষা’’ অর্থ ইবতেদায়ি মান, দাখিল মান ও আলিম মান সংক্রান্ত শিক্ষা;
(১৮) ‘‘রেজিস্ট্রার’’ অর্থ বোর্ডের রেজিস্ট্রার; এবং
(১৯) ‘‘সদস্য’’ অর্থ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য।
দ্বিতীয় অধ্যায়
বোর্ড প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি
৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, Madrasah Education Ordinance, 1978 (Ordinance No. IX of 1978) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত The Madrasah Education Board, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, নামে অভিহিত হইবে এবং ইহা এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
৪। বোর্ডের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং বোর্ড, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার আঞ্চলিক ও শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
৫। বোর্ডের সাধারণ প্রশাসনসহ সার্বিক কার্যক্রম চেয়ারম্যান কর্তৃক পরিচালিত হইবে, যাহা পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
৬। (১) বোর্ডের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে এবং নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হইবে, যথা :-
(ক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;
(খ) মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মচারী;
(গ) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মচারী;
(ঘ) বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মচারী;
(ঙ) পরিচালক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়;
(চ) সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা চেয়ারম্যানগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন প্রতিনিধি;
(ছ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(জ) সরকার কর্তৃক সরকারি মাদ্রাসার অধ্যগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন প্রতিনিধি;
(ঝ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বেসরকারি মাদ্রাসার দুইজন অধ্যক্ষ;
(ঞ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বেসরকারি মাদ্রাসার দুইজন তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারিনটেনডেন্ট;
(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত মাদ্রাসা শিক্ষার সহিত সংশিস্নষ্ট একজন শিক্ষাবিদ;
(ঠ) অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, ঢাকা; এবং
(ড) রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (চ), (ছ), (জ), (ঝ), (ঞ) ও (ট) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসরের জন্য সদস্য পদে বহাল থাকিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে, মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে কোনো মনোনীত সদস্যের মনোনয়ন বাতিল করিতে পারিবে :
আরও শর্ত থাকে যে, কোনো মনোনীত সদস্য, যে কোনো সময়, চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।
৭। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, পরিচালনা পর্ষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) পরিচালনা পর্ষদের সভা উহার চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে উহার সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) প্রতি ৩ (তিন) মাসে পরিচালনা পর্ষদের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, তবে জরুরি প্রয়োজনে পরিচালনা পর্ষদ যে কোনো সময় সভা আহবান করিতে পারিবে।
(৪) চেয়ারম্যান পরিচালনা পর্ষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত একজন সদস্য পরিচালনা পর্ষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৫) পরিচালনা পর্ষদের সভার কোরামের জন্য অন্যূন উহার অর্ধেক সংখ্যক সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।
(৬) পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
(৭) কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা পরিচালনা পর্ষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা পর্ষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৮। (১) কোনো সদস্যের সদস্য পদ ইস্তফা, মৃত্যু অথবা অন্য কোনো কারণে শূন্য হইলে ধারা ৬ এর বিধান অনুসারে অন্য কোনো ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট শূন্য পদে মনোনীত অথবা নিযুক্ত হইবেন।
(২) মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও একজন সদস্য তাঁহার পদে বহাল থাকিবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত মেয়াদের অবসান দ্বারা সৃষ্ট শূন্যতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পূরণ করা না হয়।
৯। 1[(১)] বোর্ডের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
(ক) মাদ্রাসা শিক্ষা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ;
(খ) মাদ্রাসা স্থাপন, পাঠদান, স্বীকৃতি ও নবায়নের অনুমতি প্রদান এবং পাঠদান ও স্বীকৃতির অনুমতি স্থগিত, বাতিল ও পুনর্বহাল;
(গ) মাদ্রাসা শিক্ষা কোর্স নির্ধারণ;
(ঘ) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৬২ নং আইন) অনুযায়ী পাঠ্যক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, উন্নয়ন, নবায়ন, নিরীক্ষণ এবং সংস্কার কার্যক্রমে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান;
(ঙ) বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ, ফি নির্ধারণ, ফল প্রকাশ, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সনদ প্রদান;
(চ) বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি এবং আন্তঃপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী বদলি সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন;
(ছ) মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নকল্পে গবেষণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ;
(জ) বোর্ড কর্তৃক মাদ্রাসা পরিদর্শন, তদারকি ও পরিবীক্ষণ;
(ঝ) বোর্ড কর্তৃক মাদ্রাসার তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষাণাবেক্ষণ;
(ঞ) মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি, পদক বা পুরস্কার প্রদান;
(ট) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদন :
তবে শর্ত থাকে যে, বিদেশি কোনো সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে; এবং
(ঠ) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্য কোনো দায়িত্ব পালন।
2[(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি অতিমারী (pandemic), মহামারী (epidemic), দৈব-দুর্বিপাক (Act of God) এর কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় সময় ঘোষিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে, কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ প্রদান করা সম্ভব না হইলে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, কোনো বিশেষ বৎসরের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ ব্যতীত বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করিয়া, উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশনাবলি জারি করিতে পারিবে।]
১০। (১) বোর্ড মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি প্রদান করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত স্বীকৃতি প্রদানের পদ্ধতি, ফি, স্বীকৃতি স্থগিত বা বাতিল, স্বীকৃতি স্থগিত বা বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে, তবে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী এতদ্সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা যাইবে।
১১। (১) বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কোনো মাদ্রাসা বা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত কোনো পরীক্ষা পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং তিনি উক্ত পরিদর্শন প্রতিবেদন বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
১২। (১) বোর্ড উহার কার্যাবলি পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের নিকট দায়ী থাকিবে।
(২) সরকার, বোর্ডের যে কোনো বিষয় পরিদর্শন বা তদন্ত করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন পরিচালিত পরিদর্শন বা তদন্তের পর সরকার তদনুযায়ী বোর্ডকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হইলে বোর্ড উহা প্রতিপালন করিতে বাধ্য থাকিবে।
(৪) সরকার, জনস্বার্থে, লিখিত আদেশ দ্বারা পরিচালনা পর্ষদের কোনো কার্যক্রম বা কোনো কমিটি বাতিল করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ আদেশ প্রদানের পূর্বে সরকার, কেন উক্ত আদেশ প্রদান করা হইবে না, তৎমর্মে কারণ দর্শাইবার জন্য চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ বা সংশ্লিষ্ট কমিটিকে তলব করিবে।
১৩। (১) বোর্ডের একজন চেয়ারম্যান থাকিবেন।
(২) চেয়ারম্যান সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরির মেয়াদ ও শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
(৩) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্যপদে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, বোর্ডের রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রারের অবর্তমানে অন্য কোনো বিভাগীয় প্রধান সাময়িকভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
১৪। (১) চেয়ারম্যান বোর্ডের প্রধান নির্বাহী হইবেন এবং তিনি-
(ক) বোর্ডের কার্যাবলি ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;
(খ) বোর্ডের হিসাবরক্ষণ, হিসাব বিবরণী প্রণয়ন ও হিসাব নিরীক্ষার ব্যবস্থা করিবেন; এবং
(গ) সরকার কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, চেয়ারম্যান জরুরি প্রয়োজনে, যেকোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপে গৃহীত কার্যক্রম অনুমোদনের জন্য তৎপরবর্তীকালে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভায় উপস্থাপন করিতে হইবে।
(৩) চেয়ারম্যান, বোর্ডের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য, প্রয়োজনে, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে, বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদের জন্য, শ্রমিক নিয়োগ করিতে পারিবেন।
১৫। (১) বোর্ড, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, বোর্ডের নিম্নবর্ণিত কমিটি থাকিবে,
যথা :-
(ক) একাডেমিক কমিটি;
(খ) ইবতেদায়ি পাঠক্রম কমিটি;
(গ) দাখিল পাঠক্রম কমিটি;
(ঘ) আলিম পাঠক্রম কমিটি;
(ঙ) অর্থ কমিটি;
(চ) অডিট কমিটি;
(ছ) বিধি প্রণয়ন কমিটি;
(জ) প্রবিধান প্রণয়ন কমিটি;
(ঝ) বাছাই কমিটি;
(ঞ) আপিল ও সালিশ কমিটি;
(ট) পরীক্ষা ও সক্ষমতা যাচাই কমিটি;
(ঠ) নাম ও বয়স শুদ্ধকরণ কমিটি;
(ড) স্বীকৃতি প্রদান কমিটি;
(ঢ) কেন্দ্র কমিটি;
(ণ) শৃঙ্খলা কমিটি; এবং
(ত) গবেষণা কমিটি।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন গঠিত কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
১৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতার প্রয়োজন হয় এইরূপ কোনো কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বোর্ড, প্রয়োজনে, পরামর্শক বা বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শকের দায়িত্ব ও তাহাদের নিয়োগের শর্তাবলি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
তৃতীয় অধ্যায়
আর্থিক বিষয়াবলি
১৮। (১) বোর্ডের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত দান;
(গ) এই আইনের অধীন ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
(ঘ) বিনিয়োগ হইতে অর্জিত আয়;
(ঙ) ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হইতে প্রাপ্ত আয়;
(চ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিদেশি সরকার বা সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান; এবং
(ছ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) তহবিলের অর্থ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে কোনো তপশিলি ব্যাংকে বোর্ডের নামে জমা রাখিতে হইবে এবং বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে।
(৩) এই আইনের অধীন বোর্ডের কার্যাবলি সম্পাদন এবং চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রারসহ কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা হইবে।
ব্যাখ্যা - এই ধারায় উল্লিখিত ‘তপশিলি ব্যাংক’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article (2)(j)-তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
১৯। বোর্ড সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, প্রতি অর্থ বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় এবং উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হইবে উহা উল্লেখ করিয়া একটি বাজেট বিবরণী সরকারের অনুমোদনের জন্য পেশ করিবে।
২০। (১) বোর্ড যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রত্যেক বৎসর বোর্ডের হিসাব-নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত হিসাব নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য বোর্ড অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত হিসাব নিরীক্ষা ব্যতিরেকেও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b)-তে সংজ্ঞায়িত Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ নিয়োগকৃত Chartered Accountant পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত হারে পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।
(৫) বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল, বার্ষিক ব্যালেন্স শিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার, তহবিল বা অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার বা কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
২১। (১) বোর্ড প্রত্যেক অর্থ বৎসর শেষে ৩১ জুলাই এর মধ্যে উক্ত বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
(২) সরকার, প্রয়োজনে, বোর্ডের নিকট হইতে যে কোনো সময় যে কোনো বিবরণী, হিসাব, পরিসংখ্যান এবং বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোনো বিষয় সম্পর্কিত তথ্য বা উক্তরূপ যে কোনো বিষয় সম্পর্কিত প্রতিবেদন যাচাই করিতে পারিবে এবং বোর্ড উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে বাধ্য থাকিবে।
চতুর্থ অধ্যায়
বিবিধ
২২। চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার এবং বোর্ডের কর্মচারীগণ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর Section 21 এ সংজ্ঞায়িত অর্থে জনসেবক (Public servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।
২৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ডের স্থায়ী কর্মচারীগণের অবসর গ্রহণের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর।
২৪। বোর্ডের কোনো চুক্তির সহিত সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে কোনো সদস্য জড়িত হইতে পারিবেন না।
২৫। বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত অথবা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত কোনো পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত কোনো পুস্তকে যাহার আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে অথবা এইরূপ কোনো পুস্তকের প্রকাশক, সংগ্রাহক অথবা সরবরাহকারী অথবা এই জাতীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হিসাবে আর্থিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে এইরূপ কোনো ব্যক্তি পরিচালনা পর্ষদ অথবা এই আইনের অধীনে নিযুক্ত কোনো কমিটির সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন না এবং এইরূপ স্বার্থ লাভের পর আর সদস্য হিসাবে কার্য করিতে পারিবেন না।
২৬। পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনে, লিখিতভাবে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে বর্ণিত শর্তসাপেক্ষে, যদি থাকে, এই আইনের অধীন উহার কোনো ক্ষমতা চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার বা কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
২৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মাদ্রাসা শিক্ষার ধরন, মেয়াদ, মান ও বিষয় তপশিল-২ অনুযায়ী হইবে।
২৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
২৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, বোর্ড, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে; যথা :-
(ক) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা নির্ধারণ, পরীক্ষার ফি নির্ধারণ, সনদ প্রদান ও প্রত্যাহার;
(খ) পাঠ্যক্রম ও কোর্স প্রণয়ন;
(গ) বোর্ডের সকল পরীক্ষা পরিচালনা;
(ঘ) বোর্ডের কর্মচারীগণের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;
(ঙ) বোর্ড ও কমিটির সভা পরিচালনা;
(চ) মাদ্রাসা পরিচালনা সংক্রান্ত বিধান;
(ছ) মাদ্রাসার শিক্ষকগণের চাকুরির শর্তাবলি ও আচরণবিধি;
(জ) মাদ্রাসার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মধ্যকার বিরোধ মীমাংসা বা সালিশ সংক্রান্ত বিধান;
(ঝ) পরিদর্শন পদ্ধতি ও ধরন;
(ঞ) বোর্ডের রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলি ও আচরণ বিধি; এবং
(ট) বোর্ড ও কমিটির সভায় যোগদানের জন্য সদস্যগণের ভ্রমণভাতা ও সম্মানি।
(৩) তপশিল-১ এ সংযোজিত প্রবিধানসমূহ ধারা ২৯ এর অধীন প্রণীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং বোর্ড, উপধারা (১) এর বিধান সাপেক্ষে, উক্ত প্রবিধান সংশোধন বা বাতিল করিতে পারিবে।
৩০। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, Madrasah Education Ordinance, 1978 (Ordinance No. IX 1978), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন উক্ত রহিতকরণ সত্ত্বেও-
(ক) এই আইনের অধীন পরিচালনা পর্ষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত Ordinance এর অধীন গঠিত Board, অতঃপর উক্ত Board বলিয়া উল্লিখিত, এর পরিচালনা পর্ষদ এই আইনের অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) উক্ত Ordinance এর অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান এই আইনের অধীন বিধি বা প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে বলবৎ থাকিবে।
(৩) উক্ত Ordinance রহিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে, উক্ত Ordinance এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Board এর-
(ক) সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ অর্থ এবং ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ও তহবিল, অর্থের বিনিয়োগ, অন্য সকল দাবি বা অধিকার, প্রাপ্ত সুবিধাদি, এইরূপ বিষয় সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত বা উহা হইতে উদ্ভূত যাবতীয় অধিকার, মেধাস্বত্ব ও স্বার্থ এবং সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং এতদসংক্রান্ত অন্য সকল দলিল-দস্তাবেজ বোর্ডের উপর ন্যস্ত ও স্থানান্তরিত হইবে;
(খ) সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি, বোর্ডের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
(গ) বিরুদ্ধে বা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা বা আইনগত কার্যধারা বোর্ডের বিরুদ্ধে বা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বা আইনগত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঘ) কৃত কোনো কার্য, প্রদত্ত কোনো স্বীকৃতি বা সার্টিফিকেট, ইস্যুকৃত কোনো আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, প্রজ্ঞাপন বা নোটিশ, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত, প্রদত্ত, ইস্যুকৃত গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(ঙ) সকল কর্মচারী বোর্ডের কর্মচারী হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে তাহারা যে শর্তাধীনে চাকুরিতে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে বোর্ডের চাকুরিতে নিয়োজিত থাকিবেন।
৩১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) এই আইনের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।