প্রিন্ট ভিউ

মহাসড়ক আইন, ২০২১

( ২০২১ সনের ২৮ নং আইন )

Highways Act, 1925 রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া মহাসড়ক নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং অবাধ, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিতকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু Highways Act, 1925 (Act No. III of 1925) রহিতক্রমে একটি আধুনিক, উন্নত, কার্যকর মহাসড়ক পরিবহন ব্যবস্থা গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নিরাপদ ও গতিশীল যান চলাচল, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণকল্পে যুগোপযোগী মহাসড়ক নির্মাণ, উন্নয়ন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি গড়িয়া তুলিবার জন্য নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন ‘মহাসড়ক আইন, ২০২১’ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২।   বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অধিদপ্তর” অর্থ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর;

(২) “আন্তঃসংযোগ” অর্থ একাধিক সড়কের সংযোগস্থল;

(৩) “ইউটিলিটি ডাক্ট” অর্থ বিদ্যুৎ, পানি, নর্দমার পাইপ, ফাইবার অপটিক ক্যাবলসহ অন্যান্য নাগরিক পরিসেবা বহনকারী সংরক্ষিত আবদ্ধ পথ (ডাক্ট);

(৪)‌ “ইন্টারচেঞ্জ” অর্থ একাধিক সড়কের সংযোগস্থলে এক সড়ক হইতে অন্য সড়কে নির্বিঘ্নে প্রবেশ ও নির্গমনের ব্যবস্থা সংবলিত অবকাঠামো;

(৫) “এক্সপ্রেসওয়ে (Expressway)” অর্থ নিরবচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলাচলের জন্য যানবাহনের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক;

(৬) “ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি” অর্থ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা;

(৭) “কৌশলগত মহাসড়ক” অর্থ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বা জরুরি, যুদ্ধকালীন বা দুর্যোগকালীন ব্যবহারের জন্য সরকার কর্তৃক ঘোষিত কৌশলগত মহাসড়ক;

(৮) “জাতীয় মহাসড়ক” অর্থ বিভাগীয় সদর, সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, প্রধান নদীবন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, কন্টেইনার টার্মিনাল ডিপোসমূহকে ঢাকার সহিত সংযোগকারী অথবা এক বিভাগীয় সদরের সহিত অন্য বিভাগীয় সদরকে সংযোগকারী সড়ক এবং বিভাগীয় সদরকে বেষ্টনকারী সার্কুলার রিং রোডসমূহ;

(৯) “টোল” অর্থ সড়ক ব্যবহারের বিপরীতে সড়ক ব্যবহারকারীগণের উপর আরোপযোগ্য বা আদায়যোগ্য মাশুল;

(১০) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;

(১১) “নিয়ন্ত্রণ রেখা” অর্থ মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখা হইতে সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত রেখা;

(১২) “প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক” অর্থ সরকার কর্তৃক ঘোষিত প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত কোনো মহাসড়ক;

(১৩) “প্রান্তসীমা” অর্থ মহাসড়কের প্রান্তসীমা;

(১৪) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো বিধি;

(১৫) “মহাসড়ক” অর্থে অধিদপ্তরের সড়ক নেটওয়ার্কভুক্ত জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়ক, বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানায় অবস্থিত আন্তঃদেশীয়, আন্তঃআঞ্চলিক ও মহাদেশীয় মহাসড়ক ছাড়াও-

(ক) মহাসড়কের প্রান্তসীমা (right of way) এর অন্তর্ভুক্ত ভূমি;

(খ) মহাসড়কের ঢাল, কিনারা (berm), নয়নজুলি, বরো-পিট (borrow-pit) এবং পার্শ্ববর্তী নালা;

(গ) অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন মহাসড়ক সংলগ্ন সকল ভূমি ও মহাসড়ক বাঁধ;

(গ) মহাসড়কস্থিত ভূগর্ভস্থ অথবা মহাসড়কের উপর দিয়া নির্মিত যে কোনো স্থাপনা ও কাঠামো;

(ঙ) অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন মহাসড়ক অথবা মহাসড়ক সংলগ্ন ভূমির উপরে অবস্থিত প্রাচীর, খুঁটি, সড়ক অবকাঠামো এবং মহাসড়কের দুইপার্শ্বে এই ধরনের ভূমির উপর বিদ্যমান সকল বৃক্ষ; এবং

(চ) নদী, সাগর অথবা বৃহৎ জলাধারের পার্শ্বে মহাসড়কের প্রতিরক্ষামূলক কার্য, সেতুর ক্ষেত্রে উজান ও ভাটির উভয় দিকে গাইড বাঁধসহ নদী তীর প্রতিরক্ষামূলক কার্য অথবা নদীশাসন কার্যসমূহও;

ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১৬) “লেন” অর্থ সুশৃঙ্খল ও এক সারিতে সারিবদ্ধভাবে যানবাহনের চলাচলের নিমিত্ত মহাসড়কের নির্ধারিত পথ; এবং

(১৭) “সংরক্ষণ রেখা” অর্থ মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে ভূমির প্রান্তসীমা (right of way) হইতে ১০ (দশ) মিটার অথবা সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত রেখা।

আইনের প্রাধান্য

৩।  আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

অধিদপ্তর এর কার্যাবলি

৪।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অধিদপ্তর অন্যান্য কার্যাবলির সহিত নিম্নরূপ কার্যাবলিও সম্পন্ন করিবে, যথা:-

(১) মহাসড়ক নেটওয়ার্কের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উহার বাস্তবায়ন;

(২) মহাসড়ক নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য মহাপরিকল্পনা, স্পেসিফিকেশন, ম্যানুয়াল প্রণয়ন ও অনুসরণ;

(৩) সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মহাসড়ক ও মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই, নিরীক্ষা এবং উহার ধারাবাহিকতায় চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়ন;

(৪) মহাসড়কে সুষ্ঠু, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ যানবাহন চলাচল নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধাদি সংবলিত অবকাঠামো নির্মাণ;

(৫) মহাসড়ক এবং এতৎসংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর নকশা-মান নির্ধারণ এবং, সময় সময়, উহা হালনাগাদকরণ;

(৬) মহাসড়কে সুষ্ঠু ও নিরাপদ যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ;

(৭) মহাসড়ক ও সেতু সংক্রান্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা, নকশা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরিপের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ সড়ক ও সেতুসমূহের ডাটাবেজ তৈরি, উহা সংরক্ষণ এবং হালনাগাদকরণ;

(৮) এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক এবং কৌশলগত মহাসড়ক সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান;

(৯) নদী বা জলাশয় দ্বারা বিচ্ছিন্ন মহাসড়ক নেটওয়ার্ক ফেরি বা অন্য কোনো মাধ্যম দ্বারা সংযোগ স্থাপন ও রক্ষা;

(১০) মহাসড়কের উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;

(১১) প্রতিবন্ধী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিগণের মহাসড়কের নির্দিষ্ট স্থান নিরাপদে ব্যবহারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ;

(১২) টোলের আওতাভুক্ত কোনো এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক, কৌশলগত মহাসড়ক বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অন্যান্য মহাসড়ক বা উহাতে নির্মিত কোনো অবকাঠামো ব্যবহারের জন্য টোল আদায়;

(১৩) নির্ধারিত সংরক্ষণ রেখা ও নিয়ন্ত্রণ রেখা বজায় রাখা;

(১৪) জনস্বার্থে আইটিএস (intelligent transportation system) ও টোল সংক্রান্ত অবকাঠামোসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, সংরক্ষণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (artificial intelligence) মাধ্যমে উহা পরিচালনা;

ব্যাখ্যা।-এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “আইটিএস” অভিব্যক্তি অর্থ উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অধিকতর নিরাপদ, সমম্বিত ও নির্ভরযোগ্য যানব্যবস্থা।

(১৫) মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন, কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্রকল্প প্রস্তুতিসহ উহা বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শ বা সহযোগিতা সেবা গ্রহণ;

(১৬) মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা;

(১৭) মহাসড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কারখানা, মেশিনারি, যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয় বা জরুরি প্রয়োজনে উল্লিখিত উপকরণাদি অধিযাচন (requisition);

(১৮) জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব হইতে মহাসড়কের সম্ভাব্য ক্ষতি হ্রাসের নিমিত্ত মহাসড়ক নেটওয়ার্কের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলসমূহ চিহ্নিতকরণপূর্বক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সহনশীল টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ;

(১৯) টেকসই উন্নয়নের সহিত সঙ্গতি রাখিয়া এবং যানবাহন চলাচলের প্রকৌশলগত নিরাপত্তা, মহাসড়ক উন্নয়নের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, পেভমেন্ট এর স্থায়িত্ব, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার প্রদানপূর্বক মহাসড়ক করিডোর নির্মাণের উদ্দেশ্যে নান্দনিক বনায়ন;

(২০) মহাসড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;

(২১) মহাসড়কে চলাচলকারি যানবাহনের ওজন পরিমাপের জন্য এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য অবকাঠামো স্থাপন ও পরিচালনা;

ব্যাখ্যা।-এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “এক্সেল লোড” অভিব্যক্তি অর্থ সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৫) এ সংজ্ঞায়িত এক্সেল লোড বা এক্সেল ওজন।

(২২) মহাসড়কে চলাচলকারী অতিরিক্ত ওজনবাহী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ; এবং

(২৩) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন।

মহাসড়ক, ইত্যাদি ঘোষণা ও নিয়ন্ত্রণ

৫।  (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপযুক্ত যে কোনো সড়ককে মহাসড়ক বা প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) নির্ধারিত দ্রুতগতির যানবাহন চলাচলের জন্য সরকার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনা করিতে পারিবে।

(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো এক্সপ্রেসওয়ে, জাতীয় মহাসড়ক, কৌশলগত মহাসড়ক বা অন্যান্য মহাসড়ক এবং উহাতে নির্মিত কোনো অবকাঠামো ব্যবহারকারী যানবাহনের চলাচলকে টোলের আওতাভুক্ত হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(৪) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা,-

(ক) দেশের যে কোনো সড়কের তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করিতে পারিবে;

(খ) দেশের যে কোনো সড়কের তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পরিত্যাগক্রমে অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে অর্পণ এবং পুনরায় উক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করিতে পারিবে; এবং

(গ) সড়কের সংরক্ষণ রেখা ও নিয়ন্ত্রণ রেখা নির্ধারণ করিতে পারিবে।

মহাসড়কে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ

৬।  (১) সরকার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কে যানবাহন প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রবেশ রাস্তা বা অঙ্গীভূত রাস্তার মাধ্যমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কে যানবাহন প্রবেশ বা বহির্গমন করা যাইবে।

ব্যাখ্যা।-এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “প্রবেশ রাস্তা” অভিব্যক্তি অর্থ মহাসড়ক বা প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের পার্শ্বস্থিত কোনো আবাসিক স্থাপনা, বাণিজ্যিক স্থাপনা বা স্থানীয় কোনো মহাসড়ক হইতে অধিদপ্তরের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মিত লেন যাহা মহাসড়ক বা প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের সহিত যুক্ত হইবে।

(২) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের সহিত অন্য কোনো সড়ক বা মহাসড়ক সংযুক্ত করা যাইবে না।

(৩) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, অধিদপ্তর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রকৌশল নকশা অনুযায়ী প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের সহিত আন্তঃসংযোগ, ইন্টারচেঞ্জ বা প্রবেশ রাস্তা সংযুক্ত করিতে পারিবে।

মহাসড়ক সাময়িক বন্ধকরণ

৭।  মহাসড়ক উন্নয়ন, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণ, মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট পয়ঃপ্রণালি, ড্রেন, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ বা সংস্কার করিবার উদ্দেশ্যে অথবা জনস্বার্থে, সরকার বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি মহাসড়ক বা উহার কোনো অংশবিশেষ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, মহাসড়ক বন্ধ ঘোষণার বিষয়টি মহাসড়ক ব্যবহারকারীগণের অবগতির জন্য বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও উক্ত মহাসড়কের একাধিক দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করিতে হইবে:

আরও শর্ত থাকে যে, মহাসড়ক বন্ধ ঘোষণার পূর্বে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, যানবাহন চলাচলের জন্য যুক্তিসঙ্গত ও পর্যাপ্ত বিকল্প পথের ব্যবস্থা করিতে হইবে।

ইউটিলিটির জন্য মহাসড়কের ব্যবহার

৮।  (১) নির্ধারিত মাশুল প্রদান সাপেক্ষে, নাগরিক সেবা প্রদানকারী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ইউটিলিটি সংযোগসমূহ মহাসড়কের প্রান্তসীমা বরাবর স্থাপন করা যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, মহাসড়কের উন্নয়ন, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের সময় প্রয়োজন হইলে উক্ত ইউটিলিটি সংযোগসমূহ সেবা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে নির্দিষ্ট সময়ে অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে স্থানান্তর করিবে।

(২) অধিদপ্তর, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মহাসড়কের সহিত ইউটিলিটি ডাক্ট স্থাপন করিতে পারিবে এবং উক্ত ডাক্ট ব্যবহারকারীগণের নিকট হইতে নির্ধারিত হারে মাশুল আদায় করিতে পারিবে।

মহাসড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ

৯।  মহাসড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিম্নরূপ বিধি-নিষেধসমূহ প্রযোজ্য হইবে, যথা:-

(১) ফসল, খড় বা অন্য কোনো পণ্য শুকানো বা অনুরূপ কোনো কাজে মহাসড়ক ব্যবহার করা যাইবে না;

(২) মহাসড়কের নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থান দিয়া পদযাত্রা করা যাইবে না বা এই আইনের অধীন অনুমোদিত উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো স্থানে অবস্থান করা যাইবে না;

(৩) অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত মহাসড়কে কোনো প্রকার বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, তোরণ বা অনুরূপ কিছু টাঙানো বা স্থাপন করা যাইবে না;

(৪) ধীর গতিসম্পন্ন যানবাহনের জন্য মহাসড়কে নির্ধারিত লেন ব্যতীত অন্য কোনো লেন ব্যবহার করা যাইবে না;

(৫) সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত গতির যানবাহন ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন মহাসড়কে চালানো যাইবে না;

(৬) অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থান দিয়া মহাসড়কে গবাদিপশু প্রবেশ করানো, পারাপার করানো, চরানো, হাঁটানো বা অবস্থান করানো যাইবে না;

(৭) ক্ষতিকর পদার্থ পতিত বা নির্গত হয় এইরূপ যানবাহন মহাসড়কে চালানো যাইবে না;

(৮) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ব্যতীত, অন্য কোনো স্থানে ইউ-টার্ন নির্মাণ করা যাইবে না;

(৯) মহাসড়ক বিভাজকের কোনো ক্ষতি সাধন করা যাইবে না;

(১০) মহাসড়কের নির্ধারিত সীমানার পার্শ্বে কোনো অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে উক্ত অবকাঠামোর বেদির উচ্চতাসীমা (plinth level) কোনো প্রকারে মহাসড়কের উপরিতল হইতে অধিকতর উচ্চতায় করা যাইবে না;

(১১) মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাইবে না;

(১২) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাট-বাজার বসানো বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো অংশ ব্যবহার করা যাইবে না;

(১৩) মহাসড়ক বা মহাসড়কের কোনো অংশ হইতে মাটি, বালু, পাথর বা মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট কোনো কিছু উত্তোলন করা যাইবে না;

(১৪) মহাসড়কে চলাচলকারী কোনো ব্যক্তি বা যানবাহনের জন্য বিপজ্জনক বা ক্ষতির কারণ হইতে পারে এইরূপ কোনো বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা মহাসড়কে স্থাপন করা যাইবে না;

(১৫) মহাসড়ক বা মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট কোনো অংশে নির্মাণ সামগ্রী রাখা যাইবে না;

(১৬) মহাসড়ক, প্রান্তসীমা বা মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট কোনো অংশে ময়লা, আবর্জনা বা অন্য কোনো বস্তু নিক্ষেপ করা বা স্তূপ করিয়া রাখা যাইবে না;

(১৭) কোনো ব্যক্তি মহাসড়কে স্থাপিত ট্রাফিক সাইন, সাইন পোস্ট, সড়ক মার্কিং, সড়ক বাতি, সড়ক নিরাপত্তা সামগ্রী, সড়ক নিরাপত্তা বেষ্টনী, সড়কের সীমানা নির্ধারণী পোস্ট, কিলোমিটার পোস্ট, ইত্যাদি অপসারণ, ক্ষতিসাধন, ধ্বংস, পরিবর্তন বা কোনো বস্তু দ্বারা আচ্ছাদিত করিতে পারিবে না; এবং

(১৮) কোনো ব্যক্তি অধিদপ্তরের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, মহাসড়কের নিকটবর্তী জলাধারের দিক পরিবর্তন বা জলাধারের স্বাভাবিক প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিতে পারিবে না।

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭ এর প্রয়োগ

১০।  এক্সপ্রেসওয়ে বা মহাসড়ক নির্মাণের উদ্দেশ্যে, ক্ষেত্রমত, ভূমি অধিগ্রহণ বা হুকুমদখল এর প্রয়োজন হইলে উহা স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ২১ নং আইন) অনুযায়ী অধিগ্রহণ বা হুকুমদখল করা যাইবে।

প্রবেশ ও পরিদর্শনের ক্ষমতা

১১।  (১) এক্সপ্রেসওয়ে বা মহাসড়ক নির্মাণ, উহার উন্নয়ন ও পরিচালনা বা এতৎসংশ্লিষ্ট প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়নের জন্য অথবা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি-

(ক) যে কোনো স্থাবর সম্পত্তিতে প্রবেশ করিয়া উহা পরিদর্শনসহ জরিপ ও সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে;

(খ) ভূমির সীমানা বা লাইন চিহ্নিতকরণ এবং এতদুদ্দেশ্যে সীমানা খুঁটি স্থাপন করিতে পারিবে;

(গ) ভূমিতে বোরিং (boring) করিয়া মাটি পরীক্ষা করিতে পারিবে, আলোকচিত্র বা ভিডিও চিত্র ধারণ করিতে পারিবে; এবং

(গ) দফা (ক) হইতে (গ) এ উল্লিখিত কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে উক্ত স্থানের ফসল, বৃক্ষ বা জঙ্গল, যদি থাকে, পরিষ্কার করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার অধীন কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিবার পূর্বে অভিপ্রায় ব্যক্ত করিয়া সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিক বা দখলদারকে অন্যূন ৭ (সাত) কার্যদিবস পূর্বে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কার্যক্রম গ্রহণকালে ভূমি বা সম্পদের কোনো ক্ষতি সাধিত হইলে অধিদপ্তর নির্ধারিত হারে উক্ত ভূমি বা সম্পত্তির মালিককে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে।

মহাসড়কের নিরাপত্তা, ইত্যাদি

১২।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অধিদপ্তর-

(ক) মহাসড়ক নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে মহাসড়কের প্রকৌশলগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবে;

(খ) মহাসড়ক নির্মাণ, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের সময় উক্ত কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের বা মহাসড়ক ব্যবহারকারীগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করিবে এবং এতৎবিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করিবে;

(গ) মহাসড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানসমূহ চিহ্নিতকরণপূর্বক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যথাযথ ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে;

(ঘ) মহাসড়কের জন্য বা যানবাহন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা চিহ্নিতকরণপূর্বক উক্ত স্থাপনা অপসারণ বা উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে; এবং

(ঙ) মহাসড়কের জন্য ক্ষতিকর বা ক্ষতির কারণ হইতে পারে এইরূপ সকল কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করিবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

অবৈধ দখল ও অনুপ্রবেশ

১৩।   (১) অধিদপ্তর মহাসড়ক বা মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এবং স্থাপনা অবৈধ দখল বা অবৈধ প্রবেশ মুক্ত রাখিবে।

(২) নাগরিক সেবা প্রদানকারী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, নাগরিক সেবা প্রদানের ইউটিলিটি স্থাপনের জন্য মহাসড়কের ভূমি ব্যবহার করিতে পারিবে না।

অপরাধ ও দণ্ড

১৪।  (১) কোনো ব্যক্তি ধারা ৯ এর দফা (১) বা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তাহার উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ১ (এক) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(২) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৩) কোনো ব্যক্তি ধারা ৯ এর দফা (৪) বা (৫) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তাহার উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৪) কোনো ব্যক্তি ধারা ৯ এর দফা (৬) বা (৭) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তাহার উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৫) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (৮) বা (৯) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৬) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (১০) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা, তবে অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, অধিদপ্তর বা অধিদপ্তর কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্তরূপ স্থাপনা অপসারণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত স্থাপনা অপসারণের সমুদয় খরচ উক্ত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বহন করিবে।

(৭) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (১১) বা (১২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ স্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড এবং অস্থায়ী স্থাপনার ক্ষেত্রে, অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(৮) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (১৩) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৬২ নং আইন) অনুযায়ী বিচার্য হইবে।

(৯) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (১৪) বা (১৫) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা, তবে অন্যূন ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(১০) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারা ৯ এর দফা (১৬), (১৭) বা (১৮) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা, তবে অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(১১) কোনো প্রতিষ্ঠান ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (executive body) বা তাহাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ

১৫।  এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল ইত্যাদির ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর প্রয়োগ

১৬ ।  আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

১৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) বিশেষত এবং পূর্বোক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করা যাইবে, যথা:-

(ক) মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার;

(খ) যানবাহন চলাচলের প্রকৌশলগত নিরাপত্তা, মহাসড়ক উন্নয়নের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, পেভমেন্ট এর স্থায়িত্ব, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার প্রদানপূর্বক মহাসড়কের পার্শ্বে নির্দিষ্ট স্থানে নান্দনিক বনায়ন; এবং

(গ) জলাধার নির্মাণসহ পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা।

রহিতকরণ ও হেফাজত

১৮।  (১) Highways Act, 1925 (Act No. III of 1925), অতঃপর উক্ত Act বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Act এর অধীন-

(ক) কৃত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা চলমান কোনো কার্য এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা চলমান বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) প্রণীত কোনো বিধিমালা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন প্রণীত বলিয়া গণ্য হইবে;

(গ) কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এইরূপে নিষ্পন্ন করিতে হইবে, যেন উক্ত Act রহিত হয় নাই; এবং

(ঘ) দায়েরকৃত কোনো মামলা অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে, যেন উক্ত Act রহিত হয় নাই।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

১৯।   (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs