প্রিন্ট ভিউ
Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 রহিতক্রমে সময়োপযোগী করিয়া নূতনভাবে আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সনের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ৩ক ও ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হইয়াছে এবং সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপীল নং ১০৪৪-১০৪৫/২০০৯ এ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (পঞ্চম সংশোধন) আইন, ১৯৭৯ (১৯৭৯ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পাইয়াছে; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৬নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হইয়াছে; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে, Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LII of 1976) রহিতক্রমে সময়োপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:¾
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক, ইত্যাদি
১। (১) এই আইন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২২ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) ‘ইজারা’ অর্থ Transfer of Property Act, 1882 (Act No. IV of 1882) এর section 105 এ সংজ্ঞায়িত “Lease” ;
(২) ‘কর্তৃপক্ষ’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (Chittagong Port Authority);
(৩) ‘কর্মচারী’ অর্থে কর্মকর্তাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৪) ‘ঘাট (wharf)’ অর্থ পণ্য বোঝাই বা খালাসের জন্য উন্নয়ন করা হইয়াছে এইরূপ সমুদ্র বা নদীর কোনো তীর বা উপকূল বা উহার চারিদিক বা কোনো পার্শ্ব এবং পণ্য বোঝাই বা খালাসের জন্য ব্যবহৃত সমুদ্র বা নদীর তীর এবং তৎসংলগ্ন দেওয়াল ;
(৫) ‘চেয়ারম্যান’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, যিনি বোর্ডেরও চেয়ারম্যান;
(৬) ‘জাহাজ (vessel)’ অর্থ যাত্রী, পণ্য পরিবহণ, পরিদর্শন, উদ্ধার কার্যে অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনে ব্যবহৃত কোনো জাহাজ, নৌকা, বার্জ, র্যাফট, ক্র্যাফট অথবা অন্য যে কোনো ধরনের নৌযান;
(৭) ‘টার্মিনাল’ অর্থ সমুদ্র ও নদী সংশ্লিষ্ট পশ্চাৎ সুবিধাদি সংবলিত এইরূপ কোনো স্থাপনা যাহাতে জাহাজ নোঙর করা যায়, যেখানে জাহাজ হইতে পণ্য খালাস এবং জাহাজে পণ্য বোঝাই, কন্টেইনারে পণ্য স্টাফিং এবং কন্টেইনার হইতে আনস্টাফিংপূর্বক শেডে সংরক্ষণ করা যায় ও পরবর্তীকালে অন্য কোনো যানবাহনে পরিবহনের নিমিত্ত বা আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যস্থলে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়;
(৮) ‘ডক’ অর্থ বেসিন, কপাটকল (lock), খাল (cut), কি (quay), ঘাট (wharf), পণ্যাগার, রেলপথ এবং ডক সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম ও স্থাপনা;
(৯) ‘তহবিল’ অর্থ কর্তৃপক্ষের তহবিল;
(১০) ‘নোঙ্গর স্থান (anchorage)’ অর্থ কোনো জাহাজ নোঙ্গর করিবার স্থান যেখানে নিরাপদে জাহাজ হইতে পণ্য খালাস, জাহাজে পণ্য বোঝাই করা হয় বা জাহাজ নিরাপদে অবস্থান করে;
(১১) ‘পণ্য ’ অর্থে যে কোনো ধরনের সামগ্রী, পণ্য দ্রব্য এবং কন্টেইনারও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১২) ‘পিয়ার (pier)’ অর্থে সমুদ্র বা নদী সংলগ্ন যে কোনো ধাপ, সিঁড়ি, অবতরণস্থল, নদী বা সমুদ্রের ভেতর কিছুদূর পর্যন্ত নির্মিত পাটাতন বা জেটি, ভাসমান বার্জ বা পন্টুন এবং যে কোনো সেতু বা সেতু সংলগ্ন স্থাপনাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৩) ‘প্রবিধান’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(১৪) ‘ফৌজদারী কার্যবিধি’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);
(১৫) ‘বন্দর’ অর্থ চট্টগ্রাম বন্দর (Chittagong Port);
(১৬) ‘বন্দর পরিচালনা’ অর্থ পণ্য বোঝাই বা খালাস, পণ্য গ্রহণ ও হস্তান্তর, জাহাজ নিয়ন্ত্রণ, জাহাজ পরিদর্শন এবং বন্দর চ্যানেল বা বন্দর এলাকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড;
(১৭) ‘বার্থ’ অর্থ এইরূপ কোনো স্থাপনা যাহাতে প্ল্যাটর্ফম, স্টেজ, র্যাম্প, কি, ঘাট থাকে এবং যাহাতে জাহাজ নিরাপদে অবস্থান করিতে পারে ও পণ্য খালাস, বোঝাই, ট্রান্সশিপমেন্ট করা যায়;
(১৮) ‘বিধি’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(১৯) ‘বোর্ড’ অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত বোর্ড;
(২০) ‘ভূমি’ অর্থে মাটিতে স্থাপিত দালান বা তৎসংলগ্ন স্থাপনা, নদীর চরসহ সর্বোচ্চ জোয়ার রেখার নিম্নের নদীর তলদেশও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২১) ‘মাস্টার’ অর্থ জাহাজের ক্ষেত্রে পাইলট বা পোতাশ্রয় মাস্টার (harbor master) ব্যতীত, জাহাজ পরিচালনার নিমিত্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বা জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি;
(২২) ‘মালিক’ অর্থে পণ্যের ক্ষেত্রে, কনসাইনার, কনসাইনি, জাহাজীকারক (shipper) বা জাহাজের প্রতিনিধি এবং বিক্রয়, সংরক্ষণ, জাহাজীকরণ, খালাস বা অপসারণ কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং জাহাজের ক্ষেত্রে, জাহাজের আংশিক মালিক, চার্টারার, কনসাইনি ও বন্ধক গ্রহীতাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২৩) ‘সদস্য’ অর্থ কর্তৃপক্ষের সদস্য, যাহারা বোর্ডেরও সদস্য; এবং
(২৪) ‘সর্বোচ্চ জোয়ার রেখা (high watermark)’ অর্থ বৎসরের যে কোনো মৌসুমে বা ঋতুতে স্বাভাবিক ভরা জোয়ারের সময় পানির সর্বোচ্চ অবস্থানের চিহ্নিত বা অঙ্কিত লাইন।
৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LII of 1976) এর অধীন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত limits of Chittagong Port, চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানা (limits of Chittagong Port) হিসাবে গণ্য হইবে এবং উহা এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন নির্ধারিত হইয়াছে এবং সরকার, সময় সময়, অনুরূপ প্রজ্ঞাপন দ্বারা উক্ত সীমানা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বন্দর সীমানা, বন্দর অভিমুখী জাহাজ চলাচল পথ ও বহিঃনোঙ্গরের যে কোনো অংশে অথবা সমুদ্র, নদী, তীর, পাড় বা সংলগ্ন ভূমির যে কোনা অংশে বর্ধিত করা যাইতে পারে এবং জাহাজ চলাচল, নৌপরিবহন, পণ্য উঠানামা, জাহাজের নিরাপত্তা অথবা বন্দর, নদী বা নৌচলাচল পথের সুশাসন, উন্নয়ন বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনস্বার্থে স্থাপিত যে কোনো ধরনের ডক, পিয়ার, শেড বা অন্য কোনো স্থাপনা এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তির অধিকার সংরক্ষণ সাপেক্ষে, সর্বোচ্চ জোয়ার রেখার (high watermark) ৫০ (পঞ্চাশ) মিটারের (metre) মধ্যকার তীর, পাড় বা সংলগ্ন ভূমিও উক্ত সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করা যাইতে পারে।
(৩) নদী শাসন, সংরক্ষণ, খনন বা অন্য কোনো ভৌত কারণে বন্দর সীমানার মধ্যে কোনো ভূমি বা চর সৃষ্টি হইলে, বিদ্যমান অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত ভূমি বা চর কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত হইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা, কমিটি, ইত্যাদি
৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LII of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Chittagong Port Authority, চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (Chittagong Port Authority) নামে অভিহিত হইবে এবং এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহার নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
৫। (১) কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত হইবে।
(২) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজন মনে করিলে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে ইহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
৬। (১) কর্তৃপক্ষের পরিচালনা ও প্রশাসন একটি বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে।
(২) বোর্ড উহার ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে ।
৭। (১) বোর্ড একজন চেয়ারম্যান এবং অনধিক ৪ (চার) জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
(২) চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষেরও চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ কর্তৃপক্ষেরও সদস্য হইবেন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদে ও শর্তাধীনে কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত হইবেন।
(৩) চেয়ারম্যান, কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
(৪) সদস্যগণের নিয়োগের তারিখ হইতে তাহাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, একই দিবসে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হইবে।
(৫) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে বা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন ।
(৬) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ এই আইনের অধীন অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন।
৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) বোর্ডের সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি ২ (দুই) মাসে বোর্ডের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) বোর্ডের সভায় কোরামের জন্য অন্যূন ২ (দুই) জন সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে ।
(৪) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠ সদস্য উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিবেন ।
(৫) বোর্ড সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সম-সংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে সভাপতি অথবা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তি একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট দান করিতে পারিবেন।
(৬) কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মতামত, বক্তব্য, তথ্য বা ব্যাখ্যা উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো ব্যক্তিকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবেন এবং আমন্ত্রিত ব্যক্তি সভায় তাহার মতামত, বক্তব্য বা ব্যাখ্যা উপস্থাপন করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, সভায় আমন্ত্রিত ব্যক্তির ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে না।
(৭) বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা কেবল বোর্ডের কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে অবৈধ হইবে না এবং তৎবিষয়ে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৯। কর্তৃপক্ষ, উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদানের জন্য, প্রয়োজনবোধে, উহার যে কোনো সদস্য, কর্মকর্তা বা অন্য কোনো ব্যক্তির সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন এবং এইরূপ কমিটির দায়িত্ব ও কার্যধারা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
তৃতীয় অধ্যায়
কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কার্যাবলি
১০। (১) কর্তৃপক্ষ, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত যে কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) বন্দর সীমানার মধ্যে ডক, মুরিং, পিয়ার, বার্থ, জেটি, ইয়ার্ড, টার্মিনাল, সিএফএস, শেড, ওভার পাস, আন্ডার পাস, টানেল, স্লুইস গেইট, সেতু, রাস্তা, ভবন, রেলপথ, নালা, ছাদ, কালভার্ট, বেড়া, প্রবেশপথ, নির্মাণ, স্থাপন, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা ;
(খ) বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিফোন সরবরাহ লাইন সংক্রান্ত স্থাপনা নির্মাণ, উপকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি স্থাপন, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা, বিদ্যুৎ ও পানি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ, যন্ত্রপাতি স্থাপন, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা;
(গ) বন্দর সীমানার মধ্যে গ্রাহকগণের নিকট জ্বালানি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট ও টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিস মূল্যপ্রদান সাপেক্ষে প্রদান;
(ঘ) বন্দর সীমানার মধ্যে যাত্রী, যানবাহন এবং পণ্য পরিবহনের উদ্দেশ্যে জাহাজ ও ফেরি সংগ্রহ, মেরামত, সংরক্ষণ এবং পরিচালনা;
(ঙ) জাহাজ হইতে পণ্য নামানো, জাহাজিকরণ বা অন্য কোনো কারণে পণ্য পরিবহন, গ্রহণ, পরিচালনা এবং সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে রেলওয়ে, ওয়্যারহাউজ, শেড, ইঞ্জিন, ক্রেন, স্কেলস্ (scales) এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি নির্মাণ, সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, সংরক্ষণ এবং পরিচালনা;
(চ) জলমগ্ন অবস্থা হইতে নদীর তীর, চর বা তলদেশ উদ্ধার, ভরাট, খনন, ঘেরাও বা বেড়া নির্মাণ;
(ছ) জাহাজের বার্থিং (berthing) ও পণ্য বোঝাই এবং খালাসের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি তৈরি, সংগ্রহ, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা;
(জ) জাহাজ এবং উহাতে রক্ষিত জীবন ও সম্পদ রক্ষার্থে এবং জাহাজের নিরাপদ বার্থিং (berthing) এবং ডুবন্ত জাহাজ বা সম্পদ উদ্ধারকল্পে উপযুক্ত জাহাজ (vessel), যন্ত্রপাতি, যানবাহন সংগ্রহ, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা;
(ঝ) জাহাজে জ্বালানি বা পানি সরবরাহ;
(ঞ) বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা, জেটি, ইয়ার্ড, টার্মিনাল, বার্থ, শেড, সিএফএস এর অগ্নি নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ট) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো কিছু অর্জন, ভাড়া, ক্রয়, নির্মাণ, স্থাপন, তৈরি, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত;
(ঠ) বন্দর বা বন্দর সংলগ্ন এলাকার সর্বোচ্চ জোয়ার রেখার (high watermark) উপর বা নীচ যাহাই হউক, ডক বা অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ এবং অন্যান্য কার্যাদি নিয়ন্ত্রণ;
(ড) বন্দরে পণ্য বোঝাই ও খালাস বা ওয়্যারহাউজ এবং ইয়ার্ডে পণ্য সংরক্ষণ করিবার জন্য বা ভেসেলের বাঙ্কারিং এর জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ;
(ঢ) বন্দর বা সংলগ্ন এলাকার প্রতিবন্ধকতা, অবৈধ দখল ও কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ এবং অবৈধ নির্মাণাদি অপসারণ;
(ণ) বন্দর সীমানার মধ্যে Customs Act, 1969 (Act No.IV of 1969) এর অধীন লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিনিধিগণের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ;
(ত) বন্দরের প্রয়োজনে উহার অবকাঠামো নির্মাণ, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণক্রমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার হিসাবে নিয়োগ প্রদান ;
(থ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যে কোনো ধরনের চুক্তি, বন্ড বা অনুরূপ আইনগত দলিলাদি সম্পাদন;
(দ) নিরাপদ নৌচলাচল ও বন্দর সীমানায় চ্যানেলের নাব্যতা রক্ষার্থে ও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী নদী খনন, বালি, মাটি, পাথর উত্তোলন এবং নদী সংরক্ষণের জন্য ট্রেনিং ওয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ, ড্রেজার, বয়া, বাতি ও লাইট হাউস স্থাপন, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা ;
(ধ) নদীর গতিপথ ও নাব্যতা রক্ষার্থে জরিপ, গবেষণা, পরিবীক্ষণ এবং কারিগরি গবেষণা বা কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনে অন্য কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞ দ্বারা কারণ অন্বেষণ, পরিবীক্ষণ বা কারিগরি গবেষণায় সহযোগিতা গ্রহণ;
(ন) চ্যানেল খনন, ঢেউ প্রতিরোধক নির্মাণ, জেটি, বার্থ, টার্মিনাল, ইয়ার্ড, শেড এবং সিএফএস এর স্থান ও স্থাপনা নির্মাণ এবং বন্দর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নদী শাসন ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড সম্পাদন;
(প) বন্দর সংশ্লিষ্ট কোনো কাজের জন্য যে কোনো স্থানীয়, বিদেশি বা সরকারি সংস্থার নিকট হইতে পরামর্শ ও সহযোগিতা গ্রহণ;
(ফ) বন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠিত দেশি বা বিদেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বন্দর কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সহিত সহযোগী বন্দরের (সিস্টার পোর্ট) সম্পর্ক স্থাপন, সমঝোতা স্মারক বা অনুরূপ আইনগত দলিলাদি স্বাক্ষর;
(ব) রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের উদ্দেশ্যে প্রয়োজন মনে করিলে, বন্দর স্থাপনা এবং উহার সংযোগকারী কোনো রাস্তা বা উহার অংশ বিশেষের ব্যবহার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষিদ্ধকরণ;
(ভ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বন্দর ব্যবহারকারীগণের নিকট হইতে আদায়যোগ্য টোল, রেইট ও ফি এর তপশিল প্রণয়ন;
(ম) বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন; এবং
(য) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বন্দর সংক্রান্ত সরকারের সকল সিদ্ধান্ত এবং নির্দেশনা বাস্তবায়ন।
১১। কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) বন্দর পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ ;
(খ) বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের সেবা ও সুবিধাদি প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রবেশ পথ (approach) চিহ্নিতকরণ এবং সংরক্ষণসহ যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ;
(গ) বন্দরের মধ্যে সকল ধরনের জাহাজ চলাচল, নোঙ্গর করানো ও এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ;
(ঘ) প্রয়োজনীয় জনবল সংগ্রহ, নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা; এবং
ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বন্দরের কার্যাবলি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্য সম্পাদন ।
১২। বন্দরের সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে এবং সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বন্দর সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল স্থান ও স্থাপনা সংরক্ষতি বন্দর এলাকা হিসাবে গণ্য হইবে; তবে ইহার ফলে বন্দর সীমানায় অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তির মালিকানার কোনো পরিবর্তন হইবে না ।
১৩। (১) কর্তৃপক্ষের কি (quay), ঘাট (wharf) বা পিয়ারে পণ্য তাৎক্ষণিক নামানো বা খালাস (Landing or Unloading) এর পর পণ্য বিনষ্ট হওয়া হইতে রক্ষাকল্পে কর্তৃপক্ষ উহার গুদাম, শেড বা অন্য কোনো স্থানে উক্ত পণ্য যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করিবে।
(২) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন পণ্যের ক্ষতি, ধ্বংস ও বিনষ্টের জন্য কর্তৃপক্ষ এইরূপ দায়ী থাকিবে যেইরূপ Contract Act, 1872 (Act No. IX of 1872) এর section 151,152,161 এবং 164 এর অধীন একজন বেইলী (bailee) দায়ী থাকেন:
তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো পণ্যের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের তারিখ হইতে ১০ (দশ) দিন অতিক্রান্ত হইবার পর এই উপ-ধারার অধীন কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা যাইবে না।
১৪। (১) কোনো আইনের অধীন শুল্ক ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকির উদ্দেশ্যে এবং শুল্ক কর্মকর্তাগণের কাজের সুবিধার্থে কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন জেটি, ডক, মুরিং, পিয়ার বা শেডে তাহাদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থান সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং শুল্ক কর্তৃপক্ষ উক্ত স্থান ব্যবহারজনিত মাশুল কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ শুল্ক কর্মকর্তাগণের কার্যের জন্য উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত স্থানসমূহ নির্ধারণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
১৫। (১) কর্তৃপক্ষ বন্দরে জাহাজ আগমন বা নির্গমনের জন্য Port Act, 1908 (Act No. XV of 1908) এর বিধান অনুসারে পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্যতাসম্পন্ন পাইলট নিয়োগ করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ এইরূপ কোনো ব্যক্তিকে পাইলট হিসাবে নিয়োগ করিবে না, যিনি Port Act, 1908 (Act No. XV of 1908) এর বিধান অনুযায়ী জাহাজ পরিচালনা করিতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত (authorised) নহেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পাইলট সার্ভিস প্রদানের জন্য উহার ব্যবহারকারী কর্তৃপক্ষকে তদ্কর্তৃক নির্ধারিত হারে সকল ফি প্রদান করিবে।
১৬। (১) কর্তৃপক্ষ, তদ্কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে লিখিতভাবে বন্দর সীমানার সর্বোচ্চ জোয়ার রেখার (high watermark) নিম্নে কোনো ডক, পিয়ার, নোঙ্গর স্থান বা অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
(২) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘনপূর্বক কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা স্থাপন করিলে উহা অপসারণযোগ্য হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত স্থাপনা নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে অপসারণ না করিলে কর্তৃপক্ষ উহা অপসারণ করিতে পারিবে এবং সময় অতিক্রান্ত হইবার পরবর্তী প্রত্যেক দিনের জন্য উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অন্যূন ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা জরিমানা আরোপ করা যাইবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্থাপনা অপসারণের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অপসারণের সমুদয় খরচ বহন করিতে বাধ্য থাকিবে।
১৭। কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বন্দর সীমানায় আগত সমুদ্রগামী জাহাজ হইতে বন্দরের কোনো বার্থ, টার্মিনাল, জেটি, ঘাট, গুদাম, কি, পিয়ার, নোঙরস্থান, ডক এবং একই ধরনের যেকোনো স্থানে পণ্য খালাস বা বোঝাই হউক বা না হইক, পণ্যের উপর নদী বা চ্যানেল ব্যবহার মাশুল (River-dues) আরোপ করিতে পারিবে।
১৮। (১) কর্তৃপক্ষ, বন্দরে পণ্য গ্রহণ, বোঝাই, সংরক্ষণ, খালাস ও সরবরাহের জন্য, প্রয়োজন মনে করিলে, বন্দরের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বার্থ বা টার্মিনাল অপারেটর হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, বার্থ বা টার্মিনাল অপারেটরের নিয়ন্ত্রণাধীন পণ্যের ক্ষতি, ধ্বংস ও বিনষ্টের জন্য অপারেটর এরূপ দায়ী থাকিবে যেইরূপ Contract Act, 1872 (Act No. IX of 1872) এর section 151,152,161 এবং 164 এর অধীন একজন বেইলী (bailee) দায়ী থাকেন।
(৩) বার্থ বা টার্মিনাল অপারেটর কর্তৃক নিযুক্ত শ্রমিকগণের ন্যায্য দাবিসমূহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) এবং তদধীন প্রণীত বিধি-বিধান প্রযোজ্য হইবে ।
১৯। কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বন্দর সীমানার সর্বোচ্চ জোয়ার রেখা (high watermark) হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) গজের (yard) মধ্যে এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত এলাকায় কোনোরূপ স্থাপনা নির্মাণ, অপসারণ, মাটি খনন বা ভরাট করিতে পারিবে না।
২০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বন্দরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করিবে।
২১। (১) কর্তৃপক্ষ লিখিত নোটিশ দ্বারা উহার আওতাধীন ডক, পিয়ার, বার্থ, টার্মিনাল, মুরিং, এ্যাংকরেজ বা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্য কোনো স্থান হইতে জাহাজ বা যন্ত্রপাতি নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে অপসারণ করিবার জন্য ইহার মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে যদি উহার মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধি উক্ত জাহাজ বা যান্ত্রিক উপকরণ অপসারণ করিতে ব্যর্থ হন তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ ধারা ২৩ এর অধীন প্রণীত তপশিলে উল্লিখিত হারে মাশুল আরোপ করিতে পারিবে যাহা উক্ত মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধি পরিশোধে বাধ্য থাকিবে।
(৩) যদি কোনো জাহাজ বা যন্ত্রপাতির মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধি উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে জাহাজ বা যন্ত্রপাতির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অপসারণ করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ, তৎকর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত জাহাজ বা যন্ত্রপাতি অপসারণ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে কোনো জাহাজ বা যন্ত্রপাতি অপসারণ করা হইলে উহার অপসারণ বাবদ যে অর্থ ব্যয় হইবে উক্ত ব্যয়িত অর্থের দ্বিগুণ অর্থ সংশ্লিষ্ট জাহাজের মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধির নিকট হইতে আদায়যোগ্য হইবে ।
চতুর্থ অধ্যায়
ফি, মাশুল, ইজারা, ইত্যাদি
২২। (১) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বন্দর ব্যবহারকারীগণের নিকট হইতে আদায়যোগ্য ভাড়া, টোল, রেইট, ফি বা মাশুলের তপশিল প্রণয়ন করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যে সকল জাহাজ Port Act, 1908 (Act No. XV of 1908) এর তপশিল ১ অনুযায়ী বন্দরের পাওনা (port dues) পরিশোধ করিতে বাধ্য, সেই সকল জাহাজের ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন প্রণীত তপশিলের বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
(২) কর্তৃপক্ষ, উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতা প্রয়োগের সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, বিশেষত নিম্নবর্ণিত সকল বা যেকোনো বিষয়ে ভাড়া, টোল, রেইট, ফি বা মাশুলের তপশিল প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) সমুদ্রগামী বা সমুদ্রগামী নহে এইরূপ জাহাজ হইতে কোনো পণ্য বন্দর সীমানার মধ্যে এবং কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা কর্তৃক নির্মিত ডক, বার্থ, জেটি, টার্মিনাল, সিএফএস ও নোঙরস্থানে খালাস বা উক্ত স্থান হইতে জাহাজে বোঝাইকরণ;
ব্যাখ্যা।- এই দফায় ‘সিএফএস (কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশন)’ অর্থ যাহাতে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধাদি সংবলিত কাস্টমস বন্ডেড ওয়্যার হাউজ অথবা এরিয়া যেই স্থানে প্রধানত রপ্তানিজাত পণ্য পরীক্ষা ও খালি কন্টেইনার স্টাফিং করা হয়, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত নির্দিষ্ট আমদানি পণ্য সিল্ড (sealed) কন্টেইনারে পরিবহণ ও খালাস প্রদান করা হয় অথবা উক্ত এক বা একাধিক ধরনের কার্যাবলি পরিচালনা করা হয়;
(খ) দফা (ক) তে উল্লিখিত জাহাজ কর্তৃক উক্ত ডক, জেটি বা নোঙরস্থান ব্যবহার;
(গ) কর্তৃপক্ষের আওতায় থাকা কোনো স্থান বা প্রাঙ্গণের পণ্য সংরক্ষণ বা গুদামজাতকরণ;
(ঘ) পণ্য অপসারণ;
(ঙ) কর্তৃপক্ষ বা উহার কর্মচারী কর্তৃক কোনো জাহাজ বা পণ্যের জন্য প্রদত্ত সেবা;
(চ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোনো পূর্তকার্য, যন্ত্র বা সরঞ্জামাদির ব্যবহার;
(ছ) কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন বা ভাড়াকৃত জাহাজের মাধ্যমে পরিবাহিত পণ্য, যাত্রী এবং তাহাদের ব্যক্তিগত দ্রব্যাদি পরিবহন; এবং
(জ) জাহাজকে ঘুরানো বা টানিয়া লওয়া (towing) এবং বন্দর সীমানা বা বন্দর সীমানার বাহিরে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে কোনো নৌযান, টাগ, নৌকা বা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান ।
২৩। কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, জনস্বার্থে ও বিশেষ ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ধারা ২২ এর অধীন প্রণীত তপশিল অনুযায়ী আদায়যোগ্য ভাড়া, টোল, রেইট, ফি ও মাশুল সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, অনধিক ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা পর্যন্ত আদায়যোগ্য ভাড়া, টোল, রেইট, ফি ও মাশুল মওকুফের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে না ।
২৪। এই আইনের অধীন অনাদায়ি ভাড়া, ফি, টোল, রেইট, মাশুল ও বকেয়া Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর অধীন সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে ।
২৫। (১) বন্দর সীমানায় চলাচলকারী Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) প্রযোজ্য নহে এইরূপ সকল অভ্যন্তরীণ নৌযানসমূহকে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হারে ফি এবং অন্যান্য মাশুল প্রদান সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকাভুক্ত হইতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন তালিকাভুক্ত সকল অভ্যন্তরীণ নৌযানের মাস্টারকে বন্দরে প্রবেশ বা বন্দর ত্যাগ করিবার প্রাক্কালে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে রিপোর্ট করিতে হইবে এবং এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট হইতে অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মাস্টার, তাহার নৌযান নির্ধারিত স্থান হইতে প্রত্যাহার করিতে পারিবেন না।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত রিপোর্টে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ছকে নৌযানে পরিবাহিত পণ্যের প্রকৃতি ও পণ্যের মূল্য বিষয়ে ঘোষণা প্রদান করিতে হইবে ।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘অভ্যন্তরীণ নৌযান’ বলিতে বাষ্প, তৈল, বিদ্যুৎ অথবা অন্য কোনো যান্ত্রিক পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ জলপথে পরিবাহিত এবং পরিচালিত জাহাজকে বুঝাইবে।
২৬। (১) এই আইনের অধীন কোনো পণ্যের উপর ধার্যকৃত ভাড়া, জরিমানা, টোল, রেইট, ফি, মাশুল ও অন্যান্য পাওনাদি সম্পূর্ণরূপে পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত পণ্যের উপর কর্তৃপক্ষের পূর্বস্বত্ব থাকিবে এবং এইরূপ পাওনাদি সম্পূর্ণরূপে পরিশোধিত না হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত পণ্য জব্দ বা আটক রাখিতে পারিবে।
(২) কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন দালান, গুদাম, কোনো ভূমি বা পণ্য মজুদের স্থানসহ অন্যান্য স্থান ব্যবহারজনতি কারণে কর্তৃপক্ষের পাওনা যথাযথভাবে দাবি করা স্বত্ত্বেও পরিশোধিত না হইলে উক্ত পাওনা আদায়ের জন্য উক্ত দালান, গুদাম, কোনো ভূমি অথবা পণ্য মজুদের স্থানে রক্ষিত পণ্যের উপর কর্তৃপক্ষের পূর্বস্বত্ব বজায় থাকিবে এবং উক্ত পাওনা পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ উক্ত পণ্য জব্দ বা আটক রাখিতে পারিবে।
(৩) জাহাজ হইতে কোনো পণ্য খালাসের পর অনতিবিলম্বে উক্ত পণ্যের উপর প্রযোজ্য জরিমানা, টোল, রেইট, ফি ও মাশুলসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধযোগ্য হইবে এবং বন্দর সংরক্ষিত এলাকা হইতে কোনো পণ্য অপসারণ বা রপ্তানিযোগ্য পণ্য জাহাজীকরণের পূর্বেই যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধযোগ্য হইবে।
(৪) জাহাজের ভাড়া, প্রাইমেজ কিংবা জেনারেল অ্যাভারেজ (general average) বা সরকারি অন্য কোনো পাওনা ব্যতীত কর্তৃপক্ষের টোল, রেইটস, ফি ও মাশুল সংক্রান্ত সকল পূর্বস্বত্ব ও দাবি অন্য যেকোনো পূর্বস্বত্ব ও দাবি হইতে অগ্রাধিকার পাইবে।
২৭। (১) কোনো জাহাজের মালিক বা মাস্টার জাহাজ হইতে বন্দরের ডক বা পিয়ারে পণ্য নামানোর সময় বা পূর্বে এই মর্মে কর্তৃপক্ষকে যদি নোটিশ প্রদান করেন যে, উক্ত পণ্যের ভাড়া, প্রাইমেজ বা জেনারেল অ্যাভারেজ বাবদ অর্থ অনাদায়ি রহিয়াছে তাহা হইলে উক্ত পণ্যের উপর জাহাজের মালিক বা মাস্টারের পূর্বস্বত্ব বজায় থাকিবে এবং এইরূপ দাবি পণ্যের মালিক কর্তৃক পরিশোধিত হইবার পর উক্ত পূর্বস্বত্ব অবসায়িত (discharge) হইবে ।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পণ্যের ভাড়া, প্রাইমেজ বা জেনারেল অ্যাভারেজ বাবদ অর্থ পণ্যের মালিক কর্তৃক পরিশোধিত হইবার পর এবং কর্তৃপক্ষ জাহাজের মালিক বা মাস্টার হইতে পূর্বস্বত্ব অবসায়নের পুনঃনোটিশ প্রাপ্তি সাপেক্ষে, পণ্যের মালিককে পণ্য খালাস বা স্থানান্তরের অনুমতি প্রদান করিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পূর্বস্বত অবসায়িত (discharge) না হওয়া পর্যন্ত উক্তরূপ পণ্য কর্তৃপক্ষের ওয়্যারহাউজ বা শেডে রাখিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, শুল্ক কর্তৃপক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে, পণ্যের মালিকের ঝুঁকি এবং খরচে উক্তরূপ পণ্য অন্য কোনো ওয়্যারহাউজে বা শেডে রাখা যাইবে ।
২৮। (১) কর্তৃপক্ষের কোনো ভাড়া, টোল, রেইট, ফি, মাশুল, ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য পাওনা বা পূর্বস্বত্ব অনাদায়ি থাকিলে এবং জাহাজ হইতে পণ্য খালাস বা স্থানান্তরের ২ (দুই) মাসের মধ্যে বন্দরের এবং জাহাজের মালিকের পাওনা পরিশোধিত না হইলে উক্ত ২ (দুই) মাস সময় অতিক্রান্ত হইবার পর ২ (দুই) টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় এবং কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে ১৫ (পনেরো) দিনের লিখিত নোটিশ প্রদানপূর্বক নিলামে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে বন্দরের এবং জাহাজের মালিকের পাওনা আদায় করা যাইবে।
(২) পঁচনশীল ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজন মনে করিলে, পণ্য খালাস বা স্থানান্তরের ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টা অতিক্রান্ত হইবার পর যত দ্রুত সম্ভব উক্ত পণ্য সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে পণ্যের মালিক বা তাহার এজেন্টকে জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় নোটিশ জারির ব্যবস্থা করিতে হইবে।
(৩) পণ্যরে মালকি বা তাহার এজেন্টের ঠিকানা পণ্য সংশ্লষ্টি কাগজপত্র হইতে বা অন্য কোনোরূপে কর্তৃপক্ষ অবগত হইলে, আবশ্যিকভাবে পণ্যের মালিক বা তাহার এজেন্টকে ডাকযোগের পাশাপাশি ফোন, মেসেজ, ই-মেইল এবং আধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমেও নোটিশ প্রদান বা অন্য কোনোরূপে নোটিশ প্রদান করিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ নোটিশ প্রদান না করিবার কারণে, পণ্যসমূহ সদ্ববিশ্বাসে ক্রয়কারী (bonafide purchaser) ক্রেতার স্বত্ব বাতিল হইবে না বা প্রকৃতপক্ষে নোটিশ প্রেরণ করা হইয়াছে কিনা, সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করিতে ক্রেতা বাধ্য থাকিবে না ।
২৯। (১) বন্দরে আগমনকারী কোনো জাহাজ এই আইনের অধীন আদায়যোগ্য কোনো টোল, রেইট, বকেয়া বা অন্য সকল পাওনাদি পরিশোধ না করিলে বা পরিশোধ করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত টোল, রেইট, বকেয়া বা অন্য সকল পাওনা পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত জাহাজ আটক করিতে বা বন্দর ত্যাগের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসারে জাহাজ আটক বা বিধি-নিষেধ আরোপের ২ (দুই) মাসের মধ্যে জাহাজের মালিক পাওনাদি পরিশোধ না করিলে বা জাহাজ আটকের ক্ষেত্রে সকল ব্যয় পরিশোধ না করিলে কর্তৃপক্ষ উক্ত আটককৃত জাহাজ বা উক্ত জাহাজে রক্ষিত পণ্য প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করিতে পারিবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (২) অনুসারে বিক্রয়লব্ধ অর্থ হইতে প্রাপ্য অর্থ সমন্বয় করিয়া অবশিষ্ট অর্থ, যদি থাকে, জাহাজের মালিক বা উহার প্রতিনিধিকে ফেরত প্রদান করিবে এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ হইতে প্রাপ্য অর্থ সমন্বয়ে ঘাটতি থাকিলে উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর অধীন সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।
৩০। কর্তৃপক্ষ বন্দর ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে যদি এই মর্মে নোটিশ প্রদান করে যে, কোনো জাহাজ বা জাহাজে রক্ষিত পণ্যের উপর এই আইন ও বিধি অনুযায়ী আদায়যোগ্য পাওনা বা জরিমানা অনাদায়ি রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত পাওনা বা জরিমানা পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট জাহাজকে বন্দর ছাড়পত্র প্রদান করিবেন না ।
৩১। (১) কোনো পণ্যের মালিক উক্ত পণ্যের দাবি পেশ বা খালাসের নিমিত্ত বন্দরে উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হইলে বা উক্ত পণ্যের জন্য আদায়যোগ্য ফি, টোল, রেইট ও মাশুল পরিশোধ করিবার পর বন্দর হইতে উহা খালাস না করিলে উক্ত পণ্য কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসিবার দিন হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিন অতিবাহিত হইবার পর সরাইয়া লইবার জন্য পণ্যের মালিককে নোটিশ প্রদান করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে পণ্য সংশ্লিষ্ট সকল পাওনা পরিশোধ করা হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে পণ্য কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসিবার দিন হইতে ৪৫ (পয়ঁতাল্লিশ) দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত নোটিশ প্রদান করা যাইবে না।
(২) যেক্ষেত্রে মালিকানা অজ্ঞাত বা যুক্তিসংগত কারণে মালিক বরাবর নোটিশ জারি করা সম্ভব হয় নাই বা নোটিশ প্রাপ্তির পর তিনি উহা মান্য (comply) করেন নাই সেইক্ষেত্রে উক্ত পণ্য কর্তৃপক্ষের জিম্মায় (custody) নেওয়ার ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন অতিবাহিত হইবার পর কর্তৃপক্ষ উহা প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে, যথাযথ কারণ বা পরিস্থিতিতে উপ-ধারা (১) এর অধীন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব না হইলে, উক্ত পণ্য কর্তৃপক্ষের জিম্মায় (custody) নেওয়ার ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন অতিবাহিত হইবার পর শুল্ক বিভাগ উহা নিজস্ব স্থানে স্থানান্তর করিতে পারিবে।
(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোনো পণ্য বা যেকোনো শ্রেনির পণ্যকে এই ধারার প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
৩২। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইন, বিধি বা প্রবিধান দ্বারা কর্তৃপক্ষের ভাড়া, জরিমানা, ফি, টোল, রেইট, মাশুল বা ক্ষতিপূরণ অনাদায়ি থাকিলে কর্তৃপক্ষ উহার জিম্মায় (custody) থাকা পণ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করিয়া অর্থ আদায় করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আদায়কৃত অর্থ অপর্যাপ্ত হইলে কর্তৃপক্ষ ধারা ২৪ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অবশিষ্ট পাওনা আদায় করিতে পারিবে।
৩৩। কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত মনে করিলে বন্দরের কোনো স্থাপনা বা সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত মেয়াদ, শর্ত ও পদ্ধতিতে ইজারা প্রদান করিতে পারিবে।
৩৪। (১) কর্তৃপক্ষ জাহাজ ভিড়ানো এবং পণ্য উঠানো-নামানোর জন্য বন্দর সীমানায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক জাহাজ ঘাট বা জেটি নির্মাণ করিতে বা অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঘাট বা জেটি নির্মাণের জন্য তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে লিখিত অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজন মনে করিলে, যেকোনো স্থায়ী স্থাপনার কর্তৃত্ব গ্রহণ করিতে পারিবে এবং অস্থায়ী স্থাপনা অপসারণ, পরিবর্তন ও স্থানান্তর করিতে পারিবে এবং উক্ত স্থাপনাসমূহ ব্যবহার করা হইতে জনসাধারণকে নিবৃত্ত করিতে পারিবে।
পঞ্চম অধ্যায়
তহবিল, হিসাব রক্ষণ, ইত্যাদি
৩৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LII of 1976) এর section 35 এর অধীন গঠিত Chittagong Port Authority Fund যাহা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে অভিহিত হইবে এবং এই আইনের অধীন গঠিত তহবিল বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান অথবা ঋণ;
(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো বিদেশি সরকার, সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থা বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান অথবা ঋণ;
(গ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, গৃহীত ঋণ;
(ঘ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান বা ঋণ;
(ঙ) কর্তৃপক্ষের সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ অর্থ;
(চ) কর্তৃপক্ষের অর্জিত বন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত ভাড়া, টোল, রেইট, মাশুল, বকেয়া ও ফি;
(ছ) ক্ষতিপূরণ হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(জ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সেবা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
(ঝ) নিলাম হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(ঞ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তিমূলে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে সংগৃহীত পুঁজি;
(ট) Port Act, 1908 (Act No. XV of 1908) এর section 36 অনুযায়ী আদায়কৃত অর্থ ব্যয় নির্বাহের পর উদ্বৃত্ত অর্থ; এবং
(ঠ) অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(৩) তহবিলের অর্থ, বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “তপশিলি ব্যাংক” বলিতে Bangladesh Bank Order,1972 (President’s Order No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত ‘Scheduled Bank’ কে বুঝাইবে।
(৪) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল পরিচালিত হইবে।
৩৬। (১) বন্দরের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে।
(২) চেয়ারম্যান, সদস্য ও কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে।
(৩) কর্তৃপক্ষ উহার কর্মচারী এবং বিধিতে বর্ণিত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় সামাজিক সুবিধা প্রদানের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, ক্রীড়া, বিনোদনমূলক কার্যক্রম ও নির্ধারিত অন্যান্য কার্যক্রমের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ পরিবেশের উন্নয়নের জন্যও তহবিল ব্যবহার করিতে পারিবে
(৪) তহবিলের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রণীত বিধি-বিধান ও নির্দেশনা অনুসরণ করিতে হইবে।
৩৭। (১) কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, সরকারের লিখিত পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারি প্রতিষ্ঠান হইতে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সরকারের নিকট হইতে বা সরকারের জামিনদারিত্বে কোনো ঋণ গ্রহণ করা হইলে, উক্ত ঋণের শর্তাবলি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে ।
৩৮। কর্তৃপক্ষ প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থবৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
৩৯। (১) কর্তৃপক্ষ, উহার আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে ।
(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব-নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং এতদসংশ্লিষ্ট আইনের বিধান অনুযায়ী নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
(৩) কর্তৃপক্ষের হিসাব Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No.2 of 1973) অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ২ (দুই) টি নিবন্ধিত চার্টাড একাউন্ট্যান্টস ফার্ম দ্বারা প্রতি বৎসর নিরীক্ষা করাইতে হইবে এবং উক্ত নিরীক্ষা মতামতসহ হিসাব প্রতিবেদন সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিতে হইবে।
(৪) উপ-ধারা (২) উল্লিখিত হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিল, দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের যে কোনো কর্মচারীর নিকট ব্যাখ্যা চাহিতে পারিবেন।
ষষ্ঠ অধ্যায়
অপরাধ, দণ্ড, ইত্যাদি
৪০। কোনো ব্যক্তি যদি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত লঙ্ঘনের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট দণ্ড উল্লেখ না থাকিলে তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৪১। কোনো ব্যক্তি বা জাহাজ যদি বন্দর সীমানার মধ্যে পানিতে, সৈকতে, তীরে বা ভূমিতে কোনো বর্জ্য, ছাই, তৈল বা তৈল জাতীয় পদার্থ বা অন্য কিছু নিক্ষেপ করে বা নিক্ষেপ করিবার অনুমতি প্রদান করে যাহার ফলে পানি ও পরিবেশ দূষিত হয় বা জলজ প্রাণী, উদ্ভিদ প্রভৃতির ক্ষতি হয়, তাহা হইলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১ নং আইন) এর ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (১) এর টেবিলের ১০ নং ক্রমিকের বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
৪২। যদি কোনো ব্যক্তি আইনগতভাবে প্রদেয় বন্দরের কোনো ভাড়া, ফি, টোল, রেইট, মাশুল বা ক্ষতিপূরণ ফাঁকি প্রদানের উদ্দেশ্যে কোনো পণ্য, জাহাজ, প্রাণী বা বাহন অপসারণ বা অপসারণের চেষ্টা করেন, বা অপসারণের জন্য Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এ সংজ্ঞায়িত অর্থে অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্ররোচিত (abet) করেন, তাহা হইলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৪৩। কর্তৃপক্ষের কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি ব্যতীত, কোনো জাহাজের মাস্টার, নাবিক বা উক্ত জাহাজের কর্মে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তির অবহেলার কারণে কোনো ডক, পিয়ার বা কোনো স্থাপনা বা কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মের ক্ষতি হইলে, উক্ত জাহাজের মালিক, মাস্টার বা প্রতিনিধির নিকট হইতে ক্ষতির পরিমাণ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাইবে।
৪৪। (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এইরূপ প্রত্যেক পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে বা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন ।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায়-
(ক) ‘কোম্পানি’ অর্থে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার, সমিতি, সংঘ এবং সংগঠন; এবং
(খ) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘পরিচালক’ অর্থে উহার কোনো অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত ব্যক্তি সত্ত্বাবিশিষ্ট হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ব্যতীত উক্ত কোম্পানিকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে ফৌজদারি মামলায় উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে এবং প্রয়োজনে কালো তালিকাভুক্তও করা যাইবে।
৪৫। এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধের তদন্ত, বিচার ও আপিল এবং অন্যান্য বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
৪৬। ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩২ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তির উপর এই আইনের কোনো ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন।
৪৭। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কর্তৃপক্ষ বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত, কোনো আদালত, এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না।
৪৮। এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সালের ৯ নং আইন) এর তপশিলভুক্ত করিয়া বিচার করা যাইবে।
সপ্তম অধ্যায়
কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
৪৯। (১) কর্তৃপক্ষ উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে, সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কর্তৃপক্ষ কোনো কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করিতে পারিবে না ।
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মচারীগণের নিয়োগ পদ্ধতি ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৫০। সরকার, জনস্বার্থে, কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যে, কোনো সংস্থায় এবং উক্ত সংস্থাসমূহের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কর্তৃপক্ষের যে কোনো উপযুক্ত পদে প্রেষণে নিয়োগ করিতে পারিবে।
৫১। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং অন্যান্য কর্মচারীগণ Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এ public servent (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক হিসাবে গণ্য হইবেন ।
৫২। বোর্ড, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত শর্তাধীনে, উহার যেকোনো ক্ষমতা চেয়ারম্যান, সদস্য বা উহার কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
অষ্টম অধ্যায়
বিবিধ
৫৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, চেয়ারম্যান, সদস্য বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী ধারা ৩ এ উল্লিখিত বন্দর সীমানায় যে কোনো স্থান, ঘরবাড়ি বা অঙ্গনে প্রবেশ, পরিদর্শন, জরিপ ও অনুসন্ধান করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন-
(ক) কোনো স্থান, ঘরবাড়ি বা অঙ্গনে প্রবেশের পূর্বে উক্ত ভূমির মালিক বা তত্ত্বাবধায়ককে অন্যূন ২৪ (চব্বিশ) ঘণ্টার নোটিশ প্রদান করিতে হইবে ; এবং
(খ) কোনো স্থান, ঘরবাড়ি বা অঙ্গনে প্রবেশের সময়কাল অবশ্যই সূর্যোদয়ের পর হইতে সূর্যাস্তের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে হইতে হইবে ।
৫৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি সম্পাদনের নিমিত্ত কোনো ভূমি প্রয়োজন হইলে তাহা জনস্বার্থে প্রয়োজন বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে উহা স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ২১ নং আইন) এর বিধান অনুসারে কর্তৃপক্ষের জন্য হুকুম দখল বা অধিগ্রহণ করা যাইবে।
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণকৃত ভূমি ব্যতীতও অন্য কোনো ভূমি ক্রয়, ইজারা, বিনিময় বা অন্য কোনো উপায়ে অর্জন এবং নিষ্পত্তি করিতে পারিবে ।
৫৫। (১) প্রতি অর্থ বৎসর শেষ হইবার অব্যবহিত পর কর্তৃপক্ষ তৎকর্তৃক উক্ত অর্থ বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ এবং আয় ও ব্যয় সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।
(২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে উহার কার্যাবলি বা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য, পরিসংখ্যান, হিসাব-নিকাশ, টেন্ডার ডকুমেন্ট, দলিল-দস্তাবেজ পেশ করিবার জন্য বলিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট পেশ করিবে।
৫৬। (১) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা দায়েরে ইচ্ছুক ব্যক্তি, তাহার নাম ঠিকানাসহ মামলা দায়েরের কারণ সংবলিত লিখিত নোটিশ কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবার পর ১ (এক) মাস অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ বা ইহার চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মচারী বা অন্য কোনো ব্যক্তি যিনি এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন ও কার্য সম্পাদন করিতেছেন তাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন না।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো মামলা দায়ের করিবার অধিকার সৃষ্টির ২ (দুই) মাসের মধ্যে মামলা দায়ের করিতে হইবে ।
৫৭। এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কাজের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হইবার সম্ভাবনা থাকিলে বা বন্দরে স্থিত কোনো মুরিং বা অন্য কোনো সুবিধাদি ব্যবহারের ফলে কোনো জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হইলে কর্তৃপক্ষ বা উহার চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্য বা কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই ব্যাপারে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা রুজু করা যাইবে না বা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারাও গ্রহণ করা যাইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোনো কিছুই কর্তৃপক্ষকে উহার পক্ষ হইতে কৃত বা উহার আদেশ বা অনুমোদনের মাধ্যমে বা উহার অধীনস্থ কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক কৃত কোনো কার্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলা বা কর্মকাণ্ড এই দায়মুক্তির অন্তর্ভুক্ত হইবে না।
ব্যাখ্যা-এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “সরল বিশ্বাস” বলিতে অবহেলার সহিত করা হউক বা না হউক প্রকৃতপক্ষে কোনো কিছু সততার সহিত করা হইলে “সরল বিশ্বাস”-এ করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
৫৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৫৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৬০। (১) Chittagong Port Authority Ordinance, 1976 (Ordinance No. LII of 1976), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন-
(ক) কৃত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(খ) প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান, জারিকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, প্রণীত সকল পরিকল্পনা বা কার্যক্রম এবং অনুমোদিত সকল হিসাব বিবরণী ও বার্ষিক প্রতিবেদন উক্তরূপ রহিতকরণের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে, এই আইনের কোনো বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারিকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষের-
(ক) বিরুদ্ধে বা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে;
(খ) পক্ষে, উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত কোনো চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে ;
(গ) সকল প্রকার ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে;
(ঘ) চুক্তি বা চাকরির শর্তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে উক্ত কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, তাহারা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন; এবং
(ঙ) সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, ফিস, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, তহবিল, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও সিকিউরিটিসহ সকল হিসাব এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং অন্যান্য সকল দলিলসহ এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরিত হইবে এবং কর্তৃপক্ষ উহার অধিকারী হইবে।
৬১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
(২) এই আইনের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।