প্রিন্ট ভিউ

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২

( ২০২২ সনের ১৬ নং আইন )

দেশে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার প্রসার, দক্ষ ও যোগ্য চিকিৎসক তৈরি, চিকিৎসা সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন এবং পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়সহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধানকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু দেশে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার প্রসার, দক্ষ ও যোগ্য চিকিৎসক তৈরি, চিকিৎসা সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন এবং পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়সহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(ক) ‘‘কাউন্সিল’’ অর্থ বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৬১ নং আইন) এর ধারা ৩ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল;

(খ) ‘‘পরিদর্শন কমিটি’’ অর্থ ধারা ৭ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত পরিদর্শন কমিটি;

(গ) ‘‘পরিচালনা পর্ষদ’’ অর্থ ধারা ১৮ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ;

(ঘ) ‘‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’’ অর্থ আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়;

(ঙ) ‘‘বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন’’ অর্থ বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৬১ নং আইন);

(চ) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(ছ) ‘‘সংরক্ষিত তহবিল’’ অর্থ ধারা ৬ এর দফা (ঙ) এ উল্লিখিত সংরক্ষিত তহবিল; এবং

(জ) ‘‘সাধারণ তহবিল’’ অর্থ ধারা ২১ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সাধারণ তহবিল।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন, ইত্যাদি

৩। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দেশের পরিবেশ, নিরাপত্তা, জনস্বার্থ, দেশে চিকিৎসকের প্রয়োজনীয়তা ও চিকিৎসা শিক্ষার মান অক্ষুণ্ণ রাখা, প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের নির্ধারিত স্থান ও উহার পার্শ্ববর্তী এলাকার জনসংখ্যা এবং আর্থিক সক্ষমতা বা অন্য কোনো বিষয় বিবেচনাক্রমে, যদি সরকার কোনো স্থানে কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা যাইবে না মর্মে ঘোষণা প্রদান করে, তাহা হইলে এইরূপ কোনো স্থানে কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা যাইবে না।

(৩) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ এইরূপ কোনো নামে স্থাপন করা যাইবে না, যে নামে এই আইন বা অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ ইতঃপূর্বে স্থাপিত হইয়া উক্ত নামে বহাল রহিয়াছে, বা যে নামে পূর্বে কোনো মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপিত হইয়াছিল কিন্তু বর্তমানে উক্ত নামে কোনো মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ বহাল নাই বা উক্ত নামের সহিত প্রস্তাবিত নামের সাদৃশ্য রহিয়াছে।

(৪) এই আইনের অধীন স্থাপিত প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ একটি স্বতন্ত্র আইনগত সত্তা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার অধিকার থাকিবে এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

(৫) এই আইনের অধীন স্থাপিত প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ একটি অলাভজনক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলিয়া বিবেচিত হইবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ সকলের জন্য উন্মুক্ত

৪। প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জন্মস্থান নির্বিশেষে সকল শ্রেণির যোগ্য শিক্ষার্থীর ব্যাচেলর অব মেডিসিন এন্ড ব্যাচেলর অব সার্জারি, ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারিসহ সকল কোর্সে ভর্তি, জ্ঞানার্জন এবং সাফল্যের সহিত কোর্স সমাপনান্তে সনদ প্রাপ্তির জন্য উম্মুক্ত থাকিবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের আবেদন

৫। ধারা ৬ এ বর্ণিত শর্তাবলি প্রতিপালন সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের জন্য সরকারের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে আবেদন করিতে হইবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের শর্তাবলি

৬। এই আইনের অধীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি পূরণ করিতে হইবে, যথা:-

(ক) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) জন শিক্ষার্থীর আসন বিশিষ্ট হইতে হইবে;

(খ) ৫০ (পঞ্চাশ) জন শিক্ষার্থীর আসনবিশিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে অন্যূন ২ (দুই) একর এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের নামে অন্যূন ১ (এক) একর এবং অন্যান্য এলাকার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে অন্যূন ৪ (চার) একর এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের নামে অন্যূন ২ (দুই) একর জমি থাকিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, মেট্রোপলিটন এলাকায় ইতোমধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে অন্যূন ১ (এক) একর জমি থাকিতে হইবে;

(গ) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের নামে যে জমি থাকিবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের মালিকানা নিরঙ্কুশ, নিষ্কণ্টক, অখণ্ড ও দায়মুক্ত হইতে হইবে;

(ঘ) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ এবং উহাদের অধীন পরিচালিত হাসপাতাল কোনোক্রমেই ইজারাকৃত বা ভাড়া জমিতে বা ভবনে স্থাপন করা যাইবে না;

(ঙ) প্রস্তাবিত ৫০ (পঞ্চাশ) জন শিক্ষার্থীর আসনবিশিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজের নামে অন্যূন ৩ (তিন) কোটি টাকা এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের নামে অন্যূন ২ (দুই) কোটি টাকা যে কোনো তপশিলি ব্যাংকে সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে জমা থাকিতে হইবে এবং ইতোমধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের নামে যে কোনো তপশিলি ব্যাংকে সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে ১ (এক) কোটি টাকা জমা থাকিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, ৫০ (পঞ্চাশ) এর অধিক আসনের অতিরিক্ত প্রতি আসনের জন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে ৩ (তিন) লক্ষ টাকা এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের ক্ষেত্রে ২ (দুই) লক্ষ টাকা সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে জমা থাকিতে হইবে এবং ব্যক্তি নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে আরও অতিরিক্ত ১ (এক) কোটি টাকা সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে জমা থাকিতে হইবে;

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো জাতীয় ব্যক্তিত্বের নামে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ জমা রাখিতে হইবে না:

ব্যাখ্যা: এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-

(অ) ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No 127 of 1972) এর Article 2 (j) এ সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank; এবং

(আ) ‘‘জাতীয় ব্যক্তিত্ব’’ অর্থ দেশের ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান, গবেষণা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ক্রীড়া, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ রক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পুরস্কার বা রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব;

(চ) প্রস্তাবিত ৫০ (পঞ্চাশ) জন শিক্ষার্থীর আসনবিশিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য অন্যূন ১ (এক) লক্ষ বর্গফুট ও হাসপাতাল পরিচালনা জন্য অন্যূন ১ (এক) লক্ষ বর্গফুট এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার বর্গফুট ও হাসপাতাল পরিচালনার জন্য অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার বর্গফুট ফ্লোর স্পেস সংবলিত সম্পূর্ণ অবকাঠামো থাকিতে হইবে;

(ছ) ৫০ (পঞ্চাশ) জন শিক্ষার্থীর আসনবিশিষ্ট প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের আবেদন করিবার অন্যূন ২ (দুই) বৎসর পূর্ব হইতে প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসহ বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে ৭০ (সত্তর) শতাংশ বেড অকুপেন্সিসহ অন্যূন ২৫০ (দুইশত পঞ্চাশ) শয্যার একটি আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল, এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের ক্ষেত্রে অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল হাসপাতাল চালু থাকিতে হইবে;

(জ) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসহ কলেজ ও হাসপাতালে পৃথক ভবন থাকিতে হইবে;

(ঝ) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন বা বিধি-বিধান দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক পূর্ণকালীন শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, গ্রন্থাগার, ল্যাবরেটরি, মিলনায়তন, সেমিনার কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষার্থীদের পৃথক কমন রুম, ফ্লোর স্পেস, শিক্ষক ও টেকনিক্যাল স্টাফ, শিক্ষা উপকরণ ও যন্ত্রপাতি, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত পাঠাগার, ল্যাব, খেলাধুলা, বিনোদন ও শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষের জন্য পর্যাপ্ত স্থান ও অবকাঠামো থাকিতে হইবে;

(ঞ) প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ উহার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যমান, ক্ষেত্রমত, সরকারি বা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত দূরত্বে স্থাপন করিতে হইবে; এবং

(ট) প্রস্তাবিত এবং ইতোমধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের হাসপাতালে দরিদ্র জনগণের জন্য সম্পূর্ণ বিনা ভাড়ায় ন্যূনতম
১০ (দশ) শতাংশ শয্যা স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ ও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক জরুরি চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম থাকিতে হইবে।

পরিদর্শন কমিটি

৭। (১) ধারা ৫ এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার, উক্ত আবেদন যাচাই-বাছাই এবং প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ পরিদর্শনের জন্য নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি পরিদর্শন কমিটি গঠন করিবে, যথা:-

(ক) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা, ক্ষেত্রমত, পরিচালক, যিনি ইহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) সংশ্লিষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন (ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিন) বা অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(গ) বেসিক সায়েন্সের অন্যূন সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ঘ) ক্লিনিক্যাল সায়েন্সের অন্যূন সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ঙ) বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;

(চ) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব বা, ক্ষেত্রমত, সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি; এবং

(ছ) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বা, ক্ষেত্রমত, সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, যিনি ইহার সদস্য সচিবও হইবেন।

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পরিদর্শন কমিটির সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি এবং পুনর্গঠন করিতে পারিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত পরিদর্শন কমিটির মেয়াদ, দায়িত্ব, ক্ষমতা, কার্যপরিধি, কার্যপদ্ধতি ও অন্যান্য শর্তাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বিশেষ কমিটি

৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্য যেকোনো বিশেষ কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের অনুমতি

৯। (১) পরিদর্শন কমিটি প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের আবেদন যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ পরিদর্শনের পর সরকারের নিকট উহার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর সরকার সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর নিকট হইতে প্রয়োজনীয় আরও কোনো তথ্য চাহিতে পারিবে।

(৩) পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন এবং আবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সরকার-

(ক) যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী ধারা ৬ এ বর্ণিত শর্তাবলি পূরণ করিয়াছেন, তাহা হইলে সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে, আবেদনকারীর অনুকূলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের প্রাথমিক নীতিগত অনুমোদন প্রদান করিবে; অথবা

(খ) যদি এই মর্মে নিশ্চিত হয় যে, আবেদনকারী ধারা ৬ এ বর্ণিত কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হইয়াছেন বা ধারা ৩ এর উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত কোনো কারণে অনুপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হয়, তাহা হইল সরকার, আবেদনকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া, লিখিত আদেশ দ্বারা, আবেদনটি নামঞ্জুর করিতে পারিবে।

একাডেমিক অনুমোদন

১০। (১) ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩) এর দফা (ক) এর অধীন প্রাথমিক নীতিগত অনুমোদন প্রাপ্ত প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে উক্তরূপ অনুমোদনের শর্তাদি, যদি থাকে, প্রতিপালন সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির পূর্বে সরকারের নিকট বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে, একাডেমিক অনুমোদনের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার উহার যৌক্তিকতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে পরিদর্শন কমিটির নিকট প্রেরণ করিবে।

(৩) পরিদর্শন কমিটি প্রস্তাবিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের আবেদন যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টার কলেজ পরিদর্শনের পর সরকারের নিকট উহার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করিবে।

(৪) পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন এবং আবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সরকার সন্তুষ্ট হইলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে, আবেদনকারীর অনুকূলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন প্রদান করিবে, যাহা চূড়ান্ত অনুমোদন বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত একাডেমিক অনুমোদনের মেয়াদ হইবে ২ (দুই) বৎসর।

একাডেমিক অনুমোদন নবায়ন

১১। (১) একাডেমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে, একাডেমিক অনুমোদনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, একাডেমিক অনুমোদন নবায়নের জন্য সরকারের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার উহার যৌক্তিকতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে পরিদর্শন কমিটির নিকট সুপারিশসহ প্রতিবেদনের জন্য আবেদনটি প্রেরণ করিবে।

(৩) পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন এবং আবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সরকার সন্তুষ্ট হইলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে, আবেদনকারীর অনুকূলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন নবায়ন করিবে।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত নিবন্ধন নবায়নের আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন সনদ কার্যকর থাকিবে।

কাউন্সিলে নিবন্ধন

১২। ধারা ১০ এর অধীন একাডেমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত বা ধারা ১১ এর অধীন একাডেমিক অনুমোদন নবায়নকারী প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে কাউন্সিলের নিবন্ধন গ্রহণ করিতে হইবে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত

১৩। ধারা ১০ এর অধীন একাডেমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে সংশ্লিষ্ট কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বা পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হইতে হইবে।

আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও ডেন্টাল ইউনিট স্থাপন

১৪। (১) এই আইনের অধীন স্থাপিত কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে পরবর্তীকালে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ধারা ৬ এর দফা (খ), (চ) ও (ছ) এ বর্ণিত কলেজের জমি, একাডেমিক কার্যক্রম ও হাসপাতালের জন্য আনুপাতিক হারে ফ্লোর স্পেস, হাসপাতালের শয্যা ও অন্যান্য অবকাঠামো বৃদ্ধি করিতে হইবে।

(২) একাডেমিক অনুমোদনপ্রাপ্ত কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ প্রথম বার শিক্ষার্থী ভর্তির অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর অতিবাহিত হইবার পর উপ-ধারা (১) এর শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশসহ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার উহা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে পরিদর্শন কমিটির নিকট সুপারিশসহ প্রতিবেদনের জন্য প্রেরণ করিবে।

(৪) সরকার, পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত এই আইনের অন্যান্য বিধানে বর্ণিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে, সন্তুষ্ট হইলে আসন বৃদ্ধির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজের সক্ষমতার আলোকে বিবেচনা করিবে।

(৫) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক ২০ (বিশ) আসন বিশিষ্ট ডেন্টাল ইউনিট স্থাপন করিতে পারিবে।

শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা

১৫। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে উহার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত পরিকল্পনা অথবা শিক্ষাক্রম সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ে, কাউন্সিলের লিখিত অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ শিক্ষাক্রম সম্পর্কে যদি অন্য কোনো আইন অনুযায়ী অন্য কোনো সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ বাধ্যতামূলক হয়, তাহা হইলে সেই সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

(২) বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের শিক্ষকদের যোগ্যতা কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

(৩) বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার অনুপাত হইবে ১:১০ (এক অনুপাত দশ)।

(৪) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের কোনো বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদিত পদের শতকরা ২৫ (পঁচিশ) শতাংশের অধিক হইবে না।

(৫) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের ৫ (পাঁচ) শতাংশ আসন অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং প্রতি শিক্ষাবর্ষে উল্লিখিত সংরক্ষিত আসনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা ভর্তির কার্যক্রম সমাপ্ত হইবার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

(৬) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে প্রশিক্ষণের নিমিত্ত, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কাঠামোতে, ক্লিনিক্যাল স্কিল ল্যাব থাকিতে হইবে।

(৭) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের সহিত ফিল্ড সাইট প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে একটি জেলা অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সংযুক্ত থাকিতে হইবে এবং এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সম্মতি থাকিতে হইবে।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি, পরীক্ষা পরিচালনা, গবেষণা, ইত্যাদি

১৬। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি, পরীক্ষা পরিচালনা, গবেষণা, ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ও তদ্‌কর্তৃক প্রণীত বিধি এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে।

(২) সরকার ও কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ শিক্ষার্থী ভর্তি করিবে।

(৩) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ উহার অনুমোদিত আসন সংখ্যার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত, আনুপাতিক হারে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করিতে পারিবে।

(৪) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাইবে না।

(৫) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে উহার বাৎসরিক বাজেটের, বিধি দ্বারা নির্ধারিত, নির্দিষ্ট অংশ গবেষণার নিমিত্ত বরাদ্দ ও ব্যয় করিতে হইবে।

(৬) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত দেশি ও বিদেশি শিক্ষার্থীর তালিকা প্রেরণ করিতে হইবে।

(৭) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ সরকারের অনুমতি ছাড়া নূতন শিক্ষার্থী ভর্তি করিতে পারিবে না।

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের সাংগঠনিক কাঠামো, জনবল, ইত্যাদি

১৭। প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ, সরকারের অনুমোদনক্রমে উহার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য উপযুক্ত বেতন কাঠামো ও চাকরি সংক্রান্ত উপ-আইন প্রণয়ন করিতে পারিবে।

পরিচালনা পর্ষদ

১৮। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উহা যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধান অনুসারে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেনো, পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান উদ্যোক্তাদের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন এবং পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান ছাড়াও উদ্যোক্তাদের পক্ষ হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ সদস্য থাকিবে।

(৩) পরিচালনা পর্ষদে সরকার, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত উহার এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ১ (এক) জন করিয়া প্রতিনিধি থাকিবে।

অন্যান্য কমিটি

১৯। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে নিম্নরূপ কমিটিসমূহ থাকিবে, যথা :-

(ক) ব্যবস্থাপনা কমিটি;

(খ) অর্থ ব্যবস্থাপনা কমিটি;

(গ) একাডেমিক কমিটি; এবং

(ঘ) শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ কমিটি।

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কমিটি ছাড়াও সরকার, প্রয়োজনে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে আরও কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত কমিটিসমূহ পরিচালনা পর্ষদের নিকট দায়ী থাকিবে এবং কমিটিসমূহের গঠন ও কার্যাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

অর্থায়নের উৎস

২০। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের অর্থের উৎস হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

(ক) কোনো জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তি গোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিঃশর্তভাবে প্রদত্ত দান;

(খ) কোনো জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তি গোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট বা প্রতিষ্ঠান বা সরকার হইতে প্রাপ্ত ঋণ;

(গ) কোনো জনকল্যাণকামী ব্যক্তি, ব্যক্তি গোষ্ঠী, দাতব্য ট্রাস্ট বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(ঘ) শিক্ষার্থীগণ কর্তৃক প্রদত্ত ফি;

(ঙ) বিভিন্ন খাতে সৃষ্ট সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের নিজস্ব আয়; এবং

(চ) সরকার বা পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য উৎস।

সাধারণ তহবিল

২১। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের একটি সাধারণ তহবিল থাকিবে এবং উক্ত সাধারণ তহবিলে শিক্ষার্থীদের নিকট হইতে সংগৃহীত বেতন, ফি এবং অন্যান্য উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে।

(২) সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে সাধারণ তহবিল পরিচালিত হইবে।

(৩) সরকারের অনুমোদনক্রমে সাধারণ তহবিলের অর্থ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।

(৪) প্রত্যেক অর্থ বৎসরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূর্ববর্তী অর্থ বৎসরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং সংরক্ষিত তহবিল ও সাধারণ তহবিলের হিসাব সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

(৫) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ বা উহার পক্ষে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতীত, দেশের বাহিরের কোনো উৎস হইতে কোনো তহবিল সংগ্রহ করিতে পারিবে না বা তহবিলের কোনো অংশ বাংলাদেশের বাহিরে প্রেরণ করিতে পারিবে না।

(৬) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের সাধারণ তহবিলের অর্থ উক্ত কলেজের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না।

শিক্ষার্থী ফি

২২। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের সকল শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত হইবে।

(২) দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার মানদণ্ডে সামঞ্জস্যপূর্ণ করিয়া প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ শিক্ষার্থীর মাসিক টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি এর কাঠামো সংশ্লিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারণ করিয়া কাউন্সিলকে অবহিত করিবে এবং কাউন্সিল অবহিত হইবার পর প্রয়োজনে পরামর্শ প্রদান করিবে।

(৩) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি ফি বা পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত এবং কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত টিউশন ফি এর অতিরিক্ত ভর্তি ফি বা টিউশন ফি আদায় করা যাইবে না।

পরিদর্শন

২৩।  (১) পরিদর্শন কমিটি, এই আইন ও বিধির বিধানাবলি যথাযথভাবে প্রতিপালনপূর্বক পরিচালিত হইতেছে কি না, তাহা নিশ্চিত হইবার জন্য প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের পর প্রথম ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত প্রত্যেক বৎসরে অন্যূন ১ (এক) বার এবং পরবর্তীকালে প্রত্যেক ২ (দুই) বৎসরে অন্যূন ১ (এক) বার করিয়া নিয়মিত পরিদর্শন করিবে এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন সরকারের বিবেচনার জন্য দাখিল করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নিয়মিত পরিদর্শন ছাড়াও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার তথ্য অবগত হওয়া, কার্যক্রম অবলোকন করা এবং অন্যান্য যে কোনো অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের জন্য পরিদর্শন কমিটি যে কোনো সময় যে কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ আকস্মিক পরিদর্শন বা বিশেষ পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(৩) কোনো অভিযোগকারীর সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ তদন্তের ক্ষেত্র এবং আকস্মিক পরিদর্শন ব্যতীত, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ ও তৎসংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কার্যক্রম পরিদর্শনের লক্ষ্যে উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পরিদর্শনের নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে।

(৪) এই ধারার অধীন যে কোনো প্রকারের পরিদর্শনের সময় সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন কমিটিকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করিবে।

(৫) বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ পরিচালনা বা হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে এই আইন বা বিধির কোনো বিধান প্রতিপালিত হয় নাই মর্মে যদি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তাহা হইলে উক্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর সরকার সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে যথাযথ বক্তব্য প্রদানের সুযোগ প্রদান করিয়া, লিখিত আদেশ দ্বারা, এই আইন বা উহার অধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি অনুসরণে ব্যর্থতার দায়ে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে।

অনুমোদন স্থগিত বা বাতিল

২৪। (১) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ প্রাথমিক নীতিগত অনুমোদন প্রাপ্তির ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম আরম্ভ করিতে ব্যর্থ হইলে বা কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে সাময়িকভাবে ভর্তি স্থগিতাদেশ প্রদান করা হইলে এবং উক্ত স্থগিতাদেশ প্রদানের ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করিতে ব্যর্থ হইলে ধারা ৯ এর উপ-ধারা (৩) এর দফা (ক) এর অধীন প্রদত্ত প্রাথমিক নীতিগত অনুমোদন ও ধারা ১০ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত একাডেমিক অনুমোদন বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের সামগ্রিক পরিচালনার ক্ষেত্রে বা উহার একাডেমিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হইলে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বা একাডেমিক পরিবেশের নিরাপত্তা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে বা এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘিত হইয়াছে বলিয়া প্রতীয়মান হইলে, সরকার, স্বতঃপ্রণোদিত হইয়া বা কোনো সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তির আবেদনক্রমে, উক্ত বিষয়ে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তদন্ত করিতে পারিবে।

(৩) তদন্তে অভিযোগটি সত্য বলিয়া প্রতীয়মান হইলে সরকার যুক্তিসংঙ্গত শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় উক্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের অনুমোদন স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে বা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার লক্ষ্যে সরকারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোনো আবেদন প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে সরকার উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং এতদ্‌বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৬) উপ-ধারা (১) বা (৩) এর অধীন কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের অনুমোদন বাতিল হওয়ার কারণে কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে অথবা কোনো শিক্ষক, কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হইলে, উক্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ সরকারের নির্দেশক্রমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বা ক্ষেত্রমত, শিক্ষক ও কর্মচারীকে সরকার যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান উপযুক্ত মর্মে বিবেচনা করিবে সেই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবে এবং সরকার ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত পরামর্শক্রমে শিক্ষার্থীদেরকে সুবিধাজনক অন্য কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করিবে।

(৭) উপ-ধারা (৬) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নিমিত্ত, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উক্ত কলেজের সংরক্ষিত তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করিতে পারিবে।

সম্পত্তি হস্তান্তর

২৫। প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ কর্তৃক স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকার এবং উক্ত মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

২৬। প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে চিকিৎসা-বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা, ২০০৮সহ চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে।

শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কাউন্সিলের অনুমোদন গ্রহণ না করিবার দণ্ড

২৭। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত পরিকল্পনা অথবা শিক্ষাক্রম সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ে কাউন্সিলের লিখিত অনুমোদন গ্রহণ না করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

৫ (পাঁচ) শতাংশ আসন অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত না রাখিবার দণ্ড

২৮। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের ৫ (পাঁচ) শতাংশ আসন অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত না রাখেন এবং প্রতি শিক্ষাবর্ষে উল্লিখিত সংরক্ষিত আসনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা ভর্তির কার্যক্রম সমাপ্ত হইবার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ না করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করিবার দণ্ড

২৯। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর উপ-ধারা (৪) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

সরকারের অনুমতি ব্যতীত নূতন শিক্ষার্থী ভর্তি করিবার দণ্ড

৩০। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর উপ-ধারা (৭) এর বিধান অনুযায়ী সরকারের অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজে কোনো নূতন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে পূর্বানুমোদন গ্রহণ না করিবার দণ্ড

৩১। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫ এর বিধান অনুযায়ী বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজের স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকার এবং উক্ত মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বানুমোদন গ্রহণ না করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

নীতিগত অনুমোদন বা একাডেমিক অনুমোদন ব্যতীত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার দণ্ড

৩২। যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন সরকারের নিকট হইতে প্রাথমিক নীতিগত অনুমোদন বা ক্ষেত্রমত, একাডেমিক অনুমোদন ব্যতীত বাংলাদেশের কোনো স্থানে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ স্থাপন বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ব্যাখ্যা- এই আইনের ধারা ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১ এবং ৩২ এ উল্লিখিত, ‘ব্যক্তি’ বলিতে কোনো বেসকাররি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কে বুঝাইবে।

অপরাধের বিচারার্থ গ্রহণ, তদন্ত, বিচার, ইত্যাদি

৩৩। (১) সরকার বা সরকারের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোনো আদালত এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।

(২) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

(৩) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য ও আপসযোগ্য হইবে।

(৪) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার অধীন অপরাধের অভিযোগ তদন্ত, বিচার, আপিল সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা

৩৪। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর Section 32 এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এই আইনের ধারা ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ও ৩২ এ উল্লিখিত পরিমাণ অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন।

হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা

৩৫। (১) প্রত্যেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ প্রত্যেক অর্থ বৎসরে উহার আয় ও ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রস্তুতপূর্বক পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ করিয়া সংরক্ষণ করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত হিসাব প্রত্যেক অর্থ বৎসরে Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) এ সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা নিরীক্ষা করাইতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে চার্টার্ড একাউনটেন্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

(৪) প্রত্যেক অর্থ বৎসরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার ও কাউন্সিলের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রাপ্ত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে সরকার যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেইরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।

প্রতিবেদন

৩৬। প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী অর্থ বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।

এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে স্থাপিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ সংক্রান্ত বিধান

৩৭। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে স্থাপিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে এই আইন কার্যকর হইবার ১ (এক) বৎসরের মধ্যে এই আইন এবং উহার অধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলি প্রতিপালন সাপেক্ষে অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, ইতঃপূর্বে স্থাপিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের ক্ষেত্রে ধারা ৬ এর দফা (ঞ) এ বর্ণিত শর্ত প্রযোজ্য হইবে না।

(২) এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে স্থাপিত কোনো বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ উপ-ধারা (১) এর অধীন বর্ণিত সময়ের মধ্যে অনুমোদন গ্রহণে ব্যর্থ হইলে, সরকার উক্ত বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজকে বন্ধ ঘোষণা করিতে পারিবে।

অস্পষ্টতা দূরীকরণ

৩৮। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৩৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৪০। এই আইন কার্যকর হইবার পর, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, মূল বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে মূল বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs