প্রিন্ট ভিউ

ঔষধ ও কসমেটিকস্ আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ২৯ নং আইন )

ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত, সংরক্ষণ, প্রদর্শন, বিতরণ ও মান নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে Drugs Act, 1940 এবং Drugs(Control) Ordinance, 1982 রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত, সংরক্ষণ, প্রদর্শন, বিতরণ ও মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং এতৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করা আবশ্যক; এবং

যেহেতু Drugs Act, 1940 (Act No. XXIII of 1940) এবং Drugs (Control) Ordinance, 1982 (Ordinance No. VIII of 1982) রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রর্বতন

১। (১) এই আইন ঔষধ ও কসমেটিকস্ আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অধিদপ্তর” অর্থ ধারা ৪ এ উল্লিখিত ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর;

(২) “আদর্শ মান” অর্থ ধারা ৩৬ এ সংজ্ঞায়িত আদর্শ মান;

(৩) “আপিল” অর্থ ক্ষেত্রমত, ধারা ১৯, ২৭ এবং ৬৪-তে উল্লিখিত আপিল;

(৪) “উৎপাদন” অর্থ বিক্রয় বা বিতরণের উদ্দেশ্যে যে কোনো ঔষধ প্রস্তুত, পরিবর্তন, অলংকরণ, ফিনিশিং, প্যাকিং, লেবেলিং, ব্রেকিং আপ অথবা অন্য কোনোরূপে ট্রিটিং (treating) বা অভিযোজন (adapting) করিবার যে কোনো প্রক্রিয়া অথবা প্রক্রিয়ার অংশ বা পর্যায়;

(৫) “ঔষধ” অর্থ-

(ক) মানুষ অথবা প্রাণিদেহের অভ্যন্তরে বা বাহিরে ব্যবহার করিবার জন্য ভ্যাকসিন ও বায়োলজিক্যাল ঔষধসহ সকল প্রকারের ঔষধ এবং মানুষ অথবা প্রাণিদেহের চিকিৎসা ও রোগ প্রশমন, নিরাময় বা প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার্য সকল প্রকারের উপাদান;

(খ) মেডিক্যাল ডিভাইস;

(গ) খাদ্য ব্যতীত মানবদেহের অঙ্গসংস্থান বা শারীরিক কার্য পরিবর্তন করিতে পারে এইরূপ কোনো উপাদান এবং মানুষ বা প্রাণিদেহে রোগ সৃষ্টি করিতে পারে এইরূপ পরজীবী বা কীট (vermine or insects) ধ্বংসের জন্য ব্যবহার্য কোনো উপাদান;

(ঘ) ব্রিটিশ ফার্মাকোপিয়া, ইউনাইটেড স্টেটস ফার্মাকোপিয়া, ইউনাইটেড স্টেটস ন্যাশনাল ফরমুলারি, ইউরোপিয়ান ফার্মাকোপিয়া অথবা আন্তর্জাতিক ফার্মাকোপিয়া এর যে কোনো সংস্করণে মনোগ্রাফ হিসাবে উল্লিখিত যে কোনো উপাদান;

(ঙ) ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হারবাল এবং হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক পদ্ধতি অনুসারে ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতকৃত যে কোনো উপাদান;

(চ) ডায়েটারী সাপ্লিমেন্ট, হারবাল সাপ্লিমেন্ট, নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট, মেডিকেল নিউট্রিশন বা থেরাপিউটিক নিউট্রিশন বা খাদ্য পথ্য বা সম্পূরক পথ্য; এবং

(ছ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঔষধ হিসাবে ঘোষিত যে কোনো বস্তু বা উপাদান;

ব্যাখ্যা।- এই দফায় উল্লিখিত-

(অ) “ডায়েটারী সাপ্লিমেন্ট”, “হারবাল সাপ্লিমেন্ট”, “নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট” “মেডিকেল নিউট্রিশন”, “থেরাপিউটিক নিউট্রিশন”, “খাদ্য পথ্য” বা “সম্পূরক পথ্য” অর্থ ভিটামিনস, মিনারেলস, এমাইনোএসিডস, টোবাকো ব্যতীত হার্বস এন্ড বোটানিক্যাল এক্সট্র্যাক্ট, প্রিবায়োটিক, প্রোবায়োটিক, সিমবায়োটিক, ফার্মাবায়োটিক বা এনজাইমস এর একক বা সম্মিলিত উপাদানে প্রস্তুতকৃত দ্রব্য, যাহা ফার্মাসিউটিক্যালস্ ডোজেস ফর্মে পরিবেশিত এবং যাহা মানুষ বা প্রাণির রোগ প্রতিরোধ, নিরাময়, শরীর গঠন বা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখে; এবং

(আ) “বায়োলজিক্যাল ঔষধ” অর্থ এইরূপ কোনো ঔষধ, যাহাতে এমন কোনো সক্রিয় উপাদান রহিয়াছে যাহা কোনো বায়োলজিক্যাল লিভিং সিস্টেম হইতে উৎপন্ন বা নির্যাস (Extract) করা হইয়াছে এবং যাহার জন্য ফিজিকোকেমিক্যাল পরীক্ষাসহ বায়োলজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন;

(৬) “ঔষধ আদালত” অর্থ ধারা ৬২-তে উল্লিখিত ঔষধ আদালত;

(৭) “ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি” অর্থ ধারা ১২ এর অধীন গঠিত ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি;

(৮) “কসমেটিকস্” অর্থ রাবিং (Rubbing), পোরিং (Pouring), স্প্রেইং (Spraying), বা এর মাধ্যমে মানব দেহ বা মানব দেহের শারীরিক কোনো পরিবর্তন সাধন করে বলিয়া দাবি করে এমন ঔষধ সংশ্লিষ্ট প্রসাধন সামগ্রী;

(৯) “কমিটি” অর্থ ধারা ১২-তে উল্লিখিত কোনো কমিটি, এবং উপ কমিটিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১০) “কোম্পানি” অর্থ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীনে গঠিত এবং নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি;

(১১) “ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল” অর্থ মানবদেহে বা প্রাণিদেহে পদ্ধতিগত উপায়ে কোনো নূতন ঔষধ বা গবেষণালব্ধ নূতন ঔষধের ক্লিনিক্যাল, ফার্মাকোলজিক্যাল, ফার্মাকোডায়নামিকস ও ফার্মাকোকাইনেটিকসসহ ঔষধের জীবপ্রাপ্যতা (Bioavailability) পরীক্ষা বা জীবসমতুল্যতা (Bioequivalance) পরীক্ষা, যাহার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত দ্বারা উক্ত ঔষধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, নিরাপত্তা, কার্যকারিতা ও সহনীয়তা নির্ধারণ করা হয়;

ব্যাখ্যা।- এ দফায় উল্লিখিত-

(ক) “জীবপ্রাপ্যতা পরীক্ষা” অর্থ মানুষ বা প্রাণিদেহে কোনো ঔষধের হার ও পরিমাণ নিরূপণ করা, যাহা রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান থাকে;

(খ) “জীবসমতুল্যতা পরীক্ষা” অর্থ একই অবস্থায় ও ব্যবস্থাপনায় প্রমিত ঔষধের সক্রিয় উপাদানের বিশোষণের হার ও পরিমাণের তুলনায় কোনো ঔষধের সক্রিয় উপাদানের বিশোষণের হার ও পরিমাণের তারতম্য নিরূপণ করা;

(১২) “গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি)” অর্থ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে বিধৃত ঔষধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অনুশীলন;

(১৩) “ড্রাগ অ্যানালিস্ট” অর্থ ধারা ৫১ এর বিধান অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো ড্র্রাগ অ্যানালিস্ট;

(১৪) “তপশিল” অর্থ এই আইনের তপশিল;

(১৫) “নকল ঔষধ” বা “নকল কসমেটিকস্” অর্থ ধারা ৩৮ এর উপধারা (২) এ উল্লিখিত প্রকৃতির কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্;

(১৬) “নিবন্ধন” অর্থ ধারা ২২ বা ৩২ এর অধীন, ক্ষেত্রমত, ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নিবন্ধন;

(১৭) “নিম্নমান (Sub standard)” অর্থ যাহা আদর্শ মানের নহে;

(১৮) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা অথবা, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, অধিদপ্তর কর্তৃক লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

(১৯) “নূতন ঔষধ” অর্থ-

(ক) যে ঔষধ বা ঔষধের সক্রিয় উপাদান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধিত হয় নাই অথবা ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত নহে;

(খ) নিবন্ধিত ঔষধের ভিন্ন মাত্রা বা ভিন্ন ডোজেস ফর্ম; অথবা

(গ) পৃথকভাবে বিভিন্ন ডোজেস ফর্মে ইতোমধ্যে নিবন্ধিত একাধিক ঔষধের নির্দিষ্ট মাত্রার সমন্বয়ে গঠিত ঔষধ;

(২০) “পরীক্ষাগার” অর্থ ধারা ১০ এ উল্লিখিত জাতীয় নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার, এবং ঔষধ পরীক্ষাগারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২১) “প্রাণি” অর্থ মানুষ ব্যতীত সকল স্তন্যপায়ী প্রাণি, পাখি, মৌমাছি, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণি ও মৎস্যসহ অন্যান্য জলজ প্রাণি এবং, সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঘোষিত অন্য কোনো প্রাণি;

(২২) “ফার্মাকোভিজিল্যান্স” অর্থ ঔষধ বা ঔষধ সংক্রান্ত কোনো ফর্মুলেশনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া শনাক্তকরণ, পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন, অনুধাবন এবং প্রতিরোধ সম্পর্কিত বিজ্ঞান ও কার্যক্রম;

(২৩) “ফার্মাসিস্ট” অর্থ বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের রেজিস্টারে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত ফার্মাসিস্ট;

(২৪) “ফৌজদারি কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);

(২৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৬) “বিজ্ঞাপন” অর্থ যে কোনো বিজ্ঞপ্তি, লিফলেট, পরিপত্র বা দলিল, যাহা কোনো উন্মুক্ত স্থানে অথবা গণপরিবহণের ভিতরে বা বাহিরে প্রদর্শিত হয় অথবা কোনো সংবাদপত্র, সাময়িকী, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন মিডিয়া বা অন্য কোনো মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত হয় এবং কোনো ঘোষণা, যাহা মৌখিকভাবে বা অন্য কোনো উপায়ে উপস্থাপন করিয়া আলো বা শব্দ সঞ্চারিত করা হয়, এবং যে কোনো বাণিজ্যিক পরিপত্র, সন্নিবেশিত ইনসার্ট এবং লেভেলও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২৭) “ব্যক্তি” অর্থ কোনো ব্যক্তি, এবং কোনো কোম্পানি, সমিতি, অংশীদারি কারবার, সংবিধিবদ্ধ বা অন্যবিধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা উহাদের প্রতিনিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২৮) “ভেজাল ঔষধ” বা “ভেজাল কসমেটিকস্” অর্থ ধারা ৩৯ এর উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত ধরনের কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্;

(২৯) “ভ্যাকসিন” অর্থ যে কোনো অ্যান্টিজেনিক উপাদান, যাহা রোগ সৃষ্টিকারী কোনো জীবাণু বা বিকল্প সিনথেটিক এজেন্ট হইতে প্রস্তুত করা হয় এবং যাহা এক বা একাধিক রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে;

(৩০) “মহাপরিচালক” অর্থ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক;

(৩১) “মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ” অর্থ ধারা ২২ এর উপধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ;

(৩২) “মিসব্রান্ডেড ঔষধ (Misbranded Drugs)” বা “মিসব্রান্ডেড কসমেটিকস্ (Misbranded Cosmetics)” অর্থ ধারা ৩৭ এর উপধারা (৩) এ উল্লিখিত ধরনের কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্;

(৩৩) “মেডিক্যাল ডিভাইস” অর্থ-

(ক) যে কোনো ইনস্ট্রুমেন্ট, অ্যাপারেটাস, ইমপ্লিমেন্ট, মেশিন, অ্যাপ্লায়েন্স, ইমপ্ল্যান্ট, ডায়াগনস্টিক রিয়েজেন্ট (in vitro, in vivo and in silico reagent), সফটওয়্যার অথবা সমজাতীয় বা সম্পর্কিত দ্রব্য, যাহা একক বা সমন্বিতভাবে মানুষ অথবা প্রাণির চিকিৎসা সংক্রান্ত নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক কাজে ব্যবহৃত হয়, যথা:̶

(অ) রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ, মনিটরিং অথবা চিকিৎসা বা রোগ উপশমে;

(আ) ইনজুরি সনাক্তকরণ, মনিটরিং, ক্ষতি উপশমকরণ বা ক্ষতিপূরণে;

(ই) এনাটমি বা ফিজিওলজিক্যাল প্রসেস, অনুসন্ধান, প্রতিস্থাপন, পরিবর্তন বা সহায়তাকরণে;

(ঈ) জীবন বা জীবনিশক্তি রক্ষার্থে;

(উ) জন্মনিয়ন্ত্রণ বা ডিভাইস জীবানুনাশক হিসাবে;

(ঊ) মানুষ বা প্রাণির দেহ হইতে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তথ্য প্রদানের জন্য, যাহার কাঙ্খিত কার্যক্রম ফার্মাকোলজিক্যাল, ইমিউনোলজিক্যাল বা মেটাবলিক ক্রিয়ার দ্বারা সংঘটিত হয় না; এবং

(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঘোষিত যে কোনো ডিভাইস ও ডায়াগনস্টিক রিয়েজেন্ট;

(৩৪) “লাইসেন্স” অর্থ ধারা ১৪ বা ৩১ এ উল্লিখিত, ক্ষেত্রমত, ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর লাইসেন্স;

(৩৫) “লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট” অর্থ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঔষধ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের, যাহার লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত লাইসেন্স রহিয়াছে, সহিত ঔষধ উৎপাদনকারী কোনো দেশি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সম্পাদিত চুক্তি;

(৩৬) “লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ” অর্থ মহাপরিচালক।

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

অধিদপ্তর, মহাপরিচালক, জাতীয় নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার, ইত্যাদি

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর

৪।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিদ্যমান ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।

অধিদপ্তরের কার্যালয়

৫।  (১) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত হইবে।

(২) সরকার, প্রয়োজনে, বিভাগ, জেলা, উপজেলা বা অন্য যে কোনো স্থানে অধিদপ্তরের শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

অধিদপ্তরের কার্যাবলি

৬।  অধিদপ্তরের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) ঔষধের উৎপাদনকারী, বিক্রয়কারী, আমদানিকারী ও রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সংক্রান্ত এবং কসমেটিকস্ এর উৎপাদনকারী, আমদানিকারী ও রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সংক্রান্ত;

(খ) ঔষধের নিবন্ধন এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ এবং কসমেটিকস্ এর নিবন্ধন সংক্রান্ত;

(গ) ঔষধের বাজার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ;

(ঘ) কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, মান নিয়ন্ত্রণ, পরিদর্শন, তদারকি এবং আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ;

(ঙ) ফার্মাকোভিজিল্যান্স কার্যক্রম বাস্তবায়ন;

(চ) ঔষধ ও কসমেটিকস্ উৎপাদন ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ;

(ছ) ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুমোদন এবং পর্যবেক্ষণ;

(জ) ঔষধ পরীক্ষাগারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;

(ঝ) ভ্যাকসিনের লট রিলিজ সংক্রান্ত কার্যক্রম;

(ঞ) ঔষধের মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ;

(ট) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত অন্য যে কোনো দায়িত্ব পালন; এবং

(ঠ) উপরি-উক্ত কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।

মহাপরিচালক

৭।  (১) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন মহাপরিচালক থাকিবে।

(২) মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকরির শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।

(৩) মহাপরিচালক অধিদপ্তরের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী হইবেন।

(৪) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে, বা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে মহাপরিচালক তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা মহাপরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি অস্থায়ীভাবে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।

মহাপরিচালকের ক্ষমতা ও কার্যাবলি

৮। (১) মহাপরিচালক এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অধিদপ্তরের সকল প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যাদি পরিচালনা এবং এই আইন এবং বিধি অনুসারে তাহার উপর অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ, দায়িত্ব পালন ও কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন।

(২) উপধারা (১) এর বিধানাবলিকে ক্ষুণ্ন না করিয়া মহাপরিচালক সরকার কর্তৃক, সময়ে সময়ে, অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন।

ক্ষমতা অর্পণ

৯।  মহাপরিচালক এই আইনের অধীন তাহার কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব, প্রয়োজনবোধে, লিখিত আদেশ দ্বারা, তাহার অধস্তন যে কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবেন।

জাতীয় ঔষধ নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার, ঔষধ পরীক্ষাগার, ইত্যাদি

১০।  (১) ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে অধিদপ্তরের অধীন ঢাকায় একটি পরীক্ষাগার থাকিবে, যাহা জাতীয় ঔষধ নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার [National Drug Control Laboratory (NDCL)] নামে অভিহিত হইবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত পরীক্ষাগার ঔষধ সম্পর্কিত পরীক্ষা, বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও গবেষণাসহ সরকার ও অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত ও অর্পিত কার্যাবলি সম্পাদন করিবে।

(৩) উপধারা (১) এ উল্লিখিত পরীক্ষাগার ছাড়াও বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঔষধ পরীক্ষাগার [Drug Testing Laboratory (DTL)] থাকিবে।

(৪) উপধারা (১) এবং (৩) এ উল্লিখিত পরীক্ষাগারসমূহের কার্যাবলি এবং পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও কর্মচারী নিয়োগসহ আনুষঙ্গিক বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

কর্মচারী নিয়োগ

১১।  সরকার, অধিদপ্তরের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, তৎকর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরির শর্তসহ আনুষঙ্গিক বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

ঔষধ ও কসমেটিকস্ নিয়ন্ত্রণ কমিটি ও উপকমিটি গঠন এবং কর্মপরিধি নির্ধারণ, ইত্যাদি

১২।  (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি নামে একটি কমিটিসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কমিটি ও উপ-কমিটি গঠন এবং উহাদের মেয়াদ, কার্যাবলি এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কসমেটিকস্ নিয়ন্ত্রণ কমিটি নামে একটি কমিটিসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কমিটি ও উপ-কমিটি গঠন এবং উহাদের মেয়াদ, কার্যাবলী এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

জাতীয় ঔষধ উপদেষ্টা পরিষদ

১৩।  (১) সরকার, একজন চেয়ারম্যান এবং সময়ে সময়ে যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেইরূপ সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে, একটি জাতীয় ঔষধ উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করিবে।

(২) জাতীয় ঔষধ উপদেষ্টা পরিষদ নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ প্রদান করিবে, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় ঔষধনীতি বাস্তবায়ন;

(খ) দেশীয় ঔষধ শিল্পের উন্নয়ন এবং দেশের চাহিদা পূরণের জন্য ঔষধের উৎপাদন ও সরবরাহ;

(গ) দফা (খ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অ্যালোপ্যাথিক, আয়ুর্বেদিক, ইউনানী, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক এবং হারবাল ও ভেটেরিনারী ঔষধের মধ্য হইতে কতিপয় ঔষধকে ‘অত্যাবশ্যকীয় ঔষধ’ হিসাবে ঘোষণা করিয়া তালিকা প্রকাশ এবং প্রতি দুই বৎসর অন্তর অন্তর উক্ত তালিকা হালনাগাদকরণ;

(ঘ) ঔষধ এবং ঔষধের কাঁচামাল আমদানি;

(ঙ) বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা এবং ঔষধ উৎপাদন, আমদানি, বিতরণ ও বিক্রয়ের সহিত জড়িত ব্যক্তিবর্গের কার্যক্রমের সমন্বয়; এবং

(চ) জরুরী পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক বলিয়া বিবেচিত যে কোনো বিষয়।

(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় ঔষধ উপদেষ্টা পরিষদের গঠন, মেয়াদ ও কার্যাবলি নির্ধারণ করিবে।

তৃতীয় অধ্যায়

ঔষধের লাইসেন্স, ইত্যাদি

ঔষধের উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শনের জন্য লাইসেন্স গ্রহণ

১৪।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে ঔষধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করিতে পারিবেন না:

তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোনো কিছুই, নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, গবেষণা, বিশ্লেষণ অথবা চিকিৎসা বিষয়ক অধ্যয়নের জন্য স্বল্প পরিমাণে ঔষধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না:

আরও শর্ত থাকে যে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, ঔষধ উৎপাদনের জন্য কোনো নূতন প্রকল্প গ্রহণ কিংবা চলমান প্রকল্পের সম্প্রসারণ করা যাইবে না।

(২) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে কোনো ঔষধ বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অথবা ওয়েব বেইজড প্রক্রিয়া ব্যবহার করিতে পারিবেন না।

(৩) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অসৎ উদ্দেশ্যে ঔষধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করিয়া অধিক মুনাফার অভিপ্রায়ে ঔষধ মজুত করিতে পারিবেন না।

(৪) লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা, লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়নের আবেদন, আবেদন মঞ্জুর ও নামঞ্জুর, লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন ফি এবং লাইসেন্সের শর্তসহ এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন ফি এবং, ক্ষেত্রমত, বিলম্ব ফি পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

লাইসেন্সের মেয়াদ ও নবায়ন

১৫।  (১) লাইসেন্সের মেয়াদ হইবে প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর এবং ইহা নবায়নযোগ্য হইবে।

(২) লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন পূর্বে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

লাইসেন্স প্রদান এবং নবায়নের ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুসরণীয় পদ্ধতি

১৬।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, লাইসেন্স প্রদান বা নবায়নের উদ্দেশ্যে, প্রয়োজনে, ঔষধ উৎপাদনকারী ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রিমিসেস পরিদর্শন করিবে এবং, এই আইন ও বিধি মোতাবেক, যে প্রিমিসেস উপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে কেবল সেই প্রিমিসেসের অনুকূলে লাইসেন্স প্রদান বা, ক্ষেত্রমত, প্রদত্ত লাইসেন্স নবায়ন করিবে।

(২) লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়নের আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করিবার ক্ষমতা লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত থাকিবে।

ঔষধের উৎপাদন এবং মান নিয়ন্ত্রণ, বিতরণ, সরবরাহ ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত উত্তমচর্চা

১৭।  (১) ঔষধ উৎপাদনকারী বা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানকে ঔষধের উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, বিতরণ অথবা সরবরাহ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার Good Practices (GxP) গাইডলাইন অনুসরণ করিতে হইবে।

(২) সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ স্বীকৃত অন্যান্য আন্তির্জাতিক সংস্থা কর্তৃক প্রণীত গাইডলাইন অনুসরণপূর্বক ঔষধ উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, বিতরণ অথবা সরবরাহ ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন করিতে পারিবে।

লাইসেন্স বাতিল, সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ, ইত্যাদি

১৮। (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ নিম্নলিখিত যে কোনো কারণে ঔষধের লাইসেন্স বাতিল বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে, যদি লাইসেন্স গ্রহীতা-

(ক) এই আইন বা বিধি বা লাইসেন্সে প্রদত্ত কোনো শর্ত ভঙ্গ বা লঙ্ঘন করিয়া থাকেন;

(খ) গুড ম্যনুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) অনুসরণ করিয়া ঔষধ উৎপাদন করিতে ব্যর্থ হন;

(গ) কোনো অসত্য তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপনপূর্বক লাইসেন্স গ্রহণ করিয়া থাকেন;

(ঘ) ঔষধ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লক্ষ্যে কারখানা বা স্থাপনা প্রতিষ্ঠা বা পরিচালনা ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে লাইসেন্স ব্যবহার করিয়া থাকেন;

(ঙ) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতীত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রিমিসেসের ভৌত অবকাঠামো এমনভাবে পরিবর্তন করেন, যাহা ঔষধের গুণগতমানকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে বা করিতে পারে; বা

(চ) কোনো নির্ধারিত শর্ত প্রতিপালন না করিয়া থাকেন।

(২) উপধারা (১) এর অধীন কোনো লাইসেন্স বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিবার পূর্বে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথ কারণ ও সময়সীমা উল্লেখ করিয়া সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সগ্রহীতাকে লিখিত জবাব, যদি থাকে, উপস্থাপনের নোটিশ প্রদান করিবে।

(৩) উপধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের লিখিত জবাব প্রাপ্তির পর উক্ত জবাব সন্তোষজনক না হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া লাইসেন্স বাতিল বা তৎকর্তৃক যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঔষধ উৎপাদন বন্ধ করিতে পারিবে।

(৪) উপধারা (২) এ উল্লিখিত লিখিত জবাব সন্তোষজনক হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সগ্রহীতাকে তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিবে।

লাইসেন্স সাময়িক স্থগিতকরণ এবং উৎপাদন বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনা বা আপিল

১৯।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধারা ১৮ এর অধীন লাইসেন্স গ্রহীতার লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঔষধের উৎপাদন বন্ধ করা হইলে লাইসেন্সগ্রহীতা, অনূর্ধ্ব ৩০ (ত্রিশ) কর্মদিবসের মধ্যে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে অথবা সরকারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত পুনর্বিবেচনার বা আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(৩) পুনর্বিবেচনা বা আপিল নিষ্পত্তিকালে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্টের অধীন ঔষধের উৎপাদন, ইত্যাদি

২০।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশের কোনো ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পাদিত লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্টের অধীন ঔষধ উৎপাদনকারী কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে, জনস্বার্থ সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপপূর্বক, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঔষধ উৎপাদনের জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ অনুমতি প্রদানের পূর্বে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত হইতে হইবে যে, উক্ত ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের গবেষণালব্ধ কোনো ঔষধ ধারা ৪১ এর উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত কোনো দেশে একই বাণিজ্যিক নামে নিবন্ধিত।

(২) বাংলাদেশের কোনো ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে একই পদ্ধতির ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সহিত লিখিত চুক্তির অধীনে ঔষধ উৎপাদনের জন্য অনুমতি প্রদান করা যাইবে।

(৩) বাংলাদেশে ঔষধ উৎপাদন কারখানা নাই এমন বিদেশি কোম্পানি কেবল রপ্তানির উদ্দেশ্যে সকল স্বীকৃত পদ্ধতির ঔষধ স্ব স্ব পদ্ধতির কোম্পানির সহিত কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং বা লোন লাইসেন্সের আওতায় (Contract Manufacturing or Loan License) উৎপাদন করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত উৎপাদিত ঔষধ কোনোভাবেই স্থানীয় বাজারে বাজারজাত করা যাইবে না।

(৪) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, এই ধারার অধীন অনুমোদন প্রদানের ক্ষেত্রে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ শর্ত আরোপ করিতে পারিবে।

(৫) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জনস্বাস্থ্যের অনিষ্ট সাধন পরিহার করিবার জন্য আবশ্যক বিবেচিত হইলে, তৎকর্তৃক কোনো বিদেশি ঔষধ উৎপাদনকারীকে কোনো ঔষধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রদত্ত অনুমোদন প্রত্যাহার করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় উল্লিখিত-

(ক) “লোন লাইসেন্স” অর্থ লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইস্যুকৃত এমন ধরনের লাইসেন্স, যাহার ঔষধ উৎপাদনের নিজস্ব ব্যবস্থা বা সুবিধা নাই, কিন্তু ঔষধ উৎপাদনের জন্য তিনি অন্য কোনো লাইসেন্সধারীর মালিকানাধীন ঔষধ উৎপাদন ব্যবস্থা বা সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক এবং

(খ) “কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং” অর্থ কেবল রপ্তানির উদ্দেশ্যে স্বীকৃত পদ্ধতির ঔষধ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশে ঔষধ উৎপাদন কারখানা নাই এইরূপ বিদেশি কোম্পানীর সহিত স্ব-স্ব পদ্ধতিতে বাংলাদেশে ঔষধ উৎপাদনকারী কোম্পানীর সম্পাদিত চুক্তি।

বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পাদিত লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট সংশোধন

২১।  (১) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঔষধ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সম্পাদিত কোনো লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্টে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কোনো বিধান থাকিলে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, উক্ত প্রতিষ্ঠানকে অ্যাগ্রিমেন্টের সংশ্লিষ্ট বিধান সংশোধন করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত নির্দেশ প্রতিপালন করিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঔষধ উৎপাদনের জন্য প্রদত্ত লাইসেন্স বাতিল করিতে পারিবে।

চতুর্থ অধ্যায়

ঔষধের নিবন্ধন, মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ, ইত্যাদি

ঔষধের নিবন্ধন ও মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ, ইত্যাদি

২২। (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ ব্যতিরেকে, কোনো ধরনের ঔষধ উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, বিক্রয়, বিতরণ, মজুত বা প্রদর্শন করিতে পারিবেন না।

(২) উপধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিবন্ধনকৃত ঔষধ বিতরণ, বাজারজাত এবং বিক্রয়ের পূর্বে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সুপারিশ ব্যতীত, কোনো প্রকারের ঔষধ নিবন্ধন করিবে না।

(৪) উপধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, আকস্মিক বিপর্যয়, মহামারির প্রকোপ বা দুর্যোগ মোকাবেলায় জনস্বাস্থ্য এবং জাতীয় জরুরী প্রয়োজনে, নির্ধারিত শর্ত আরোপক্রমে, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির প্রাক সুপারিশ ব্যতীত, ঔষধের নিবন্ধন সনদ প্রদান করা যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ নিবন্ধনের পর, অনধিক ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে, উহা ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সুপারিশের জন্য পেশ করিতে হইবে।

(৫) নিবন্ধন প্রাপ্তির যোগ্যতা, নিবন্ধনের ও নিবন্ধন নবায়নের আবেদন, আবেদন মঞ্জুর ও নামঞ্জুর এবং নিবন্ধনের শর্তসহ এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

(৬) উপধারা (৫) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, ঔষধের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে, জনস্বার্থ বিবেচনায় যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেইরূপ শর্ত আরোপ করিতে পারিবে।

(৭) ঔষধের নিবন্ধন এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদের জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুসারে সংশ্লিষ্ট ঔষধের গুণগতমান, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্তোষজনক তথ্য পেশ করিতে হইবে।

(৮) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ঔষধ বিক্রয় বা বিতরণ করিতে পারিবেন না, যদি না উক্ত ঔষধের ব্র্যান্ড বা জাতিগত নাম (Generic Name) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হইয়া থাকে।

(৯) যদি কোনো ব্র্যান্ড নামের ঔষধ একাধিক কোম্পানি কর্তৃক বিক্রয় করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্র্যান্ড নামের মালিকানা যে কোম্পানি প্রথমে নিবন্ধন লাভ করিয়াছে সেই কোম্পানিকে প্রদান করিতে হইবে।

(১০) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোনো ঔষধের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অথবা বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডি সংক্রান্ত তথ্য দাখিল করিতে হইবে।

(১১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোনো ঔষধের নকল প্রতিরোধে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ শনাক্তকরণ পদ্ধতি অনুসরণ করিবে।

(১২) সরকার, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক ঔষধ নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যদি এইরূপ কোনো দেশের ফার্মাকোপিয়া নির্দিষ্ট করিয়া থাকে, যে দেশে হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক ঔষধ প্রস্তুত প্রণালি ও ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বিশেষ মান গৃহীত হইয়াছে, তাহা হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উক্ত মান অনুসরণ করিবে।

(১৩) ইউনানী, আয়ুর্বেদিক এবং হারবাল ঔষধ নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ সরকার কর্তৃক যেরূপ নির্দিষ্ট হইবে সেইরূপ মান অনুসরণ করিবে।

নিবন্ধন এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদের মেয়াদ

২৩। (১) ঔষধের নিবন্ধন ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য বহাল ও কার্যকর থাকিবে।

(২) নিবন্ধন নবায়নযোগ্য হইবে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন পূর্বে, এই আইনের বিধান অনুযায়ী, নিবন্ধন নবায়নের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

(৩) নিবন্ধন নবায়নের আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করিবার ক্ষমতা লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত থাকিবে।

(৪) ঔষধের নিবন্ধন বহাল ও কার্যকর থাকাকালীন সময় পর্যন্ত মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ একইরূপে বহাল ও কার্যকর থাকিবে।

নিবন্ধন ও নিবন্ধন নবায়ন ফি, ইত্যাদি

২৪। (১) ঔষধের নিবন্ধন ও নিবন্ধন নবায়ন ফি এবং, ক্ষেত্রমত, বিলম্ব ফি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ফি পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) অনুসারে নির্ধারিত ফি প্রদান করা না হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কোনো ঔষধের নিবন্ধন বা, ক্ষেত্রমত, নিবন্ধন নবায়ন করিবে না।

নিবন্ধন বাতিল অথবা সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ

২৫।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে, যে কোনো ঔষধের নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ যদি এই মর্মে নিশ্চিত হয় যে, কোনো ঔষধ নিম্নমান, নকল, ভেজাল, মিসব্র্যান্ডেড অথবা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি মানসম্পন্ন নহে, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ঔষধের নিবন্ধন বাতিল, সাময়িকভাবে স্থগিত অথবা উৎপাদন বন্ধ ও বাজারজাত স্থগিত করিতে পারিবে।

(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, যথাযথ কারণ ও সময়সীমা উল্লেখ করিয়া, উপধারা (২) এর অধীন কোনো ঔষধের নিবন্ধন বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিবার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লিখিত জবাব, যদি থাকে, উপস্থাপনের জন্য নোটিশ প্রদান করিবে।

(৪) উপধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের জবাব প্রাপ্তির পর উক্ত জবাব সন্তোষজনক না হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, সংশ্লিষ্ট ঔষধের নিবন্ধন বাতিল অথবা তৎকর্তৃক যেরূপ উপযুক্ত বিবেচিত হইবে সেইরূপ সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ঔষধের নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে।

(৫) উপধারা (৩) এ উল্লিখিত জবাব সন্তোষজনক হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ হইতে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক ঔষধের উৎপাদন বন্ধ ও বাজারজাত স্থগিত সম্পর্কিত আদেশ প্রত্যাহার করিবে।

বাজার হইতে প্রত্যাহার, ধ্বংস, বিক্রয় বন্ধ বা বাজারজাত স্থগিত, ইত্যাদি

২৬।  (১) নিম্নমানের ঔষধ অথবা ঔষধের নিবন্ধন বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিতের ক্ষেত্রে উৎপাদন স্থগিতকৃত ঔষধ বাজার হইতে প্রত্যাহারপূর্বক ধ্বংস করিবার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) নিবন্ধিত ঔষধ ব্যবহারের ফলে মানুষ বা প্রাণিদেহে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বা প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসাবে কোনো মানুষ বা প্রাণি মৃত্যুবরণ করিলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, তাৎক্ষণিকভাবে, পরবর্তী নির্দেশ প্রদান না করা পর্যন্ত, সংশ্লিষ্ট ঔষধের বিক্রয় বন্ধ ও বাজারজাত স্থগিত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) উপধারা (২) এর অধীন আদেশ প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারের পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ প্রতিবেদন বা অন্য কোনো উপায় বা পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত ঔষধ বাজার হইতে প্রত্যাহারপূর্বক ধ্বংস করিবার জন্য আদেশ প্রদান করা হইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান উক্ত ঔষধ ধ্বংস করিয়া লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিবে।

নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ এবং ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত স্থগিতের আদেশের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনা বা আপিল

২৭।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধারা ২৫ এর অধীন কোনো ঔষধের নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত এবং উক্ত ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত স্থগিত করা হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, অনূর্ধ্ব ৩০ (ত্রিশ) কর্মদিবসের মধ্যে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে অথবা সরকারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত পুনর্বিবেচনা বা আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয়ে উহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(৩) পুনর্বিবেচনা বা আপিল নিষ্পত্তিকালে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

ঔষধ নিবন্ধন এবং ঔষধ নিবন্ধন বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিতকরণের ক্ষেত্রে ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি

২৮। (১) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

(ক) নূতন ঔষধ নিবন্ধনের সুপারিশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঔষধের নিরাপত্তা, কার্যকারিতা ও ব্যবহার উপযোগিতা নিরূপণের নিমিত্ত মূল্যায়ন; এবং

(খ) ঔষধের নিবন্ধন বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিতকরণের জন্য সুপারিশ প্রদানের ক্ষেত্রে, নিবন্ধিত বা নিবন্ধনযোগ্য ঔষধ মূল্যায়ন এবং যেসকল ঔষধ উৎপাদন বা আমদানি করা যাইতে পারে, সেই সকল ঔষধের নিরাপত্তা, কার্যকারিতা ও ব্যবহার উপযোগিতা নিরূপণের নিমিত্ত মূল্যায়ন।

(২) উপধারা (১) এর অধীন মূল্যায়নের পর ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির নিকট সংশ্লিষ্ট ঔষধ ব্যবহারের জন্য নিরাপদ, ব্যবহার উপযোগী বা কার্যকর মর্মে প্রতীয়মান হইলে সংশ্লিষ্ট ঔষধ নিবন্ধনের জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ প্রদান করিবে এবং নিরাপদ, ব্যবহার উপযোগী বা কার্যকর নহে মর্মে প্রতীয়মান হইলে, উক্ত ঔষধের নিবন্ধন বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিবার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রদান করিবে।

নিবন্ধনকৃত ঔষধের তালিকা প্রকাশ

২৯।  অধিদপ্তর, উহার ওয়েবসাইটে, নির্ধারিত তথ্যসহ নিবন্ধনকৃত ঔষধের তালিকা প্রকাশ করিবে এবং, সময় সময়, উক্ত তালিকা হালনাগাদ করিবে।

ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামালের মূল্য নির্ধারণ

৩০।  (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপধারা (২) এর অধীন তালিকাভুক্ত এবং আমদানিকৃত ঔষধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) সরকার, উপধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যে সকল ঔষধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হইবে, উহাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করিয়া সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ করিবে।

(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঔষধ উৎপাদনে ব্যবহার্য যে কোনো দেশীয় ঔষধের কাঁচামালের সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(৪) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীন নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে ঔষধ বা ঔষধ তৈরির কাঁচামাল বিক্রয় করিতে পারিবেন না।

পঞ্চম অধ্যায়

কসমেটিকস্, ইত্যাদি

কসমেটিকস্ এর লাইসেন্স

৩১।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত অথবা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি বা রপ্তানি করিতে পারিবেন না।

(২) লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা, লাইসেন্সের ও লাইসেন্স নবায়নের আবেদন, আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর, লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন ফি এবং লাইসেন্সের শর্ত সহ এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অধিদপ্তর, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, আদেশ জারির মাধ্যমে উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধান করিতে পারিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, সরকার, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন ফি এবং, ক্ষেত্রমত, বিলম্ব ফি পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

কসমেটিকস্ নিবন্ধন

৩২।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ ব্যতিরেকে যে কোনো ধরনের কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি বা রপ্তানি করিতে পারিবেন না।

(২) নিবন্ধন প্রাপ্তির যোগ্যতা, নিবন্ধন ও নিবন্ধন নবায়নের আবেদন, আবেদন মঞ্জুর ও নামঞ্জুর, নিবন্ধন ও নিবন্ধন নবায়ন ফি এবং নিবন্ধনের শর্তসহ এতৎসংশিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অধিদপ্তর, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, আদেশ জারীর মাধ্যমে, উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধান করিতে পারিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, সরকার, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিবন্ধন ও নিবন্ধন নবায়ন ফি এবং, ক্ষেত্রমত, বিলম্ব ফি পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

বিদ্যমান কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি ও রপ্তানি, ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান

৩৩।  (১) কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি ও রপ্তানির সহিত সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান কারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই আইনের অধীনে বিধি প্রণীত হইবার অথবা, ক্ষেত্রমত, আদেশ জারি হইবার অনধিক ৬(ছয়) মাসের মধ্যে, ক্ষেত্রমত, লাইসেন্স এবং নিবন্ধনের জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

(২) উপধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, ধারা ৩১ বা ৩২ এর বিধান সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট আবেদন নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

ধারা ৪৮ এর প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

৩৪।  এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নবম অধ্যায়ে পরিদর্শকের ক্ষমতা সম্পর্কিত বিধানাবলি, যতদূর প্রযোজ্য, ধারা ৩১, ৩২ এবং ৩৩ এর বিধান কার্যকর ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঠিক ততটুকু প্রয়োগ ও প্রযোজ্য হইবে।

কসমেটিকস্ এর মান নির্ধারণ, নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োগ, ইত্যাদি

৩৫।  (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কসমেটিকস্ এর মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ, পরীক্ষাগার, অ্যানালিস্ট ও তাহার প্রতিবেদন, বিজ্ঞাপন এবং মিসব্র্যান্ডিং, নকল, ভেজাল ও স্পোরিয়াস চিহ্নিতকরণসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কসমেটিকস্ এর মান নির্ধারণ করিবার ক্ষেত্রে এতদ্বিষয়ক বিদ্যমান বাংলাদেশ মান, এবং EU, USFDA ও ASEAN -সহ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ কর্তৃক নির্ধারিত মান অনুসরণ করিতে পারিবে।

(২) বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) কর্তৃক নিবন্ধিত চিকিৎসক বা উক্ত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি ইঞ্জেকশন দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে মানবদেহে ফিলার (Filler), বোটক্স (Botox), গ্লুটাথিয়ন (Glutathione) বা অনুরূপ কোনো কসমেটিকস্ প্রয়োগ করিতে পারিবেন না।

(৩) সরকার, বিউটি পার্লারে কসমেটিকস্ এর অপপ্রয়োগ ও অপব্যবহার রোধকল্পে, বিধি দ্বারা, বিউটি পার্লার কর্তৃক কসমেটিকস্ এর প্রয়োগ ও ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধান করিতে পারিবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

ঔষধের আদর্শ মান এবং মিসব্র্যান্ডেড, নকল ও ভেজাল ঔষধ বা কসমেটিকস্, ইত্যাদি

ঔষধের আদর্শ মান

৩৬। (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, আদর্শ মানের নহে এইরূপ কোনো নিম্নমানের ঔষধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন বা আমদানি করিতে পারিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি আদর্শ মানের নহে এইরূপ কোনো নিম্নমানের বিক্রীত ঔষধের মানের বিষয়ে, স্বত্বাধিকারী অথবা প্রতিনিধি হিসাবে, ক্রেতাগণকে জ্ঞাতসারে উক্ত ঔষধ সেবন বা ব্যবহারের ফলে কোনো ক্ষতি হইবে না এবং তদ্দ্বারা এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘিত হইবে না মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করিতে পারিবেন না।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে আদর্শ মান অর্থ-

(ক) ইউনানী, আয়ূর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক বা হারবাল ঔষধসহ যে কোনো ঔষধের ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আদর্শ মান; এবং

(খ) অন্যান্য ঔষধের ক্ষেত্রে, অফিসিয়াল কমপেনডিয়ার সর্বশেষ ৫(পাঁচ) টি সংস্করণে বর্ণিত মান অথবা, অফিসিয়াল কমপেনডিয়ায় কোনো ঔষধের সুনির্দিষ্ট মনোগ্রাফ পাওয়া না গেলে, মান স্থিরীকরণের ক্ষেত্রে অফিসিয়াল কমপেনডিয়ায় বর্ণিত সাধারণ নির্দেশিকা বা উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন।

ব্যাখ্যা: এই ধারায় উল্লিখিত “অফিসিয়াল কমপেনডিয়া” অর্থ ব্রিটিশ ফার্মাকোপিয়া ইউনাইটেড স্টেটস ফার্মাকোপিয়া, ইউনাইটেড স্টেটস ন্যাশনাল ফরমুলারি, ইউরোপিয়ান ফার্মাকোপিয়া বা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ফার্মাকোপিয়া।

মিসব্র্যান্ডেড ঔষধ বা মিসব্র্যান্ডেড কসমেটিকস্

৩৭।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মিসব্র্যান্ডেড ঔষধ বা মিসব্র্যান্ডেড কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করিতে পারিবেন না।

(২) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর ব্র্যান্ড নাম সংরক্ষণ করিবে এবং কোনো মিসব্র্যান্ডেড ঔষধ বা মিসব্র্যান্ডেড কসমেটিকস্ এর ব্র্যান্ড নাম অনুমোদন করিবে না।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্ মিসব্র্যান্ডেড বলিয়া গণ্য হইবে, যদি-

(ক) উহা এইরূপে রঙিন, আবরিত, চূর্ণ অথবা পলিশ করা হয়, যাহাতে উহার ক্ষতি অপ্রকাশিত থাকে অথবা উহা এইরূপে তৈরি করা হয় যাহার দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, প্রকৃতপক্ষে উহার যাহা নহে উহাতে তদাপেক্ষা শ্রেয় বা উচ্চতর মান রহিয়াছে;

(খ) উহা নির্ধারিত পদ্ধতিতে লেবেলযুক্ত না হইয়া থাকে;

(গ) উহার লেবেল বা কন্টেইনারে বা সংশ্লিষ্ট অন্য কিছুতে যে কোনো বিবরণ, নকশা বা ডিভাইস এমনভাবে উল্লেখ করে যাহা উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর বিষয়ে মিথ্যা দাবি করে অথবা যাহা মিথ্যা বা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিভ্রান্তিকর; এবং

(ঘ) উহার ব্র্যান্ড নাম কোনো বিদ্যমান ব্র্যান্ড নামের সদৃশ হয় বা অনুরূপ ধ্বনিত হয় বা অনুরূপ প্রতীয়মান হয়, যাহার দ্বারা উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর ব্যবহারকারী প্রতারিত হইবার সম্ভাবনা থাকে।

নকল ঔষধ বা নকল কসমেটিকস্

৩৮।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নকল ঔষধ বা নকল কসমেটিকস্ উৎপাদন করিতে অথবা জ্ঞাতসারে কোনো নকল ঔষধ বা নকল কসমেটিকস্ বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করিতে পারিবেন না।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত ঔষধ বা কসমেটিকস্ নকল Counterfeit or Falsified or Spurious) বলিয়া গণ্য হইবে, যদি-

(ক) অসৎ উদ্দেশ্যে কোনো বহুল প্রচলিত ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর বোতল, স্ট্রিপ, ফয়েল, লেবেল, মনোগ্রাম, লোগো, ইত্যাদির সমন্বয়ে কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্‌কে এমনভাবে অনুকরণ করা হয়, যাহাতে বাহ্যিকভাবে উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ই মূল ঔষধ বা কসমেটিকস্ হিসাবে প্রতিভাত হয়;

(খ) উহা অন্য কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর বিকল্প বা সদৃশ হয়, যাহার দ্বারা জনগণের প্রতারিত হইবার সম্ভাবনা থাকে;

(গ) উহা প্রকৃতপক্ষে যে স্থানে বা দেশে উৎপাদিত হয় নাই সেই স্থান বা দেশের ঔষধ বা কসমেটিকস্ বলিয়া দাবি করে বা ধারণা জন্মায়;

(ঘ) উহা এইরূপ কোনো নামে আমদানি করা হয়, যাহা প্রকৃতপক্ষে অন্য কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর অন্তর্ভুক্ত; বা

(ঙ) উহার লেবেল বা কন্টেইনারে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নাম এমনভাবে প্রকাশ করা হয়, যাহার দ্বারা উক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর উৎপাদনকারী বা প্রস্তুতকারক বলিয়া জনগণের নিকট বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি অস্তিত্ববিহীন ও ভূয়া হয়।

ভেজাল ঔষধ বা ভেজাল কসমেটিকস্

৩৯।  (১) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঔষধ বা কসমেটিকস্ ভেজাল করিতে অথবা কোনো ভেজাল ঔষধ বা ভেজাল কসমেটিকস্ উৎপাদন বিক্রয়, মজুত, বিতরণ বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করিতে পারিবেন না।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্ ভেজাল বলিয়া গণ্য হইবে, যাহা ব্যবহৃত বা বিক্রয় হইবে অথবা বিক্রয় বা ব্যবহৃত হইতে পারে জানিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বা অসাধু উপায়ে অন্যায্য মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে কিংবা নাশকতা বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে উহাতে এমন কোনো বস্তু, উপকরণ বা উপাদান এইরূপে মিশ্রণ করা অথবা উহার অপরিহার্য কোনো বস্তু, উপকরণ বা উপাদান এইরূপে অপসারণ করা হয়, যাহাতে উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর ফলপ্রসূতা হ্রাস পায় বা কার্যকারিতা পরিবর্তিত হয় অথবা অন্য কোনো প্রকারে উহার অনিষ্ট সাধিত হয় যাহা শারীরিক ক্ষতির কারণ বা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

কতিপয় ঔষধ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ

৪০।  কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিম্নবর্ণিত ঔষধ বিক্রয় করিতে পারিবেন না বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুত বা প্রদর্শন করিতে পারিবেন না, যথা:-

(ক) সরকারি ঔষধ;

(খ) মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ও সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঔষধ;

(গ) ফিজিশিয়ান স্যাম্পল জাতীয় ঔষধ; অথবা

(ঘ) Over the Counter ঔষধ ছাড়া রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত এন্টিবায়োটিক বা অন্য কোনো ঔষধ।

সপ্তম অধ্যায়

ঔষধের আমদানি ও রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ

ঔষধ আমদানির উপর বিধি-নিষেধ

৪১।  (১) লাইসেন্স ব্যতীত বা লাইসেন্সে আরোপিত শর্ত বহির্ভূতভাবে কোনো ধরনের ঔষধ আমদানি করা যাইবে না।

(২) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো ধরনের নিবন্ধিত ঔষধ আমদানি করা যাইবে না।

(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, আমদানির উদ্দেশ্যে, মানুষ বা প্রাণির ব্যবহারের জন্য কোনো ধরনের ঔষধের নিবন্ধন বা লাইসেন্স প্রদান করিবে না, যদি না উক্ত ঔষধ একই ব্র্যান্ড নামে ঐ সকল দেশে নিবন্ধিত হইয়া থাকে, যে সকল দেশের তালিকা সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রকাশিত হইয়া থাকে।

(৪) এই ধারার কোনো কিছুই, নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ, গবেষণা বা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিমাণে ঔষধ আমদানির ক্ষেত্রে এবং জাতীয় সংকট মোকাবিলার জন্য যে কোনো ধরনের ঔষধ আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।

(৫) অধিদপ্তর, আমদানিযোগ্য ঔষধ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) যাচাইয়ের নিমিত্ত, প্রয়োজনে, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রিমিসেস পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(৬) উপধারা (৫) এ উল্লিখিত পরিদর্শন সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক, সময় সময়, বিধি বা আদেশ দ্বারা, নির্ধারিত হারে প্রদান করিবে।

ঔষধ উৎপাদনের কাঁচামাল, ঔষধের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল, ইত্যাদি সংগ্রহ ও আমদানি সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ

৪২।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, নিবন্ধনকৃত ঔষধ উৎপাদনের কাঁচামাল বা ঔষধের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল, স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ বা আমদানি করা যাইবে না।

(২) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, ঔষধ উৎপাদনের জন্য কোনো ধরনের অর্ধ প্রস্তুত (Semi Finished) ঔষধ অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় উপাদান বা উপকরণ আমদানি করা যাইবে না।

(৩) অধিদপ্তর, আমদানিযোগ্য ঔষধ উৎপাদনের কাঁচামাল ও ঔষধের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) যাচাইয়ের নিমিত্ত, প্রয়োজনে, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রিমিসেস পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(৪) উপধারা (৩) এ উল্লিখিত পরিদর্শন সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরকার, কর্তৃক, সময় সময়, বিধি বা আদেশ দ্বারা, নির্ধারিত হারে প্রদান করিবে।

লাইসেন্স ব্যতীত ঔষধ রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ

৪৩। (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতীত কোনো প্রকারের ঔষধ রপ্তানি করা যাইবে না।

(২) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, রপ্তানির উদ্দেশ্যে, যে কোনো প্রকারের ঔষধ নিবন্ধন করিতে পারিবে।

(৩) এই ধারায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে, গবেষণা, বিশ্লেষণ বা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিমাণে যে কোনো ধরনের ঔষধ রপ্তানি বা দেশের বাহিরে প্রেরণের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) ও (২) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

অষ্টম অধ্যায়

ঔষধ উৎপাদনে ফার্মাসিস্টসহ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির তত্ত্বাবধান

ঔষধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির উপস্থিতি ও তত্ত্বাবধান, ইত্যাদি

৪৪।  (১) কোনো ব্যক্তি দফা (ক) এবং (খ) তে উল্লিখিত দুইজন প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির সরাসরি তত্ত্বাবধান ব্যতীত অ্যালোপ্যাথিক ঔষধ প্রস্তুত করিতে পারিবেন না, যথা:-

(ক) একজন ফার্মাসিস্ট; এবং

(খ) সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউট হইতে রসায়ন, প্রাণরসায়ন, ফলিত রসায়ন, অণুজীববিদ্যা, ফার্মাকোলজি, ফার্মেসী, মেডিসিন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী একজন ব্যক্তি।

(২) কোনো ব্যক্তি দফা (ক) এবং (খ) তে উল্লিখিত দুইজন প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির সরাসরি তত্ত্বাবধান ব্যতীত ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক এবং হারবাল জাতীয় ঔষধ প্রস্তুত করিতে পরিবেন না, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউট হইতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঔষধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণের কাজে অন্যূন ০১ (এক) বৎসরের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ডিপ্লোমাধারী; এবং

(খ) সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউট হইতে ফার্মেসী, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণরসায়ন, ফলিত রসায়ন বা অণুজীববিদ্যা বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী একজন ব্যক্তি।

ঔষধ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির তত্ত্বাবধান, ইত্যাদি

৪৫।  (১) কোনো ব্যক্তি খুচরা বিক্রেতা হিসাবে ফার্মাসিস্ট, ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অথবা ফার্মেসী টেকনিশিয়ানের ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধান ব্যতীত অ্যালোপ্যাথিক ঔষধ বিক্রয় করিতে পারিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি খুচরা বিক্রেতা হিসাবে রেজিস্টার্ড ইউনানী চিকিৎসক, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অথবা ফার্মেসী টেকনিশিয়ানের তত্ত্ববধান ব্যতীত ইউনানী, আয়ুর্বেদিক বা হারবাল পদ্ধতির ঔষধ বিক্রয় করিতে পারিবেন না।

(৩) কোনো ব্যক্তি রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের ব্যক্তিগত তত্ত্ববধান ব্যতীত হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক পদ্ধতির ঔষধ বিক্রয় করিতে পারিবেন না।

(৪) উপধারা (১), (২) এবং (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পাইকারীভাবে ঔষধ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্ট, ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট, ফার্মেসী টেকনিশিয়ান, রেজিস্টার্ড ইউনানী চিকিৎসক, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক বা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন হইবে না।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় উল্লিখিত-

(ক) “ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট” অর্থ বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের রেজিস্টারে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট; এবং

(খ) “ফামের্সী টেকনিশিয়ান” অর্থ বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের রেজিস্টারে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত ফামের্সী টেকনিশিয়ান।

যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য

৪৬। ঔষধ উৎপাদন ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োজিত, ক্ষেত্রমত, ফার্মাসিস্ট, ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট ও ফার্মেসী টেকনিশিয়ানসহ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির হালনাগাদ তথ্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বরাবরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আবশ্যিকভাবে সরবরাহ করিতে হইবে।

নবম অধ্যায়

পরিদর্শক নিয়োগ, ক্ষমতা, ইত্যাদি

পরিদর্শক

৪৭। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ সংখ্যক নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে পরিদর্শক হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে, কোনো ব্যক্তিকে পরিদর্শক হিসাবে নিয়োগ করা যাইবে না, যদি ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, বিক্রয় বা বিপণনের সহিত তাহার আর্থিক স্বার্থের সংশ্লিষ্টতা থাকে।

(২) প্রত্যেক পরিদর্শক Penal Code (Act XLV of 1860) এর section 21 এ public servant (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে public servant (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবেন।

পরিদর্শকের ক্ষমতা

৪৮। (১) ধারা ৪৭ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রত্যেক পরিদর্শক, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত স্থানীয় অধিক্ষেত্রে এবং, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে উক্ত অধিক্ষেত্র ছাড়াও অন্য এলাকা বা অধিক্ষেত্রে,-

(ক) যে কোনো ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর উৎপাদনের স্থান, উৎপাদনের প্ল্যান্ট এবং উৎপাদন সক্ষমতা, উৎপাদন প্রক্রিয়া, নির্ধারিত মান প্রমিতীকরণ এবং পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত উপকরণ এবং তৎসংশ্লিষ্ট রেকর্ড ও রেজিস্টার পরিদর্শন ও যাচাই করিতে পারিবেন;

(খ) ঔষধ ও কসমেটিকস্ উৎপাদনের জন্য আমদানিকৃত কাঁচামাল ও মোড়ক সামগ্রী এবং আমদানিকৃত ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর সংরক্ষণাগার ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পরিদর্শন করিতে পারিবেন;

(গ) যে কোনো ঔষধ ও কসমেটিকস্ বিক্রয়ের স্থান অথবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুতকরণ, প্রদর্শন বা বিতরণের স্থান ও মজুতকরণের ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ড ও রেজিস্টার পরিদর্শন করিতে পারিবেন;

(ঘ) যে কোনো ঔষধ ও কসমেটিকস্ এর নমুনা, যাহা উৎপাদন, বিক্রয় বা মজুত অথবা বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন বা বিতরণ করা হইতেছে, তাহা সংগ্রহ করিতে পারিবেন;

(ঙ) কোনো ভবন বা স্থানে অথবা স্থল, জল বা আকাশপথের কোনো যানবাহনে এই আইন বা বিধি মোতাবেক কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে, সংঘটিত হইতেছে বা সংঘটনের সম্ভাবনা রহিয়াছে মর্মে প্রতীয়মান হইলে, স্বয়ং বা, প্রয়োজনে, যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট যেরূপ সহায়তা প্রয়োজন মনে করিবেন, সেইরূপ সহায়তা গ্রহণক্রমে সংশ্লিষ্ট ভবন, স্থান বা যানবাহনে যুক্তিসংগত সময়ে প্রবেশ ও তল্লাশি করিতে পারিবেন এবং সংশ্লিষ্ট ঔষধ, কসমেটিকস্ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সামগ্রী জব্দ বা আটক করিতে পারিবেন;

(চ) এই আইন বা বিধির অধীন তল্লাশি বা জব্দকালে এবং এই আইন বা বিধি মোতাবেক সংঘটিত অপরাধের তদন্তকালে নিকটবর্তী এলাকা হইতে যে কোনো ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকিবার জন্য তলব করিতে পারিবেন;

(ছ) এই আইন বা বিধি মোতাবেক সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে বিবৃতি, সহায়তা বা তথ্য প্রদানের জন্য, যুক্তিসংগত সময়ে যে কোনো ব্যক্তিকে উপযুক্ত স্থানে তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইবার জন্য তলব করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে, এই দফার অধীন উপস্থিতির জন্য তলবের ক্ষেত্রে Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এর section 132 এবং 133 এ উল্লিখিত অব্যাহতির বিধান প্রযোজ্য হইবে;

(জ) কোনো কারখানা, পরীক্ষাগার, দোকান, ফার্মেসী, ভবন, মজুতাগার বা গোডাউনে, যে স্থানে এই আইনের অধীন প্রয়োজনীয় লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে ঔষধ ও কসমেটিকস্ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত বা বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন বা বিতরণ করা হইতেছে অথবা যে স্থানে এই আইন বা বিধি মোতাবেক কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে, সংঘটিত হইতেছে বা সংঘটনের সম্ভাবনা রহিয়াছে মর্মে প্রতীয়মান হইলে, সেই স্থান বা স্থানসমূহ তালাবদ্ধ ও সিলগালা করিতে পারিবেন;

(ঝ) কোনো উৎপাদন স্থান হইতে উক্ত স্থানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে, যুক্তিসংগত সময়ের জন্য, অনূর্ধ্ব ৩(তিন) মাস, তাহার ঔষধ, কসমেটিকস্ এবং এতদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সামগ্রী অথবা এই আইন বা বিধির অধীন কোনো অপরাধ সংক্রান্ত সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার হইতে পারে এইরূপ কোনো ঔষধ, কসমেটিকস্ বা জিনিসপত্র অপসারণ করিবার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবেন; এবং

(ঞ) এই আইন বা বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রাসঙ্গিক হইতে পারে এইরূপ সকল বা যে কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) উপধারা (১) এর অধীন পরিদর্শক কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগকালে তাহাকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাধা প্রদান করিতে পারিবেন না।

(৩) এই আইনের অধীন পরিচালিত তল্লাশি, জব্দ এবং আটকের ক্ষেত্রে, ফৌজদারি কার্যবিধির সংশ্লিষ্ট বিধানাবলি, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রযোজ্য হইবে।

ঔষধ ও কসমেটিকস্ উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিক্রয়, বিতরণ, ইত্যাদির স্থান উন্মুক্তকরণ

৪৯। ঔষধ ও কসমেটিকস্ উপাদন, সংরক্ষণ, বিক্রয় ও বিতরণের স্থানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট সময়ের জন্য পরিদর্শক কর্তৃক নির্দেশিত হইলে, উক্ত উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিক্রয় বা বিতরণের স্থান পরিদর্শকের নিকট উন্মুক্ত করিতে বাধ্য থাকিবেন।

পরিদর্শক কর্তৃক অনুসরণীয় পদ্ধতি

৫০।  (১) কোনো পরিদর্শক এই অধ্যায়ের অধীন কোনো ঔষধ, কসমেটিকস্ বা অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করিলে যাহার নিকট হইতে উক্ত ঔষধ, কসমেটিকস্ বা অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হইবে তাহাকে নির্ধারিত ফরম পূরণক্রমে উহার একটি অনুলিপি প্রদান করিবেন।

(২) কোনো পরিদর্শক পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে কোনো ফার্মেসী, দোকান বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নমুনা সংগ্রহ করিলে তিনি সংশ্লিষ্ট ফার্মেসী, দোকান বা প্রতিষ্ঠানের যে ব্যক্তির নিকট হইতে উক্ত নমুনা সংগ্রহ করিবেন সেই ব্যক্তিকে, নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে উক্ত উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করিবেন এবং তাহার উপস্থিতিতে উক্ত নমুনাকে চারটি অংশে বিভক্ত করিয়া উহার প্রতিটি অংশে পরিদর্শক স্বয়ং স্বাক্ষর ও সিলমোহর এবং নমুনা প্রদানকারী ব্যক্তির স্বাক্ষর ও পরিচিতি প্রদান করিবেন

তবে শর্ত থাকে যে, নমুনা সংগ্রহের সময় নমুনা প্রদানকারী ব্যক্তি অনুপস্থিত বা পলাতক থাকিলে অথবা উপস্থিত থাকিয়াও নমুনা ও ফরমে স্বাক্ষর করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে, পরিদর্শক দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে স্বয়ং স্বাক্ষর প্রদানপূর্বক বিষয়টি নিশ্চিত ও সিলমোহরকৃত করিবেন;

আরও শর্ত থাকে যে, নমুনা সংগ্রহের সময় কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা সিলগালা অবস্থায় থাকিলে পরিদর্শক উক্ত প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা এতদসংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণপূর্বক, উন্মুক্ত করিয়া এই উপধারায় বর্ণিত পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করিতে পারিবেন;

আরও শর্ত থাকে যে, পরিদর্শক প্রয়োজনবোধে, এই উপধারায় বর্ণিত পূর্ণাঙ্গ নমুনা উত্তোলনের পূর্বে প্রাথমিক পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বর্ণিত নমুনার কিয়দংশ উত্তোলনপূর্বক অনুমোদিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করিতে পারিবেন।

(৩) কোনো ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নমুনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা ডিপো হইতে সংগ্রহ করা হইলে সংগৃহীত নমুনাকে কেবল তিনটি অংশে বিভক্ত করিবার প্রয়োজন হইবে এবং সেইক্ষেত্রে উপধারা (৫) এর দফা (ক), (খ) এবং (ঘ) এ উল্লিখিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট প্রদান করিবেন।

(৪) কোনো পরিদর্শক পর্যাপ্ত পরিমাণে ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নমুনা সংগ্রহ করিতে ব্যর্থ হইলে এবং সংশ্লিষ্ট ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নমুনা সংগ্রহ করা একান্ত অপরিহার্য হইলে, উপ-ধারা (২) এবং (৩) এ উল্লিখিত বিভাজন ব্যতিরেকে, মহাপরিচালকের অনুমতি গ্রহণ সাপেক্ষে, যে পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভবপর সেই পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করিয়া চিহ্নিত এবং প্রয়োজনবোধে, সিলমোহরযুক্ত করিবেন।

(৫) পরিদর্শক, উপধারা (২) এর অধীন, ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর নমুনা সংগ্রহ ও বিভাজনের পর উহার অংশসমূহ যে উদ্দেশ্যে বা কারণে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট সরবরাহ করিবেন তাহা নিম্নরূপ, যথা-

(ক) প্রথম অংশ: নমুনা প্রদানকারী ব্যক্তির নিকট সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে;

(খ) দ্বিতীয় অংশ: ড্রাগ অ্যানালিস্ট বা ক্ষেত্রমত, অ্যানালিস্টের নিকট পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে;

(গ) তৃতীয় অংশ: উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, বাজারজাতকারী বা নিশ্চয়তা প্রদানকারীর (warrantor), যদি থাকে, নিকট প্রেরণের উদ্দেশ্যে;

(ঘ) চতুর্থ অংশ: বিচারাধীন আদালতে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে।

ব্যাখ্যা: এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘অন্যান্য সামগ্রী’ অর্থে রেজিস্টার, রসিদ বহি, চালান রসিদ এবং বিলসহ উৎপাদনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, যাহা অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত হইতে পারে, অন্তর্ভুক্ত হইবে।

দশম অধ্যায়

ড্রাগ অ্যানালিস্ট, ইত্যাদি

ড্রাগ অ্যানালিস্ট

৫১।  সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ সংখ্যক নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে যে কোনো শ্রেণির ঔষধের পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত স্থান বা অধিক্ষেত্রে ড্রাগ অ্যানালিস্ট হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে।

ড্রাগ অ্যানালিস্টের প্রতিবেদন

৫২।  (১) পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য ধারা ৫০ এর উপধারা (৫) এর দফা (খ) মোতাবেক ড্রাগ অ্যানালিস্টের নিকট ঔষধের নমুনা প্রেরণ করা হইলে তিনি নির্ধারিত ফরমে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের তিনটি অনুলিপি স্বাক্ষরপূবর্ক সংশ্লিষ্ট পরিদর্শকের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(২) উপধারা (১) এ বর্ণিত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর পরিদর্শক উক্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি নমুনা সম্পর্কিত যে কোনো মামলায় ব্যবহারের জন্য যথাস্থানে সংরক্ষণ করিবেন এবং অবশিষ্ট অনুলিপিসমূহ নমুনা প্রদানকারীর এবং উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, বাজারজাতকারী বা নিশ্চয়তা প্রদানকারীর (warrantor), যদি থাকে, নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৩) কোনো ব্যক্তি ড্রাগ অ্যানালিস্ট এর প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রমাণাদিসহ বিচারাধীন আদালতে আবেদন করিলে আদালত প্রয়োজনে উপধারা (২) এর অধীন পরিদর্শকের নিকট সংরক্ষিত নমুনা পুনরায় পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য প্রেরণ করিতে পারিবে এবং ড্রাগ অ্যানালিস্ট উক্ত নমুনা জাতীয় নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার কর্তৃক পুনরায় পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করিয়া আদালতে প্রতিবেদন আকারে পেশ করিবেন।

(৪) উপধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্ত প্রতিবেদন আদালতের নিকট চূড়ান্ত সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত হইবে।

(৫) উপধারা (৩) এর অধীন জাতীয় নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার কর্তৃক পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের খরচ, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক পরিশোধিত হইবে।

(৬) উপধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞাপন হিসাবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করিতে পারিবেন না।

ঔষধ পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের প্রতিবেদন লাভের অধিকার

৫৩।  কোনো ব্যক্তি তৎকর্তৃক ক্রয়কৃত অথবা আমদানিকৃত, রপ্তানিযোগ্য বা উৎপাদিত যে কোনো ঔষধের পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য, নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক, নির্ধারিত ফরমে, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট বা পরিদর্শকের মাধ্যমে আবেদন করিলে উক্ত আবেদনের ভিত্তিতে ড্রাগ অ্যানালিস্ট কর্তৃক স্বাক্ষরিত উক্ত পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের প্রতিবেদন প্রাপ্তির অধিকারী হইবেন।

একাদশ অধ্যায়

অপরাধ, দণ্ড, তদন্ত এবং বিচার

এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিবার দণ্ড

৫৪।  কোনো ব্যক্তি তফসিল এর কলাম (২) এ উল্লিখিত ধারা অনুসারে কলাম (৩) এ বর্ণিত কোনো কার্য সংঘটন করিলে উক্ত কার্য এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি কলাম (৪) এ উল্লিখিত যে কোনো বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বাজেয়াপ্তকরণ

৫৫। কোনো ব্যক্তি এই আইন বা বিধির কোনো বিধান লঙ্ঘনের কারণে উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হইলে, যে ঔষধ বা কসমেটিকস্ এর ক্ষেত্রে এই আইন বা বিধি লঙ্ঘন করা হইয়াছে সেই ঔষধ বা কসমেটিকস্ কারাখানা, ভান্ডার, মেশিনারিজ, মালামাল, সরঞ্জাম বা উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ অথবা উক্ত ঔষধ বা কসমেটিকস্ তৈরির উপাদান ও উপকরণ সংশ্লিষ্ট দ্রব্যাদি আদালত কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করা যাইবে।

অপরাধ পুনঃসংঘটনের দণ্ড

৫৬।  এই আইনে উল্লিখিত কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত ব্যক্তি যদি পুনরায় একই অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে সর্বোচ্চ যে দণ্ড রহিয়াছে তিনি উহার দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

৫৭।  (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার বা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

(২) এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ কোনো কোম্পানি কর্তৃক সংঘটিত হইবার ক্ষেত্রে যদি এইরূপ প্রমাণিত হয় যে উক্ত অপরাধটি উক্ত কোম্পানির কোনো মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার কিংবা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সম্মতি বা যোগসাজশ সহকারে অথবা তাহাদের অবহেলার কারণে সংঘটিত হইয়াছে, তাহা হইলে উক্ত মালিক, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারী দায়ী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তদানুসার তিনি সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান অনুসারে দণ্ডিত হইবেন।

তদন্ত ও তদন্তকারী কর্মকর্তা

৫৮। (১) ধারা ৬১ এর সামগ্রীকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া মহাপরিচালক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী বা স্থানীয় অধিক্ষেত্রে নিয়োজিত পরিদর্শক, নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময় সীমার মধ্যে, তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে তফসিলের কলাম (৩) এ উল্লিখিত যে কোনো অভিযোগের তদন্ত করিতে পারিবেন।

(২) এই আইনের অধীন কোনো অভিযোগের তদন্তকার্য পরিচালনাকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান অনুযায়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ন্যায় ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

(৩) উপধারা (১) এর অধীন তদন্তকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্য যে কোনো সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের নিকট সহায়তা যাচনা করিতে পারিবেন এবং এইরূপ সহায়তা যাচনা করা হইলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং উক্ত সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ যাচিত সহায়তা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবে।

অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা

৫৯।  ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তপশিল এর কলাম (১) এ উল্লিখিত-

(ক) ক্রমিক নং ২, ৩, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২০, ২১, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ এবং ৩৩ এর বিপরীতে কলাম (২) এ উল্লিখিত ধারা অনুসারে কলাম (৩) এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ অআমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হইবে; এবং

(খ) ক্রমিক নং ১, ৪, ৫, ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ১৯ এবং ২৩ এর বিপরীতে কলাম (২) এ উল্লিখিত ধারা অনুসারে কলাম (৩) এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য হইবে।

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ

৬০।  ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মহাপরিচালক বা এতদুদ্দেশ্যে তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার লিখিত প্রতিবেদন ব্যতীত ধারা ৬১ এর উপধারা (২) এ উল্লিখিত কোনো আদালত এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না।

অপরাধের তদন্ত, বিচার, ইত্যাদি

৬১।  (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা আটকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।

(২) ফৌজদারি কার্যবিধিতে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তপশিল এর কলাম (১) এ উল্লিখিত-

(ক) ক্রমিক নং ১, ৪, ৫, ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ১৯ এবং ২৩ এর বিপরীতে কলাম (২) এ উল্লিখিত ধারা অনুসারে কলাম (৩) এ বর্ণিত অপরাধ ঔষধ আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে; এবং

(খ) ক্রমিক নং ২, ৩, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২০, ২১, ২২, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ এবং ৩৩ এর বিপরীতে কলাম (২) এ উল্লিখিত ধারা অনুসারে কলাম (৩) এ বর্ণিত অপরাধ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা, ক্ষেত্রমত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

ঔষধ আদালত

৬২।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক)-তে উল্লিখিত অপরাধসমূহ বিচারের জন্য প্রত্যেক জেলা সদরে ঔষধ আদালত নামে একটি করিয়া আদালত থাকিবে।

(২) উপধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন সরকার, প্রয়োজনে, কোনো জেলায় একাধিক ঔষধ আদালত গঠন ও স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(৩) একজন বিচারক সমন্বয়ে ঔষধ আদালত গঠিত হইবে এবং সরকার, সুপ্রীম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে, জেলা ও দায়রা জজগণের মধ্য হইতে উক্ত আদালতের বিচারক নিযুক্ত করিবে।

(৪) উপধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, প্রয়োজনবোধে, কোনো জেলা ও দায়রা জজকে তাহার দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসাবে ঔষধ আদালতের বিচারক নিযুক্ত করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় “জেলা ও দায়রা জজ” অর্থে “অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ” অন্তর্ভুক্ত হইবে।

মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর প্রয়োগ

৬৩।  আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত হওয়ার সাপেক্ষ, মোবাইল কোর্ট দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

আপিল

৬৪।  (১) ঔষধ আদালত কিংবা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা, ক্ষেত্রমত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ, রায় বা আরোপিত দণ্ড দ্বারা সংক্ষুব্দ ব্যক্তি উক্ত আদেশ, রায় বা আরোপিত দণ্ডের বিরুদ্ধে, সংশ্লিষ্ট আদেশ, রায় বা দণ্ড প্রদানের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে নির্ধারিত আদালতে আপিল করিতে পারিবেন।

(২) মোবাইল কোর্ট কর্তৃক আরোপিত দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৩ অনুসরণ করিতে হইবে।

দ্বাদশ অধ্যায়

ঔষধের ক্লিনিক্যাল ট্র্রায়াল, ফার্মাকোভিজিল্যান্স, ভ্যাকসিনের লট রিলিজ, ইত্যাদি

ঔষধ, ভ্যাকসিন ও মেডিকেল ডিভাইসের প্রি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ফিল্ড ট্রায়াল, পারফরমেন্স ট্রায়াল, বায়ো কম্পাটিবিলিটি ও বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডি

৬৫।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে, ঔষধ, ভ্যাকসিন ও মেডিকেল ডিভাইসের প্রি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ফিল্ড ট্রায়াল বা পারফরমেন্স ট্রায়াল এবং বায়ো কম্পাটিবিলিটি বা বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডির নিমিত্ত কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন পরিচালনা করা যাইবে।

(২) উপধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে প্রোটোকল অনুমোদন গ্রহণ ব্যতিরেকে কন্ট্রাক্ট রিসাচং অর্গানাইজেশন কর্তৃক মানুষ বা কোনো প্রাণির চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ, ভ্যাকসিন এবং মেডিকেল ডিভাইসসহ কোনো ধরনের মেডিকেল প্রোডাক্ট এর উপর প্রি-ক্লিনিক্যাল, ক্লিনিক্যাল, ফিল্ড ট্রায়াল বা পারফরমেন্স ট্রায়াল এবং বায়ো কম্পাটিবিলিটি স্ট্যাডি বা বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডি পরিচালনা করা যাইবে না।

(৩) উপধারা (১) এবং (২) এ উল্লিখিত লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং প্রোটোকল অনুমোদন ব্যতিরেকে কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন কর্তৃক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হইলে লাইসেন্সিং কর্তপক্ষ উক্ত কার্যক্রম বন্ধ করিতে পারিবে এবং নির্ধারিত প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।

(৪) উপধারা (১) উল্লিখিত কার্যাবলি পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত Good Clinical Practice (GCP) গাইডলাইন অথবা বিশ্ব স্বাস্থ্য বা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত নির্দেশাবলি অনুসরণ করিতে হইবে।

(৫) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, সময় সময়, উপধারা (২) এ উল্লিখিত প্রি-ক্লিনিক্যাল, ক্লিনিক্যাল, ফিল্ড ট্রায়াল বা পারফরমেন্স ট্রায়াল এবং বায়ো কম্পাটিবিলিটি স্ট্যাডি বা বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডি পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(৬) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন কর্তৃক, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, Institutional Ethics Committee (IEC), Institutional Review Board (IRB) বা Animal Ethics Committee (AEC) গঠন করিতে হইবে।

(৭) ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলাকালীন অংশগ্রহণকারীদের কোনো ঝুঁকি দেখা দিলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ করিতে পারিবে।

(৮) ইনভেস্টিগেশনাল মেডিক্যাল প্রোডাক্ট আমদানির জন্য এবং ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের নিকট হইতে সংগৃহীত কোনো নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের জন্য বিদেশে প্রেরণের ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

(৯) অধিদপ্তর, বিদেশি ঔষধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে প্রাপ্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সংক্রান্ত তথ্য অথবা অনুমোদিত ডেটা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(১০) অধিদপ্তর, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা অথবা মহামারি রোগের নূতন ঔষধের ক্ষেত্রে, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে ফাস্ট ট্রাক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুমোদন করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় উল্লিখিত “কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন” অর্থ এইরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, যিনি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার সহিত সম্পাদিত চুক্তির অধীনে উহার চাহিদা অনুযায়ী প্রি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ফিল্ড ট্রায়াল বা পারফরমেন্স ট্রায়াল এবং বায়ো কম্পাটিবিলিটি বা বায়ো ইকোইভ্যালেন্স স্ট্যাডি সম্পর্কিত দায়িত্ব গ্রহণ করে বা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

ফার্মাকোভিজিল্যান্স

৬৬।  (১) মানুষ বা প্রাণিদেহে ঔষধের পার্শ্ব বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া মনিটরিং এর জন্য ঔষধ উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, জনস্বাস্থ্য কর্মসূচী সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং স্টেকহোল্ডারকে আবশ্যিকভাবে ফার্মাকোভিজিল্যান্স কার্যক্রম পরিচালনাসহ এতৎসংক্রান্ত প্রতিবেদন ও তথ্য উপাত্ত লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করিতে হইবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যাবলি পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত National Pharmacovigilance Guideline বা Good Vigilance Practice অথবা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত নির্দেশাবলি অনুসরণ করিতে হইবে।

(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, সময় সময়, উপধারা (১) এ উল্লিখিত ফার্মাকোভিজিল্যান্স কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন করিবে।

(৪) ফার্মাকোভিজিল্যান্স কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা না হইলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঔষধ উৎপাদন বা আমদানির লাইসেন্স বা কোনো ঔষধের নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।

ভ্যাকসিনের লট রিলিজ

৬৭।  (১) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে দেশে উৎপাদিত এবং আমদানিকৃত সকল হিউম্যান ভ্যাকসিনের লট রিলিজ সনদ গ্রহণ করিতে হইবে;

তবে শর্ত থাকে যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রি কোয়ালিফাইড এবং জাতিসংঘের কোনো সংস্থার মাধ্যমে সরবরাহকৃত ভ্যাকসিনের উৎপাদনকারী দেশের লট বিমুক্তকরণ সনদের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট লট রিলিজ করা যাইবে।

(২) জনস্বাস্থ্যের জরুরি প্রয়োজনে অথবা দুর্যোগ বা আকস্মিক বিপর্যয়কালীন পরিস্থতির গুরুত্ব, সময়ের স্বল্পতা এবং ব্যবহারের জরুরি আবশ্যকতা বিবেচনা করিয়া, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, লট রিলিজ ব্যতিরেকে, কোনো নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন বাজারজাত বা সরবরাহ করা যাইবে;

তবে শর্ত থাকে যে, পরবর্তীতে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লট রিলিজ সনদ গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) গবেষণা অথবা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিমাণ ভ্যাকসিন আমাদানির ক্ষেত্রে লট রিলিজ সনদের পরিবর্তে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করা যাইবে।

নীতিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়ন, ইত্যাদি

৬৮। সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রশাসনিক আদেশ বা প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নীতিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়ন করিতে এবং সেল বা কমিটি গঠনসহ উহার কার্যপরিধি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

ত্রয়োদশ অধ্যায়

সাধারণ ও বিবিধ

অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীতব্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা

৬৯।  (১) এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ঔষধ ও কসমেটিকস্ সংক্রান্ত যে কোনো বেআইনী কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তপশিল এর কলাম (১) এ উল্লিখিত ক্রমিক নং ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১৪, ১৬, ১৮, ২০,২১, ২২, ২৫, ৩০, ৩১, ৩২ এবং ৩৩ এর বিপরীতে কলাম (২) এ উল্লিখিত কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়া থাকিলে, সমীচীন মনে করিলে, দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের লক্ষ্যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া কেবল জরিমানা আরোপ এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িক বা স্থায়ীভাবে স্থগিতকরণ সম্পর্কিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এর অধীন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জরিমানা আরোপের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনের অধীন সর্বোচ্চ যে অর্থদণ্ড রহিয়াছে উহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে না।

(৩) উপধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আরোপিত কোনো জরিমানার ক্ষেত্রে অনাদায়ে কারাদণ্ড আরোপ করা যাইবে না।

(৪) এই ধারার অধীন আরোপিত জরিমানা দোষী ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) কার্য দিবসের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে।

(৫) উপধারা (৪) এর বিধান অনুযায়ী আরোপিত জরিমানা দোষী ব্যক্তি স্বেচ্ছায় প্রদান না করিলে দণ্ড আরোপকারী কর্তৃপক্ষ ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৩৮৬ এর উপধারা (১) এর দফা (ক) তে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী ক্রোক ও বিক্রয়ের মাধ্যমে জরিমানার অর্থ আদায় করিতে পারিবে এবং আরোপিত জরিমানার ২৫ শতাংশ পরিমাণ অতিরিক্ত অর্থ খরচ বাবদ আদায় করিতে পারিবে।

সর্বসাধারণের চলাচলের পথে ঔষধ বিক্রয়ে বিধি-নিষেধ

৭০। কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের চলাচলের পথ, মহাসড়ক, ফুটপাথ, পার্ক অথবা কোনো গণপরিবহণ বা যে কোনো বাহনে অ্যালোপ্যাথিক, ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক, হারবাল অথবা অন্য কোনো বর্ণনার ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষত্বের কোনো ঔষধ ফেরি করিয়া বিক্রয়, বিনামূলে বিতরণ বা বিতরণের প্রস্তাব করিতে পারিবেন না।

ঔষধ ও কসমেটিকস্ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন এবং দাবি নিয়ন্ত্রণ

৭১।  (১) কোনো ব্যক্তি, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, এইরূপ কোনো বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা প্রচার অথবা বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা প্রচারে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না, যাহাতে ঔষধের ব্যবহার অথবা আরোগ্য বা চিকিৎসা সম্পর্কিত কোনো দাবি থাকে।

(২) কসমেটিকস্ উৎপাদনকারী, আমদানিকারী, বাজারজাতকারী বা বিক্রয়কারী এইরূপ কোনো বিজ্ঞাপন প্রস্তুত, প্রকাশ বা প্রচার করিতে পারিবেন না, যাহাতে কসমেটিকস্ এর ব্যবহার বা ব্যবহারজনিত ফলাফল সম্পর্কিত ভ্রান্ত বা অসত্য দাবি থাকে।

অনিবন্ধিত ঔষধের ব্যবস্থাপত্র নিষিদ্ধ

৭২।  (১) কোনো চিকিৎসক তাহার ব্যবস্থাপত্রে কোনো রোগীকে এই আইনের অধীন নিবন্ধিত নহে এইরূপ কোনো ঔষধ ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবেন না।

(২) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিয়া আমদানি করা হয় এইরূপ নিবন্ধিত ঔষধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে চিকিৎসক তাহার ব্যবস্থাপত্রে পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুসরণ

৭৩।  অধিদপ্তর, প্রয়োজনে, তৎকর্তৃক গৃহীতব্য সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করিতে পারিবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর প্রয়োগ

৭৪।  মাদকদ্রব্য জাতীয় কোনো ঔষধ বা ঔষধের কাঁচামাল আমদানি, রপ্তানি, উৎপাদন, মজুত ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৬৩ নং আইন) প্রযোজ্য হইবে।

সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম

৭৫। এই আইন বা বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কার্যের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য অধিদপ্তর বা অধিদপ্তরের কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলা অথবা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারা দায়ের বা রুজু করা যাইবে না।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৭৬।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কসমেটিকস্ এর উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি, রপ্তানি এবং মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত, এতদ্বিষয়ক বিদ্যমান বিধি-বিধানের অধীনে, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, কসমেটিকস্ এর উৎপাদন, বিতরণ, আমদানি, রপ্তানি এবং মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিদ্যমান ব্যবস্থা কেবল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অব্যাহত থাকিবে।

জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা

৭৭।  অধিদপ্তরের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, এই আইনের বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, গেজেট বিজ্ঞপ্তি দ্বারা উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানকরতঃ অধিদপ্তরের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা ও সহায়তা গ্রহণ

৭৮।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোনো কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে, প্রয়োজনে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট যে কোনো সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ও সহায়তা চাহিয়া অধিদপ্তর কর্তৃক পত্র প্রেরণ করা হইলে সংশ্লিষ্ট বাহিনী, সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদান করিবে।

জব্দ বা আটক সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিতকরণ ও জব্দ বা আটককৃত ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রী সংরক্ষণ

৭৯।  এই আইনের অধীন কোনো ঔষধ, কসমেটিকস্ বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সামগ্রী, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, জব্দ বা আটক করা হইলে, উক্তরূপ জব্দ বা আটককৃত মালামালের তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা লিখিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে তাহার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবিলম্বে অবহিত করিবেন এবং প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি মহাপরিচালকের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং জব্দ বা আটককৃত মালামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করিবেন।

বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ

৮০।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরনকল্পে, কোনো বিষয়ে আইনগত মতামত বা কারিগরী বিশ্লেষণ বা মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে মর্মে অধিদপ্তরের নিকট প্রতীয়মান হইলে, অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী, বিশেষজ্ঞ বা বিশেষ জ্ঞান বা অভিজ্ঞাতাসম্পন্ন এক বা একাধিক ব্যক্তিকে উক্ত বিষয়ের উপর মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাইতে পারিবে অথবা সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত মতামত প্রদানকারী ব্যক্তিকে নির্ধারিত হারে, বা সরকারি আর্থিক বিষয়ক নিয়ম নীতি অনুসারে, যথাযথ পারিশ্রমিক বা সম্মানী প্রদান করা যাইবে।

তপশিল সংশোধনের ক্ষমতা

৮১।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে।

চতুর্দশ অধ্যায়

রহিতকরণ ও হেফাজত ইত্যাদি

রহিতকরণ ও হেফাজত

৮২। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে Drugs Act, 1940 (Act XXIII of 1940) এবং Drugs (Control) Ordinance, 1982 (Ordinance No. VIII of 1982), অতঃপর উক্ত Act বা Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও-

(ক) উক্ত Act বা Ordinance এর অধীন, ক্ষেত্রমত, প্রণীত, জারীকৃত বা প্রদত্ত বিধিমালা প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশনা, ফরম, পরিপত্র, সার্কুলার, অনুমোদন, ইত্যাদি এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন, ক্ষেত্রমত, প্রণীত, জারীকৃত বা প্রদত্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং এই আইনের অধীন রহিত, সংশোধিত বা পুনঃপ্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে;

(খ) এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Act বা Ordinance এর অধীন কোনো কার্য বা কার্যধারা নিষ্পন্নাধীন থাকিলে, উক্ত কার্য বা কার্যধারা উক্ত Act বা Ordinance এর বিধান অনুসারে এইরূপে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন এই আইন প্রবর্তিত হয় নাই।

(৩) উপধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও-

(ক) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত বা ইস্যুকৃত লাইসেন্স, নিবন্ধন বা মার্কেটিং অথরাইজেশন সনদ অথবা কৃত কোনো কাজ, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন প্রদত্ত, ইস্যুকৃত, কৃত গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) অনিষ্পন্ন লাইসেন্স বা নিবন্ধন এর আবেদনসমূহ এই আইন প্রণয়নের পূর্বে যে বিধি বা নিয়ম অনুযায়ী নিষ্পন্ন করা হইত সেইরূপভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে;

(গ) বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিতকৃত লাইসেন্স বা নিবন্ধন অথবা অনুরূপ গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন বাতিল, সাময়িকভাবে স্থগিত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(ঘ) দায়েরকৃত কোনো মামলা বা কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে বা চলমান থাকিবে যেন উক্ত Act বা Ordinance রহিত হয় নাই;

(ঙ) উক্ত Ordinance এর অধীন স্থগিত Drugs Court এই আইনের বিধান সাপেক্ষে ঔষধ আদালত নামে স্থাপিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত Court এ চলমান ও অনিষ্পন্ন মামলাসমূহ এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন স্থাপিত ঔষধ আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য;

(চ) সম্পাদিত কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক, আইনগত দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে;

(ছ) আটক বা জব্দকৃত ঔষধ যে অবস্থায় সংরক্ষিত আছে উহা এমনভাবে সংরক্ষিত থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সংরক্ষণ করা হইয়াছে।

(৪) উক্ত Act এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ যে শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত হইয়াছিলেন, এই আইনের অধীন পরিবর্তিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে চাকরিতে নিয়োজিত থাকিবেন।

(৫) উক্ত Act বা Ordinance এর অধীন সরকার বা অধিদপ্তরের সকল প্রকার ঋণ, দায়, প্রকল্প এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে সরকার বা অধিদপ্তরের ঋণ, দায়, প্রকল্প ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে।

ইংরেজিতে অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ

৮৩। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।

(২) এই আইনের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এই বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs