প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ৩০ নং আইন )

চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষা কার্যক্রমকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু চিকিৎসা শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ও উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রমকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান এবং চিকিৎসা শিক্ষা প্রদানকারীদের মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করিবার লক্ষ্যে কাউন্সিল প্রতিষ্ঠাসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।

 

* এস, আর, ও নং ০২-আইন/২০২৪, তারিখ: ০২ জানুয়ারি, ২০২৪ ইং দ্বারা ১৮ পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ০২ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অ্যাক্রেডিটেশন” অর্থ নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি;

(২) “অ্যাক্রেডিটেশন সনদ” অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত অ্যাক্রেডিটেশন সনদ;

(৩) “কমিটি” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কমিটি;

(৪) “কাউন্সিল” অর্থ এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল;

(৫) “চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান” অর্থ চিকিৎসক, ডেন্টাল সার্জন, নার্স ও চিকিৎসা সহায়তাকারীসহ চিকিৎসা পেশাজীবীদের ডিপ্লোমা, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;

(৬) “চেয়ারম্যান” অর্থ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান;

(৭) “নির্ধারিত মানদণ্ড” অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত মানদণ্ড;

(৮) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৯) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(১০) “রেজিস্ট্রার” অর্থ কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার; এবং

(১১) “সদস্য” অর্থ কাউন্সিলের সদস্য।

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশনের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, কার্যাবলি, সভা, ইত্যাদি

কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা

৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করিবে।

(২) কাউন্সিল একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও চুক্তি সম্পাদন করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

কাউন্সিলের কার্যালয়

৫। (১) কাউন্সিলের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।

(২) কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার আঞ্চলিক বা শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

কাউন্সিলের গঠন

৬। (১) কাউন্সিল নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) একজন চেয়ারম্যান;

(খ) সরকার কর্তৃক মনোনীত চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নের সহিত সম্পৃক্ত অধ্যাপক পদমর্যাদার ২ (দুই) জন চিকিৎসক;

(গ) মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর;

(ঘ) মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;

(ঙ) সরকার কর্তৃক মনোনীত চিকিৎসা শিক্ষায় কৃতিত্বের পরিচয়দানকারী মেডিক্যাল কলেজের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ডেন্টাল কলেজ বা ইনস্টিটিউটের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউটের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এর এক (১) জন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং স্কুলের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ;

(চ) অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ;

(ছ) অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ;

(জ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর;

(ঝ) সভাপতি, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস;

(ঞ) সভাপতি, বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল;

(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ডিনগণের মধ্য হইতে ১ (এক) জন ডিন;

(ঠ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন কর্মকর্তা;

(ড) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিচালক পদমর্যাদার ১ (এক) জন কর্মকর্তা;

(ঢ) পরিচালক, চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর;

(ণ) সরকার কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার; এবং

(ত) সরকার কর্তৃক মনোনীত ‘অল্টারনেটিভ মেডিসিন’ বিষয়ে অভিজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক; এবং

(থ) রেজিস্ট্রার, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) ধারা ৬ এর উপধারা (১) এর দফা (ক), (ঙ), (ত) এবং (থ) তে উল্লিখিত মনোনীত সদস্যগণ পূর্ণকালীন এবং অবশিষ্ট সদস্যগণ খণ্ডকালীন সদস্য হইবেন।

চেয়ারম্যান

৭।  (১) কাউন্সিলের, সরকার কর্তৃক মনোনীত, একজন চেয়ারম্যান থাকিবে, যিনি অধ্যাপক পদমর্যাদার ১ (এক) জন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক হইবেন।

(২) চেয়ারম্যানের নিয়োগের শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে এবং তিনি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করিবেন ও কাউন্সিলের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

(৩) চেয়ারম্যান তাহার নিয়োগের তারিখ হইতে পরবর্তী ৪ (চার) বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

(৪) চেয়ারম্যান সরকার বরাবর স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং সরকার কর্তৃক উক্ত পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তিনি উক্ত পদে বহাল থাকিবেন।

(৫) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্যপদে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণকালীন সদস্যগণের মধ্য হইতে জ্যেষ্ঠতম সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

সদস্য পদের মেয়াদ ও পদত্যাগ

৮। (১) ধারা ৬ এর উপধারা (১) এর দফা (খ), (ঙ), (ট), (ণ) এবং (ত) এ উল্লিখিত কাউন্সিলের মনোনীত সদস্যগণের পদের মেয়াদ হইবে তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী ৪ (চার) বৎসর।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত যে কোনো মনোনীত সদস্য কাউন্সিলের মাধ্যমে সরকার বরাবর স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং সরকার কর্তৃক উহা গৃহীত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পদটি শূন্য হইবে।

(৩) চেয়ারম্যান এবং উপধারা (১) এ উল্লিখিত মনোনীত সদস্যগণ পর পর ২ (দুই) মেয়াদের অধিক সংশ্লিষ্ট পদে বহাল থাকিতে পারিবেন না।

(৪) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো মনোনীত সদস্যের পদ কোনো কারণে শূন্য হইলে উক্ত পদের নির্ধারিত মেয়াদের অবশিষ্ট সময়ের জন্য সরকার নূতন কোনো ব্যক্তিকে সদস্য হিসাবে মনোনয়ন প্রদান করিতে পারিবে।

চেয়ারম্যান ও সদস্যপদে অযোগ্যতা ও অপসারণ

৯। (১) কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা মনোনীত সদস্য হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;

(খ) সরকারি চাকুরি হইতে চাকুরিচ্যুত হন;

(গ) নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;

(ঘ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন;

(ঙ) কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন; এবং

(চ) কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণখেলাপি হিসাবে ঘোষিত হন।

(২) সরকার, যে কোনো সময়, আদেশ দ্বারা, চেয়ারম্যান বা যে কোনো সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে।

কাউন্সিলের সভা

১০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কাউন্সিল উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) চেয়ারম্যান কাউন্সিলের সভা আহ্বান করিবেন এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি ৪ (চার) মাসে কাউন্সিলের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) কাউন্সিলের সভার কোরামের জন্য অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে।

(৪) কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সম্মতি প্রয়োজন হইবে।

(৫) কাউন্সিল সভায় চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভার সভাপতির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি

১১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) দেশি ও বিদেশি চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে এই আইনের অধীন অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান ও নবায়ন এবং সনদ প্রত্যাখ্যান, স্থগিতকরণ ও বাতিলকরণ;

(খ) চিকিৎসা শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদানে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী শর্ত নির্ধারণ এবং উক্ত শর্তের মানোন্নয়ন;

(গ) বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের মানদন্ড পর্যালোচনা এবং উক্ত কার্যক্রম উন্নত করিবার লক্ষ্যে শিক্ষামূলক উদ্যোগ গ্রহণ, অধ্যায়ন এবং গবেষণা পরিচালনা;

(ঘ) অ্যাক্রেডিটেশনের মানদণ্ড নির্ধারণ, অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য আবেদনকারী চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্‌মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রণয়ন, পরামর্শ আহ্বান, প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পরিদর্শনসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ;

(ঙ) চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন হ্যান্ডবুক, গাইডলাইন, ফ্রেমওয়ার্ক ও ক্ষেত্র নির্ণয় এবং উহাদের উন্নয়ন;

(চ) চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদানে প্রাক্‌জরিপ সম্পাদন;

(ছ) চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও উপাত্ত সংবলিত নিবন্ধন বহি প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(জ) চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদানের মানদণ্ড নির্ধারণে ‘সেন্টার অব রেফারেন্স’ হিসাবে কার্য সম্পাদন;

(ঝ) অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রমে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দক্ষতা নিশ্চিতকরণ;

(ঞ) অ্যাক্রেডিটেশনের ক্ষেত্রে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রদান ও গ্রহণ;

(ট) অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি, অ্যাক্রেডিটেশন কর্মকান্ডের উন্নয়ন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন, গবেষণা কার্যক্রমের মানোন্নয়ন এবং অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক তথ্যাদির বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ;

(ঠ) সরকারের অনুমোদনক্রমে কাউন্সিলের জনবল নিয়োগ এবং কর্মচারীদের দায়িত্ব, ক্ষমতা, পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানি, সুবিধা, আচরণবিধি ও শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থাসহ চাকুরির শর্ত নির্ধারণ;

(ড) সরকারের নিকট অ্যাক্রেডিটেশন প্রতিবেদন পেশ, প্রয়োজনে পরামর্শ গ্রহণ ও প্রদান এবং সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্য সম্পাদন;

(ঢ) অ্যাক্রেডিটেশন সংক্রান্ত প্রতিবেদন, রিটার্ন, বিবৃতি, প্রাতিষ্ঠানিক নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন সম্পর্কিত তথ্য গ্রহণ ও পরিবীক্ষণ;

(ণ) প্রাতিষ্ঠানিক নিরীক্ষা পরিচালনা; এবং

(ত) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্য সম্পাদন।

(২) কাউন্সিল উহার সামগ্রিক কর্মকান্ডের জন্য সরকারের নিকট দায়ী থাকিবে।

উপদেষ্টা পরিষদ, ইত্যাদি

১২। (১) কাউন্সিলকে সাধারণ দিকনির্দেশনা প্রদান ও কাউন্সিলের কার্যাবলি তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্যে নিম্নরূপ সদস্যগণের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন; তবে একই সংগে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী উক্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকিলে মন্ত্রী সভাপতি এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অপর দুইজন বা একজন সহ-সভাপতি হইবেন;

(খ) সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ;

(গ) চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন;

(ঘ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল;

(ঙ) ভাইস-চ্যান্সেলর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়;

(চ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল; এবং

(ছ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল, যিনি উহার সদস্য- সচিবও হইবেন।

(২) উপদেষ্টা পরিষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(৩) উপদেষ্টা পরিষদের সভা উহার সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি বৎসর উপদেষ্টা পরিষদের অন্যূন ১ (এক) টি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) উপদেষ্টা পরিষদের সকল সভায় উহার সভাপতি সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি এবং সহ-সভাপতির অনুপস্থিতিতে সভাপতি কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপদেষ্টা পরিষদের কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

কমিটি

১৩। (১) অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য আবেদনকারী চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের কোর্সসমূহের অ্যাক্রেডিটেশনের আবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অনুসন্ধান, পরিদর্শন ও প্রতিবেদন প্রস্তুতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্য সম্পন্নের লক্ষ্যে কাউন্সিল উহার সদস্যগণের সমন্বয়ে টেকনিক্যাল কমিটি ও অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি গঠন করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কাউন্সিল, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, উহার সদস্য বা, ক্ষেত্রমত, কর্মচারীগণের সমন্বয়ে, প্রয়োজনে, অন্যান্য কমিটি গঠন করিতে পারিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, কাউন্সিল, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে যে কোনো কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত (Co-opt) করিতে পারিবে।

(২) কমিটির সদস্য সংখ্যা এবং উক্ত সদস্যদের যোগ্যতা, নিয়োগ, কার্যপদ্ধতি ও দায়িত্ব প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

ফ্রেমওয়ার্ক

১৪। কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রবিধান দ্বারা, চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করিতে পারিবে।

মানদন্ড নির্ধারণ

১৫। কাউন্সিল, প্রবিধান দ্বারা, অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদানের মানদন্ড নির্ধারণ করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, সরকারের অনুমোদনক্রমে, কাউন্সিল মানদন্ড নির্ধারণ করিতে পারিবে।

তৃতীয় অধ্যায়

অ্যাক্রেডিটেশন সনদ, ইত্যাদি

অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান

১৬। (১) কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য প্রথমে নিজস্ব জরিপ সম্পন্ন করিতে হইবে এবং পরবর্তীকালে কাউন্সিল কর্তৃক প্রাক্‌জরিপ ও আনুষ্ঠানিক জরিপ সম্পন্ন করত উহার প্রতিবেদন কাউন্সিলের নিকট দাখিল করিতে হইবে।

(২) অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে, কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

(৩) চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অ্যাক্রেডিটেশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিল-

(ক) নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক জরিপ প্রতিবেদন পর্যালোচনাসহ চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম ও আনুষঙ্গিক তথ্যাবলি, প্রয়োজনে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান করিবে;

(খ) অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য প্রয়োজনে অধিকতর তথ্য যাচনা করিতে পারিবে;

(গ) তথ্যের অসংগতি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, শিক্ষা কার্যক্রমের মান অনুত্তীর্ণসহ অন্যান্য অযোগ্যতা প্রতীয়মান হইলে আবেদন বাতিল করিতে পারিবে;

(ঘ) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত শর্তাবলি পূরণ করিবার জন্য আবেদনকারীকে সুযোগ প্রদান করা সমীচীন মনে হইলে উক্ত শর্তাবলি পূরণ ও মানোন্নয়নের জন্য আবেদনকারীকে উহার আলোকে প্রয়োজনীয় সময় প্রদান করিবে; এবং

(ঙ) অ্যাক্রেডিটেশনের শর্তাবলি পূরণ ও মানোন্নয়ন সাপেক্ষে চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সক্ষমতা অনুযায়ী অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করিবে।

(৪) অ্যাক্রেডিটেশনের আবেদন ফরম, আবেদন পদ্ধতি, আবেদন যাচাই-বাছাই, অ্যাক্রেডিটেশনের শর্ত, সনদ প্রদান, সনদ নবায়ন ও নবায়নের মেয়াদ, সনদ প্রত্যাহার, সনদ স্থগিত বা বাতিল, সনদ বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও পুনর্বিবেচনা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

অ্যাক্রেডিটেশন সনদের মেয়াদ ও নবায়ন

১৭। (১) অ্যাক্রেডিটেশন সনদের মেয়াদ হইবে ৫(পাঁচ) বৎসর।

(২) অ্যাক্রেডিটেশন সনদের মেয়াদ শেষ হইবার অন্যূন ৬ (ছয়) মাস পূর্বে সংশ্লিষ্ট সনদ নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফিসহ নির্ধারিত ফরমে কাউন্সিলের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

অ্যাক্রেডিটেশন ফি ও নবায়ন ফি

১৮। কাউন্সিল, সরকারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অ্যাক্রেডিটেশন ফি এবং নবায়ন ফি নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

অ্যাক্রেডিটেশন সনদ সংরক্ষণ ও প্রদর্শন

১৯। অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উক্ত সনদ সংরক্ষণ এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সংস্থাকে প্রদর্শন করিতে হইবে।

তথ্য সংগ্রহ

২০। কাউন্সিল, প্রয়োজনে, অ্যাক্রেডিটেশনের জন্য আবেদনকারী চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করিতে পারিবে।

নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানা

২১। (১) অ্যাক্রেডিটেশন সনদ গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উহাকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত বলিয়া বিজ্ঞাপন দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে প্রচার করিতে পারিবেনা এবং উক্ত বিষয়ে কোনো তথ্য নির্দেশিকা বা পুস্তিকা প্রকাশ করিতে পারিবে না।

(২) কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ স্থগিত, বাতিল বা প্রত্যাহার করা হইলে উক্ত প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত সনদ সমর্পণ করিতে বাধ্য থাকিবে।

(৩) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে উক্ত ব্যক্তির নিকট কোনোরূপ ভুল তথ্য উপস্থাপন বা কোনো তথ্য গোপন করা যাইবে না।

(৪) এই ধারার কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ স্থগিত, প্রত্যাহার বা বাতিল এবং উহার অতিরিক্ত হিসাবে কাউন্সিল, তৎকর্তৃক নির্ধারিত হারে, প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।

অ্যাক্রেডিটেশন সনদ বাতিল প্রক্রিয়া

২২। অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই আইন বা ইহার অধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধানে উল্লিখিত শর্ত বা নির্ধারিত মানদণ্ড লঙ্ঘন করিলে বা প্রতিপালন করিতেছেনা মর্মে কাউন্সিলের নিকট প্রতীয়মান হইলে, যথাযথ অনুসন্ধান সাপেক্ষে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদানপূর্বক, কাউন্সিল উক্ত প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ বাতিল করিতে পারিবে।

প্রশাসনিক আদেশ পুনর্বিবেচনা ও আপিলের আবেদন

২৩। (১) কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আদেশ প্রদত্ত হইলে উক্ত প্রতিষ্ঠান, প্রয়োজন মনে করিলে, আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, কাউন্সিলের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবে এবং কাউন্সিল উক্ত আবেদন ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বিবেচনান্তে উহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(২) কোনো চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ হইলে উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উপধারা (৩) এর অধীন গঠিত আপিল বোর্ডের নিকট আপিল করিতে পারিবে এবং আপিল বোর্ড ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করিবে এবং বিবেচ্য ক্ষেত্রে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) উপধারা (২) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নরূপ সদস্যগণের সমন্বয়ে আপিল বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:-

ক) সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

খ) সরকার কর্তৃক মনোনীত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ (এক) জন অবসরপ্রাপ্ত উপাচার্য; এবং

গ) সরকার কর্তৃক মনোনীত চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবায় নিয়োজিত অধ্যাপক পদমর্যাদার ১ (এক) জন চিকিৎসক।

(৪) আপিল বোর্ডের সদস্যদের মেয়াদ, আপিল নিষ্পত্তি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

তথ্যের গোপনীয়তা

২৪। কাউন্সিলের কোনো সদস্য বা কর্মচারী বা কমিটি কর্তৃক এই আইনের অধীনে প্রদত্ত কোনো বিবরণ বা সরবরাহকৃত তথ্য বা সাক্ষ্যপ্রমাণ বা পরিদর্শন রিপোর্ট গোপনীয় বলিয়া গণ্য হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের অধীনে কোনো মামলার কারণে কোনো তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান বাধা হইবে না।

চতুর্থ অধ্যায়

জনবল নিয়োগ, ইত্যাদি

রেজিস্ট্রার নিয়োগ

২৫। (১) কাউন্সিলের ১ (এক) জন রেজিস্ট্রার থাকিবে।

(২) রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য হইলে কিংবা অসুস্থতাজনিত বা অন্য কোনো কারণে তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা রেজিস্ট্রার পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, কাউন্সিলের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে সর্বোচ্চ পদমর্যাদাধারী কর্মচারী রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) রেজিস্ট্রার কাউন্সিলের সার্বক্ষণিক কর্মচারী হইবেন এবং তিনি-

(ক) কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন;

(খ) কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন;

(গ) কাউন্সিলের প্রশাসন পরিচালনা করিবেন; এবং

(ঘ) চেয়ারম্যানের নিদের্শনা অনুযায়ী কাউন্সিলের সামগ্রিক মানদণ্ড পরিচালনা ও সম্পাদন করিবেন।

কর্মচারী নিয়োগ

২৬। (১) কাউন্সিল, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কর্মচারীগণের চাকুরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

পঞ্চম অধ্যায়

চুক্তি, তহবিল, হিসাবরক্ষণ ইত্যাদি

চুক্তি

২৭। কাউন্সিল উহার কার্যাবলি সম্পাদনের প্রয়োজনে চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো দেশি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা এবং বিদেশি সরকার কিংবা বিদেশি বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

তহবিল

২৮। (১) কাউন্সিলের একটি তহবিল থাকিবে।

(২) নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ তহবিলে জমা হইবে, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(খ) কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত সেবা হইতে প্রাপ্ত আয়;

(গ) কাউন্সিল কর্তৃক ধার্যকৃত ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;

(ঘ) তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং

(ঙ) কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়।

(৩) তহবিলের অর্থ, কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে, কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং চেয়ারম্যান ও রেজিস্ট্রারের যৌথ স্বাক্ষরে তহবিলের হিসাব পরিচালিত হইবে।

ব্যাখ্যা:- উপধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “তপশিলি ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President’s Order 127 of 1972) এর Article 2 (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank।

(৪) তহবিলের অর্থ বা উহার অংশবিশেষ কাউন্সিল, প্রয়োজন অনুযায়ী, সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বৈধ খাতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে।

(৫) তহবিল হইতে কাউন্সিলের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে, তবে কাউন্সিলের পরবর্তী সভায় সকল ব্যয়ের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

বার্ষিক বাজেট বিবরণী

২৯। (১) কাউন্সিল পরবর্তী অর্থ-বৎসরের জন্য ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সরকারের নিকট বার্ষিক বাজেট পেশ করিবে এবং উহাতে পরবর্তী অর্থ-বৎসরের জন্য সরকারের নিকট হইতে কাউন্সিলের কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ করিবে।

(২) বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে।

হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা

৩০। (১) কাউন্সিল উহার আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া অভিহিত, প্রত্যেক বৎসর কাউন্সিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং বিদ্যমান আইনের বিধান মোতাবেক নিরীক্ষা রিপোর্ট দাখিল করিবেন।

(৩) উপধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President's Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b)-তে সংজ্ঞায়িত Chartered Accountant দ্বারা কাউন্সিলের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কাউন্সিল এক বা একাধিক Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে।

(৪) উপধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত Chartered Accountant এতদুদ্দেশ্যে কাউন্সিল কর্তক নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক প্রাপ্য হইবেন।

(৫) উপধারা (২) ও (৩) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা, ক্ষেত্রমত, Chartered Accountant কাউন্সিলের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, কোনো সদস্য এবং কাউন্সিলের কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

বার্ষিক প্রতিবেদন

৩১। (১) প্রত্যেক অর্থ-বৎসর শেষ হইবার পরবর্তী ১ (এক) মাসের মধ্যে কাউন্সিল পূর্ববর্তী অর্থ-বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে এবং প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

(২) সরকার, প্রয়োজনে, কাউন্সিলের নিকট হইতে যে কোনো সময়ে উহার যে কোনো কার্যের প্রতিবেদন বা বিবরণী যাচনা করিতে পারিবে এবং কাউন্সিল উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে বাধ্য থাকিবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

বিবিধ

ক্ষমতা অর্পণ

৩২। (১) কাউন্সিল বিশেষ বা সাধারণ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত শর্তাধীনে চেয়ারম্যান, কোনো সদস্য বা কাউন্সিলের কোনো কর্মচারীকে উহার যে কোনো ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।

(২) চেয়ারম্যান, প্রয়োজনবোধে এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, উপধারা (১) এর অধীন তাহার উপর অর্পিত ক্ষমতা ব্যতীত, এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত যে কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব, লিখিত আদেশ দ্বারা, কাউন্সিলের কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবেন।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৩৩। সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

৩৪। কাউন্সিল, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৩৫। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।

(২) এই আইনের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs