প্রিন্ট ভিউ
সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, ক্রয় প্রক্রিয়া টেকসই ও সহজিকরণ এবং ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সমআচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি অথরিটি প্রতিষ্ঠা এবং এতদ্সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, ক্রয় প্রক্রিয়া টেকসই ও সহজিকরণ এবং ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সমআচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি অথরিটি প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১| (১) এই আইন বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে|
(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। (১) বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) “অথরিটি” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ);
(খ) “ক্রয়কারী” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ধারা ২ এর দফা (৮) এ সংজ্ঞায়িত ক্রয়কারী (procuring entity);
(গ) “পরিচালনা পর্ষদ” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত এর পরিচালনা পর্ষদ;
(ঘ) “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন);
(ঙ) “প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা” অর্থ অথরিটি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা;
(চ) “প্রবিধান” অর্থ ধারা ১৯ এর অধীন প্রণীত কোনো প্রবিধান;
(ছ) “বিধি” অর্থ ধারা ১৮ এর অধীন প্রণীত কোনো বিধি;
(জ) “রিভিউ প্যানেল” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৫৮ এর অধীন গঠিত রিভিউ প্যানেল;
(ঝ) “সদস্য” অর্থ পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য;
(ঞ) “সরকারি ক্রয়” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন এর ধারা ২ এর দফা (৩২) এ সংজ্ঞায়িত সরকারি ক্রয়; এবং
(ট) “সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এবং উহাদের অধীন প্রণীত বিধি-বিধান, জারীকৃত প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশাবলি, গাইডলাইন, আদর্শ দরপত্র দলিল, নীতিমালা এবং অন্য কোনো আইনগত দলিল।
(২) এই আইনে ব্যবহৃত যে সকল শব্দ বা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা প্রদান করা হয় নাই সেই সকল শব্দ বা অভিব্যক্তি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন) এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এ যেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে প্রযোজ্য হইবে।
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) নামে একটি অথরিটি প্রতিষ্ঠিত হইবে।
(২) অথরিটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
৫। অথরিটি এর কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
৬। অথরিটি এর সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং অথরিটি যেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে পরিচালনা পর্ষদ সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করিতে পারিবে।
৭। (১) অথরিটি এর একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে, যাহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;
(খ) প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় যিনি উহার সিনিয়র সহ-সভাপতিও হইবেন;
(গ) সচিব, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, যিনি উহার সহ-সভাপতিও হইবেন;
(ঘ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(ঙ) পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(চ) মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব সমপদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(ছ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(জ) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) কর্তৃক মনোনীত ১ (এক) জন প্রতিনিধি;
(ঝ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ১ (এক) জন প্রতিনিধি; এবং
(ঞ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, পরিচালনা পর্ষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
(২) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির সহিত পরামর্শক্রমে, পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করিবেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পরিচালনা পর্ষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও তাহার অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৪) পরিচালনা পর্ষদের বৎসরে অন্যূন ৪ (চার) টি সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
(৫) সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পরিচালনা পর্ষদের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
(৬) কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে স্বার্থ রহিয়াছে এইরূপ বিষয়ে তিনি ভোট প্রদান করিতে পারিবেন না।
(৭) পরিচালনা পর্ষদের কোনো কার্য অথবা কার্যধারা কেবল পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য পদের শূন্যতা অথবা পরিচালনা পর্ষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
৯। অথরিটি এর দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(১) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও আইনি কাঠামো প্রণয়ন;
(২) অথরিটি এর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক নীতি প্রণয়ন;
(৩) অথরিটি এর উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন;
(৪) অথরিটি এর সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান;
(৫) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইনের প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ, পরিবীক্ষণ, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান;
(৬) পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এবং Bangladesh e-Government Procurement (e-GP) Guidelines এর প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব আনয়ন;
(৭) e-GP System পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং e-GP সংক্রান্ত তথ্য, উপাত্ত ও তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণ ও ব্যবহার;
(৮) আদর্শ দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলের নমুনা প্রস্তুতকরণ, অনুমোদন ও বিতরণ;
(৯) ক্রয় সংক্রান্ত আইন ও দলিলের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গাইডলাইন ও নির্দেশনাবলি প্রদান;
(১০) ক্রয় প্রক্রিয়া টেকসই ও সহজিকরণের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;
(১১) এই আইন অথবা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন এর অধীন প্রদত্ত নিবন্ধন, সনদ ও দরপত্রসহ অন্যান্য দলিল সরবরাহ এবং অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য ফি, সেবা মূল্য অথবা বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ ও আদায়;
(১২) কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, ক্রয়কারী, দরপত্রদাতা, আবেদনকারী অথবা কোনো অভিযোগকারীর অনুরোধক্রমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান;
(১৩) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সহায়তা প্রদানকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন;
(১৪) সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কার্যক্রমের বিষয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত ও সরকারকে প্রদান (যাহা উক্ত প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সুপারিশ সম্বলিত থাকিবে);
(১৫) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য ও দলিল সংবলিত ওয়েবসাইট প্রস্তুত, উন্নয়ন, সংরক্ষণ
ও পরিচালন;
(১৬) সরকারি ক্রয়, ব্যবহার অনুপযোগী সরকারি সম্পত্তি নিষ্পত্তি ও e-GP System সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সামর্থ্য উন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ;
(১৭) নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকারি ক্রয় ও e-GP System সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পেশাদারিত্ব সৃষ্টি, পেশাদারিত্বের মানদণ্ড নির্ধারণ, দক্ষতা যাচাইকরণ, পরীক্ষা গ্রহণ, পেশাগত সনদ প্রদান ও প্রয়োজনে প্রত্যাহার; চলমান ভিত্তিতে উক্ত মানদণ্ড নিয়ন্ত্রণ ও সনদ নবায়ন এবং উক্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনে অন্যান্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রদান;
(১৮) সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ হইতে অযোগ্য ব্যক্তির তালিকা প্রস্তুত ও হালনাগাদকরণ, সংরক্ষণ, প্রকাশ ও সর্বসাধারণের নিকট সহজ প্রাপ্তির ব্যবস্থা;
(১৯) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্লেষণ, গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা;
(২০) ক্রয় সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশেষজ্ঞ ও বিরোধ নিষ্পত্তিকারীর তালিকা প্রস্তুত এবং সংরক্ষণ;
(২১) রিভিউ প্যানেলকে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তা প্রদান;
(২২) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন ও নিয়মাবলি প্রতিপালন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি;
(২৩) নিজস্ব জনবল এবং অন্যান্যদের সরকারি ক্রয় এবং e-GP পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়ে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রদান, আয়োজন ও সমন্বয়;
(২৪) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন প্রতিপালন বা নিশ্চিতকরণকল্পে, প্রয়োজনে এবং সুনির্দিষ্ট কারণের ভিত্তিতে, নোটিশ প্রদান করিয়া, যে সকল ক্রয়কারীর ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন প্রযোজ্য, উহাদের নিকট হইতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য, দলিল ও নথিপত্র পরিদর্শন ও পর্যালোচনাকরণ এবং আবশ্যক হইলে উহা সংশোধন করিবার পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান; এবং
(২৫) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত অন্যান্য কার্য সম্পাদন।
ব্যাখ্যা।- দফা (১৮) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “অযোগ্য ব্যক্তি” অর্থ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন এর ধারা ৬৪ এর উপধারা (৫) ও (৬) এর অধীন কোনো ক্রয়কারী কর্তৃক সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষিত কোনো ব্যক্তি।
১০। (১) অথরিটি এর একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকিবে।
(২) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তির মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরির শর্তাবলি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(৩) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথরিটি এর সার্বক্ষণিক কর্মচারী হইবেন এবং এই আইনের দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব সম্পাদন করিবেন।
(৪) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচালনা পর্ষদের নিকট অথরিটি এর সার্বিক কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী থাকিবেন।
(৫) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্যপদে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করিবেন।
১১। (১) অথরিটি, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) কর্মচারীদের চাকুরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১২। পরিচালনা পর্ষদ, প্রয়োজনে, উহার কার্যাবলি দক্ষতার সহিত সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সময় সময়, এক অথবা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং প্রয়োজনে, উক্ত যে কোনো কমিটিতে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ব্যতীত অথরিটি এর কর্মচারী বা বিষয় সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ, পেশাদার ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকেও অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।
১৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) তহবিল নামে একটি তহবিল থাকিবে।
(২) তহবিলে নিম্নরূপ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:̶
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ;
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো বিদেশি সরকার অথবা দেশি বা বিদেশি কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা বা অনুদান;
(ঘ) বিভিন্ন উৎস ও প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত ফি, সার্ভিস চার্জ এবং দরপত্র দলিল বিক্রয়মূল্যসহ বিপিপিএ এর নিজস্ব আয়;
(ঙ) অথরিটি এর সম্পদ বিক্রয় বা ভাড়া হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(চ) ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হইতে প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফা; এবং
(ছ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(৩) অথরিটি তহবিলের অর্থ, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে, সরকার অনুমোদিত কোনো তফসিলি ব্যাংকে জমা বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে এবং উক্ত তহবিল প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালনা করিতে হইবে।
ব্যাখ্যা।- “তফসিলি ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত কোনো Scheduled Bank।
(৪) এই আইনের অধীন সম্পাদিত সকল কার্যসংক্রান্ত ব্যয়সহ অন্যান্য সকল দায়, রিভিউ প্যানেলের সদস্যদের সম্মানি এবং প্রধান নির্বাহী ও কর্মচারীর বেতন, ভাতা ও আনুষঙ্গিক সকল ব্যয় তহবিল হইতে নির্বাহ করিতে হইবে।
১৪। অথরিটি প্রতি অর্থ বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট উপস্থাপন করিবে যাহাতে উক্ত অর্থ বৎসরের প্রাক্কলিত আয় ও ব্যয়ের হিসাব প্রদর্শিত হইবে।
১৫। (১) অথরিটি প্রতি অর্থ বৎসরে উহার আয়-ব্যয়ের যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) প্রত্যেক অর্থ বৎসরে বাংলাদেশ মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া উল্লিখিত, প্রত্যেক বৎসর অথরিটি এর হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান আইনের বিধান মোতাবেক নিরীক্ষা রিপোর্ট দাখিল করিবেন।
(৩) Comptroller and Auditor-General (Additional Functions) Act, 1974 (Act No. XXIV of 1974) এর বিধান ক্ষুণ্ন না করিয়া, Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত Chartered Accountant দ্বারা অথরিটি এর হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে অথরিটি এক বা একাধিক Chartered Accountant নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৪) উপধারা (২) ও (৩) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে, মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, Chartered Accountant অথরিটির সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, বার্ষিক ব্যালান্স শিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা অথরিটির অন্য যে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসা করিতে পারিবেন।
১৬। অথরিটি প্রতি অর্থ বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন উক্ত অর্থ বৎসর সমাপ্তির ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করিবে।
১৭। অথরিটি ইহার কার্যাবলি সম্পাদনের লক্ষ্যে যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো বিদেশি সরকার বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার, আবশ্যক বিবেচনায়, সাধারণ অথবা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অথরিটি, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
২০। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।
২১। এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইনসহ অন্য কোনো আইন, বিধি, প্রবিধান, চুক্তি বা আইনগত মর্যাদাসম্পন্ন দলিলে উল্লিখিত “সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট” বা “সিপিটিইউ” অভিব্যক্তি “বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি” বা “বিপিপিএ” হিসাবে পঠিত ও ব্যাখ্যাত (read and construed) হইবে।
২২। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন) এর ধারা ৬৭ বিলুপ্ত হইবে।
(২) পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২৪ নং আইন) এর ধারা ৬৭ এর বিলুপ্তকরণ সত্ত্বেও উক্ত বিধানের অধীন কৃত কার্যক্রম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত বলিয়া গণ্য হইবে।
২৩। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ০৭/১২/১২০৮ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ২১/০৩/২০০২ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের স্মারক নং সম/সওব্য/টিম-২(২)/৩ব-৬/৯২/১৪ এর অধীন গঠিত সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ), অতঃপর বিলুপ্ত সিপিটিইউ বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে।
(২) বিলুপ্ত সিপিটিইউ এর স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি অথরিটি এর নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে।
(৩) বিলুপ্ত সিপিটিইউ কর্তৃক কৃত কোনো কার্যক্রম বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত, প্রণীত নীতিমালা, ইস্যুকৃত কোনো আদেশ, প্রজ্ঞাপন ও বিজ্ঞপ্তি, প্রদত্ত কোনো অনুমোদনপত্র বা নোটিশ, সম্পাদিত হস্তান্তর দলিল বা চুক্তিপত্র বা চলমান কোনো কার্যক্রম এই আইনের অধীন কৃত গৃহীত, প্রণীত, ইস্যুকৃত, প্রদত্ত, সম্পাদিত বা চলমান বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) বিলুপ্ত সিপিটিইউ এ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মরত সকল কর্মচারীর চাকুরি, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে, তাহারা যে শর্তে চাকুরিতে নিয়োজিত রহিয়াছিলেন, সেই একই শর্তে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে নিয়োজিত থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, অথরিটির সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদিত হইবার পূর্ব পর্যন্ত, অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থায় উক্ত কর্মচারীগণকে অথরিটিতে সমপদমর্যাদার পদে প্রেষণে বদলি বা পদায়ন করা যাইবে।
(৫) বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সাংগঠনিক কাঠামোর সহিত উপধারা (৪) এ উল্লিখিত কোনো কর্মচারীর পদমর্যাদা সঙ্গতিপূর্ণ না হইলে, উহা সরকারের উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০২০ এর অধীন উদ্বৃত্ত ও আত্তীকরণ প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
২৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে একটি অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।