প্রিন্ট ভিউ
কপিরাইট আইন, ২০০০ রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতনভাবে প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু কপিরাইট আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ২৮ নং আইন) রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতনভাবে প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
১। (১) এই আইন কপিরাইট আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
(১) “অজ্ঞাতনামা বা ছদ্মনামীয় কর্মের স্বত্বাধিকারী” অর্থ একক বা যৌথভাবে রচিত ও ছদ্মনামে প্রকাশিত কোনো কর্মের ক্ষেত্রে প্রণেতার পরিচয় উদ্ঘাটিত হইবার পূর্ব পর্যন্ত প্রকাশক কর্তৃক জনসাধারণ্যে প্রকাশিত প্রণেতা অথবা তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি;
(২) “অনুলিপি” অর্থ বর্ণ, চিত্র, শব্দ বা অন্য কোনো মাধ্যম ব্যবহার করিয়া লিখিত, শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং, চলচ্চিত্র, গ্রাফিক্স চিত্র বা অন্য কোনো বস্তুগত প্রকৃতি বা ডিজিটাল সংকেত আকারে কোনো কর্মের পুনরুৎপাদন (স্থির বা চলমান), দ্বিমাত্রিক, ত্রিমাত্রিক বা পরাবাস্তব নির্বিশেষে;
(৩) “অনুলিপিকারী যন্ত্র বা কৌশল” অর্থ কোনো যন্ত্র বা যান্ত্রিক বা ডিজিটাল কৌশল বা অন্য কোনো পদ্ধতি যাহা কোনো কর্মের যে কোনো ধরনের অনুলিপি তৈরি বা পুনরুৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয় বা হইতে পারে;
(৪) “অভিযোজন” অর্থ-
(ক) নাট্য কর্মের ক্ষেত্রে, কমিটিকে নাট্যকর্ম ব্যতীত অন্য কোনো কর্মে রূপান্তর;
(খ) সাহিত্য বা শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে, অভিনয় বা অন্য কোনো উপায়ে জনসমক্ষে রূপান্তর;
(গ) সাহিত্য বা নাট্যকর্মের ক্ষেত্রে, উহার এইরূপ সংক্ষেপকরণ বা অনুবাদপূর্বক সমুদয় বা আংশিক কোনো পুস্তক, সংবাদপত্র, পত্রিকা, ম্যাগাজিন বা সাময়িকীতে চিত্রাকারে প্রকাশ যাহাতে উহার বিষয়বস্তু ও ভাব অক্ষুন্ন থাকে;
(ঘ) সংগীত কর্মের ক্ষেত্রে, উহার যেকোনো বিন্যাস বা প্রতিলিপিকরণ (transcription); এবং
(ঙ) অন্য কোনো কর্মের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট কর্মের পুনর্বিন্যাস বা পরিবর্তনক্রমে ব্যবহার;
(৫) “আলোক চিত্রানুলিপি” অর্থ কোনো কর্মের ফটোকপি বা অনুরূপ অন্য মাধ্যমে কৃত অনুলিপি;
(৬) “একচেটিয়া লাইসেন্স” অর্থ এইরূপ লাইসেন্স যাহা দ্বারা কেবল লাইসেন্স প্রাপক বা লাইসেন্স প্রাপক হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অনুকূলে কপিরাইট স্বত্ব অর্পিত হয়;
(৭) “কপিরাইট” অর্থ কোনো কর্ম বা কর্মের গুরুত্বপূর্ণ অংশের বিষয়ে নিম্নবর্ণিত কোনো কিছু করা বা করিবার ক্ষমতা অর্পণ করা, এবং কোনো সম্পৃক্ত অধিকারও (related rights) ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা :-
(ক) সাহিত্য, নাট্য বা সংগীত, লোকসংস্কৃতি কর্মের ক্ষেত্রে,-
(অ) হস্তলিখিত বা হস্তনির্মিত, ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল বা অন্য যে কোনো উপায়ে শ্রবণযোগ্য, দৃষ্টিগ্রাহ্য বা অনুধাবনযোগ্য কর্মের অনুলিপি পুনরুৎপাদন ও বস্তুগত সংরক্ষণসহ যেকোনো কার্য;
(আ) সার্কুলেশনে রহিয়াছে এইরূপ কর্মের অনুলিপি ব্যতিরেকে, কর্মটির অনুলিপি জনগণের জন্য প্রকাশ করা;
(ই) জনসমক্ষে কর্মটি সম্পাদন করা এবং কর্মটির শ্রবণযোগ্য বা দৃষ্টিগ্রাহ্য বা অনুধাবনযোগ্য অনুলিপি যে কোনো পদ্ধতিতে জনগণ বা ভোক্তার নিকট পৌঁছানো বা প্রচার করা;
(ঈ) কর্মটির কোনো অনুবাদ উৎপাদন, পুনরুৎপাদন, সম্পাদন বা প্রকাশ করা;
(উ) কর্মটির বিষয়ে কোনো চলচ্চিত্র বা শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং করা;
(ঊ) কর্মটি সম্প্রচার করা বা কর্মটির সম্প্রচারকৃত বিষয় মাইক বা অনুরূপ কোনো যন্ত্রের সাহায্যে জনসাধারণকে অবহিত করা;
(ঋ) কর্মটি অভিযোজন করা; এবং
(এ) কর্মটির অনুবাদ বা অভিযোজন বিষয়ে অনুচ্ছেদ (অ) হইতে (ঋ)-তে উল্লিখিত কোনো কাজ করা;
(খ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের ক্ষেত্রে,-
(অ) উপদফা (ক) এ উল্লিখিত যে কোনো কার্য করা;
(আ) ইতঃপূর্বে একইরূপ অনুলিপি বিক্রয় করা বা ভাড়া প্রদান করা হউক বা না হউক, তথ্য প্রযুক্তি-ডিজিটাল কর্মের অনুলিপি বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করা অথবা বিক্রয় করা, সেবা প্রদান করা, লাইসেন্স প্রদান বা ভাড়া প্রদান করিবার প্রস্তাব করা;
(গ) শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে,-
(অ) কোনো একমাত্রিক কর্মকে অন্য মাত্রিক (দ্বিমাত্রিক, ত্রিমাত্রিক, চতুর্থ মাত্রিক, ইত্যাদি) কর্মে রূপান্তরসহ যে কোনো আঙ্গিকে কর্মটি পুনরুৎপাদন করা;
(আ) কর্মটি জনগণের মধ্যে প্রচার করা;
(ই) সার্কুলেশনে রহিয়াছে এইরূপ অনুলিপি ব্যতিরেকে, কর্মটির অনুলিপি জনগণের জন্য ইস্যু করা;
(ঈ) কর্মটিকে কোনো চলচ্চিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা;
(উ) কর্মটির অভিযোজন করা;
(ঊ) কর্মটির অভিযোজন বিষয়ে অনুচ্ছেদ (অ) হইতে (ঈ)-তে উল্লিখিত কোনো কিছু করা; এবং
(ঋ) কর্মটি সম্প্রচার করা বা কর্মটির সম্প্রচারকৃত বিষয় মাইক বা অনুরূপ কোনো যন্ত্র বা তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনসাধারণকে অবহিত করা;
(ঘ) চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে,-
(অ) কর্মটির অংশবিশেষের প্রতিবিম্বের ফটোগ্রাফসহ ভিসিপি, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি, ডিজিটাল বা অন্য কোনোভাবে বা মাধ্যমে উহার অনুলিপি তৈরি করা;
(আ) ইতঃপূর্বে একইরূপ অনুলিপি বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করা হউক বা না হউক ভিসিপি, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বা অন্য কোনোভাবে চলচ্চিত্রের অনুলিপি বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করা অথবা বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করিবার প্রস্তাব করা বা অনুরূপ কার্যাদির জন্য লাইসেন্স প্রদান করা কিংবা বিক্রয় বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উহার অনুলিপি সংরক্ষণ, বহন, বাজারজাতকরণ বা জনসমক্ষে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা; এবং
(ই) চলচ্চিত্রের ভিসিপি, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি, ভিটিআর, কেবল, স্যাটেলাইট চ্যানেল, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ডিজিটাল বা অন্য কোনো উপায়ে উহার শ্রবণযোগ্য বা দৃষ্টিগ্রাহ্য বা অনুধাবনযোগ্য অনুলিপি জনগণের মধ্যে প্রচার ও প্রদর্শন করা;
(ঙ) শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে,-
(অ) অভিন্ন রেকর্ডিং এর প্রতিলিপি করিয়া কোনো শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং, এবং ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনো উপায়ে শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিংও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(আ) ইতঃপূর্বে একইরূপ অনুলিপি বিক্রয়, লাইসেন্স বা ভাড়া প্রদান করা হউক বা না হউক, শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর কোনো অনুলিপি বিক্রয়, লাইসেন্স বা ভাড়া প্রদান করা বা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করা; এবং
(ই) যে কোনো মাধ্যমে রেকর্ডিংকৃত শব্দ-ধ্বনি জনগণের মধ্যে প্রচার করা;
(৮) “কপিরাইট লঙ্ঘনমূলক অনুলিপি” অর্থ কোনো কর্মের কপিরাইট বা সম্পৃক্ত অধিকারের বৈধ মালিক ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক-
(ক) সাহিত্য, নাট্য বা অন্য কোনো শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে, অন্য কোনোভাবে সমগ্র কর্ম বা উহার অংশবিশেষের পুনরুৎপাদন;
(খ) সংগীত, চলচ্চিত্র বা ফটোগ্রাফের ক্ষেত্রে, উক্ত কর্মটির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক যন্ত্র, ডিজিটাল পদ্ধতি বা অন্য যেকোনো যন্ত্র বা পন্থা বা পদ্ধতি ব্যবহারপূর্বক উহার পুনরুৎপাদন বা প্রণয়ন, যাহা প্রদর্শিত হউক বা না হউক অথবা প্রদর্শনের পর মুছিয়া ফেলা হউক বা না হউক;
(গ) শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে, যেকোনো মাধ্যমে হুবহু শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিংকারী অন্য যেকোনো রেকর্ড;
(ঘ) সম্পৃক্ত অধিকারের কোনো কর্মের ক্ষেত্রে, উহার পূর্ণ বা আংশিক চলচ্চিত্র বা শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং বা তৈরি করা বা আমদানি করা বা অননুমোদিতভাবে প্রচার করা;
(ঙ) তথ্য প্রযুক্তি-ডিজিটাল কর্মের ক্ষেত্রে, উহার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষের পুনরুৎপাদন বা ব্যবহার; এবং
(চ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো অনুলিপি;
(৯) “কপিরাইট সমিতি” অর্থ ধারা ৩৮ এর উপধারা (৩) এর অধীন নিবন্ধিত কোনো কপিরাইট সমিতি;
(১০) “তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম” অর্থ কোনো সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাইবার উদ্দেশ্যে তথ্য ও উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ করিয়া এইরূপ যন্ত্র, যেমন-কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা কোনো ডিজিটাল যন্ত্র, ইত্যাদিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সৃষ্ট ও ব্যবহৃত সৃজনশীল কার্য, যাহাতে উহার অন্তর্ভুক্ত তথ্য-উপাত্ত, সোর্স কোড, সারণি, চার্ট, গ্রাফ, শব্দ-ধ্বনি, চিত্র, চলমান চিত্র, নকশা, টেক্সট, নির্দেশনা, সংকেত এবং এই ধরনের কর্ম ব্যবহার করিবার নির্দেশিকা;
(১১) “কর্ম” অর্থ নিম্নবর্ণিত একক বা যৌথ কোনো কর্ম, যথা:̶
(ক) সাহিত্য, নাট্য, সংগীত ও শিল্পকর্ম;
(খ) চলচ্চিত্র;
(গ) শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং;
(ঘ) সম্প্রচার;
(ঙ) সম্পাদন;
(চ) স্থাপত্য নকশা বা মডেল;
(ছ) ডাটাবেজ;
(জ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম; এবং
(ঝ) লোকজ্ঞান বা লোকসাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি;
(১২) “খোদাই” অর্থ ফটোগ্রাফ ব্যতীত ধাতব বস্ত, কাঁচ, পাথর বা কাঠের উপর বা অভ্যন্তরে খোদাইকর্ম, ছাপ এবং অনুরূপ অন্যান্য কর্ম;
(১৩) “চলচ্চিত্র” অর্থ যে কোনো মাধ্যমে দৃষ্টিগ্রাহ্য প্রতিচ্ছবিসমূহের ধারাক্রম যাহা হইতে চলমান চিত্র তৈরি করা যায় এবং যাহা শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং সহযোগে বা ব্যতীত দৃশ্যমান কর্ম তৈরি করে; এবং ভিডিও ছবিসহ ক্যাসেট, ভিডিও, সি.ডি., এল.ডি., ইন্টারনেট, ক্যাবল নেটওয়ার্ক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অথবা ভবিষ্যতে চলচ্চিত্রের অনুরূপ কোনো মাধ্যমে তৈরি করা যায় এইরূপ কর্মও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৪) “জাতীয় গ্রন্থাগার” অর্থ সরকার কর্তৃক স্থাপিত বা স্বীকৃত জাতীয় গ্রন্থাগার;
(১৫) “জনসাধারণের সহিত যোগাযোগ” অর্থ যে কোনো কর্মের অনুলিপি সরবরাহ না করিয়া উক্ত কর্ম জনসাধারণের দেখা, শোনা বা অন্যভাবে তার ও বেতারের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ উপভোগের সুযোগ করা বা যে কোনো প্রকারের প্রদর্শনী বা প্রচারণার মাধ্যমে অনুরূপ সুযোগ সৃষ্টি করা জনসাধারণের মধ্যে কেহ অনুরূপভাবে কর্মটি প্রকৃতই উপভোগ করুক বা নাই করুক;
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কৃত্রিম উপগ্রহ (satellite), তার (cable) অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো স্থান, স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান, গৃহ বা বাসস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, ক্লাব, কমিউনিটি সেন্টার, যানবাহন, সেলুন, শপিংমল, বিনোদন কেন্দ্র, হাসপাতাল, আবাসিক হোটেল অথবা হোটেলের একাধিক কক্ষের সহিত একই সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট, ক্যাবল নেটওয়ার্ক, সেল ফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা অনুরূপ কোনো মাধ্যমে প্রকাশও জনসাধারণের সহিত যোগাযোগ অর্থে অন্তর্ভুক্ত বুঝাইবে;
(১৬) “ডাটাবেজ” অর্থ ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনো পদ্ধতিগতভাবে বিন্যস্ত স্বকীয় কর্মের সংগ্রহ যাহাতে উক্ত কর্মে প্রণেতার নিজস্ব মেধার প্রকাশ বিদ্যমান থাকে এবং ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ব্যবহারের সুযোগ থাকে;
(১৭) “নাট্যকর্ম” অর্থ বিনোদনের উদ্দেশ্য থাকুক বা নাই থাকুক চলচ্চিত্র ব্যতীত কোনো সাহিত্য কর্মের সবাক বা নির্বাক একক বা সমবেত অভিনয়, আবৃত্তির সরাসরি বা কোনো প্রচার মাধ্যমে প্রদর্শনী, কোরিওগ্রাফযোগে দৃশ্য বিন্যাস;
(১৮) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(১৯) “পাণ্ডুলিপি” অর্থ হস্তলিখিত, যান্ত্রিক বা ডিজিটাল বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত কর্ম প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত উহার মূল দলিল, উহার পরিকল্পনা, নকশা, ডিজাইন, লে-আউট, টোকা ও সংকেত;
(২০) “পাবলিক ডোমেইন” অর্থ যে কপিরাইট বা সম্পৃক্ত অধিকারের স্বত্বের নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে;
(২১) “পুনঃসম্প্রচার” অর্থ কোনো সম্প্রচার সংস্থা দ্বারা বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের কোনো সম্প্রচার সংস্থার অনুষ্ঠান যুগপৎ বা পরবর্তী সম্প্রচার এবং যাহাতে ডিজিটাল, তার বা তারবিহীন মাধ্যমে এইরূপ অনুষ্ঠান বিতরণও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২২) “পুস্তক” অর্থে যে কোনো ভাষায় মুদ্রিত বা প্রস্তরে অঙ্কিত বা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম, এবং আলাদাভাবে মুদ্রিত বা প্রস্তরে অঙ্কিত সংগীতের প্রত্যেক শিট, মানচিত্র, চার্ট বা নকশা ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, কিন্তু কোনো সংবাদপত্র ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(২৩) “প্রণেতা” অর্থ-
(ক) সাহিত্য, চলচ্চিত্র বা নাট্যকর্মের পান্ডুলিপির ক্ষেত্রে, কর্মটির লেখক বা রচয়িতা;
(খ) সংগীত কর্মের ক্ষেত্রে, উহার রচয়িতা ও সুরকার;
(গ) ফটোগ্রাফ ব্যতীত অন্য কোনো চিত্রকর্মের ক্ষেত্রে উহার সৃজনকারী;
(ঘ) ফটোগ্রাফের ক্ষেত্রে উহার চিত্রগ্রাহক;
(ঙ) চলচ্চিত্র, নাটক অথবা শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে উহার প্রযোজক;
(চ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের মাধ্যমে সৃষ্ট সাহিত্য, নাটক, সংগীত বা শিল্পসুলভ সৃজনশীল কর্মের ক্ষেত্রে কর্মটির প্রণয়নকারী ব্যক্তি;
(ছ) লেকচার বা বক্তৃতার ক্ষেত্রে বক্তা; এবং
(জ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের ক্ষেত্রে ইহার প্রণয়নকারী ব্যক্তি;
(২৪) “প্রযোজক” অর্থ চলচ্চিত্র বা নাটক নির্মাণ অথবা অন্য কোনো কর্মের ক্ষেত্রে যিনি কর্মটির বিষয়ে উদ্যোগ, বিনিয়োগ, ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদির মাধ্যমে উহার স্বত্বের অধিকার অর্জনপূর্বক উপভোগের সুযোগ সৃষ্টি করেন;
(২৫) “প্লেট” অর্থ যে কোনো মুদ্রণফলক বা অন্যরকম প্লেট, ব্লক, ছাঁচে তৈরি পুডিং, ছাঁচ, এক মাধ্যম হইতে অন্য মাধ্যমে স্থানান্তর, নেগেটিভ, পজেটিভ, টেপ, তার, অপটিক্যাল ফিল্ম বা ডিজিটাল ফরম্যাট বা অন্যরকম কৌশল যাহা কোনো কর্মের মুদ্রণ বা পুনর্মুদ্রণের জন্য ব্যবহৃত হয় অথবা ব্যবহারের অভিপ্রায় করা হয় এবং যে কোনো ছাঁচ বা অন্যরকম যন্ত্রপাতি যাহা দ্বারা শিল্পকর্মটির শ্রুতিবোধ সম্পর্কিত উপস্থাপনের জন্য শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং করা হয় এবং উহার অভিপ্রায়ও ইহাতে অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২৬) “ফটোগ্রাফ” অর্থ ফটো লিথোগ্রাফ, ফটোগ্রাফি সদৃশ বা ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত যে কোনো স্থির আলোকচিত্র অন্তর্ভুক্ত হইবে; কিন্তু চলচ্চিত্রের কোনো অংশ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(২৭) “ফনোগ্রাফ প্রডিউসার” অর্থ সেই ব্যক্তি যিনি শব্দ-ধ্বনি রেকর্ড করেন এবং প্রণেতার অনুমোদনক্রমে উক্ত কর্মের পুনরুৎপাদন বা বাজারজাত করেন;
(২৮) “ফৌজদারি কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);
(২৯) “বাংলাদেশি কর্ম” অর্থ এইরূপ সাহিত্য, নাটক, সংগীত, শিল্প, চলচ্চিত্র, শব্দধ্বনি রেকর্ডিং, সম্প্রচার, সম্পাদন, স্থাপত্য, নকশা বা মডেল অথবা তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম-
(ক) যাহার প্রণেতা বাংলাদেশের নাগরিক; বা
(খ) যাহা বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে; বা
(গ) অপ্রকাশিত কর্মের ক্ষেত্রে, যাহার প্রণেতা উহা তৈরির সময় বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন;
(৩০) “বোর্ড” অর্থ ধারা ১১ এর উপধারা (১) এর অধীন গঠিত কপিরাইট বোর্ড;
(৩১) “ব্যক্তি” অর্থে প্রাকৃতিক সত্তাবিশিষ্ট কোনো ব্যক্তি এবং কোনো ফার্ম, অংশীদারি কারবার, কর্পোরেশন, কোম্পানি, সমিতি, সংঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি, সংবিধিবদ্ধ হউক বা না হউক, ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩২) “ভাস্কর্য কর্ম” অর্থ ডিজিটালসহ সকল প্রকার খোদাইকর্ম, ছাঁচে ঢালা বস্তু এবং মডেলও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩৩) “যৌথ গ্রন্থকার কর্ম” অর্থ দুই বা ততোধিক গ্রন্থকারের সহযোগিতায় প্রণীত কর্ম, যাহাতে একজন গ্রন্থকারের অবদান অপর গ্রন্থকারের অবদান হইতে স্বতন্ত্র নহে;
(৩৪) “রচয়িতা” অর্থ কোনো সংগীতের ক্ষেত্রে, উহার গীতিকার, উহা স্বরলিপির মাধ্যমে রেকর্ডকৃত হউক বা না হউক;
(৩৫) “রেজিস্ট্রার” অর্থ ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত কপিরাইট রেজিস্ট্রার;
(৩৬) “লেকচার” অর্থ পাঠদান, ভাষণ, বক্তৃতা এবং উপদেশমূলক ভাষ্যও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৩৭) “লোকজ্ঞান” অর্থ ধারা ৩৪ এ উল্লিখিত লোকজ্ঞান;
(৩৮) “লোকসংস্কৃতি” অর্থ ধারা ৩৪ এ উল্লিখিত লোকসংস্কৃতি;
(৩৯) “শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং” অর্থ মাধ্যম ও পদ্ধতি নির্বিশেষে শব্দ-ধ্বনি এইরূপ প্রক্রিয়ায় রেকর্ডিং করা যাহা হইতে উক্ত শব্দ-ধ্বনি পুনরুৎপাদন করা যায়;
(৪০) “শিল্পকর্ম” অর্থ-
(ক) শিল্পগুণসম্পন্ন পেইন্টিং, অঙ্কন, সূচিকর্ম বা পোশাক, প্রস্তর, ধাতু বা কাঁচের উপর অঙ্কিত নকশা, চিত্র বা মুদ্রণ, মৃৎশিল্প, কাঠ খোদাই, গ্রাফিক্স বা অর্টিস্টিক ইমেজ, ভিজিটাল বা কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রে সৃষ্ট ডিজাইন বা অনুরূপ অন্য কোনো কর্ম;
(খ) শিল্পসুলভ গুণ থাকুক বা নাই থাকুক, ফটোগ্রাফি, ভাস্কর্য, চিত্র, মানচিত্র, চার্ট, নকশা, খোদাই করা কর্ম;
(গ) শৈল্পিক গুণসম্পন্ন স্থাপত্য বা নির্মাণ শিল্পকর্মের মডেল বা নকশা; এবং
(ঘ) শিল্পসুলভ কারুকৃতি সমৃদ্ধ অন্য কোনো কর্ম;
(৪১) “সংগীত কর্ম” অর্থ সুর সংবলিত কর্ম এবং উক্ত কর্মের স্বরলিপি, কথা, গীতি, গান বা অনুরূপ বিষয় সৃজন, প্রকাশ বা সম্পাদন;
(৪২) “সদ্ব্যবহার” অর্থ কপিরাইট সুরক্ষিত কর্মের অনুমতি ব্যতিরেকে নির্দোষ বাণিজ্যিক ব্যবহার যা বাক্স্বাধীনতার প্রসার ঘটায়;
(৪৩) “সম্পাদক” অর্থ যে কোনো কর্মের বিন্যাস বা পুনর্বিন্যাসকারী বা পরিমার্জনাকারী অথবা, ক্ষেত্রমত, পুস্তকাদির সংকলককে বুঝাইবে, তবে ম্যাগাজিন বা সাময়িকী বা পত্রিকা বা সংবাদপত্রের সম্পাদক উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
৪৪) “সম্পৃক্ত অধিকার (related rights)” অর্থ সম্পাদনকারী, ফনোগ্রাম প্রডিউসার বা সম্প্রচার সংস্থার অধিকার;
(৪৫) “সম্পাদন (performence)” অর্থ সম্পাদনকারীর অধিকারের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক সম্পাদনকারী কর্তৃক পাঠযোগ্য, দর্শনসাধ্য বা শ্রবণযোগ্য উপস্থাপন;
(৪৬) “সম্পাদনকারী” (performer)” অর্থ অভিনেতা, গায়ক, বাদ্যযন্ত্রী, নৃত্যশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী, দড়াবাজিকর, ভোজবাজিকর, জাদুকর, সাপুড়ে, কথাকুশলী অথবা অনুরূপ কোনো কার্য সম্পাদন করেন এইরূপ কোনো ব্যক্তি;
(৪৭) “সম্প্রচার” অর্থ এক বা একাধিক রকমের সংকেত, চিহ্ন, ছবি, শব্দ-ধ্বনিসহ যে কোনো অভিব্যক্তি কোনো প্রচারযন্ত্র, যেমন- টেলিভিশন, বেতার, উপগ্রহ, তার বা বেতারযন্ত্র, মোবাইল ডিভাইস, ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক অথবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে যে কোনো মাধ্যমে জনসাধারণের সহিত যোগাযোগ এবং যাহাতে পুনঃসম্প্রচারও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৪৮) “সম্প্রচার সংস্থা” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যিনি বা যাহার দ্বারা কোনো সম্প্রচারকার্য পরিচালিত হয়;
(৪৯) “সরকারি কর্ম” অর্থ নিম্নবর্ণিত কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বা উহাদের অধীনে প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ বা নিয়ন্ত্রণে সম্পাদিত বা জারীকৃত কর্ম -
(ক) সরকার বা সরকারের কোনো বিভাগ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ;
(খ) বাংলাদেশের আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ; এবং
(গ) বাংলাদেশের কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা বিচার বিভাগীয় অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ।
(৫০) “সাহিত্যকর্ম” অর্থ জনসাধারণের পঠন-পাঠন ও শ্রবণের উদ্দেশ্যে মানবিক, ধর্মীয়, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক ও অন্য কোনো বিষয়ে রচিত, গ্রন্থিত, অনূদিত, সম্পাদিত, সংকলিত, রূপান্তরিত, অভিযোজিত, সৃষ্টিশীল, যেমন- কবিতা, ছড়া. উপন্যাস, গবেষণামূলক তথ্য-উপাত্ত সংবলিত প্রবন্ধ বা যে কোনো কর্ম; এবং
(৫১) “স্থাপত্য কর্ম” অর্থ শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অথবা ডিজাইনকৃত কোনো দালান বা ইমারত বা অবকাঠামো অথবা এইরূপ দালান বা অবকাঠামো বা ইমারতের কোনো মডেল।
৩। (১) উপধারা (৪) ও (৫) এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো কর্মের “প্রকাশনা” অর্থ-
(ক) উহার অনুলিপি জনগণের নিকট সরবরাহ করা; এবং
(খ) সাহিত্য, নাটক, সংগীত, শব্দ-ধ্বনি, চিত্রকর্ম বা চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে উহা পুনঃআহরণযোগ্য (retrievable) ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট প্রাপ্তিসাধ্য করা, এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অভিব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(২) সাহিত্য, নাট্য, সংগীত, শব্দ-ধ্বনি, চিত্রকর্ম বা চলচ্চিত্র কর্মের ক্ষেত্রে “বাণিজ্যিক প্রকাশনা” অর্থ -
(ক) উহার ক্রয় আদেশের পূর্বে অগ্রিম অনুলিপি প্রস্তুত করিয়া বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরবরাহের নিমিত্ত জনসাধারণের নিকট সাধারণভাবে প্রাপ্তিসাধ্য করা; অথবা
(খ) উক্তরূপ কর্ম পুনঃআহরণযোগ্য ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট সাধারণভাবে প্রাপ্তিসাধ্য করা; এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অভিব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(৩) স্থাপত্য কর্ম ও ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে, স্থাপনা বা উহাতে অন্তর্ভুক্ত শিল্পকর্মসহ উহার নির্মাণ সম্পন্ন হইবার পর কর্মটি প্রকাশিত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) উপধারা (১), (২) ও (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিম্নবর্ণিত কার্য প্রকাশনা বলিয়া গণ্য হইবে না, যথা :-
(ক) সাহিত্য, নাট্য বা সংগীতকর্মের ক্ষেত্রে উহার আবৃত্তি বা পরিবেশন বা শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে উহার লেকচার প্রদান এবং উক্তরূপ কর্ম পুনঃআহরণযোগ্য ব্যতিরেকে ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট পরিবেশন;
(খ) অঙ্কন, রেখাচিত্র, গ্রাফিক্স ও অন্যান্য চারু ও কারুকর্মের ক্ষেত্রে উহার প্রদর্শন;
(গ) স্থাপত্য কর্ম ও ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে উহার স্থাপত্যশৈলী বা শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শনের নিমিত্ত উহার মডেল প্রস্তুত ও প্রদর্শন; এবং
(ঘ) চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে উহা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে পুনঃআহরণযোগ্য করিয়া সরবরাহ ব্যতিরেকে জনসাধারণের নিকট প্রদর্শন।
(৫) কপিরাইট লঙ্ঘনের উদ্দেশ্য ব্যতীত, বিনা লাইসেন্সে বা কপিরাইট স্বত্বাধিকারীর অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো কর্ম প্রকাশিত, প্রকাশ্যে সম্পাদনকৃত বা কোনো লেকচার জনসমক্ষে প্রদত্ত হইলেও, উক্ত কর্ম বা উক্ত লেকচার প্রকাশিত বা প্রকাশ্যে সম্পাদনকৃত বা জনসমক্ষে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না।
৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে,-
(ক) বাংলাদেশ প্রকাশিত কোনো কর্ম, অন্য কোনো দেশে যুগপৎভাবে প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাদেশ প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না উক্ত দেশ উক্তরূপ কর্মের সংক্ষিপ্ততর মেয়াদের জন্য কপিরাইট প্রদান করিবার বিধান থাকে; এবং
(খ) কোনো কর্ম বাংলাদেশ ও অন্য কোনো দেশে যুগপৎভাবে প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে যদি বাংলাদেশ এবং অপর দেশে উহার প্রকাশকালের মধ্যে ব্যবধান অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিন হয় অথবা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকাশিত হয়।
৫। এই আইনের উদ্দেশ্যেপূরণকল্পে, কোনো কর্ম সম্পাদিত হইবার যথেষ্ট সময় অতিবাহিত হইবার পর উহা প্রকাশের ক্ষেত্রে, তিনি বর্তমানে যে দেশের নাগরিক বা অতিবাহিত সময়ের অধিকাংশ সময় যে দেশের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন বা রহিয়াছেন অথবা প্রণেতার মৃত্যু হইলে মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে তিনি যে দেশের নাগরিক ছিলেন তাহার ভিত্তিতে প্রণেতার জাতীয়তা নির্ধারিত হইবে।
৬। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতষ্ঠান বাংলাদেশের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বলিয়া গণ্য হইবে, যদি উহা বাংলাদেশের প্রচলিত কোনো আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হয় অথবা উহার কোনো প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবহারিক অফিস বাংলাদেশে থাকে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার এবং কপিরাইট বোর্ড, ইত্যাদি
৭। (১) কপিরাইট আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ২৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত কপিরাইট অফিস এইরূপে বলবৎ থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত।
(২) কপিরাইট অফিস কপিরাইট রেজিস্ট্রারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন থাকিবে এবং তিনি সরকারের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশ সাপেক্ষে, তাহার দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩) কপিরাইট অফিসের একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে।
৮। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কপিরাইট অফিসের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) কোনো কর্মের নিবন্ধনকরণ ও সনদপত্র প্রদান;
(খ) কপিরাইট বিষয়ে উদ্ভূত বিরোধসমূহ নিষ্পত্তিকরণ;
(গ) বিদেশি ভাষা হইতে বাংলা ভাষায় অনুবাদ বা পুনঃপ্রকাশের লাইসেন্স প্রদান;
(ঘ) সম্প্রচার সংক্রান্ত বিদেশি কর্মের বাংলায় অনুবাদ করিবার লাইসেন্স প্রদান;
(ঙ) কপিরাইট রেজিস্ট্রিকৃত কর্মের অবৈধ কপি আমদানি বন্ধকরণ;
(চ) সাহিত্যকর্ম বা নাট্যকর্মের অনুবাদ, প্রকাশ কিংবা পুনরুৎপাদনের লাইসেন্স প্রদান;
(ছ) কপিরাইট সমিতি বা Collective Management Organization (CMO) নিবন্ধনকরণ;
(জ) কপিরাইট সংক্রান্ত রেজিস্ট্রিকৃত কর্মের নমুনা সংরক্ষণ;
(ঝ) কপিরাইট স্বত্বাধিকারী ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সংরক্ষণ;
(ঞ) লোকসংস্কৃতি ও লোকজ্ঞান সংরক্ষণ;
(ট) কপিরাইট বিষয়ে সরকারকে, সময় সময়, পরামর্শ প্রদান;
(ঠ) শৈল্পিক (artistic) কার্যক্রমকে প্রণোদনা ও উৎসাহ প্রদান; এবং
(ড) সরকার নির্ধারিত অন্য যে কোনো বিষয়।
৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, একজন কপিরাইট রেজিস্ট্রার এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক অতিরিক্ত কপিরাইট রেজিস্ট্রার, ডেপুটি কপিরাইট রেজিস্ট্রার, সহকারী কপিরাইট রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরির শর্তাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(২) রেজিস্ট্রার এই আইনে বর্ণিত এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩) অতিরিক্ত কপিরাইট রেজিস্ট্রার, ডেপুটি কপিরাইট রেজিস্ট্রার, সহকারী কপিরাইট রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য কর্মচারী রেজিস্ট্রারের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশ সাপেক্ষে, দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৪) রেজিস্ট্রার তাহার যে কোনো দায়িত্ব অতিরিক্ত কপিরাইট রেজিস্ট্রার, ডেপুটি কপিরাইট রেজিস্ট্রার বা সহকারী কপিরাইট রেজিস্ট্রারকে অর্পণ করিতে পারিবেন।
(৫) কোনো কারণে রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য হইলে বা তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হইলে, পরবর্তী রেজিস্ট্রার নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বা তিনি দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত সরকার, অতিরিক্ত কপিরাইট রেজিস্ট্রারগণের মধ্য হইতে যিনি জ্যেষ্ঠ তাহাকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
১০। (১) কোনো কর্মের কপিরাইট বা, ক্ষেত্রমত, সম্পৃক্ত অধিকার সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ দাখিল করা হইলে, রেজিস্ট্রার স্বয়ং বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যথাযথ তদন্তপূর্বক উহার প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণ করিতে পারিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ মালিকানা সংক্রান্ত কার্যধারা গ্রহণের পর রেজিস্ট্রার বিরোধীয় স্বত্ব সংশ্লিষ্ট কর্মের উপর যেকোনো পক্ষের দাবি স্থগিত করিতে পারিবেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে আপত্তিটি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষ উক্ত কর্মের প্রকাশ, উৎপাদন, পুনরুৎপাদন, সম্প্রাচার, পরিবেশন বা বাজারজাত করিবার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিতে পারিবেন :
আরও শর্ত থাকে যে, তদন্তে অভিযোগটি সঠিক প্রমাণিত হইলে রেজেস্ট্রার দোষী ব্যক্তিকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ আরোপ করিতে পারিবেন।
(২) রেজিস্ট্রার, এই আইনে ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকিলে, যেরূপ যুক্তসঙ্গত বিবেচনা করিবেন, সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ আদেশ দেওয়ানি আদালতের ডিক্রির ন্যায় কার্যকর হইবে।
(৩) যদি রেজিস্ট্রারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, এই ধারার অধীন গৃহীত কার্যধারায় আদেশ প্রদানের সময় সাক্ষ্য সম্পর্কে কোনো নূতন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উদঘাটিত হইয়াছে বা উপস্থাপিত সাক্ষ্য প্রমাণে কোনো ভুলত্রুটি রহিয়াছে, তাহা হইলে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে অথবা নিজ উদ্যোগে রেজিস্ট্রার তাহার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করিতে পারিবেন।
১১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কপিরাইট বোর্ড নামে একটি বোর্ড থাকিবে যাহা ১ (এক) জন চেয়ারম্যান ও অন্যূন ২ (দুই) জন কিন্তু অনধিক ৬ (ছয়) জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
(২) কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন, তবে কপিরাইট আইন বিষয়ে পারদর্শী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে সরকার অন্যূন একজনকে সদস্য হিসাবে নিয়োগ করিবে।
(৩) কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদ ও শর্তাধীনে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
(৪) রেজিস্ট্রার বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৫) কোনো কারণে বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে বা তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হইলে, পরবর্তী চেয়ারম্যান নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বা তিনি দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত সরকার, বোর্ডের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্যকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে, তবে এইরূপ আদেশের মেয়াদ ৬ (ছয়) মাসের অধিক হইবে না।
১২। (১) নিম্নবর্ণিত কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে বিরোধটি বোর্ডের নিকট প্রেরণ করা যাইবে, যথা :-
(ক) কোনো কর্ম প্রকাশিত হইয়াছে কিনা অথবা কর্মটির প্রকাশনার তারিখ ও কপিরাইটের মেয়াদ সম্পর্কে;
(খ) অন্য কোনো দেশে কোনো কর্মের কপিরাইটের মেয়াদ এই আইনের অধীন উক্ত কর্মের কপিরাইটের মেয়াদ হইতে সংক্ষিপ্ততর কিনা;
(গ) সংগীত কর্মের স্বত্ব; অথবা
(ঘ) রয়্যালটির হার সম্পর্কে।
(২) বোর্ডের নিকট বিরোধীয় বিষয় দাখিল ও উহা নিষ্পত্তির পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৩) উপধারা (১) এ বর্ণিত কোনো বিরোধীয় বিষয়ে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(৪) এই আইনের কোনো বিধানের লঙ্ঘন বোর্ডের গোচরীভূত করা হইলে, বোর্ড উহার প্রতিবিধানকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৫) এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, বোর্ড, ফৌজদারি কার্যবিধির section 480 ও 482 অনুযায়ী একটি দেওয়ানি আদালতরূপে গণ্য হইবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বোর্ডের নিকট উপস্থাপিত সকল বিষয় Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 193 ও 228 এর অর্থে বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম হিসাবে গণ্য হইবে।
(৬) বোর্ড, রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো আদেশ বহাল রাখিতে বা উহার সংশোধন করিতে পারিবে।
(৭) বোর্ডের কোনো সদস্য বোর্ডের নিকট উত্থাপিত এইরূপ কোনো কার্যধারায় অংশগ্রহণ করিবেন না যাহাতে তাহার ব্যক্তিগত স্বার্থ রহিয়াছে।
(৮) রেজিস্ট্রারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বোর্ড কর্তৃক শুনানি গ্রহণকালে রেজিস্ট্রার বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব হিসাবে শুনানিতে নথিপত্র ইত্যাদি উপস্থাপন করিতে পারিবেন কিন্তু বোর্ডের কার্যধারায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।
১৩। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
(২) বোর্ডের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময়, তারিখ ও স্থানে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন অন্তর বোর্ডের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অন্যূন ২ (দুই) জন সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
(৪) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে বোর্ডের চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
(৫) বোর্ডের কোনো সদস্যপদ শূন্য রহিয়াছে বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি রহিয়াছে কেবল এই কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা উহার বৈধতা লইয়া প্রশ্ন করা যাইবে না।
তৃতীয় অধ্যায়
কপিরাইট থাকে এইরূপ কর্ম, ইত্যাদি
১৪। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত কর্মের কপিরাইট থাকিবে, যথা:-
(ক) সাহিত্য, নাট্য বা সংগীত, লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতি কর্ম;
(খ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম;
(গ) শিল্পকর্ম;
(ঘ) চলচ্চিত্র: এবং
(ঙ) শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং।
(২) কোনো বিদেশি প্রযোজকের সহিত বাংলাদেশি প্রযোজকের যৌথচুক্তির অধীন, যৌথ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য থাকুক বা নাই থাকুক, যে কোনো দেশে কিংবা উভয় দেশে আংশিকভাবে সম্পাদিত কর্মের কপিরাইট থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৬২ বা ৬৩ এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হয় এবং যৌথ চুক্তির অধীন বা যৌথ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রণীত কর্ম ব্যতীত অন্য কোনো কর্মের কপিরাইট থাকিবে না, যদিনা কর্মটি বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হইয়া থাকে, অথবা যেক্ষেত্রে কর্মটি বাংলাদেশের বাহিরে প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে উক্ত তারিখে উহার প্রণেতা জীবিত না থাকিলে মৃত্যুর তারিখে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা না হইয়া থাকেন।
(৩) কোনো চলচ্চিত্রের বা তথ্যচিত্রের প্রযোজকের দপ্তর বা আবাস চলচ্চিত্রটি নির্মাণের উল্লেখযোগ্য বা সম্পূর্ণ সময়ে বাংলাদেশে থাকিলে উক্ত চলচ্চিত্রের কপিরাইট বহাল থাকিবে।
(৪) কোনো চলচ্চিত্রের কপিরাইট অন্য কোনো কর্মের কপিরাইটকে প্রভাবিত করিবে না, যাহার উপর ভিত্তি করিয়া শেষোক্ত কর্মটি নির্মিত হইয়াছে; একইভাবে কোনো শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রেও অন্য কোনো শব্দ-ধ্বনি রেকডিং এর কপিরাইটকে প্রভাবিত করিবে না, যাহার উপর ভিত্তি করিয়া শেষোক্ত শব্দ-ধ্বনি রেকডিং করা হইয়াছে।
(৫) স্থাপত্য শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে কপিরাইট কেবল শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও ডিজাইনে থাকিবে এবং নির্মাণ প্রক্রিয়া বা পদ্ধতিতে বিস্তৃতি হইবে না।
(৬) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কপিরাইট বহাল থাকিবে না, যথা:-
(ক) চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে, যদি চলচ্চিত্রটির মূল অংশ অন্য কোনো কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘন করিয়া তৈরি হয়;
(খ) সাহিত্য, নাট্য বা সঙ্গীত কর্ম দ্বারা শব্দ-ধ্বনি রেকডিং এর ক্ষেত্রে, যদি শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর সময় উক্ত কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘন করা হয়; এবং
(গ) কোনো স্থাপত্য কর্মের ক্ষেত্রে, যদি কর্মটি বাংলাদেশে অবস্থিত না হয়।
(৭) এই আইনের বিধানের পরিপন্থি উপায়ে কোনো ব্যক্তি কোনো প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত কর্মের কপিরাইট বা অনুরূপ কোনো স্বত্বের অধিকারী হইবেন না।
চতুর্থ অধ্যায়
কপিরাইটের স্বত্ব এবং মালিকদের অধিকার
১৫। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, কোনো প্রণেতা তাহার কর্মের কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন।
(২) উপধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন,-
(ক) চাকুরি বা শিক্ষানবিশ চুক্তির অধীন সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা সাময়িকীর মালিকের চাকুরিতে নিযুক্ত থাকাকালে প্রণেতা কর্তৃক সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা সাময়িকীতে প্রকাশের উদ্দেশ্যে রচিত সাহিত্য, নাট্য বা শিল্প সম্পর্কিত কর্মের ক্ষেত্রে, উক্ত মালিক, ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি না থাকিলে, কর্মটি সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা সাময়িকীতে প্রকাশ বা পুনরুৎপাদনের সহিত যতখানি সম্পর্কযুক্ত ততখানি কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন, কিন্তু অন্য সকল বিষয় প্রণেতা কর্মটির কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন;
(খ) দফা (ক) এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো ব্যক্তির উদ্যোগে এবং অর্থের বিনিময়ে ফটোগ্রাফ লওয়া, ছবি বা প্রতিকৃতি আাঁকা, খোদাই কাজ বা চলচ্চিত্র নির্মাণ করিবার ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি, ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি না থাকিলে, উহার কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন;
(গ) চাকুরি বা শিক্ষানবিশ চুক্তির অধীন কোনো কর্মের প্রণেতার চাকুরিতে দফা (ক) বা (খ) প্রযোজ্য হয় না এইরূপ নিযুক্ত থাকাকালে নিয়োগকারী, ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি না থাকিলে, উক্ত কর্মের কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন;
(ঘ) জনসমক্ষে প্রদত্ত বক্তৃতা বা বিবৃতির ক্ষেত্রে, বক্তৃতা বা বিবৃতি প্রদানকারী ব্যক্তি অথবা উক্ত ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে উক্ত বক্তৃতা বা বিবৃতি প্রদান করিয়া থাকিলে, উক্ত অপর ব্যক্তি, উক্ত বক্তৃতা বা বিবৃতি প্রদানকারী ব্যক্তি বা যাহার পক্ষে বক্তৃতা বা বিবৃতি প্রদান করা হইয়াছে সেই ব্যক্তি অপর কোনো এমন ব্যক্তির দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন, যিনি সংশ্লিষ্ট বক্তৃতা বা বিবৃতির ব্যবস্থা করা বা বক্তৃতা বা বিবৃতি প্রদানের স্থানের ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও যাহার পক্ষে বক্তৃতা দেওয়া হইয়াছে তিনি উহার কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন;
(ঙ) ভিন্নতর কোনো চুক্তি না থাকিলে, কোনো সরকারি কর্মের ক্ষেত্রে, সরকার উক্ত কর্মের কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবেন;
(চ) ধারা ৬৩ প্রযোজ্য হয় এইরূপ কর্মের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থা উহার কপিরাইটের প্রথম স্বত্বাধিকারী হইবে; এবং
(ছ) তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের ক্ষেত্রে, উক্ত প্রোগ্রাম সম্পন্ন করিবার জন্য নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রথম কপিরাইটের অধিকারী হইবেন, যদি না পক্ষগণের মধ্যে ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি থাকে।
১৬। (১) কোনো বিদ্যমান কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী বা ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী যে কোনো ব্যক্তির অনুকূলে উহার কপিরাইটের সম্পূর্ণ বা আংশিক, সাধারণভাবে বা শর্তসাপেক্ষে, কপিরাইটের পূর্ণ মেয়াদ বা আংশিক মেয়াদের জন্য, স্বত্ব নিয়োগ করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইটের স্বত্ব নিয়োগের ক্ষেত্রে, কর্মটি অস্তিত্বশীল হইবার পর উহার স্বত্বনিয়োগ কার্যকর হইবে এবং এইরূপ কোনো কর্ম সম্পাদন বা প্রকাশের মাধ্যমে বা পদ্ধতি উক্ত স্বত্ব নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যদি স্বত্ব নিয়োগ দলিলে উক্ত মাধ্যম বা পদ্ধতির কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকে:
আরও শর্ত থাকে যে, চলচ্চিত্র বা নাটকে অন্তর্ভুক্ত সংগীত কর্মের প্রণেতা তাহার বৈধ উত্তরাধিকারী অথবা রয়্যালটি আদায় ও বিতরণে নিয়োজিত কপিরাইট সমিতি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বা নাটকের অবিচ্ছিন্ন অংশ হিসাবে প্রদর্শন ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে উহার শব্দ-ধ্বনি নির্মাণের উদ্দেশ্যে রয়্যালটি পরিহার সংক্রান্ত কোনো স্বত্ব নিয়োগ করিবেন না।
(২) কপিরাইট স্বত্বাধিকারীর সুনির্দিষ্টভাবে কপিরাইটের যে স্বত বা স্বত্বের অংশ কোনো ব্যক্তির অনুকূলে প্রদান করিবেন তিনি কেবল সেই স্বত্ব বা স্বত্বের অধিকারী হইবেন এবং স্বত্ব প্রদানকারী নিজে যে অংশ বা পরিমাণ স্বত্ব প্রদান করেন নাই, তিনি নিজেই সেই স্বত্বের অধিকারী থাকিবন।
(৩) উপধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীর মৃত্যু হইলে, তাহার আইনানুগ উত্তরাধিকারী বা উত্তরাধিকারীগণ উক্ত কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী হইবেন।
(৪) কোনো কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী মৃত্যুর পূর্বে যদি তিনি কোনো কর্মের স্বত্ব আইনানুগভাবে সম্পাদিত কোনো উইল, দলিল বা দানপত্রের মাধ্যমে স্বত্ব নিয়োগ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উহার গ্রহীতা উক্তরূপ উইল, দলিল বা দানপত্রে উল্লিখিত পরিমাণ অধিকারের স্বত্বাধিকারী হইবেন।
(৫) কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীর মৃত্যুর পর তাহার আইনানুগ উত্তরাধিকারী এই ধারা অনুযায়ী স্বত্বের অধিকারী না থাকিলে বা তাহার সন্ধান পাওয়া না গেলে বোর্ড কর্তৃক উহার স্বত্ব নির্ধারিত হইবে।
(৬) কপিরাইট স্বত্ব নিয়োগ বা হস্তান্তর দলিল কপিরাইট অফিস কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত হইতে হইবে।
১৭। (১) কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্ব নিয়োগ বৈধ হইবে না, যদি না উহা স্বত্ব প্রদানকারী বা তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়।
(২) কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্ব নিয়োগ অবশ্যই কর্মটিকে চিহ্নিত করিবে এবং স্বত্ব নিয়োগকৃত অধিকার, অধিকারের মেয়াদ এবং স্বত্ব নিয়োগের ভৌগোলিক পরিধি দলিলে উল্লেখ থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো স্বত্ব নিয়োগের মেয়াদ উল্লেখ না থাকে সেইক্ষেত্রে স্বত্ব নিয়োগের তারিখ হইতে পরবর্তী ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য উহা করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, এবং যদি স্বত্ব নিয়োগের ভৌগোলিক পরিধি উল্লেখ না থাকে, সেইক্ষেত্রে উহার পরিধি সমগ্র বাংলাদেশ বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্ব নিয়োগ দলিলে প্রণেতা অথবা তাহার উত্তরাধিকারীকে স্বত্ব নিয়োগ কার্যকর থাকাকালীন রয়্যালটি বা অগ্রিম রয়্যালটি বা প্রদেয় এককালীন অর্থের উল্লেখ থাকিবে এবং পারস্পরিক স্বীকৃত মতে স্বত্ব নিয়োগ পুনঃপরীক্ষণ, বর্ধিতকরণ বা বাতিলের ব্যবস্থা রাখা সাপেক্ষে হইবে।
(৪) যেক্ষেত্রে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বত্বাধিকারী স্বত্ব নিয়োগের তারিখ হইতে ১ (এক) বৎসর উহা ব্যবহার না করেন, উক্ত অধিকারের স্বত্ব নিয়োগ উক্ত সময়সীমা উত্তীর্ণের পর, স্বত্ব নিয়োগ দলিলে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, তামাদি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
১৮। (১) যদি কপিরাইটের কোনো স্বত্বের অথবা স্বত্ব নিয়োগের বিষয়ে কোনো বিরোধের উদ্ভব হয়, তাহা হইলে বোর্ড, সংক্ষুব্ধ পক্ষের নিকট হইতে অভিযোগ প্রাপ্তির পর তৎকর্তৃক যথাযথ তদন্তপূর্বক স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) যদি কোনো নিয়োগপ্রাপ্ত স্বত্বাধিকারী তাহার নিকট হস্তান্তরকৃত কোনো অধিকার ব্যবহার করিতে ব্যর্থ হন এবং উক্ত ব্যর্থতার জন্য স্বত্ব প্রদানকারীর কোনো কার্য বা কার্যহীনতা দায়ী না হয়, তাহা হইলে বোর্ড, স্বত্ব প্রদানকারীর নিকট হইতে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকর্তৃক যথাযথ তদন্তের পর, উক্ত স্বত্ব নিয়োগ বাতিল করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ড উক্ত স্বত্বাধিকার বাতিল করিবার কোনো আদেশ প্রদান করিবে না, যদি না বোর্ড এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, স্বত্ব নিয়োগের শর্ত স্বত্ব প্রদানকারীর জন্য, যদি তিনি প্রণেতা হন, কঠোর হইয়াছে।
১৯। কোনো ব্যক্তি কোনো কর্মের প্রণেতার মৃত্যুর পূর্বে অপ্রকাশিত কোনো কর্মের কোনো উইলমূলে পাণ্ডুলিপির অধিকারী হইলে, উইলে বা কডিসিলে (codicil) ভিন্নরূপ কোনো অভিপ্রায় প্রকাশ না পাইলে, মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে উইলকারী উক্ত কর্মের যে পরিমাণ কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী ছিলেন সেই পরিমাণ কপিরাইট উইলের অন্তর্ভুক্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
২০। (১) কোনো কর্মের প্রণেতা কপিরাইটে তাহার সকল বা যেকোনো স্বত্ব নির্ধারিত ফরমে কপিরাইট রেজিস্ট্রারের বরাবরে নোটিশ প্রদান করিয়া পরিত্যাগ করিতে পারিবেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে উক্তরূপ স্বত্ব, নোটিশের তারিখ হইতে বিলুপ্ত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ স্বত্ব পরিত্যাগের নোটিশ প্রদানের তারিখে উক্ত কর্মের উপর অন্য কোনো ব্যক্তির কোনো অধিকারকে প্রভাবিত করিবে না।
(২) উপধারা (১) এর নোটিশ প্রাপ্ত হইলে, রেজিস্ট্রার উহা সরকারি গেজেটে বা তাহার স্বীয় বিবেচনায় যথাযথ পদ্ধতিতে প্রকাশ করিবেন।
২১। (১) কোনো চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, রেখাচিত্র, নাটক, চলচ্চিত্র, সংগীত, সাহিত্য বা অন্য কোনো কর্মের মূল রচনা, প্রকাশনা বা পাণ্ডুলিপি পুনঃবিক্রয়ের ক্ষেত্রে উক্ত কর্মের প্রণেতা বা তাহার উত্তরাধিকারীগণ, সংশ্লিষ্ট কর্মের স্বত্ব নিয়োগ সত্ত্বেও, উক্ত কর্মের পুনঃবিক্রয় মূল্যের অংশ পাইবার অধিকারী হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, কর্মটির কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর অনুরূপ অধিকার বিলুপ্ত হইবে।
(২) বোর্ড বিভিন্ন শ্রেণির কর্মের পুনঃবিক্রয় মূল্য বণ্টনের নিমিত্ত ভিন্ন ভিন্ন হার নির্ধারণ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ অংশ ২০ (বিশ) শতাংশের অধিক হইবে না।
(৩) এই ধারার অধীন কোনো কার্যক্রমের বিষয়ে কোনো বিরোধ উত্থাপিত হইলে উহা বোর্ডে প্রেরিত হইবে এবং উহাতে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
পঞ্চম অধ্যায়
কপিরাইটের মেয়াদ
২২। (১) প্রণেতার জীবনকালে প্রকাশিত কোনো সাহিত্য, নাটক, সংগীত বা শিল্পকর্মের (ফটোগ্রাফ ব্যতীত) কপিরাইট তাহার জীবদ্দশায় এবং তাহার মৃত্যুর পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে।
(২) প্রণেতার মৃত্যুর তারিখে কপিরাইট বিদ্যমান থাকে এইরূপ সাহিত্য, নাট্য বা সংগীত কর্ম বা খোদাই-কর্ম, বা অনুরূপ কর্মের যৌথ প্রণেতার ক্ষেত্রে, যিনি শেষে মৃত্যুবরণ করিয়াছেন তাহার মৃত্যুর তারিখে বা উক্ত তারিখের পূর্বে কিন্তু যাহা বা যাহার অভিযোজন উক্ত তারিখের পূর্বে হয় নাই, তদ্রুপ ক্ষেত্রে, কর্মটির প্রথম প্রকাশের পরবর্তী বৎসরের শুরু হইতে বা কমিটির কোনো অভিযোজন পূর্ববর্তী কোনো বৎসরে প্রকাশিত হইয়া থাকিলে সে বৎসরের পরবর্তী বৎসরের শুরু হইতে ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সাহিত্য, নাট্য বা সংগীত কর্ম বা উক্ত কর্মের অভিযোজন প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে যদি উক্ত কর্মের বিষয়ে তৈরি কোনো রেকর্ড জনসাধারণের নিকট বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা হইয়া থাকে।
২৩। যে কোনো ধরন বা যে কোনো দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে যে বৎসর কর্মটি প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৪। কোনো শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে যেই বৎসর উহা প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৫। ফটোগ্রাফের ক্ষেত্রে যেই বৎসর ফটোগ্রাফটি প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৬। তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মের ক্ষেত্রে যে বৎসর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৭। অজ্ঞাতনামা বা ছদ্মনামে প্রকাশিত কোনো সাহিত্য, নাটক সংগীত বা শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও সীমা সাপেক্ষে, যে বৎসর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে প্রণেতার পরিচয় প্রকাশ পাইলে, যে বৎসর প্রণেতার মৃত্যু হয় তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৮। কোনো সরকারি কর্মের কপিরাইটের ক্ষেত্রে, যে বৎসর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
২৯। ধারা ৬৩ প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মের ক্ষেত্রে, যে বৎসর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে তাহার পরবর্তী ৬০ (ষাট) বৎসর পর্যন্ত কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে।
ষষ্ঠ অধ্যায়
সম্প্রচার সংস্থা এবং সম্পাদনকারীর অধিকার ও মেয়াদ
৩০। (১) প্রত্যেক সম্প্রচার সংস্থার বৈধভাবে সম্প্রচারিত বিষয়ের উপর একটি বিশেষ অধিকার থাকিবে যাহা সম্প্রচার পুনরুৎপাদন অধিকার (broadcast reproduction right) নামে অভিহিত হইবে।
(২) সম্প্রচার যে বৎসর প্রথম করা হইয়াছে তাহার পরবর্তী ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পর্যন্ত সম্প্রচার সংস্থার সম্প্রচার পুনরুৎপাদনের অধিকার থাকিবে।
(৩) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সম্প্রচার পুনরুৎপাদনের অধিকারের কারণে সম্প্রচারে ব্যবহৃত কোনো সাহিত্য, নাটক, সংগীত, অন্য কোনো শিল্পকর্ম বা চলচ্চিত্র বা শব্দ-ধ্বনির কপিরাইট ক্ষুণ্ন হইবে না।
৩১। (১) কোনো কর্মের প্রণেতার অধিকারের বিষয়ে এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যেক্ষেত্রে কোনো সম্পাদনকারী কোনো সম্পাদনে আবির্ভূত বা নিয়োজিত হন, তাহার উক্ত সম্পাদনের (performence) বিষয়ে একটি বিশেষ অধিকার থাকিবে যাহা সম্পাদনকারীর অধিকার (performer's right) নামে অভিহিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো কর্মের প্রণেতা এবং সম্পাদনকারী ভিন্ন ব্যক্তি হইলে, প্রণেতার সম্মতি গ্রহণক্রমে সম্পাদন করিতে হইবে।
(২) সম্পাদনটি যে বৎসর প্রথম করা হইয়াছে উহার পরবর্তী ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর পর্যন্ত সম্পাদনকারীর অধিকার বিদ্যমান থাকিবে।
সপ্তম অধ্যায়
প্রকাশিত কর্মের সংস্করণের ক্ষেত্রে প্রকাশকের অধিকার, ফোনোগ্রাম সংরক্ষণ ও উহার মেয়াদ, ইত্যাদি
৩২। কোনো প্রকাশক বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো গ্রন্থের সংস্করণ প্রকাশের নিমিত্ত ফটোগ্রাফিক বা অনুরূপ কোনো প্রক্রিয়ায় মুদ্রণশৈলীগত বিন্যাসপূর্বক উহার কপি তৈরি করিবার ক্ষমতা প্রদানের অধিকার ভোগ করিবেন এবং এইরূপ অধিকার যে বৎসর সংস্করণটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে উহার পরবর্তী বৎসর হইতে ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সাহিত্যকর্মের ক্ষেত্রে, প্রথম স্বত্বাধিকারী উহার স্বত্বানিয়োগীর সহিত সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক যে কোনো সময় স্বত্ব নিয়োগ প্রত্যাহার করিলে প্রকাশক মুদ্রণশৈলীগত বিন্যাস এবং প্রচ্ছদ নকশা প্রণয়নের অধিকারী হইবেন না, যদি না তিনি উহার প্রথম স্বত্বধিকারী হন।
৩৩। (১) সংগীত প্রকাশক বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো সংগীত বা শব্দ-ধ্বনির সংস্করণ প্রকাশের নিমিত্ত, সুর সংযোজনপূর্বক বা ব্যতীত, হুবহু বা কোনো প্রক্রিয়ায় সুরের পুনঃবিন্যাসপূর্বক উহার কপি তৈরি এবং স্থির বা ডিজিটাল বা কোনো মাধ্যমে উহা সম্প্রচার করিবার অধিকার ভোগ করিবেন এবং এইরূপ অধিকার যে বৎসর সংস্করণটি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে উহার পরবর্তী বৎসর হইতে ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পর্যন্ত বিদ্যমান থাকিবে।
(২) সংগীত বা শব্দধ্বনির রচয়িতা ও সম্পাদনকারী কর্তৃক চুক্তির মাধ্যমে, ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, প্রকাশককে উপধারা (১) এ উল্লিখিত অধিকার প্রদান সত্ত্বেও উহার সম্প্রচারের উপর উক্ত সংগীত বা শব্দ-ধ্বনির রচয়িতা বা সম্পাদনকারীর নির্ধারিত রয়্যালটির অধিকার বহাল থাকিবে।
(৩) ফোনোগ্রামের সংস্করণ ও সম্প্রচারের অধিকার ক্ষুণ্ন না করিয়া, কপিরাইট সমিতি কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী ও সম্পাদনকারীর নির্ধারিত রয়্যালটির অধিকার প্রয়োগের নিমিত্ত কার্যক্রম গ্রহণ করিবে।
অষ্টম অধ্যায়
লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির অধিকার সুরক্ষা
৩৪। (১) এই আইনের অধীন লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির (folklore) নিম্নরূপ অভিব্যক্তিসমূহের অধিকার সুরক্ষা পাইবে, যথা:-
(ক) লোকসংস্কৃতির মৌখিক অভিব্যক্তি;
(খ) লোকসংস্কৃতির সাংকেতিক বা সুর সংবলিত অভিব্যক্তিসমূহ;
(গ) লোকসংস্কৃতির শারীরিক কসরত প্রদান অভিব্যক্তিসমূহ;
(ঘ) লোকসংস্কৃতির মূর্ত অভিব্যক্তিসমূহ;
(ঙ) লোকভাষা, চিহ্ন, প্রতীক, ইত্যাদি;
(চ) লুপ্ত বা লুপ্তপ্রায় অভিব্যক্তি; এবং
(ছ) শনাক্তকৃত নূতন কোনো মূর্ত বা বিমূর্ত অভিব্যক্তি।
(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত অভিব্যক্তিসমূহের মেয়াদ সংশ্লিষ্ট সমাজ বা কমিউনিটির যতদিন অস্তিত্ব থাকিবে ততদিন বিদ্যমান থাকিবে এবং কোনো কমিউনিটি বিলুপ্ত হইলে সরকার সেই অধিকারের মালিক হইবে।
৩৫। (১) সরকার শনাক্তকৃত লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির একটি তালিকা সংরক্ষণ করিবে।
(২) সরকার শনাক্তকৃত লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির তালিকা, লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির উৎস-সমাজ (origin-community) এবং তাহাদের প্রতিনিধিত্বকারী স্বীকৃত কমিউনিটি, সংগঠন, মিউজিয়াম, ইত্যাদির হালনাগাদ তালিকা সংরক্ষণ করিবে।
৩৬। (১) লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক ব্যবহারের পূর্বে উৎস সমাজের বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উহার পরিপোষণে নিয়োজিত সরকারি কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।
(২) লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির কোনো অভিব্যক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহারের পূর্বে উক্তরূপ ব্যবহারকারী, উৎপাদনকারী বা সরবরাহকারীকে উহার উৎস-সমাজের সহিত উহা ব্যবহারের শর্ত ও সীমা উল্লেখপূর্বক চুক্তি সম্পাদন করিতে হইবে এবং এইরূপে সম্পাদিত যেকোনো চুক্তি কপিরাইট রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হইতে হইবে এবং উহার একটি বিবরণ কপিরাইট অফিসে দাখিল করিতে হইবে।
৩৭। লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির বাণিজ্যিক ব্যবহারের নিমিত্ত সম্পাদিত চুক্তির অধীন প্রাপ্ত অর্থ লোকজ্ঞান, লোকসংস্কৃতি ও সামগ্রিক সাংস্কৃতিক উন্নয়নকল্পে ব্যয় করা হইবে এবং বিধি অনুযায়ী, জীবিত অংশীজনের মধ্যে অর্জিত অর্থ বণ্টন করিতে হইবে।
নবম অধ্যায়
কপিরাইট সমিতি
৩৮। (১) এই আইনের অধীন নিবন্ধন ব্যতীত কোনো সমিতি কপিরাইট বিদ্যমান রহিয়াছে এইরূপ কোনো কর্মের জন্য অথবা এই আইনের অধীন প্রদত্ত অন্য কোনো অধিকারের বিষয়ে লাইসেন্স ইস্যু করিতে অথবা অব্যাহত রাখিতে পারিবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো কপিরাইটের মালিক কোনো নিবন্ধিত কপিরাইট সমিতির সদস্য হিসাবে তাহার উপর প্রযোজ্য বাধ্যবাধকতার সহিত সঙ্গতিপূর্ণ উপায়ে নিজস্ব কোনো কর্মের বিষয়ে লাইসেন্স প্রদানের অধিকার অব্যাহত রাখিতে পারিবেন।
(২) কোনো সমিতি কপিরাইট সমিতি হিসাবে নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, রেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে এবং রেজিস্ট্রার উক্ত আবেদন যাচাই করিয়া শনাক্তকরণ সংখ্যা উল্লেখপূর্বক সরকারের নিকট প্রস্তাব দাখিল করিবেন।
(৩) উপধারা (২) এর অধীন প্রাপ্ত যাচাইকৃত আবেদনপত্র, প্রণেতা এবং এই আইনের অধীন অন্যান্য অধিকারের মালিকদের স্বার্থ, জনস্বার্থ এবং বিশেষত, লাইসেন্স প্রার্থী হইতে পারে এইরূপ ব্যক্তিসমষ্টির স্বার্থ ও সুবিধা এবং আবেদনকারীগণের যোগ্যতা এবং পেশাগত দক্ষতা বিবেচনা করিয়া সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, কোনো সমিতিকে কপিরাইট সমিতি হিসাবে নিবন্ধন প্রদান করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার সাধারণত একই শ্রেণির কর্মের বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একের অধিক সমিতিকে নিবন্ধিত করিবে না।
৩৯। (১) যদি সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো কপিরাইট সমিতি কপিরাইট মালিকদের স্বার্থের পরিপন্থিভাবে উহার কার্যক্রম পরিচালনা করিতেছে, সেইক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত পদ্ধতিতে তদন্তপূর্বক উক্ত সমিতির নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবে।
(২) যেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কপিরাইট মালিকদের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করিবে সেইক্ষেত্রে সরকার, আদেশ দ্বারা, উপধারা (১) এর অধীনে তদন্তাধীন কোনো সমিতির নিবন্ধন অনধিক ১ (এক) বৎসরের জন্য স্থগিত করিতে পারিবে এবং সরকার উক্ত কপিরাইট সমিতির কার্য নির্বাহের জন্য ১ (এক) জন প্রশাসক নিযুক্ত করিতে পারিবে।
৪০। (১) বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, কোনো কপিরাইট সমিতি যে কোনো অধিকারের মালিকের নিকট হইতে অনুমোদন গ্রহণ, কর্মটি ব্যবহারকারীদের লাইসেন্স প্রদান, ফি আদায় বা উভয়বিধ কার্যের মাধ্যমে তাহার কোনো কর্মের কোনো অধিকার পরিচালনার জন্য একচ্ছত্র কর্তৃত্ব গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন কপিরাইট সমিতির অধিকার ক্ষুণ্ণ না করিয়া, কোনো অধিকারের মালিক উপধারা (১) এ উল্লিখিত কর্তৃত্ব প্রত্যাহার করিতে পারিবেন।
(৩) এই আইনের অধীন উদ্ভূত অধিকারের অনুরূপ অধিকার পরিচালনা করে এইরূপ বিদেশি সমিতি বা সংস্থার সহিত কোনো কপিরাইট সমিতি নিম্নরূপ কার্য সম্পাদনের নিমিত্ত চুক্তি করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) উক্ত বিদেশি সমিতি বা সংস্থাকে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রে উক্ত বাংলাদেশি কপিরাইট সমিতির প্রশাসনাধীন কোনো অধিকার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান; এবং
(খ) উক্ত বিদেশি সমিতি বা সংস্থার ব্যবস্থাপনাধীন কোনো অধিকারের ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশে পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ:
তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো সমিতি বা সংস্থা বাংলাদেশি কর্ম এবং অন্যান্য কর্মের লাইসেন্সের শর্ত বা আদায়কৃত ফি বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনোরূপ বৈষম্য করিতে পারিবে না ।
(৪) নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, প্রত্যেক কপিরাইট সমিতি -
(ক) এই আইনের অধীন কোনো অধিকারের বিষয়ে ধারা ৪৫ এর অধীন লাইসেন্স প্রদান করিতে ও ফি আদায় করিতে পারিবে;
(খ) স্বীয় ব্যয় কর্তনপূর্বক অনুরূপ ফি অধিকারের মালিকদের মধ্যে বণ্টন করিতে পারিবে; এবং
(গ) ধারা ৪২ এর বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্য যেকোনো কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
৪১। কপিরাইট সমিতি, বিধি সাপেক্ষে, কোনো কর্মের প্রচার সংখ্যা বিবেচনাপূর্বক কপিরাইটের প্রত্যেক মালিককে প্রদেয় রয়্যালটির অংশ নির্ধারণের জন্য একটি স্কিম তৈরি করিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত অর্থ কপিরাইট সমিতির যুক্তিসংগত বিবেচনায় কর্মের প্রচার সংখ্যার ভিত্তিতে উহার মালিকদের মধ্যে সীমিত থাকিবে।
৪২। (১) ধারা ৪০ এর উপধারা (৩) এ বর্ণিত বিদেশি সমিতি বা সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত অধিকারসমূহের মালিকগণ ব্যতীত, কপিরাইটের মালিকগণের যৌথ নিয়ন্ত্রণাধীন প্রত্যেক কপিরাইট সমিতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে-
(ক)ফি আদায় ও বণ্টনের জন্য কপিরাইট ও সম্পৃক্ত অধিকারের স্বত্বাধিকারীগণের অনুমোদন গ্রহণ করিবে;
(খ) আদায়কৃত ফি হইতে অধিকারের মালিকগণের মধ্যে বণ্টন ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিবার জন্য উক্ত অধিকারের মালিকদের অনুমোদন গ্রহণ করিবে; এবং
(গ) উক্ত মালিকগণকে তাহাদের অধিকার পরিচালনার বিষয়ে উহার কার্যকলাপ সম্পর্কে নিয়মিত পূর্ণ ও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করিবে।
(২) আদায়কৃত ফি কপিরাইটের মালিকগণের মধ্যে, তাহাদের কর্মের প্রকৃত ব্যবহারের অনুপাতে, বণ্টন করিতে হইবে।
৪৩। (১) প্রত্যেক কপিরাইট সমিতি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়সীমা এবং পদ্ধতিতে, যে সকল কর্মের ক্ষেত্রে উহার লাইসেন্স প্রদান করিবার এখতিয়ার রহিয়াছে সেই সকল লাইসেন্স প্রদান বাবদ যে সকল ফি, চার্জ, রয়্যালটি আদায় করিবার প্রস্তাব করে উহার বিবরণসহ অন্যান্য রিটার্ন প্রস্তুত করিয়া রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিল করিবে।
(২) সরকার হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কপিরাইট সমিতি কর্তৃক পরিচালিত অধিকার বাবদ আদায়কৃত ফি এই আইনের বিধানাবলি অনুসারে যথাযথভাবে ব্যবহৃত ও বণ্টিত হইতেছে কিনা সেই সম্পর্কে সন্তুষ্ট হইবার জন্য কপিরাইট সমিতি হইতে যেকোনো প্রতিবেদন অথবা নথি তলব করিতে পারিবেন।
৪৪। (১) প্রত্যেক কপিরাইট সমিতি, এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত ফরমে, যথাযথভাবে উহার হিসাব বিবরণী ও অন্যান্য রেকর্ড সংরক্ষণ করিবে।
(২) কপিরাইট সমিতি কর্তৃক সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত অর্থের হিসাব মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃক নিরীক্ষিত হইবে, এবং কপিরাইট সমিতির অন্যান্য অর্থ Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P. O. No. 2 of 1973) এ সংজ্ঞায়িত কোনো chartered accountant দ্বারা নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এইরূপ নিরীক্ষা বাবদ ব্যয়িত অর্থ কপিরাইট সমিতি কর্তৃক প্রদেয় হইবে।
(৩) নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা উপধারা (২) এর অধীন নিয়োগকৃত chartered accountant কপিরাইট সমিতির সকল রেকর্ড, দলিল, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিল পরীক্ষা করিতে পারিবেন এবং সমিতির যে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
দশম অধ্যায়
লাইসেন্স
৪৫। (১) কোনো বিদ্যমান কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী বা কোনো ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইটের সম্ভাব্য স্বত্বাধিকারী তাহার বা তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির স্বাক্ষরিত লাইসেন্সের মাধ্যমে কপিরাইটের যে কোনো স্বত্ব প্রদান করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইট সম্পর্কিত লাইসেন্সের ক্ষেত্রে, কর্মটি অস্তিত্বশীল হইবার পর লাইসেন্স কার্যকর হইবে।
ব্যাখ্যা।- কোনো ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইটের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্মটি অস্তিত্বশীল হইবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে, তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি, লাইসেন্সে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, লাইসেন্সের সুবিধা ভোগ করিবার অধিকারী হইবেন।
(২) এই ধারার অধীন লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে কপিরাইটের স্বত্ব নিয়োগ সংক্রান্ত ধারা ১৬ এর বিধানাবলি প্রয়োজনীয় অভিযোজন সহকারে প্রযোজ্য হইবে।
(৩) কপিরাইট সম্পর্কিত লাইসেন্সের বিষয়ে কোনো বিরোধ উত্থাপিত হইলে উহা ধারা ১৮ এর বিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
৪৬। (১) প্রকাশিত বা সম্পাদিত কোনো বাংলাদেশি কর্ম, ক্ষেত্রমত, বিদেশি কর্মের কপিরাইটের মেয়াদের মধ্যে, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, কোনো আবেদনের প্রেক্ষিতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, বোর্ড আবেদনকারীকে কর্মটি পুনঃপ্রকাশ বা সম্পাদন অথবা সম্প্রচার করিবার লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে, যথা :-
(ক) কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী কর্মটি পুনঃপ্রকাশ করিতে বা পুনঃপ্রকাশ করিবার অনুমতি প্রদান করিতে অস্বীকার করিয়াছেন অথবা কর্মটি জনসাধারণ্যে সম্পাদন করিবার অনুমতি প্রদান করিতে অস্বীকার করিয়াছেন এবং এইরূপ অস্বীকৃতির কারণে কর্মটি জনসাধারণ্যের নিকট বারিত রহিয়াছে; অথবা
(খ) উক্তরূপ কর্মের সম্প্রচার দ্বারা গণযোগাযোগের অনুমতি প্রদান করিতে অস্বীকার করিয়াছেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর বোর্ড, উক্ত কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া যদি এই মর্মে সন্তষ্ট হয় যে, এইরূপ অস্বীকৃতি জনস্বার্থের অনুকূল নহে, বা এইরূপ অস্বীকৃতির কারণ যুক্তিসংগত নহে, তাহা হইলে বোর্ড আবেদনকারীকে কর্মটি পুনঃপ্রকাশ করিবার জন্য বা সাধারণ্যে সম্পাদন করিবার জন্য বা সম্প্রচার করিবার জন্য লাইসেন্স প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিতে পারিবে, এবং কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে।
(৩) উপধারা (১) এর অধীনে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি আবেদন পেশ করিলে, বোর্ডের মতে, যে ব্যক্তি জনসাধারণের স্বার্থে সর্বাপেক্ষা ভাল কাজ করিবে, সেই আবেদনকারীকে লাইসেন্স প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিবে।
(৪) উপধারা (২) এর অধীন লাইসেন্স প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হইলে, রেজিস্ট্রার, বোর্ডের নির্দেশাবলি অনুসারে, আবেদনকারীকে নির্ধারিত ফি পরিশোধের বিনিময়ে লাইসেন্স প্রদান করিবেন।
৪৭। বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, কোনো আবেদনকারীকে অপ্রকাশিত বাংলাদেশি কর্মের বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
৪৮। বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, কোনো আবেদনকারীকে অনুবাদ বা অভিযোজন তৈরি ও প্রকাশের লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
৪৯। বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, কোনো আবেদনকারীকে কোনো সাহিত্য, নাটক, সংগীত, চিত্রকলা অথবা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো কর্ম বিক্রয়ের নিমিত্ত পুনরুৎপাদন ও প্রকাশের জন্য লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
৫০। বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, প্রকাশিত কোনো সাহিত্য বা সংগীতকর্ম, চলচ্চিত্র ও শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং- কে কোনো সম্প্রচার সংস্থাকে সাংস্কৃতিক কনটেন্ট সম্প্রচার, প্রদর্শন বা সম্পাদন করিবার লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
৫১। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ড দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পাঠ ও ব্যবহার উপযোগী প্রকাশনার জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স ইস্যু করিতে পারিবে।
৫২। বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে, এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করিতে পারিবে।
একাদশ অধ্যায়
কপিরাইট নিবন্ধন
৫৩। (১) কোনো কর্মের প্রণেতা, প্রকাশক বা কপিরাইট বা সম্পৃক্ত অধিকারের স্বত্বাধিকারী বা উহাতে স্বার্থ রহিয়াছে এইরূপ ব্যক্তি, নির্ধারিত ফরমে এবং নির্ধারিত ফি পরিশোধ করিয়া, তাহার নাম, ঠিকানা ও নির্ধারিত অন্যান্য তথ্য কপিরাইট রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্তির জন্য রেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন কোনো আবেদন প্রাপ্তির পর রেজিস্ট্রার, উপযুক্ত তদন্তের পর কর্মটির বিবরণ কপিরাইট রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে একটি নিবন্ধন সনদ প্রদান করিবেন।
(৩) কোনো কর্ম কপিরাইট রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হইলেও কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে অথবা কপিরাইট রেজিস্ট্রার স্বপ্রণোদিত হইয়া উক্ত কর্ম দ্বারা অন্য কোনো নিবন্ধিত কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘন হইয়াছে কিনা উহা তদন্ত করিতে পারিবেন এবং তদন্তে কপিরাইটের কোনো লঙ্ঘন প্রমাণিত হইলে উক্ত নিবন্ধন সংশোধন বা বাতিল করিতে পারিবেন।
(৪) কোনো নিবন্ধিত কর্মের সনদ হারাইয়া গেলে, চুরি হইলে বা বিনষ্ট হইলে কপিরাইট রেজিস্ট্রার উক্ত সনদের একটি প্রতিলিপি (duplicate copy) ইস্যু করিতে পারিবেন।
৫৪। (১) কোনো কপিরাইটের স্বত্ব প্রদানে আগ্রহী কোনো ব্যক্তিকে নির্ধারিত ফরমে নির্ধারিত ফি প্রদান করিয়া, যে স্বত্ব প্রদান করা হইবে উহার মূল দলিল এবং একটি অনুলিপি, রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিলপূর্বক স্বত্ব নিয়োগের নিবন্ধন করিতে হইবে।
(২) উপধারা (১) এর অধীন কোনো আবেদন প্রাপ্তির পর রেজিস্ট্রার, যথাযথ তদন্তের পর সন্তুষ্ট হইলে কপিরাইটের রেজিস্টারে প্রদত্ত বিবরণ সন্নিবেশ করিবেন।
(৩) যে স্বত্ব প্রদান করা হইয়াছে উহার সত্যায়িত অনুলিপিটি কপিরাইট অফিসে রাখা হইবে এবং মূল দলিলের সহিত নিবন্ধন সনদ সংযুক্ত করিয়া, উহার জমাদানকারীকে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
৫৫। (১) কপিরাইট রেজিস্টারে কোনো ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত হইলে, রেজিস্ট্রার স্ব উদ্যোগে বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে যুক্তিসংগত শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া, কপিরাইট রেজিস্টারে প্রয়োজনীয় সংশোধন করিতে পারিবেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন কপিরাইট রেজিস্টারে কোনো ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য সংশোধনের আবেদন দাখিলের পর, যদি রেজিস্ট্রার কপিরাইট রেজিস্টারে প্রয়োজনীয় সংশোধন করিতে অস্বীকৃতি জানান, তাহা হইলে বোর্ড স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত অনুসন্ধানপূর্বক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারীর দাবি পুনর্বিবেচনা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়, তাহা হইলে কপিরাইট রেজিস্টারে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
৫৬। ধারা ৫৩ এবং ৫৪ অনুযায়ী কপিরাইট রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত কপিরাইটের নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং ধারা ৫৫ অনুযায়ী কৃত সংশোধনীর তথ্য রেজিস্ট্রার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রকাশ করিবেন।
৫৭। (১) কপিরাইট রেজিস্টার ও ইনডেক্সের কোনো বিবরণ আপাত পর্যাপ্ত সাক্ষ্য হিসাবে গণ্য হইবে এবং রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রত্যয়িত এবং কপিরাইট অফিসের সিলমোহরকৃত কপিরাইট রেজিস্টার ও ইনডেক্সের কোনো অনুলিপি সকল আদালতে মূল দলিল বা সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে।
(২) কোনো কপিরাইটের নিবন্ধন সনদে যে ব্যক্তিকে যে ধরনের স্বত্বের অধিকারী হিসাবে দেখানো হইয়াছে তিনি সেইরূপ স্বত্বের অধিকারী হইবেন।
৫৮। রেজিস্ট্রার কর্তৃক ইনডেক্স, ফরম এবং রেজিস্টার পরিদর্শনের ক্ষেত্রে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে।
দ্বাদশ অধ্যায়
প্রকাশিত পুস্তক, সংবাদপত্র, সাময়িকী এবং চলচ্চিত্রের কপি, ইত্যাদি সরবরাহ
৫৯। (1) Printing Presses and Publications (Declaration and Registration) Act, 1973 (Act No. XXIII of 1973) এর section 24 এর বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি সত্ত্বেও, বাংলাদেশে প্রকাশিত পুস্তকের প্রকাশক, প্রকাশনার তারিখ হইতে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে, বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার হইতে International Standard Book Number (ISBN) সংগ্রহপূর্বক নিজ খরচে উত্তম বাঁধাই বা সেলাই বা স্টিচকৃত, সর্বোত্তম কাগজে মুদ্রিত এবং মূল বইতে ম্যাপ ও চিত্র থাকিলে উহাসহ হুবহু একটি কপি জাতীয় গ্রন্থাগারে জমা প্রদান করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, পরবর্তী কোনো সংস্করণে পুস্তকটিতে কোনো তথ্যের সংযোজন বা পরিবর্তন আনা না হইলে উহা প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
(২) Printing Presses and Publications (Declaration and Registration) Act, 1973 (Act No. XXIII of 1973) এর section 26 এর বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রত্যেক সাময়িকী ও সংবাদপত্রের প্রকাশক নিজ খরচে সংশ্লিষ্ট সাময়িকী বা সংবাদপত্রের প্রতি সংখ্যার একটি কপি উহা প্রকাশিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গ্রন্থাগারে সরবরাহ করিবেন।
(৩) সরকার কর্তৃক বা সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের অধীন প্রকাশিত পুস্তক, সাময়িকী ও সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে উপধারা (১) ও (২) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কেবল দাপ্তরিক কার্যে ব্যবহারের জন্য প্রকাশিত পুস্তকের ক্ষেত্রে উক্ত বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে না।
(৪) উপধারা (১), (২) ও (৩) এর অধীন পুস্তক, সাময়িকী ও সংবাদপত্র সরবরাহের প্রমাণক হিসেবে উহার জমাকারীকে লিখিত রসিদ প্রদান করিতে হইবে।
৬০। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, চলচ্চিত্রের স্বত্বাধিকারীগণ তাহাদের নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য অথবা যে কোনো দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের অন্যূন একটি কপি দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ, ভবিষ্যতে গবেষণা বা অন্য কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে দাখিল করিবেন।
৬১। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো সংগীত কর্মের স্বত্বাধিকারীগণ প্রণীত বা প্রকাশিত সংগীত কর্মের অডিও-ভিডিও এর অন্যূন একটি কপি দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ, ভবিষ্যতে গবেষণা বা অন্য কোনো প্রয়োজনে অডিও এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেতার এবং ভিডিও এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টেলিভিশনের আর্কাইভে উহা প্রকাশের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে দাখিল করিবেন।
ত্রয়োদশ অধ্যায়
আন্তর্জাতিক কপিরাইট
৬২। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই মর্মে ঘোষণা প্রদান করিতে পারিবে যে, এই আইনের সকল বা যে কোনো বিধান নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যথা:-
(ক) কোনো কর্ম বাংলাদেশের বাহিরের কোনো ভূখণ্ডে প্রথম প্রকাশিত হইয়াছে যাহাতে এই আদেশটি এইরূপে সম্পর্কিত যেন উহা বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত হইয়াছিল;
(খ) কোনো অপ্রকাশিত কর্ম বা কর্ম শ্রেণি যাহার প্রণেতা বা প্রণেতাগণ উহার প্রণয়নকালে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিক হইলেও আদেশটি এইরূপে সম্পর্কিত যেন প্রণেতা বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন;
(গ) কোনো কর্ম যাহার প্রণেতা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রে স্থায়ী বাসিন্দা হইলেও আদেশটি এইরূপে সম্পর্কিত যেন তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা; এবং
(ঘ) কোনো কর্ম যাহার প্রণেতা উহার প্রথম প্রকাশনার তারিখে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন বা তাহার মৃত্যু হইলে, উহার প্রকাশের সময় তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে মৃত্যুবরণ করিলেও আদেশটি এইরূপে সম্পর্কিত যেন উহার প্রণেতা কর্মটির প্রকাশকালে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন প্রজ্ঞাপন জারির পূর্বে, সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হইবে যে, কোনো বিদেশি রাষ্ট্র, যাহার সহিত কপিরাইট বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি বলবৎ নাই, সেই রাষ্ট্র এইরূপ কোনো বিধান প্রণয়ন করিয়াছে বা করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছে যাহাতে এই আইনের বিধানাবলির আওতায় উক্ত রাষ্ট্রে উক্ত কর্মের কপিরাইটের অধিকার সংরক্ষণের জন্য উহা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।
(৩) উপধারা (১) এর অধীন প্রজ্ঞাপনে এই মর্মে বিধান করা যাইবে যে,-
(ক) এই আইনের বিধানাবলি সাধারণভাবে অথবা প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত কর্ম বা উক্ত শ্রেণির বিষয়াবলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে;
(খ) বাংলাদেশের কপিরাইটের মেয়াদ যে বিদেশি রাষ্ট্রের সহিত আদেশটি সম্পর্কিত তাহার প্রণীত আইন দ্বারা নির্ধারিত মেয়াদ অতিক্রম না করে;
(গ) জাতীয় গ্রন্থাগারে পুস্তকের কপি সরবরাহ সম্পর্কিত এই আইনের বিধানাবলি, আদেশের দ্বারা যতখানি সম্ভব বিধান করা যায় উহা ব্যতীত, উক্ত রাষ্ট্রে প্রথম প্রকাশিত কর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না;
(ঘ) কপিরাইটের স্বত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট বিদেশি রাষ্ট্রের আইনের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া যতদূর অব্যাহতি ও সংশোধনের বিবেচনা করা যায়, আদেশে প্রয়োজন অনুযায়ী সেইরূপ বিধান করা যাইবে;
(ঙ) এই আইন বা ইহার অংশবিশেষ আদেশের কার্যকারিতা আরম্ভ হওয়ার পূর্বে প্রণীত বা প্রথম প্রকাশিত কর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না; এবং
(চ) এই আইন দ্বারা প্রদত্ত অধিকার এতদুদ্দেশ্য প্রদত্ত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও আনুষ্ঠানিকতা সাপেক্ষে কার্যকর হইবে।
(৪) সরকার, উপধারা (১) এর বিধান বাংলাদেশের বাহিরের অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং সংশ্লিষ্ট অভিনেতা ও প্রযোজক এবং সম্প্রচার সংস্থার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করিতে পারিবে।
৬৩। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই মর্মে ঘোষণা করিতে পারিবে যে, এই ধারার বিধানাবলি উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত সংস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে; তবে উক্ত সংস্থায় অবশ্যই এক বা একাধিক সার্বভৌম রাষ্ট্র সদস্য থাকিবে।
(২) যে ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোনো সংস্থার নির্দেশ বা নিয়ন্ত্রণাধীনে কোনো কর্ম সম্পাদিত হয় বা প্রথম প্রকাশিত হয়, এবং এই ধারার ব্যবস্থা ব্যতীত অন্য কোনোভাবে বাংলাদেশে উক্ত কর্মের কোনো কপিরাইট থাকিত না বা, ক্ষেত্রমত, উহার প্রথম প্রকাশ বাংলাদেশে হইত না এবং প্রকাশিত হইলেও উপরি-উক্তভাবে কর্মটির প্রণেতার সহিত এইরূপ চুক্তি থাকিত, যাহাতে কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণ করে না, অথবা ধারা ১৫ এর অধীন কর্মটির কপিরাইট কোনো সংস্থার মালিকানাধীন, সেইক্ষেত্রে সমগ্র বাংলাদেশে কর্মটির কপিরাইট বিদ্যমান থাকিবে ।
(৩) এই ধারা প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোনো সংস্থা, বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসাবে গণ্য বা আইনগত যোগ্যতা থাকুক বা নাই থাকুক, কপিরাইটের অধিকারী হওয়া বা কপিরাইট সম্পর্কিত কার্যাদি সম্পাদন করা এবং কপিরাইট প্রয়োগের উদ্দেশ্যে উহা আইনগত ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল এবং রহিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
৬৪। যদি সরকারের নিকট এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশি কর্মের প্রণেতার স্বার্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতেছে না, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই মর্মে আদেশ জারি করিতে পারিবে যে, এই আইনের যে সকল বিধান দ্বারা বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশিত কোনো বিদেশি প্রণেতার কর্মের জন্য কপিরাইট প্রদান করা হইয়াছিলো সেই সকল বিধান, উক্তরূপ কর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
চতুর্দশ অধ্যায়
রয়্যালটি
৬৫। বোর্ড কোনো কর্মের সম্পাদন, সম্প্রচার বা পরিবেশনের জন্য উক্ত কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী বা প্রণেতাকে পরিশোধের নিমিত্ত রয়্যালটি নির্ধারণ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রণেতা বা ক্ষেত্রবিশেষে সম্পাদনকারী তাহার কর্মটি কোনো চুক্তির অধীনে অভিযোজন, সম্পাদন, পুনঃসম্পাদন বা পরিবেশনের জন্য চুক্তিতে উল্লিখিত পরিমাণের রয়্যালটি নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
৬৬। (১) কোনো কপিরাইট সমিতি উহার সহিত নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীর কোনো কর্ম, কোনো স্থির শব্দ-ধ্বনি বা দর্শনযোগ্য মাধ্যমে বা পুনঃআহরণযোগ্য অন্য কোনো মাধ্যমে পরিবেশন, প্রচার বা সম্প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিবেশন, প্রচার বা সম্প্রচার কিংবা পুনঃসম্প্রচার, স্ট্রিমিং (streaming), সাবসক্রিপশন (subscription), ডাউনলোড (download), ইত্যাদিতে নিয়োজিত ব্যক্তির নিকট হইতে নির্ধারিত রয়্যালটি আদায় করিতে পারিবে; তবে কপিরাইট সমিতি সক্রিয়ভাবে কার্যকর না থাকিলে, রয়্যালটি সংশ্লিষ্ট কর্মের প্রণেতা বা সম্পাদনকারী, ক্ষেত্র বিশেষে কপিরাইট অফিসের অনুকূলে পরিশোধ করিতে হইবে।
(২) কপিরাইট সমিতি উহার দায়িত্ব পালনের জন্য আদায়কৃত রয়্যালটি হইতে নির্ধারিত চার্জ সমিতির নামীয় হিসাবে জমা রাখিতে পারিবে এবং উক্তরূপ চার্জের বার্ষিক হিসাব কপিরাইট অফিসে দাখিল করিতে হইবে।
৬৭। (১) কোনো কর্মের কপিরাইটের মেয়াদ শেষ হইবার পরও সরকার, প্রয়োজনে, উহার উপর স্বত্ব আরোপ এবং পুনরুৎপাদন, পুনঃঅভিযোজন, ব্যবহার, পরিবেশন, সম্পাদন বা কোনো মাধ্যমে প্রচার বা সম্প্রচারের উপর রয়্যালটি আরোপ ও আদায় করিতে পারিবে।
(২) পাবলিক ডোমেইনভুক্ত কোনো কর্মের রয়্যালটি বাবদ অর্জিত অর্থ সরকার উক্ত কর্মের প্রসারের প্রণোদনা সৃষ্টি, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্তরূপ রয়্যালটি বাবদ অর্জিত অর্থের সমুদয় বা অংশবিশেষ কর্মটির প্রণেতা বা কপিরাইটের স্বত্বাধিকারীর উত্তরাধিকারীগণের মধ্যেও বণ্টন করিতে পারিবে।
৬৮। লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতি বা, ক্ষেত্রমত, পাবলিক ডোমেইনভুক্ত কোনো কর্মের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী অথবা সরকারকে কিংবা কপিরাইট সমিতির মাধ্যমে বা, ক্ষেত্রমত, কপিরাইট অফিসের মাধ্যমে রয়্যালটি পরিশোধ ব্যতিরেকে যদি উহার সম্পাদন বা সম্প্রচার করা হয়, তাহা হইলে উক্ত সম্প্রচার কপিরাইটের লঙ্ঘন মর্মে গণ্য হইবে, এবং এইরূপ লঙ্ঘিত সম্পাদন বা সম্প্রচার বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে।
পঞ্চদশ অধ্যায়
কপিরাইট লঙ্ঘন, ইত্যাদি
৬৯। (১) যদি কোনো ব্যক্তি কপিরাইটের মালিক বা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতীত বা লাইসেন্সের শর্ত বা কপিরাইট সমিতি কর্তৃক আরোপিত কোনো শর্ত লঙ্ঘনপূর্বক নিম্নবর্ণিত কোনো কার্য করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কার্য দ্বারা কোনো কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যথা:-
(ক)এইরূপ কিছু করা যাহা করিবার একচেটিয়া অধিকার এই আইন দ্বারা কপিরাইটের মালিককে প্রদান করা হইয়াছে; অথবা
(খ) লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে জনসাধারণ্যে এইরূপ কোনো কর্ম সম্পাদনের জন্য অনুমতি প্রদান করা যাহাতে কর্মটির কপিরাইট লঙ্ঘিত হয়, যদি না ইহা প্রমাণ করা হয় যে, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না বা অনুরূপ সম্পাদন কপিরাইটের লঙ্ঘন হইবে মর্মে বিশ্বাস করিবার কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছিল না।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোনো কার্য করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কার্য দ্বারা কোনো কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যথা:-
(ক) কর্মটির বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করা বা বিক্রয় বা ভাড়া প্রদানের ব্যবস্থা করা অথবা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা বা বিক্রয় বা ভাড়া প্রদানের প্রস্তাব করা;
(খ) বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অথবা কপিরাইটের মালিকের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় এইরূপ মাত্রায় উহার বিতরণ করা;
(গ) বাণিজ্যিকভাবে উহা জনসাধারণকে প্রদর্শন করা;
(ঘ) কোনো কর্মের অধিকার লঙ্ঘিত অনুলিপি বাংলাদেশে আমদানি করা;
(ঙ) জাতীয় সংগীত, দেশাত্ববোধক ও ধর্মীয় সংগীত (হামদ্, নাত, গজল, কীর্তন, ইত্যাদি) এর কথা ও সুর পরিবর্তন করিয়া প্যারোডি বা ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা; অথবা
(চ) ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে অথবা অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সিস্টেম, ডিজিটাল নেটওয়ার্কে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো তথ্য পরিবর্তন করা, মুছিয়া ফেলা, নূতন কোনো তথ্যের সংযুক্তি বা বিকৃতি ঘটানোর মাধ্যমে উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাস করা।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সাহিত্য, নাটক, সংগীত বা অন্য কোনো শিল্পকর্মকে চলচ্চিত্রে রূপান্তর উহার অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি বলিয়া গণ্য হইবে।
৭০। (১) এতদুদ্দেশ্যে বিধিতে উল্লিখিত উদ্দেশ্য ও শর্ত অনুসারে যদি কোনো সাহিত্য, নাট্য, সংগীত বা শিল্পকর্মের পুনরুৎপাদন, অভিযোজন, শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং প্রচার, সম্প্রচার, প্রদর্শন, প্রকাশন বা সদ্ব্যবহার করা হয় কিংবা অন্য যে কোনো ভাষায় অনুবাদ তৈরি বা প্রকাশনা করা হয় তাহা হইলে উক্তরূপ কার্যাদি দ্বারা কপিরাইট লঙ্ঘিত হইবে না।
(২) যেক্ষেত্রে কোনো কর্মের সাধারণ ফরম্যাট দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের উপযোগী না হইয়া থাকে সেইক্ষেত্রে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের স্বার্থে কাজ করিয়া থাকে এইরূপ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তৈরিকৃত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পাঠ বা ব্যবহার উপযোগী ব্রেইল বা অন্য কোনো বিশেষ বিন্যাস তৈরি বা আমদানি দ্বারা কপিরাইট লঙ্ঘিত হইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত তৈরিকৃত বিশেষ বিন্যাসের অনুলিপি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মধ্যে উৎপাদন ব্যয়ের মূল্য ব্যতিরেকে সম্পূর্ণ অলাভজনক ভিত্তিতে বিতরণ করিতে হইবে:
আরও শর্ত থাকে যে, উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করিবে যে, উক্ত বিশেষ বিন্যাসে তৈরিকৃত অনুলিপি কেবল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীগণ ব্যবহার করিবে এবং ইহার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
৭১। ধারা ৭৩ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো সম্প্রচারিত বিষয়ে সম্প্রচার পুনরুৎপাদন অধিকার অব্যাহত থাকাকালে কোনো ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট সম্প্রচার সংস্থার লাইসেন্স ব্যতীত নিম্নের এক বা একাধিক কার্য সম্পাদন করেন, তাহা হইলে তিনি সম্প্রচার পুনরুৎপাদনের অধিকার লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যথা:-
(ক)সম্প্রচারটি পুনঃসম্প্রচার করা;
(খ) অর্থের বিনিময়ে সম্প্রচারটি জনগণকে দেখা বা শুনিবার ব্যবস্থা করা;
(গ) সম্প্রচারটির যে কোনো সংযোজন, বিয়োজন বা সম্পাদন করা;
(ঘ) সম্প্রচারটির প্রাথমিক সম্পাদনা বা লাইসেন্স থাকিবার ক্ষেত্রে উহার উদ্দেশ্যে বহির্ভূত ক্ষেত্রে সম্পাদনাটির পুনরুৎপাদন করা; এবং
(ঙ) দফা (গ) অথবা (ঘ) এ উল্লিখিত কোনো সম্পাদনা বা অনুরূপ সম্পাদনার পুনরুৎপাদনকে জনগণের জন্য বিক্রয় করা, ভাড়া দেওয়া অথবা বিক্রয় বা ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব করা।
৭২। ধারা ৭৩ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো সম্পাদনের বিষয়ে সম্পাদনকারীর অধিকার অব্যাহত থাকাকালে কোনো ব্যক্তি সম্পাদনকারীর অনুমতি ব্যতীত উক্ত সম্পাদন অথবা উহার মৌলিক অংশের বিষয়ে নিম্নরূপ কোনো কার্য করিলে তিনি সম্পাদনকারীর অধিকার লঙ্ঘন করিয়াছেন মর্মে গণ্য হইবে, যথা :-
(ক) সম্পাদনটি কোনো মাধ্যমে রেকর্ডিং করা;
(খ) রেকর্ডিংকৃত সম্পাদনটির পুনরুৎপাদন করা যাহাতে-
(অ) সম্পাদনকারীর সম্মতি না থাকে; বা
(আ) সম্পাদনকারী যে উদ্দেশ্যে সম্মতি দিয়াছিলেন উহা ভিন্ন অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা; বা
(ই) উক্ত সম্পাদন ধারা ৭৩ এর বিধানাবলিতে বর্ণিত উদ্দেশ্য হইতে ভিন্ন হয়;
(গ) সম্পাদনটি এইরূপে সম্প্রচার করা হয় যাহাতে শব্দ-ধ্বনি রেকর্ডিং বা দর্শনসাধ্য রেকর্ডিং না করিয়া সম্পাদন করা হয় অথবা একই সম্প্রচার সংস্থা কর্তৃক ইতঃপূর্বে সম্প্রচারিত বিষয়ের পুনঃসম্প্রচার যাহা সম্পাদনকারীর অধিকার লঙ্ঘন করে নাই, ইহার ব্যতিক্রম কিছু করা হইলে; এবং
(ঘ) সম্প্রচার ব্যতীত অন্য কোনোভাবেও সম্পাদনটি জনগণের নিকট পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।
৭৩। (১) উপধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো সম্প্রচার পুনরুৎপাদন অধিকার বা সম্পাদনকারীর অধিকার নিম্নবর্ণিত কার্যাবলি দ্বারা লঙ্ঘিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না, যথা:-
(ক) শব্দ রেকর্ডিং বা দর্শনসাধ্য রেকর্ডিং তৈরিকারকের ব্যক্তিগত ব্যবহার অথবা কেবল শিক্ষাদান অথবা গবেষণার উদ্দেশ্যে তৈরি;
(খ) কোনো সম্পাদন বা সম্পাদনের উদ্বৃত্ত অংশ সদ্ব্যবহার, চলমান ঘটনা প্রচার, পর্যালোচনা, শিক্ষা অথবা গবেষণার জন্য ব্যবহার; এবং
(গ) প্রয়োজনীয় অভিযোজন এবং সংশোধনীসহ অনুরূপ অন্যান্য কার্য যাহাতে ধারা ৭০ এর অধীন কপিরাইট লঙ্ঘন সংঘটিত হয় না।
(২) কোনো কর্ম বা সম্পাদনের ক্ষেত্রে কপিরাইট বা সম্পাদনকারীর অধিকার যদি বিদ্যমান থাকে সেইক্ষেত্রে উক্ত সম্প্রচার পুনরুৎপাদনের জন্য প্রদত্ত কোনো লাইসেন্স কার্যকর হইবে না, যদি না উহা কপিরাইটের মালিক বা, ক্ষেত্রমত, সম্পাদনকারীর অথবা উভয়ের সম্মতিক্রমে প্রদত্ত হয়।
৭৪। প্রকাশকের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে অন্য কোনো ব্যক্তি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ফটোগ্রাফিক, ডিজিটাল বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় কোনো সংস্করণ বা উহার মৌলিক অংশের মুদ্রণশৈলীগত বিন্যাসের কপি তৈরি করিলে বা করিবার কারণ ঘটাইলে, তিনি প্রকাশকের অধিকার লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; উক্ত প্রক্রিয়া এবং বিষয়বস্তুর প্রকৃতির গ্রহণযোগ্যতা সাপেক্ষে প্রকাশক এবং সংস্করণসমূহের মুদ্রণশৈলীগত বিন্যাস যথাক্রমে প্রণেতা ও কর্ম হিসাবে বিবেচিত হইবে।
ব্যাখ্যা।- “মুদ্রণশৈলীগত বিন্যাস” অর্থে ক্যালিগ্রাফিও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৭৫। এতদুদ্দেশ্যে বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতি মোতাবেক তথ্যাদি ও বিবরণী অন্তর্ভুক্ত না করিয়া, কোনো শব্দ-ধ্বনি বা ভিডিও কর্ম রেকর্ডিং কিংবা প্রকাশ করা যাইবে না।
৭৬। (১) বাংলাদেশে তৈরি করা হইলে কপিরাইট লঙ্ঘন হইত এইরূপ কোনো কর্মের বাংলাদেশের বাহিরে তৈরিকৃত অনুলিপি বাংলাদেশে আমদানি করা যাইবে না।
(২) এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি সাপেক্ষে, রেজিস্ট্রার বা এতদুদ্দেশ্যে তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপধারা (১) এ উল্লিখিত অনুলিপি পাওয়া যাইতে পারে এইরূপ কোনো উড়োজাহাজ, জাহাজ, যানবাহন, ডক বা আঙিনায় প্রবেশ করিতে পারিবেন এবং অনুরূপ অনুলিপি পরীক্ষা করিতে পারিবেন।
(৩) উপধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হয়, আমদানিকৃত এইরূপ অনুলিপি Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) এর section 16 এর বিধানানুসারে বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত পণ্যদ্রব্যরূপে গণ্য হইবে এবং উক্ত আইনের বিধানানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত আইনের অধীন বাজেয়াপ্তকৃত সকল কপি সরকারের নিকট ন্যস্ত করিতে হইবে বা সরকারকে অবগত করিয়া কর্মটির কপিরাইটের মালিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রযোজ্য বিমোচন ফি সরকারের অনুকূলে পরিশোধ সাপেক্ষে তাহাকে ফেরত প্রদান করা যাইবে।
ষোড়শ অধ্যায়
দেওয়ানি প্রতিকার
৭৭। (১) যেক্ষেত্রে কোনো কর্মের কপিরাইট অথবা এই আইনের অধীন অর্পিত অন্য কোনো অধিকার লঙ্ঘন করা হয়, সেইক্ষেত্রে কপিরাইটের বা, ক্ষেত্রমত, অনুরূপ অন্য অধিকারের স্বত্বাধিকারী, এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকা সাপেক্ষে, নিষেধাজ্ঞা, ক্ষতিপূরণ, হিসাব এবং অন্যান্য সকল প্রতিকার এবং স্বত্ব লঙ্ঘনের দায়ে আইনে প্রদত্ত অন্যান্য প্রতিকার পাইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, স্বত্ব লঙ্ঘনের তারিখে সংশ্লিষ্ট কর্মে কপিরাইট বিদ্যমান ছিল মর্মে তিনি অবগত ছিলেন না এবং উক্ত কর্মের কপিরাইট ছিল না মর্মে তাহার বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল, তাহা হইলে অভিযোগকারী, স্বত্ব লঙ্ঘন সম্পর্কে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও আদেশ ব্যতীত স্বত্ব লঙ্ঘনকৃত কপি বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের বিষয়ে কোনো দেওয়ানি প্রতিকার পাইবার অধিকারী হইবেন না।
(২) যখন কোনো সাহিত্য, নাট্য, লোকসংস্কৃতি ও সংগীত কর্মের ক্ষেত্রে কর্মটি প্রকাশিত হইবার সময় উহার কপির উপর প্রণেতা বা, ক্ষেত্রমত, প্রকাশকের পরিচয় বহনকারী কোনো নাম দৃষ্টিগোচর হয়, অথবা কোনো শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে, কর্মটি তৈরি হইবার সময় উহার উপর কোনো নাম দৃষ্টিগোচর হয়, সেইক্ষেত্রে যে ব্যক্তির নাম ঐরূপে দৃষ্টিগোচর হয় বা হইয়াছিল, ঐরূপ কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘন সম্পর্কে যে কোনো আইনগত কার্যক্রমে সেই ব্যক্তিকে প্রণেতা বা, ক্ষেত্রমত, প্রকাশক হিসাবে অনুমান করা হইবে, যদি না ভিন্নরূপ কিছু প্রমাণিত হইয়া থাকে ।
৭৮। (১) কোনো কর্মে উহার প্রণেতার, ক্ষেত্র বিশেষে সম্পাদনকারীর, অনপনেয় অধিকার থাকিবে এবং কোনো কর্মের প্রণেতা তাহার কর্মের কপিরাইট স্বত্ব নিয়োগ বা পরিত্যাগ করা সত্ত্বেও, কর্মটির প্রণয়নস্বত্ব দাবি করিতে পারিবেন এবং উক্ত কর্মের কোনো বিকৃতি বা অন্যান্য পরিবর্তন সম্পর্কে অথবা উক্ত কর্মটির বিষয়ে তাহার সম্মান ও সুখ্যাতি ক্ষুণ্ণ হইতে পারে এইরূপ অন্যান্য কার্যের জন্য, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ক্ষতিপূরণ এবং উক্তরূপ কার্যের দেওয়ানি প্রতিকার দাবি করিতে পারিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৭০ প্রযোজ্য হয় এইরূপ কম্পিউটার প্রোগ্রামের কোনো অভিযোজন নিয়ন্ত্রণের বা উক্তরূপ বাবদ ক্ষতিপূরণ দাবি করিবার কোনো অধিকার উক্ত প্রণেতার থাকিবে না।
ব্যাখ্যা।- কোনো কর্ম প্রদর্শনে বা প্রণেতার নিকট সন্তোষজনকভাবে উহা প্রদর্শনে ব্যর্থতা এই ধারার অধীন অধিকার লঙ্ঘন মর্মে গণ্য হইবে না।
(২) কোনো কর্মের প্রণয়নস্বত্ব দাবি করিবার অধিকার ব্যতীত উপধারা (১) এর অধীন কোনো কর্মের প্রণেতাকে প্রদত্ত অন্য কোনো অধিকার উক্ত প্রণেতার আইনানুগ প্রতিনিধি দ্বারা প্রয়োগ করা যাইবে।
৭৯। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যেক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যক্তি কোনো কর্মের কপিরাইটের অন্তর্ভুক্ত ভিন্ন ভিন্ন অধিকারের মালিক হন, সেইক্ষেত্রে উক্তরূপ যে কোনো অধিকারের মালিক উক্ত অধিকারের পরিসীমায় এই আইনে বিধৃত দেওয়ানি প্রতিকার পাইবেন এবং কোনো মামলা দায়ের, ব্যবস্থা গ্রহণ বা অন্যান্য আইনগত কার্যক্রমের মাধ্যমে উক্তরূপ মামলা বা আইনগত কার্যক্রমে অন্য যে কোনো অধিকারের মালিককে পক্ষ না করিয়া স্বতন্ত্রভাবে উক্তরূপ স্বত্ব প্রয়োগ করিতে পারিবেন।
৮০। কপিরাইট বিদ্যমান রহিয়াছে এইরূপ কোনো কর্মের অধিকার লঙ্ঘনকারী সকল অনুলিপি এবং উক্তরূপ অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি তৈরির জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য উদ্দিষ্ট প্লেট এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সোর্স কোড কমপাইলেশন, ডাটা, ডিজাইন ডকুমেন্টেশন, টেবিল এবং আনুষঙ্গিক চার্টসমূহ কপিরাইটের মালিকের সম্পত্তি বলিয়া গণ্য হইবে, যিনি উহাদের দখল পুনরুদ্ধারের বা উহাদের রূপান্তর সম্পর্কে দেওয়ানি আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, কপিরাইটের মালিক কোনো অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপির রূপান্তর সম্পর্কে কোনো প্রতিকার পাইবেন না, যদি বিবাদী আদালতে প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে-
(ক) কর্মটির কপিরাইট বিদ্যমান রহিয়াছে মর্মে তিনি জ্ঞাত ছিলেন না এবং তাহার এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ ছিল যে, কর্মটির অনুলিপি অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি নহে এবং উহার কপিরাইট বিদ্যমান ছিল; বা
(খ) ঐরূপ অনুলিপি বা প্লেট কোনো কর্মের কপিরাইটের অধিকার লঙ্ঘন সংশ্লিষ্ট নহে মর্মে তাহার বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ ছিল।
৮১। (১) কোনো একচেটিয়া লাইসেন্সধারী কর্তৃক কপিরাইট লঙ্ঘন বিষয়ে দায়েরকৃত প্রত্যেক দেওয়ানি মামলা বা অন্যান্য দেওয়ানি কার্যধারায় কপিরাইটের মালিককে বিবাদী করিতে হইবে, যদি না আদালত ভিন্নরূপ নির্দেশ দান করে, এবং যেক্ষেত্রে এইরূপ মালিক বিবাদী হয়, একচেটিয়া লাইসেন্সধারীর দাবির বিরোধিতা করিবার অধিকার তাহার থাকিবে।
(২) যেক্ষেত্রে কপিরাইট লঙ্ঘন বিষয়ে একচেটিয়া লাইসেন্সধারী কর্তৃক দায়েরকৃত কোনো দেওয়ানি মামলায় প্রতিকার পাওয়া যায়, সেইক্ষেত্রে একই কারণে কপিরাইটের মালিক কর্তৃক আনীত নতুন মামলা বা অন্য কোনো দেওয়ানি কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।
৮২। (১) নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কোনো কর্মের প্রণেতা বা তাহার বৈধ লাইসেন্সধারীর কপিরাইট বা অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘিত হইয়াছে মর্মে প্রতীয়মান হইলে উক্ত কর্মের প্রণেতা বা তাহার বৈধ লাইসেন্সধারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী বা তৃতীয় পক্ষ বরাবর লিখিত আপত্তি জানানো সাপেক্ষে উক্ত নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি বা মাধ্যম বা প্রতিষ্ঠান উক্ত আপত্তিকৃত কর্মের সমুদয় অনুলিপি তাহার নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোনো মাধ্যম হইতে যথাশীঘ্র অপসারণপূর্বক অভিযোগকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে; অন্যথায় উক্ত সেবা প্রদানকারী নেটওয়ার্ক বা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা তৃতীয় পক্ষ কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত অপরাধের জন্য দায়ী হইবে।
(২) কোনো কর্মের বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস হইতে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “সেবা প্রদানকারী” অর্থ তথ্য প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, ডিজিটাল প্লাটফর্মসহ যেকোনো মাধ্যমে সম্প্রচার, প্রকাশনা এবং প্রকাশকারী নেটওয়ার্ক, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান।
৮৩। কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত প্রত্যেক দেওয়ানি মামলা বা অন্য কোনো দেওয়ানি কার্যধারা সংশ্লিষ্ট এলাকার এখতিয়ারসম্পন্ন জেলা জজ আদালতে দায়ের করা যাইবে।
সপ্তদশ অধ্যায়
ফৌজদারি অপরাধ ও দণ্ড
৮৪। যদি কোনো ব্যক্তি এই অধ্যায়ের অধীন শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ ব্যতীত কপিরাইট সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অধিকার লঙ্ঘন করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৪(চার) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি আদালতের নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, লঙ্ঘনটি ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ধারায় মুনাফার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয় নাই, তাহা হইলে আদালত অনধিক ৬(ছয়) মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।
৮৫। যদি কোনো ব্যক্তি চলচ্চিত্রের কপিরাইট বা এই আইনে বর্ণিত অন্য কোনো অধিকার ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৮৬। যদি কোনো প্রকাশক কোনো সাহিত্যকর্মের প্রণেতার সহিত সম্পাদিত চুক্তির কোনো শর্ত লঙ্ঘনপূর্বক, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য থাকুক বা না থাকুক, পুস্তকের অতিরিক্ত কপি মুদ্রণ ও প্রকাশ করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, এবং উক্ত অতিরিক্ত প্রকাশিত পুস্তক বাজেয়াপ্ত হইবে।
৮৭। সম্প্রচারের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও সম্প্রচারে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কর্মের সম্প্রচার করিয়া থাকেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩(তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উক্ত অবৈধ সম্প্রচারটি বাজেয়াপ্ত হইবে।
৮৮। যদি কোনো কর্মের সম্পাদনে আগ্রহী কোনো ব্যক্তি উক্ত কর্মের প্রণেতার নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ না করিয়া বা উহাতে উল্লিখিত কোনো শর্তের ব্যত্যয় ঘটাইয়া উহার সম্পাদন করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৮৯। যদি কোনো ব্যক্তি কর্মের প্রণেতার মৃত্যুর পূর্বে অপ্রকাশিত কোনো কর্মের ক্ষেত্রে উইলমূলে বা অন্য কোনো আইনগত হস্তান্তর দলিল ব্যতিরেকে বা কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী কর্তৃক অস্বীকৃতির ক্ষেত্রে বোর্ড কর্তৃক উহার সম্পাদনের অধিকারী না হইয়া উহার সম্পাদন করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯০। যদি কোনো কপিরাইট সমিতি নির্ধারিত সময়সীমায় এবং পদ্ধতিতে, তৎকর্তৃক প্রদানকৃত লাইসেন্স ও আদায়কৃত ফি, ইত্যাদির বিবরণ সংবলিত রিটার্ন যথাসময়ে রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিল করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত কপিরাইট সমিতি অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
৯১। যদি কোনো চলচ্চিত্রের প্রযোজক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো চলচ্চিত্রের কপি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে জমা দানে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯২। যদি কোনো প্রকাশক কোনো পুস্তক প্রকাশনার তারিখ হইতে ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে অথবা কোনো সাময়িকী ও সংবাদপত্রের প্রকাশক তৎকর্তৃক প্রকাশিত সাময়িকী বা সংবাদপত্রের কপি উহা প্রকাশিত হইবার সংঙ্গে সংঙ্গে উহাদের কপি জাতীয় গ্রন্থাগারে জমা করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯৩। যদি কোনো ব্যক্তির অনুকূলে বোর্ড কর্তৃক কোনো কর্মের পুনরুৎপাদন, অভিযোজন অথবা অনুবাদ তৈরি ও প্রকাশের লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয় কিন্তু লাইসেন্স প্রদানের যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে উহার পুনরুৎপাদন, অভিযোজন অথবা অনুবাদ তৈরি ও প্রকাশে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উক্তরূপ মঞ্জুরকৃত লাইসেন্সটি বাতিল হইবে।
৯৪। যদি কোনো ব্যক্তি এই আইন বা এতদুদ্দ্যেশে প্রণীত বিধি লঙ্ঘন করিয়া কোনো পুস্তক বা সাময়িকী প্রকাশ করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩(তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উক্তরূপ প্রকাশিত পুস্তক বা সাময়িকী বাজেয়াপ্ত হইবে।
৯৫। যদি কোনো কর্ম যথাযথভাবে হস্তান্তরিত হইবার পর পুনরায় একই কর্ম একই ব্যক্তি কর্তৃক ভিন্ন কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করা হয়, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য হস্তান্তরকারী অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৩(তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি ইহা আদালতের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রামাণিত হয় যে, হস্তান্তরটি সরল বিশ্বাসে কৃত, সেইক্ষেত্রে আদালত কেবল অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।
৯৬। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী না হইয়া উহার প্রকাশ, পরিবেশন বা সম্পাদন করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯৭। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী বা ভবিষ্যৎ কর্মের কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী নিযুক্ত না হইয়া, অথবা স্বত্ব প্রদানকারী যে পরিমাণ স্বত্ব তাহাকে প্রদান করিয়াছেন তাহার অতিরিক্ত স্বত্বের মালিকানা প্রয়োগ করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯৮। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কর্মের পান্ডুলিপির মূল কপি অথবা প্রকাশিত বা মুদ্রিত গ্রন্থের বিক্রয় বা পুনঃবিক্রয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থের নির্ধারিত অংশ উহার প্রণেতাকে পরিশোধ না করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
৯৯। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো লোকজ্ঞান ও লোকসংস্কৃতির মৌলিক ঐতিহ্যিক বিন্যাসে পরিবর্তন ও বিকৃতি সাধন কিংবা বাণিজ্যিক অধিকার লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০০। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম লঙ্ঘন করিয়া উহার অনুলিপি কোনো মাধ্যমে ব্যবহার, প্রকাশ, বিক্রয় বা বিতরণ করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৪ (চার) বৎসর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৪ (চার) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, যদি আদালতের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ডিজিটাল কর্মটি ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ধারায় মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে লঙ্ঘিত হয় নাই, তাহা হইলে উক্ত অপরাধে দোষী ব্যক্তি অন্যূন ৩ (তিন) মাস কারাদন্ড বা অন্যূন ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০১। যদি কোনো ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত কোনো কাজ করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, যথা: -
(ক) কপিরাইট রেজিস্টারে কোনো মিথ্যা অন্তর্ভুক্তি সন্নিবেশ করেন বা করিবার কারণ ঘটান; বা
(খ) মিথ্যাভাবে রেজিস্টারে কোনো অন্তর্ভুক্তির অনুলিপির অর্থ বহনকারী কোনা লেখা লিখেন বা লিখান; বা
(গ) মিথ্যা জানিয়া উক্তরূপ কোনো অন্তর্ভুক্তি বা লেখা সাক্ষ্য হিসাবে উপস্থাপন বা প্রদান করেন অথবা উপস্থাপন বা প্রদান করিবার কারণ ঘটান।
১০২। যদি কোনো ব্যক্তি-
(ক) কোনো কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তাকে এই আইনের কোনো বিধানের আওতায় তাহার যে কোনো কার্য সম্পাদনে প্রতারণা করিবার অভিপ্রায়ে; বা
(খ) এই আইন বা ইহার অধীন কোনো বিষয় সম্পর্কে কোনো কিছু করিতে বা না করিতে প্রভাবিত করিবার অভিপ্রায়ে,
মিথ্যা জানিয়া কোনো মিথ্যা বিবৃতি বা ব্যাখ্যা প্রদান করেন তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০৩। যদি কোনো ব্যক্তি-
(ক) প্রণেতা নহেন এইরূপ কাহারো নাম কোনো কর্মের ভিতরে বা উপরে বা উক্ত কর্মের পুনরুৎপাদিত অনুলিপির ভিতরে বা উপরে এইরূপে সন্নিবেশ বা সংযুক্ত করেন, যাহাতে এই মর্মে ইঙ্গিত বহন করে যে উক্তরূপ ব্যক্তি কর্মটির প্রণেতা; অথবা
(খ) এইরূপ কোনো কর্ম প্রকাশ, বিক্রয় বা ভাড়ায় প্রদান করেন অথবা বাণিজ্যিকভাবে জনসমক্ষে প্রদর্শন করেন যে, কর্মের ভিতরে বা উপরে এইরূপ কোনো ব্যক্তির নাম এইরূপে সন্নিবেশ বা সংযুক্ত করা হইয়া থাকে যাহাতে এই মর্মে ইঙ্গিত বহন করে যে, উক্তরূপ ব্যক্তি কর্মটির প্রণেতা বা প্রকাশক, কিন্তু যিনি তাহার জানামতে উক্তরূপ কর্মের প্রণেতা বা প্রকাশক নহেন; অথবা
(গ) দফা (খ) এ উল্লিখিত কোনো কর্ম করেন বা সেই কর্মের পুনরুৎপাদন এইরূপে বিতরণ করেন যে, কর্মের ভিতর বা উপরে কোনো ব্যক্তির নাম এইরূপে সন্নিবেশ বা সংযুক্ত করা হয় যাহাতে এই মর্মে ইঙ্গিত বহন করে যে, উক্তরূপ ব্যক্তি কর্মটির প্রণেতা, কিন্তু যিনি তাহার জানামতে উক্তরূপ কর্মের প্রণেতা নহেন, অথবা কর্মটি জনসমক্ষে সম্পাদন করেন বা কোনো বিশেষ প্রণেতার কর্মরূপে কর্মটি সম্প্রচার করেন যিনি যাহার জানামতে উক্তরূপ কর্মের প্রণেতা নহেন-
তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০৪। যদি কোনো ব্যক্তি শব্দধ্বনি রেকর্ডিং, ভিডিও চিত্র ও ডিজিটাল কর্মে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত তথ্যাদি অন্তর্ভুক্ত না করিয়া কোনো রেকর্ড বা ভিডিও চিত্র বা ডিজিটাল কর্ম প্রকাশ করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০৫। যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কপিরাইট বিদ্যমান রহিয়াছে এইরূপ কোনো কর্মের অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি তৈরি করিবার উদ্দেশ্যে কোনো প্লেট বা সফ্ট কিংবা ডিজিটাল বা অনুরূপ অন্য কোনো কপি তৈরি করেন বা দখলে রাখেন, বা কপিরাইটের মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং তাহার ব্যক্তিগত লাভের জন্য উক্তরূপ কোনো কর্মের জনসাধারণ্যে সম্পাদনের কারণ ঘটান, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
১০৬। যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন দন্ডিত হইয়া পুনরায় অনুরূপ কোনো অপরাধে দোষী হন তা হইলে তিনি দ্বিতীয় এবং পরবর্তী প্রত্যেক অপরাধের জন্য অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হইবেন।
১০৭। (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোনো কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত সত্ত্বা হইলে, উক্ত উপধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে এই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে কেবল অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে “কোম্পানি” অর্থে নিগমিত বা নিবন্ধিত হউক বা না হউক এইরূপ যে কোনো কোম্পানি, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থা এবং সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সরকারের সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিকানাধীন কোনো কোম্পানিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
১০৮। (১) সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যদার নিম্নে নহেন এইরূপ কোনো পুলিশ কর্মকর্তার অথবা রেজিস্ট্রারের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত সহকারী রেজিস্ট্রার পদামর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ কোনো কর্মকর্তার, যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোনো কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘণ হইয়াছে বা হইতেছে, তাহা হইলে তিনি, গ্রেফতারি পরোয়ানা ব্যতিরেকে, সংশ্লিষ্ট স্থান তল্লাশি করিতে পারিবেন এবং কর্মটির সকল লঙ্ঘিত অনুলিপি এবং এইরূপ অনুলিপি তৈরি, বিতরণ, প্রদর্শন ও বহনের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সকল ট্রেসিং প্লেট, সফট কপি বা ডিজিটাল বা অনুরূপ অন্য কোনো কপি সামগ্রী বা উপকরণ জব্দ করিতে পারিবেন এবং, যতদ্রুত সম্ভব, উক্তরূপ জব্দকৃত সকল কপি, ট্রেসিং প্লেট, সফট কপি, সামগ্রী এবং উপকরণ এখতিয়ারভুক্ত আদালতের সম্মুখে উপস্থাপন করিতে হইবে।
(২) উপধারা (১) এর অধীন জব্দকৃত কোনো কর্মের অনুলিপি বা যন্ত্রপাতি বা দ্রব্যসামগ্রী বা প্লেট বা সফট কপি বা ডিজিটাল বা অনুরূপ অন্য কোনো কপিতে বা অনুরূপ দ্রব্যাদিতে স্বার্থ রহিয়াছে এইরূপ যে কোনো ব্যক্তি উক্তরূপ জব্দ হওয়ার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে অনুরূপ অনুলিপি বা যন্ত্রপাতি বা দ্রব্যসামগ্রী ট্রেসিং, পেস্টিং, সফট কপি বা প্লেট তাহাকে ফেরত প্রদানের জন্য আদালতের নিকট দরখাস্ত করিতে পারিবেন এবং আদালত, দরখাস্তকারী ও বাদীর শুনানি গ্রহণের পর এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকতর তদন্ত করিয়া স্বীয় বিবেচনা উপযুক্ত আদেশ প্রদান করিবে অথবা সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করিতে পারিবে।
১০৯। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, রেজিস্ট্রার কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিকট সহায়তা চাহিতে পারিবেন, এবং উক্তরূপ সহায়তা চাওয়া হইলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করিবে।
১১০। সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কপিরাইট লঙ্ঘন প্রতিরোধকল্পে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে কপিরাইট টাস্কফোর্স গঠন করিতে পারিবে এবং উক্ত টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি ও অন্যান্য বিষয়াদি উক্ত প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১১১। (১) ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যায়ে বর্ণিত অপরাধ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
(২) কপিরাইটের অধিকার লঙ্ঘনজনিত অপরাধ অ-আমলযোগ্য, আপোষযোগ্য ও জামিনযোগ্য হইবে।
১১২। এই আইনের বিধানাবলি সহিত অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই অধ্যায়ে বর্ণিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।
১১৩। এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের বিচার চলাকালে, অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হউক বা না হউক, আদালত উহার নিকট অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি বা অধিকার লঙ্ঘনকারী অনুলিপি তৈরি করিবার উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত প্লেট বা সফট বা ডিজিটাল বা অনুরূপ অন্য কোনো কপিরূপে প্রতীয়মান বস্তু-তথা অভিযুক্ত ব্যক্তির দখলভুক্ত কর্মটির সমস্ত অনুলিপি বা সমস্ত প্লেট ধ্বংস করিবার বা কপিরাইটের মালিককে বুঝাইয়া দিতে বা আদালত যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপে বিলিবণ্টন করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
১১৪। এই আইনের অধীন বাজেয়াপ্ত কোনো বস্তুকে নিম্নবর্ণিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে, যথা:-
(ক) সংগীত, শব্দধ্বনি রেকর্ডিং, ফটোগ্রাফি ও চলচ্চিত্রের ভিসিপি, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে (দ্বিমাত্রিক, ত্রিমাত্রিক, চতুর্মাত্রিক) কেনো কর্ম বা উহা রেকর্ডিংকারী বস্তু ধ্বংস করা যাইবে;
(খ) কোনো স্থাপত্য শিল্পকর্মের চিত্রাঙ্কন, রেখাচিত্র, খোদাই, আলোকচিত্র, ডিজিটাল কর্ম বিনষ্ট করিয়া অথবা উক্ত কর্মের কপিরাইটের মালিক ইচ্ছুক হইলে, বোর্ড কর্তৃক বাজেয়াপ্তির পরিবর্তে নিরূপিত বিমোচন মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে, তাহাকে প্রদান করা যাইবে;
(গ) কোনো সাহিত্য, লোকসংস্কৃতি, নাট্যকর্মের প্রকাশিত পুস্তক, সাময়িকী ও সংবাদপত্রের অনুলিপি ধ্বংশ করিয়া অথবা উক্ত কর্মের কপিরাইটের মালিক ইচ্ছুক হইলে, বোর্ড কর্তৃক বাজেয়াপ্তির পরিবর্তে নিরূপিত বিমোচন মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে, তাহাকে প্রদান করা যাইবে;
(ঘ) কোনো তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ডিজিটাল কর্ম ধ্বংস করিয়া অথবা উক্ত কর্মের কপিরাইটের মালিক ইচ্ছুক হইলে, বোর্ড কর্তৃক বাজেয়াপ্তির পরিবর্তে নিরূপিত বিমোচন মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে, তাহাকে প্রদান করা যাইবে;
(ঙ) কোনো সম্প্রচার কর্মের সম্প্রচার ও উহার সংস্থাপন দ্রব্যাদি বিনষ্ট করা যাইবে; এবং
(চ) ইন্টারনেটে রেকর্ডিংকৃত কর্ম ইন্টারনেট হইতে অপসারণ করা যাইবে।
১১৫। আপাতত বলবৎ অন্যান্য আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
অষ্টাদশ অধ্যায়
আপিল
১১৬। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ১০৮ এর উপধারা (২) বা ধারা ১১৩ এর অধীন প্রদত্ত আদেশে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি, আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে আপিল করিতে পারিবেন এবং এইরূপ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত উক্ত আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
১১৭। (১) রেজিস্ট্রারের কোনো সিদ্ধান্ত বা আদেশে সংক্ষুব্ধ যে কোনো ব্যক্তি উক্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশ প্রদানের ৩ (তিন) মাসের মধ্যে বোর্ডের নিকট আপিল করিতে পারিবেন, তবে বোর্ড যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, অভিযোগকারী যুক্তিসংগত কারণে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অভিযোগ দায়ের করিতে পারেন নাই, তাহা হইলে উক্ত সময়সীমা অতিবাহিত হওয়ার পরও বোর্ড অভিযোগ গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) কপিরাইট লঙ্ঘনের কারণে, যে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদান বা অর্থদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো সংক্ষুদ্ধ পক্ষকে প্রদত্ত অর্থদণ্ডের ১০ (দশ) শতাংশ জামানত রাখা সাপেক্ষে আপিল করিতে হইবে।
১১৮। ধারা ১২ ও ধারা ২১ এর অধীন প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা আদেশ ব্যতীত, বোর্ডের কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি উক্ত সিদ্ধান্ত বা আদেশ প্রদানের ৩ (তিন) মাসের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করিতে পারিবেন।
১১৯। এই অধ্যায়ের অধীন আপিলের জন্য প্রদত্ত তিন মাসের সময় গণনায়, যে আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা হইয়াছে, উহার সার্টিফাইড কপি বা, ক্ষেত্রমত, সিদ্ধান্তের রেকর্ড প্রদানের জন্য গৃহীত সময় বাদ দিতে হইবে।
ঊনবিংশ অধ্যায়
বিবিধ
১২০। এই আইনের অধীন কপিরাইট সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যধারায় রেজিস্ট্রার ও বোর্ডের নিম্নরূপ বিষয়ে দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা থাকিবে, যথা:-
(ক) সমন প্রদান এবং কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তাহাকে শপথপূর্বক পরীক্ষা;
(খ) কোনো দলিল প্রদর্শন এবং উপস্থাপন;
(গ) হলফনামাসহ সাক্ষ্য গ্রহণ;
(ঘ) সাক্ষ্য বা দলিল পরীক্ষার জন্য কমিশন মঞ্জুর;
(ঙ) কোনো আদালত বা কার্যালয় হইতে কোনো সরকারি নথি বা উহার অনুলিপি তলব;
(চ) বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মধ্যস্থতা;
(ছ) যৌক্তিক প্রয়োজনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ; এবং
(জ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোনো বিষয়।
১২১। রেজিস্ট্রার বা বোর্ড কর্তৃক এই আইনের অধীন প্রদত্ত অর্থ প্রদানের প্রত্যেক আদেশ বা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত অনুরূপ আদেশের বিরুদ্ধে আনীত আপিলে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ, রেজিস্ট্রার, বোর্ড বা, ক্ষেত্রমত, সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট দেওয়ানি আদালতের ডিক্রি মর্মে গণ্য হইবে এবং অনুরূপ আদালতের ডিক্রির ন্যায় অভিন্ন পদ্ধতিতে কার্যকরযোগ্য হইবে।
১২২। এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, জনস্বার্থে, দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের নিমিত্ত যেকোনো কর্ম, বিধি অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।
১২৩। কোনো কর্মের অবৈধ সম্প্রচার সম্পর্কে কোনো কপিরাইট বা সম্পৃক্ত অধিকারের স্বত্বাধিকারীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার সম্প্রচার সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হইলে উক্ত কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে, উক্তরূপ অবৈধ সম্প্রচার বন্ধ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।
১২৪। এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কার্যের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য সরকার, বোর্ড, রেজিস্ট্রার বা কপিরাইট অফিসের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না।
১২৫। রেজিস্ট্রার, বোর্ডের সকল সদস্য, কপিরাইট অফিসে নিযুক্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এ জনসেবক (public servant) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক বলিয়া গণ্য হইবেন।
১২৬। সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১২৭। (১) কপিরাইট আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ২৮ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত আইনের অধীন-
(ক) কৃত কোনো কাজ-কর্ম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রণীত কোনো বিধি, জারীকৃত প্রজ্ঞাপন বা নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তি, প্রদত্ত আদেশ, স্বত্বনিয়োগ, নিবন্ধন বা লাইসেন্স, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, বলবৎ থাকিবে, এবং এই আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত, জারীকৃত বা প্রদত্ত বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) উক্ত আইনের অধীন সূচিত কোনো কার্যধারা অসম্পূর্ণ থাকিলে উহা উক্ত আইন অনুযায়ী এইরূপে সমাপ্ত করা হইবে, যেন উক্ত আইন রহিত হয় নাই;
(গ) দায়েরকৃত কোনো মামলা বা মোকদ্দমা কোনো আদালতে চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উক্ত আইন রহিত হয় নাই;
(ঘ) উক্ত আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত বোর্ড এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে; এবং
(ঙ) কপিরাইট অফিসে নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিতপূর্বে যে শর্তাধীনে চাকুরিতে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে চাকুরিতে নিয়োজিত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্য হইবেন।
১২৮। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।