প্রিন্ট ভিউ
বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২ রহিতক্রমে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করিয়া নূতনভাবে প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২ (২০২২ সনের ০৫ নং আইন) রহিতক্রমে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করিয়া নূতনভাবে আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে তারিখ নির্ধারণ করিবে, সেই তারিখে ইহা কার্যকর হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, ইহার কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে, ভিন্ন ভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
(১) ‘‘অগ্রাধিকার তারিখ’’ অর্থ বিশ্বের যে কোনো দেশে পেটেন্টের আবেদন দাখিলের প্রথম তারিখ;
(২) ‘‘অগ্রাধিকার দাবি’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৫ এর অধীন ঘোষিত অগ্রাধিকার সংক্রান্ত দাবি;
(৩) ‘‘অধিদপ্তর’’ অর্থ পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (Department of Patents, Industrial Designs and Trademarks);
(৪) ‘‘আদালত’’ অর্থ Civil Courts Act, 1887 (Act No. XII of 1887) এর section 3 এ উল্লিখিত আদালত;
(৫) “একচেটিয়া লাইসেন্স” অর্থ কোনো স্বত্বাধিকারী কর্তৃক প্রদত্ত কোনো লাইসেন্স যাহা লাইসেন্সিকে, এবং তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে, স্বত্বাধিকারসহ পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে একচেটিয়া অধিকার অর্পণ করিবে, এবং একচেটিয়া লাইসেন্সিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৬) ‘‘উদ্ভাবন’’ অর্থ কোনো নূতন পণ্য বা প্রক্রিয়া যাহা উদ্ভাবনী পদক্ষেপের সহিত সম্পৃক্ত ও শিল্প ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য এবং এই আইনের অধীন পেটেন্টকৃত হইবার অযোগ্য নহে;
(৭) “উদ্ভাবনী ধাপ” অর্থ কোনো উদ্ভাবনের এইরূপ কোনো বৈশিষ্ট্য যাহাতে বিদ্যমান জ্ঞানের তুলনায় প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রহিয়াছে এবং উহা জ্ঞাতপূর্বত্বের আওতাবহির্ভূত এবং উহা সুনির্দিষ্ট প্রযুক্তিতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির নিকট দাবিকৃত উদ্ভাবনটি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান না হয়;
(৮) ‘‘জ্ঞাত পূর্বত্ব (prior art)’’ অর্থ অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবনের তথ্যাদি বিশ্বের কোনো স্থানে দৃশ্যমানরূপে বা পরোক্ষভাবে প্রকাশের মাধ্যমে, প্রদর্শনের মাধ্যমে, বা ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোনো উপায়ে, জনসমক্ষে বা অন্য কোনোভাবে, লিখিত, মৌখিক বা অন্য কোনো উপায়ে প্রকাশিত হওয়া;
(৯) ‘‘দেওয়ানি কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908);
(১০) “নূতনত্ব” অর্থ কোনো উদ্ভাবন প্রকাশের মাধ্যমে, পূর্বব্যবহারের মাধ্যমে, প্রদর্শনের মাধ্যমে, লিখিত, মৌখিক বা অন্য কোনো উপায়ে বিশ্বের যে কোনো স্থানে ইঙ্গিতে বা প্রকাশ্যে, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে দৃশ্যমানরূপে না থাকা ও জ্ঞাতপূর্বত্বের অংশ না হওয়া এবং উদ্ভাবনটি, মঞ্জুরকৃত পেটেন্ট বা প্রকাশিত পেটেন্ট আবেদনসহ, ইতোমধ্যে প্রকাশিত জ্ঞাতপূর্বত্বের এক বা একাধিক উপাদান হইতে গৃহীত না হওয়া;
(১১) “পেটেন্ট” অর্থ এই আইনের ধারা ২৫ এর অধীন কোনো উদ্ভাবনের জন্য মঞ্জুরিকৃত অধিকার;
(১২) ‘‘পেটেন্ট প্রতিনিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন পেটেন্ট প্রতিনিধি হিসাবে নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি;
(১৩) ‘‘পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী’’ অর্থ এই আইনের অধীন পেটেন্ট এর স্বত্বাধিকারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি;
(১৪) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তি, সরকার, কোনো কোম্পানি, সমিতি বা সংঘ, নিগমিত (incorporated) হউক বা না হউক, অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৫) “বস্তু” অর্থে কোনো সাধারণ প্রকৃতির বস্তু এবং জৈবিক সম্পদও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৬) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(১৭) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
(১৮) ‘‘লাইসেন্সি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত পেটেন্ট ব্যবহারের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি;
(১৯) “শিল্পে প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত” অর্থ এইরূপ কোনো উদ্ভাবন-
(ক) যাহার দ্বারা পণ্যটি উৎপাদন করা সম্ভব অথবা পেটেন্ট দাবি অনুযায়ী কোনো কারিগরি (technical) পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব;
(খ) যাহার একটি জ্ঞাত উপযোগিতা রহিয়াছে, অন্যথায় উহার বাস্তবিক কোনো প্রয়োগ থাকিত না;
(গ) যাহার কারিগরি বা প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য রহিয়াছে, অন্যথায় উহা শিল্পের সহিত সম্পর্কিত হইত না; এবং
(ঘ) যাহা এইরূপে প্রকাশিত হইয়াছে যে, সাধারণ দক্ষতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তি কোনোরূপ উদ্ভাবনী কার্যক্রমে নিয়োজিত না হইয়াও উহা উদ্ভাবন করিতে পারিত;
(২০) “স্বত্বনিয়োগী (Assignee)” অর্থে স্বত্বনিয়োগীর নিয়োগকৃত স্বত্বনিয়োগী এবং কোনো মৃত স্বত্বনিয়োগীর আইনানুগ প্রতিনিধিকেও বুঝাইবে এবং কোনো ব্যক্তির স্বত্বনিয়োগী হিসাবে উল্লেখ করা হইলে তাহার মধ্যে আইনি প্রতিনিধির স্বত্বনিয়োগী, বা উল্লিখিত ব্যক্তির স্বত্বনিয়োগীকেও বুঝাইবে;
(২১) “স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি উদ্ভাবনীর পেটেন্ট মঞ্জুরির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত।
দ্বিতীয় অধ্যায়
পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর, পেটেন্ট আবেদন, ইত্যাদি
৩। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (Department of Patents, Industrial Designs and Trademarks) বলিতে বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ২২ নং আইন) এর ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (Department of Patents, Industrial Designs and Trademarks)-কে বুঝাইবে।
৪। নিম্নরূপ ব্যক্তিগণ পেটেন্টের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) উদ্ভাবনের যথাযথ ও প্রথম উদ্ভাবক হইবার জন্য আবেদনের মাধ্যমে দাবিদার কোনো ব্যক্তি;
(খ) কোনো পেটেন্ট আবেদনের সহিত সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবনের যথাযথ ও প্রথম দাবিদারের স্বত্বনিয়োগী;
(গ) কোনো মৃত ব্যক্তির আইনানুগ প্রতিনিধি যিনি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে এইরূপ আবেদন করিবার অধিকারী ছিলেন;
(ঘ) যদি ২ (দুই) বা ততোধিক ব্যক্তি যৌথভাবে কোনো পেটেন্টযোগ্য বিষয়বস্তু উদ্ভাবন করিয়া থাকে, তবে তাহাদের সকলের পেটেন্টস্বত্বের অধিকার থাকিবে;
(ঙ) যদি ২ (দুই) বা ততোধিক ব্যক্তি স্বতন্ত্রভাবে একইরূপ উদ্ভাবন করেন, তাহা হইলে যে ব্যক্তি প্রথমে পেটেন্টের জন্য আবেদন করিবেন তিনি উক্ত পেটেন্টের অধিকারী হইবেন এবং অগ্রাধিকার দাবির ক্ষেত্রে, অগ্রাধিকার দাবির তারিখ পেটেন্ট আবেদনের তারিখ হিসাবে গণ্য হইবে;
(চ) পেটেন্টের অধিকার উত্তরাধিকারসূত্রে অর্পণ বা হস্তান্তর করা যাইবে;
(ছ) যেক্ষেত্রে চাকরির উদ্দেশ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক কোনো কিছু উদ্ভাবন করা হয় সেইক্ষেত্রে, চুক্তিতে সুস্পষ্টভাবে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, পেটেন্টের অধিকার নিয়োগকারীকে প্রদান করা হইবে;
(জ) যেক্ষেত্রে উদ্ভাবনের উদ্দেশ্যে সম্পাদিত চুক্তি ব্যতিরেকে, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োগকারীর সরঞ্জামাদি, তথ্য-উপাত্ত, ব্যবহারিক জ্ঞানসহ উদ্ভাবনে ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করিয়া কোনো কিছু উদ্ভাবন করেন, সেইক্ষেত্রে, নিয়োগ চুক্তিতে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে উক্ত উদ্ভাবনের পেটেন্টের অধিকার নিয়োগকারীকে প্রদান করা হইবে।
৫। প্রত্যেকটি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার দাবির নিম্নরূপ অগ্রাধিকার তারিখ থাকিবে, যথা:-
(ক) যদি সাময়িক আবেদন অনুসারে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিল করা হয়, তাহা হইলে সাময়িক বিশেষত্বনামার আবেদনের তারিখটিকেই অগ্রাধিকার তারিখ হিসেবে গণ্য করা হইবে;
(খ) যদি কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা ইতোপূর্বে বাংলাদেশে দাখিলকৃত কোনো আবেদনের উপর ভিত্তি করিয়া উক্তরূপ আবেদনের ১২ (বারো) মাসের মধ্যে দাখিল করা হয়, এবং দাবিটি যদি যথাযথভাবে পূর্বে দাখিলকৃত আবেদনে প্রকাশিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করিয়া হয়, তাহা হইলে পূর্বে দাখিলকৃত আবেদনের প্রথম প্রকাশের তারিখটিই অগ্রাধিকার তারিখ হইবে;
(গ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা পুনঃদাখিলকৃত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দাখিল করা হয় এবং দাবিটি যথাযথভাবে পূর্বের কোনো একটি বিশেষত্বনামায়, ক্ষেত্রমত, সাময়িক হউক বা সম্পূর্ণ, প্রকাশিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করিয়া হয়, তাহা হইলে যে বিশেষত্বনামায় বিষয়টি প্রথম প্রকাশিত হইয়াছিল উক্ত বিশেষত্বনামা দাখিলের তারিখই অগ্রাধিকার তারিখ হইবে;
(ঘ) যদি এই ধারার অধীন কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার, এই দফার বিধান ব্যতীত, ২ (দুই) বা ততোধিক অগ্রাধিকার তারিখ থাকে, তাহা হইলে উক্ত তারিখ সমূহের সর্বপ্রথম তারিখই অগ্রাধিকার তারিখ হইবে;
(ঙ) অগ্রাধিকারের মেয়াদ হইবে ১২ (বারো) মাস এবং উক্ত মেয়াদ আবেদন দাখিলের প্রথম তারিখ হইতে গণনা করা হইবে;
(চ) এই ধারার অধীন দাখিলকৃত আবেদনে কোনো ঘোষণা প্রদান করা হইলে, মহাপরিচালক, আবেদনকারীকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, যে মেধাসম্পদ দপ্তরে পূর্বে আবেদন দাখিল করা হইয়াছিল উক্ত দপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত এতদ্সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র দাখিলের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন;
(ছ) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
তৃতীয় অধ্যায়
পেটেন্ট অযোগ্য উদ্ভাবনসমূহ
৬। (১)নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি পেটেন্ট সুরক্ষার আওতা বহির্ভূত হইবে।:-
(ক) আবিষ্কার, বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও গাণিতিক পদ্ধতি;
(খ) ব্যবসা-পদ্ধতি, সম্পূর্ণভাবে মানসিক কার্য সম্পাদনের বা খেলাধুলার নিয়মাবলি বা পদ্ধতি এবং এতৎসংশ্লিষ্ট কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা এলগোরিদম;
(গ) সার্জারি বা থেরাপির মাধ্যমে মানব বা প্রাণিদেহের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং মানব বা প্রাণিদেহের রোগ নির্ণয় পদ্ধতি;
(ঘ) কোনো জ্ঞাত দ্রব্য বা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া জৈবিক উপাদানের আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার, এদের নতুন কোনো ব্যবহার বা ব্যবহারের পদ্ধতি (ক্রম সহ);
(ঙ) উদ্ভিদ ও প্রাণি, সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ, পরিবর্তিত হউক বা না হউক (বীজ, প্রকরণ (variety), প্রজাতি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণির উৎপাদনের জন্য আবশ্যকীয় জৈবিক প্রক্রিয়া এবং অনুজৈবিক (মাইক্রোবায়োলজিক্যাল) প্রক্রিয়াসহ বা কোনো বস্তু, জীব বা প্রকৃতিতে প্রাপ্ত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স (উহা পূর্ণ হউক বা আংশিক, এমনকি যদি উহা হইতে পরিশোধিত বা পৃথকীকৃত বা পরিবর্তিতও হয়), উহার জিনোম, জার্মপ্লাজম, জিন, সেল, প্রোটিন, সিকুয়েন্স, সেল লাইন, সেল কালচার বা অন্য যে কোনো উপাদান সহ, তবে মানবসৃষ্ট অণুজীব ব্যতীত;
(চ) এইরূপ কোনো উদ্ভাবন যাহার প্রাথমিক বা সম্ভাব্য ব্যবহার বা বাণিজ্যিক ব্যবহার জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা বিরোধী অথবা যাহা মানব, প্রাণি বা উদ্ভিদ অথবা স্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর;
(ছ) কোনো উদ্ভাবন যাহা অসার বা তুচ্ছ বস্তু (frivolous) বা এমন কোনো প্রক্রিয়া যাহা প্রতিষ্ঠিত এবং স্পষ্টত প্রাকৃতিক নিয়মের পরিপন্থি;
(জ) সাধারণ সংমিশ্রণের মাধ্যমে প্রাপ্ত কোনো বস্তু অথবা কোনো গঠন যাহার ফলে উহার উপাদানের বৈশিষ্ট্যসমূহ একত্রিত হয় এবং এইরূপ বস্তু উৎপাদনের কোনো প্রক্রিয়া;
(ঝ) জ্ঞাত একাধিক উদ্ভাবনের (ডিভাইস) সুবিন্যাস বা পুনরুৎপাদন, যাহা বিন্যাসের পূর্বে উহাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য স্বাধীনভাবে কার্যকর থাকে;
(ঞ) কৃষি বা উদ্যান পালন পদ্ধতি;
(ট) সাহিত্য, নাট্যকলা, সংগীত অথবা শিল্পজনোচিত কর্ম বা কোনো চলচ্চিত্র কর্ম এবং রেডিও বা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত প্রোগ্রাম;
(ঠ) কেবল কোনো তথ্যের বর্ণনা;
(ড) বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট সংক্রান্ত বিশদ বর্ণনা;
(ঢ) কোনো উদ্ভাবন যাহা কার্যত ঐতিহ্যগত জ্ঞান অথবা যাহা ঐতিহ্যগতভাবে জ্ঞাত কোনো উপাদান বা উপাদানসমূহের জ্ঞাত গুণাগুণের সমন্বয় বা সমষ্টি;
(ণ) জ্ঞাত কোনো বস্তু নূতন রূপে আবিষ্কার করা এবং জ্ঞাত কোনো বস্তুর কেবল নূতন গুণাগুণ অথবা নূতন ব্যবহার আবিষ্কার বা জ্ঞাত প্রক্রিয়া বা যন্ত্র বা যন্ত্রের কেবল নূতন ধরনের ব্যবহার আবিষ্কার করা যতক্ষণ না উক্তরূপ সকল জ্ঞাত প্রক্রিয়া কোনো নূতন উৎপাদন বা বিক্রিয়ায় অন্যূন একটি নূতন উপাদান তৈরি করে;
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, লবণ, ইস্টার, ইথার, পলিমর্ফ, মেটাবলিট, পিউর ফর্ম, পার্টিক্যাল সাইজ, আইজোমার, আইজোমার মিশ্রণ, যৌগ, গঠন এবং জ্ঞাত বস্তু হইতে প্রাপ্ত অন্যান্য উপাদান সমরূপ বস্তু হিসাবে গণ্য করা হইবে;
(ত) যে দাবি বিকল্পসমূহকে ব্যাখ্যা করে, সাধারণ সূত্র দ্বারা চিহ্নিত করা যায় এবং পূর্বের শিল্পে প্রকাশিত একটি বৃহত্তর জ্ঞাত সেট বা পরিসরের মধ্যে স্বতন্ত্র উপাদান, উপ-সেট বা উপ-রেঞ্জসহ এক বা একাধিক আকার বাছাইসহ সাধারণ কার্যক্রম বা গুণাগুণ বা উদ্ভাবন থাকে।
(২) Council for Trade-Related Aspects of Intellectual Property Rights (TRIPs), অত:পর TRIPs Council বলিয়া উল্লিখিত, এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফার্মাসিউটিক্যাল ও কৃষি রাসায়নিক পণ্য (Agrochemical products) এর পেটেন্ট সুরক্ষা হইতে অব্যাহতির মেয়াদ যতদিন বহাল থাকিবে, ততদিন পর্যন্ত উক্তরূপ পণ্য পেটেন্ট সুরক্ষার আওতা বহির্ভূত থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্তরূপ সময়সীমা হ্রাস-বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
৭। এইরূপ উদ্ভাবনসমূহের কোনো পেটেন্ট মঞ্জুর করা হইবে না যাহা উৎপাদন, নিয়ন্ত্রণ, পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার বা নিষ্কাশন, অথবা নির্ধারিত কোনো পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের অনুসন্ধান, খনন, উত্তোলন, উৎপাদন, প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক চিকিৎসা, নির্মাণ, উন্নতিসাধন, সংরক্ষণ বা ব্যবহার অথবা এটমিক এর্নাজি পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
চতুর্থ অধ্যায়
পেটেন্ট মঞ্জুরির আবেদন
৮। (১) একটি উদ্ভাবনের বিপরীতে পেটেন্টের জন্য, নির্ধারিত ফরমে, কেবল একটি আবেদন করা যাইবে এবং উক্ত আবেদন অধিদপ্তরে দাখিল করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনে উদ্ভাবনটি আবেদনকারীর দখলে রহিয়াছে কিনা তাহাসহ যথার্থ ও প্রথম উদ্ভাবনের দাবিদারের নাম উল্লেখ করিতে হইবে এবং দাবিদার নিজে আবেদনকারী না হইলে বা একাধিক আবেনকারীর কোনো একজন না হইলে আবেদনে এই মর্মে একটি ঘোষণা প্রদান করিতে হইবে যে, উল্লিখিত নামের ব্যক্তিকে যথাযথ ও প্রথম উদ্ভাবক বলিয়া আবেদনকারী বিশ্বাস করেন ।
(৩) পেটেন্ট আবেদনের সহিত নিম্নবর্ণিত দলিলাদি সংযুক্ত করিতে হইবে, যথা:-
(ক) আবেদনকারী কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন দাখিল করিলে উক্ত প্রতিনিধির অনুকূলে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৩৫ নং আইন) এর অধীন প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কপি;
(খ) পেটেন্ট আবেদনকারী নিজে উদ্ভাবক না হইলে তাহার অধিকারের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করিয়া একটি প্রত্যয়নপত্র বা হস্তান্তরপত্র;
(গ) অগ্রাধিকার সংক্রান্ত দাবির ক্ষেত্রে, এই আইনের ধারা ৫ (চ) এর অধীন প্রত্যায়িত অনুলিপি।
(৪) কোনো উদ্ভাবনের দাবিদার ব্যক্তি একক বা যৌথভাবে বা তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্টকৃত ফি প্রদানপূর্বক, নিম্নবর্ণিত শর্তে পেটেন্টের জন্য মহাপরিচালকের নিকট সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা (complete specification) বা সাময়িক বিশেষত্বনামাসহ (provisional specification) আবেদন করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) আবেদনকারী কর্তৃক সাময়িক বিশেষত্বনামা দাখিলের ১২ (বারো) মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিল করিতে হইবে;
(খ) সাময়িক বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য থাকিতে হইবে এবং উহা পরবর্তীতে দাখিলকৃত সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হইতে হইবে।
(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত ফরমে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকিতে হইবে, যথা:-
(ক) আবেদনকারী এবং উদ্ভাবকের নাম ও পরিচয় সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য;
(খ) উদ্ভাবনের বিষয়বস্তুর সহিত সম্পর্কযুক্ত উদ্ভাবনের যথাযথ শিরোনাম;
(গ) প্রার্থিত পেটেন্টের সুস্পষ্ট ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বর্ণনা;
(ঘ) যদি বিশেষ ক্ষেত্রে মহাপরিচালকের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উদ্ভাবনকে ব্যাখ্যা করে বা উদ্ভাবন গঠন করে এইরূপ কোনো নির্দিষ্ট মডেল বা নমুনা আবেদনের সহিত সংযুক্ত করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি পেটেন্টের জন্য আবেদনের পূর্বে এইরূপ মডেল বা নমুনা দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবেন, তবে উক্ত মডেল বা নমুনা বিশেষত্বনামার অংশ হিসাবে গণ্য হইবে না;
(ঙ) উদ্ভাবনের সার-সংক্ষেপ;
(চ) অগ্রাধিকার সংক্রান্ত দাবির নম্বর ও তারিখ, যদি থাকে;
(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনের লিখিত তথ্য সন্নিবেশ।
(৬) প্রত্যেকটি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় নিম্নলিখিত বিষয়াদি থাকিবে, যথা:-
(ক) সংশ্লিষ্ট বা সমরূপ প্রযুক্তিতে জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি কর্তৃক উদ্ভাবনের প্রতিটি অঙ্গ মূল্যায়ন, সম্পাদন, প্রতিপালন, কার্যকরকরণ বা বাস্তবায়নের জন্য পরিপূর্ণ বা সম্পূর্ণ স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা;
(খ) আবেদন দাখিলের সময় বা অগ্রাধিকার তারিখে আবেদকারীর জ্ঞাত উদ্ভাবনটি কার্যকর বা বাস্তবায়নের সর্বোত্তম পদ্ধতিসহ প্রত্যেকটি ধাপ বা পদ্ধতির বিস্তারিত বর্ণনা;
(গ) সুরক্ষার জন্য দাবিকৃত উদ্ভাবনের বৈশিষ্ট্য উল্লেখপূর্বক এক বা একাধিক দাবি;
(ঘ) সার-সংক্ষেপে উদ্ভাবনের কারিগরি তথ্য সন্নিবেশ;
(ঙ) বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত সার-সংক্ষেপ ৩০০ (তিনশত) শব্দের অধিক হইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, মহাপরিচালক তৃতীয় পক্ষের নিকট অধিকতর তথ্য প্রদানের জন্য উক্ত সার-সংক্ষেপ সংশোধন করিতে পারিবেন;
(চ) উদ্ভাবন সুস্পষ্টভাবে প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বা মহাপরিচালকের নির্দেশ অনুযায়ী এক বা একাধিক অংকন-চিত্রের (drawing diagram) মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাইবে।
(৭) উদ্ভাবনের বিষয়বস্তু-
(ক) দাবি আকারে উল্লেখ করিতে হইবে,
(খ) সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত হইতে হইবে এবং উহা বর্ণনার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গরূপে সমর্থিত হইতে হইবে,
(গ) ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনটি লেখচিত্রের মাধ্যমে বর্ণনা ও অংকন ব্যবহার করা যাইবে।
(৮) আবেদনে বা অন্য কোনোভাবে বর্ণিত থাকিলে, আবেদনের সময় বা অগ্রাধিকার তারিখে সংশ্লিষ্ট সকল জ্ঞাতপূর্বত্বসহ উদ্ভাবনটি পেটেন্টযোগ্য হইবার জন্য আবেদনকারীর কর্তৃক জ্ঞাত গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য মহাপরিচালকের নিকট প্রকাশ করিবেন।
(৯) যদি উদ্ভাবনটি ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য সম্পর্কিত হয় তাহা হইলে আবেদনকারী, পণ্যটির আন্তর্জাতিক স্বত্বাধিকারবিহীন নাম (International Nonproprietary Name -INN), অগ্রাধিকার তারিখে উক্ত নাম পাওয়া গেলে উহা প্রকাশ করিবে এবং আন্তর্জাতিক স্বত্বাধিকারবিহীন নাম, পাওয়া না গেলে আবেদনকারী অনূর্ধ্ব ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত নাম অবগত হইয়া মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন, তবে পেটেন্ট আবেদনটি নামঞ্জুর করা হইলে বা পেটেন্টটি মেয়াদোত্তীর্ণ হইলে উক্ত নাম অবহিত করিতে হইবে না।
(১০) পেটেন্টের সুরক্ষার পরিধি কেবল পেটেন্টে প্রকাশিত ও স্পষ্টভাবে দাবিকৃত ব্যবহার, উদ্দেশ্য বা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে।
(১১) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার এক বা একাধিক দাবি একটি স্বতন্ত্র উদ্ভাবন সম্পর্কিত হইবে এবং উহা এইরূপে পারস্পরিক সংযুক্ত উদ্ভাবন সমষ্টি সম্পর্কিত হইবে যাহা একক উদ্ভাবনের ধারণা গঠন করে এবং উহা সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্তভাবে বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত যথাযথ বিষয়ের ভিত্তিতে হইবে।
(১২) যদি আবেদন গ্রহণের সময় মহাপরিচালকের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) ও (১১) তে উল্লিখিত শর্তাদি পূরণ করা হয় নাই, তাহা হইলে তিনি আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়নের জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং নির্দেশ মোতাবেক উক্ত সময়ের মধ্যে আবেদন প্রয়োজনীয়রূপে সংশোধন করা না হইলে আবেদন পরিত্যক্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(১৩) বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস (origin) এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপাদান যাহা দাবিকৃত উদ্ভাবনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহার করা হইয়াছে তাহা উদ্ভাবনের বিবরণীতে উল্লেখ করিতে হইবে।
(১৪) মহাপরিচালক, পেটেন্টকৃত প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহারের বিস্তার ঘটাইবার লক্ষ্যে, পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে কোনো বিদেশি পেটেন্ট আবেদনকারীকে তাহার পেটেন্টের বর্ণনা বাংলাদেশের নাগরিকদের সাধারণ দক্ষতার উপযোগী করিয়া অভিযোজিত করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
(১৫) উদ্ভাবনের মালিকানাস্বত্ব সম্পর্কিত একটি ঘোষণা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার সহিত, নির্ধারিত ফরমে, সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বা উক্ত বিশেষত্বনামা দাখিলের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংযুক্ত করিতে হইবে।
৯। (১) যদি উদ্ভাবনটি অণুজীব সম্পর্কিত হয় তাহা হইলে আবেদনকারী আবেদন দাখিলের পূর্বে উহার একটি কালচার বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত রাখিবেন, তবে যদি উক্ত অণুজীব সম্পর্কিত উদ্ভাবনটি পরিচালনা করিতে প্রযুক্তিতে সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তিকে সক্ষম করা সম্ভব না হয় এবং যদি উক্ত পণ্যটি জনসাধারণের নিকট অন্য কোনোভাবে সহজলভ্য না হয়, তাহা হইলে উক্ত পক্ষ কালচারের নমুনাটি আইন অনুযায়ী ব্যবহার করিবার শর্তে কালচারটি ব্যবহার করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন নিম্নলিখিত শর্তসমূহ প্রতিপালন সাপেক্ষে দাখিল করিতে হইবে, যথা:-
(ক) বাংলাদেশে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের পূর্বে পণ্যটি গচ্ছিত রাখিতে হইবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিষয়টি বিশেষত্বনামায় উল্লেখ করিতে হইবে;
(খ) পণ্যটি সঠিকভাবে শনাক্ত করিবার জন্য বা নির্দেশ করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সকল বিদ্যমান বৈশিষ্ট্য, যে ডিপজিটরি প্রতিষ্ঠানে উহা গচ্ছিত রাখা হইয়াছে উহার নাম, ঠিকানা, তারিখ এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত পণ্যের নম্বরসহ বিশেষত্বনামায় অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে;
(গ) কেবল বাংলাদেশে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখের পর, বা অগ্রাধিকার দাবি করা হইলে অগ্রাধিকার তারিখের পর, ডিপজিটরি প্রতিষ্ঠানে পণ্যটি প্রাপ্তিযোগ্য হইতে হইবে;
(ঘ) বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপাদান যাহা দাবিকৃত উদ্ভাবনে ব্যবহার করা হইয়াছে, তাহা বিশেষত্বনামায় উল্লেখ করিতে হইবে।
১০। (১) আবেদনকারী তৎকর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনটি মঞ্জুর হইবার পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় প্রত্যাহার করিতে পারিবেন।
(২) যেক্ষেত্রে-
(ক) পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত না করিয়াই কোনো আবেদন প্রত্যাহার করা হয়;
(খ) কোনো অগ্রাধিকার দাবি করা না হয়;
(গ) বাংলাদেশে উক্ত আবেদনের সহিত দাবিকৃত কোনো অধিকার সম্পর্কিত কার্যধারা চলমান না থাকে, সেইক্ষেত্রে উক্ত উদ্ভাবনের জন্য পুনরায় আবেদন করা যাইবে।
(৩) বাংলাদেশে দাখিলকৃত আবেদন প্রথম আবেদন হিসাবে বিবেচিত হইবে এবং উপ-ধারা (২) এর দফা (গ) এর অধীন পুনরায় আবেদন দাখিল করা হইলে, প্রথমবার দাখিলকৃত আবেদনের জন্য কোনো অগ্রাধিকার দাবি করা যাইবে না।
১১। (১) দাবিত্যাগ, সংশোধন বা ব্যাখ্যার মাধ্যম ব্যতীত কোনো আবেদন বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা তৎসম্পর্কিত কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন করা যাইবে না এবং প্রকৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করিবার উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো সংশোধনী মঞ্জুর করা যাইবে না।
(২) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এইরূপ কোনো সংশোধনী মঞ্জুর করা যাইবে না যাহার ফলে সংশোধিত বিশেষত্বনামায় এইরূপ কোনো বিষয় দাবি করা হয় বা বর্ণনা করা হয় যাহা সংশোধনের পূর্বের বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত বা প্রদর্শিত হয় নাই।
(৩) যদি পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখের পর মহাপরিচালক বা, ক্ষেত্রমত, আদালত কর্তৃক বিশেষত্বনামা বা তৎসম্পর্কিত কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়, তাহা হইলে-
(ক) সংশোধনীটি সকল উদ্দেশ্যে বিশেষত্বনামা ও তৎসংশ্লিষ্ট দলিলপত্রের অংশ হিসাবে গণ্য হইবে;
(খ) বিশেষত্বনামা ও তৎসংশ্লিষ্ট দলিলপত্র সংশোধন করা হইলে উহা, যতদ্রুত সম্ভব, প্রকাশ করা হইবে; এবং
(গ) পেটেন্ট আবেদনকারী বা স্বত্বাধিকারীর সংশোধনের অধিকার বিষয়ে, প্রতারণার ভিত্তিতে না হইলে, উক্ত বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
(৪) সংশোধিত বিশেষত্বনামা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে গৃহীত বিশেষত্বনামার উল্লেখ করিতে হইবে।
১২। (১) মহাপরিচালক, ধারা ১১ এর বিধান সাপেক্ষে, এই ধারার অধীন কোনো আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী, নির্ধারিত ফরমে, আবেদন করিলে, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে পেটেন্টের আবেদন বা বিশেষত্বনামা বা এতৎসম্পর্কিত অন্য কোনো দলিল সংশোধনের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো আদালতে উক্ত পেটেন্ট লঙ্ঘনের কোনো মামলা বা জেলা আদালতে উক্ত পেটেন্ট প্রত্যাহারের কোনো কার্যধারা চলমান থাকে, এইরূপ মামলা বা কার্যধারা উক্ত আবেদন দাখিলের পূর্বে বা পরে যখনই শুরু হউক না কেন, মহাপরিচালক, এই ধারার অধীন কোনো পেটেন্ট বা বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যানের কোনো আদেশ জারি করিবেন না ।
(২) এই ধারার অধীন পেটেন্ট বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো দলিল সংশোধনের আবেদনে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বৈশিষ্ট্য এবং এইরূপ আবেদনের বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করিতে হইবে।
(৩) কোনো আবেদন প্রকাশ করা হইলে, স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি উহা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহার বিরোধিতা করিয়া আবেদনকারীকে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে এইরূপ নোটিশ প্রদান করা হইলে মহাপরিচালক উহা আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি করিবার পূর্বে আবেদনকারী ও বিরোধিতাকারী উভয়পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবেন।
(৪) যেক্ষেত্রে উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো আবেদন প্রকাশিত হয় সেইক্ষেত্রে কোনো আগ্রহী ব্যক্তি উহা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, বিরোধিতাকারী ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং যেক্ষেত্রে পূর্বোক্ত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ নোটিশ প্রদান করা হয় সেইক্ষেত্রে মহাপরিচালক এই ধারার অধীন আবেদন দাখিলের বিষয়টি উক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তি ও প্রতিপক্ষকে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে শুনানির সুযোগ দেবেন।
(৫) এই ধারার বিধান মোতাবেক বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট অন্য কোনো দলিল সংশোধনের ভিত্তিতে আবেদনকারীর অনুকূলে পেটেন্ট মঞ্জুর করিবার পূর্বে মহাপরিচালক কর্তৃক জারীকৃত কোনো নির্দেশনা প্রতিপালনের কোনো অধিকার ক্ষুণ্ন করিবে না।
১৩। (১) জেলা জজ আদালতে পেটেন্ট বাতিলের কোনো কার্যধারার ক্ষেত্রে, ক্ষেত্রমত, ধারা ১১ এর বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে, আদালত যেইরূপ প্রয়োজন মনে করিবে সেইরূপ পদ্ধতিতে এবং ব্যয়, বিজ্ঞাপন বা অন্য কোনো শর্ত সাপেক্ষে, তাহার বিশেষত্বনামা সংশোধনের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে এবং যদি আদালত পেটেন্ট অবৈধ বলিয়া রায় প্রদান করে তাহা হইলে পেটেন্টটি বাতিলের পরিবর্তে এই ধারার অধীন বিশেষত্বনামা সংশোধনের সুযোগ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) যদি কোনো আদেশের জন্য আদালতে কোনো আবেদন করা হয়, তাহা হইলে আবেদনকারী মহাপরিচালককে উক্ত আবেদনের নোটিশ প্রদান করিবেন, এবং এইরূপ ক্ষেত্রে তাহার, মহাপরিচালকের নিকট উপস্থিত হইয়া শুনানি করিবার অধিকার থাকিবে।
(৩) জেলা জজ আদালত তৎকর্তৃক পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে প্রদত্ত সংশোধনের আদেশের কপি মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করিবে এবং মহাপরিচালক উহা প্রাপ্তির পর নথিভুক্ত করিয়া রেজিস্টারে উহা উল্লেখ করিবেন।
১৪। (১) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন পেটেন্টের জন্য আবেদন করিলে, অথবা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামাটি একাধিক উদ্ভাবনের সহিত সম্পর্কিত মর্মে মহাপরিচালক কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগ প্রতিকার করিবার উদ্দেশ্যে, প্রথমোক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দাখিলকৃত সাময়িক বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত উদ্ভাবনের জন্য বিভাজিত আবেদন (Divisional Application) করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ দ্বিতীয় আবেদন প্রথম আবেদন দাখিলের ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে দাখিল করিতে হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে অনধিক ৩ (তিন) টি আবেদন করা যাইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃআবেদনের সহিত একটি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা সংযুক্ত করিতে হইবে, তবে এইরূপ বিশেষত্বনামার পরিপ্রেক্ষিতে দাখিলকৃত সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ নহে এইরূপ কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হইবে না।
(৩) প্রথম বা পুনঃআবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা সংশোধনের ক্ষেত্রে, মহাপরিচালক এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন যে, সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার কোনোটিতেই এইরূপ কোনো দাবি নাই যাহা অপরটিতে রহিয়াছে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃআবেদনটি প্রথম আবেদন দাখিলের তারিখে দাখিল করা হইয়াছিল মর্মে গণ্য হইবে এবং, ক্ষেত্রমত, প্রথম আবেদনের অগ্রাধিকার তারিখ বিভাজিত আবেদনের অগ্রাধিকার তারিখ হিসাবে বিবেচিত হইবে।
(৫) বিভাজিত আবেদনটি মূল আবেদনের অনুরূপ বিবেচিত হইবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার জন্য আবেদন করা হইলে উহা পরীক্ষা করা হইবে।
১৫। (১) যদি কোনো আবেদনকারী, এককভাবে বা অন্য কোনো ব্যক্তির সহিত যৌথভাবে, বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোনো দেশে আবেদন করেন, তাহা হইলে সমরূপ আবেদনের ক্ষেত্রে বা যদি তাহার জানামতে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক আবেদন দাখিল করা হয় যাহার মাধ্যমে তিনি পেটেন্ট দাবি করিয়া থাকেন বা এইরূপ ব্যক্তি কর্তৃক দাখিল করা হয় যিনি তাহার নিকট হইতে অধিকার লাভ করেন, তাহা হইলে তিনি তাহার আবেদনের সহিত বা পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উপরিউক্ত আবেদন সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত দলিলাদি দাখিল করিবেন, যথা :-
(ক) উক্ত আবেদনের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত একটি বিবৃতি;
(খ) বিদেশি আবেদন পরীক্ষার ফলাফল এবং অনুসন্ধান তথ্য সংক্রান্ত কোনো পত্র আবেদনকারীকে প্রদান করা হইলে, উহার একটি কপি;
(গ) বিদেশি আবেদনের ভিত্তিতে প্রদত্ত পেটেন্ট মঞ্জুরের একটি কপি;
(ঘ) বিদেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হইলে উহার একটি কপি;
(ঙ) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মঞ্জুরিকৃত পেটেন্ট প্রত্যাহার বা পরিত্যাগের নোটিশের একটি কপি;
(চ) পেটেন্ট বাতিল, অবৈধকরণ, সংশোধন বা আদালতের আদেশসহ পেটেন্ট বা পেটেন্ট আবেদন সংক্রান্ত অন্য কোনো আদেশ।
(২) আবেদনকারী কর্তৃক দলিলাদি অনুবাদের জন্য সময় প্রার্থনা করা হইলে মহাপরিচালক উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মেয়াদ সর্বোচ্চ ৬০ (ষাট) দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।
(৩) আবেদনকারী পেটেন্ট মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যান না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ৬ (ছয়) মাস পর পর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত আবেদন সম্পর্কিত তথ্য মহাপরিচালক বরাবর দাখিল করিবেন।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির পর মহাপরিচালক উহা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবেন।
(৫) যদি আবেদনকারী উপ-ধারা (১) ও (৩) এর শর্ত প্রতিপালনে, তাহার নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কোনো কারণ ব্যতীত, ব্যর্থ হন তাহা হইলে আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
১৬। মহাপরিচালক, পেটেন্ট আবেদন গ্রহণের তারিখকে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হিসাবে বিবেচনা করিবেন।
১৭। (১) মহাপরিচালক, আবেদন দাখিলের ১৮ (আঠারো) মাস অতিবাহিত হইবার পর, পেটেন্ট আবেদন জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পেটেন্ট আবেদনের বিষয়বস্তু ওয়েবসাইটে প্রকাশ বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নিম্নবর্ণিত বিষয় প্রকাশের মাধ্যমে জনসাধারণকে অবহিত করিতে হইবে, যথা:-
(ক) উদ্ভাবনের শিরোনাম;
(খ) পেটেন্ট আবেদনকারী ও উদ্ভাবকের নাম, ঠিকানা ও জাতীয়তা;
(গ) আবেদন দাখিলের তারিখ ও নম্বর;
(ঘ) অগ্রাধিকার নম্বর ও তারিখ, যদি থাকে;
(ঙ) পেটেন্ট এর শ্রেণিবিন্যাস;
(চ) মূল উদ্ভাবনের লেখচিত্র বা অংকন, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে;
(ছ) বিষয়বস্তুর সার-সংক্ষেপ।
(৩) পেটেন্ট আবেদনটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বা গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত, মহাপরিচালক, কোনো তৃতীয় পক্ষকে উক্ত আবেদন পরিদর্শনের সুযোগ প্রদান করিবেন না বা পেটেন্ট আবেদন সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করিবেন না।
(৪) ১৮ (আঠারো) মাস মেয়াদ সমাপ্তির পূর্বে যে কোনো সময়ে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, আবেদনকারীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক, পেটেন্ট আবেদন জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করিতে পারিবেন।
(৫) আবেদনকারী পেটেন্ট মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত উহা লঙ্ঘনের কোনো কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন না।
১৮। (১) জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট যে কোনো পেটেন্ট আবেদন গোপন রাখিতে হইবে এবং মহাপরিচালক, কোনো আবেদন জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মনে করিলে, তাহা জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করিবেন।
(২) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আবেদন প্রাপ্তির অনধিক ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দাবিকৃত উদ্ভাবন জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কি না সে বিষয়ে মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন এবং যদি উক্ত সময়ের মধ্যে বিষয়টি মহাপরিচালককে অবহিত করা না হয়, তাহা হইলে পেটেন্টের আবেদনটি প্রকাশ করা যাইবে।
(৩) আবেদনকারী, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পেটেন্ট এর বিষয়ে মহাপরিচালক কর্তৃক অবহিত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (২) এর অধীন সময়সীমা অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত, এতৎবিষয়ক কোনো পেটেন্ট আবেদন বিদেশে দাখিল করিবেন না।
(৪) জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কোনো উদ্ভাবন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত, ব্যবহার, লাইসেন্স প্রদান এবং হস্তান্তর করা যাইবে না।
১৯। (১) এই আইনের ধারা ১৭ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন পেটেন্ট আবেদন প্রকাশের পর এবং পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে যে কোনো ব্যক্তি উক্ত পেটেন্টের বিরোধিতা করিতে পারিবেন:
শর্ত থাকে যে, উল্লিখিত প্রকাশের ০৬ (ছয়) মাস সময় পর্যন্ত উক্ত পেটেন্ট মঞ্জুর করা যাইবে না।
(২) বিরোধিতার আপত্তিপত্রে আপত্তিকৃত পেটেন্ট আবেদন শনাক্ত করিতে হইবে এবং আপত্তির কারণ উল্লেখপূর্বক উহার সমর্থনে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণাদি দাখিল করিতে হইবে।
(৩) পেটেন্ট আবেদনের বিরোধিতাকারী ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ উত্থাপন করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি দাবিদারের অগ্রাধিকার তারিখে বা উহার পর অন্য কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবি করা হইয়াছে এবং পেটেন্টের জন্য বাংলাদেশে একটি আবেদন দাখিল করা হইয়াছে এবং উক্ত দাবিটির অগ্রাধিকার তারিখ আবেদনকারীর দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্ববর্তী হয়;
(খ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি উক্ত দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে জনসাধারণের নিকট পরিচিত ছিল বা জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল, অথবা যদি ধারা ২ এর দফা (১০) এর বিধান প্রতিপালিত না হইয়া থাকে;
(গ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত এবং ধারা ২ এর দফা (৮) অনুযায়ী প্রকাশিত বিষয় বিবেচনায় বা বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে ব্যবহৃত বিষয়ের বিবেচনায় অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে উহা ধারা ২ এর দফা (৭) অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবনী ধাপ সংশ্লিষ্ট নহে;
(ঘ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবির বিষয়টি ধারা ২ এর দফা (১৯) এর বিধান অনুযায়ী নহে অথবা উহা ব্যবহার্য নহে;
(ঙ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ২ এর দফা (৬) অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;
(চ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;
(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এই আইনের ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) এবং (১১) এর বিধান অনুযায়ী উদ্ভাবনটি বা উহা ব্যবহারের পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গ ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত নহে;
(জ) আবেদনকারী ধারা ১৫ অনুযায়ী মহাপরিচালকের নিকট তথ্য প্রকাশ করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন অথবা তাহার জানামতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দাখিলকৃত তথ্য মিথ্যা বা অপূর্ণ;
(ঝ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনে ব্যবহৃত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞান প্রকাশিত হয় নাই বা ভুলভাবে বর্ণিত হইয়াছে;
(ঞ) মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিবেচনায় অনুমান করা হয় যে, বাংলাদেশের বা অন্য কোনো স্থানের স্থানীয় বা সাধারণ কমিউনিটিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি বিদ্যমান রহিয়াছে।
(৪) মহাপরিচালক ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো অফিসিয়াল মাধ্যমে আপত্তির নোটিশ প্রকাশ করিবেন।
(৫) আবেদনকারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে অভিযোগ খণ্ডন করিয়া প্রতি বিবৃতি দাখিল করিতে পারিবেন।
(৬) মহাপরিচালক, আবেদনকারী ও বিরোধিতাকারী পক্ষের শুনানি গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং উভয় পক্ষকে যুক্তি বা পাল্টা-যুক্তি প্রদানসহ যুক্তিখণ্ডনের সুযোগ প্রদান করিবেন।
(৭) পেটেন্ট আবেদনকারী কর্তৃক দাখিলকৃত লিখিত বিবৃতি ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং বিরোধিতাকারী কর্তৃক দাখিলকৃত বিরোধ ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক উপস্থাপিত বক্তব্যের ভিত্তিতে, এবং উভয়পক্ষকে শুনানির পর, মহাপরিচালক-
(ক) বিরোধ প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন; অথবা
(খ) পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা ও অন্যান্য দলিল সংশোধনের নির্দেশ দিতে পারিবেন; অথবা
(গ) পেটেন্ট আবেদন মঞ্জুর করিতে অস্বীকার করিতে পারিবেন।
(৮) মহাপরিচালক, এই ধারার অধীন কারণ উল্লেখসহ একটি লিখিত আদেশ জারি করিবেন এবং বিরোধ নিষ্পত্তি হইবার ১ (এক) মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ বিষয়টি অবহিত করিবেন।
২০। (১) এই আইনের ধারা ২৪ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরির পর বিষয়টি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হইবার ২৪ (চব্বিশ) মাসের মধ্যে যে কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাক্ষ্য-প্রমাণসহ মহাপরিচালক বরাবর বিরোধিতার নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন।
(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বিরোধের নোটিশ প্রদান করা যাইবে, যথা:-
(ক) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি দাবিদারের অগ্রাধিকার তারিখে বা উহার পর অন্য কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবি করা হইয়াছে এবং পেটেন্টের জন্য একটি আবেদন বাংলাদেশে দাখিল করা হইয়াছে এবং উক্ত দাবিটির অগ্রাধিকার তারিখ আবেদনকারীর দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে;
(খ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি উক্ত দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে জনসাধারণের নিকট পরিচিত ছিল বা জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল, অথবা যদি ধারা ২ এর দফা (১০) এর বিধান প্রতিপালিত না হয়;
(গ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত এবং ধারা ২ এর দফা (৮) অনুযায়ী প্রকাশিত বিষয়ের বিবেচনায় বা বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে ব্যবহৃত বিষয়ের বিবেচনায় অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে ধারা ২ এর দফা (৭) দফা অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবনী ধাপ সংশ্লিষ্ট নহে;
(ঘ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবির বিষয়টি ধারা ২ এর দফা (১৯) এর বিধান অনুযায়ী নহে অথবা উহা ব্যবহার্য নহে;
(ঙ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবন নহে, অথবা এই আইনের ধারা ২ এর দফা (৬) অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;
(চ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;
(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এই আইনের ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) এবং (১১) এর বিধান অনুযায়ী উদ্ভাবনটি বা উহা ব্যবহারের পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গ ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত নহে;
(জ) আবেদনকারী ধারা ১৫ অনুযায়ী মহাপরিচালকের নিকট তথ্য প্রকাশ করিতে ব্যর্থ হইয়াছে অথবা তাহার জানামতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দাখিলকৃত তথ্য মিথ্যা বা অপূর্ণ;
(ঝ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনে ব্যবহৃত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞান প্রকাশিত হয় নাই বা ভুলভাবে বর্ণিত হইয়াছে;
(ঞ) মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিবেচনায় অনুমান করা হয় যে, বাংলাদেশের বা অন্য কোনো স্থানের স্থানীয় বা সাধারণ কমিউনিটিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি বিদ্যমান রহিয়াছে।
(৩) মহাপরিচালক, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে বিরোধের নোটিশ প্রদান করিবেন এবং ই-গেজেটে বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে উহা প্রকাশ করিবেন।
(৪) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে বিরোধ নোটিশ খণ্ডন করিয়া প্রতি-বিবৃতি দাখিল করিতে পারিবেন।
(৫) মহাপরিচালক, একটি শুনানির ব্যবস্থা করিবেন এবং শুনাননিতে পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী ও বিরোধী উভয়পক্ষ তাহাদের যুক্তি বা পাল্টা-যুক্তি প্রদানসহ মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করিতে পারিবেন, অতঃপর মহাপরিচালক পেটেন্টটি বহাল, সংশোধন বা প্রত্যাহারের আদেশ প্রদান করিয়া বিরোধটি নিষ্পত্তি করিবেন এবং নিষ্পত্তির ১ (এক) মাসের মধ্যে উভয়পক্ষকে কারণ উল্লেখসহ তাহার সিদ্ধান্ত অবহিত করিবেন।
২১। (১) আবেদনকারী, পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৩৬ (ছত্রিশ) মাসের মধ্যে, নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, মহাপরিচালককে তাহার পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার অনুরোধ করিতে পারিবেন।
(২) পেটেন্ট পরীক্ষার অনুরোধ করিয়া কোনো আবেদন দাখিল করা না হইলে, উক্ত আবেদনটি পরিত্যক্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) উক্ত মেয়াদ সমাপ্ত হইবার পূর্বে মহাপরিচালকের নিকট নির্ধারিত ফি-সহ মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধপত্র দাখিল করা হইলে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মেয়াদ ৩ (তিন) মাস বৃদ্ধি করা যাইবে।
(৪) মহাপরিচালক, এই আইনের বিধান মোতাবেক পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
২২। (১) যদি ধারা ২১ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে কোনো পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার অনুরোধ করা হয়, তাহা হইলে আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিল, যতদ্রুত সম্ভব, পরীক্ষকের নিকট প্রেরণ করিবেন যাহাতে তিনি নিম্নবর্ণিত বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করিতে পারেন, যথা:-
(ক) আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য দলিল এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি মোতাবেক হইয়াছে কি না;
(খ) আবেদনের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আপত্তির কোনো আইনগত ভিত্তি রহিয়াছে কি না;
(গ) ধারা ২৩ এর অধীন পরিচালিত অনুসন্ধানের ফলাফল;
(ঘ) নির্ধারিত অন্য কোনো বিষয়।
(২) যদি কোনো পেটেন্ট আবেদনের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক কর্তৃক গৃহীত পরীক্ষকের রিপোর্ট আবেদনকারীর প্রতিকূলে হয় এবং অতঃপর উল্লিখিত বিধান অনুযায়ী আবেদনটি নিষ্পত্তি করিবার ক্ষেত্রে কার্যধারা প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার জন্য আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য দলিল সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে মহাপরিচালক, যতদ্রুত সম্ভব, আপত্তির সার-সংক্ষেপ আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনকারী চাহিলে তাহাকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবেন।
২৩। (১) যাহাকে ধারা ২২ এর অধীন কোনো পেটেন্ট আবেদন প্রেরণ করা হয় তিনি কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার দাবিতে দাবিকৃত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি সম্পর্কে নিশ্চিত হইবার জন্য একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন, যথা:-
(ক) ধারা ২ এ বর্ণিত উদ্ভাবন, নূতনত্ব, উদ্ভাবনী ধাপ, শিল্পক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্যতার মাপকাঠিতে উহা উত্তীর্ণ কি না;
(খ) এই আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর শর্ত পূরণ করিয়াছে কি না;
(গ) উদ্ভাবনী ধাপ প্রমাণ করিবার জন্য বিশেষত্বনামা যথাযথভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ ও তুলনামূলক উপাত্ত দ্বারা সমর্থিত কি না।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার অতিরিক্ত হিসাবে আবেদনকারীর সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিলের তারিখের পূর্বে উক্ত উদ্ভাবন বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে কোনো দলিলে প্রকাশের মাধ্যমে অনুমিত হইয়াছে কি না, উহা নিশ্চিত হইবার জন্যও পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন।
(৩) যদি কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা কোনো একটি দাবি এই আইনের অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে সংশোধন করা হয়, তাহা হইলে সংশোধিত বিশেষত্বনামা বা সংশোধিত দাবি মূল বিশেষত্বনামা বা দাবির অনুরূপ একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হইবে।
(৪) ধারা ২২ ও এই ধারার অধীন পরিচালিত পরীক্ষা ও অনুসন্ধান কোনোভাবেই কোনো পেটেন্টের বৈধতা দান করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না, এবং উক্ত পরীক্ষা বা তদন্ত বা কোনো প্রতিবেদন বা উহার ফলে কোনো কার্যধারার কারণে বা এতৎসম্পর্কিত বিষয়ে সরকার বা সরকারের কোনো কর্মচারী কোনো দায় বহন করিবে না।
২৪। (১) পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার পর কোনো উদ্ভাবন পেটেন্ট মঞ্জুর সংক্রান্ত শর্তাবলি পূরণ করিয়াছে বলিয়া মহাপরিচালকের নিকট যথাযথভাবে প্রতীয়মান হইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ধারা ১৯ এর বিধানাবলী প্রতিপালন সাপেক্ষে, তিনি উদ্ভাবনটির পেটেন্ট মঞ্জুর করিয়া আদেশ জারি করিবেন এবং উক্ত শর্তাবলি পূরণ না হইলে আবেদন প্রত্যাখ্যান করিবেন, তবে উভয় ক্ষেত্রেই, তিনি গৃহীত সিদ্ধান্ত আবেদনকারীকে যথাশীঘ্র সম্ভব লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।
(২) মহাপরিচালক পেটেন্ট মঞ্জুরের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যথা:-
(ক) পেটেন্ট মঞ্জুরের বিষয়টি ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ;
(খ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ সাপেক্ষে আবেদনকারীকে পেটেন্ট মঞ্জুরের সনদ প্রদান;
(গ) পেটেন্ট আবেদনটি নিবন্ধন বহিতে নিবন্ধন।
পঞ্চম অধ্যায়
পেটেন্ট অধিকার, মালিকানা ও বাতিলকরণ
২৫। এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোনো পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর নিম্নবর্ণিত অধিকার থাকিবে, যথা:-
(ক) যখন পেটেন্টের বিষয়বস্তু কোনো পণ্য হয়, তখন পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অনুমতি ব্যতীত তৃতীয় কোনো পক্ষকে উক্ত পণ্য উৎপাদন, ব্যবহার, বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব, বিক্রয় বা এইরূপ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আমদানি প্রতিরোধ করিবার একচেটিয়া অধিকার;
(খ) যখন পেটেন্টের বিষয়বস্তু কোনো প্রক্রিয়া (Process) হয় তখন পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর অনুমতি ব্যতীত তৃতীয় পক্ষকে উক্ত প্রক্রিয়া প্রয়োগ এবং ব্যবহার, বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব, উক্ত উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা আমদানি প্রতিরোধ করিবার একচেটিয়া অধিকার।
২৬। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, প্রত্যেকটি পেটেন্টের তারিখ হইবে পেটেন্টের জন্য আবেদন দাখিলের তারিখ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তারিখ।
(২) প্রত্যেকটি পেটেন্টের তারিখ রেজিস্টারে নথিভুক্ত করা হইবে।
২৭। (১) প্রত্যেকটি পেটেন্ট নির্ধারিত ফরমে হইবে এবং সমগ্র বাংলাদেশে কার্যকর হইবে।
(২) একটি উদ্ভাবনের জন্য কেবল একটি পেটেন্ট মঞ্জুর করা যাইবে।
২৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, যে কোনো পেটেন্ট, উহার মেয়াদ শেষ না হইলে বা কার্যকারিতা না হারাইলে, পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তারিখ হইতে ২০ (বিশ) বৎসর পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
(২) পূর্ববর্তী বৎসরের বার্ষিক ফি পরিশোধ করিয়া পরবর্তী বৎসরের জন্য পেটেন্ট নবায়ন করা যাইবে।
(৩) বার্ষিক ফি প্রদানে বিলম্ব হইলে, নবায়নের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন দাখিল ও বিলম্ব ফি পরিশোধ সাপেক্ষে, বার্ষিক ফি প্রদানের সময়সীমা অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস বর্ধিত করা যাইবে।
(৪) পেটেন্টে বা এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি নবায়ন ফি প্রদানের মেয়াদ শেষ হইয়া যায় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা এইরূপ বর্ধিত সময়ের মধ্যে উক্ত ফি প্রদান না করা হয়, তাহা হইলে পেটেন্টের কার্যকরতা বাতিল হইবে।
(৫) আপাতত বলবৎযোগ্য অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি নবায়ন ফি প্রদানের মেয়াদ শেষ হইয়া যাওয়া এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা এইরূপ বর্ধিত সময়ের মধ্যে উক্ত ফি প্রদান না করিবার কারণে কোনো পেটেন্টের কার্যকরতা বাতিল হয়, তাহা হইলে উক্ত পেটেন্টির পেটেন্টের বিষয়বস্তুর সুরক্ষার কোনো অধিকার থাকিবে না।
(৬) যদি মহাপরিচালক এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, যুক্তিসঙ্গত কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবায়ন ফি পরিশোধ করা সম্ভব হয় নাই, তাহা হইলে নবায়ন ফি পরিশোধের জন্য নির্ধারিত মেয়াদোত্তীর্ণ এর ২ (দুই) বছরের মধ্যে যে কোনো সময় নির্ধারিত নবায়ন ফি ও পেটেন্ট পুনরুদ্ধার ফি পরিশোধ সাপেক্ষে পেটেন্ট পুনরুদ্ধারের আবেদন করিতে পারিবেন।
২৯। এই আইনের অধীন কোনো পেটেন্ট এই শর্তে মঞ্জুর করা হইবে যে, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের পেটেন্টের ক্ষেত্রে, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য সরকার কর্তৃক কেবল উহার নিজস্ব ব্যবহারের জন্য বা সরকার কর্তৃক বা সরকারের পক্ষে পরিচালিত কোনো ডিসপেনসারি, হাসপাতাল বা অন্য কোনো ডিসপেনসারি, হাসপাতাল বা মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে বিতরণের জন্য আমদানি করিতে পারিবে, যাহা সরকার এই মর্মে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবে যে, উক্ত ডিসপেনসারি, হাসপাতাল বা মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠান সরকারের পক্ষে জনসেবা প্রদান করে।
৩০। (১) দাখিলকৃত বা গৃহীত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স সম্পর্কিত পেটেন্টের ক্ষেত্রে উক্ত পেটেন্টের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ পেটেন্টের মালিকানার অংশ দাবি করিতে পারিবেন।
(২) পেটেন্টের মালিকানার অংশ হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বা সত্তার নাম উল্লেখপূর্বক মহাপরিচালকের নিকট আবেদন করিতে হইবে।
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পেটেন্টের মালিকানার অংশ অন্যূন ২০ (বিশ) শতাংশ হইবে।
৩১। (১) পেটেন্টের মালিকানা বা উহার আবেদনে উল্লিখিত যে কোনো পরিবর্তন লিখিত হইতে হইবে এবং পেটেন্টের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে মহাপরিচালকের কার্যালয়ে রেকর্ড করিতে হইবে, যদি না বিপরীত কোনো আবেদন করা হয় এবং মহাপরিচালক কর্তৃক উক্ত পরিবর্তন ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশিত হইবে, তবে উক্তরূপ পরিবর্তন রেকর্ডভুক্তির পূর্বে তৃতীয় কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর হইবে না।
(২) পেটেন্ট সংক্রান্ত যে কোনো লাইসেন্সের চুক্তি বা তৎসম্পর্কিত আবেদন মহাপরিচালকের নিকট দাখিল করিতে হইবে।
(৩) মহাপরিচালক, উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন রেকর্ডভুক্ত করিবেন, তবে উহার বিষয়বস্তু গোপন রাখিতে হইবে এবং তৎসম্পর্কিত মন্তব্য প্রকাশ করিবেন না এবং রেকর্ডভুক্ত হইবার পূর্বে তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে লাইসেন্সের চুক্তি কার্যকর হইবে না।
(৪) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী কতিপয় শর্ত পরিহার করা যাইবে, যথা:-
(ক) কোনো পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টকৃত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত কোনো পণ্য বিক্রয় বা লিজ বা তৎসংক্রান্ত কোনো চুক্তি; অথবা
(খ) পেটেন্টপ্রাপ্ত কোনো পণ্য উৎপাদন বা ব্যবহারের লাইসেন্স; অথবা
(গ) পেটেন্ট দ্বারা সংরক্ষিত কোনো প্রক্রিয়া ব্যবহারের লাইসেন্সে এইরূপ বিষয় সংযুক্ত করা আইনসঙ্গত হইবে না, যাহা -
(অ) ক্রেতা, লিজগ্রহীতা বা লাইসেন্সিকে বিক্রেতা, লিজদাতা বা লাইসেন্সদাতা বা নমিনির নিকট হইতে পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ব্যতীত বা পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পণ্য ব্যতীত কোনো পণ্য গ্রহণ বা গ্রহণ না করিতে নির্দেশ প্রদান, অথবা কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে কোনো পদ্ধতিতে বা কোনো পরিমাণ গ্রহণ করিতে নির্দেশ প্রদান করে;
(আ) ক্রেতা, লিজগ্রহীতা বা লাইসেন্সিকে বিক্রেতা, লিজদাতা বা লাইসেন্সদাতা বা নমিনির নিকট হইতে পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ব্যতীত বা পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পণ্য ব্যতীত কোনো পণ্য গ্রহণ নিষেধ করা, অথবা কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে কোনো পদ্ধতিতে বা কোনো পরিমাণে গ্রহণ করিতে নিষেধ করা;
(ই) ক্রেতা, লিজগ্রহীতা বা লাইসেন্সিকে বিক্রেতা, লিজদাতা বা লাইসেন্সদাতা বা নমিনির নিকট হইতে পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ব্যতীত বা পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পণ্য ব্যতীত কোনো পণ্য ব্যবহার না করিতে নির্দেশ প্রদান, অথবা কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে কোনো পদ্ধতিতে বা কোনো পরিমাণে গ্রহণ করিতে নিষেধ করা;
(ঈ) ক্রেতা, লিজগ্রহীতা বা লাইসেন্সিকে পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রক্রিয়া ব্যতীত অন্য কোনো প্রক্রিয়া ব্যবহার করিতে নিষেধ করা বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ব্যতীত অন্য কোনো পণ্য ব্যবহারের পদ্ধতি বা ব্যাপ্তি সীমিত করা।
(৫) পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের কোনো মোকদ্দমায় ইহা প্রমাণ করা আত্মপক্ষ সমর্থন করা হইবে যে, উহা লঙ্ঘনের সময় পেটেন্ট সংক্রান্ত এইরূপ কোনো চুক্তি কার্যকর ছিল যাহাতে উপ-ধারা (৪) এর অধীন অবৈধ ঘোষিত কোনো শর্ত ছিল:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি বাদী চুক্তির কোনো পক্ষ না হয় এবং আদালতের সন্তোষানুযায়ী প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, সীমাবদ্ধতা আরোপকারী শর্ত তাহার অজান্তে বা সম্মতি, প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য যাহাই হউক না কেন, ব্যতীত সংযুক্ত করা হইয়াছিল, তাহা হইলে উপ-ধারা (৪) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
(৬) যদি মহাপরিচালক এই মর্মে নিশ্চিত হন যে, অধিকার সংক্রান্ত চুক্তিতে বা উহাতে উল্লিখিত কোনো আইনগত দলিলে উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত শর্তাবলি বিদ্যমান রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি পেটেন্টের মালিকানা পরিবর্তন বা লাইসেন্সের চুক্তি রেকর্ড করিতে অস্বীকার করিতে পারিবেন, তবে কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ শুনানি গ্রহণের অনুরোধ করিলে তিনি চুক্তির সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানি গ্রহণ করিবেন এবং এইরূপ ক্ষেত্রে চুক্তির পক্ষগণ কর্তৃক চুক্তি সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল সাপেক্ষে, মহাপরিচালক এইরূপ বিষয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিষ্পত্তি করিবেন।
(৭) কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ, মহাপরিচালক কর্তৃক চুক্তি রেকর্ড করিতে অস্বীকার করিবার সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করিতে পারিবে।
(৮) স্বত্বগ্রহীতা বা লাইসেন্সগ্রহীতার উপর আরোপিত যে কোনো সীমাবদ্ধতা, যাহা লাইসেন্সকৃত অধিকারের নিবন্ধন দ্বারা উদ্ভূত নহে বা অধিকারের রক্ষাকবচের জন্য প্রয়োজনীয় নহে, তাহা অপব্যবহারমূলক বা অসম প্রতিযোগিতামূলক প্রভাবসম্পন্ন বা অসম প্রতিযোগিতামূলক বলিয়া গণ্য হইবে।
(৯) ভিন্নরূপ বিধান করা না হইলে, প্রয়োগের পরিস্থিতি, কারণ বা যৌক্তিকতা যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন না থাকিলে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি বা দফার প্রয়োগ আইন বহির্ভূত মর্মে গণ্য হইবে, যথা:-
(ক) লাইসেন্স গ্রহীতা কর্তৃক লাইসেন্সকৃত উদ্ভাবনের যে কোনো উন্নয়ন বা রূপান্তরিত ব্যবহারের জন্য লাইসেন্সি কর্তৃক লাইসেন্সদাতাকে ক্ষমতার্পণ, যদি না উক্ত ক্ষমতার্পণ লাইসেন্সের চুক্তির অধীন একই শর্তে হইয়া থাকে;
(খ) লাইসেন্সদাতার অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ (Intellectual Asset) অর্থাৎ, পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্কস প্রভৃতি বা ব্যবসার গোপনীয়তার দ্বারা অর্জিত হয়, উহার অতিরিক্ত পারিতোষিক বা উহা অর্জনের জন্য লাইসেন্সগ্রহীতা বা স্বত্বনিয়োগীর বাধ্যবাধকতা আরোপ;
(গ) লাইসেন্সকৃত অধিকার বা হস্তান্তরিত অধিকারের বৈধতার আপত্তি উত্থাপনের ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতা বা স্বত্বগ্রহীতার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি;
(ঘ) লাইসেন্সকৃত বা হস্তান্তরিত উদ্ভাবন সংরক্ষণের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর ব্যবহার বা পেটেন্ট দ্বারা অর্জিত হয় নাই এইরূপ বিষয়বস্তুর ব্যবহারের পারিতোষিকের ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা আরোপ;
(ঙ) লাইসেন্সগ্রহীতা বা স্বত্বনিয়োগী কর্তৃক লাইসেন্সদাতা বা স্বত্বনিয়োগকর্তা, বা লাইসেন্সদাতা বা স্বত্বনিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোনো ব্যক্তি হইতে উপাদান, কাঁচামাল বা অন্য যে কোনো দ্রব্য বা সেবা যাহা উদ্ভাবনটি ব্যবহার করিবার জন্য প্রয়োজন এবং যাহা লাইসেন্সকৃত উদ্ভাবনের দাবি দ্বারা সমর্থিত নহে, তাহা অর্জন করিবার বাধ্যবাধকতা আরোপ;
(চ) মেধাসম্পদের অধিকারের আওতাভুক্ত হউক বা না হউক অন্য যে কোনো প্রযুক্তির উন্নয়ন বা ব্যবহার সীমিতকারী অথবা বারণ সংক্রান্ত যে কোনো শর্ত আরোপ।
(১০) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, স্বত্বনিয়োগ এবং লাইসেন্স প্রদানের চুক্তিতে নিম্নবর্ণিত বিধান সন্নিবেশ করা যাইবে, যথা:-
(ক) পরিধি, ভৌগোলিক এলাকা এবং পেটেন্ট ব্যবহারের মেয়াদ;
(খ) পণ্য এবং সেবার মানের পর্যাপ্ততা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি;
(গ) পেটেন্টেকৃত বিষয়বস্তুর মালিকানা বা সুনামের প্রতি হানিকর সকল কার্য হইতে বিরত থাকিবার ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা।
(১১) যেক্ষেত্রে কোনো পেটেন্টে স্বত্বনিয়োগ বা কোনো লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়বস্তু চুক্তি কার্যকর হইবার পর বাতিল হয়, সেইক্ষেত্রে চুক্তিটি তাৎক্ষণিকভাবে সমাপ্ত হইবে এবং পক্ষগণ উক্ত চুক্তির অধীন যে পরিমাণ অর্থ বা সুযোগ-সুবিধা পরস্পরকে প্রদান করিয়াছে উক্ত অর্থ বা সুযোগ-সুবিধার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ পুনরুদ্ধার করিতে পারিবেন, যদি না উক্ত অর্থ বা সুযোগ-সুবিধা যে পক্ষের অনুকূলে প্রদত্ত হইয়াছিল, উক্ত পক্ষ চুক্তির কারণে সরল বিশ্বাসে উহার দ্বারা লাভবান হইয়া থাকেন এবং চুক্তি বাতিলের কারণে উক্ত সুযোগ-সুবিধা বাতিল হইয়া না থাকে।
(১২) উপ-ধারা (৯) এর বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনসহ, লাইসেন্স প্রদান এবং অনিষ্পন্ন পেটেন্ট আবেদন হস্তান্তরের চুক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।
৩২। (১) স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কোনো পেটেন্ট বাতিল করিবার উদ্দেশ্য আদালতে আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) যদি পেটেন্ট বাতিলের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) অধীন কোনো প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরণ করা হয় নাই বা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী উহার উদ্ভাবক বা উহার স্বত্বের উত্তরাধিকারী না হন, তাহা হইলে উপযুক্ত আদালত উক্ত পেটেন্ট বাতিল করিতে পারিবে।
(৩) যেক্ষেত্রে উদ্ভাবনের অংশবিশেষ বাতিলের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়, কেবল সেইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দাবি বা দাবিসমূহ বাতিল হইবে।
(৪) বাতিল ঘোষিত যে কোনো পেটেন্ট বা কোনো দাবি বা দাবির অংশবিশেষ, পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখ হইতে বাতিল হইবে এবং উহা কখনও মঞ্জুর করা হয় নাই মর্মে গণ্য হইবে।
(৫) পেটেন্ট অধিকার সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পেটেন্ট বাতিল করিবার পরিবর্তে পেটেন্টের স্বত্বাধিকার তাহাকে হস্তান্তর করিবার জন্য উপযুক্ত আদালতের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।
(৬) আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মহাপরিচালককে অবহিত করা হইবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত অবহিত হইবার পর তিনি উহা রেকর্ড করিবেন ও বিধি মোতাবেক উহার স্মারক প্রকাশ করিবেন।
(৭) মহাপরিচালকের নিকট পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি-বিধান মোতাবেক পেটেন্ট বাতিল করা যাইবে।
(৮) মহাপরিচালকের নিকট পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি-বিধান মোতাবেক পেটেন্ট এর স্বত্বত্যাগ ও পেটেন্ট প্রত্যাহার করা যাইবে।
ষষ্ঠ অধ্যায়
পেটেন্ট রদ
৩৩। (১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইন প্রবর্তিত হইবার পূর্বে হউক বা পরে, কোনো ব্যক্তি বা সরকার কর্তৃক পিটিশন দাখিল করা হইলে বা উক্ত পেটেন্ট লঙ্ঘনের মোকদ্দমায় পাল্টা-দাবির ক্ষেত্রে জেলা আদালত কর্তৃক নিম্নবর্ণিত কারণে কোনো পেটেন্ট বাতিল করা যাইবে, যথা:-
(ক) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি বাংলাদেশে অন্য কোনো পেটেন্টের সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় কোনো বৈধ দাবিতে উহার পূর্বের অগ্রাধিকার তারিখে দাবি করা হইয়া থাকে;
(খ) যদি উদ্ভাবনটি এইরূপ কোনো ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্জুর করা হয় যাহার এই আইনের অধীন আবেদন করিবার অধিকার নাই;
(গ) যদি উদ্ভাবনটি কোনো পিটিশনারের অধিকার লঙ্ঘন করিয়া অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হয়;
(ঘ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনের বিষয় ধারা ২ এর দফা (৬) অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবন না হয়;
(ঙ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি, দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে অন্য কোথাও জনগণের নিকট জ্ঞাত থাকে বা জনগণের মধ্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকে বা বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও বা ধারা ২৩ এ উল্লিখিত কোনো দলিলে প্রকাশিত হইয়া থাকে এবং উক্ত বিবেচনায় ধারা (২) এর দফা (১০) এর অর্থ অনুযায়ী উহা নূতন না হয়;
(চ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি, দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও জনগণের নিকট জ্ঞাত থাকে বা জনগণের মধ্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকে বা বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও প্রকাশিত হইয়া থাকে এবং উক্ত বিবেচনায় উহা প্রতীয়মাণ হয় বা ধারা ২ এর দফা (৭) এর অর্থ অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবনী ধাপ সম্পর্কিত না হয়;
(ছ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি ধারা ২ এর দফা (২) এর বিধান অনুযায়ী না হয় বা ব্যবহারযোগ্য না হয়;
(জ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) ও (১১) এর বিধান অনুযায়ী ও পদ্ধতিতে সম্পাদনের কথা থাকে, অর্থাৎ উদ্ভাবনটি পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় বর্ণিত পদ্ধতি বা নির্দেশাবলি সংশ্লিষ্ট বা সমরূপ প্রযুক্তিতে সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তিকে উদ্ভাবনটি পরিচালনায় সক্ষম করিয়া তুলিবার জন্য পর্যাপ্ত নহে বা উদ্ভাবনটি পরিচালনার জন্য আবেনকারীর জ্ঞাত সর্বোত্তম পদ্ধতি এবং যাহার জন্য তিনি সুরক্ষার অধিকারী ছিলেন উহা প্রকাশ করা না হয়;
(ঝ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার কোনো দাবির বৈশিষ্ট্য পূর্ণাঙ্গভাবে বা সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা না করা হয় বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার কোনো দাবি বিশেত্বনামায় প্রকাশিত বিষয়ের উপর যথাযথভাবে ভিত্তি করিয়া না হয়;
(ঞ) যদি পেটেন্ট মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর বা অপূর্ণ প্রস্তাব বা বিবৃতির মাধ্যমে অর্জিত হয়;
(ট) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার বিষয়বস্তু ধারা ৬ এর বিধান অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য না হয়;
(ঠ) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনের জন্য ব্যবহৃত জৈবিক (বায়োলজিক্যাল) উপাদানের উৎস বা ভৌগোলিক উৎস (অরিজিন) প্রকাশ না করা হয় বা ভুলভাবে প্রকাশ করা হয়;
(ড) যদি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত জ্ঞানের ভিত্তিতে অনুমান করা হয় যে, বাংলাদেশে বা অন্য কোথাও স্থানীয় বা প্রচলিত সমাজে বা গোত্রে পাওয়া যায়।
(২) এই ধারার অধীন পেটেন্ট বাতিলের আবেদনের একটি নোটিশ, মহাপরিচালকের নিকট প্রতীয়মান উক্ত পেটেন্টের সকল স্বত্বাধিকারীকে বা যাহাদের উহাতে শেয়ার বা স্বার্থ আছে তাহাদেরকে, প্রদান করা হইবে এবং অন্য কোনো ব্যক্তিকে এইরূপ নোটিশ প্রদানের প্রয়োজন হইবে না।
৩৪। যদি সরকারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, কোনো পেটেন্ট বা উহার কার্যপদ্ধতি জনস্বাস্থ্য বা জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর, তাহা হইলে সরকার, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পেটেন্ট প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত পেটেন্ট বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।
সপ্তম অধ্যায়
পেটেন্ট কার্যকরকরণ, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স এবং সরকার কর্তৃক ব্যবহার
৩৫। এই আইনের কোনো বিধান ক্ষুণ্ন না করিয়া, এই অধ্যায়ে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি সাধারণ বিবেচনায় লইতে হইবে, যথা:-
(ক)উদ্ভাবনের প্রতি উৎসাহিত করিবার জন্য এবং উদ্ভাবনটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশে কার্যকর এবং উহা অযাচিত বিলম্ব ব্যতীত স্বাভাবিকভাবে ব্যবহারযোগ্য ইহা নিশ্চিত করিবার জন্য পেটেন্ট মঞ্জুর করা হইবে;
(খ) কেবল পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করিবার জন্য পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে সক্ষম করিবার উদ্দেশ্যে পেটেন্ট মঞ্জুর করা হইবে না;
(গ) পেটেন্ট অধিকার সুরক্ষা ও প্রয়োগের মাধ্যমে নূতন প্রযুক্তির অগ্রগতি সাধিত হয়, প্রযুক্তির হস্তান্তর ও প্রচার ঘটে, উৎপাদক ও প্রযুক্তির ভোক্তাদের পারস্পরিক সুবিধা নিশ্চিত হয় এবং উহার পদ্ধতি সামাজিক ও অর্থনৈতিক কল্যাণে ফলপ্রসূ এবং উহা অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যে ভারসাম্যতা সৃষ্টি করে;
(ঘ) মঞ্জুরকৃত পেটেন্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির সুরক্ষা ব্যাহত করে না এবং জনস্বার্থের অগ্রগতি, বিশেষ করিয়া বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ খাতের অগ্রগতির নিয়ামক হিসাবে ভূমিকা রাখে;
(ঙ) মঞ্জুরকৃত পেটেন্ট কোনোভাবেই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে না;
(চ) পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী বা তাহার নিকট হইতে পেটেন্টের অধিকার বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো পেটেন্টের অপব্যবহার হয় না এবং এইরূপ চর্চায় পরিণত হয় না যাহা অযৌক্তিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করে বা প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে; এবং
(ছ) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবনের ফলাফল সুলভ মূল্যে জনগণের নিকট পৌঁছাইয়া দেওয়ার জন্য পেটেন্ট মঞ্জুর করা হয়।
৩৬। ১। নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময় বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) জনস্বার্থ, বিশেষত জাতীয় নিরাপত্তা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য বা জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য আবশ্যক হয়;
(খ) কোনো আদালত বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে যে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী বা লাইসেন্সি কর্তৃক উদ্ভাবন ব্যবহারের পদ্ধতি অসম প্রতিযোগিতামূলক;
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অসম প্রতিযোগিতা অর্থে নিয়ন্ত্রণকারী অবস্থানের অপব্যবহার, যথাযথ ও ন্যায়সঙ্গত শর্তে লাইসেন্স প্রদানে অস্বীকৃতি অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(গ) পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী কর্তৃক তাহার একচেটিয়া অধিকারের অপব্যবহার;
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, একচেটিয়া অধিকারের অপব্যবহার অর্থে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-
(অ) পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি জনগণের যৌক্তিক প্রয়োজন পূরণে ব্যর্থ হইয়াছে;
(আ) পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে সহজলভ্য নহে;
(ঘ) পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন আমদানি ব্যতীত স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশে কার্যক্ষম নহে এবং পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হয় যে, অর্থনৈতিকভাবে বা প্রযুক্তিগতভাবে উহা পূর্ণাঙ্গভাবে বা আংশিকভাবে উৎপাদন সম্ভব;
(ঙ) কোনো দ্বিতীয় পেটেন্ট আবেদনে এইরূপ কোনো উদ্ভাবনের দাবি করা হয়, যাহা প্রথম পেটেন্টে দাবিকৃত উদ্ভাবনের সহিত সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, উন্নত কারিগরি জ্ঞান বিষয়ক এবং প্রথম পেটেন্ট লঙ্ঘন না করিয়া দ্বিতীয় পেটেন্ট কাজে লাগানো সম্ভব নহে;
(চ) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী যৌক্তিক কারণ ব্যতীত আবেদনের তারিখ হইতে অনধিক ৪ (চার) মাসের মধ্যে লাইসেন্স মঞ্জুর করিতে অস্বীকার করে;
(ছ) কোনও অপরিহার্য পরিষেবার সুযোগ পাওয়া (প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সহজলভ্য করা), যাহার মধ্যে ফিক্সড্-ডোজ কম্বিনেশন মেডিসিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর মহাপরিচালক, প্রয়োজনীয় শর্ত সাপেক্ষে, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করিতে পারিবেন এবং আবেদনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের আবেদন বিবেচনা ও নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
(৩) যদি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আবেদন দাখিল করা হয়, তাহা হইলে আবেদনকারী পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর নিকট হইতে যথাযথ বাণিজ্যিক শর্ত সাপেক্ষে বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রচেষ্টা চালাইবেন এবং যদি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে এইরূপ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে উক্ত বিধান উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন কোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(৪) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন পেটেন্টকৃত পণ্যের অকার্যকরতা বা অপর্যাপ্ত কার্যকরতার কারণে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসর বা পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর, যে সময়কাল পরে অতিক্রান্ত হয়, কোনো বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রযোজ্য হইবে না এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান অস্বীকার করা হইবে না, যদি না পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী এইরূপ নিষ্ক্রিয়তা বা অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপন করিতে সক্ষম হন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত বাধ্যতামূলক লাইসেন্স একচেটিয়া হইবে না এবং হস্তান্তরযোগ্যও হইবে না, এমনকি সাব-লাইসেন্সের মাধ্যমেও, তবে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বা সুনামের এইরূপ অংশের জন্য হস্তান্তরযোগ্য হইবে যাহার ক্ষেত্রে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহৃত হয়।
(৬) বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের অধীন উদ্ভাবনের ব্যবহার প্রধানত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যদি না অসম প্রতিযোগিতা প্রতিকারের উদ্দেশ্যে উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন উক্ত বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয় বা ধারা ৩৯ এর অধীন উৎপাদন-সামর্থহীন বা অপর্যাপ্ত উৎপাদন-সামর্থ কোনো বিদেশি ভূখণ্ডে রপ্তানি করাই লাইসেন্সের উদ্দেশ্য হয়।
(৭) সেমি-কন্ডাক্টর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, উদ্ভাবনের বাধ্যতামূলক লাইসেন্স কেবল মহাপরিচালক কর্তৃক অবাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে মঞ্জুর করা হইবে বা যেক্ষেত্রে কোনো আদালত বা আইনানুগভাবে গঠিত সংস্থা কর্তৃক স্থিরীকৃত হয় যে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী বা লাইসেন্সি কর্তৃক, পেটেন্টভুক্ত উদ্ভাবনের ব্যবহারের প্রক্রিয়া অসম প্রতিযোগিতামূলক এবং সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, বাধ্যতামূলক নহে এমন কোনো লাইসেন্সের মঞ্জুরি উক্ত প্রচলিত রীতিতে যথাযথ প্রতিকার হইতে পারে, সেইক্ষেত্রে এইরূপ পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হইবে।
(৮) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর অধীন বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হইলে-
(ক) প্রথম পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী দ্বিতীয় পেটেন্টের দাবিকৃত উদ্ভাবন ব্যবহারের জন্য যুক্তিসঙ্গত শর্তে লাইসেন্স প্রাপ্তির অধিকারী হইবেন; এবং
(খ) দ্বিতীয় পেটেন্টের স্বত্ব প্রদান ব্যতীত প্রথম পেটেন্টের লাইসেন্সের স্বত্ব প্রদানযোগ্য হইবে না।
৩৭। (১) মহাপরিচালক, ধারা ৩৬ এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর পেটেন্ট আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে উক্ত আবেদনের একটি কপিসহ নোটিশ প্রদান করিবেন।
(২) পেটেন্ট আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী যিনি উক্ত আবেদনের বিরোধিতা করিতে আগ্রহী, তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিরোধের নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন।
(৩) এইরূপ বিরোধের কোনো নোটিশ প্রদান করা হইলে, মহাপরিচালক বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন এবং ধারা ৩৬ এর উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত মেয়াদের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের পূর্বে আবেদনকারী ও বিরোধিতাকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবেন।
(৪) ধারা ৩৬ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হইলে, মহাপরিচালক পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে প্রদেয় যথাযথ পারিতোষিক, যাহা মোট বিক্রয়ের অনধিক ৪% (চার শতাংশ) হইবে এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য শর্ত নির্ধারণ করিবেন।
(৫) ধারা ৩৬ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হইলে, পারিতোষিকের পরিমাণ নির্ধারনের ক্ষেত্রে লাইসেন্সি কর্তৃক পেটেন্ট এর অসম প্রতিযোগিতামূলক ব্যবহার সংশোধনের আবেদন বিবেচনা করিতে হইবে।
(৬) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স কার্যকর রাখিবার মতো প্রয়োজনীয় অবস্থা সমাপ্ত হইয়াছে এবং উহার পুনরাবৃত্তি অসম্ভব, বা বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি লাইসেন্সের বিধান পালন করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন, তাহা হইলে মহাপরিচালক, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সির আইনগত স্বার্থের যথাযথ সুরক্ষার শর্ত সাপেক্ষে, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স বাতিল করিতে পারিবেন, তবে লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে লাইসেন্সিকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
৩৮। ধারা ৩৬ এর উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, জাতীয় জরুরি অবস্থা বা অন্যান্য চরম জরুরি পরিস্থিতি বিদ্যমান বা সরকার কর্তৃক অবাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য উক্ত পেটেন্টের সিলিং এর পর যে কোনো সময় বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই মর্মে একটি ঘোষণা প্রদান করিতে পারিবে এবং এতদ্সঙ্গে নিম্নবর্ণিত বিধানাবলি কার্যকর হইবে, যথা:-
(ক) মহাপরিচালক, প্রজ্ঞাপন জারির পর যে কোনো সময়, কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, তিনি যেরূপ মনে করিবেন সেইরূপ শর্তে, আবেদনকারীর অনুকূলে লাইসেন্স মঞ্জুর করিবেন;
(খ) এই ধারার অধীন লাইসেন্স মঞ্জুর করিবার ক্ষেত্রে, মহাপরিচালক নিশ্চিত হইবার প্রচেষ্টা করিবেন যে, উক্ত লাইসেন্সের অধীন উৎপাদিত পণ্য জনগণ সুলভ মূল্যে পাইবেন;
(গ) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ধারা ৩৬ এর উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত শর্তাবলির বিধান এবং ধারা ৩৭ এর উপ-ধারা (১), (২) ও (৩) এর কার্যপদ্ধতি এই ধারার অধীন লাইসেন্স মঞ্জুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না;
(ঘ) এই ধারার অধীন দাখিলকৃত আবেদন ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হইবে এবং এইরূপ পরিস্থিতিতে, যতদ্রুত সম্ভব, লাইসেন্সের স্বত্বাধিকারীকে মহাপরিচালকের সিদ্ধান্ত অবহিত করা হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “পরিস্থিতি” অর্থে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থাসহ, জনস্বাস্থ্য সংকট, এইডস্, এইচআইভি, যক্ষা (Tuberculosis), ম্যালেরিয়া বা অন্য কোনো মহামারি (Pandemic) এবং অসংক্রামক রোগ, যেমন- কর্কট (Cancer), বহুমূত্র (Diabetes), হৃদযন্ত্রের জটিলতা (Cardiovascular Disorder), বা সমজাতীয় রোগের প্রতিষেধকের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হইবে।
৩৯। নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে, যথা:-
(ক) যে সকল দেশে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন অপর্যাপ্ত বা উৎপাদনে সক্ষমতা নেই, সেই সকল দেশে পেটেন্টকৃত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ বা রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ দেশ কর্তৃক বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করিতে হইবে বা, ক্ষেত্রমত, প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ হইতে পেটেন্টকৃত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানির অনুমোদন প্রদান করিতে হইবে;
(খ) মহাপরিচালক, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আবেদন প্রাপ্তির পর কেবল সংশ্লিষ্ট ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করিবেন;
(গ) দফা (ক) এবং (খ) এর বিধান মোতাবেক বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মাধ্যমে যে সকল ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য তৈরি করা হইয়াছে উহা এই আইনের প্রযোজ্য অন্য কোনো বিধান অনুযায়ী রপ্তানি করা যাইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য’’ বলিতে কোনো পেটেন্টকৃত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, বা পেটেন্টকৃত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য যাহা জনস্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় এবং উক্ত পণ্য উৎপাদনের উপাদান এবং রোগ নির্ণয়ক কিটও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(ঘ) ধারা ৪০ এর উপ-ধারা ৪ এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।
৪০। (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অধিদপ্তরে কোনো পেটেন্টের আবেদন দাখিলের পর বা পেটেন্ট মঞ্জুরের পর, সরকার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, সরকারের প্রয়োজনে, এই ধারার বিধান মোতাবেক যে কোনো সময় উক্ত উদ্ভাবন ব্যবহার করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- “সরকারের প্রয়োজনে” বলিতে জনস্বার্থ, জনস্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিবেশ, পেটেন্টকৃত পণ্যের বিদ্যমান চাহিদা, পেটেন্টকৃত পণ্যের চড়া মূল্য, সরকার কর্তৃক গেজেটভুক্ত কোনো প্রকারের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও, যে কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন সরকারের উদ্দেশ্যে ক্ষমতা অর্জনের জন্য সরকারের নিকট আবেদন করিতে পারিবে, এবং এইরূপ আবেদনের ক্ষেত্রে, আবেদনের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে, আবেদনকারী ও পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে শুনানির সুযোগ প্রদানের পর, কারণসহ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হইবে।
(৩) কোনো উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সরকার, পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে হউক বা পরে, এই ধারার অধীন ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে এবং আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হউক বা না হউক, যে কোনো ব্যক্তিকে উক্ত উদ্ভাবন উৎপাদন, ব্যবহার, চর্চা বা বিক্রয়ের জন্য অথবা যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম বা উক্ত পেটেন্টের আওতাভুক্ত অন্য কোনো পণ্য বা ঔষধ বা ড্রাগ আমদানির জন্য এইরূপ ক্ষমতা প্রদান করা যাইবে।
(৪) সরকার এইরূপ ব্যবহারের জন্য পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে ন্যায্য বিক্রির অনধিক ৪% (চার শতাংশ) পারিতোষিক প্রদান করিবে।
৪১। (১) যদি ধারা ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯ বা ৪০ এর কোনো একটির অধীন বাধ্যতামূলক লাইসেন্স ইস্যু করা হয়, তাহা হইলে পেটেন্ট বা পেটেন্ট আবেদনের সুরক্ষিত বিষয়বস্তু উৎপাদন, ব্যবহার, বিক্রির জন্য প্রস্তাব, বিক্রি, আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে লাইসেন্সিকে প্রাসঙ্গিক তথ্য, যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় ডসিয়ার, পরীক্ষা ফলাফল বা অন্যান্য উপাত্ত সরবরাহ করিবার জন্য আবেদনকারী বা পেটেন্টিকে নির্দেশ প্রদান করা যাইবে।
(২) পেটেন্ট আবেদনকারী বা পেটেন্টি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অনুরোধ পালন করিতে অস্বীকার করিলে, কোনো রেগুলেটরি এজেন্সি, অন্য কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানকে, যাহাদের নিকট এইরূপ প্রাসঙ্গিক তথ্য, যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় ডসিয়ার, পরীক্ষা ফলাফল বা অন্যান্য উপাত্ত রহিয়াছে, উহা সরবরাহ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করা যাইবে।
অষ্টম অধ্যায়
ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট
৪২। (১) “ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট” অর্থ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত পেটেন্ট অধিকার, যাহা কোনো পণ্যের বা সংযোজনের গঠন বা আকৃতির সহিত সম্পৃক্ত, শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযুক্ত, এবং যাহাতে প্রযুক্তির অগ্রগতির বৈশিষ্ট্য রহিয়াছে এবং যাহা জ্ঞাতপূর্বত্বের আওতাবহির্ভূত এবং এই আইনের অধীন নিবন্ধিত।
(২) নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ ইউটিলিটি মডেল হিসাবে সুরক্ষা বহির্ভূত হইবে, যথা:-
(ক) ডিভাইসের কোনো প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি;
(খ) থিউরি বা আবিষ্কারসমূহ;
(গ) স্বতন্ত্রভাবে কম্পিউটার প্রোগ্রাম;
(ঘ) যদি বায়োটেকনোলজি বা মাইক্রোবায়োলজি বা ফার্মাসিউটিক্যাল বা অ্যাগ্রো-কেমিক্যাল কম্পোজিশন এর অধীন দাবিকৃত বিষয়বস্তু এই আইনের অধীন নিষিদ্ধ হয়;
(ঙ) যদি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বা জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা বিরোধী হয়;
(চ) কোনো গঠন বা কেমিক্যাল যৌগ বা লিকুইড ব্যালাস্ট, রাস্তার জন্য ব্যবহৃত অমসৃণ দানা সংশ্লিষ্ট পণ্য যাহা কোনো নির্দিষ্ট আকৃতি ধারণ করে না;
(ছ) পরিচিত বস্তুর নূতন ব্যবহারসহ একটি ব্যবহার অথবা বংশক্রমসহ প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত জৈবিক (বায়োলজিক্যাল) উপাদান, সম্পূর্ণ হউক বা আংশিক;
(জ) এই আইনের অধীন নিষিদ্ধ কোনো প্রক্রিয়া বা পণ্যের উদ্ভাবন;
(ঝ) উদ্ভিদ ও প্রাণী, সম্পূর্ণ বা উহাদের অংশবিশেষ, রূপান্তরিত হউক না হউক, বীজ, বা প্রকৃতিতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে প্রাপ্ত কোনো বস্তু, জীবিত বস্তু বা বায়োলজিক্যাল রিসোর্স, যদিও উহা পরিশোধিত বা উহা হইতে পৃথককৃত বা রূপান্তরিত;
(ঞ) কোনো সংযোজন বা সংমিশ্রণ বা একাধিক সংযোজনের মাধ্যমে প্রাপ্ত কোনো বস্তু বা উপাদান যাহার ফলে উহার উপাদানের বৈশিষ্ট্যসমূহ একত্রিত হয়;
(ট) জ্ঞাত একাধিক ডিভাইসের সুবিন্যাস বা পুনরুৎপাদন বা প্রতিলিপিকরণ যাহাদের প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে জ্ঞাত কোনো পদ্ধতিতে কার্যরত থাকে।
৪৩। (১) যে কোনো ব্যক্তি বা উদ্ভাবক ইউটিলিটি মডেল পেটেন্টের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) বিবৃতি সম্বলিত নির্দিষ্ট ফরমে ফি সহকারে যথাযথভাবে পূরণকৃত অনুরোধ দাখিল করিতে হইবে।
(৩) ইউটিলিটি মডেল পেটেন্টের আবেদন দাবি আকারে হইবে এবং উক্ত দাবি বা দাবিসমূহ সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দ্বারা সমর্থিত হইবে।
(৪) কোনো আবেদন সাধারণ ও কারিগরি শর্তাদি প্রতিপালন করিলে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হইবে।
(৫) যেক্ষেত্রে ইউটিলিটি মডেল পেটেন্টের অগ্রাধিকার দাবি করা হয়, সেইক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তারিখ কার্যকর থাকিবে।
(৬) নূতনত্ব, শিল্পে ব্যবহারযোগ্যতা ও উহা নিবন্ধন অযোগ্য ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট কিনা এবং এই আইন ও এর আওতায় প্রণীত বিধিমালার বর্ণিত সকল বিষয় ও শর্তাদি প্রতিপালন সম্পর্কিত পরীক্ষা সম্পন্ন করিতে হইবে। আবেদনকারীর অনুরোধ বা পরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন সংশোধন করা যাইবে। পরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী আবেদন নিবন্ধন বা প্রত্যাখ্যান করা যাইবে।
(৭) যেক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো পক্ষ কর্তৃক ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট নিবন্ধনের বিরোধিতা করা হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত পক্ষ বা পক্ষগণকে বিরোধিতার সমর্থনে পর্যাপ্ত তথ্য ও প্রমাণাদি দাখিল করিতে হইবে। প্রাপ্ত তথ্য ও প্রমাণাদির আলোকে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শুনানি গ্রহণ করে মহাপরিচালকের বিবেচনায় যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে হইবে।
(৮) ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট নিবন্ধনের মেয়াদ হইবে নবায়ন সাপেক্ষে ৮ (আট) বৎসর এবং ইহা আবেদন দাখিলের তারিখ বা ক্ষেত্রমত অগ্রাধিকার তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।
(৯) ইউটিলিটি মডেল পেটেন্ট সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
নবম অধ্যায়
পেটেন্ট অধিকার কার্যকরকরণ
৪৪। (১) কোনো ব্যক্তি, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সহিত চুক্তি সম্পাদন ব্যতিরেকে, ধারা ২৫ এর অধীন ঘোষিত কোনো অধিকার লঙ্ঘন করিলে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে উক্ত অধিকার লঙ্ঘনের মামলা করিতে পারিবেন।
(২) যদি-
(ক) কোনো পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী, একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নহে এইরূপ কোনো লাইসেন্সি চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন না করেন তাহা হইলে উক্তরুপ কোনো লাইসেন্সি কোনো চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন;
(খ) কোনো একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নহে এইরূপ কোনো লাইসেন্সি লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কোনো লাইসেন্সির বিরুদ্ধে পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন;
(গ) দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গ হয় তাহা হইলে, লাইসেন্সি বা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে;
(ঘ) আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো পক্ষ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিয়াছে এবং উক্তরূপ শর্ত ভঙ্গ দ্বারা অপরপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, তাহা হইলে আদালত শর্ত ভঙ্গকারী কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে।
(৩) দেওয়ানি কার্যবিধি বা মামলার বিষয়বস্তুর সহিত সম্পর্কিত অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো আদালত ধারা ২৫ এর বিধান ভঙ্গের জন্য আদেশ জারি করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি বিবাদি কর্তৃক পেটেন্ট প্রত্যাহারের কোনো পাল্টা-দাবি উত্থাপন করা হয়, তাহা হইলে আদালত বিধান ভঙ্গের মামলা ও পাল্টা-দাবি উভয়টি একসঙ্গে বিচার করিবে।
৪৫। ধারা ৪৪ এর অধীন কোনো মোকদ্দমা কেবল জেলা আদালতের অধস্তন নয় এইরূপ কোনো উপযুক্ত আদালতে দায়ের করা যাইবে।
৪৬। (১) যদি পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়বস্তু কোনো পণ্য লাভের পদ্ধতি হয়, তাহা হইলে আদালত স্বত্বাধিকার লঙ্ঘনকারীকে তদ্কর্তৃক উদ্ভাবিত অভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি হইতে পৃথক উহা প্রমাণ করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) যদি কোনো অভিন্ন পণ্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সম্মতি ব্যতীত উৎপাদন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত উহা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি দ্বারা অর্জিত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে, যদি না পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতির দ্বারা অর্জিত উক্তরূপ পণ্য নূতন হয়।
(৩) কোনো পক্ষ তাহার উপর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ পালন করিয়াছে কি না তাহা বিবেচনাক্রমে, আদালত তাহাকে কোনো উৎপাদন বা ব্যবসার গোপনীয়তা প্রকাশ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না, যদি এইরূপ নির্দেশ প্রদান করা আদালতের নিকট অযৌক্তিক মনে হয়।
৪৭। (১) যদি চুক্তির লঙ্ঘন বা সুনির্দিষ্ট প্রতিপালন সংক্রান্ত কোনো মোকদ্দমা ধারা ৪৪ এর বিধান ভঙ্গের জন্য হয়, তাহা হইলে আদালত কোনো একতরফা অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করিবে না।
(২) পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘন বা চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালন সংক্রান্ত কোনো মোকদ্দমা বিচারের পূর্বে আদালত অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবে।
(৩) নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির ভিত্তিতে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) যদি প্রাথমিক প্রমাণ, সুবিধার ভারসাম্য, অপূরণীয় ক্ষতি আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর পক্ষে হয়;
(খ) ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বা প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মোকদ্দমার ক্ষেত্রে, চিকিৎসা পণ্য সহজলভ্য হওয়ার উপর এইরূপ অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হইবে;
(গ) বিরোধীয় অপর পক্ষের অধিকার রক্ষার্থে জামানত বা সমপরিমাণ নিশ্চয়তা প্রদানের আদেশ প্রতিপালন না করা বা করিতে ব্যর্থ হওয়া:
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত, অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান ব্যতিরেকে, অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিবে না।
(৪) কোনো পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
(৫) সংক্ষুব্ধ পক্ষ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অবহিত হইবার অনূর্ধ্ব ১৪ ( চৌদ্দ) দিনের মধ্যে, উহা পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করিতে পারিবেন।
(৬) যদি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির পর আদালত এইরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বিরোধীয় পক্ষ দ্বারা পেটেন্টের কোনো শর্ত লঙ্ঘিত হয় নাই এবং উহা লঙ্ঘিত হইবার আশঙ্কা নাই, তাহা হইলে আদালত বিরোধীয় পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে সংঘটিত ক্ষতির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে আবেদনকারী পক্ষকে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৭) আদালত নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, ক্ষতিপূরণ আদেশের হানি না ঘটাইয়া, ধারা ৪৪ এ উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের কারণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার মঞ্জুর করিবে না, যথা:-
(ক) পেটেন্ট মঞ্জুরের পর, বাদী বা তদ্কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, যদি-
(অ) বাংলাদেশে উক্ত পণ্য উৎপাদনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ না করেন; বা
(আ) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার না করেন; বা
(ই) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন এমনভাবে ব্যবহার করেন যাহা মানসম্মতভাবে বাজারের চাহিদা পূরণে অক্ষম;
(খ) জনস্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকিলে;
(গ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য বাদী বা বাদীর সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ভোক্তার গড় ক্রয়-ক্ষমতার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;
(ঘ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়;
(ঙ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাজারে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পণ্যের বিদ্যমানতা বা অবিদ্যমানতার কারণে উক্ত পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;
(চ) যদি বাদী এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনক্রমে পেটেন্ট অর্জন করেন।
(৮) যদি সরকারি কোনো সংস্থা কর্তৃক বা সরকারি সেবা প্রদানের কারণে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহা হইলে আদালত, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের বিষয়টি ক্ষুণ্ন না করিয়া, পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন সাক্ষ্য লাভের জন্য আবশ্যকতা ব্যতীত, কোনো নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করিবে না।
৪৮। এই আইনের ধারা ২৯, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ এবং ৪১ এর অধীন কোনো কার্যের বিরুদ্ধে অস্থায়ী, অন্তর্বর্তীকালীন বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাইবে না।
৪৯। (১) শর্ত ভঙ্গের মোকাদ্দমায় আদালত প্রতিকার হিসাবে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষতিপূরণ বা লাভজনক হিসাব মঞ্জুর করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আদালত তৎবিবেচনায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।
(৩) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনা করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) কোন তারিখে নিবন্ধন সরকারি নোটিশে, ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশ করা হইয়াছিল;
(খ) নিবন্ধনের জন্য কোন তারিখে আবেদনকারী আবেদনের বিষয়ে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে নোটিশ প্রদান করিয়াছিলেন;
(গ) কোন তারিখে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারী আবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞাত হইয়াছিলেন;
(ঘ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ন্যায্য মূল্যে পাওয়া যায় কি না;
(ঙ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় কি না;
(চ) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হইয়াছে কি না;
(ছ) স্থানীয় শিল্প বা পণ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়িয়াছে কি না।
(৪) যদি পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মোকদ্দমায় বিবাদী আদালত কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক হন ও প্রস্তুত থাকেন, তাহা হইলে তাহার বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাইবে না এইরূপ ক্ষেত্রে আদালত লাইসেন্সের জন্য উপযুক্ত পারিতোষিকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি নির্ধারণ করিবে।
(৫) অন্য কোনোভাবে প্রমাণিত না হইলে, আদালত পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর আইনানুগ অধিকার ও তাহার ব্যবসায়িক গোপনীয়তা রক্ষাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
৫০। (১) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায়, ধারা ৩৩ এর অধীন যেসকল কারণে পেটেন্ট রদ (Revocation) করা যায়, সেই সকল কারণ আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যবহার করা যাইবে।
(২) অন্য কোনো পণ্যের মেশিন, যন্ত্রপাতি তৈরি, ব্যবহার বা আমদানির মাধ্যমে বা কোনো পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বা কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম বা ঔষধ আমদানি, ব্যবহার বা বিতরণের মাধ্যমে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের একটি ভিত্তি হইবে যে, এইরূপ তৈরি, ব্যবহার, আমদানি বা বিতরণ এই আইনের ধারা ২৯, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ এবং ৪৩ এ বর্ণিত এক বা একাধিক শর্ত অনুযায়ী করা হইয়াছে।
৫১। (১) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায় বা এই আইনের অধীন কোনো কার্যধারায় আদালত, যে কোনো সময়, এবং এইরূপ উদ্দেশ্যে কোনো আবেদন দাখিল করা হউক বা না হউক, আদালতকে সহায়তা করিবার জন্য বা তদন্ত করিবার জন্য বা এইরূপ কোনো প্রশ্ন বা মতামত, আইনের ব্যাখ্যা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন জড়িত থাকা ব্যতীত, সম্পর্কে রিপোর্ট প্রদানের জন্য স্বতন্ত্র বা স্বাধীন উপদেষ্টা নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) আদালত বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টার পারিতোষিক নির্ধারণ করিবে এবং উহাতে প্রতিবেদন তৈরির ব্যয় এবং বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা আদালত কর্তৃক উহার সামনে কোনো দিবসে উপস্থিত হইবার জন্য নির্দেশিত হইলে উক্ত দিবসের উপযুক্ত দৈনিক ফি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
৫২। এই আইনের অধীন, মহাপরিচালক কর্তৃক, প্রদত্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষত বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মঞ্জুরি এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্স এর জন্য পারিতোষিক প্রদান সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করিতে হইবে।
দশম অধ্যায়
মোকদ্দমা দায়ের, কার্যপদ্ধতি ও দণ্ড
৫৩। এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন মোকদ্দমা দায়ের এবং আইনগত কার্যধারা ও আদালতের কার্যপদ্ধতির ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
৫৪। (১) যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ পালনে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে আদালত, মোকদ্দমার ঘটনা ও প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে, ক্ষতিপূরণ ধার্য বা তৎবিবেচনায় উপযুক্ত কোনো আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন সংরক্ষিত কোনো নিবন্ধন বহিতে মিথ্যা এন্ট্রি তৈরি করেন, বা তৈরি করান, বা উক্ত নিবন্ধন-বহির এন্ট্রির অনুলিপি বুঝাইবার অভিপ্রায়ে উহাতে কোনো কিছু লিপিবদ্ধ করেন, তাহা হইলে উহা হইবে এই আইনের লঙ্ঘন এবং তজ্জন্য তাহার বিরুদ্ধে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যাইবে।
(৩) যদি কোনো ব্যক্তি মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করেন যে, তৎকর্তৃক বিক্রীত পণ্য বা ব্যবহৃত প্রক্রিয়া বাংলাদেশে পেটেন্টপ্রাপ্ত বা বাংলাদেশে পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হইয়াছে, তাহা হইলে উহা হইবে এই আইনের লঙ্ঘন এবং তজ্জন্য তাহার বিরুদ্ধে অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যাইবে।
(৪) যদি কোনো ব্যক্তি তাহার ব্যবসাস্থলে বা তৎকর্তৃক প্রেরিত কোনো দলিলে বা অন্য কোনোভাবে ‘‘পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর ’’ অভিব্যক্তি বা শব্দাবলি বা অন্য কোনো শব্দ ব্যবহার করেন যাহার দ্বারা বিশ্বাস হইতে পারে যে, তাহার ব্যবসা এবং ব্যবসাস্থল পেটেন্ট নিবন্ধনের কর্তৃপক্ষ, তাহা হইলে উহা হইবে এই আইনের লঙ্ঘন এবং তজ্জন্য তাহার বিরুদ্ধে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যাইবে।
(৫) যদি কোনো কোম্পানি এইরূপ বিধান লঙ্ঘন করে, তাহা হইলে উক্তরূপ লঙ্ঘনের জন্য উক্ত কোম্পানির প্রত্যেক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ব্যক্তি এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, এবং তদনুযায়ী তাহাদের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারা দায়ের করা যাইবে।
৫৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পেটেন্ট সংক্রান্ত বিশেষ আদালত গঠন করিতে পারিবে এবং বিশেষ আদালত গঠিত না হওয়া পর্যন্ত, Patents And Designs Act, 1911 এর অধীন, পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়েরকৃত মোকদ্দমা বা আইনগত কার্যধারা নিষ্পত্তির জন্য এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত উপযুক্ত আদালত বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বিশেষ আদালত বা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায়ের বিরুদ্ধে, উক্ত রায় প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে আপিল দায়ের করা যাইবে।
একাদশ অধ্যায়
মহাপরিচালকের ক্ষমতা
৫৬। এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কার্যক্রম সম্পন্ন করণে মহাপরিচালকের দেওয়ানি আদালতের ন্যায়, ক্ষমতা থাকিবে, যথা:-
(ক) কোনো ব্যক্তির প্রতি সমন জারি করা, তাহাকে উপস্থিত হইতে বাধ্য করা এবং তাহাকে শপথসহ পরীক্ষা করা;
(খ) দলিল উদঘাটন ও দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা;
(গ) অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ করা;
(ঘ) সাক্ষী বা দলিল পরীক্ষার উদ্দেশ্যে কমিশন ইস্যু করা;
(ঙ) ব্যয় প্রদানের আদেশ প্রদান করা;
(চ) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করা হইলে, তাহার নিজের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা;
(ছ) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করা হইলে, কোনো একতরফা আদেশ রদ করা;
(জ) নির্ধারিত অন্য কোনো বিষয়।
৫৭। (১) মহাপরিচালক, এই আইনের ধারা ১১ ও ১২ তে বর্ণিত পেটেন্টের আবেদন বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা এতৎসম্পর্কিত অন্য কোনো দলিল সংশোধন সম্পর্কিত কোনো কিছুকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, আবেদনকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, পেটেন্ট নিবন্ধন বহিতে, আইন মোতাবেক পেটেন্টের জন্য আবেদনকারী কর্তৃক দাখিলকৃত কোনো আবেদনে করণিক ত্রুটি বা ভুল, বা কোনো অনুবাদ বা ভাষান্তরের ত্রুটি থাকিলে, সংশোধন করিতে পারিবেন।
(২) মহাপরিচালক, এই আইনে ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকিলে, এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধিমালার বিধান সাপেক্ষে, লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে যে কোনো কার্য সম্পাদন বা আইনগত কার্যধারা গ্রহণের জন্য সময় বর্ধিত করিতে পারিবেন।
(৩) মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ ও শর্তাদি প্রদান করিবেন এবং নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হইবার ক্ষেত্রে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, কোনো পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে, অতিরিক্ত সময় মঞ্জুর করিতে পারিবেন।
৫৮। এতৎবিষয়ে প্রণীত কোনো বিধিমালার বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন মহাপরিচালকের নিকট উপস্থাপিত কোনো কার্যধারায়, তৎকর্তৃক ভিন্নরূপ কোনো নির্দেশ না থাকিলে, অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে সাক্ষ্য প্রদান করা হইবে, তবে যে কোনো ক্ষেত্রে, মহাপরিচালক যদি সঠিক মনে করেন, তাহা হইলে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে সাক্ষ্য প্রদানের পরিবর্তে বা উহার সহিত মৌখিক সাক্ষ্যও গ্রহণ করা যাইবে, বা কোনো পক্ষকে অ্যাফিডেভিটের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জেরা করা যাইবে।
৫৯। মহাপরিচালক, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধিমালার বিধান মোতাবেক, তাহার উপর ন্যস্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন, তবে এই আইনে ভিন্ন কোনোরূপ বিধান না থাকিলে, উক্ত ক্ষমতাবলে কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে কোনো বিরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে উক্ত পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
দ্বাদশ অধ্যায়
ব্যতিক্রমসমূহ
৬০। (১) বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিলোপ নীতি (international exhaustion) প্রযোজ্য হইবে।
(২) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো দেশের বাজারে উপস্থাপিত পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্যের সমান্তরাল আমদানি বাংলাদেশে পেটেন্ট আইনের লঙ্ঘন বলিয়া বিবেচিত হইবে না।
৬১। উন্নয়নের সহিত সম্পর্কিত অথবা বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশে বলবৎযোগ্য কোনো পণ্য উৎপাদন, ব্যবহার, বিক্রি, আমদানি বা রপ্তানির বিষয় নিয়ন্ত্রণকারী কোনো আইনের অধীন নির্দেশিত তথ্য দাখিল সম্পর্কিত পেটেন্টকৃত কোনো পণ্য উৎপাদন, নির্মাণ, ব্যবহার, বিক্রি, আমদানি বা রপ্তানি সম্পর্কিত কোনো কার্যের ক্ষেত্রে এই আইনের ধারা ২৫ এ প্রদত্ত অধিকার প্রযোজ্য হইবে না।
৬২। পেটেন্টের অধীন কোনো অধিকার নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যথা:-
(ক) ব্যক্তিগত বা অ-বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো সম্পাদিত কোনো কার্যক্রম;
(খ) শিক্ষা, পরীক্ষণ বা গবেষণার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত কোনো কার্যক্রম;
(গ) ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে প্রস্তুতির জন্য কোনো কাজ, যাহা কোনো ফার্মেসিতে করা হয়, বা কোনো চিকিৎসক কর্তৃক চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী কোনো চিকিৎসা বা এইরূপে প্রস্তুতকৃত ঔষধ বা অন্য কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো কাজ;
(ঘ) আবেদন দাখিলের পূর্বে বা, যদি অগ্রাধিকার তারিখ দাবি করা হয়, তাহা হইলে যে আবেদনের পেটেন্ট মঞ্জুর করা হইয়াছে উহা দাখিলের তারিখে, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কাজ, যিনি এইরূপ কোনো পণ্য বা পদ্ধতি উৎপাদন বা ব্যবহার করিতেছিলেন যাহা কোনো আবেদনের দাবি করা হইয়াছে অথবা উক্ত পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদন বা ব্যবহারের জন্য জোরপ্রস্তুতি গ্রহণ করিতেছিলেন;
(ঙ) পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন বাংলাদেশে কোনো বিদেশি জাহাজ, উড়োজাহাজ বা ভূমিতে চলাচলযোগ্য যানবাহনে সাময়িকভাবে ব্যবহার।
ত্রয়োদশ অধ্যায়
বিবিধ
৬৩। (১) অধিদপ্তরে পেটেন্ট নিবন্ধন বহি নামে একটি নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(২) নিবন্ধন বহি, যে কোনো ব্যক্তি পরিদর্শন করিতে পারিবেন এবং যে কোনো ব্যক্তি অধিদপ্তর হইতে, এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধিমালার বিধান সাপেক্ষে, নিবন্ধন বহির উদ্ধৃতি লাভের অধিকারী হইবেন এবং উক্ত নিবন্ধন বহি সুবিধাজনক সময়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকিবে।
(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অধিদপ্তর ইহার সকল প্রকাশনা ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশ করিবে।
(৪) নিবন্ধন বহির সংশ্লিষ্ট অংশের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা উদ্ধৃতাংশ, অধিদপ্তরের সীলমোহরসহ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে, আবেদনকারীকে সরবরাহ করা যাইবে।
(৫) নিবন্ধন বহি, এই আইনের অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত বা যাচিত যে কোনো বিষয়ের প্রাথমিক সাক্ষ্য হইবে এবং সনদসমূহ মহাপরিচালক কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইবে এবং উহাতে এই মর্মে প্রত্যয়ন করা হইবে যে, যে কোনো এন্ট্রি যাহার জন্য তিনি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইয়াছেন, তদনুযায়ী উক্ত সনদ তৈরি করা হইয়াছে বা হয় নাই, বা অন্য কোনো কিছু যাহা করিবার জন্য তিনি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইয়া উহা সম্পাদন করিয়াছেন বা করেন নাই, এইরূপ বিষয়াদি প্রাথমিক সাক্ষ্য হইবে।
৬৪। (১) যেক্ষেত্রে আবেদনকারীর সাধারণ বাসস্থান বা ব্যবসার স্থান বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত হয়, সেইক্ষেত্রে তাহাকে বাংলাদেশে বসবাসকারী কোনো উপযুক্ত বাংলাদেশি ব্যক্তি দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করিতে হইবে।
(২) পেটেন্ট প্রতিনিধি হিসাবে নিবন্ধনের যোগ্যতা এবং অন্যান্য শর্তাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৬৫। পেটেন্টের কার্যনির্বাহ সম্পর্কিত সকল তথ্য কোনো ফি ব্যতীত জনগণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখিতে হইবে এবং এইরূপ তথ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা:-
(ক) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা, দাবি, লেখচিত্র, এবং আবেদনকারী কর্তৃক অন্যান্য দলিলসহ পূর্ণাঙ্গ পেটেন্ট আবেদন;
(খ) সাময়িক বিশেষত্বনামা অনুযায়ী সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিলের সময় বা কোনো আবেদন পরিত্যক্ত বলিয়া বিবেচিত হইলে এতৎসম্পর্কিত তথ্য;
(গ) ধারা ১৫ এর অধীন দাখিলকৃত সকল তথ্য;
(ঘ) ধারা ১৭ এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনের প্রকাশনা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য;
(ঙ) ধারা ১০ এর অধীন প্রত্যাহারকৃত বা পুনঃআবেদনের বিস্তারিত তথ্য;
(চ) ধারা ২১ এর অধীন পরীক্ষার জন্য কোনো আবেদন করিয়া থাকিলে উহার তথ্য;
(ছ) পরীক্ষার বিস্তারিত রিপোর্ট এবং ধারা ২২ এর অধীন জারীকৃত কার্যনির্বাহ সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য;
(জ) ধারা ২৩ এর অধীন পরীক্ষার উদ্দেশ্যে অনুসন্ধানের বিস্তারিত তথ্য;
(ঝ) ধারা ২৪ এর অধীন পেটেন্টের কোনো আবেদন মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যান করা হইলে তৎসম্পর্কিত তথ্য;
(ঞ) নবায়ন ফি প্রদান করিতে হইলে, উহার তথ্য;
(ট) যদি কোনো পেটেন্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইয়া যায় বা উত্তীর্ণ হইবে, উহার তথ্য;
(ঠ) রেজিস্টারে কোনো কিছু নথিভুক্ত করা হইলে বা এইরূপ নথিভুক্ত করিবার জন্য আবেদন করা হইলে, উহার তথ্য;
(ড) ধারা ৪৩ এর অধীন প্রদত্ত তথ্যের বিষয়;
(ঢ) ধারা ৩১ এর উপ-ধারা (৪), (৫) ও (৬) এর অধীন প্রদত্ত বিস্তারিত তথ্য;
(ণ) পেটেন্ট অফিস ও আবেদনকারীর মধ্যকার মৌখিক ও লিখিত যোগাযোগসহ সকল যোগাযোগের ঠিকানা।
৬৬। (১) মহাপরিচালক, পেটেন্ট কার্যকর থাকাকালীন যে কোনো সময়, লিখিত নোটিশের মাধ্যমে, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী বা লাইসেন্সিকে, একচেটিয়া হউক বা না হউক, এইরূপ নোটিশের ২ (দুই) মাসের মধ্যে বা মহাপরিচালক কর্তৃক অনুমোদিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে, নোটিশে উল্লিখিত পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে কার্যকর থাকা সম্পর্কিত তথ্য বা সাময়িক বিবৃতি মহাপরিচালকের নিকট দাখিলের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান ক্ষুণ্ন না করিয়া, প্রত্যেক পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী ও লাইসেন্সি, একচেটিয়া হউক বা না হউক, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে এবং নির্ধারিত বিরতিতে, পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে কার্যকর থাকা সম্পর্কিত তথ্য বা সাময়িক বিবৃতি মহাপরিচালকের নিকট দাখিল করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বিরতি ১ (এক) বৎসরের নিম্নে হইবে না।
৬৭। মহাপরিচালক, তাহার কার্যালয়ে পেটেন্ট প্রতিনিধি নিবন্ধন বহি নামে একটি নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ করিবেন।
৬৮। সরকার, এই আইনের সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া এবং উহার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় আদেশ জারি বা কৌশলপত্র প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৬৯। এই আইনের বিধানাবলি কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার, উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
৭০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৭১। (১) বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২ (২০২২ সনের ০৫ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর বিধানাবলি এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত আইনের অধীন অনিষ্পন্ন কোনো আবেদন এই আইনের অধীন নিষ্পন্ন করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনসহ কার্যকর হইবে এবং এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সংরক্ষিত থাকিবে।
(৪) যেক্ষেত্রে এই আইন কোনোভাবে কোনো অধিকার বৃদ্ধি করে বা নূতন অধিকার সৃষ্টি করে, সংরক্ষণে শর্তাবলি বৃদ্ধিসহ, বিদ্যমান নিবন্ধন সেইরূপ বৃদ্ধি বা সৃজন হইতে সুবিধা গ্রহণ অনুমোদন করিবে, তবে যেক্ষেত্রে এই আইন অধিকারসমূহ হ্রাস করে বা বিলুপ্ত করে বিদ্যমান নিবন্ধন সেইক্ষেত্রে কার্যকর হইবে না এবং বিদ্যমান নিবন্ধন এমনভাবে বলবৎ থাকিবে যেন এই আইন কার্যকর হয় নাই:
তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে না।
(৫) মহাপরিচালক, কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এমনভাবে সংরক্ষিত থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে।
(৬) এই আইনের ধারা ৭০ এর অধীন বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত এবং উক্ত আইনের অধীন হেফাজত প্রদানকৃত Patents and Designs Rules, 1933, এই আইনের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, কার্যকর থাকিবে।
৭২। এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলায় প্রণীত আইন প্রাধান্য পাইবে।