প্রিন্ট ভিউ
অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকারী ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, লাইসেন্স প্রদান, ব্যবস্থাপনা, নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, আর্থিক কাঠামো সুসংগঠিতকরণ এবং সময়ের চাহিদা পূরণকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকারী ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, লাইসেন্স প্রদান, ব্যবস্থাপনা, নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, আর্থিক কাঠামো সুসংগঠিতকরণ এবং সময়ের চাহিদা পূরণকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) রহিতক্রমে উহা যুগোপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
১। (১) এই আইন ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) "অর্থায়ন ব্যবসা" অর্থ চাহিবা মাত্র পরিশোধযোগ্য নহে এইরূপ মেয়াদি আমানত গ্রহণ, ঋণ প্রদান, বিনিয়োগ ও ইজারা অর্থায়ন কার্যক্রম পরিচালনাসহ ধারা ২১ এ বর্ণিত কার্যাবলি;
(২) "আর্থিক বিবরণী” অর্থ ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৩) এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক বিবরণী;
(৩) "আমানত" অর্থ সুদ বা মুনাফার ভিত্তিতে পরিশোধের সকল শর্ত সংবলিত রসিদের মাধ্যমে গৃহীত অর্থ তবে, নিম্নরূপ উৎস হইতে গৃহীত অর্থ আমানতের অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা:-
(ক) শেয়ার মূলধন হিসাবে গৃহীত অর্থ;
(খ) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠান হইতে কর্জ হিসাবে গৃহীত অর্থ;
(গ) ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অধীন নিম্নবর্ণিত গৃহীত অর্থ-
(অ) চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত জামানত (যদি গৃহীত অর্থ সুদহীন হয়) অথবা সম্পত্তি হস্তান্তর বা নির্দিষ্ট অংশ মেরামতের পর হস্তান্তরিত সম্পদের বিপরীতে গৃহীত অর্থ;
(আ) ডিলারশিপ আমানত;
(ই) আর্নেস্ট মানি আমানত বা বায়নাপত্র জমা;
(ঈ) দ্রব্য বা সেবা সরবরাহ করিবার জন্য চুক্তির অধীন গৃহীত অগ্রিম বা আংশিক পরিশোধিত অর্থ;
(উ) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ:
তবে শর্ত থাকে যে, ইসলামী শরীয়া ভিত্তিতে পরিচালিত ফাইন্যান্স কোম্পানির আমানতের সংজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হইবে;
(৪) "আমানতকারী” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি যাহার নামে আমানত গ্রহণ ও ধারণ করা হয় এবং আমানতকৃত অর্থ ফেরত পাইবার অধিকারী কোনো ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৫) "ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা” অর্থ এইরূপ খেলাপী ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি যিনি বা যাহা-
(ক) নিজের, তাহার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুকূলে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি হইতে গৃহীত ঋণ, বিনিয়োগ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ বা উহার উপর আরোপিত সুদ বা মুনাফা তাহার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ না করে; বা
(খ) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি হইতে জালিয়াতি বা প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে নিজের, তাহার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ঋণ, বিনিয়োগ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করিয়া ফেরত না দেন; বা
(গ) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি হইতে যেই উদ্দেশ্যে ঋণ, বিনিয়োগ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করিয়াছেন সেই উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে উক্ত ঋণ, বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ ব্যবহার করিয়াছে; বা
(ঘ) ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ প্রদানকারী কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির লিখিত পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে হস্তান্তর বা স্থানান্তর করিয়াছে:
তবে শর্ত থাকে যে, এই সংজ্ঞার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে;
(৬) "উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক” অর্থ কোনো ব্যক্তি বা কোনো পরিবারের সদস্য কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একক বা অন্যের সহিত যৌথভাবে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগের অধিক শেয়ার ধারণ;
(৭) "ঋণ” অর্থ-
(ক) অগ্রিম, ধার, ঋণ, ইজারা, বাটাকৃত বা ক্রয়কৃত বিল, ইসলামী শরীয়া ভিত্তিতে পরিচালিত ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ বা অন্য যে কোনো আর্থিক সুবিধা;
(খ) গ্যারান্টি, ইনডেমনিটি বা অন্য কোনো আর্থিক বন্দোবস্ত যাহা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি-ঋণগ্রহীতার পক্ষে প্রদান বা জারি করে বা দায় হিসাবে গ্রহণ করে;
(গ) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক উহার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রদত্ত কোনো ঋণ; এবং
(ঘ) উপ-দফা (ক), (খ) ও (গ) এ উল্লিখিত ঋণ বা, ক্ষেত্রমত, ইসলামী শরীয়া ভিত্তিতে পরিচালিত ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ এর উপর বিধি-বিধান দ্বারা আরোপিত সুদ, দণ্ড-সুদ, মুনাফা বা ভাড়া;
(৮) "কোম্পানি আইন" অর্থ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন);
(৯) "কোম্পানি” অর্থ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি;
(১০) "খেলাপী ঋণগ্রহীতা” অর্থ কোনো দেনাদার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যাহার নিজের বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত অগ্রিম, ঋণ, অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা বা উহার অংশ বা উহার উপর অর্জিত সুদ বা মুনাফা যাহা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত সংজ্ঞা অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ হইবার পর ৬ (ছয়) মাস অতিবাহিত হইয়াছে;
(১১) “দেনাদার” অর্থ ঋণ গ্রহণ, লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি, খরিদ বা ইজারার ভিত্তিতে বা অন্য কোনোভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণকারী কোনো ব্যক্তি এবং জামিনদার;
(১২) "ধারা” অর্থ এই আইনের কোনো ধারা;
(১৩) "পরিচালক” অর্থ ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদে পরিচালক পদে বহাল যে কোনো ব্যক্তি এবং এইরূপ ব্যক্তিকেও বুঝাইবে যাহার নির্দেশ বা আদেশে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক কোনো দায়িত্ব পালন করেন এবং বিকল্প বা প্রতিনিধি পরিচালকও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৪) "পরিবার" বা "পরিবারের সদস্য” অর্থ কোনো ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন এবং উক্ত ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল কোনো ব্যক্তি;
(১৫) "পাওনাদার” অর্থ আমানত জমাদানকারী বা লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে অর্থ গচ্ছিত রাখিয়াছেন এইরূপ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অথবা লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি, ভাড়ায় খরিদ বা ইজারার ভিত্তিতে বা অন্য কোনোভাবে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বা সেবা প্রদানকারী বা অর্থলগ্নীকারী ব্যক্তি;
(১৬) "প্রবিধান" অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো প্রবিধান;
(১৭) "ফাইন্যান্স কোম্পানি” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে লাইসেন্স প্রাপ্ত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি;
(১৮) "বৎসর" অর্থ ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সমাপ্ত ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসর;
(১৯) "বাংলাদেশ ব্যাংক" অর্থ The Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No.127 of 1972) এর অধীন স্থাপিত Bangladesh Bank;
(২০) "বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন” অর্থ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ১৫ নং আইন) এর ধারা ৩ এর অধীন গঠিত কমিশন;
(২১) "বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো বিধি;
(২২) "বীমা কোম্পানি” অর্থ বীমা আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ১৩ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (২৫) এ সংজ্ঞায়িত বীমাকারী;
(২৩) "ব্যক্তি” অর্থ-
(ক) প্রাকৃতিক ব্যক্তি (Natural Person);
(খ) কোম্পানি;
(গ) প্রতিষ্ঠান;
(ঘ) অংশীদারি কারবার; এবং
(ঙ) সংঘ, সংস্থা ও সমিতি;
(২৪) “ব্যাংক-কোম্পানি” অর্থ ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক-কোম্পানি;
(২৫) "সিকিউরিটি” অর্থ Securities and Exchange Ordinance, 1969 (Ordinance No. XVII of 1969) এ সংজ্ঞায়িত section 2 এর clause (1) সংজ্ঞায়িত securities;
(২৬) "স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ” অর্থ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান;
(২৭) "স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি” অর্থ কোনো ব্যক্তি বা তাহার পরিবারের সদস্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসাবে গণ্য হইবে যদি ব্যক্তি নিজে বা অন্যের সহিত যৌথভাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে বা উক্ত কোম্পানি বা উহার হোল্ডিং। কোম্পানির পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত থাকেন; এবং
(২৮) "স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান” অর্থ এইরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান যাহা একই স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান (যথা- হোল্ডিং কোম্পানি, সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠান) বা উভয়ই তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চার বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক একক বা যৌথভাবে পরিচালিত বা নিয়ন্ত্রিত।
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
ফাইন্যান্স কোম্পানির লাইসেন্স, ব্যবসা কেন্দ্র স্থাপন
৪। (১) কোনো কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতীত বাংলাদেশে কোনো অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবে না।
(২) কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর এই আইনের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত ফরমে লিখিত আবেদন করিবে।
(৩) ফাইন্যান্স কোম্পানি হিসাবে কোনো কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিম্নরূপ বিষয়সমূহে সন্তুষ্ট হইতে হইবে, যথা:-
(ক) আর্থিক অবস্থা;
(খ) ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্য;
(গ) মূলধনের পর্যাপ্ততা, কাঠামোগত যথার্থতা ও উপার্জনের সক্ষমতা;
(ঘ) সংঘ-স্মারকে উল্লিখিত উদ্দেশ্যাবলি; এবং
(ঙ) জনস্বার্থ।
(৪) এই ধারার অধীন লাইসেন্স প্রদানের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক উহার বিবেচনায় সঙ্গত যে কোনো শর্ত আরোপ করিতে পারিবে।
(৫) বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো সময় ফাইন্যান্স কোম্পানির লাইসেন্সের শর্ত সংযোজন, বিয়োজন, পরিমার্জন বা সংশোধন করিতে পারিবে।
(৬) অর্থায়ন ব্যবসায়ে নিয়োজিত লাইসেন্স প্রাপ্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি ব্যতীত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান উহার নামের অংশ হিসাবে ফাইন্যান্স অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করিতে পারিবে না যাহাতে উহাকে ফাইন্যান্স কোম্পানি হিসাবে মনে করিবার কারণ থাকে:
তবে শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারা নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক গঠিত সাবসিডিয়ারি; বা
(খ) ফাইন্যান্স কোম্পানির পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে গঠিত কোনো সংস্থা।
৫। এই আইনের অধীন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদানের অব্যবহিত পর বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত কোম্পানির নাম ও ঠিকানা সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ করিবে।
৬। (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের লিখিত পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বা বাংলাদেশের বাহিরে উহার কোনো নূতন ব্যবসা কেন্দ্র, শাখা বা বুথ স্থাপন করিতে পারিবে না ও বিদ্যমান ব্যবসা কেন্দ্র, শাখা বা বুথ স্থানান্তর করিতে পারিবে না। এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোনো স্থানও নূতন ব্যবসা কেন্দ্র, শাখা বা বুথ এর অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(২) নূতন ব্যবসা কেন্দ্র, শাখা বা বুথ স্থাপনের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ধারা ৪ এর উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিতে হইবে।
৭। (১) ধারা ৪ এর অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স বাংলাদেশ ব্যাংক নিম্নবর্ণিত কারণে বাতিল করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) লাইসেন্সের কোনো শর্ত ভঙ্গ করিলে; বা
(খ) লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য বা দলিল সরবরাহ করিলে; বা
(গ) লাইসেন্স প্রাপ্তির ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অর্থায়ন ব্যবসা আরম্ভ করিতে ব্যর্থ হইলে; বা
(ঘ) আমানতকারীর স্বার্থহানি হয় এইরূপ অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিলে; বা
(ঙ) আমানতকারীর দায় পরিশোধে কোম্পানির সম্পদের অপর্যাপ্ততা থাকিলে; বা
(চ) ন্যূনতম সংরক্ষিতব্য মূলধন অপেক্ষা কম মূলধন সংরক্ষণ করিয়া অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিলে; বা
(ছ) যেই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হইয়াছিল সেই কার্যক্রম পরিচালনা না করিলে; বা
(জ) আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হইলে; বা
(ঝ) বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ব্যতিরেকে কার্যক্রম বন্ধ রাখিলে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করিবার পূর্বে অনিয়ম লিপিবদ্ধ করিয়া কেন লাইসেন্স বাতিল করা হইবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য অনূর্ধ্ব ১৫ (পনেরো) দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।
(৩) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উহা লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অবহিত করিবে এবং বাতিলকরণের নোটিশ সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ করিবে।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন বাতিলকরণের নোটিশ প্রকাশিত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি, কোনো আর্থিক লেনদেন করিতে পারিবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে কেবল প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদন করিতে পারিবে:
আরও শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারার বিধান কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির সহিত সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তির অধিকার বা দাবি অথবা কোনো ব্যক্তির সহিত সম্পর্কিত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির অধিকার বা দাবি ক্ষুণ্ণ করিবে না।
তৃতীয় অধ্যায়
মূলধন, তরল সম্পদ সংরক্ষণ, শেয়ার ধারণ, ইত্যাদি
৮। লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণে, হারে এবং পদ্ধতিতে মূলধন ও সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি সংরক্ষণ করিবে।
৯। (১) প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত পরিমাণে, হারে এবং পদ্ধতিতে আমানত ও দায় এর বিপরীতে নগদ তহবিল ও তরল সম্পদ সংরক্ষণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-
(ক) "নগদ তহবিল" অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের সহিত চলতি হিসাবে রক্ষিত দায়মুক্ত নগদ অর্থকে বুঝাইবে;
(খ) "তরল সম্পদ" অর্থ-
(অ) বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত নগদ তহবিলের অতিরিক্ত স্থিতি;
(আ) ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বন্ডে দায়মুক্ত বিনিয়োগের পরিমাণ; বা
(ই) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য সম্পদকেও বুঝাইবে।
১০। (১) কোনো ব্যক্তি বা তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ বা একই পরিবারের সদস্যগণের মধ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাইবে না এবং কোনো ব্যক্তি বা তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ বা একই পরিবারের সদস্যগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একক বা অন্যের সহিত যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির শতকরা ১৫ (পনেরো) ভাগের অধিক শেয়ার ক্রয় করিবে না ও বিদেশি ব্যক্তি কর্তৃক ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার ধারণের সর্বোচ্চ সীমা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারক হইতে পারিবে না:
আরও শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তি বা তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হইলে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হইতে পারিবে না।
(২) কোনো ব্যক্তি বা তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ করিবার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করিতে হইবে।
(৩) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক যাচিত হইলে শেয়ার ক্রয়ের সময় ক্রেতা এই মর্মে ঘোষণাপত্র দাখিল করিবেন যে, তিনি অন্যের মনোনীত ব্যক্তি হিসাবে বা বেনামিতে শেয়ার ক্রয় করিতেছেন না এবং ইতোপূর্বে বেনামিতে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো শেয়ার ক্রয় করেন নাই।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন দাখিলকৃত ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু মিথ্যা প্রমাণিত হইলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে ঘোষণাকারীর সকল শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে।
(৫) এই আইন কার্যকর হইবার ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে উপ-ধারা (১) এর বিধান মোতাবেক শেয়ার ধারণ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করিতে হইবে এবং উক্ত শেয়ার ধারণ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট শেয়ারধারক নির্ধারিত শেয়ারের অতিরিক্ত শেয়ার তাহার পরিবারের সদস্য নহেন এবং উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানিতে সর্বোচ্চ সীমার শেয়ার ধারণ করেন না এইরূপ ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করিবেন।
(৬) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৫) এর বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থ হইলে উক্ত অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে।
(৭) এই ধারার কোনো কিছুই সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
১১। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার কোনো অনাদায়ি মূলধনকে দায়যুক্ত করিবে না এবং এইরূপে দায়যুক্ত করা হইলে উহা অবৈধ হইবে
১২। আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি হইবে না, এই মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের লিখিত প্রত্যয়নপত্র ব্যতীত, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার কোনো সম্পত্তিকে বা উহার কোনো অংশকে অনির্দিষ্ট দায়যুক্ত করিবে না এবং এইরূপ করিলে তাহা অবৈধ হইবে।
১৩। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার শেয়ারের উপর কোনো নগদ লভ্যাংশ প্রদান করিতে পারিবে না, যদি:-
(ক) উহার প্রাথমিক ব্যয়, সাংগঠনিক ব্যয়, শেয়ার বিক্রি ও এজেন্ট কমিশন, লোকসান এবং অন্যান্য ব্যয় যাহা মূলধনে পরিণত হইয়াছে, এইরূপ সকল ব্যয় সম্পূর্ণরূপে অবলোপন করা না হইয়া থাকে; বা
(খ) ধারা ৮ এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত মূলধন ও সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়; বা
(গ) উহার স্থিতিপত্রে ক্রমপুঞ্জীভূত লোকসান বা ক্ষতি বিদ্যমান থাকে।
চতুর্থ অধ্যায়
ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা
১৪। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অথবা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির সংঘ-স্মারক বা সংঘবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অন্যূন ২ (দুই) জন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ১৫ (পনেরো) জন পরিচালক থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, স্বতন্ত্র পরিচালকের সর্বোচ্চ সংখ্যা, ফি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় "স্বতন্ত্র পরিচালক" বলিতে এইরূপ ব্যক্তিকে বুঝাইবে যিনি ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও শেয়ারধারক হইতে স্বাধীন এবং যিনি কেবল ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বার্থে স্বীয় মতামত প্রদান করিবেন এবং ফাইন্যান্স কোম্পানির সহিত কিংবা ফাইন্যান্স কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির সহিত যাহার অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কোনো প্রকৃত স্বার্থ কিংবা দৃশ্যমান স্বার্থের বিষয় জড়িত নাই।
১৫। (১) কোনো পরিবারের সদস্য সমষ্টিগতভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির-
(ক) শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগের অধিক শেয়ারের অধিকারী হইলে উক্ত পরিবারের সদস্যগণের মধ্য হইতে অনধিক ২ (দুই) জন পরিচালক থাকিতে পারিবেন; এবং
(খ) ন্যূনতম শতকরা ২ (দুই) ভাগ হইতে শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগ শেয়ারের অধিকারী হইলে উক্ত পরিবারের সদস্যগণের মধ্য হইতে ১ (এক) জন পরিচালক থাকিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, বিদেশি শেয়ারহোল্ডার কর্তৃক শেয়ার ধারণের বিপরীতে পরিচালকের সংখ্যা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(২) কোনো প্রাকৃতিক ব্যক্তি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক থাকা অবস্থায় তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ হইতে মনোনীত অন্য কোনো ব্যক্তি উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদে প্রতিনিধি পরিচালক হিসাবে থাকিতে পারিবেন না।
(৩) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে উহার মনোনীত একের অধিক ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক থাকিতে পারিবেন না।
(৪) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদে কোনো প্রাকৃতিক ব্যক্তি শেয়ারধারকের পক্ষে কোনো ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসাবে থাকিতে পারিবেন না।
(৫) কোম্পানি আইনের ধারা ১০১ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালকের অন্যূন ৩ (তিন) মাস নিরবচ্ছিন্ন অবস্থান সংক্রান্ত অনুপস্থিতির কারণে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানিতে কোনো বিকল্প পরিচালক নিয়োগের প্রয়োজন হইলে ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদ উক্ত পরিচালকের বিপরীতে বৎসরে সর্বোচ্চ ১ (এক) বার একাদিক্রমে ৩ (তিন) মাসের জন্য ১ (এক) জন বিকল্প পরিচালক নিযুক্ত করিতে পারিবে।
(৬) উপ-ধারা (৫) মোতাবেক বিকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরিচালকের পরিচালক হিসাবে নিয়োগ সম্পর্কিত যোগ্যতা ও উপযুক্ততা সংক্রান্ত বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(৭) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির সংঘ-স্মারক ও সংঘ বিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক একই সময়ে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির বা উক্তরূপ কোম্পানিসমূহের কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এইরূপ কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যাহা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে এইরূপ কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকিতে পারিবেন না এবং তাহার পক্ষে অন্য কাউকে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির পর্ষদে পরিচালক নিয়োগ করিতে পারিবেন না।
(৮) কোনো ব্যক্তি নিম্নরূপ এক বা একাধিক কারণে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিযুক্ত হইবার যোগ্য হইবেন না, যদি:-
(ক) তাহার বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকে;
(খ) তিনি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হন;
(গ) তিনি সরকারের কোনো সংস্থা বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সম্পাদিত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জালিয়াতি, প্রতারণা, আর্থিক অপরাধ বা অন্যবিধ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সহিত জড়িত ছিলেন বা থাকেন;
(ঘ) তিনি আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধি, প্রবিধান বা নিয়ামাচার লঙ্ঘন করেন;
(ঙ) তিনি এইরূপ কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সহিত যুক্ত থাকেন, যাহার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করা হইয়াছে;
(চ) তিনি বা তাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খেলাপী ঋণগ্রহীতা হন;
(ছ) তিনি কোনো সময় উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন।
(৯) ফাইন্যান্স কোম্পানির এইরূপ কোনো পরিচালক থাকিবেন না, যিনি:-
(ক) উক্ত কোম্পানির নিরীক্ষক, আইন উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, পরামর্শক, বেতনভুক্ত কর্মচারী বা অন্য কোনোভাবে লাভজনক পদের দায়িত্বে নিয়োজিত রহিয়াছেন;
(খ) অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির বা উক্তরূপ কোম্পানিসমূহের কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এইরূপ কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যাহা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে এইরূপ কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা, পরামর্শক বা অন্য কোনোভাবে লাভজনক পদের দায়িত্বে নিয়োজিত রহিয়াছেন;
(গ) এইরূপ কোনো কোম্পানির বা কতিপয় কোম্পানির পরিচালক যে কোম্পানি বা কোম্পানিসমূহ একত্রে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির মোট শেয়ারের বিপরীতে মোট ভোটের ১৫ (পনেরো) শতাংশের অধিক ভোট প্রদানের অধিকারী; এবং
(ঘ) অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির বা উক্তরূপ কোম্পানিসমূহের কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পক্ষে পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত হইয়াছেন বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এইরূপ কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান যাহা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে এইরূপ কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিযুক্ত হইয়াছেন।
(১০) উপ-ধারা (১), (২) ও (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালককে পদত্যাগ করিতে হইলে পরিচালকগণের মধ্য হইতে কোন্ পরিচালক উক্ত পদ ত্যাগ করিবেন তাহা পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারিত হইবে, কোনো সমঝোতায় উপনীত হইতে ব্যর্থ হইলে পরিচালক পর্ষদের সভায় লটারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাহা নির্ধারিত হইবে।
(১১) এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক নির্বাচন বা মনোনয়নের পর, ক্ষেত্রমত নিযুক্তি বা পদায়ন বা পুনঃনিযুক্তি বা পুনঃপদায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে এবং এইরূপ নিযুক্ত বা পুনঃনিযুক্ত বা পদায়নকৃত পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে তাহার পদ হইতে অব্যাহতি প্রদান, বরখাস্ত করা বা অপসারণ করা যাইবে না।
(১২) পরিচালকের যোগ্যতা, পরিচালকের নির্বাচন বা মনোনয়ন ও নিযুক্তির পদ্ধতি, পর্ষদের গঠন, বিকল্প ও স্বতন্ত্র পরিচালকের নিযুক্তি, ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা প্রদান করিবে।
১৬। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পর ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পদের মেয়াদ হইবে ৩ (তিন) বৎসর।
(২) কোনো পরিচালক একাদিক্রমে ৩ (তিন) মেয়াদ বা ৯ (নয়) বৎসরের অধিক উক্ত পদে বহাল থাকিতে পারিবেন না:
তবে শর্ত থাকে যে, একাদিক্রমে ৩ (তিন) মেয়াদে পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকিলে তৃতীয় মেয়াদ শেষ হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসর অতিবাহিত হইবার পর তিনি উক্ত কোম্পানির পরিচালক পদে পুনঃনির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকরের অব্যবহিত পূর্বে কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে ৩ (তিন) মেয়াদ বা ৯ (নয়) বৎসর পরিচালক পদে বহাল থাকিলে এই আইন কার্যকর হইবার পর পরিচালক পদে তাহার বিদ্যমান মেয়াদ সমাপ্ত হইবার, সঙ্গে সঙ্গে, পদটি শূন্য হইবে।
(৪) ঋণ প্রদানকারী ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সম্মতি ব্যতীত দেনাদার ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালকের পদত্যাগ কার্যকর হইবে না এবং উপ- ধারা (১), (২) ও (৩) মোতাবেক কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে পরিচালক হিসাবে বহাল না থাকিলেও উক্ত দেনা নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত থাকিবেন।
(৫) সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত কোনো পরিচালকের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (৪) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না এবং সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি ঋণ খেলাপি হইলে উহার পরিচালক হিসাবে বহাল থাকিবার কারণে তিনি ঋণ খেলাপি হইবেন না। I
(৬) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো একটি মেয়াদের অংশবিশেষ পূর্ণ মেয়াদ হিসাবে গণ্য হইবে।
১৭। (১) নিম্নবর্ণিত যে কোনো কারণে ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালকের পদ শূন্য হইবে, যদি তিনি-
(ক) খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত হন বা জামিনদার হিসাবে তাহার নিকট পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হন; বা
(খ) তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পরিপালনে অবহেলার কারণে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি বা কোনোরূপ স্বার্থহানি হয়:
তবে শর্ত থাকে যে, দফা (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত কোনো পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংক নোটিশ দ্বারা পরিশোধযোগ্য পাওনা পরিশোধ বা সম্পাদনযোগ্য কর্তব্য সম্পাদন করিতে নির্দেশ প্রদান করিবে এবং এইরূপ নোটিশ প্রাপ্তির ২ (দুই) মাসের মধ্যে উক্ত পরিচালক উহা পরিপালনে ব্যর্থ হইলে অবিলম্বে উক্ত পরিচালকের পদ শূন্য হইবে।
(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন নোটিশ প্রাপ্ত হইলে, তিনি নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাহার কোনো বক্তব্য থাকিলে এইরূপ বক্তব্য লিখিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উহার একটি অনুলিপি নোটিশ প্রদানকারী ফাইন্যান্স কোম্পানি বা, ক্ষেত্রমত, ব্যাংক-কোম্পানিতেও প্রেরণ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রেরিত বক্তব্য প্রাপ্তির ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক উহার বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(৫) এই ধারার অধীন কোনো পরিচালকের পদ শূন্য হইলে তাহার নিকট প্রাপ্য অর্থ সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানিতে তাহার শেয়ার সমন্বয়ের মাধ্যমে আদায় করা হইবে এবং এইরূপ সমন্বয়ের পর যাহা অবশিষ্ট থাকিবে তাহা সরকারি পাওনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং Public Demands Recovery Act. 1913 (Act III of 1913) এর অধীন আদায়যোগ্য হইবে।
(৬) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো পরিচালকের পদ শূন্য হইলে তিনি সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি প্রাপ্য সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করিবার তারিখ হইতে ১ (এক) বৎসরের মধ্যে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হইতে পারিবেন না তবে, এইরূপ খেলাপী ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত হইলে ধারা ৩০ এর উপ-ধারা (১১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।
(৭) উপ-ধারা (১) এর অধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক নোটিশ প্রাপ্ত হইলে তাহার নিকট প্রাপ্য সকল পাওনা পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি যেই ফাইন্যান্স কোম্পানিতে পরিচালক নিয়োজিত রহিয়াছেন সেই কোম্পানিতে তাহার নামে ধারণকৃত শেয়ার হস্তান্তর করিতে পারিবেন না।
(৮) উপ-ধারা (১) এর অধীন নোটিশের কার্যক্রম চলমান থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট পরিচালক স্বীয় পদ হইতে পদত্যাগ করিলে উক্ত পদত্যাগ কার্যকর হইবে না।
(৯) এই ধারার অধীন গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, আদেশ বা সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কোম্পানি আইন এর ধারা ৩ এর অধীন এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত ব্যতীত অন্য কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
১৮। (১) প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে ১ (এক) জন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, নিয়োগ করিবে এবং তাহার উপর ফাইন্যান্স কোম্পানির সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকিবে।
(২) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতীত অব্যাহতি প্রদান, বরখাস্ত বা অপসারণ করা যাইবে না।
(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ একাদিক্রমে ৩ (তিন) মাসের অধিক শূন্য থাকিবে না।
(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ পূরণ না হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করিবার জন্য প্রশাসক নিযুক্ত করিতে পারিবে এবং উক্ত কোম্পানি তাহার বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাবদ ব্যয়ভার বহন করিবে।
(৫) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো কর্মকর্তা অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণা, দুর্নীতি, জালিয়াতি, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ঢাকরি হইতে বরখাস্ত হইলে তিনি পরবর্তীতে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির চাকরিতে নিয়োগের যোগ্য হইবেন না।
১৯। (১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার আমানতকারীর স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে নিম্নবর্ণিত কারণে, চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, অপসারণ করা প্রয়োজন, যথা:-
(ক) মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৫ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (ফ) এ সংজ্ঞায়িত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ; বা
(খ) সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ১৬ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (১৬) এ সংজ্ঞায়িত সন্দেহজনক লেনদেন এবং ধারা ৭ এ উল্লিখিত সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত অপরাধ রোধ; বা
(গ) ফাইন্যান্স কোম্পানির যথাযথ পরিচালনা নিশ্চিতকরণ; বা
(ঘ) বেনামি ঋণ মঞ্জুরকরণ বা কোনো ধরনের জালিয়াতি বা প্রতারণার সহিত সংশ্লিষ্ট; বা
(ঙ) যে কোনো ধরনের ক্ষতিকর কার্যক্রম রোধ; বা
(চ) জনস্বার্থ;
তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত নোটিশ প্রদানপূর্বক প্রয়োজনীয় শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া পৃথক বা যুগ্মভাবে তাহার বা তাহাদের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে।
(২) বেনামি বা অস্তিত্ববিহীন বা নামসর্বস্ব বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিয়োজিত নহে বা গৃহীত ঋণ বা ঋণের অংশ উদ্দেশ্য বহির্ভূতভাবে ব্যবহার বা স্থানান্তর (siphon off) করিয়াছে এইরূপ কোম্পানির নামে শেয়ার ধারণ করিয়া কোনো ব্যক্তি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পদে বহাল হইলে বা উহার উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মনোনীত কোনো ব্যক্তি পরিচালক হিসাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদে বহাল থাকিলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাহাকে পরিচালকের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন আদেশ প্রদানের পূর্বে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের সময় প্রদানপূর্বক নোটিশ প্রদান করিতে হইবে তবে, আমানতকারীর স্বার্থহানি হইবার আশঙ্কা থাকিলে নোটিশে উল্লিখিত সময়ে বা আত্মপক্ষ সমর্থনের জবাব বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক লিখিতভাবে নিম্নরূপ নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির তারিখ হইতে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন না এবং উক্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না; এবং
(খ) বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে উক্ত কোম্পানির চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে সাময়িকভাবে নিযুক্ত করিতে পারিবে তবে, উক্ত নিযুক্তির মেয়াদ ১ (এক) বৎসরের অধিক হইবে না।
(৪) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন অপসারণের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্যদের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
(৫) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন অপসারিত হইলে তিনি অপসারিত হইবার পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত হইতে পারিবেন না।
(৬) এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে অথবা কোনো চুক্তিতে বা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির সংঘ-স্মারক বা সংঘবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ- ধারা (১) ও (২) এর অধীন অপসারিত চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উক্তরূপ অপসারণের কারণে কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারিবেন না।
(৭) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন অপসারিত চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষতিকর কার্যকলাপের কারণে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি হইলে, তাহার নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্য অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং এইরূপ গৃহীত ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখিতভাবে অবহিত করিবে।
২০। (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদ বাতিল করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন, যদি:-
(ক) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদের কার্যাবলি উক্ত কোম্পানি বা উহার আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি বা ক্ষতিকর হয়; বা
(খ) ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লিখিত যে কোনো কারণে সংশ্লিষ্ট পর্যদ বাতিল করিবার প্রয়োজন হয়।
(২) নূতন পরিচালক পর্ষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিগণ উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করিবে এবং উক্ত কোম্পানি এতদসংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ করিবে।
(৩) ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (৩) এর বিধান, উহাতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ (mutatis mutandis) এই ধারার অধীন প্রদত্ত আদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
(৪) পরিচালক পর্ষদ বাতিল আদেশের ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের নিকট আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন করিতে পারিবেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
পঞ্চম অধ্যায়
ফাইন্যান্স কোম্পানির কার্যাবলি
২১। (১) অর্থায়ন ব্যবসা ছাড়াও ফাইন্যান্স কোম্পানি নিম্নরূপ ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) উন্নয়ন অর্থায়ন ব্যবসা (যাহা রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোগত, সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিচালিত);
(খ) কাঠামোগত অর্থায়ন (structured financing) এর উদ্দেশ্যে ইস্যুকৃত বা ইস্যুতব্য সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ;
(গ) ফাইন্যান্স কোম্পানির নিজস্ব পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার অধীন সরকার বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো ইস্যুয়ার কর্তৃক ইস্যুকৃত সিকিউরিটি বা পুঁজিবাজারে লেনদেনকৃত সিকিউরিটি এর দায় গ্রহণ, অধিগ্রহণ, বিনিয়োগ বা পুনঃবিনিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম;
(ঘ) সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কার্যক্রম; এবং
(ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য ব্যবসা।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২৭ এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, পোর্টফোলিও ম্যানেজার হিসাবে বা এইরূপ কোনো কার্যক্রম বা ব্যবসা যাহার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন হইতে নিবন্ধন গ্রহণের প্রয়োজন হয় সেইরূপ কোনো ব্যবসা বা কার্যক্রমে সরাসরি লিপ্ত হইতে পারিবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর নিবন্ধন সাপেক্ষে ট্রাস্টি বা কাস্টডিয়ান হিসাবে পরিচালিত কার্যক্রমের জন্য এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
২২। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি নিম্নবর্ণিত কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে না, যথা:-
(ক) স্বর্ণ বা বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন;
(খ) এই আইনে বর্ণিত ব্যবসা ব্যতীত অন্য কোনো ব্যবসা:
তবে শর্ত থাকে যে, ইসলামী শরীয়া ভিত্তিতে পরিচালিত ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বীকৃত ইসলামী পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক বিনিয়োগের অর্থ ছাড়করণের ক্ষেত্রে এই ধারার কোনো কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।
২৩। (১) ইসলামী শরীয়া ভিত্তিতে ফাইন্যান্স কোম্পানি পরিচালনা করিতে হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে লাইসেন্স গ্রহণকালে বা পরবর্তীতে ইসলামী শরীয়া ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে ফাইন্যান্স কোম্পানি সীমিত পরিসরে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ কোম্পানি উহার নামের সহিত ইসলামিক বা অনুরূপ শব্দের ব্যবহার বা অভিব্যক্তির প্রকাশ করিতে পারিবে না।
(৩) ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত ফাইন্যান্স কোম্পানির অনুমোদন, পরিচালনা নীতি ও কার্যপদ্ধতি, সময় সময়, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
২৪। (১) ফাইন্যান্স কোম্পানি এইরূপ কোনো আমানত গ্রহণ করিবে না যাহা চাহিবামাত্র চেক, ড্রাফট, ডেবিট কার্ড অথবা আমানতকারীর আদেশের মাধ্যমে পরিশোধযোগ্য।
(২) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনো প্রাকৃতিক ব্যক্তির নিকট হইতে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা বা যৌথ নামে সর্বোচ্চ ১ (এক) কোটি টাকা বা, সময় সময়, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সীমার অধিক আমানত গ্রহণ করিতে পারিবে না।
২৫। (১) কোনো ব্যক্তি বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রদত্ত বা প্রদেয় মোট ঋণ সুবিধার আসলের পরিমাণ উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত হারের অধিক হইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত হারের সীমা কোনো অবস্থাতেই শতকরা ৩০ (ত্রিশ) ভাগের অধিক হইবে না।
(২) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ইহার কোম্পানির শেয়ার জামানত রাখিয়া কোনো ব্যক্তিকে ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করিবে না।
(৩) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বেনামি বা অস্তিত্বহীন বা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করিবে না।
(৪) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনো ব্যক্তিকে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণের অধিক জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করিবে না, তবে কৃষি এবং কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনা অনুসরণ করিতে হইবে।
(৫) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বিনা জামানতে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি অথবা উক্ত সকল ব্যক্তি কর্তৃক দায় গ্রহণের ভিত্তিতে কোনো ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা মঞ্জুর করিবে না-
(ক) ইহার কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের কোনো সদস্য;
(খ) এইরূপ কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা প্রাইভেট কোম্পানি যাহাতে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্য উল্লেখ্যযোগ্য শেয়ারধারক, পরিচালক, মালিক বা অংশীদার রহিয়াছেন বা যাহা উহার কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্য কর্তৃক কোনো ভাবে নিয়ন্ত্রিত বা প্রভাবিত হয়; এবং
(গ) এইরূপ কোনো পাবলিক কোম্পানি যাহা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার কোনো পরিচালক বা উহার কোনো পরিচালকের পরিবারের সদস্য কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় অথবা যাহাতে উহাদের এমন পরিমাণ শেয়ার থাকে যাহা দ্বারা তাহারা অন্যূন ২০ (বিশ) শতাংশ ভোটদান ক্ষমতার অধিকারী হন।
(৬) ফাইন্যান্স কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি ও ফাইন্যান্স কোম্পানি সংশ্লিষ্ট নহে এইরূপ কোনো গ্রাহকের সহিত লেনদেনের শর্তাবলি একইরূপ হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, "ফাইন্যান্স কোম্পানি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি" বলিতে বুঝাইবে-
(ক) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক বা তাহাদের পরিবারের সদস্য বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় এইরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখ্যযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে;
(খ) এইরূপ কোনো কোম্পানি যাহাতে দফা (ক) এ উল্লিখিত ফাইন্যান্স কোম্পানি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ, যৌথ নিয়ন্ত্রণ বা উল্লেখ্যযোগ্য প্রভাব রহিয়াছে;
(গ) কোনো কোম্পানিতে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার ধারণ করিলে উক্ত কোম্পানির কোনো উল্লেখ্যযোগ্য শেয়ারধারক; এবং
(ঘ) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী এইরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি বা যাহারা দফা (ক), (খ) ও (গ) এ বর্ণিত সম্পর্কের ন্যায় কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির সহিত সম্পর্কিত।
(৭) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে গৃহীত বা গৃহীতব্য জামানত বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান (valuation firm) কর্তৃক মূল্যায়িত হইতে হইবে।
(৮) উপ-ধারা (৭) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় "জামানত”বলিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনায় নির্ধারিত যোগ্য জামানতকে (eligible collateral) বুঝাইবে।
২৬। (১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা সমষ্টিগতভাবে উহার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের মোট পরিমাণের ২৫ (পঁচিশ) শতাংশের অধিক হইবে না।
(২) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বন্ড, ডিবেঞ্চার বা ইসলামি শরীয়া ভিত্তিক নির্দশনপত্রে বিনিয়োগের সীমা নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা জারি করিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর বিধান ক্ষুণ্ণ না করিয়া কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি সাবসিডিয়ারি ব্যতীত অন্য কোনো কোম্পানিতে উহার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগের অধিক শেয়ার অর্জন বা ধারণ করিতে পারিবে না।
(৪) এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি সাবসিডিয়ারি ব্যতীত অন্য কোনো কোম্পানিতে উহার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগের অধিক শেয়ার অর্জন বা ধারণ করিলে এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসরের মধ্যে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে আরও ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে উহা শতকরা ৫ (পাঁচ) ভাগ পর্যন্ত অবনমন করিবে।
২৭। (১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করিতে পারিবে না।
(২) কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান, অবলোপন এবং উহার সুদ বা মুনাফা মওকুফের পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(৩) যে উদ্দেশ্যে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠিত হোক না কেন, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত হার বা পরিমাণের অধিক উহার সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের মূলধন হিসাবে বিনিয়োগ করিতে পারিবে না।
২৮। (১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি সমষ্টিগতভাবে উহার পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের ২৫ (পঁচিশ) শতাংশের অধিক মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিতে বা অধিকারে রাখিতে পারিবে না।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিজস্ব ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় নহে এইরূপ কোনো স্থাবর সম্পত্তি, উহা যেভাবেই অর্জিত হইয়া থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি, উহা অর্জনের তারিখ হইতে ৭(সাত) বৎসর বা এই আইন প্রবর্তনের তারিখ হইতে ৭ (সাত) বৎসর, যাহা পরে শেষ হয়, ইহার অধিক সময় অতিক্রান্ত হইবার পর স্বীয় অধিকারে রাখিবে না।
(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির আমানতকারীগণের স্বার্থে উক্ত সম্পত্তি অধিকারে রাখিবার সময়সীমা বর্ধিত করা প্রয়োজন, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময় অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত বর্ধিত করিতে পারিবে।
২৯। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ঋণ প্রদানকারী ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক পর্ষদের অনুমোদন ব্যতীত কোনো দেনাদার কোম্পানির কোনো পরিচালক বা পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সদস্যের পদত্যাগ কার্যকর হইবে না এবং কোনো পরিচালক তাহার শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রয় করিতে পারিবেন না।
৩০। (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি, সময় সময়, ইহার খেলাপী ঋণগ্রহীতার তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সকল ফাইন্যান্স কোম্পানি ও ব্যাংক কোম্পানিতে প্রেরণ করিবে।
(৩) কোনো খেলাপী ঋণগ্রহীতার অনুকূলে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনোরূপ ঋণ সুবিধা প্রদান করিবে না।
(৪) প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতার তালিকা প্রস্তুত করিবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সময় সময়, উক্ত তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করিবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রাপ্ত তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সকল ফাইন্যান্স কোম্পানি ও ব্যাংক-কোম্পানিতে প্রেরণ করিবে।
(৬) বাংলাদেশ ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ এবং চূড়ান্তকরণ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করিবে।
(৭) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতার নাম চূড়ান্তকরণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে তাহার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে, এবং অনুরূপ ঋণ গ্রহীতা নাম চূড়ান্তকরণের তারিখ হইতে প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি উহা ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে সেই মর্মে অবহিত করিবে।
(৮) উপ-ধারা (৭) এর বিধান অনুযায়ী ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত হইবার ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট আপিল করিতে পারিবে এবং উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
(৯) বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিকট ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতাদের তালিকা প্রেরণ করিতে পারিবে এবং তাহাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশিন, রেজিষ্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ অ্যান্ড ফার্মস (RJSC) এর নিকট কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করিলে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(১০) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে তালিকাভুক্ত হইলে উপ-ধারা (৮) এর বিধান সাপেক্ষে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাহার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করিতে পারিবে।
(১১) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি উক্ত তালিকা হইতে অব্যাহতি প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়, যাহা ৫ (পাঁচ) বৎসরের অধিক হইবে না, অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হইবার যোগ্য হইবেন না।
(১২) উপ-ধারা (৪) ও (৫) এর অধীন কোনো ব্যক্তি, ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে তালিকাভুক্ত হইলে এবং উপ-ধারা (৮) এর অধীন উক্ত তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে আপিল করা না হইলে অথবা আপিল নামঞ্জুর হইলে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি উক্ত ঋণগ্রহীতাকে ২(দুই) মাস সময় প্রদান করিয়া তাহার নিকট হইতে প্রাপ্য সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত চাহিয়া নোটিশ প্রদান করিবে।
(১৩) এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১২) এর বিধান অনুযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির পর ২ (দুই) মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা তাহার নিকট প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি, ক্ষেত্রমত, উহার পরিচালক পর্ষদের অনুমোদনক্রমে তাহার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করিবে এবং এইরূপ মামলা সংশ্লিষ্ট ঋণ বা অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করিবে না।
৩১। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত ঋণের উপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করিবে না, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো বর্তমান বা প্রাক্তন পরিচালক ও তাহার পরিবার বা অন্য কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বা ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা প্রাক্তন পরিচালক ও তাহার পরিবার; বা
(খ) এইরূপ কোনো ব্যক্তি-
(অ) যাহাতে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের কোনো সদস্য উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক, পরিচালক, জামিনদার, ম্যানেজিং এজেন্ট, মালিক বা অংশীদার রহিয়াছেন; বা
(আ) যাহা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার কোনো পরিচালক বা উহার কোনো পরিচালকের পরিবারের সদস্য কর্তৃক কোনোভাবে নিয়ন্ত্রিত বা প্রভাবিত হয়; বা
(গ) এইরূপ কোনো ব্যক্তি যাহার সহিত উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক, অংশীদার বা জামিনদার হিসাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট রহিয়াছে;
(ঘ) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত কোনো ব্যক্তি:
তবে শর্ত থাকে যে, ঋণের সুদ বা মুনাফা মওকুফের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঋণের তহবিল ব্যয় (Cost of Fund) আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করিতে হইবে।
৩২। এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার নিকট হইতে গৃহীত কোনো ঋণ বা অন্য কোনো পাওনা অবলোপন (write off) করিলেও উক্ত অবলোপন সংশ্লিষ্ট ঋণ বা পাওনা আদায়ের আইনগত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করিবে না।
ষষ্ঠ অধ্যায়
ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব বিবরণী প্রস্তুত, নিরীক্ষা, পরিদর্শন, তথ্য প্রকাশ, ইত্যাদি
৩৩। (১) বাংলাদেশে নিবন্ধনকৃত প্রত্যেক ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোনো বৎসর সমাপ্ত হইবার পর উক্ত বৎসরে উক্ত কোম্পানি কর্তৃক কৃত অর্থায়ন ব্যবসা সম্পর্কে একটি স্থিতিপত্র ও লাভ-ক্ষতির হিসাব এবং আর্থিক বিবরণী বৎসরের শেষ কার্যদিবসে যেইরূপ হয় সেইরূপভাবে প্রস্তুত করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রস্তুতকৃত আর্থিক বিবরণী ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ এর ধারা ৪০ এর বিধান অনুসরণে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে যোগ্য তালিকাভুক্ত নিরীক্ষক কর্তৃক নিরীক্ষা করাইতে হইবে।
(৩) বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ রেজিষ্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীর নিকট কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিকে [যাহা ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ এর ধারা ২ এর উপ-ধারা (৮) এ সংজ্ঞায়িত জনস্বার্থ সংস্থা হিসাবে বিবেচিত] আর্থিক বিবরণী বা অনুরূপ বিবরণী বা প্রতিবেদন উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ফাইনান্সিয়াল রিপোটিং আইন, ২০১৫ এর ধারা ৩৫ এর বিধান অনুযায়ী নিরীক্ষকের নিরীক্ষা প্রতিবেদন ও প্রয়োজনীয় দলিলসহ উপস্থাপন করিতে হইবে।
(৪) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির আর্থিক বিবরণী উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং অন্যূন ৩ (তিন) জন পরিচালক কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইবে।
৩৪। ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ৩৩ অনুযায়ী আর্থিক বিবরণীসহ নিরীক্ষা প্রতিবেদন বৎসর শেষ হইবার ৩ (তিন) মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট দাখিল করিবে এবং ফার্টুন্যান্স কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটে উহা অবিলম্বে প্রদর্শন করিবে এবং অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর ব্যাপী প্রদর্শন অব্যাহত রাখিবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদন দাখিলের উক্ত সময়সীমা অনধিক ৩ (তিন) মাস পর্যন্ত বর্ধিত করিতে পারিবে।
৩৫। ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ৩৩ এর অধীন প্রস্তুতকৃত উহার সর্বশেষ নিরীক্ষিত স্থিতিপত্র, লাভ-লোকসান হিসাব, ইক্যুইটি পরিবর্তনের বিবরণী ও নগদ প্রবাহ বিবরণীর অনুলিপি ও পরিচালকগণের নাম উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র, শাখা বা অফিসের প্রকাশ্য স্থানে বৎসর ব্যাপী প্রদর্শন করিবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলের ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে উক্ত বিবরণীসমূহ বহুল প্রচলিত ন্যূনতম ২ (দুই) টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করিবে।
৩৬। (১) কোম্পানি আইনে ভিন্নরূপ কোনো বিধান থাকা সত্ত্বেও, বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো সময় উহার এক বা একাধিক কর্মকর্তার দ্বারা বাংলাদেশে নিবন্ধনকৃত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির রেজিস্টার, হিসাব বহি ও অন্যান্য দলিল (লিখিত বা ইলেক্ট্রনিক) পরিদর্শন করিতে পারিবে এবং ঋণগ্রহীতার অঙ্গন বা যেই স্থানে ঋণের অর্থ ব্যবহৃত হইয়াছে সেই স্থানও পরিদর্শন করিতে পারিবে এবং এইরূপ পরিদর্শন সমাপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত পরিদর্শনের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি বা এর অংশ বিশেষ উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানিকে সরবরাহ করিবে।
(২) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ বিধান থাকা সত্ত্বেও, এবং উপ-ধারা (১) এর বিধান ক্ষুন্ন না করিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো সময় উহার এক বা একাধিক কর্মকর্তার দ্বারা বাংলাদেশে নিবন্ধনকৃত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির রেজিস্টার, হিসাব বহি ও অন্যান্য দলিল (লিখিত বা ইলেক্ট্রনিক) পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করাইতে পারিবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক আবশ্যক বিবেচনা করিলে উক্ত পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি বা ইহার অংশ বিশেষ উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানিকে সরবরাহ করিতে পারিবে।
(৩) ধারা ২৭ এর অধীন গঠিত সাবসিডিয়ারি কোম্পানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক উপ- ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত অংশের একটি অনুলিপি পরিদর্শনকৃত প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে সরবরাহ করিবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনকার্য বা উপ-ধারা (২) এর অধীন পরীক্ষাকার্য পরিচালনাকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর চাহিদা মোতাবেক ও তৎকর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির রেজিস্টার, হিসাব বহি ও অন্যান্য দলিল (লিখিত বা ইলেক্ট্রনিক) দাখিল করা এবং তৎসম্পর্কে কোনো বিবৃতি বা তথ্য প্রদান করা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির পরিচালক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা নিরীক্ষকের দায়িত্ব হইবে।
(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনকার্য বা উপ-ধারা (২) এর অধীন পরীক্ষাকার্য পরিচালনাকারী ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির যে কোন পরিচালক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা নিরীক্ষককে শপথ পাঠ করাইয়া উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিসের বিষয়াবলি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
(৬) বাংলাদেশ ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং উহার সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে নোটিশ প্রদানের পর, তৎকর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন বা উহার অংশ বিশেষ প্রকাশ করিতে পারিবে।
(৭) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জনস্বার্থে বা ফাইন্যান্স খাতের স্থিতিশীলতার স্বার্থে ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ বা বিনিয়োগের অর্থের সদ্ব্যবহার যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ঋণ বা বিনিয়োগ গ্রহীতার ব্যবসাক্ষেত্র সরেজমিন পরিদর্শন করিতে পারিবে।
৩৭। (১) ফাইনান্সিয়াল রিপোটিং আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ১৬ নং আইন), Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O No. 2 of 1973) বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অনুসারে কোম্পানির নিরীক্ষক হওয়ার যোগ্য যে কোনো ব্যক্তি ফাইন্যান্স কোম্পানির আর্থিক বিবরণী নিরীক্ষার জন্য যোগ্য বলিয়া বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত এবং তালিকাভুক্ত হইলে, ধারা ৩৩ এর অধীন প্রস্তুতকৃত স্থিতিপত্র অনুসারে ফাইন্যান্স কোম্পানির লাভ-ক্ষতির হিসাব ও আর্থিক বিবরণী নিরীক্ষা করিতে পারিবে।
(২) ফাইন্যান্স কোম্পানি বাৎসরিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণপূর্বক উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত নিরীক্ষক নিয়োগ করিবে এবং উক্ত নিরীক্ষক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা ও কার্যপরিধি অনুযায়ী নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদন করিবে।
(৩) ফাইন্যান্স কোম্পানি উপ-ধারা (২) এর অধীন নিরীক্ষক নিয়োগে অসমর্থ হইলে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় যদি উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত নিরীক্ষকের সহিত অপর একজন নিরীক্ষকের কাজ করার প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির জন্য নিরীক্ষক নিযুক্ত করিতে পারিবে এবং প্রদেয় নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ করিয়া দিবে।
(৪) যদি কোনো নিরীক্ষক নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সন্তুষ্ট হন, তাহা হইলে তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন, যথা:-
(ক) এই আইনের বিধানসমূহ লঙ্ঘিত হইয়াছে বা পালন করা হয় নাই অথবা প্রতারণা বা অসততার দরুন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে;
(খ) লোকসানের দরুণ ফাইন্যান্স কোম্পানির মূলধন ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশের নিম্নে নামিয়া গিয়াছে;
(গ) পাওনাদারগণের পাওনা প্রদানের নিশ্চয়তা বিঘ্নিত হওয়াসহ অন্য কোনো গুরুতর অনিয়ম ঘটিয়াছে; অথবা
(ঘ) পাওনাদারগণের পাওনা পরিশোধের জন্য সম্পদ যথেষ্ট কিনা উক্ত বিষয়ে সন্দেহ রহিয়াছে।
(৫) উপ-ধারা (২) ও (৩) এর অধীন নিযুক্ত নিরীক্ষক ব্যতিরেকে জনস্বার্থে প্রয়োজন মনে করিলে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যপরিধি নির্দিষ্ট করিয়া সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির নিজস্ব ব্যয়ে নিরীক্ষক, যাহা বিশেষ নিরীক্ষক বলিয়া বিবেচিত হইবে, নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৬) বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নিরীক্ষা কার্যে নিয়োজিত কোনো নিরীক্ষক তাহার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করিয়াছে বা উহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষককে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি নিরীক্ষার জন্য কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হইবে না তদূমর্মে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করিতে পারিবে।
(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন প্রদত্ত নিরীক্ষকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হইলে বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ে উহা ব্যাখ্যা প্রদান না করিলে, বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষককে অনধিক ২ (দুই) বৎসরের জন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি নিরীক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করিতে পারিবে।
(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন কোনো ঘোষণার ফলে সংক্ষুদ্ধ নিরীক্ষক উক্ত ঘোষণার ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের নিকট আপিল করিতে পারিবে এবং এতদবিষয়ে উক্ত পর্ষদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।
৩৮। (১) বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিকে যে কোনো তথ্য ও বিবরণী সরবরাহ করিতে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং অনুরূপ নির্দেশিত তথ্য ও বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে সরবরাহ করিতে হইবে।
(২) জনস্বার্থ ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখিবার লক্ষ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক বা গ্রাহক বা অন্য কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আর্থিক লেনদেনের তথ্য বা প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্য প্রয়োজন হইলে, উক্ত তথ্য প্রদান করিবার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে সরকার বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা উক্ত সংস্থার অধীন অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নিকট অনুরোধ করা হইলে তাহারা যাচিত তথ্য বা তথ্যাদি প্রদান করিবে।
৩৯। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা উহার কোনো কর্মকর্তা যদি এই মর্মে অবহিত হন বা তৎকর্তৃক সন্দেহ করিবার কারণ থাকে যে, কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে-
(ক) মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৫ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (ফ) এ সংজ্ঞায়িত মানিলন্ডারিং এর সহিত জড়িত; বা
(খ) সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ১৬ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (১৬) এ সংজ্ঞায়িত সন্দেহজনক লেনদেন এবং ধারা ৭ এ উল্লিখিত সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত অপরাধ এর সহিত জড়িত;
তাহা হইলে উক্ত কোম্পানি বা কর্মকর্তা অবিলম্বে সেই ব্যক্তি ও লেনদেন সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করিবে।
৪০। বাংলাদেশ ব্যাংক জনস্বার্থে ধারা ৩০ এর অধীন প্রাপ্ত খেলাপী ঋণগ্রহীতা ও ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতার তালিকা এবং এই আইনের অধীন সংগৃহীত ৩০ (ত্রিশ) দিনের অধিক সময়ের অনাদায়ি ঋণ বা ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবসা সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য একীভূত বা স্বতন্ত্র বা অন্য কোনোভাবে প্রকাশ করিতে পারিবে।
৪১। (১) জনস্বার্থ বা আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষা বা ফাইন্যান্স কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নিম্নরূপ নির্দেশনা বা নির্দেশ প্রদান অথবা বাধা-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) সকল ফাইন্যান্স কোম্পানি বা কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির ফাইন্যান্স কোম্পানির বা কোনো নির্দিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির জন্য ঋণ শ্রেণিকরণ ও সঞ্চিতি সংরক্ষণ, ঋণের সুদ বা মুনাফা মওকুফ, পুনঃতফসিলিকরণ কিংবা পুনর্গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে যাহা সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ করিবে;
(খ) ধারা ৩৬ অনুযায়ী কোনো পরিদর্শন চলাকালীন বা উহা সমাপ্ত হইবার পর বা কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায়, লিখিত আদেশ দ্বারা এবং উহাতে উল্লিখিত শর্তাধীনে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির বিষয়াবলি বা উহা হইতে উদ্ভূত কোনো বিষয় বিবেচনার জন্য উহার পরিচালকগণকে সভা আহ্বান করিতে বা অনুরূপ কোনো বিষয় সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহিত আলোচনা করিতে ফাইন্যান্স কোম্পানিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(গ) সকল বা নির্দিষ্ট কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিকে কোনো নির্দিষ্ট বা নির্দিষ্ট শ্রেণির লেনদেনে চুক্তিবদ্ধ হইবার ক্ষেত্রে সতর্ক বা বাধা-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে;
(ঘ) সকল বা নির্দিষ্ট কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানিকে উহার অর্থায়ন ব্যবসা সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিবার বা না করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক সকল অথবা নির্দিষ্ট কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির জন্য নিম্নরূপ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানির সংশ্লিষ্ট নীতির উৎকর্ষ সাধনের জন্য;
(খ) ফাইন্যান্স কোম্পানির নিজের বা উহার আমানতকারীর স্বার্থের পরিপন্থি কার্যকলাপ প্রতিরোধের জন্য;
(গ) ফাইন্যান্স কোম্পানির যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের জন্য;
(ঘ) জনস্বার্থে বা মুদ্রানীতির উৎকর্ষ সাধন সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য।
(৩) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রদত্ত নির্দেশনা, নির্দেশ বা বাধা-নিষেধ পরিবর্তন বা পরিমার্জন বা পরিবর্ধন বা বাতিল বা সংশোধন করিতে পারিবে।
(৪) বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতি আর্থিক বৎসরের প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রাকৃতিক ব্যক্তি (Natural Person) এর আমানত ও ঋণের উপর সুদ বা মুনাফা বা ভাড়ার সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে বৎসরের যে কোনো সময় উহা সমন্বয় করিবে এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশসহ সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রচার ও প্রকাশ করিবে।
সপ্তম অধ্যায়
লাইসেন্সবিহীন অর্থায়ন ব্যবসা
৪২। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট যদি এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স ব্যতিরেকে অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিতেছে বা কোনো সময় করিয়াছিল বা উহার সহিত সংশ্লিষ্ট ছিল, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উহা তদন্ত করিতে পারিবে এবং তদন্তের স্বার্থে-
(ক) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ ব্যক্তির অবগতিতে, দখলে, জিম্মায় বা নিয়ন্ত্রণে রহিয়াছে এইরূপ সকল প্রয়োজনীয় তথ্য, হিসাব বিবরণী, বহি, দলিল (লিখিত বা ইলেকট্রনিক), নথিপত্র বা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দাখিল করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(খ) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অনুমোদনক্রমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লাইসেন্স বিহীন অর্থায়ন ব্যবসা বন্ধ এবং উহার তথ্য, হিসাব বিবরণী, দলিল (লিখিত বা ইলেকট্রনিক), নথিপত্র বা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম স্থানান্তর নিষিদ্ধকরণ ও জব্দ করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(গ) এই ধারায় উল্লিখিত সকল তথ্য, হিসাব বিবরণী, দলিল (লিখিত বা ইলেকট্রনিক), নথিপত্র বা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম পরিদর্শন বা পরীক্ষা করিতে পারিবে এবং উল্লিখিত ব্যবসায়ের সহিত সম্পর্কিত যে কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে।
৪৩। (১) বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট ধারা ৪২ এর অধীন তদন্তের পর যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ব্যক্তি ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া লাইসেন্স ব্যতিরেকে অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিতেছে, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক এতদসংক্রান্ত বিষয়ে একটি ঘোষণা প্রদান করিবে।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষণা প্রদানের পূর্বে ধারা ৪ এর উপ- ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় ব্যক্তব্য প্রদানের সুযোগ প্রদান করিয়া ন্যূনতম ২ (দুই) টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় এতদসংক্রান্ত ঘোষণা প্রকাশ করিবে।
(৩) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন মনে করিলে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ঘোষণার তথ্য বাংলাদেশের বিদেশি মিশনে প্রেরণ করিবে এবং এইরূপ প্রকাশনার পর উক্ত ব্যক্তি বা উহাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিচালক, ম্যানেজার, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা প্রতিনিধি বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের সহিত যে কোনোভাবে সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তি উক্ত ঘোষণা সম্পর্কে অবহিত নহেন এই মর্মে কোনো কারণ প্রদর্শন করিতে পারিবে না।
৪৪। (১) কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে ধারা ৪৩ অনুযায়ী কোনো ঘোষণা প্রকাশিত হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এতদসংক্রান্ত সকল কার্য ও লেনদেন হইতে বিরত থাকিবে।
(২) ঘোষণা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাহার বা উহার পক্ষে কর্মরত কোনো ব্যক্তি বা অনুরূপ কর্মরত বলিয়া বিবেচিত কোনো ব্যক্তির সহিত কোনো লেনদেন করা হইলে, উক্ত লেনদেন অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে।
৪৫। (১) ধারা ৪৪ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে ধারা ৪৩ অনুযায়ী কোনো ঘোষণা প্রকাশিত হইলে উক্ত ব্যক্তির বা তাহার পক্ষে কোনো ব্যক্তির দখলে, অধিকারে, তত্ত্বাবধানে, নিয়ন্ত্রণে বা জিম্মায় রহিয়াছে এইরূপ সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, শেয়ার, সম্পত্তির স্বত্ব- দলিল বা অন্য কোনো দলিল অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি ও সময়ের জন্য এবং নির্ধারিত কোনো ব্যক্তির জিম্মায় রাখিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো ব্যক্তি যদি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, শেয়ার, সম্পত্তির স্বত্ব-দলিল বা অন্য কোনো দলিল এই আইনের ধারা ৪৪ এর অধীন প্রদত্ত ঘোষণা প্রকাশিত হইবার ২ (দুই) দিনের মধ্যে জমা প্রদান করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি ব্যবসা অঙ্গনে প্রবেশ করিতে, উহা তল্লাশি করিতে এবং উক্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, শেয়ার, সম্পত্তির স্বত্ব-দলিল বা অন্য কোনো দলিল জব্দ করিয়া উপ-ধারা (১) অনুযায়ী জমা রাখিতে পারিবেন।
৪৬। কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে ধারা ৪৩ এর অধীন ঘোষণা প্রকাশিত হইবার ৩ (তিন) দিনের মধ্যে বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বর্ধিত সময়ের মধ্যে উহার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিচালক, ম্যানেজার, কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি এবং উহার কোনো দাবিদার, তাহার হেফাজতে উক্ত ব্যক্তির যে সকল সম্পদ রক্ষিত রহিয়াছে তৎসম্পর্কে একটি তালিকা সংবলিত বিবৃতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট দাখিল করিবে।
৪৭। (১) প্রাকৃতিক ব্যক্তি ব্যতীত অন্য সকল ব্যক্তি সর্ম্পকে ধারা ৪৩ অনুযায়ী কোনো ঘোষণা প্রদান করা হইলে উক্ত ব্যক্তি কোম্পানি আইন এর অধীন অবসায়ন যোগ্য অনিবন্ধিত কোম্পানি হিসাবে গণ্য হইবে।
(২) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি সম্পর্কে ধারা ৪৩ অনুযায়ী কোনো ঘোষণা প্রদান করা হইলে উক্ত ঘোষণার তারিখ হইতে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে বর্ধিত সময়ের মধ্যে উক্ত কোম্পানি অবসায়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করিতে পারিবে।
(৩) এই আইন এবং কোম্পানি আইনের বিধানাবলির যেই অংশ ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়নের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সেই অংশ উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন এবং উহার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
অষ্টম অধ্যায়
প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, সাময়িক স্থগিতকরণ, পুনর্গঠন ও একত্রীকরণ
৪৮। (১) যদি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নিকট এই মর্মে সন্দেহ করিবার কারণ থাকে যে,-
(ক) উহা গ্রাহকের দায় প্রতিপালনে সামর্থ্য নয়; অথবা
(খ) উহার ক্ষেত্রে গ্রাহকের দায় প্রতিপালনে অসামর্থ্য হইবার কারণ রহিয়াছে; অথবা
(গ) উহা গ্রাহকের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়;
তাহা হইলে ফাইন্যান্স কোম্পানি উক্ত বিষয়টি অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যর্থতার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অবহিত হইলে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের যদি এই মর্মে বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি-
(ক) জনস্বার্থ পরিপন্থিতে পরিচালিত হইতেছে; বা
(খ) আমানতকারীর স্বার্থ পরিপন্থিতে পরিচালিত হইতেছে; বা
(গ) উহার পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ; বা
(ঘ) এর সংরক্ষিত মূলধন আবশ্যিক মূলধনের শতকরা ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশের নিম্নে; বা
(ঙ) এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করিয়াছে; বা
(চ) লাইসেন্সের শর্ত লঙ্ঘন করিয়াছে; বা
(ছ) ফৌজদারি অপরাধ সংঘটন করিয়াছে;
তাহা হইলে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করিয়া বাংলাদেশ ব্যাংক উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বর্ণিত বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) উহার অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার বিষয়ে যে কোনো নির্দেশ প্রদান;
(খ) উহার পরিচালক পর্ষদ বা কোনো কমিটির কার্যধারা পর্যবেক্ষণের জন্য শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা নিযুক্তকরণ;
(গ) উহার ব্যবসা সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে শর্ত সাপেক্ষে উহার নিজস্ব ব্যয় বা খরচে নিযুক্তকরণ; এবং
(ঘ) উহার ব্যবস্থাপনায় কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হইলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত পরিবর্তন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যকর করিবার নির্দেশ প্রদান।
(৪) এই ধারার অধীন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ব্যক্তির পারিতোষিক ও কার্যের শর্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করিবে এবং এইরূপ পারিতোষিক (emolument) ও নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা বাবদ সকল ব্যয় সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বহন করিবে।
(৫) বাংলাদেশ ব্যাংক উপ-ধারা (১) বা (২) এ বর্ণিত কারণে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি অবসায়নের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন দাখিল করিতে পারিবে।
৪৯। (১) আমানতকারীর স্বার্থে বা জনস্বার্থে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির অর্থায়ন ব্যবসা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখিবার প্রয়োজন মনে করিলে, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, বাংলাদেশ ব্যাংক লিখিত আদেশ দ্বারা ৬ (ছয়) মাসের জন্য এবং প্রয়োজনে উক্ত সময় অনধিক ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বর্ধিত করিয়া উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবসা সাময়িক স্থগিত রাখিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর আদেশ বলবৎ থাকাকালীন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতীত উহার কোনো আমানতকারীর পাওনা বা কোনো পাওনাদারের দায় পরিশোধ করিবে না বা অন্য কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করিবে না।
(৩) এই আইনের অন্য কোনো বিধান বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, অর্থায়ন ব্যবসা সাময়িক স্থগিত রাখিবার আদেশের মেয়াদ বলবৎ থাকাকালীন জনস্বার্থে বা উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক এতদুদ্দেশ্যে নিম্নরূপ স্কিম প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি পুনর্গঠন; বা
(খ) ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক- কোম্পানি, অতঃপর এই ধারায় গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান বলিয়া উল্লিখিত, এর সহিত একত্রীকরণের প্রয়োজন।
(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত স্কিমে নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক বিষয় থাকিতে পারিবে, যথা:-
(ক) পুনর্গঠিত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা, ক্ষেত্রমত, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের নাম, নিবন্ধীকরণ, মূলধন, সম্পদ, ক্ষমতা, অধিকার, স্বার্থ, কর্তৃত্ব, সুবিধা, দায়-দায়িত্ব এবং কর্তব্য;
(খ) পুনর্গঠিত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা, ক্ষেত্রমত, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পর্ষদের পুনর্গঠন, পরিচালনা পদ্ধতি, মেয়াদ এবং অন্যান্য শর্তাবলি;
(গ) মূলধন পরিবর্তনের জন্য বা পুনর্গঠন বা একত্রীকরণ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে পুনর্গঠিত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা, ক্ষেত্রমত, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের সংঘ-স্মারক সংশোধন;
(ঘ) সাময়িক স্থগিতাদেশের অব্যবহিত পূর্বে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে গৃহীত অনিষ্পন্ন পদক্ষেপ বা কার্যধারা পুনর্গঠিত ফাইন্যান্স কোম্পানি বা, ক্ষেত্রমত, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অব্যাহত রাখিবার বিষয়;
(ঙ) জনস্বার্থে, অথবা ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার, আমানতকারী বা অন্যান্য পাওনাদারের স্বার্থে অথবা ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবসা চলমান রাখিবার স্বার্থে, বাংলাদেশ ব্যাংক যেইরূপ প্রয়োজন মনে করিবে সেইরূপ উক্ত শেয়ারহোল্ডার, আমানতকারী বা অন্যান্য পাওনাদারের প্রাক-পুনর্গঠন বা প্রাক- একত্রীকরণ স্বার্থ বা দাবি হাসের বিষয়;
(চ) ফাইন্যান্স কোম্পানির পুনর্গঠন অথবা একত্রীকরণের জন্য অন্য কোনো নিয়ম ও শর্ত;
(ছ) পুনর্গঠন অথবা একত্রীকরণ কার্যকর সংক্রান্ত আবশ্যকীয় বিষয়।
(৫) বাংলাদেশ ব্যাংক উপ-ধারা (৩) এর অধীন স্কিমটি অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং সরকার কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে নির্ধারিত তারিখ হইতে উক্ত স্কিম কার্যকর হইবে।
(৬) স্কিম অথবা উহার কোনো বিধান কার্যকর হইবার তারিখ হইতে নিম্নবর্ণিত ফাইন্যান্স কোম্পানি, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদির উপর প্রযোজ্য হইবে, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানি, গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান এবং একত্রীকরণের সহিত সম্পর্কিত অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি;
(খ) সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার, আমানতকারী এবং অন্যান্য পাওনাদার;
(গ) সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী; এবং
(ঘ) সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বা গ্রহীতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোনো ভবিষ্য তহবিল বা অন্য কোনো তহবিলের ব্যবস্থাপনার সহিত কোনো ট্রাস্টি বা সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বা গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানে অধিকার বা দায় রহিয়াছে এইরূপ সকল ব্যক্তি।
(৭) স্কিম কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধার সৃষ্টি হইলে তাহা দূরীকরণে সরকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিবে।
৫০। কোম্পানির সহিত একীভূত হইতে চাহিলে অথবা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নিজের অর্থায়ন ব্যবসার অংশবিশেষ অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানির নিকট হস্তান্তরের মাধ্যমে বা বিদ্যমান দায় সম্পদের পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে পুনর্গঠিত হইতে চাহিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদনক্রমে একত্রীকরণ বা পুনর্গঠন করিতে পারিবে।
নবম অধ্যায়
ফাইন্যান্স কোম্পানি অবসায়ন
৫১। (১) কোম্পানি আইন এ যাহা কিছই থাকুক না কেন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি গৃহীত আমানত বা ঋণ বা কর্জ বা দেনা পরিশোধে অক্ষম হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজন মনে করিলে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়নের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করিতে পারিবে।
(২) হাইকোর্ট বিভাগ কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়নের আবেদন গ্রহণ করিলে উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির বিদ্যমান ও অবসায়ন আবেদনে উল্লিখিত বা অবসায়ন প্রক্রিয়া চলাকালীন দায়ী হিসাবে চিহ্নিত সাবেক পরিচালকদের সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ উক্ত আদালতের আদেশক্রমে অবরুদ্ধ (freeze) বা ক্রোক (attachment) হইবে এবং উক্ত আদালতের নির্দেশনা ব্যতিরেকে উহা হস্তান্তর করা যাইবে না।
(৩) কোম্পানি আইন এর ধারা ৩২৫ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (খ) এর বিধান সাপেক্ষে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়নের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ব্যক্তি আমানতকারীর দাবি অন্যান্য পাওনাদারের দাবির উপর অগ্রাধিকার পাইবে।
৫২। (১) কোম্পানি আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়ন কার্যধারায় একজন যোগ্য প্রকৃতিক ব্যক্তিকে সরকারি অবসায়ক হিসাবে নিযুক্ত করিবার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হাইকোর্ট বিভাগের নিকট আবেদন করিবে।
(২) এই আইনের অধীন নিযুক্ত অবসায়ক কোম্পানি আইনের অবসায়ক সম্পর্কিত বিধানাবলি পরিপালন সাপেক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।
৫৩। (১) কোম্পানি আইনে ভিন্নতর কোনো বিধান থাকা সত্ত্বেও ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার পাওনাদারগণের দাবি সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করিতে সক্ষম মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক লিখিতভাবে প্রত্যয়ন না করিলে ধারা ৪ এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বেচ্ছা অবসায়ন করা যাইবে না।
(২) স্বেচ্ছায় অবসায়নের কার্যধারার কোনো পর্যায়ে যদি ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার কোনো দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে হাইকোর্ট বিভাগ কোম্পানি আইনের বিধান ক্ষুণ্ণ না করিয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনক্রমে উক্ত কোম্পানির অবসায়নের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
৫৪। এই আইনের কোনো বিধান বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, হাইকোর্ট বিভাগ ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং উহার সদস্য বা পাওনাদারের মধ্যে কোনো-
(ক) আপোষ-নিষ্পত্তি বা বিশেষ ব্যবস্থা অনুমোদন করিবে না; বা
(গ) আপোষ-নিষ্পত্তি বা বিশেষ ব্যবস্থায় কোনো সংশোধন অনুমোদন করিবে না;
যদি না বাংলাদেশ ব্যাংক এই মর্মে প্রত্যয়ন করে যে, উক্ত নিষ্পত্তি, বিশেষ ব্যবস্থা বা উহাদের সংশোধন কার্যকর করিবার অযোগ্য নহে এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পাওনাদারের স্বার্থের পরিপন্থি নহে।
দশম অধ্যায়
জরিমানা, অপরাধ ও দণ্ড
৫৫। (১) কোনো ব্যক্তি লাইসেন্সের শর্ত পূরণ করিতে ব্যর্থ হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত ব্যক্তিকে অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা এবং উল্লিখিত ব্যর্থতা অব্যাহত থাকিলে প্রথম দিনের পর হইতে প্রতিদিনের ব্যর্থতার জন্য ১ (এক) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(২) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন লাইসেন্সের আবেদনে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করিয়া লাইসেন্স গ্রহণ করিলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত ব্যক্তিকে অন্যূন ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৩) ধারা ৪ এর উপ-ধারা (৬) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া এইরূপ কোনো শব্দ ব্যবহার করে যাহাতে উহাকে ফাইন্যান্স কোম্পানি হিসাবে মনে করিবার কারণ থাকে, তাহা হইলে উক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান এবং উহার ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনার সহিত সংশ্লিষ্ট পরিচালকগণ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, উক্ত লঙ্ঘনের জন্য তাহাদের প্রত্যেককে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা, এবং যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহা হইলে প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৪) ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস স্থাপন বা বিদ্যমান ব্যবসা কেন্দ্র বা অফিসের স্থান পরিবর্তন করিলে উহার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেক পরিচালক বা কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৫) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি এই আইনের ধারা ৯ মোতাবেক নগদ তহবিল ও তরল সম্পদ সংরক্ষণে ব্যর্থ হইলে উহাকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিনের ঘাটতির অনধিক ১ (এক) শতাংশ হারে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৬) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ২৪ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া আমানত গ্রহণ করিলে উক্ত লঙ্ঘনের সহিত সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক পরিচালক ও কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা করিয়া অথবা উক্ত আমানতের দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা, এই দুইয়ের মধ্যে যাহা বেশি সেই পরিমাণ টাকা, দায়ী ব্যক্তিবর্গের সংখ্যার আনুপাতিক হারে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৭) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষকে ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করিলে উক্ত লঙ্ঘনের সহিত যুক্ত প্রত্যেক পরিচালক ও কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা করিয়া অথবা উক্ত ছাড়কৃত ঋণের বিদ্যমান স্থিতি, এই দুইয়ের মধ্যে যাহা বেশি সেই পরিমাণ টাকা, দায়ী ব্যক্তিবর্গের সংখ্যার আনুপাতিক হারে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৮) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক, ব্যবস্থাপক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নিরীক্ষক, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, কর্মকর্তা বা কর্মচারী ইচ্ছাকৃতভাবে যদি উক্ত প্রতিষ্ঠানের হিসাববহি, হিসাব প্রতিবেদন, কোনো বিবরণী, ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজ বা অন্যান্য দলিল
(ক) এ মিথ্যা কোনো কিছু সংযোজন করেন বা করিতে সাহায্য করেন; বা
(খ) এর কোনো কিছু গোপন বা নষ্ট করেন; বা
(গ) যাহা তলবকৃত বা দাখিলকৃত উহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন বা কোনো কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান না করেন;
তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক ফাইন্যান্স কোম্পানির সংশ্লিষ্ট প্রাকৃতিক ব্যক্তিকে অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৯) যদি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ৩০ এ উল্লিখিত ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা সংক্রান্ত বিধান লঙ্ঘন করে, অথবা যদি বাংলাদেশ ব্যাংক এইরূপ বিবেচনা করে যে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি জ্ঞাতসারে বা ইচ্ছাকৃতভাবে উক্ত বিধান লঙ্ঘন করিয়াছে, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির উপর ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা, এবং যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হইবে।
(১০) ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া সুদ বা মুনাফা মওকুফ করিলে উক্ত লঙ্ঘনের সহিত জড়িত প্রত্যেক পরিচালক ও কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্তরূপ মওকুফ সংক্রান্ত আর্থিক ক্ষতির দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা দায়ী ব্যক্তিবর্গের উপর আনুপাতিক হারে জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(১১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ৩৪ এর অধীন আর্থিক বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হইলে প্রতিদিন বিলম্বের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক উহাকে ১০ (দশ) হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(১২) যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৬ এর অধীন কোনো বহি, হিসাব বা অন্য কোনো দলিল দাখিল করিতে অথবা কোনো বিবরণ বা তথ্য সরবরাহ করিতে, অথবা ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত বা পরীক্ষার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কোনো প্রশ্নের জবাব প্রদানে অসম্মত হন, তাহা হইলে অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা এবং অনধিক ৩(তিন) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হইবে, এবং যদি উক্ত অসম্মতি অব্যাহত থাকে, তাহা হইলে অনুরূপ প্রথম দিনের পর হইতে প্রতিদিনের জন্য অন্যূন ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা এবং অনধিক ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা জরিমানা আরোপিত হইবে।
(১৩) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি ধারা ৪৮ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত প্রশাসনিক ব্যবস্থা অমান্য করিলে বাংলাদেশ ব্যাংক উহাকে অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(১৪) এই ধারার বিভিন্ন উপ-ধারায় নির্দিষ্টকৃত জরিমানা ব্যতীত যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অন্য কোনো বিধান লঙ্ঘন করেন, বা তদধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশ বা আরোপিত কোনো শর্ত বা কোনো প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান লঙ্ঘন করে, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে অন্যূন ৩ (তিন) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১৫ (পনেরো) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হইবে।
৫৬। ধারা ৫৫ এর অধীন কোনো ব্যক্তির উপর আরোপিত কোনো জরিমানা এই আইন অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে উক্ত ব্যক্তির উপর আরোপযোগ্য বা আরোপিত হইয়াছে এইরূপ কোনো দায়-কে ক্ষতিগ্রস্ত করিবে না।
৫৭। (১) বাংলাদেশ ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় যথাযথ সময়, যা অনধিক ৩০ দিন, প্রদানপূর্বক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করিবে।
(২) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব প্রদান না করিলে বা প্রদত্ত জবাব সন্তোষজনক না হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক ধারা ৫৫ এর আওতায় জরিমানা আরোপ করিতে পারিবে।
(৩) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত জরিমানা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে এবং সময়মতো জরিমানা পরিশোধ না করিলে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব হইতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনা নোটিশে বিকলনের (debit) মাধ্যমে আদায় করিতে পারিবে।
(৪) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত জরিমানা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হইলে বা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহিত রক্ষিত ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব বিকলনের মাধ্যমে আদায় সম্ভব না হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কৃত অপরাধের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে এই আইনের ধারা ৫৯ এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।
৫৮। (১) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হইয়া বা প্রাপ্ত লাইসেন্স বাতিল হইবার পর বা মিথ্যা পরিচয় প্রদানপূর্বক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
(২) এই আইনের অধীন কোনো ব্যক্তি লাইসেন্সে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করিয়া লাইসেন্স গ্রহণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
(৩) ধারা ৪ উপ-ধারা (৬) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবে।
(৪) ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো পরিচালক বা কর্মকর্তা ঋণ সুবিধা প্রদান করিলে উহা অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
(৫) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৩০ এ উল্লিখিত খেলাপী ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানকারী ফাইন্যান্স কোম্পানি প্রচলিত আইন অনুসারে মামলা দায়ের করিবে।
(৬) ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া সুদ বা মুনাফা মওকুফ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্তরূপ অপরাধের সহিত জড়িত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ডে বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
(৭) বাংলাদেশ ব্যাংক ধারা ৩৬ এর অধীন কোন পরিদর্শন বা পরীক্ষাকার্য সম্পন্ন করিবার পর উক্ত প্রতিবেদন বিবেচনান্তে যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, ফাইন্যান্স কোম্পানির বা উহার সকল ব্যবসা কেন্দ্র বা শাখা বা বুথ বা অফিস ও সাবসিডিয়ারির কার্যাবলি উহার আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি পদ্ধতিতে পরিচালিত হইতেছে, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক, লিখিত আদেশ দ্বারা
(ক) উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক নূতন আমানত গ্রহণ নিষিদ্ধ করিতে পারিবে;
(খ) ধারা ৫১ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানির অবসায়নের উদ্দেশ্যে আবেদন দাখিল করিতে পারিবে;
(গ) পাওনাদারের স্বার্থ রক্ষার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক যেইরূপ সঙ্গত বিবেচনা করে সেইরূপ আদেশ প্রদান বা কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৮) ধারা ৪২ এর অধীন লাইসেন্সবিহীন অর্থায়ন ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তি তদন্তকার্যে অসহযোগিতা করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
(৯) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাববহি, হিসাব প্রতিবেদন, কোনো বিবরণী, ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজ বা অন্যান্য দলিলে-
(ক) মিথ্যা কোনো কিছু সংযোজন করিলে বা করিতে সহায়তা করিলে বা উক্ত দলিলের কোনো অংশ/বিষয় গোপন বা নষ্ট করিলে বা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, তলবকৃত বা দাখিলকৃত কোনো বিবরণ, প্রতিবেদন বা অন্যান্য দলিলে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রদান করিলে; অথবা
(খ) কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান না করিলে;
উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
(১০) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের ধারা ৫৭ এর উপ-ধারা (৪) মোতাবেক মামলা দায়ের হইলে, তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
৫৯। (১) ধারা ৫৮ এর অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করা যাইবে না।
৬০। এ আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য (Cognizable), আপোষযোগ্য (Compoundable) এবং জামিন অযোগ্য (Non-Bailable) হইবে।
একাদশ অধ্যায়
বিবিধ
৬১। (১) ফাইন্যান্স কোম্পানির নিকট রক্ষিত কোনো আমানত একক ব্যক্তি বা যৌথভাবে একাধিক ব্যক্তির নামে জমা থাকিলে উক্ত একক আমানতকারী বা যৌথ আমানতকারী সকলের মৃত্যুর পর তাহার বা তাহাদের মনোনীত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে আমানতের টাকা প্রদান করা যাইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, আমানতকারীগণ যে কোনো সময় মনোনীত ব্যক্তির মনোনয়ন বাতিলপূর্বক অন্য কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে মনোনীত করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন মনোনীত কোনো ব্যক্তি নাবালক থাকা অবস্থায় একক আমানতকারী বা যৌথ আমানতকারী তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে, আমানতের টাকা কে গ্রহণ করিবেন উহা নির্দিষ্ট করিয়া দিতে পারিবে।
(৩) আমানতের অর্থ পরিশোধে মনোনয়ন ও আমানতের দাবি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
৬২। (১) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো কেন্দ্র বা শাখায় সরকার, নাবালক বা আদালতের অর্থ ব্যতীত অন্য কাহারো পরিশোধযোগ্য অর্থ বা আমানত নির্দিষ্ট মেয়াদ অতিক্রান্ত হইবার তারিখ হইতে ১০ (দশ) বৎসর পর্যন্ত যোগাযোগ করা না হইলে বা দাবি করা না হইলে, উক্ত অর্থ বা আমানত পাওনাদার বা আমানতকারী কর্তৃক প্রদত্ত সর্বশেষ ঠিকানায় এবং তাহার মনোনীত ব্যক্তির ঠিকানায় নোটিশের অনুলিপি ফাইন্যান্স কোম্পানি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ৩ (তিন) মাস সময় প্রদান করিয়া নোটিশ প্রেরণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত নোটিশ প্রেরণের ৩ (তিন) মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরে যদি দেখা যায় যে, উহার প্রাপ্তিস্বীকার পত্র বা কোনো উত্তর প্রেরিত হয় নাই ভাহা হইলে নিম্নরূপ বিধানাবলী অনুসৃত হইবে, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অর্থ বা আমানত সুদ বা মুনাফাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ করিবে;
(খ) বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি তাহাদের ওয়েবসাইটে প্রেরিত অদাবিকৃত আমানতের তালিকা ১ (এক) বৎসর যাবত প্রদর্শন করিবে; এবং
(গ) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদেয় নোটিশ,-
(অ) কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ক্ষেত্রে, উহার প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর, কোনো হিন্দু যৌথ পরিবারের ক্ষেত্রে, উহার কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যের নিকট, এবং ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত অন্য কোনো সমিতির ক্ষেত্রে, উহার মুখ্য কর্মকর্তার নিকট, প্রেরণ করা যাইবে;
(আ) উহার প্রাপক কর্তৃক যথাযথভাবে ক্ষমতা প্রদত্ত প্রতিনিধিকে বা উক্ত প্রাপক মৃত হইলে, তাঁহার বৈধ প্রতিনিধিকে বা উক্ত প্রাপক দেউলিয়া ঘোষিত হইয়া থাকিলে, তাঁহার স্বত্ব নিয়োগীকে, প্রদান করা যাইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রাপক কর্তৃক প্রতিনিধি নিয়োগের বা প্রাপকের মৃত্যু বা তাঁহার দেউলিয়া ঘোষিত হইবার বিষয়টি ফাইন্যান্স কোম্পানির গোচরে থাকিতে হইবে;
(ই) উহার খাম বা আবরণীটিতে যথাযথভাবে প্রাপকের ঠিকানা লিখিত, ডাক টিকেট লাগানো এবং উহা ডাক বাক্সে ফেলা হইয়া থাকিলে, উক্ত নোটিশ অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট পৌঁছানো সত্ত্বেও অথবা উহার প্রাপকের মৃত্যু, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, বা দেউলিয়া হওয়া সত্ত্বেও, যদি ফাইন্যান্স কোম্পানি উক্ত বিষয়ে নোটিশ প্রদানের পূর্বে অবহিত না হইয়া থাকে, অথবা নোটিশ সংবলিত উক্ত খামটি বা আবরণীটি ডাক বিভাগ কর্তৃক "প্রাপককে পাওয়া গেল না” এই মর্মে বা অনুরূপ অন্য কোনো মর্মে কোনো বিবৃতি লিপিবদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত খাম বা আবরণী যে তারিখে ডাক বাক্সে ফেলা হইয়াছিল সেই তারিখের পর হইতে ১৫ (পনেরো) দিন পরে, উক্ত নোটিশ যথাযথভাবে জারি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঘ) কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংককে দফা (ক) এর অধীন অর্থ বা আমানত প্রেরণের, সঙ্গে সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট ঋণের শর্তাবলিতে বা কোনো দলিলে বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ কোনো বিধান থাকা সত্ত্বেও, উক্ত অর্থের উপর কোনো সুদ বা মুনাফা বা লাভ-ক্ষতি গণনা করা হইবে না;
(ঙ) Limitation Act, 1908 (Act No. IX of 1908) বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের কোনো কিছুই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি দফা (ক) এর অধীন কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির দায় ক্ষুণ্ণ করিবে না:
(চ) উপ-ধারা (১) অনুসারে, গণনা করিয়া ১০ (দশ) বৎসর অতিবাহিত হইবার পর, যে সব দাবিহীন অর্থ বা আমানত অপরিশোধিত বা, ক্ষেত্রমত, অফেরত অবস্থায় কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির নিকট থাকে, উক্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি, প্রত্যেক বৎসর শেষ হইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে, সেই সকল অর্থ বা সামগ্রীর একটি বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট দাখিল করিবে;
(ছ) দফা (ক) এর অধীন যে সকল অর্থ বা আমানত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত হইবে, উহাদের একটি তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক এর ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করিবে;
(জ) যেই ফাইন্যান্স কোম্পানি দফা (ক) এর অধীন কোনো অর্থ বা আমানত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট জমা রাখিবে সেই ফাইন্যান্স কোম্পানি, অনুরূপভাবে জমা রাখিবার পর হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের উক্ত অর্থ বা আমানতের উপর পূর্বস্বত্ব বা পাল্টাদাবি বা উহাকে পৃথক করিয়া রাখার দাবি করিতে পারে;
(ঝ) দফা (ক) এর অধীন জমাকৃত অর্থ বা আমানতের অধিকারী বলিয়া কোনো ব্যক্তি দাবি করিলে তিনি তাহার দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট উপস্থাপন করিতে পারিবেন;
(ঞ) দফা (জ) ও (ঝ) এর বিধানাবলি সাপেক্ষে, উপস্থাপিত দাবির উপর বাংলাদেশ ব্যাংক তৎকর্তৃক সমীচীন বলিয়া বিবেচিত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং উত্থাপিত দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো অর্থ বা আমানত প্রদান করিলে উহার গ্রহীতার প্রাপ্তি রসিদ ঐ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব মোচন করিবে;
(ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে দফা (ক) এর অধীন প্রদত্ত অর্থ বা আমানত সংম্পর্কে অনুরূপ প্রদান বা হস্তান্তরের পর হইতে দুই বৎসরের মধ্যে যদি কোনো বিরোধ কোনো আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকে এবং উক্ত বিরোধ সম্পর্কে আদালত হইতে বা অন্য কোনো সূত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক অবহিত হয়, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত অর্থ বা আমানত নিজের তত্ত্বাবধানে রাখিবে এবং আদালতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উহার বিলি বন্দোবস্ত করিবে;
(ঠ) দফা (জ) এবং (ঞ) এর বিধান সাপেক্ষে, দফা (ক) এর অধীন অর্থ বা আমানত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর হইতে ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে উক্ত অর্থ বা আমানত সম্পর্কে যদি কোনো দাবি উত্থাপতি না হয় বা কোনো তরফ হইতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা না হয়, তাহা হইলে উক্ত ২ (দুই) বৎসর অতিবাহিত হইবার পর হইতে উক্ত অর্থ বা আমানতের উপর কাহারো কোনো দাবি থাকিবে না এবং উহা সরকারের সম্পত্তি হইবে এবং সরকারের উপর উহা ন্যস্ত হইবে;
(ড) দফা (ক) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত কোনো অর্থ বা আমানতের বিষয়ে দফা (ঞ) মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দফা (ঢ) তে বিধৃত পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোনোভাবে কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের সম্মুখে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা চলিবে না;
(ঢ) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক দফা (ঞ) এর অধীন প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কর্তৃক নির্দিষ্ট কোনো কর্মকর্তা, যিনি সিদ্ধান্ত প্রদানকারী কর্মকর্তা অপেক্ষা উচ্চতর পদমর্যাদা সম্পন্ন হইবেন, এর নিকট অপিল দায়ের করিতে পারিবেন;
(ণ) দফা (জ) ও (ঝ) এর অধীন উত্থাপিত কোনো দাবি বা দফা (ঢ) এর অধীন দায়েরকৃত কোনো অপিল মীমাংসা বা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিবে এবং কোনো মামলার বিচারের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে যেই সকল ক্ষমতা Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এর অধীন কোনো দেওয়ানী আদালতের রহিয়াছে, যথা:-
(ক) কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং শপথের মাধ্যমে তাহার সাক্ষ্য গ্রহণ;
(খ) প্রামাণিক দলিল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উপস্থাপনে বাধ্যকরণ; এবং
(গ) সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের জন্য কমিশন নিয়োগ:
(ত) এই ধারার অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিষ্পত্তিযোগ্য কোনো কার্যধারা Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 228 এর বিধান মোতাবেক Judicial proceeding হিসাবে গণ্য হইবে এবং এই ধারার অধীন উক্ত কোনো কার্যধারার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক Code of Criminal Procedure. 1898 (Act No. V of 1898) এর section 480 এর বিধান মোতাবেক একটি Civil Court হিসাবে গণ্য হইবে; এবং
(থ) এই ধারার অধীন কোনো কার্যধারায় কোনো দলিল দাখিল, প্রদর্শন বা লিপিবদ্ধ করিবার জন্য বা বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে কোনো দলিল গ্রহণের জন্য কোনো কোর্ট ফি প্রদান করিতে হইবে না।
৬৩। বাংলাদেশ ব্যাংকের লিখিত পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার নাম পরিবর্তন করিতে পারিবে না।
৬৪। বাংলাদেশ ব্যাংকের লিখিত পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার সংঘ-স্মারক বা সংঘবিধি পরিবর্তন করিতে পারিবে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে ফাইন্যান্স কোম্পানির সংঘ-স্মারক বা সংঘবিধি পরিবর্তন করিতে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
৬৫। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের বিধানাবলি পরিপালনের কারণে কোনো ব্যক্তির কোনো চুক্তি বা অন্য কোনোভাবে উদ্ভূত অধিকার ক্ষুণ্ণ হইলে তজ্জন্য তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারিবেন না।
৬৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
(২) সরকার সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত, পরামর্শ বা আপত্তি আহ্বান করিয়া সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দ্বারা বিধি প্রাক-প্রকাশ করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাক-প্রকাশিত বিষয়ের উপর কোনো ব্যক্তির কোনো মতামত, পরামর্শ বা আপত্তি থাকিলে উহা লিখিতভাবে গেজেটে প্রাক-প্রকাশের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
(৪) সরকার উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্ত মতামত, পরামর্শ বা আপত্তি বিবেচনা করিয়া উহার বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
৬৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিম্নরূপ বিষয়ে সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) ফাইন্যান্স কোম্পানির লাইসেন্স প্রদান ও শাখা স্থাপন; বা
(খ) মূলধন সংরক্ষণ; বা
(গ) বিধিবদ্ধ সঞ্চিতি; বা
(ঘ) তহবিল সংরক্ষণ; বা
(ঙ) ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন।
৬৮। বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা ঘোষণা করিতে পারিবে যে, এই আইনের সকল বা বিশেষ বিধান, কোনো নির্দিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি বা সকল ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, সাধারণভাবে বা প্রজ্ঞাপনে নির্ধারিত কোনো মেয়াদকালে প্রযোজ্য হইবে না।
৬৯। এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে সম্পাদিত কার্য বা কার্য সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশঙ্কা থাকিলে তজ্জন্য সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিয়োগকৃত উহার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে বা ধারা ২০ উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত কোনো প্রকৃতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা দায়ের বা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।
৭০। (১) আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত আইনের অধীন-
(ক) কৃত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(খ) প্রণীত কোনো প্রবিধান, জারীকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, প্রণীত সকল স্কিম বা পরিকল্পনা বা কার্যক্রম এবং অনুমোদিত সকল হিসাব বিবরণী ও বার্ষিক প্রতিবেদন উক্তরূপ রহিতকরণের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে, এই আইনের কোনো বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারীকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বা এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোষিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত আইনের অধীন-
(ক) লাইসেন্স প্রাপ্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা উহার সংশ্লিষ্ট পরিচালক, কর্মকর্তা, আমানতকারী বা ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে বা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে।
(খ) আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা উহার সংশ্লিষ্ট পরিচালক, কর্মকর্তা, আমানতকারী বা ঋণগ্রহীতা বা পাওনাদারের পক্ষে, উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত কোনো চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এইরূপে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে;
(গ) সকল প্রকার ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে কর্তৃপক্ষের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে;
(ঘ) সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, ফি, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, তহবিল, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও সিকিউরিটিসহ সকল হিসাব এবং এতদসংশ্লিষ্ট সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং অন্যান্য সকল দলিলসহ এই আইন প্রবর্তনের, সঙ্গে সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানির নিকট হস্তান্তরিত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি উহার অধিকারী হইবে।
(৪) আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি বা চাকরির শর্তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে বা চুক্তিতে বা অন্য যে কোনোভাবে নিয়োজিত রহিয়াছিলেন, তাহারা এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত এবং, সেই একই শর্তে চাকরিতে বা চুক্তিতে বা অন্যভাবে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন।
৭১। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (authentic english text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।