প্রিন্ট ভিউ
Abandoned Buildings (Supplementary Provisions) Ordinance, 1985 রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতনভাবে প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সনের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সনের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারীকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হইয়াছে এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১-তে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল অংশীজন ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মতামত গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Abandoned Buildings (Supplementary Provisions) Ordinance 1985 (Ordinance No. LIV of 1985) রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতনভাবে প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল-
১। (১) এই আইন পরিত্যক্ত বাড়ি (সম্পূরক বিধানাবলি) আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) “কোর্ট অব সেটেলমেন্ট” অর্থ ধারা ৮ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন গঠিত কোর্ট অব সেটেলমেন্ট;
(২) “দেওয়ানি কার্যবিধি” অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908);
(৩) “পরিত্যক্ত সম্পত্তি” অর্থ Bangladesh Abandoned Property (Control, Management and Disposal) Order, 1972 (President’s Order No. 16 of 1972) এর section 2 এর clause (1) এ সংজ্ঞায়িত abandoned property;
(৪) “বাড়ি” অর্থ শহর এলাকার কোনো পরিত্যক্ত আবাসিক বাড়ি বা আবাসিক উদ্দেশ্যে বরাদ্দকৃত ভূমি, ভবন বা অন্য কোনো পরিত্যক্ত বাড়ি বা ভবন বা অবকাঠামো এবং পরিত্যক্ত বাড়ি সংলগ্ন ভূমি, আঙিনা, জলাধার, উপাসনালয় এবং ব্যক্তিগত কবরস্থান বা শ্মশানও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৫) “পরিত্যক্ত বাড়ি” অর্থ পরিত্যক্ত সম্পত্তির কোনো বাড়ি;
(৬) “রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ” অর্থ Bangladesh Abandoned Property (Control, Management and Disposal) Order, 1972 (President’s Order No. 16 of 1972);
(৭) “শহর” অর্থ সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার এখতিয়াভুক্ত এলাকাসহ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং সরকার কর্তৃক আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকার ক্ষেত্রে উক্ত কর্তৃপক্ষের মাস্টার প্ল্যানের আওতাভুক্ত এলাকা এবং হাউজিং এস্টেট হিসাবে ঘোষিত যেকোনো এলাকা।
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
৪। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত বাড়িসমূহকে পরিত্যক্ত বাড়ি বলিয়া ঘোষণাপূর্বক উহার তালিকা প্রকাশ করিতে পারিবে, যথা:—
(ক) যে সকল বাড়ি আদালতের মাধ্যমে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে ঘোষিত হইয়াছে;
(খ) যে ব্যক্তির বাড়ি রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ এর অধীন পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা হইয়াছে উক্ত ব্যক্তির শহর এলাকায় অবস্থিত অন্য কোনো বাড়ি; এবং
(গ) International Crimes (Tribunals) Act, 1973 (Act No. XIX of 1973) অথবা Bangladesh Collaborators (Special Tribunals) Order, 1972 (P.O. No. 8 of 1972) এর অধীন দণ্ডপ্রাপ্ত এইরূপ কোনো ব্যক্তি যাহার বাড়ি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইয়াছে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন তাহার মালিকানাধীন পরিত্যক্ত বাড়ি যাহা ওয়ারিশদের অনুকূলে বা অন্য কাহারো নিকট হস্তান্তরিত হইয়াছে এইরূপ পরিত্যক্ত বাড়ি।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত তালিকায় নিম্নবর্ণিত বাড়িসমূহ অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা:̶
(ক) যে সকল বাড়ি রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশের অধীন সরকারি গেজেটে তালিকা প্রকাশের পূর্বে সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক পরিত্যক্ত বা সরকারের নিকট ন্যস্তকৃত বলিয়া ঘোষিত সেই সকল বাড়ি;
(খ) যে সকল বাড়ি রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশের অধীন সরকার পরিত্যক্ত বাড়ি হিসাবে দখল গ্রহণ করিয়াছিল কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত উক্ত দখলকে অবৈধ বা অকার্যকর বলিয়া ঘোষণা করিয়াছে সেই সকল বাড়ি; অথবা
(গ) যে সকল বাড়িকে সর্বোচ্চ আদালত সরকার বা তাহার অধীন কোনো কর্তৃপক্ষকে কোনো ব্যক্তি বরাবর ফেরত, প্রত্যর্পণ বা হস্তান্তর করিতে নির্দেশ প্রদান করিয়াছে সেই সকল বাড়ি।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত বাড়িসমূহ পরিত্যক্ত বাড়ির চূড়ান্ত প্রমাণ বলিয়া গণ্য হইবে।
৫। ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) ও (খ) এ বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো বাড়ির উপর কোনো অধিকার বা স্বার্থ রহিয়াছে মর্মে দাবিদার ব্যক্তি, তালিকা প্রকাশিত হইবার তারিখ হইতে ১৮০(একশত আশি) দিনের মধ্যে উক্ত তালিকা হইতে উক্ত বাড়িটি বাদ দেওয়ার জন্য বা অন্য কোনো প্রতিকারের জন্য, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, এই যুক্তিতে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে আবেদন করিতে পারিবেন যে, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি নহে এবং রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশের অধীন উহা সরকারের নিকট অর্পিত হয় নাই অথবা উক্ত আদেশের বিধানাবলি দ্বারা বাড়িটির উপর তাহার স্বার্থ বা অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় নাই:
তবে শর্ত থাকে যে, যে সকল বাড়ির মামলায় আদালত কর্তৃক সরকারের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে সেই সকল বাড়ির ক্ষেত্রে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে স্বার্থ দাবি করিয়া মামলা করা যাইবে না।
1[৫ক। পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘ক’ বা ‘খ’ তালিকার যে সকল বাড়ি সরকার কর্তৃক বিক্রয়মূল্যে হস্তান্তর করা হইয়াছে বা হইবে সেই সকল বাড়ির মালিকানা বা স্বত্ব হস্তান্তরগ্রহীতার নিকট বৈধভাবে হস্তান্তরিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং হস্তান্তরগ্রহীতাই উহার বৈধ মালিক হিসাবে গণ্য হইবেন এবং তিনি বা তাহার ওয়ারিশগণ যথাযথভাবে তাহার বা তাহার ওয়ারিশগণের নামে নামজারি করিতে পারিবেন।]
৬। এই আইনের অধীন ঘোষিত পরিত্যক্ত বাড়ি সরকারের নিকট অর্পণ করিতে হইবে, এবং সমর্পণ ও দখল গ্রহণের ক্ষেত্রে, এই আইনের অধীন বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, যথাসম্ভব রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ ও উহার অধীন প্রণীত বা জারীকৃত বিধি ও আদেশ অনুসরণ করিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, নিম্নরূপ পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়ি সমর্পণ বা উহার গেজেট প্রকাশের জন্য নোটিশ প্রদানের প্রয়োজন হইবে না, যথা:̶
(ক) আদালতের মাধ্যমে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে ঘোষিত হইয়াছে এইরূপ বাড়ি সমর্পণ বা সরকার কর্তৃক দখল গ্রহণের ক্ষেত্রে;
(খ) যে সকল বাড়ি সরকারের দখলে রহিয়াছে এবং যাহার সরকারি মালিকানার বিষয়ে কোনো বিরোধ নাই; অথবা
(গ) যে ব্যক্তির বাড়ি রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ এর অধীন পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করা হইয়াছে উক্ত ব্যক্তির শহর এলাকায় অবস্থিত অন্য কোনো বাড়ি।
৭। (১) রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ বা এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত বা চলমান কোনো কার্যক্রম, সিদ্ধান্ত বা জারীকৃত কোনো নোটিশ কিংবা প্রকাশিত কোনো তালিকার বিরুদ্ধে অথবা উহাকে অবৈধ দাবি করিয়া, এই আইনের বিধান ব্যতিরেকে, কোনো আদালতে কোনো মামলা বা কোনো আইনি কার্যধারা দায়ের বা পরিচালনা করা যাইবে না।
(২) রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ১৬ নং আদেশ অনুসারে কোনো বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তি নহে এবং উহা সরকারের উপর ন্যস্ত হয় নাই বা উক্ত আদেশের বিধানাবলি দ্বারা কোনো বাড়িতে কোনো ব্যক্তির অধিকার বা স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় নাই মর্মে ঘোষণা প্রদানের জন্য এই আইনের বিধান ব্যতিরেকে, কোনো আদালতে কোনো স্বত্ত্ব প্রচারে মামলা (Title Suit) বা কোনো চুক্তি প্রবলের (specific performance of contract) মামলা বা কোনো আইনি কার্যধারা দায়ের বা পরিচালনা করা যাইবে না।
(৩) এই আইনের অধীন কোর্ট অব সেটেলমেন্ট স্হাপন হইবার সঙ্গে সঙ্গে পরিত্যক্ত বাড়ি সম্পর্কিত কোনো মোকদ্দমা কোর্ট অব সেটেলমেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো দেওয়ানি আদালতে বিচারাধীন থাকিলে উহা তাৎক্ষণিকভাবে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে হস্তান্তরিত হইবে এবং তজ্জন্য কোনো স্বতন্ত্র আদেশ জারির প্রয়োজন হইবে না।
(৪) পরিত্যক্ত বাড়ির বিষয়ে কোর্ট অব সেটেলমেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো আদালতের প্রদত্ত রায়, আদেশ বা ডিক্রি অকার্যকর ও ফলবিহীন বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে পরিত্যক্ত বাড়ি হিসাবে দখল গ্রহণ করা হইয়াছে এইরূপ বাড়ি আদালত কর্তৃক ফেরত প্রদান বা হস্তান্তরের আদেশ হইলে দখলকালীন কোনো ভাড়া অথবা ক্ষতিপূরণের মামলা চলিবে না।
৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত এলাকা বা এলাকাসমূহের জন্য এক বা একাধিক কোর্ট অব সেটেলমেন্ট স্থাপন করিতে পারিবে।
(২) একজন চেয়ারম্যান এবং দুইজন সদস্য সমন্বয়ে কোর্ট অব সেটেলমেন্ট গঠিত হইবে।
(৩) কোর্ট অব সেটেলমেন্টের চেয়ারম্যান হইবেন এইরূপ একজন ব্যক্তি যিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বা অতিরিক্ত বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত রহিয়াছেন বা রহিয়াছিলেন এবং দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন হইবেন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা যিনি অতিরিক্ত জেলা জজ পদে অধিষ্ঠিত রহিয়াছেন বা রহিয়াছিলেন এবং অপর সদস্য হইবেন এইরূপ কর্মকর্তা যিনি প্রজাতন্ত্রের অন্যূন উপসচিব পদে অধিষ্ঠিত রহিয়াছেন বা রহিয়াছিলেন।
(৪) সরকার, কোর্ট অব সেটেলমেন্টের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণকে, সুপ্রীম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে, নিযুক্ত করিবেন।
৯। (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কোনো কিছু না থাকিলে, দেওয়ানি কার্যবিধির বিধানাবলি কোর্ট অব সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(২) কোনো আবেদনের শুনানির উদ্দেশ্যে, কোনো দেওয়ানি আদালত দেওয়ানি কার্যবিধির অধীন বিচার কার্য পরিচালনায় যেরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করিয়া থাকে, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোর্ট অব সেটেলমেন্টের সেইরূপ সকল ক্ষমতা থাকিবে, যথা:̶
(ক) কোনো ব্যক্তিকে সমন প্রদান এবং তাহাকে উপস্থিত হইতে বাধ্য করা এবং শপথ সহকারে তাহার পরীক্ষা গ্রহণ;
(খ) কোনো দলিল অনুসন্ধান ও দাখিল;
(গ) সাক্ষ্য বা হলফনামা গ্রহণ;
(ঘ) কোনো অফিস হইতে কোনো সরকারি রেকর্ড বা কপি তলব;
(ঙ) সাক্ষ্য বা দলিলাদি পরীক্ষার জন্য কমিশন নিয়োগ।
(৩) কোর্ট অব সেটেলমেন্টের যেকোনো কার্যক্রম Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 193 এর অর্থের আওতায় বিচারিক কার্যক্রম বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) সরকার যেরূপ স্থান নির্ধারণ করিবে সেইরূপ স্থানে কোর্ট অব সেটেলমেন্টের অধিবেশন বসিবে।
(৫) কোর্ট অব সেটেলমেন্ট যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবে সেইরূপ তদন্ত কার্য পরিচালনার পর এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে যুক্তিসংগত শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া তাহাদের দাখিলকৃত মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণ, যদি থাকে, তাহা বিবেচনাপূর্বক আবেদনকারীর আবেদনের উপর যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে সেইরূপ সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
(৬) কোর্ট অব সেটেলমেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি একই আদালতে পুনর্বিবেচনার (review) আবেদন করিতে পারিবে এবং পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৭) কোর্ট অব সেটেলমেন্টের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উপর বাধ্যকর হইবে এবং তৎসম্পর্কে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
(৮) কোর্ট অব সেটেলমেন্টর প্রদত্ত কোনো আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অন্য কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল দায়ের করা যাইবে না।
১০। (১) পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং নিষ্পত্তির জন্য নিম্নরূপ বোর্ড থাকিবে, যথা:̶
(ক) ঢাকা বিভাগীয় শহরের জন্য:
(১) বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা বিভাগ, ঢাকা সভাপতি;
(২) 2[তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ, গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা, সদস্য];
(৩) জেলা প্রশাসক, ঢাকা সদস্য;
(৪) উপসচিব (মনিটরিং), গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সদস্য;
(৫) প্রতিনিধি, কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (উপকমিশনার পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৬) প্রতিনিধি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৭) প্রতিনিধি, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৮) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন সদস্য;
(৯) কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ঢাকা সদস্য;
(১০) 3[অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন), ঢাকা বিভাগ, ঢাকা, সদস্য-সচিব];
(খ) অন্যান্য বিভাগীয় শহরের জন্য:
(১) সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার সভাপতি;
(২) সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক সদস্য;
(৩) প্রতিনিধি, কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ (উপকমিশনার পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৪) প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৫) উপপরিচালক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক কার্যালয় সদস্য;
(৬) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশন সদস্য;
(৭) মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার সদস্য;
(৮) 4[তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত সার্কেল, সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সদস্য];
5[(৯) অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব), সদস্য-সচিব।]
(গ) জেলার জন্য:
(১) সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক সভাপতি;
(২) সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার সদস্য;
(৩) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সদস্য;
(৪) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ সদস্য;
(৫) প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, যদি থাকে, (পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নহে) সদস্য;
(৬) উপপরিচালক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক কার্যালয়, যদি থাকে সদস্য;
(৭) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা সদস্য;
(৮) জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার সদস্য;
(৯) নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগ সদস্য-সচিব।
(২) পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং নিষ্পত্তির জন্য বোর্ডের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:̶
(ক) পরিত্যক্ত বাড়ির তথ্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছক অনুযায়ী সংরক্ষণ;
(খ) পরিত্যক্ত বাড়ি স্থায়ী, অস্থায়ী বরাদ্দ বা ভাড়া প্রদান ও ভাড়া আদায়;
(গ) পরিত্যক্ত বাড়ি স্থায়ী, অস্থায়ী বরাদ্দ বা ভাড়া প্রদানের হার নির্ধারণের সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ;
(ঘ) পরিত্যক্ত বাড়ি বিক্রয়ের সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ;
(ঙ) পরিত্যক্ত বাড়ি বিক্রয় মূল্যের হার নির্ধারণের সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ;
(চ) পরিত্যক্ত বাড়ি স্থায়ী বরাদ্দ বা বিক্রয়ের অনুমোদন প্রাপ্তির পর রেজিস্ট্রিকরণ;
(ছ) পরিত্যক্ত বাড়ি অবমুক্তকরণের সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ;
(জ) পরিত্যক্ত বাড়ি বিক্রয় তালিকায় স্থানান্তরের সুপারিশ সরকারের নিকট প্রেরণ;
(ঝ) পরিত্যক্ত বাড়ির নিম্ন আদালতের মামলা পরিচালনা এবং রায় সরকারের নিকট অবহিতকরণ;
(ঞ) ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এ উল্লিখিত পরিত্যক্ত বাড়ির অবৈধ দখলদার উচ্ছেদকরণ এবং সরকারকে অবহিতকরণ;
(ট) ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত পরিত্যক্ত বাড়ির দখল গ্রহণ এবং সরকারকে অবহিতকরণ;
(ঠ) পরিত্যক্ত বাড়ির রেকর্ড সংশোধন;
(ড) পরিত্যক্ত বাড়ির প্রকৃত ডিএন হোল্ডার যাচাই, সংরক্ষণ এবং সরকারকে অবহিতকরণ;
(ঢ) বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তাব সরকারের নিকট প্রেরণ; এবং
(ণ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য নির্দেশনা বা দায়িত্ব পালন।
(৩) পরিত্যক্ত বাড়ি বিক্রয় বা স্থায়ী বরাদ্দ বা হস্তান্তরের নিমিত্ত জমি ও অবকাঠামোর মূল্য নির্ধারণ করিবার জন্য নিম্নরূপ মূল্যায়ন কমিটি থাকিবে, যথা:̶
(ক) বিভাগীয় শহরের জন্য:
(১) অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (এপিএমবি/রাজস্ব) আহবায়ক;
(২) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সদস্য;
(৩) প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, যদি থাকে, সদস্য;
(৪) উপপরিচালক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক কার্যালয় (যদি থাকে) সদস্য;
(৫) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশন সদস্য;
(৬) জেলা রেজিস্ট্রার সদস্য;
(৭) নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ সদস্য-সচিব।
(খ) জেলা শহরের জন্য:
(১) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহবায়ক;
(২) প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, যদি থাকে, সদস্য;
(৩) উপপরিচালক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক কার্যালয়, যদি থাকে, সদস্য;
(৪) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা সদস্য;
(৫) জেলা রেজিস্ট্রারের প্রতিনিধি সদস্য;
(৬) নির্বাহী প্রকৌশলী, গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ সদস্য-সচিব।
(৪) সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (২) ও (৩) এর অধীন গঠিত বোর্ড বা মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
১১। এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে যেকোনো সময় কোনো আদালত কর্তৃক একতরফা সূত্রে কোনো আদেশ বা ডিক্রির কারণে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, অন্য কোনো আইনে বা উহার অধীনে তামাদিকাল অতিক্রম সম্পর্কে যাহা কিছুই বলা থাকুক না কেন, এই আইন প্রবর্তনের তারিখ হইতে ১ (এক) বৎসরের মধ্যে উক্ত আদেশ বাতিলের জন্য যে আদালত কর্তৃক আদেশ বা ডিক্রি প্রদত্ত হইয়াছিল, সেই আদালতে আবেদন করিতে পারিবেন এবং উক্ত আবেদনের ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির Order IX এর rule 13, 14 ও 15 প্রযোজ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোনো কিছুই নিম্নলিখিত ক্ষেত্রসমূহে প্রযোজ্য হইবে না, যথা:̶
(ক) আদালতের আদেশ বা ডিক্রি যথাযথভাবে কার্যকর হইয়াছে; বা
(খ) এই আইন প্রবর্তনের পূর্বের কোনো আদেশ বা ডিক্রি বাতিলের জন্য কোনো আপিল বা অন্য কোনো আইনি কার্যক্রম আরম্ভ হইয়া থাকিলে।
১২। এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত, কোনো কার্যের জন্য কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে তিনি পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বোর্ড, কোর্ট অব সেটেলমেন্ট বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো প্রকার আইনগত কার্যধারা রুজু করিতে পারিবেন না।
১৩। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১৪। (১) এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে Abandoned Buildings (Supplementary Provisions) Ordinance, 1985 (Ordinance No. LIV of 1985), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত Ordinance এর-
(ক) অধীন কৃত কোনো কার্য বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা প্রণীত কোনো বিধি বা জারীকৃত কোনো আদেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপন বা এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে এবং এই আইনের অধীন কৃত, গৃহীত, প্রণীত বা জারীকৃত বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
(খ) দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে এইরূপভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত বা গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে।