প্রিন্ট ভিউ
ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫ রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করিয়া উহা পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জননিরাপত্তা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তাকরণসহ এতদ্সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সম্পাদনে আনসার ব্যাটালিয়নকে আরও দক্ষ করিবার উদ্দেশ্যে ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ৪ নং আইন) রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করিয়া উহা পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
১। (১) এই আইন আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) “অধিনায়ক (Commanding Officer)” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য যিনি একটি ব্যাটালিয়ন কমান্ড করেন;
(খ) “আনসার ব্যাটালিয়ন” অর্থ ধারা ৪ এর উপধারা (১) এ উল্লিখিত আনসার ব্যাটালিয়ন;
(গ) “উপ-অধিনায়ক” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য যিনি অধিনায়কের সহকারী হিসাবে কর্ম সম্পাদন করেন এবং উক্ত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে তাহার দায়িত্ব প্রতিপালন করেন;
(ঘ) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ সরকার, মহাপরিচালক এবং এই আইনের অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তি;
(ঙ) “কোম্পানি অধিনায়ক” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য যিনি কোনো কোম্পানি কমান্ড করেন অথবা উহার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন;
(চ) “কোম্পানি” অর্থ কতিপয় সশস্ত্র প্লাটুন সমন্বয়ে গঠিত কোনো কোম্পানি;
(ছ) “কোম্পানি উপ-অধিনায়ক” অর্থ এইরূপ কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য যিনি কোনো কোম্পানি অধিনায়কের সহকারী হিসাবে কর্ম সম্পাদন করেন বা উক্ত উপ-অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে তাহার দায়িত্ব প্রতিপালন করেন;
(জ) “তপশিল” অর্থ এই আইনের কোনো তপশিল;
(ঝ) “ধারা” অর্থ এই আইনের কোনো ধারা;
(ঞ) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
(ট) “প্লাটুন” অর্থ কতিপয় সশস্ত্র সেকশন সমন্বয়ে গঠিত কোনো প্লাটুন;
(ঠ) “বিদ্রোহ” অর্থ আনসার ব্যাটালিয়নের ২ (দুই) বা ততোধিক সদস্য কর্তৃক সম্মিলিতভাবে শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কর্তৃপক্ষের আইনানুগ আদেশ অমান্য করা বা কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ, প্রতিহত বা উৎখাত করা বা উক্তরূপ কার্যকরণের কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণ করা;
(ড) “ব্যাটালিয়ন সদস্য” অর্থ আনসার ব্যাটালিয়নে কর্মরত সকল পোশাকধারী ও পোশাক বহির্ভূত ব্যাটালিয়ন সদস্য;
(ঢ) “ব্যাটালিয়ন” অর্থ কতিপয় সশস্ত্র কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত ব্যাটালিয়ন;
(ণ) “মহাপরিচালক” অর্থ আনসার ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক;
(ত) “শৃঙ্খলা বাহিনী” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে যেই অর্থে শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাখ্যা করা হইয়াছে সেই অর্থে শৃঙ্খলা বাহিনী; এবং
(থ) “সেকশন” অর্থ ব্যাটালিয়নের সশস্ত্র ক্ষুদ্র কোনো দলের সমন্বয়ে গঠিত সেকশন।
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
৪। (১) ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ৪ নং আইন) এর অধীন গঠিত ব্যাটালিয়ন আনসার, আনসার ব্যাটালিয়ন নামে অভিহিত হইবে এবং উহা এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন গঠিত হইয়াছে।
(২) আনসার ব্যাটালিয়ন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের অধীন প্রদত্ত শৃঙ্খলা বাহিনী এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী একটি শৃঙ্খলা বাহিনী হইবে।
(৩) আনসার ব্যাটালিয়নের নির্ধারিত প্রতীক (লোগো) এবং পতাকা থাকিবে।
৫। ঢাকায় আনসার ব্যাটালিয়নের একটি সদর দপ্তর থাকিবে এবং বিভাগীয় শহরে বা অন্য কোনো জেলায় রেঞ্জ সদর দপ্তর থাকিবে এবং প্রয়োজনে যে কোনো স্থানে আনসার ব্যাটালিয়নের দপ্তর স্থাপন করা যাইবে।
৬। (১) আনসার ব্যাটালিয়ন সরকারের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে থাকিবে।
(২) মহাপরিচালক আনসার ব্যাটালিয়নের সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এই আইন, বিধি, প্রবিধান এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারিকৃত নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করিতে পারিবেন।
৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) জননিরাপত্তামূলক কোনো কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব সম্পাদনে সহায়তা;
(খ) দুর্যোগ মোকাবিলায় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত জনকল্যাণমূলক কার্যে অংশগ্রহণ;
(গ) সরকারের নির্দেশে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানে সহায়তা;
(ঘ) সরকারের নির্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা প্রদানে সহায়তা;
(ঙ) উপরিউক্ত বিধানের সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিম্নবর্ণিত বাহিনীসমূহকে সহায়তা প্রদান, যথা:-
(অ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী;
(আ) বাংলাদেশ নৌবাহিনী;
(ই) বাংলাদেশ বিমান-বাহিনী;
(ঈ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ; ও
(উ) বাংলাদেশ পুলিশ;
(চ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত অন্য যে কোনো দায়িত্ব সম্পাদন।
৮। ধারা ৭ এ উল্লিখিত কার্যাবলি সম্পাদনকালে, কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য তাহার সম্মুখে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
৯। এই আইন, বিধি, প্রবিধান অথবা সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশনা সাপেক্ষে, ব্যাটালিয়ন সদস্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখিতে, বহন ও ব্যবহার করিতে পারিবে।
১০। সকল ব্যাটালিয়ন সদস্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আইনানুগ আদেশ পালন করিতে বাধ্য থাকিবেন।
১১। (১) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক পদাধিকারবলে আনসার ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক হইবেন।
(২) মহাপরিচালক, আনসার ব্যাটালিয়নকে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সময় সময়, নির্ধারিত সংখ্যক ব্যাটালিয়ন সদস্য সমন্বয়ে ব্যাটালিয়ন, কোম্পানি, প্লাটুন ও সেকশনে শ্রেণিবিন্যাস করিতে পারিবেন।
১২। মহাপরিচালক প্রয়োজনে, এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত যে কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব, লিখিত আদেশ দ্বারা, তাহার অধিনস্থ যে কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে অর্পণ করিতে পারিবেন।
১৩। আনসার ব্যাটালিয়ন, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে তপশিল-১ এ উল্লিখিত পদসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যাটালিয়ন সদস্য নিয়োগ করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, ব্যাটালিয়ন সদস্য নিয়োগের পদ্ধতি ও চাকুরির শর্তাবলি বিধি বা, ক্ষেত্রমত, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে:
আরও শর্ত থাকে যে, প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, মহাপরিচালক সন্তুষ্ট হইলে কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের চাকুরি তাহার উক্ত চাকুরিতে যোগদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর (যাহা শিক্ষানবিশিকাল বলিয়া বিবেচিত হইবে) অতিক্রান্ত হইলে স্থায়ী করিতে পারিবে।
১৪। আনসার ব্যাটালিয়নের কোনো সদস্য-
(ক) কোনো সংগঠনের সদস্য হইতে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উহার সহিত কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা রাখিতে পারিবেন না:
তবে শর্ত থাকে যে, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি বা আনসার ব্যাটালিয়নের স্বার্থে পেশাজীবী সংঘ বা সংগঠনের সদস্য হইতে পারিবেন;
(খ) যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতীত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রে কোনো প্রকার তথ্য অথবা অন্য প্রকার দলিল প্রকাশ বা প্রকাশে সহযোগিতা করিতে পারিবেন না বা প্রকাশ করিবার কারণ হইবেন না; বা
(গ) সরকার বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মহাপরিচালকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনো ব্যবসার সহিত জড়িত হইতে পারিবেন না।
১৫। (১) সরকার, আনসার ব্যাটালিয়নের শৃঙ্খলা ও আচরণ সম্পর্কিত বিষয়ে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত কোনো বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, উক্ত বিষয়ে সরকারি কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে।
(২) মহাপরিচালক এই আইন, বিধি, প্রবিধান ও সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে, যদি থাকে, ব্যাটালিয়ন সদস্যের জন্য শৃঙ্খলা ও আচরণ সম্পর্কিত নির্দেশাবলি জারি করিতে পারিবেন।
১৬। (১) ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্তৃক নিম্নবর্ণিত কোনো আচরণ সংঘটিত হইলে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা যাইবে, যথা:-
(ক) শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণ বা অসদাচরণ করা;
(খ) পদমর্যাদার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ কোনো আচরণ করা;
(গ) কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা;
(ঘ) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্যারেডে অনুপস্থিত থাকা;
(ঙ) অর্পিত দায়িত্ব পালনে অনিহা প্রদর্শন বা অবহেলা বা ছলনা করা;
(চ) উৎকোচ গ্রহণ বা অন্য কোনো সদস্যের উৎকোচ গ্রহণের বিষয়ে জ্ঞাত হওয়া সত্ত্বেও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করা;
(ছ) সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করা বা ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি সম্পত্তির ব্যবহার বা সরকারি দলিল জাল বা গোপন করা;
(জ)সরকারি বা ব্যাটালিয়ন সদস্যের সম্পত্তি চুরি, অসাধুভাবে আত্মসাৎ অথবা অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করা;
(ঝ) চোরাই সম্পত্তি জ্ঞাতসারে বা উহা চোরাই সম্পত্তি বলিয়া বিশ্বাস করিবার যথেষ্ট কারণ থাকা সত্ত্বেও অসাধু বা প্রতারণামূলকভাবে উহা গ্রহণ করা বা নিজের তত্ত্বাবধানে রাখা;
(ঞ)প্রতারণার উদ্দেশ্যে অথবা কোনো ব্যক্তিকে অবৈধভাবে লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত করিবার উদ্দেশ্যে কোনো কার্য সম্পাদন বা বিচ্যুতি সংঘটন করা;
(ট) জরুরি বা আর্থিক বিষয়ে দালিলিক কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন অথবা প্রতারণামূলক তথ্য প্রদান অথবা জালিয়াতিকরণ অথবা কোনো বিচ্যুতি সংঘটন করা;
(ঠ) চাকুরিতে নিয়োগের জন্য মিথ্যা তথ্য প্রদান করা;
(ড) চাকুরির শর্তানুযায়ী গৃহীত শপথ ভঙ্গ করা;
(ঢ) দাপ্তরিক কোনো বিষয়ে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও তৎসম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করা;
(ণ) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে স্বেচ্ছায় আঘাতকরণ (voluntarily causing hurt) অথবা তাহাকে আক্রমণ (assult), বল প্রয়োগ, অপরাধজনক বল প্রয়োগ (criminal force) বা অশালীন আচরণ করা; বা
(ত) ধারা ১৪ এ উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা এবং ধারা ১৫ এ উল্লিখিত শৃঙ্খলা ও আচরণ সম্পর্কিত কোনো বিষয় লঙ্ঘন করা।
(২) এই আইনের অধীন রুজুকৃত বিভাগীয় কার্যধারা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে।
১৭। (১) বিভাগীয় কার্যধারায় দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে নিম্নবর্ণিত যে কোনো গুরুদণ্ড প্রদান করা যাইবে, যথা:-
(ক) চাকুরি হইতে বরখাস্ত;
(খ) চাকুরি হইতে অপসারণ;
(গ) বাধ্যতামূলক অবসর; বা
(ঘ) নিম্ন পদে বা গ্রেডে অবনমিতকরণ।
(২) বিভাগীয় কার্যধারায় দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে নিম্নলিখিত এক বা একাধিক লঘুদণ্ড প্রদান করা যাইবে, যথা:-
(ক) বেতন স্কেলের এক ধাপ নিম্নে অবনমিতকরণ;
(খ) নির্ধারিত সময়ের জন্য বেতন বৃদ্ধি বা পদোন্নতি স্থগিতকরণ;
(গ) অনধিক ২১ (একুশ) দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বাজেয়াপ্তকরণ;
(ঘ) অনধিক ১০ (দশ) দিনের জন্য কোয়ার্টার গার্ডে আটক;
(ঙ) ড্রিলসহ বা ড্রিল ব্যতীত অনধিক ১৪ (চৌদ্দ) দিনের জন্য আনসার ব্যাটালিয়ন ব্যারাকে অন্তরীণ;
(চ) অনধিক ৩ (তিন) দিনের জন্য অতিরিক্ত শ্রম; এবং
(ছ) তিরস্কার।
(৩) মহাপরিচালক অথবা তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়ন সদস্য (অধিনায়কের নিম্নে নহে), তাহার অধীনস্থ যে কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে উপধারা (১) বা (২) এ উল্লিখিত যে কোনো এক বা একাধিক দণ্ড প্রদান করিতে পারিবেন।
(৪) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করিয়া কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে এই ধারার অধীন কোনো দণ্ড প্রদান করা যাইবে না।
১৮। ধারা ১৭ এর অধীন প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে-
(ক) মহাপরিচালক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়ন সদস্যের ক্ষেত্রে মহাপরিচালকের নিকট; এবং
(খ) মহাপরিচালকের ক্ষেত্রে সরকারের নিকট;
আপিল করা যাইবে এবং উক্ত আপিলে প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
১৯। (১) ধারা ২০ এ বর্ণিত অপরাধের বিচার করিবার জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাইবে এবং ধারা ২১ এ বর্ণিত অপরাধের বিচার করিবার জন্য বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করা যাইবে।
(২) মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন উপ-মহাপরিচালক ও ২ (দুই) জন পরিচালকের সমন্বয়ে সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করিতে পারিবেন।
(৩) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-মহাপরিচালক উপধারা (২) এ উল্লিখিত সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের সভাপতি হইবেন।
(৪) মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নিম্নবর্ণিত ৩ (তিন) জন সদস্য সমন্বয়ে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত গঠন করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন অতিরিক্ত মহাপরিচালক;
(খ) ১ (এক) জন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ; এবং
(গ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন উপ-মহাপরিচালক।
(৫) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক উপধারা (৪) এ উল্লিখিত বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের সভাপতি হইবেন।
(৬) মহাপরিচালক, সরকারের পক্ষে মামলা দায়ের করিবার জন্য বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন পরিচালককে আইন কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োজিত করিতে পারিবেন।
(৭) মহাপরিচালক, অভিযুক্ত ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে, তাহার পক্ষে আইনানুগ প্রতিনিধি হিসাবে মামলা শুনানির জন্য বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্যূন নবম গ্রেডের কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবেন।
২০। (১) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্তৃক নিম্নবর্ণিত কোনো কর্ম হইবে একটি অপরাধ, যাহা সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে, যথা:-
(ক) বাহিনীর অস্ত্র, গোলাবারুদ, পোশাক, যন্ত্রাংশ বা যানবাহনের অংশবিশেষ পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করা বা অবহেলার কারণে হারাইয়া ফেলা বা প্রতারণা বা জালিয়াতির আশ্রয় লইয়া তছরুপ করা;
(খ) কর্তব্যরত অবস্থায় মাতাল হওয়া বা মাতলামি করা;
(গ) কোনো কর্তব্যরত প্রহরীকে আঘাত করা বা তাহার উপর বল প্রয়োগ করা;
(ঘ) কোয়ার্টার গার্ডের কমান্ডে থাকা অবস্থায় লিখিত আদেশ সত্ত্বেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অন্তরীণ না রাখা বা অন্তরীণ রাখিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা বা অন্তরীণ রাখা ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় ছাড়িয়া দেওয়া;
(ঙ) কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ডিউটি পোস্ট বা টহল পরিত্যাগ করা;
(চ) কোনো দায়িত্বপূর্ণ এলাকা, ডিউটি পোস্ট বা টহল দলের কমান্ডে থাকিয়া উক্ত দায়িত্বাধীন স্থলে মোতায়েনকৃত কোনো ব্যক্তিকে জুয়া খেলার অথবা শৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনো কাজ করিবার অনুমতি প্রদান করা;
(ছ) এই আইনের অধীন অন্তরীণ থাকাবস্থায়, আটকাদেশ হইতে অব্যাহতি পাইবার পূর্বে কৌশলে উক্ত স্থান ত্যাগ করা;
(জ) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দাপ্তরিক আদেশ অমান্য করা;
(ঝ) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে শারীরিকভাবে আঘাত করিয়া জখম করা;
(ঞ) কোনো ডিউটি পোস্ট বা নির্ধারিত এলাকার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা অবহিত হওয়া সত্ত্বেও আহত ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করা;
(ট) অবৈধভাবে কোনো ব্যক্তি, পরিবহন, যানবাহন, ইত্যাদি হইতে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা;
(ঠ) পরিকল্পিতভাবে বা অবহেলার কারণে তাহার দায়িত্বে থাকা সরকারি ঘোড়া বা সরকারি অন্য কোনো প্রাণীর প্রাণহানি করা বা জখম করা বা হারাইয়া ফেলা;
(ড) জ্যেষ্ঠ ব্যাটালিয়ন সদস্যের আইনানুগ আদেশ অমান্য করা;
(ঢ) পরিকল্পিতভাবে বা অবহেলার কারণে অপরাধীকে আটক করিতে অথবা অবহেলাজনিত কারণে তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়া।
(২) উপধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে নিম্নরূপ দণ্ড আরোপ করা যাইবে, যথা:-
(ক) উপধারা (১) এর দফা (ক) এ বর্ণিত অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ৩ (তিন) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড ও আর্থিক ক্ষতির ক্ষেত্রে সমপরিমাণ অর্থদণ্ড;
(খ) অন্যান্য দফায় বর্ণিত অপরাধের জন্য অনধিক ৯০ (নব্বই) দিন সশ্রম কারাদণ্ড।
২১। (১) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্তৃক নিম্নবর্ণিত কোনো কর্ম হইবে একটি অপরাধ, যাহা বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে, যথা:-
(ক) বিদ্রোহ সংঘটন, উহাতে প্ররোচনা প্রদান, বিদ্রোহের কারণ সৃষ্টি, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া বা উহাতে যোগদান করা;
(খ) বিদ্রোহ স্থলে উপস্থিত থাকিয়া উহা দমনের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা গ্রহণ না করা;
(গ) বিদ্রোহ সম্পর্কে জ্ঞাত থাকিয়া বা উক্তরূপ কোনো বিদ্রোহের অস্তিত্ব রহিয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিয়া ষড়যন্ত্রের কথা যুক্তিযুক্তভাবে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও তাহার অধিনায়ক বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত না করা;
(ঘ) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে সরকারের প্রতি তাহার কর্তব্য বা আনুগত্য হইতে বিরত রাখা;
(ঙ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিদ্রোহের সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যাটালিয়ন সদস্য বা আনসার ব্যাটালিয়ন বহির্ভূত কোনো ব্যক্তিকে অস্ত্র, গোলাবারুদ বা দ্রব্য-সামগ্রী দ্বারা অথবা অন্য কোনো উপায়ে সাহায্য করা;
(চ) বিদ্রোহের সহিত সম্পৃক্ত অন্য যে কোনো অপরাধ সংঘটন করা;
(ছ) উপরি-উক্ত অপরাধসমূহ সংঘটনে সহায়তা প্রদান করা।
(২) উপধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধসমূহের জন্য নিম্নবর্ণিত যে কোনো দণ্ড আরোপ করা যাইবে, যথা:-
(ক) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড; বা
(খ) অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড।
(৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(৪) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য ৯০ (নব্বই) দিনের অধিক কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকুরি হইতে বরখাস্ত হইবেন।
২২। অধিনায়ক, কোম্পানি অধিনায়ক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়ন সদস্যের যদি কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্তৃক ধারা ২১ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো অপরাধ সংঘটনের সম্ভাবনা রহিয়াছে মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, তাহা হইলে তিনি উক্ত সদস্যকে অবিলম্বে আটক করিতে পারিবেন।
২৩। (১) সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের যে কোনো দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতে আপিল দায়ের করা যাইবে|
(২) বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের যে কোনো দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতে আপিল দায়ের করা যাইবে|
২৪। (১) মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, নিম্নবর্ণিত ৩ (তিন) জন সদস্য সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালত গঠন করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন অতিরিক্ত মহাপরিচালক;
(খ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন উপ-মহাপরিচালক;
(গ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন পরিচালক|
(২) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতের সভাপতি হইবেন|
(৩) সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সময় সময়, নিম্নবর্ণিত ৫ (পাঁচ) জন সদস্য সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালত গঠন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক;
(খ) ১ (এক) জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ;
(গ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন অতিরিক্ত মহাপরিচালক;
(ঘ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন উপ-মহাপরিচালক;
(ঙ) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১ (এক) জন পরিচালক|
(৪) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতের সভাপতি হইবেন|
(৫) সরকার, অভিযুক্ত ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে, আপিল শুনানির জন্য তাহার পক্ষে আইনানুগ প্রতিনিধি হিসাবে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যকে নিয়োজিত করিতে পারিবেন|
(৬) সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত বা বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের রায় প্রদানকারী কোনো সদস্য আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতের সদস্য হইতে পারিবেন না|
২৫। (১) এই আইনের বিধান অনুসারে গঠিত আদালত Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No.V of 1898) এর অধীন গঠিত আদালত বলিয়া গণ্য হইবে|
(২) উপধারা (১) এর অধীন বর্ণিত আদালতের বিচার পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V 1898) এর Chapter XXII অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতি, যতদূর সম্ভব, অনুসরণ করিতে হইবে|
২৬। আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের কোনো কার্যধারা, রায়, আদেশ, আরোপিত দণ্ড বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অন্য কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না:
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের অধীন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কর্তৃক উক্তরূপ দণ্ডের ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল আদালতের রায় বা আদেশ বা সিদ্ধান্ত ঘোষণার ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন দাখিল করা যাইবে|
২৭। (১) দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের দণ্ড কার্যকরকরণের উদ্দেশ্যে উক্ত দণ্ডপ্রাপ্ত সদস্যকে দণ্ড প্রদানকারী আদালতের সভাপতি কর্তৃক তপশিল-২ অনুযায়ী পরোয়ানা স্বাক্ষরপূর্বক কারাগারে প্রেরণ করিতে হইবে|
(২) কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য এই আইনের অধীন দণ্ডপ্রাপ্ত হইলে দণ্ড প্রদানের তারিখ হইতে তিনি আনসার ব্যাটালিয়ন হইতে অপসারিত হইবেন|
(৩) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কৃত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত শৃ্ঙ্খলা বাহিনী এর অর্থে অন্য কোনো শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসাবে প্রেষণে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তিনি তাহার নিজস্ব বাহিনীর আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হইবেন|
২৮। এই আইনে বর্ণিত অপরাধ ব্যতীত ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্তৃক অন্য কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে উহার ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে|
২৯। কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্য কর্মস্থল হইতে পলায়ন করিলে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক তাহাকে গ্রেপ্তার করিয়া আনসার ব্যাটালিয়নে সোপর্দ করিবার জন্য উক্ত পলাতক সদস্যের স্থায়ী অথবা বর্তমান বাসস্থান যেই থানায় অবস্থিত সেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অনুরোধ করিবেন এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত অনুরোধকে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জারিকৃত পরোয়ানা গণ্য করিয়া পলাতক ব্যাটালিয়ন সদস্যকে আনসার ব্যাটালিয়নে সোপর্দ করিবেন|
৩০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে|
৩১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবেন|
৩২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সময় সময়, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে|
৩৩। (১) ব্যাটালিয়ন আনসার আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ৪ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল|
(২) উক্ত আইনের অধীন ব্যাটালিয়ন আনসারের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধা, তহবিল, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, দায়, স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি উক্ত সম্পত্তিতে যাবতীয় অধিকার ও স্বার্থ, সকল হিসাব বহি, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং এতদ্সংক্রান্ত সকল দলিল এই আইনের অধীন গঠিত আনসার ব্যাটালিয়ন এর নিকট তৎক্ষণাৎ স্থানান্তরিত এবং ন্যস্ত বা অর্পিত হইবে|
(৩) উক্ত আইনের অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান, কোনো চুক্তি, আইনগত দলিল বা চাকুরির শর্তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাটালিয়ন আনসারের সকল কর্মচারী এই আইনের অধীন ব্যাটালিয়ন সদস্য হইবেন এবং এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে তাহারা যে শর্তাধীনে চাকুরিতে নিয়োজিত রহিয়াছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে আনসার ব্যাটালিয়নের চাকুরিতে নিয়োজিত থাকিবেন|
(৪) উক্ত আইনের অধীন ব্যাটালিয়ন আনসারের সকল দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে, বা উহার সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি যথাক্রমে এই আইনের অধীন আনসার ব্যাটালিয়নের দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা, উহার পক্ষে বা সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে|
(৫) উক্ত আইনের অধীন প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান বা আদেশ যাহা উক্ত আইন রহিত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত কার্যকর ছিল উহা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান বা আদেশ দ্বারা রহিত বা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, যতদূর পর্যন্ত এই আইনের বিধানাবলির পরিপন্থি না হয় ততদূর পর্যন্ত, কার্যকর থাকিবে|
(৬) উক্ত আইনের অধীন কৃত কোনো কর্ম বা জারিকৃত কোনো আদেশ, বিভাগীয় কার্যধারা, বাহিনীর কোনো সদস্যের উপর গৃহীত কোনো শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা বা ব্যাটালিয়ন আদালতের কার্যধারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে এবং এই আইনের অধীন কৃত, জারিকৃত ও গৃহীত কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে|
(৭) উক্ত আইনের অধীন কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো মামলা বা আইনগত কার্যধারা কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের নিকট চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উক্ত আইন রহিত হয় নাই|
৩৪। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (authentic english text) প্রকাশ করিতে পারিবে|
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে|