প্রিন্ট ভিউ

গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২৪

( ২০২৪ সনের ০৩ নং আইন )

গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ১৯ নং আইন) এর অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:—

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইন, ২০২৪ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ২ এর সংশোধন

২।  গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ১৯ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর ধারা ২ এর—

(ক) দফা (ড) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (ডড) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:—

“(ডড) “শিশু” অর্থ শিশু আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ২৪ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (১৭) এ সংজ্ঞায়িত শিশু;” এবং

(খ) দফা (ঢ) এর প্রান্তস্থিত ‘।’ দাঁড়ি চিহ্নের পরিবর্তে ‘;’ সেমিকোলন চিহ্ন প্রতিস্থাপিত হইবে এবং অতঃপর নিম্নরূপ নূতন দফা (ণ) সংযোজিত হইবে, যথা:—

“(ণ) “স্থানীয় কর্তৃপক্ষ” অর্থ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬১ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৪৭) এ সংজ্ঞায়িত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।”।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৩ এর সংশোধন

৩। উক্ত আইনের ধারা ৩ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক) তে উল্লিখিত “নাবালকের” শব্দের পরিবর্তে “শিশুর” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৫ এর সংশোধন

৪।   উক্ত আইনের ধারা ৫ এর—

(ক) উপ-ধারা (১) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (১) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:—

“(১) উপ-ধারা (৫) এর বিধান সাপেক্ষে, একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন করিয়া চারজন মোট পাঁচজন সদস্য লইয়া গ্রাম আদালত গঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হইতে হইবে:

আরও শর্ত থাকে যে, তফসিলের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলার সহিত কোনো নারীর স্বার্থ জড়িত থাকিলে, সংশ্লিষ্ট পক্ষ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একজন নারীকে সদস্য হিসাবে মনোনয়ন প্রদান করিবেন।”; এবং

(খ) উপ-ধারা (৫) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৫) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:—

“(৫) এই ধারার অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সদস্য মনোনীত করা সম্ভব না হয়, তবে অনুরূপ সদস্য ব্যতিরেকেই গ্রাম আদালত গঠিত হইবে এবং উহা বৈধভাবে উহার কার্যক্রম চালাইতে পারিবে।”।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৬খ এর সংশোধন

৫।  উক্ত আইনের ধারা ৬খ এর উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত “৩০ (ত্রিশ)” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দের পরিবর্তে “১৫ (পনেরো)” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৬গ এর সংশোধন

৬।  উক্ত আইনের ধারা ৬গ এর উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত “উপ-ধারা (২)” শব্দ, বন্ধনী ও সংখ্যার পরিবর্তে “উপ-ধারা (১)” শব্দ, বন্ধনী ও সংখ্যা প্রতিস্থাপিত হইবে।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৭ এর সংশোধন

৭।   উক্ত আইনের ধারা ৭ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “৭৫ (পঁচাত্তর) হাজার” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলির পরিবর্তে “৩ (তিন) লক্ষ” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের ধারা ৮ এর সংশোধন

৮।   উক্ত আইনের ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (১ক) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:—

“(১ক) চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত দুই-দুই (২:২) ভোটে অমীমাংসিত হইলে চেয়ারম্যান নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।”।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনে নূতন ধারা ১৫ক এর সন্নিবেশ

৯।   উক্ত আইনের ধারা ১৫ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ১৫ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা:—

“১৫ক। পক্ষভুক্তি।— (১) গ্রাম আদালতে দেওয়ানী বিরোধ সংক্রান্ত মামলা চলাকালীন কোনো পক্ষ মৃত্যুবরণ করিলে কিংবা তাহার অবর্তমানে সংশ্লিষ্ট পক্ষের মনোনীত ব্যক্তি অথবা বৈধ উত্তরাধিকারীগণ, নিজ উদ্যোগে বা গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্তক্রমে উক্ত মামলায় পক্ষভুক্ত হইতে পারিবেন।

(২) গ্রাম আদালতে ফৌজদারী বিরোধ সংক্রান্ত মামলা চলাকালীন আবেদনকারী মৃত্যুবরণ করিলে কিংবা তাহার অবর্তমানে আবেদনকারী পক্ষের মনোনীত ব্যক্তি অথবা বৈধ উত্তরাধিকারীগণ, নিজ উদ্যোগে বা গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্তক্রমে উক্ত মামলায় পক্ষভুক্ত হইতে পারিবেন।”।

২০০৬ সনের ১৯ নং আইনের তফসিল এর সংশোধন

১০।   উক্ত আইনের তফসিল এর—

(ক) প্রথম অংশ: ফৌজদারী মামলাসমূহ এর—

(অ) ক্রমিক নং ৩, ৫, ৬ ও ৭ এ উল্লিখিত “৭৫ (পঁচাত্তর) হাজার” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলির পরিবর্তে “৩ (তিন) লক্ষ” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে; এবং

(আ) ক্রমিক নং ৪ এ উল্লিখিত “৫০ (পঞ্চাশ) হাজার” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলির পরিবর্তে “৩ (তিন) লক্ষ” সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে; এবং

(খ) বিদ্যমান দ্বিতীয় অংশ: এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দ্বিতীয় অংশ: প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:—

“দ্বিতীয় অংশ: দেওয়ানী মামলাসমূহ

 

ক্রমিক নং

মামলার বিষয়

পরিমাণ

()

()

()

কোনো চুক্তি, রশিদ বা অন্য কোনো দলিল মূলে প্রাপ্য অর্থ আদায়ের মামলা

 

যখন দাবীকৃত অর্থের পরিমাণ অথবা অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য অথবা অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির মূল্য অথবা বকেয়া ভরণপোষণের পরিমাণ অনধিক (তিন) লক্ষ টাকা হয়

 

কোনো অস্থাবর সম্পতি পুনরুদ্ধার বা উহার মূল্য আদায়ের মামলা

 

স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বৎসরের মধ্যে উহার দখল পুনরুদ্ধারের মামলা

 

কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা

 

গরাদি পশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণের মামলা

 

কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধ্য মজুরি ক্ষতিপুরণ আদায়ের মামলা

 

কোনো স্ত্রী কর্তৃক তাহার বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা

 

ব্যাখ্যাএই ক্রমিকে বর্ণিত বিধান অন্য যে কোনো আইনে প্রদয় প্রতিকারের অতিরিক্ত হিসাবে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য হইবে এবং বলবৎ অন্য কোনো আইনের এখতিয়ার বর্ণ করিবে না

 


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs