প্রিন্ট ভিউ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত
অধ্যাদেশ
যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ৮ নং আইন) সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে উক্ত আইন অধিকতর সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; এবং
যেহেতু সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে;
সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেন:-
১। (১) এই অধ্যাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ৮ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর ধারা ২ এর-
(ক) দফা (ছ) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (ছছ) এবং (ছছছ) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(ছছ) “বলাৎকার” অর্থ কোন ছেলে শিশুর মুখ বা পায়ুপথে কোন ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত যৌনকর্ম;
(ছছছ) “মারাত্মক জখম” অর্থ Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 320 এ সংজ্ঞায়িত “grievous hurt”;”
(খ) দফা (ঞ) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (ঞঞ) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(ঞঞ) “যৌনকর্ম” অর্থ কোনো নারী বা শিশুর যোনি বা পায়ুপথ বা মুখের অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি কর্তৃক যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে পুরুষাঙ্গ বা দেহের যে কোন অংশ কিংবা অন্য যে কোন বস্তুর প্রবিষ্টকরণ;”।
৩। উক্ত আইনের ধারা ৪ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “এক লক্ষ টাকা” শব্দগুলির পরিবর্তে “বিশ লক্ষ টাকা” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (২) এর-
(অ) দফা (ক) এ উল্লিখিত “এক লক্ষ টাকার” শব্দগুলির পরিবর্তে “দশ লক্ষ টাকার” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে; এবং
(আ) দফা (খ) এ উল্লিখিত “পঞ্চাশ হাজার টাকার” শব্দগুলির পরিবর্তে “পাঁচ লক্ষ টাকার” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(গ) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত “পঞ্চাশ হাজার টাকার” শব্দগুলির পরিবর্তে “পাঁচ লক্ষ টাকার” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।
৪। উক্ত আইনের ধারা ৯ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (১) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(১) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
ব্যাখ্যা।- (১) যদি কোন ব্যক্তি বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ষোল বৎসরের অধিক বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া, অথবা ষোল বৎসরের কম বয়সের কোন শিশুর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌনকর্ম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।
(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “ধর্ষণ” অর্থে বলাৎকারও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত “অন্যূন এক লক্ষ টাকা” শব্দগুলির পরিবর্তে “অনধিক বিশ লক্ষ টাকা” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে:
(গ) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত “দলবদ্ধভাবে” শব্দটির পর “বা সংঘবদ্ধভাবে” শব্দগুলি সন্নিবেশিত এবং “অন্যূন এক লক্ষ টাকা” শব্দগুলির পরিবর্তে “অনধিক বিশ লক্ষ টাকা” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(ঘ) উপ-ধারা ৪ এর দফা (খ) এর প্রান্তস্থিত দাঁড়ি চিহ্নের পরিবর্তে সেমিকোলন চিহ্ন প্রতিস্থাপিত হইবে এবং অতঃপর নিম্নরূপ নূতন দফা (গ) সন্নিবেশিত হইবে, যথা: -
“(গ) ধর্ষণের উদ্দেশ্যে শরীরের কোন অঙ্গ, ধারালো অস্ত্র, রাসায়নিক পদার্থ, বা অন্য কোন উপকরণ ব্যবহার করিয়া কিংবা অন্য কোনভাবে নারী বা শিশুর যৌনাঙ্গ বা স্তনে মারাত্মক জখম (grievous hurt) করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব দশ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দণ্ডিত হইবেন;”;
(ঙ) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত “পুলিশ” শব্দটির পর “বা অন্য কোন শৃঙ্খলা-বাহিনীর” শব্দগুলি এবং “অন্যূন দশ হাজার টাকা” শব্দগুলির পরিবর্তে “অন্যূন পঞ্চাশ হাজার টাকা” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(চ) উপ-ধারা (৫) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (৬) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(৬) এই ধারায় উল্লিখিত অর্থদন্ড ধারা ১৫ এর বিধান অনুসারে আদায়পূর্বক ক্ষতিপূরণ হিসাবে অপরাধের শিকার ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার আইনগত উত্তরাধিকারীকে প্রদান করিতে হইবে।”।
৫। উক্ত আইনের ধারা ৯ক এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৯খ সন্নিবেশিত হইবে, যথা: -
“৯খ। বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্ম করিবার দন্ড।- যদি কোন ব্যক্তি দৈহিক বলপ্রয়োগ ব্যতীত বিবাহের প্রলোভন দেখাইয়া ষোল বৎসরের অধিক বয়সের কোন নারীর সংগে যৌনকর্ম করেন এবং যদি উক্ত ঘটনার সময় উক্ত ব্যক্তির সহিত উক্ত নারীর আস্থাভাজন সম্পর্ক থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক সাত বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।”।
৬। উক্ত আইনের ধারা ১১ এর-
(ক) দফা (ক) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (ক) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দন্ডনীয় হইবেন;”;
(খ) দফা (ক) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (কক) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(কক) মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে বা অনধিক বার বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন;”;
(গ) দফা (গ) এ উল্লিখিত “অনধিক তিন বৎসর কিন্তু অন্যূন এক বৎসর” শব্দগুলির পরিবর্তে “অনধিক পাঁচ বৎসর কিন্তু অন্যূন দুই বৎসর” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।
৭। উক্ত আইনের ধারা ১৪ এর-
(ক) উপান্তটীকায় উল্লিখিত “নির্যাতিতা” শব্দটির পরিবর্তে “নির্যাতনের শিকার” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “নাম-ঠিকানা” শব্দগুলি ও হাইফেন এর পর “বা ছবি” শব্দগুলি এবং “অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে” শব্দগুলির পর “বা অনলাইনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে” শব্দগুলি সন্নিবেশিত হইবে।
৮। উক্ত আইনের ধারা ১৭ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির” শব্দগুলির পর “মর্যাদাহানি বা” শব্দগুলি সন্নিবেশিত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (২) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(২) এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত ট্রাইব্যুনাল কোন লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা তাহার স্বীয় ক্ষমতায় উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধ আমলে লইয়া তাহার বিচার করিতে পারিবে।”;
(গ) উপ-ধারা (২) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (৩) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর রায় প্রদানকালে যদি ট্রাইব্যুনালের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণিত হয় যে, কোন অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক, তাহা হইলে উক্ত ট্রাইব্যুনাল মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তিকে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদানপূর্বক সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তি বা অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ বরাবর যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে এবং প্রয়োজন মনে করিলে ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের পাশাপাশি উক্ত মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তিকে অনধিক দুই বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।”।
৯। উক্ত আইনের ধারা ১৮ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত “ষাট” শব্দটির পরিবর্তে “ত্রিশ” শব্দটি প্রতিস্থাপিত হইবে:
(খ) উপ-ধারা (২) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (২) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(২) কোন যুক্তিসংগত কারণে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্তকার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে কেস ডায়েরিসহ বিলম্বের কারণ সংবলিত লিখিত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট উপস্থাপন করিবেন এবং ট্রাইব্যুনাল বা ম্যাজিস্ট্রেট সন্তুষ্ট হইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরবর্তী পনের কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, যেসব মামলার তদন্তে ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ডিএনএ পরীক্ষা আবশ্যক, সেসব মামলার তদন্তের মেয়াদ ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সময় পর্যন্ত বর্ধিত করিতে পারিবে।”;
(গ) উপ-ধারা (৩) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৩) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(৩) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর উহার বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল হইলে ট্রাইব্যুনাল অধিকতর তদন্তের নিমিত্ত নূতন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করিতে পারিবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে তদন্তের আদেশ প্রাপ্ত হইবার পরবর্তী পনের কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করিতে হইবে।”;
(ঘ) উপ-ধারা (৪) ও (৫) বিলুপ্ত হইবে;
(ঙ) উপ-ধারা (৬) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৬) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(৬) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়সীমা বা ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (২) ও (৩) এর অধীন বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে কোন তদন্তকার্য সম্পন্ন না করার ক্ষেত্রে, তৎসম্পর্কে ব্যাখ্যা সংবলিত প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল কিংবা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট যদি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা বা ক্ষেত্রবিশেষে কোন সরকারি কর্মকর্তা দায়ী, তাহা হইলে উহা দায়ী ব্যক্তির অদক্ষতা ও অসদাচরণ বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং এই অদক্ষতা ও অসদাচরণ তাহার বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে লিপিবদ্ধ করা হইবে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।”;
(চ) উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত “কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা” শব্দগুলির পর “নিজে বা তাহার উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তার নির্দেশে” শব্দগুলি এবং “উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার” শব্দগুলির পর “বা, ক্ষেত্রমত, তাহার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার” শব্দগুলি সন্নিবেশিত হইবে;
(ছ) উপ-ধারা (৯) এ উল্লিখিত “ট্রাইব্যুনাল” শব্দের পর “বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট” শব্দগুলি সন্নিবেশিত হইবে;
(জ) উপ-ধারা (৯) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (১০) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(১০) ধারা ৯ এর অধীন মামলা তদন্ত করার সময়ে প্রশাসনিক আদেশে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তার বদলি কার্যকর করা যাইবে না।”।
১০। উক্ত আইনের ধারা ১৯ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “, এবং ধারা ১১ এর দফা (গ) এ উল্লিখিত অপরাধ আপসযোগ্য হইবে” কমা, শব্দগুলি এবং বন্ধনী বিলুপ্ত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (২) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত “ট্রাইব্যুনাল” শব্দের পর “বা, ক্ষেত্রমত, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত” শব্দগুলি ও কমাগুলি সন্নিবেশিত হইবে;
(গ) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত “ট্রাইব্যুনাল” শব্দের পর “বা, ক্ষেত্রমত, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত” শব্দগুলি ও কমাগুলি সন্নিবেশিত হইবে;
(ঘ) উপ-ধারা (৪) এ দুইবার উল্লিখিত “ট্রাইব্যুনাল” শব্দগুলির পর উভয় স্থানে “বা, ক্ষেত্রমত, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত” শব্দগুলি ও কমাগুলি সন্নিবেশিত হইবে।
১১। উক্ত আইনের ধারা ২০ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (১) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(১) ধারা ৩৫ এর বিধান সাপেক্ষে এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার ধারা ২৬ বা, ক্ষেত্রমত, ধারা ২৬ক এর অধীন পঠিত ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য হইবে।”;
(খ) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত “দিনের” শব্দটির পরিবর্তে “কার্যদিবসের” শব্দটি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(গ) উপ-ধারা (৩) এর পর নিম্নরূপ উপ-ধারা (৩ক) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(৩ক) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছু থাকুক না কেন, ধারা ৯ এর অধীন ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার বিচারকার্য ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের তারিখ হইতে নব্বই কার্যদিবসের মধ্যে সমাপ্ত করিবে।”;
(ঘ) উপ-ধারা (৪) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৪) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(৪) উপ-ধারা (৩) এবং উপ-ধারা (৩ক) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে মামলার বিচারকার্য সমাপ্ত করিবার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল যদি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন না হইবার জন্য কোন সরকারি কর্মকর্তা দায়ী তাহা হইলে উহা দায়ী ব্যক্তির অদক্ষতা ও অসদাচারণ বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং উক্ত অদক্ষতা ও অসদাচরণ তাহার বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে লিপিবন্ধ করা হইবে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।”;
(ঙ) উপ-ধারা (৮) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (৯) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(৯) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কেবল ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করিয়া বিচারকার্য সম্পন্ন করিতে পারিবে।”।
১২। উক্ত আইনের ধারা ২১ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ২১ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“২১। আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার।- ফৌজদারী কার্যবিধির Section 87, 88 ও 339B এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যেক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাহার গ্রেফতার বা তাহাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়াইবার জনা পলাতক রহিয়াছেন বা আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহার আশু গ্রেফতারের কোন সম্ভাবনা নাই, সেইক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী বিশ দিনের মধ্যে উক্ত অনুপস্থিত বা পলাতক অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হাজির করিবার নিমিত্ত তথ্যপ্রযুক্তির যে কোন উপযুক্ত মাধ্যমে বা একটি বাংলা দৈনিক জাতীয় খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা বা অন্যবিধ যুক্তিসংগত যে কোন উপায়ে উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নোটিশ জারি করিয়া হাজির হইবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির না হন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তাহার অনুপস্থিতিতে বিচার করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইবার পর বা তাহাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করিবার পর বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর পলাতক হন, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে উল্লিখিত বিধান প্রযোজ্য হইবে না, এবং সেইক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল, কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাহার বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবে।”।
১৩। উক্ত আইনের ধারা ২২ এ উল্লিখিত “মনে করেন যে,” শব্দগুলি ও কমার পর “অপরাধের শিকার ব্যক্তি বা” শব্দগুলি সন্নিবেশিত হইবে।
১৪। উক্ত আইনের ধারা ২৪ এর উপ-ধারা (৩) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (৪) সন্নিবেশিত হইবে, যথা: -
“(৪) কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে কিংবা ট্রাইব্যুনাল স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করিলে যে কোন দূরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্য, এ সম্পর্কিত বলবৎ আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রহণ করিতে পারিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকার এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ ট্রাইব্যুনালকে তথ্যপ্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করিবে।”।
১৫। উক্ত আইনের ধারা ২৪ এর পর নিম্নরুপ নূতন ধারা ২৪ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“২৪ক। সম্মতি সংক্রান্তে অনুমান।- যেক্ষেত্রে কোন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে অপরাধের শিকার ব্যক্তির সম্মতি বা অসম্মতি দানের সক্ষমতা থাকে না, সেইক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ধরিয়া লইতে পারিবে যে, উক্ত কার্যে তাহার সম্মতি ছিল না।”।
১৬। উক্ত আইনের ধারা ২৫ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ২৫ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা: -
“২৫ক। থানার অফিসার ইনচার্জের দায়িত্ব।- (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের প্রাথমিক সাক্ষ্যপ্রমাণসহ কোনো অভিযোগকারী থানায় হাজির হইলে অফিসার ইনচার্জ তাৎক্ষণিকভাবে তাহার অভিযোগটি এজাহারভুক্ত করিবেন এবং ক্ষেত্রমত এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে অপরাধের শিকার ব্যক্তির প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করিবেন।
(২) অভিযোগকারী প্রাথমিক সাক্ষ্যপ্রমাণসহ থানায় হাজির হইলে তাহাকে কেবল এই যুক্তিতে ফিরাইয়া দেওয়া যাইবে না যে, তাহার ঘটনাটি অন্য থানার এখতিয়ারাধীন এলাকায় ঘটিয়াছে, বরং যেই থানাতেই অভিযোগ করা হউক না কেন, উক্ত থানার অফিসার ইনচার্জ অবিলম্বে অভিযোগকারীর বক্তব্য লিপিবদ্ধ করিবেন, অপরাধের শিকার ব্যক্তির প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিবেন এবং অনতিবিলম্বে কেস ডায়েরিসহ অভিযোগটি উপযুক্ত থানায় প্রেরণ করিবেন।”।
১৭। উক্ত আইনের ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত “যথাক্রমে অতিরিক্ত জেলা জজ ও অতিরিক্ত দায়রা জজও” শব্দগুলির পরিবর্তে “অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজও” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।
১৮। উক্ত আইনের ধারা ২৬ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ২৬ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা: -
“২৬ক। শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল।- (১) ধারা ২৬ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও সরকার এই আইনের অধীন শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের নিমিত্ত প্রত্যেক জেলায় ও মহানগর এলাকায় এক বা একাধিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে এবং এইরূপ ট্রাইব্যুনাল শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল নামে অভিহিত হইবে।
(২) একজন বিচারক সমন্বয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে এবং সরকার জেলা ও দায়রা জজগণের মধ্য হইতে উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিযুক্ত করিবে।
(৩) সরকার, প্রয়োজনবোধে, কোন জেলা ও দায়রা জজকে তাহার দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসাবে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিযুক্ত করিতে পারিবে।
(৪) এই ধারায় জেলা ও দায়রা জজ বলিতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজও অন্তর্ভুক্ত।
(৫) শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন গঠিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের কার্যপদ্ধতি প্রয়োজনীয় অভিযোজন সহকারে অনুসরণ করিবে।
(৬) এই ধারার অধীন ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত ধারা ২৬ এর অধীন গঠিত ট্রাইব্যুনাল এই ধারায় উল্লিখিত ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব পালন করিতে পারিবে।”।
১৯। উক্ত আইনের ধারা ২৭ এর উপ-ধারা (১গ) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (১ঘ) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(১ঘ) উপ-ধারা (১ক) ও (১খ) এ যাহা কিছু থাকুক না কেন, উপযুক্ত ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটিকে এজাহার হিসাবে গণ্য করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।”।
২০। উক্ত আইনের ধারা ২৮ এ উল্লিখিত “ষাট” শব্দটির পরিবর্তে “ত্রিশ” শব্দটি প্রতিস্থাপিত হইবে।
২১। উক্ত আইনের ধারা ৩১ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৩১ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“৩১। নিরাপত্তামূলক হেফাজত।- এই আইনের অধীন কোন অপরাধের তদন্ত বা বিচার চলাকালে যদি ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট মনে করে যে, কোন নারী বা শিশু বা তার সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তিকে নিরাপত্তামূলক হেফাজতে রাখা প্রয়োজন বা তাহাদের জানমালের সার্বিক হেফাজত করা প্রয়োজন, তাহা হইলে শিশু আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ২৪ নং আইন) এর বিধান সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট, উক্ত নারী বা শিশুকে কারাগারের বাহিরে ও সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত স্থানে সরকারি কর্তৃপক্ষের হেফাজতে বা ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনায় যথাযথ অন্য কোন ব্যাক্তি বা সংস্থার হেফাজতে রাখিবার নির্দেশ দিতে পারিবে বা উপযুক্ত যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে।”।
২২। উক্ত আইনের ধারা ৩১ক এর উপ-ধারা (৩) এর পর নিম্নরূপ নূতন উপ-ধারা (৪) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(৪) ধারা ২০ এর উপ-ধারা (৩ক) এর অধীন মামলা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি না হইলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারককে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রীম কোর্টের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত ব্যাখ্যার ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।”।
২৩। উক্ত আইনের ধারা ৩২ এর উপ-ধারা (১) ও (২) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (১) ও (২) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিক্যাল পরীক্ষা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করিয়া সরকারি হাসপাতালে কিংবা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে স্বীকৃত কোন বেসরকারি হাসপাতালে সম্পন্ন করা যাইবে এবং সরকারি হাসপাতালে এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের শিকার ব্যক্তি নিজে হাজির হইলে কিংবা এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা অপরাধের শিকার ব্যক্তি পুলিশ কর্তৃক উপস্থাপিত হইলে তাহাদের মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য কোন ফি প্রদেয় হইবে না।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন হাসপাতালে এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের শিকার ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য উপস্থিত করা হইলে, উক্ত হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহার মেডিক্যাল পরীক্ষা অতিদ্রুত সম্পন্ন করিবে এবং উক্ত মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হইবার পরবর্তী বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে এই সংক্রান্ত একটি সার্টিফিকেট বিনামূল্যে অপরাধের শিকার ব্যক্তিকে বা, ক্ষেত্রমত, তাহার পরিবারকে ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রদান করিবে এবং এইরূপ অপরাধ সংঘটনের বিষয়টি স্থানীয় থানাকে অবহিত করিবে।”।
২৪। উক্ত আইনের ধারা ৩২ক এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৩২ক প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“৩২ক। অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) পরীক্ষা।- (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ধারা ৩২ এর অধীন মেডিক্যাল পরীক্ষা ছাড়াও, উক্ত ব্যক্তির সম্মতি থাকুক বা না থাকুক, তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার ঘটনা ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় প্রয়োজন মনে করিলে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ১০ নং আইন) এবং উক্ত আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালা এর বিধান অনুযায়ী ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) পরীক্ষা করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ ডিএনএ পরীক্ষা করিবার বা না করিবার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন আবশ্যক হইবে এবং যেক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্তরূপ অনুমোদনক্রমে ডিএনএ পরীক্ষা না করেন, সেইক্ষেত্রে তিনি উক্তরূপ পরীক্ষা না করিবার কারণ, যথার্থতা এবং ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন সম্পর্কিত তথ্য তাহার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করিবেন।
(২) এই আইনের অধীন ধর্ষণ সম্পর্কিত অপরাধের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা কোন ডিএনএ ল্যাবে প্রেরিত হইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উক্ত পরীক্ষা সম্পন্নপূর্বক পরীক্ষার ফলাফল ন্যূনতম সময়ের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, ট্রাইব্যুনাল বা এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট সরবরাহের ব্যবস্থা করিতে হইবে।”।
২৫। উক্ত আইনের ধারা ৩২ক এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৩২খ সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“৩২খ। সাক্ষী, ইত্যাদির সুরক্ষা ও ভাতা।- (১) ট্রাইব্যুনাল বা, ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিত্তে বা স্বীয় বিবেচনায় তদন্তাধীন বা বিচারাধীন মামলার অভিযোগকারী বা অপরাধের শিকার ব্যক্তি বা কোন সাক্ষীকে নিরাপত্তা বা সুরক্ষা প্রদানে প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান ও ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(২) ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন দায়েরকৃত মামলায় আগত সাক্ষীদের যাতায়াত ও সময়ের ক্ষতিপূরণ বাবদ যুক্তিসংগত পরিমাণ অর্থ নির্ধারণ ও প্রদান করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে সরকার প্রত্যেক ট্রাইব্যুনালের অনুকূলে পৃথক অর্থ বরাদ্দ করিবে।”।
২৬। উক্ত আইনের ধারা ৩৪ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৩৫ সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“৩৫। ধারা ১১ এর দফা (গ) এ বর্ণিত অপরাধ সম্পর্কে বিশেষ বিধান।- (১) এই আইনে যাহা কিছু থাকুক না কেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বলবৎ হওয়ার তারিখ হইতে ধারা ১১ এর দফা (গ) এ বর্ণিত অপরাধ প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচারার্থ গ্রহণীয় ও বিচারযোগ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বলবৎ হওয়ার পূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধারা ১১ এর দফা (গ) এর অধীন দায়েরকৃত অনিষ্পন্ন মামলাসমূহ এখতিয়ারসম্পন্ন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বদলি হইবে না এবং উক্ত অধ্যাদেশ বলবৎ হইবার পূর্বে এই আইনের অধীন অনিষ্পন্ন মামলাসমূহ তদন্তকারী কর্মকর্তা, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত, ট্রাইব্যুনাল এবং আপীল-সংশ্লিষ্ট আদালতে এমনভাবে পরিচালিত ও নিষ্পত্তি হইবে যেন উক্ত অধ্যাদেশ বলবৎ হয় নাই।
(২) ধারা ১১ এর দফা (গ) এ বর্ণিত অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণীয় (Cognizable), আপসযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার, আপিল ও নিষ্পত্তিসহ পদ্ধতিগত সকল ক্ষেত্রে এই আইনের অন্যান্য ধারার বিশেষ বিধানাবলির পরিবর্তে ফৌজদারী কার্যবিধি Evidence Act, 1872 (Act 1 of 1872)-এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(৩) যদি ট্রাইব্যুনালে বিচার্য কোন অপরাধের সহিত ধারা ১১ এর দফা (গ) এ বর্ণিত অপরাধ এমনভাবে জড়িত থাকে যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে উভয় অপরাধের বিচার একই সংগে বা একই মামলায় করা প্রয়োজন, তাহা হইলে উক্ত ধারা ১১ এর দফা (গ) এ বর্ণিত অপরাধটির বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার্য অপরাধের সহিত এই আইনের বিধান অনুসরণে একই সংগে বা একই ট্রাইব্যুনালে করা যাইবে।”।