প্রিন্ট ভিউ
বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০১১ সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ
যেহেতু নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে, বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ৩ নং আইন) সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; এবং
যেহেতু সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় রহিয়াছে এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে;
সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেন:-
১। (১) এই অধ্যাদেশ বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ৩ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর পূর্ণাঙ্গ শিরোনামে উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।
৩। উক্ত আইনের প্রস্তাবনার পরিবর্তে নিম্নরূপ প্রস্তাবনা প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“যেহেতু সরকার মনে করে যে, ক্রীড়া, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার ক্ষেত্রে যাহারা বিশেষ অবদান রাখিয়াছেন বা রাখিতেছেন তাঁহাদের এবং তাঁহাদের উপর নির্ভরশীলদের কল্যাণার্থে ‘বাংলাদেশ ক্রীড়াবিদ কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর স্থলে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-”।
৪। উক্ত আইনের ধারা ১ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।
৫। উক্ত আইনের ধারা ২ এর-
(ক) দফা (খ) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (খ) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(খ) “ক্রীড়াসেবী” অর্থ ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়া প্রশিক্ষক বা কোচ, রেফারি, জাজ বা আম্পায়ার, গ্রাউন্ডসম্যান, কৃতী ক্রীড়া শিক্ষার্থী বা অন্য কোন ব্যক্তি যিনি ক্রীড়া, খেলাধুলা বা শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখিয়াছেন বা রাখিতেছেন;”;
(খ) দফা (ঙ) এর-
(১) উপ-দফা (অ)-তে উল্লিখিত “স্ত্রী” শব্দের পর “বা স্ত্রীগণ” শব্দগুলি বিলুপ্ত হইবে; এবং
(২) উপ-দফা (আ) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-দফা (আ) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(আ) ক্রীড়াসেবীর সহিত একত্রে বসবাসরত এবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল সন্তান-সন্ততিগণ এবং পিতা-মাতা;”;
(গ) দফা (ছ) এ উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে;
(ঘ) দফা (ঝ) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (ঝঝ) সন্নিবেশিত হইবে, যথা:-
“(ঝঝ) “ভাইস-চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান;”;
(ঙ) দফা (ট) এর দুই স্থানে উল্লিখিত “সচিব” শব্দের পরিবর্তে “নির্বাহী পরিচালক” শব্দগুলি এবং প্রান্তস্থিত “।” চিহ্নের পরিবর্তে “;” চিহ্ন প্রতিস্থাপিত হইবে; এবং
(চ) দফা (ট) এর পর নিম্নরূপ নূতন দফা (টট) সংযোজিত হইবে, যথা:-
“(টট) “সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান।”।
৬। উক্ত আইনের ধারা ৩ এর-
(ক) উপান্ত টীকায় উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে; এবং
(খ) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।
৭। উক্ত আইনের ধারা ৬ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৬ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“৬। পরিচালনা বোর্ড।- (১) ফাউন্ডেশনের পরিচালনা বোর্ড নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী/উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন, তবে মন্ত্রী/উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী সকলেই বিদ্যমান থাকিলে মন্ত্রী/উপদেষ্টা চেয়ারম্যান এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অন্য দুইজন বা একজন সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
(খ) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিব, যিনি উহার ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
(গ) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক;
(ঘ) জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক;
(ঙ) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ক্রীড়া অনুবিভাগের প্রধান;
(চ) বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক;
(ছ) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব;
(জ) ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক;
(ঝ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঞ) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ট) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঠ) স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ড) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ঢ) কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ণ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
(ত) বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি;
(থ) সরকার কর্তৃক মনোনীত ক্রীড়া ও খেলাধুলায় অনুরাগী ৩ (তিন) জন ব্যক্তি, যাঁহাদের মধ্যে অন্যূন একজন নারী হইবেন;
(দ) ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (থ) এর অধীন মনোনীত কোন সদস্য তাঁহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসরের জন্য স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপে মনোনীত কোন সদস্য, ইচ্ছা করিলে, যে-কোন সময় চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক উহা গৃহীত হইবার তারিখ হইতে পদটি শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে:
আরও শর্ত থাকে যে, সরকার, মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বেই কোন কারণ প্রদর্শন ব্যতিরেকে, মনোনীত কোন সদস্যকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে।”।
৮। উক্ত আইনের ধারা ৭ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ৭ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“৭। ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ও কার্যাবলী।- ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) অসচ্ছল, অসুস্থ, আহত ও অসমর্থ ক্রীড়াসেবী এবং তাঁহাদের পরিবারের জন্য, ক্ষেত্রমত, পুরস্কার, অনুদান, চিকিৎসা সহায়তা, আর্থিক সহায়তা ও বৃত্তি প্রদানের নিমিত্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং ফাউন্ডেশনের নীতিমালার ভিত্তিতে-
(অ) অসচ্ছল, অসুস্থ, আহত ও অসমর্থ ক্রীড়াসেবী এবং তাঁহাদের পরিবারের জন্য মাসিক বা বাৎসরিক ক্রীড়া ভাতা প্রদান করা;
(আ) ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক বা বাৎসরিক ‘ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি’ প্রদান করা;
(ই) অসচ্ছল, অসুস্থ, আহত ও অসমর্থ ক্রীড়াসেবী এবং তাঁহাদের পরিবারের জন্য চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা;
(ঈ) ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ক্রীড়াসেবীদের পুরস্কার প্রদান করা;
(উ) দুর্যোগ ও মহামারিকালে ক্ষতিগ্রস্ত ক্রীড়াসেবীদের আর্থিক সহায়তা বা অনুদান প্রদান করা;
(খ) ক্রীড়াসেবীদের ডেটাবেজ সংরক্ষণ করা;
(গ) অসচ্ছল, অসুস্থ, আহত ও অসমর্থ ক্রীড়াসেবী এবং তাঁহাদের পরিবারের সার্বিক কল্যাণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প, কর্মসূচি, স্কিম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা;
(ঘ) তহবিল বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন ও পরিচালনা করা;
(ঙ) সরকার কর্তৃক আরোপিত শর্তাধীনে উহার অনুমোদিত প্রকল্পের জন্য ঋণ সংগ্রহ করা;
(চ) লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য চাঁদা, অনুদান ও উপহার গ্রহণ এবং লটারির ব্যবস্থা করা;
(ছ) তহবিল পরিচালনা ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা; এবং
(জ) উপরি-উক্ত দফাসমূহে উল্লিখিত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য যে-কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্য সম্পাদন করা।”।
৯। উক্ত আইনের ধারা ৮ এর-
(ক) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত “ভাইস-চেয়ারম্যান” শব্দের পরিবর্তে “সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান বা ভাইস-চেয়ারম্যান” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;
(খ) উপ-ধারা (৫) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৫) প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“(৫) প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে প্রদত্ত ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।”।
১০। উক্ত আইনের ধারা ১১ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ১১ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথা:-
“১১। নির্বাহী পরিচালক।- (১) ফাউন্ডেশনের একজন নির্বাহী পরিচালক থাকিবেন।
(২) নির্বাহী পরিচালক সরকারের অন্যূন যুগ্মসচিব পর্যায়ের কোন কর্মকর্তার মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার বেতন, ভাতা ও চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।
(৩) নির্বাহী পরিচালক ফাউন্ডেশনের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি-
(ক) ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন; এবং
(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন।
(৪) নির্বাহী পরিচালকের পদ শূন্য হইলে, কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে নির্বাহী পরিচালক তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত, কিংবা নির্বাহী পরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।”।
১১। উক্ত আইনের ধারা ১৪ এ উল্লিখিত “সচিব” শব্দের পরিবর্তে “নির্বাহী পরিচালক” শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।
১২। এই অধ্যাদেশ প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উক্ত আইনের অধীন প্রণীত কোন বিধি, প্রবিধান বা অন্য কোন আইনগত দলিল বা জারীকৃত কোন বিশেষ বা সাধারণ আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, প্রজ্ঞাপন বা সম্পাদিত কোন দলিলে, প্রসঙ্গের প্রয়োজনে ভিন্নরূপ না হইলে, উল্লিখিত “বঙ্গবন্ধু” শব্দের পরিবর্তে “জাতীয়” শব্দ প্রতিস্থাপিত হইবে।