প্রিন্ট ভিউ

জাতীয় মহিলা সংস্থা আইন, ১৯৯১

( ১৯৯১ সনের ৯ নং আইন )

জাতীয় মহিলা সংস্থা প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন৷
 
 
 
যেহেতু মহিলাদের সার্বিক কল্যাণকল্পে জাতীয় মহিলা সংস্থা নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
এবং যেহেতু সংসদ অধিবেশনে নাই এবং রাষ্ট্রপতির নিকট ইহা সন্ত্মোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইয়াছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে;
 
 
 
 
সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ আইন প্রণয়ন ও জারী করিলেন :-
 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনামা
১৷ এই আইন জাতীয় মহিলা সংস্থা আইন, ১৯৯১ নামে অভিহিত হইবে৷
সংজ্ঞা
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(ক) “সংস্থা” অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মহিলা সংস্থা;
 
 
(খ) “পরিষদ” অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পরিষদ;
 
 
(গ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(ঘ) “জেলা কমিটি” অর্থ সংস্থার জেলা কমিটি;
 
 
(ঙ) “উপজেলা কমিটি” অর্থ সংস্থার উপজেলা কমিটি৷
জাতীয় মহিলা সংস্থা প্রতিষ্ঠা
৩৷ (১) এই আইন বলবত্ হইবার পর সরকার, যতশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় মহিলা সংস্থা নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করিবে৷
 
 
(২) সংস্থা একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই অধ্যাদেশ ও বিধি সাপেক্ষে উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করার, অধিকারে রাখার ও হস্তান্তর করার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহার নামে উহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা উহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে৷
প্রধান কার্যালয়
৪৷ সংস্থার প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে৷
পরিচালনা ও প্রশাসন
৫৷ (১) সংস্থার পরিচালনা ও প্রশাসন একটি পরিচালনা পরিষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং সংস্থা যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে পরিষদও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) সংস্থা উহার কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নীতি অনুসরণ করিবে৷
প্রধান পৃষ্ঠপোষক
৬৷ সংস্থার একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষক থাকিবেন এবং তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হইবেন৷
কার্যাবলী
৭৷ সংস্থার কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
 
 
ক) জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহিলাগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা;
 
 
(খ) মহিলাগণের জন্য কারিগরী ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
 
 
(গ) অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জনে মহিলাগণকে সহায়তা দান করা;
 
 
(ঘ) মহিলাগণের আইনগত অধিকার রক্ষার্থে সাহায্য করা;
 
 
(ঙ) পরিবার কল্যাণমূলক ব্যবস্থাদি গ্রহণে মহিলাগণকে উদ্বুদ্ধ করা;
 
 
(চ) মহিলা কল্যাণে নিয়োজিত সরকারী ও বেসরকারী, দেশী ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ স্থাপন করা ও সহযোগিতা করা;
 
 
(ছ) জাতীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডে মহিলাগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য চেষ্টা করা;
 
 
(জ) সমবায় সমিতি গঠন ও কুটির শিল্প স্থাপনে মহিলাগণকে উত্সাহিত করা;
 
 
(ঝ) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মহিলাগণের অংশ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা;
 
 
(ঞ) মহিলাগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সম্মেলন, সেমিনার ও কর্মশালার ব্যবস্থা করা;
 
 
(ট) উপরিউক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা৷
পরিচালনা পরিষদ
৮৷ (১) পরিচালনা পরিষদ নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন চেয়ারম্যান;
 
 
(খ) পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণ কর্তৃক বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত একজন ভাইস-চেয়ারম্যান;
 
 
(গ) প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষিকাগণের মধ্য হইতে দুইজন করিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত সদস্য;
 
 
(ঘ) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে স্বীকৃত মহিলা সংগঠনসমূহ হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত পাঁচজন সদস্য;
 
 
(ঙ) সমাজ সেবায়, সাহিত্য ও শিল্প কর্মে, সংস্কৃতি চর্চায় এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত মহিলাগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন সদস্য;
 
 
(চ) মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(ছ) অর্থ মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(জ) স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(ঝ) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(ঞ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(ট) জেলা কমিটিসমূহের চেয়ারম্যানগণ, পদাধিকার বলে;
 
 
(ঠ) সংস্থার নির্বাহী পরিচালক, যিনি উহার সচিবও হইবেন৷
 
 
(২) চেয়ারম্যান এবং উপ-ধারা (১)(ঙ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বত্সরের মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাহাদিগকে তাহাদের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তাহারাও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
নির্বাহী কমিটি
৯৷ (১) সংস্থার একটি নির্বাহী কমিটি থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য-সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) পরিষদের চেয়ারম্যান, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
(খ) পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান;
 
 
(গ) পরিচালনা পরিষদের সদস্যগণের মধ্য হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত চারজন সদস্য;
 
 
(ঘ) সরকার কর্তৃক মনোনীত চারজন বিশিষ্ট মহিলা;
 
 
(ঙ) মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একজন প্রতিনিধি;
 
 
(চ) সংস্থার নির্বাহী পরিচালক, যিনি উহার সচিবও হইবেন৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১)(ঘ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বত্সরের মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাহাদিগকে তাহাদের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তাহারাও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
 
 
(৩) নির্বাহী কমিটি পরিষদকে উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করিবে, পরিষদের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবে এবং পরিষদ কর্তৃক অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে৷
জেলা কমিটি
১০৷ (১) প্রত্যেক জেলায় সংস্থার একটি জেলা কমিটি থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য-সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) জেলা পরিষদের মহিলা সদস্যগণ;
 
 
(খ) জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা;
 
 
(গ) উপজেলা কমিটিসমূহের চেয়ারম্যানগণ, পদাধিকার বলে;
 
 
(ঘ) জেলায় কর্মরত শিক্ষিকাগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন সদস্য;
 
 
(ঙ) জেলায় সমাজ সেবায় রত মহিলাগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন সদস্য;
 
 
(চ) জেলায় মহিলা কল্যাণে নিয়োজিত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারী সংগঠনের সদস্যগণের মধ্য হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত দুইজন সদস্য;
 
 
(ছ) জেলার বিশিষ্ট মহিলাগণের মধ্য হইতে মনোনীত তিনজন সদস্য৷
 
 
(২) জেলা কমিটির সদস্যগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন সদস্য উহার চেয়ারম্যান হইবেন এবং তিনি তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে, কমিটির সদস্য থাকা সাপেক্ষে, দুই বত্সর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাঁহাকে তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তিনিও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) (ঘ), (ঙ) ও (ছ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ ডেপুটি কমিশনারের সুপারিশক্রমে সরকার কর্তৃক মনোনীত হইবেন৷
 
 
(৪) জেলা কমিটির মনোনীত সদস্যগণ জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হইবেন এবং তাহারা তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বত্সর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাহাদিগকে তাহাদের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তাহারাও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
উপজেলা কমিটি
১১৷ (১) প্রত্যেক উপজেলায় সংস্থার একটি উপজেলা কমিটি থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য-সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-
 
 
(ক) উপজেলা পরিষদের মহিলা সদস্যগণ;
 
 
(খ) উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদসমূহের মহিলা সদস্যগণের মধ্যে হইতে ছয়জন সদস্য;
 
 
(গ) উপজেলায় কর্মরত শিক্ষিকাগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন সদস্য;
 
 
(ঘ) উপজেলায় সমাজ সেবায় রত মহিলাগণের মধ্য হইতে মনোনীত একজন সদস্য;
 
 
(ঙ) উপজেলায় মহিলা কল্যাণে নিয়োজিত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারী সংগঠনের সদস্যগণের মধ্য হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচিত একজন সদস্য;
 
 
(চ) উপজেলার বিশিষ্ট মহিলাগণের মধ্য হইতে মনোনীত তিনজন সদস্য৷
 
 
(২) উপজেলা কমিটির সদস্যগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন সদস্য উহার চেয়ারম্যান হইবেন এবং তিনি তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে, কমিটির সদস্য থাকা সাপেক্ষে, দুই বত্সর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাহাকে তাহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তিনিও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) (গ), (ঘ) এবং (চ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশক্রমে সরকার কর্তৃক মনোনীত হইবেন৷
 
 
(৪) উপজেলা কমিটির মনোনীত সদস্যগণ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হইবেন এবং তাহারা তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বত্সর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন :
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় কোন কারণ না দর্শাইয়া তাহাদিগকে তাহাদের পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং তাহারাও সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যে কোন সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷
পরিষদ, জেলা ও উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যান পদে সাময়িক শূন্যতা
১২৷ পরিষদ, জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যান পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে পরিষদ, জেলা কমিটি বা উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নব মনোনীত চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি ক্ষেত্রমত পরিষদ, জেলা কমিটি বা উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যানরূপে দায়িত্ব পালন করিবেন৷
জেলা ও উপজেলা কমিটির কার্যাবলী
১৩৷ (১) জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটি যথাক্রমে সংস্থার জেলা ও উপজেলার শাখা হিসেবে সংস্থার যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করিবে৷
 
 
(২) জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটি উহাদের দায়িত্ব পালনে পরিষদের নিকট দায়ী থাকিবে৷
সভা
১৪৷ (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে পরিষদ উহার নিজের নির্বাহী কমিটির, জেলা কমিটির ও উপজেলা কমিটির সভার কার্য পদ্ধতি নির্ধারণ করিবে৷
 
 
(২) পরিষদ বা নির্বাহী কমিটির সকল সভা উহার চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে উহার সচিব কর্তৃক আহুত হইবে৷
 
 
(৩) পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন উহার চেয়ারম্যান এবং তাহার অনুপস্থিতিতে উহার ভাইস-চেয়ারম্যান এবং তাহাদের উভয়ের অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যগণের মধ্য হইতে তাহাদের মনোনীত কোন সদস্য৷
 
 
(৪) নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করিবেন উহার চেয়ারম্যান এবং তাহার অনুপস্থিতিতে তত্কর্তৃক নির্দেশিত উহার কোন সদস্য৷
 
 
(৫) পরিষদের মোট সদস্যের এক চতুর্থাংশের উপস্থিতিতে উহার সভার কোরাম গঠিত হইবে এবং নির্বাহী কমিটির মোট সদস্যের এক-তৃতীয়াংশের উপস্থিতিতে উহার সভার কোরাম গঠিত হইবে৷
 
 
(৬) পরিষদ বা নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থিত সকল সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট থাকিবে৷
কতিপয় ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির একাধিক পদে থাকা নিষিদ্ধ
১৫৷ কোন ব্যক্তি পদাধিকার বলে ব্যতীত অন্য কোনভাবে একই সংগে পরিষদ, নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি এবং উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান বা সদস্য হইতে পারিবেন না৷
পরিষদ ইত্যাদি গঠনে ত্রুটির জন্য কার্যধারা অবৈধ হইবে না
১৬৷ পরিষদ, নির্বাহী কমিটির, জেলা কমিটি বা উপজেলা কমিটি গঠনে কোন ত্রুটি রহিয়াছে বা উহাতে কোন শূন্যতা রহিয়াছে শুধুমাত্র এই কারণে পরিষদ, নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটির উপজেলা কমিটির কোন কার্যধারা বেআইনী হইবে না বা তত্সম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷
সংস্থার তহবিল
১৭৷ (১) সংস্থার একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
 
(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
 
(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত ঋণ;
 
 
(ঘ) সংস্থার সম্পত্তি বিক্রয় হইতে প্রাপ্ত আয়;
 
 
(ঙ) অন্য কোন উত্স হইতে প্রাপ্ত আয়৷
 
 
(২) উক্ত তহবিল সংস্থার নামে কোন তফসিলী ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল হইতে অর্থ উঠানো যাইবে৷
 
 
(৩) উক্ত তহবিল হইতে সংস্থার প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে৷
 
 
(৪) সংস্থা উক্ত তহবিল সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন খাতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে৷
বাজেট
১৮৷ সংস্থা প্রতি বত্সর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বত্সরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বত্সরে সরকারের নিকট হইতে সংস্থার কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন উহার উল্লেখ থাকিবে৷
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৯৷ (১) সংস্থা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে৷
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা-হিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বত্সর সংস্থার হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও সংস্থার নিকট পেশ করিবেন৷
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি সংস্থার সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং পরিষদ নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটির যে কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে৷
প্রতিবেদন
২০৷ (১) প্রতি বত্সর ৩০শে জুনের মধ্যে সংস্থা তত্কর্তৃক পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত কার্যাবলীর খতিয়ান সম্বলিত একটি প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে৷
 
 
 
 
(২) সরকার সংস্থার নিকট হইতে যে কোন সময় উহার যে কোন বিষয়ের উপর প্রতিবেদন এবং বিবরণী আহ্বান করিতে পারিবে এবং সংস্থা উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে৷
নির্বাহী পরিচালক
২১৷ (১) সংস্থার একজন নির্বাহী পরিচালক থাকিবেন৷
 
 
(২) নির্বাহী পরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷
 
 
(৩) নির্বাহী পরিচালক সংস্থার সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি-
 
 
(ক) পরিষদ ও নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন;
 
 
(খ) পরিষদ ও নির্বাহী কমিটির নির্দেশ মোতাবেক সংস্থার অন্যান্য কার্য সম্পাদন করিবেন৷
 
 
(৪) নির্বাহী পরিচালকের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে নির্বাহী পরিচালক তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্য পদে নব নিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা নির্বাহী পরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি নির্বাহী পরিচালকরূপে দায়িত্ব পালন করিবেন৷
কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
২২৷ সংস্থা উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
ক্ষমতা অর্পণ
২৩৷ পরিষদ উহার যে কোন ক্ষমতা বা দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট শর্তে উহার চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি বা নির্বাহী পরিচালককে অর্পণ করিতে পারিবে৷
জনসেবক
২৪৷ পরিষদ, নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটির সকল সদস্য এবং উহাদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী Penal Code (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এ public servant (জনসেবক) কথাটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সে অর্থে public servant (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবে৷
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৫৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৬৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ, সরকারের অনুমোদনক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা কোন বিধির সহিত অসামঞ্জস্য না হয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
রহিতকরণ ও হেফাজত
২৭৷ (১) সংস্থা প্রতিষ্ঠার সংগে সংগে সমাজ কল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১৮ই মার্চ, ১৯৮৬ তারিখের Resolution No. MSW & WA/Sec(M-V)-50/85/39, অতঃপর উক্ত রিজুলিউশন বলিয়া উল্লিখিত, বাতিল হইয়া যাইবে৷
 
 
(২) উক্ত রিজুলিউশন বাতিল হইবার সংগে সংগে-
 
 
(ক) উক্ত রিজুলিউশনের অধীন গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা, অতঃপর বিলুপ্ত সংস্থা বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে;
 
 
(খ) উক্ত রিজুলিউশনের অধীন গঠিত জাতীয় কাউন্সিল ও সকল কমিটি ভাঙিয়া যাইবে;
 
 
(গ) বিলুপ্ত সংস্থার সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ এবং অন্য সকল দাবী ও অধিকার সংস্থায় হস্তান্তরিত হইবে এবং সংস্থা উহার অধিকারী হইবে;
 
 
(ঘ) বিলুপ্ত সংস্থা কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা-মোকদ্দমা সংস্থা কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা-মোকদ্দমা বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
(ঙ) বিলুপ্ত সংস্থার সকল ঋণ, দায় এবং দায়িত্ব সংস্থার ঋণ, দায় ও দায়িত্ব হইবে;
 
 
(চ) বিলুপ্ত সংস্থার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংস্থায় বদলী হইবেন এবং তাহারা সংস্থা কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ বদলীর পূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকুরীতে নিয়োজিত ছিলেন সংস্থা কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত সেই একই শর্তে তাহারা সংস্থার চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিবেন৷
রহিতকরণ ও হেফাজত
২৮৷ (১) জাতীয় মহিলা সংস্থা অধ্যাদেশ, ১৯৯০ (অধ্যাদেশ নং ১৮, ১৯৯০) এতদ্বারা রহিত করা হইল৷
 
 
 
 
(২) অনুরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও, রহিত অধ্যাদেশের অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs