প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ কমার্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেড (পুনর্গঠন) আইন, ১৯৯৭

( ১৯৯৭ সনের ১২ নং আইন )

বাংলাদেশ কমার্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেডকে পুনর্গঠন করিয়া একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন৷
 
 
 
যেহেতু বাংলাদেশ কমার্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেড, অতঃপর বিসিআই বলিয়া উল্লিখিত, একটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কার্যক্রম চালানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত হইয়া উহার ঋণ প্রদানকারী এবং আমানতকারীদের স্বার্থের হানিকর ব্যবসায়ে নিয়োজিত হইয়াছিল;
 
 
 
 
এবং যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক, বিসিআই এর সহিত সংশ্লিষ্ট সকলের স্বার্থে, ২৮শে এপ্রিল, ১৯৯২ ইং তারিখ হইতে বিসিআই এর সকল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করিয়াছে;
 
 
 
 
এবং যেহেতু উক্তরূপ স্থগিতাদেশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিরীক্ষা এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন হইতে ইহা স্পষ্টতই প্রতীয়মান হইয়াছে যে, বিসিআই উহার দায় পরিশোধে গুরুতর সংকটের সম্মুখীন হইয়াছে;
 
 
 
 
এবং যেহেতু বিসিআইতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ অর্থ বিনিয়োগ করিয়াছে এবং সেই অর্থ দীর্ঘ সময় আবদ্ধ রহিয়াছে;
 
 
 
 
এবং যেহেতু বিসিআইতে বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিসিআই এর ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করিয়াছেন এবং বিসিআইকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি তফসিলী ব্যাংকে রূপান্তর করিয়া উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করিবার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করিয়াছেন;
 
 
 
 
এবং যেহেতু সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহিত পরামর্শক্রমে, এই মর্মে সন্তুষ্ট হইয়াছে যে, বিসিআই এর আমানতকারী ও উহাকে ঋণ প্রদানকারীদের স্বার্থে এবং জনস্বার্থে বিসিআইকে পুনর্গঠন করিয়া একটি তফসিলী ব্যাংক হিসাবে রূপান্তর করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেইহেতু নিম্নরূপ আইন প্রণয়ন করা হইল :-
 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রবর্তন
১৷ (১) এই আইন বাংলাদেশ কমার্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্ট লিমিটেড (পুনর্গঠন) আইন, ১৯৯৭ নামে অভিহিত হইবে৷ (২) বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখ হইতে এই আইনের বিধান কার্যকর হইবে এবং বিভিন্ন বিধান কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা যাইবে৷
সংজ্ঞা
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
 
 
 
(ক) “আমানত” অর্থ বিসিআই কর্তৃক গৃহীত কর্জ এবং বিনিয়োগ হিসাবে রক্ষিত বিসিআই এর দায়;
 
 
 
 
(খ) “আমানতকারী” অর্থ বিসিআইকে ঋণ প্রদানকারী অথবা উহাতে বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান;
 
 
 
 
(গ) “পরিচালক পর্ষদ” অর্থ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ;
 
 
 
 
(ঘ) “পরিচালক” অর্থ ব্যাংকের পরিচালক;
 
 
 
 
(ঙ) “ব্যাংক” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড;
 
 
 
 
(চ) “নির্ধারিত দিন” অর্থ ধারা ১ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত বিভিন্ন তারিখ;
 
 
 
 
(ছ) “হ্রাসকৃত দায়” অর্থ এই আইনের বিধান অনুযায়ী হ্রাস করার পর আমানতকারীদের নিকট বিসিআই এর দায়৷
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি
৩৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড নামে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হইবে৷
 
 
 
 
(২) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন ব্যাংক একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসাবে নিবন্ধিত হইবে৷
 
 
 
 
(৩) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন), অতঃপর ব্যাংক কোম্পানী আইন বলিয়া উল্লিখিত, এবং Bangladesh Bank Order 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর বিধানাবলী, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে৷
ব্যাংকের উদ্যোক্তা
৪৷ বাংলাদেশ সরকার এবং বিসিআই এর শেয়ারহোল্ডারসহ বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, ব্যাংকের উদ্যোক্তা হইতে পারিবেন:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্থিরকৃত শর্তাদি কোন ব্যক্তি পূরণ না করিলে এবং বিসিআইতে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত দায়-দেনা থাকিলে তিনি ব্যাংকের উদ্যোক্তা হইতে পারিবেন না৷
মূলধন
৫৷ (১) ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হইবে ২০০ কোটি টাকা এবং তাহার পরিশোধিত মূলধন হইবে ৯২ কোটি টাকা৷
 
 
 
 
(২) বিভিন্ন শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার নিম্্নবর্ণিত হারে ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করিবেন, যথা:-
 
 
 
 
(ক) ব্যাংকের উদ্যোক্তাগণ, অতঃপর “ক” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার বলিয়া উল্লিখিত, ২০ কোটি টাকার শেয়ার;
 
 
 
 
(খ) তফসিলী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, অতঃপর “খ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার বলিয়া উল্লিখিত, ২০ কোটি টাকার শেয়ার;
 
 
 
 
(গ) আমানতকারী, অতঃপর “গ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার বলিয়া উল্লিখিত, ৫২ কোটি টাকার শেয়ার৷
 
 
 
 
(৩) যদি “খ” এবং “গ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সম্পূর্ণ শেয়ার ক্রয় না করেন, তাহা হইলে উক্ত অবিক্রীত শেয়ার “ক” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার এর নিকট বিক্রয় করা হইবে অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণে উক্ত শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার এবং জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করা হইবে৷
 
 
 
 
(৪) যদি “খ” এবং “গ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার তাহাদের জন্য নির্ধারিত অংশ হইতে অধিকতর শেয়ারের জন্য আবেদন করেন, তাহা হইলে সরকার “ক” শ্রেণীর জন্য নির্ধারিত অংশের শেয়ারের পরিমাণ হ্রাস করিয়া “খ” এবং “গ” শ্রেণীর শেয়ার বৃদ্ধি করিতে পারিবে৷
মূলধন বা শেয়ার মূল্য পরিশোধের পদ্ধতি
৬৷ (১) “ক” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করিবেন এবং উক্ত শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডারের বিসিআই এর পরিচালক বা উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে, উহাতে তাহার দায়মুক্ত শেয়ারের অর্থ সমন্বয়ের মাধ্যমে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করা যাইবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, দায়মুক্ত শেয়ার মূল্য যাহাই থাকুক না কেন, প্রত্যেক “ক” শ্রেণীর শেয়ার-হোল্ডারকে অন্যুন ৫০ লক্ষ টাকা নগদ প্রদানের মাধ্যমে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে৷
 
 
 
 
(২) “খ” শ্রেণীর কোন শেয়ারহোল্ডার অন্যুন ২ কোটি টাকা নগদ প্রদানের মাধ্যমে এবং উক্ত শ্রেণীর কোন শেয়ারহোল্ডার বিসিআই এর আমানতকারী হওয়ার ক্ষেত্রে বিসিআই এর নিকট হইতে প্রাপ্য ঋণ সমন্বয়ের মাধ্যমে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করিতে পারিবেন:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, বিসিআইকে প্রদত্ত ঋণের শুধু মাত্র আসল অংশ (সুদ বাদে) সমন্বয় করিয়া অবশিষ্ট শেয়ার মূল্য নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে পরিশোধ করিতে হইবে৷
 
 
 
 
(৩) “গ” শ্রেণীর কোন শেয়ারহোল্ডার নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে অথবা তাহার আমানত সমন্বয়ের মাধ্যমে অথবা উভয় পদ্ধতিতে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করিতে পারিবেন:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন আমানতকারীর আমানত স্থিতি হইতে প্রথমে বিসিআই এর নিকট তাহার দায়ের সমপরিমাণ অর্থ সমন্বয় করিয়া সংশ্লিষ্ট স্থিতির পরিমাণ নির্ণয় করিতে হইবে এবং অতঃপর উক্ত স্থিতি হইতে নিম্্নবর্ণিত হারে শেয়ার মূল্য পরিশোধ করা যাইবে:-
 
 
 
 
(ক) আমানত স্থিতির পরিমাণ যদি ১ লক্ষ টাকার কম হয়, তবে উক্ত স্থিতির ২৫ শতাংশ;
 
 
 
 
(খ) আমানত স্থিতির পরিমাণ যদি ১ লক্ষ টাকা বা তদূর্ধ কিন্তু ৫ লক্ষ টাকার কম হয়, তবে উক্ত স্থিতির ৩০ শতাংশ;
 
 
 
 
(গ) আমানত স্থিতির পরিমাণ যদি ৫ লক্ষ টাকা বা তদূর্ধ কিন্তু ১০ লক্ষ টাকার কম হয়, তবে উক্ত স্থিতির ৪০ শতাংশ;
 
 
 
 
(ঘ) আমানত স্থিতির পরিমাণ যদি ১০ লক্ষ টাকা বা তদূর্ধ হয়, তবে উক্ত স্থিতির ৫০ শতাংশ৷
 
 
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত হারে আমানত দায় হ্রাসপূর্বক “গ” শ্রেণীর কোন শেয়ারহোল্ডারের জন্য নির্ধারিত ৫২ কোটি টাকা মূলধনের সংস্থান না হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক যেরূপ স্থির করিবে তদনুযায়ী উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত হারের পরিবর্তন করিতে পারিবেন৷
পরিচালক পর্ষদ
৭৷ (১) ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদ ১১ জন পরিচালক সমন্বয়ে গঠিত হইবে যাহাদের মধ্যে “ক” শ্রেণীর ৪ জন, “খ” শ্রেণীর ২ জন এবং “গ” শ্রেণীর ৪ জন এবং সরকার মনোনীত ১ জন হইবেন:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৫ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর ব্যবস্থা মোতাবেক একই ধারার উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত শেয়ার অংশে যদি কম বেশী
 
 
হইয়া থাকে বা, ক্ষেত্রমত, শ্রেণী বহির্ভূত শেয়ারহোল্ডার থাকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালক পর্ষদের বিভিন্ন শ্রেণীর সদস্যের সংখ্যায় যথাযথভাবে হ্রাস বৃদ্ধি করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী পদাধিকার বলে পরিচালক পর্ষদের সদস্য হইবেন৷
 
 
 
 
(৩) অন্যুন ৭৫ লক্ষ টাকার শেয়ার না থাকিলে “ক” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পর্ষদের সদস্য হইবার বা থাকার যোগ্য হইবেন না৷
 
 
 
 
(৪) অন্যুন ১৩ লক্ষ টাকার শেয়ার না থাকিলে “গ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পর্ষদের সদস্য হইবার বা থাকার যোগ্য হইবেন না৷
 
 
 
 
(৫) সরকার কর্তৃক মনোনীত পরিচালক ব্যতীত সকল শ্রেণীভুক্ত শেয়ারহোল্ডার এবং শ্রেণী বহির্ভূত শেয়ারহোল্ডার, যদি থাকে, স্ব-স্ব গ্রুপের শেয়ারহোল্ডারদের ভোটে নির্বাচিত হইবেন৷
 
 
 
 
(৬) পরিচালক পর্ষদের একজন চেয়ারম্যান থাকিবেন, যিনি পরিচালকদের মধ্য হইতে তাহাদের ভোটে নির্বাচিত হইবেন৷
 
 
 
 
(৭) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংকের প্রথম পরিচালক পর্ষদ বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারিশক্রমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং উক্ত প্রথম পরিচালক পর্ষদের কার্যকালের মেয়াদ ধারা ১০ এর শর্তাংশের বিধান সাপেক্ষে, হইবে সর্বোচ্চ এক বত্সর হইবে৷
বিসিআই এর দায়গ্রস্তদের পরিচালক পর্ষদের সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্যতা
৮৷ বিসিআইতে ব্যক্তিগত দায় রহিয়াছে এমন কোন ব্যক্তি যদি তাহার দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন, তাহা হইলে তিনি পরিচালক পর্ষদের সদস্য হইতে পারিবেন৷
বিসিআই এর উদ্যোক্তা বা পরিচালক শেয়ার
৯৷ (১) বিসিআই এর কোন উদ্যোক্তা বা পরিচালক যদি, ব্যাংকের উদ্যোক্তা বা পরিচালক হইতে না পারেন বা উদ্যোক্তা বা পরিচালক হইবার অযোগ্য হন, তাহা হইলে তিনি বিসিআইতে তাহার দায়মুক্ত শেয়ার ব্যাংকের “ক” শ্রেণীর যে কোন শেয়ারহোল্ডারের নিকট বিক্রয় করিতে পারিবেন৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী বিসিআই এর কোন উদ্যোক্তা বা পরিচালকের শেয়ার বিক্রয় করা সম্ভব না হইলে অথবা অনুরূপভাবে বিক্রয়ের পর আরো শেয়ার অবশিষ্ট থাকিলে তিনি ব্যাংকের “গ” শ্রেণীর শেয়ারহোল্ডার হইবেন এবং উক্ত শ্রেণীর জন্য নির্ধারিত শেয়ার অংশের সহিত তাহা সমন্বয় করা হইবে অথবা তাহার ব্যক্তিগত দায়দেনা থাকিলে উহার সহিত সমন্বয় করা হইবে৷
প্রধান নির্বাহী
১০৷ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ব্যাংক কোম্পানী আইনের বিধান সাপেক্ষে নিযুক্ত হইবেন:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, ব্যাংকের প্রথম প্রধান নির্বাহী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে ২ বত্সরের জন্য নিযুক্ত হইবেন৷
দায়
১১৷ (১) বিসিআই এর হিসাব বহিতে হিসাবায়িত সকল দায় এর শুধুমাত্র আসল (সুদ ব্যতীত) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে এবং তদনুযায়ী সমন্বয়ের পর, নির্ধারিত দিনে ব্যাংকের দায় হইবে৷
 
 
 
 
(২) এই আইনের বিধান অনুযায়ী সমন্বয়ের পর হ্রাসকৃত দায় নগদ অর্থে অথবা পাওনাদার যেভাবে চাহেন নিম্্নবর্ণিত সূচী অনুযায়ী সেইভাবে পরিশোধ করা হইবে, যথা:-
 
 
 
 
টাকার পরিমাণ পরিশোধের সময়
 
 
প্রথম ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ০২ মাস পর হইতে ০৪ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ০৪ মাস পর হইতে ০৬ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ০৬ মাস পর হইতে ০৮ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ০৮ মাস পর হইতে ১০ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ১০ মাস পর হইতে ১২ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ২৫,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ১২ মাস পর হইতে ১৫ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ১৫ মাস পর হইতে ১৮ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ১৮ মাস পর হইতে ২১ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ২১ মাস পর হইতে ২৪ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ২৪ মাস পর হইতে ২৭ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ২৭ মাস পর হইতে ৩০ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৩০ মাস পর হইতে ৩৩ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৩৩ মাস পর হইতে ৩৬ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ৫০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৩৬ মাস পর হইতে ৪২ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ১,০০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৪২ মাস পর হইতে ৪৮ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ১,০০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৪৮ মাস পর হইতে ৫৪ মাসের মধ্যে৷
 
 
আরো ১,০০,০০০ টাকা নির্ধারিত দিনের ৫৪ মাস পর হইতে ৬০ মাসের মধ্যে৷
 
 
অবশিষ্ট স্থিতি নির্ধারিত দিনের ৬০ মাস পর৷
সম্ভাব্য দায়
১২৷ (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিসিআই এর সম্ভাব্য দায় এর বিপরীতে কোন দাবীদারের দাবীর সেই পরিমাণ অংশই পরিশোধ করা হইবে যাহা সংশ্লিষ্ট মার্জিন হিসাবে প্রাপ্ত অর্থ, সংশ্লিষ্ট জামানত হইতে সংগৃহীত অর্থ এবং যাহার পক্ষে বিসিআই কর্তৃক দায় গ্রহণ করা হইয়াছে তাহার নিকট হইতে অথবা তাহার পক্ষে অন্য কাহারো নিকট হইতে প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা সংকুলান সম্ভব হইবে৷
 
 
 
 
(২) যে সমস্ত ক্ষেত্রে বিসিআই এর সম্ভাব্য দায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অবলুপ্ত হইয়াছে সে সমস্ত ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মার্জিন হিসাবে স্থিতি সংক্রান্ত বিসিআই এর দায় ধারা ৬ এর বিধান অনুযায়ী সমন্বয়পূর্বক ধারা ১১(২) মোতাবেক পরিশোধ করা হইবে৷
বিসিআই এর সম্পদ ইত্যাদি ন্যস্তকরণ
১৩৷ (১) ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হওয়ার সংগে সংগে বিসিআই এর সমুদয় ব্যবসা, সম্পত্তি নগদ ও ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ এবং অন্যান্য সকল দাবী ও অধিকার, এই আইন অনুযায়ী হ্রাস অথবা সমন্বয়ের পর, ব্যাংকে ন্যস্ত হইবে৷
 
 
 
 
(২) ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পূর্বে বিসিআই পক্ষ ছিল এমন যে সকল চুক্তি, বণ্ড, ওকালতনামা এবং অনুরূপ অন্যান্য সকল দলিল কার্যকর ছিল সেই সকল চুক্তি, বণ্ড, ওকালতনামা বা অন্যান্য দলিল, এই আইনের বিধানাবলী এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত শর্তাবলী সাপেক্ষে, এমনভাবে ব্যাংকের চুক্তি, বণ্ড, ওকালতনামা ও অন্যান্য দলিল বলিয়া গণ্য হইবে যেন ব্যাংক কর্তৃক বা ব্যাংকের পক্ষে এইসব দলিল সম্পাদিত হইয়াছিল৷
নির্ধারিত দিনের পর আমানতের উপর প্রদেয় সুদ
১৪৷ কোন আইন কিংবা চুক্তিতে অন্য রকম যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংকের উপর ন্যস্ত আমানতের উপর পরিচালক পর্ষদ কর্তৃক নির্ধারিত হারে সুদ প্রদেয় হইবে৷
বিসিআই এর কর্মকর্তা ও কর্মচারী
১৫৷ (১) ২৮শে এপ্রিল, ১৯৯২ ইং তারিখে বিসিআই এর চাকুরীতে নিযুক্ত ছিলেন এবং যাহাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ বা মামলা নাই এমন সকল কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্ধারিত দিনে ব্যাংকে বদলী হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তাহারা যে শর্তাধীনে বিসিআই এর কর্মকর্তা বা কর্মচারী ছিলেন সেই একই শর্তাধীনে ব্যাংকের কর্মকর্তা বা কর্মচারী হইবেন এবং তাহাদের চাকুরীর ধারাবাহিকতা বজায় থাকিবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এইসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী ২৮শে এপ্রিল, ১৯৯২ ইং তারিখ হইতে নির্ধারিত দিন পর্যন্ত সময়কালের জন্য কোন বেতন ও ভাতা দাবী করিতে পারিবেন না:
 
 
 
 
আরো শর্ত থাকে যে, বিসিআই এ কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ২৮শে এপ্রিল, ১৯৯২ ইং এর পূর্বের বিসিআই এর নিকট কোন পাওনা থাকিলে তাহা ব্যাংক পরিশোধ করিবে৷
 
 
 
 
(২) ব্যাংক নির্ধারিত দিনের ৩ মাসের মধ্যে, উহার কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের জন্য অন্যান্য ব্যাংকের সমতুল্য করিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে, চাকুরীর শর্তাবলী নির্ধারণ করিবে এবং উহাতে যদি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত সুবিধাদি হ্রাস পায় তাহা হইলে ঐ কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোন আপত্তি করিতে পারিবেন না৷
 
 
 
 
(৩) এই ধারার এবং বিসিআই এর সাথে উহার কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর চাকুরী সংক্রান্ত চুক্তিতে অন্য রকম যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, ব্যাংকের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করিলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন ব্যাংকে বদলীকৃত বিসিআই এর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কারণ না দর্শাইয়া বরখাস্ত করিতে পারিবে এবং কাহাকেও এইরূপে বরখাস্ত করা হইলে, প্রচলিত বিধি মোতাবেক তাহার প্রাপ্য দেওয়া হইবে৷
মামলা-মোকদ্দমা
১৬৷ (১) বিসিআই কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা-মোকদ্দমা ব্যাংক কর্তৃক বা ব্যাংকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বলিয়া গণ্য হইবে৷
 
 
 
 
(২) বিসিআই এর নিকট হইতে পাওনা আদায়ের জন্য কেহ ইতিপূর্বে আদালতে মামলা দায়ের করিয়া থাকিলে তিনি উক্ত মামলা প্রত্যাহারপূর্বক ১১(২) ধারা অনুযায়ী তাহার পাওনা গ্রহণ করিতে পারিবেন৷
 
 
 
 
(৩) Limitation Act, 1908 (IX of 1908) বা আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনের কোন কিছুই বিসিআই এর কোন দাবী ক্ষুণ্ন করিবে না৷
বিসিআই কর্তৃক লেনদেনকৃত অথচ লিপিবদ্ধ হয় নাই এমন লেনদেনের সমন্বয়
১৭৷ যে সকল লেন-দেন বিসিআই কর্তৃক আইনসম্মতভাবে নিষ্পন্ন হইয়াছে অথচ নির্ধারিত দিনের পূর্বে বিসিআই এর হিসাব বহিতে লিপিবদ্ধ হয় নাই সেইগুলি, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মধ্যে, বিসিআই এর হিসাব বহিতে লিপিবদ্ধ করা যাইবে এবং অনুরূপ লিপিবদ্ধকরণ বিসিআই কর্তৃক লিপিবদ্ধ বলিয়া গণ্য হইবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এ ধরনের লেন-দেনগুলির মধ্যে যে সব লেন-দেন আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন হয় নাই বলিয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রতীয়মান হইবে তাহা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী অথবা দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে সম্পন্ন করা হইবে৷
দায়মুক্ত
১৮৷ এই আইনের অধীনে সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক বা উহাদের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷
আইনের অন্তর্ভুক্ত হয় নাই এমন কোন বিষয়
১৯৷ এই আইনের অন্তর্ভুক্ত নাই অথচ ইহার উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রয়োজন ছিল বিসিআই অথবা ব্যাংক সম্পর্কিত এমন যে কোন বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করিবে এবং এইরূপ নির্দেশ এই আইনের বিধান হিসাবে গণ্য হইবে৷
জটিলতা নিরসনের ক্ষমতা
২০৷ (১) এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থে, আদেশ দ্বারা যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পাঁচ বছর পর এই ধারার অধীন কোন আদেশ প্রদান করা যাইবে না৷
 
 
 
 
(২) এই ধারার অধীন প্রদত্ত সকল আদেশ সরকার যত শীঘ্র সম্ভব জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করিবে৷
কার্যক্রমের হেফাজত
২১৷ ২৮শে এপ্রিল, ১৯৯২ ইং তারিখ হইতে বিসিআই এর আমানতকারী ও পাওনাদারদের স্বার্থে সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করিয়াছে সেই সকল কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোন আপত্তি গ্রহণযোগ্য হইবে না৷
ব্যাখ্যা
২২৷ এই আইনের কোন বিষয়ে প্রশ্ন বা সংশয় দেখা দিলে সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে, তাহাই চূড়ান্ত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট সকলে সেই ব্যাখ্যা মানিতে বাধ্য থাকিবেন৷
 
 
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs