প্রিন্ট ভিউ
আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রদানকল্পে প্রণীত আইন৷
যেহেতু আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রদান সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
1[২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
(ক) “আইনগত সহায়তা” অর্থ-
(অ) আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীকে-
(১) কোন আদালতে দায়েরযোগ্য, দায়েরকৃত বা বিচারাধীন মামলায় আইনি পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান;
(২) Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এবং প্রচলিত অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে মধ্যস্থতার মাধ্যমে কোন বিরোধ বা মামলা নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে নিযুক্ত মধ্যস্থতাকারী বা এই আইনের অধীন নিযুক্ত স্পেশাল মেডিয়েটরকে সম্মানি প্রদান;
(৩) মামলার আনুষঙ্গিক খরচ প্রদানসহ অন্য যে কোন সহায়তা প্রদান;
(আ) যে কোন আবেদনকারীকে আইনি তথ্য ও পরামর্শসেবা প্রদান;
(ই) মামলাপূর্ব যেকোন বিরোধ মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি;
(ঈ) যেকোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রেরিত মামলা মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি;
(খ) “আদালত” অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের উভয় বিভাগসহ বাংলাদেশের যেকোন আদালত;
(গ) “আবেদন” বা ‘দরখাস্ত’ অর্থ আইনগত সহায়তা প্রাপ্তির কোন আবেদন বা দরখাস্ত;
(ঘ) “চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;
(ঙ) “চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার”, “লিগ্যাল এইড অফিসার” অর্থ ধারা ২১ক এর অধীন নিয়োগকৃত চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার ও লিগ্যাল এইড অফিসার;
(চ) “জেলা কমিটি” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত জেলা কমিটি;
(ছ) “নির্বাহী পরিচালক” অর্থ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক;
(জ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(ঝ) “বিচারপ্রার্থী” অর্থ কোন আদালতে দায়েরযোগ্য বা দায়েরকৃত দেওয়ানী, পারিবারিক বা ফৌজদারী বা অন্য কোন মামলার সম্ভাব্য বা প্রকৃত বাদী, বিবাদী, ফরিয়াদী বা আসামী;
(ঞ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
ট) “বিশেষ কমিটি” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত বিশেষ কমিটি;
ঠ) “বোর্ড” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত জাতীয় পরিচালনা বোর্ড;
(ড) “মধ্যস্থতা” অর্থ এমন একটি আইনি প্রক্রিয়া যাহা এই আইনের অধীন নিয়োজিত চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার, লিগ্যাল এইড অফিসার বা স্পেশাল মেডিয়েটর কর্তৃক বিবদমান পক্ষগণের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনে পক্ষদের বা তাহাদের প্রতিনিধিদের শারীরিক বা ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সহায়তা করা, যাহা মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা (Pre-case Mediation) এবং আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রেরিত মামলা দায়ের-পরবর্তী মধ্যস্থতা (Post-case Mediation)-কে অন্তর্ভুক্ত করিবে;
(ঢ) “মধ্যস্থতাকারী” অর্থ চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার, লিগ্যাল এইড অফিসার বা, ক্ষেত্রমত, স্পেশাল মেডিয়েটর;
(ণ) “মধ্যস্থতা-চুক্তি (Mediation Agreement)” অর্থ মধ্যস্থতার মাধ্যমে পক্ষগণ কর্তৃক সম্পাদিত এবং চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার কর্তৃক প্রত্যায়িত চুক্তিপত্র;
(ত) “সদস্য” অর্থ বোর্ড বা, ক্ষেত্রমত, সুপ্রীম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি, বিশেষ কমিটি, উপজেলা কমিটি বা ইউনিয়ন কমিটির কোন সদস্য;
(থ) “সংস্থা” অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা;
(দ) “সুপ্রীম কোর্ট কমিটি” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত সুপ্রীম কোর্ট কমিটি;
(ধ) “স্পেশাল মেডিয়েটর” অর্থ ধারা ১৫ক এর উপ-ধারা (১) এর অধীন তালিকাভুক্ত স্পেশাল মেডিয়েটর।]
৫৷ (১) সংস্থার পরিচালনা ও প্রশাসন একটি পরিচালনা বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং সংস্থা যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে পরিচালনা বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
(২) সংস্থা উহার কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নীতি অনুসরণ করিবে।
2[৬। (১) জাতীয় পরিচালনা বোর্ড নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী/উপদেষ্টা, যিনি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হইবেন;
(খ) জাতীয় সংসদের স্পিকার মনোনীত ২ (দুই) জন সংসদ-সদস্য, যাহাদের একজন সরকারদলীয় এবং অপরজন বিরোধীদলীয় হইবেন;
(গ) বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল;
(ঘ) সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়;
(ঙ) সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ;
(চ) সচিব, অর্থ বিভাগ;
(ছ) সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ;
(জ) সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়;
(ঝ) সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়;
(ঞ) রেজিস্ট্রার জেনারেল, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট;
(ট) মহা-পুলিশ পরিদর্শক;
(ঠ) মহা-কারা পরিদর্শক;
(ড) ভাইস-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল;
(ঢ) সভাপতি, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি;
(ণ) চেয়ারম্যান, জাতীয় মহিলা সংস্থা;
(ত) সরকার কর্তৃক মনোনীত আইন ও অধিকার সম্পর্কিত বেসরকারি সংস্থার ৩ (তিন) জন প্রতিনিধি;
(থ) সরকার কর্তৃক নারী সংস্থা হইতে মনোনীত ৩ (তিন) জন প্রতিনিধি; এবং
(দ) নির্বাহী পরিচালক, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ত) ও (থ) এ উল্লিখিত সদস্যগণের প্রত্যেকে স্ব স্ব মনোনয়ন প্রাপ্তির তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, উপযুক্ত কারণ উদ্ভব হইলে সরকার উপ-ধারা (১) এর দফা (ত) ও (থ) এ উল্লিখিত সদস্যগণের যে কাহারো মনোনয়ন মেয়াদপূর্তির পূর্বেই বাতিল করিতে পারিবে:
আরও শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর দফা (ত) ও (থ) এ উল্লিখিত সদস্যগণ সরকার বরাবর পদত্যাগপত্র প্রেরণপূর্বক স্বীয় পদ হইতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।]
৭৷ সংস্থার দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীগণের আইনগত সহায়তা পাওয়ার যোগ্যতা নিরূপণ ও উহা প্রদান সম্পর্কিত বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা;
3[(খ) আইনগত সহায়তা প্রদান কর্মসূচির বিস্তার, মানোন্নয়ন ও বিকাশে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা;]
(গ) আইনগত সহায়তা প্রদানের লতেগ্য শিতগা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা করা;
4[(গগ) আইনগত সহায়তা প্রদান নিশ্চিতকল্পে সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
(গগগ) আইনগত সহায়তা প্রদান নিশ্চিতকল্পে সুপ্রীম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি, বিশেষ কমিটি, উপজেলা কমিটি বা ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;]
(ঘ) আইনগত সহায়তা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লতেগ্য রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করা;
5[(ঙ) জেলা কমিটি বা বিশেষ কমিটি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত আবেদন বা দরখাস্ত বিবেচনা করা;
(চ) সুপ্রীম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি এবং বিশেষ কমিটির কার্যাবলী তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ এবং উহাদের কার্যাবলী সরেজমিনে পরিদর্শন করা;
(ছ) আইনগত অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করিবার লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যথা:—
(অ) আইনগত শিক্ষা বিস্তারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা;
(আ) আইনগত তথ্য সহজলভ্য করা;
(ই) আইনগত মৌলিক ধারণালব্দ জনগোষ্ঠীর হার বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা;
(ঈ) ন্যায় বিচারে সহজ অভিগম্যতা নিশ্চিত করা;
(উ) সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজনসহ আইনগত সহায়তার তথ্য সম্বলিত বুকলেট, পুস্তিকা, ইত্যাদি প্রকাশ করা 6[;]
7[(ছছ) এই আইনের অধীন নিযুক্ত চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার, লিগ্যাল এইড অফিসার এবং স্পেশাল মেডিয়েটরগণের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান করা;
(ছছছ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, যেকোন সরকারি অথবা বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি, সমঝোতা-স্মারক, ইত্যাদি সম্পাদন ও যেকোন ধরনের সহায়তা গ্রহণ করা;]
(জ) উপরি-উক্ত দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন কাজ করা ।
8[৮ক। (১) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে সুপ্রীম কোর্ট কমিটি নামে একটি কমিটি থাকিবে এবং উহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা: —
(ক) 9[বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি] কর্তৃক মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
10[(কক) বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন রেজিস্ট্রার;]
(খ) সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এবং উক্ত সমিতি কর্তৃক মনোনীত সমিতির অন্য একজন সদস্য;
(গ) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত মানবাধিকার ও সমাজকল্যাণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী দুইজন আইনজীবী, যাহাদের মধ্যে একজন মহিলা থাকিবেন;
(ঘ) বোর্ড কর্তৃক মনোনীত জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত আইন ও মানবাধিকার ইস্যুতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারি সংস্থার দুইজন প্রতিনিধি;
(ঙ) বাংলাদেশের অ্যাটর্নি-জেনারেল কর্তৃক মনোনীত একজন অন্যূন ডেপুটি অ্যাটর্নি-জেনারেল;
(চ) বোর্ডের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত সংস্থার অন্যূন উপ-পরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
11[(ছ) লিগ্যাল এইড অফিসার, সুপ্রীম কোর্ট, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন;]
(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এবং (ঘ) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।
৯৷ (১) প্রত্যেক জেলায় সংস্থার একটি জেলা কমিটি থাকিবে এবং উহা উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেতেগ নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) জেলা ও দায়রা জজ, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
12[(কক) চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা তৎকর্তৃক মনোনীত অন্যূন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;]
13[(খ) জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বা তত্কর্তৃক মনোনীত অন্যুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;]
14[(গ) জেলা পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বা তত্কর্তৃক মনোনীত অন্যুন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট পদমর্যদার একজন কর্মকর্তা;]
15[(গগ) সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন বা তৎকর্তৃক মনোনীত একজন ডেপুটি সিভিল সার্জন;]
(ঘ) জেলার জেল সুপারিনটেনডেন্ট;
(ঙ) জেলা সমাজকল্যাণ বিষয়ক কর্মকর্তা, যদি থাকে;
16[(চ) জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, যদি থাকে;
(চচ) জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, যদি থাকে;
(চচচ) জেলা তথ্য কর্মকর্তা;]
(ছ) জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা কমিটির চেয়ারম্যান বা তত্কর্তৃক মনোনীত কমিটির একজন প্রতিনিধি;
17[(ছছ) সরকার কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট জেলার পৌরসভার একজন মেয়র, একজন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি;]
(জ) জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি;
(ঝ) জেলার সরকারী উকিল;
(ঞ) জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর;
18[(ঞঞ) মহানগর দায়রা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর;]
(ট) জেলার বেসরকারী কারাগার পরিদর্শক, যদি থাকে, তাহাদের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন বেসরকারী কারাগার পরিদর্শক;
19[(টট) পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত উক্ত জেলা পরিষদের দুইজন সদস্য, যাহাদের মধ্যে একজন মহিলা থাকিবেন;]
(ঠ) জেলা কমিটির চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত জেলার বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যদি থাকে, এর একজন প্রতিনিধি;
20[(ড) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক;]
21[(ঢ) 22[চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার], যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।]
(২) যেইসব জেলায় মেট্রোপলিটন শহর রহিয়াছে সেইসব জেলার জেলা কমিটিতে 23[মহানগর দায়রা জজ,] চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারও সদস্য থাকিবেন৷
24[(২ক) যদি কোন জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকে, তাহা হইলে উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জেলা কমিটির সদস্য হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, কোন জেলায় একাধিক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থাকিলে উক্ত ট্রাইব্যুনালসমূহে কর্মরত বিচারকগণের মধ্যে যিনি জ্যেষ্ঠ এবং নিয়োগপ্রাপ্ত বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরগণের মধ্যে যিনি জ্যেষ্ঠ, সদস্য হইবেন৷]
25[(২খ) যে সকল জেলায় সিটি কর্পোরেশন রহিয়াছে সেই সকল জেলায় জেলা কমিটিতে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র কর্তৃক মনোনীত দুইজন কাউন্সিলর, যাহাদের মধ্যে একজন মহিলা থাকিবেন।]
26[(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ছ), (ট) ও (ঠ) এর অধীন মনোনীত সদস্যগণ এবং দফা (ছছ) এর অধীন মনোনীত গণ্যমান্য ব্যক্তি তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই মনোনয়নকারী কর্তৃপক্ষ কোন কারণ না দর্শাইয়া উক্তরূপ কোন সদস্যকে তাহার পদ হইতে অপসারণ করিতে পারিবেঃ
আরো শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ কোন সদস্য সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।]
১৫৷ (১) 34[সুপ্রীমকোর্ট কমিটি] এই আইনের আওতায় প্রদত্ত আইনগত সহায়তার অধীনে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টে দায়েরযোগ্য বা দায়েরকৃত মামলার পরামর্শ প্রদান ও মামলা পরিচালনার জন্য সুপ্রীমকোর্টের মামলা পরিচালনায় অন্যুন 35[৫ (পাঁচ)] বত্সরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইনজীবীগণের মধ্য হইতে একটি তালিকা প্রণয়ন করিবে 36[;]
37[তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজগণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিলযোগ্য।]
(২) প্রত্যেক জেলা কমিটি এই আইনের আওতায় প্রদত্ত আইনগত সহায়তার অধীনে জেলার কোন আদালতে দায়েরযোগ্য বা দায়েরকৃত মামলার পরামর্শ প্রদান ও মামলা পরিচালনার জন্য জেলা আদালতে মামলা পরিচালনায় অন্যুন ৫ (পাঁচ) বত্সরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইনজীবীগণের মধ্য হইতে একটি তালিকা প্রণয়ন করিবে৷
38[(২ক) বিশেষ কমিটি এই আইনের আওতায় প্রদত্ত আইনগত সহায়তার অধীনে শ্রম আদালত বা চৌকি আদালতে দায়েরযোগ্য বা দায়েরকৃত মামলার পরামর্শ প্রদান ও মামলা পরিচালার জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রম আদালত বা চৌকি আদালতে মামলা পরিচালনায় অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আইনজীবীগণের মধ্য হইতে একটি তালিকা প্রণয়ন করিবে।]
(৩) এই ধারার অধীন প্রণীত প্রত্যেক তালিকায় অন্যুন 39[এক-তৃতীয়াংশ] মহিলা আইনজীবী, যদি উপযুক্ত পাওয়া যায়, রাখা হইবে৷
(৪) কোন বিচারপ্রার্থীর আবেদন বা দরখাস্ত বিবেচনাক্রমে যদি কোন ক্ষেত্রে, আইনগত সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তাহা হইলে 40[সুপ্রীম কোর্ট কমিটি বা, ক্ষেত্রমত, জেলা কমিটি বা বিশেষ কমিটি] উক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কোন আইনজীবীকে এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত করিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ নিযুক্তির ক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থীর পছন্দ, যতদূর সম্ভব, বিবেচনা করা হইবে।
41[(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিযুক্ত আইনজীবীকে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হারে সম্মানি বা ফি প্রদান করা হইবে।]
42[১৫ক। (১) এই আইনের অধীনে স্পেশাল মেডিয়েটর হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংস্থা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এবং মধ্যস্থতা বিষয়ে অভিজ্ঞ ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আইনজীবীগণের মধ্য হইতে স্পেশাল মেডিয়েটরগণের একটি তালিকা প্রস্তুত করিবে।
(২) সংস্থা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, উক্ত তালিকা হইতে প্রত্যেক লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতা কার্যক্রমের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্পেশাল মেডিয়েটর নিয়োগ প্রদান করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত স্পেশাল মেডিয়েটরগণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে দায়িত্ব পালন করিবে।
(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত স্পেশাল মেডিয়েটরকে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্মানি বা ফি প্রদান করা হইবে।]
২১৷ (১) সংস্থার একজন 48[নির্বাহী পরিচালক] থাকিবেন এবং তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন৷
(২) 49[নির্বাহী পরিচালক], সংস্থার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন এবং বোর্ডের নির্দেশ মোতাবেক সংস্থার কার্য সম্পাদন করিবেন।
(৩) সংস্থা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন 50[নির্বাহী পরিচালক] নিয়োগ না হওয়া অবধি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্য হইতে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত কোন কর্মকর্তা 51[নির্বাহী পরিচালক]রূপে কাজ করিবেন৷
(৫) উপ-ধারা (৩) এর অধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ না হওয়া অবধি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় উহার বিদ্যমান কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য হইতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী দ্বারা উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কার্য সম্পাদনে 52[নির্বাহী পরিচালক]কে সহায়তা প্রদান করিবে।
54[২১ক। 55[(১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের মধ্য হইতে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার এবং লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ ও পদায়ন করিবে এবং তাহাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সংস্থা, সময় সময়, আদেশ দ্বারা নির্ধারণ করিবে।]
56[(১ক) উপ-ধারা (১) এর অধীন চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত সংস্থা আদেশ দ্বারা লিগ্যাল এইড অফিসারকে, ক্ষেত্রমত, চীফ লিগ্যাল এইড অফিসারের দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।]
57[(২) চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার বা লিগ্যাল এইড অফিসার আইনগত সহায়তা প্রার্থীকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আইনি পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবে, মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার (Pre-case Mediation) উদ্যোগ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং প্রচলিত আইনের অধীন আপসযোগ্য যে কোন বিষয় কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল মামলা দায়ের-পরবর্তী মধ্যস্থতা (Post-case Mediation) কার্যক্রমের জন্য প্রেরণ করিলে উহা নিষ্পত্তির ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অফিসারের থাকিবে।]]
58[59[২১খ। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা বিষয়ে এই আইনের বিধানাবলি কার্যকর হইবে।
(২) এই আইনের তফসিলে বর্ণিত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে, সংক্ষুব্ধ পক্ষকে আবশ্যিকভাবে উক্ত বিরোধ প্রথমে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে আবেদন করিতে হইবে, এবং মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া ব্যর্থ হইলে বিরোধের কোন পক্ষ প্রয়োজনে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) অনুসারে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে মামলা দায়েরকারীকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট আদালতে বাধ্যতামূলকভাবে দাখিল করিতে হইবে।
(৪) উপ-ধারা (২) অনুসারে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ায় ব্যয়িত সময় তামাদির মেয়াদ গণনার ক্ষেত্রে বাদ যাইবে।
(৫) এই আইনের অধীন মধ্যস্থতা কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার, লিগ্যাল এইড অফিসার বা ক্ষেত্রমত, স্পেশাল মেডিয়েটর এর অধিক্ষেত্র সমগ্র জেলা ব্যাপী নির্ধারিত হইবে।
60[২১গ। (১) পক্ষগণের সহি/স্বাক্ষর ও মধ্যস্থতাকারীর স্বাক্ষরক্রমে সম্পাদিত এবং চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রতিটি মধ্যস্থতা চুক্তি চূড়ান্ত, বলবৎযোগ্য এবং পক্ষগণের উপর বাধ্যকর হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন চুক্তি আদালতের ডিক্রি অথবা ক্ষেত্রমত, চূড়ান্ত আদেশ হিসাবে গণ্য হইবে এবং এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতের মাধ্যমে উক্ত ডিক্রি বা আদেশ জারি করা যাইবে।
২১ঘ। এই আইনের অধীন মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা কার্যক্রম চলমান অবস্থায় বিশেষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ উদ্ভূত হইলে লিগ্যাল এইড অফিস প্রয়োজনীয় আদেশ বা নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত আদেশ বা নির্দেশ বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করিবে।
২১ঙ। এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে (in Good Faith) কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য বোর্ড, চেয়ারম্যান, সদস্য, নির্বাহী পরিচালক বা সংস্থার অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী, চীফ লিগ্যাল এইড অফিসার, লিগ্যাল এইড অফিসার বা স্পেশাল মেডিয়েটর এর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন প্রকার আইনগত কার্যধারা রুজু করিতে পরিবেন না। ]
২২৷ সংস্থা উহার ক্ষমতা বা দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট শর্তে উহার চেয়ারম্যানকে অর্পণ করিতে পারিবে।