নিলাম বিক্রয়
৩৩৷ (১) অর্থ ঋণ আদালত ডিক্রী বা আদেশ জারীর সময় কোন সম্পত্তি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বাদীর খরচে বিজ্ঞপ্তি প্রচারের তারিখ হইতে অন্যুন ১৫ (পনের) দিবসের সময় দিয়া সীলমোহরকৃত টেন্ডার আহ্বান করিবে, উক্ত বিজ্ঞপ্তি কমপক্ষে বহুল প্রচারিত একটি বাংলা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়, তদুপরি ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করিলে স্থানীয় একটি পত্রিকায়, যদি থাকে, প্রকাশ করিবে; এবং আদালতের নোটিশ বোর্ডে লটকাইয়া ও স্থানীয়ভাবে ঢোল সহরত যোগেও উক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রচার করিবে৷
[(২) প্রত্যেক দরদাতা, উদ্ধৃত দর অনূর্ধ্ব ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকা হইলে উহার ২০%, উদ্ধৃত দর ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকা অপেক্ষা অধিক এবং অনূর্ধ্ব ৫০,০০,০০০ (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা হইলে উহার ১৫% এবং উদ্ধৃত দর ৫০,০০,০০০ (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা অপেক্ষা অধিক হইলে উহার ১০% এর সমপরিমান টাকার, জামানতস্বরূপ, ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার আদালতের অনুকূলে দরপত্রের সহিত দাখিল করিবেন।
(২ক) দরপত্র সরাসরি নির্দিষ্ট দরপত্র বাক্সে কিংবা রেজিস্ট্রীকৃত ডাকযোগে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণের মাধ্যমে দাখিল করিতে হইবে।
(২খ) অনূর্ধ্ব ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকার উদ্ধৃত দর গৃহীত হইবার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিবসের মধ্যে, ১০,০০,০০০ (দশ লক্ষ) টাকা অপেক্ষা অধিক এবং অনূর্ধ্ব ৫০,০০,০০০ (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকার উদ্ধৃত দর গৃহীত হইবার পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিবসের মধ্যে এবং ৫০,০০,০০০ (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকার অধিক উদ্ধৃত দর গৃহীত হইবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে, দরদাতা সমুদয় মূল্য পরিশোধ করিবেন এবং তাহা করিতে ব্যর্থ হইলে আদালত জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট ডিক্রীদার-আর্থিক প্রতিষ্ঠান লিখিত দরখাস্ত দাখিল করিয়া দায়িকের সুবিধার্থে সময়সীমা বর্ধিত করিবার জন্য অনুরোধ করিলে, আদালত এই উপ-ধারার অধীন নির্ধারিত সময়সীমার অনূর্ধ্ব ৬০ (ষাট) দিবস পর্যন্ত বর্ধিত করিতে পারিবে।
(২গ) ডিক্রীদারের পক্ষে যদি লিখিতভাবে আদালতকে এই মর্মে অবহিত করা হয় যে, উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত দরপত্রে সম্পত্তির প্রস্তাবকৃত মূল্য অস্বাভাবিকভাবে অপর্যাপ্ত বা কম এবং আদালত যদি উহাতে একমত পোষন করে, তাহা হইলে আদালত, কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, উক্ত দর প্রস্তাব অগ্রাহ্য করিতে পারিবে।]
(৩) [উপ-ধারা (২খ) এর অধীনে] জামানত বাজেয়াপ্ত হইলে উহার অর্থ ডিক্রীদারকে প্রদান করা হইবে, ডিক্রীকৃত দাবীর সহিত উক্ত অর্থ সমন্বয় করা হইবে, এবং অতঃপর আদালত, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা কতর্ৃক উদ্ধৃত দর এবং পূর্বে বাজেয়াপ্তকৃত জামানত একত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা কতর্ৃক উদ্ধৃত দর অপেক্ষা কম না হইলে, উক্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে সম্পত্তি নিলাম খরিদ করিতে আহ্বান করিবে; এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা [ আহুত হইবার পর উপ-ধারা (২খ) এ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পুর্ণ মূল্য] পরিশোধ করিবেন এবং তাহা করিতে ব্যর্থ হইলে তাঁহার জামানত বাজেয়াপ্ত হইবে এবং জামানতের উক্ত অর্থ ডিক্রীদারকে ডিক্রীর দাবীর সহিত সমন্বয় করিবার জন্য প্রদান করা হইবে।
(৪) কোন সম্পত্তি [উপ-ধারা (১), (২), (২ক), (২খ), (২গ) ও (৩) এর বিধান অনুসারে] নীলামে বিক্রয় করা সম্ভব না হইলে, আদালত পুনরায় কমপক্ষে বহুল প্রচারিত ২(দুই)টি বাংলা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়, তদুপরি ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করিলে স্থানীয় একটি পত্রিকায়, যদি থাকে, উপ-ধারা (১) এর অনুরূপ পদ্ধতিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাইয়া এবং আদালতের নোটিশ বোর্ডে নোটিশ টাংগাইয়া ও স্থানীয়ভাবে ঢোল সহরতযোগে সীলমোহরকৃত টেন্ডার আহ্বান করিবে; এবং বিক্রয় ও বাজেয়াপ্ত বিষয়ে [উপ-ধারা (২), (২ক), (২খ), (২গ) ও (৩) এ উল্লিখিত বিধান] অনুসরণ করিবে।
[(৪ক) উপ-ধারা (১) ও (৪) এর অধীন পত্রিকার মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি জারী করিবার ক্ষেত্রে, বাদী লিখিতভাবে আদালতকে যে পত্রিকার নাম অবহিত করিবেন আদালত তদনুযায়ী উক্ত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাইবে।]
(৫) কোন সম্পত্তি [উপ-ধারা (১), (২), (২ক), (২খ), (২গ), (৩) ও (৪) এর বিধান অনুসারে] বিক্রয় করা সম্ভব না হইলে, উক্ত সম্পত্তি, ডিক্রীকৃত দাবী পরিপূর্ণভাবে পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, দখল ও ভোগের অধিকারসহ ডিক্রীদারের অনুকূলে ন্যস্ত করা হইবে, এবং ডিক্রীদার [উপ-ধারা (১), (২), (২ক), (২খ), (২গ), (৩) ও (৪) এর বিধান অনুসারে] উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় করিয়া অপরিশোধিত ডিক্রীর দাবী আদায় করিতে পারিবে, এবং আদালত ঐ মর্মে একটি সার্টিফিকেট ইসু্য করিবে।
(৬) ডিক্রীকৃত অংকের অতিরিক্ত অর্থ বিক্রয় বাবদ আদায় হইলে, উক্ত অতিরিক্ত অর্থ দায়িককে ফেরত্ প্রদান করিতে হইবে, এবং বিক্রীকৃত অর্থ ডিক্রীর দাবী অপেক্ষা কম হইলে অবশিষ্ট অর্থ বাবদ, ২৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে, আরো জারীর মামলা গ্রহণযোগ্য হইবে৷
[(৬ক) উপ-ধারা (৫) ও (৬) এর বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যেক্ষেত্রে কোন সম্পত্তি, দখল ও ভোগের অধিকারসহ, ডিক্রিদারের অনুকূলে ন্যস্ত করা সত্বেও ডিক্রিদার উক্ত সম্পত্তি উপযুক্ত মূল্যে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় করিতে অসমর্থ হন, সেক্ষেত্রে উক্ত সম্পত্তির নির্ধারিত মূল্য কিংবা যুক্তিসংগত আনুমানিক মূল্য বাদ দিয়া, ধারা ২৮ এর বিধান সাপেক্ষে, জারীর মামলা দায়ের করা যাইবে।
(৬খ) এই ধারায় ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৫) এর অধীন কোন সমপত্তি, দখল ও ভোগের অধিকারসহ, ডিক্রীদারের অনুকূলে ন্যস্ত হইবার ক্ষেত্রে, অনুরূপ ন্যস্ত হইবার ৬ (ছয়) বৎসরের মধ্যে উপ-ধারা (৭) এর অধীন ডিক্রীদারের পক্ষে আদালতের নিকট লিখিত আবেদন করিয়া উক্ত সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করা যাইবে এবং তাহা না করা হইলে ৬ (ছয়) বৎসর উত্তীর্ণ হইবার সাথে সাথেই উক্ত সম্পত্তিতে ডিক্রীদারের মালিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বর্তিত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট আদালত হইতে তৎমর্মে ঘোষণা বা সনদ গ্রহণ করা যাইবে।]
(৭) উপ-ধারা (৪) ও (৫) এর বিধান সত্ত্বেও, ডিক্রীদার, উলি্লখিত সম্পত্তি মালিকানাসত্ত্বে পাইতে আগ্রহী মর্মে আদালতের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করিলে, আদালত, [উপ-ধারা (১), (২), (২ক), (২খ), (২গ) ও (৩) এর বিধানাবলীর কোনরূপ হানি না ঘটাইয়া], উপ-ধারা (৪) ও (৫) এর কার্যক্রম অনুসরণ করা হইতে বিরত থাকিবে; এবং ডিক্রীদারের প্রার্থিতমতে উল্লেখিত সম্পত্তির স্বত্ত্ব ডিক্রীদারের অনুকূলে ন্যস্ত হইয়াছে মর্মে ঘোষণা প্রদানপূর্বক তৎমর্মে একটি সনদপত্র জারী করিবে এবং জারীকৃত এইরূপ সনদপত্র সত্ত্বের দলিল হিসাবে গণ্য হইবে; এবং আদালত উহার একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সাব- রেজিষ্ট্রারের অফিসে নিবন্ধনের জন্য প্রেরণ করিবে।
[(৭ক) উপ-ধারা (৫) বা (৭) এর অধীন সম্পত্তির দখল আদালতযোগে প্রাপ্ত হওয়া আবশ্যক হইলে, ডিক্রীদারের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে আদালত ডিক্রীদারকে উক্ত সম্পত্তির দখল অর্পণ করিতে পারিবে।
(৭খ) উপ-ধারা (৭ক) এর অধীন ডিক্রীদারকে সম্পত্তির দখল অর্পণ করিবার পূর্বে আদালতকে পুনঃ নিশ্চিত হইতে হইবে যে, উক্ত সম্পত্তিই আইনানুগভাবে উহার প্রকৃত মালিক কর্তৃক ডিক্রীর সংশ্লিষ্ট ঋণের বিপরীতে বন্ধক প্রদান করা হইয়াছিল অথবা ডিক্রী কার্যকর করিবার লক্ষ্যে দায়িকের প্রকৃত স্বত্ব দখলীয় সম্পত্তি হিসাবে উক্ত সম্পত্তিই ক্রোক করা হইয়াছিল।]
(৮) বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৭) এর অধীনে জারীকৃত সনদপত্র বাবদ কোন কর বা রেজিষ্ট্রেশন ফি আদায়যোগ্য হইবে না৷
(৯) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে সম্পত্তির দখল ও ভোগের অধিকার অথবা উপ-ধারা (৭) এর অধীনে সম্পত্তির স্বত্ত্ব ডিক্রীদারের অনুকূলে ন্যস্ত হইলে, ধারা ২৮ এর বিধান সাপেক্ষে, উক্ত ডিক্রী জারী মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হইবে৷