প্রিন্ট ভিউ

বিরোধ মীমাংসা (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন, ২০০৪

( ২০০৪ সনের ১২ নং আইন )

পৌর এলাকায় কতিপয় মামলার সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিরোধ মীমাংসা বোর্ড প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইন৷
 
 
 
যেহেতু পৌর এলাকায় কতিপয় মামলার সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তিকল্পে বিরোধ মীমাংসা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রয়োগ
১৷ (১) এই আইন বিরোধ মীমাংসা (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন, ২০০৪ নামে অভিহিত হইবে৷
 
 
 
 
(২) ইহা পৌরসভা অধ্যাদেশ এর অধীন ঘোষিত পৌর এলাকায় প্রযোজ্য হইবে৷
সংজ্ঞা
২৷ (১) বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
 
 
 
(ক) “আমলযোগ্য অপরাধ” অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৪-এ সংজ্ঞায়িত কোন আমলযোগ্য অপরাধ;
 
 
 
 
(খ) “ডিক্রি” অর্থ দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ২-এ সংজ্ঞায়িত ডিক্রি;
 
 
 
 
(গ) “তফসিল” অর্থ এই আইনের তফসিল;
 
 
 
 
(ঘ) “দণ্ড বিধি” অর্থ Penal Code (XLV of 1860);
 
 
 
 
(ঙ) “দেওয়ানী কার্যবিধি” অর্থ Code of Civil Procedure, 1908 (XLV of 1908);
 
 
 
 
(চ) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
 
 
(ছ) “পক্ষ” অর্থে এমন ব্যক্তিও অন্তর্ভুক্ত হইবে যাহার উপস্থিতি কোন মামলার যথাযথ নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয় এবং যাহাকে বোর্ড উক্ত মামলায় পক্ষভুক্ত করে;
 
 
 
 
(জ) “পৌরসভা” অর্থ পৌরসভা অধ্যাদেশের অধীন গঠিত পৌরসভা;
 
 
 
 
(ঝ) “পৌরসভা অধ্যাদেশ” অর্থ Paurashava Ordinance, 1977 (XXVI of 1977);
 
 
 
 
(ঞ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (V of 1898);
 
 
(ট) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
 
 
(ঠ) “বিরোধ মীমাংসা বোর্ড” বা “বোর্ড” অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন বিরোধ মীমাংসা বোর্ড;
 
 
 
 
(ড) “মামলা” অর্থে কোন বিরোধও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
 
 
(ঢ) “সভাপতি” অর্থ পৌরসভার চেয়ারম্যান বা তাহার অনুপস্থিতিতে ধারা ৭(২) অনুসারে বোর্ডে সভাপতিত্বকারী কোন ব্যক্তি;
 
 
 
 
(ণ) “সদস্য” অর্থ ধারা ৭(১) এ উল্লিখিত বিরোধ মীমাংসা বোর্ডের সদস্য৷
 
 
 
 
(২) এই আইনে ব্যবহার করা হইয়াছে কিন্তু সংজ্ঞা দেওয়া হয় নাই এমন শব্দ বা অভিব্যক্তি পৌরসভা অধ্যাদেশে যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে ব্যবহৃত হইবে৷
বিরোধ মীমাংসা বোর্ড
৩৷ (১) তফসিলভুক্ত অপরাধ বা বিষয়সমূহ সম্পর্কে যাবতীয় মামলার বিচারের জন্য প্রত্যেক পৌর এলাকায় একটি বিরোধ মীমাংসা বোর্ড থাকিবে এবং উক্ত পৌর এলাকার নামসহ বিরোধ মীমাংসা বোর্ডের নামকরণ করা হইবে৷
 
 
 
 
(২) বিরোধ মীমাংসা বোর্ড সাধারণতঃ পৌরসভা কার্যালয়ে উহার বিচারকার্য পরিচালনা করিবে৷
বোর্ড কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলাসমূহ
৪৷ (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, তফসিলে বর্ণিত অপরাধ বা বিষয়সমূহ সম্পর্কে সকল মামলা কেবলমাত্র বিরোধ মীমাংসা বোর্ড কর্তৃক বিচারযোগ্য হইবে, এবং কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী আদালতের উক্তরূপ কোন মামলা বিচার করিবার কোন এখ্‌তিয়ার থাকিবে না৷
 
 
 
 
(২) বিরোধ মীমাংসা বোর্ড তফসিলের-
 
 
 
 
(ক) প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধ সম্পর্কে কোন মামলার বিচার করিবে না, যদি মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তি পূর্বে কোন সময়ে কোন আমলযোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া থাকেন;
 
 
 
 
(খ) দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত কোন বিষয় সম্পর্কে কোন মামলার বিচার করিবে না, যদি-
 
 
 
 
(অ) মামলায় কোন নাবালকের স্বার্থ জড়িত থাকে;
 
 
 
 
(আ) মামলায় জড়িত পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত কোন চুক্তিতে সালিশের বা বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান থাকে;
 
 
(ই) সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা কোন সরকারী কর্মচারী তাহার সরকারী দায়িত্ব পালন করার কারণে মামলার কোন পক্ষ হয়৷
 
 
 
 
(৩) কোন স্থাবর সম্পত্তির দখল বুঝাইয়া দেওয়ার বা দখল পুনরুদ্ধারের মামলায় স্বত্ব সাব্যস্ত করিবার প্রয়োজন আছে বলিয়া বোর্ড সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলে, উহার দখল পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে দায়েরকৃত মামলার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবে না৷
কতিপয় মামলা হস্তান্তর
৫৷ (১) ধারা ৪-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোন ক্ষেত্রে তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধের সহিত তফসিল বহির্ভূত কোন অপরাধও সংঘটিত হয় এবং উভয় অপরাধের বিচার একত্রে হওয়া প্রয়োজন বা বাঞ্ছনীয়, তাহা হইলে তফসিলভুক্ত উক্ত অপরাধের বিচার কোন বোর্ডে করা যাইবে না এবং এইরূপ কোন মামলা বোর্ডে দায়ের হইলে বোর্ড সংশ্লিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক অভিযোগের দরখাস্তটি অভিযোগকারীকে ফেরত্ দিতে বা অপরাধ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) বোর্ডে বিচারাধীন কোন মামলা উহার বিবেচনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদানের প্রয়োজন হইলে, উক্ত মামলা বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট এখ্‌তিয়ার সম্পন্ন ফৌজদারী আদালতে প্রেরণ করিতে পারিবে৷
বোর্ডের এখ্‌তিয়ার
৬৷ কোন বোর্ড তফসিলভুক্ত কোন অপরাধ বা বিষয় সম্পর্কে কোন মামলার বিচার করিতে পারিবে, যদি-
 
 
 
 
(ক) উহা যে পৌর এলাকার জন্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে সেই পৌর এলাকায় উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় বা সেই বিষয়টি সম্পর্কে বিরোধের কারণ উদ্ভব হয়; এইরূপ ক্ষেত্রে কোন পক্ষ বা কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট পৌর এলাকা বহির্ভূত এলাকায় বসবাস করা স্বত্ত্বেও মামলা চলিবে; অথবা
 
 
 
 
(খ) মামলার উভয় পক্ষ সাধারণতঃ উক্ত পৌর এলাকায় বসবাস করেন৷
বোর্ডের গঠন ইত্যাদি
৭৷ (১) নিম্নবর্ণিত ৫ (পাঁচ) জন সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) পৌরসভার চেয়ারম্যান, যিনি পদাধিকার বলে বোর্ডের সভাপতিও হইবেন;
 
 
 
 
(খ) নির্ধারিত পদ্ধতিতে মামলার বাদী পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন এবং বিবাদী পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন করিয়া সদস্য:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন হইবেন সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কোন কমিশনার৷
 
 
(২) কোন কারণে পৌরসভার চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে বা কোন মামলার বিচার কার্য শুরু হইবার পূর্বে বা চলাকালীন সময়ে কোন পক্ষ কর্তৃক তাহার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপিত হইলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কোন কমিশনার বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করিবেন৷
 
 
 
 
(৩) বাদীপক্ষ বা বিবাদীপক্ষ বা উভয় পক্ষের পৌরসভার কমিশনার সদস্য ব্যতীত অন্য কোন মনোনীত সদস্য বোর্ডের কোন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকিলেও বোর্ডের বিচারকার্য চলিবে এবং এইরূপ বিচারকার্য অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে না৷
বোর্ডে মামলা দায়ের পদ্ধতি
৮৷ (১) এই আইনের অধীনে তফসিলে বর্ণিত অপরাধ বা বিষয়সমূহ সম্পর্কে সকল মামলার বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাহার দস্তখত বা টিপসহিযুক্ত সাদা কাগজে বাংলা ভাষায় লিখিয়া বোর্ডের নিকট দরখাস্ত দাখিল করিবেন এবং এইরূপ দরখাস্তে নিম্নবর্ণিত তথ্যাদি উল্লেখ করিতে হইবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) দরখাস্তকারী কর্তৃক মনোনীত সদস্যের নাম ও ঠিকানা;
 
 
 
 
(খ) প্রত্যেক বিবাদীর নাম ও ঠিকানা;
 
 
 
 
(গ) প্রত্যেক বিবাদীর উপর নোটিশ জারীর জন্য দরখাস্তের একটি করিয়া কপি৷
 
 
 
 
(২) দরখাস্ত দাখিলের পর বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পৌরসভার কর্মকর্তা উহা পরীক্ষা করিয়া যদি দেখেন যে, মামলাটি বোর্ড কর্তৃক বিচারযোগ্য, তাহা হইলে তিনি উহা নির্ধারিত নিবন্ধন বহিতে লিপিবদ্ধ করিবেন এবং মামলাটি বোর্ড কর্তৃক বিচারযোগ্য না হইলে তিনি দরখাস্তে কারণ উল্লেখ করিয়া উহা দরখাস্তকারীকে ফেরত্ দিবেন৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন দরখাস্ত ফেরত্ প্রদান করা হইলে, দরখাস্তকারী বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য সভাপতির নিকট পেশ করিতে পারিবেন এবং সভাপতির সিদ্ধান্ত অনুসারে উক্ত দরখাস্তের উপর প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হইবে৷
বোর্ড কর্তৃক প্রদেয় প্রতিকার
৯৷ (১) তফসিলের প্রথম অংশে উল্লিখিত অপরাধসমূহের ব্যাপারে বোর্ড কোন কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে না, শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) তফসিলের দ্বিতীয় অংশে উল্লিখিত বিষয়ে বোর্ড ক্ষতিপূরণ বা অর্থ প্রদান বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বেদখল হওয়া সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের আদেশ দিতে পারিবে৷
বোর্ডের সিদ্ধান্ত
১০৷ (১) সদস্যগণের সর্বসম্মত বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি নিজে বা তত্কর্তৃক নির্দেশিত অন্য কোন সদস্য সংক্ষিপ্তাকারে সিদ্ধান্ত লিখিবেন বা তাহার জবানীতে সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত পৌরসভার কোন কর্মকর্তা উক্ত সিদ্ধান্ত লিখিবেন, এবং উপস্থিত সকল সদস্য উক্ত সিদ্ধান্ত দস্তখত করিবেন৷
 
 
(২) বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হইবে৷
 
 
 
 
(৩) সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্ত বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলিয়া গণ্য হইবে, তবে ভিন্নমত পোষণকারী সদস্য বা সদস্যগণের মতামত নথিতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে এবং ভিন্নমত পোষণকারী সংশ্লিষ্ট সদস্য উহাতে দস্তখত করিবেন৷
বোর্ডের সিদ্ধান্তের চূড়ান্ততা ও আপীল
১১৷ (১) বোর্ডের সিদ্ধান্ত উপস্থিত সকল সদস্যের সম্মতিতে বা পাঁচজন সদস্যের মধ্যে চারজনের সম্মতিতে প্রদত্ত হইলে, বা উপস্থিত সদস্যের সংখ্যা চারজন হইলে এবং তিনজনের সম্মতিতে প্রদত্ত হইলে উহা চূড়ান্ত হইবে৷
 
 
 
 
(২) যেইক্ষেত্রে বোর্ড তিনজন সদস্যের সম্মতিতে এবং দুইজনের অসম্মতিতে বা দুইজনের সম্মতিতে এবং একজনের অসম্মতিতে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন, সেইক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ পক্ষ সিদ্ধান্ত প্রদানের ত্রিশ দিনের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে,-
 
 
 
 
(ক) তফসিলের প্রথম অংশে উল্লিখিত বিষয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত;
 
 
 
 
(খ) তফসিলের দ্বিতীয় অংশে উল্লিখিত বিষয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে যুগ্ম-জেলা জজ আদালত;
 
 
 
 
এর নিকট আপীল করিতে পারিবেন এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা, ক্ষেত্রমত, যুগ্ম-জেলা জজ আদালত আপীলের আবেদনটি বিবেচনাক্রমে যদি সন্তুষ্ট হয় যে, সিদ্ধান্তের আইনগত ভুলত্রুটির কারণে ন্যায়বিচার প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় ঘটিয়াছে, তাহা হইলে তিনি সংশ্লিষ্ট নথি তলব করিয়া উহা পর্যালোচনাপূর্বক ন্যায় বিচারের স্বার্থে যথাযথ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং এই বিষয়ে উক্ত আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷
 
 
 
 
(৩) এই আইনের অধীন বোর্ড বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, যুগ্ম-জেলা জজ আদালত কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিকৃত কোন বিষয়ে অন্য কোন আদালতে কোন মামলা দায়ের বা উহার বৈধতা বা যথার্থতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না৷
বোর্ডের সিদ্ধান্ত কার্যকরকরণ
১২৷ (১) যেইক্ষেত্রে বোর্ড কোন মামলায় কোন ব্যক্তিকে ধারা ৯(১) এর অধীনে ক্ষতিপূরণ প্রদানের সিদ্ধান্ত প্রদান করে অথবা ধারা ৯(২) এর অধীনে কোন ক্ষতিপূরণ প্রদানের বা অর্থ প্রদানের বা কোন সম্পত্তির দখল বুঝাইয়া দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত প্রদান করে সেইক্ষেত্রে বোর্ড, নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে, উহা কার্যকরকরণের একটি ডিক্রি প্রদান করিবে এবং তত্সম্পর্কিত তথ্যাদি নির্ধারিত রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করিবে৷
 
 
 
 
(২) যদি ডিক্রি মোতাবেক বোর্ডের সম্মুখে কোন অর্থ পরিশোধ করা হয় বা কোন সম্পত্তি ফেরত্ বা উহার দখল বুঝাইয়া দেওয়া হয়, তাহা হইলে বোর্ড বিষয়টি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করিবে৷
 
 
(৩) যেইক্ষেত্রে ডিক্রিটি ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধের সহিত সম্পর্কিত এবং উক্ত ডিক্রিকৃত অর্থ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধিত না হইলে, সভাপতি উহা বাস্তবায়নের জন্য পৌরসভায় প্রেরণ করিবে এবং পৌরসভা উক্ত ক্ষতিপূরণের অর্থ পৌরসভা কর্তৃক আরোপিত কর গণ্যে পৌরসভা অধ্যাদেশে বিধৃত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে উহা আদায় করিবে এবং আদায়কৃত অর্থ ডিক্রি প্রাপককে প্রদান করিবে৷
 
 
 
 
(৪) যেইক্ষেত্রে ডিক্রিটি ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ ব্যতীত অন্য বিষয়ের ডিক্রি হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য এখ্‌তিয়ার সম্পন্ন যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে উহা প্রেরণ করা যাইবে৷
 
 
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) অনুসারে কোন ডিক্রি এখতিয়ার সম্পন্ন যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে উপস্থাপন করা হইলে, উক্ত আদালত উক্ত ডিক্রি এমনভাবে বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করিবে যেন ডিক্রিটি উক্ত আদালত কর্তৃক প্রদত্ত হইয়াছে৷
 
 
 
 
(৬) বোর্ড উপযুক্ত বিবেচনা করিলে ডিক্রিকৃত অর্থ কিস্তিতে প্রদান করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং এই কিস্তির মেয়াদ, উপযুক্ত ক্ষেত্রে, বৃদ্ধিও করিতে পারিবে৷
বোর্ড কর্তৃক সমন জারীর ক্ষমতা, ইত্যাদি
১৩৷ (১) এই আইনে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ধারা ৪(১) এ বর্ণিত মামলা নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে বোর্ডের কোন কার্যক্রমে Evidence Act, 1872 (Act I of 1872), দণ্ডবিধি, ফৌজদারী কার্যবিধি এবং দেওয়ানী কার্যবিধির কোন বিধান প্রযোজ্য হইবে না৷
 
 
 
 
(২) বোর্ড যে কোন ব্যক্তিকে উহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া সাক্ষ্য প্রদান এবং যে কোন প্রকার তথ্য ও দলিল পেশ করিবার জন্য সমন জারী করিতে পারিবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে-
 
 
 
 
(ক) দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১৩৩(১) এর অধীন কোন আদালতে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়া হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাইবে না;
 
 
 
 
(খ) বোর্ডের বিবেচনায় কোন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করিতে বাদী, অথবা বিবাদী অযথা বিলম্ব করে এবং যে অবস্থার প্রেক্ষিতে বোর্ড সাক্ষী হাজির করা অসুবিধা মনে করে বা অর্থ ব্যয় হইবে বলিয়া মনে করে, তাহা হইলে, সাক্ষীকে সমন জারী করিতে বোর্ড অস্বীকার করিতে পারে৷ তবে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত থাকিবে;
 
 
(গ) বোর্ড উহার এখ্‌তিয়ার বহির্ভূত এলাকায় বসবাসকারী কোন ব্যক্তিকে উহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বা কোন তথ্য ও দলিল পেশ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে না, যদি তাহার যাতায়াত ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের জন্য উহার নিকট যথেষ্ট বলিয়া বিবেচিত পরিমাণ অর্থ বোর্ডে জমা না দেওয়া হয়;
 
 
 
 
(ঘ) বোর্ড কোন ব্যক্তিকে, সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধান কর্মকর্তার লিখিত অনুমতি ব্যতীত, রাষ্ট্রীয় বিষয় সম্পর্কিত কোন গোপন দলিল অথবা কোন অপ্রকাশিত সরকারী নথি পেশ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না৷
 
 
 
 
(৩) যদি বোর্ড কর্তৃক উহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া হাজির হওয়ার ও সাক্ষ্য দেওয়ার বা কোন তথ্য ও দলিল পেশ করিবার জন্য সমন জারী করা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে উক্ত সমন অমান্য করেন, তাহা হইলে আদালত উক্তরূপ অমান্য করিবার বিষয়টি আমলে নিতে পারিবে এবং তাহাকে কারণ ব্যাখ্যা করিবার সুযোগ প্রদান করিয়া অনধিক পাঁচশত টাকা জরিমানা করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(৪) বোর্ডের সম্মুখে সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে Oaths Act, 1883 (Act X of 1883) এর ধারা ৮, ৯, ১০ ও ১১ প্রযোজ্য হইবে৷
বোর্ডের অবমাননা
১৪৷ (১) কোন ব্যক্তি বোর্ড অবমাননার দায়ে দোষী হইবেন যদি তিনি, আইনসংগত কারণ ব্যতীত,-
 
 
 
 
(ক) বোর্ডের কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে বোর্ডকে বা উহার কোন সদস্যকে কথাবার্তা, আকার-ইঙ্গিত বা অন্যবিধ আচরণ দ্বারা কোনরূপ অপমান করেন;
 
 
 
 
(খ) বোর্ডের কার্যক্রমে কোনরূপ ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন;
 
 
 
 
(গ) বোর্ড কর্তৃক আদিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও, কোন তথ্য ও দলিল পেশ বা হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন;
 
 
 
 
(ঘ) শপথ গ্রহণপূর্বক সাক্ষ্য প্রদান করিতে বা তত্কর্তৃক প্রদত্ত জবানবন্দিতে দস্তখত করিতে অস্বীকার করেন৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন ব্যক্তি দোষী হইলে বোর্ড, উহার সম্মুখে কোন অভিযোগ উপস্থাপিত না হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত ব্যক্তিকে উক্তরূপ অবমাননার জন্য তত্ক্ষণাত্ বিচার করিতে পারিবে, এবং তজ্জন্য তাহাকে অনধিক এক হাজার টাকা জরিমানা করিতে পারিবে৷
জরিমানা আদায়
১৫৷ (১) ধারা ১৩ ও ১৪ এর অধীন আরোপিত কোন জরিমানা তত্ক্ষণাত্ আদায় না হইলে, বোর্ড তত্কর্তৃক আরোপিত জরিমানার অর্থের পরিমাণসহ উক্ত অর্থ অনাদায়ের কারণ উল্লেখপূর্বক একটি আদেশ লিপিবদ্ধ করিয়া পৌরসভায় প্রেরণ করিবে এবং উক্ত অর্থ পৌরসভা তত্কর্তৃক আরোপিত করগণ্যে পৌরসভা অধ্যাদেশে বিধৃত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে আদায় করিবে৷
 
 
 
 
(২) ধারা ১৩ ও ১৪ এর অধীন বোর্ডের নিকট জমাকৃত এবং উপ-ধারা (১) এর অধীন আদায়কৃত জরিমানার অর্থ পৌরসভার তহবিলে জমা হইবে৷
আইনজীবী নিয়োগ নিষিদ্ধ
১৬৷ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বোর্ডে দায়েরকৃত কোন মামলা পরিচালনার জন্য কোন পক্ষে কোন আইনজীবী বোর্ডে হাজির হইতে পারিবেন না৷
সরকারী কর্মচারী বা পর্দানশীল মহিলার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব
১৭৷ (১) বোর্ডের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমন কোন সরকারী কর্মচারী যদি এই মর্মে আপত্তি উত্থাপন করেন যে, তাহার ব্যক্তিগত উপস্থিতির ফলে সরকারী দায়িত্ব পালন ক্ষতিগ্রস্ত হইবে, তাহা হইলে বোর্ড তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধকে তাহার পক্ষে বোর্ডের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) বোর্ডের সম্মুখে উপস্থিত হইতে হইবে এমন কোন পর্দানশীল মহিলা আদালতে উপস্থিত হইয়া সাক্ষ্য প্রদান করিতে অস্বীকার করিলে বোর্ড তাহার নিকট হইতে যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধকে তাহার পক্ষে বোর্ডের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) বা (২) এর অধীন নিযুক্ত কোন প্রতিনিধি কোন পারিশ্রমিক গ্রহণ করিতে পারিবে না৷
 
 
 
 
(৪) কোন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন কোন মামলা দায়ের করা হইলে, তিনি যদি এই মর্মে আপত্তি উত্থাপন করেন যে, কথিত অপরাধ তাহার সরকারী দায়িত্ব পালনকালে বা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সংঘটিত হইয়াছে, তাহা হইলে উক্ত অপরাধ বিচারের জন্য তাহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনের জন্য প্রয়োজন হইবে৷
পুলিশ কর্তৃক তদন্ত
১৮৷ এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, তফসিলের প্রথম অংশে বর্ণিত হইয়াছে কেবলমাত্র সেই কারণে পুলিশ কর্তৃক উক্ত প্রথম অংশে বর্ণিত কোন অপরাধের তদন্ত বন্ধ থাকিবে না, তবে উক্ত তদন্তের পর যদি কোন ফৌজদারী আদালতে উক্ত অপরাধের বিচারের জন্য মামলা দায়ের করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ফৌজদারী আদালত উপযুক্ত বিবেচনা করিলে মামলাটি সংশ্লিষ্ট বোর্ডে দায়ের করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে৷
অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা
১৯৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন এলাকা বা যে কোন মামলা বা যে কোন শ্রেণীর মামলা বা যে কোন সম্প্রদায়কে এই আইনের সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে৷
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২০৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
রহিতকরণ ও হেফাজত
২১৷ (১) The Conciliation of Disputes (Municipal Areas) Ordinance, 1979 (Ord. No. V of 1979) এতদ্বারা রহিত করা হইল৷
 
 
 
 
(২) উক্তরূপ রহিত সত্ত্বেও, এই আইন বলবত্ হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Ordinance এর অধীন কোন Conciliation Board এ বিচারাধীন মামলাসমূহ উক্ত Board এ বিচার ও, ক্ষেত্রমত, উক্ত মামলার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নসহ উহাদের নিষ্পত্তি এইরূপে সম্পন্ন হইবে, যেন এই আইন বলবত্ হয় নাই৷
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs