প্রিন্ট ভিউ

ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল

( ২০০৫ সনের ২ নং আইন )

সড়ক পরিবহনে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন৷
 
 
যেহেতু সড়ক পরিবহনে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে একটি কল্যাণ তহবিল গঠন এবং উহার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনামা, প্রবর্তন ও প্রয়োগ

১৷ (১) এই আইন ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল আইন, ২০০৫ নামে অভিহিত হইবে।

 
 
 
 

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে এই আইন সেই তারিখে কার্যকর হইবে।

 
 
 
 

(৩) এই আইন সমগ্র বাংলাদেশের সড়ক পরিবহনে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

 

 

 

* এস, আর, ও নং ৭৬-আইন/২০০৫, তারিখঃ ৩০ মার্চ, ২০০৫ ইং দ্বারা ১ মে, ২০০৫ উক্ত আইন কার্যকর

সংজ্ঞা
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
 
 
(ক) “কল্যাণ তহবিল” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন গঠিত কল্যাণ তহবিল;
 
 
 
 
(খ) “চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;
 
 
 
 
(গ) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
 
 
(ঘ) “পরিবার” অর্থ-
 
 
 
 
(অ) পুরুষ শ্রমিক হইলে, তাহার স্ত্রী বা স্ত্রীগণ, এবং মহিলা শ্রমিক হইলে, তাহার স্বামী;
 
 
 
 
(আ) শ্রমিকের সহিত একত্রে বসবাসরত এবং তাহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল, অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান-সন্ততিগণ, পিতা, মাতা, নাবালক ভাই এবং অবিবাহিতা, তালাক-প্রাপ্তা বা বিধবা কন্যা বা বোন, এবং প্রতিবন্ধী সন্তান;
 
 
 
 
(ঙ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(চ) “বোর্ড” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বোর্ড;
 
 
 
 
(ছ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
 
 
(জ) “মালিক” অর্থ সড়ক পরিবহনের মালিক, এবং the Road Transport Workers Ordinance, 1961 (Ord. No. XXVIII of 1961) এর section 2(2) তে এ বর্ণিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
 
 
(ঝ) “শ্রমিক” অর্থ সড়ক পরিবহনে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে the Motor Vehicles Ordinance, 1983 (Ord. No. LV of 1983) এর section 4A এর বিধান মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি, এবং ড্রাইভার, ক্লিনার, কন্ডাক্টর ও চেকারও ইহার অন্তর্ভু্‌ক্ত হইবে;
 
 
 
 
(ঞ) “সচিব” অর্থ বোর্ডের সচিব;
 
 
 
 
(ট) “সড়ক পরিবহন” অর্থ ভাড়ায় বা পারিতোষিকের বিনিময়ে সড়কপথে যাত্রী বা মালামাল, বা উভয় ধরণের পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি মালিকানাধীন যে কোন যান্ত্রিক যান৷
আইনের প্রাধান্য
৩৷ আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর হইবে, তবে অন্য কোন আইনের অধীন শ্রমিক বা তাহার পরিবারের প্রাপ্য পেনশন, আনুতোষিক অথবা অন্যান্য সুবিধা এই আইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হইবে না৷
কল্যাণ তহবিল গঠন
 
৪৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল' না একটি তহবিল গঠিত হইবে৷
 
(২) নিম্নবর্ণিত উত্সসমূহ হইতে প্রাপ্ত অর্থ কল্যাণ তহবিলে জমা হইবে, যথা:-
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(খ) সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, মালিক গ্রুপ এবং পরিবহন কোম্পানী কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(গ) সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(ঘ) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দানকৃত অর্থ;
 
(ঙ) তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং
 
(চ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন উত্স হইতে প্রাপ্ত অর্থ৷
 
(৩) কল্যাণ তহবিলের অর্থ বা উহার অংশবিশেষ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে৷
 
(৪) কল্যাণ তহবিলের অর্থ বোর্ডের অনুমোদনক্রমে, কোন তফসিলী ব্যাংকে জমা রাখা হইবে৷
 
(৫) নির্ধারিত পদ্ধতিতে কল্যাণ তহবিল রক্ষণ ও উহার অর্থ ব্যয় করা যাইবে৷
পরিচালনা ও প্রশাসন
৫৷ কল্যাণ তহবিলের পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে৷
বোর্ড প্রতিষ্ঠা
৬৷ (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড নামে একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করিবে৷
 
 
 
 
(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীল মোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে, এবং বোর্ড ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে৷
বোর্ড গঠন
৭৷ (১) নিম্নোক্ত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, যিনি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হইবেন;
 
 
 
 
(খ) মালিকদের মধ্য হইতে একজন প্রতিনিধি;
 
 
 
 
(গ) শ্রমিকদের মধ্য হইতে একজন প্রতিনিধি;
 
 
 
 
(ঘ) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন ব্যক্তি;
 
 
 
 
(ঙ) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা;
 
 
 
 
(চ) শ্রম পরিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত উক্ত পরিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা;
 
 
 
 
(ছ) সচিব, যিনি বোর্ডের সদস্য সচিবও হইবেন৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১)(খ) এর ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী মালিক সমিতির একজন প্রতিনিধকে সরকার নিযুক্ত করিবে৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (১)(গ) এর ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী রেজিস্টার্ড শ্রমিক সংগঠনের একজন প্রতিনিধকে সরকার নিযুক্ত করিবে৷
 
 
 
 
(৪) শুধুমাত্র সদস্যপদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে বোর্ডের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তত্সম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷
সদস্যের মেয়াদ ও পদত্যাগ
৮৷ (১) ধারা ৭ (১) এর দফা (খ), (গ) ও (ঘ) এর অধীন মনোনীত সদস্যের মেয়াদ হইবে তাহার মনোনয়নের পর বোর্ডের প্রথম সভার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩ বত্সর৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত যে কোন মনোনীত সদস্য চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক উহা গৃহীত হইবার তারিখ হইতে উক্ত পদটি শূন্য বলিয়া গণ্য হইবে৷
সদস্যের অযোগ্যতা
৯৷ কোন ব্যক্তি ধারা ৭(১) এর দফা (খ), (গ) ও (ঘ) এর অধীন সদস্য হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-
 
 
 
 
(ক) কোন আদালত তাহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করে;
 
 
 
 
(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
 
 
(গ) তিনি নৈতিক শৃঙ্খলাজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক অন্যুন এক বত্সরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বত্সর অতিবাহিত না হইয়া থাকে;
 
 
 
 
(ঘ) তিনি চেয়ারম্যানের অনুমতি ব্যতীত বোর্ডের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন; অথবা
 
 
 
 
(ঙ) তিনি ৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থান করেন৷
সদস্যের অপসারণ
১০৷ সরকার ধারা ৭(১) এর দফা (খ), (গ) ও (ঘ) তে উল্লিখিত যে কোন মনোনীত সদস্যকে লিখিত আদেশ দ্বারা অপসারণ করিতে পারিবে, যদি তিনি-
 
 
 
 
(ক) এই আইনের অধীন তাঁহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন, বা সরকারের বিবেচনায় উক্ত দায়িত্ব সম্পাদনে অক্ষম বিবেচিত হন; অথবা
 
 
 
 
(খ) সরকারের বিবেচনায় সদস্য হিসাবে তাঁহার পদের অপব্যবহার করিয়াছেন; অথবা
 
 
 
 
(গ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কল্যাণ তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে লাভজনক কিছু অর্জন করেন বা অধিকারে রাখেন৷
সচিব
১১৷ (১) বোর্ডের একজন সচিব থাকিবেন৷
 
 
 
 
(২) সচিব সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে৷
 
 
(৩) সচিব বোর্ডের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন, এবং তিনি-
 
 
 
 
(ক) বোর্ড এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন;
 
 
 
 
(খ) বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্ব ও কার্য সম্পাদন করিবেন; এবং
 
 
 
 
(গ) বোর্ডের প্রশাসন পরিচালনা করিবেন৷
কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১২৷ কল্যাণ তহবিল পরিচালনার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
বোর্ডের সভা
১৩৷ (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) বোর্ডের সভা, চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, উহার সচিব কর্তৃক আহূত হইবে এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে৷
 
 
 
 
(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, এবং তাহার অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক তাহাদের মধ্য হইতে নির্বাচিত কোন সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন৷
 
 
 
 
(৪) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য মোট তিন জন সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন হইবে৷
 
 
 
 
(৫) প্রতি চার মাস অন্তর বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবে৷ তবে স্বল্প সময়ের নোটিশেও সভা আহ্বান করা যাইবে৷
 
 
 
 
(৬) বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে৷
বোর্ডের কার্যাবলী
১৪৷ বোর্ডের কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
 
 
 
(ক) সরকারের অনুমোদনক্রমে, শ্রমিক ও তাহার পরিবারের কল্যাণার্থে, লাভজনক ও নিরাপদ বিনিয়োগসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও উহার বাস্তবায়ন করা;
 
 
 
 
(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, শ্রমিকদের জীবন বীমাকরণের জন্য যৌথ বীমা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং এই লক্ষ্যে কল্যাণ তহবিল হইতে সংশ্লিষ্ট বীমা প্রতিষ্ঠানকে প্রিমিয়াম পরিশোধ করা;
 
 
 
 
(গ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে শ্রমিক ও তাহার পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ তহবিল হইতে অনুদান মঞ্জুর;
 
 
(ঘ) কল্যাণ তহবিল পরিচালনা ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা৷
কল্যাণ তহবিল হইতে প্রদেয় সুবিধা
১৫৷ (১) কল্যাণ তহবিলে জমাকৃত মূলধন ব্যয় করা যাইবে না৷
 
 
(২) সরকারের অনুমোদনক্রমে, বোর্ড কল্যাণ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতি বত্সরান্তে অর্জিত মুনাফা দ্বারা, শ্রমিকদের জন্য নিম্নোক্ত সুবিধা প্রদান করিবে, যথা:-
 
 
(ক) যেই ক্ষেত্রে কোন শ্রমিক, নির্ধারিত মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাহার কর্তব্য সম্পাদনের পক্ষে দৈহিক অথবা মানসিকভাবে স্থায়ী অক্ষম বলিয়া ঘোষিত হন এবং এই কারণে অপসারিত অথবা কর্মচ্যুত হন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত হারে তহবিল হইতে অনুদান পাইবার অধিকারী হইবেন;
 
 
(খ) কোন শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে উক্ত শ্রমিকের স্ত্রী অথবা স্ত্রীগণ বা স্বামী এবং নির্ভরশীল পিতামাতা ও সন্তান-সন্ততিগণ নির্ধারিত হারে তহবিল হইতে অনুদান পাইবার অধিকারী হইবেন;
 
 
(গ) কোন মৃত, স্থায়ীভাবে অক্ষম, বা মারাত্মক দুঃস্থ শ্রমিকের কন্যার বিবাহের জন্য অনুদান;
 
 
(ঘ) চাকুরীরত, স্থায়ী দৈহিকভাবে অক্ষম, মারাত্মক দুঃস্থ বা মৃত শ্রমিকের সন্তান-সন্ততির শিক্ষার জন্য এককালীন বা মাসিক ভিত্তিতে অনুদান বা বৃত্তি৷
 
 
(৩) বোর্ড কোন শ্রমিককে অথবা তাহার পরিবারকে নিম্নোক্ত যেকোন উদ্দেশ্যে কল্যাণ তহবিল হইতে বিশেষ অনুদান মঞ্জুর করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) রক্ত প্রদানসহ চিকিত্সা;
 
 
(খ) চশমা ক্রয় বা অন্য কোন দৈহিক সহায়তামূলক জিনিস ক্রয়;
 
 
(গ) দাফন-কাফন বা শেষকৃত্যানুষ্ঠান;
 
 
(ঘ) দুর্ঘটনা বা জখমের ক্ষেত্রে সাহায্য; এবং
 
 
(ঙ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সাহায্য৷
মজুরী ও অন্যান্য সুবিধা
১৬৷ কোন মালিক কল্যাণ তহবিলে তাহার কোন অনুদান দেওয়ার, বা এই আইন কিংবা তদধীন প্রণীত বিধিমালা মোতাবেক তাহার উপর কোন দায় সৃষ্টির কারণে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, তাহার অধীনে কর্মরত কোন শ্রমিকের মজুরী বা চাকুরীর চুক্তির ব্যক্ত বা অব্যক্ত শর্তাবলীর অধীনে প্রাপ্য কোন সুযোগ-সুবিধা হ্রাস করিতে পারিবেন না৷
বার্ষিক বাজেট বিবরণী
১৭৷ বোর্ড প্রতি বত্সর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী বত্সরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বত্সরে সরকারের নিকট হইতে বোর্ডের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে ইহার উল্লেখ থাকিবে৷
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৮৷ (১) বোর্ড যথাযথভাবে কল্যাণ তহবিলের হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে৷
 
 
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর “মহা-হিসাব নিরীক্ষক” নামে অভিহিত, প্রতি বত্সর কল্যাণ তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধান মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং বোর্ডের যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন৷
হিসাব বিবরণী, ইত্যাদি
১৯৷ (১) বোর্ড প্রত্যেক অর্থ বত্সর শেষে নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী সরকারের নিকট দাখিল করিবে এবং এতদ্‌বিষয়ে বোর্ড এর কর্মকাণ্ডের উপর একটি বার্ষিক বিবরণীও দাখিল করিবে৷
 
 
 
 
(২) বোর্ড, সরকার কর্তৃক সময় সময় চাহিদা মাফিক বিবরণী, রিটার্ণ ও প্রতিবেদন, সরকারের নিকট দাখিল করিবে৷
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২০৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত সাধারণ ক্ষমতা ক্ষুণ্ন না করিয়া, বিশেষতঃ নিম্নোক্ত এক বাএকাধিক বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করা যাইবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) কল্যাণ তহবিলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা;
 
 
 
 
(খ) কল্যাণ তহবিল হইতে অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে শর্তাবলী নির্ধারণ;
 
 
 
 
(গ) শ্রমিক কর্তৃক তাহার নিজের বা তাহার পরিবার সম্বন্ধে বিবরণ দাখিলের ফরম;
 
 
 
 
(ঘ) বিভিন্ন খাতে কল্যাণ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের পদ্ধতি;
 
 
(ঙ) এই আইন বাস্তবায়ন করিবার উদ্দেশ্যে সরকার প্রয়োজনীয় বা যথাযথ বিবেচনা করে এইরূপ অন্যান্য বিষয়৷
 
 
 
 
(৩) এই ধারার অধীন প্রণীত বিধিমালা, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণের জন্য অন্যুন ত্রিশ দিন সময় প্রদান পূর্বক প্রাক-প্রকাশনা ব্যতীত চূড়ান্ত করা যাইবে না৷
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২১৷ বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
সরকারের নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা
২২৷ সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জনস্বার্থে, বোর্ডকে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করিতে, অথবা বোর্ড কর্তৃক গৃহীত কোন কার্যক্রম রহিত বা বাতিল করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে৷
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs