প্রিন্ট ভিউ

কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬

( ২০০৬ সনের ৩৮ নং আইন )

কেবল টেলিভিন নেটওয়ার্ক কার্যক্রম পরিচালনা এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধানকল্পে প্রণীত আইন
 
যেহেতু দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক কার্যক্রম পরিচালিত হইয়া আসিতেছে; এবং
 
 
যেহেতু উক্তরূপ কার্যক্রম তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার জন্য বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
 
 
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
 
 
 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১৷ (১) এই আইন কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ নাম অভিহিত হইবে৷
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে৷
সংজ্ঞা
 
২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) “অনুষ্ঠান” অর্থে কেব্‌ল্‌ নেটওয়ার্কে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান যথা- চলচ্চিত্র, ফিচার, নাটক, ধারাবাহিক নাটক, নৃত্য, সংগীত, ক্রীড়া, বিজ্ঞাপন, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, যে কোন সবাক বা নির্বাক শৈলী উপস্থাপন, যে কোন প্রতিবেদনও সংবাদসহ প্রচারিত যে কোন অনুষ্ঠানকে বুঝাইবে; এবং ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার, ভিডিও ক্যাসেট প্লেয়ার, ভিডিও ক্যাসেট ডিস্ক, ডিজিটাল ভিডিও ডিস্ক ও অন্যান্য প্রযুক্তি দ্বারা পরিবেশিত যে কোন অনুষ্ঠান এবং অশ্লীল অনুষ্ঠানও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;
 
(২) “অশ্লীল অনুষ্ঠান” অর্থে ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (৯) এ উল্লিখিত যে কোন বা সকল প্রকার সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানকে বুঝাইবে;
 
(৩) “কেব্‌ল্‌ অপারেটর” অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যিনি কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক ভূনির্ভর (টেরিস্ট্রিয়াল) চ্যানেল, উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট চ্যানেল (ফ্রি টু এয়ার চ্যানেল ও পে-চ্যানেল), ইত্যাদি গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সঞ্চালন এবং প্রেরণের জন্য কন্ট্রোল রুম হইতে সিগন্যাল প্রস্তুত করেন ও দর্শকের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ফিড অপারেটর বা গ্রাহকের নিকট বিতরণ করেন; এবং মাল্টিপল সিস্টেম অপারেটরও ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;
 
(৪) “কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক” অর্থে এমন একটি পদ্ধতিকে বুঝাইবে যাহার নিজস্ব, লীজ বা ভাড়াকৃত নিয়ন্ত্রিত সম্প্রচার লাইন বা মাল্টি চ্যানেল মাল্টি পয়েন্ট ডিস্ট্রিবিউশন সার্ভিস (এম. এম. ডি. এস) বা ডাইরেক্ট টু হোম (ডি. টি. এইচ) থাকিবে এবং সংযুক্ত সিগন্যাল প্রস্তুতকরণ, নিয়ন্ত্রণ ও বহুবিধ গ্রাহকের চাহিদা মিটাইবার জন্য প্রয়োজনীয় বিতরণ যন্ত্রপাতি থাবিবে;
 
(৫) “গ্রাহক” অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যিনি কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সিগন্যাল কেব্‌ল্‌ অপারেটরের নিকট হইতে তদকর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন স্থানে, অন্য কোন ব্যক্তির নিকট সঞ্চালন বা সম্প্রচার করা ব্যতিরেকে. গ্রহণ করেন;
 
(৬) “চ্যানেল” অর্থ পে-চ্যানেল বা ফ্রি টু এয়ার চ্যানেল;
 
(৭) “ডাউন লিংক” অর্থ স্যাটেলাইট হইতে সিগন্যাল গ্রহণ করা;
 
(৮) “ডি. টি. এইচ (DTH)” অর্থে উপগ্রহের মাধ্যমে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানকে ক্ষুদ্রাকৃতির ডিশের মাধ্যমে সরাসরি গ্রহণ করিবার প্রযুক্তিকে বুঝাইবে;
 
(৯) “ডিস্ট্রিবিউটর” অর্থ এমন ব্যক্তি যিনি দেশী বা বিদেশী কোন চ্যানেলের ব্রডকাস্টারের স্থানীয় পরিবেশক হিসাবে ঐ চ্যানেলের অনুষ্ঠান ধারণের লক্ষ্যে ডিকোডার, চিপস ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমদানী করিয়া বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সেবাপ্রদানকারীর নিকট সরবরাহ করেন;
 
(১০) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত বা অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত;
 
(১১) “ফিড অপারেটর” অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যিনি কেব্‌ল্‌ অপারেটরের নিকট হইতে সিগন্যাল গ্রহণ করিয়া নির্ধারিত ফি'র বিনিম গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করেন;
 
(১২) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(১৩) “ব্যক্তি” শব্দের আওতায় কোন প্রাকৃতিক ব্যক্তি স্বত্ববিশিষ্ট একক ব্যক্তি (individual) অংশীদারী কারবার, সমিতি, কোম্পানী, কর্পোরেশন, সমবায় সমিতি, এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থা (statutory body) অন্তর্ভুক্ত;
 
(১৪) “এম. এম. ডি. এস” (MMDS) অর্থ ওয়ারলেস টেলি-কমিউনিকেশন যন্ত্রের মাধ্যমে অডিও ভিডিও সিগন্যাল প্রেরণ করিবার জন্য মাল্টি চ্যানেল মাল্টি পয়েন্ট ডিস্ট্রিবিউশন সার্ভিস৷ তবে ইহা কোনমতে টেরিস্ট্রিয়ালে সম্প্রচার বুঝাইবে না৷
 
(১৫) “এম. এস. ও (MSO) বা মাল্টিপল সিস্টেম অপারেটর” অর্থ এমন কেব্‌ল্‌ অপারেটর যিনি সিগন্যাল প্রস্তুত করিয়া অন্য কোন কেব্‌ল্‌ অপারেটর বা ফিড অপারেটরের নিকট সরবরাহ বা বিতরণ করেন;
 
(১৬) “লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ” অর্থ জেলার ক্ষেত্রে স্ব স্ব জেলা প্রশাসক বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত যে কোন সরকারী কর্মকর্তা;
 
(১৭) “সরকার” অর্থ তথ্য মন্ত্রণালয়;
 
(১৮) “সেবাপ্রদানকারী” অর্থ এম. এস. ডি. এস, ডি. টি. এইচ বা অন্য কোন যন্ত্রের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে চ্যানেল সঞ্চালন বা সম্প্রচার করে এমন কোন এম. এস. ও, কেব্‌ল্‌ অপারেটর, ফিড অপারেটর বা ব্যক্তি৷
চ্যানেল ডাউন লিংক, বিপণন, ইত্যাদি
৩৷ (১) কোন ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী নির্ধারিত আবেদন-পত্রের ভিত্তিতে, সরকার কর্তৃক, অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত অন্য কোন চ্যানেল বাংলাদেশে ডাউন লিংক, বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে পারিবে না৷
 
 
(২) কোন ডিস্ট্রিবিউটর বা সেবাদানকারী সরকার অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত নিজস্ব কোন অনুষ্ঠান যথাঃ ভিডিও, ভিসিডি, ডিভিডি এর মাধ্যমে বা অন্য কোন উপায়ে কোন চ্যানেল বাংলাদেশে বিপণন, সঞ্চালন ও সম্প্রচার করিতে পারিবে না৷
 
 
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন চ্যানেল অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকার ধারা ১৯ এর বিধানাবলী অনুসরণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করিবে৷
 
 
(৪) সরকারী অনুমোদন ও বিদেশে অর্থ প্রেরণের সরকারী অনুমতি না নেওয়া পর্যন্ত বিদেশী পে-চ্যানেল ডাউন লিংক, বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে পারিবে না৷
লাইসেন্স
৪৷ (১) এই আইনের অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হইয়া কোন ব্যক্তি ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবে না৷
 
 
(২) এই আইন বলবত্ হইবার পূর্বে কোন ব্যক্তি ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স প্রাপ্ত হইয়া থাকিলে উক্ত আইন বলবত্ হইবার অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তদ্‌কর্তৃক লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট লাইসেন্সের জন্য ধারা ৫ এর বিধান অনুসারে পুনরায় আবেদনপত্র দাখিল করিতে হইবে৷
 
 
(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনপত্র আগ্রাহ্য বা প্রত্যাখ্যাত না হওয়া পর্যন্ত আবেদনকারী তাহার কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখিতে পারিবে৷
 
 
(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী কর্তৃক পূনরায় লাইসেন্সের জন্য আবেদনপত্র দাখিল করা না হইলে উক্ত নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হইবার সংগে সংগে তদ্‌বরাবরে প্রদত্ত বা ইস্যুকৃত লাইসেন্স বাতিল হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
 
 
(৫) এই আইনের অধীনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত না হইলে কোন ব্যক্তি ডি. টি. এইচ বা এম. এম. ডি. এস টার্মিনাল স্থাপন, ব্যবহার, বিপণন ও সঞ্চালন করিতে পারিবে না৷
লাইসেন্স প্রদান পদ্ধতি
৫৷ (১) ডিসট্রিবিউটর এবং সেবাপ্রদানকারী হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনা করিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে লাইসেন্সের জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত ফরম অনুসারে আবেদনপত্র দাখিল করিতে হইবে এবং আবেদনপত্রের সাথে নির্ধারিত লাইসেন্স ফি জমা দিতে হইবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রের সাথে দাখিলীয় সকল তথ্যাদির সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হইবে৷
 
 
(৩) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ-
 
 
(ক) সেবাপ্রদানকারী কর্তৃক আবেদনপত্র দাখিল হইবার অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সেবাপ্রদানকারী বরাবরে; এবং
 
 
(খ) ডিসট্রিবিউটর কর্তৃক আবেদনপত্র দাখিল হইবার পর উহা অনতিবিলম্বে সরকারের নিকট অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করিবে এবং সরকারী অনুমোদন প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ডিসট্রিবিউটর বরাবরে;
 
 
নির্ধারিত ফরম অনুসারে লাইসেন্স ইস্যু করিবে৷
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনটি নামঞ্জুর করিলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ মঞ্জুর না করা সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনধিক ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক সিদ্ধান্তটি আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে৷
লাইসেন্স নামঞ্জুর সংক্রান্ত আপীল
৬৷ (১) ধারা ৫ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন লাইসেন্স সংক্রান্ত আবেদন নামঞ্জুর করা হইলে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত হইবার অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সরকার বরাবরে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত রদ ও রহিত করিবার জন্য আপীল করিতে পারিবেন৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আপীল আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার আপীলকারীকে যুক্তিসংগত সময়ে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া আপীলটি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করিবে৷
 
 
(৩) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে৷
লাইসেন্সের মেয়াদ ও শর্তাবলী
৭৷ (১) ডিসট্রিবিউটর ও সেবাদানকারীর প্রতিটি লাইসেন্সের মেয়াদ ২ (দুই) বত্সর হইবে৷
 
 
(২) মেয়াদোত্তীর্ণ হইবার অন্যুন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে ডিসট্রিবিউটর এবং সেবাপ্রদানকারীকে ইস্যুকৃত লাইসেন্সটি নবায়ন করিবার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বরাবরে নির্ধারিত ফরম অনুসারে আবেদনপত্র দাখিল করিতে হইবে এবং আবেদনপত্রের সাথে নির্ধারিত নবায়ন ফি জমা দিতে হইবে৷
 
 
(৩) এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স হস্তান্ততরযোগ্য নহে (non-transferable)৷
 
 
(৪) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রতিটি লাইসেন্সে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলীর উল্লেখ থাকিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক এই আইন ও বিধি প্রতিপালন;
 
 
(খ) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক সরকার অনুমোদিত চ্যানেল ব্যতীত অন্য কোন চ্যানেল ডাউনলিংক, বিপণন বা সঞ্চালন এবং নিজস্ব অনুষ্ঠান প্রদর্শন বা সম্প্রচার না করণ;
 
 
(গ) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক মানসম্মত সেবাপ্রদানসহ কারিগরী মান বজায় রাখা ও অন্যান্য কারিগরী শর্তাবলী প্রতিপালন;
 
 
(ঘ) ভূ-গর্ভস্থ কেব্‌ল্‌ শূন্যে ঝুলন্ত লাইন ও আনুষঙ্গিক স্থাপনা সংযোজনের বা ব্যবহারের কারণে ক্ষতি হইলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা সংস্থাকে লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ;
 
 
(ঙ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নিম্নবর্ণিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান বাধ্যতামূলকভাবে প্রচারকরণ, যথাঃ-
 
 
(অ) রাষ্ট্রপতি ও সরকার প্রধানের ভাষণ;
 
 
(আ) জনগুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা বা প্রেসনোট;
 
 
(ই) জরুরী আবহাওয়া বার্তা;
 
 
(ঈ) সরকার কর্তৃক, সময়, সময় প্রচারিত গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ও অন্যান্য অনুষ্ঠান;
 
 
(চ) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক ব্যবসা বন্ধ বা পরিবর্তনের বিষয় অবহিতকরণ৷
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত লাইসেন্সে উল্লিখিত শর্তাবলীর শর্ত পালনে ব্যর্থতা হইবে এই আইনের অধীন একটি অপরাধ৷
 
 
(৬) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক পরিশোধিত চার্জ, সারচার্জ, নির্ধারিত ফি, ইত্যাদি বা উহাদের কোন অংশ ফেরতযোগ্য নহে (non-refundable)৷
লাইসেন্স প্রদানে অনুসরণীয় নীতি
৮৷ লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, কোন ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে, উপযুক্ততা বিবেচনায় উহার এখতিয়ারাধীন এলাকায় কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য একচেটিয়া ব্যবসা নিরুত্সাহিতকরণের লক্ষ্যে একাধিক ব্যক্তিকে লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে৷
কতিপয় ব্যক্তির ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রদানের বাধা-নিষেধ
৯৷ নিম্নবর্ণিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে লাইসেন্স ইস্যু করা যাইবে না, যদি আবেদনকারী-
 
 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক ও অধিবাসী না হন; বা
 
 
(খ) কোন বিদেশী কোম্পানী, যাহা বিদেশী আইনে নিবন্ধিত ও পরিচালিত; বা
 
 
(গ) কোন কোম্পানী যাহার ২০% এর অধিক শেয়ার কোন বিদেশী নাগরিকের বা কোম্পানীর; বা
 
 
(ঘ) বিদেশী নাগরিক এর মালিকানা দ্বারা পরিচালিত হয়৷
লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা
১০৷ এই আইনের বিধানবলী বাস্তবায়নের প্রয়োজনে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা থাকিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) যে কোন যুক্তিসংগত সময়ে যে কোন স্থানে প্রবেশ করিতে পারিবেন, যদি উক্ত কর্তৃপক্ষের এইরূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, উক্ত স্থানে-
 
 
(অ) এই আইনের অধীন অনুমোদিত নহে এইরূপ যন্ত্রপাতি বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতি আছে বা ব্যবহার করা হইতেছে; বা
 
 
(আ) লাইসেন্স ব্যতিরেকে বা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিয়া সেবাপ্রদান বা সেবাপ্রদানের উদ্দেশ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপন বা পরিচালনা করা হইতেছে;
 
 
(খ) দফা (ক) এ বর্ণিত যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলে উহা পরীক্ষা করিতে, উক্ত যন্ত্রপাতির দখলকার, ব্যবহারকারী বা নিয়ন্ত্রণকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে এবং উক্ত যন্ত্রপাতি সরাইয়া ফেলিতে পারিবে;
 
 
(গ) সেবাপ্রদানের জন্য যে যন্ত্রপাতি অনুমোদিত নহে উহা আটক করিতে পারিবে৷
লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলকরণ
 
 
১১৷ (১) কোন ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারী লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্তাবলী লঙ্ঘন করিলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উক্ত ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারীর লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর আওতায় সাময়িকভাবে স্থগিত লাইসেন্স বাতিল করিবার পূর্বে সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সগ্রহিতাকে সাময়িকভাবে স্থগিত লাইসেন্স কেন বাতিল করা হইবে না সেই মর্মে অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করিতে হইবে৷
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব প্রাপ্তির পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে যে,-
 
 
(অ) সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স বাতিল করা প্রয়োজন তাহা হইলে উক্ত স্থগিত লাইসেন্স বাতিল করিতে পারিবে; বা
 
 
(আ) লাইসেন্সগ্রহিতা কর্তৃক লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্তাবলী যথাযথভাবে পূরণ করা হইতেছে এবং লাইসেন্সটি বাতিল করিবার যুক্তিযুক্ত কারণ নাই তাহা হইলে সাময়িকভাবে প্রদত্ত স্থগিত আদেশ বাতিল করিবে৷
পরামর্শক কমিটি
১২৷ (১) এই আইন বা বিধির বিধানবলী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনবোধ সরকার অনধিক ১১ (এগার) সদস্যবিশিষ্ট পরামর্শক কমিটি গঠন করিতে পারিবে৷
 
 
(২) পরামর্শক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী, সভা ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
 
 
(৩) পরামর্শক কমিটি, সময় সময়, সরকার বরাবরে পরামর্শ বা, ক্ষেত্রমত, সুপারিশ প্রদান করিতে পারিবে৷
ফ্রিকোয়েন্সী বরাদ্দ সম্পর্কিত লাইসেন্স গ্রহণ, ইত্যাদি
১৩৷ প্রত্যেক সেবাপ্রদানকারীকে ফ্রিকোয়েন্সী ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সী বরাদ্দ প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ১৮ নং আইন) এবং ফ্রিকোয়েন্সী বরাদ্দ সম্পর্কিত বিদ্যামান অন্যান্য আইনের অধীন লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে৷
লাইসেন্সের ডুপ্লিকেট বা অনুলিপি প্রদান
১৪৷ কোন ডিসট্রিবিউটর বা সেবাপ্রদানকারীর লাইসেন্স হারাইয়া গেলে বা নষ্ট হইলে লাইসেন্স গ্রহাতা নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক উহার ডুপ্লিকেট কপি বা অনুলিপি লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে গ্রহণ করিতে পারিবেন৷
অনুমোদিত চ্যানেল সঞ্চালন বা সম্প্রচার স্থগিতকরণ, ইত্যাদি
১৫৷ (১) অনুমোদিত কোন চ্যানেল বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচারকালে যদি সরকারের নিকট এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠান ধারা ১৯ এর পরিপন্থী তাহা হইলে সরকার তাত্ক্ষণিক বা, ক্ষেত্রমত, যাচাইপূর্বক উক্ত চ্যানেলের বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ করিয়া দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবে৷
 
 
(২) স্থায়ীভাবে বন্ধ করিয়া দেওয়া কোন চ্যানেলের বিপণন, সঞ্চালন বা সম্প্রচার উক্ত চ্যানেলের ডিসট্রিবিউটরের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার উপযুক্ত মনে করিলে, নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে, পুণরায় চালু করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে৷
সরকারী ও বেসরকারী চ্যানেল সঞ্চালন
১৬৷ প্রত্যেক সেবাদানকারীকে-
 
 
(ক) তাহার সঞ্চালিত চ্যানেলের মধ্যে সরকারী চ্যানেলসমূহ, আবশ্যিকভাবে, অগ্রাধিকারক্রমে, প্রাইম ব্যান্ডে E2-E6 পর্যন্ত কোন প্রকার পরিবর্তন ব্যতিরেকে, অব্যাহতভাবে সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে হইবে৷ অতঃপর সরকার অনুমোদিত বেসরকারী দেশীয় ফ্রি টু এয়ার চ্যানেলসমূহ অনুমোদনের তারিখ হইতে অগ্রাধিকারক্রমে প্রাইম ব্যান্ডে ও তত্পরবর্তী ব্যান্ডসমূহে, অব্যাহতভাবে সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে হইবে;
 
 
ব্যাখ্যাঃ এই ধারায় প্রাইম ব্যান্ড বলিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত E2-E12 পর্যন্ত ১১টি চ্যানেলকে প্রাইম ব্যান্ড বুঝাইবে৷ তত্পরবর্তী ব্যান্ড বলিতে X.Y.Z. ও S5-S10 বুঝাইবে৷
 
 
(খ) তাহার সঞ্চালন প্রক্রিয়ায়, যদি কোন ক্ষেত্রে প্রাইম ব্যান্ড ও তত্পরবর্তী ব্যান্ড নির্ধারণ করা না যায়, আবশ্যিকভাবে, অগ্রাধিকারক্রমে, সরকারী চ্যানেলসমূহ, অতঃপর সরকার অনুমোদিত বেসরকারী ফ্রি টু এয়ার চ্যানেলসমূহ অনুমোদনের তারিখ হইতে অগ্রাধিকারক্রমে অব্যাহতভাবে সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিতে হইবে;
 
 
(গ) বিদেশ হইতে সম্প্রচারিত কোন দেশীয় চ্যানেল এদেশে ডাউনলিংক, বিপণন, সম্প্রচার/সঞ্চালন করা যাইবে না৷
গ্রাহক সেবা
১৭৷ (১) সেবাপ্রদানকারী সরকার অনুমোদিত দেশী, বিদেশী পে-চ্যানেল এবং ফ্রি টু এয়ার চ্যানেল সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুসারে চ্যানেল সঞ্চালন বা সম্প্রচার করিবার লক্ষ্যে সেবাপ্রদানকারী গ্রাহকদের নিকট হইতে সরকার কর্তৃক, নির্ধারিত সার্ভিস ফি এর অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করিতে পারিবে না৷
 
 
(৩) কোন ডিসট্রিবিউটর পে-চ্যানেলের প্যাকেজ/বান্ডিল প্রথা করিতে পারিবে না৷ প্রতি চ্যানেলের মূল্য পৃথক পৃথক করে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিধির আলোকে করিতে হইবে৷
 
 
(৪) গ্রাহক চাহিদার অনুযায়ী এম. এস. ও এবং কেব্‌ল্‌ অপারেটগণ পে-চ্যানেল ক্রয় করিতে পারিবেন এবং গ্রাহক চাহিদা না থাকিলে প্রয়োজনে ক্রয়কৃত পে-চ্যানেল ডিসট্রিবিউটরকে ফেরত প্রদান করিতে পারিবে৷
 
 
(৫) প্রত্যেক এম. এস. ও/কেব্‌ল্‌ অপারেটর/ফিড অপারেটরগণ গ্রাহকদের পছন্দ অনুসারে সংযোগ প্রদান করিবেন৷ সেবাপ্রদানকারী কোন এম.এস.ও/কেবল অপারেটর/ফিড অপারেটর নিজে সীমানা নির্ধারণ করিয়া বা জোরপূর্বক এলাকার গ্রাহকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সংযোগ নিতে বাধ্য করিতে পারিবে না৷
 
 
(৬) সরকার বাংলাদেশে বিপণনের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী বিধির মাধ্যমে ফ্রি টু এয়ার এবং পে-চ্যানেলসহ চ্যানেল সংখ্যা সময় সময়, নির্ধারণ করিতে পারিবে৷
 
 
(৭) সরকার যে সমস্ত বিদেশী পে-চ্যানেলের অনুমোদন প্রদান করিবেন তাহার মূল্য সরকার নির্ধারণ করিয়া দিবে৷
গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তি
১৮৷ (১) এই আইনের অধীন সেবাপ্রদানকারী কর্তৃক প্রদত্ত সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কোন অভিযোগ থাকিলে উহা সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বরাবরে লিখিতভাবে পেশ করা যাইবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অভিযোগ প্রাপ্তির পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উহার যথার্থতা যাচাইপূর্বক সেবাপ্রদানকারীকে তদ্‌বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়টি অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং নির্দেশ পালনের ব্যর্থতার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উহার লাইসেন্স বাতিল বা সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে৷
সম্প্রচার বা সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ
১৯৷ সেবাপ্রদানকারী কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যেসব অনুষ্ঠান সম্প্রচার বা সঞ্চালন করিতে পারিবে না তাহা নিম্নরূপ, যথাঃ-
 
 
(১) দেশের অখন্ডতা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আর্দশের পরিপন্থী কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(২) রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং রাষ্ট্রীয় নীতির পরিপন্থী কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৩) হিংসাত্মক, সন্ত্রাস, বিদ্বেষ ও অপরাধসম্বলিত কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৪) বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, জাতীয় সংহতি ও রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তির পরিপন্থী কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৫) জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ হানিকর কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৬) দেশের কোন সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর আবেগ অনুভূতিতে আঘাত হানিতে পারে এমন কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৭) The Censorship of Films Act, 1963 (Act No. XVIII of 1963) বা উহার অধীন প্রণীত বিধি বা নীতিমালার পরিপন্থী কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৮) অশালীন বা আক্রমণাত্মক কোন রসিকতা, অঙ্গভঙ্গী, নৃত্যগীত, বিজ্ঞাপন, সংলাপ বা সাবটাইটেল সম্বলিত কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(৯) নগ্নতা, নগ্ন ছায়াছবি, বস্ত্র উম্মোচন দৃশ্য, দেহ প্রদর্শন, অশোভন অংগভঙ্গী, যৌনক্রিয়ার ইংগিত সূচক বা প্রতীকী নাচ অথবা অশোভন দৃশ্যাবলী সম্বলিত এমন কোন অশ্লীল অনুষ্ঠান;
 
 
(১০) উচ্ছৃংখলতা, ধ্বংসযজ্ঞ, শিশু-কিশোর অপরাধ বা অপ-সংস্কৃতিকে আর্কষণীয় ও উত্সাহিত করিতে পারে বা শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে ক্ষতির কারণ হইতে পারে এমন কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(১১) মূল তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা অক্ষুণ্ন না রাখিয়া সম্প্রচারিত এমন কোন অনুষ্ঠান;
 
 
(১২) অন্য কোন আইন দ্বারা বারিত বা সেন্সরকৃত ছায়াছবি বা কোন অশ্লীল অনুষ্ঠান;
 
 
(১৩) বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশী কোন চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন;
 
 
(১৪) সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের দর্শকদের উদ্দেশ্যে বিদেশী চ্যানেলের কোন অনুষ্ঠান সম্প্রচার৷
জনস্বার্থে কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের ক্ষমতা
২০৷ সরকার যে কোন স্থানে যে সময়ে, জনস্বার্থে যে কোন কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিষিদ্ধ করিতে পারিবে৷
সেবাপ্রদানকারী কর্তৃক রেজিস্টার সংরক্ষণ
২১৷ প্রত্যেক সেবাপ্রদানকারীকে সংক্ষিপ্তভাবে তাহার দৈনিক সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু ও তারিখ নির্ধারিত ফরম অনুসারে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধপূর্বক উক্ত রেজিস্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পর ১ (এক) বত্সর সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করিতে হইবে৷
চ্যানেলের মূল্য পরিশোধ, ইত্যাদি
২২৷ কোন ডিসট্রিবিউটর, সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, বিদেশী পে-চ্যানেল ডাউন লিংক করিবার লক্ষ্যে পরিশোধিতব্য চ্যানেলের মূল্য বিদেশে প্রেরণ করিতে পারিবে না৷
আটককৃত যন্ত্রপাতির বাজেয়াপ্তকরণ, ইত্যাদি
২৩৷ (১) ধারা ১০ এর অধীন যন্ত্রপাতি আটকের অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন ব্যক্তিকে ধারা ৪ এর অধীন লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে, অন্যথায় আটককৃত যন্ত্রপাতি সরকার বরাবরে বাজেয়াপ্ত হইেবঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, আটককৃত যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্তির পূর্বে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যক্তিকে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদান করিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্তি সত্ত্বেও উক্ত ব্যক্তি বিনা লাইসেন্সে কেব্‌ল্‌ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক কার্যক্রম পরিচালনা করিবার জন্য এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন৷
ক্ষমতা অর্পণ
২৪৷ লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ ধারা ১০ এর অধীন তাহার কোন ক্ষমতা তাহার অধঃস্তন কোন কর্মকর্তাকে লিখিত আদেশ দ্বারা অর্পণ করিতে পারিবে৷
অন্যান্য সংস্থার অনুমোদন গ্রহণ
২৫৷ সেবাপ্রদানকারী কেব্‌ল্‌ সংযোগের কাজে কোন সরকারী আধা-সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার স্থানীয় কার্যালয়ের লিখিত অনুমোদন ব্যতিত কোন স্থাপনা ব্যবহার বা সুবিধা গ্রহণ করিতে পারিবে না৷
অপরাধের অ-আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা
২৬৷ এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) ও জামিনযোগ্য (bailable) হইবে৷
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
২৭৷ (১) কোন কোম্পানী কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এমন প্রত্যেক মালিক, প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন৷
 
 
ব্যাখ্যাঃ এই ধারায়-
 
 
(ক) “কোম্পানী” বলিতে কোন কোম্পানী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনকেও বুঝাইবে;
 
 
(খ) “পরিচালক” বলিতে কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক, এর সদস্যকেও বুঝাইবে৷
 
 
(২) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোম্পানী কর্তৃক এই আইন বা বিধিতে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে কোম্পানীর নিবন্ধিত কার্যালয় বা প্রধান কার্যালয় বা এইরূপ কার্যালয় না থাকিলে যে স্থান হইতে সাধারণতঃ উহার কর্মকান্ড পরিচালিত হয় বা যে স্থানে অপরাধ সংঘটিত হয় বা যে স্থানে কোম্পানীর সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে পাওয়া যায় সেই স্থানের উপর এখতিয়ারসম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতই হইবে যথাযথ এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত৷
শাস্তি
২৮৷ (১) এই আইনের অধীন ধারা ৩, ৪, ৭(৩) ও (৪), ১৬, ১৭(২), ১৭(৩), ১৭(৫), ১৯, ২১, ২২, ২৩, ও ২৫ এর কোন বিধান লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ৷
 
 
(২) যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বত্সর সশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক ১(এক) লক্ষ টাকা কিন্তু অন্যুন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং অপরাধ পূনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বত্সর সশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ্য টাকা কিন্তু অন্যুন ১(এক) লক্ষ্য টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন৷
 
 
(৩) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা কতিপয় অপরাধ চিহ্নিত এবং উক্ত অপরাধ সংঘটনের জন্য দণ্ড নির্ধারণ করা যাইবে, তবে এইরূপ দণ্ড ১ (এক) বত্সর সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের অতিরিক্ত হইবে না৷
অপরাধের বিচার
২৯৷ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) বা অন্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনে বর্ণিত সকল অপরাধ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান এলাকায় মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে৷
অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা
৩০৷ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তির উপর ধারা ২৮ এর অধীনে অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান এলাকায় মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ধারায় উল্লিখিত অর্থদণ্ড আরোপ করিতে পারিবেন৷
সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ
৩১৷ এই আইন বা বিধির অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকারের বা, ক্ষেত্রমত, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বা লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের অধীনস্থ অন্য কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷
অন্যান্য আইনের প্রয়োগ
৩২৷ (১) সকল ডিসট্রিবিউটরকে বিদেশী স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের এজেন্ট হিসাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে The Foreign Exchange Regulation Act, 1947 (Act No. VII of 1947) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে৷
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুমোদিত হইলেও উক্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের বিধানাবলী ডিসট্রিবিউটরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে৷
অন্যান্য আইনের উপর প্রাধান্য
৩৩৷ অন্যান্য আইনে ভিন্নতর যাহা কিছু থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর হইবে৷
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৩৪৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷
আইনের ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ
৩৫৷ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, মূল বাংলা পাঠ এবং ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে৷
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs