প্রিন্ট

27/12/2024
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইন, ২০১৬

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইন, ২০১৬

( ২০১৬ সনের ৯ নং আইন )

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক, ইত্যাদি

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইন, ২০১৬ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে, -
 
 
(১) ‘‘অধিনায়ক’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কোন জাহাজ, ঘাঁটি বা স্থাপনা, স্টেশন অথবা আউটপোস্ট এর কর্তৃত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা কিংবা এই আইনের সকল বা যে কোন বিধান কার্যকর তথা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক অধিনায়ক হিসাবে নির্ধারিত কর্মকর্তা;
 
 
(২) ‘‘অপরাধ’’ অর্থ এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধ, তবে অসামরিক অপরাধও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৩) ‘‘অবাধ্যতা’’ অর্থ অধিভুক্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কোন মৌখিক, লিখিত, সাংকেতিক বা অন্য কোনভাবে প্রদত্ত আইনানুগ আদেশ অমান্য করা;
 
 
(৪) ‘‘অসামরিক অপরাধ’’ অর্থ অসামরিক আদালতে বিচার্য কোন অপরাধ;
 
 
(৫) ‘‘অসামরিক আদালত’’ অর্থ অন্য কোন আইনের অধীন গঠিত সাধারণ ও বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ফৌজদারি আদালত বা ট্রাইব্যুনাল;
 
 
(৬) ‘‘অসামরিক কোস্ট গার্ড সদস্য’’ অর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী হইতে প্রেষণে কর্মরত কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা ও পদবিধারী কোস্ট গার্ড সদস্য ব্যতীত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এই আইনের অধীন প্রণীত চাকরি বিধিতে উল্লিখিত কোন পদ;
 
 
(৭) ‘‘আইন কর্মকর্তা’’ অর্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাজ এডভোকেট জেনারেল শাখা হইতে প্রেষণে নিযুক্ত অন্যূন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার কর্মকর্তা অথবা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা;
 
 
(৮) ‘‘আউটপোস্ট’’ অর্থ উপকূলীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত উপকূলবর্তী কোন অবস্থান বা স্থাপনা, যে স্থান বা যাহা হইতে এই আইনের অধীনে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়;
 
 
(৯) ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা’’ অর্থ পেটি অফিসার বা সমমানের ও তদূর্ধ্ব পদবির প্রেষণে নিযুক্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা আধাসামরিক সমমানের ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তা এবং অসামরিক কর্মকর্তা;
 
 
(১০) ‘‘এখতিয়ারভুক্ত এলাকা’’ অর্থ বাংলাদেশের জলসীমা এবং জলসীমা-সন্নিহিত স্থলভাগ;
 
 
(১১) ‘‘কর্মকর্তা’’ অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এ উল্লিখিত পদের বিপরীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্য হইতে প্রেষণে এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এই আইনের অধীন প্রণীত চাকরি বিধি অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;
 
 
(১২) ‘‘জুনিয়র কর্মকর্তা’’ অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত পদের বিপরীতে প্রেষণে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এই আইনের অধীন প্রণীত চাকরি বিধি অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্ত কোন জুনিয়র কর্মকর্তা;
 
 
(১৩) ‘‘জাহাজ’’ অর্থ এই আইনের অধীন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের দায়িত্ব প্রতিপালনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কমিশন বা অনুমোদনপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের পতাকাবাহী কোনো জলযান বা নৌযান বা জাহাজ বা অনুরূপ প্রকৃতির বাহন;
 
 
(১৪) ‘‘জোন’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের এক বা একাধিক স্থাপনা, ঘাঁটি, জাহাজ, স্টেশন এবং আউটপোস্ট সমন্বয়ে গঠিত এলাকা বা অঞ্চল;
 
 
(১৫) ‘‘জোনাল কমান্ডার’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা যিনি একাধিক জাহাজ, ঘাঁটি, স্টেশন অথবা আউটপোস্ট এর সমন্বয়ে গঠিত জোনের অধিনায়ক;
 
 
(১৬) ‘‘জলসীমা’’ অর্থ বাংলাদেশের সামুদ্রিক এলাকা, এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য জল এলাকা;
 
 
(১৭) ‘‘জলসীমা-সন্নিহিত স্থলভাগ’’ অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বাংলাদেশের জলসীমা সন্নিহিত এলাকা যা সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত;
 
 
(১৮) ‘‘তফসিল’’ অর্থ এই আইনের তফসিল;
 
 
(১৯) ‘‘নির্দেশ’’ অর্থ এই আইনের অধীন মহাপরিচালক কর্তৃক সময়ে সময়ে জারীকৃত নির্দেশ;
 
 
(২০) ‘‘নৌযান’’ অর্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনী অথবা বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজ বা কোস্ট গার্ড নৌযান ব্যতীত, অন্য কোনো জাহাজ, জলযান, বোট বা নৌপোত;
 
 
(২১) ‘‘পদবিধারী কোস্ট গার্ড সদস্য’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এ উল্লিখিত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদস্য;
 
 
(২২) ‘‘পবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(২৩) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(২৪) ‘‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীনে গঠিত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড;
 
 
(২৫) ‘‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আদালত’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৬৯ তে উল্লিখিত আদালত;
 
 
(২৬) ‘‘বাহিনী’’ অর্থ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের কমিশনপ্রাপ্ত প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা, এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত পদবিধারী কোস্ট গার্ড সদস্য এবং অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমন্বয়ে এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নামে গঠিত আধা-সামরিক (para-military) বাহিনী;
 
 
(২৭) ‘‘বাহিনীর সদস্য’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর কোন সদস্য;
 
 
(২৮) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ বাহিনীর মহাপরিচালক;
 
 
(২৯) ‘‘রিজিওন’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের এক বা একাধিক জোনের সমন্বয়ে গঠিত এলাকা বা অঞ্চল;
 
 
(৩০) ‘‘রিজিওনাল কমান্ডার’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একজন কর্মকর্তা, যিনি এক বা একাধিক জোনের সমন্বয়ে গঠিত রিজিওনের অধিনায়ক;
 
 
(৩১) ‘‘শত্রু’’ অর্থ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং বাহিনীর সদস্যগণের জন্য হুমকি স্বরূপ যে কোন প্রকারের বিদ্রোহী, দাঙ্গাকারী, সন্ত্রাসী, জলদস্যু বা অস্ত্রধারী;
 
 
(৩২) ‘‘সমুদ্র সীমা’’ অর্থ Territorial Waters and Maritime Zones Act, 1974 (Act No. XXVI of 1974) এর অধীনে ঘোষিত Territorial Waters অথবা এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত এলাকা;
 
 
(৩৩) ‘‘সক্রিয় কর্তব্য’’ অর্থ কোন অধিভুক্ত ব্যক্তি যখন বাহিনীর সদস্য হিসাবে বা উহার অংশ হিসাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় টহল বা প্রহরায় অথবা উপকূলীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে অথবা আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধমূলক কাজে নিয়োজিত অথবা শত্রুর বিরুদ্ধে কোন অপারেশনে কর্তব্যরত অথবা সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের যে কোন স্থানে সন্ত্রাসী বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের কার্যে নিয়োজিত থাকেন;
 
 
(৩৪) ‘‘স্থাপনা’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভবন বা দালান বা অস্থায়ী কোন কার্যালয় বা অনুরূপ কোন স্থাপনা;
 
 
(৩৫) ‘‘স্টেশন’’ অর্থ এখতিয়ারাধীন এলাকায় এই আইনের অধীন নিরাপত্তা বিধান সংক্রান্ত কোন অবস্থান বা স্থাপনা, যাহা হইতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়; এবং
 
 
(৩৬) ‘‘হাজত’’ অর্থ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যকে গ্রেপ্তার করিয়া অন্তরীণ রাখিবার জন্য নির্ধারিত স্থান।
 
 
(২) এই আইনে ব্যবহৃত হইয়াছে কিন্তু সংজ্ঞায়িত হয় নাই এইরূপ সকল শব্দ এবং অভিব্যক্তি বাংলাদেশে বিদ্যমান অন্যান্য আইনে ব্যবহৃত সংজ্ঞা এবং অভিব্যক্তির অনুরূপ অর্থ বহন করিবে।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs